Thread Rating:
  • 10 Vote(s) - 3.1 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica Dikkhamonjuri
#1
আচ্ছা ধরো আমি তোমায় যদি এমন একটা গল্প বলি যেখানে সব কাল্পনিক লাগবে কিন্তু সব কথা সত্যি! 

তুমি এখন ভাববে যে আরে লেখক ভাই তুমি এত ভনিতা করছ কেনো? বলে ফেলো না …

আরে আরে রসো একটু… পরে আমার দোষ দেবে না কিন্তু… ।
গল্প টা প্রেমের তবে আমি বলবো এটা অভিমানের গল্প । 
  
*খাল কেটে কুমির।

আচ্ছা শ্রেষ্ঠা তুই তো আমার বাড়িতেই প্র্যাকটিস করতে পারিস! 
তুমি সত্যি বলছো আদি দা! 
আরে আলবাত বলছি।
দেখিস আমাদের ডুয়েট যা জমবে না! 
উফ্ আমার তো ভাবতেই কেমন লাগছে …
আদিশ্রি! এই শ্রেষ্ঠা আমাদের প্রথম অ্যালবাম এর এটাই নাম হবে! 
হ - হ্যাঁ আদি দা। 
আচ্ছা তোর মনে আছে আমাদের প্রথম দেখা…
ভাবলেও এখন হাসি পায়।

শ্রেষ্ঠা কিছু বলে না আকাশপানে চেয়ে থাকে । 
আজকে ওর খুব ভালো লাগছে। 
বসন্ত পঞ্চমী আজ। 
তারওপর ওর ভালোবাসা অধিরাজ আজকে ওর সাথে বেরিয়েছে! 
সবকিছু অবাস্তব সপ্নের মত লাগছে।

আজ থেকে বছর খানেক আগেও এই অধীরাজ প্রধান কে এক কথায় অসহ্য লাগতো ওর।

গায়ে পড়া গোছের ছেলে লাগতো।
শ্রেষ্ঠা ভৌতবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র প্রথম বর্ষের।
আর আধিরাজ ইংলিশ বিভাগের অন্তিম বর্ষের ছাত্র। 

সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে শ্রেষ্ঠা সিংহ জলপাইগুড়ি থেকে এই সুদূর কলকাতায় এসেছে তার মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করতে। 

আধীরাজ এর সাথে ওর পরিচয় আজকের মত এক সরস্বতী পুজোয়।

আধিরজ এর দোষের মধ্যে একটাই শ্রেষ্ঠা দেখলো সে ভীষণই ক্যাজুয়াল। মানে জীবন নিয়ে কোনো যেন চিন্তাই নেই!
আশ্চর্য!? ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববে না? 
যখনই ক্যাম্পাসে আসে আধিরাজ হয় গাছ তলায় বসে কখনো গিটার বাজাচ্ছে কখনো আড্ডা দিচ্ছে।
শ্রেষ্ঠা প্রথমে ভেবেছিল ওকে অত পাত্তা দেবে না।
তবে কথায় বলে তুমি নিজের থেকে যদিও বা পালিয়ে বাচো ভাগ্যর থেকে পালিয়ে যাবে কোথায়?

ডিপার্টমেন্ট থেকে গানের জন্য ওর নাম দিয়ে দিল ওর প্রিয় বান্ধবী সোহিনী।

আর তখনই দেখা হলো সেই আধীরজ এর সাথে।

উররি নতুন নাকি রে? 
হম…
কোন ডিপার্টমেন্ট তোর? 
ফিজিক্স..
তুই কি এরকম অল্প কথাই বলিস?
আপনাকে চিনি না জানি না খোশগল্প করার মতো… 
আরে আমায় চিনিস না? রোজ তো ক্লাসে যাবার আগে আমায় চোখ দিয়ে ভস্ম করিস..
আপনি…
উহু এমনি নয় … তুমি টা বেটার। আর আমার নাম আধিরাজ। তুই আদি দা বলিস। 
আমি..
শ্রেষ্ঠা সিংহ, ফিজিক্স 1স্ট ইয়ার, কলেজ টপার, রোল 123242, insta তে shreesings একাউন্ট টা তোর, ক্লাসিকাল আর সেমি ক্লাসিকাল বিষয়।

এক শ্বাসে বলে যায় আদি। 
কি জুনিয়র ঠিক বললাম তো? 

আপনি ইয়ে মনে তুমি কি করে… 

আরে ম্যাডাম নিশ্চই ভাবছ .. হে প্রভু হরেরাম কৃষ্ণ জগন্নাথ প্রেমানন্দে ইয়ে ক্যা হুয়া!!??
হাহা হাহা.. আরে খালি ইংলিশ জেনে তো আর পেট চলবে না এই 2024 এর বাজারে…. তাই আমি..

শ্রেষ্ঠা ভাবছিল এক্ষুনি বলবে হ্যাকিং জানে.. ।
আজকাল এটাই ফ্যাশন হয়েছে.. ।

আদি বলে ওঠে , তাই আমি… জাদু জানি… । হাহা। 

আরে এই দেখ তোর ফর্ম টা। 
আর তোর মত নীল চোখ রেয়ার। Hmm হলিউড অভিনেত্রী Alexandra Daddario এর মত! 
এই জন্য তো বললাম আমায় রোজ চোখ দিয়ে ভস্ম করিস। আর তোর insta ID আমি তো কবে থেকে ফলো করি… তুই maskedmaker এর নাম শুনেছিস? ওটাই আমি । 

শ্রেষ্ঠা বুঝতে পারে আসলে ওর নাম, রোল, কলেজ এসবের ডিটেল তো আদি পাবেই কারণ ও এই আসন্ন অনুষ্ঠানের পরিচালক কমিটির অংশ। আর ওর insta ID কি করে পেল সেটাও বলল। 
Maskedmaker insta তে খুব ফেমাস! ও একটা হুডি আর মুখোশ পরে ইন্ডিয়ান ক্লাসিকাল আর সেমি ক্লাসিকাল কে রিমিক্স করে, সে গুলো দিয়ে বেশ ভালো টিউন বানায়। তবে শ্রেষ্ঠা এর এসব একদম পছন্দ নয়। তার মতে পারলে নিজে কিছু করুক তা নয় অন্যের সৃষ্টি কে নষ্ট করা.. । 

বিশেষ করে স্বর্ণ হংস সিডি আর লেবেল এর গানের প্রতি যেনো maskedmaker এর বিশেষ বিতৃষ্ণা!

কিন্তু যে মানুষটা সমগ্র দুনিয়া থেকে নিজেকে লুকায় শ্রেষ্ঠা কে সব বলল কেন? 

কি ভাবছিস তোকে বললাম কেন? 
আসলে শ্রেষ্ঠা তুই আমার সবচেয়ে বড় হেটার। 
তাই তোকে বললাম কারন তোকে আমায় ঘেন্না করার আগে জেনে নিতে হবে। শত্রুতা করলে ভালো করে কর। আর হ্যা তোর ইংলিশ এ বানান ভুল হয়। পরেরবার অনলাইনে এসে উলটপালট বলে গাল দিলে আমিও কিন্তু ট্রলারগুলোকে আর ঠেকাব না।

তুমি আমায় হুমকি দিচ্ছ? 

না। 

এর পর অনেকবার একে অন্যের পথ কেটেছে দুজনে।
 শ্রেষ্ঠা তার শত্রু কে চিনেছে… । তার শত্রু আদি নয়। তার ওই ভ্রান্ত ধারণা যে আদি গান গুলো কে নষ্ট করে এটাই তার শত্রু। আদি গান নষ্ট করে না.. এটা অনেক টা একটা গাছ কে কাপড় , রং , আলো দিয়ে সাজানো। 
এতে তো আসল গাছের ক্ষতি হচ্ছে না… 
আর এটাই ছিল শ্রেষ্ঠা এর শত্রু। 

আদি দা তার খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেছে। 
প্রথম ক্লাস বানক, প্রথম কলকাতা ঘোরা, প্রথম বার কফি হাউসের সবার সাথে আড্ডা… ।
শুধু আদি ই নয়, আদির বন্ধু দীপ্ত আর অনুপ্রিয়া এর সাথেও শ্রেষ্ঠা, সোহিনী এর খুব ভালো জমে যায়। 
শ্রেষ্ঠা এর জলপাইগুড়ির মফস্বল থেকে কলকাতার শহরে জীবন প্রথম দিকে একটু কষ্টের হলেও এখন সয়ে গেছে… । কারণ আদি দা। 

ছেলেটা একটা অদ্ভুত চরিত্র। 
পাথরের মত কঠিন। মোমের মত নরম। 
অসম্ভব জেদী। প্রচন্ড অনুগত।
প্রচন্ড মেধাবী। একদম বোকা।

একবার শ্রেষ্ঠা এর বাবা মা এসেছিল মেয়ের খোঁজ নিতে … হঠাৎ আদি ও না বলে কয়ে একটা টেডি বিয়ার আর একটা গিফট বক্স নিয়ে হাজির হয়। 
সবাই একে অন্যের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে ।
সোহিনী ও নেই যে সামাল দেবে…
আদি সটান শ্রেষ্ঠা এর কাছে গিয়ে ওর হাতে ওই দুটো ধরিয়ে দেয়। 
ওর মা বাবা কে প্রণাম করে বলে।

নমস্কার কাকু, কাকিমা। আমার নাম আধিরাজ প্রধান। বয়স 23+ । আমি একা থাকি। আমি আগে law পড়েছি। এখন সখেই সেই সাথে নিজের ভাষা এর পরিধি আর বাড়াতে আর মজবুত করতে ইংলিশ এ মাস্টার্স ও করছি। 
এছাড়াও আমি সঙ্গীতশিল্পী। মাসে সব মিলিয়ে 1.5 লাখ কম করে আয় করি। এতেই স্টুডিও ভাড়া, বাড়ি ভাড়া, গাড়ির ই এম আই , সব দিয়ে তবুও হাতে 20 হাজার এর বেশি ই থাকে। বাকি আমি মিচুয়াল ফান্ড এ ও টাকা জমাই। 

কাকু, কাকিমা আমি সব কাজ জানি । যাকে বলে অ্যাডিডাস টু কালীদাস… 
আমি শ্রেষ্ঠা কে ভালবাসি। আমি আজকেই ওকে বিয়ে করতে পারি। 

শ্রেষ্ঠা এর মা বাবা থ! সোহিনী অনেকক্ষণ আগেই এসেছে কিন্তু আদির মনোলোগ শুনে সে ও পাথর। 

