21-11-2022, 03:20 AM
(This post was last modified: 08-10-2025, 01:53 PM by Manali Basu. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
আইটি সেক্টরে কর্মরতা স্বাধীন প্রতিষ্ঠিত নারী মেঘনা। অজিত মার্চেন্ট নেভিতে চাকরি করে, তাই বেশির ভাগ সময়ই তাকে বাইরে থাকতে হয়। তিতান এখন কেজি টু তে উঠেছে। বাবা বাইরে থাকায় মা-কেই অফিস সামলে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হয়। বাড়িতে দেখা শোনার জন্য যদিও কমলা মাসি থাকে তাও মা হিসেবে নিজের কর্তব্য পালনে বদ্ধপরিকর মেঘনা। অফিস যাওয়ার আগে রোজ নিজের ছেলেকে স্কু'লে পৌঁছে দিয়ে যায়। ছুটির সময়ে অবশ্য কমলা যায় আনতে।
সেদিনটাও ছিল সেরকমই গতে বাঁধা একটা দিন। লেক গার্ডেন্স থেকে যোধপুর পার্কের স্কু'লে ছেলেকে পৌঁছে দিয়ে মেঘনার সেক্টর ফাইভে যাওয়ার কথা ছিল। তিতানকে স্কু'লে ঢুকিয়ে দেয়ার পর যখন সে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে যাবে তখুনি মুষলধারে বৃষ্টি নামলো। সকাল থেকেই আকাশের মুখটা ভার হয়েছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি তার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে সেটা আন্দাজ করা যায়নি।
বাস স্টপে আটকে পড়লো মেঘনা। বাসের দেখা নেই। বৃষ্টি যত তীব্র হচ্ছে ততই হ্রাস পাচ্ছে শহরের যান চলাচল। বাস তো দূরের কথা, অটো পর্যন্তও চোখে পড়ছিলো না। তিতানকে নিয়ে চিন্তা ছিলোনা কারণ ও স্কু'লের ভেতরে রয়েছে। কিন্তু মেঘনা? সে এখন কি করবে? এমতাবস্থায় তো বাড়িও ফেরা সম্ভব নয়।
বাস স্টপে পথচারীদের ভীড় বাড়ছিল। সবাই বৃষ্টি থেকে গা বাচাতে স্টপেজের শেডের তলায় আশ্রয় নিতে চাইছিল। মেঘনা বুঝলো এরকম চলতে থাকলে হয়ে তার সাফোকেশন হবে নাহয় ভিড়ের ঠেলায় তাকে ছাউনি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সামনেই সাউথ সিটি মল। মেঘনার জন্য এর থেকে ভালো আস্তানা কিছু হতে পারতো না। তাই দেরি না করে দৌড়ে গিয়ে রাস্তা পার করে মলের ভেতর ঢুকে পড়লো। জামাকাপড় অল্প ভিজে গেল বটে, কিন্তু তাতে কি। এই আবহাওয়ায় টাইম পাশ করার মতো একটা ব্যবস্থা তো হয়েগেল।
মলের ভেতর এদিক ওদিক কিছুক্ষণ ঘোরার পর বোর হয়ে গেল মেঘনা। আইনক্সে দেখলো একটা লেটেস্ট ইংলিশ মুভি চলছে। ব্যস! টিকিট কেটে ঢুকে পড়লো। সিনেমা হল তখন মরুভূমির মতো ফাঁকা। সকাল সাড়ে দশটায় কেই বা আসবে সিনেমা দেখতে, তাও আবার ইংলিশ মুভি। যাই হোক, মেঘনা পেছনের দিকে গিয়ে একটা কর্নার সিট্ দেখে আরাম করে বসে পড়লো। সামনে পিছনে প্রায় সব সিট্-ই ফাঁকা।
সিনেমা শুরু হলো। কিছুক্ষণ পর এক মাঝ বয়সী ভদ্রলোক মেঘনার ঠিক পাশের সিটে এসে বসলো। মেঘনা ভাবলো এত সিট্ ফাঁকা থাকতে লোকটা তার পাশেই এসে বসলো কেন? এটাই কি তার টিকিটের সিট্ নাম্বার? হল ফাঁকা দেখে মেঘনা নিজের ইচ্ছেমতো একটা জায়গা বেছে নিয়েছিলো বসার। তাই হয়তো এই অযাচিত সহদর্শকের প্রাপ্তি।
আড়চোখে মেঘনা দেখলো ভদ্রলোক একটি ব্রিফকেস সাথে নিয়ে এসছে। হয়তো সেও তার মতোই অফিসযাত্রী ছিল, অঝোরে বৃষ্টি তারও রণে ভঙ্গ দিয়েছে। কৌতূহলবশত মেঘনা একবার ভালো করে তার দিকে তাকালো। ঠাহর করলো এই লোকটাকে সে বাস স্টপেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিল। মনে প্রশ্ন জাগলো লোকটা কি তাকে ফলো করছে? পরক্ষণে ভাবলো নাহঃ! হয়তো সেও বৃষ্টি থেকে বাঁচতে মলে ঢুকে পড়েছে এবং টাইম কিল করতে সিনেমার টিকিট কেটেছে।
