23-10-2021, 03:46 PM
প্রথম অধ্যায়
পর্ব ১
ঢং ঢং ঢং ঢং ঢং..... !
চমকে উঠলো দীপিকা। দেওয়াল ঘড়ি তে ৫ টা বাজলো। একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেললো সে... আর মাত্র ২ ঘন্টা, তারপরেই শ্রীজাত আসবে। আজ রবিবার, আজই তার আসার কথা। এতদিন ধরে এতো চেষ্টা করেও যাকে আটকাতে পারলো না সে ! এতক্ষন ধরে দীপিকা পুরোনো কথা গুলোই ভাবছিলো। এই তো মাত্র ৩ মাস আগের কথা.. এতো কিছু বদলে যাবে এই কদিনে সে ভাবতেও পারেনি !
৩ মাস আগে................
সকাল ৯.৩০ বাজে। সাউথ পয়েন্ট কলেজ শিক্ষিকা দীপিকা সবেমাত্র স্নান সেরে বাবান কে খেতে দিয়ে নিজে রেডি হচ্ছিলো। তার আর খাবার সময় নেই। ৯.৫০ এর বাস মিস না করতে হলে এখনই বেরোতে হবে। তার ফ্ল্যাট থেকে 3c/1 বাস স্ট্যান্ড ১০ মিনিট এর দূরত্ব। এই বাস টা মিস করলে সে লেট হয়ে যাবে এমন নয়। কিন্তু পরের বাস এ তার সহকর্মী তপন যায়। তপনের স্বভাবের জন্য তার সাথে সাচ্ছন্দ বোধ করে না দীপিকা। তাই একটু আগে হলেও আগের বাসটা পছন্দ দীপিকার।
বাবান কে কলেজ এর গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে দীপিকা বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখে বেশ ভিড়। এদিক ওদিক খুঁজতে গিয়ে দেখতে পেলো রাত্রী দাঁড়িয়ে আছে। রাত্রী কাজ করে ঠিক সাউথ পয়েন্ট এর উল্টো দিকের অফিসটায়কিন্তু সে তো আগের বাসে যায়... এখন কি করছে?
-রাত্রি!
– আরে দীপিকা ! অনেক দিন পর দেখা !
– হ্যাঁ। কিন্তু তুই এখন ?
– এবাবা তুই জানিস না ? এখন থেকে আমাদের এই বাসেই দেখা হবে! আগের বাসের টাইম তো চেঞ্জ করেছে সেই ৯.১৫ তে যাবে আজ থেকে। অত তাড়া আমার নেই তাই ঠিক করেছি এই বাস এই যাবো এবার থেকে।
-ওহ তাই বল। … তাই এতো ভিড় !
– হ্যাঁ এবার থেকে তো ভিড় একটু হবেই ! তুই তোর সাধের সিটটা হয়তো পাবি না আর.. হাহা !
– হাসিস না। এমনিতেই আমার ভিড় লাগে না। তবে তোর সাথে দেখা হবে, এটা ভেবে ভালো লাগছে।
– হমম তোর সেই তপন এর হাত থেকে আমি ই রক্ষা করবো তোকে !!
– ইয়ার্কি করিস না। চল বাস আসছে।
যা ভেবেছিলো তাই হলো। সিট তো দূর কোনোরকমে দ্বিতীয় সিট এর সামনে ২ জনে একটু দাঁড়াবার জায়গা পেলো। দীপিকা ভাবলো যাক তবু রাত্রী সাথে আছে।
-বল বাবান এর খবর কি ? কেমন আছে?
– ভালোই রে। খুব দুরন্ত হয়েছে আজকাল!
– তা তো হবেই এই বয়েস এ ! আর বাবান এর বাবা ? কোনো খবর পেয়েছিস?
– নিইনি কোনো খবর। জানতেও চাই না। তোকে তো আগেও বলেছি ওর কোনো খবর এ আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই।
– আচ্ছা আচ্ছা এতো রিএক্ট করারও কিছু নেই। জাস্ট কিড্ডিং বাবা !
-তোর খবর বল। বিয়ে টা করলি না শেষ পর্যন্ত।
– না রে ওসব করে কি লাভ যখন যা চাই পেয়ে যাই। সে টাকা পয়সা হোক বা শারীরিক চাহি …
– থাক বুঝেছি।
– হা হা ! সেই কনসারভেটিভই রয়ে গেলি।
– হ্যাঁ আমি এই সই ! তুই পারিস ও এই ভিড় বাস এ !!