এদিকে শ্রেষ্ঠা এর কান, নাক লাল… লজ্জায় আর ভয়ে। 

আদি অনেক লম্বা কম করে হলেও 6 ফিট তো হবেই তার ওপর পেটানো চেহারা। 

শ্রেষ্ঠা এর মা বাবা ওর মুখের দিকে চেয়ে আছেন…
আদি এতক্ষণ যা বললো সেগুলো একবারে এত জলদি আর আকস্মিক ভাবে হয়েছে যে মেয়ের বাপ মা কি প্রশ্ন করবে আর কি খুঁত বার করে রিজেক্ট রিজেক্ট রিজেক্ট বলবে সেটা ভাবতে পারছে না… ।
শ্রেষ্ঠা এর বাবা পরিস্থিতি সামাল দিলেন।
আচ্ছা আচ্ছা তুমি ভেতরে তো আসো। সব তো দরজা দিয়েই বললে। 
শ্রেষ্ঠা এর 2 bhk apartment এর দরজায় দাড়িয়ে ছিলো এতক্ষণ বেচারা। একেই জানুয়ারি চলছে তাতে কলকাতায় 10 ডিগ্রি! 
আদি ঘরে এলো। 
শ্রেষ্ঠা ওর জন্যেও এক কাপ কফি এনেদিল।
আদি বলতে যাবে যে আমার টা..
হ্যাঁ হ্যাঁ ব্ল্যাক কফি চিনি ছাড়া মধু দেওয়া ।
শ্রেষ্ঠা এর মা বাবা এর বুঝতে বাকি রইল না ।
এই এক বছরে কি হয়েছে, তার খোঁজ নেওয়াশুরু হলো।
ওরা লিভ ইন করে কি না, কখনো কি ইন্টারকোর্স করেছে ? 
আদি ঠোঁটকাটা। ওর মুখে কিছু আটকায় না।
আদি বলে ওর এই বিষয়ে আপত্তি। এরকম নামহীন সম্পর্কে ও বিশ্বাসী নয়। তাই শ্রেষ্ঠা এর কাছে ও একজন ভালো বন্ধু এর মত আচরন করে। ওর দরকারে আছে কিন্তু ওকে পন্ন হিসেবে পেতে চায় না। তাই কাকু কাকিমা র প্রশ্নের উত্তর যে না ওরা লিভ ইন এ আছে না ইন্টারকোর্স করেছে। এমন কি শ্রেষ্ঠা এর হাথ ধরে রাস্তায় ও বেরোয়নি না কিস করেছে। 

আদি এটাও বলে আজ তো শ্রেষ্ঠা এর জন্মদিন , তাই ভেবেছিলাম মনের কথা বলে গিফট গুলো ও দেবো। যাক ভালই হলো। আপনাদের সামনে সব খোলা থাকল। 

শ্রেষ্ঠা এর মা জানতে চাইলেন আদি তার মা বাবা এর সম্পর্কে কিছু বলছে না কেনো… 

বাবা এর কথা বলতে আদি গর্বিত। বাবা সহিদ আদিনাথ প্রধান, ইন্ডিয়ান এইরফরস 

আর তোমার মা? 
আমার মা নেই। 
নেই মানে কি… মারা গেছেন? 
সন্তর্পনে প্রশ্ন করে শ্রেষ্ঠা এর বাবা।
না বহাল তবিয়তে আছেন। 
তাহলে? এবার সোহিনী প্রশ্ন করে।
শ্রেষ্ঠা চুপচাপ শুনছে…
আমার মা নেই। মানে আমি ওই মহিলাকে নিজের মা হিসেবে স্বীকার করি না। 
রাজনন্দিনি দেবরায়। 

এবার অবাক হওয়ার পালা সকলের।
রাজনন্দিনী দেব রায় তো স্বর্ণ হংস সিডি অ্যান্ড লেবেল এর মালিক সুকান্ত দেব রায় এর এক মাত্র পুত্র বধূ। আর তার ছেলের নাম তো অনিল দেব রায়! 

শ্রেষ্ঠা মনে মনে হিসাব কষে … আচ্ছা এর মানে রজনন্দিনি ম্যাডাম এর প্রথম পক্ষের সন্তান আদি।

আর এই রাজনন্দিনী দেব রায় হলেন ভারত তথা পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ গায়িকাদের একজন যিনি তার ক্লাসিকাল আর সেমি ক্লাসিকাল গানের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। এনার মেয়ে ও আছে । আধুনিক জর এর গান করে । ঐশী দেব রায়। 

তাহলে কাকু কাকিমা… আমি কি পাস না ফেল? 

এবার দুজন দুজনার দিকে তাকায়।
শ্রেষ্ঠা এর বাবা বলেন, দেখো বাবা, আমরা তোমার মত ধনী নই, খুব কষ্টে মেয়েকে পড়াচ্ছি।
তুমি ভালো ছেলে শ্রী কে খুশি রাখবে জানি.. তবে ..
তবে কি কাকু?
তুমি যদি ওর পড়াশোনা শেষ করে ওকে নিজের পায়ে দাড়াতে দাও আর ওকে ওর ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত না করো তাহলে তোমাদের সম্পর্ক মেনে নিতে এই বুড়ো বুড়ির সমস্যা নেই ।

কিরে মা, তোর আপত্তি নেই তো?
শ্রী তার মায়ের পেছনে লুকোয় লজ্জায়। 
মাথা নেড়ে বলে তার আপত্তি নেই।

তাই একপ্রকার আনঅফিসিয়াল ভাবেই ওদের এনগেজমেন্ট হয়ে গেলো।

সোহিনী দুজনের insta তে দুজনের লিংক দিল।
অনলাইনের দুনিয়ায় এটা একপ্রকার ঘোষণা । 

এরপর কেটে গেছে একটা গোটা বছর। প্রথম সরস্বতী পুজোয় অজানা দুজন , দ্বিতীয়তে প্রথম বার কাছে আসা আর এবার… 

শ্রেষ্ঠা এর ডাকনাম শ্রী আর আধিরাজ এর আদি।
এই নিয়ে প্ল্যান করে আদিরাজ। 
তবে আদি জানত না যে শ্রী কে নিজের বাড়িতে প্র্যাকটিস করতে ডেকে সে খাল কেটে কুমির আনতে চলেছে জীবনে।
[+] 3 users Like মহারাজ's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
*অর্জুনের গুরুদক্ষিণা
মহাভারতে নিজের প্রিয়সিশ্য অর্জুন কে জেতাতে একলব্য এর আঙ্গুল চেয়েছিলেন দ্রোণাচার্য।


উল্টো হলে কেমন হতো? 
যদি একালব্যর কৌশলে প্রসন্ন হয়ে অর্জুনের থেকে তার আঙ্গুল চেয়ে বসতেন? 


আরে শ্রী এ তোর কেমন প্রশ্ন? 
না তুমি ভেবে দেখো আদি দা…
আরে এতে ভাবার কি আছে…অর্জুন তো অর্জুন ই। কিছু না কিছু করে নিত। 
তুমি পারবে? 
মানে? 
দেখো আদি দা। আমি তোমায় ভালোবাসি। তুমিও আমাকে ভালোবাসো। এই নিয়ে আমার সন্দেহ নেই। তোমার কথা মত আমি তোমার বাড়ি গিয়ে প্র্যাকটিস করেছি। তুমি আমাকে ইউটিউব, insta তে একপ্রকার সেলিব্রিটি বানিয়ে দিয়েছ।
কিন্তু যখন নন্দিনী ম্যাম আর ঐশী ম্যাম নিজে দেখা করতে চাইছেন, স্বয়ং সুকান্ত স্যার এর অফিস থেকে আমায় নতুন অ্যালবাম সাইন করাতে চাইছে তুমি এত বাঁধ সাধছ কেনো? 


তুই জানিস শ্রী … এই নিয়ে আমি বলেছি আগেও ।
হ্যাঁ বলেছ। আর তোমার কথা ততটাই যুক্তিহীন।
যুক্তিহীন?! কোনটা যুক্তিহীন শ্রী? 
আমরা তো দিব্যি ছিলাম শ্রী।
বাবা air force এর বড় পোস্ট এ ছিলেন।
হেলিকপ্টার পাইলট। 
আমার মা সকালে তানপুরা বাজিয়ে রেওয়াজ করতেন। আমিও করতাম। আমি তবলা বাজাতাম। যেমন বাবা বাজাতেন। 
আজ থেকে বছর দশেক আগে মনেপড়ে তোমার উত্তরাখণ্ডের হেলিকপ্টার ক্র্যাশ? আমার বাবা ছিলেন সহকারী পাইলট। প্রধান পাইলট এর ভুলে বাবা সহিদ হন।
মা বাবার শোক ভুলতে গান কে আশ্রয় করে নেন।
আমিও পড়াশোনা আর গান কে আকড়ে নি।
আর এদিকে বাবার মৃত্যুর বছর দেড়েক এর মধ্যেই অনিল দেব রায় মা কে বিয়ে করেন। 
আমায় ওরা দার্জিলিঙ এর বোর্ডিং এ দিয়ে দেন।
আমি আরেকবছর ঘুরতেই জানতে পারি আমার বোন হয়েছে। বোন মায় ফুট! 
তুই জানিজ শ্রী, আমি কলকাতায় ফিরে জানতে পারি আমাদের বাড়িটা মা বিক্রি করে দিয়েছে।
বাবার সব চিন্হ বাইরে পরে ছিল।
তার সার্ভিস ট্রাংক টা বাইরে বৃষ্টি রোদে ক্ষয়ে গেছিলো। তাতে তার ইউনিফর্ম আর মেডেল গুলও ক্ষতি হয়। আমি কোনমতে ওগুলো বাঁচাই আর বাবার তবলা গুলো। জানিজ ওখানে আমার সব ছিল। বাবার সব ছিল। ছিল না মায়ের কোনো কিছু। যদি তোর যুক্তি মেনেও নি, যে তাড়াহুড়ো করে হয়তো বেরিয়েছিল তাই সব নিতে পারেনি। 
সেক্ষেত্রে মা নিজের শাড়ি, গয়না, এমনকি ওই হারমোনিয়াম আর তানপুরা নিতে পারলো অথচ বাকি সব লাওয়ারিস হয়ে পড়ে রইলো?! 


যে মহিলা নিজের আগের পরিবারকে ছুড়ে ফেলতে দ্বিধা করেনি… তোর চেয়ে বেটার কাউকে পেলে তোকেও সেম ট্রিট করবে না প্রমাণ কি? 


শ্রী একটু চুপ করে থেকে এবার জোরে জোরে হেসে উঠলো। 
আরে পাগল হলি নাকি?
পাগল না পাগল না আদীরাজ প্রধান … 
একটা সত্যি জানতে পারলাম। বুঝলাম আমি কত বোকা ছিলাম যে তোমায় ভালোবাসছি।
মানে? 
মানে এটাই যে তুমি নিজেও স্বর্ণ হংস এর জন্য অডিশন এর কিল্প সেন্ড করেছিলে। কিন্তু সেটা রিজেক্ট হয়। তুমি আমার রেকর্ড করা একটা অরিজিনাল গান নিজের লেবেল দিয়ে বিক্রি করতে চেয়েছিলে ?! ছি।
আরে তুই বলছিস টা কি? 
আমি তোর গান ওদের দেব কখন? আর দিলে ওদের দেব কেনো? 


এতদিনে তোর রেকর্ড করা র গান সবার আগে কাকিমা, তারপর সোহিনী আর সবার শেষে আমি শুনি। 


স্টুডিও তে আমি তুই বাদে সোহিনী আর দ্বীপ আসে। দ্বীপ এর গান নিয়ে কোনো ইন্টারেস্ট নেই। 


তাহলে তুমি বলছ সোহিনী?


তো আর কি বলবো বল…ও যদি মেল না সেন্ড করে তো কে করেছে? 


বেশ দাড়াও।
হ্যালো সোহিনী , তুই কাল স্টুডিও তে এসেছিলি?
কোনো অডিও ক্লিপ মেল করেছিস? 
করিসনি? 
আদি দা যে বলছে? বেশ। না রে … কিছু হয়নি।


কি বললো সোহিনী?