কিন্তু কেন জানিনা বারবার মেঘনার মনে হচ্ছিলো এই লোকটাকে সে শুধু বাস স্টপে নয় এর আগেও অন্য কোথাও দেখেছে। নাহলে এত লোকের ভীড়ে তার অবচেতন মন এই লোকটার মুখটাকেই কেন মনে রেখে দেবে? কে জানে! দেখেছে হয়তো তাকে আগে কোথাও। অত ভেবে কি লাভ। এই ভেবে সে সিনেমার পর্দায় নিজের দৃষ্টি স্থির করলো।
মিনিট দশেক পর, তার খেয়াল হলো পাশের ব্যক্তিটি কিছুটা বিচলিত হয়ে উঠেছে। নিজের সিটে বসেই এদিক-ওদিক মুখ ঘোরাচ্ছে। কখনো কাঁশছে, কখনো পা দুটোকে ক্রস করে বসছে তো কখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে। মেঘনা তাও এসব ইগনোর করে ফিল্ম দেখতে লাগলো। যেহেতু তারা পাশাপাশি বসেছিল তাই তাদের কনুই এক অপরের সাথে স্পর্শ হচ্ছিলো। হঠাৎ মেঘনা অনুভব করলো লোকটার পাও তার পা কে স্পর্শ করছে।
মেঘনা দেখলো লোকটা নিজের পা টা-কে ক্যাসুয়ালি স্ট্রেচ করছিলো বলেই বারবার তার পায়ে পা লাগছিলো। তাই মেঘনা পা গুটিয়ে সরিয়ে নিলো। কিন্তু আবার কিছু সময়ের পর মেঘনা নিজের পায়ের নিকট লোকটার পায়ের অবস্থান অনুভব করলো। মেঘনা একটু নার্ভাস হয়ে পড়লো। সে আরোই নিজের পা গুটিয়ে নিতে চাইলো। আগামী দশ-পনেরো মিনিট সবকিছু ঠিকঠাক চললো। মেঘনা মুভিটা ধীরে ধীরে এনজয় করতে শুরু করেছিল। কিন্তু আবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। লোকটার পা আবার মেঘনার পা স্পর্শ করলো।
মেঘনা বুঝলো এই ঘটনা স্বতঃপ্রণোদিত। তাই সে নিজের পা দুটিকে ক্রস করে যতটা সম্ভব লোকটার পরিধির বাইরে রাখার চেষ্টা করলো। মেঘনা ভাবলো এইভাবেই যদি তাকে উপেক্ষা করতে থাকে তাহলে লোকটা নিশ্চই বুঝবে যে পাশে বসে থাকা মেয়েটি মোটেই সহজলভ্য নয়। খামোখা কেনই বা মেঘনা জায়গা ছেড়ে উঠে যাবে। তাহলে তো লোকটার অনৈতিক জয় হবে আর মেঘনার নারীত্বের পরাজয়। তাই মেঘনা ঠিক করলো যাই হয়ে যাক না কেন সে ওই সিটেই বসে থাকবে আর সবরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিকে প্রতিহত করবে। লোকটার নিকট হতে কি একটা শব্দ যেন ভেসে আসলো মেঘনার কানে, যা মেঘনা বুঝতে পারলো না, বোঝার চেষ্টাও করলো না।
আসলে এরকম ছোটখাটো অনভিপ্রেত অভিজ্ঞতা বাসে-ট্রামে আকছার তার সাথে ঘটে থাকে, যখন পাশের সিটে টেস্টোস্টেরন হরমোনে পরিপূর্ণ কোনো পুরুষ এসে বসে, এবং সুযোগ খোঁজার চেষ্টা করে। মেঘনার নিজ রূপে অত অহংকার না থাকলেও এটা সত্যি যে তার মতো অতীব সুন্দরী মেয়ের উপর একটা অ্যাটেম্প্ট নেয়ার চেষ্টা আট থেকে আশি সকল পুরুষই করে। প্রথম প্রথম খুব অস্বস্তি হলেও, এখন সে ইউসড্ টু হয়েগেছে।
সে চেনে এই কঠোর বাস্তব পৃথিবীটাকে। এখানে একটি সুন্দরী মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে চাকরি করতে গেলে পথে ঘাটে অফিসে অনেক মানুষরূপী নেকড়ে নিজের লালসামিশ্রিত হিংস্র চাউনি নিয়ে তাকিয়ে থাকবে, সুযোগ পেলে খাবলানোর জন্য। তা মেয়েটি বিবাহীত হোক বা অবিবাহিত। যতই ভয় পেয়ে দূরে দূরে সরে থাকার চেষ্টা করা হবে, ততই এরা পেয়ে বসবে। তার চেয়ে ভালো নিজেকে এসব পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়া, এবং এসব চাউনি গুলিকে অ্যাস এ সাইন অফ অ্যাপ্রিশিয়েশন্ টু দা বিউটি হিসেবে ধরে নেওয়া।
কিছুক্ষণ পর মেঘনা ফীল করলো লোকটার কনুই তার কনুই এর সাথে ঘষা খাচ্ছে। মেঘনার কনুইয়ের উপর অল্পবিস্তর প্রেশার পড়ছিলো, কিন্তু যখুনি মেঘনা নিজের কনুই সরিয়ে নিতে যাচ্ছিলো তখুনি লোকটা তার কনুই সরিয়ে নিচ্ছিলো। এরকম প্রায় তিন-চারবার হলো। তারপর মেঘনা বুঝলো যে আসলে লোকটার কনুই একটা ধারাবাহিক ত্বরণে ওঠা নামা করছে। কিছুক্ষণ ধরে এরকমই চলতে থাকলো। ভদ্রলোকের কনুই ক্রমাগত মেঘনার কনুইয়ে ঘষা খেয়ে যাচ্ছিলো। মেঘনার মনে প্রশ্ন জাগলো, লোকটা করছে টা কি?