-আচ্ছা বাবা থামলাম ! ( কোমর এর নীচে একটা আলতো স্পর্শ করে বললো রাত্রী )
তার স্পর্শে চমকে উঠলো দীপিকা। রাত্রী তো এমন ছিল না ! হ্যাঁ রাত্রী বরাবর ই একটু ওপেন মাইন্ডেড কিন্তু তাই বলে দীপিকার সাথে এরম তো কখনো করে নি ! দীপিকা বুঝতে পারলো না কি করবে বা বলবে। সে ভাবলো থাক হয়তো আনইন্টেনশনালি হয়েছে বিষয় টা। এসব নিয়ে সে হয়তো বেশি ভাবছে। তাই সে চুপ করে রইলো।
কিন্তু কিছুক্ষন পর আবার !! রাত্রী এবার একটু বেশি এগ্রেসিভ ! হাত টা এবার শুধু স্পর্শ নয় আলতো করে দীপিকার পাছা টা টিপে ও দিলো। এরম অবস্থায় দীপিকা আগে পড়েনি এমন নয় কিন্তু এতো দূর পর্যন্ত ও কেউ যেতে সাহস করেনি। তাছাড়া এতো তার অনেক দিনের বান্ধবী রাত্রী ! এতো পরিবর্তন ঘটেছে তার! দীপিকা ভাবলো বাস থেকে নেমে কথা বলা দরকার। রাত্রী তো জানে সে এগুলো পছন্দ করে না। রাত্রীর দিকে ঘুরে তাকালো সে এবং চমকে উঠলো!
রাত্রীর দুটো হাত ই তো সামনের সিট এর হ্যান্ডেল ধরা ! এতক্ষন সে মিথ্যা সন্দেহ করছিলো তাকে ! এভাবে ভুল বুঝলো ও রাত্রী কে ! কিন্তু !…….. এখন যে তাকে স্পর্শ করছে সে কে!! পিছন ফিরে দেখলো একটা মাঝ বয়সী লোক তার দিকে নোংরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে হাসছে! রাগ ও লজ্জা তে তার গা রি রি করে উঠলো।
রাত্রি কে বিষয় টা বলা দরকার। রাত্রী এগুলো ভালো হ্যান্ডেল করতে পারবে।
-ওউচ ! ওফঃ !!
একটা লোক এর চিৎকারে বাস এর লোকজন চমকে উঠলো। দীপিকা দেখলো সেই লোক টা যে তাকে স্পর্শ করেছিল বাস এ উল্টে পরে আছে। ঠোঁট এর কোন একটু রক্ত লেগে।
– লজ্জা করে না ভিড় বাস এর সুযোগ নিয়ে এসব করতে ?
পাস্ থেকে একটা ছেলে বললো। ছেলেটার দিকে তাকালো দীপিকা , মুখ দেখে মনে হলো ২০ -২২ বছর এর মতো হবে। সুঠাম চেহারা। ৫ ফুট ১০ এর আশেপাশে।
-চলুন ম্যাডাম কলেজ এসে গেছে। এসব নিয়ে আপনাকে মাথা ঘামাতে হবে না।
বাস থেকে নামলো দীপিকা সাথে রাত্রী ও সেই ছেলেটা।
-ধন্যবাদ। কিন্তু তুমি জানলে কিভাবে আমি কলেজ এর সামনে নামবো?
– আপনি আমায় চেনেন না। আমি সাউথ পয়েন্ট এই ক্লাস ১২ এ পড়ি।
– ওহ তাই বোলো। নাম কি তোমার?
– আমার নাম শ্রীজাত।আসি ম্যাডাম আমার একটু তাড়া আছে।
দীপিকা কিছু বলার আগেই চলে গেলো শ্রীজাত।
-আসি রে টিফিন এ সব কথা হবে ক্যান্টিনে.. এখন লেট হয়ে গেছে। রাত্রী বললো।
-হমম টাটা।
কলেজ পেরিয়ে উল্টো দিকের রোড এ গিয়ে ডায়াল করলো শ্রীজাত।
– নেমেছেন বাস থেকে ?
– এটা কি হলো ? আপনি বলেছিলেন শুধু একটু প্রতিবাদ করবেন মারপিট এর ডিল তো ছিল না দাদা? প্রথমে আপনি মারলেন তারপর বাস এর লোকজন রামকেলানি দিলো !
-সময় বুঝে ডিল চেঞ্জ করতে হয় দাদা।
– শুনুন এসব বলে লাভ নেই ২০০০ টাকা এক্সট্রা দেবেন যা ডিল হয়েছিল তার থেকে। তার সাথে আমার ট্রিটমেন্ট এর খরচ।
– পেয়ে যাবেন। আজ সন্ধ্যায় দেখা করুন।
-ওকে
পর্ব ১
ঢং ঢং ঢং ঢং ঢং..... !