তুমি দেখো আগে তুমি হয় ভুল করে সেন্ড করেছো বা তোমার সিস্টেম একসেস আর কারো কাছে আছে কি না… 


আরে এ তো আচ্ছা মুশকিল…।
সিস্টেম থেকে তো কোনো ট্রানজেকশন শো করছে না… কোনো মেল ও সেন্ড হয়নি…


পেলে না তাই তো… আমি জানতাম। 
আরে তুমি কত মিথ্যে ঢাকবে আর? 
তুমি আসলে হিংসে করো। তোমার বোন।
সরি সৎ বোন। ঐশী আমায় বলেছিল।
তুমি যখন হোস্টেল থেকে ফিরে আসলে তুমি খুব অশান্ত হয়ে ছিলে। তুমি নিজের মায়ের কোনো কথাই সনোনি। 
সেদিন ম্যাম তোমার বাবার আর তোমার জিনিস ইচ্ছে করে ফেলে যান নি।
তোমার মায়ের সব দামী গয়নাই লকারে থাকতো।
আর তান পুরা ওই বাড়ির নতুন মালিক এর মেয়ে কিনে নেয়। কোনো মতে পড়ার কিছু কাপড় নিয়ে তোমার মা তোমার অনিল আঙ্কেল এর সাথে চলে যান। ঐশী এটাও বলে যে তুমি কোনদিন ও খুব ভালো তবলছি ছিলে না, না ভালো গায়ক ছিলে। তাই তোমার চেয়ে তোমার মা ঐশী কে বেশি পছন্দ করত এই দিক থেকে। তুমি তোমার মায়ের প্রথম সন্তান হওয়ার শুধু সুবিধা চেয়েছিলে।
তোমার মা, বোন, প্রেমিকা যে তোমার চেয়ে ভালো হতে পারে তোমার পদবী ছাড়া পরিচয় ছাড়া তাদের ও নাম হতে পারে এটা তোমার মেল ইগোতে বাঁধে অদিরাজ প্রধান। 
আমি তোমার মত পণ্ডিত নয় তবে এটা বলি।
You are nothing but an empty shell filled with empty pride। 


ব্যাস শ্রী। লোকের বলা কথা এত শুনিস না।


বিশ্বাস করো তোমায় আমি খুব ভালো ভাবে বলতে চেয়েছিলাম । কিন্তু তুমি আমায় ব্যবহার করছ যখন জানতে পারলাম … ঐশী না বললে তো… 
ঐশী কথা থেকে আসলো?
Insta তে আমায় ফলো করে সেখান থেকে বন্ধুত্ত্ব।


কিন্তু আর নয়। তুমি আর আমায় ব্যবহার করতে পারবে না। আমার গুরু নন্দিনী ম্যাম এর সাথে ও আমার কথা হয়েছে। আমি জানি তোমার হয়তো কষ্ট হবে । আমি স্বর্ণ হংস এর নিচে সই করছি।
5 বছরের কন্ট্রাক্ট। যদি ভালোবাসো আমায়…আটকাবে না। আর তোমার ভালোবাসা যদি এতই ঠুনকো হয় যে আমার সাফল্যে তোমার চোট লাগবে তাহলে আমাদের সম্পর্ক এগোনোর মানে নেই । 
 
আদির শান্ত মুখ এখন পাথুরে কাঠিন্য নিয়ে ও মৃত শীতল গমগমে আওয়াজে বলে
শ্রেষ্ঠা সিংহ। বিদায়। তোর সাফল্য বা ব্যর্থতা আমায় কখনো বিচলিত করেনি। করবেও না। 
সর্ত দিয়ে ভালোবাসা হয়না । তুই তোর নতুন জীবনে ভালো থাক। আমি চললাম।


শ্রেষ্ঠা এর চোখে জল। এটা রাগ এর চেয়েও বেশি অপমানের।
তার অবচেতন মন হয়তো ভেবেছিল যে আদি হয়তো ওকে আটকাবে , নিজের ভুল মেনে আরেকটা সুযোগ চাইবে ওর কাছে শ্রেষ্ঠা একটু না না করলেও ওকে নিয়েই থাকবে … কিন্তু আদি যেনো ওকে চেনেইনা! ওদের এই সাড়ে 3 বছরের সম্পর্কের কোনো দাম নেই? ব্রেকআপ এতই সহজ? 
 
শ্রেষ্ঠা চোখের জল মুছে ওর ব্যাগ থেকে একটা খাম বার করে ধরিয়ে দেয়।


এটা কি?
কোর্ট এর নোটিশ । 
কেনো?
না বলে আমার গান বিক্রি করেছো যেটা কিনা অলরেডি স্বর্ণ হংস এর সম্পত্তি।


দাঁড়া দাঁড়া… আমি যদি তোর গান বিক্রি করি তাহলে সেটা আমি এই 3 দিনের ভেতর করেছি আর এই চিঠিতে বলা আছে তুই গানেই সত্ব সপ্তাহ খানেক আগেই দিয়েছিস। তার মানে গত দুই সপ্তাহ তুই sh এর স্টুডিও তে ছিলি…?


শ্রেষ্ঠা বলে… তোমায় শান্ত করে বলবো ভেবেছিলাম। নন্দিনী ম্যাম আর ঐশী এর সাথে আসবো এসে চমকে দেবো… তবে সত্যি যখন জেনেই গেছো… আর নোটিশ যখন পেয়েই গেছো… দেখো কি করবে…


আরে দাঁড়া। ও এই তো… এই যে লেখা… এ তো তুই আমার এই স্টুডিওর বিরুদ্ধে কেস করেছিস…
Fraud, আর plagiarism এর।


আর তোকে SH (swarna Hansa) মদত করছে।


দেখ আমিও পেশায় উকিল… 
এখানে আমায় আগামী সপ্তাহের মধ্যে হয় 2 কোটি টাকা বা এই স্টুডিও সাথে আমার গান প্রডিউস করার সব সত্ত তোর আর sh এর নামে করে দিতে বলেছে… 


হম এই তো তোর, রাজনন্দিনি দেব রায়, ঐশী দেব রায়, আর অনিল দেব রায় এর সই ও আছে… । অনিল দেব রায় তো আবার লয়ার.. ।


আরে তুই তো ভালই ঘুটি সাজিয়েছিস… 
হম…
বেশ। তোকে একদিন একটু জ্বালাবো।
কাল তোর নতুন বন্ধু এর সাথে আসিস।


এবার তুই বেরিয়ে যা।
বলে আদি ওর চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ে।


শ্রেষ্ঠা এর এবার চোখে জল মা যেমন ছেলেকে বকলে মারলে মায়ের কষ্ট হয়, বোন যদি দাদার সাথে ঝগড়া করে তারপর গিল্ট এ লেগে তার যেমন কষ্ট হয় প্রেমিকার কষ্ট তার চেয়েও একটু বেশি কারণ সম্পর্ক টা আত্মার। 


শ্রেষ্ঠা আদিকে ভীষণ ভালোবাসে। রাগের মাথায় যা নয় তাই বলেছে… । তবে আদিকে ও রাগতে দেখেনি। শ্রেষ্ঠা চায় না যেতে। তাই ও চেষ্টা করে আদিকে শান্ত করার…


তুমি… তুমি কি সত্যিই আমায়..


এখনো যাসনি? দেখ শ্রেষ্ঠা … । তোর সামনেই মুহুরী কে ফোন করবো। তুই যখন চাস ই না এই স্টুডিও হোক, আমি যখন তোর গান বেচেঁ তোকে শুধু ব্যবহার করেছি তখন চাই না আমি এই স্টুডিও। এই অপবাদ আর এই স্মৃতি।


আমি আমার মা কে আমার সৎ বোন কে পছন্দ করি না তার কারণ আলাদা। তাদের সাফল্য কে ব তাদের পেশা কে আমি এর মাঝে অনি না।


তবে খাল কেটে কুমির আমিই এনেছি। কামড় তো খেতে হবেই।


তুই বলেছিলি না যে অর্জুন এর থেকে গুরু ড্রোন তার আঙ্গুল চাইলে অর্জুন কি করতো? 
আমার মা তো আমার গুরু ই।
আর এই স্টুডিও আমার আঙ্গুল হিসেবে ধরেইনি… তাহলে এটা জেনে রাখ ধনুর্ধর হওয়ার আগে অর্জুন যোদ্ধা। আর যোদ্ধারা শুধু একটা অস্ত্র চালনায় দক্ষ হয় না । 
আদি প্রায় চিৎকার করে এক সাথে সব বলে চলল


আদি ফোন বার করে কল করে…


হ্যাঁ দীনেশ দা… হ্যা বলছি কাল সকাল সকাল একটু কোর্টে এসো তো.. আরে না না তেমন কিছু না… SH group আছে না? আরে হ্যা রে বাবা ঐ মিউজিক লেবেল.. হ্যা ওদের নতুন গায়িকা… আরে আমাদের শ্রেষ্ঠা সিংহ… হম… হ্যা আমার বিরুদ্ধে কেস করেছে… এবার তাই ওদের সর্ত হয় স্টুডিও আর প্রোডিউারের সত্ব দাও না হয় দুই কোটি টাকা দাও। তাই আমি স্টুডিও আর সত্ব দিয়ে দেবো।
শোনো না আর্জেন্ট হ্যা… । 
নে… তোর সামনেই সব মিটিয়ে দিলাম। 
দ্বীপ কে বলছি তোকে একটা ক্যাব ডেকে দিতে … দেখ আমার এখন স্টুডিও আর আমার প্রোডাকশন এর সব ডকুমেন্ট রেডি করতে হবে …


তুমি কি সিরিয়াস আদি দা? 


উহু আদি দা নয় মিস সিংহ। আপনি দয়া করে কাল এসে আপনার নতুন স্টুডিও তে কাজ করবেন।
আমি আজকেই পরিষ্কার করে দেবো।


শ্রেষ্ঠা এর নীল চোখ থেকে জল পড়েই যাচ্ছে.…
এবার আদি বিরক্তই হয় …
দেখুন আপনার সর্ত মেনে নিয়েছি।
আপনি এবার আপনার সাফল্য নিয়ে আনন্দ করুন। নমস্কার।


বলে আদি বেরিয়ে যায় স্টুডিও থেকে 
এসে নিচে নেমে সোজা বাথরুমে ঢুকে শাওয়ারটা ছেড়ে দেয়।
আজ আদি কান্না করে । শেষ কেঁদেছিল যেদিন মা ওকে ছেড়ে দিয়েছিল।


স্টুডিওতে আদি আর শ্রী এর একটা বাঁধানো ফটো বুকে জড়িয়ে কাঁদছে শ্রেষ্ঠা।
[+] 5 users Like KingisGreat's post
Like Reply
#3
পর্ব ৩ আসছে আজকেই। লাইক করে জানাবেন কেমন লাগছে
[+] 1 user Likes মহারাজ's post
Like Reply
#4
Plot ki?


My pain is constant and sharp, and I do not hope for a better world for anyone. ArrowNamaskar


Like Reply
#5
(15-02-2024, 11:18 PM)Patrick bateman_69 Wrote: Plot ki?