কৌতূহলবশত মেঘনা তার দিকে তাকালো। তাকাতেই সে হতবম্ব হয়ে গেল! দেখলো লোকটা প্যান্টের চেইন খুলে পুংজননেন্দ্রিয়টা-কে হাতে ধরে রয়েছে। তার মানে তখন যে শব্দটা মেঘনার কানে ভেসে এসছিল সেটা আর অন্য কিছু নয় ওনার প্যান্টের চেইন খোলার শব্দ ছিল। তিনি নিজের যৌনাঙ্গটা হাতে নিয়ে ঘষছিলেন। সোজা কথায় হস্তমৈথুন করছিলেন। আর তাই জন্য তার কনুই চঞ্চলতার দরুন বারংবার মেঘনার কনুইতে ঘষা খাচ্ছিলো।
মেঘনা সেই দৃশ্য দেখে প্রচন্ডভাবে আতংকিত হয়ে পড়লো। শীঘ্রই নিজের চোখ সরিয়ে নিলো সেখান থেকে। মেঘনা চরম দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লো। এখন তার কি করা উচিত? উঠে গিয়ে অন্য সিটে বসা উচিত? খুব নার্ভাস লাগছিলো তার। যতই সে আইটি সেক্টরে কর্মরতা অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত নারী হোক না কেন, আদতে সে খুব লাজুক প্রকৃতিরই একজন মেয়ে। তবু সে ঠিক করলো যে এসব ইগনোর করে মুভি দেখাতেই সে মনোনিবেশ করবে। লোকটা নিজের সিটে বসে যা ইচ্ছে তাই করুক, তাতে ওর কি! সে কেন কুন্ঠিত হয়ে লোকটার অসভ্যতামোর দায় নিয়ে উঠে গিয়ে অন্য সিটে বসবে? এটা তো লোকটার নাগরিক বোধের অভাব যে পাশে একজন মহিলা বসে আছে দেখেও নিলজ্জের মতো পাবলিক প্লেসে এরকম কান্ডকারখানা চালাচ্ছে। তাই যতক্ষণ না লোকটা সরাসরি মেঘনাকে কোনো অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলছে ততক্ষণ মেঘনার বিচলিত হওয়ার কোনো কারণই নেই। শহরটা যতটা এই লোকটার ততটাই মেঘনারও।
তবুও মেঘনার মনে ফের একবার অদ্ভুত কৌতূহলের বাসা বাঁধলো। সে আবার একবার সেদিকে তাকালো। দেখলো প্যান্টের চেইন পুরোপুরিভাবে খোলা, এবং বর্ধিত শিশ্ন প্রায় পুরোটাই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। লোকটা হাত দিয়ে ক্রমাগত নিজের লিঙ্গটা-কে ঝাঁকিয়ে যাচ্ছে, আর সেই কারণে যৌনাঙ্গটা ক্রমশ বৃহদাকার ধারণ করছে। মেঘনা নিজের চোখ সরাতে পারছিলনা। সত্যি বলতে কি লোকটার পুংদন্ডটা অস্বাভাবিক বড়ো লাগছিলো মেঘনার। পরক্ষনেই মনে মনে সে নিজেকে দুষলো, "ছিঃ ছিঃ ছিঃ! এসব আমি কি দেখছি, আর কিই বা আবোল তাবোল ভাবছি!"
অনেকদিন অজিত বাইরে রয়েছে। স্বামীর স্পর্শ থেকে সে বঞ্চিত। তাই হয়তো মনটা ক্ষণিকের জন্য ডগমগিয়ে গ্যাছে। মেঘনার গা-টা তাও কাঁটা দিয়ে উঠছিল, এত বড়ো পুরুষাঙ্গ এত কাছ থেকে দেখে, তাও আবার কোন এক অজানা পুরুষের। এটা এমন একটা সময় যখন অজিত প্রায় ছয় মাস হলো বাইরে রয়েছে।
মেঘনা ফের নিজের চোখ সরিয়ে নিলো। কিন্তু তার শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিবেগ দ্রুতই উর্দ্ধগামী হচ্ছিলো। এরূপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন জীবনে সে প্রথমবার হচ্ছিলো। তাই মেঘনার কাছে বিষয়টা খুব অনাকাঙ্খিতই ছিল। একেবারে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল সে। তার শরীর ভয়ে অবশ হয়ে যাচ্ছিলো। তাই বেশি নড়চড় করতে পাচ্ছিলো না, সিট ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া তো দুরস্ত ছিল তখন।
মেঘনা ধীরে ধীরে নিজের হাত পা-কে যতটা সম্ভব গুটিয়ে রাখার চেষ্টা করলো যাতে লোকটার অনধিকার স্পর্শ তার শরীর অনুভব না করে। কিন্তু নিজের অনৈতিক কৌতূহলকে কিছুতেই সামাল দিতে পারছিলো না। বারবার চোখ গিয়ে পড়ছিলো লোকটার দিকে, বিশেষ করে লোকটার কর্মকান্ডর দিকে। কিভাবে দুঃসাহসী লোকটা নির্দ্বিধায়ে নিজের যন্ত্রটা-কে নিয়ে খেলা করে যাচ্ছিলো, সেটা দেখেই মেঘনা অবাক হচ্ছিলো।
মেঘনা লোকটার দিকে তাকাতেই খেয়াল করলো যে লোকটা এক অদ্ভুত চাউনি নিয়ে তার দিকে চেয়ে রয়েছে। সে চট করে চোখটা নামিয়ে নিলো। মেঘনার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেল। সে ভাবলো লোকটা মনে হয় দেখেছে যে সে আড় চোখে তার হস্তমৈথুন করা দেখছিলো। মেঘনা এখন কি করবে ভেবে পাচ্ছিলো না। নিজেকে খুব বিভ্রান্ত লাগছিলো ওর। মেঘনার হৃদয় খুব জোরে স্পন্দিত হচ্ছিলো এটা ভেবে যে এরপর কি হবে? এবং সেই বা কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেবে যদি কোনোভাবে কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় তাকে?
পরের কিছু মুহূর্ত সেরম কোনো অস্বাভাবিক কিছু ঘটলো না, কিন্তু তাও মেঘনার হৃদস্পন্দন সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো ওঠা নামা করছিলো। কিছু মুহূর্ত পশ্চাদ মেঘনা অনুভব করলো কিছু একটা তার উরুতে ঘষা খাচ্ছে। সেই পানে তাকাতেই আঁতকে উঠলো এটা দেখে যে লোকটা নিজের হাত তার উরুতে রেখে ঘষছে! সে তখন ভীত সন্ত্রস্ত বিভ্রান্ত এবং একই সাথে রোমাঞ্চিত কোনো পরপুরুষের ছোঁয়া প্রথমবার পেয়ে!
