Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
Daily Passenger
এক
অনেক দিন আগের কথা। ওকে আমি প্রথমবার দেখেছিলাম এক গয়নার দোকানে। কেন সে কথা জিজ্ঞেস করা বোকাবোকা শোনাবে। গয়নার দোকানে মেয়েরা কি করতে যায়! গয়না কিনতে, আর কি! অনেক গয়না দেখে দোকানদারকে রীতিমত বিরক্ত করে সব শেষে নিজের পছন্দ মত একটা গয়না কেনা, আর ভুললে চলবে না যে বাজেটের কথা মাথায় রেখে সব দিক বিবেচনা করে শেষমেশ একটা কিছু খরিদ করে নেওয়া। এই আর কি। আমিও অনেক বছর হয়ে গেল কোনও গয়না কিনি নি। আর সত্যি কথা বলতে হাতে টাকা জমতে শুরু করেছে অনেক দিন ধরে, কিন্তু আমার কাছে ভাল গয়না একটাও যে নেই। অনেক দিনের পরিকল্পনা, যে এইবার পূজার আগে একটা ভাল দেখে নেকলেস আর না নিলেই নয়। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই এখানে আসা। আজ আমার দুপুরের পর অফ,তাই চলে এলাম। একাই এসেছি। আমার হবু বর আমার সাথে দোকানে আসতে রাজি না হওয়ার কারণ অবশ্য আমার অযথা সময় লাগানো জিনিস পছন্দ করায়, সে শাড়িই হোক বা গয়নাই হোক বা জিন্স টপই হোক। একটু দেখে শুনে না নিলে কেমন করে হবে। মেয়েদের শাড়ি আর বাজারের ইলিশ মাছ একই রকম মেপে ঝেঁকে না কিনলে শপিঙ্গে আসাটাই তো মাঠে মারা গেল। দোকানে অবশ্য অনেক মহিলা ছিলেন। অল্প বয়সী মেয়েরাও ছিল। কোনও কোনও মহিলা ওনাদের বরের সাথে এসেছেন, ওনাদের বররা কোনটা পরলে ওনাদের ভাল লাগবে সে সব উপদেশ দিয়ে ওনাদের সাহায্য করে চলেছেন। একজন কে দেখে বুঝলাম ওনার সাথে ওনার বরের একটা ঠাণ্ডা ঝগড়া হয়ে গেল দোকানের ভেতরেই। যদিও দোকানদার বা ওনার কর্মচারীদের সেই ব্যাপারে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। বোধহয় এত বড় দোকানে এত দিন ধরে কাজ করে করে এই সব ছ্যানালি নাটক এর আগে অনেক দেখেছে ওরা। পছন্দ মিল খায় নি, আর কিছুই নয়। দু একটা অল্প বয়সী মেয়েকে দেখলাম তাদের হবু বর বা বয় ফ্রেন্ডকে সাথে করে নিয়ে এসেছে। মোটামুটি সবাই পূজার আগে কিছু একটা কিনতে চায়। হয়ত বা কারোর নিজের বাড়িতেই পূজা হবে। অনেক আত্মীয় আসবেন সেখানে। ভালো শাড়ি আর নতুন গয়না না পরতে পারলে বোধহয় ফ্যাশন দাঁড়াবে না। অনেক কথা হবে পিছনে। বাঙালিদের মধ্যে গয়না আর শাড়ি যেন একটা স্ট্যাটাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার কথা লিখতে বসেছি তার কথায় আসি। ওনাকে আমার চোখে পড়ার কারণ মাত্র দুটো, না প্রধানতও তিনটে, কিন্তু আসলে চারটে।
কারণ একঃ দেখলাম জলের মতন টাকা উড়িয়ে দিলেন মিনিট দশেকের মধ্যে। আমি প্রায় আধ ঘণ্টা ধরেও এটা সেটা দেখে ঠিক পছন্দ করে উঠতে পারছি না। কারণ অবশ্য একটাই। সেই যে বললাম বাজেট সমস্যা। না হলে সব কটাই হয়ত কিনে নিতাম। (মাঝে মাঝে এই সব দোকানে এসে নিজেকে ভীষণ গরীব মনে হয়। কিন্তু, কিছু করার নেই।) উনি গোটা দুই সোনার আংটি(এবং রীতিমত দামী) একটা রীতিমত ভারী সোনার নেকলেস (রীতিমত দামী যে হবে সেটা বলাই বাহুল্য), আর এক জোড়া মোটা সোনার ওপর আধুনিক ডিজাইন করা ভারী হাতে পরার বালা কিনে নিলেন, মানে বুক করে দিলেন। (মনে মনে হিংসাই হল। নিশ্চই কোনও বড়লোক ব্যবসায়ীর গিন্নি। তাই এত উদ্যাম বেপরোয়া ভাব।) জিনিস যা কিনলেন রীতিমত চোখ ধাঁধিয়ে যাবার মতন। পরে খেয়াল করে দেখলাম শুধু আমি কেন, আমার মতন অনেকেই মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ওনাকে দেখছেন।
কারণ দুইঃ ওনার পরিধানের পোশাকআশাক। আর কথা বলার ভঙ্গিমা। সময়ের সাথে সাথে আমরা বাঙালি মেয়েরা অনেক অগ্রসর হয়েছি। শুধু কাজে কর্মেই নয়। পোশাকআশাকেও। আমরা এখন অনেক ক্যাজুয়াল থাকি। কিন্তু ওনাকে দেখলাম উনি যেন সমস্ত মহিলা খরিদ্দারদের মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম। যে শারিটা পরেছেন সেটা ঠিক বেনারসি না হলেও, বেনারসি গোত্রীয় তো বটেই। এরকম বস্ত্র পরিহিতা আজকের দিনে কলকাতার রাস্তায় খুব একটা দেখা যায় না, আর তাও এই ব্যস্ততার সময়ে, যখন ভারী শাড়ি পরে রাস্তায় প্রতিযোগিতা করতে নামলে শাড়িতে পা আঁটকে পড়ে গিয়ে প্রচণ্ড একটা বিপদ ডেকে আনার সম্ভাবনা। লাল শাড়ির সাথে ম্যাচ করা ছোট হাতা কাঁচুলির মতন লাল রঙের ব্লাউজ যেন ওনার পোশাকি আভিজাত্য অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। সঠিক বলতে পারব না, তবে দেখে মনে হল, পরিষ্কার ওয়াক্স করা হাত। শাড়িটা যেন নাভির একটু নিচেই পরা। যদিও নাভি শাড়ির নিচে ঢাকা। গলার স্বর গম্ভীর অথচ মধুর। অনেকের গলায় একটা সুরেলা ভাব থাকে। এনারও তাই। স্বল্পভাষী। কথা বার্তায় একটা ব্যক্তিত্ব আর আভিজাত্য ফুটে ওঠে।
কারণ তিনঃ ওনার চেহারা, স্বাস্থ্য আর গায়ের রঙ। অনেকের কথাবার্তা আর পোশাকে ব্যক্তিত্য প্রকাশ পেলেও, চেহারা অনেক সময় বেমানান লাগে। মনে হয় কোথাও যেন কিছু একটা গণ্ডগোল হয়ে গেছে। কিন্তু ওনার ক্ষেত্রে তেমনটা নয়। আমার আন্দাজ ঠিক হলে উচ্চতায় পাঁচ আটের কম হবেন না। এরকম উচ্চতা সচরাচর বাঙালি মেয়েদের মধ্যে দেখা যায় না। মেয়ে ছেড়ে দিন, ছেলেদের মধ্যেই বিরল। মুখে একটা অদ্ভুত লাবণ্যর ছটা, সুন্দরী বলে ওনাকে ছোট করব না, সুন্দরীর থেকে একটু নয় অনেকটাই বেশী, মানে আমরা যাদের চলতি কথায় সুন্দরী বলে থাকি। সব থেকে দেখার মতন হল গায়ের রঙ, ফর্সা আর সোনালি রঙের মিশ্রনে যেন কেউ একটা গোলাপি আভা ছড়িয়ে দিয়েছে। এরকম গায়ের রঙ নিজের চোখে না দেখলে কারোর বিশ্বাস করার কথা নয়। আমাদের মতন মেয়েদের তো রোদে পুড়ে পুড়ে গায়ের রঙের সব লাবণ্য আর ছটা শেষের পথে। মুখে এক ফোঁটাও প্রসাধন নেই, একটু হালকা লিপস্টিক ছাড়া, আর তাও বেশ রুচি সম্মত আর সম্ভ্রান্ত। ফিগার এমন, যেন ওনার সেই বনেদী টাইপের বেশভূষার মধ্যে থেকেও সেটা ফুটে বেরোচ্ছে। ঘাড় থেকে কোমর অব্দি যেখানে ঠিক যতটা মাংস লাগার কথা ঠিক ততটাই দিয়ে পাঠিয়েছেন ওঁকে ভগবান। পিছনে ফিরলে মনে হল শরীরের পেছন ভাগেও ভগবান কোনও কার্পণ্য করেন নি। যেখানে ঠিক যতটুকু দেওয়ার ঠিক ততটাই মেপে মেপে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বয়স বোধ করি ত্রিশের সামান্য উপরে হবে।
কারণ চারঃ আমি ওনার পাশেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নেকলেস পছন্দ করছিলাম। যতক্ষণ ওনার কেনা কাটা সম্পূর্ণ হয় নি ততক্ষণ যেন ওনার চারপাশে কি ঘটে যাচ্ছে সেই দিকে ওনার কোনও খেয়াল নেই। নিজের জিনিস পছন্দ করে হ্যান্ড ব্যাগ থেকে দুটো মোটা টাকার বান্ডিল বিলে পাঠানোর পর প্রথমবার আমার দিকে ওর নজর পড়ল। আমি তখন আমার সাত নম্বর নেকলেসটা গলার সামনে বিছিয়ে দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছি মানানসই হবে কি না, আর মাথায় ঘুরছে একটাই প্রশ্ন যে দামটা দোকানদারের সহকারী আমাকে বলেছে সেটা দেওয়া ঠিক হবে কি না। উনি এক পলক ঘুরে আমাকে দেখে নিয়েই বললেন, “ এটা নিও না। আগেরটাই তো ভালো ছিল।“ তারপর একটু থেমে ইতস্তত করে বললেন “ দাম টা যদিও এটার থেকে একটু বেশী হবে। “ আবার আরেকটু থেমে বললেন “বয়স কম ওইটাই নাও। পয়সা তো পরেও রোজগার করে নিতে পারবে।“
এর পরের ঘটনা। বুঝলাম আমি যেমন আড়চোখে ওনাকে লক্ষ্য করছিলাম, উনিও নিশ্চই আমাকে লক্ষ্য করেছেন। সহকারী ভদ্রলোক যেন ওনার কথারই অপেক্ষা করছিল। সাথে সাথে আমার হাত থেকে এই নেকলেসটা ছিনিয়ে নিয়ে আগেরটা আবার আমার হাতে দিয়ে আয়নার সামনে থেকে সরে দাঁড়াল। জিনিসটা সত্যি ভালো। ওনাকেও একবার সামনা সামনি পরে দেখালাম। উনি হেঁসে বুঝিয়ে দিলেন ভাল দেখাচ্ছে। নেকলেস ঘাঁটা শেষ করে ওটাই নেব মনস্থির করে সহকারী ভদ্রলোককে বলে দিলাম। আমার হাত থেকে নেকলেসটা ছিনিয়ে নিয়ে (মনে হয় যাতে আর মত পরিবর্তন করতে না পারি) বিল করতে চলে গেল। আমি ওনার দিকে এই প্রথম সরাসরি একটু হাসিহাসি মুখ নিয়ে তাকালাম। ওনার মুখেও একটা সাবলীল অকৃত্রিম হাঁসি। বললেন “এসো, ওইখানে গিয়ে একটু বসি। বিল করতে সময় লাগাবে। এখন প্রচুর ভিড়, আর সবাই খুব ব্যস্ত।“ সময় যে লাগবে সেটা আমারও মনে হয়েছিল। আমিও তাই আর কথা না বাড়িয়ে ওনার নির্দেশিত ক্রেতাদের জন্য বরাদ্দ সোফার একাংশে গিয়ে বসে পড়লাম। শরীরটা যেন একটু ছেড়ে দিল। না পরিশ্রম তেমন কিছু হয়নি আজ সারা দিন। কিন্তু পকেট থেকে এতগুলো টাকা এক ঝটকায় বেড়িয়ে যাবে ভেবে মনটা একটু বিষিয়ে উঠেছিল যেন। অবশ্য কয়েক মুহূর্তেই সেটা কেটে গেল, কারণ ওখানে বসেই উনি আমার সাথে সুরেলা কন্ঠে গল্প জুড়ে দিলেন। বেশ মিশুকে কিন্তু ভদ্রমহিলা। অবশ্য ওনার কথা বার্তায় একটা আভিজাত্য আর বনেদী গৃহিণীর ছাপ স্পষ্ট।
বিল হতে সত্যিই অনেক সময় নিল ওরা, আর সময় যত বাড়ছে দোকানে খরিদ্দারের ভিড়ও যেন ততই বেড়ে চলেছে। ধীরে ধীরে আমরা বন্ধু সুলভ কথাবার্তা শুরু করলাম। মেয়েরা বন্ধু সুলভ কথাবার্তা বলতে কি বোঝায় সেটা কার অজানা এই দুনিয়ায়। অর্থাৎ, এক কথায় আমরা একে ওপরের হাঁড়ির খবর একে ওপরের সামনে পাড়তে শুরু করে দিলাম। আমার বাড়ি, হসপিটাল সব খবর বললাম, এমন কি আমার একজন পাণিপ্রার্থী আছে সেটাও উগড়ে দিলাম। ওনার বিষয়েও অনেক কথা জানলাম। ওনার বাড়ি কলকাতা থেকে প্রায় একশত পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে একটা বনেদী গ্রামে। গ্রাম না বলে মফস্বল বললে ঠিক হবে। কিন্তু বেশ জনবসতি বিরল একটা জায়গায়। আমার আন্দাজ ঠিকই ছিল। বনেদী জমিদার বংশের বড় ছেলের গৃহবধূ। তবে ওনার শশুর নাকি আর বেঁচে নেই। ওনার স্বামী ওনার সাথে বন্ধুর মতন মেশে, আর পূজার আগে কোলকাতায় ওনাকে প্রায় নাকি জোর করে শাড়ি গয়না ইত্যাদি কিনতে পাঠান। ওনার স্বামী নাকি ওইখানকার একটা এবং একমাত্র বড় চালের গুদামের মালিক। বেশ কিছুক্ষণ খোশগল্প হওয়ার পর উনি যেন একপেশে ভাবেই আমাকে ওনাদের গ্রামে আর ওনাদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে বসলেন। আমি প্রথমে ব্যাপারটাকে অতটা গুরুত্ব দি নি। কিন্তু, এক সময় মনে হল যে উনি আমাকে বেশ জোর দিয়েই ওনার বাড়ি যেতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। উনি নাকি খুব একলা থাকেন কারণ ওনার স্বামী সারা দিন বাইরে থাকেন ব্যবসার কাজে। আর ওনার কোনও বাচ্চা হয় নি। তাই ওনার নিঃসঙ্গতা আরও অনেক বেড়ে গেছে। ওনার স্বামী একদম রাতের দিকে বাড়ি ফেরেন। তাই পূজার সময় কটা দিনের জন্য ওনার বাড়িতে আমার পায়ের ধূলা পড়লে উনি যারপরনাই খুশি হবেন। আমাদের বিল চলে এসেছিল, আমি তখনকার মতন এই সংলাপে ইতি টানবার জন্য বললাম “আচ্ছা বেশ আমারও অনেক দিন বাইরে যাওয়া হচ্ছে না। একটু ভেবে দেখি। ওর সাথে একটু কথা বলে নি। তারপর জানাচ্ছি।“ মোবাইল নম্বর আদান প্রদান হয়ে গেল। বুঝলাম গ্রামে মোবাইল টাওয়ার পৌঁছেছে। বাইরে বেরোতেই দেখলাম একটা ভারী বনেদী ধপধপে সাদা অ্যাম্বাস্যাডার গাড়ি এসে থামল। যেন গারির চালক জানত যে উনি ঠিক এই মুহূর্তেই বাইরে বেরবেন। চালক গাড়ি থেকে নেমে পিছনের দরজাটা খুলে দাঁড়িয়ে থাকল। এই জনভর্তি রাস্তায় ফুটপাথের ধারে বেশীক্ষণ ধরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখলে পুলিশ এসে কেস দেবে। তাই ওনার ইচ্ছা থাকলেও উনি দাঁড়াতে পারলেন না। গাড়িতে ওঠার আগে আমার দুটো হাত ওনার কোমল হাতের মধ্যে নিয়ে আমাকে বললেন “তুমি আসলে সত্যিই আমি খুব খুশি হব। আর জেনে রেখ এটা আমার অন্তরের কথা।“ দরজা বন্ধ করতেই চালক লাফিয়ে গিয়ে সামনের সিটে উঠে গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট করে দিল। উনি গাড়ি শুরু হওয়ার এক মুহূর্ত আগে চালককে চাপা গলায় কি একটা বলতে গাড়িটা চলতে গিয়েও যেন দাঁড়িয়ে পড়ল কয়েক মুহূর্তের জন্য। জানলার কাঁচ নামিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন “তুমি ডাক্তার তো?” মাথা নেড়ে বুঝিয়ে দিলাম হ্যাঁ। উনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন “তুমি অনেক পড়াশুনা করেছ। আবারও বলছি, তুমি এলে সত্যি ভালো লাগবে। আশা করি তোমারও ভালো লাগবে। এসো কিন্তু, হ্যাঁ? “ গাড়ি ধীরে ধীরে এগোতে শুরু করে দিয়েছে। ওনার শেষ কথাটা কানে এল, অনেকটা যেন দীর্ঘশ্বাস মেশানো আছে সেই স্বরে, “ ষষ্ঠীর দিন সকাল সকাল চলে এসো। ষষ্ঠীর দিনই এসো কিন্তু।(কেন এত জোর দিলেন জানি না) অমুক নম্বর ট্রেনে উঠলে বেশীক্ষণ লাগবে না...” বাকি কথাটা মিলিয়ে গেল রাস্তার কোলাহলে আর ইঞ্জিনের শব্দে। মনে মনে ভাবলাম সত্যি ভদ্রমহিলা বড়ই একা। বোধহয় কথা বলার লোক নেই। ওনার স্বামী ব্যবসা নিয়ে এতটা মেতে আছে যে উনি নিজের একাকীত্বে হাঁপিয়ে উঠেছেন আর তাই এই একদিনের ক্ষণিকের আলাপেই আমাকে নিজেদের বাড়িতে পূজায় যাবার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে গেলেন। বড়লোক বাড়িতে এমনটাই হয়ে থাকে। আমি আমার পথে পা বাড়ালাম।
রাতে খাবার টেবিলে ***কে কথাটা পাড়লাম। যদিও আমি যে যাব বা যেতে চাই তেমন কথা বলিনি। আমার হবু স্বামী আর আমি এক সাথে একই ফ্ল্যাটে ভাড়া করে আছি। এতে নাক কুঁচকানোর মতন কিছু নেই। অনেকেই থাকে আজকের দিনে। ও আমাকে উৎসাহ দিল বেড়িয়ে পড়তে। ও নিজে আসতে পারবে না বলে দুঃখ প্রকাশ করল, কারণ ওঁকে একটু পড়াশুনার কাজে দিল্লি রওয়ানা হতে হবে দিন পাঁচেকের মধ্যে। সেটা অবশ্য আগে থেকেই স্থির ছিল। ফিরবে সেই প্রায় দুই মাস কাটিয়ে। তাই বোধহয় পূজার কটা দিন আমাকে সময় দিতে পারবে না বলে আমাকে ওখানে যাওয়ার জন্য উস্কে দিতে চাইছে। মনে মনে হেঁসে ফেললাম। ছেলেগুলো সেই ছেলেমানুষই রয়ে গেল। আমি যেন ওর কোনও সমস্যা বুঝি না। আর একজন ডাক্তার আরেকজন ডাক্তারের ব্যথা না বুঝলে আর কে বুঝবে। তবে ওর কথায় যে খানিকটা কাজ দিয়েছে সেটা বুঝলাম দুদিন পর। আর তাছাড়া আরেকটা ব্যাপারে একটা ক্ষীণ দুঃখ ছিল, কেন আমাকে পূজায় একা ফেলে রেখে দিয়ে যাচ্ছে, যদিও স্বেচ্ছায় যাচ্ছে না। আমি একমাত্র পূজার এই কটা দিনই ওঁকে নিজের মতন করে সব সময় পাই, সে বাড়িতেই হোক বা বাইরে হোক। বেশ হাত ধরে হাঁটা যায়, ঠাকুর দেখা যায়। আমার জন্ম দিনে আমার সাথে না থাকলেও তেমন দুঃখ হয় না, কারণ ব্যস্ততা আজ কার জীবনে নেই, কিন্তু এই কটা দিন যেন ঠিক হানিমুনের মতন। আগের বার আমরা বাইরে কাছাকাছির মধ্যে বেড়াতেও গেছিলাম। এইবার কিছুই হবে না। তবে সেটা অনেক আগে থেকেই স্থির করা ছিল। আর আমি মত দিয়েছি বলেই না ও বাইরে যাচ্ছে মাস দুয়েকের জন্য।
হাঁসপাতালে যাবার জন্য তখনও তৈরি হয়নি। ও তখনও রেডি হয়নি পুরোপুরি। আমি দুজনের ব্রেকফাস্ট তৈরি করতে ব্যস্ত। এমন সময় বেজে উঠল আমার মোবাইল। সেই মহিলা। প্রথমে দুএকটা সৌজন্যসূচক কথা বলার পরই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন যে আমি ষষ্ঠীর দিন সকালে যাচ্ছি কিনা। আমি একটু আশ্চর্য হয়েছি বুঝে আমাকে একটু জোর দিয়েই বললেন “একবার এসেই দেখো। খারাপ লাগবে না। ভোর বেলায় উঠে প্রথম ট্রেনটা নিয়ে নিও। গাড়ি পাঠিয়ে দেব স্টেশনে। স্নান খাওয়া সব কিছু এখানে এসে আমার সাথে করবে। তোমার যত্নের কোনও ত্রুটি রাখব না এই যেন।“ ওনার কথায় যেন একটা অসহায় অথচ দৃঢ় আহ্বানের সুর ছিল যেটা মনের মধ্যে দাগ কেটে গেল। ব্রেকফাস্টের টেবিলে ***কে ওনার ফোনের কথা বলতেই ও আমাকে বলল “বলছি তো, যাও গিয়ে ঘুরে এস। জমিদার বাড়িতে থাকার সুযোগ আর কোনও দিন পাবে কি না বলতে পারি না। “ আমি তখন মুখে স্বীকার না করলেও মনে মনে ওখানে যাওয়ার জন্য রাজি আর তৈরি হয়ে গিয়েছিলাম। ষষ্ঠীর দিন খুব কাক ডাকা ভোরে উঠেই রওয়ানা দিলাম অজানাকে পাড়ি দিতে। বেরোনোর আগে শুধু গলায় এক কাপ গরম কফি ঢালার সুযোগ পেয়েছিলাম। ব্যস। ট্যাক্সি আমার সধর্মীই ঠিক করে গিয়েছিল দিল্লির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবার আগে। পাড়ার ট্যাক্সি, মুখ চেনা, সে ঠিক সময়েই হাজির ছিল সেই কাক ডাকা ভোরে। সমস্ত ট্রেনটা প্রায় ঘুমিয়েই ছিল। আমিও উঠে ঘুমিয়ে পড়লাম বসে বসেই। গন্তব্য স্থলে পৌঁছানোর পর দেখলাম সত্যি সেই দিনকার সেই সাদা রঙের গাড়িটা দাঁড়িয়ে আছে আমাকে অভ্যর্থনা করার জন্য। আর ওই তো সেই দিনের চালকটা গাড়িতে তে হ্যালান দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিড়ি টানছে। সামনে এগিয়ে আসতেই হাতের বিড়ি ফেলে আমার দিকে এগিয়ে এসে পিছনের দরজা খুলে হাঁসি মুখে আমাকে ভেতরে বসার জন্য আহ্বান জানাল। গাড়ি ছুটে চলল জমিদার বাড়ির উদ্দেশ্যে। সত্যি বেশী লোকজন নেই এই তল্লাটে। এখন অনেক বেলা হয়ে গেছে। কিন্তু সমস্ত রাস্তায় খুব কম লোকজনের দেখা পেলাম। কলকাতা এতক্ষনে কল্লোলিনী হয়ে উঠেছেন নিশ্চিত।
ওনার বাড়ি যখন পৌঁছালাম তখন হাত ঘড়িতে এগারোটা বেজে তেত্রিশ মিনিট হয়ে গেছে। মাথার উপর চড়া রোদ। নাকে যদিও একটা সোঁদা গন্ধ আসছে, বোধ করি গতকাল রাত্রে বা আজ ভোরের দিকে বৃষ্টি হয়ে গেছে। ওনার বাড়িটাকে ঠিক বাড়ি না বলে মহল বললে ঠিক শোনাবে। কি বিশাল জায়গা জুড়ে যে এই প্রাচীন জমিদার বাড়ির ব্যাপ্তি সেটাও নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হবে। গাড়ির শব্দ শুনে এই জনমানবহীন মহল থেকে উনি নিজেই বেড়িয়ে এলেন। একটা সবচ্ছল হাঁসি মুখে আমাকে স্বাগত জানালেন। উনি যে সত্যিই আমাকে দেখে খুশি হয়েছেন সেটা ওনার ব্যস্ততা আর দৌড়াদৌড়ী দেখেই বোঝা যায়। আমাকে কপট রাগ দেখিয়ে বললেন যে আমার আসতে দেরী হয়ে গেছে কারণ উনি অনেকক্ষণ ধরে আমার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
দুই
ওনার পরনে একটা ভারী গাড় নীল রঙের তাঁতের শাড়ি আর লাল রঙের হাফহাতা ব্লাউজ। ভীষণ ঘরোয়া পোশাক। কিন্তু বুঝতে পারলাম যে এখনও সাজগোঁজ করে ওঠার সময় পান নি। কখন ঘুম থেকে উঠেছেন বোঝা শক্ত। কারণ মাথার টিপটা নিজের জায়গা চ্যুত হয়েই রয়ে গেছে। বুঝলাম সেটা ঠিক করার সময় পান নি। শাড়িটা আটপৌরে ভাবে পরা হলেও বেশ অবিন্যস্ত। বাম কাঁধের ওপর দিয়ে বিছিয়ে দেওয়া ভারী আঁচলটাও যেন নিজের আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠতে পারে নি। সাপের মতন ওনার সুগভীর স্তন বিভাজিকার মাঝে সরু হয়ে শুয়ে রয়েছে। ডান দিকের ভরাট স্তনটা শাড়ির তলায় ঢাকা থাকলেও বাম দিকের পুরু ব্লাউজে ঢাকা স্তনটা খাড়া হয়ে ওনার অবাধ্য অলস আঁচলের বাইরে মাথা তুলে উপরের দিকে উঁচিয়ে রয়েছে। শাড়ির আঁচলটা পেটের ওপর থেকেও সরে গেছে খানিকটা ডান দিক ঘেঁষে। শাড়িটা যে নাভির অনেক নিচে, সত্যি বলতে তলপেটের অনেক নিচে, মানে একদম যেন শেষ প্রান্তে বাঁধা আছে সেটা দৃষ্টি এড়ানো কঠিন। শাড়িটা যেন ওনার তলপেটের শেষ প্রান্তে ঠিক বাঁধা নয়, ওটা যেন অলস অজগর সাপের মতন ওনার গোপনাঙ্গের শুরুর জায়গাটাকে কোনও মতে আল্গা ভাবে বেষ্টন করে ঘুমিয়ে আছে। ওনার শাড়ির আঁচলের বাইরে বেড়িয়ে আসা গোল ভীষণ রকমের সুগভীর নাভি যেকোনো ছেলের তো মাথা ঘুরিয়েই দেবে, সত্যি বলতে কি মেয়ে হয়ে বলতে লজ্জা নেই আমারও মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমার নাভিও যদি এমন সুন্দর গভীর হত আর আমার তলপেটও যদি এমন ফর্সা হত তাহলে আমিও নাভির প্রায় আধহাত নিচে শাড়ির বেঁধে গোটা দুনিয়াকে দেখিয়ে বেড়াতাম আমার নগ্ন তলপেটের শোভা। পেটের চামড়ায় এক ফোঁটা কোথাও যেন ভাঁজ পড়েনি। একদম মসৃণ। সামান্য একটু মেদ আছে বোধ হয়, না তাকে ঠিক মেদ বলা যায় না কারণ ফোলা ভাবটা একেবারেই নেই। আছে শুধু উষ্ণতা। আর? আর একটা গোলাপি গরম আভা যেটা ওনার নগ্ন নাভি আর নাভির চারপাশের পেট আর তলপেটের অনাবৃত অংশ থেকে ছড়িয়ে পড়ছে। সত্যিই সুন্দরী, মনে মনে না বলে পারলাম না। উনি ওনার চাকর দের পিছনে দৌড়ে বেড়াচ্ছিলেন, কেন জানি না আমার সময় থমকে গিয়েছিল ওনার স্তন বিভাজিকা আর ওনার তলপেট আর নাভির নগ্নতার উপর। উনি ইতিমধ্যে আমাকে এসে অনেক কথা বলে গেছেন, কিন্তু আমি ঠিক চোখ ঘোরাতে পারিনি। সম্বিত ফিরল যখন উনি আমাকে ডেকে বললেন যে “এই যে এইভাবে এখানে ঠায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছ কেন? বাড়ি পছন্দ হচ্ছে না মনে হচ্ছে।“ তখনও আমার দৃষ্টি স্থির ওনার তলপেটের ওপর। এত সুন্দর নাভি কোনও মেয়ের হয়। চমকে চোখ তুলে তাকালাম ওনার চোখের দিকে। তাতে যেন এক টুকরো হাঁসি ঝিলিক খেলে গেল। চুরি করতে গিয়ে ধরার পড়ার একটা অসহায় ভাব আমার মনে উঁকি মারলেও ওনার মধ্যে কোনও রকম বিকার বা পরিবর্তন দেখলাম না। উনি তাহলে কিছুই বোঝেননি। বা বাড়িতে উনি এমনই অগোছালো থাকেন। যাক বাঁচা গেল। ওনার মধ্যে ওনার বেশভূষা ঠিক করার কোনও লক্ষণ চোখে পড়ল না। উনি একই রকম রয়ে গেলেন। ওনার সাথে চোখাচুখি হওয়ার পর উনি যেন একটু জোর গলায় বলে উঠলেন “কি বরের কথা খুব মনে পড়ছে? না কি জায়গা পছন্দ হয় নি?” বলে ফেললাম “ না ঠিক আছে। খুব ই সুন্দর জায়গা।“ তারপর কথা ঘুরানর জন্য বললাম “ এখানে কে কে থাকেন?” “পরে সেসব কথা হবে। আগে হাত মুখ ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে নাও। খেতে বসতে হবে না? একটু হালকা হয়ে বসে পড়। “
এতক্ষন তো আমার নজর ওনার সুগভীর স্তন বিভাজিকা আর অনাবৃত গভীরতম নাভির ওপর আঁটকে ছিল তাই ঠিক বুঝতে পারিনি, এখন বসার পর লক্ষ্য করলাম একটা অদ্ভুত জিনিস। এই সময়েও বাড়ির মধ্যে উনি এক গাদা গয়না পড়ে আছেন। মনে মনে ভাবলাম হয় ওনার গয়নার বাতিক আছে, নইলে বোধহয় এটাই জমিদার বাড়ির নিয়ম। ইচ্ছে থাকুক বা না থাকুক আলমারিতে সাজানো পুতুলের মতন গয়না পরে থাকতে হয় সারা দিন। এখন হয়ত অভ্যাস হয়ে গেছে। আচ্ছা ওনার কি ডাকাতের ভয় নেই। এত গয়না বাড়িতে রেখে দিয়েছেন? একটাও তো দারোয়ান বা ওই জাতীয় কাউকে দেখলাম না। বাড়িতে কোনও পাহাড়া আছে বলে তো মনে হয় না। আর্থিক বাহুল্য থাকলেও জমিদারী যে আর নেই সেটা বেশ চোখে দেখে বোঝা যায়। তবু বাতিক আর অভ্যেস যায় নি। ডাকাত পড়ুক একবার হাড়ে হাড়ে শিক্ষে হবে।
এতক্ষনে বাড়িটার দিকেও নজর গেল। প্রায় পাঁচ তলা উঁচু বাড়ি। তবে পুরনো। জায়গায় জায়গায় ফাটল ধরেছে। ছাদের দিকে বেশ কিছু জায়গায় শ্যাওলাও ধরেছে। একবার চোখ বুলিয়ে বুঝতে পারলাম এক তলায় কম করে দশটা ঘর আছে। আমি যেই ঘরে বসে আছি সেই ঘরে আমার মাথার উপর একটা ভারী ঝামর মতন ঝুলছে। বাপের জন্মে এমন জিনিস চোখে দেখিনি। মাথার উপর ভেঙ্গে পড়লে কি হবে বলা শক্ত। এই ঘরটা বেশ অন্ধকার। যদিও হলদেটে বৈদ্যুতিক আলো জ্বলছে। ফ্যানও ঘুরছে নিঃশব্দে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঘরটা যেন কেমন জানি ভূতুড়ে আর অন্ধকার। আমি একটা পরিষ্কার সেকেলে সোফায় বসে আছি। ঘরের মেঝেতে এক ফোঁটা ধুলো দেখতে পেলাম না। হঠাৎ বুঝতে পারলাম যে আমি অসতর্ক ভাবে চটি না খুলেই ঘরে ঢুকে এসেছি। গৃহস্থের পরিচ্ছন্নতা নষ্ট হবে মনে করে একটু যেন ভয় পেয়েই সোফা ছেড়ে উঠে বাইরে গেলাম চটি খুলতে। ঘরের বাইরে আসতেই গৃহকত্রির মুখোমুখি। আমি চটি খুলতে এসেছি দেখেই এক গাল হাঁসি নিয়ে বললেন, “উফ ব্যস্ত হতে হবে না। ঘর একটু নোংরা হলে কোনও ক্ষতি নেই। একটু পরেই পরিষ্কার করা হবে।“ তবু আমি চটি বাইরে খুলে রেখে আবার সেই ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলাম। অবশ্য প্রবেশ করার আগে একবার এক তলার বাকি ঘর গুলোর ওপর চোখ বুলিয়ে নিলাম। এত রোদের আলো বাইরে, তবু যেন মনে হল সব কটা ঘর কেমন অন্ধকার, অন্তত এখান থেকে দেখে তাই মনে হচ্ছে। আমি আবার সেই পুরনো সোফাটায় গিয়ে বসলাম আমার হ্যান্ডব্যাগটা পাশে রেখে। উনি এসে বসলেন আমার ঠিক সামনে, এক গা গয়না নিয়ে আর সেই একই রকম অবিন্যস্ত বেশভূষা। এতক্ষনেও শরীরের এক ফোঁটাও অনাবৃত অংশ ঢাকার প্রয়োজন বোধ করেন নি উনি।
কিছুক্ষণ আমরা দুজনেই দুজনের দিকে হাঁসি হাঁসি মুখ করে বসে রইলাম এই অস্বস্তিকর অন্ধকার পরিবেশে। অন্ধকার না হলেও একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থা। এখেত্রেও বলতে হয় যে চোখে না দেখলে বা আগে কোনও দিন এরকম পরিবেশে না এলে বোঝানো শক্ত। গোটা ঘরময় একটা আলো আঁধার মাখা আমেজ খেলে বেড়াচ্ছে চারপাশে। আমার মধ্যে অস্বস্তিতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে বুঝতে পেরে অবশেষে উনি নিজেই মুখ খুললেন। অবশ্য এতক্ষন ধরে উনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে যে কি দেখছিলেন সেটা ওনার মুখ দেখে বোঝার ক্ষমতা ভগবান আমাকে দেন নি। “কটা পিলার আছে বলতে পারবে এই বাড়িতে?” আমি বাধ্য হয়ে আবার দরজা দিয়ে বাইরের দিকে তাকালাম। সত্যি তো, কতগুলো পিলার আছে। এতক্ষন নজরেই পড়েনি। বললাম “কতগুলো হবে?” উনি হেঁসে বললেন “আটানব্বই”। আমি চমকে উঠলাম যেন। অবশ্য আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কারণ এইরকম বড় বাড়িতে পিলারের সেঞ্চুরি করলেও আমি খুব একটা আশ্চর্য হতাম না। আমি খোলা দরজা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে জরিপ করার চেষ্টা করছি বুঝেই উনি বলে উঠলেন “ উফফ এখানে থেকে ঘাড় বেঁকিয়ে দেখার দরকার নেই। আমি পুরো বাড়িটা তোমাকে ঘুরিয়ে দেখাব। খুব ভালো লাগবে তোমার। অনেক রহস্য আছে এখানে।“ একটু যেন হেঁসে উঠলেন। ওনার হাঁসিটা খুব সাবলীল হলেও কেমন জানি ওনার হাঁসিতেও একটা রহস্যের গন্ধ ছিল। আমি একটা কথা ফস করে না বলে পারলাম না, “বেশ ভূতুড়ে বাড়ি কিন্তু এটা। এরকম বাড়ির কথা ছোটবেলায় গল্পের বইয়ে পড়েছিলাম। এখনও এরকম বাড়ি আছে দেখে বেশ আশ্চর্য লাগলো। “ পরের কথাটা না বলে থাকতে পারলাম না। “আচ্ছা একটা কথা বলুন, আপনার সত্যি এই পরিবেশে একা থাকতে ভালো লাগে? মানে, কেমন একটা অদ্ভুত নয়?” উনি আমার কথা মাঝপথেই থামিয়ে দিয়ে বললেন ,” তোমার জন্য অদ্ভুত না লাগার কোনও কারণ নেই। তবে এই বাড়িতে বিয়ে করে এসেছিলাম আমি। সে অবশ্য অনেক দিন আগের কথা। কিন্তু এখন খারাপ লাগে না। আর তাছাড়া আমি তো একা নই মোটেই। আমার বরকে বলে দিয়েছি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসতে, বাড়িতে অতিথি এসেছে আর তাও সুন্দরী। “ ওনার সাথে আমিও হাসিতে যোগ না দিয়ে পারলাম না। উনি বলে চললেন “আর তাছাড়া অনেকগুলো চাকরও তো আছে। “ আমি একটু আশ্চর্য হয়েই চারপাশটা একবার দেখে নিলাম। এখানে আসা অব্দি একটা ড্রাইভার, গৃহের মালকিন আর একটা বেয়ারা চাকর ছাড়া আর কাউকে সবচক্ষে দেখতে পাইনি। অবশ্য মালকিন অনেক হাঁক ডাক করছিলেন এতক্ষন তাতে সন্দেহ নেই। সেতো নিজের কানেই শুনেছি। তবে আর যাই হোক না কেন নিজেকে মনে হচ্ছিল যেন উনবিংশ শতাব্দীতে ফিরে গিয়ে কোনও এক জমিদার বাড়িতে গিয়ে বসে আছি।
আবার সেই অস্বস্তি। চুপচাপ দুজন দুজনের মুখের দিকে তাইয়ে বসে আসছি। নো টক। এতক্ষন ওনার মুখের দিকে সম্মোহিতের মতন তাকিয়ে ছিলাম বলেই বোধহয় চার পাশে কি হচ্ছে খেয়াল করিনি। আবারও সম্বিত ফিরল ওনার কথায়। না বলা ভালো ওনার কথা কানের পর্দা স্পর্শ করার আগেই একটা কালো মতন কি জিনিস আমার আর ওনার চোখাচুখির পথে বাঁধা সৃষ্টি করল। বুঝতে পারলাম একটা চুল ভর্তি মেয়ের মাথা। আমার সামনে রাখা কাঁচের টেবিলের ওপর দুই থালা ভর্তি কিসব যেন সাজিয়ে রেখে দিয়ে চলে গেল। ওঁকে শুধু এই আলো আধারিতে দরজা দিয়ে বেড়িয়ে যেতে দেখলাম। পর মুহূর্তেই সামনের কাঁচের টেবিলের দিকে নজর নামিয়ে দেখলাম, হ্যাঁ দেখলাম , আর দেখে চমকে গেলাম। বাব্বা এতসব কি? কম করে দশটা লুচি। আর রাজভোগ। আমি মিষ্টি খেয়ে ভালো না বাসলেও, দেখে মনে হল অমৃত। পাশের প্লেটের ওপর ফুটন্ত আলুরদম। হঠাৎ যেন মনে পড়ে গেল। সকাল থেকে কিছু মুখে দেওয়া হয় নি। ওনাকে কিছু না বলেই একটা লুচি দিয়ে গোটা একটা ছোট আলু মুখে পুড়ে দিলাম। সত্যি অমৃত। প্রথম লুচির আমেজটা উপভোগ করে দ্বিতীয় লুচিটাতে হাত দিতে যাবে, কিন্তু স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াতেই ওনার চোখের দিকে চোখ গেল। উনি মিচকি মিচকি হাসছেন। “ভালো লেগেছে?” নরম গলায় প্রশ্ন টা এলো। আমি তখনও ঢোক গিলে উঠতে পারিনি। মাথা নাড়িয়ে জবাব দিলাম হ্যাঁ। “তুমি খাও। আমি আসছি।“ উনি উঠে পড়লেন। চক্ষের নিমেষে ছটা লুচি যখন সাবাড় করে ফেলেছি তখন উনি আবার ফিরে এলেন। এসেই আবার ওনার নিজের জায়গায় বসে পড়লেন। খাবার মুহূর্তে কেউ আমার দিকে তাকিয়ে থাকলে খুবই আশ্চর্য লাগে। এখনও লাগছিল। কিন্তু কি করা যাবে। বিড়ালের মতন মনে করে নিলাম আমি না তাকালেই হল। আমি না দেখতে পেলে গোটা দুনিয়া আমাকে দেখতে পাচ্ছে না। বাকি চারটা লুচির শেষটা যখন মুখে নিয়ে নিয়েছি তখন আবার শুনলাম ওনার গলা, আর তাই বাধ্য হয়ে গিলতে গিলতে ওনার দিকে তাকাতে বাধ্য হলাম। “আর লাগবে?” আবার সেই নরম মোলায়েম সুর। আবারও কথা বলতে পারলাম না। মাথা দুদিকে নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলাম না। মনে মনে ভাবছিলাম এত ভালো লুচি অনেক দিন খাইনি। আর সব থেকে বড় কথা লুচি যে এমন ফুলতে পারে আর এত নরম অথচ ফুরফুরে হয় সেটা আমার অজানা ছিল। আমি তো কোন ছাড়, আমার মা ও এরকম লুচি কোনও দিন বানাতে পারবে কিনা সন্দেহ। সত্যি এই জমিদার বাড়ির খাওয়া দাওয়ার জবাব নেই। কাঁচের গ্লাসে জল রাখা ছিল। সেটা গলায় ঢালতে না ঢালতে আবার ওনার সেই মোলায়েম স্বর।
