Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
পড়াশুনা শেষ করার পর ধুমসে টিউশনী করছিলাম আর চাকরী খুঁজছিলাম। একদিন টিউশনী শেষে বিকেলের মরা রোদে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। আমি সেদিন যে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম সচরাচর সে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতাম না। কারন রাস্তাটা যদিও আমার বাড়ির দিকে শর্টকাট কিন্তু অবৈধ। ওটা জেনারেল হাসপাতালের সার্ভিস কোয়ার্টারের রাস্তা, তবে পিছন দিকে বাউন্ডারী ওয়াল পেরোলেই আমার বাড়ি একেবারে কাছে, ৩ মিনিটের রাস্তা, আর ঘুড়ে এলে প্রায় ২০ মিনিট লাগে। একটু তাড়া ছিল বলে শর্টকার্ট দিয়েই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পিছন থেকে একটা বাচ্চা মেয়ের ডাক শুনতে পেলাম, “আঙ্কেল, আঙ্কেল, দাঁড়াও, আঙ্কেল, দাঁড়াও, আঙ্কেল, দাঁড়াও না, মা-মনি তোমাকে ডাকছে, আঙ্কেল, দাঁড়াও না, মা-মনি তোমাকে ডাকছে”। আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি রাস্তায় আমি ছাড়া আর কেউ নেই।
ভাবলাম, বাচ্চাটা কি তাহলে আমাকেই ডাকছে? আমি ঘুড়ে দাঁড়াতেই মেয়েটা হাঁফাতে হাঁফাতে এসে আমার হাত ধরে টানতে লাগলো, “আঙ্কেল এসো, মা-মনি তামাকে ডাকছে”। দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁফিয়ে গেছে বাচ্চাটা, বড্ড মায়া লাগলো আমার। আমি বললাম, “মা মনি, তুমি ভুল করছো না তো? তোমার মা-মনি বোধ হয় অন্য কাউকে ডাকছে, আমি নই”। বাচ্চাটা মিষ্টি সুরেলা কন্ঠে বললো, “না না আঙ্কেল, আমার মোটেই ভুল হয়নি, মা-মনি তোমাকেই ডাকছে। ঐ দেখো মা-মনি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে”। মেয়েটা আঙুল দিয়ে ইশারা করে যেখানে দেখালো সেদিকে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই। মেয়েটাও অবাক হয়ে বললো, “মা-মনি তো ওখানেই ছিল, মনে হয় তোমার জন্য ওয়েট করছে, এসো, তাড়াতাড়ি এসো”। আমি একটু ইতস্তত করছি দেখে আবারে আমার হাত ধরে টান দিয়ে বললো, “এসো না”।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
এবারে আমি এগোলাম, মেয়েটা আমাকে টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি যেতে যেতে কয়েকটা প্রশ্ন করলাম। “তোমার নাম কি মা মনি?” মেয়েটা অকপটে বললো, “আমি মৃত্তিকা, মা-মনি আমাকে ডাকে মৌ বলে আর দিদা আমাকে ডাকে বাবুসোনা বলে”। আমি বললাম, “তোমরা কি এখানেই থাকো?” ওর চটপট জবাব, “আরে বাবা হ্যাঁ, তুমি তো খুব বোকা, আমরা যদি এখানে না থাকতাম তাহলে আমি এখানে আসতাম কি করে বলো তো, হি হি হি হি”। কথা বলতে বলতে মৃত্তিকা আমাকে কাছের বিল্ডিংয়ের চারতলায় নিয়ে গেলো। দরজা চাপানো ছিল, ঠেলা দিয়ে খুলে আমাকে টেনে ভিতরে নিয়ে গেল, আমাকে সোফায় বসতে বলে মা-মনি, মা-মনি করে ডাকতে ডাকতে ভিতরে চলে গেল।
আমি খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম, নানান রকমের চিন্তা ঝড়ের গতিতে আমার মাথায় ঘুড়পাক খেতে লাগলো, কে হতে পারে? কেন ডাকবে আমাকে? আমি কি চিনি তাকে? নাকি কোন ফাঁদ এটা? না কেউ আমাকে নিয়ে মজা করছে? আমি কি বসেই থাকবো নাকি আস্তে করে উঠে চলে যাবো? ঘরটায় কোন আলো নেই, কেমন যেন অন্ধকার, সন্ধ্যাও প্রায় হয়ে এসেছে। আমি টেবিলে বা দেয়ালে কারো ছবি আছে কিনা খুঁজলাম, আছে কিন্তু অন্ধকারে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। একটু পরে মৃত্তিকা ফিরে এলো, একটু শান্তি পেলাম, যাক অপেক্ষার পালা শেষ, এবারে তার পরিচয় পাবো যে আমাকে ডেকেছে। কিন্তু না, কেউ আসেনি মৃত্তিকার সাথে। মৃত্তিকা বললো, “আঙ্কেল, মা-মনি তোমাকে ভিতরে যেতে বলেছে”।
আমি আবারো দ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম। বুকের মধ্যে ঢিপঢিপ করতে লাগলো, এ কি মুসিবতে পড়া গেল? কে সেই রহস্যময়ী? শেষ পর্যন্ত সব দ্বিধা ঝেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। মৃত্তিকা আমাকে ভিতরের ঘরে নিয়ে গেল। সেই ঘর আরো অন্ধকার। সেই অন্ধকারের ভিতর থেকেই একটা সুরেলা নারীকন্ঠ শোনা গেল, “মৌ, দরজা চাপিয়ে দিয়ে তুমি তোমার ঘরে যাও, পড়তে বসো, আমি তোমার আঙ্কেলের সাথে কথা শেষ করে একটু পরেই আমি তোমার জলখাবার নিয়ে আসছি”। বাধ্য মেয়ের মতো মেয়ে তার মায়েন আদেশ পালন করলো। আমি তখনো জানিনা কে সেই রহস্যময়ী। আর ধৈর্য্য না রাখতে পেরে বললাম, “কে আপনি? কেন আমাকে ডেকে আনলেন? আর কেনই বা এসব নাটক করছেন?”
খুট করে আলো জ্বলে উঠলো, বিছানার পাশে এক মহিলা আমার দিকে পিঠ দিয়ে বসা, বেডসুইচ টিপে আলো জ্বলিয়েছে। আমি পিছন থেকে দেখে চিনতে পারলাম না, বললাম, “কে আপনি? প্লিজ একটু তাড়াতাড়ি বলুন, আমার একটু তাড়া আছে”। এতক্ষনে মহিলা আবার কথা বললো, “তোমার তাড়া থাকলে তো হবে না, আমাকে আজ তোমার অনেকটা সময় দিতে হবে, কারন এই দিনটার জন্যই বলতে পারো আমি দিনের পর দিন অপেক্ষা করে আছি”। কথা শেষ করেই সে আমার দিকে ফিরলো, ওর গলা ধরে এসেছে, কাঁদছে। আমি অবাক বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম, আমার সামনে বসা মেয়েটা আর কেউ নয়, সীমা! আমার মাথার উপরে বাজ পড়লেও বোধ হয় আমি এতটা বিস্মিত হতাম না। আমি কেবল একটা কথাই উচ্চারণ করতে পারলাম, “একি, সীমা তুমি!”