সেদিন মেঘনা একটি লাল রঙের হাফ হাতা কুর্তি এবং গাঢ় নীল রঙের লেগিন্স পড়েছিল। লোকটার হাত মেঘনার উরুতে বিচরণ করায় তার শরীরে যেন চারশো চল্লিশ ভোল্টের কারেন্ট দৌড়ে যাচ্ছিলো। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি যা কোনো শব্দবন্ধনীর দ্বারা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। অজিত তাকে বলতো তার গায়ের চামড়া নাকি খুব স্পর্শকাতর। লজ্জাবতী লতার মতো, সহজেই সুড়সুড়ি লাগে। লোকটার স্পর্শও তাকে সুড়সুড়িকরণের অনুভূতি দিয়ে যাচ্ছিলো।
মেঘনা খুব নার্ভাস হয়ে পড়েছিল। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেয়ার মতো সাহসও তার মধ্যে অবশিষ্ট ছিলোনা। আর সেটাই কাল হলো। লোকটার সাহস আরো বেড়ে গেলো মেঘনার প্রতিক্রিয়াহীন স্থিতাবস্থা দেখে। লোকটা হয়তো ভেবে বসলো আরো একটু সুযোগ নেওয়া যাক এই পরিস্থিতির। তাই সে নিজের হাতটা-কে হালকা করে মেঘনার উরুর আরো উপরের দিকে নিয়ে এনে রাখলো, এবং ধীরে ধীরে হাত বোলাতে লাগলো সেখানে।
মেঘনা সত্যি বুঝতে পারছিলোনা সে কি করবে? রো এর কর্নার সিটে বসেছিল, বাঁ দিকে সরার বা যাওয়ার কোনো জায়গা ছিলনা। ডান দিকে লোকটা বসেছিলো। মেঘনা তাও চেষ্টা করে যাচ্ছিলো নিজের পা-টা যতটা সম্ভব লোকটার থেকে দূরে সরিয়ে রাখার, কিন্তু সে পারছিলো না। কারণ পর্যাপ্ত জায়গাই তো আর ছিলোনা অবশিষ্ট। মনে হচ্ছিলো যেন সে ফেঁসে গেছে সিনেমা হলের কর্নার সিটে বসে।
লোকটা ক্রমাগত মেঘনার উরুতে হাত বুলিয়ে যাচ্ছিলো। মেঘনা কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছিলো না। এরূপ হেনস্থা চলতে থাকলো তার উপর। নিরুপায় হয়ে মেঘনা নিজের মনোযোগ সিনেমার পর্দায় টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছিলো। এমনভাবে যেন কিছুই ঘটছে না তার সাথে। অথচ বাস্তবে তো ঘটছিলো অনেক কিছুই। লোকটা তার উরুর উপর হাতের চারুকলা চালিয়ে যাচ্ছিল।
লোকটা এবার ধীরে ধীরে মেঘনার উরু চটকাতে শুরু করলো। তার উরু অঞ্চলে বারংবার নিজের হাত নিয়ে গিয়ে উপর হইতে নীচ অবধি ঘষতে লাগলো। মেঘনার নিজেকে খুব অসহায় লাগছিলো তখন। তবে আস্তে আস্তে যেন এসব তার কাছে গা সওয়া হয়ে যেতে লাগলো। এছাড়া তো আর কোনো উপায়ও ছিলোনা। ছোটবেলা থেকেই মেঘনা একটু ভীতু প্রকৃতির মেয়ে, অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন ও প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রতিবাদ করতে শেখেনি কখনো। তাই মেঘনার দূর্বল মন এই উদ্ভট পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে লাগলো।
কৌতূহলবশত মেঘনা ফের একবার নিজের ডান দিকে তাকালো। দেখলো লোকটা তাকিয়ে তো আছে সিনেমার স্ক্রিনের দিকে, এমনভাবে যেন খুব মনোযোগ দিয়ে সিনেমাটা দেখছে, কিন্তু নিচে সে নিজের আরেক হাত দিয়ে ক্রমাগত যৌনাঙ্গটি-কে ঝাঁকিয়ে যাচ্ছে! মেঘনা অবাক হয়ে দেখছিলো লোকটার দুঃসাহসিকতা। একে তো তাকে একা পেয়ে লোকটা তার শরীরের উপর নির্লজ্জের মতো নিজের বাহু বিচরণ করাচ্ছে, তার উপর অপর বাহুর দ্বারা তারই পাশে বসে লোকটা হস্তমৈথুন চালিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত! পাবলিক প্লেসে তার সাথে এরকম আচরণ করার হিম্মত তার স্বামীও কোনোদিন দেখায়নি। কিন্তু মেঘনাও বা কেন বারবার নিজের স্বামীর সাথে এই লোকটার তুলনা করে বসছে? তবে কি মেঘনার অবচেতন মন অতীতে চাইতো তার স্বামী অজিত একটু দুঃসাহস দেখিয়ে এরকমই দুস্টুমি তার সাথে করুক পাবলিক প্লেসে? আজ সেই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন সে হচ্ছে কিন্তু অন্য পুরুষের সাথে, সেটাই কি তার খেদ?