“কত দিন হল কোলকাতায় আছে?” ঢোক গিলে বললাম “ অনেক দিন। মাঝে বাইরে গিয়েছিলাম পড়তে, আর তারপর...” বাকি কথা শেষ হল না। উনি একটু চটুল হাসির সাথে বলে উঠলেন “মদ চলে?” আমি যেন একটু হকচকিয়ে গেলাম। বাইরে ফাটা রোদ। এরকম বনেদী বাড়ি। আর উনি কিনা! উনি বললেন “এ বাড়িতে মেয়েদের মদ খাওয়াটা খুব খারাপ চোখে দেখা হয়, কিন্তু আমি খাই। (একটু খড়খড়ে গলায় হেঁসে বললেন) লুকিয়ে খেতে হয় না, বড় কর্তার বউ কিনা। তবে মদ খেতে পছন্দ করি এমন ভাববার কারণ নেই। তবে কি ভালো সঙ্গী বা সঙ্গিনী পেলে খেতে ভালোই লাগে।“ সঙ্গিনী কথাটা যেন একটু জোড়ের সাথেই বললেন। কেমন যেন শোনালো একটা কানে। মুখে জল নেই তবু ঢোক গিলতে বাধ্য হলাম। আমি হয়ত বলতে যাচ্ছিলাম যে এখন এই সময় কি খাওয়াটা, উনি উঠে পড়লেন “ মুখ দেখে বুঝতে পারছি খাওয়ার অভ্যেস আছে। আসছি। নিজেদের মধ্যে ছুটির দিনে একটু ফুর্তি করার জন্য খাব, তাতে আবার সময় অসময়ের কি আছে! “ আমি কিছু বলার আগেই উনি যেন রুদ্ধশ্বাসে বেড়িয়ে গেলেন ঘর থেকে। পেটে খাবার পড়ায় মাথাও যেন একটু চনমনে হয়েছে। ওনাকে পিছন থেকে দেখছিলাম। উনি ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলেন। দরজার ঠিক মুখে ওনার শরীরের সামনের ভাগে উজ্জ্বল সূর্যকিরণ এসে পড়েছে। ঠিক বুঝলাম না কি যেন একটা বেমানান লাগলো ওনাকে পিছন থেকে দেখে। পিঠের ওপর ব্লাউজের পিছনের অংশটা বেশ সংক্ষিপ্ত, তবে সেটা আমার চোখে লাগে নি। কোথায় যেন একটা খটকা লাগলো। এটাকে খটকা বললে ভুল হবে। কিন্তু সত্যি বলতে কি কিছু একটা আমার চোখ দেখেছে, অদ্ভুত কিছু নয় নিশ্চই, কিন্তু কিছু একটা বেমানান, বা হয়ত চোখ যেটা দেখতে আশা করেনি তেমন কিছু একটা, অন্তত এই পরিবেশে ওনার মধ্যে তো নয়ই, কিন্তু সেটা যে কি সেটা আমার মস্তিষ্ক ধরতে পারেনি। হ্যাঁ একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম ওনার থরথর করে আন্দোলিত হতে থাকা গোল মাঝারি আকারের ভারী নিতম্বের কম্পন, আর সেটা এই ভারী শাড়ির বাইরে থেকেও স্পষ্ট চোখে পড়ার মতন। উনি যেন কেমন একটা শরীর আর কোমর দুলিয়ে দুলিয়ে হাঁটেন। আগের দিন ঠিক চোখে না পড়লেও আজ চোখে না পরে গেল না। নইলে এত ভারী শাড়ির নিচে হওয়া নিতম্বের কম্পন আর স্পন্দন চোখে পড়তে পারে না। কোমর দুলিয়ে , আমাদের ভাষায় পাছা দুলিয়ে দুলিয়ে হাঁটেন মহিলা, এমন অবিন্যস্ত বেশভূষা, আর সব থেকে বড় কথা নিজের অগোছালো অবস্থার প্রতি কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই, আর তার অপর এই বাড়বেলায় বসে মদ খান নিজের বাড়ির বৈঠকখানায়, বেশ রসিক আর আমুদে মহিলা তাতে কোনও সন্দেহ নেই, বেশ সাহসী তো বটেই।
উনি ফিরে এলেন ঠিক মিনিট দুয়েকের মধ্যেই। আবার কেমন যেন একটা কিছু অস্বস্তিকর জিনিস মনে হল ঠিক দরজা দিয়ে ঢোকার মুহূর্তে, ঠিক যখন ওনার পিছনে এসে পড়েছে দুপুরের উজ্জ্বল সূর্যের কিরণ। একটু ভাবার চেষ্টা করলাম, কিন্তু ভাবনায় ছেদ পড়ল পরবর্তী ঘটনায়। আমি এই সময় মদ খাব কি খাব না সেটা নিজের মুখে একবার ও স্বীকার করি নি। কিন্তু ওনার ঠিক পিছন পিছন একটা মাঝ বয়সী মেয়ে এসে ঘরে প্রবেশ করল। হয়ত এই আগের বাড় এসে খাবার বেড়ে গিয়েছিল, তখন অন্যমনস্কতায় ঠিক বুঝতে পারিনি। দুহাতে একটা বড় ট্রে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছে পরিচারিকা। এইবার মেয়েটাকে ভালো করে দেখার সুযোগ হল। ট্রে টা যখন আমাদের দুজনের মাঝখানে রাখা কাঁচের টেবিলের ওপর নামিয়ে রাখছিল তখন এক ঝলকে দেখে নিলাম কি নিয়ে এসেছে মেয়েটা। একটা দামী ভদকার বোতল, সেটা পুরো ভর্তি, আর তার দুই পাশে দুটো গ্লাস, খুব সম্ভবত ইটালিয়ান কাঁচের, আর একটা বড় সোডার বোতল, এটাও ভর্তি, আর একটা ঠাণ্ডা জলের বোতল, ঠাণ্ডা কেন না তার গা দিয়ে জমাটে জলের ধারা গড়িয়ে পড়ছে ট্রের ওপর। সত্যি অদ্ভুত লাগলো এমন একজন গৃহবধূ এমন অসময়ে নিজের বাড়ির বৈঠকখানায় বসে মদ খাবার তোড়জোর শুরু করেছেন। কলকাতার ব্যাপার আলাদা। কিন্তু এখানে এই রকম অজপাড়াগাঁয়ে এমন জিনিস দেখতে হবে সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি। একটু আগে আমার মন বলছিল যে উনি রসিকতা করেছেন। কিন্তু এখন বুঝতে পারলাম উনি সত্যি রসিক আর আমুদে। এইবার আসি সেই মেয়েটার কথায় যে এইসব দিতে এসেছিল। সে আমার এঁটো প্লেটগুলো উঠিয়ে নিয়ে নিঃশব্দে চলে গেল। কিন্তু তারই মধ্যে কয়েকটা জিনিস আমি দেখে নিলাম। মেয়েটা লাল রঙের পাতলা শাড়ি পরে আছে। বাম দিকের স্তনের ওপর থেকে ওপরে পুরোটাই নগ্ন, মানে এক কথায় বাম ঘাড়ের ওপর কোনও বস্ত্রের আবরণ নেই। মানে এক কথায় ব্লাউজ পরে নি। হতে পারে। এই সব বাড়িতে এখনও এইসব কাজের মেয়েরা বাড়িতে তে এরকম এক কাপড়ে ঘোরাফেরা করে। কথাটা মাথায় আসতেই আমার চোখটা ক্ষণিকের জন্য হলেও ওর কোমরের নিচে নেমে গেল। হ্যাঁ আমার অনুমান নির্ভুল। মেয়েটার পাতলা শাড়িটা হাঁটুর ঠিক নিচে এসে শেষ হয়ে গেছে। শাড়ির নিচে হাঁটু থেকে গোড়ালি অব্দি ওর নির্লোম কালচে পা পুরো নগ্ন। হাঁটুর ওপর চোখ উঠতেই আমার চোখ আর মস্তিষ্ক এইবার এক সাথে বলে উঠল, শুধু ব্লাউজ নয়, মেয়েটা শাড়ির নিচে আর কিছুই পরে নি। মানে শায়া নেই ওর বস্ত্রের নিচে। কারণ পাতলা শাড়ির নিচে ওর জাং এর অর্ধেক অব্দি জায়গা যেন শাড়ির আবরণ থাকা সত্ত্বেও পুরো নগ্ন। বেশ বোঝা যাচ্ছে ওর নগ্ন উরু আর জাঙের অবয়ব। যদিও একটা পাতলা শাড়ির আস্তরণ থাকার জন্য আবছা। তবে তার ওপর কি আছে সেটা বুঝতে পারি নি, কারণ শাড়ির বেড় কোমরের যত কাছে উঠেছে ততই যেন মোড়কে মোড়কে আরও ঘন হয়ে উঠেছে। অনেক বেশী কাপড়ের আস্তরণ ওর উরু সন্ধিতে। বুঝলাম না শাড়ির নিচে কোনও অন্তর্বাস পরেছে কিনা। তবে মন বলল এই সমাজে এই রকম মেয়েদের ব্লাউজ, ব্রা, শায়া, প্যান্টি এইসব ছাড়াই এক কাপড়ে থাকতে হয়। তবে একটা কথা মানতে হয়, ব্রা পরে না, কিন্তু পাতলা কাপড়ের ওপর থেকে যতটা বুঝতে পারছি যে স্তনের অবয়ব এখনও অক্ষুণ্ণ আছে। এরকম অন্তর্বাস ছাড়া সারা দিন লাফালাফি , সারা ঘরের কাজ করা সত্ত্বেও শরীরের কোথাও কোনও রকম ঝোলা বা ঢিলে ঢালা ভাব আসেনি। একটা দীর্ঘশ্বাস আপনা থেকেই বেড়িয়ে গেল। আমরা এত ফিগার সচেতন, খাই মেপে মেপে, যত রকম ভাবে পারি নিজেদের ভারী অংশগুলোকে বিভিন্ন বন্ধনী দিয়ে বেঁধে রাখতে চাই যাতে ঝুলে না যায়, কিন্তু এত টাইট, এত মসৃণ, এত নরম আর দৃঢ় তো আমাদের স্তন বা শরীরের অন্য জায়গাগুলো নয়। মনে মনে মেনে নিলাম এই মেয়েটাও গড গিফটেড। মেয়েটা দরজা ভিজিয়ে দিয়ে চলে গেল।
“রুমি তুমি বড্ড ঘামাচ্ছ। একটু কি চেঞ্জ করে নেবে? অনেকটা পথ তো, “ তারপরেই হেঁসে বললেন “এই দেখো। আমিও কি পুরো পাগল হয়ে গেছি! আমার তো অনেক আগে বলার কথা ছিল। আসলে তোমাকে খাওয়ানোর চক্কোরে ভুলে গেছি যে তুমি কতদূর থেকে সেই ভোরবেলায় বেড়িয়েছ। এখন ভীষণ খারাপ লাগছে। দাঁড়াও।“ আমি যে ওনাকে কিছু বলব বা ওনাকে বাঁধা দেব তার সুযোগটা পর্যন্ত আমি পেলাম না। ওনার নামটা যেন কি বলেছিলেন। উফ মাথাটা আমার ও গেছে। “দি” বলে ডাকব ভাবছিলাম কিন্তু নাম না জানা থাকলে কোন নামের পাশে “দি” লাগাব? মানে যেমন আমরা বলি রুমিদি। উনি ততক্ষণে হাঁক পেড়েছেন “এই কে আছিস?” আমি সাথে সাথে বলে বসলাম “সরি, আপনার নামটা ভুলে গেছি। মোবাইলে শুধু “র” দিয়ে সেভ করে রেখেছি। আসলে এখানে আসব তো ঠিক ছিল না। আসলে ভেবেছিলাম যে্*... ও হ্যাঁ মনে পড়েছে। রত্নাদি। “ এক মুখ হাঁসি যেন আপনা হতেই ফিরে এল। অপ্রস্তুত ভাবটাও যেন অনেকটা এক নিমেষে কেটে গেল। উনি কিছু বললেন না শুধু অল্প হেঁসে মাথা নাড়লেন আর ভদকার বোতলটার মুখ খোলার চেষ্টায় লেগে পড়লেন। একদম আনকোরা নতুন বোতলে যেমন হয় আর কি, একটা পাতলা স্টিকার লাগানো ছিল মুখের ঠিক সামনে, সেই জন্য হবে কি না জানি না, কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও খুলতে পারলেন না। ইতিমধ্যে দরজা খুলে সেই আগের মেয়েটিই এসে হাজির হয়েছে ওনার ডাক শুনে। চক্ষের নিমেষে ওনার মুখের হাঁসি হাঁসি ভাবটা মিলিয়ে গেল। প্রায় চেঁচিয়ে উঠলেন মেয়েটার উপর। “কোথায় থাকিস তোরা সব? কর্তা ডাকলে তো দৌড়ে দৌড়ে ছুটে যাস, আর আমি ডাকলে টিকিটাও দেখতে পাওয়া যায় না। বোতলটা ওর হাতের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন “কত দিন শেখাব এই সব জিনিস রেখে দিয়ে যাবার সময় মুখ খুলে দিয়ে যাবি? আর ওই দিদির ব্যাগ কোথায় রেখেছিস?” ও খুব নিচু গলায় বলল “ওনার ঘরে তুলে দিয়েছি।“ ওনার ঘর কথাটা শুনে একটু জিজ্ঞাসু মুখ তুলে ওনার দিকে চাইতেই উনি বললেন “ওপরে আমাদের বেড রুমের পাশের বেড রুমটায় তুমি থাকবে। বুঝলাম মেয়েটার এইসব পরিচর্যা করার অভ্যাস আছে, কারণ নিমেষের মধ্যে বোতলের মুখটা খুলে দিয়ে ওনার সামনে রেখে আবার যাওয়ার উদ্যোগ করল। উনি এইবার যেন খেঁকিয়ে উঠলেন “কথা না শুনেই চলে যাচ্ছিস যে বড়। তোকে শুধু এই কাজের জন্য ডাকিনি। এক ঘণ্টা মতন পরে এসে এই দিদিকে স্নানের ঘরে নিয়ে যাবি। সব খেয়াল রাখবি। দেরী করবি। এক মিনিট দেরী হলে পিঠের চামড়া গুঁটিয়ে দেব।“ মেয়েটা নিঃশব্দে ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানিয়ে চলে গেল। মহিলার এই লেডি হিটলার মার্কা হাব ভাব দেখে আমি রীতিমত বিস্মিত হয়েছি। উনিও বোধহয় সেটা আঁচ করেই আমাকে বললেন “এরা সব এই বাড়ির পোষা ঝি। এদের হুকুম দিয়ে দড়ি বেঁধে রাখতে হয়, এক ফোঁটা ঢিল দিয়েছ কি তোমার মাথায় চড়ে বসতে দেরী করবে না। আর তাছাড়া এরা সব বাড়ির কর্তার পোষা বাঁদি, বাড়ির বউদের বেলায় যত সব আলসেমি।“
আমি নিজের হাতে আমার জন্য পানীয় ঢালা বনেদী গ্লাসটা তুলে নিয়ে ওনাকে “চিয়ার্স” বলতে যাব, কিন্তু উনি দেখলাম ইতি মধ্যে এক চুমুক মেরে দিয়েছেন। বুঝলাম এখানে বনেদী ব্যাপারটা খুব টাটকা হলেও, শহরের সামাজিক রীতি নীতি সম্পর্কে এরা ঠিক ওয়াকিবহাল নয়। অতিথি আপ্যায়নে অবশ্য ওনার কোনও ত্রুটি আমি দেখিনি। তবু সেই দিন দোকানে যেন ওনাকে দেখে মনে হল উনি অনেক মার্জিত। আজ নিজের বাড়িতে ওনার আচরণ বেশ অন্য রকম সেটা মানতে বাঁধা নেই। আমি নিরবে নিজের গ্লাসটা ঠোঁটে ছোঁয়ালাম। “ কি একদম চুপ করে বসে রয়েছ যে?” আমি কাঁচের টেবিলের দিকে মুখ নামিয়ে আস্তে আস্তে নিজের গ্লাস থেকে অল্প অল্প সিপ মারছিলাম। ওনার আওয়াজ পেয়ে ওনার দিকে একটা কৃত্রিম হাঁসি নিয়ে তাকালাম। উনি বললেন “বুঝতে পেরেছি নতুন জায়গা তো... আর মনে হয় এরকম বড় জমিদার বাড়িতে তুমি কোনও দিন আস নি। তাই একটু অস্বস্তি হচ্ছে। তবে কথা দিচ্ছি এখান থেকে যাওয়ার আগে তোমার খুব ভালো অভিজ্ঞতা হবে তাতে সন্দেহ নেই। “মনে মনে বললাম “আই হোপ সো।“ মাথার উপরে যদিও ফ্যান ঘুরছে কিন্তু এত উঁচুতে আর এত আস্তে ঘুরছে যে সেই হাওয়া গায়ে এসে পৌঁছাচ্ছে না বললেই চলে। পেটে মদ পড়ার সাথে সাথে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক নিয়মে বাড়তে শুরু করেছে। আর তার উপর স্নান করা হয়নি। দর দর করে ঘামাতে শুরু করলাম প্রথম গ্লাস শেষ হওয়ার আগেই। আমি কলকাতার বাড়িতে বসে ড্রিঙ্ক নিলে এসি চালিয়ে দি। তাই অভ্যেস খারাপ হয়ে গেছে। এখন বুঝতে পারছি বেশ অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু কিছু বললে ওনাকে আর ওনার পরিবারকে অপমান করা হবে বলে চেপে গেলাম। মাঝে মাঝে শুধু আমার রুমালটা দিয়ে কপাল আর ঘাড় থেকে আমার ঘাম মুছে নিচ্ছিলাম। উনি দেখলাম বেশ দ্রুত পান করতে শুরু করে দিয়েছেন। আমার প্রথম গ্লাস তখনও শেষ হয় নি, ওনার দেখলাম দ্বিতীয় গ্লাসের অর্ধেক গলা দিয়ে নেমে গেছে ইতিমধ্যে। বনেদী বাড়ি হলে কি হবে মেয়েদের অনেক ছুট দেওয়া আছে তাতে সন্দেহ নেই। পাকা মদ্যপ মহিলা। মাথায় অনেক রকম প্রশ্ন ঘুরছে কিন্তু সহজ ভাবে জিজ্ঞেস করতে উঠতে পারছি না। আর উনিও দেখলাম এই আলো আঁধার পরিবেশে অদ্ভুত চুপ মেরে গেছেন। আমার অস্তিত্ব যেন উনি এখন টেরই পাচ্ছেন না। ওনার ঘোলাটে দৃষ্টি ওনার সামনের কাঁচের গ্লাসের ওপর স্থির। ওনার মনে যে কি চলছে কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার আড়ষ্ট ভাবটা সেকন্ডে সেকন্ডে বেড়েই চলেছে। এখন কিছু একটা না বললেই নয় মনে করে ওনাকে কিছু একটা বলতে যাব তার আগেই উনি বলে উঠলেন “এ কি তোমার গ্লাস তো খালি। এদিকে দাও দেখি।“ আমি চুপ চাপ ওনার দিকে গ্লাসটা বাড়িয়ে দিলাম। আমি যেন ওনার প্রতিটা নড়া চড়া আমি এখন খুব মন দিয়ে লক্ষ্য করে চলেছি। উনি আমার হাতে পানীয় ভর্তি গ্লাসটা তুলে দিয়ে সোজা হয়ে বসলেন। নিজের গ্লাসটা নেওয়ার আগে বা হাতটা পিঠের দিকে নিয়ে গিয়ে শাড়ির আঁচলটা পিঠের ওপর থেকে নিজের বগলের তলা দিয়ে নিয়ে এসে ভালো করে নিজের মুখের ঘাম মুছে নিলেন। বুঝলাম শুধু আমার নয় ওনারও বেশ গরম লাগছে। এত পয়সা যখন তখন একটা এ সি লাগালে কি এসে যায় এদের। প্রথমে মুখ তারপর ঘাড় আর সব শেষে গলার কাছটা মুছে একটা প্রচণ্ড একটা বিরক্তি নিয়ে ওপরে মৃদু শব্দ করে ঘূর্ণায়মান পাখাটার দিকে একটা কটাক্ষ করলেন। পর মুহূর্তে আঁচলটাকে বাম হাতের কবল থেকে মুক্তি দিয়েই গলার একদম নিচ দিয়ে চলে যাওয়া দড়ির মতন আঁচলটাকে ঘাড়ের উপর থেকে দু হাত দিয়ে উঠিয়ে নিজের শরীরের থেকে আলগা করে পুরো আঁচলটাকে শরীরের পিছন দিকে থেকে ওনার স্তনের সামনে নিয়ে এলেন। শুরুতে যখন এসেছিলাম তখন দেখেছিলাম যে ওনার বেশ ভূষা কতটা অবিন্যস্ত, ওনার ব্লাউজে ঢাকা বাম স্তনটা ছিল সম্পূর্ণ শাড়ির বাইরে, কিন্তু এতক্ষন ধরে একই জিনিস দেখতে দেখতে চোখ সয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ওনার এই আচরনে আবার আমার নজর গিয়ে পড়ল ওনার ব্লাউজে ঢাকা ভরাট ঊর্ধ্বাঙ্গের ওপর। ক্ষণিকের জন্য ব্লাউজে ঢাকা দুটো বলয় নগ্ন হয়ে গেল শাড়ির আঁচলের খোলস ছেড়ে। উনি দড়ির মতন পাকিয়ে থাকা আঁচলটাকে অনেকক্ষণ ধরে চওড়া করে খুলে নিজের ঘামে ভেজা ব্লাউজের ওপর আলগা করে জড়িয়ে নিলেন। ওনার পুরো ব্লাউজটা যে ঘামে ভিজে কালচে হয়ে গেছে সেটা এই খেয়াল হল। শাড়ির লম্বা আঁচলটা ওনার ব্লাউজের ঘামে ভেজা বা হাতের তলায় জনে অগোছালো ভাবে গুজে দিলেন। বা হাতটা নিজের বাম স্তনের সাথে চেপে ধরে (যাতে শাড়ির আলগা আঁচলটা বুকের ওপর থেকে খসে না পড়ে) বা হাত দিয়েই নিজের গ্লাসটা তুলে নিলেন। আমার ও দ্বিতীয় গ্লাস শেষ হল।
Posts: 868
Threads: 5
Likes Received: 667 in 484 posts
Likes Given: 136
Joined: Jan 2019
Reputation:
93
30-01-2019, 03:29 PM
(This post was last modified: 24-04-2019, 04:25 PM by Neelkantha. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
I think the writer was Daily Passenger.
BEAUTY LIES IN THE EYES OF THE BEHOLDER
•
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
তিন
জানি না এত গরমের জন্য কিনা, নাকি এই অদ্ভুত পরিবেশের দরুন যেখানে ঘর পুরোপুরি আলোকিত নয়, দুই গ্লাসেই আমার মাথাটা বেশ ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। চার পাশের কোনও বস্তু বা বিষয়ের উপরেই ঠিক একভাবে মন যোগ করতে পারছি না। হতে পারে রাত্রে ঘুম ভালো করে হয় নি তাই অল্পেই চড়ে গেছে। খেয়াল করলাম আমার কেউ কিছু বলছি না। অথচ সেইদিন আমরা ওই দোকানে বসে কত কথা বলছিলাম। আমার না হয় নতুন জায়গা, কিন্তু উনি কেন গুম মেরে গেছেন সেটাই বুঝতে পারছি না। ওনার যে কত গুলো গ্লাস শেষ হয়েছে সেটা আর গুনিনি। বোতল দেখলাম অনেকটাই সাবাড় করে দিয়েছেন। স্ট্যামিনা আছে বলতে হবে। ওনার চোখের নজরও বেশ ঘোলাটে, চোখের কোণে যেন ছোট ছোট দু এক ফোঁটা জল দেখতে পেলাম। ভগবান জানেন কি ভাবছেন। আমি একটু গলা খাঁকারি দিলাম কারণ আমার গ্লাস শেষ। আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না যে আমার আর চাওয়া ঠিক হবে কিনা। আমার গলা খাকরানির শব্দ পেয়ে উনি যেন ওনার নিদ্রা ভেঙ্গে উঠে সোজা হয়ে বসলেন। এতক্ষনে খেয়াল করলাম ওনার শাড়ির আলগা আঁচলটা ওনার বুকের ওপর থেকে নেমে ওনার কোমরের ওপর অলস ভাবে দড়ির মতন পড়ে আছে। আঁচলের লম্বা অংশটা মাটিতে লুটাচ্ছে। ওনার ঘামে ভেজা ব্লাউজে ঢাকা স্তন, ওনার সুগভীর নাভি আর তার খানিকটা নিচ অব্দি ফর্সা তলপেটের পুরোটাই নগ্ন। কিন্তু ওনার মধ্যে শাড়ির আঁচল ঠিক করার কোনও উদ্যোগ দেখা গেল না। আমার জন্য নির্দিষ্ট করা গ্লাসে তরল ঢেলে আমার হাতে উঠিয়ে দেবার সময় একবার যেন ওনার সাথে আমার চোখাচুখি হল। সাথে সাথে উনি নিজের বুক আর নগ্ন তলপেটের দিকে এক ঝলক দৃষ্টি ফেলে নিলেন। কিন্তু আঁচলটা যেমন ছিল তেমনই রইল। দরজায় টোকা। খুব বিরক্তির সাথে জিজ্ঞেস করলেন “কে?” বাইরে থেকে সেই আগে দেখা মেয়েটার গলা পেলাম। “আসব?” গলা চড়িয়ে বললেন “ এখনও চড়ে নি। আরও আধ ঘণ্টা পরে আয়।“ কার চড়ার জন্য উনি অপেক্ষা করছেন ভগবানই জানেন। তবে একটা জিনিস বুঝতে পারছিলাম যে আর বেশী গিললে দুপুরের খাওয়া মাটি হয়ে যাবে। এখন বেশী মদ গিললে আমি ভালো করে খেতে পারি না।
আরও কিছুক্ষণ এরকম নিরবে কেটে গেল। ওনার যেন হঠাৎ কি মনে পড়াতে লাফিয়ে সোজা হয়ে বসলেন। “হুক্কা খেয়েছ কখনও? “ আমাকে জিজ্ঞেস করলেন বেশ উত্তেজিত ভাবে। বললাম “ খেয়েছি বাইরে থাকতে দু একবার।“ উনি যেন প্রায় দৌড়ে বাইরে বেড়িয়ে গেলেন। দরজা খুলে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় শুনলাম আমাকে বলছেন “ ভালো হুক্কা আছে আমাদের কাছে। একবার চেখে দেখ। “ বাকি কথাটা শুনতে পেলাম না। বুঝলাম ওনার স্বামী নিশ্চই হুক্কা সেবন করেন। এই রকম বাড়িতে হুক্কার চল থাকাটা খুব একটা অদ্ভুত ব্যাপার নয়। কিন্তু উনি হুক্কাও টানেন। নিশ্চই ওনার বরকে লুকিয়ে লুকিয়ে। তবে বর বাড়ির ফিরে বুঝতে পারবে না যে বউ মদ খেয়েছে সেটা মেনে নেওয়া সত্যি কঠিন। ওনার পা নাই বা টলল, নাই বা ওনার কথা বার্তার কোনও হের ফের হল, কিন্তু স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কিছু ব্যক্তিগত ব্যাপার থাকে যেখানে এই ব্যাপারটা ধামা চাপা দেওয়া অসম্ভব। একটু পরে উনি ফিরে এলেন সেই মেয়েটাকে সঙ্গে করে। আমার গ্লাস খালি হয়ে গেছে দেখে যেন নিজেকে একটা ধিক্কার দিয়ে আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গি করে বললেন “এই দেখ, তুমি খালি হাতে বসে আছ?” একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম ওনার শাড়ির আঁচলটা ওনার ঘর্মাক্ত ঊর্ধ্বাঙ্গকে অর্ধ নগ্ন অবস্থায় রেখে মাটিতে লুটিয়ে চলেছে আর উনি এই ভাবে ঘরের মধ্যে অশালীন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওনার বাঁদিদের সামনে। একটু অদ্ভুত যদিও। অবশ্য উনি যখন আগের বার এই মেয়েটিকে ধমকাচ্ছিলেন তখন ওনার কথা শুনে বুঝতে পেরেছি উনি আগেও এই মেয়েটিকে বলেছেন যে ওনার মদ্যপ অতিথিদের সামনে কিভাবে আচরণ করতে হবে। তার মানে আমিই প্রথম নই, এর আগেও উনি ওনার একাকীত্বের কারণে অন্যান্য মেয়েদের (বা ছেলেদের, এই চিন্তাটাও ঠিক এই মুহূর্তে উড়িয়ে দিতে পারলাম না) এই বাড়িতে নিয়ে এসে এইসব করেছেন। ওনার ব্যাপার স্যাপার খুব যে সুবিধার নয় সেটা বুঝতে পারছিলাম। উনি আমার জন্য পানীয় প্রস্তুত করছিলেন, নিজেকে একদিনের জন্য বেগম মনে হচ্ছিল। মেয়েটা টেবিলের উপর একটা বনেদী হুক্কা রেখে তামাক প্রস্তুত করছিল নিপুণ হাতে। মিনিট খানেক পর অগ্নি সংযোগ করে বোধহয় চলে গেল। কখন যে অগ্নি সংযোগ করল সেটা নেশার ঘোরে ঠিক বুঝতে পারলাম না, আর হুক্কার থিয়োরি আমি ঠিক জানি না। দেখলাম পাইপ থেকে একটা আবছা ধোঁয়াটে ভাব আর একটা অদ্ভুত গন্ধে ঘরটা ভরে যাচ্ছে, কিন্তু ভীষণ ধীরে ধীরে। আমার হাতে গ্লাস্টা ধরিয়ে দিয়ে উনি সেই আলুথালু অবস্থাতেই নিজের জায়গায় বসে পাইপের মুখটা নিজের মুখে পুড়ে দিয়ে ফুরফুর শব্দ করে কয়েকটা টান নিয়ে এক মুখ ধোয়া ছেড়ে দিলেন। আমি ঠিক সেই সময় গ্লাসে এক চুমুক মেরেছি। কেরকম যেন করে উঠল ভেতরটা। এ কি বিশ্রী গন্ধ। আগেও তো পাবে হুক্কা খেয়েছি কয়েকবার, কিন্তু এরকম বাজে গন্ধ তো কোনও দিনও পাই নই। এটা কি? অবশ্য পরের মুহূর্তে মনে হল বারে যেগুলো চলে সেগুলো হল ফ্লেভারড। ফ্লেভার ছাড়া হুক্কার মশলার গন্ধ বোধ করি এমনটাই হয়ে থাকে। আমার অভ্যেস নাই বলেই এমন অদ্ভুত গা গুলিয়ে উঠেছে।
গন্ধটা সত্যি বিশ্রী। মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে। চোখের সামনেটা কেমন যেন আবছা হয়ে এসেছে।
হঠাৎ লক্ষ্য সাদা মতন কি একটা লম্বা জিনিস আমার দিকে এগিয়ে এসেছে। মাথাটা পরিষ্কার করে একটু ভালো করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলাম উনি পাইপটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়েছেন। হয়ত আমার বলা উচিৎ ছিল যে আমি এখন আর হুক্কা টানব না, কিন্তু কেন জানি না মুখ থেকে বের হল না। উল্টে ওনার হাত থেকে নিয়ে মারলাম একটা মোক্ষম টান। উফফ কি ঝাঁঝালো গন্ধ। কিছুটা ধোঁয়া বোধহয় অসাবধানতা বশত ভেতরে নিয়ে নিয়েছিলাম। ভয়ানক ভাবে বিষম খেলাম। যাক কয়েকবার জোড়ে জোড়ে কেশে নিজেকে সামলে নিলাম। কিন্তু সত্যি এত বাজে গন্ধ ওয়ালা জিনিস খেয়ে কারোর নেশা হয়? আবার আমার মাতাল মন পরক্ষণেই আমাকে বোঝাল যে ধুম্রপানের গন্ধও তো আমার ভালো লাগে না কিন্তু কত কোটি কোটি লোক আর আজকাল মেয়েরাও সেটা বেশ ভালো ভাবে উপভোগ করে। হতে পারে আমার অনভ্যাস। আরও বার কয়েক মারলাম টান। চোখের সামনেটা কেমন যেন আরও ঝাপসা হয়ে গেল। ঠিক কোনও কিছুই ঠিক ঠাক দেখতে পাচ্ছি না। বা হাতে ধরা গ্লাসের উপর থেকে আমার নিয়ন্ত্রণ কেমন যেন নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছি। ছিঃ, এখন কি গ্লাস ভাঙ্গব হাত থেকে ফেলে আর তাও আবার পরের বাড়িতে নিমন্ত্রিত হয়ে এসে। একটু নড়ে চড়ে বসলাম। ঠিক করলাম খুব স্বাভাবিক স্বরে বলতে হবে যে আমার একটু ঘুম ঘুম পাচ্ছে কারণ আমার ঘুম ঠিক ভাবে পোরেনি, তাই এখন, এইবার একটু ঘুমাতে যাব। কিন্তু ভেতর থেকে কোনও শব্দ বের হল না। ডান হাতের পেছন দিয়ে কয়েকবার বেশ ভালো ভাবে চোখ ডলে নিলাম। খুব আবছা দেখতে পেলাম উনি একটা স্বচ্ছ তরল ভর্তি গ্লাস হাতে নিয়ে বসে আছেন, সোফার উপর নিজের অর্ধনগ্ন শরীরটার ভার ছেড়ে দিয়েই বসে আছেন, আর মনে হল যেন ঠিক আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন। স্পষ্ট না হলেও মনে হল যেন উনার ঠোঁটের কোণে কেমন যেন একটা ক্ষীণ হাঁসি। ভেতর থেকে যেন সব শক্তি শেষ হয়ে গেছে। আমার হাঁটুর থেকে দু ইঞ্চি দূরে রাখা টেবিলটাও যেন কত দূরে মনে হচ্ছে। মানসিক স্থিরতা হারিয়ে যাচ্ছে। মন বলল গ্লাসটা এইবার রেখে দে মা, কিন্তু করলাম ঠিক তার উল্টোটা। ডান হাতে ধরে থাকা পাইপের ধূম ছাড়া মুখে আবার ঠোঁট ছোঁয়ালাম। আরে এ তো গাঁজা। এই গন্ধ আমার চেনা। অনেক আগের চেনা। অনেক বছর এই গন্ধের সাথে কোনও সম্পর্ক না থাকায় প্রথমে ঠিক চিনতে পারিনি, আর তাই এত নোংরা আর বিশ্রী লাগছিল গন্ধটা। মহিলা গাঁজা খান। আরে নিকুচি করেছে মহিলা, উনি আমাকে গাঁজা খাওয়াচ্ছেন। উফফ কি যে করব এখন। সমস্ত মনের জোর এক করে কাঁচের গ্লাসটা টেবিলে নামিয়ে রাখতে গেলাম। কিন্তু গলাটা একদম শুঁকিয়ে গেছে। ডান হাত থেকে কখন যে হুক্কার নলটা মেঝেতে পড়ে গেছে সেটা টের পাইনি। দু হাত দিয়ে গ্লাস্টা মুখের উপর চেপে ধরে ওই বিষাক্ত পানীয় গলায় ঢেলে নিজের গলা ভেজানোর চেষ্টা করলাম। অন্য কেউ হলে নিশ্চিত বুঝতে পারত যে আমার শরীর খারাপ লাগছে, আর সাথে সাথে সাহায্য করতে ছুটে আসত, কিন্তু এই মহিলার মধ্যে কোনও হেল দোল লক্ষ্য করলাম না। একই ভাবে ঠাই বসে আছেন। অবশ্য ওনার অবয়বটাও কেমন যেন ধীরে ধীরে চোখের সামনে থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। খালি গ্লাসটা টেবিলে রাখার চেষ্টা করলাম, কিন্তু পারলাম না, চেতনা প্রায় শেষ, বুঝলাম টেবিলের শেষ প্রান্তে পৌঁছানোর আগেই হাত থেকে গ্লাসটা ছেড়ে দিয়েছি, একটা খুব ক্ষীণ শব্দ পেলাম, মাথার পেছন থেকে কেউ একটা বলে উঠল গ্লাসটা ভেঙ্গে ফেলেছি মাটিতে ফেলে। শরীরটাকে আলগা ভাবে সোফার ওপর এলিয়ে দিলাম। এখন আর স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করে লাভ নেই। নেশা যে ভালোই চড়েছে সেটা সবাই বুঝতে পারবে। কিন্তু আধ খোলা চোখে আবছা দেখলাম এখনও মহিলার মধ্যে কোনও হেল দোল নেই। যেই কে সেই। আমার গলা দিয়ে শব্দ বেরনো দূরে থাক, আমার সারা শরীর অদ্ভুত ভাবে অবশ হয়ে গেছে। অদ্ভুত একটা অবস্থা, আবছা আলোয় চারপাশের সব কিছু দেখতে পাচ্ছি, যদিও আবছা, সব কিছু আবছা শুনতে পাচ্ছি, কিন্তু কিছু করার বা বলার বা নড়ার ক্ষমতা অবশিষ্ট নেই একটুও।
নেশার মধ্যে দেখলাম এইবার মহিলা উঠে দাঁড়িয়েছেন। হাতের গ্লাসটা টেবিলে সশব্দে নামিয়ে রেখেছেন। “মায়া, আয়। ওর হয়ে গেছে।“ গলায় একটা যেন কৌতুকের ছোঁয়া। আমার শরীরে কোনও জোর অবশিষ্ট না থাকলেও মাথা যেন ঘোলাটে অবস্থাতেও কাজ করে চলেছে। আবছা বুঝতে পারলাম সেই মেয়েটা আমার চোখের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। “দিদি দাঁড়াতে পারবে?” এখন আর আপনি করে কথা বলছে না মেয়েটা। আর ওর নাম মায়া সেটার সংকেত আমার মস্তিষ্কের কোষগুলো পেয়েছে। আমি বা হাতটা ওর দিকে বাড়ানোর একটা ব্যর্থ চেষ্টা করলাম, কিন্তু হাতটা যেন উঠলই না। নেতিয়ে পড়ে রইলাম। মেয়েটা আমার আধবোজা চোখের সামনে ঝুঁকে আমার সামনে ওর মুখটা নিয়ে এল। আমার ঘাড় ধরে একটু নাড়াল আমাকে। আমি নড়লাম না, না নড়তে পারলাম কই আর। বুঝতে পারলাম আমার হ্যান্ড ব্যাগটা আমার পাশ থেকে তুলে নিয়ে ওর মালকিনের দিকে এগিয়ে দিল। আবছা দেখতে পেলাম ওর মালকিন ব্যাগটা হাতে নিয়েই ব্যাগের চেনটা খুলে ভেতরটা হাতড়ে দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। উনি সোফায় বসে পড়লেন আবার। সব টাকা পয়সা ইত্যাদি বের করে টেবিলে রাখলেন পর পর। কিন্তু না টাকা মারার বোধহয় কোনও মতলব ওনার নেই। আবার সব ঠিক মতন ব্যাগের ভেতরে ভরে রেখে মায়ার হাতে ধরিয়ে দিলেন। মায়া ব্যাগটা হাতে নিয়ে আমার কোলে রেখে দিল। আমি ধরতে পারলাম না। কোল থেকে ব্যাগটা পড়েই যাচ্ছিল, কিন্তু বুঝলাম মায়া শেষ মুহূর্তে ধরে নিল ব্যাগটাকে। আমার গালে দুটো আলতো টোকা মেরে বলল “দিদি, ও দিদি উঠতে পারবে?” আমি নড়তে পারলাম না। আমার গালের ওপর পরের বারের টোকাটা বেশ জোড়েই এল। এটাকে ঠিক ঘুম ভাঙানোর টোকা বলা যায় না, বরং বলা যায় যে সপাটে একটা চড় মারল এই কাজের মেয়েটা। সাথে সাথে আমার মাথাটা অন্য দিকে এলিয়ে পড়ল। চোখের কোনায় কি কয়েক ফোঁটা জল এসে জড় হয়েছে? সেটা ঠিক বলতে পারব না। আরেকটা থাপ্পড় পড়ল সজোরে গালের উপর। “ এ তো পুরো আউট।“ পেছনে ফিরে ওর মালকিনের দিকে তাকিয়ে বলল। আমার মস্তিষ্ক আমাকে বলল এ মেয়েটা ঠিক চাকরানির মতন কথা বলছে না, বা ওর গলায় সেই ভয়ের স্বরটাও আর নেই। আবছা শব্দ পেলাম রত্নাদির গলার “মাগিটাকে তুলে নিয়ে যা। আমার কথা আমি রেখেছি। তোমরা কিন্তু...” বাকি কথা গুলো কেমন যেন হারিয়ে যাচ্ছে, কানে পৌঁছালেও, মাথায় পৌঁছাল না। আরেকটা সজোরে থাপ্পড় পড়ল গালের উপর। “গলা শুঁকিয়েছে?” আরেকটা ঠাপ্পড়, “কিরে মাগি, কথা কানে ঢোকে না?” আমার ব্যাগটা দেখলাম মেঝেতে নামিয়ে রেখে উঠে দাঁড়াল। একটা কেমন জানি ভীষণ অট্টহাসি দিয়ে বলল, “গলা শুঁকিয়েছে, চোখের ইশারায় বোঝাচ্ছে। “ দেখলাম ভদকার বোতলটা হাতে তুলে নিল। মুটকিটা খুলে সামনে ছুঁড়ে ফেলে দিল। রত্নাদির সামনেই গলায় ঢক ঢক করে এক গুচ্ছ মদ ঢেলে দিল। বোধহয় একটু বেশীই ঢেলেছে। খক খক করে কয়েকটা কাশি দিল। ডান হাতের পেছনটা দিয়ে নিজের ঠোঁটটা মুছে নিল। পরক্ষণেই আমার বা পাশে সোফার খালি অংশে অনাবৃত ডান হাঁটুটা রেখে আমার মুখের ওপর ঝুঁকে পড়ল। ওর কাজল কালো চোখ গুলো আমার আধবোজা চোখের ওপর স্থির। সে চোখে যেন একটা আগুন জ্বলছে। মনে মনে একটা ভয় ধরে গেল। আমার একাধিক পুরুষ আর নারীর সাথে শয্যা ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে, কোনও দিন এমন ভয়ের আর অজানা শিরশিরানি ধমনীতে অনুভব করিনি। সে সব খেলার ছলে হয়েছে, কিন্তু বুঝতে পারছি না যে এখন কি হবে। নিজের ঠোঁটটাকে আমার কানের একদম কাছে নিয়ে এসে ফিসফিস করে কোমল গলায় বলল “ পিপাসা পেয়েছে?” একটু থেমে আবার জিজ্ঞেস করল “ কি রে, পিপাসা পেয়েছে?” আমি চোখের ইশারায় কোনও মতে বোঝালাম সত্যি পিপাসায় মরে যাচ্ছি। “পেয়েছে!” হাঁসতে হাঁসতে পেছনে ফিরে বলল। আমার অসহায় চোখের ইশারা ও ধরতে পেরেছে। ডান হাতে আমার মাথার চুলের মুঠি নিজের শক্ত হাতে চেপে ধরল, অসম্ভব জোর মনে হল ওর ওই হাতে। মাথাটাকে নিজের হাতের জোড়ে সোফার পিছন দিকে হেলিয়ে দিয়ে শক্ত করে ধরে রইল। দম বন্ধ হয়ে যাবার জোগাড়। খাবি খাচ্ছি যেন। মুখটা জলের আশায় হাঁ হয়ে গেল আপনা থেকেই। খোলা আধ খাওয়া মদের বোতলটা চেপে ধরল আমার খোলার মুখের ওপর। গন্ধ নয়, কিন্তু ঝাঁজটা নিতে পারছি না আর।