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
সীমা আমার কলেজ জীবনের বন্ধু অশোকের একমাত্র বোন। আমি তখন বি এস সি পড়ি, আর দশটা বন্ধুর মতো অশোকের সাথেও প্রাথমিক বন্ধুত্ব, কিন্তু ক্রমে সেই বন্ধত্ব এতোটাই গাঢ় হলো যে, আমি আর অশোক একাত্মা হয়ে উঠলাম। শুরু হলো একজন আরকেজনের বাসায় যাতায়াত। অশোকের বাবা মারা গেছে অনেক আগে। সংসারে অশোক, ওর মা মমতা মাসী আর একমাত্র বোন সীমা। মমতা মাসী ছিলেন পেশায় নার্স, সেই সুবাদে ওরা সার্ভিস কোয়ার্টারে থাকতো, তবে সেটা ছিল একতলা একটা লম্বা বিল্ডিঙের একটা দুই রুমের বাসা। অশোক * হলেও আমাকে নিয়ে ওর পরিবারের কারো কোনরকম দ্বিধা ছিল না। মমতা মাসী আমাকে অশোকের মতোই ভালবাসতেন।
সীমা তখন ক্লাস ****-এ পড়ে, বেণী দুলিয়ে কলেজে যায়, দারুন চটপটে আর খুবই কোমল স্বভাবের একটা মেয়ে। আর চেহারা? যেন ডানাকাটা পরী, ওর রূপের কোন তুলনা হয় না, এতোটাই সুন্দরী ছিল ও। আশেপাশের অনেক ছেলেই ওকে একনজর দেখার জন্য রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতো কিন্তু ও কাউকেই পাত্তা দিতো না। সীমাকে দেখার পর থেকেই আমার বুকের মাঝে কেমন একটা ঝড় উঠলো। সীমাকে ছাড়া কোন কিছুই ভাবতে পারতাম, সারাক্ষণ ওর চেহারা, ওর হাঁটাচলা, ওর মুখভঙ্গি চোখের সামনে ছায়ার মতো লেগে থাকতো। রাতের পর রাত ওকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগতো। তবে এ ভাবনাগুলো আমি আর অন্যসব মেয়েদের সম্পর্কে ভাবতাম, তেমন নয়, আলাদা।
এর আগে যেসব মেয়েদের প্রতি আমি আকৃষ্ট হয়েছি তাদের নিয়ে ভাবতে গেলেই একটা ছবিই দেখতাম, আর সেটা হলো, যে কোন কায়দায় মেয়েটাকে আমি রাজি করিয়ে নিয়ে চুদছি। কিন্তু সীমাকে নিয়ে আমার সেরকম কোন ভাবনা হতো না, ওকে খুব পবিত্র লাগতো। ওকে নিয়ে ভাবতে গেলে দেখতাম, ওর সাথে দুষ্টামী করছি, ওকে আদর করছি, খুনসুটি করছি আবার মারামারিও করছি। আমার এক খুব বিশ্বস্ত বন্ধুকে এসব খুলে বললে ও বললো, “তুই মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেছিস, ভালবেসে ফেলেছিস ওকে, ওকে বিয়ে করে ঘড় বাঁধার স্বপ্ন দেখছিস তুই”। হবে হয়তো, হ্যাঁ মনে মনে ওকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্নই দেখেছিলাম। আর সেই কারনেই ওর প্রতি আমার মধ্যে আলাদা একটা অধিকারবোধ জন্মেছিল।
ওর দাদার বন্ধু হলেও সীমা ওর দাদার সাথে যেরকম সম্মান দেখাতো বা একটু দুরত্ব নিয়ে থাকতো আমার সাথে তেম করতো না। ওর অনেক গোপন ব্যক্তিগত কথাও আমাকে বলতো। এসব থেকে আমি ভাবতাম, সীমাও আমাকে মনে মনে পছন্দ করে। আমি ওকে পবিত্র মন নিয়ে ভালবেসেছিলাম বলেই ও আমার সাথে অনেক সময় একাকী একান্তে থাকলেও ওর গায়ে হাত লাগানোর চেষ্টাও করিনি। আমি ভাবতাম, সীমা আমারই, ওকে পাওয়ার জন্য আমাকে এতো তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। আমি পড়াশুনা শেষ করবো, ততদিনে সীমাও কলেজে পড়বে। তখন অশোককে বলে আমরা বিয়ে করবো, সুখে সংসার করবো ওকে নিয়ে। এতো কিছু মনে মনে ভাবলেও একটা কাজই করা হয়নি, সীমাকে কখনো মুখ ফুটে বলিনি যে আমি ওকে ভালবাসি।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
09-07-2021, 05:21 PM
(This post was last modified: 09-07-2021, 05:22 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ভাবতাম, সীমা যখন আমার সাথে এতোটাই আন্তরিকভাবে মেশে হয়তো ওও আমাকে ভালবাসে। মাঝে মাঝে ওর ব্যবহারে সেটা বোঝাও যেতো। কিন্তু সবই ছিল আমার মনের ভুল আর সেই ভুল ভাঙতে খুব বেশি সময় লাগলো না। সেদিনের কথা আমার স্পষ্ট মনে আছে, যেদিন সীমা আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে পরিষ্কার বুঝিয়ে দিল যে ও আমাকে কখনো ভালবাসেনি। সেদিন আমি ওদের ছেড়ে চিরদিনের জন্য সরে এসেছিলাম এবং আর কখনো ওদের বাসায় যাইনি। সেটা ছিল দূর্গা পূজার সময়। আমি একদিন ওদের বাসায় গিয়ে দেখি ওরা সবাই ভাল কাপড় চোপড় পড়ে কোথাও যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে। অশোককে জিজ্ঞেস করতেই বললো, “আমরা ঠাকুর দেখতে যাচ্ছি, তুইও চল”। মাসী আর সীমাও আমাকে সাথে যাবার জন্য চাপাচাপি করতে লাগলো।
ঠাকুর দেখার লোভে নয়, বরং সীমার সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় আমি ওদের সাথে ঠাকুর দেখতে গেলাম। আমরা হেঁটে হেঁটে বিভিন্ন পূজামন্ডপে গিয়ে দূর্গা দেখছিলাম। সবশেষে আমরা যখন শহরের সবচেয়ে বড় মন্দিরে গেলাম, সেখানে প্রচন্ড ভীড়, আমি সীমাকে সামনে রেখে দু’হাতে আগলে রাখলাম যাতে কেউ ওর গায়ে হাত না দিতে পারে। কারন এক শ্রেণীর উঠতি বয়সের ছেলে এইসব ভিড়ে সুন্দরী মেয়েদের দুধ টেপে, পাছায় আঙুল দেয়, ভুদাতেও হাত দেয়। আগে আমি নিজেও ওসব করেছি। সীমাও আমার আলিঙ্গনে আমার বুকের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে রইলো। আমি মনে মনে সংকল্প করলাম, আজই এই বিশেষ দিনে আমি সীমাকে জানাবো যে আমি ওকে ভালবাসি। কারন এর চেয়ে ভাল সুযোগ আর পরিবেশ আর সহজে পাওয়া যাবে না।