লোকটা এবার ধীরে ধীরে নিজের বাম হাতটা-কে আরো উপরের দিকে তুলে মেঘনার উরুসন্ধির দিকে পৌঁছনোর চেষ্টা করলো। তখন মেঘনা ভাবলো এবার যদি সে কিছু না করে তাহলে লোকটা নিজের সীমা অতিক্রম করে যাবে। যদিও তা অনেক আগেই সে করে গেছিলো। কিন্তু এবার মেঘনার সহ্যের বাঁধ ভেঙে গেলো। এবার তাকে থামাতেই হবে, অনেক হয়েছে বাড়াবাড়ি। মেঘনা তাই লোকটার হাত এক ঝটকায় সরিয়ে দিলো নিজের গা থেকে। যখন সে লোকটার হাত ধরেছিলো সরানোর জন্য, তখন একটা অদ্ভুত শিহরণ যেন তার শিরা দিয়ে বয়ে গেছিলো। লোকটার হাত প্রচন্ড গরম ছিল, অবশ্যই তা উত্তেজনার বশেই।
পরবর্তী কিছু মুহূর্ত সব ঠিকঠাক থাকলো। মেঘনা যথাসম্ভব চেষ্টা করছিলো নিজের মনোযোগ সিলভার স্ক্রিনে টিকিয়ে রাখতে, অন্য কোনো উটকো ভাবনা মাথায় না এনে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই লোকটা আবার নিজের কার্যকম শুরু করে দিলো, হাতটা নিয়ে গিয়ে মেঘনার উরুতে রাখলো।
সেদিনটাও ছিল সেরকমই গতে বাঁধা একটা দিন। লেক গার্ডেন্স থেকে যোধপুর পার্কের স্কু'লে ছেলেকে পৌঁছে দিয়ে মেঘনার সেক্টর ফাইভে যাওয়ার কথা ছিল। তিতানকে স্কু'লে ঢুকিয়ে দেয়ার পর যখন সে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে যাবে তখুনি মুষলধারে বৃষ্টি নামলো। সকাল থেকেই আকাশের মুখটা ভার হয়েছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি তার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে সেটা আন্দাজ করা যায়নি।
বাস স্টপে আটকে পড়লো মেঘনা। বাসের দেখা নেই। বৃষ্টি যত তীব্র হচ্ছে ততই হ্রাস পাচ্ছে শহরের যান চলাচল। বাস তো দূরের কথা, অটো পর্যন্তও চোখে পড়ছিলো না। তিতানকে নিয়ে চিন্তা ছিলোনা কারণ ও স্কু'লের ভেতরে রয়েছে। কিন্তু মেঘনা? সে এখন কি করবে? এমতাবস্থায় তো বাড়িও ফেরা সম্ভব নয়।
বাস স্টপে পথচারীদের ভীড় বাড়ছিল। সবাই বৃষ্টি থেকে গা বাচাতে স্টপেজের শেডের তলায় আশ্রয় নিতে চাইছিল। মেঘনা বুঝলো এরকম চলতে থাকলে হয়ে তার সাফোকেশন হবে নাহয় ভিড়ের ঠেলায় তাকে ছাউনি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সামনেই সাউথ সিটি মল। মেঘনার জন্য এর থেকে ভালো আস্তানা কিছু হতে পারতো না। তাই দেরি না করে দৌড়ে গিয়ে রাস্তা পার করে মলের ভেতর ঢুকে পড়লো। জামাকাপড় অল্প ভিজে গেল বটে, কিন্তু তাতে কি। এই আবহাওয়ায় টাইম পাশ করার মতো একটা ব্যবস্থা তো হয়েগেল।
মলের ভেতর এদিক ওদিক কিছুক্ষণ ঘোরার পর বোর হয়ে গেল মেঘনা। আইনক্সে দেখলো একটা লেটেস্ট ইংলিশ মুভি চলছে। ব্যস! টিকিট কেটে ঢুকে পড়লো। সিনেমা হল তখন মরুভূমির মতো ফাঁকা। সকাল সাড়ে দশটায় কেই বা আসবে সিনেমা দেখতে, তাও আবার ইংলিশ মুভি। যাই হোক, মেঘনা পেছনের দিকে গিয়ে একটা কর্নার সিট্ দেখে আরাম করে বসে পড়লো। সামনে পিছনে প্রায় সব সিট্-ই ফাঁকা।
সিনেমা শুরু হলো। কিছুক্ষণ পর এক মাঝ বয়সী ভদ্রলোক মেঘনার ঠিক পাশের সিটে এসে বসলো। মেঘনা ভাবলো এত সিট্ ফাঁকা থাকতে লোকটা তার পাশেই এসে বসলো কেন? এটাই কি তার টিকিটের সিট্ নাম্বার? হল ফাঁকা দেখে মেঘনা নিজের ইচ্ছেমতো একটা জায়গা বেছে নিয়েছিলো বসার। তাই হয়তো এই অযাচিত সহদর্শকের প্রাপ্তি।
আড়চোখে মেঘনা দেখলো ভদ্রলোক একটি ব্রিফকেস সাথে নিয়ে এসছে। হয়তো সেও তার মতোই অফিসযাত্রী ছিল, অঝোরে বৃষ্টি তারও রণে ভঙ্গ দিয়েছে। কৌতূহলবশত মেঘনা একবার ভালো করে তার দিকে তাকালো। ঠাহর করলো এই লোকটাকে সে বাস স্টপেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিল। মনে প্রশ্ন জাগলো লোকটা কি তাকে ফলো করছে? পরক্ষণে ভাবলো নাহঃ! হয়তো সেও বৃষ্টি থেকে বাঁচতে মলে ঢুকে পড়েছে এবং টাইম কিল করতে সিনেমার টিকিট কেটেছে।