Plot holo apni Jake bhalobasten sei tara ee jodi apnake betray kore? Tara jodi apnar life e phire aste chay apni ki korben? Phiriye neben? Parben nijer partner ke nijer cheye beshi successful dekhe o jealousy control korte? Apnar dream shatter hoar poreo ki parben abar bachte? Porte thakun .
Like Reply
#6
Next update kbe pabo
Like Reply
#7
Update please
Like Reply
#8
(16-02-2024, 12:29 AM)DEEP DEBNATH Wrote: Next update kbe pabo

ajke
Like Reply
#9
সাফল্যের দাম ও ছায়াযুদ্ধ


আদি পরের দিন সকাল সকাল কোর্টে চলে যায়…
অন্য সময় শ্রী ওকে জর করে হলেও ব্রেকফাস্ট করিয়ে দেয় কিন্তু আজকে সে নিজেই নিজের মধ্যে নেই… আদি কাল রাগের মাথায় বলেছে ওকে… ধুর শ্রী কি পারে নাকি নিজের আদির ক্ষতি করতে? নিজেকেই বলে শ্রী।
আদিশ্রী স্টুডিও… নিজেরা কলকাতা ঘুরে নেম্প্লেট টা এনে সাজিয়েছিল…
শ্রী ই গান করতো আর আদি থাকতো ক্যামেরা আর কম্পিউটার এর পেছনে। 
ইউটিউব এর insta তে ঘটা করে নিজেদের স্টুডিও এর ট্যুর আপলোড করেছিল…
Prod by maskedmaker এটাই আদিস্রি এর ব্র্যান্ড হয়ে গেছিলো।
সবই ভালো ছিল…আদি যখন কোর্ট এ যেত শ্রী তখন হয়ে উঠত পাকা গিন্নি। 
আদি অপেক্ষা করছিল অ্যাডিশ্রি কবে একটা বিরাট অ্যালবাম নামাবে ফলে ওদের এর ফিরে তাকাতে হবে না।
দিন ভোর রেওয়াজ আর বিকেলে স্কুল কলেজ এর ছেলে মেয়েদের টিউশন করিয়ে অধিরাজ আর শ্রেষ্ঠা এর দিব্যি চলছিল। 


শ্রেষ্ঠা জানত আদি গান করে না । 
তবে একদিন ওর স্টুডিও তে আস্তে দেরি হয় ।
ও শুনতে পায় একটা গমগমে ভারী গলায় কেউ ভৈরবী রাগ করছে ব্যাকগ্রাউন্ডে বিনা বাজছে।
আর তবলার আওয়াজ।
শ্রী থেমে যায়। এই আওয়াজ যেনো তাকে উষ্ণতায় মুরে দিচ্ছে। 
আর এই তবলার তান যেনো ওকে গান করতে বাধ্য করছে… 
আদি দা কি ?
কিন্তু ও এই ভোরবেলা তো উঠবে না…
2 বছর ধরে দেখছে বাবুর ঘুম যদি কোনোদিন 9টার আগে খুলেছে… একবার সাড়ে আটটা তে উঠেছিল ওই প্রথম আর শেষ।
শ্রী সকাল সকাল আসে এসে স্টুডিও পরিষ্কার করে… আদি সিগারেট অ্যালকোহল খায় না।
তবে চকলেট ওর চাই ই। আর ওদের স্টুডিওতে সব সময় কফি আর টফি থাকবেই।
আর আদির দোষ যেখানে সেখানে টফির মোড়ক ফেলে রাখে খেয়ে। 
একবার তো ঘরভরে সে কি পিঁপড়ের উৎপাত…
ভীষণ বকেছিল শ্রেষ্ঠা ওকে। 
সপ্তাহ খানেক নিপাট ভদ্রলোক তারপর যে কে সেই।
শ্রেষ্ঠা এর মা ওকে বলেছেন… তোর সংসার তোকেই সামলাতে হবে। 
তাই ভোরবেলা আগের কাজ বাবুর সব টাফির রাপার আর কফির ফাঁকা প্যাকেট গুল ফেলা।
তারপর রেওয়াজ করে দেখে নেওয়া আগের রেকর্ডিং সেভ করেছে কি না, সব যন্ত্র ঠিক থাক আছে কি না… শ্রী সাড়ে চারটে কি পাঁচটা এর মধ্যে চলে আসে। আদি কে ডাকতে যায় সাড়ে সাতটা নাগাদ। আদি যদি বলে আরো পাঁচ মিনিট .. মানে আরো এক ঘন্টা ঘুমোবেন।
এরপর আদির কিচেনে এ গিয়ে বাবুর জন্য ডিম, সসেজ, ঝাল দিয়ে তরকারি আর কফি।
আদির বাড়িটা দোতলা। উপরে স্টুডিও নিচে ও থাকে। নিচেই ওর কিচেন, জিম, চেম্বার। 
আর একটা ঘরে ওরা দুজনে পড়ায়।
শ্রী এর জন্যে উপরে একটা ছোট ঘর করে দিয়েছে। যেদিন ওদের রেকর্ডিং এ রাত হয় শ্রী ওখানেই থাকে। 
তবে ওই যে আদি নামহীন সম্পর্কে বিশ্বাসী নয় ।
শ্রী তো বলেছিল যে এবার তো ওরা বিয়ে করতেই পারে…
আদি বলেছিল… যেদিন sh এর ওপরে অ্যাডিশ্রী উঠবে… যেদিন দেব রায় দের থেকেও সিংহ এর নাম উপরে উঠবে…তার আওয়াজ লোকের প্লেলিস্ট এ প্রথম পাঁচ এ থাকবে সেদিন ধুমধাম করে বিয়ে করবে অধিরাজ শ্রেষ্ঠা কে।


শ্রী ওর কথায় বিভোর হয়… বাইরে যতই কঠিন বর্ম পরুক… মনে মনে সব মেয়েই চায় তার ভালোবাসার মানুষ রূপকথার রাজার মতোই তাকে বিয়ে করে নিয়ে যাক।


আদি কে শ্রী বলে , সেসব পরে হবে… তুমি যদি এভাবে রাত জাগো তাহলে কিন্তু ভুরি হয়ে যাবে তারপর কিন্তু আমি তোমায় বিয়ে করব না…
ভুরি? হাহা বলে আদি তার টিশার্ট টা ওপরে তোলে আর ওর পাথরে খোদাই করা অ্যবস গুলো বেরিয়ে পরে 
ইসস। কি অসব্য তুমি! ছি।
বলে শ্রী দুই হাতে মুখ ঢাকে..  
আরে কি অসভ্যতা করলাম বাবা? 
জানি না… আহা.. যাও না… স্নান সেরে বেরও… আমি টিফিন গোচাচ্ছি… ।
আদি বাথরুম যাওয়ার আগে একটা ফ্লাইং কিস ছুড়ে দেয় ।
শ্রী টাওয়েল টা ওর মুখে ছুড়ে মেরে ওর দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচে দেয়।
এই সব ভাবতে ভাবতে ওর মনে পড়ে যায় যে আদি কি দূর্দান্ত গায়ক। ওর গানের মধ্যে একটা শীতের সকালে কম্বল গায়ে দিয়ে মিঠে রোদ পোহানোর মত আরাম যা কান হয়ে সারা শরীর ছড়িয়ে যায়। এই গান কোনোদিন করেনি ও।
আর ওর তবলা বাজানোর মধ্যে সাপের বশীকরণ ক্ষমতা। ওটা শুনলে মনে হয় যেন শরীর আর আত্মা আলাদা হয়ে গেছে.. ।
সেদিন যদি ভুল করে ওর হাতে লেগে কফির কাপটা না ভাঙত ও জিজ্ঞেস করত কেনো নিজের এই প্রতিভা সবার আড়ালে রাখতো? 


কেনো সবার সামনে পশ্চিমী সঙ্গীতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অধিরাজ প্রধান ধ্রুপদী সংগীতের এক মূর্তিহিন পূজারী? 


গাড়িতে যেতে যেতে এসব ভাবছে…
ওর পাশে বসা ওর গুরু। যাকে ছেলেবেলা থেকে দেখে তার মতই হতে চেয়েছে। স্বয়ং রাজনন্দিনী দেব রায়! ঐশী ড্রাইভার এর পাশে। 
মাসখানেক হয়েছে শ্রী নন্দিনী ম্যাম এর থেকে তালিম নিচ্ছে ।
প্রথম প্রথম ঐশী ওর খুব ভালো বন্ধু ছিল কিন্তু যখন একসাথে রেওয়াজ এর সময় ঐশী আধুনিক গানের লম্বা টান গুলো তুলতো শ্রী ওকে শুধরাতে বলত।
এতে ওদের ভিতর দূরত্ব তৈরি হয়।
শ্রী আর আদির ব্রেকআপ এর কথা আদি ই ওর বাবা মা কে বলে। যেমন আদির সভাব। অটল,অবিচল। 
আদি ওর গাড়িতে উঠে ফিরেও তাকায়নি।
তাকালে দেখতে পেত শ্রী এর নিঃশব্দ আর্তনাদ।


শ্রী এখন দেব রায় ম্যানসন এ থাকে। অন্তত আগামী পাঁচ বছর তো থাকবেই।
অনিল বাবু পরিবারের বিষয়ে থাকেন না।
আর সুকান্ত বাবু রাশভারী লোক। 
নন্দিনী ম্যাম কে যেমন ভেবেছিল শ্রী তেমন নয়।
ওনাকে দেখলে মনে হয় কেউ জোর করে গান করায়। সাক্ষাৎ দেবী সরস্বতী। যেমন রূপ তেমন উগুন। আদির মুখ ওনার সাথে খুব মেলে। তবে ওর মধ্যে একটা পুরুষালি রুক্ষতা আছে যেটা ওর সভাবের উল্টো। এটাই তো ছিল ওর বৈশিষ্ট্য।


শ্রী রিলাক্স। তুমি অতিরিক্ত ভাবছ। ঐশী বলে। 
দোষ করেছে শাস্তি পাচ্ছে ।


ঐশী প্লিজ!
ওহ কাম অন মা…দা ভাই এর ওপর তোমার এই সফট কর্নার রেখোনা তো। It's way too much annoying… 
ঐশী, নন্দিনী ম্যাম.. আমি … আমি আদি দা কে কি করে ফেস করব..?
দেখো শ্রেষ্ঠা…অনেক সময় আমরা পরিস্থিতে পড়ে যাই অনেক সময় আমরা নিজেরা সেই পরিস্তিতি বানাই। কিন্তু যেকোনো পরিস্থিতিতে আপন জন যদি কষ্ট পায় তাহলে সেই কষ্ট নিজের গায়েই ফিরে আসে… আজ বুঝবে না… যেদিন বুঝবে সেদিন হয়তো দেরি হয়ে যাবে… ।


শ্রেষ্ঠা এবার নিজেকে প্রশ্ন করে…
আদি দা ওর গান কেন বিক্রি করবে?
আর ও যদি একদমই খারাপ গায় তাহলে সেদিন যে অত সুন্দর করে গাইলো? 
শ্রেষ্ঠা ভুল করেনি তো? 


গাড়ি প্রায় আদির বাড়ির কাছে পৌঁছে গেছে… ।


ঐশী বলে … শ্রী জাস্ট লুক! তোমার গান স্পটিফকাস এ একদম ট্রেন্ড করছে! 
তোমার নতুন ম্যানেজার সোহিনী যদি ঐ অডিও ক্লিপ না দিত আর ড্রিল বিট এর সাথে ক্লাসিক মেশানোর কথা না বলত.. উফ্। পাপা আর দাদুভাই কে খবর টা দি… ।


শ্রেষ্ঠা ভাবে তো এটা সোহিনী এর কাজছিল!!??


সে সঙ্গে সঙ্গে সোহিনী কে ফোন করে… 


সোহিনী বলে , থ্যাঙ্কস বলা লাগবে না … তুই ট্রেন্ড এ আছিস … 


তোর একটুও কাণ্ডজ্ঞান আছে? জানিস তোর জন্য কি হয়েছে? 


আরে আমি কি করলাম আবার? 
তোকে গত কাল আমি ফোন করেছিলাম… 
তুই কি বললি? তুই ক্লিপ সরস্নি? তাহলে এটা কি? 
তুই আমার ম্যানেজার? কবে ? কিভাবে?


শোন শ্রী, তোকে মিথ্যে বলেছি এর জন্যে রাগ করলে কর। কিন্তু আমায় যা করতে বলা হয়েছিল আমি করেছি। অনিল স্যার আমায় তোর ম্যানেজার এর পোস্ট দিয়েছেন। আমি সেই কবে থেকে মিডিয়া প্রফেসনাল হওয়ার জন্যে অ্যাপ্লাই করছি… তোর র ক্লিপ টা শুনে স্যার ওটা কিনতে চান। তাই আমি… কেন কি হয়েছে?! 