বড় মন্দিরের বাইরে রাস্তার উপরে বিশাল মেলা বসে। ওখানে ঠাকুর দেখা শেষ করে ফেরার সময় আমরা মেলার মাঝ দিয়ে ফিরছিলাম। এক জায়গায় সুন্দর সুন্দর ঠাকুর দেবতাদের মুর্তি বিক্রি হচ্ছিল। সেটা দেখে সীমা মাসীকে একটা স্বরস্বতী দেবীর মুর্তি কিনে দিতে বললো। কিন্তু মাসী ধমক দিয়ে ওকে নিবৃত্ত করলো, কারন রাত গভীর হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে। সীমা মুখ ভার করে মাসীর পিছনে পিছনে হাঁটতে লাগলো। সীমার ভার মুখ দেখে আমি খুব কষ্ট পেলাম। আমি অশোককে বললাম, “তোরা হাঁটতে থাক, আমি একটু আসছি, একটু পরেই আমি তোদেরকে ধরে ফেলবো”। আমি দৌড়ে গিয়ে একটা স্বরস্বতী দেবীর মুর্তি কিনে সেটা প্যাকেট করে নিয়ে আবার দৌড়ালাম এবং ওদের সাথে মিলিত হলাম। সবাই মিলে পরের মন্দিরে দূর্গা দেখতে লাগলাম।
অশোক আর মাসী মনোযোগ দিয়ে ঠাকুর দেখছিল কিন্তু সীমা উসখুস করছিল, বুঝলাম মুর্তি না পেয়ে ওর ঠাকুর দেখার সব ইচ্ছে নিভে গেছে। আমি পিছনে দাঁড়িয়ে ওর কাঁধে আলতো করে চাপ দিলাম। সীমা মুখ ঘুড়িয়ে আমার দিকে তাকালে আমি ওকে ইশারায় বাইরে আসতে বললাম। সীমা মাসীমাকে বললো, “মা আমার মাথা ব্যাথা করছে, আমি মনি-দা’র সাথে বাইরে দাঁড়াচ্ছি, তোমরা পূজো দেখে আসো”। মাসী ঘাড় ফিরিয়ে আমাকে দেখে আশ্বস্ত হয়ে একটু হাসলো। সীমাকে নিয়ে আমি একটা নিরিবিলি জায়গায় গেলাম এবং মুর্তিটা ওর হাতে তুলে দিলাম। সীমা মোড়ক খুলে মুর্তি দেখে এতো খুশি হলো যে মনে হলো ও আমাকে চুমু টুমু দিয়ে বসবে। আনন্দে লাফাতে লাগলো ও। আমি মনে মনে ভাবলাম ওকে আমার মনের কথাটা বলার এটাই মোক্ষম সুযোগ।
আমি সীমার দুই হাত ধরে গাঢ় স্বরে বললাম, “সীমা, আমি তোমাকে ভালবাসি, খুব ভালবাসি”। এ কথা বলেই আমি আর কোন দ্বিধা না করে ওর গালে চকাস করে একটা চুমু দিলাম। চুমুটা দিয়ে মাখটা সরাতেও পারিনি, সীমা ওর ডান হাতটা আমার হাত থেকে ঝাঁকি দিয়ে ছুটিয়ে কষে আমার বাম গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো, “কুত্তার বাচ্চা, তোমার এতো সাহস! দাঁড়াও এক্ষুনি আম দাদাকে সব বলছি”। সীমা হনহন করে আমার মন্ডপে ফিরে গেল। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্বের মতো সেখানে মুর্তির মতো দাঁড়িয়ে রইলাম কয়েক মিনিট, চোখ ফেটে কান্না এলো। সীমা যদি অশোককে ওসব বলে ওদের সামনে মুখ দেখাবো কি করে? এ কথা ভেবেই আমি কয়েকদিন কলেজে গেলাম না।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
সীমাদের বাসায় যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। ৪/৫ দিন পর কলেজে গিয়ে ভয়ে ভয়ে অশোককে খুঁজলাম কিন্তু শুনলাম ও নাকি ২/৩ দিন হলো কলেজে আসে না। একদিক দিয়ে স্বস্তি পেলাম, কিন্তু পরে আর কোনদিনই অশোক কলেজে এলো না, আমিও আর কোনদিন ওদের বাসায় গেলাম না। সেটা আজ থেকে প্রায় ৫ বছর আগের ঘটনা। কিন্তু সে ঘটনা আমার এখনো ষ্পষ্ট মনে আছে, এখনো চোখ বন্ধ করলে আমি সব কিছু স্পষ্ট দেখতে পাই। আমার জীবনে একজনকেই ভালবাসলাম আর সে আমাকে এতোটাই আঘাত দিল যে, জীবনে মেয়েমানুষকে চুদা ছাড়া ভালবাসার কথা ভুলে গেলাম। এর পর থেকে আমার জীবনে যত মেয়েমানুষ এসেছে, আমি শুধু বিভিন্ন কায়দা করে তাদেরকে চুদেছি মাত্র, ভালবাসিনি কখনও। কারন সীমা আমার ভিতরের ভালবাসার মানুষটাকেই মেরে ফেলেছিল।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে আমি আনমনা হয়ে গিছেলাম। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে বললাম, “ওহ সীমা, সরি আমি একটা ভুল জায়গায় চলে এসেছি, ঠিক আছে আমি যাচ্ছি”। বলেই আমি দরজার দিকে পা বাড়ালাম, আর তখনি সীমা কাঁদতে কাঁদতে ছুটে এসে আমার পায়ের সামনে বসে পড়ে বললো, “না, না মনি-দা, তুমি যেও না, প্লিজ”। আরো অবাক হয়ে গেলাম আমি। কৌতুহল হলো, আজ এতোগুলি বছর পরে সীমা কি বলতে চায় আমাকে? সেদিনের সেই অপমানের জ্বালা আমি আজো ভুলতে পারিনি। তবুও মানবিকতার খাতিরে বললাম, “ঠিক আছে ওঠো, আর প্লিজ কান্নাকাটি করো না, আমার ভাল লাগে না”। সীমা উঠলো, গুটি গুটি পায়ে খাটের কিনারে গিয়ে বসলো, তারপর বললো, “বসবে না?” আমি খাটের আরেক প্রান্তে বসে জিজ্ঞেস করলাম, “মেয়েটা কে? তোমার মেয়ে?” সীমা চোখ মুছতে মুছতে বললো, “হ্যাঁ”। তারপর আবার ফুঁপিয়ে কাদতে লাগলো। আম আবারও ওকে কাঁদতে মানা করলাম।