কিন্তু আমার শরীর আমার সাথে বিদ্রোহ করল। আমি চাইছিলাম না আর এই বিষটা নিতে। কিন্তু গলা এত শুঁকিয়ে গেছে যে তরল ব্যাপারটাকে আঁটকে রাখতে পারলাম না। প্রায় বোতল শেষ করে দিল আমার পেটের ভেতর। শেষের কয়েক ফোঁটা নিজের গলার ভেতরে ঢেলে দিয়ে আমার চুলের মুঠিটা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। “এখনও মাগি বমি করছে না। স্ট্যামিনা আছে। এরকমই চাই। নিয়ে চল।“ আধ বোজা চোখে দেখলাম রত্না দি এখনও সোফায় জড় ভরতের মতন বসে আছেন। “কি রে কথা কানে ঢোকেনি? চল নিয়ে চল। ওদের আসতে এখনও সময় লাগবে। তার আগে ডাক্তার আসবে। চল, বসে বসে গাঁজা টানিস না আর। “ মনে হল রত্নাদিরও যেন নেশা হয়ে এসেছে। তাই শুরুতেই ঠিক নড়তে পারল না। মায়া নামক মেয়েটি ওর দিকে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়ে একটা চড় বসিয়ে দিল সজোরে আর সশব্দে। কে কার মালকিন বুঝতে পারছি না। আবার একটা ধ্যাতানি দিল রত্নাদিকে “চল ওঠ। তুই একটা সমাজের বোঝা।“ আমার চেতনা হারিয়ে গিয়েও হারিয়ে যাচ্ছে না কেন বুঝতে পারছি না। বার বার মন কে বোঝাতে চাইছি এ কিছুই নই, এ এক দুঃস্বপ্ন। একটু পরেই ঘুম ভেঙ্গে উঠে পড়ব, ব্যস সব আগের মত হয়ে যাবে। উঠেই নিশ্চই ঢাকের শব্দ শুনতে পাব। এখন তো সেই পূজা। কিন্তু কোথায় কি। নেতিয়ে পড়ে পড়ে দেখলাম রত্না দি উঠে দাঁড়ালেন টলমল পায়ে। কি যে হচ্ছে সত্যি বুঝতে পারছি না। রত্না দি যে মায়ার মালকিন নন সেটা বুঝতে পারছি স্পষ্ট। মায়ার একটু আগে দেখা আচরণ ছিল একটা নাটক। এখন তো উল্টো মনে হচ্ছে। নায়িকারা শুরুতে অনেক সময় আসেন না। এখন সময় বুঝে ঠিক সময়ে ক্লাইম্যাক্সে এসে হাজির হয়েছেন তদারকি করতে। রত্না দি যেন সোফা থেকে উঠতে গিয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন। তবু নিজেকে সামলে নিলেন। মায়া ওনার দিকে তাকিয়ে বলল “তোকে আমরা ঠকাইনি। তুই আমাদের ঠকিয়েছিস। বেইমান কোথাকার। তোর যা প্রাপ্য সব পাবি। নে এখন কাজ কর। “ একটু আগে যাকে দেখে মনে হচ্ছিল যে ভয়ে কাঁপছে সে এখন তার মালকিনের উপর তুই তুকারি করে চিৎকার করছে।
দুজনে আমাকে এসে দুহাতে ধরে বগলদাবা করে সোফা থেকে উঠিয়ে নিল। আমার নিজের শরীরে যে কোনও জোর অবশিষ্ট নেই সেটা আর কতবার লিখব। তবে হ্যাঁ যেটুকু বাঁচা কুচা ছিল সব মায়ার এই অদ্ভুত পরিবর্তনের পরে কোথায় যেন তলিয়ে গেছে। ওরা দুজন মিলে আমাকে নিয়ে প্রায় টানতে টানতে দরজা অব্দি নিয়ে এল। দূর থেকে একটা যেন বুট জুতোর শব্দ পেলাম। আবার কে আসছে। মনটা ভয়ে সিঁথিয়ে গেল। আর বেশ দৌড়ে দৌড়ে আসছে। কি মুশকিল আরেকটা মেয়ে। বয়স আমার মতন বা আমার থেকে হয়ত সামান্য একটু কম, বেশী কোনও মতেই নয়। এই মেয়েটা দেখলাম শার্ট প্যান্ট পরে এসেছে, পায়ে বুট জুতো। রত্নাদি আর মায়া কে সাহায্য করতে এগিয়ে এলো। চাপা গলায় মায়া কেই উদ্দেশ্য করে বলল “তাড়াতাড়ি ফ্রেশ করিয়ে একে কনে সাজিয়ে নিয়ে বেরোতে হবে গাড়ি করে। ডাক্তারবাবু এই এলেন বলে।“ ওরা আমার অসাড় শরীরটাকে প্রায় হ্যাচরাতে হ্যাচরাতে দোতলায় নিয়ে গেল। হাঁটুতে একবার পড়ে গিয়ে ব্যথাও পেলাম যেন। কিন্তু মনের ভয় আর ব্যথা এত বেশী যে হাঁটুর ব্যথা ঠিক অনুভব ই করলাম না। একটা অন্ধকার মতন ঘরে ঢুকিয়ে একটা বড় বিছানার ওপর ধাক্কা মেরে ফেলে দিল ওরা। “তেমন কিন্তু ভারী নয়। “ বোধহয় মায়াই বলল। সঠিক বলতে পারব না কারণ আমি এখন উপুড় হয়ে শুয়ে আছি। হয়ত দশ কি পনের মিনিট আমাকে এইভাবেই আমাকে শোয়া অবস্থায় একলা ফেলে ওরা ঘর থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিল। যখন ফিরে এলো তখন ওদের গলা ছাড়াও আরেকজন পুরুষের গলা শুনলাম। এই কি ডাক্তার বাবু। আমার পিছনে দাঁড়িয়ে ওরা ফিস ফিস করে কি পরামর্শ করল সে কথাগুলো আমার ঠিক কানে ঢুকছিল না। একসময় অনুভব করলাম আমার কটন লেগিন্সের কোমরের কাছে এক জোড়া হাত নেমে এল। আমার কুর্তিটা কোমর থেকে তুলে দিয়েছে নিশ্চই। কারণ লেগিন্সের ওপরে পিঠের ওপর একটা গরম ভ্যাঁপসা হাওয়া অনুভব করলাম। ওই হাত জোড়া এইবার সরাসরি লেনিন্সের কোমরের ইলাস্টিক ব্যান্ডটা ধরে এক ঝটকায় নিচে নামানোর চেষ্টা করল। আমার শরীরের ভারের জন্য অবশ্য এত সহজে নামাতে পারল না। একটা সজোরে ক্যাঁচ মতন শব্দ হল, আর তার পরের মুহূর্তেই অনুভব করলাম প্যানটি থেকে বেড়িয়ে থাকা পাছারা মাংসল অংশে সেই ভ্যাঁপসা গরম হাওয়ার ছোঁয়া। সব শক্তি দিয়ে একবার শেষ চেষ্টা করে ঘোরবার চেষ্টা করলাম। ওরাও বোধহয় আমার নড়াচড়াটা লক্ষ্য করেছে। কে একজন বিছানার ধারে এসে আমার দুটো হাত বিছানার সাথে চেপে ধরল। বুঝলাম কোনও এক হাতের (ডান হাতই হবে) কনুই দিয়ে আমার পিঠের ঠিক মধ্যভাগটাকে বিছানার সাথে চেপে রাখল। উফ কি গায়ের জোর রে বাবা। হয় ব্যায়াম করে অথবা গায়ে গতরে খেটে খায়। আর অবশ্য আরেকটা ব্যাপার হতে পারে, সেটা হল এই যে আমার শরীরের হাল এই মুহূর্তে এতই বেহাল যে একটা বাচ্চা মেয়েও আমাকে এইভাগে চেপে ধরে রাখতে পারবে। এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে কোমরের কাছের হাত জোড়া প্যানটির ইলাস্টিক ব্যান্ডে হাত দিল। লেগিন্সটাকে অন্তত একবার হলেও নামানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু প্যানটির ক্ষেত্রে তেমনটা করল না। প্রথমেই কোমরের একটু নিচে ব্যান্ডটাতে হাত দিয়ে জোড়ে একটা হ্যাঁচকা টান মারল। আমার অসহায় কোমর আর পাছাটা যেন বিছানার ওপর একটু কেঁপে কেঁপে উঠল। আরেকটা সজোরে ক্যাঁচ মতন শব্দ হল আর তার পরের মুহূর্তেই পাছার নগ্ন চামড়ায় অনুভব করলাম সেই ভ্যাঁপসা গরম হাওয়ার পরশ। আমার পাছা আর পেছন দিকে প্রায় হাঁটু অব্দি পুরোটা থাই নগ্ন করে দিয়েছে। আরেক জোড়া হাত কিন্তু এখনও আমাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে রেখেছে। কয়েক মুহূর্তর জন্য ওই হাত জোড়া আমার পায়ের পাশ থেকে সরে কোথায় যেন চলে গেল। এই অচেনা মেয়েগুলো আর এই ছেলেটার সামনে এই ভাবে কোমরের নিচে নগ্ন হয়ে শুয়ে থাকতে যারপরনাই লজ্জা পাবার কথা, কিন্তু আমার মানসিক ভয় এখন লজ্জাভাবটাকে ছাপিয়ে গিয়েছে। পাছার বাদিকের মাংসল বলয়ের উপরের দিকে ঠিক কোমরের নিচে একটা ঠাণ্ডা ভেজা স্পর্শ অনুভব করলাম। ভেজা নরম জিনিসটা দিয়ে আমার নগ্ন ত্বকের ওপর খানিকক্ষণ ঘষে জায়গাটাকে যেন আরও নরম করে ভিজিয়ে দিল। তার ঠিক কয়েক সেকন্ড পরেই একটা তীক্ষ্ণ সুচালো জিনিস সজোরে ঢুকে গেল আমার ভেজা চামড়া ভেদ করে। ওহহ, ইনজেকশন দিচ্ছে লোকটা আমাকে। কয়েক সেকন্ড ব্যস হাত জোড়া সরে গেল পেছন থেকে। ডাক্তারের কাজ শেষ।
একটা মেয়েলি গলা পেলাম “কতক্ষণ থাকবে?” এইবার স্পষ্ট শুনলাম লোকটার গলা “পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা তো থাকবেই। তবে পুরো বেহুঁশ হবে না। এখন যেমন আছে ঠিক তেমনই থাকবে। নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকবে। পুরো বেহুঁশ করে দিলে সমস্যা হবে। কারণ পথে চেকিং হলে একজন অজ্ঞান মহিলাকে নিয়ে কোথায় যাওয়া হচ্ছে সে প্রশ্ন বোঝানো শক্ত। “ মেয়েটা যেন কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। ডাক্তার তাকে একটু গলা চড়িয়ে থামিয়ে দিল। “আহ, বোকার মতন তর্ক করো না এখন। এক কাজ কর। তুমি খবর নাও যে গাড়ি রেডি কিনা। আর সাথে এটাও জেনে নিও যে থানার মধ্যে কোনও খবর গেছে কিনা। “ একটা মেয়ে বলল “সেটা আর এমন কি। থানার বাইরেই তো একজন কে বসিয়ে রেখে এসেছি। তবে একটা জিনিসে ভয় পাচ্ছি, পুরো বেহুঁশ না করে নিয়ে গেলে কেউ ধরলে যদি চিৎকার করে বসে বা কিছু বলে বসে তখন তো পুরো ব্যাপারটা ঘেঁটে যাবে।“ ডাক্তার বললেন “ সে চিন্তা তোমাকে করতে হবে না। চোখ তুলে শুধু চেয়ে থাকবে। কিন্তু কিছু বলতে পারবে না, নড়া চড়া করার কথা ভুলে যাও। ওই মদের নেশা আর গাঁজা আর ইয়ের (ইয়েটা যে কি সেটা আমারও জানার প্রবল আগ্রহ, কারণ আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওই ইয়েটা গাজার সাথে মিশিয়ে দিয়েছিল বলেই আমার এখন এই হাল।) নেশাটা ধীরে ধীরে নেমে গেলেও ওষুধের নেশা পাক্কা পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা থাকবে। তার পরেও ঘণ্টা দুই তিনেক ঘুম ঘুম ভাব থাকবে। অবশ্য সব ঠিক ঠাক থাকলে ততক্ষণে আমরা ডেরায় পৌঁছে যাব। “ খেয়াল করলাম যে মেয়েটি আমাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে রেখেছিল সে আমার শরীরের ওপর থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিয়েছে। ডাক্তার বোধহয় ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। কারণ অনেকটা দূর থেকে ওর গলার আওয়াজ পেলাম “তোমরাও রেডি হয়ে নাও। আমি আসছি আধা ঘণ্টার মতন পরে। তারপর তোমরা তিন জন বেড়িয়ে যেও। একজন কিছু জিনিস পত্র কিনে নেবে, মেয়েলি জিনিস পত্র আর কি। আরেকজন বাড়িটার থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে খেয়াল রেখ কোথাও কোনও চড়া চড়া হচ্ছে কিনা। হ্যাঁ ওই তুমি (বুঝলাম এটা রত্না দিকে উদ্দেশ্য করে বলেছে) ছাড়া দুজনের কাছে পিস্তল আছে নিশ্চই। চরের তো আর অভাব নেই। সাবধান থাকা ভালো। তুমি যাবে মেয়েলি জিনিসগুলো কিনতে। আর তুমি যাবে গাড়িটার কাছে। থানার সামনেই আছে। গিয়ে এমন ভাব দেখাবে যেন তোমার দাদার বউ হঠাত করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, এখানে ডাক্তার পাচ্ছে না। তাই একটু দূরে নিয়ে যেতে হবে। ও হ্যাঁ ব্যাগটা এখানেই রেখে যাচ্ছি। খেয়াল রেখ।“ ডাক্তার বেড়িয়ে গেল।
•
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
চার
ডাক্তার বেড়িয়ে যেতেই ঘরের মধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতা শুরু হল। আমার কিছু করার নেই এখন। আর সময়ের জ্ঞানও আমি হারিয়ে ফেলেছি অনেকক্ষণ মদের আর ওষুধের নেশায়। তিনজনে মিলে আমার অসাড় শরীরটাকে ধরাধরি করে বিছানা থেকে উঠিয়ে দাঁড় করিয়ে দিল। মায়া ছাড়া (পরে জেনেছিলাম ওর নাম রমা) অন্য মেয়েটা আমার সামনে ঝুঁকে বসে নিপুণ হাতে আমার ছেঁড়া লেগিন্স আর প্যান্টিটাকে গায়ের জোড়ে আমার শরীরের থেকে ছিঁড়ে শরীরের থেকে আলগা করে বিছানার ওপর ছুঁড়ে ফেলে দিল। “ কোমরের নিচে আমি পুরোটা নগ্ন হলাম এই অপরিচিত তিনজন মেয়ের সামনে। নিচ থেকে রমার গলার আওয়াজ পেলাম “ ওয়াও লুক হোয়াট ওয়ে হ্যাভ গট হিয়ার! আওয়ার নিউ কমরেড শেভস হার ভ্যাজিনা।“ মেয়েটির ইংলিশ উচ্চারণ নিতান্ত খাঁসা। মনে হয় পড়াশুনা জানা মেয়ে। কিন্তু কমরেড কেন? চিন্তায় ব্যাঘাত্ ঘটল, মায়া আমার সামনে বসে আমার কামানো যোনীর বেদীতে হাত দিয়ে ঘষে একবার দেখে নিল। “গুড অয়ান ডাউন দেয়ার ফর সিওর, কিন্তু শারীরিক ধকল কত নিতে পারে সেটাই দেখার। “ তিনজনেই আমাকে ঘিরে ধরে আমার কুর্তিটা আমার মাথার ওপর থেকে গলিয়ে খুলে নিল। আমি অসাড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকায় ওদের একটু বেগ পেতে হচ্ছিল তাতে সন্দেহ নেই, কিন্তু তাও বেশীক্ষণ লাগল না। আমার ব্রা খোলার ধারে কাছ দিয়ে গেল না ওরা। কাঁধের কাছে একটা হালকা টান দিয়ে আমার শেষ অন্তর্বাসটাকে আমার শরীরের থেকে ছিঁড়ে নিয়ে কোথাও একটা ছুঁড়ে ফেলে দিল। আমাকে ধরাধরি করে ঘরের সংলগ্ন বাথরুমে নিয়ে গিয়ে আমাকে বাথরুমের দেওয়াল হেলান দিয়ে ভেজা মাটিতে বসিয়ে দিয়ে তিনজনেই বেড়িয়ে গেল বাথরুম থেকে। বেশ উচ্চস্বরে কথা বলছে ওর ঘরের ভেতর। “গা থেকে গয়নাগুলো খুলে ফেল মাগি। ডাক্তারের ব্যাগে ভরে রাখ ওই প্যাকেটে ভরে। আর জমিদার গিন্নির অভিন্য় এখন করতে হবে না।“ এটা মায়ার গলা। রমার গলা এল সাথে সাথে “উই হ্যাঁভ তো সেল দেম অ্যাট দা আরলিয়েস্ট। এখন টাকার খুব টানাটানি চলছে। নতুন মাল আর খাওয়া দাওয়া খরিদ করতে হবে। আর মেয়েদের সংখ্যা বাড়ছে সেই খবর রাখ কিছু?“ এরা কারা? ডাকাত নাকি? তাহলে বলতে হবে পড়াশুনা জানা রাখাল। রত্নাদির সাথে কথা বলার সময় যদিও খুব রাগী রাগী স্বরে কথা বলছে, কিন্তু তাছাড়া কথাবার্তা বেশ পলিশড।
মিনিট পাঁচ সাতেক পর ওরা তিন জনেই আবার ফিরে এল বাথরুমে যেখানে আমার অসাড় নগ্ন শরীরটাকে ওরা এতক্ষন ফেলে রেখে গিয়েছিল। আধ বোজা চোখে দেখলাম তিন জনেই নগ্ন হয়ে এসেছে বাইরের ঘর থেকে। হয় আমাকে স্নান করানোর সময় নিজেদের পোশাকআশাক ভেজাতে চায় না , আর না হয় আমার সাথে ওরাও স্নান করে নেবে। দ্বিতীয়টাই যে ঠিক অনুমান সেটা একটু পরে বুঝতে পারলাম। বাথরুমের একটা কোনায় একটা ছোট বসবার জায়গা ছিল। আমাকে নিয়ে গিয়ে সেখানে বসিয়ে দিল ওরা ধরাধরি করে। একজন আমাকে শক্ত করে ধরে বসিয়ে রখাল যাতে আমি পড়ে না যাই আরে বাকি দুজন শুরু করল আমাকে স্নান করাতে। রত্নাদি আর মায়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমাকে স্নান করাচ্ছিল। একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম রত্নাদির পায়ে, কুঁচকিতে ঘন লোম আর চুলের জঙ্গল, হাত টা যদিও ভালো ভাবে অয়াক্স করা। মেয়েরা স্নানের সময় সব সময় মাথা ভেজায় না। সেই জন্যই বোধহয় স্নান শুরু করানোর আগে হাত তুলে নিজেদের মাথার চুল খোপার আকারে পেছনে বেঁধে রাখল দুজনেই। নেশাগ্রস্ত চোখে লক্ষ্য করলাম মায়ার বগল একদম নির্লোম, ঠিক আমার মতন। কিন্তু রত্নাদির বগল ভর্তি চুল, দেখে মনে হল না শেষ এক বছরের মধ্যে কোনও দিন শেভ করেছেন বলে। মায়ার হাত পা আবছা দেখে মনে হল সম্পূর্ণ নির্লোম আর রত্নাদির থেকে অনেক পরিষ্কার, যদিও মায়ার উরু সন্ধিতে কালো ঘন জঙ্গলের সমাবেশ। রত্নাদির স্তনের আকার মনে হল ছত্রিশ-সি হবে, বয়স বা ওজনের ভারে সামান্য নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে। তবে তলপেটে মেদ একদম কম। ভালো মেন্টেন করেছেন সেটা মানতেই হবে। পড়ে শুনেছিলাম যে রত্নাদির বয়স সাইত্রিশের কিছু বেশী। মায়ার টা আমার থেকে সামান্য একটু বড়। কিন্তু বেশ গোল আর বেগুনের মতন ছুঁচলো, কেমন একটু সামনের দিকে উঁচিয়ে আছে। একটা অদ্ভুত জিনিস লক্ষ্য করলাম মায়ার পেটের নিচের দিকে একটা বেশ কিছুটা জায়গায় চামড়া কোঁচকানোর দাগ যেটা সচরাচর বাচ্চা হওয়ার সময় ঠিক মতন খেয়াল না রাখলে মেয়েদের পেটের চামড়ায় পড়ে যায়। মায়ার কি বাচ্চা আছে নাকি? একটু আশ্চর্যই হলাম মনে মনে। গায়ে ঠাণ্ডা জলের ছোঁয়া পেয়ে সম্বিত ফিরে পেলাম।
মায়া অবশ্য স্নান শুরু করানোর আগে আমার একদম সামনে এগিয়ে এসে হাত দিয়ে আমার মাথার চুলগুলো মাথার পেছনে খোপার আকারে বেঁধে দিল। ওর উচ্চতা খুব বেশী নয়। যখন আমার মাথায় খোঁপা বেঁধে দিচ্ছিল তখন বেগুনের মতন নরম স্তনের বোঁটাগুলো ছিল আমার চোখের থেকে কয়েক সেন্টিমিটার দূরত্বে। বাদামি রঙের শক্ত বোঁটাটা বার দুয়েক যেন আমার কপাল আর চোখ ছুয়ে গেল। ওর স্তন আর বগলের কাছ থেকে ভীষণ একটা ঝাঁঝালো নোংরা ঘামের গন্ধ এসে আমার নাকে ধাক্কা মারল। বোধহয় অনেক দিন স্নান করে নি। আর বোধহয় ডিও মাখার চল নেই ওর। যোনীদ্বার থেকে যে গন্ধটা পেলাম সেটাও খুব নোংরা, কেমন জানি একটা যোনীরস, ঘাম আর তিব্রা পেচ্ছাপের গন্ধের মিশ্রণ। বোধহয় শেষ কয়েকবার পেচ্ছাপ করে ভালো করে ধোয় নি জায়গাটা। আমার চুল বাঁচিয়ে ওরা ভালো করে আমার সারা গা জল দিয়ে ধুয়ে দিল। সারা গা জলে ভিজে যাওয়ার পর আমার মুখে, গলায়, ঘাড়ে, আমার হাত উপর দিকে উঠিয়ে দুই বগলে, স্তনে, পেটে, দু পায়ে আর যোনীদেশে সাবানের একটা আস্তরণ ফেলে দিল। সামনেটা ভালো করে সাবান মাখিয়ে পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা রমার হাতে সাবানটা হস্তান্তরিত করে দিল। অনুভব করলাম পেছন থেকে রমা আমার সারা পিঠে নরম ভাবে প্রথমে সাবান মাখাল। পিঠ শেষ করে আমাকে বসার জায়গা থেকে সামান্য উঠিয়ে আমার নরম পাছার ওপরও সাবানের একটা আস্তরণ ফেলে দিল, ভেজা মসৃণ আঙুলের যেন ছোঁয়া পেলাম আমার পাছার খাঁজে আর পায়ু ছিদ্রের মুখে। একটা অদ্ভুত শিরশিরানি খেলে গেল শিরদাঁড়া বেয়ে। রত্নাদি ইতিমধ্যে এক বালতি জল টানতে টানতে নিয়ে এসেছেন। রমার সাবান মাখানো হয়ে গেলে ওর হাত থেকে সাবানটা ফেরত নিয়ে মায়া এক মগ জল আমার পিঠের ওপর দিয়ে ঢেলে দিল। পেছন থেকে রমা হাত দিয়ে ঘষে ঘষে পিঠ থেকে আর পাছার ওপর থেকে সমস্ত সাবানের ফ্যানা সরিয়ে দিচ্ছিল। আরও দুই তিন মগ জল ঢালার পর আবার আমাকে বসিয়ে পিছন থেকে শক্ত করে ধরে রাখল রমা। আমার গায়ে ভালো করে জল ঢেলে ধুয়ে পরিষ্কার করে তিনজনে মিলে আমাকে সেখান থেকে উঠিয়ে টানতে টানতে বাথরুমের বাইরে ঘরের মধ্যে নিয়ে এল। এতক্ষনে রমার শরীরের দিকে চোখ পড়ল ওর গা থেকেও অদ্ভুত নোংরা ঘামের গন্ধ আসছে নাকে। ওর হাতে পায়ে লক্ষ্য করলাম সরু সরু কিছু লোম আছে, যোনীদেশ একই রকম ঘন জঙ্গলে ঢাকা। আর বগলতলিতেও ঘন চুলের জঙ্গল। এরা কি একটু নিজের খেয়াল রাখার সময় পায় না। রমার ক্ষেত্রেও একটা জিনিস লক্ষ্য না করে পারলাম না। সেটা হল মায়ার মতন ওরও তলপেটে ভালো মতন স্ট্রেচ মার্কের দাগ আছে, অর্থাৎ মায়ার মতন রমাও কোনও কোনও না কোনও সময়ে গর্ভবতী হয়েছিল। ওর স্তন দুটো ছোট, কিন্তু ক্যাম্বিশ বলের মতন একদম গোল আর ফোলা ফোলা, বোঁটাটাও বেশ বড় আর কেমন যেন একটা গোলাপি আভা স্তন বৃন্তের চারপাশের বলয়ে। ওরা তিনজনে মিলে তোয়ালে দিয়ে ভালো করে আমার সারা শরীরের জল মুছিয়ে দিয়ে আমার নগ্ন শরীরটাকে বিছানার উপর চিত করে শুইয়ে দিয়ে ওরা তিনজন বাথরুমে চলে গেল স্নান করতে। ভেতর থেকে ওদের ভাসা ভাসা গলার আওয়াজ আর জল ঢালার শব্দ পাচ্ছিলাম এই ঘর থেকে। নগ্ন হয়ে শুয়ে শুয়ে ওদের স্নান শেষ হবার অপেক্ষা করছি, আর তো কিছুই করার নেই এখন।
কতক্ষণ ঠিক বলতে পারব না, কারণ সময়ের হিসাব আর রাখতে পারছি না, দেখলাম ওরা তিনজনে বাথরুম থেকে বেড়িয়ে এল। নগ্ন ভেজা গা নিয়ে। একে একে তিনজনেই আমার ব্যবহৃত তোয়ালেটা দিয়ে নিজেদের গা মুছে শুঁকনো করে নিল। মায়া দেখলাম বিছানার পিছন দিকে এসে মাঝারি সাইজের সুটকেস তুলে বিছানায় রেখে তার থেকে একগুচ্ছ জামা কাপড় রত্নাদির দিকে ছুঁড়ে দিল। বুঝলাম এখন রত্নাদিকে এইগুলোই পরতে হবে। আরেকটা জিনিস নজর এড়িয়ে গেল না, ওনার গায়ের গয়নাগুলো আর ওনার গায়ে নেই। বুঝলাম কয়েকদিন পর আবার সেগুল বেচে দিতে হবে। তাহলে কিনলই বা কেন? অবশ্য এই সব প্রশ্নের উত্তর আমি পরে পেয়েছিলাম। রত্নাদি পরলেন নীল পাড় দেওয়া ধবধবে সাদা শাড়ি আর সাদা ব্লাউজ, ব্রা, প্যানটি, শায়া সবই ধবধবে সাদা। পরে বুঝলাম উনি আমার আয়া বা নার্সের ভূমিকায় অভিনয় করবেন এই আসন্ন যাত্রায়। রমা আর মায়া দুজনেই লাল রঙের পাতলা সশ্তা শাড়ি পরল। ব্লাউজ লাল। দুজনেই একই রকম সাদা রঙের ব্রা পরল, কিন্তু অদ্ভুত ভাবে দেখলাম লাল সায়ার তলায় দুজনেই প্যানটি পরল না। অদ্ভুত লাগলো ব্যাপারটা। যা বুঝতে পারছি অনেকদূর যেতে হবে, কিন্তু এরকম ভাবে প্যানটি ছাড়াই এতটা পথ যাবে ওরা দুজন। আমাকে ওরা প্যানটি বা ব্রা কোনওটাই পরাল না। লাল ভারী সায়ার ওপর দিয়ে একটা ভারী লাল শাড়ি পরিয়ে দিল (ঠিক যেমন জমিদার বাড়ির গিন্নিরা পরে)। আর একটা মোটা ভারী লাল ব্লাউজ পরিয়ে দিল। রমা আমার মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দিল আর সেই সাথে গলায় একটা ভারী মঙ্গলসূত্র মার্কা নেকলেস। পাক্কা গৃহিণী মার্কা চেহারা বানিয়ে দিল আমার। আমাকে আবার বিছানায় শুয়ে দিয়ে ওরা তিন জনেই বেড়িয়ে গেল। খুব বেশী হলে মিনিট চার পাঁচেক হবে। দেখলাম ডাক্তার কে নিয়ে ওরা তিনজন আবার ফিরে এসেছে। ডাক্তার ওদের তিনজনের সাথে গলা নিচু করে কিছু আলোচনা করে নিল। প্রথমে মায়া, তারপর রমা বেড়িয়ে গেল। ডাক্তার রত্নাদির হাতে কিছু টাকা দিয়ে একটা লিস্ট ধরিয়ে দিল। সবাইকেই অবশ্য বেরোনোর আগে বলে দিল যে মোবাইল যেন খোলা থাকে। আর নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ কারোর সাথে ফোনে কথা না বলে। কোনও রকম গণ্ডগোল দেখলেই যেন ফোন করে তিনজনকে জানিয়ে দেয়। রত্নাদি বেড়িয়ে যাওয়ার পর ডাক্তারও ঘর ছেড়ে ওনার পিছন পিছন বেড়িয়ে গেল। ফিরে এল মিনিট পাঁচেক পরে। আমার চোখ দুটো আপনা থেকে বুজে গেছিল।
আমার গালের উপর গরম ছোঁয়া পেয়েই চোখ খুলতে বাধ্য হলাম। “তুমি কিন্তু দেখতে মন্দ না। শরীরটাও মন্দ নয়। নিতে খারাপ লাগবে না।“ আমার মুখটাকে নিজের হাতের আঙ্গুলের মধ্যে শক্ত ভাবে নিয়ে ডাইনে বাঁয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখল আমার মুখখানা। “না সত্যি মন্দ না। কি আমাকে একটু ভালবাসতে দেবে?” হেঁসে জিজ্ঞেস করল আমাকে। কথা বলার ক্ষমতা আমার ভেতরে নেই, ভাবলেশহীন চোখ নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। আরও কিছুক্ষণ ধরে আমার মুখটাকে নেড়ে চেড়ে দেখে আমার মুখটাকে ছেড়ে দিল। একবার ঘরের বাইরে গিয়ে কি একটা দেখে আবার ফিরে এল। “শুনলাম তুমি নাকি ডাক্তার। আমাদের জন্য ভালোই হবে। আমার তো আর ডাক্তারি পড়াটা শেষ হল না।“ এর আগে আমি ডাক্তারটাকে ভালো করে দেখতে পাইনি। এই প্রথম ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখলাম। বয়স আমার থেকে কমই হবে। “ওরা আমাকে ডাক্তার বলে বটে, কিন্তু আমি পুরো পুরি ডাক্তার নই, ওই টুকিটাকি ওষুধ দিতে পারি, আর ওই ইনজেকশন দিতে আমি কাজে লাগি। কিন্তু তাতে কি? আমি আধা ডাক্তার আর তুমিও তো ডাক্তার। তাহলে তোমাকে আদর করার সুযোগ আমারই সবার আগে পাওয়া উচিৎ। তাই নয় কি?” শেষ কথাটা বেশ বিদ্রুপের মতন শোনাল। অন্য সময় হলে একটা থাপ্পড় খেত আমারর হাতে, কিন্তু এখন আমার সারা শরীরটাই অসাড়। একবার আমার অসাড় শরীরটাকে আগা গোঁড়া মেপে নিল চোখ দিয়ে, যেন চোখ দিয়েই আমাকে গিলে খেতে চায় ছেলেটা। একবার হাতের ঘড়িটা দেখে নিল। মুখে একটা হাঁসি নিয়ে বলল “ না। হাতে সময় আছে এখনও। অন্তত মিনিট কুড়ি। কাজে লাগানো যাক না কি?” চোখ মেরে আমার দিকে তাকিয়ে হেঁসে হেঁসে তাড়িয়ে তাড়িয়ে বলল ছেলেটা। এক ফোঁটাও সময় নষ্ট না করে আমার শরীরের ওপর আলগা ভাবে বিছিয়ে থাকা শাড়ির আঁচলটাকে আমার শরীরের ওপর থেকে সরিয়ে আমার ডান পাশে সরিয়ে দিল। মোটা ব্লাউজে ঢাকা আমার স্তনগুলোকে উন্মুক্ত করল ওর চোখের সামনে। ব্লাউজের উপর দিয়েই আমার নরম স্তনগুলো কে দুহাতের মধ্যে নিয়ে বেশ কচলে কচলে দেখে বলল “না ভালো, বেশ গোল তো তোমার জিনিসগুলো।“ আমার অসহায়তার সুযোগ নিয়ে কয়েক সেকন্ডে আমার ব্লাউজের হুকগুলো এক এক করে খুলে ফেলল। ব্লাউজের কপাট দুটোকে দুই পাশে হাট করে সরিয়ে দিয়ে আমার স্তন দুটোকে নগ্ন করে দিল। আমার নরম স্তনবৃন্তের ওপর ওর গরম হাতের ছোঁয়া পেলাম। অসহায়, কিছুই করার নেই আমার। আমার স্তন দুটো এক এক করে নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে ভালো করে কচলে কচলে আদর করল, বলা ভালো অনুভব করল। অনুভব করছিলাম স্তনবৃন্ত দুটো স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায় শক্ত হয়ে উঠেছে। আমার বোঁটা দুটোতে আলতো ভাবে চিমটি কেটেও দেখল। ওর মুখে আর চোখে তীব্র কামনার ভাব জেগে উঠেছে। আমার স্তনগুলোকে নিজের হাতের নিষ্পেষণ থেকে মুক্তি দিয়ে বিছানায় চড়ে বসল আমার পাশে। ওরা আমাকে শাড়িটা পরিয়েছিল নাভির অনেকটা নিচে। ও আমার শরীরের নিচের দিকে ঝুঁকে আমার নগ্ন নাভিটাকে জিভ দিয়ে একটু আদর করল। আবার উঠে আমার দিকে তাকিয়ে দেখল। বোধহয় আমার মুখ দেখে আমার মনের ভাব বোঝার চেষ্টা করছে।
আবার মাথা ঝুঁকিয়ে আমার নগ্ন তলপেট আর নাভির উপর বেশ কয়েকটা চুমু খেল, আলতো আলতো করে জিভ বলিয়ে আদর করল। আমার চোখের কোনটা নিজের অজান্তেই ভিজে গেছে আবার। আমার নগ্ন তলপেটের উপর থেকে নিজের মুখ উঠিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে আমার শাড়ি আর সায়া কোমরের কাছ থেকে টেনে টেনে উপরের দিকে উঠাতে শুরু করেছে ছেলেটা। যতই আমার নির্লোম পা দুটো ওর চোখের সামনে ধীরে ধীরে নগ্ন হচ্ছে ততই যেন ওর মুখে কামনার ভাবটা আরও তীব্র হয়ে উঠছে। কয়েক সেকন্ডও লাগলো না শাড়ি আর সায়াটা উপরে উঠে আমার নির্লোম ফর্সা থাইদুটোকে নগ্ন করে দিয়ে যোনীদেশের উপরে গিয়ে পৌঁছাল। আমার চুলহীন যোনীর বেদীতে আর থাইয়ের ভেতর দিকে বেশ কয়েকবার হাত বুলিয়েই এক লাফ দিয়ে খাট থেকে নেমে পড়ল। এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করল না। এক টানে নিজের সাদা ট্রাউজারটা খুলে নিচে নামিয়ে দিল। পরনে শুধু একটা সশ্তা আকাশে নীল রঙের জাঙ্গিয়া। জাঙ্গিয়াটা যে অনেক দিনের পুরনো সেটা এক নজরেই বোঝা যায়। অন্তর্বাসের এখানে ওখানে ছোট ছোট অনেক গুলো ফুটো। এখানে সেখানে নোংরা ছোপ দেখে বোঝা যায় যে অনেক দিন যাবত এই অন্তর্বাসটা ধোঁয়া হয়নি। জাঙ্গিয়ার ঠিক সামনেটা একটু ফুলে উঠেছে। একটা গোল ভেজা কালো ছোপ দেখে বোঝা যাচ্ছে যে দু-এক ফোঁটা প্রিকামের সমাবেশ হয়েছে ওখানে। একটানে সামনে ঝুঁকে নিজের অন্তর্বাসটা খুলে ফেলল ও। ও কি সত্যি আমাকে ;., করবে? ভেতরটা কেঁপে উঠলেও আমি অসহায়। ওর লিঙ্গটার গোঁড়ায় এক গুচ্ছ কালো লম্বা চুলের আবারন। ওর লিঙ্গটা পুরো পুরি শক্ত হয়ে উঠেছে। লিঙ্গটা খুব বেশী হলে পাঁচ ইঞ্চির মতন হবে, বা তার থেকে সামান্য ছোটও হতে পারে, আর খুবই সরু। বেশ একটা বাচ্চা ছেলের লিঙ্গের মতন দেখাচ্ছিল ওরটা। অন্য সময় হলে আমি হয়ত বলতাম এই জিনিস নিয়ে এত গর্ব তোমার? কিন্তু এখন কিছুই বলতে পারলাম না। বারণ করতে পারলাম না। ওর মুখে বেশ একটা গর্ব গর্ব ভাব ফুটে উঠেছে। বুঝলাম ও নিজের লিঙ্গের আকার আয়তন আর কাঠিন্য আর পৌরুষ নিয়ে বেশ গর্বিত। লিঙ্গের মুখটাকে নিজের আঙুল দিয়ে চেপে ধরে আরও কয়েক ফোঁটা প্রিকাম সেখান থেকে বের করে নিয়ে আঙুল দিয়ে সেগুল নিজের লিঙ্গের মুখের কাছে মাখিয়ে দিল। এক লাফে বিছানায় চড়ে আমার দুই নগ্ন পায়ের মাঝে বসে পড়ল। আমার পা দুটোকে শক্ত ভাবে ধরে আরও চওড়া ভাবে দুদিকে সরিয়ে নিল। শাড়ি আর সায়াটাকে কোমরের আরও উপরে উঠিয়ে দিল। ডান হাতের মধ্যাঙ্গুলিটা এক মুহূর্তে আমার যোনীদ্বারের ভেতরে ঢুকিয়ে দিল। আমার যোনীদ্বারের ভেতরটা বেশ শুঁকনো এখন। আমার শরীরে কোনও কামনার ভাবই জাগেনি এতক্ষনে। বরং ভয় ব্যাপারটা কামনা উঠতে দিচ্ছে না আমার রক্তে। কয়েকবার নিজের আঙুল দিয়ে আমার যোনী পথের ভেতরটা ঘষে ঘষে চওড়া করার চেষ্টা করল। যোনীর ভেতর থেকে নিজের আঙুলটা বের করে ওর সোঁদা আঙুলগুলো দিয়ে আমার বাম স্তনটাকে ভালো করে শক্ত ভাবে একবার ডলে দিল। ব্যথায় কুঁকড়ে গেলেও কিছু প্রকাশ করতে পারলাম না।
“তুমি জানো এই গোটা পথটা তুমি আমার বউ আর আমি তোমার বর? “ এক মুখ হাঁসি নিয়ে বলে চলল। “এখন সময় এসেছে আমার ডাক্তার গিন্নীর শরীরের ভেতরটা কেমন সেটা বুঝে দেখার। স্ত্রী তার স্বামীকে নিজের শরীর দিয়ে নিজের স্বামীর জৈবিক চাহিদা মেটাবে এতে আর নতুন কি?” উচ্চস্বরে একটা অট্টহাসি দিয়ে উঠল। নিজের শক্ত লিঙ্গটা আমার যোনীর মুখে চেপে ধরেছে ছেলেটা। আমি যেন ঠিক বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার চাহুনিতে বোধহয় একটা আতঙ্ক ফুটে উঠেছিল। সেটা দেখেই ও বলল “ ভেতরে আঙুল ঢুকিয়েই বুঝেছি এর আগেও তুমি অনেক বার শরীর দিয়েছ ছেলে বা ছেলেদের। হাঁহাঁ। এইবার নতুন বরকে দাও তোমার ইজ্জত। বিশ্বাস কর তোমার খুব ভালো লাগবে। আমি খুব ভালো করতে পারি। “ ব্যস, একটা জোড়ে ধাক্কা দিয়ে ওর ওই সরু আর ছোট শক্ত হয়ে থাকা লিঙ্গটা আমার যোনীদ্বারের মুখটাকে চিড়ে দিয়ে আমার ভেতরে প্রবেশ করল। একটু হাঁপ ধরা গলায় বলল “দেখবে সোনা আমি খুব ভালো করতে পারি। তোমার ভালো লাগবে।“ আমার ভেতরটা ভীষণ শুঁকনো এখনও। একটা সোঁদা ভাবে জাগলেও ভিজে ভাবটা ঠিক আসেনি। ও ঝুঁকে আমার শরীরের ওপর নিজের শরীরটা বিছিয়ে দিয়ে আমার মুখটা নিজের দুহাতের মধ্যে নিয়ে আমার ঠোঁটে নিজের নিজের ঠোটটা গুঁজে দিল। আমি ঘেন্নায় মুখ ঘোরাতে চাইছিলাম, কিন্তু পারলাম না। ও শক্ত ভাবে আমার মুখটাকে চেপে ধরে রেখে আমার ঠোঁটের রস চুষে নিচ্ছে নিজের মুখে। ওর সরু লিঙ্গটা ইতিমধ্য পুরোপুরি আমার শরীরের ভেতরে ঢুকে গেছে। ওর কোমরটা এখন ভেতর বাইরে করা শুরু করে দিয়েছে। বা হাতটা আমার মুখের ওপর থেকে সরিয়ে আমার ডান স্তনটা ভীষণ জোড়ে চেপে ধরল ও। কামনার সময় এমন শক্ত পেষণ হলে কেমন লাগত জানি না। কিন্তু এখন এই মুহূর্তে ভীষণ তীব্র ব্যথা হতে শুরু করে দিয়েছে আমার ডান স্তনের ওপর। খুব বেশী হলে দশ থেকে বারো বার নিজের লিঙ্গটা দিয়ে আমার ভেতরটা মন্থন করেই ও মন্থনের তীব্রতা আর গতিবেগ বাড়িয়ে দিল। ডান স্তনের ওপর নিজের হাতের নিষ্পেষণ বাড়িয়ে ফেলেছে। ঠোঁটের ওপর নিজের ঠোঁটের চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। খুব বেশী হলে আর বার পঞ্চাশেক বার আমাকে মন্থন করেই কাঁপতে কাঁপতে আমার একদম ভেতরে, মানে যতটা ভেতরে ওর লিঙ্গটা পৌঁছাতে পারে সেখানে লিঙ্গের মুখটাকে চেপে রেখে গলগল করে উগ্রে দিল নিজের ছোট থলির রস। খুব যন্ত্রণা পেলেও মনে মনে একটা ব্যাপার ভেবে না হেঁসে পারলাম না। খুব বেশী আশি থেকে নব্বই বার ভেতর-বাইরে করতে পেরেছে আর তার মধ্যেই ঢেলে দিয়েছে নিজের জৈবিক রস। কয়েক মিনিট ওর নিথর শরীরটা আমার শরীরের ওপর আলগা হয়ে পড়ে রইল। অবশেষে আমার শরীরের ওপর থেকে উঠে বসল। খাটের এক পাশে আমার ছেঁড়া লেগিন্স আর প্যানটিটা পড়ে ছিল। সেই জামা কাপড়ের ভেতর থেকে আমার ছেঁড়া প্যানটিটাকে হাতে নিয়ে আমার যোনীদেশের জায়গাটা ভালো করে মুছে দিল। ওর শরীর থেকে নির্গত কিছুটা রস এখনও আমার ভেতরে রয়ে গেছে সেটা বুঝতে পারছি, কিন্তু কিছু করার নেই। ও প্যানটিটা দিয়ে ভালো করে আমার কুঁচকিটাকে পরিষ্কার করে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াল। নিজের লিঙ্গটাকেও ভালো করে মুছে নিল। বীর্য উগ্রে দেবার পর ওর লিঙ্গটা এখন গুঁটিয়ে গেছে। খুব বেশী হলে তিন সেন্টিমিটার হবে এখন, আর, হ্যাঁ আরও সরু হয়ে গেছে। ওর মুখে একটা গর্ব আর বিজয়ের ভাব। “কি? বলেছিলাম না সে আমি মেয়েদের ভালো সুখ দিতে পারি? কেমন লাগলো? জানি ভালো লেগেছে তোমারও। পরে সময় আর সুযোগ পেলে আবার তোমাকে আদর করে সুখ দেব কমরেড। “ ও কয়েক সেকন্ডে আমার ব্লাউজের বোতামগুলো আঁটকে দিয়ে শাড়ির আঁচলটা আবার শরীরের উপর বিছিয়ে দিল। শরীরের নিচের ভাগেও শাড়ি আর সায়াটা ভালো ভাবে নামিয়ে আমার শরীরের নিম্নভাগ আর পা দুটো ঢেকে দিল। নিজের জামা কাপড় পরে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল ঘর থেকে। বেরোনোর আগে অবশ্য নিজের মোবাইলটা নিয়ে নিল। বুঝলাম কাউকে ডায়াল করছে। চোখের ভেতর থেকে আরও কয়েক ফোঁটা জল বেড়িয়ে এল আপনা থেকে। এই মুহূর্তে একটা ছেলে আমাকে ;., করে বেড়িয়ে গেল। জানি না এর পর আর কি কি অপেক্ষা করছে আমার জন্য। কেন যে এখানে আসতে গেলাম। *** মানে আমার প্রেমিক কি কোনও দিনও জানতে পারবে আমি কি বিপদের মধ্যে পড়েছি, আর এক্ষুনি একটা অচেনা ছেলে আমাকে ;., করে ফেলে রেখে দিয়ে গেল। আমার শরীরের খুব গভীরে জমা হয়ে আছে ওর শরীরের ঘন সাদা রস।