চমকে উঠলো দীপিকা। দেওয়াল ঘড়ি তে ৫ টা বাজলো। একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেললো সে... আর মাত্র ২ ঘন্টা, তারপরেই শ্রীজাত আসবে। আজ রবিবার, আজই তার আসার কথা। এতদিন ধরে এতো চেষ্টা করেও যাকে আটকাতে পারলো না সে ! এতক্ষন ধরে দীপিকা পুরোনো কথা গুলোই ভাবছিলো। এই তো মাত্র ৩ মাস আগের কথা.. এতো কিছু বদলে যাবে এই কদিনে সে ভাবতেও পারেনি !
৩ মাস আগে................
সকাল ৯.৩০ বাজে। সাউথ পয়েন্ট কলেজ শিক্ষিকা দীপিকা সবেমাত্র স্নান সেরে বাবান কে খেতে দিয়ে নিজে রেডি হচ্ছিলো। তার আর খাবার সময় নেই। ৯.৫০ এর বাস মিস না করতে হলে এখনই বেরোতে হবে। তার ফ্ল্যাট থেকে 3c/1 বাস স্ট্যান্ড ১০ মিনিট এর দূরত্ব। এই বাস টা মিস করলে সে লেট হয়ে যাবে এমন নয়। কিন্তু পরের বাস এ তার সহকর্মী তপন যায়। তপনের স্বভাবের জন্য তার সাথে সাচ্ছন্দ বোধ করে না দীপিকা। তাই একটু আগে হলেও আগের বাসটা পছন্দ দীপিকার।
বাবান কে কলেজ এর গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে দীপিকা বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখে বেশ ভিড়। এদিক ওদিক খুঁজতে গিয়ে দেখতে পেলো রাত্রী দাঁড়িয়ে আছে। রাত্রী কাজ করে ঠিক সাউথ পয়েন্ট এর উল্টো দিকের অফিসটায়কিন্তু সে তো আগের বাসে যায়... এখন কি করছে?
-রাত্রি!
– আরে দীপিকা ! অনেক দিন পর দেখা !
– হ্যাঁ। কিন্তু তুই এখন ?
– এবাবা তুই জানিস না ? এখন থেকে আমাদের এই বাসেই দেখা হবে! আগের বাসের টাইম তো চেঞ্জ করেছে সেই ৯.১৫ তে যাবে আজ থেকে। অত তাড়া আমার নেই তাই ঠিক করেছি এই বাস এই যাবো এবার থেকে।
-ওহ তাই বল। … তাই এতো ভিড় !
– হ্যাঁ এবার থেকে তো ভিড় একটু হবেই ! তুই তোর সাধের সিটটা হয়তো পাবি না আর.. হাহা !
– হাসিস না। এমনিতেই আমার ভিড় লাগে না। তবে তোর সাথে দেখা হবে, এটা ভেবে ভালো লাগছে।
– হমম তোর সেই তপন এর হাত থেকে আমি ই রক্ষা করবো তোকে !!
– ইয়ার্কি করিস না। চল বাস আসছে।
যা ভেবেছিলো তাই হলো। সিট তো দূর কোনোরকমে দ্বিতীয় সিট এর সামনে ২ জনে একটু দাঁড়াবার জায়গা পেলো। দীপিকা ভাবলো যাক তবু রাত্রী সাথে আছে।
-বল বাবান এর খবর কি ? কেমন আছে?
– ভালোই রে। খুব দুরন্ত হয়েছে আজকাল!
– তা তো হবেই এই বয়েস এ ! আর বাবান এর বাবা ? কোনো খবর পেয়েছিস?
– নিইনি কোনো খবর। জানতেও চাই না। তোকে তো আগেও বলেছি ওর কোনো খবর এ আমার কোনো ইন্টারেস্ট নেই।
– আচ্ছা আচ্ছা এতো রিএক্ট করারও কিছু নেই। জাস্ট কিড্ডিং বাবা !
-তোর খবর বল। বিয়ে টা করলি না শেষ পর্যন্ত।
– না রে ওসব করে কি লাভ যখন যা চাই পেয়ে যাই। সে টাকা পয়সা হোক বা শারীরিক চাহি …
– থাক বুঝেছি।
– হা হা ! সেই কনসারভেটিভই রয়ে গেলি।
– হ্যাঁ আমি এই সই ! তুই পারিস ও এই ভিড় বাস এ !!