সীমাকে যেমন ভালবাসতাম, ওর কাছ থেকে অপমানিত হবার পর ওকে ততটাই ঘৃণা করতাম আমি। সেই ঘৃণা থেকেই বললাম, “এখন বলো, আমাকে ডাকিয়ে আনলে কেন? আমার মনে হয় তুমি আমাকে কিছু বলতে চাও। কি সেটা? আমার তো মনে পড়েনা যে আমি তোমার ক্ষতি হয় এমন কিছু আর করেছি”। সীমা খাট থেকে নেমে আবার আমার পায়ের কাছে বসে আমার পা ধরে বললো, “তোমার পায়ে পড়ি মনি-দা ওসব কথা আর তুমি বলোনা, আমাকে মাফ করে দাও। আমি খুব অসহায়, দয়া করে আমাকে বাঁচাও। আমি আজ কতটা দিন তোমার আসার অপেক্ষা করে রয়েছি, প্লিজ মনিদা, আমাকে আর মৃত্তিকাকে বাঁচাও, তোমার দেখা পাবো বলেই আমি বেঁচে আছি। আমাকে বিশ্বাস করো, আমি জানি এই দুনিয়ায় আমি শুধু একজনের উপরেই ভরসা করতে পারি, সে তুমি। তুমি যদি আমায় ফিরিয়ে দাও তাহলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার আর কোন পথ নেই”।
আমার মনটা নরম হয়ে গেলো, হাজার হোক আমি একসময় ভালবেসেছিলাম ওকে। পরে এর প্রতি ঘৃণা জন্মালেও মনের কোণে কোথায় যেন ওর প্রতি ভালবাসাটা নিভু নিভু করে জ্বলছিল, সেটাই তখন পরিপূর্ণভাবে দপ করে জ্বলে উঠলো। অবাক হলাম এই ভেবে যে, একটু আগেও সীমাকে আমার সহ্য হচ্ছিল না, আর এখন ওর প্রতি আমার মায়া হচ্ছে। সেজন্যেই বোধহয় সাহিত্যিকেরা বলে, ‘প্রকৃত ভালবাসা কখনো মরে না’। আমি ধীরে ধীরে বললাম, “মৃত্তিকার বাবা কোথায়?” ঝট করে মুখ তুলে আমার চোখে তাকালো সীমা, ওর চোখে ঘৃণা আর ক্ষোভের আগুন দেখলাম আমি, বললো, “ঐ কুত্তার বাচ্চার কথা আমার সামনে বলবে না”। তবুও আমি জানতে চাইলাম, মৃত্তিকার জন্ম রহস্য আর ওর জনকের পরিচয়, সেই সাথে তার ঠিকানা”। সীমা আমাকে জানালো, সেই সব কথা, এসো ওর নিজের মুখেই শুনিঃ
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
16-07-2021, 11:29 AM
(This post was last modified: 16-07-2021, 11:30 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
সীমা বলছেঃ
“রাজিব, তুমি ওকে চিনতে, কলেজে পড়তো, আমাদের বাসার কাছেই একটা মেসে থাকতো। কার্তিকের মতো চেহারা। ওর মধ্যে যে কি ছিল তা বলতে পারবো না কিন্তু একে দেখেই আমার ভাল লেগে যায়। পরে ও আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়, ভালবেসে ফেলি ওকে। তোমার সাথে যখন আমি খারাপ ব্যবহার করেছিলাম তখন আমরা একে অন্যকে খুব ভালবাসি। ওর প্রেমে অন্ধ ছিলাম আমি, তাই তোমার ভালবাসাটাকে আমি অনধিকার চর্চা মনে করেছিলাম। ভেবেছিলাম তুমি আমার রূপ দেখে পাগল হয়েছো। তাই তোমাকে অপমান করতে আমার এতটুকু বাধেনি। রাজিব আমাকে হঠাৎ করেই বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আমি ওকে জানালাম যে, আমার মা আর দাদা এখন কিছুতেই বিয়ে দিবে না, এস এস সি পাশ না করলে ওরা আমাকে বিয়ে দিতে রাজি হবে না”।
সীমা বলছেঃ
“তোমার সাথে ঐ ঘটনার ১ দিন পরেই দাদা বিদেশ চলে যায়। তোমাকে ও জানায়নি তারন তুমি কষ্ট পাবে, আর আমিও সেদিনের ঘটনা কাউকে বলিনি। রাজিব আমার উপরে প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করলো। শেষ পর্যন্ত এমনভাবে বললো, যে আমি রাজি না হলে ও সুইসাইড করবে। অগত্য আমি রাজী হয়ে গেলাম এবং এক রাতে আমি আমার কাপড় চোপড় আর সব গহনা নিয়ে রাজিবের হাত ধরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেলাম। রাজিব আমাকে অনেক ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে সীতাকুন্ড পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে গেল। ওখানে এক মন্দিরে আমার সিঁথিতে সিঁদুর দিয়ে আমাকে বিয়ে করলো। তারপর আমরা একটা কুঁড়েঘর ভাড়া নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মতো থাকতে লাগলাম। ও কোন কাজ কর্ম করতো না, সারা দিন রাত আমাকে নিয়ে পড়ে থাকতো। অল্প দিনের ভিতরেই ওর কাছে যা ছিল আর আমার কাছে যা নগদ টাকা ছিল সব ফুরিয়ে গেল”।
সীমা বলছেঃ
“পরে আমি ওকে বিশ্বাস করে আমার কিছু গয়না দিলাম বিক্রি করে টাকা আনার জন্যে। এভাবে তিন মাস কেটে গেল, টাকাও ফুরিয়ে গেল। তখন রাজিব আমাকে আরো গয়না দেবার জন্য চাপ দিতে লাগলো। আমি সাবধান হয়ে গেলাম, ক্রমে ক্রমে ওর লোভী চেহারাটা আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠলো। আমি ওকে বৌয়ের গয়না বেচে টাকা জোগাড় না করে একটা কাজ খুঁজতে বললাম। বিনিময়ে ও আমাকে সেই প্রথম মারধর করলো। আমি রাজিবের আসল চেহারাটা চিনতে পারলাম। আমি পরিষ্কার বুঝতে পারলাম রাজিব আমাকে ভালবাসেনি, আমার শরীর আর আমার গয়নার লোভে ও আমাকে নিয়ে এসেছে। প্রতিবাদ করতে চাইলাম কিন্তু ও আমাকে ওখান থেকে সরিয়ে আরকে জায়গায় নিয়ে আটকে ফেললো আর আমার সব গয়না কেড়ে নিল। ততদিনে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছি”।
সীমা বলছেঃ