দশ মিনিট মতন পর দৌড়াতে দৌড়াতে মায়াকে নিয়ে এসে ঘরে ঢুকল। মায়া গিয়ে সেই সুতকেস টা খুলে একটা পায়জামা আর পাঞ্জাবি ওর দিকে ছুঁড়ে দিল। ও মায়ার চোখের সামনেই নির্লজ্জের মতন নিজের পরিধানের শার্ট আর প্যান্টটা খুলে পরিষ্কার পাঞ্জাবি আর পায়জামাটা পরে নিল। ও এখন আবার স্বামীর ভূমিকায় অভিনয় করবে। তাই এই সাবধানতা। আমার ছেঁড়া আর পরিত্যক্ত জিনিসগুলো আর বাকিদের ছেড়ে যাওয়া কাপড় গুলো সুটকেসের মধ্যে ঢুকিয়ে নিল দলা পাকিয়ে। ছেলেটার শার্ট প্যান্টও ভরে নিল। সুটকেস টা হাতে নিয়ে মায়া তাড়াহুড়া করে বেড়িয়ে গেল। ছেলেটা ওখানেই দাঁড়িয়ে রইল। নিজের হাত ব্যাগটা ঘরের কোণ থেকে তুলে নিয়ে সেটা খুলে একটা চিরুনি আর একটা ছোট আয়না বার করে ঘরের মাঝে দাঁড় করানো টেবিলে রেখে দিল। ব্যাগটা বিছানায় রেখে চিরুনিটা দিয়ে নিজের চুলটা একটু ঠিক করে নিল। ততক্ষণে মায়া আবার দৌড়াতে দৌড়াতে ফিরে এসেছে। “গাড়ি এসে গেছে। ওকে তুলতে হবে।“ দুজনে মিলে আমাকে উঠিয়ে বসিয়ে মায়া আমার চুল আঁচড়ে দিল। আরেকবার আমার সিঁথিতে ঘন ভাবে সিঁদুর পরিয়ে দিল। ব্যস। দুজনে মিলে আমার অসাড় শরীরটাকে নিয়ে বেড়িয়ে এল ঘর থেকে। আমি ভেতরে ভেতরে বাঁধা দেওয়ার প্রচণ্ড চেষ্টা করলেও কিছুই করতে পারলাম না। বাড়ির নিচে নিয়ে এল আমাকে ধরাধরি করে। দেখলাম একটা বড় টাটা সুমো দাঁড়িয়ে রয়েছে বাড়ির দালানে। রত্নাদি তড়িঘড়ি করে আমার হ্যান্ড ব্যাগ আর আমার বড় ব্যাগটাকে গাড়ির পিছনে ওঠাচ্ছেন। ড্রাইভার হল সকালের ছেলেটাই। রমা কে কোথাও দেখতে পেলাম না। রত্নাদি এক দৌড়ে চলে গেলেন ভেতরে। সব কটা ঘরে তালা মেরে বেড়িয়ে এলেন। আমাকে ধরাধরি করে গাড়িতে উঠিয়ে দিল। আমার অভিনেতা বর গাড়িতে উঠে আমার পাশে বসে আমাকে জড়িয়ে ধরল, যেন আমার অসুস্থ শরীরটাকে নিজের হাত দিয়ে আগলে রাখতে চাইছেন। আদিখ্যেতা। আমার আরেক পাশে চড়ে বসলেন রত্নাদি। ড্রাইভারের পাশের সিটে চড়ে বসল মায়া। গাড়ি ছেড়ে দিল। বাড়ির বাইরে গিয়েই বিশাল বাড়ির সদর দরজায় তালা মেরে ফিরে এল ড্রাইভার ছোকরাটা। গাড়ি অজানার পথে ছুটে চলল। আমার চোখ আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে গেল। কতক্ষণ এক নাগাড়ে গাড়ি চলল জানি না। গাড়িটা হঠাত থেমে যাওয়ায় চোখ খুলে গেল আপনা থেকেই। দেখলাম সুমো র পেছনের দরজাটা খুলে রমা উঠে বসল। গাড়ি আবার দৌড়াতে শুরু করল। রমা বলল “আলি দা ঝুপড়ীর মোড়ে পৌঁছাবে দু ঘণ্টা পরে। ওখানে পৌঁছাতে পারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। “ মায়া সবাইকে সতর্ক করে দিল “ যাই হোক না কেন কেউ বন্দুক বের করবে না নেহাত প্রয়োজন না হলে।“ রমা বলল “ খবর পেলাম ওই মেয়েটা ক্যাম্পে পৌঁছে গেছে। এখন বেহুঁশ। “ আমার মাথায় পেছন থেকে হাত বুলিয়ে বলল “ ঘুমিয়ে পড়ো বন্ধু। সময়ে তুলে দেব।“ চোখ আবার বুজেই গেছিল। চেতনা থাকলেও, ধীরে ধীরে ওদের কথা বার্তা আর যেন কানে শুনতে পেলাম না।
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
পাঁচ
রাস্তায় আর কোনও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার ঘটেনি। ঘুম ভাঙল যখন, তখন দেখলাম গাড়িটা বড় রাস্তা ছেড়ে একটা কাঁচা রাস্তা ধরেছে। ঘুম ভাঙলেও শরীরটা সেই আগের মতই অসাড় হয়ে রয়েছে। গাড়িটা এক জায়গায় গিয়ে একটা বড় মাঠের পাশে গিয়ে দাঁড়াল। আমার পাশ থেকে ছেলেটা নেমে মুখ দিয়ে একটা অদ্ভুত আওয়াজ বের করল। কয়েক মুহূর্ত পর আবার ওই দিক থেকে সেই রকমই একটা অদ্ভুত শব্দ এল। ছেলেটা আবার একটা অদ্ভুত শব্দ করল। ওই দিক থেকেও আবার ওর সংকেতের উত্তর। রাস্তার ধারের একটা গাছের নিচ থেকে বেড়িয়ে এল খয়েরি জামা প্যান্ট পরিহিত একজন মাঝ বয়সী লোক। মায়া আরেকটু ভেতর দিকে সরে বসল। লোকটা গাড়ির সামনের সিটেই উঠে বসল। লোকটার শরীর স্বাস্থ্য বেশ সুঠাম। মুখে এক গাল কাঁচা পাকা দাঁড়ি, মনে হয় অনেক দিন শেভ করেননি। গাড়ি ছেড়ে দিল। আমার পাশে বসে থাকা ছেলেটা বলল “ একটু ঘুমিয়েছে, কিন্তু এখন আবার সেন্স ফিরে এসেছে।“ সামনে থেকে শুধু একটা গম্ভীর “হুমম” মতন শব্দ এলো। আরও এক ঘণ্টা মতন চলার পর আমরা একটা বস্তি মতন জায়গায় এসে পৌঁছালাম। গাড়ির শব্দ শুনে অনেক গুলো মেয়ে দেখলাম ঘর থেকে বেড়িয়ে এসেছে। এখানে বৈদ্যুতিক আলো নেই। আমরা যখন পৌঁছেছি তখনও অন্ধকার নয় নি, কিন্তু আকাশ কালো হয়ে এসেছে। চোখ ঘুরিয়ে দেখলাম অধিকাংশই মেয়ে। শুধু সাত আঁটটা অল্পবয়সী ছেলে, মানে বয়স আঠারো উনিশ হবে। আর আরও গুঁটি কয়েক লোক যারা হয় মাঝ বয়সী বা বয়স তার থেকে একটু বেশী। একজন লোককে দেখে মনে হল সেই লিডার। ওর বয়স চল্লিশের সামান্য ওপরে। আমাকে নিয়ে পৌঁছানোর সাথে সাথে বেশ কয়েকটা মেয়ে আর কয়েকটা অল্প বয়সী ছেলে এগিয়ে এলো গাড়ির দিকে। আমাকে ধরাধরি করে নিচে নামিয়ে একটা কুঁড়ে ঘরের ভেতর নিয়ে গেল। আমার ব্যগ দুটো নিয়ে ওরা কি করল সেটা বলতে পারব না। ঘরের ভেতরটা অন্ধকার। একটা ছোট টেবিল আছে আর তার পাশে একটা চেয়ার। দুটোই যে শস্তা কাঠের সেটা বেশ বুঝতে পারলাম। টেবিলের উপর একটা লম্বা মোমবাতি জ্বলছে। আমাকে রেখে দিয়ে ওরা ঘর খালি করে বেড়িয়ে গেল। আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। মানসিক ক্লান্তি শরীরের ক্লান্তির থেকে অনেক বেশী কাজ করে। আমি বুঝতে পেরেছি যে আমি বাজে ভাবে ফেঁসে গেছি। এরা কি আতঙ্কবাদী না কি অন্য কিছু। যাই হোক না কেন টোপ ফেলে আমাকে এখানে নিয়ে আসার কারণ কি? কিছুই বুঝতে পারলাম না। ঘুমে আমার কান্না ভেজা চোখ বুজে গেল।
প্রথমেই চোখ খুলে ঠাহর করতে পারলাম না যে কোথায় আছি। চারপাশটা অন্ধকার লাগলো খুব। তারপর ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম যে আমার দিকে ঝুঁকে পড়ে এক জন মাঝ বয়সী মহিলা দাঁড়িয়ে আছেন। সকালে মায়াকে যেমন দেখেছিলাম, এর পোশাকও ঠিক তেমনই। ভেতরে ব্লাউজ বা অন্তর্বাসের কোনও চিহ্ন নেই। হাঁটু অব্দি শাড়ি। মোমবাতি এখনও জ্বলছে। জানি না কতক্ষণ ঘুমিয়েছি। ধড়মড় করে উঠে বসলাম। কিন্তু না এখন শরীর নাড়াতে পারলেও জোর খুব কম। মহিলাটি যেন আমার দুর্বলতার কথা জানে। আমাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে শুইয়ে দিল। “খাবার আনছি। একটু খেয়ে নাও।“ ও চলে যাবার আগেই আমি প্রশ্নটা করে বসলাম “আমাকে এখানে নিয়ে আসা হল কেন? আমি কি করেছি? আর তোমরা ঠিক কে? “ ও কোনও উত্তর না দিয়েই বেড়িয়ে গেল। আমি ক্লান্ত শরীরটা নিয়ে পড়ে রইলাম বিছানায়। একবার ইচ্ছে হল উঠে গিয়ে দেখি বাইরে কি হচ্ছে, কারণ বাইরে থেকে অনেক হাঁসি আর জোরালো গলার শব্দ পাচ্ছি। কিন্তু উঠতে পারলাম না। বুঝতে পারছি ওষুধের আবেশ এখনও আমাকে ঘিরে রেখেছে। মহিলা কিছুক্ষণ পরে ফিরে এল। আমাকে ধরে উঠিয়ে বসাল। ওর ছোঁয়ায় বেশ একটা স্নেহের ছোঁয়া ছিল। আমি ওর নগ্ন কাঁধের ওপর নিজের পিঠের ভার ছেড়ে দিলাম। হাতটা মুখের সামনে আসতেই মুখ আপনা থেকে হাঁ হয়ে গেল। আমার মুখে কি যেন একটা দিয়ে দিল। আলু সিদ্ধ ডাল আর ভাত একসাথে মাখিয়ে ডলা পাকিয়ে পাকিয়ে আমাকে খাওয়াচ্ছিল। বোধহয় কিছুটা লঙ্কাও ডলেছে তাতে। ঝাল ঝাল একটা স্বাদ পাচ্ছি জিভে। খাওয়ানো শেষ করে থালাটা টেবিলে রেখে আমার কাছে ফিরে এসে আমার হাত ধরে আমাকে দাঁড় করিয়ে বাইরে নিয়ে গেল। বাইরে একটা জটলা আর সেখানে না জানি কি হচ্ছে। উচ্চ স্বরে মহিলা আর পুরুষদের গলার শব্দ আসছে ওখান থেকে। আমরা কিন্তু ওই দিকে গেলাম না। চলে গেলাম বাড়ির পেছন দিকে। একটা কল ছিল। সেটাকে পাম্প করে আমাকে ইশারা করল জলে মুখ ধুয়ে নিতে। আমিও সেই মতন করলাম। সামান্য একটু দূরে একটা জায়গা দেখিয়ে বলল “ওইখানে গিয়ে টয়লেট করে নাও। রাত্রে আর বেরোতে পারবে না। আর ভুলেও পালানোর চেষ্টা করবে না।“ শেষের কথাটা না বললেও চলত। আমার শরীরে এমন শক্তি নেই যে এখন এই অচেনা জায়গা থেকে পালিয়ে যেতে পারব। আর আমার কাছে কোনও টাকা পয়সা নেই। পালিয়ে যাবই বা কোথায়! ওর থেকে একটু দূরে গিয়ে ফাঁকা অন্ধকার জায়গা দেখে হাঁটু মুড়ে মাটিতে বসে শাড়ি আর সায়া কোমরের ওপর উঠিয়ে নিলাম। সারা দিনের জমা জল বেড়িয়ে গেল শরীরের থেকে। শেষ হওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই খেয়াল করলাম যোনীদেশ ধোয়ার জল নেই। বুঝলাম এখানে জল না থাকায় এরা কেউ ধোয় না নিজেদের গোপন জায়গাগুলো। আর সেটাই অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। আমি ফিরে এলাম ওর কাছে শাড়ি ঠিক করতে করতে। মাঠে ঘাঁটে সাপ খোপ নেই তো? এখন কি শেষ মেষ সাপের কামড় খেয়ে জীবন দিতে হবে? ও আমাকে নিয়ে আবার ফিরে গেল সেই ঘরটাতে। “শুয়ে পড়ো। কাল সকাল সকাল উঠতে হবে। অনেক কাজ এখানে। রাত্রে টয়লেট যাবার দরকার পড়লে কিছু করার নেই। ওইখানেই করে নিও। কিছু করার নেই।“ আমাকে মাটির ঘরের একটা কোণের দিকে ইঙ্গিত করে দিল। আমি গিয়ে শুয়ে পড়তেই ও মোমবাতিটা নিভিয়ে দিয়ে চলে গেল। যাওয়ার আগে দরজা বন্ধ করে দিল। শব্দ শুনে মনে হল যে বাইরে থেকে তালা মেরে দিয়ে চলে গেছে।
না সেই রাত্রে আর আমার ঘুম ভাঙেনি। ঘুম ভাঙল একদম কাক ডাকা ভোরে। তবে কাকের ডাকে আমার ঘুম ভাঙেনি, ঘুম ভেঙ্গেছে কালকের রাতে দেখা সেই মহিলার ঠ্যালা খেয়ে। “উঠে পড়ো, বেলা হয়ে গেছে। হাত ঘড়ির দিকে চোখ ফেরাতে দেখলাম ঘড়িটা হাতে নেই। “ মিন মিন করে জিজ্ঞেস করলাম “কটা বাজে?” বলল “ সাড়ে পাঁচ। চলো মুখ ধুয়ে নাও। আমারই ব্যাগ থেকে আমার ব্রাশ আর নিয়ে এসেছে। টেবিলের ওপর রেখে দিয়ে চলে গেল। আজ দিনের আলোয় নেশাহীন অবস্থায় ভালো করে মহিলা কে দেখলাম। বয়স ছত্রিশ সাইত্রিশ হবে। তার থেকে খুব বেশী হতেই পারে না। শরীরের গঠন বেশ লোভনীয়। এখনও ব্লাউজ পরে নি। আলোয় বুঝতে পারলাম শরীরের নিচের ভাগেও শাড়ির নিচে আর কিছু নেই। আমি বুঝতে পারলাম এরকম পরিবেশে বিদ্রোহী হয়ে তেমন কোনও লাভ নেই। সুযোগ বুঝে কোপ মারতে হবে। এখনই পালানোর চেষ্টা করলে সেটা হবে ছেলেমানুষী। আমি ব্রাশে পেস্ট মাখিয়ে বেড়িয়ে এলাম। বাইরে বেড়িয়ে এসে দেখলাম অনেক মেয়ে আর কালকের দেখা ছেলেগুলো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কেউ দাঁতন করছে, কেউ বা ব্রাশ করছে। সবার চেহারাতেই একটা শিক্ষার ছাপ স্পষ্ট। অথচ আশ্চর্য এই যে এরা এখানে কি করছে সেটা বুঝতে পারছি না। সেই মহিলা আমার আগে আগেই চলেছে সেই কল পাড়ের দিকে। খেয়াল করে দেখলাম কোনও মেয়ের গায়েই ব্লাউজ বা অন্তর্বাসের চিহ্ন নেই। অনেকে তো এমন পাতলা শাড়ি পরেছে যে ওদের যৌন কেশের আভাসও বোঝা যাচ্ছে শাড়ির বাইরে থেকে। এখানে থাকতে হলে আমাকেও বোধহয় এমন ভাবেই থাকতে হবে এরপর থেকে। কিন্তু পালাতে হলে পালাব কি করে? কিছু দিন আগে একটা সিনেমা দেখেছিলাম। তাতে জার্মানির ক্যাম্প থেকে এক যুদ্ধ বন্দীর পালানোর ঘটনা আছে, মানে সেটা নিয়েই গল্প। মনে পড়ে গেল যে কোথাও থেকে পালাতে হলে প্রথমেই এখানেকার ভূগোলটা বুঝে ফেলতে হবে। চোখ কান খোলা রাখতে হবে। আর সবার আগে কিছু টাকার ব্যবস্থা করতে হবে। আর তারও আগে বুঝতে হবে এরা কারা আর আমার কাছ থেকে এরা কি চায়। আর সেই সাথে বিশ্বস্ত হয়ে উঠতে হবে এদের লিডারের কাছে। একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার বুঝতে পারছি, কিন্তু এছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। আর একবার পালিয়ে যেতে পারলে পুলিশ ডেকে এনে সব কটাকে যদি না খুন করিয়েছি তো আমার নাম বদলে দেব। অন্তত জেলের ঘানি তো টানাবোই টানাবো। নইলে শান্তিতে মরতেও পারব না। নির্লজ্জের মতন সবার সামনে দাঁতে ব্রাশ ঘষতে ঘষতে এগিয়ে গেলাম কলের দিকে। ওখানেও অনেক ভিড়। অনেকেই আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। তবে তেমন ভাবে তাকিয়ে দেখার মতন ভাব নেই কারোর মধ্যে। একজন নতুন প্রাণী এখানে এসেছে, ব্যস এই যা। আমি কলের কাছে এগিয়ে যেতেই সবাই কলের সামনে থেকে সরে দাঁড়াল। একজন এগিয়ে এসে পাম্প করা শুরু করল। আমি মুখ ধুয়ে ওখান থেকে সরে পড়লাম। প্রাতকৃত্য করার প্রয়োজন, কিন্তু কোথায় যাই। ওই মহিলা দেখলাম ঘরে ফিরে এসেছে। আমি যখন চারপাশের মেয়েদের দেখতে ব্যস্ত ছিলাম তখন উনি কোথায় যেন চলে গিয়েছিল। এখন আবার ফিরে এসেছে। আমার অবস্থা বোধহয় বুঝেই আমাকে বলল “ওইটা নিয়ে মাঠে চলে যাও। বেশীক্ষণ লাগিও না। অরূপদা অপেক্ষা করছে।“ কিছুই করার নেই। মগটা নিয়ে আবার এগিয়ে গেলাম কলের দিকে। আবারও একজন মগের ভেতর জল ভরে দিল আমার। বেশ বড় মগ। আমি এগিয়ে গেলাম মাঠের দিকে। একটু দূরে দূরে অনেকগুলো মেয়ে আর দু একটা ছেলেও এসেছে তখন। ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছে ভেতর ভেতর। কিন্তু আর কিছু করার নেই। একটা ছেলে আর একটা মেয়ের মাঝখানে গিয়ে শাড়ি আর সায়া তুলে বসে পড়লাম। কারোর মুখে কোনও কথা নেই। কাজ শেষ করে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফিরে এলাম ঘরে। এখন অপেক্ষা করার ছাড়া গতি নেই। একটু পরে সেই মহিলা আবার ফিরে এল। হেঁসে বলল “ফ্রেশ হয়ে গেছ?” এও ইংরেজি ঝাড়ছে দেখে আরও আশ্চর্য হয়ে গেলাম। মাথা নাড়িয়ে বোঝালাম হ্যাঁ। “আমার নাম মিনতি।“ বলল আমাকে। আমি বললাম “রুমি।“ ও হেঁসে বলল “নাইস তো মিট ইউ রুমি মাই ফ্রেন্ড। এসো আমার সাথে। বিশ্বাস করো, এখানে থাকতে খারাপ লাগবে না।“ শালা একবার বেরোই তোমাদের মজা দেখাচ্ছি। কিন্তু ভাবখানা করে রাখলাম যেন আমি ভীষণ ঘাবড়ে রয়েছি, মানে ভয়ে কাঁপছি রীতিমত। ভয় যে ছিলই সেটা আর নতুন করে কি বলব। তবে একটা জিনিস বুঝলাম পালের গোদার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি, সুতরাং কালকে আমার ;.,ের কথাটা ওর সামনে ভালো করে খুলে বলব। ওই আধা ডাক্তারের চাকরিটা আজই খাবো আমি।
আরেকটা কুঁড়ে ঘরের মধ্যে আমাকে নিয়ে গেল। ঘরের জানলা দরজা সব খোলা। ছোট ঘর। একটা আধ ভাঙ্গা কাঠের টেবিল আর দুটো চেয়ার। একটা জলের কুঁজো। অরূপদা কে দেখলাম। এ হল সেই কাল দেখা লিডার। চেয়ারে একটা মেয়ে বসেছিল আমার মতন পোশাকে। দেখে বুঝলাম ও নিজেও খুব ঘাবড়ে আছে এই নতুন পরিস্থিতিতে। আমার সাথে একবার শুধু চোখাচুখি হল মেয়েটার। ও মুখ ঘুরিয়ে নিল। অরূপদা বিছানায় বসেছিল। আমাকে দেখে উঠে দাঁড়াল। ইশারায় বসতে বলল চেয়ারে। মিনতি কে ইশারায় ঘর থেকে চলে যেতে বলল। আমি বসতেই উঠে এসে আমার সাথে হাত মিলিয়ে বলল “ওয়েলকাম তো আওয়ার ক্যাম্প।“ আমি কিছু বলে ওঠার আগেই আমার পাশে বসা মেয়েটি বলে উঠলো “আপনার কি উগ্রপন্থী, আতঙ্কবাদী না অন্য কিছু?” আমি ওর কথার খেই ধরে নিয়ে বললাম “না কি নকশাল? আর আমাকে এখানে ধরে আনার কি মানে? আপনার কোন পাকা ধানে আমি মই দিয়েছি। ” অরূপদা একটু হেঁসে বলল “সব কথা খুলে বলার জন্যই তোমাদের এখানে ডেকে এনেছি। তবে তার আগে একটা কথা বলে দি। সেটা হল আমার পরিচয়। আমার নাম অরূপ সান্যাল। * ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করেছি, মাস্টার্স করেছি। পরে পি এইচ ডি ও করেছি। তবে যাক সে কথা। এই ক্যাম্পটার দখলে আমি। আমাদের আরও অনেক গুলো শাখা আছে। হ্যাঁ, আমাকে সবাই অরূপদা বলে ডাকে। তবে নিয়ম হল আমাকে আপনি করে বলতে পারবে না তোমরা কেউ। এইবার আসি তোমাদের প্রশ্নের উত্তরে।“ একটু থেমে উঠে গিয়ে একটা গ্লাস নিয়ে গিয়ে কুঁজো থেকে জল নিয়ে গলায় ঢেলে নিল। ও নিজে না বললেও আমি আর এখানে কাউকে আপনি সম্বোধন করতে পারব না, কারণ ভেতর থেকে আসবে না। গ্লাসটা কুঁজোর ওপরেই উল্টো করে রেখে দিয়ে ফিরে এল বিছানায়। পদ্মাসনে উঠে বসল বিছানার ওপর। ওপরের দিকে তাকিয়ে কি যেন একটা ভেবে নিল, তারপর শুরু করল নিজের কথা। এখানে বলে রাখি এই সব আঁতেলদের আমি একফোঁটা সহ্য করতে পারি না। পৃথিবীর কোনও লিডার, ধর্মগুরু বা সত্যিকারের ইন্টলেকটুয়াল আঁতেল হয় বলে দেখিনি। তবে আজকের দিনে এই সব আঁতেলদেরই অনেক শিক্ষিত যুবক যুবতীরা মাথায় তুলে রেখেছে। আমার ক্ষমতা থাকলে এদের পেছনে এক লাথি মেরে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দিতাম। এদের একটা সাধারণ জিনিস হল এই যে এরা অনেকক্ষণ ধরে ভেবে ভেবে কমন সেন্স মার্কা কিছু কথা বলবে আর চিবিয়ে চিবিয়ে বলবে। মাঝে মাঝে এক রাশ নিঃশ্বাস জুড়ে দেবে, ভাব খানা এমন যে আত্মমন্থন করে কথা গুলো পেট থেকে বের করে আনছে। এদের সবটাই আমার নাটক বলে মনে হয়। এদের চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলার স্টাইল দেখলে মাঝে মাঝে মনে হয় যে পিছনে গিয়ে ছয় কি সাতটা হামানদিস্তার বাড়ি মারি, এক দফায় সব কথাগুলো এদের পেট থেকে বেড়িয়ে আসবে, সামনে বসে যে বা যারা শুনছে অন্তত তাদের এই আতলেমি সহ্য করতে হবে না। এর ক্ষেত্রেও দেখলাম এর কোনও ব্যতিক্রম হল না।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ও শুরু করল নিজের ভাষণ “ হ্যাঁ তোমরা ঠিকই বলেছ, আমি আর আমরা এখানে যারা আছি তাড়া উগ্রপন্থী। যেমন আগে বললাম আমাদের অনেক শাখা আছে। তবে আমরা নকশাল নই। ওদের সাথে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের সাথেও সম্পর্ক রাখি না। আমরা ওপেন রিলেশনে বিশ্বাস করি। সে যাই হোক না কেন মানসিক বা শারীরিক। তবে জোর খাটানো পছন্দ করি না মোটেই। “ আমি জানি এই লেখাগুলো পড়তে কারোর কয়েক সেকন্ডের বেশী লাগতে পারে না। কিন্তু এই মহান লিডার এই কথাগুলো চিবিয়ে চিবিয়ে বলতে সময় নিল প্রায় দশ মিনিট। মাঝে মাঝেই সবার চিন্তায় উনি কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিলেন। ন্যাকা। লোকটা সুবিধের নয় সেটা প্রথম আলাপেই আমার মনে হল। এর প্রিয়ভাজন হয়ে উঠতে হবে। তবে, একে নজরে নজরে রাখতে হবে। ও আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই আমি ফস করে বলে বসলাম “ আপনি, সরি তুমি বলছিলে যে তোমরা জোর করে কিছু করো না, কিন্তু কাল আমার সচেতন অসাড় শরীরটাকে এখানে নিয়ে আসার আগে তোমাদের ওই মাঝ পথে পড়াশুনা ছেড়ে দেওয়া আধা ডাক্তারটা আমাকে ;., করেছে। সেটার জন্য তার কি শাস্তি হবে আমি জানতে চাই।“ অরূপ কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে যোগীর মতন চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকলো। তারপর হেঁসে বলল “ না ও করতে পারে না। ওকে আমি অনেক দিন থেকে চিনি। ও শুধু তোমাকে পরীক্ষা করে দেখেছে যে তুমি ভারজিন কি না। ব্যস আর কিছু নয়। সেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমার কিছু ভুল হয়েছে। ও যে তোমাকে পরীক্ষা করেছে সেটা ও নিজের মুখেই কাল রাত্রেই আমাকে স্বীকার করে গেছে। আর ...” একটু থেমে একই রকম হাঁসি মুখে বলল “ আর ও বলেছে তুমি ভারজিন নও। আর ওর ধারণা তুমি এর আগে অনেকবার পুরুষ বা পুরুষদের সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়েছ। “ আমার কানগুলো গরম হয়ে গেল। আমার পাশে বসে থাকা মেয়েটার মধ্যে কোনও বিকার লক্ষ্য করলাম না। “ভার্জিন কি না সেটা চেক করার একটাই কারণ। যদি তুমি সত্যিই কোনও দিন মন আর শরীর দিয়ে আমাদের কমরেড হয়ে উঠতে পারো তো বুঝতে পারবে যে আমাদের কিছু কাজে মেয়েদের শরীরের সাহায্য নিতে হয়। সব কিছু বল প্রয়োগ করে হয় না, বা বলা ভালো যে সেফ ও নয়।” অরূপ চুপ করার কয়েক সেকন্ড পর মেয়েটা বলে উঠলো “ তার মানে আপনি বলতে চান যে একটা মেয়ে ওই হেভি সিডেটিভের কারণে বুঝতে পারবে না যে সে রেপড হচ্ছে কি না?” হেঁসে উঠলো জোড়ে। “আমি তা বলি নি, কিন্তু ও তার আগে ড্রিঙ্ক করেছে গাঁজা টেনেছে। তাই ওর হ্যালুসিনেসন হওয়াটা আশ্চর্য কিছু নয়।“ মেয়েটা অরুপের এই উত্তরে আরও জোড়ে হেঁসে বলে উঠলো “ হ্যালুসিনেসন কাকে বলে জানা আছে? * ইউনিভার্সিটিতে কি ডাক্তারি পড়ানো হয়? এই লোকগুলোকে মুরগি বানিয়ে রেখে দিয়েছেন সেটা বুঝতে পারছি, আর এখন আমাদের ব্রেন অয়াশ চলছে। ভালো। ব্রেন থাকলে সেটা অয়াশ করা এতটা সোজা হবে না সেটা আগেই বলে রাখছি। রেপ করতে পারেন, কিন্তু মাথা ঘোরাতে পারবেন না।“ কাল আমি যে কটা জিনিস লক্ষ্য করেছিলাম দেখলাম মেয়েটা বোকার মতন আগ বাড়িয়ে সেইগুলো জিজ্ঞেস করে বসল। “ বাই দা ওয়ে, এখানে অধিকাংশ মেয়েদের পেটে স্ট্রেচ মার্ক দেখছি। কেন? সতের বছরের একটা মেয়ের পেটেও দেখেছি। একটু যদি খুলে বলেন তাহলে খুশি হব।“ একটু সুযোগ পেলে আমি হয়ত ওকে থামিয়ে দিতাম। কারণ কিছু জিনিস নিজেরা খুজে বার করলে বেশী ভালো হয়। কিন্তু যখন প্রশ্নটা ও করেই দিয়েছে তখন আর কিছুই করার নেই। কান খাড়া করে রইলাম উত্তরের প্রত্যাশায়। উত্তর এলো আর সেটা এতটাই খেলো আর শস্তা যে কি বলব। লোকটা যে একটা ভণ্ড সেটা বুঝতে আর বাকি রইল না। * ইউনিভার্সিটির ডিগ্রী সত্যি আছে কিনা সেটা একবার হলেও দেখার কৌতূহল আমাকে পেয়ে বসেছে। অবশ্য এখন চাইলে আমি স্থির জানি যে কিছু একটা দেখিয়ে দেবে। তবে সেটা জাল না আসল সেটা জানতে হবে সুনিশ্চিত ভাবে।
অরূপ আবার উপরের দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে বসে রইল। আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু এইবার আমি একটা কথা মুখ ফস্কে না বলে পারলাম না। “একটা কথা বলব? তুমি করেই বলছি কারন সেটাই তোমার নির্দেশ। এত থেমে থেমে আঁতেলদের মতন কথা আমার ঠিক পছন্দ নয়। তুমি যে আকাশ থেকে কথা পেড়ে আনছ না সেটা কমন সেন্স। সোজা কথা সোজা ভাবেই বলে দাও। এই ধ্যাস্টামি গুলো বাঁচিয়ে রাখো অন্য দের জন্য। যাদের তুমি ব্রেন অয়াশ করে ফেলেছ ইতিমধ্যে। টেবিলের ওপর বিবেকানন্দের বই দেখছি। লোকটা আদৌ তোমার মতন আঁতেল ছিলেন না। অল্প কথায় না ভেবে ঝেড়ে ফেলো। মনে ধরলে তাতেই ধরবে আর তা না হলে পুরোটাই অন্তত আমার কানে নাটকের মতন শোনাবে। বেসিকালি এই চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলাটা আমি সহ্য করতে পারি না।“ শেষের কথাগুলো বললাম বেশ জোড়ে আর চিবিয়ে চিবিয়ে যাতে ওর আঁতে ভালো মতন ঘা দেওয়া যায়। ও কিছু একটা উত্তর দিত কিন্তু দিতে পারল না। ওর মুখে অবশ্য হাঁসিটা এখনও লেগে আছে। এটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্রেন অয়াশ করার ক্ষেত্রে কাজ করে। মুখ থেকে হাঁসি মিলিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। সাইকোলজির শেষ নির্দেশ। কিন্তু ওর উত্তর আর আমাদের শোনা হল না। কারণ বাইরে কি একটা চেঁচামেচি শুনেই ও উঠে পড়ল আর সেই সাথে আমরাও। একটা ছেলে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল “সুজাতা দিদি ফিরেছে। গুলি খেয়েছে। পেটে একটা আর পিঠে একটা।“ আমি আমার পাশে বসা মেয়েটার দিকে একবার তাকালাম। ও নিজেও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। জীবনে কোনও দিন গুলি বার করি নি। কোনও কথা না বলে আমরা দুজনেই উঠে দাঁড়ালাম। অরুপের পিছন পিছন ছুটলাম সাম সুজাতার শরীর পরীক্ষা করতে। অন্তর্বাস না থাকায় দুজনেরই ভারী অংশগুলো অশ্লীল ভাবে লাফাচ্ছিল , কিন্তু সে দিকে খেয়াল করার মতন সময় আর এখন নেই আমাদের হাতে। ছুটতে ছুটতেই আমি মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম “তুমিও কি ডাক্তার?” বলল “আমার নাম অদিতি। আমি “anesthetist”। তুমি?” ছুটতে ছুটতেই বললাম “গাইনো। তবে ছেলেদের কিছু চিকিৎসাও আমি করেছি, অন্তত ডিগ্রী আছে। তবে কোনও দিন গুলি...” কথা শেষ হবার আগেই একটা খোলা জায়গায় গিয়ে পৌঁছালাম। অরূপ আমাদের অনেক আগেই পৌঁছে গেছে। আমাদের থেকে অনেক বেশী স্পীডে দৌড়ায় আর সেটাই স্বাভাবিক। সুজাতা নামক মেয়েটিকে সবাই ঘিরে রেখেছে। আমার কালকের রেপিস্ট মাটিতে বসে ওর নাড়ি পরীক্ষা করছে। কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু আমাকে আর অদিতিকে দেখেই থেমে গেল। বলল “এই জাক্তার এসে গেছে। আসল ডাক্তার আর পুরো পুরি ডাক্তার। এরাই দেখুক।“ উঠে গেল। অরূপ বলল “ সব ব্যবস্থা আছে। তবে ওষুধ খুব বেশী নেই।“ আমি একটু পরীক্ষা করে উঠে দাঁড়িয়ে বললাম “এখানে কোনও আর্মি ক্যাম্প নেই? বা সার্জেন? আমি সার্জারি করি বটে তবে এই জিনিস আগে কখনও করি নি। “ আমাকে সুজাতা বলল “চিন্তা নেই অনেক দিন আগেই মরতাম, এতদিন অরূপদা বাঁচিয়ে রেখেছিল। মরলে ক্ষতি নেই। তবে একজন কমরেডের হাতে মরব এই যা শান্তি। আর্মি আমাকে দেখলে এমনি মেরে ফেলবে। ওদের দোষ দি না। বুর্জোয়া সমাজটাই আমাদের শ্ত্রু। “ এরা কি সত্যি এই ভণ্ডটাকে এত বিশ্বাস করে। হয় আমার বোঝার ভুল বা লোকটা সত্যি একটা বিরল লোক। বললাম “অপারেট করতে হবে।“ অরূপ প্রায় চেঁচিয়ে উঠল “হ্যাঁ হ্যাঁ। তবে তাই করে ফেলো। ওকে নিয়ে আয় তোরা সবাই।“ এটাও একটা আতলেমির লক্ষণ। সবাই কে বয়স, স্থান কাল পাত্র বিচার না করে “তুই তুই” করে সম্বোধন করা। এটাও নাকি ইন্টেলেক্ট প্রদর্শন করার একটা চিহ্ন। চারপাশে চোখ ঘুরিয়ে দেখলাম কয়েকজন মহিলার বয়স ওনার থেকেও বেশী। যদিও বেশ সুঠাম ওদের স্বাস্থ্য। তবে বয়স ব্যাপারটা একটা সময়ের পর ঢেকে রাখা যায় না, অন্তত মেয়েদের ক্ষেত্রে।
সত্যি সিডেটিভ ড্রাগ খুব কম আছে এখানে। কিন্তু দেখলাম অদিতি অদ্ভুত নৈপুণ্যের সাথে ঠিক যেটুকু দরকার ততটুকু দিয়ে ব্যাপারটা ম্যানেজ করে নিল। আধুনিক হাসপাতালের ওটি তে যেসব সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় তার কিছুই নেই এখানে। তবু আমাদের দুজনকে লড়তে হবে এই মেয়েটার জন্য। সুজাতা অজ্ঞানও হল না। কিন্তু ঝিমিয়ে গেল। কোনও দিন গুলি বের না করলেও কাটা ছেঁড়া শুরু করে দিলাম। সময় খুব কম। অদ্ভুত মনের জোর মেয়েটার। মাঝে মাঝে চিৎকার করছিল বটে, কিন্তু বেঁচে গেল। আগের দিনে জ্ঞান থাকা অবস্থাতেই হাত পা চেপে ধরে শল্য চিকিৎসা করা হত। আজ তাই করতে হল। এ কোন সেঞ্চুরি তে পড়লাম রে বাবা। কিন্তু অদিতির ওষুধের গুনে আর ডোসে মেয়েটার কষ্ট যে অনেকটা কমে গেছে সেটা বুঝতে পারছিলাম। দুটো গুলি বার করে, জায়গাগুলো কে ডিসইনফেক্ট করে স্টিচ করে দিলাম। ব্যান্ডেজ বেঁধে দিলাম। সুজাতা শেষ পর্যায়ে ঝিমিয়ে পড়েছিল। বার বার দেখতে হচ্ছিল যে বেঁচে আছে কি না। এখানে যন্ত্রপাতি খুব একটা নেই। তাই হাতে ধরে ধরে দেখতে হচ্ছে। না মেয়েটা বেঁচে গেল। তিন চার রকমের ইনজেকশন দিয়ে কাজ শেষ করলাম দুজনে। অদ্ভুত জিনিস হল আমাদের গোল করে ঘিরে দাঁড়িয়ে সবাই আমাদের কার্যকলাপ দেখছিল এতক্ষন। কারোর বমি পায় নি, কারোর মাথা ঘোরায় নি এত রক্ত দেখে। কেউ ওখান থেকে সরে যায় নি। আমরা কাজ শেষ করতেই অরূপ চেঁচিয়ে উঠল “আমি হ্যাপি, ভীষণ হ্যাপি আমার নতুন কমরেডদের নিয়ে। এই প্রথম গুলি খেয়ে এসে মনে হয় বেঁচে গেল আমার বোন। এর আগে সবাই চলে গেছে আমাকে ছেড়ে। কিন্তু সুজাতা ছিল আমার বোন। ও বেঁচে গেল। নিজের বোন না হলেও ওকে আমি সবার থেকে বেশী বিশ্বাস করতাম। আমি তোমাদের ওপর ভীষণ খুশি। আমি কৃতজ্ঞ। “ শেষ কথা গুলো বলল আমার আর অদিতির দিকে তাকিয়ে। আমাদের মধ্যে একবার চোখাচুখি হল। আমি ইশারায় বললাম এখন মুখ না খুলতে। স্বস্তি পেলাম এই দেখে যে অদিতি মুখ থামিয়েছে। কিছু একটা বলতে গিয়েও চেপে গেল। সব শেষে দেখলাম রমা এসে মিনতির সাথে ওকে আস্তে আস্তে হাঁটিয়ে নিয়ে চলে গেল কোনও একটা ঘরের দিকে। সত্যি অদ্ভুত ক্ষমতা আর মনের জোর । এই অবস্থায় হাঁটছে কি করে?