-আচ্ছা বাবা থামলাম ! ( কোমর এর নীচে একটা আলতো স্পর্শ করে বললো রাত্রী )
তার স্পর্শে চমকে উঠলো দীপিকা। রাত্রী তো এমন ছিল না ! হ্যাঁ রাত্রী বরাবর ই একটু ওপেন মাইন্ডেড কিন্তু তাই বলে দীপিকার সাথে এরম তো কখনো করে নি ! দীপিকা বুঝতে পারলো না কি করবে বা বলবে। সে ভাবলো থাক হয়তো আনইন্টেনশনালি হয়েছে বিষয় টা। এসব নিয়ে সে হয়তো বেশি ভাবছে। তাই সে চুপ করে রইলো।
কিন্তু কিছুক্ষন পর আবার !! রাত্রী এবার একটু বেশি এগ্রেসিভ ! হাত টা এবার শুধু স্পর্শ নয় আলতো করে দীপিকার পাছা টা টিপে ও দিলো। এরম অবস্থায় দীপিকা আগে পড়েনি এমন নয় কিন্তু এতো দূর পর্যন্ত ও কেউ যেতে সাহস করেনি। তাছাড়া এতো তার অনেক দিনের বান্ধবী রাত্রী ! এতো পরিবর্তন ঘটেছে তার! দীপিকা ভাবলো বাস থেকে নেমে কথা বলা দরকার। রাত্রী তো জানে সে এগুলো পছন্দ করে না। রাত্রীর দিকে ঘুরে তাকালো সে এবং চমকে উঠলো!
রাত্রীর দুটো হাত ই তো সামনের সিট এর হ্যান্ডেল ধরা ! এতক্ষন সে মিথ্যা সন্দেহ করছিলো তাকে ! এভাবে ভুল বুঝলো ও রাত্রী কে ! কিন্তু !…….. এখন যে তাকে স্পর্শ করছে সে কে!! পিছন ফিরে দেখলো একটা মাঝ বয়সী লোক তার দিকে নোংরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে হাসছে! রাগ ও লজ্জা তে তার গা রি রি করে উঠলো।
রাত্রি কে বিষয় টা বলা দরকার। রাত্রী এগুলো ভালো হ্যান্ডেল করতে পারবে।
-ওউচ ! ওফঃ !!
একটা লোক এর চিৎকারে বাস এর লোকজন চমকে উঠলো। দীপিকা দেখলো সেই লোক টা যে তাকে স্পর্শ করেছিল বাস এ উল্টে পরে আছে। ঠোঁট এর কোন একটু রক্ত লেগে।
– লজ্জা করে না ভিড় বাস এর সুযোগ নিয়ে এসব করতে ?
পাস্ থেকে একটা ছেলে বললো। ছেলেটার দিকে তাকালো দীপিকা , মুখ দেখে মনে হলো ২০ -২২ বছর এর মতো হবে। সুঠাম চেহারা। ৫ ফুট ১০ এর আশেপাশে।
-চলুন ম্যাডাম কলেজ এসে গেছে। এসব নিয়ে আপনাকে মাথা ঘামাতে হবে না।
বাস থেকে নামলো দীপিকা সাথে রাত্রী ও সেই ছেলেটা।
-ধন্যবাদ। কিন্তু তুমি জানলে কিভাবে আমি কলেজ এর সামনে নামবো?
– আপনি আমায় চেনেন না। আমি সাউথ পয়েন্ট এই ক্লাস ১২ এ পড়ি।
– ওহ তাই বোলো। নাম কি তোমার?
– আমার নাম শ্রীজাত।আসি ম্যাডাম আমার একটু তাড়া আছে।
দীপিকা কিছু বলার আগেই চলে গেলো শ্রীজাত।
-আসি রে টিফিন এ সব কথা হবে ক্যান্টিনে.. এখন লেট হয়ে গেছে। রাত্রী বললো।
-হমম টাটা।
কলেজ পেরিয়ে উল্টো দিকের রোড এ গিয়ে ডায়াল করলো শ্রীজাত।
– নেমেছেন বাস থেকে ?
– এটা কি হলো ? আপনি বলেছিলেন শুধু একটু প্রতিবাদ করবেন মারপিট এর ডিল তো ছিল না দাদা? প্রথমে আপনি মারলেন তারপর বাস এর লোকজন রামকেলানি দিলো !
-সময় বুঝে ডিল চেঞ্জ করতে হয় দাদা।
– শুনুন এসব বলে লাভ নেই ২০০০ টাকা এক্সট্রা দেবেন যা ডিল হয়েছিল তার থেকে। তার সাথে আমার ট্রিটমেন্ট এর খরচ।
– পেয়ে যাবেন। আজ সন্ধ্যায় দেখা করুন।
-ওকে