“এখানেই শেষ নয়, রাজিব কুকুরের মত আমার দেহটা ভোগ করতে লাগলো। তারপর একদিন কিছু নতুন লোক এলো, ওদের কথাবার্তায় বুঝলাম, রাজিব ঐ লোকগুলোর কাছে আমাকে অনেক টাকায় বিক্রি করে দিল। অসহায় বোবা জন্তুর মতো শুধু কেঁদেছি, আর বিশ্বাস করো, আমার শুধু তোমার কতো মনে পড়তো। তোমাকে অপমান করার অনুশোচনায় আমি নিজের মাথার চুল নিজে টেনে টেনে ছিঁড়েছি। বত বড় ভুল যে আমি করলাম, মাঝে মাঝে মনে হতো আত্মহত্যা করি কিন্তু আমার পেটে মৃত্তিকার অস্তিত্ব, ওকে তো আমি মেরে ফেলতে পারবো না, এই ভেবে চুপ করে সব অত্যাচার সহ্য করলাম। পরদিন লোকগুলো আমাকে আরো অনেকগুলি মেয়ের সাথে পাচার করার জন্য একত্র করলো। রাতে ইন্ডিয়া বর্ডার পার হওয়ার এক ফাঁকে সুযোগ পেয়ে আমি আরো তিনটে মেয়ের সাথে পালালাম। ওখান থেকে চুপিচুপি অনেক কষ্টে যশোর চলে গেলাম। সেখানে এক দয়ালু বৃদ্ধা ধার্মিক '. মহিলা আমাকে আশ্রয় দিল। ওখানেই মৃত্তিকার জন্ম হয়”।
সীমা বলছেঃ
“ভেবেছিলাম আর ফিরবো না, এই মুখ আর কাউকে দেখাবো না, কিন্তু মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে সেটা আর করতে পারলাম না। ভয়ে ভয়ে ফিরে এলাম, মা আমার সব কথা শুনে আমাকে মাফ করে দিল। তুমি বিশ্বাস করবে কিনা জানিনা, এতো সব কিছুর ভিড়ে আমার কেবল তোমার কথাই মনে পড়তো, দাদাকে একবারের জন্যও মনে পড়েনি, কিন্তু তোমাকে ভুলতে পারতাম না। মনে হতো, একমাত্র তুমিই হতে পারো আমার বেঁচে থাকার অবলম্বন। মা-কে তোমার কথা জিজ্ঞেস করলে বললো, তুমি আর আসোনি আমাদের বাসায়, মা’র খুব অভিমান তোমার উপরে, সে তো আর জানেনা যে আমার কাছ থেকে কত বড় আঘাত পেয়ে তুমি ফিরে গেছ। শেষে আমি মা’কে সব খুলে বলেছি সেদিনের কথা। মা-ই আমাকে বললো তোমাকে খুঁজে বের করতে”।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
সীমা বলছেঃ
“মা আমাকে পরামর্শ দিলো, এসএসসি টা দিয়ে নার্সিং ট্রেনিং করার। মেয়েটা বড় হয়ে উঠছে, ওকে মানুষ করতে হবে। মা আর কয়দিন, আমাকেই তো সবটা পথ পাড়ি দিতে হবে। কিন্তু তোমার সাহায্য ছাড়া এতোটা পথ আমি একা চলতে পারবো না। তোমাকে আঘাত করেছিলাম, কিন্তু ভিতর থেকে বুঝতে পারছিলাম, আমি তোমাকেই ভালবাসি, নাহলে দুনিয়ায় এতো মানুষ থাকতে আমার সকল সত্ত্বা জুড়ে শুধু তুমিই থাকবে কেন? তোমাকে খুঁজছিলাম, তোমাদের পুরানো বাড়িতে গিয়েছিলাম, তোমরা নতুন বাড়ি করেছ, সেখানেও গিয়েছিলাম কিন্তু ঢুকতে সাহস হয়নি। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যেবেলা তোমাকে যেতে দেখলাম এই দিক দিয়ে। সেদিন থেকে রোজ আমি বিকেল থেকে বারান্দায় বসে থাকি তুমি আবার কবে আসবে এই আশায়। আজ তোমাকে দুর থেকে দেখেই মৌকে পাঠিয়েছিলাম, তোমাকে ধরে আনার জন্য। জানতাম, ও ঠিক পারবে, কারন ওর ঠিকানা তো ওকেই খুঁজে নিতে হবে”।
এতক্ষণ ধরে একাগ্রচিত্তে আমি সীমার কষ্টের কাহিনী শুনছিলাম। ওর কষ্টের কথা শুনে আমার চোখও ভিজে উঠছিল। সীমা করুণভাবে বললো, “মনি-দা, তুমি কি পেরেছ আমাকে ক্ষমা করতে? আমি কি তোমার ক্ষমা পাওয়ার অধিকারটুকুও হারিয়ে ফেলেছি?” সীমা হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। আমি বললাম, “সীমা, প্লিজ কেঁদোনা, লক্ষ্মীটি আর কেঁদোনা, অনেক কেঁদেছ জীবনে আর নয়, আর আমি তোমাকে কাঁদতে দেবো না”। সীমা বললো, “আমি জানতাম, তোমার মতো বড় মনের মানুষ দুনিয়ায় খুব কম আছে, তুমি তোমার সীমাকে অবজ্ঞা করতে পারবে না, আমার বিশ্বাস ছিল, আমার প্রতি তোমার ভালবাসা এখনো অটুট আছে। আমার মেয়েটাকে একটু দেখো, আর ওকে সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর মতো মর্যাদাটুকু দাও, এ জীবনে আমার আর কিছু চাইনে”। তবুও আমি কঠিনভাবেই বললাম, “ঠিক আছে সীমা তুমি যা চাইবে তাই হবে কিন্তু মনে রেখ এর কোন কিছুই তোমার জন্য নয়, আমি করবো তোমার চাঁদের মতো ফুটফুটে মেয়েটার জন্য, যদিও ও একটা সীমারের ঔরসে জন্মেছে, কিন্তু তোমার গর্ভ তো ওর ঠিকানা”।
সীমা মৃদু হেসে বললো, “ঠিক আছে, তাতেই চলবে, তুমি বস, একটু চা খেয়ে যেও”। সীমা মৃত্তিকাকে ডেকে দিয়ে চলে গেল। আমি মৃত্তিকার সাথে গল্প করতে করতে সীমা চা করে নিয়ে এলে আমি চা খেয়ে সেদিনের মতো বিদায় নিলাম। ২ দিন পর আমি আবার সীমার কাছে গেলাম। সেদিন মমতা মাসী বাসায় ছিলেন, তিনিও আমাকে সীমাকে ক্ষমা করে দিয়ে ওকে সাহায্য করতে অনুরোধ করলেন। মৃত্তিকা আমাকে পেয়ে খুব খুশী, আমি ওর জন্যে কিছু চকলেট নিয়ে গিয়েছিলাম, সেগুলি পেয়ে ও আনন্দে লাফাতে লাগলো, ওর ওরকম বাধভাঙা আনন্দ দেখে আমার চোখে পানি এসে গেল। কী দুঃখী মেয়েটা, এ জীবনে বাবার আদর পেল না। মনে মনে সংকল্প করলাম, যতদিন পারি আমিই ওকে বাবার আদর দেবো।
সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি মিটে গেল, আমি সীমাকে পড়ানো শুরু করলাম। এই একটা ঘটনায় পুরো পরিবার যেন আবার জেগে উঠলো। অশোক অষ্ট্রেলিয়াতে সেটেল করেছে, বিয়েও করেছে, আর দেশে আসবে না বলে জানিয়েছে, অপদার্থ! এরই মধ্যে সীমার রেজিষ্ট্রেশন, কলেজে ভর্তি এবং সেইসাথে নিয়মিত পড়ানো, এভাবে এক মাসের মধ্যেই আমার আর সীমার মাঝে যে জড়তাটুকু ছিল তা কেটে গিয়ে আমরা আবার ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠলাম। মাঝে মাঝে সীমা সব ভুলে আমার মুখের দিকে নিবিষ্ট মনে তাকিয়ে থাকতো, আমি ডাকলে প্রথমে সাড়া পেতাম না, পরে ওকে ধাক্কা দিয়ে ডাকলে যেন হঠাৎ সম্বিৎ ফিরে পেয়েছে এমনভাবে নড়েচড়ে বসতো, কেন যে এতো উদাস হতো বুঝতাম না। তবে আমার নৈকট্য পাওয়া এবং আমাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য ও সবসময় উম্মুখ হয়ে থাকতো।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
দেখতে দেখতে সীমার জন্মদিন এসে গেল। সীমা আমার কাছে ২ দিনের ছুটি চাইলো। সেটা ছিল ১৯৮৭ সালের ১৪ই জুলাই মঙ্গলবার, আমি ওর জন্যে একটা উপহার কিনেছিলাম, সেটা নিয়ে ঠিক সাড়ে তিনটের সময় পৌঁছালাম। ভেবেছিলাম, হয়তো ওদের কিছু আত্মীয়স্বজন, মাসীর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ কলিগরা আসবে। সেজন্যে একটু সাজুগুজু করে পারফিউম মেখে এসেছিলাম। কিন্তু ওদের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ, কেউ নেই। কলিং বেল টিপে দরজা খোলার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। বাসাটা একেবারে নিরিবিল শান্ত মনে হচ্ছিল। দ্বিধায় পড়ে গেলাম, ঠিক বাসায়ই এসেছি তো? না কি ভুল তরে অন্য ফ্লোরে.....নাহ ভুল হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। প্রায় দুই মাস ধরে প্রতিদিন আমি সীমাদের বাসায় আসছি, ভুল হবে কি করে। তবুও এক পাশে গিয়ে নিচে তাকিয়ে গুনে দেখলাম, ঠিকই আছে, চারতলাতেই এসেছি আমি। তাহলে? সীমা কি আমাকে নিয়ে মজা করছে? হতেই পারে না, এতো কিছুর পর সীমা এরকম করতেই পারে না।
পরে ভাবলাম, আমি সঠিক দিনে এসেছি তো? পরে মনে করে দেখলাম, নাহ আজকেই তো ১৪ই জুলাই, রেজিস্ট্রেশনের ফর্ম ফিল-আপের সময় আমি ওর বার্থ-ডে জেনেছি। আমি আবারও কলিং বেল বাজালাম, কিন্তু তবুও কারো কোন সাড়া পেলাম না। ফিরে যাবো কি না ভাবলাম, পরে আসবো না হয়, সন্ধ্যের দিকে। একবার ঘুড়তে গিয়েও কি মনে করে দরজার নবটা ধরে মোচড় দিতেই খুলে গেল। অবাক কান্ড, দরজা না লক করে সবাই গেছে কোথায়? কোন অঘটন ঘটেনি তো? আজকাল অনেক ফ্ল্যাটেই ডাকাতি হচ্ছে। আমি দ্রুত ভিতরে ঢুকে পড়লাম। পুরো বাসা ঘুটঘুটে অন্ধকার, জানালাগুলোও বন্ধ আর উপর দিয়ে মোটা পর্দা দেয়া মনে হচ্ছে। কেবল সীমার ঘরে আলো জ্বলছে আর দরজা দিয়ে কুয়াশার মতো ধোঁয়াটে দেখা যাচ্ছে। আমি সীমার রুমের দিকে এগোলাম।
দরজা দিয়ে ভিতরে উঁকি দিয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম। সীমার ঘরটা পুরো বাসর ঘরের মতো করে সাজানো। বিছানাতে ধবধবে সাদা চাদর ফুল দিয়ে ঢাকা। এক কোণে একটা বেদীর উপরে আমার কিনে দেওয়া সেই স্বরস্বতী দেবীর মুর্তি রেখে একাগ্রচিত্তে পূজা করছে সীমা। আমি সত্যিই হতবাক হলাম এই ভেবে যে, এতোদিন পরেও সীমা আমার দেওয়া মুর্তিটা যত্ন করে রেখে দিয়েছে। ধবধবে সাদা শাড়িতে সীমাকে পরীর মতো লাগছে। লাল পাড়ের সাদা শাড়ি, লাল ব্লাউজ, খোঁপায় বেলি ফুলের মালা, পরীর মতো অপরূপা লাগছিল সীমাকে। সত্যি বলতে কি এই প্রথম আমার বুকের ভিতরে আবার একটা মোচড় দিয়ে উঠলো। ভাবলাম, এতো কিছু না হলে এই পরীটাই আমার ঘরের বৌ হতে পারতো। একটা হালকা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো আমার বুক থেকে।
সীমার পূজা শেষ হলে উঠে দাঁড়িয়ে দরজার দিকে ফিরে একটুও অবাক না হয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে এগিয়ে এসে দুই হাতে আমার দুটো হাত ধরে বললো, “সরি, পূজো করছিলাম, তাই দরজা খুলতে যেতে পারিনি, এসো বসবে এসো”। আমাকে টেনে নিয়ে সেই ধবধবে সাদা বিছানায় বসালো সীমা। আমি আশ্চর্য হয়ে বললাম, “কি ব্যাপার সীমা? আজ তো তোমার বার্থ ডে, কিন্তু আয়োজন দেখে মনে হচ্ছে আজ তোমার ম্যারেজ ডে”। সীমা ওর দুই হাত দিয়ে আমার বাম হাত ধরলো, আমার বাম পাশে বসে বললো, “এক অর্থে তুমি ঠিকই বলেছ, আজ আমার জন্মদিনে নতুন এক সীমার জন্ম হবে। আজ আমার বার্থ-ডে এবং আজই হবে আমার ম্যারেজ-ডে, এতদিন পর্যন্ত এই দিনটা ছিল শুধুই আমার বার্থ-ডে, কিন্তু আজ থেকে প্রতি বছর এই দিনটাই হবে আমার বার্থ-ডে কাম ম্যারেজ-ডে”। আমি চমকে উঠলাম, কি করতে চাইছে সীমা? আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছে না তো? আমার কোমলতার সুযোগ নিয়ে মেয়েসহ আমার ঘাড়ে চাপতে চাইছে না তো?