কিন্তু কেন জানিনা বারবার মেঘনার মনে হচ্ছিলো এই লোকটাকে সে শুধু বাস স্টপে নয় এর আগেও অন্য কোথাও দেখেছে। নাহলে এত লোকের ভীড়ে তার অবচেতন মন এই লোকটার মুখটাকেই কেন মনে রেখে দেবে? কে জানে! দেখেছে হয়তো তাকে আগে কোথাও। অত ভেবে কি লাভ। এই ভেবে সে সিনেমার পর্দায় নিজের দৃষ্টি স্থির করলো।
মিনিট দশেক পর, তার খেয়াল হলো পাশের ব্যক্তিটি কিছুটা বিচলিত হয়ে উঠেছে। নিজের সিটে বসেই এদিক-ওদিক মুখ ঘোরাচ্ছে। কখনো কাঁশছে, কখনো পা দুটোকে ক্রস করে বসছে তো কখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে। মেঘনা তাও এসব ইগনোর করে ফিল্ম দেখতে লাগলো। যেহেতু তারা পাশাপাশি বসেছিল তাই তাদের কনুই এক অপরের সাথে স্পর্শ হচ্ছিলো। হঠাৎ মেঘনা অনুভব করলো লোকটার পাও তার পা কে স্পর্শ করছে।
মেঘনা দেখলো লোকটা নিজের পা টা-কে ক্যাসুয়ালি স্ট্রেচ করছিলো বলেই বারবার তার পায়ে পা লাগছিলো। তাই মেঘনা পা গুটিয়ে সরিয়ে নিলো। কিন্তু আবার কিছু সময়ের পর মেঘনা নিজের পায়ের নিকট লোকটার পায়ের অবস্থান অনুভব করলো। মেঘনা একটু নার্ভাস হয়ে পড়লো। সে আরোই নিজের পা গুটিয়ে নিতে চাইলো। আগামী দশ-পনেরো মিনিট সবকিছু ঠিকঠাক চললো। মেঘনা মুভিটা ধীরে ধীরে এনজয় করতে শুরু করেছিল। কিন্তু আবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। লোকটার পা আবার মেঘনার পা স্পর্শ করলো।
মেঘনা বুঝলো এই ঘটনা স্বতঃপ্রণোদিত। তাই সে নিজের পা দুটিকে ক্রস করে যতটা সম্ভব লোকটার পরিধির বাইরে রাখার চেষ্টা করলো। মেঘনা ভাবলো এইভাবেই যদি তাকে উপেক্ষা করতে থাকে তাহলে লোকটা নিশ্চই বুঝবে যে পাশে বসে থাকা মেয়েটি মোটেই সহজলভ্য নয়। খামোখা কেনই বা মেঘনা জায়গা ছেড়ে উঠে যাবে। তাহলে তো লোকটার অনৈতিক জয় হবে আর মেঘনার নারীত্বের পরাজয়। তাই মেঘনা ঠিক করলো যাই হয়ে যাক না কেন সে ওই সিটেই বসে থাকবে আর সবরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিকে প্রতিহত করবে। লোকটার নিকট হতে কি একটা শব্দ যেন ভেসে আসলো মেঘনার কানে, যা মেঘনা বুঝতে পারলো না, বোঝার চেষ্টাও করলো না।
আসলে এরকম ছোটখাটো অনভিপ্রেত অভিজ্ঞতা বাসে-ট্রামে আকছার তার সাথে ঘটে থাকে, যখন পাশের সিটে টেস্টোস্টেরন হরমোনে পরিপূর্ণ কোনো পুরুষ এসে বসে, এবং সুযোগ খোঁজার চেষ্টা করে। মেঘনার নিজ রূপে অত অহংকার না থাকলেও এটা সত্যি যে তার মতো অতীব সুন্দরী মেয়ের উপর একটা অ্যাটেম্প্ট নেয়ার চেষ্টা আট থেকে আশি সকল পুরুষই করে। প্রথম প্রথম খুব অস্বস্তি হলেও, এখন সে ইউসড্ টু হয়েগেছে।
সে চেনে এই কঠোর বাস্তব পৃথিবীটাকে। এখানে একটি সুন্দরী মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে চাকরি করতে গেলে পথে ঘাটে অফিসে অনেক মানুষরূপী নেকড়ে নিজের লালসামিশ্রিত হিংস্র চাউনি নিয়ে তাকিয়ে থাকবে, সুযোগ পেলে খাবলানোর জন্য। তা মেয়েটি বিবাহীত হোক বা অবিবাহিত। যতই ভয় পেয়ে দূরে দূরে সরে থাকার চেষ্টা করা হবে, ততই এরা পেয়ে বসবে। তার চেয়ে ভালো নিজেকে এসব পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়া, এবং এসব চাউনি গুলিকে অ্যাস এ সাইন অফ অ্যাপ্রিশিয়েশন্ টু দা বিউটি হিসেবে ধরে নেওয়া।
কিছুক্ষণ পর মেঘনা ফীল করলো লোকটার কনুই তার কনুই এর সাথে ঘষা খাচ্ছে। মেঘনার কনুইয়ের উপর অল্পবিস্তর প্রেশার পড়ছিলো, কিন্তু যখুনি মেঘনা নিজের কনুই সরিয়ে নিতে যাচ্ছিলো তখুনি লোকটা তার কনুই সরিয়ে নিচ্ছিলো। এরকম প্রায় তিন-চারবার হলো। তারপর মেঘনা বুঝলো যে আসলে লোকটার কনুই একটা ধারাবাহিক ত্বরণে ওঠা নামা করছে। কিছুক্ষণ ধরে এরকমই চলতে থাকলো। ভদ্রলোকের কনুই ক্রমাগত মেঘনার কনুইয়ে ঘষা খেয়ে যাচ্ছিলো। মেঘনার মনে প্রশ্ন জাগলো, লোকটা করছে টা কি?