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
ছয়
আমাদের চোখের সামনে থেকে সুজাতা, রমা আর মিনতি হারিয়ে যাওয়ার পর আমরা অরূপের দিকে তাকালাম। ও আমাদের মুখের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। “বন্ধুরা, এরা জিজ্ঞেস করছে আমরা উগ্রপন্থী কি না? এর কি উত্তর দেব তোমরা বুঝিয়ে দেবে এদের দুজন কে? এদের কেন ধরে আনা হয়েছে সেই উত্তর আমি এর পরে দেব। আর ডাক্তার তোমার পরীক্ষার ব্যাপারে এর একটা থিওরি আছে। তুমি নাকি ওকে রেপ করেছ!!” ওর গলায় একটা বিদ্রুপের সুর। “ডাক্তার তুমি শেষে বলবে। আগে বাকিরা এদের বাকি উত্তর দিক। তবে তার আগে আমি কিছুটা বলব। আর তাড়াতাড়ি বলব।“ দেখলাম ওর কথায় আতলেমি আর নেই। সাবলীল কথা বলছে। তার মানে এর আগে যে ভাবে কথা বলছিল সেটা পুরোটাই মন বশ করার নাটক। আমার ওই কটাক্ষগুলো মাথায় ঢুকেছে মালটার। খুব উঁচু গলায় ভাষণ দেওয়ার মতন করে শুরু করল ওর ভাষণ। “আমি এদের দোষ দি না। তোদের আমি নিজের দলের লোক মনে করেই নিয়ে এসেছি এখানে। তবে হ্যাঁ...” ওর বাকি কথাটা শেষ না করতে দিয়েই অদিতি চেঁচিয়ে উঠল “ লুক হিয়ার মিস্টার। আমার সাথে তুই তুকারি করবেন না। আমি আপনাকে আপনিই বলব। আর আশা করব অ্যাট লিস্ট তুমি সম্বোধনটা পাব।“ উত্তর এলো “বেশ। তোমাদের আমি নিজের দলের লোক মনে করে নিয়েছি। বেশ, এইবার খুশি তো?” এইবার সবার দিকে তাকিয়ে বললেন “অনেকের বোধহয় অনেকগুলো জিনিস জানা নেই। আমি সবার সামনে দাঁড়িয়ে খোলা খুলি দাঁড়িয়ে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো দেব। আর এখনই দেব। “ একটা মেয়ে এসে ওর হাতে একটা জলের গ্লাস দিয়ে চলে গেল। ও শুরু করল। “হ্যাঁ আমরা উগ্রপন্থী। আমরা মানুষ খুন করেছি। কিন্তু কেন করতে বাধ্য হয়েছি সেটা আমি বলব না। যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে তারাই বলবে। আমাদের নতুন বন্ধুরা আমাকে অভিযোগ করেছে যে আমি নকশাল। সেটা হলেও ক্ষতি ছিল না। কিন্তু না। আমরা তো নকশাল নই। তবে আমরা দেশদ্রোহী নই। এখানে কেউ দেশদ্রোহী নই আমরা। কিন্তু দেশ আমাদের ওদের শ্ত্রু মনে করে। আর পাঁচটা উগ্রপন্থী সংস্থার মতন মনে করে। কিন্তু আমরা তা নই।“ দুচুমুক জল খেলেন। একটু নিঃশ্বাস নিলেন। এরকম রগরগে ভাষণের কেউ এরকম বিরাম দিলেই কেন জানি না আমার মনে হয় এবার শুরু হল আতলেমি। আর হলও তাই। তবে কেউ কেউ যদিও জল খাওয়ার পর নতুন উদ্যমে চেঁচাতে শুরু করেন আর এক দমে। তবে আঁতেলগুলো এমন করে না। এই মালটা যে আঁতেল তাতে সন্দেহ নেই। ও শুরু করল “আমি মুক্ত সমাজে বিশ্বাস করি। আমার মতন অনেকেই এখানে আছে যারা মুক্ত সমাজ, মুক্ত মেলামেশায় বিশ্বাসী। কিন্তু এতে দোষ কোথায়। কিন্তু এই দল গোড়ে ওঠেনি মুক্ত সমাজ তৈরি করার জন্য। আমাদের আরও একটা দৃষ্টিভঙ্গি আছে। মানে আরেকটা লক্ষ্য আছে। সেটা হল মেয়েদের মুক্তি। সেটার ব্যাপারে বলার আগে আমি কয়েকজনকে সবার সামনে ডাকতে চাই। নতুনরাও শুনুক। পুরাতনরাও একবার স্মৃতিগুলোকে তাজা করে নিক। আমার অনেক কথা বলার আছে। কিন্তু আগে এরা বলবে আর তারপর আমি বলব। কিন্তু এখনই বলব। ট্রেনিং আজ একটু পরে শুরু করলেও চলবে। আজ আমাদের সুখের দিন। আমার বোন, তোমাদের সবার দিদি সুজাতা ফিরে এসেছে। গুলি খেয়েও ঈশ্বর চাইলে এই দুই নতুন কমরেডের আশীর্বাদে ও বেঁচে যাবে। সবাই পূজা, ঈদ, খ্রিস্টমাসের ছুটিতে মেতে থাকে। আমরা কি একজন কমরেডের নতুন জীবন লাভের খুশিতে মেতে উঠতে পারি না? কিন্তু না। আজ আমাদের ছুটি নয়। নতুন উদ্যোগে কাজ শুরু করার দিন। এটাই ওর প্রতি আমার আর তোদের বেস্ট গিফট হবে। কিন্তু এখন আমাদের একটু আলোচনা করা দরকার। তবে হ্যাঁ সবাই এখানে বাঙালি নয় যাদের আহ্বান করব। কারোর বোঝার অসুবিধা হলে তখনই হাত তুলে জিজ্ঞেস করবি। আমি বুঝিয়ে দেব। “ একটু বিরতি নিয়ে বললেন “ প্রথমে ডাকব মায়াকে।“ আরে এ তো আমার চেনা মায়া নয়। এ কে? অবশ্য তারপরেই মনে হল মায়া নামটা তো খুব বিরল নয়। মায়া এলো।
মাইক নেই তবু ভাব খানা এমন যেন অতিথির জন্য উনি মাইক ছেড়ে দিয়েছেন। অরূপ একটু সরে দাঁড়িয়েছে। মায়ার একটু বিবরন দিয়েই দি। ইনিও হাঁটু অব্দি শাড়ি পরে আছেন। বয়স চল্লিশের কাছাকাছি। শাড়ি নাভির অনেক নিচে পরা। কোমরের কাছে শাড়ির ফাঁক থেকে যেন যৌনাঙ্গ বা তার পাশে থেকে বেড়িয়ে আসা চুলের ছিটে ফোঁটা দেখা যাচ্ছে। গায়ের রঙ চাপা। আমাদের সামনে এসে আমার আর অদিতির ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাত তুলে নিজের চুল খোঁপায় বেঁধে নিলেন। ভীষণ নোংরা একটা গন্ধ নাকে এল ওনার শরীরের থেকে। আর বগলে একগুচ্ছ চুল। পাতলা শাড়ির ভেতর থেকে ওনার পাছার অবয়ব স্পষ্ট। আর যোনী কেশের কিছুটাও যেন বাইরে থেকে বোঝা যাচ্ছে, মানে আভাষ আর কি। ওনার কোনও লজ্জা নেই। আর বাকি দের দেখেও মনে হল না যে এরকম নোংরা ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা দেখে কারোর মধ্যে কোনও পরিবর্তন আছে। হাত আর পা ভর্তি লোম। আসলে এরা সবাই এমন। এদের ছোট করছি না। কিন্তু এটাই স্বাভাবিক এদের কাছে। ওনার স্তন একটা পাতলা কাপড়ের আবরণের ভেতর থেকে ফুটে আছে। বেশ বড় নয়। কিন্তু বেশ গোল ভাবে উঁচিয়ে আছে বাইরের দিকে। বয়সের ভারে নেমে যায় নি। পাছাটাও বেশ ফোলা ফোলা। আর হাঁটা চলা বেশ দুলিয়ে দুলিয়ে। আর কোমরের কাছে শাড়ির গোঁজের জায়গাটা দেখে বুঝলাম এনার কোমরেও স্ট্রেচ মার্ক রয়েছে। কি মনে হওয়ায় এই স্বল্প বসনা সব কটা মেয়ের তলপেটের ওপরে চোখ বুলিয়ে নিলাম, মানে যতটা দেখতে পাই। প্রায় সবার পেটে চামড়ার ওপর ভাঁজ আর দাগ। সবাই বাচ্চা ধরেছে পেটে? তাহলে সেই বাচ্চাগুলোই বা কই? এই মায়া শুরু করল নিজের ভাষণ। “ বন্ধুরা। আমি ছেলেদের নিজের শ্ত্রু মনে করি না। কিন্তু একটা ছেলেই যে আমার শ্ত্রু হয়ে উঠেছিল তাতে সন্দেহ নেই। আমি একা হয়ে পড়েছিলাম এই সমাজে।“ অরূপ ওকে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠল, আর বেশ উচ্চ স্বরেই বলে উঠলো যাতে সবাই শুনতে পারে, “ সব কথা খুলে বলো মায়া। আর এখানে এসে তোমার সাথে কি কি হয়েছে সব কিছু খুলে বলবে। কিছু ঢাকবে না। শুরু করো। “ নিজের গ্লাসটা ওর দিকে এগিয়ে দিল। ও ঘোঁত ঘোঁত করে সব জল গলায় ঢেলে দিল। আবার শুরু করল। “ আমার বয়স একচল্লিশ। আমার বিয়ে হয়েছিল সাতাশ বছর বয়সে। দেখা শুনা করে বিয়ে। আমি এম এ করার পর আমি কোলকাতায় ভালো চাকরি করতাম। কিন্তু বাবার আদেশে বিয়ে করে চলে গেলাম কলকাতা বাইরে। আমার বর ছিল পার্টির গুন্ডা। লোকাল থানায় গিয়ে সপ্তাহে এক দিন করে ওকে হাজিরা দিতে হত। আগে একটা কি কাজ করত, কিন্তু ইউনিয়নের গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়ায় আর থানা পুলিশের হ্যাপা শুরু হওয়ার পর সেই চাকরিটাও গেল। এরপর থেকে সংসারে টাকার আমদানি শূন্য। সংসারের হাল ধরার জন্য আমি আবার চাকরি শুরু করলাম। কিন্তু। আমার প্রমোশন হবার পর থেকে বিষিয়ে গেল ওর মন। কোনও মেয়ের যে ভালো কাজের জন্য প্রমোশন হতে পারে সেটা ওর ধারণার বাইরে। ওর বিশ্বাস আমি অফিসের পর আমার বসের সাথে শুই আর তাই এই প্রমোশন। আমি একজন দুশ্চরিত্রা মেয়ে। সবাইকে আমি সত্যি কথা বলছি যে আমি কোনও দিন বর ছাড়া কারোর সাথে শুইনি সেদিন অব্দি। কিন্তু আমাকে (নিজের নরম বুকের ওপর হাত চেপে ধরে বলল) বাড়ি ফেরার পর অনেক কথা শুনতে হত আর রোজ শুনতে হত। (ওনার গলার স্বর শুনে বুঝতে পারছিলাম যে উনি কতটা অসহায় হয়ে নিজের ভেতরের কথাগুলো উগড়ে দিচ্ছেন।) কোনও দিন অফিস থেকে ফিরতে দেরী হলেই শুনতে হত ওর বাজে কথা। মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে কি যে বলত কেউ জানে না। একদিনকার ঘটনা। কোম্পানি থেকে সেদিন সবাইকে বোনাস দেওয়া হয়েছিল। মন ছিল বেশ খুশি খুশি। খুশি খুশি ভাবটা এসে গিয়েছিল বলেই কি না জানি না, কিন্তু সেদিন বাড়ি ফেরার পথে ভাবলাম বরের জন্য কিছু নিয়ে যাই। পছন্দ করে ওর জন্য একটা শার্টের পিস কিনেছিলাম সেদিন। কিন্তু হিতে বিপরীত হল। শার্টের কাপড়টা দেখে খুশি হওয়ার বদলে জ্বলে উঠল ও। কোথা থেকে এত টাকা আসছে, কার কার সাথে শুয়ে বেড়াচ্ছি, এই সব বলতে বলতে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো কয়েক মিনিটে। তারপর শুরু হল বেধড়ক মার। এর আগে ও আমাকে অনেকবার অকথ্য গালি গালাজ করেছে, কিন্তু কোনও দিন গায়ে হাত দেয় নি। কিন্তু সেদিন দেখলাম ওর ভয়ানক রূপ। চোখের তলায় কালশিটে পড়ে গিয়েছিল। (বা হাতটা তুলে কনুইয়ের কাছটা ধরে সবাইকে দেখিয়ে বলল) এই হাতটা ভেঙ্গে দিয়েছিল মেরে। রাত্রে বেলায় বের করে দিয়েছিল বাড়ি থেকে। আমার শাশুড়ি অনেক বারণ করেছিল, কিন্তু আমার বরকে আটকাতে পারে নি। রাত্রে গিয়ে আশ্রয় নিলাম এক কলিগের বাড়িতে। ও একটা মেসে থাকত। আরও কয়েকটা মেয়ে ছিল। ওরাই আমাকে হাঁসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিল। তিন দিন জ্বরের ঘোরে ছিলাম। ডাক্তার বলেছিল জ্বরটা এসেছে মানসিক শকের জন্য। সুস্থ হওয়ার পর ওদেরই একজন বলেছিল যে এইসব গৃহবধূ নির্যাতনের ব্যাপারে থানায় ডাইরি করতে হয়। থানায় গেলাম ডাইরি করতে। কমপ্লেন লেখা হল। কিন্তু পড়ায় এক মাস হয়ে গেল কোনও কাজ হল না। আবার গেলাম থানায়। ওখানকার ও সি বলল সামনে ইলেকশন আসছে, ওপর তলা থেকে বলা আছে ওকে ছোঁয়া যাবে না এই কটা দিন। ও এখন পার্টির জন্য দৌড়া দৌড়ী করছে। একজন আমাকে বুদ্ধি দিল এখানে একটা এন জি ও আছে ওরা নাকি এইসব কেসে হেল্প করে থাকে। গেলাম ওদের কাছে। সব কথা শোনার পর আমাকে আশ্বস্ত করল। কিন্তু কোনও কাজ হল না। আরেকটা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দ্বারস্থ হলাম। সেখানেও কোনও কাজ হল না। বন্ধুরা এরা শুধু জানে ভাষণ দিতে আর মিছিল করতে। যদি সত্যি কেউ বিপদে পড়ে আসে তাদের জন্য এরা কিছু করে না। অসহায়ের মতন আমি এক দরজা থেকে অন্য দরজায় ঘুরে চলেছি। এমন সময় একদিনকার ঘটনা। আমি সেদিনও একজনের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। সে ওই এলাকার একজন লিডার। তার জন্য দেখা করার জন্য যখন বসে আছি, তখন আমার সাথে আলাপ হল সীমাদির। এখানকার অনেকেই হয়ত তাঁকে দেখে থাকবে। গত বছর উনি মারা গেছেন। সীমাদি আমার মুখে সব কথা শুনে আমাকে বলল এখানে বলে কিছু লাভ হবে না। থানা পুলিশ এন জি ও সব কিছু এখন ইলেকশনের ব্যালট বক্সের ভেতর বন্দী। যদি মনে সাহস থাকে আর নিজের ভাগ্য নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অদম্য ইচ্ছা থাকে তাহলে এসো আমার সাথে। আমাকে নিয়ে এলো এখানে। “
এরপর ও যা বলল আর যত সহজে বলল তাতে শুধু আমার নয় অদিতির ও রক্ত হিম হয়ে গেল। মায়া বলে উঠল “দু মাস পর যখন আমার ব্যাপারটা প্রায় ঠাণ্ডা হয়ে গেছে তখন ফিরে গেলাম বাড়ি। আমাকে দেখে আমার বর খুশি হয় নি ঠিকই কিন্তু থানায় কমপ্লেন তুলে নেওয়ার শর্তে আমাকে বাড়িতে থাকার অনুমতি দিল। ওর ধারণা ছিল আমার এখনও মাথা গোঁজার ঠায় হয় নি। রাত্রে খাওয়ার পর মেয়েলি ছল কলা দেখিয়ে ওর সাথে ঘন হয়ে এলাম। এসবই ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। ওর রক্তে তখন কামনার আগুন। খুবলে খুবলে নিল আমাকে, নিতে দিলাম আমি। আমাকে ভোগ করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়ল। উঠে পড়লাম আমি। ব্যাগ থেকে বের করে নিলাম আগ্নেয়াস্ত্র। আমার মাথায় তখন প্রতিশোধের আগুণ। ঘুম থেকে তুললাম ওকে। ওর নাকের ডগায় তখন বন্দুক হাতে আমি দাঁড়িয়ে আছি। আমার এই হিংস্র রূপ ও আগে কোনও দিন দেখে নি। ক্ষমা চাইল, প্রান ভিক্ষা চাইল, কিন্তু না দিলাম না ভিক্ষা। মাথায় লাগিয়ে টিপে দিলাম ট্রিগার। শাশুড়ি উঠে পড়েছিলেন গুলির শব্দে। কিন্তু উনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমি বেড়িয়ে গেলাম বাড়ি থেকে বাইরে গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। (একটু থেমে বলল) তখন থেকে আমি ফেরার আসামি। অবশ্য এর পরেও আমি আরও দুটো খুন করেছি। “ ওর চোখের কোণায় জল। সবাই নিরব। ও আর কিছু বলল না, চলে গেল। অরূপ আমার দিকে তাকিয়ে বলল “মিনতি কে তো তুমি দেখেছ?” সুজাতাকে শুইয়ে দিয়ে মিনতি তখন এসে দাঁড়িয়েছে ভিড়ের মধ্যে। “মিনতি এখানে এসো। তোমার গল্প বলো ওকে।“ মিনতি আমাদের দিকে এগিয়ে এসে আমার আর অদিতির হাত ধরে আমাদের ধন্যবাদ জানাল সুজাতাকে বাঁচানোর জন্য। ওর গলায় আন্তরিকতার সুর স্পষ্ট। ও যখন কথা শুরু করল আমাদের আশ্চর্য হবার পালা। ঝরঝরে ইংরেজিতে গড়গড় করে বলে গেল ওর অভিজ্ঞ্রতার কথা।
ওর বক্তব্য খানিকটা এই রকম। “ আমি প্রেসিডেন্সির ছাত্রী। পাশ করে চাকরি করতে গিয়েছিলাম দিল্লীতে। আলাপ হল এক ছেলের সাথে। ওরই সিনিয়র কলিগ। প্রেম হল। বিয়ের প্রস্তাব ওঠানোর পর জানতে পারলাম ছেলেটা বিবাহিত, একটা নাকি বাচ্চাও আছে। অথচ আমাদের সম্পর্ক যখন শুরু হয়েছিল, তখন ছেলেটা একবারও বলে নি যে ও বিবাহিত। আমার পেটে তখন ছেলেটার বাচ্চা এসে গেছে। জানাজানি হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে ভেবে গোপনে গর্ভপাত করতে বাধ্য হলাম। ছেলেটার সাথে কাটাকাটি হয়ে গেল সেটা বলাই বাহুল্য। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে ছেলেটা আবার আমার পেছনে ঘুর ঘুর করতে শুরু করে দিয়েছে। আমি না বলার পর থেকে শুরু হল ব্ল্যাকমেইল, আর শুধু ব্ল্যাকমেইল নয় সিনিয়র হওয়ার সুযোগ নিয়ে যখন তখন শরীরে হাত দেওয়া, পিছনে লেগে থাকা এই সব। রাত বিরেতে কাজের ভান করে ফোন করে ডিস্টার্ব করা। আর তার সাথে ছিল আমার গর্ভবতি হওয়ার খবর অফিসের বাকিদের জানিয়ে দেওয়ার ব্ল্যাক মেইল। কাজ কর্ম সব মাথায় উঠল। আমার নামে ভুরি ভুরি মিথ্যে কথা বলা শুরু করল অফিসের ম্যানেজারের কাছে। ছেলেটা ছিল ম্যানেজারের পেয়ারের লোক। তাই ওখানে গিয়ে নালিশ করে কোনও লাভ হবে না। চাকরি বাঁচানোর তাগিদে আবার ছেলেটার কাছে নিজেকে সপে দিতে বাধ্য হলাম। ছেলেটা আমার কাছে যেটা চায় সেটাকে ঠিক প্রেম বলা যায় না। সপ্তাহে একদিন বা দুদিন, মানে যেদিন ছেলেটার মুড আসবে সেদিন অফিসের পর আমার সাথে আমার ভাড়া করা বাড়িতে আসবে। নিংড়ে নেবে আমার শরীরের রস। চলে যাবে নিজের খিদে মিটিয়ে। এরপর এলো এক মহা বিপদ। একদিন ছেলেটা ওর এক বন্ধুকে নিয়ে এলো আমার কাছে। ছেলেটা আমাদের অফিসেই কাজ করে। আমি ওকে অনেক মানা করলাম, কিন্তু ও শুনল না। শুতে হল দুজনের সাথে। এক বিছানায় ভোগ করল আমাকে দুজন মিলে। পরের দিন অফিসে গিয়ে কিছু ছেলের মধ্যে ফিস ফিস শুনতে পাচ্ছিলাম। আমি কাছে গেলেই কথা থামিয়ে দিচ্ছে। বুঝতে বাকি রইল না ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেছে। বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না। ম্যানেজারের কেবিনে আমার ডাক পড়ল। আমি নাকি প্রমোশনের লোভে অফিসের কর্মচারীদের শারীরিক ভাবে প্রলুব্ধ করি, সিদিউস করি আর তাদের শয্যাসঙ্গিনী হয়ে কাজ হাসিল করি। অফিসের তাতে ক্ষতি হচ্ছে। আমি যে গর্ভবতী হয়েছিলাম সেই খবরও ওর অজানা নয়। কাজ না করে আমি যে এই শস্তা পথ বেছে নিয়েছি তার জন্য অফিস আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না। আমার কাজ নিয়ে ম্যানেজমেন্ট একেবারে খুশি নয়। পাতা কাটা হল আমার। বাড়ি থেকে অনেক যুদ্ধ করে আমি কলকাতার বাইরে চাকরি করতে এসেছিলাম। এখন আর বাড়িতে ফিরে যাওয়ার রাস্তা নেই। আবার চাকরির খোঁজ শুরু করলাম। কিন্তু সময় ভালো না হলে যা হয়। পাচ্ছিলাম না চাকরি। এদিকে জমানো টাকা ফুরিয়ে আসছে। এমন সময় ছেলেটা একদিন আমার সাথে দেখা করতে এলো। আমাকে বলল যে আমি যদি ওর সাথে শুই তাহলে ও আমাকে হাত খরচের টাকা দিতে পারে, অন্তত যতক্ষণ আমি নতুন চাকরি পাচ্ছি। রাস্তার বেশ্যাদের মুল্যও আমার হাত খরচের থেকে অনেক বেশী। কেন আমি শোব ওর সাথে, কেন এত শস্তায় বিক্রি করে দেব নিজেকে। মনে আছে কলেজে পড়ার সময় একটি মেয়ের রেপের প্রতিবাদে আমি রাস্তায় মিছিলে নেমেছিলাম। তখন আমাদের স্লোগান ছিল মেয়েদের শরীর তাদের নিজস্ব জিনিস, সেটা সে কাকে দেবে সেটা তার নিজের অধিকার, সে রাস্তার বেশ্যাই হোক না কেন, জোর করে কেউ কোনও মেয়ের শরীর ভোগ করতে পারে না। কিন্তু আজ আমাকেই শুধু সমাজে টিকে থাকার তাগিদে নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে একটা ছেলের সাথে শুতে হবে। আর মানসিক ভাবে ওর শরীরটাকে আমি মেনে নিতে পাচ্ছিলাম। আমার সব সর্বনাশ তো ওই করেছে। এক মাস ঘুরে গেল ছেলেটার আর কোনও ফোন এল না। দেখাও করতে এলো না। এদিকে আমার তখন টানাটানির শেষ পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। বেশ কয়েক জায়গায় ধার দেনা ও হয়ে গেছে। সামনের মাসে বাড়ি ভাড়া দেব কি ভাবে সেটাও ঠিক বুঝতে পারছি না এখন। অবশেষে সংকোচ কাটিয়ে ফোন করলাম ছেলেটাকে। এক রাতে এসে সারা রাত আমার সাথে ফুর্তি করে সকাল বেলায় কয়েক হাজার টাকা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বিদায় নিল। যাওয়ার আগে অবশ্য বলে গেল যে বেশ কয়েকদিনের জন্য ও শহরের বাইরে যাচ্ছে, এসে মেসেজ করবে। বাড়ি ভাড়ার টাকা তবুও উঠলো না। এতবড় বিপদে পড়ে যাব কোনও দিন ভাবতে পারিনি। যেদিন প্রেম করেছিলাম সেদিন কি সত্যি ভেবে ছিলাম যে এত বড় বিপদ ডেকে আনছি নিজের জন্য। ছেলেটা যে এরকম সে তো স্বপ্নেই ভাবতে পারিনি। বাড়ি ভাড়া নিতে এলেন কাকু। বয়স প্রায় পঞ্চাশের কোটায়। ওনার কাছ থেকে কয়েকদিন সময় চেয়ে নিলাম। কিন্তু না কিছুই জোগাড় হল না। বুঝতে পারলাম বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে। এই দিকে এই শহরে মাথা গোঁজার আর কোনও জায়গা জানা নেই। একবার ভাবলাম আমার এক্স প্রেমিক যে আরেকটা ছেলেকে নিয়ে এসেছিল তাঁকে ফোন করে দেখলে কেমন হয়। কিন্তু না। আর নিচে নামতে মন চাইছে না। বাড়িওয়ালা কাকু এসে আমাকে বলে গেল যে এরপর যদি বাড়ি ভাড়া না দি তো পুলিশে দিয়ে দেবে। কি করব ভেবে কূল পাচ্ছি না। ওকে অনেক করে বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে চাকরি পেলেই সবার আগে ওর ভাড়া আমি মিটিয়ে দেব। উনি তখনকার মতন চলে গেলেন বটে, কিন্তু কিছুক্ষণ পরে মোবাইলে ঢুকল তার এস এম এস। খুব নোংরা ইঙ্গিত আছে তাতে।ভাড়ার বদলে শরীর। ছিঃ, এত পড়াশুনা করলাম, কিন্তু এখন এই পুরুষশাসিত সমাজে আমার মূল্য হল আমার শরীরের কয়েকটা ফুটো আর শরীরের ওপর গজিয়ে থাকা কিছু মাংসপিণ্ড? কি করব বুঝতে না পেরে সেই রাত্রেই ছোট একটা ব্যাগ নিয়ে বাড়ি ছাড়লাম। ষ্টেশনে গিয়েছিলাম ট্রেনের নিচে মাথা দেব বলে। কিন্তু না আলি দা সেই সময় আমাকে বাঁচিয়ে ফেরত নিয়ে আসে। ওকে সব কথা বলেছি। ও আমাকে আমাদের ওখানকার ক্যাম্পে নিয়ে গেল। সেখান থেকে এখানে পাঠিয়ে দেওয়া হল। এই ক্যাম্প আমাকে বাঁচিয়েছে। আমার শরীর, মন সব কিছু আমি সপে দিয়েছি এই সংগঠনকে। ওরা যেভাবে খুশি চায় আমাকে ব্যবহার করতে পারে, আর তাতে আমি ধন্য হব। “
আরও কয়েকজনের জবানবন্দী আমাদের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনতে হল। তারপর সভা ভেঙ্গে গেল। অদিতিরও যে আমার মতন বেশ কয়েকটা প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে সেটা ওর চোখ মুখ দেখে স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম। আমরা আবার অরূপদার সাথে এসে তার ঘরে গিয়ে বসলাম। কথা ছিল অরূপদা ওই জমায়েতেই কিছু কথা বলবে, কিন্তু সেটা আর হল না কারণ ছয় সাত জনের জবানবন্দীতেই অনেকটা সময় পেড়িয়ে গিয়েছিল। ওদের ট্রেনিং শুরু হয়ে গেছে। আমাদের বসতে বলে অরূপদা বলল “আমি জানি তোমাদের দুজনের মনে অনেক প্রশ্ন ঘুরতে শুরু করেছে। আমি তোমাদের সাথে খুলে কথা বলব বলেই এখানে নিয়ে এসেছি।“ আমিই প্রথম মুখ খুললাম “ অর্থাৎ তোমরা সমাজে বঞ্চিত, নিগৃহীত, লুণ্ঠিত মেয়েদের সংঘবদ্ধ করার জন্য এইটা তৈরি করেছে?” অরূপদার জবাব কিন্তু এলো তৎক্ষণাৎ “ শুধু তাই নয়। জায়গায় জায়গায় এরকম অনেক মেয়েরা আজও নিপীড়িত হচ্ছে। মুখে আমরা যাই বলি না কেন এখনও অনেক জায়গায় মেয়েদের শুধু ভোগ্য বস্তু হিসাবে দেখা হয় আর তাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়। অফিস, বাড়ি রাস্তা ঘাট কোথায় নয়। সরকার আর প্রশাসন মুখে যাই বলুক না কেন এসব রুখতে তারা অসফল। হয় তাদের ইচ্ছে নেই, অথবা তাদের যে ইনফ্রাস্ট্রাকচার দরকার সেটা এখনও নেই। এই অবস্থায় একজন নাগরিক হিসাবে আমি আর আমার মতন অনেকে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছি। তোমরা শুধু ছয় কি সাত জনের জবানবন্দী শুনেছ। আরও অনেক জখন্য শোষণ আছে সমাজে। কে দাঁড়াবে সেই মেয়েদের পাশে? আমরা দাঁড়াব।” অদিতি বলল “সবই তো বুঝলাম, কিন্তু আমাদের দুজনকে এখানে তুলে আনার কারণ কি?” অরূপদা হেঁসে বলল “ আমাদের এখানে অনেক ঝুঁকি নেওয়া কাজ করতে হয়। প্রায়ই কেউ না কেউ আহত হয়। অনেকবার এরকম হয়েছে যে মেয়েরা বা ছেলেরাও বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। তাই অনেক দিন থেকে আমাদের ইচ্ছে ছিল যদি দু একজন ডাক্তার আমাদের দলে থাকে তাহলে হয়ত এতগুল প্রান যাবে না বিনা চিকিৎসায়। তোমাদের সাথে যোগাযোগ হয়েছে নিতান্ত ঘটনাচক্রে। কয়েকদিন আগে তোমাদের কোনও পরিচয় আমার জানা ছিল না। কিন্তু ...” অদিতি মাঝপথেই বলে উঠল “ ধরে নাও, আমাদের যদি না পেতে তখন কি করতে?” অরূপদা বলল “কি আর করতাম, খুঁজতে থাকতাম। যতদিন না আরেকজনকে পাচ্ছি।“ কিছুক্ষণ কি একটা ভেবে নিয়ে আমাদের বলল “তোমরা নিজেরাও মেয়ে। তোমরা হয়ত নিজেরা এরকম পরিস্থিতির কোনও দিন শিকার হওঁ নি, কিন্তু ভেবে দেখো, তোমাদেরও কি একটা দায়িত্ব থেকে যায় না এই মেয়েগুলোর প্রতি?” এই প্রশ্নের কোনও উত্তর হয় না। আমরা চুপ করে বসে আছি দেখে আমাদের বলল “ ঠিক আছে, যখন এসেই গেছ তখন কয়েকদিন আমাদের সাথে থাকো। কাউকে জোর করে আঁটকে রাখা বা জোড়ে করে কাউকে দিয়ে কিছু করানো আমাদের নীতিবিরুদ্ধ। আমরা বাইরে আরও দু-একজন ভালো মেয়েদের ডাক্তার খোঁজার চেষ্টা করছি, পেলেই তোমাদের মুক্তি। “ আমি হেঁসে বললাম “এটা কি সহজে বিশ্বাস করা যায়? এখানে নিয়ে এলে জোর করে আর এখন বলছ আমরা চলে যেতে চাইলে এমনি এমনি ছেড়ে দেবে। এখানকার না হোক কিন্তু যে বাড়িতে রত্নাদি আমাকে আসতে বলেছিল সে বাড়িটার ঠিকানা তো আমি গিয়ে পুলিশকে বলে দিতে পারি। তখন কি করবে ভেবে দেখেছ?” অরূপদা হাঁহাঁ করে হেঁসে উঠল। “ এখানকার ঠিকানা তোমরা কোনও দিন জানতে পারবে না। আর দ্বিতীয়ত যে বাড়িটার কথা বলছ, সেই বাড়িটার সাথে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই। কেমন ভাবে কি সুত্রে ওই বাড়িটাতে আমরা ব্যবস্থাটা করতে পেরেছিলাম এখন সেই সব প্রশ্ন অবান্তর। কিন্তু জেনে রাখো ওই বাড়িটা সরকারের প্রপার্টি। হয়ত আর কয়েক দিনের মধ্যে ওইটাকে ভেঙ্গে চুড়ে দিয়ে একটা কলেজ বানানো হবে। ওই বাড়িটা থাকা না থাকা সমান। আর তাছাড়া আমরা এরকম অনেক অস্থায়ী জায়গায় মিট করি। সেগুলর সাথে আমার বা আমাদের কোনও কমরেডের সরাসরি কোনও যোগাযোগ নেই। “ অরূপদা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময় একজন মাঝ বয়সী মহিলা এসে ঘরে ঢুকল। অরূপদা আলাপ করিয়ে দিল “ এর নাম আরতি। আমাকে এখন একটু বেরোতে হবে। আরতি, তুমি বসো এখানে। ওদের যা যা প্রশ্ন আছে উত্তর দিয়ে দাও। আচ্ছা জানি মুশকিল, কিন্তু আলি কে বলে দাও আরও দুজন ডাক্তারের সন্ধান করতে। যতদিন না পায় তত দিন ওরা এখানেই থাকবে। কিন্তু তোমাদেরও একটা অনুরোধ করছি, প্লীজ যে কটা দিন এখানে আছ, এখানকার নিয়ম মেনে থাকার চেষ্টা কর, দেখ যদি তোমরা এখানকার বোনদের জন্য কিছু করতে পারো।“ অরূপদা বেড়িয়ে যেতেই অদিতি প্রথম প্রশ্ন টা করল আরতিকে “তোমার বয়স কত?” বলল “চল্লিশের একটু নিচেই।“ অদিতি বলল “একটু আগে শুনলাম ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। কিসের ট্রেনিং?” আরতি অনেক টু দি পয়েন্ট উত্তর দেয়, তাই অনেক কথা ওর পেট থেকে বের করে নেওয়া গেল। অরূপদা আমাদের প্রশের উত্তর দেওয়ার থেকে বেশী আমাদের ব্রেন অয়াশ করার কথা ভেবে উত্তর দিচ্ছিল, সমাজ , দেশ, নিজেদের ভাই বোন ইত্যাদি। এই মানসিক অবস্থায় সে সব কথা আমাদের শক্ত মাথায় ঢোকা কঠিন।
প্রঃ মেয়েদের কিসের ট্রেনিং দেওয়া হয়?
উঃ সব কিছুর। ব্যায়াম, আসন করানো হয়। খালি হাতে কি করে লড়াই করতে হয় তার ট্রেনিং দেওয়া হয়, শুধু আত্মরক্ষা নয়, আক্রমণ করারও ট্রেনিং দেওয়া হয়। বন্দুক চালানোর অভ্যাস করানো হয়। এছাড়া রান্না বান্না , গান, নাচ এসবও আছে।
প্রঃ খাবার দাবার কে বানায়?
উঃ আমরাই হাতে হাতে বানিয়ে নি। খুব সাধারণ খাবার খাই আমরা।
প্রঃ আনাজপাতি নিয়ে আসে কে?
উঃ কেউ নিয়ে আসে না। আমাদের একদম স্পেসিফিক কাজ বা টাস্ক ছাড়া ক্যাম্পের বাইরে যাওয়া বারণ। আর এটা বাজার হাট থেকে অনেক দূরে। বাইরের অঞ্চলে কিছু লোক চেনা আছে। ওরাই আমাদের খবরও দিয়ে থাকে। আলি ওদের সাথে যোগাযোগ করে। ওরাই বিভিন্ন ভাবে যোগান দেয়। দুদিন থাকো আপনা আপনি বুঝতে পারবে। তবে বাইরের লোক কেউ ক্যাম্প অব্দি আসে না। খাবার দাবার নিয়ে এসে একটা পূর্ব নির্দিষ্ট স্থানে এসে রেখে ওরা চলে যায়। সেখান থেকে নিয়ে আসে আমাদের লোক।
প্রঃ এখানে যদি কোনও দিন পুলিশের বা আরক্ষণ বিভাগের লোক চলে আসে আত্মরক্ষা করার মতন যথেষ্ট অস্ত্র আছে?
উঃ এই মুহূর্তে নেই, তবে চলে আসবে কয়েক দিনে। তারপর অবশ্য যারা বেঁচে যাবে তাদের অন্য স্থানে সরে যেতে হবে।
প্রঃ এত যে অস্ত্র , খাবার দাবার, এর পয়সা আসে কোথা থেকে?