সোহিনী এটা আমায় বললে কি হতো? 
আমি তাহলে ওকে … 
আরে এতে আগে পরের কি আছে? তুই তোর গুরু পেয়েছিস, কত ব্র্যান্ড, ফেম, টাকা … আর তোর তো আমাকে থ্যাঙ্কস বলা উচিত … আমি ক্লিপটা যদি আদি দার পিসি থেকে সেন্ড না করতাম ওটা হয় পরে থাকত বা আদি দা এমন মডিফাই করতো ওর আসল টিউন টাই নষ্ট করত। 


দেখ তুই আমায় ক্লিপ টা 2 সপ্তাহ আগে দিয়েছিলি… তখনও নন্দিনী ম্যাম এর সাথে তোর পরিচয় হয়নি… আমরা শুধু ঐশী এর সাথে মিট করতে গেছিলাম…
তার দিন তিনেক পর নন্দিনী ম্যাম তোর গান সামনে থেকে শোনেন আর তোকে অফার করেন তুই ওনার থেকে গান শিখবি কি না… 
আমি এর মধ্যে sh এ চাকরি পাই। 
আমায় নতুন কোনো আইডিয়া দিতে বললে তোর ক্লিপ টা দি… 


এবার বলবি হয়েছে টা কি? 


মানে আদি দা গান বেঁচে নি? 
আদি দা গান বেচবে কোন দুঃখে? 
আর এখানে বেচা কেনার কথা হচ্ছেই বা কেনো? 
সোহিনী আমি সব শেষ করে ফেলেছি রে… 
সাফল্য তার দাম নিতে এসেছে…


এরপর শ্রেষ্ঠা গত কাল রাতের সব কথা বলে…


সোহিনী বলে… সবই বুঝলাম শ্রী কিন্তু ব্যাপারটা কোর্ট অবধি উঠেছে… তুই নিজেও জানিস যে আদি দা কে ভগবানের ও টলানোর ক্ষমতা নেই…


কিন্তু ওর সিস্টেমে তো তোর একসেস দেখলাম না… 
শ্রী তুই বইয়ের বাইরে বেরোলে বুঝতিস যে একাধিক ইউসার থাকলে সেকেন্ডারি ইউসার কে লগআউট করে আস্তে হয় আর আমি মেমোরি ক্লিন করে দি যাতে পিসি স্মুথ চলে… ।
তুই বললি আমি কোনো মেল সেন্ড করেছি কি না… আমি তো কোনো কিছু সেন্ড করিনি রে… জাস্ট ক্লিপ টা কপি করেছি… ।


আর তুই সেটা না বুঝে আদি দা কে এসব বলেছিস?! Very good..। 


এতক্ষণ সব শুনছিলেন রাজ নন্দিনী দেব রায়।


তিনিও এবার বলে ওঠেন… সব .. সব ওই দেব রায় দের চাল…
বাবাই কে এর আগেও কষ্ট দিয়েছে… এবার ও কষ্ট দিচ্ছে… ।
আমারই সব দোষ… ।


এবার তিনি কেদেই ফেলেন… ।


শ্রেষ্ঠা সোহিনী কে বলে ফোন রেখে দেয়… 
ফোন রেখে নন্দিনী কে সামলায়..


অতীতের অন্ধকার আর সোনার শেকল।


গাড়ি আর আধা ঘণ্টার মধ্যে আধিরাজ এর বাড়ির সামনে চলে আসবে … 


ম্যাম আপনার কি হয়েছে..?
আমি অন্যায় করেছি তোমার সাথে.. তোমায় ঠকিয়েছি।
কি বলছেন আপনি? আমি যে কিছুই বুঝতে পারছি না … 
শ্রেষ্ঠা এর বুক কাঁপতে থাকে…


নন্দিনী বলতে শুরু করে…
আমার স্বামী মারা যাবার পর আমি খুব ভেঙে পড়ি…আমায় বাবাই এর বাবা আমার জোর করে হতে যাওয়া বিয়ে থেকে একপ্রকার উদ্ধার করে…
আমি ছিলাম গরীব ঘরের মেয়ে..আমার বাবা তাই এক মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী কে আমি 18 তে পড়ার সাথে সাথে আমায় বিয়ের নামে প্রায় বেঁচেই দিচ্ছিলেন… কিন্তু বাবাই এর বাবা আদিনাথ.. 
এলাকায় টিউশন পড়াতে আসতো.. সে যখন জানতে পারে ওর বন্ধুদের সাথে এসে ওই বুড়ো আর আমায় বিক্রি করতে চাওয়া বাবাকে মেরে চিৎপত করে ওই মন্দপেই আমায় বিয়ে করে।


আমার আর আদিনাথ এর বয়সের ফারাক 5 বছরের। ও ছিল দারুন তবলচি। ওর তানে আমি গান করতাম। বিশেষ করে পুজোর সময় এর অনুষ্ঠান গুলোতে। আমায় বিয়ে করায় ওর পরিবার ওকে একপ্রকার ত্যাগ করে।
তবে আমার ভাসুর, বড় যা, আর শাশুড়ি আমায় আলাদা করেনি।
আমরা দমদম এ চলে আসি। আলাদা করে সংসার পাতি। দাদাভাই আর্মি তে ছিলেন। আর ও আমায় যখন বিয়ে করে তখন সদ্য বায়ুসেনা তে অফিসার হয়েছে। মা, দিদিভাই যখন বাবাই হলো তখন খুব খেয়াল রেখেছেন।
কিন্তু সুখ সৈল না আমার। আজ থেকে 10 বছর আগে বাবাইয়ের বাবা মারা যান।
বাবাই এর মুখ চেয়ে ওর বাবার ঘট তি কিছুটা কমত। কিন্তু পুত্র শোকে শশুর শাশুড়ি গত হলেন।
এদিকে দাদাভাই ও তখন কাশ্মীরে।
যা টাকা আসতো তাতে খরচ চালানো মুশকিল হয়ে যায়… দিদিভাই তখন 6 মাসের প্রেগন্যান্ট।
আমি তাই গান শেখাতে শুরু করি…
SH এর তখন অবস্থা পতন মুখী। 
এক অনুষ্ঠান এ ওই কোম্পানির কর্নধার সুকান্ত বাবুর আমায় পছন্দ হয়। তিনি আমায় তাদের কোম্পানির জন্য গাইবার প্রস্তাব দেন।
আমার এদিকে হাতে সত্যিই টাকার অভাব। বাবাই এর খরচ, দিদিভাই এর চিকিৎসা ওর বাবার পেনশনের টাকায় চলে না… দাদাভাই টাকা দেয় কিন্তু সেটা যদি নিজেদের সুখে খরচ করি তাহলে দিদিভাই আর দাদাভাই এর ওপর বাড়তি বোঝা…
আমিও তাই খড়কুটো আঁকড়ে ধরার মত এই সুযোগ নিয়ে নি। 


প্রথম প্রথম কষ্ট হত… বাবাই কে রেখে যেতে। ও কতটা মা কে মিস করে জানতাম না কিন্তু আমি ওকে না দেখে থাকতে পারতাম না।
ছেলে আমার তখন বড় হয়েছে। নিজের পড়াশোনা আর রেওয়াজ নিয়েই থাকে।
ওর বাপের মতই তবলচি। আর ওই বয়সেই কি সুন্দর নিচের সুর ধরতে পারতো। 


Sh এ গাওয়া আমার গান পর পর হিট হয়।
তবে সেটা তো কোম্পানির লাভ। আমি আমার বাবাই কে এখন আবার সময় দিতে পারছি এটা ভেবেই আমি খুশি ছিলাম। 


আরো মাসখানেক পর অনিল দেব রায় এসে sh এর দায়িত্ত্ব নিল।
অনিল এর আগেও বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু ও কোনোদিন বাবা হতে পারবে না তাই ও ডিভোর্স নিয়ে নেয়। 


তাহলে ঐশী? শ্রেষ্ঠা ভাবে… 


স্টুডিওতে , রেকর্ডিং এর সময় আমার আর অনিলের বন্ধুত্ত্ব হয়.. হয়তো আমরা সমবয়সী ছিলাম আর দুজনেই সঙ্গী হিন ছিলাম … 


এরপর আরো দুঃখের খবর এলো… দাদাভাই কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে সহিদ হন।
দিদিভাই এই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারেন না…
বাঁচার আশা ছেড়ে দেন।
ডেলিভারি এর সময়ই উনিও আমায় ছেড়ে নিজের পরিবার কে যোগ করতে না ফেরার দেশে চলে যান। 
এদিকে প্রধান পরিবারের দুই সন্তান কে নিয়ে আমি পড়ি বিপদে। বাবাই তখন সাড়ে 5। আর ঐশী কেবল জন্মেছে… ।


বাচ্চা মেয়ে কে দেখতে গিয়ে আমার বাবাই এর দিকে মন দেওয়াও হয় না।
এদিকে ওর স্কুল থেকে কমপ্লেন আস্তে শুরু করে বাবাই ভীষণ hostile! 
বাবাই শুনে এসেছে আমার আর অনিলের নাকি সম্পর্ক আছে আর আমাদের মেয়ে ঐশী! 
আমি সেদিন বাবাই কে খুব বকি। আর প্রথম বার ওকে মারি পর্যন্ত। 
ওকে আমি হোস্টেল এ দিয়ে দি। 


অনিল প্রস্তাব দেয় যে আমি যদি তাকে বিয়ে করি ঐশীর ভবিষ্যৎ টা ভালো হবে। আর বাবৈয়ের পড়াশোনা গান বাজনা ও কোনো সমস্যা হবে না।


তারপর আমাদের বিয়ে হয়। আমি চেয়েছিলাম ব্যাপারটা কোর্ট ম্যারেজ হয়ে থেমে যাক। কিন্তু সুকান্ত বাবু নিজের একমাত্র পুত্রবধূর ধুমধাম করে বিয়ে দেন। বছর খানেক ঐশীর ব্যাপার গোপন রাখা হয়। আর পরে ঐশী যে অনিলের মেয়ে সেটা বলা হয়। 


কিন্তু আমি তো মূর্খ ছিলাম। আমি বুঝিনি আমি নিজে হারিকাঠে গলা দিচ্ছি। এটা মঙ্গলসূত্র নয় শ্রেষ্ঠা… এটা হলো সোনার বক্লেস.. স্লেভ কলার যেটা দিয়ে দেব রায় পরিবার আমায় বেঁধে রেখেছে। 


ঐশী কানে হেডফোন থাকায় কিছু শুনতে পাচ্ছে না।


বাবাই কে আমি বকাবকি করে দুইদিনের ভিতর হোস্টেল এ পাঠিয়ে দেওয়া… তারপর মাস দুয়েকের ভিতর বিয়ে আর সব শেষে ঐশীর খবর বাবাই এর ভুল ধারণা কে একটা বাস্তব আক্ষা দেয়।
আর এসব ছিল অনিল আর সুকান্ত দেব রায় এর চাল। যাতে আমি আমার একমাত্র সম্বল কে হারাই। 
আজ আমি ভাবি যে বাবাই কে ওর জেম্মা আর বোনের ব্যাপারে খুলে বললে ছেলে আমার বুঝত।
কিন্তু এখন তো বলেও লাভ নেই। 
অনিল যে শারীরিক ভাবে সক্ষম সেটা প্রমাণ করতে অনেক খরচ করে ওরা ডিএনএ রিপোর্ট ও বানিয়েছে। 


আর আমার ঘটা করে বিয়ের অনুষ্ঠান বাবাই লাইভ দেখেছে… । 


ঐশীর যখন 11 বাবাই তখন স্কুল থেকে পাস করেছে। কলকাতায় ফিরে এসে গেছিল তার বাড়ি। যেটা আমায় দিয়ে অনিল বিক্রি করায়।