কৌতূহলবশত মেঘনা তার দিকে তাকালো। তাকাতেই সে হতবম্ব হয়ে গেল! দেখলো লোকটা প্যান্টের চেইন খুলে পুংজননেন্দ্রিয়টা-কে হাতে ধরে রয়েছে। তার মানে তখন যে শব্দটা মেঘনার কানে ভেসে এসছিল সেটা আর অন্য কিছু নয় ওনার প্যান্টের চেইন খোলার শব্দ ছিল। তিনি নিজের যৌনাঙ্গটা হাতে নিয়ে ঘষছিলেন। সোজা কথায় হস্তমৈথুন করছিলেন। আর তাই জন্য তার কনুই চঞ্চলতার দরুন বারংবার মেঘনার কনুইতে ঘষা খাচ্ছিলো।
মেঘনা সেই দৃশ্য দেখে প্রচন্ডভাবে আতংকিত হয়ে পড়লো। শীঘ্রই নিজের চোখ সরিয়ে নিলো সেখান থেকে। মেঘনা চরম দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লো। এখন তার কি করা উচিত? উঠে গিয়ে অন্য সিটে বসা উচিত? খুব নার্ভাস লাগছিলো তার। যতই সে আইটি সেক্টরে কর্মরতা অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত নারী হোক না কেন, আদতে সে খুব লাজুক প্রকৃতিরই একজন মেয়ে। তবু সে ঠিক করলো যে এসব ইগনোর করে মুভি দেখাতেই সে মনোনিবেশ করবে। লোকটা নিজের সিটে বসে যা ইচ্ছে তাই করুক, তাতে ওর কি! সে কেন কুন্ঠিত হয়ে লোকটার অসভ্যতামোর দায় নিয়ে উঠে গিয়ে অন্য সিটে বসবে? এটা তো লোকটার নাগরিক বোধের অভাব যে পাশে একজন মহিলা বসে আছে দেখেও নিলজ্জের মতো পাবলিক প্লেসে এরকম কান্ডকারখানা চালাচ্ছে। তাই যতক্ষণ না লোকটা সরাসরি মেঘনাকে কোনো অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলছে ততক্ষণ মেঘনার বিচলিত হওয়ার কোনো কারণই নেই। শহরটা যতটা এই লোকটার ততটাই মেঘনারও।
তবুও মেঘনার মনে ফের একবার অদ্ভুত কৌতূহলের বাসা বাঁধলো। সে আবার একবার সেদিকে তাকালো। দেখলো প্যান্টের চেইন পুরোপুরিভাবে খোলা, এবং বর্ধিত শিশ্ন প্রায় পুরোটাই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। লোকটা হাত দিয়ে ক্রমাগত নিজের লিঙ্গটা-কে ঝাঁকিয়ে যাচ্ছে, আর সেই কারণে যৌনাঙ্গটা ক্রমশ বৃহদাকার ধারণ করছে। মেঘনা নিজের চোখ সরাতে পারছিলনা। সত্যি বলতে কি লোকটার পুংদন্ডটা অস্বাভাবিক বড়ো লাগছিলো মেঘনার। পরক্ষনেই মনে মনে সে নিজেকে দুষলো, "ছিঃ ছিঃ ছিঃ! এসব আমি কি দেখছি, আর কিই বা আবোল তাবোল ভাবছি!"
অনেকদিন অজিত বাইরে রয়েছে। স্বামীর স্পর্শ থেকে সে বঞ্চিত। তাই হয়তো মনটা ক্ষণিকের জন্য ডগমগিয়ে গ্যাছে। মেঘনার গা-টা তাও কাঁটা দিয়ে উঠছিল, এত বড়ো পুরুষাঙ্গ এত কাছ থেকে দেখে, তাও আবার কোন এক অজানা পুরুষের। এটা এমন একটা সময় যখন অজিত প্রায় ছয় মাস হলো বাইরে রয়েছে।
মেঘনা ফের নিজের চোখ সরিয়ে নিলো। কিন্তু তার শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিবেগ দ্রুতই উর্দ্ধগামী হচ্ছিলো। এরূপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন জীবনে সে প্রথমবার হচ্ছিলো। তাই মেঘনার কাছে বিষয়টা খুব অনাকাঙ্খিতই ছিল। একেবারে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল সে। তার শরীর ভয়ে অবশ হয়ে যাচ্ছিলো। তাই বেশি নড়চড় করতে পাচ্ছিলো না, সিট ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া তো দুরস্ত ছিল তখন।
মেঘনা ধীরে ধীরে নিজের হাত পা-কে যতটা সম্ভব গুটিয়ে রাখার চেষ্টা করলো যাতে লোকটার অনধিকার স্পর্শ তার শরীর অনুভব না করে। কিন্তু নিজের অনৈতিক কৌতূহলকে কিছুতেই সামাল দিতে পারছিলো না। বারবার চোখ গিয়ে পড়ছিলো লোকটার দিকে, বিশেষ করে লোকটার কর্মকান্ডর দিকে। কিভাবে দুঃসাহসী লোকটা নির্দ্বিধায়ে নিজের যন্ত্রটা-কে নিয়ে খেলা করে যাচ্ছিলো, সেটা দেখেই মেঘনা অবাক হচ্ছিলো।
মেঘনা লোকটার দিকে তাকাতেই খেয়াল করলো যে লোকটা এক অদ্ভুত চাউনি নিয়ে তার দিকে চেয়ে রয়েছে। সে চট করে চোখটা নামিয়ে নিলো। মেঘনার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেল। সে ভাবলো লোকটা মনে হয় দেখেছে যে সে আড় চোখে তার হস্তমৈথুন করা দেখছিলো। মেঘনা এখন কি করবে ভেবে পাচ্ছিলো না। নিজেকে খুব বিভ্রান্ত লাগছিলো ওর। মেঘনার হৃদয় খুব জোরে স্পন্দিত হচ্ছিলো এটা ভেবে যে এরপর কি হবে? এবং সেই বা কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেবে যদি কোনোভাবে কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় তাকে?
পরের কিছু মুহূর্ত সেরম কোনো অস্বাভাবিক কিছু ঘটলো না, কিন্তু তাও মেঘনার হৃদস্পন্দন সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো ওঠা নামা করছিলো। কিছু মুহূর্ত পশ্চাদ মেঘনা অনুভব করলো কিছু একটা তার উরুতে ঘষা খাচ্ছে। সেই পানে তাকাতেই আঁতকে উঠলো এটা দেখে যে লোকটা নিজের হাত তার উরুতে রেখে ঘষছে! সে তখন ভীত সন্ত্রস্ত বিভ্রান্ত এবং একই সাথে রোমাঞ্চিত কোনো পরপুরুষের ছোঁয়া প্রথমবার পেয়ে!