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
পরক্ষনেই ভাবলাম, ছিঃ ছিঃ এ আমি কি ভাবছি, সীমা সে রকম মেয়েই নয়। ও এ ধরনের কাজ করতেই পারে না। কিন্তু আমি কিছুই ভাবতে পারছিলাম না ও কি করতে চাচ্ছে? মাসী বা মৃত্তিকা কাউকেই দেখছি না। আমার বুকটা ঢিবঢিব করতে লাগলো। সীমাই আমার সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিল। বললো, “মনি-দা, তোমাকে বলতে আমার লজ্জা নেই, কারন এই পৃথিবীতে এখন আমার আপন আর একান্ত কাছের মানুষ বলতে একমাত্র তুমি ছাড়া আর কেউ নেই। তুমি তো মানবে যে আমি একটা যুবতী মেয়ে, আমার জীবন আছে যৌবন আছে, অস্বীকার তো করতে পারি না। সৃষ্টিকর্তা নিজেই আমাদের প্রত্যেকের দেহে জৈবিক ক্ষুধা দিয়ে দিয়েছেন। এটা কোন মানুষের পক্ষেই অস্বীকার করার উপায় নেই। আর সেই জৈবিক ক্ষুদা মেটানোর একমাত্র অবলম্বন হলো, পুরুষের জন্য একটা নারী আর নারীর জন্য একজন সক্ষম পুরুষ”।
সীমা বলছেঃ
“তো আমি একজন নারী বলেই আমার দেহের জৈবিক চাহিদা মেটানোর জন্য একজন সক্ষম পুরুষ দরকার। তুমি বলবে, আমি ইচ্ছে করলেই আবার অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারি। হ্যাঁ পারি, কিন্তু সেটা করলে আমার মৃত্তিকা যে ভেসে যাবে, আর আমি একবার একজনকে বিয়ে করে যে অভিজ্ঞতা পেয়েছি তাতে আর কাউকে বিয়ে করার কথা ভাবলেও আমার গায়ে কাঁটা দেয়। তাহলে আমি কি করবো? যাকে তাকে দেহদান করবো? তুমিই বলো, আমি কি সেটা পারবো? না আমার পক্ষে সেটা করা সম্ভব? আমি কি করবো মনি-দা? আমি রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে ভেবেছি। এবং শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে এসেছি। আমার সদ্ধিান্ত আমি আমার মা-কে জানিয়েছি এবং তার পূর্ণ সম্মতিতেই আমি তোমাকে নিমন্ত্রণ করেছি”।
আমি অস্ফুট স্বরে জানতে চাইলাম, “কেন? আমাকে কেন?” সীমা বললো, “বলছি দাঁড়াও”। সীমা উঠে গিয়ে ঠাকুরের বেদী থেকে কি একটা নিয়ে এসে আবার আমার কাছে বসলো। ডান হাতে আমার বাম হাত ধরে ওর কোলের উপরে নিয়ে বললো, “ভয় নেই, আমি তোমাকে ঠকাবো না, আবার নিজেও ঠকবো না। তুমিই আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন, আর তাই আমার জীবন যৌবন তোমার পায়েই অর্পন করতে চাই। তুমি একজন '., আর আমি * , আমাদের শাস্ত্রমতে ঠাকুরের সামনে কোন ছেলে কোন মেয়ের সিঁথিতে সিঁদুর পড়ালেই সেই ছেলেটা সেই মেয়েটার স্বামী হওয়ার অধিকার অর্জন করে। মেয়েটার তখন সেই ছেলেটাকে নিজের সব কিছু উজাড় করে দিতে কোন বাধা থাকে না। আমিও তোমার কাছ থেকে সেই অধিকারটুকুই চাইছি। আর তুমি যেহেতু '., তোমাদেরও বিয়ের একটা রীতি আছে, সেটা ছাড়া কেউ তোমার প্রকৃত বৌ হতে পারে না। সেই অর্থে তুমি আমাকে আমার স্বামী হওয়ার অধিকার দিলেও তুমি কিন্তু প্রকৃত অর্থে আমাকে বিয়ে করছো না”।
সব কিছু ব্যাখ্যা করে সীমা আমার সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসে ডান হাতে একটা কৌটা তুলে ধরলো আমার সামনে। বললো, “নাও, পড়িয়ে দাও। আর তোমার মনে যতি আমার প্রতি কোন ঘৃণা থাকে, দরজা খোলা আছে, তুমি চলে যেতে পারো, আমি তোমায় আটকাবো না। মন থেকে যদি আমাকে গ্রহণ করতে পারো তাহলে আমাকে তোমার স্বামীত্বের অধিকারটুকু দাও”। সীমার চোখে পানি টলটল করছিল। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো ওর হাত থেকে কৌটাটা নিয়ে খুললাম, ভেতরে লাল টকটকে আগুনরঙা সিঁদুর, * মেয়েদের সবচেয়ে মূল্যবান পদার্থ। আমি বেশ খানিকটা সিঁদুর দুই আঙুলে তুলে নিয়ে সীমার সিঁথিতে লাগিয়ে দিলাম। সীমা একটু পিছিয়ে গিয়ে গলায় আঁচল জড়িয়ে উপুড় হয়ে আমাকে প্রণাম করলো। তারপর বললো, “তুমি আমায় বাঁচালে, আর তো তোমাকে মনি-দা বলতে পারবো না, আজ থেকে তুমি আমার মনি”।
আসলে আমি কি করছিলাম, তা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। একদিকে সীমার প্রতি অন্ধ আকর্ষণ, আরেকদিকে কর্তব্যবোধ, আর একদিকে আমার নিজস্ব স্বামাজিকতা। যদি এসব কথা বাইরে প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে বাড়িতে আর আমার জায়গা হবে না। সীমা মনে হয় আমার ভাবনাটা পড়তে পারছে। সীমা উঠে বাইরে গেল, সম্ভবত বাইরের দরজা বন্ধ করার জন্য। ফিরে এসে আমাকে বললো, “কি ভাবছো? এসব কথা লোক জানাজানি হলে তোমার সমস্যা হবে, তাই না?”। এগিয়ে এসে আমার মাথায় হাত রেখে বললো, “এই তোমার মাথা ছুঁয়ে কসম করছি, আমি, তুমি আর আমার মা ছাড়া পৃথিবীর কোন চতুর্থ ব্যক্তি এসব কথা জানবে না। সবাই জানবে আমার হঠাৎ করে বিয়ে হয়েছে, স্বামী বিদেশ থেকে এসে বিয়ে করে আবার বিদেশ চলে গেছে”।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