অনিল আমায় বলেছিল যে বাড়ির যা অবস্থা , ধুলো , ঝুল পড়ে… আমার নিতান্ত প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আমি যেনো চলে আসি.. ।


আমি বাবাই এর বাবার স্মৃতি, আর আমার পরিবারের ফটো নিতে চাইছিলাম… 
অনিল বলেছিল পরে অনিয়ে নেবে … কিন্তু সেটা ও করেনি। আমিও রেকর্ডিং, ট্যুর, প্লেব্যাক এ ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।


বাবাই ওর বাড়ি গিয়ে ওর বাবার সামগ্রী বাইরে ফেলা দেখে দেব রায় ম্যানসন এ ভীষণ অশান্তি করে। বাবাই এর রুদ্র রূপ দেখেছিল সেদিন সবাই। ও যে আদিনাথ এর ই ছেলে এটা দেখে আমার যেমন ভালো লাগছিল নিজের ওপর রাগ হচ্ছিল বেশি। আমি কেনো পারলাম না ওর বাবার স্মৃতি আগলে রাখতে? কেনো পরিস্থিতি কে দোষ দিচ্ছি? আমিও তো সাফল্য উপভোগ করেছি।
একটা বিরাট ঘর শুধু ট্রফি, সার্টিফিকেট, মেডেল, আওয়ার্ড, আর ছবি তে আর গিফট এ ভরা।


বাবাই এর এই রুদ্র রূপ দেব রায় রা ভালো ভাবে নেয়নি। আমায় হুমকি দেয় আমার বর্তমান শশুর যে ছেলের ক্ষতি না চাইলে ওকে এখানে ভদ্র ভাবে থাকতে বলো অথবা চলে যেতে বলো।


ঐশী ও কম যায় না। ওর দাদাকে যা নয় তাই বলে। ঐশীর কাছে ওর দাদা একটা গুন্ডা গোছের লোফার ছেলে যে কোনকিছুতেই ভালো না।


বাবাই আমার সাথে ফ্রাঙ্ক নয়। দেব রায় ম্যানসন এ আমি ওকে একপ্রকার নিজের দিব্যি দিয়ে আটকে রাখি। 


প্রধান বাড়ির ছেলে ও। মেধা, শক্তি, আর প্রতিভা ওর রক্তেই আছে। সেদিন যদি বলতাম অশান্তি না করে চলে যা.. ফিরে ও তাকাতো না। ওর নামে 6 টা স্কলারশিপ আছে যার মোট রাশি 6 লাখ টাকা। 
ইচ্ছে করলে ও এখন কোনো ভালো কলেজে ভর্তি হয়ে নিজের মতই থাকতে পারে। 


কিন্তু আমি তো পারবো না। আমি জানি শ্রেষ্ঠা তুমি আমায় লোভী , স্বার্থপর, ভীতু ভাবছ। এটাই তো ঠিক। কিন্তু আমি আমার বাবাই এর ভালো ছাড়া কিছু চাইনি। 


বাবাই এর গানের গলা খুব গভীর আর দূর্দান্ত গলার কাজ। দাদাভাই এর মত গলার স্বর। 
ওর বাবার মতো চেহারা। 
অনিল এর সহ্য হতো না। অনিল কে আমি বিয়ে করেছি তাই স্ত্রী ধর্ম পালন করি। কিন্তু ভালো তো বাসি আমার আদিনাথ আর আধিরাজ কেই।


অনিল তাই একদিন অধিরাজ এর সবচেয়ে দুর্বল নাড়ি তে হাত দিল.. 
ওকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল।
এতই যখন অহংকার নিজের ওপর, পারলে ঐশী কে হারিয়ে দেখাক।
বাবাই ফালতু চ্যালেঞ্জ ন্যায় না।
ও জানে ঐশীর গানের কোনো ট্যালেন্ট নেই। 
অটটিউন সরালে ওর গান সোনার মত থাকে না।
পশ্চিমী গায়িকা দের অনুকরণ এর চেষ্ট করে ঐশী। 
এখন আমি বুঝলাম না অনিল এই কাজ কেনো করলো? 
কারণ বাবাই এর সামনে খালি গলায় গাইলে ঐশী শুধু হারবেই না … একটা হস্যকৌতুক হয়ে যাবে… ।
বাবাই সরাসরি অনিল এর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলো। 
এবার অনিল চাল্লো তার সবচেয়ে ধূর্ত চাল।
তুমি নিজেকে ভাব তোমার চেয়ে বেটার কেউ নেই তাইনা? তুমি রাজনন্দিনী দেবরায়ের ছেলে । এ ছাড়া কি তোমার পরিচয়? তোমার মত লাখ লাখ ছেলে মেয়ে স্কুল কলেজে টপ করে বসে আছে…
ভারতে তোমার পরিচয় কি? 
ঐশী কে দেখো… তোমার চেয়ে মেরেকেটে 3 বছর ছোট, তাতে নিজের একটা মিউজিক অ্যালবাম বার করে ফেলেছে… কনসার্ট করছে… তোমার মায়ের সাথে লাইভ গাইছে.. তুমি … কি পারো তুমি অধিরজ প্রধান? 
বেশ তুমি যদি পারো ঐশীকে হারিয়ে দেখাও। যদি পারো আমি কথা দিচ্ছি তোমার মা কে দিয়ে কোনো কন্ট্রাক্ট সাইন করাবো না।
আমি জানি তুমি চাও না তোমার মা আমাদের হয়ে গান করুক , তুমি চাও তোমার মায়ের নিজের ব্র্যান্ড। বেশ তাই হোক। 
তবে তুমি যদি হারো কোনোদিন লাইভে না গাইবে না তবলা বাজাবে। ভেবে দেখ প্রধান… তোমার হারানোর অনেক কিছু আছে…


আমি রাজি।


বাবাই! এটা কি বলছিস বাবা! না না অনিল বাবাই কি বলছে ও বুঝছে না। 


আঃ, হচ্ছেটা কি রাণী!! অনিল ধমক দেয় রাজনন্দিনী কে। 


আদি চোয়াল শক্ত করে। নন্দিনীকে সে ভালবাসে না । কিন্তু মায়ের চেয়ে আপন কেউ নেই। তাই দেব রায় দের এই অত্যাচার সে নিতে পারে না।


তার মা কে এরা দাসীর মত পরিশ্রম করায়। আর আইনের জালে এমন পেঁচিয়ে রেখেছে যে না এদের থেকে বেরোতে পারবে না নিজের কিছু খুলতে পারবে। লোকে গান শুনবে চলে যাবে। এটা দেখার কারো না প্রয়োজন না দরকার যে গায়িকা কোন অবস্থায় আছে।
সেলুন, চায়ের ঠেক, ট্রেনের বাসের সিট এ যেতে কানে হেডফোন পরে বা রেডিওতে গান চালিয়ে বলবে … না আগের মত নেই… গায়িকা লেজেন্ড, কুইন অফ ক্লাসিকাল, গডেস অফ ইন্ডিয়ান মিউজিক ইত্যাদি ভারী ভারী উপাধি আর হ্যাশট্যাগ এর তলায় চাপা পড়তে পড়তে হারিয়েই যাবে। 


বাবাই ওর মায়ের ঘরে সিগারেট আর ওয়াইন দেখেছে। হুইস্কি ও দেখেছে। ওর মা যে এখন এগুলোর আশ্রয়েই টিকে আছে… ।
আগের ক্লাসিকাল আর জমছিল না। 
তাই চটক গান থেকে শুরু করে আইটেম সং অবধি করানো হয়েছে ওকে দিয়ে।
জনতা অবাক ও হয়েছে আবার সাদরে গ্রহণ ও করেছে। 


Adhiraj ঠিক করে, হয় এবার এই নরক থেকে ওর মা কে উদ্ধার করবে ওর সেই অস্ত্র দিয়ে যা ওকে ওর মা আর ওর বাবা দিয়েছে অথবা রণভূমিতে অস্ত্রত্যাগ করবে সারাজনমের মত। 
[+] 4 users Like মহারাজ's post
Like Reply
#10
ভীষ্ম প্রতিজ্ঞা ও সিজারের মৃত্যু


6 রাউন্ডের প্রতিযোগিতায় 
আদি আর ঐশী সহ আরো 30 জন সঙ্গীত শিল্পী অংশ গ্রহণ করে…
নানা রকমের কৌশল , লোকগীতি, আধুনিক গান , এছাড়াও বাদ্য যন্ত্র প্রতিযোগিতা…
ফাইনালে আদি তো থাকবেই… 
তবে ঐশী কে বেগ পেতে হচ্ছিল খুব। 
ওর সামনে প্রতিপক্ষ ছিল একটি মেয়ে যে ক্লাসিকাল গায়িকা আর ঐশী আধুনিক।
বাদ্যযন্ত্র রাউন্ডে ঐশী বেঁচে নেয় ড্রাম আর মেয়েটি বাঁশি। মেয়েটির সুবিধা হচ্ছিল আধুনিক গানের সাথে বাঁশি বাজিয়ে কিন্তু ক্লাসিকাল এর সাথে ড্রামস? 
ঐশী ও তো আসলে প্রধান বাড়ির ই মেয়ে।
গিরিরাজ আর অম্বিকা প্রধানের মেয়ে।
ঐশী খুব বিখ্যাত একটি গান যেটি সেমি ক্লাসিকাল তার সাথে ড্রাম বজায়। গানটি ছিল আইগীরি নন্দিনী…
জনতা খুশি, জাজেসরা খুশি, আর মাত্র এক নম্বরের ফারাকে ঐশী ফাইনালে।
এখন লড়াই এসপার না অস্পার।


হয় আজকের পর আদি তার হারানো জীবনের সুখ আবার ফিরে পাবে না হয় সে সারাজীবন এর জন্য জনসমক্ষে গান গাইতে পারবে না।
অনিল আর আদি কন্ট্রাক্ট সই করেছে।


নিজের বাবাকে স্মরণ করে আদি গান শুরু করল।
এই রাউন্ড খালি গলায় গানের রাউন্ড।
এই রাউন্ডে আদি নিশ্চিত জিতবে। 


আদির মা যে কিনা জজ সে ও  চায় আদি জিতে তাকে এই নরক থেকে উদ্ধার করুক…
কিন্তু অনিলের কথা মনে পড়তেই তার হাত পা কাঁপতে শুরু করে… ।
অনিল বলেছে যদি নন্দিনী ঐশী কে না জেতায়, ঐশী কে সে সব বলে দেবে যে সে তাদের নিজের সন্তান নয়। শুধু তাই নয়, ঐশী যে ভালো গায়িকা এই ভুল ধারণা ও অনিল ভেঙে দেবে… ঐশী নিজের সমালোচনা নিতে পারে না। ও কিন্তু এবার মারা যাবে। 
আর আদি যদি জিতেও যায় এখান থেকে প্রাণে বাঁচবে না… দর্শক দের মধ্যে আগেই লোক আছে … তারা আগে প্লাস্টিক এর বোতল টুকি টাকি ছুড়বে তারপর কাচের বোতল আর ভারী জিনিস ছুড়ে মারবে এদিকে সিকিউরিটি ওকে বাঁচাতে এলে জনতার ভিড়ে পরে ও মারা যাবে আর যেহেতু ভিড়ের কোনো চেহারা হয় না , তোমার একমাত্র ছেলের প্রাণ যাওয়াটা একটা নিছক অ্যাকসিডেন্ট হয়ে পড়ে থাকবে । তুমি তোমার মেয়ে আর ছেলে দুজন কেই হারাবে রাণী। 
এখন তুমি ঠিক করো, ছেলের সাথ দিয়ে ওকে মৃত্যুতে ঠেলে দেবে না ওকে ধোখা দিয়ে প্রাণে বাঁচাবে… 


তুমি মানুষ না অনিল… পিশাচ তুমি!!
You're devil Anil!!
A demon you are!!