উঃ (এই উত্তরটা এলো একটু দেরী তে) এক কথায় বলতে পারো ডাকাতি করে।
আমি আর অদিতি এর ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করলাম।
উঃ বিভিন্ন ভাবে ডাকাতি করতে হয়। হয়ত আমাদের কাছে খবর এলো যে কাছেই বা কোনও গদিতে অনেক টাকা এসেছে। সবাই চলে যাওয়ার পর রাতের অন্ধকারে গদি লোটা হয়। (গলাটা একটু নামিয়ে নিয়ে তারপর বলল) যদি আমরা খবর পাই যে কোনও বড় ব্যবসায়ী কোনও হোটেলে এসে উঠেছে তাহলে সেখানে আমাদের একজন কি দুজন মেয়েকে সাজিয়ে গুছিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সব সময় যে কাজ হয় তাতে তেমন নয়, কিন্তু অনেক বারই হয়েছে। ওরা গিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে। অবশ্য তার আগে একটা খবর আমাদের নিতে হয় যে ওদের কাছে প্রচুর নগদ টাকা আছে কিনা। সেটা সিওর না হয়ে আমরা মেয়েদের পাঠাই না। তো হ্যাঁ, যা বলছিলাম, মেয়েরা বা কোনও মেয়ের ওপর যদি তেমন কোনও ব্যবসাদারের মন এসে যায়, তো নিশ্চিত তার ডাক পড়বে ওর ঘরে। এরপর আর কি, নিজেদের শরীরের মায়াজালে জড়িয়ে ফেলা। তেমন লোক হলে কিছুই করতে হয় না। সোজা কপালে বন্দুক বা গলায় ছুরি ঠেকিয়ে হাত পা বেঁধে তালা ভেঙ্গে লুট করে নেওয়া তার সর্বস্ব, (হেঁসে ফেলল আরতি) আর যদি তেমন ঘুঘু লোক হয় তো খেলাটা সম্পূর্ণ করতে হয়। মানে লোকটা যে কারণে ওকে ঘরে ডেকেছে সেই কাজটা প্রথমে সম্পন্ন করা। তারপর লোকটার দুর্বল মুহূর্তে বা ঘুমন্ত অবস্থায় তার হাত পা বেঁধে তাঁকে লুট করা। আরেকটা কথা বলি।
প্রঃ কি?
উঃ বাইরের এলাকায়, এমনকি কলকাতাতেও মেয়েদের কিছু দালালের সাথে আমাদের চেনা শুনা আছে। ওদের কাছে অনেক মেয়েদের ডিমান্ড আসে। যদি তেমন কোনও বড়লোকের কাছ থেকে ডিমান্ড আসে তো আমাদের যোগাযোগ করে। আমরা একজন মেয়েকে পাঠিয়ে দি। কাজ শেষ না করে কিছু করতে পারলে তো কথাই নেই। তবে এসব ক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যারা ডাকে তারা একা হয় না। হয়ত তাদের বন্ধু থাকে, বা সিকিউরিটি থাকে। তাই এদের সাথে খেলা শেষ করে সুযোগ বুঝে বাইরে সংকেত দেওয়া হয়। কোথায় টাকা রাখতে পারে ইত্যাদি বুঝে নিতে হয়। তখন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা আমাদের লোক আচমকা আক্রমণ করে। বাড়ির মালিক যদি নেশা গ্রস্ত না হয়, বা যদি খুব সজাগ থাকে তো বিপদ হতে পারে, তাই চেষ্টা করা হয় শরীরের মিলন শেষ হওয়ার আগেই তার শরীর আর মনকে বশ করে ফেলা, মানে শরীরের খেলায় মাতিয়ে রেখে আর কি। তবে একাধিক লোক থাকলে ব্যাপারটা একটু জটিল হয়ে যায়। সুজাতার যেমন...
প্রঃ হ্যাঁ আমিও সেটাই জানতে চাইছিলাম, সুজাতার কি হয়েছে।
উঃ ওর কপাল খারাপ। নইলে এরকম হত না। একজনের বাগান বাংলো তে ওর যাওয়ার কথা ছিল। সুলেমান বলে একজন দালাল খবর এনেছিল। আগেও অনেকবার খবর দিয়েছে। দু দুটো গাড়ির শো রুম আছে কোলকাতায়। এখানেও একটা বাগান বাড়িও আছে। এখানে নাকি বেশ কিছু কালো ধান্দা করছে। হাট্টা খাট্টা লোক। আর দামী গাড়িতে লাখ লাখ টাকা নিয়ে ঘোরে। আমরা সুজাতাকে পাঠিয়েছিলাম ওর কাছে। এখানে বাগান বাড়িতে একা থাকবে বলে মেয়ের খোঁজ করছিল। খবর ছিল লোকটা নাকি একাই ঘোরে, আর কাউকে বিশ্বাস করে না। দুদিনের জন্য মোটা টাকা দিতেও রাজি হয়েছিল। প্রথম দিন ওর সাথে কাটানোর পর সুজাতা বুঝে গিয়েছিল যে কোথায় আছে ওর টাকার সুটকেস। দ্বিতীয় দিন যখন লোকটা ঘুমাচ্ছিল, সুজাতা টাকার সুটকেস তুলে বেড়িয়ে এলো। কিন্তু বরাত খারাপ ও জানত না যে ওর কয়েকজন লোক বাইরে অপেক্ষা করছিল। সুজাতা আগের দিন যখন লোকটার কাছে গিয়েছিল, তখনও ওরা ছিল, কিন্তু এমন সাধারণ ভাবে ঘুরছিল যে সন্দেহ হয় নি। সুজাতাকে দেখে ওরা বুঝতে পারে যে কিছু একটা হয়েছে। ব্যস গুলি চালায়, সুজাতাও গুলি চালায়। ওদের একজন আহত হয়েছে, কিন্তু সুজাতা বেচারিও গুলি খায়। তারপর পড়ি কি মরি করে কিছুদুরে যেখানে আমাদের গাড়ি ছিল সেখানে এসে পৌঁছায়, বাকিটা তো দেখতেই পেলে।
প্রঃ টাকাগুলো?
উঃ সুজাতা সাহসী মেয়ে। এত কষ্ট করে যে টাকায় ওর হাত পড়েছে সে টাকা হাত ছাড়া করার মেয়ে ও নয়।
প্রঃ এই অরূপদাকে তোমরা কতদিন ধরে চেন?
উঃ আমি এখানে এসেছি তা প্রায় বছর তিন হয়ে গেছে। অবশ্য আগে আমাদের ঘাঁটি অন্য জায়গায় ছিল। জানা জানি হয়ে যাওয়ায় আমরা দু বছর হল এখানে মুভ করেছি। জায়গাটা খুজে পাওয়া বেশ মুশকিল।
প্রঃ অরূপদার বয়স কত?
উঃ তেতাল্লিশ। ও হ্যাঁ ওর স্ত্রীও আছে এখানে। বিনীতা দিকে তোমরা দেখনি। আমরা সবাই বয়স বেশী কম যাই হোক না কেন অরূপদা আর বিনীতাদি ডাকি। ও ফিল্ডে আছে। আটত্রিশ বছর বয়স। এই জায়গা দাঁড় করাতে ওর প্রতিদান কম নয়।
প্রঃ ফিল্ড মানে বাইরে কাজে গেছে?
উঃ হ্যাঁ। আগের মাসে একটা মেয়েকে অ্যাসিড দিয়ে পোড়ান হয়েছিল। মেয়েটি বাঁচে নি। ওর এক আত্মীয় এখানে আছে আমাদের মধ্যে। মেয়েটার বর বড়লোকের একমাত্র ছেলে। টাকা দিয়ে পুরো ব্যাপারটা চেপে দেওয়া হয়েছে।
প্রঃ তার মানে আজ ওকে লুণ্ঠন করা হবে?
উঃ না সে কাজ কাল হয়ে গেছে। আজ ভোরের মধ্যেই এখানে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু কিছু একটা কারণে দেরী হয়েছে। তবে শুনেছি কাজ হয়ে গেছে। বিনীতাদি অক্ষত। (একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল) অক্ষত ঠিক বলা যায় না। অচেনা অজানা কারুর সাথে নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও শোয়ার পর শরীর অক্ষত থাকে না। তবে হ্যাঁ যা খবর এসেছে লাখ চারেক টাকা নগদ লুট করা গেছে। আমাদের ওখানকার এজেন্টের কাছে কিছু টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। আনাজপাতির টাকা মেটাতে হবে। আজ সন্ধ্যার আগে পৌঁছে যাওয়া উচিৎ। আলাপ হলে দেখবে ভীষণ খোলা মনের মানুষ, খুব স্বাধীনচেতা।
প্রঃ আচ্ছা একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম যে এখানে যারা আছে তাদের প্রায় সবাই একবার অন্তত প্রেগন্যান্ট হয়েছে। কি করে এটা সম্ভব হল?
উঃ ওই যে বললাম অবাধে যৌন মিলন করলে...
কথায় খেদ পড়ল। আলি একটা ছেলেকে নিয়ে এসে ঘরে ঢুকেছে। আমাদের দেখে ও কথা বলতে ইতস্তত করছে দেখে আমরা উঠে পড়তে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আরতি আমাদের বসতে বলল। ইশারায় আলি দাকে বুঝিয়ে দিল যে আমাদের সামনে ওরা কথা বার্তা বলতে পারে।
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
সাত
আলিদা বলল “দুটো খবর, সুলেমানকে পুলিশে ধরেছে। তবে মনে হয় না কিছু করতে পারবে। কারণ অনেক মেয়েরা ওর মাধ্যমে কাস্টোমার খোঁজে। তারা কে কি বৃত্তান্ত সে সব ওর জানার কথা নয়। তবে মেয়ে চালান দেওয়ার জন্য কিছু সাজা হতে পারে। “ আমি মাঝপথে বলে উঠলাম “ সুলেমান যদি মুখ খুলে দেয়?” আরতি আমাকে বলল “সুলেমান আমাদের কথা জানে না। ও খুব বেশী হলে বলতে পারবে কোথায় ওর সাথে দেখা করা হয়। যে দেখা করে তার চেহারাও ও চিনতে পারবে না। দাঁড়ি গোঁফ ইত্যাদি লাগিয়ে রীতিমত সাজিয়ে পাঠানো হয়। (আলিদার দিকে তাকিয়ে বলল) আর পরের খবরটা?” আলি দা বলল “ টাউনে গ্রিন হোটেলে শাঁসালো মাল এসেছে। মেয়ে চাইছে। যা খবর আছে সেটা সত্যি হলে আজ সকালেই লাখ কুড়ি টাকা পেয়েছে ক্যাশে একজনের কাছ থেকে। আর যদি কিছু টাকা থাকে তো জানি না। “ আরতি একটু ভেবে নিয়ে বলল “ কত বয়সের মেয়ে চাইছে শুনেছ?” পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটা বলল “বুলু দা যা বলেছে তাতে তেত্রিশ থেকে চল্লিশ। তবে নাকি ঝানু মাল। পাশের ঘরে একটা ষণ্ডা মতন লোক আছে। ওর সাথেই এসেছে। সব সময় চারপাশে ঘুর ঘুর করে। “ আরতি একটু ভেবে বলল “বুঝতে পেরেছি সাথে কুকুর নিয়ে এসেছে পাহাড়া দেবার জন্য। “ বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে একটু হাঁটতে লাগলো ধীরে ধীরে। বোধহয় এত ব্যায়াম করে বলেই এদের ফিগার এত ভালো এই বয়সেও। নিজের মনে মনে বলল “ অরূপদা নেই। বিনীতাদি ও নেই। সুজাতার এই অবস্থা। আলিদা একটু গলা নামিয়ে বলল “ ছেলেটার বাপের আসানসোলে ফ্যাক্টরি আছে যেখানে রশ্মির বাবার হাত কাটা পড়েছিল। পরে তো গুম করে দিল।“ “সীমা কে একবার ডেকে দাও তো।“ আরতি বলে উঠলো। আলিদা দাঁড়িয়ে রইল। অন্য ছেলেটা বেড়িয়ে চলে গেল। ছেলেটার বয়স বাইশ কি তেইশ হবে। অদ্ভুত পেটানো শরীর। আর চোখে মুখে একটা চটপটে ভাব। সীমা এসে হাজির হল। এর সাথে আলাপের সুযোগ আসে নি। বয়স পয়ত্রিশ মতন। ফিগার ভালোই। আরতি ওকে বলল “ সীমা গ্রিন হোটেলে কাউকে একজন কে পাঠাতে হবে। ঘুঘু মাল এসেছে, সাথে নাকি কুকুর নিয়ে এসেছে। অবশ্য কথা বলা কুকুর। বিনীতাদি নেই। আমি এখন যেতে পারব না। কাকে পাঠানো যায় বলতো?” সীমা বলল “আমাকে অনেক দিন কোথাও যেতে হয় নি। আমিই চলে যাচ্ছি। আমার বন্দুকের গুলি আর নেই। কারোর একটা নিয়ে যেতে হবে। “ আরতি বলল “বেশ। আলি, কখন যেতে হবে?” জবাব এলো, “সন্ধ্যায়। ঠিক সাড়ে সাতটায় ডেকেছে। “ আরতি জিজ্ঞেস করল “ঠিক জানো তো পুলিশের কারসাজি নয়। ফাদ পাতা হচ্ছে না তো?” আলি বলল “যতদূর বুঝলাম না। “ সীমাকে বলল “তুমি তৈরি হয়ে নাও। বিকেল ঠিক পাঁচটায় বেড়িয়ে যাবে। রাতেই কাজ শেষ করে ফিরে আসবে। আলি তুমি আজ ওখানেই অপেক্ষা করবে। কাজ খতম হলেই সোজা এখানে চলে আসবে। হয়ত একটু আগেই পৌঁছাবে তোমরা। একটু চারপাশটা ঘুরে দেখে নিও। কোথাও কোনও ফাঁদ পাতা হচ্ছে বুঝতে পারলেই ফিরে আসবে। ঝামেলার মধ্যে যাবে না। “ ওরা তিনজনে বেড়িয়ে যেতে আরতি বলল “তোমাদের সাথে পরে অনেক গল্প হবে। এখন এসো তোমাদের ঘর দেখিয়ে দি। আর একজন খুব অসুস্থ তাকে একটু দেখে দিও প্লীজ। আর শোন পোশাকটা পরিবর্তন করে আমাদের মতন পরে নাও, অন্তত যতদিন এখানে আছে। আসলে আমাদের জামা কাপড় খুব বাড়ন্ত। বাইরে যেতে হলে ভালো জামা কাপড় পরে পাঠাতে হয়। আর অন্য রকম পোশাক পরে ঘুরলে সবাই ভাববে তোমরা ডাক্তার বলে তোমাদের জন্য কোনও নিয়ম নেই। সেটা এরকম ক্যাম্পে ভালো দেখায় না। “ কথাগুলো ও খুব সহজ ভাবেই বলল। আমাদের কিছু করার নেই। সত্যি কথাই বলেছে। আমাদের খুবই বেমানান দেখাচ্ছে। দেখলাম একদল মেয়ে সারি বদ্ধ ভাবে মাথার উপর বন্দুক নিয়ে রোদের মধ্যে দৌড়ে চলেছে। এদের কাছে দুর্গা পূজার কোনও মানে নেই। মাঠ দিয়ে যেতে যেতে আমাদের বলল “ও হ্যাঁ ভালো কথা, রাজুকে বলে দেব তোমাদের একবার আমাদের ওষুধের জায়গাটা দেখিয়ে দিতে। কয়েকদিন যখন আছোই তখন একটা উপকার করে দাও। কি কি ওষুধ রাখা দরকার, কি কি যন্ত্রপাতি লাগবে সেগুল যদি বলে দাও তো আমরা ধীরে ধীরে কিনে ফেলতে পারি। শুনলেই তো আজ বাইরে আলি যাচ্ছে। কিছু খুব জরুরি লাগলে ওকে লিস্ট দিয়ে দেবে। সীমা যখন ওর কাজ করবে তখন আলি ওষুধ গুলো কিনে নিতে পারে। বা আগেও কিনে নিতে পারে। “ অদিতি জিজ্ঞেস করল “রাজু কে?” আরতি বলল “ওই যে একটু আগে যেই ছেলেটাকে দেখলে। ওর মা ওকে এখানে নিয়ে এসেছিল যখন ও সতের কি আঠারো। এখানেই থেকে গেছে। খুব ভালো বন্দুক চালায়। “ আমি একটু ইতস্তত করে বললাম “ডাক্তার কে দেখছি না আজ।“ আরতি কেন জানি না হো হো করে হেঁসে উঠল “ মনে ধরেছে নাকি ওকে?” বললাম “না এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম।“ বলল “চিন্তা নেই। ওকে তোমার পছন্দ হলে আর ওর ও যদি তোমাকে পছন্দ হয় তো তোমরা মেলা মেশা করতে পারো। এখানে আমরা অবাধ এবং খোলামেলা স্বতঃস্ফূর্ত মেলা মেশায় বিশ্বাস করি। সমাজে যে বিধি নিষেধ গুলো আছে আমরা সেগুল এখানে মানি না। তবে কোনও জোরাজুরি চলবে না, না ছেলের পক্ষ থেকে না মেয়েদের পক্ষ থেকে। বাকি যা খুশি করতে পারো। সারা দিনের পরিশ্রমের পর মন আর শরীর কাউকে কাছে চাইবে তাতে আর আশ্চর্য হবার কি আছে। তবে একজন কে কথা দিয়েছি বলে তুমি তাকে তোমার সম্পত্তি মনে করবে তেমন ভাবলে চলবে না। পুরো ব্যাপারটাই স্বতঃস্ফূর্ত হওয়া চাই।“ এ তো মহা মুশকিলে পড়া গেলো। কি করে বোঝাই যে ওকে আমি খুজছি না প্রেম নিবেদন করার জন্য। ওকে হাতের সামনে পেলে একটা থাপ্পড় মেরে ঝাল মেটাতাম। কিন্তু আরতিকে সে সব বুঝিয়ে লাভ নেই। আর রত্নাদি বা কোথায়। সকাল থেকে দেখছি না তো ওকে। আরতি বলল “ও ভোরের আগে বেড়িয়ে গেছে। কলকাতা যাবে। সেখান থেকে দিল্লী, সেখান থেকে উপি। তারপর সেখান থেকে ফিরবে।“
“এই ঘরটায় তোমরা থাকবে।“ আমরা ভেতরে ঢুকলাম। দেখলাম বিছানায় দু জোড়া সাদা শাড়ি রাখা আছে ঠিক ওরা যেমন পরে। “তোমরা চেঞ্জ করে নাও। একটু পরে রাজু কে পাঠিয়ে দিচ্ছি। চা লাগলে ওকে বলে দিও। আর কিছু খেয়ে নিও।“ দেখলাম আমার টুথ পেস্ট আর ব্রাশ আর অদিতির ও দু একটা ছোট খাটো জিনিস টেবিলের ওপর রাখা আছে। এ ঘরের খাটটা একটু বড়, যাতে দুজন পাশা পাশি শুতে পারে। অদিতি একটা পাতলা শাড়ি হাতে তুলে দেখে সেটা হাতে নিয়েই বিছানায় বসে পড়ল। ঘরের পেছন দিকে একটা জানালা আর আরেকটা দরজাও আছে। দরজা খুলে বেরোলে ঘরের পেছেন দিকে বেড়িয়ে যাওয়া যায়। তবে খেয়াল করলাম একটা জানলারও কপাট নেই, অবশ্য গরাদ আছে। অদিতি জানলা দিয়ে একবার পেছনদিকটা দেখে নিয়ে দরজা খুলে পেছন দিকে বেরল। আমি ওকে বললাম “এখন পালানোর চেষ্টা করা বৃথা। পরে ভেবে কিছু একটা ঠিক করতে হবে। অদিতি কথা না বাড়িয়ে ঘরে ঢুকে পেছনের দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে শাড়ি ছাড়তে শুরু করে দিয়েছে। আমি উঠে দাঁড়িয়ে শাড়ির কোমরের গিঁটটা খুলে ফেললাম। আমরা দুজনে কেউ কারোর দিকে তাকাচ্ছি না লজ্জায়। যে দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকেছি সে দরজাটা ভাবলাম একবার বন্ধ করে দি, কিন্তু তাতে কোনও লাভ নেই। কারণ তার দুপাশে দুটো বড় বড় গরাদ দেওয়া কপাটহীন জানালা আছে যেখান দিয়ে ঘরের ভেতরটা পরিষ্কার দেখা যায়। চোখের কোন দিয়ে বুঝতে পারলাম অদিতি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে একটা শাড়ি শরীরে জড়াতে শুরু করে দিয়েছে। আমিও একটা শাড়ি তুলে নিলাম। শাড়িটা শরীরে জড়ানোর পর অদ্ভুত নগ্ন মনে হচ্ছিল নিজেকে। স্তনগুলো ভালো করে ঢাকা যায় নি। নাভির নিচে প্রায় ছয় ইঞ্চি কি তারও বেশী নগ্ন। অর্ধেকের মতন স্তন বিভাজিকা নগ্ন। অদিতির অবস্থা আরও খারাপ। ওর স্তন আমার থেকেও বেশী ভরাট। আর লম্বায় আমার থেকেও বেশী। আমার শাড়িটা তাও কোনও মতে হাঁটু ছাড়িয়েছে, কিন্তু ওরটা হাঁটুর প্রায় পাঁচ ইঞ্চি ওপরে এসেই শেষ হয়ে গেছে। তবে এই পরিবেশে কিছু বেমানান নয়, কারণ কয়েকজন কে দেখেছি যে মিনি স্কার্টের মতন অর্ধেক থাই শাড়ির বাইরে নগ্ন, মানে যাদের উচ্চতা সাধারনের থেকে বেশী। আমরা দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে হেঁসে ফেললাম। অদিতি বলল “উফফ আঁচলটাও যদি একটু লম্বা হত তাহলে ম্যানাজ করতে পারতাম। শালা জড়িয়ে গুঁজে রাখা ছাড়া এটা কোনও কাজেই আসবে না। তবে হ্যাঁ নগ্নতা বোঝা গেলেও আমরা নগ্ন নই। একটু পরেই রাজু এসে হাজির হল। একটা জিনিস না মেনে পারছি না, অন্য কোনও ছেলে হলে আমাদের এই অর্ধনগ্ন অবস্থা টা চোখ দিয়ে উপভোগ করতে ছাড়ত না। কিন্তু হয়ত এখানে থেকে এরকম দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছে বলেই, বা সত্যিকারের কমরেড হয়ে উঠছে বলেই ও যেন আমাদের অবস্থাটা দেখেও দেখল না। ঘরে এসে টেবিলে চা রেখে দিয়ে চলে গেল। বলল “খাবার নিয়ে আসছি, আরতি দিদি তোমাদের যত্ন করতে বলেছে। আমার ঘর এই পাশে। কোনও কিছু দরকার পড়লে ডাকতে ভুলবে না। “ চা টা অখাদ্য তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এখানে এদের যা সংগ্রামের জীবন তাতে চা নিয়ে বেশী মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। কিছুক্ষণ পরে এসে দুটো করে শুঁকনো রুটি আর একটা করে কলা খেতে দিয়ে চলে গেল। রুটি শুধু শুধু খেতে হবে? না দেখলাম চিনিও দিয়ে গেছে। বেঁচে থাকতে হলে খেতে হবে। মুখ বন্ধ করে খাওয়া শুরু করলাম। অদিতিই মুখ খুলল “ আমি অদিতি, আর তুমি রুমি। বেশ। একটা কথা বলবে? এতক্ষন যা শুনলে, সব শুনে, দেখে কি মনে হচ্ছে?” আমি খেতে খেতেই বললাম “দেখলাম আর কই? শুধুই তো এক তরফা শুনে গেলাম। তবে একটা কথা হুটপাট করে কিছু করতে যাওয়া বোকামি হবে। সব দিক দেখে শুনে ব্যবস্থা করতে হবে।“ ও বলল “তো এখন সারাদিন বসে বসে কি ভ্যারান্ডা ভাজব? দু একটা এরকম গুলি খাওয়া কেস এলে না হয় জমে যেত। “ রাজু কিছুক্ষণ পরে আবার ফিরে এলো। ও রীতিমত ঘামাচ্ছিল। ওকে দেখে বুঝতে পারলাম ওকে সারাক্ষন অনেক দৌড়া দৌড়ী করতে হয়। “চলো তোমাদের ওষুধের জায়গায় নিয়ে যাই।“ গেলাম ওর সাথে।
সত্যি খুব করুণ অবস্থা। আমরা দুজন মিলে বসে বসে যতটা সাধ্য যন্ত্রপাতি আর ওষুধের একটা লিস্ট বানালাম। এদের প্রানের জোর বেশী। তাই ওটি ছাড়াও কাউকে কাউকে হয়ত বাঁচিয়ে দেওয়া যাবে। লিস্ট বানাতে বানাতে অনেকক্ষণ সময় কেটে গেল। মাঝে মাঝে দু একজন ছেলে মেয়ে এসে আমাদের সাথে আলাপ করে গেল। রাজু আমাদের সেই অসুস্থ মেয়েটার কাছে নিয়ে গেল। বয়স সাতাশ কি আঠাশ। কোমরে একবার ছোরার ঘা খেয়েছিল। এখন সেই ঘা পেকে বাজে অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। পট্টি করে ওষুধ বললাম। তবে বুঝলাম ওষুধ বাইরে থেকে আনাতে হবে। অরূপদা এলে বলতে হবে যে অন্তত ওষুধ গুলো ঠিক ঠাক জমিয়ে রেখ। দুপুরের খাবারের আগে একবার আরতির সাথে দেখা হল। ওকে জিজ্ঞেস করলাম “আচ্ছা এই যে বললে এত লাখ লাখ টাকা তোমরা নিয়ে আসছে। তো সব টাকা যায় কোথায়? ওষুধ তো প্রায় নেই, জামা কাপড়ের এই অবস্থা।“ ও আমাকে বলল “ কত গুলো ছেলে মেয়ে এখানে আছে সেটা জানো? দশ লাখ টাকায় কতদিন চলবে? তার পর বন্দুক গুলি অস্ত্রের ব্যবস্থা। সেগুল কিনতে গেলেও আবার দালালি দিতে হয়। তবে আজ সীমা যদি হাতটা মারতে পারে তো পরের কিছুদিন নিশ্চিত। আর তাছাড়া অরূপদা নিজে গিয়ে বাইরে অনেক মেয়েদের সাহায্যও করে। তারা এখানকার মেম্বার নয়। কিন্তু সমস্যায় পড়েছে। তখন এখানকার মেয়েদের নিয়ে গিয়ে তাকে সাহায্য করা হয়। অর্থ সাহায্যও করা হয়। বুঝলাম অরূপদার মন বিশাল বড়। দুপুরে দেখলাম সব ছেলে মেয়েরা নগ্ন হয়ে কল পারে গিয়ে স্নান করে নিচ্ছে। কারোর কোনও লজ্জা নেই। দিয়ে ভেজা গায়েই ধুতি শাড়ি এইসব জড়িয়ে নিয়ে চলে গেল। কাপড় এত পাতলা যে শোকাতে বেশীক্ষণ লাগবে না। কিন্তু এই মুহূর্তে ওরা গায়ে কাপড় থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেকে নগ্ন। ভেতরের পুরো শরীরটা শাড়ির বাইরে দেখা যাচ্ছে। ছেলেদেরও একই হাল। আমার মনে পাপ আছে, বার বার নজর চলে যাচ্ছিল ছেলেদের নিম্নাঙ্গের দিকে। কিন্তু না মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। আমি আর অদিতি ওদের সবার স্নান হয়ে যাওয়ার পর কল পারে গিয়ে স্নান সারলাম। তবে আমরা ওদের মতন নগ্ন হয়ে স্নান করলাম না। পরনের শাড়িটা দিয়ে শরীরটা ঢেকেই স্নান করলাম। তারপর ওদের মতন শাড়ি পরা নগ্ন শরীরে ঘরে ফিরে ভিজে শাড়িটা দিয়েই শরীরের যতটা জল পারা যায় ঝেড়ে অন্য শাড়িটা পরে ভেজা শাড়িটা মেলে দিলাম। এই সময় অদিতি একটা অদ্ভুত প্রশ্ন করে বসল। ইতিমধ্যে আমরা দুজন দুজনকে নগ্ন অবস্থায় দেখে ফেলেছি, আর কথা বার্তায় অনেক সহজ হয়ে গেছি। “ আচ্ছা এখানে যে একটাও জানলার কপাট নেই, মশার কামড় খেয়ে মরতে হবে না তো?” আমি কোনও উত্তর দিতে পারলাম না এর। প্রশ্নটা নেহাত ভুল নয়। কিন্তু এর কি উত্তর দেব। ও হ্যাঁ আমাদের কালকের শাড়িগুলো রাজু নিয়ে চলে গেছিল।
এখানে একটা জায়গায় খাবার পরিবেশন করা হয়। সবাই লাইন দিয়ে থালা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কিছুটা জেলের কয়েদীর মতন ব্যাপার। আমরাও গিয়ে লাইনে দাঁড়য়ে পড়লাম। দেখলাম অনেকেরই পরনের শাড়ি ইতিমধ্যে শুঁকিয়ে গেছে। পিছন থেকে আওয়াজ এলো। “ এই ওদের আগে নিতে দাও। সুজাতাকে ওরা বাঁচিয়েছে আজ। “ কোনও হাঁসপাতাল হলে হয়ত আমি বলতাম এখন বাহাত্তর ঘণ্টা দেখতে হবে। কিন্তু এরা সেই সব ব্যাপারে বিশ্বাস করে না। গুলি বেড়িয়ে গেছে তার মানে হল বেঁচে গেছে। তবে, সুজাতা সত্যি সেরে উঠেছিল। আর সেক্ষেত্রে ওষুধের থেকে বেশী কাজ করেছিল ওর নিজের মনের জোর । ওরা সম্ভ্রমে পাশে সরে গিয়ে আমাদের আগে যেতে দিল। আমরা একটু অপ্রস্তুত হয়েই বলে ফেললাম “ না না আমরা তো শুধু বসেই আছি। তোমরাই আগে নিয়ে নাও। আমরা বরং পরে নেব। “ আমরা লাইন ছেড়ে বেড়িয়ে এলাম। আজ ওদের জন্য ভাত ডাল আলু সিদ্ধ আর একটা করে ডিম সিদ্ধ হয়েছে। রোজ ডিম ওদের বরাদ্দে জোটে না। তাই আজ ওরা খুব খুশি। অদিতি আমার হাতটা চেপে সেই মহিলার কাছে এগিয়ে গেল যে ওদের আদেশ দিয়েছিল। এর বয়সও চল্লিশের কিছু নিচে। ওর নাম রাকা। বলল “তোমরা আমার সাথে খেও। “ অদিতি জিজ্ঞেস করল “বিনীতাদি ছাড়া আর কি কেউ বাইরে আছে?” ও হেঁসে বলল “ বুঝলাম অরূপদা তোমাদের বলেছে।“ আমি বললাম “ না না। আরতিদি বলেছে। “ ও বলল “হ্যাঁ আরও চার পাঁচ জন এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। “ সবার খাওয়া শেষ হতে আমরাও বসলাম খেতে। বসলাম মানে একটা করে পাথরের ওপর পেছন ঠেকিয়ে রাখা আর কি।“ লক্ষ্য করলাম ও খাওয়ার সময় কোনও কথা বলে না। হঠাত দেখলাম অরূপদা কোথা থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে হাজির হয়েছে। এই খাবার কিছু আছে। আজ তখন যেতে পারিনি। এখন খেয়ে দেয়ে আবার যাব। একবার চোখ ঘুরিয়ে আমাদের দেখে বলল “ এখানে খাবার দাবার খুব সাধারণ। মানিয়ে নিতে একটু কষ্ট হবে। তবে আমি চেষ্টা করছি আরও দুজনকে খোঁজার। তবে তোমরা যে এই পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছ সেটা দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। “ শেষ কথাটা বোধহয় আমাদের অর্ধনগ্ন অবস্থাটা দেখে বলেছে, কে জানে। একজন ছুটে এসে ওর হাতে একটা থালা ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল। আমাদের মতই ও খাবার তুলে নিয়ে মুখ বুজে খাওয়া শুরু করে দিল। অদিতি খুব কম খায়। আমার কিন্তু ওদের খাবার মন্দ লাগলো না। ছোট বেলায় কতবার মার হাতে এরকম খাবার খেয়েছি। ওরা ভাত ডাল আর আলু একসাথে সিদ্ধ করে নেয়। একটা অদ্ভুত খিচুড়ির মতন ঘ্যাঁট। পরে দেখেছিলাম ভাঁড়ারে থাকলে আরও কিছু টুকটাক সব্জিও পড়ে তাতে। আজ সব্জি নেই ডিম। তবে আমার ঝাল খেতে ভালো লাগে। এদের খাবারটা একটু ঝাল ঝালের দিকেই। আমি আরেকবার ওই ঘ্যাঁটটা নেব কি না ভাবছি, এই সময় রাকাদি বোধহয় আমার উশখুশ ভাব দেখে বলে উঠলো “যা খাবার আছে এই। আরেকটু খেতে চাইলে নিতে পার। বাড়ন্ত হলে জানিয়ে দেওয়া হবে। “ কথা শুনে অরূপদা মুখ তুলে চাইল। “তোমরা কি নিতে লজ্জা করছ না কি? নাও নাও। আজ খাবার বাড়ন্ত নয়।“ ওর খাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। ও থালাটা নিয়ে কল পাড়ের দিকে রওয়ানা দেবার আগেই অদিতি বলে উঠলো “ আচ্ছা আমরা তো সারা দিন বসেই আছি। তেমন কোনও কেস না এলে করব টা কি সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। “ অরূপদা বলল “ কেস এখানে শহরের মতন পাবে না। বড় লোকদের একটা ফোঁড়া হলেও ওরা ডাক্তারের কাছে ছোটে, কিন্তু এখানে নাভি শ্বাস না উঠলে কেউ তোমাদের জ্বালাবে না। তবে সেই দিনই তোমাদের কেরামতি দেখানোর পালা। ঠিক আজ যেমন দেখালে। এখানে ডাক্তার থাকাটা পর্যাপ্ত নয় কিন্তু প্রয়োজন। “ এর পরের কথাটা শুনে আমার রক্ত আবার হিম হয়ে গেল। “এখানে মাসে পাঁচ ছয় জন করে অন্তত মারা যায়। কোনও মাসে এর ব্যতিক্রম হয় না। তোমরা যত দিন আছ ততদিন যদি সেই সংখ্যাটা একটু কমাতে পারো তো তাতেই আমরা কৃতজ্ঞ। তবে হ্যাঁ কারুর শরীর খারাপ হলে এমনিতে গিয়ে দেখতে পারো। তাতে আমি বাঁধা দেবার কে। “ কথা গুলো ব্রেন অয়াশ মার্কা টোনে বললেও কথাটা সত্যি। এরা মরতে বসলে তবেই আমাদের কাছে আসবে। অদিতি বলল “সে না হয় হল, কিন্তু আমরা কি এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে পারি? চিন্তা নেই পালানোর চেষ্টা করব না। কিন্তু ক্যাম্পের মধ্যেই ঘুরে বেরানো। বা ওদের ট্রেনিং দেখা?” অরূপদা বলল “স্বচ্ছন্দে। এতে জিজ্ঞেস করার কি আছে। যেখানে সেখানে তোমরা ঘুরে বেড়াতে পারো। সব কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে পারো। কেউ বারণ করবে না। “ আমি বললাম “ মাঝে মাঝে গিয়ে রান্নায় হাত লাগালে কি তোমার আপত্তি থাকবে?” অরূপদা বলল “ দুটো পাগল এসে জুটেছে এখানে। আই উইল বে গ্ল্যাড ইফ ইউ শেয়ার আওয়ার ওয়ার্ক অ্যান্ড পেইন। ধন্যবাদ।“ থালা ধুয়ে ফিরে আসার পর আমাদের বলল “ আর কিছু প্রয়োজন হলে ইউ নো হুম টু আস্ক। আমি বলি রা রা। রাজু আর রাকা। চললাম রাকা। সাবধানে থেকো তোমরা। আমি কাল সন্ধ্যার আগে ফিরছি না। আরতিকে জানিয়ে দিও প্লীজ।“
খাওয়া দাওয়ার পর আমরা আমাদের ঘরে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। একটা জিনিস আগেই দেখেছি অদিতির সারা শরীর আমার মতই নির্লোম। সত্যি বলতে কি আমি এরকম নোংরা ভাবে থাকতে পারব না। জানলার বাইরে দেখলাম রাজু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিড়ি টানছে। অদিতি উঠে গিয়ে ওকে বলল “এই ছোকরা একটা বিড়ি দাও না।“ রাজু ওর দিকে হাত দেখিয়ে দৌড়ে কোথায় একটা চলে গেল। আমি ওকে বললাম “তুই বিড়ি খাস?” আমরা আস্তে আস্তে তুই তুকারিতে নেমে এসেছি। তবে ঠিক করেছি যে বাইরে সবার সামনে তুমি সম্বোধন করব। জবাব এলো “যা পাই সব খাই।“ রাজুর হাত থেকে বিড়ি নিয়ে আগুণ জ্বালিয়ে কয়েকটা সুখটান দিয়ে পেছনের জানলা দিয়ে ফেলে আবার এসে শুয়ে পড়ল। রাজু তখনও জানলার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অদিতি আমাকে ফিস ফিস করে বলল “ কি মনে হচ্ছে ভাওতা না ভালো?” আমি ও একই রকম ফিসফিস করে বললাম “কে?” ও বলল “ওই অরূপ মাল টা।“ মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলাম জানি না। আমি যেটা স্নানের সময় ভেবেছিলাম সেটা অদিতিই আমাকে আগে বলল “এই শোন এরকম নোংরা ভাবে থাকতে আমি পারব না। আর দুদিন পরে এদের মতন হয়ে যাব। রাজুকে বলে একটা রেজার জোগাড় করবি?” আমি হেঁসে বললাম “ আমিও ঠিক সেটাই ভাবছিলাম। তবে রেজার বলতে তো ও বোধহয় নিজেরটা দিয়ে দেবে। “ ও বলল “ ছেলেটার কি এইডস আছে?” আমরা দুজনেই হেঁসে ফেললাম। আমি উঠে গিয়ে রাজুকে বললাম “এই ছেলে। আরেকটা উপকার করবে আমাদের?” ও বলল “কি বলো না।“ আমি বললাম “দাঁড়ি কামানর রেজার আছে?” ও বলল “হ্যাঁ।“ আমি বললাম “বুধবার আর শনিবার আমার ওটা চাই। রাত্রে দিলেই হবে।“ ও চোখ তুলে জিজ্ঞেস করল “হাতের শিড়া কাটবে?” পেছন থেকে রমার আওয়াজ এলো আজ এই প্রথম। কালকের পর এই প্রথম। “না। ওরা কি করবে সেটা বুঝে তোমার কাজ নেই। চেয়েছে, দিয়ে দেবে। (একটু ভেবে বলল), না থাক, ওর কাছ থেকে নিতে হবে না। আমিই পাঠিয়ে দিচ্ছি। বাই দা ওয়ে প্রথম দিনেই সাকসেস। খুব ভালো।“ একটু পরে একটা পরিষ্কার রেজার নিয়ে এসে দিয়ে চলে গেল রাজু। ও নিজেও নাকি আজ যাচ্ছে আলির সাথে। আর ওর সাথে থাকবে দুটো বন্দুক। কি করে জানলাম সে কথায় গিয়ে লাভ নেই। লোকের কথা শুনেই জানতে পেরেছি। আর কি? রাজুর নাকি ভীষণ গায়ের জোর । চেহারা ভালো সেটা আগেই বলেছি। তবে গায়ের জোর যে মারাত্মক সেটা এখনও বুঝি নি। আমাদের ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল বিকালের পরই । দুপুরের খাবারের পর ওদের এক প্রস্থ ট্রেনিং হয়ে গেছে। এখন সবাই মানে ছেলে মেয়েরা এর ওর গায়ে ঢলে পড়ে নির্মল হাঁসি ঠাট্টায় মেতে আছে। সকালে যতগুলো ছেলে দেখেছিলাম এখন মনে সংখ্যা তার থেকে একটু বেশী। আমি আর অদিতি এখানে প্রায় এক ঘরে হয়ে আছি। সন্ধ্যা নেমে এলো। বাইরে গ্রাম্য গান শুরু হয়েছে। প্রচুর হাঁসি ঠাট্টার শব্দ আসছে। রাজু একবার বলতে এসেছিল, “গ্রামের মহুয়া চলবে?” অদিতি এমন ভাবে তাকিয়েছে যে ও আর দাঁড়ায় নি। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বাজবে খুব বেশী হলে (কারণ আমাদের হাতে ঘড়ি নেই) বাইরে থেকে সম্মিলিত গানের শব্দটা হঠাত করে চিৎকারে পরিণত হল। কেন ঠিক বুঝতে পারলাম না। একটা অচেনা মেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে বলল “বাজে অবস্থা। তাড়াতাড়ি আসো।“ অদিতি শুধু একটাই কথা বলল “আবার?” বললাম “চল। এখন বসে থেকে লাভ নেই। ওদের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। “ একটা গুলি খেয়েছে তলপেটে। একটা ছাব্বিশ বছরের মেয়ে।