সেদিন মেঘনা একটি লাল রঙের হাফ হাতা কুর্তি এবং গাঢ় নীল রঙের লেগিন্স পড়েছিল। লোকটার হাত মেঘনার উরুতে বিচরণ করায় তার শরীরে যেন চারশো চল্লিশ ভোল্টের কারেন্ট দৌড়ে যাচ্ছিলো। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি যা কোনো শব্দবন্ধনীর দ্বারা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। অজিত তাকে বলতো তার গায়ের চামড়া নাকি খুব স্পর্শকাতর। লজ্জাবতী লতার মতো, সহজেই সুড়সুড়ি লাগে। লোকটার স্পর্শও তাকে সুড়সুড়িকরণের অনুভূতি দিয়ে যাচ্ছিলো।
মেঘনা খুব নার্ভাস হয়ে পড়েছিল। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেয়ার মতো সাহসও তার মধ্যে অবশিষ্ট ছিলোনা। আর সেটাই কাল হলো। লোকটার সাহস আরো বেড়ে গেলো মেঘনার প্রতিক্রিয়াহীন স্থিতাবস্থা দেখে। লোকটা হয়তো ভেবে বসলো আরো একটু সুযোগ নেওয়া যাক এই পরিস্থিতির। তাই সে নিজের হাতটা-কে হালকা করে মেঘনার উরুর আরো উপরের দিকে নিয়ে এনে রাখলো, এবং ধীরে ধীরে হাত বোলাতে লাগলো সেখানে।
মেঘনা সত্যি বুঝতে পারছিলোনা সে কি করবে? রো এর কর্নার সিটে বসেছিল, বাঁ দিকে সরার বা যাওয়ার কোনো জায়গা ছিলনা। ডান দিকে লোকটা বসেছিলো। মেঘনা তাও চেষ্টা করে যাচ্ছিলো নিজের পা-টা যতটা সম্ভব লোকটার থেকে দূরে সরিয়ে রাখার, কিন্তু সে পারছিলো না। কারণ পর্যাপ্ত জায়গাই তো আর ছিলোনা অবশিষ্ট। মনে হচ্ছিলো যেন সে ফেঁসে গেছে সিনেমা হলের কর্নার সিটে বসে।
লোকটা ক্রমাগত মেঘনার উরুতে হাত বুলিয়ে যাচ্ছিলো। মেঘনা কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছিলো না। এরূপ হেনস্থা চলতে থাকলো তার উপর। নিরুপায় হয়ে মেঘনা নিজের মনোযোগ সিনেমার পর্দায় টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছিলো। এমনভাবে যেন কিছুই ঘটছে না তার সাথে। অথচ বাস্তবে তো ঘটছিলো অনেক কিছুই। লোকটা তার উরুর উপর হাতের চারুকলা চালিয়ে যাচ্ছিল।
লোকটা এবার ধীরে ধীরে মেঘনার উরু চটকাতে শুরু করলো। তার উরু অঞ্চলে বারংবার নিজের হাত নিয়ে গিয়ে উপর হইতে নীচ অবধি ঘষতে লাগলো। মেঘনার নিজেকে খুব অসহায় লাগছিলো তখন। তবে আস্তে আস্তে যেন এসব তার কাছে গা সওয়া হয়ে যেতে লাগলো। এছাড়া তো আর কোনো উপায়ও ছিলোনা। ছোটবেলা থেকেই মেঘনা একটু ভীতু প্রকৃতির মেয়ে, অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন ও প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রতিবাদ করতে শেখেনি কখনো। তাই মেঘনার দূর্বল মন এই উদ্ভট পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে লাগলো।
কৌতূহলবশত মেঘনা ফের একবার নিজের ডান দিকে তাকালো। দেখলো লোকটা তাকিয়ে তো আছে সিনেমার স্ক্রিনের দিকে, এমনভাবে যেন খুব মনোযোগ দিয়ে সিনেমাটা দেখছে, কিন্তু নিচে সে নিজের আরেক হাত দিয়ে ক্রমাগত যৌনাঙ্গটি-কে ঝাঁকিয়ে যাচ্ছে! মেঘনা অবাক হয়ে দেখছিলো লোকটার দুঃসাহসিকতা। একে তো তাকে একা পেয়ে লোকটা তার শরীরের উপর নির্লজ্জের মতো নিজের বাহু বিচরণ করাচ্ছে, তার উপর অপর বাহুর দ্বারা তারই পাশে বসে লোকটা হস্তমৈথুন চালিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত! পাবলিক প্লেসে তার সাথে এরকম আচরণ করার হিম্মত তার স্বামীও কোনোদিন দেখায়নি। কিন্তু মেঘনাও বা কেন বারবার নিজের স্বামীর সাথে এই লোকটার তুলনা করে বসছে? তবে কি মেঘনার অবচেতন মন অতীতে চাইতো তার স্বামী অজিত একটু দুঃসাহস দেখিয়ে এরকমই দুস্টুমি তার সাথে করুক পাবলিক প্লেসে? আজ সেই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন সে হচ্ছে কিন্তু অন্য পুরুষের সাথে, সেটাই কি তার খেদ?
লোকটা এবার ধীরে ধীরে নিজের বাম হাতটা-কে আরো উপরের দিকে তুলে মেঘনার উরুসন্ধির দিকে পৌঁছনোর চেষ্টা করলো। তখন মেঘনা ভাবলো এবার যদি সে কিছু না করে তাহলে লোকটা নিজের সীমা অতিক্রম করে যাবে। যদিও তা অনেক আগেই সে করে গেছিলো। কিন্তু এবার মেঘনার সহ্যের বাঁধ ভেঙে গেলো। এবার তাকে থামাতেই হবে, অনেক হয়েছে বাড়াবাড়ি। মেঘনা তাই লোকটার হাত এক ঝটকায় সরিয়ে দিলো নিজের গা থেকে। যখন সে লোকটার হাত ধরেছিলো সরানোর জন্য, তখন একটা অদ্ভুত শিহরণ যেন তার শিরা দিয়ে বয়ে গেছিলো। লোকটার হাত প্রচন্ড গরম ছিল, অবশ্যই তা উত্তেজনার বশেই।
পরবর্তী কিছু মুহূর্ত সব ঠিকঠাক থাকলো। মেঘনা যথাসম্ভব চেষ্টা করছিলো নিজের মনোযোগ সিলভার স্ক্রিনে টিকিয়ে রাখতে, অন্য কোনো উটকো ভাবনা মাথায় না এনে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই লোকটা আবার নিজের কার্যকম শুরু করে দিলো, হাতটা নিয়ে গিয়ে মেঘনার উরুতে রাখলো।