এবার অনিল সত্যিই শয়তান এর মত বলে 
Yes, I am a devil and you, my sweetheart,are our golden egg laying goose..


আদি করেছিল শংকর মাহাদেবন এর বৃথলেস টা। 30 এ 27। 
ওদিকে ঐশী করেছিল একটি অপেরা সং।
দর্শকরা এবার অতটা উৎসাহী ছিল না। 
অনেকে তো কান চাপা দিয়েছিল।
কিন্তু রেজাল্ট 30 এ 30!


আদি প্রশ্ন করে , বিচার চায়, এটা অন্যায়।


নন্দিনী জবাব দেয়… মিস্টার প্রধান আপনার গান টা অসাধারন । তবে মিস দেব রায় এর প্রত্যেকটা নোট ঠিক ছিল। আপনি কিছু জায়গায় শ্বাস নিয়েছিলেন.. তাই এই প্রতিযোগিতার বিজয়ী ঐশী দেব রায়।


তবে আমরা চাই আপনিও পুরস্কার পান । মাত্র দুই নম্বরের তফাৎ। আপনারা দুজনেই বিজেতা!


না। এটা আপনারাও জানেন আর আমিও জানি যে অপেরা তে পিচ টা কতটা জরুরি । কোনটা শুনতে ভালো লাগে আর কোনটায় কান চাপা দিতে হয়। তাই আমার অনুরোধ আপনারা রি ইভালুয়েট করুন স্কোর টা।


মিঃ প্রধান আপনি এভাবে জজ দের স্কোর সয়াল করতে পারেন না… । 


দাড়ান । এবার sh group এর vp অনিল দেব রায় স্টেজে এসে জায়ান্ট স্ক্রিন এ একটা গ্রাফ দেখান যেখানে আদির কোথায় কোথায় সুর , তাল, ছন্দ, লয় কেটেছে সেটা দেখায়। আর ঐশীর ও। দেখা যায় ঐশীর বেশিরভাগ ঠিক।


তাহলে আদি তুমি কথা রেখ।


এই বলে ঐশী আর আদিকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
ঐশী উৎসাহের সাথে পুরষ্কার নেয়।
কিন্তু আদি স্টেজ ছেড়ে যায়।
ঐশী কে পুরস্কার দিয়েই নন্দিনী পড়ি কি মরি করে ছোটে আদির পেছনে।
বাবাই… শোন.. বাবাই রে.. অন্ধকারে কোথায় যাচ্ছিস …বাবাই দাঁড়া…


আদি ওর দিকে তাকায় ওর চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে ওর চোখে জল…


নন্দিনী এর বুক কাপে… এই চোখ বিভীষিকা! 
রক্ত হিম করে দেওয়া!


বা.বাবাই..


কেনো করলে.. শেষ অবধি তুমিও? 


নন্দিনী চুপ। কি বলবে ? এটা বলবে যে প্রাণে বাঁচানোর জন্যে এটা করতে হয়েছে ওকে? 
আদি তো বলবে প্রাণের ভয় করে না কিন্তু এই প্রতিজ্ঞা তো ওর থেকে গান কে আর ওর তবলা বাজানোর সব সাধ্য নিয়ে নিল।
দেব রায় ম্যানসনে ও এখন কি করে থাকবে? 


আদি বলে। শুধু তোমার জন্যে তোমার নতুন পরিবারের উঠতে বসতে অপমান আমি সহ্য করি। যাতে আমার রাগ তোমার ওপর না ঝারে।
আর তুমি ঐ অনিল দেব রায়ের কোথায় আমায়… আমায় ছুরি মারলে?? 


How could you maa? How could you?


বলে আদি জোরে জোরে কাঁদতে থাকে।


এদিকে মা কে খুঁজতে খুঁজতে ঐশী ও এসেছে এই পেছন দিকটায়।


আরে তোমরা এখানে?
এই যে তোমার ট্রফি।
তুমি কিন্তু দারুন গাও। আমি তো ভাবিইনি আমি তোমায় হারিয়ে জিতেছি! It's so surreal! 


আদি ওর শার্ট এর হাতায় নিজের চোখ মোছে আবার নিজের ভারী গলায় বলে।
তুই আমায় হারিয়ে জিতিস্নি। তোকে আমায় বিট্রে করে জেতানো হয়েছে।


What rubbish।


এটাই সত্যি। তোর গান শুনে তো সবাই কানে হাত দিয়ে বসেছিল। যা গিয়ে রেকর্ডিং দেখ।
আদি রেগে গিয়ে বলছে।


ঐশী এবার কাঁপতে থাকে ওর হাথ থেকে আদির ট্রফিটা পড়ে যায়। 
মিথ্যে… মিথ্যে মিথ্যে মিথ্যে!! মিত্থে বলছো তুমি!!
You're a liar !! You … you are jealous of me… YOU ARE JEALOUS OF ME!!
 হিংসে করো তুমি আমায়। বলতে বলতে ঐশীর নাক থেকে রক্ত পড়তে শুরু করে।
নন্দিনী ছুটে যান মেয়ের কাছে।
ঐশী জ্ঞান হারাবে… মা ও আমায় হিংসে করে বলো? ও খুব পচা…ওকে বকে দিও…
আঃ মামন এত কথা বলিস না । রেস্ট নে মা..
না আগে বলো..
হ্যাঁ ও পচা , তোকে হিংসে করে … এবার ঘুমো মা..
নন্দিনী কথা গুলো ঐশী কে শান্ত করার জন্ন বললেও রাগে উন্মাদ আদি ওগুলোই সত্যি বলে ধরে নেয়।
নিচে পড়ে যাওয়া ট্রফির থেকে ভেঙে থাকা একটা কাচের টুকরো নিয়ে নিজের বা হাতের তালু কেটে মাটিতে রক্ত ফেলে বলে…
যতদিন এই মাটি থাকবে আমি ধরে নেব আমার মা মৃত। দেব রায় পরিবারের সাথে আমার সম্পর্ক নেই। 


নন্দিনী , ঐশী কে খুঁজতে অনিল ও লোকজন কে নিয়ে আসে… এসে দেখে ঐশী অজ্ঞান আর নন্দিনী? ওর যেন দেহ থেকে আত্মা বেরিয়ে গেছে…
অনিল ওকে ডাকতেই নন্দিনী উদভ্রান্তের মত তার ছেলে কে খুঁজতে শুরু করল…
অনিল ইশারা করল আর ডাক্তার নন্দিনী কে ঘুমের ওষুধ দিয়ে শান্ত করলে।



এরপর আদি তার জিনিসপত্র নিয়ে আসে ।
যদিও যাওয়ার আগে সবার কাছে আশীর্বাদ নেয়।
ঐশী কে ও চকলেট দেয়।
আর হেসে বিদায় নেয়। এই হাসি চেহারার মুখোশ ও সেদিন পড়েছিল আর 


আজকে সেই মুখোশ আলগা করল শ্রী এর ব্যবহার।


এতক্ষণ শ্রী সব শুনল।
নন্দিনী কে প্রশ্ন করল …
আপনি ওকে যেতে দিলেন? 
আমি দেইনি রে মা… বিশ্বাস কর… ওরা আমায় ঘুমের ওষুধ দিয়ে রেখেছিল।


তারপর যখনই অনিল জানতে পারল যে তুই আদি কে আবার আকাশে ওড়ার ডানা দিয়েছিস ও তোকেই ওর থেকে আলাদা করে দিল। 


আর আমার পোড়া কপাল দেখ… ছেলের সাথে দেখা যদিও বা হবে আমায় দেখবে ওর ঘর ভাঙ্গানি হিসেবে… 


মা আমরা তো প্রায় এসে গেলাম… 


এ দেখাই শেষ দেখা নয় তো? 


শ্রী একটা সাদা কুর্তি পড়া, পায়ে ক্রিম রঙের হাই হিল, বা পায়ে আদির দেওয়া সোনার তোরা, ডান হাতে এক গোছা চুরি কপালে ছোট্ট কাল টিপ চোখে কাজল চুল টা ছাড়া। হাতে একটা আইফোন। অনিল আঙ্কেল গিফট দিয়েছেন । 


রাজনন্দিনী একটা সোনালী পাড়ের সবুজ শাড়ী পড়েছেন। গলায় সোনার হার , মঙ্গল সূত্র, হাতে শাঁখা, পলা, সোনার বালা, চুরি, সিঁথিতে অল্প সিঁদুর। দীর্ঘাঙ্গী নন্দিনী কে বেশ দেবী দেবী লাগছে । এত ও সাজে না আজকে সেজেছে। 


আর ঐশী একটা রিপড ডেনিম, একটা ব্ল্যাক ট্যাংক টপ তার ওপর একটা রেড চেকার্ড শার্ট আর টুকিটাকি গয়না পড়ে আছে।


তিন জনেরই লম্বা চুল। নন্দিনী এর চুল তার হাঁটু অবধি ছোট ছোট ঢেউ যুক্ত, শ্রেষ্ঠা এর চুল কোমর এর একটু নিচ অবধি যায়। আর ঐশী এর চুল যায় তার থাই অবধি। 


আদির বাড়ির সামনে এলে পরে দেখে আদি একটা ছোটা হাতি (টাটা এস ace) গাড়িতে তার ছোটখাটো জিনিসপত্র তুলছে ।
আজকে একটু গরম আছে… ছেলেটা হয়তো ভালো করে খায়নি ঘুমায়নি।
শ্রী এর মনে হয় নিকুচি করেছে রাগ অভিমানের দরকার হলে আদির ওই বিরাট হাতের মার সহ্য করবে কিন্তু আদিকে কষ্ট পেতে দেবে না। 
আদি টেম্পো টাকে বিদায় দিল। 


পেছনে ফিরে দেখে 3 জন কে। কোনো সাধারণ মানুষ যদি এখন থাকতো সে ভাবত সে স্বপ্ন দেখছে। আচ্ছা পাঠক এর সুবিধার জন্য বলি ধরো তোমার সামনে সুনিধি চৌহান, শ্রেয়া ঘোষাল আর নীতি মোহন আছে তোমার যা অবস্থা হবে সেরকম ই ব্যাপার। 


ও তুই এসে গেছিস…যাক ভালো হলো…
নন্দিনী কে পায়ে হাথ দিয়ে প্রণাম করে 
বলে ভালো আছেন ম্যাডাম? 


নন্দিনী কি বলবে কি করবে বুঝতে পারে না সে পুরো ফ্রিজ হয়ে যায়…
কোনো রকমে আটকে আটকে বলে 
হ.. হ্যা..ভালো..ভালো আছি ভালো আছি..
তুমি..কেমন আছো? 


আদি কিছু বলে না একটা হাসি দেয়।


ঐশীর দিকে দেখে বলে… তুই ঐশী তাই তো..
আমি adhiraj । তুই আদি দা বলতে পারিস।


ঐশী ও অবাক । দাদান এমন করছে কেন? এমন তো নয় ওকে চেনে না।


ঐশী একটা সৌজন্যে হাসি হাসলো…


সে এবার কানে কানে তার মা কে বলল…
মা তোমার ছেলের কি হয়েছে বলো ত? 
ওর না আমাদের দেখলে আগে মারা তারপর প্রশ্ন করার কথা… 


নন্দিনী বলে যা হচ্ছে হক । অত মাথা ঘামাতে জাস না। তবে এটা ঝড়ের আগে শান্তি। নিজেকে প্রস্তুত রাখ। 


এবার ঐশী শ্রী এর কানে কানে বলে তুমি ওকে কত ত্রমা দিয়েছ? যে আমাদের সাথেও হেসে কথা বলছে…??