নাম স্নিগ্ধা। সকালের মতন সবাই ওকে ঘিরে রেখেছে। ওষুধ খুব কম। কিন্তু তাতেই যা করার করতে হবে। ভীষণ ছিপছিপে পেটানো শরীর। পুলিশের গুলি খেয়েছে। কিন্তু মাল হাত থেকে ছাড়েনি। লাখ সাতেকের জিনিস। তবে নগদ টাকা নয়। আমি না বলে পারলাম না “এ কি রোজ হয়?” জানি না কে পিছন থেকে বলল “হ্যাঁ। প্রায়ই হয়।“ অদিতি আমাকে বলল “হেভি সিডেটিভ দেবো কি?” আমি উত্তর দিচ্ছি না দেখে বলল “ কি মনে হচ্ছে পারবে?” (সবার সামনে আমরা তুমি করেই কথা বলব।) বললাম “চেষ্টা করে দেখতে হবে। আবার সেই ওপেন এয়ার ওটি। সুজাতাকে নিয়ে যাওয়ার পর জায়গাটা পরিষ্কার করে দিয়েছে কেউ একজন। আবার চলল যমে মানুসে টানাটানি। স্নিগ্ধা চেতনা হারিয়েছে অনেকক্ষণ। তবে ঠিক ওটি তে যা ব্যবহার করা হয় সেই ওষুধ আমাদের কাছে নেই। তাই মাঝে মাঝেই স্নিগ্ধা বলে উঠছিল “বাবা বাবা বাবা” । দ্বিতীয় সাকসেস। মেয়েটা বেঁচে গেল। প্রচুর জ্বর ছিল গায়ে যখন এসেছিল। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার মিনিট তিরিশেকের মধ্যে জ্বর গায়েব। সব কিছু যখন শেষ হল তখন বোধ করি সাড়ে নটা বেজে গেছে। আমি কাঁটা ছেঁড়া করলেও, অদিতি একটা জিনিয়াস তাতে সন্দেহ নেই। স্নিগ্ধা নিজেই ওঠার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বাকিরা ধরাধরি করে ওকে ওর ঘরে পৌঁছে দিয়ে এলো। আমরা ঘরে ফিরে এলাম। অদিতি বলল “ উফফ।“ সত্যি উফফ। একদিনে এত ঘটনা আর নেওয়া যাচ্ছে না। আমার চোখ বুজে এসেছিল। জানি না কখন খাবারের জন্য ডাক পড়বে। বাইরে আর এখন গান হচ্ছে না। হঠাত বিছানার ওপর কেমন একটা ঝাঁকানি অনুভব করে তড়াক করে উঠে বসলাম। আমার বুকের আঁচল নেমে গিয়েছিল। তাড়াতাড়ি নগ্ন স্তনগুলোকে ঢেকে দেখলাম অদিতি উঠে দাঁড়িয়ে শাড়ি ঠিক করছে। মানে আঁচলটা কোমরে গুঁজছে। ভঙ্গীটা যেন এমন যে বাইরে গিয়ে কেটে ফেলবে বা নিজেকে বলিদান দিয়ে দেবে। আমি বললাম “ব্যাপারটা কি? যাচ্ছিস কোথায়?” ও বলল “একটা হেস্ত নেস্ত হওয়া দরকার। চল।“ আমি বললাম “সে তো বুঝলাম। কিন্তু হেস্ত নেস্তটা করবি কার সাথে?” বলল “ অরূপদা নেই তো কি হয়েছে বন্ধু মাদাম তো এসে গেছে। “ আমার তন্দ্রা মতন এসেছিল। উঠে ঠিক বুঝতে পারছিলাম না ও কি বলতে চাইছে। বললাম “বল না কি হয়েছে?” বলল “ বিনীতা এসেছে। চল।“ আমাদের নিজেদের থেকে বেরোতে হল না। দেখলাম একটা মেয়ে এসে কি যেন একটা চেঁচিয়ে বলেই চলে গেল। আমি আসলে আরেকবার শুয়ে পড়বার চিন্তা করছিলাম। কিন্তু না এত লাফালাফি দেখে জিজ্ঞেস করলাম “ওই মেয়ে কি বলে গেল। আমার কানে কিছু ঢোকেনি। “ অদিতি বলল “অন্য ভাষায় কিছু একটা বলে চলে গেল। এল, চলেও গেল, কিন্তু কেন বুঝলাম না। “ একটু পরে রাজু এসে বলল “বিনীতাদি এসেছে। তোমরা চলো। “ অদিতি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল “লোকাল প্রাইম মিনিস্টার তলব করেছেন। চল। দেখি এ কোন লেভেলের আঁতেল।“ আমি উঠে পড়েছিলাম। ইশারায় ওকে বুঝিয়ে দিলাম আস্তে কথা বলতে। বাইরে বেড়িয়ে দেখলাম স্নিগ্ধার ঘরের সামনে বিশাল ভিড় আর ভীষণ চেঁচামেচি। আমরাও ভিড়ের বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম। ভাব খানা এমন যে এক্ষুনি এখানে হরির লুট হবে।
দেখলাম জিন্স আর শার্ট পরা একজন মহিলা বেড়িয়ে এলেন। আরতি কে দেখলাম ওর দিকে এগিয়ে আসতে। ও নিজেও হাত তুলে আরতির সামনে গিয়ে চেঁচিয়ে বলল “ উই হ্যাভ ওয়ান টু ডে। অ্যান্ড দ্যাট টু... থ্রি টাইমস। “ ওরা কয়েক সেকন্ড নিজেদের জড়িয়ে ধরে রইল। আমি ফিস ফিস করে জিজ্ঞেস করলাম “তুই জানলি কি করে যে এই বস্তুটাই বিনীতাদি?” ও আরও গলা নামিয়ে বলল “বাইরে থেকে চিৎকার শুনলাম যে বিনীতাদি এসে গেছে। এসে গেছে। হুররে। খুব সোজা।“ আমি সোজা হয়ে দাঁড়ালাম। মহিলা গলা তুলে সবাই কে বলল “সবাই শোনো, সকালে সুজাতা, এখন স্নিগ্ধা এই হল দুটো জয়। আমি যা নিয়ে এসেছি সেটাকে ধরলে নগদ সাত লাখ টাকা হবে। “ আরতি ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল “কিন্তু আমি যে শুনলাম চার লাখ।“ বলল “তোমাদের অরূপদার কানটা গেছে। কান শুনতে ধান শোনে। চার লাখ দিয়ে থাকবে সাত লাখ সেটাই বলেছিলাম। তো যাকগে। আর এসেই শুনলাম আমাদের সীমা একটা ভীষণ নোংরা লোককে কাঁত করতে গেছে। যদি সাকসেস আসে তো চার নম্বর।“ আমি অদিতির দিকে ফিসফিস করে ঘাড় নামিয়ে নিয়ে বললাম “ এর সাথে ঝগড়া করতে আসছিলিস?” ও বলল “ সেটা করবো, তবে সবার সামনে নয়। মহিলা ওনার স্বামীর থেকেও বেশী নাটুকে।“ বিনীতাদি বলে উঠল “ওহহ। আমাদের নতুন দুই কমরেড কোথায়?” আমরা সতর্ক হয়ে উঠলাম। এক মুহূর্তে আমি ফিসফিস করে ওর কানে বলে দিলাম “চেপে যা। ফস করে কিছু বলে বসিস না।“ রাজু বলল “ওই ওরা পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। “ রাজুকে দেখতে পাই নি। শুধু গলার স্বরটা চিনতে পারলাম। সবাই রাস্তা ছেড়ে দিল। বিনীতাদি আমাদের কাছে এসে আমাদের দুজনের কপালে একটা করে চুমু দিয়ে দিল। “আমি ওকে বলতাম বারবার, দুটো ভালো ডাক্তার নিয়ে এসো, এইভাবে প্রান যাবে না। আজ তোরা প্রমান করে দিয়েছিস।“ অদিতি বোধহয় এই নাটকীয় তুই তুকারি শুনে চেঁচিয়ে উঠত, কিন্তু ওর হাতটা এখনও আমার হাতে ধরা। ও কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু কি বলবে জানি না, তাই আগেই হাতে একটা জোড়ে চাপ দিলাম। ও একটু থিতু হয়ে বলল “ আপনার সাথে কিছু কথা ছিল।“ বিনীতাদি বলল “ আপনি নয় সোনা। তুমি। আমরা সবাই এখানে সমান। আর বয়সে যারা ছোট তাদের কে আমি মাঝে মাঝে তুই বলি, কিন্তু সেটা ভালোবেসে, ছোট বলে নয়। আমি চেঞ্জ করে তোমাদের ঘরে আসছি। তোমাদের আর আসতে হবে না। আজ সেলিব্রেশনের দিন। দেরীতে খেলেও হবে। আর তোমাদের অরূপদা এসে মাতব্বরি করলে বলে দিও আমি গ্র্যান্ট করেছি। (আমাদের দিকে ফিরে বলল) আমি আসছি দশ মিনিটে।“ একটু থেমে বলল “শুধু সীমাকে নিয়ে একটু চিন্তিত। কারণ আলির কাছ থেকে কোনও খবর আসে নি এখনও। তবে সেটা সাকসেস হলে তো গ্র্যান্ড ফিস্ট। “ জমায়েত ভেঙ্গে গেল।
Posts: 380
Threads: 1
Likes Received: 169 in 141 posts
Likes Given: 2,131
Joined: Apr 2019
Reputation:
4
•
Posts: 51
Threads: 1
Likes Received: 57 in 24 posts
Likes Given: 19
Joined: Feb 2020
Reputation:
12
পুরো গল্পটা পোস্ট করলে ভালো হয়
অণু-পরমানু ফ্যান্টাসি গল্প ডেলি প্যাসেঞ্জার
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
আট
বিনীতাদি আসার আগে আরেকজনের ঘায়েল শরীর এসে পৌঁছাল শিবিরে। সে আর কেউ নয়। সীমা। তবে আঘাত গুরুতর নয়। ও ভেবেছিল মক্কেল ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু সে ঝিমিয়ে পড়েছিল মাত্র। শব্দ শুনে জেগে উঠতেই সীমা বন্দুক বার করে। কিন্তু গুলি করার আগেই ওর হাত ধরে ফেলে ছেলেটা। ভীষণ গায়ের জোর । সীমা ওর থেকে হাত ছাড়িয়ে কোনও মতে পালায়। শেষে অ্যাটাচড কিচেনে পৌঁছে (বড় বড় স্যুইটে যেমন থাকে) হাতে একটা ছুরি নিয়ে ওকে আক্রমণ করে। কিন্তু পারে না। ছেলেটা ওর হাত থেকে ছুরি ছিনিয়ে নিয়ে ওরই কোমরের নিচে বসিয়ে দেয়। আর সীমা শেষ মুহূর্তে ওর তলপেটে (মানে যাকে চালু কথায় আমরা বলি বীর্য থলিতে) একটা সজোরে লাথি কষায়। ছেলেটা নেতিয়ে পড়ে মাটিতে। ও সাথে সাথে একই জায়গায় বার দশেক লাথি কষায়। তারপর মাল নিয়ে কোনও মতে বেড়িয়ে আসে সেখান থেকে। ছেলেটা তখন ব্যথায় কাতর। কিন্তু পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে সেটা ও বুঝতে পেরেছে। আলি ওকে নিয়ে সোজা ওখান থেকে চলে এসেছে। অনেকটা রক্ত বেড়িয়েছে। কিন্তু তা ছাড়া আঘাত প্রান হারক নয়। আমাদের কাজ শেষ হওয়ার পর আবার আমরা ফিরে এসে বসলাম নিজেদের ঘরে। কখন যে খাবার দেবে কে জানে। আমি অদিতিকে বললাম “ আমি কিন্তু ওদের সবার আগে ঘুম থেকে উঠে পটি করতে যাব। তারপর তুই যাস। ওদের সাথে বসে এইভাবে আমি করতে পারব না। “ বিনীতাদি এলো। আবার চুমু খেলো আমাদের কপালে। এখন ও আমাদেরই মতন স্বল্প বসনা হয়ে এসেছে। স্তনগুলো যে যেকোনো পুরুষের কাছে লোভনীয় সেটা না বললে বাজে কথা বলা হবে। পরে জেনেছিলাম বিনীতাদিই নাকি এক সময় সব থেকে বেশী পুরুষকে গ্রাস করেছে, মানে এক কথায় লুটেছে। পেটের নিচে সামান্য মেদ থাকলেও তা সত্যি সামান্য। সারা গায় একফোঁটা লোম নেই। বগল যোনীদেশ আর স্তনের চারপাশ যেটুকু আবছা আলোর মধ্যে শাড়ির ভেতর থেকে বুঝতে পারছি সম্পূর্ণ নির্লোম। আঙুলগুলোও ম্যানিকিওর করা। আগের বার যখন আমার সাথে ঘনিষ্ঠ হয়েছিল তখনই পেয়েছিলাম, এখন ব্লাউজ আর অন্তর্বাস না থাকায় আরও তীব্র ভাবে পেলাম সেই সুগন্ধ। বিদেশী পারফিউমের গন্ধে মাতোয়ারা ওর শরীর। একটু ঘামের গন্ধ যেন মিশে আছে, কিন্তু এই পরিবেশে বেমানান। বোধহয় বড় খরিদ্দারকে লোটবার জন্য এই প্রস্তুতি। আমরা বিছানায় বসলাম আর ও বসল চেয়ারে। “আজ তোদের বড় ধকল গেছে না?” কিন্তু তিনটে নিশ্চিত মৃত্যু থেকে পাড় পেয়ে গেলাম আমরা। ধন্যবাদ।“ আমাদের তিনজনের খাবার এই ঘরেই দিয়ে গেল। এই বেলা নিরামিষ। সেই খিচুরি মার্কা ঘ্যাঁট। অদিতি বলল “ আচ্ছা তুমিই তাহলে সেকন্ড ইন কম্যান্ড।“ বিনীতাদি বলল “আমি কোনও কম্যান্ড নই। আমার কর্তা হল কম্যান্ড। তবে তোমাদের অনুযোগ অভিযোগ আমাকে বলতে পারো।“ অদিতি নিজের থালাটা টেবিলে রেখে দিয়ে বলল “ প্রথম এই ওষুধ দিয়ে কিছু হয় না। তারপর তোমাদের এত টাকার কিছুই যদি ওষুধ আর যন্ত্রপাতিতে না আসে তাহলে আমরা কিছু করতে পারব না। তাছাড়া, এখন তুমি এসে গেছ। তাই তোমাকেই আবার বলতে হবে।“ বিনীতাদি খাওয়া থামিয়ে বলল “ আমাকে রাজু লিস্ট দিয়েছে। সব আনাবো কালকেই। মানে দিয়ে যাবে। কথা দিচ্ছি। তবে আমাদের অনেক কে সাহায্য করতে হয়। আমাদের টাকা বেশী নেই। আমরা ভুল ভাল ওষুধ কিনে টাকা খরচ করতে পারব না। তাই সত্যি সত্যি ডাক্তার না বললে সেই ওষুধ কিনব কেমন করে? আচ্ছা পরের কথাটা কি সেটা বল?” অদিতি ওর এই তুই তুকারি মার্কা সম্বোধন অগ্রাহ্য করে বলল “আমরা অরূপদার কাছে থেকে দুটো পারমিশন পেয়েছিলাম। জানি না তুমি সেগুল মানবে কি না।“ বিনীতাদি জিজ্ঞেস করল “কি বলেছে ও?” অদিতি বলল “ ও চেয়েছিল সময় পেলে রান্নায় হাত লাগাবে। আর আমি বলেছিলাম যে আমি আর ও , মানে আমাদের তো কোনও ট্রেনিং নেই। আমরা যদি ক্যাম্পের মধ্যে এখানে ওখানে ঘুরতে পারি। তো ও বলেছিল যে আমরা যেখানে খুশি যেতে পারি। তো এখন তুমি হলে মালকিন...।“ বিনীতাদি বলল “এখানে সবাই মুক্ত আর ফ্রি। কেউ মালকিন নয়। আর তোমরা সময় কাটানোর জন্য যা চাইছ তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই। আর থাকবেই বা কেন?” এত ঘটনা হওয়ার পরও যে সেই রাত্রে আরও কিছু বিস্ময় আমাদের জন্য থাকতে পারে সেটা তখনও বুঝতে পারি নি। আমরা খাবার খেয়ে মাঠে গিয়ে হালকা হয়ে এসে শোবার উপক্রম করছি এমন সময় অদিতি একটা মজার কথা বলল। অশ্লীল শোনালেও প্রস্তাবটা মন্দ নয় মোটেই। “শোন না। আমি ঠিক করেছি যে কাল সকাল থেকে পেট চেপে পড়ে থাকব। পেছন থেকে হাওয়া ছাড়লেও যাব না। যাব রাতের খাওয়ার পর। কেমন আইডিয়া বল তো?” বুঝলাম দিনের আলোতে ও মাঠে গিয়ে সবার মাঝে বসে এইসব করতে পারছে না। আমি বললাম “মন্দ আইডিয়া না। ণে চল এখন ঘুমা।“ বাইরে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। আগে শুনেছিলাম ট্রেনের ঝাঁকুনি মানুষকে ঘুমাতে সাহায্য করে। আজ বুঝলাম ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকও সেটা খুব ভালো ভাবে করে। কিন্তু আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। তখন কটা বাজে বলতে পারব না। ঘুম ভাঙল অদিতির ঠেলায়।
আমি আবার ধড়মড়িয়ে উঠে বসলাম। বুকের ওপর সংক্ষিপ্ত আঁচলটা ঠিক করে অন্ধকারে ওকে বললাম “কি রে কি হয়েছে আবার? পুলিশ এসেছে?” ও আমার ঠোঁটে নিজের আঙুল চেপে দিল। আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে পেছনের দিকের জানলার সামনে গিয়ে নিজের বাম কানটা জানলার গরাদের উপর চেপে ধরল। আমিও উঠে পড়লাম। আমিও গিয়ে নিজের ডান কানটা চেপে শোনার চেষ্টা করলাম ও কি শুনতে চাইছে। বাইরে দেখলাম ঝম ঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছে, এটা অবশ্য ঘুম ভাংতেই বুঝেছি। আমার ইদানীং এসি তে শোয়ার অভ্যেস। কিন্তু এই ঠাণ্ডা হাওয়ার জন্যই বোধহয় আরামে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। বাইরে ক্রমাগত ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আর তার সাথে বৃষ্টির ভয়ানক শব্দ। দূরে বোধহয় কোথাও বাজ পড়ছে। একটা যেন মেয়েলি গলার স্বর পেলাম। প্রথমে শুনে মনে হল অনেক অনেক দূর থেকে আসছে, কিন্তু আরও কয়েকবার শোনার পর বুঝতে পারলাম ঠিক পাশের ঘর থেকে বা তার পাশের ঘর থেকে আসছে। কেউ যেন গুঙিয়ে গুঙিয়ে কাঁদছে। আমি বললাম “কে কাঁদছে রে এত রাতে?” অদিতি ইশারায় বোঝাল ও বুঝতে পারছে না। ও জানলা থেকে সরে গিয়ে ঘরের পিছনের দরজাটা যতটা শব্দ না করে পারা যায় খলল। আমি ওকে বললাম “এখন ভিজিস না। শুকাবি কোথায়?” অবশ্য আমাদের সকালে পরা কাপড় জোড়া শুঁকিয়ে কাঠ। সেগুল ভাঁজ করে আমিই রেখে দিয়েছিলাম বিকালে এসে। তবে এখানে কাপড়ের সংখ্যা এতই বাড়ন্ত যে একটু সামলে নিয়ে চলতে হয়। অদিতি আমার কথা শুনে শুঁকনো কাপড়গুলোর দিকে তাকিয়ে কয়েক সেকন্ড ভেবেই বলল “মন্দ বলিস নি।“ তারপর ও যা করল সেটা আমি কল্পনা করতে পারি নি। ও দরজা থেকে সরে দাঁড়িয়ে এক টানে নিজের শরীর থেকে ওই পাতলা শাড়িটা খুলে বিছানার ওপর ফেলে দিল। ওর ফর্সা নির্লোম শরীরটা আবছা আলোয় পুরো নগ্ন। আমি কিছু বলতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু তার আগেই ও আমার ঠোঁটে আঙুল ঠেকিয়ে চুপ করিয়ে দিল। কোনও কথা হল না আমার মধ্যে। আমিও কয়েক মুহূর্তের মধ্যে শাড়ি ছেড়ে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে গেলাম। বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। মেঘের আড়াল থেকে চাঁদ মামাকে আর দেখা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে বিদ্যুতের আলোয় আমাদের নগ্নতা ফুটে উঠছে অপরের সামনে। কিন্তু আমরা একে অপরের নগ্নতা নিয়ে ব্যস্ত নই মোটেই। বৃষ্টি মাথায় করে পেছনের দরজা দিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। এক মুহূর্তও লাগলো না, আমরা ভিজে কাক হয়ে গেলাম। ভীষণ কণকণে ঠাণ্ডা জলের আক্রমণ। অদিতি আমাকে ফিস ফিস করে বলল “ সামনে একটা কালো পাথর আছে বড়। দেখে পা ফেলিস নইলে হয় পা মচকাবে, নয়তো কেটে একসা হবে। এই মিনি স্কার্ট মার্কা শাড়ি পরে সেটা ঢাকতে পারবি না। সো, কেয়ারফুল।“ না আমার পা কাটেনি। কেটেছিল ওর পা। তবে সেটা ফেরার সময়। এখন যাওয়ার কথা বলি। আমরা একদম দেওয়ালের ধার ঘেঁষে এগিয়ে চলেছি। তবে বৃষ্টির ছাঁট আমাদের দিকেই আসছে। চোখ খুলে রাখা অসম্ভব হয়ে গেছে। আর তার চেয়েও বড় বিড়ম্বনা হল, যেখানেই পা ফেলতে যাচ্ছি সেখানেই সরু ধারালো ঘাসের ডগা পায়ের নিচে সুচের মতন বিঁধছে। সাপ খোপ থাকলে তো কথাই নেই। আমি এই বুকে হাঁটা প্রাণীগুলো কে খুব ভয় পাই। অদিতি আমার আগে ছিল। ও পড়তে পড়তে একবার যেন সামলে নিল নিজেকে। একটা এবড়ো খেবড়ো পাথরের ওপর পা দিয়ে স্লিপ করে গেছিল। তবে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায় আমার হাত ধরতে গিয়ে আমার ডান স্তনের উপর নিজের পাঁচ আঙুল বসিয়ে নিজের ভারসাম্য রক্ষা করল। পরে সামলে নিয়ে বলল “ব্যথা লাগলে বলিস, ব্রেস্টে গিয়ে ম্যাসাজ করে দেব। হেভি নরম মাইরি তুই।“ আমি ওর মাথায় একটা চাটি মেরে ইশারা করলাম এগোতে। এমনিতেই চোখ খোলা যাচ্ছে না আর তার ওপর আমার নগ্ন গোপনাং ধরে টানাটানি। প্রত্যেকটা ঘরের পেছন দিকের জানলার উপরে একটা ছোট মতন ছাউনি দেওয়া আছে। তবে ভীষণ ছোট চওড়ায়। আমাদের ঘরের দেওয়াল ছেড়ে একটু এগিয়ে একটা জানলা পেয়েই আমরা নিচু হতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু থমকে গেলাম। মেয়েলি আওয়াজটা এখান থেকেই আসছে। আমরা জানলার তলায় নিচু হয়ে রয়েছি। আমি চোখের উপর থেকে জল মুছে কোনও মতে ওর পাছায় একটা থাপ্পড় মেরে বললাম “ চল কাল রাজুকে ইনিয়ে বিনিয়ে জিজ্ঞেস করব যে কি হচ্ছিল।“ কিন্তু অদিতি আমার হাত চেপে ধরল। যেই মুহূর্তে আমরা নিচু হয়েছি, সেই মুহূর্তে আমরা দুজনেই দেখেছি যে ঘরেরে ভেতর টিমটিম করছে মোমবাতির আলো। কাঁপছে সে আলো, কিন্তু তবু জ্বলে আছে। চোখের ওপর থেকে জল সরাতে সরাতে দেখলাম অদিতি মাথার সামনেটা আস্তে আস্তে জানলার নিচের শেষ প্রান্তে তুলে ধরল। আমার হাতটা ছেড়ে দিয়ে ওই হাত দিয়েই ইশারা করল উপরে উঠে জানলায় চোখ লাগানোর জন্য।
আগে মেয়েলি শব্দটা ছিল ক্ষীণ। এখন অনেক তীব্র। তবে বৃষ্টির প্রকোপ বেড়েছে। তাই এই শব্দ বাইরে কেউ শুনতে পাবে না। এই জানলাতেও কোনও কপাট নেই। শুধু কয়েকটা মর্চে ধরা গরাদ। ভেতরে দেখলাম রাজু জানলার দিকে মুখ করে , অবশ্য ওর মুখটা নিচের দিকে ভীষণ জোড়ে কোমর ঝাঁকিয়ে চলেছে। চোখ দুটো ভালো করে পরিষ্কার করে দেখলাম একজন মহিলা মাটিতে শুয়ে আছে, নগ্ন, ওর স্তনগুলো রাজুর প্রত্যেকটা ধাক্কার সাথে সাথে কেঁপে কেঁপে উঠছে। রাজুর লিঙ্গ যে ওর শরীরের ভেতরে প্রবিষ্ট সেটা বলাই বাহুল্য। এতো ঠাণ্ডাতেও দেখলাম মহিলা আর রাজু দুজনেই গলগল করে ঘামাচ্ছে। দুজনে দুজনের মধ্যে বিভোর। মহিলা কাটা ছাগলের মতন গোঙাচ্ছে। মহিলার স্তন গুলো লাফিয়ে লাফিয়ে উঠছে বার বার। হয়ত খুব বেশী হলে মিনিট দু তিন হবে, তার পরেই মহিলা রাজুকে থামিয়ে ঠেলে শুইয়ে দিল। নিজে চড়ে বসল ওর ওপর। রাজুর লিঙ্গের আকার কি সেটা বলতে পারব না, কারণ সেটা স্পষ্ট ভাবে দেখতে পেলাম কই! মহিলা ওর লিঙ্গের ওপর বসেই বা হাত দিয়ে ওর শক্ত লিঙ্গটা নিজের যোনীদেশের ওপর চেপে ধরে বসে গেল ওটার ওপর। চুল ভর্তি মাথা নিয়ে লুটিয়ে পড়ল ওর মুখের ওপর। চুলে ঢাকা পড়ে গেল ওদের গভীর চুম্বনের দৃশ্য। কিন্তু মহিলার কোমর সাপের ছোবল খাওয়া গরুর মতন লাফিয়ে চলেছে ওর শক্ত লিঙ্গের ওপর। হঠাত মহিলা চুম্বন ভেঙ্গে মুখ তুলল। দু হাত দিয়ে নিজের মুখ থেকে চুল সরাল, বিস্ময়ে দেখলাম, এ কি, এ তো বিনীতাদি। এখন দেখলাম ওনার যোনীদেশও আমার আর অদিতির মতন নির্লোম। বার বার ওঠা নামা করে রাজুর সতেজ লিঙ্গটাকে দিয়ে নিজেকে মন্থন করিয়ে নিচ্ছে। কালো বোঁটাগুলো বুকের ওপর শক্ত হয়ে উর্ধমুখী। রাজু মাঝে মাঝে হাত দিয়ে ওগুলোকে চেপে চেপে ধরছে। বিনীতাদির কোমরের নৃত্য এক মুহূর্তের জন্যও থামেনি। সারা মুখ, স্তন গলা ঘামে ভিজে একসা। মাঝে মাঝে চুল ভর্তি মুখ নামিয়ে নিয়ে গিয়ে রাজুর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরছে। আবার কয়েক মুহূর্ত পর উঠে সোজা হয়ে বসে রতি ক্রীড়ায় মগ্ন। মাঝে মাঝে রাজু খামচে ধরছে ওর গোল ভারী পাছার মাংসপিণ্ড। বিনীতাদির চোখ সুখে বন্ধ। নইলে আজ আমরা ধরা পড়ে যেতাম। হঠাত ওর লাফানর বেগ বেড়ে গেল। খামচে ধরল রাজুর পেশীবহুল কাঁধ দুটো। ভীষণ চিৎকার করে গোঙাতে গোঙাতে ওর কাঁপুনি থেমে গেল। রাজু এখনও থামে নি। নিচ থেকে ওর ভারী শরীরটার ভেতরে নিজের শক্ত দন্ডটা দিয়ে মন্থন করে চলেছে। বিনীতাদি স্থির হয়েই রয়েছে। ওর গোঙানি সেই যে থেমেছে আর শোনা যাচ্ছে না। আর প্রায় এক মিনিট কি তার একটু বেশী পর রাজুও থামল ওকে নিজের বুকের ওপর চেপে ধরে। প্রায় দু মিনিট সব চুপ। হঠাত বিনীতাদি উঠে দাঁড়াল, রাজুর লিঙ্গটা এখন অনেকটা শিথিল। ওর যোনীদ্বার থেকে মুক্তি হয়েছে ওর। ওর লিঙ্গের ওপর থেকে উঠেই নিজের যোনীমুখটা নিজের বা হাত দিয়ে চেপে ধরল। সামনের দরজা খুলে বাইরে বেড়িয়ে গেল। আমরা পাথরের মতন স্থির। ফিরে এল স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতে হাঁটতে, নগ্নতা নিয়ে ওর মাথায় কোনও চিন্তা নেই। “বড় সুখ দিলি অনেক দিন পর। কাল তোকে দুটো বেশী চুমু দেবো।“ রাজু তখনও মাটিতে পড়ে পড়ে হাঁপাচ্ছে। বিনীতাদি বাইরে বৃষ্টির জলে বোধহয় শরীরের গোপনাঙ্গ আর সারা শরীরটা ধুয়ে এসেছে। রাজুর ধুতিটা বিছানা থেকে তুলে নিয়ে নিজের শরীরটা একটু মুছে নিল। “না তোর জ্বর বাঁধিয়ে লাভ নেই। আমাকে ভিজেই যেতে হবে।“ নিজের শাড়িটা মাথার ওপর ধরে দৌড় মারল বাইরের দিকে। রাজু তখনও মাটিতে পড়ে রয়েছে। ওর লিঙ্গ নেতিয়ে গেছে। সেখান থেকে এখনও সাদাটে রস বেরোচ্ছে। রাজু নগ্ন ভাবে উঠেই সামনের দরজাটা ভেজিয়ে দিয়ে ওই ভাবেই শুয়ে পড়ল। আমার হাতে টান পড়তে বুঝতে পারলাম অদিতি বলতে চাইছে চল সরে পড়ি। আমরা তবুও সরতে পারলাম না তখনই। রাজু উঠে ওর খাটো ধুতিটা নিজের নিম্নাঙ্গের ওপর গোল করে আলগা ভাবে জড়িয়ে নিয়ে মোমবাতিটা নিভিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল। আমরা ফিরতি পথে হাঁটলাম। আসার পথে যে বিপদটা হয় নি এইবার হল। অদিতি আমার পেছনে ছিল। ও আমার পাছার মাংসগুলোকে খামছে ধরে হাঁটছিল। মাঝে মাঝে কোমর জড়িয়ে ধরছিল। হঠাত ওর মুখ থেকে আঃ শব্দ শুনে থমকে গেলাম। কপাল খারাপ, পাথরের খোঁচা মুখের ওপর বেকায়দায় পা ফেলেছে। মচকায়নি, কিন্তু কেটেছে। আবার চলা শুরু। দূরত্ব বোধহয় কয়েক হাত, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে অসীম। ঘরে ঢুকেই আমরা প্রথমে শুঁকনো শাড়ি দিয়ে নিজেদের শুঁকনো করে নিলাম। ঠাণ্ডায় কাঁপছি দুজনে। আরেকটা শুঁকনো শাড়ি গায়ে চড়িয়েই আমি মোমবাতিটা জ্বেলে দিলাম। দেশলাই টেবিলেই রাখা ছিল। পিছনের দরজাটাও বন্ধ করে দিয়েছি আমরা। আলো জ্বালিয়ে দেখলাম আমি শাড়ি পরলেও অদিতি তখনও নগ্ন হয়ে ওর অর্ধ শুঁকনো শরীরটা নিয়ে বিছানার ওপর বসে আছে। আমি ওর কাটা জায়গাটা দেখলাম। না গুরুতর কিছু নয়। তবে সেপটিক হতে কতক্ষণ। “কাল তোকে টেটভ্যাক দিয়ে দেব। এই কাঁটা চিহ্ন কেউ দেখতে পাবে না। এইবার শুয়ে পড়।“ একবার মৃদু চাপ দিলাম ওর নরম ডান স্তনের মাংসের উপর। ও একটু চমকে উঠলো। “এটা শোধ বোধ। নে এইভাবে বসে না থেকে গায়ে চড়িয়ে নে। ভগবান করুণ কাল আর কেউ ইনজিওরড না হোক।“ ও চুপচাপ উঠে শাড়িটা আলগা ভাবে শরীরে জড়িয়ে মোমবাতিটা নিভিয়ে আমার পাশে শুয়ে পড়ল।
শীত শীত লাগছে। আর তাছাড়া শরীরে একটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ঘুম আসতে চাইছে না। “এটাকে কি ব্যাভিচার বলা যায়?” প্রশ্নটা শুনে আমি পাশ ফিরে ওর দিকে ফিরে শুয়ে বললাম “ না। ওপেন সেক্স। আর তাছাড়া ছেলেটাও প্রাপ্ত বয়স্ক। সেও যে এনজয় করছিল তাতে সন্দেহ নেই। মাল ঢালার পরও জিনিসটা শক্ত ছিল অনেকক্ষণ। আর পুরো টানটান রিয়েকশন। “ অদিতি আমার দিকে ফিরে নিজের বা হাতটা আমার তলপেটের উপর বিছিয়ে দিয়ে আমাকে শক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে বলল “ খুব সন্দেহজনক। খুব। অনেক প্রশ্ন আছে। আর কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করব না। ভেতরে ঢুকে নিজেদের চোখে দেখতে হবে। সত্যি, ঠিকই বলেছিস, কাল আর কোনও এরকম কেস না এলেই বাঁচি। তবে একটা ভালো জিনিস এই যে, বিনীতা মালটা প্রমিস করেছে ওষুধ আসছে কাল। আমরা খানিকটা বাঁচব।“ আমি ওর নরম হাতটা নিজের দু হাতের মধ্যে চেপে রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম।
আজ অষ্টমী। ঘুম থেকে উঠে দেখলাম আমার বস্ত্র আলুথালু, মানে আমি এক কথায় নগ্ন। ঘুমের মধ্যে কখন নিজের শাড়িটাকে চাদর ভেবে গায়ে নিয়ে নিয়েছিলাম আর কখন যে গা থেকে ফেলে দিয়ে বুঝতে পারি নি। তবে জানলার সামনে কেউ নেই। আমার ভীষণ বেগ আসছে মাঠে যাবার। কিন্তু কাল ঠিক করেছিলাম যে না রাত্রেই করব। কিছুক্ষণ চেপে বসে বেড়িয়ে পড়লাম। অদিতি পাশে নেই। দরজা দিয়ে বেড়িয়ে দেখলাম সামনের শুঁকনো উঠোনে বসে আছে। আমার পায়ের আওয়াজ পেয়ে বলল “কি মাই লেডি লাভ, ঘুম পুড়ল। ওরা বেড়িয়ে যাক। তারপর ব্রাশ হাতে যাব। “ আমরা আজকেও নিজেদের অজান্তে অনেক ভোরে উঠেছি। অদিতির নাকি শরীর চর্চার অভ্যেস আছে। ব্রাশ করার পর এক কাপ চা নিয়ে আমরা হাজির হলাম অরূপদার ঘরে। বিনীতাদি শুয়ে শুয়ে একটা বই পড়ছে। আমাদের দেখে হাঁসি মুখ নিয়ে উঠে বসল। অদিতি খুব সহজ ভাবে জিজ্ঞেস করল “ আমারও দৌড়ানোর অভ্যেস আছে। কিন্তু এইভাবে দৌড়াতে পারব না। মানে ব্রা ছাড়া। আমার ব্যাগটা পেলে একটু সুবিধা হত। “ বিনীতাদি উঠে বসে একটা হাঁক ছাড়ল, “মিনতি, আরতি, মায়া, রমা, সন্ধ্যা কে আছো?” একজন এলো। “ওদের ব্যগগুলো ওদের ফেরত দিয়ে দাও। “ আমাদের দিকে ফিরে বলল “ তবে খুব সেজে গুঁজে ঘুরে বেরিও না। অনেক মেয়ে আছে। যদি ভাবে আমরা পারসিয়ালিটি করছি। এখানে বসেই চা খেতে পারিস।” আবার তুই করে কথা বলতে শুরু করে দিয়েছে। আমাদের দুজনের ব্যাগ এনে আমাদের সামনে রেখে দিয়ে চলে গেল কেউ একটা। অদিতি নিজের ব্যাগের ভেতরটা চেক করতে করতে বলল “তোমার ফিগারটা কিন্তু চমৎকার। আর খুব ভালো লাফাতে পারো। তবে রাতের বেলায় এত জোড়ে চিৎকার করবে না। আসি।“ আমরা বেড়িয়ে এলাম ব্যাগ হাতে। আমি চাপা গলায় বললাম “এটা বলার কি খুব দরকার ছিল। “ ও আমাকে বলল “ মাগীর বোঝা উচিৎ ওর কার্যকলাপ আমাদের জানা। অবশ্য এটা যদি ক্যাম্পের নিয়ম হয় তো কিছুই করার নেই। তবে, অনেকেই এখানে আছে যারা সরল বিশ্বাসে এসেছে, আর এসেছে অন্যদের জন্য নিজেদের শেষ করে দিতে। “ এই প্রসঙ্গ এখানেই শেষ হল। শুধু একটাই খটকা রয়ে গেল। বিনীতাদি অদিতির সেই ভয়ানক বাণ খেয়েও এক ফোঁটা টলল না। একটা হাঁসি হাঁসি মুখ নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। বেড়িয়ে আসার আগের মুহূর্তে আড়চোখে দেখলাম ও আবার ওই বইটার মধ্যে ডুবে গেল।
ঘরে এসে ব্যাগ খুলে দেখলাম আর বাকি সমস্ত জিনিস যা ছিল সব তেমনই আছে। শুধু টাকা পয়সাগুলো আর নেই। সেটা আগেই বুঝেছিলাম যদিও, তাই আর আশ্চর্য হলাম না। হ্যাঁ আমাদের মোবাইলটাও বোধহয় আর পাব না। সাধের ফোন ছিল ওটা আমার। আগের জন্মদিনে গিফট করেছিল আমার হবু বর। ওই চা খাওয়ার প্রতি আর কোনও ইচ্ছে নেই। অদিতি দেখলাম আমার সামনেই নগ্ন হয়ে ব্রা প্যান্টি পরে ওপরে ট্র্যাক স্যুট চাপিয়ে নিল। আমি দৌড়াতে চললাম। এই ছিল ওর শেষ কথা। আমার শেষ কথা গুলো বোধহয় ও শুনতে পায় নি। “আমি ঘুমাতে চললাম।“ চোখ খুলে দেখলাম ও সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একটা সরু তারে ওর ঘামে ভেজা ট্র্যাক স্যুটের টপ আর বটমটা মেলে দিচ্ছে শুঁকানোর জন্য। বাইরেটা মাটি আর কাঁদায় ভর্তি। ও নগ্ন ভাবেই ঘরে ঢুকে ওর ঘামে ভাজে শরীরটা আগের রাতের শাড়িতে জড়িয়ে নিয়ে আমার পাশে শুয়ে পড়ল। “ কি রে উঠবি না ?” আমি উঠে বসে শাড়ি ঠিক করে নিলাম। দেখলাম টেবিলের ওপর ওর ব্রা আর প্যানটি টা চওড়া করে মেলে রেখেছে। আমি ওকে বোধহয় একটা কিছু বলতে যাচ্ছিলাম কিন্তু পারলাম না, বিনীতা দি ঘরে ঢুকেছে। আমাদের দুজনের কেউ উঠলাম না। বিনীতাদি এসে অদিতি কে বলল “তুমি হরিণের মত দৌড়াও। আর আজ রাতে বৃষ্টি না হলে তোমাদের নিয়ে আমি এই ক্যাম্পের মধ্যে বেড়াতে বেরবো। তোমাদের সব উত্তর পেয়ে যাবে। আচ্ছা, যেটা বলতে এসেছি সেটা হল তোমাদের দেওয়া সব ওষুধ আজ, মানে আজই আসবে। যন্ত্রপাতির জন্য টাকা এখন নেই। তবে জোগাড় করে ফেলা যাবে। আসছি।“ বিনীতাদি এখন আবার তুমি তুমি করে কথা কেন বলল সেটা জিজ্ঞেস করাতে অদিতি বলল “নাটক, সবই নাটক। লিখে দিতে পারি আজ ও দেখাবে এখানে অনেক মেয়ে ওপেন সেক্স করছে। সেটা আগেও ইঙ্গিত দিয়েছে। আমি একটু ঘুমাচ্ছি। আমি রাতেই স্নান করব। খাবার সময় ডেকে দিস।“ ও চোখ বুজল। আমিও চোখ বুজলাম। ঘুমাতে যাবার আগে বললাম “রাত্রে পটি করার সময় যাবি তো? নইলে কেস হয়ে যাবে।“ ও হেঁসে অন্য দিকে ফিরে শুয়ে পড়ল। “আর একটা টেটভ্যাক দিয়ে দেব ওঠার পর।“ জবাব এলো “ও কে।“ ঘুম ভেঙ্গে উঠে দেখলাম অদিতি ঘুমাচ্ছে অঘোরে। আমি উঠে শাড়ি ঠিক করে বেড়িয়ে পড়লাম। গেলাম যেখানে রান্না হয়। সবাই আমার থেকে বেশী বয়সী। তবে এরা শুধু রান্নার জন্যই আছে। কয়েকজন পুরুষ মানুষও দেখলাম। শুনলাম মাঝে মাঝে মেয়েরা এসে রান্নায় সাহায্য করে দিয়ে যায়। আমি নিজের পরিচয় দিয়ে ওদের সাথে রান্নায় হাত লাগালাম। এত লোকের খাবার, কোনও আন্দাজ নেই কতটা কি দিতে হবে। ওরাই আমাকে শিখিয়ে পড়িয়ে নিচ্ছে। অনেকক্ষণ পরে দেখলাম অদিতি চোখ ডলতে ডলতে এদিকেই আসছে। “কি রে শয়তান এখানে এসে রান্না করছিস? দে আমিও করব।“ ও যতই দৌড়াক না কেন বড় হাতাটা হাতে নিয়েই প্রায় উল্টে পড়ে গিয়েছিল। উঠে বসে শাড়ি ঠিক করে বলল “ ভি আই পি রা শুধু খায়। রাঁধে না। চললাম ডার্লিং।“ চলে গেল কোমর দোলাতে দোলাতে।“ আমরা কাজে মন দিলাম। সত্যি ভগবান সেদিন আমাদের কথা শুনেছে। কোনও কেস এলো না। আমি রান্নায় কিছুটা সাহায্য করে ফিরে এসে অদিতির সাথে এদিক ওদিক অনেকক্ষণ ঘুরলাম। বিনীতাদির সাথে দেখা হল সুজাতার ঘরে। ওখানেই অনেক কথা হল। অনেক হাসাহাসিও হল। সীমার জ্বর নেই। কিন্তু দুর্বল। আলিদা বন্দুক পরীক্ষা করছে। আমি রান্না করেছি শুনে বিনীতাদি তো প্রায় আমাকে কোলে তুলে নেবে। অদিতির পড়ে যাওয়ার কথা শুনে অনেকক্ষণ ওর লেগ পুলিং হল। সবার খাওয়া শেষ হওয়ার পর আর সুজাতার খাবার খাওয়ানোর পর (ওকে বিনীতাদিই খাইয়ে দিল) আমরা খেতে গেলাম। খাবার জায়গায় দেখলাম অরূপদা এসে গেছে। বিনীতাদি ওর কাছে ছুটে গিয়ে বলল “কখন এলে?” অদিতি আমাকে কিছু বলতে যাচ্ছিল, আমি চুপ করিয়ে দিলাম। আর পাঁচ মিনিট ওদের কথা শোনার পর বললাম “ ওরা ওপেন সেক্সে বিশ্বাস করে। চেপে যা। স্বাধীন সমাজ, বাঁধা নিষেধ বলে কিছু নেই এখানে। “ পরে অদিতি কে বলেছিলাম যে “ আমি সিওর যে অরূপদা জানে যে বিনীতাদি অন্য কারোর সাথে শোয়। ওদের এই নিয়ে কোনও মাতামাতি নেই। এই সব জায়গায় অনেক কনসেপ্ট কাজ করে। অর্ধেক লোক তো উন্মাদ। কি বোঝাবি?” ও দমে গেল। সন্ধ্যার পর আমাদের দুজনকে ঘরে ডেকে অরূপদা চা পান করালেন। অদিতি এতই বাচাল যে না বলে পারল না “ তোমরা যে এইভাবে মেয়েদের পাঠাও, তাই আর কি একটা কথা জিজ্ঞেস না করে পারছি না। তোমার বউ অন্য কারোর সাথে শুলে কেমন লাগবে সেটুকু জানার কৌতূহল হচ্ছে।“ অরূপদা একটুও না ঘাবড়ে বলল, “সারা দিনের এই শারীরিক পরিশ্রমের পর জৈবিক চাহিদা না থাকলে অন্য সমস্যা আছে। শুলে শুক। রাজু যদি সুখ দেয় তো ক্ষতি কি?” রাজুর নাম কিন্তু অদিতি করে নি। আমরা চুপ মেরে গেলাম। আমাদের দেওয়া সমস্ত ওষুধ এসে গেছে। দু একটা নতুন যন্ত্র পাতিও এসেছে। একটা জেনরেটারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। এই খবর গুলো দিয়ে অরূপদা আমাদের নিয়ে বেড়াতে বেরল।