সীমা এগিয়ে এসে আমার মুখের একেবারে কাছে দাঁড়িয়ে আমার চিবুক ধরে উঁচু করে বললো, “কই এসো, তোমার বৌকে তুমি আদর করবে না?” আমি উঠে দাঁড়ালাম, ওর সামনে দাঁড়িয়ে বললাম, “সীমা, যা করছো, ভেবে করছো তো? তুমি মন থেকে তোমাকে সঁপছো তো, আমার উপকারের প্রতিদান নয় তো?” সীমা আমার মুখে হাত চাপা দিয়ে বললো, “চুপ, খবরদার, আর কখনো এরকম কথা মুখেও আনবে না, তুমি এভাবে বললে আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই মরে যাবে। আমি জানি না কখন যে আমি তোমাকে এতখানি ভালবেসে ফেলেছি, তা আমি নিজেই জানি না। তাই তোমাকে আমি আমার ভালবাসার অর্ঘ্য দিতে চাই, এসো”। আমি সীমার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করতে পারলাম না। পরবর্তী ৪০/৪৫ মিনিট ফুলে ঢাকা সাদা চাদরের বিছানায় ঝড় বয়ে গেল দুটি মানব মানবীর আদিম খেলায়।
পরে সীমা আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে শুয়ে অনে গল্প করলো। ঘন্টাখানেক পর দ্বিতীয় রাউন্ড হয়ে গেলো। রাত যখন ৮টা বাজে তখন মাসী মৃত্তিকাকে নিয়ে বাসায় এলো। আমাদেরকে হাসিমুখে দেখে মাসী ঠিকই বুঝলো, আমরা এতক্ষণ কি করছিলাম। সেদিনই সীমা মৃত্তিকাকে বললো, আমাকে কাকু না ডেকে মনি-বাবা বলে ডাকতে। মৃত্তিকা তো খুব খুশী, জানতে চাইলো, আমিউ ওর বাবা কিনা? মাসী বললো, হ্যাঁ দাদুভাই, ও-ই তোমার বাবা। মৃত্তিকাকে অনেক আদর করলাম। সেদিনই সীমা আমাকে জানিয়েছিল, সপ্তাহে দুদিন - প্রতি শনি আর মঙ্গলবার সেক্স হবে। সেই থেকে নিয়মিত প্রতি শনি আর মঙ্গলবারে আমরা মিলিত হতাম।
সীমা ভালভাবে এসএসসি পাশ করে নার্সিং-এ ভর্তি হলো। এরই মাঝে মৃত্তিকাকেও কলেজে দেওয়া হলো। আমিই মৃত্তিকাকে পড়াতাম। তবে মৃত্তিকা কেবলই অনুযোগ করতো আমি ওদের সাথে থাকি না কেন? আমি এটা সেটা বলে ওকে বোঝাতাম। পাশ করে চাকরী পেয়ে গেল সীমা আর আমারও চাকরী হয়ে গেল। কিছুদিন পরেই সীমা বদলী হয়ে যায়। ফলে দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর সীমার সাথে কোন যোগাযোগ ছিল না আমার। এরই মাঝে আমি বিয়ে করেছি, বাচ্চা কাচ্চাও হয়েছে। দেখা না হলেও সীমার কথা সবসময় আমার মনে পড়ে। আসলে ও-ই তো আমার জীবনের প্রথম স্ত্রী। দীর্ঘ ১৫ বছর পর............
আমরা একটা ট্যুরে গিয়েছিলাম সিরাজগঞ্জে। ওখানে গিয়ে আমার এক কলিগ হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে, ফুড পয়েজনিং। পরে তাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক বিকেলে তাকে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই সীমার দেখা পাই আমি, কিন্তু সীমা নিজেকে লুকিয়ে ফেলে, হয়তো অভিমানে। আমি ওর অনেক খোঁজাখুঁজি করতে থাকি দেখে একজন নার্স আমার পরিচয় জানতে চায়। আমার নামটা বলার সাথে সাথে সে আমাকে একটা রুমে নিয়ে যায়। সেখানে যা দেখলাম, নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। একটা বেদীতে সেই স্বরস্বতী দেবীর মুর্তি, দেখেই বোঝা যায় নিয়মিত পূজা করা হয়। নার্স আমাকে জানালো, শনি আর মঙ্গলবার দুই দিন নিয়মিত পূজা করে সীমা। নার্সটা জানে আমাদের সম্পর্কের কথা, ও সীমার খুব কাছের বন্ধু।
নার্সের কাছেই শুনলাম, মৃত্তিকা মেডিকেল কলেজে পড়ছে আর সীমা এখনও আমাকে স্বামী ভেবে নিয়মিত পূজা করে। আমি নার্সকে বললাম সীমার সাথে আমার যোগাযোগ করিয়ে দিতে কিন্তু সে বলল, “দাদা, লাভ নেই, আপনি বিয়ে করেছেন, বাচ্চা হয়েছে, আপনার একটা আলাদা সংসার আছে, সীমা চায় না সেই সংসারে সীমার ছায়া পড়ুক। তাছাড়া সীমার সাথে আপনার যোগাযোগ হলে মৃত্তিকা জানবেই, মেয়েটা আপনাকে পাগলের মত খুঁজছে। ওর সাথে দেখা হলে কি হবে ভেবে দেখেছেন? আপনার সংসারে বিশাল এক ঝড় উঠবে, যা আপনি সামলাতে পারবেন না। সীমা সেটা চায় না। সীমা ভাল আছে, আপনি ফিরে যান, ওর জন্য ভাববেন না”। আমি সেদিন ফিরে চলে এসেছিলাম। সীমার সাথে দেখা হয়নি, তবুও দূর থেকে এক ঝলক দেখেছিলাম ওকে।
তারপর চলে গেছে আরো অনেক দিন। সম্প্রতি সেই নার্সের সাথে ঘটনাচক্রে আবার আমার দেখা হয়ে গিয়েছিল। শুনেছি মৃত্তিকা ডাক্তারী পাশ করে বিদেশী একটা হাসপাতালে জয়েন করেছে ইউরোপে, সীমাকেও নিয়ে গেছে। মা-মেয়ে সুখেই আছে।
The End
Posts: 776
Threads: 0
Likes Received: 1,584 in 919 posts
Likes Given: 1,439
Joined: Jan 2021
Reputation:
187
মনে হল যেন কারো জীবনী পড়লাম! গল্পটায় কোথায় যেন সুখের ছোঁয়া আছে, সুখের ভেতরেও যেন হঠাৎই একটু দুঃখের ছোঁয়া, তারপর সব মিলিয়ে যেন আছে এক ভালোলাগা....................
•
|