কি হ্যান্ডসম লাগছে বলো..কিন্তু অমন রোগা রোগা লাগছে কেনো? কিছু খায়নি নাকি? 


অ্যা? তুমি কি বলছো? হ্যালো পৃথিবী টু শ্রেষ্ঠা.. 


হ্যাঁ .. ইয়ে না মানে কিছু বলছিলে? 


নাহ থাক। আমার যা বোঝার বোঝা হয়ে গেছে।


আদি এবার ডাকে আরে আপনারা বাইরে কেনো ভেতরে আসুন..।


এবার নন্দিনী কে বলে আপনি কফি না চা নেবেন? 
ঐশী তো কফি খাবে..
আর শ্রেষ্ঠা এর জন্য লেমন টি…


নন্দিনী বলে না না কিছু লাগবে না… ।
আরে ম্যাডাম আপনার সাথে এটাই হয়তো শেষ দেখা.. 
নন্দিনী আর শ্রেষ্ঠা এর মুখ সাদা হয়ে যায়… ।
আরে আমি বলতে চাইছি যে এই বাড়ির ওনার হয় পুরো বাড়ি দেবে না হয় দেবে না এবার আমার স্টুডিও তো আপনারা কেড়ে নিচ্ছেন। আমার তো মাথা গোঁজার ঠাঁই লাগবে…


শ্রেষ্ঠা এর মা বাবা বলেছিল জলপাইগুড়ি গিয়ে থাকতে … কিন্তু যে মেয়ে আজ অন্যের কথায় আমায় অবিশ্বাস করে আমায় এক প্রকার বাড়ি ছাড়া করল পরের বার একই কাজ করবে না এর প্রমাণ কোথায়? 


আদি..! 


কি? সোহিনী এর সাথে কথা হয়নি ? 
আমি তো দেখলাম সকালে তোর নাম ট্রেন্ড এ।
আর ফ্লাইওভার এর কাছে যে বড় ব্যানারটা ওখানেও তো তোর বড় ছবি! আরিববাস নতুন ফোন! আরে এটা তো 15 প্রো ম্যাক্স 
এই শোন না আমার একটা ফটো তুলে দিস তো আর হ্যা তোদের সাথে একটা সেলফি ও নেব, আমার কলিগরা পুরো জলে কয়লা হয়ে যাবে। 
ও যেটা বলছিলাম… হ্যা সোহিনী.. 
ও তো বলেছে যে ও একটা ফাইল কপি করেছে ।
আর যেহেতু এটা অলরেডি sh এর কাছে ছিল তাই আমি যখন পোস্ট করলাম আমি ফেঁসে গেলাম…. । 


থাক। যা হয়েছে হয়ে গেছে। তার চেয়ে বরং আমরা একটু চা কফি খাই।


এই যে ঐশী তোর ক্যাপাচিনো উইথ এক্সট্রা সুগার।
শ্রেষ্ঠা এর লেমন টি উইথ হানি।
আর এটা আপনার জন্য ম্যাডাম
লাল চা সাথে এক চামচ মধু আর অল্প লেবুর রস দেওয়া।
নন্দিনী চা নিয়ে চুমুক দিতেই মনে পড়ে যায় আদিনাথ এর কথা। 
যখন নন্দিনী ওর নতুন বউ । কিছু পারতো না। খালি গান জানত আর পড়াশোনা।
আদিনাথ বলত তাতেই হবে । তুমি তোমার শিল্পে ধ্যান দাও তো …. বাকি সামলানোর জন্য তো আমি আছি নাকি।
নন্দিনী এর রেওয়াজ এর আগে এই চা ছিল মাস্ট।
পরে নন্দিনী আদিনাথ এর পাক্কা গিন্নি হলেও আদিনাথ বাড়ি থাকলে ভোরে নন্দিনীর স্পেশাল চা আদি ই বানাবে।


নন্দিনী এর চোখে জল। 


আদি ওর দিকে চেয়ে আছে… যেনো কিছু শুনতে চাইছে।
আদি বলে , ভালো হয়েছে ম্যাম? আসলে আমার বাবা যত দিন বেঁচে ছিলেন ততদিন এই রকম করেই মায়ের জন্যে চা বানাতেন… আমার মা এর খুব পছন্দের এটা…
বাবাই… 
আদি কিছু বলে না।


কি রে তুই বসে আছিস কেন? 
নতুন বাড়িতে কি স্পেশাল দার্জিলিঙ চা খাওয়াচ্ছে? দেখ এই মুহূর্তে তুই আমায় পথে বসিয়েছিস। আমার আবার আগের অবস্থায় ফিরতে সময় লাগবে… । তবে তোর জন্য ভালো খবর… । তোর তো 5 বছরের কন্ট্রাক্ট! 
আমিও ভাবছিলাম এই শহরে আর কিছু নেই আমি তাই মুম্বাইয়ে একটা কর্পোরেট ল ফার্ম এ এই ক বছর কাজ করব। 
ততদিন তোর যদি এই লোফার লোকটা মনে ধরে তো ভালো। আর তোর সাফল্য যেমন নন্দিনী ম্যাডাম আর ঐশী এর আছে সেটা বড় হয় তো তুই সেরকম ও থাকতে পারিস। 
তবে ওই 5 বছর। আর আমি যদি জানতে পারি যে তুই দীপিকা পাডুকোন হয়ে একে তাকে ডেট করছিস অথচ আমি তোর কাছে জাস্ট একটা অপশন, সরি বস, আমি রণবীর সিং নই। আমার হারানোর কিছু নেই।
প্রথমে মা শৈশব কেড়ে নীল,
বোন কেড়ে নীল স্বপ্ন
প্রেয়সী কেড়ে নিলো আশা।
তোর কথাই খেটে গেলো।
Adhiraj is nothing but an empty shell।


বলে আদির চোখের থেকে দু ফোঁটা জল পড়ল।


আদি এর কথা শুনে ওরাও দুঃখী।


আদি এবার নাক মুছে গলা ঝেড়ে মুখে জল দিয়ে এসে এক গ্লাস জল খেলো।
তারপর শ্রেষ্ঠা কে আডিশ্রি স্টুডিও আর maskedmaker prodcution এর সত্ব হ্যান্ড অভার এর কাগজ গুলো দিল। 


বলল , দেখ এখানে তুই সই কর, ম্যাম আপনি এখানে করুন আর ঐশী এখানে হ্যা জার জার নামের পাশে।
হ্যাঁ আমি দীপ্ত কে ও ডেকেছিলাম …ওই তো! 
আর ইনি হলেন অজিত দা। 
একজন কাল কোট পরা মাঝ বয়সী লোক আর আদির বয়সী একটি ছেলে এল।
এবার সবাই সই করলো।
অজিত বাবু বললেন এবার থেকে আডিশ্রী স্টুডিও আর maskedmaker প্রোডাকশন এর সব সত্ব শ্রেষ্ঠা সিংহ আর তার পার্টনার দের হ্যান্ডোভার করা হলো। উকিলের উপস্থিতি তে আর কোনো জোর জুড়ি ছাড়াই কাজ টি হয়েছে। 


অজিতবাবু কে এগিয়ে দিয়ে এসে আদি বলে
তাহলে কাজ শেষ..শ্রেষ্ঠা আর জলাচ্ছি তোকে ।
আমি আমার মেল ইগো ভরা এই ফাঁপা শরীর নিয়ে বিকেলের ফ্লাইটে চলে যাবো।


আদি দা.. আদি দা … শোনো না.. লক্ষ্মীটি আমার দিকে তাকাও
শ্রেষ্ঠা আদির মুখ তার দিকে তুলে আনে তার দুই হাথ দিয়ে…
তুমি এসব কি বলছো? .. কোথায় যাবে ? 
আমার দিকে তাকাও…
ছাড় আমায় শ্রী..
না, ছাড়বো না.. আদি দা… কোন কাপল এ ভুল বোঝাবুঝি হয় না? তাই বলে তুমি আমাদের সংসার ভেঙে দেবে?
শ্রী ঝগড়া হলে তবুও আশা ছিল… তুই তো আমায় কিছু বলার আগেই আসামি ধরে ছিলি..
তুই আমার বিরুদ্ধে fraud এর কেস করেছিস!
তুই এর মানে ও বুঝিস?
ভুল করেছি আদি দা… তুমি … তুমি এক কাজ করো… তুমি আমায় মারো, হ্যা যতক্ষণ আমি আমার ভুল না বুঝতে পারি আমায় মারো… কিন্তু আমায় ছেড়ে যেও না… আমি পাগল হয়ে যাবো…
শ্রী তুই এত সেজে এসেছিস … আজ তো তোদের উৎসব! দেখ আমি আজ নিঃস্ব। আমি আজকে শূন্য।
না না না … আদি দা.. এ সব তুমি কি বলছো আদি দা…
বাবাই… মেয়েটাকে ক্ষমা কি করা যায় না?
ম্যাডাম … ক্ষমা করা যায় তখনই যখন লেভেল টা সেম থাকে…
শ্রী এখন আমার চেয়ে অনেক অনেক ওপরে… ওকে ক্ষমা করা আমার কাছে ধৃষ্টতা।


আচ্ছা আমার লেট হচ্ছে।
দ্বীপ… একটা ফটো নিবি..?
আদি আবার ওর চোখ মোছে..
শ্রী এর চোখ মুছিয়ে দেয়..
এই এদিকে তাকা… একটা অনুরোধ রাখবি? 
না কোনো অনুরোধ নয়… তুমি এরকম কেনো করছ ? আমার… খুব কষ্ট হচ্ছে.. 
শোন তুই আমার কথা না শুনিস তাহলে আমি এমনিই চলে যাবো। দ্বীপের ও দেরি হচ্ছে ।
আচ্ছা বেশ… বলো কি করতে হবে..
তোর নতুন ফোন একটা ছবি তুলতাম…
দেখ অত দামী ফোন কেনার ক্ষমতা আমার নেই।
একটু লোভ হলো… তোর আপত্তি থাকলে বলতেই পারিস…
এরপর দীপ্ত শ্রেষ্ঠা এর সাথে আদির কম করে হলেও 30 টা ফটো তুলেছে।
আর ওর মা, বোন আর প্রেমিকার সাথেও ভালো কয়েকটা।


আদি এবার বলে গেলো থ্যাঙ্কস।
আর শ্রী তোকে থ্যাঙ্কস আমার বাকি আমি টুকুকে ও শেষ করার জন্ন।


5 বছর পর দেখা হবে সবার সাথে বাই।


বলে আদির লাল কালো থার টা ধুলো উড়িয়ে চলে গেলো… পেছনে পড়ে রইলো সাফল্যের চূড়ায় ওঠা অর্থ, নাম, যশ এ পরিপূর্ণ তিন ভিখারিনী।
[+] 8 users Like মহারাজ's post
Like Reply
#11
Speechless
[+] 1 user Likes Bapon's post
Like Reply
#12
অসাধারণ লেখা
[+] 1 user Likes Fardin ahamed's post
Like Reply
#13
(17-02-2024, 01:49 PM)Fardin ahamed Wrote: অসাধারণ লেখা

Emon bhabei pashe thakun
Like Reply
#14
Awesome
Like Reply
#15
Juat outstanding
[+] 1 user Likes Jibon Ahmed's post
Like Reply
#16
Next update??
Like Reply
#17
Update plz... Namaskar
Like Reply
#18
খুব ভালো লাগলো  clps লাইক আর রেপু দিলাম

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply
#19
আপডেটের অপেক্ষায় রইলাম ........
[+] 1 user Likes kapil1989's post
Like Reply
#20
Next Update????
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)