সীমা সত্যি একুশ লাখ টাকা নিয়ে ফিরেছে। অরূপদা আমাদের জানিয়েছে এই টাকার অধিকাংশ খরচ হবে অস্ত্র কিনতে। ও অল্প অল্প হাঁটা চলা করতে শুরু করে দিয়েছে। বিকালের পর থেকে। মাঠের একটা বড় টিলার ধারে ওর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে অরূপদা আমাদের নিয়ে গেলো ক্যাম্প পরিদর্শন করাতে। কোথায় ওরা গুলি ছোরা প্র্যাকটিস করে, কোথায় উবু হয়ে হাঁটা, কোথায় খালি হাতে যুদ্ধর অনুশীলন হয় সব দেখাল। একটা তারজালি দেখিয়ে বলল “ওইটা বেয়ে বেয়ে ওঠানো প্র্যাকটিস করানো হবে এর পর থেকে। “ আমি থামিয়ে দিয়ে বললাম “তাহলে তো রেগুলার টেটভ্যাক নিতে হবে ওদের। মানে পিরিয়ডিকালি।“ অরূপদা হেঁসে বলল “ সেইজন্যই তো তোমাদের নিয়ে আসা।“ ক্যাম্পের সব কটা ঘরই গোল করে একটার পর একটা দাঁড়িয়ে আছে। শুধু দূরে দেখলাম দুটো ছোট ছোট ঘর একদম ক্যাম্পের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। বুঝলাম ওর ভেতরে কেউ থাকে না। কিন্তু থাকবেই যদি না তাহলে মোমবাতি কেন জ্বলছে। একটু দূরে হলেও, এখান থেকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে টিমটিম করে একটা মোমবাতি জ্বলছে একটা ঘরে। দরজা বন্ধ, তবে ভেতর থেকে না বাইরে থেকে সেটা এখান থেকে এই অন্ধকারে বোঝা মুশকিল। অদিতির মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওর নজরও ওই ঘরের দরজার ওপর স্থির। একবার ভাবলাম জিজ্ঞেস করব অরূপদাকে, কিন্তু পরক্ষণেই মনে হল কি দরকার, হতে পারে কোনও গোপন পাহারাদার ওখানে বসে আছে ক্যাম্প আগলে। আমাদের যখন পুরো ক্যাম্প ঘুরে দেখার পারমিশন দিয়েছে তখন নিজেরাই পরে কোনও একসময় গিয়ে ঘুরে এলে হবে। সব কথা জিজ্ঞেস না করে নিজেরা ঘুরে দেখে এলে অনেক ভালো। আর কেউ যদি বলে যে এদিকে কেন এসেছ, সিধে বলে দেবো যে ক্যাম্পের মধ্যে আমাদের যেখানে খুশি যাবার পারমিসন দিয়েছে স্বয়ং কমান্ডার ইন চিফ। আজ রাত্রে খাবার আগেই এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল। সত্যি মেয়েগুলো কি কষ্ট করে জীবন যাপন করছে। বৃষ্টির পর আমরা তাড়াতাড়ি খেয়ে নিলাম। ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই বিনীতাদি এসে হাজির। না ও চেয়ারে বসল না আমাদের বলল “এসো আমার সাথে। কথা ছিল তোমাদের ক্যাম্প ঘুরিয়ে দেখাবো। “ অদিতির দিকে ইশারা করে বলল “ ও তো সকালে দৌড়াতে গিয়ে তাও কিছুটা দেখেছে, কিন্তু তুমি তো এখনও ভালো করে কিছু দেখইনি। “ আমি বললাম “তোমাকে কষ্ট করতে হবে না। অরূপদা আমাদের দুজনকে পুরো ক্যাম্প ঘুরে দেখিয়ে দিয়েছে। আর তাছাড়া তোমাদের অনুমতি তো আগেই পেয়ে গেছি। আমরা নিজেরাও ক্যাম্প ঘুরে দেখতে পারি। “ ও তবুও ছাড়ল না “ সে তোমাদের বাঁধা দেওয়ার মতন কেউ নেই। এখানে আমরা কাউকে কোনও কিছু করতে বাঁধা দি না। যদি না সেটা আমাদের কাজের সাথে ক্ল্যাশ না করে। তবু এসো। সকালে তোমাদের মনে যে কথাটা উঠেছিল, সেটাই পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিচ্ছি। “
আমরা উঠে পড়লাম। বাইরে চাঁদের আলো প্রায় নেই বললেই চলে। চাঁদ মামা কালো মেঘে ঢাকা পড়ে গেছে। ভালো ঠাণ্ডা হাওয়া দিচ্ছে। বোধহয় কাছেই কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। হয়ত এখানেও নামবে আর কিছুক্ষণের মধ্যে। পর পর ঘরগুলো থেকে মেয়েলি কণ্ঠের আওয়াজ আসছে। টিমটিম করে প্রত্যেকটা ঘরের জানলা দিয়ে মোমবাতির শিখা দেখতে পাচ্ছি। অদিতি বলল “খুব সুন্দর হাওয়া। কোলকাতায় আমার ফ্ল্যাটের ব্যাল্কনির সামনে একটা বড় বিল্ডিং উঠে যাওয়ায় এরকম মিষ্টি হাওয়া আর পাওয়া হয় না। “ “এই হাওয়া সত্যি খুব মিষ্টি। “ একটু কাব্য করে বলল বিনীতাদি। অদিতির হাত ধরে তারপর বলল “ এরকম সুন্দর রাতে এই পরিবেশে কাউকে কাছে পেতে ইচ্ছে করে না?” অদিতি এর কি উত্তর দেবে ভেবে পেল না। বিনীতাদি নিজেই বলে চলল “ওই যে ঘর গুলো দেখতে পাচ্ছ ওই গুলো তে আমাদের পুরুষ কমরেডরা থাকে।“ আঙুল তুলে ইশারা করে কয়েকটা ঘর দেখিয়ে দিল। রাজুর ঘরটা অবশ্য আমরা গতকাল থেকেই চিনতাম। বাকি কোন কোন ঘরে ছেলে থাকে আজ সেটা জানতে পারলাম। তবে কে কোন ঘরে থাকে সেটা জানা নেই। বিনীতাদি বলল “ মেয়েরা এখানে সবাই বা প্রধানত রুম শেয়ার করে। ছেলেরা এক এক জন এক একটা ঘরে থাকে। কারণটা বুঝতে পারছ বোধহয়। এখানে জানলার গরাদ নেই তাই কোনও সেই হিসাবে প্রাইভেসি নেই। কিন্তু যেটুকু প্রাইভেসি দেওয়া যায় আর কি। “ একটু থেমে মুচকি হেঁসে বলল “ আর তোমাদের ছেলেদের ঘর গুলো দেখাচ্ছি কারণ যদি কখনও মন চায় কাউকে পেতে ওখানে যেতে পারো। তবে হ্যাঁ ছেলেটা যদি মানা করে তাহলে কিছু করার নেই। (কি যেন একটু ভেবে নিয়ে বলল) এই হাওয়া যত মিষ্টি ততই তেঁতো, আর রক্তাক্ত। কত মৃত্যু মিশে আছে এই হাওয়ায় তোমরা জানো না, হয়ত এখান থেকে চলে গেলে কোনও দিন কল্পনাও করতে পারবে না। সারা দিনের ট্রেনিং, ঝুঁকি, গোলাগুলির পর তাই অনেকে মহুয়া খেয়ে একটু ফুর্তি করে। লাইফ থেকে ফুর্তি যদি পুরো চলে যায় তো রোজকার কাজটাও তেঁতো হয়ে যায়। তোমরা যেমন মাঝে মাঝে কাজের থেকে রেহাই পেতে আর নিজেদের একটু রেস্ট দিতে পাহাড়ে বা সমুদ্রে বেড়াতে যাও, এটাও ঠিক তাই। তবে হ্যাঁ একটা ব্যাপার আছে, মহুয়া খাক, কোথাও থেকে জোগাড় করতে পারলে মদ খাক, কিন্তু এইসব জায়গায় লিমিটের মধ্যে খেতে হবে। কারণ বিপদ যে কখন আসবে কেউ জানে না। হয়ত নেশার ঘোরে পড়ে রইলে আর চোখ যখন খুলল তখন দেখলে যমরাজের সামনে হাজিরা দিয়ে তুমি দাঁড়িয়ে আছে আর তোমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে তোমার বাকি কমরেড বোন আর ভাইয়েরা। “ আমরা পাশাপাশি তিনটে টিলার ওপর গিয়ে বসলাম। বুঝলাম আজ বিনীতাদি গল্প বলার মুডে আছে।
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
নয়
আবার শুরু করল ও “ সারা দিনের শেষে এই একটু খানি আনন্দ গান বাজনা ফুর্তি এই নিয়েই নিজেদের পূর্ব জীবনের দুঃখ, সারা দিনের গ্লানি মাখা যে জীবন সেটা ভুলে থাকে। কেউ জানে না কাল সে বেঁচে থাকবে কি না, কেউ জানে না কাল সে যে কাজে যাচ্ছে সেই কাজ সেরে বেঁচে ফিরবে কি না। কেউ জানে না, কাল সে যার অঙ্কশায়িনী হবে সে তার সাথে কি কি করবে। “ অদিতি মাঝখানে বাঁধা দিয়ে বলল “একটা জিনিস কিন্তু আমার মাথায় ঢুকছে না। এখানে মেয়েদের ট্রেনিং দেওয়া হয়, ওরা বন্দুক চালাতে জানে, খালি হাতে লড়তে পারে। তাহলে নিজেদের দেহ না বেঁচে সরাসরি গিয়ে গ্রুপ নিয়ে গিয়ে আক্রমণ করলে কি ক্ষতি হত?” বিনীতাদি বলল “গুড কোশ্চেন। তাহলে উত্তরটা দি। এর অনেকগুলো কারণ। দেখো সরাসরি গ্রুপ নিয়ে গিয়ে ডাকাতি যে আমরা করি না তেমন নয়। কখনও টাকার প্রয়োজনে, কখনও বা খবর পেলাম কোথাও মেয়েদের দিনের পর দিন শোষণ করা হচ্ছে। সে বাড়িতেই হোক, বা কারখানায়। হয়ত দিনের পর দিন যৌন শোষণ চলছে মেয়েদের ওপর। শুধু মাত্র ;.,ই যে যৌন শোষণের মধ্যে পড়ে না সেটা নিশ্চই বলে বোঝাতে হবে না। এমন অসংখ্য কেস আছে যেখানে আমাদের নিজস্ব কোনও স্বার্থ নেই। কিন্তু তবু আমরা আমাদের কষ্টার্জিত অর্থব্যয় করে কেনা গুলি গোলা নিয়ে অনেক অনেক দূরে, নিজেদের জীবন বিপন্ন করে। প্রতিদানে কিছুই পাই নি। আর্থিক লোকসানের কথা যদি ছেরেও দাও, প্রানের লোকসানও হয়েছে এইসব ক্ষেত্রে। হয়ত ফিরে এসেছি আমাদের দু তিন জন কমরেডের শব কাঁধে করে। হয়ত বা দু তিন জন ধরা পড়েছে। কেউ হয়ত ধরা পড়ে যাবার ভয়ে সুইসাইড করেছে। এত কথা বলার অর্থ দুটো। তুমি যেটা জিজ্ঞেস করলে সেরকম ডাকাতি আমরা অনেক করেছি। আর, আমরা সব সময় টাকা লোটার উদ্দেশ্য নিয়েই যুদ্ধে যাই না। অনেক সময় আমাদের জমানো টাকা আর প্রান দুই খরচ করে মেয়েদের সাহায্য করতে যাই। উদ্দেশ্য একটাই পুরুষ সমাজের, বা নারী সমাজের যারা নিরীহ মেয়েদের শোষণ করে চলেছে তার যেন ভয় পায়, পরের বার এরকম কাজ করতে তাদের দেখাদেখি অন্য দেরও যেন হাত কাঁপে। একটা ছোট গল্প শোনাই। আসানসোলের পাশে একজন পুলিশ বদলি হয়ে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে এক গরীব মেয়ের ওপর ওর চোখ পড়ে। মেয়েটা বয়সে ওর থেকে অনেক অনেক ছোট। আর দারোগা তার ওপর বিবাহিত, শুনেছিলাম দুটো মেয়েও ছিল নাকি তার। (এরপর নিজের মনেই বলল) নিজের মেয়ে থাকলেও কোনও লোক কি করে এতটা নিচে নামতে পারে সেটাই মাথায় ঢোকে না। (আবার শুরু করল) মেয়েটাকে বহুভাবে রাস্তাঘাঁটে, উত্যক্ত করেছে ওই দারোগা আর ওর তলার লোকজনেরা। শেষ মেষ মেয়েটার বাড়িতে গুন্ডা গোছের কয়েকজন লোক পাঠায়। কি চতুর বুদ্ধি বোঝ, মেয়েটাকে ওরা কিছু করে নি, শুধু মেয়েটার জামা কাপড় ছিঁড়ে মেয়েটাকে নগ্ন করে বসিয়ে রাখে। গায়ের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত চিহ্ন রোপণ করে। পরে মেয়েটার আহত শরীরটাকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে এসে ঘরের সামনে ফেলে রেখে চলে যায়। ওরা কিন্তু মেয়েটাকে রেপ করে নি। কিন্তু সবাই জানলো মেয়েটাকে রেপ করা হয়েছে। কারণ ওরা কিছু না করলেও ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে প্রায় ঘণ্টা খানেক ছিল। পুলিশে ফোন করা হয়েছিল। দারোগা নিজে ছিল। কিন্তু যতক্ষণ না ওরা ওখান থেকে যায় ততক্ষণ কোনও স্টেপ নেয় নি। ওরা বেড়িয়ে যেতেই দারোগা ধড়াচূড়া পরে এসে হাজির হয় ওই বাড়ির দরজায়। সবার থেকে বয়ান নেয়। পরে ঘরের ভেতরে গিয়ে কোনও ডাক্তার ছাড়া নিজেই পরীক্ষা করে ঘোষণা করে দেয় যে গ্যাং রেপ হয়েছে। আমরা মুখে যাই বলি না কেন, এইবার মেয়েটার আর ওর পরিবারের কথা ভাবো একবার। মেয়েটার কোনও দোষ নেই। কিন্তু মেয়েটার সমস্ত জীবনের ওপর ইতি টেনে দিল ওই নোংরা একটা লোক তার ক্ষমতা খাটিয়ে। মেয়েটার বাবা আমাদের বলেছিল যে দারোগা বলে দিয়ে গেছে সেই রাতেই যে রেপ হওয়া মেয়ে শুনলে আর কোথাও ওর বিয়ে হবে না। তাই ওর বাবা বা মার যদি আপত্তি না থাকে তো ও নিজেই এসে ওদের মেয়েদের জৈবিক চাহিদা মিটিয়ে দিয়ে যাবে। আমার প্রশ্ন হল কেন এমনটা হল? মেয়েটা কি ওর রক্ষিতা হওয়ার জন্য জন্ম নিয়েছে। কে ওকে এই অধিকার দিয়েছে যে ও এইরকম ক্ষমতা আর শক্তির অপব্যবহার করতে পারে। অদ্ভুত মনের জোর দেখ মেয়েটার। মেয়েটা কিন্তু সেখানেই দমে যায় নি। ওর ই থানায় উকিল নিয়ে গিয়ে ওরই বিরুদ্ধে নালিশ করেছে। এর পর থেকে যা শুরু হয়েছে তা বলা যায় না। মেয়েটার বাড়ির চারপাশে মেয়েটার নগ্ন ছবির পোস্টারে ভরে গেছে। ওই দিন গুন্ডাগুলো মেয়েটাকে রেপ করার নাটক যখন করছিল তখন ওকে চেপে ধরে অনেকগুল অশ্লীল ছবি তুলেছিল। সেইগুলই লার্জ স্কেলে প্রিন্ট করে পাড়ায় বিলি করা শুরু হল। মেয়েটা সুইসাইড করল। মেয়ের মা সুইসাইড করল। মেয়ের বাবা চেষ্টা করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক ডাক্তারের আশীর্বাদে বেঁচে যায়। ওখানে আমাদের চর আছে। ওর থেকে কথায় কথায় এই ঘটনা জানতে পেরে আমরা ঠিক করলাম যে কিছু একটা না করলেই নয়। কারণ দারোগার নামে যে নালিশ জমা পড়েছিল সেটা আর নেই। কোন উকিল নিজের গ্যাঁটের টাকা খরচ করে বাদী পক্ষের হয়ে আদালতে লড়বে। আইন সঙ্গত ভাবে হওয়ার কথা নয়, কিন্তু কেসটা ওপেন রইল, কিন্তু অসংখ্য ধুলোর আস্তরণের নিচে চাপা পড়ে গেল। আর বিশ্বাস করো, খুব বেশী হলে দু মাস লাগবে সবার এই জিনিসটা ভুলে যেতে। আবার যদি কোনও মেয়ের ওপর সেই শয়তানের নজর পড়ে আর সেও যদি নিজের শরীর বেচতে রাজি না হয় তো তার পরিবারের সাথেও একই জিনিস হবে। কি ঠিক কিনা? তবে এখানে সিস্টেম বলতে, শুধু দারোগা নয়। দারোগার তলায় যারা রয়েছে, ওই গুন্ডাগুলো এদের সাহসের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে। আর কে জানে ওদের মাথার ওপরে কার হাত রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের অন্য কিছু করার ছিল না। চার জন কে পাঠিয়েছিলাম ওখানে। আলি সেবার যায় নি যদিও, রাজুও যায় নি। চারজন বোনকেই পাঠাতে হয়েছিল। জানি পুলিশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ঝুঁকি অনেক। কিন্তু একটু ঝুঁকি না নিলেই নয়। ওদের তিন জন এক এক করে থানায় গিয়ে দারোগার সাথে দেখা করেছে। অনেক ইশারাও করেছে কথা বার্তার ছলে। হয়ত দারোগার ওদের কাউকে মনে ধরে নি। কিন্তু চতুর্থ জনের বেলায় ওর সেই অশ্লীল ইঙ্গিত বেড়িয়ে এসেছে। থানার মধ্যেই নাকি ওর হাত চেপে ধরেছিল। ওকে এক জায়গায় আসতে বলা হয়। এসেছিল। ওকে প্রানে মারা হয় নি। ওর যৌনাঙ্গটাকে থেঁতলে দিয়ে ওকে সারা জীবনের মতন হিজড়া করে দিয়ে আসা হয়েছে। অবশ্য জানি না এখন চিকিৎসা শাস্ত্র অনেক উন্নত হয়েছে। কিন্তু পরে আমরা ওই চরের মুখেই শুনি যে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছে। ভেতরের খবর লোকটার আর কিছু করার ক্ষমতা নেই। হ্যাঁ একটা কথা, লোকটার নগ্ন শরীরটা রাস্তার ওপর ফেলে রেখে আসা হয়েছিল, যাতে সবাই জানতে পারে যে ও সারা জীবনের জন্য একজন ইম্পটেন্ট মানুষ। এইবার ও বাকিদের সামনে কি করে মাথা উঁচু করে কথা বলে সেটাই দেখার। তবে সে দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি। “
“ এইবার কি আমি বোঝাতে পেরেছি যে আমরা শুধু টাকা লোটার জন্যই কাজ করি না। তবে হ্যাঁ এছারাও অনেক টাকার কুমীর আছে যাদের কাছে ব্ল্যাক মানির সমুদ্র। এই যে মেয়েগুলকে আমরা বাঁচতে শেখাচ্ছি। লড়তে শেখাচ্ছি, প্রতি হিংসা বল আর যাই বলো না কেন ওদের মধ্যে নিজেদের আর নিজেদের মতন আরও পাঁচ জনকে বাঁচিয়ে রাখার প্রেরণা যোগাচ্ছি এই গুলো তো আর ফ্রি তে হয় না। তাই আরও টাকার দরকার। অধিকাংশ এই মতন ধনীরা হয় গার্ডের মধ্যে থাকে, বা থাকে কড়া পাহারায়। এরা ভীষণ ধূর্ত হয়। হয়ত পুলিশও এদের কাছ থেকে টাকা নেয় বলেই সরকার আর পুলিশের নজরদারির তলায় এরা সুরক্ষিত। অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে যাওয়ার আরেকটা অসুবিধা রয়েছে। পথে কোথাও কোনও বিপদ আপদ বা চেকিং হলেই যদি দেখে দশ জনের কাছেই এরকম আগ্নেয়াস্ত্র সাথে সাথে কি হবে বলা যায় না। সাধারণ লোকই হয়ত পিটিয়ে মেরে ফেলবে। এরা তো আমাদের আতঙ্কবাদী ছাড়া আর কিছুই ভাবে না। আর আমরা তো নিরপরাধ লোকের ওপর গুলি ছুড়তে পারব না ডিয়ার। এদের সবাই কোনও না কোনও ভাবে এই সমাজের হাতে শোষিত হয়েছে। এরা সংকল্প নিয়েছে যে ফিল্ডে যাওয়ার সময় এদের শরীর বা মন কোনওটাই এদের নিজেদের সম্পত্তি নয়। যে শরীরের জন্য এদের শোষিত হতে হয়েছে, এখন সেই শরীরকেই হাতিয়ার বানিয়ে এরা সমাজের শোষকদের শোষণ করবে। একটা জিনিস চিন্তা কর, ধর একজনের বাগান বাড়িতে গিয়ে রঘু ডাকাতের মতন তুমি এক দল ছেলে মেয়েকে নিয়ে গিয়ে রে রে করে তেড়ে গেলে। হয়ত ওর কিছু সিকিউরিটি থাকলে তাদের সারপ্রাইজ অ্যাটাকে ঘায়েলও করে ফেললে। কিন্তু ধর ততক্ষণে দরজা বন্ধ হয়ে গেছে বা ভেতরে না দেখা আরও কিছু লোক বসে আছে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে। আর যদি হোটেলে এরকম লোক কে লুঠতে হয় তাহলে তো এই প্ল্যান আরও অসফল হবে। দুই ক্ষেত্রেই হয়ত পাঁচ মিনিটের মধ্যে দেখবে এক দঙ্গল পুলিশ এসে হাজির হয়েছে। আতঙ্কবাদী জানতে পারলে তো কথাই নেই। দেখবে কোথা থেকে আর্মিও চলে আসতে পারে। এদের কাউকে দোষ দি না। কারণ এই মুহূর্তে এরা এদের ডিউটি করছে। কিন্তু আমাদের যে গল্প, যে সত্য সেটা এরা জানার আগেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাবে আরও কয়েকটা প্রান। আমাদের গুলিতে যদি কেউ আহত বা নিহত হয় তো কথাই নেই। পরের দিন খবরের কাগজে ফলাও করে ছাপানো হবে এরা শহীদ হয়েছে আমাদের হাতে। যেখানে আমাদের লক্ষ্য না ছিল পুলিশের প্রান নেওয়া , আর না ছিল আর্মির কিছু লোককে শহীদ করা। আর এই রকম ক্ষেত্রে আমাদের কেউ ধরা পড়লে বা শহীদ হলে এই খবরের সাথে তার বা তাদের ছবিও ফলাও করে ছাপানো হবে। আর ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ বা ইন্টালিজেনস ডিপার্টমেন্ট কি জিনিস তোমাদের জানা নেই। কেউ না কেউ হয়ত বলবে এই মেয়েটাকে ওই খানে দেখে ছিলাম। ওরা ছবি দেখিয়ে ট্রেস করে করে সোজা ক্যাম্পে এসে হাজির হতে পারে। তখন সোজা যুদ্ধ। কিন্তু আমাদের এখন ফায়ার আর্মসের এতটা ইনফ্রাসট্রাকচার নেই যে আমরা এই আক্রমণ নিতে পারব। তাই এ ক্ষেত্রে আমরা দ্বিতীয় পদ্ধতি তা পছন্দ করি। শরীরটা দি ওই মহাজন বা ধনী শোষককে। এইসব ক্ষেত্রে তারা একাই থাকে। যদি লোকটা দুর্বল হয় তাহলে কিছু করার আগেই তাকে বেঁধে ফেলা বা বশ করে নেওয়া যায়। তবে অনেকেই অত সোজা হয় না। কিন্তু এই সব ক্ষেত্রে কোনও চেঁচামেচি হলেই বাইরে থেকে কি শুরু হবে কেউ জানে না। যে গেছে সে যদি পালিয়েও আসতে পারে, চেঁচামেচির জন্য অনেকে তাকে দেখে চিনে রাখতে পারে। কেউ যদি ফলো করে সরকারি পুরস্কারের আশায় তাহলে তো কথাই নেই। যতটা পারা যায় নিরবে, লোক না জানিয়ে এই কাজ করা হয়। প্রথমে শরীর দিয়ে বশ করা হয়। যখন লোকটা ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়েছে, শরীরের সব শক্তি শরীরের বাইরে ফেলে দিয়ে হাঁপাচ্ছে, বা ঘুমিয়ে পড়েছে, যখন রুখে উঠতে তার সময় লাগবে বোঝা যায় নিশ্চিত ভাবে তখনই আসল কাজটা করা হয়। তবে এত সতর্কতা সত্ত্বেও বিপদ যে হয় না তা নয়। হয় এবং প্রায়ই হয়। সেটা তোমরা দুদিনেই বুঝেছ। আর একটা ব্যাপার হয়েই থাকে যে হয়ত লুন্ঠিত লোকটা পরে পুলিশকে মেয়েটার চেহারার বিবরণ দিয়ে তার স্কেচ আঁকিয়ে নেবে। কিন্তু একটাই শান্তি সে ততক্ষণে আমাদের গোপন ডেরায় ফিরে এসেছে। “ এক দমে কথা বলে বিনীতাদি থামল। “আরও কিছুদিন আছো নিশ্চই অনেক কিছু জানতে পারবে। কেন কোন রিস্ক আমরা নিই না , কোথায় কেন রিস্ক নেওয়া ছাড়া রাস্তা নেই, কোথায় ডাকাতি করব, আর কোথায় নিঃশব্দে শরীর কে হাতিয়ার করে কার্যসিদ্ধি করব সেটা পরিস্থিতি আর সময়ের ওপর নির্ভর করে। “ ও আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কথাগুলো বলে চলেছিল।
ও যখন কথা বলছিল তখন আমার খেয়াল হয়েছে যে দু তিনটে মেয়ে এখান থেকে যদিও তারা কারা সেটা বোঝার কোনও উপায় নেই, তবুও বুঝতে পারলাম যে তারা এক একটা ছেলের ঘরে গিয়ে ঢুকে পড়েছে। বুঝলাম আজ রাতে এরা নিজেরা নিজেদের শারীরিক মিলনের সাথী হিসেবে বেছে নিয়েছে। রাজুর ঘরেও একজন ঢুকেছে। কে জানি না। “ রাজুর ঘরে এখন মায়া আছে। এখানে দু তিনটে মায়া আছে। জানি না তোমরা এই মায়া কে চেন কি না। এসো।“ ও উঠে পড়ল। আমরা সোজা এগিয়ে গেলাম রাজুর ঘরের দিকে। আসন্ন কি হবে বুঝতে না পেরে আমার কানটা গরম হয়ে উঠেছিল। দরজা বন্ধ। জানলা খোলা। রাজু উপরে ওর মেয়েটা নিচে। মেয়েটার কাপড় বিছানার ওপর এলিয়ে পড়ে আছে। রাজুর ঘামে ভেজা কালচে পাছার শক্ত মাংসপিণ্ডগুলো বার বার ওঠা নামা করছে দুটো ফর্সাটে পায়ের মাঝে। দুজনের ঊরুসন্ধি বার বার এক হচ্ছে আবার আলাদা হয়ে যাচ্ছে একে অপরের থেকে। “তোদের আর কতক্ষণ?” ওরা নিজেদের মধ্যে মগ্ন ছিল। কিন্তু জানলা দিয়ে বিনীতাদির গলা পেয়ে রাজু মৈথুন থামিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে জানলার দিকে তাকাল। ওর মুখে কিন্তু লজ্জা বা ভয়ের কোনও চিহ্ন নেই। রাজুর ঘামে ভেজা কাঁধের পাশ থেকে বেড়িয়ে এল একটা পরিচিত মুখ। আরে এ তো সেই মায়া। যে সবার আগে কাল ভোর বেলায় নিজের অতীত নিয়ে শুনিয়েছিল। ও কাকুতি ভরা স্বরে বলল “আমার প্রায় হয়ে এসেছে দিদি।“ বিনীতাদি বলল “ঠিক আছে। রাজু, তোমাদের হয়ে গেলে তুমি একটু জল খেয়ে শান্ত হয়ে নিও। আমি আসব একটু পরে। কাল আবার আমাকে ফিল্ডে যেতে হবে। (আমাদের দিকে গলা নামিয়ে বলল) তবে এইবারেরটা পুরোপুরি ডাকাতি। অস্ত্র নিয়ে লুট করা। তোমাদের দাদাও কাল থেকে থাকবে না দু দিন (এই কথাটা অবশ্য বলল ওদের উদ্দেশ্য করে)। আমি জিনিসপত্র গুছিয়ে আসছি। মায়া তোমার হয়ে গেলে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়। রাজু তুমি একটু জিরিয়ে রেস্ট নিয়ে নাও। আমার আসতে একটু সময় লাগবে। রেস্ট নিয়ে নিলে পরে আরাম পাবে।“ কেমন স্বাভাবিক সাবলীল ভাবে কথাগুলো বলে আমাদের নিয়ে এসে দাঁড়াল আমাদের ঘরের সামনে। “কোনও ছেলেকে পছন্দ হলে তোমরাও তার সাথে গিয়ে থাকতে পারো। কোনও বাঁধা নেই। তবে তোমাদের যেমন পছন্দ হয়েছে ছেলেটাকে, তেমনি ওই ছেলেটারও তোমার সাথে মিলিত হওয়ার ইচ্ছে থাকা চাই, সেটা যেন মনে থাকে।“ ও চলেই যাচ্ছিল, কিন্তু থেমে গেল অদিতির কথা শুনে “ কাল না হয় বুঝলাম দাদা ছিল না আর তোমার মন বা শরীর চাইছিল কাউকে, আর তাই তুমি রাজুর সাথে করলে। কিন্তু আজ তো দাদা আছে।“ বিনীতাদি আগের মতই সহজ ভাবে বলল “ তোমাদের দোষ দেওয়া যায় না। তোমরা যা দেখেছ যা শিখেছ সেই মতনই ভাবছ। বিয়ে ব্যাপারটাকে তোমরা, মানে তোমাদের সমাজ তোমাদের শারীরিক মিলনের ছাড়পত্র হিসেবে শিখিয়েছে। যেমন কোনও মেয়ে বা ছেলেকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে শারীরিক ভাবে ভোগ করা উচিত নয়, ঠিক তেমনই সমাজ কোনও প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েকে মিলনের ইচ্ছে হলে আটকাতে পারে না। বিয়ে তো একটা মানসিক বন্ধন যার একটা ভিত হল শারীরিক সম্পর্ক। কিন্তু বিয়ে হয়ে যাওয়া মানে এই নয় যে আমার যদি অন্য কারোর জন্য শারীরিক মিলনের ইচ্ছে আসে তো আমি আমার স্বামীকে ভালোবাসি না। এটা ছেলেদের ক্ষেত্রেও সত্যি। বিয়ে মানে কারোর শরীর কারোর বাঁধা দাসী বা গোলাম হতে পারে না। যাকে আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছি তাকে আমি মানসিক পুষ্টি যোগাব। তার সমস্ত আপ ডাউন, তার সমস্ত সংগ্রামে আমি বন্ধুর মতন তাকে প্রান দিয়ে আগলে রাখব। কিন্তু আমি যে অন্য কারোর কাছ থেকে শারীরিক ভাবে সুখ নিতে পারি না সেটা কেন হবে? তোমার প্রশ্নের এক কথার উত্তর হল। আমি অরূপকে প্রানের থেকেও বেশী ভালোবাসি। তবে আমার চাহিদা যখন তুঙ্গে থাকে তখন রাজু বা অমল (একে আমরা চিনি না) ওর থেকে বেশী আমার চাহিদা মেটাতে পারে। আর এতে কোনও রাখা ঢাকা নেই। অরূপ সব জানে। আর এটাও সত্যি, স্ত্রী হিসাবে আমি পোষা দাসী নই আর ও আমাকে কোনও দিন কিছু জোর করেনি। আর সেটাই আমার ভালোবাসা। ও যদি আমার থেকে কোনও দিন জৈবিক চাহিদা মেটাতে চায় আর আমার শরীর আর মনের অবস্থা যদি ভালো থাকে তো নিশ্চই মিলিত হব ওর সাথে। ওর সব চাহিদা মেটাতে নিজেকে উজাড় করে দেব। আর তাছাড়াও স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রেম ভালোবাসার মুহূর্ত তো হিসাব করে আসে না। যখন সেই মুহূর্ত আসে আমি আর ও মিলিত হই। খুব বাজে শোনাবে তোমাদের কানে। কিন্তু এটা সত্যি কথা, আজ তোমাদের দাদা খুব ব্যস্ত কালকের ব্যাপার নিয়ে। কিন্তু ও যদি ব্যস্ত নাও থাকত আর যদি ওর মন আমাকে আজ কাছে পেতে চাইত, তাহলেও আমি প্রথমে ওর চাহিদা পূরণ করতাম, আমার সব কিছু ঢেলে দিতাম ওর বুকে। কিন্তু তারপর আমি আসতাম আমার চাহিদা পূরণ করতে, আসতাম মানে আসতামই। খিদে তো রোজ একই হয় না। খিদে কম থাকলে, অন্য দিন হলে হয়ত রাজুর কাছে আসতামই না। ওর সাথে মিলনের পরই ওরই কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তাম। কিন্তু মাঝে মাঝে দু একদিন ঠিক হয় না সব কিছু। তোমরা গিয়ে শুয়ে পড়ো। “ আমি বললাম “আসলে আমাদের সকালে সবার সাথে ওই মাঠে গিয়ে করা আর স্নান করাটা ঠিক... মানে... “ ও হেঁসে বলল “ বেশ বেশ। সেটা প্রথম প্রথম হতেই পারে। তো এখন যাবে? এখানে যদিও সাপ খোপ দেখিনি কোনও দিনও। কিন্তু তবুও একটা মোমবাতি নিয়ে যেও। “ অদ্ভুত , ওরা ভীষণ কনফিডেন্ট যে আমরা পালাতে পারব না। কে জানে হয়ত কোথাও থেকে আমাদের ওপর নজরও রাখা হচ্ছে।
আমাদের পাশের ঘর থেকে মায়ার গলার স্বর মাত্রা ছাড়িয়েছে অনেকক্ষণ। বিনীতাদির অবশ্য এদিকে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। ও চলে গেল। এরপর কিছুক্ষণ পর হয়ত বিনীতাদির গলার আওয়াজ পাব ওই ঘর থেকে। আমরা টেবিল থেকে মোমবাতি উঠিয়ে নিয়ে চললাম মাঠের দিকে। এ এক অদ্ভুত পরিস্থিতি। প্রাইভেসি আর আব্রুর পুরো খুলি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে একটা কথা বলে রাখি। একটা ছেলের ঘর থেকে দেখলাম একটা মেয়ে বেড়িয়ে এলো। আমাদের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় চিনতে পারলাম। রাকা। রাকার ফিগার ভালো, কিন্তু চেহারা একটু কর্কশ মার্কা। ও ও বুঝল যে আমরাও বুঝেছি যে ও কোথা থেকে কি করে আসছে। মোমবাতির আলোয় খুব স্পষ্ট না হলেও শাড়ির সামনে ঊরুসন্ধির জায়গায় যেন একটা ভেজা ভাব খেয়াল করলাম। বুঝলাম যৌন মিলনের পর শারীরিক রসে ভিজে যাওয়া যৌন কেশ থেকে শাড়িটা ভিজে গেছে। ও গুড নাইট জানিয়ে চলে গেল। অবশ্য এত রাতে কোথায় যাচ্ছি সেটা জিজ্ঞেস করতে ভুলল না। অদিতি একই কথা শোনালো। ও হেঁসে চলে গেল। আমি আর অদিতি পাশাপাশি মাঠের ওপর এক মগ করে জল নিয়ে বসেছি সকালের কাজ রাত্রে সারবার তাগিদে। দুজনেই চুপ। অদিতির আমার আগেই হয়ে গেল। ও ধুয়ে উঠে কল পাড়ের দিকে চলে গেল। মাথার ওপর ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিও শুরু হয়েছে। অদিতি এক বালতি জল ভরে স্নান শুরু করেছে। আমিও মোমবাতিটা পাশে রেখে দিয়ে শাড়িটা খুলে মগ দিয়ে মাথায় জল ঢালা শুরু করলাম। চারপাশে কেউ নেই দেখে অদিতিও আজ পুরো পুরি নগ্ন হয়ে স্নান করছে। আমার সামনে ওর আর কোনও লজ্জা নেই। আমারও যেমন নেই ওর সামনে। স্নান সেরে নগ্ন ভাবেই দৌড়ে আমাদের ঘরে ফিরে এলাম। ওই শাড়িটা দিয়েই গা মুছে অন্য শাড়িটা গায়ে জড়িয়ে নিলাম। আমাদের ভিতরে আসার জন্যই বোধহয় অপেক্ষা হচ্ছিল। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। আমরা মোমবাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম। আমরা যখন স্নান করছিলাম মায়া বোধহয় তখনই কোনও এক সময় বেড়িয়ে গেছে। আমাদের দুজনের চোখেই ঘুম নেই। আমরা নিঃশব্দে মটকা মেরে পড়ে আছি। অনেকক্ষণ পরে দেখলাম এত বৃষ্টি মাথায় করে বিনীতাদি এসে হাজির হয়েছে রাজুর ঘরে। আমি একটা হু মতন শব্দ করলাম খুব আস্তে। অদিতি হু মতন একটা শব্দ করে আমার দিকে ফিরে আমাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ওর বা পা টা আমার পেটের ওপর উঠিয়ে দিয়ে চুপ হয়ে গেল। আমি কি ওর কোল বালিশ নাকি? ঘুম ভাঙল ভোর সাড়ে পাঁচটায়। আজ সময় জানি। কারণ বাইরে দেখলাম কিছু নিয়ে ভীষণ তোড়জোর শুরু হয়েছে। কে একজন চেঁচাতে বলতে বলতে গেলো যে ট্রেনের টাইম হয়ে যাবে কিন্তু তাড়াতাড়ি করো। সাড়ে পাঁচটা বেজে গেছে। কাল আমরা বিনীতাদির শীৎকার শুনি নি, তাই ওই নিয়ে কথা বলব না।
এখন এত তোড়জোড়ের মধ্যে বাইরে না বেরোলে খারাপ দেখাবে। তাই আমরা শাড়ি ঠিক করে ঘুম চোখে বাইরে এলাম। অরূপদার কুটীরের সামনে প্রায় সবাই এসে জমা হয়েছে। আমরা এমনিতেই এক ঘরে হয়ে আছি। এর মধ্যে নাক গলানোর কোনও মানেই হয় না। একটা লোককে দেখে একটু ঘাবড়ে গেলাম। রাকা কে দেখে ওর কাছে গিয়ে গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম “দিদি ও কে? ওকে তো কাল দেখিনি। ও কি ফিল্ডে ছিল?” রাকা হাত তালি দিয়ে চেঁচিয়ে উঠল। “দাদা তোমার ছদ্মবেশ সফল। এরা তোমাকে দেখে চিনতেই পারে নি। “ ও অরূপদা। বিনীতাদিকে দেখলাম শার্ট প্যান্ট পরে রেডি। আরতি কে দেখলাম নতুন বউ সেজে রেডি। ওদের সবার স্নান হয়ে গেছে সেটা ওদের চুল দেখলে বোঝা যায়। আলি কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল অরূপদাকে, কিন্তু ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল “না । তুমি এখানেই থাকবে। বেস একেবারে খালি করার মানে নেই। “ আরতি, মিনতি, বিনীতাদি আর আরও আট নয় জন দুটো গাড়িতে চেপে বেড়িয়ে গেল। রাজু, আলি এরা সবাই রয়ে গেল। অরূপদা একটু পরে আলির সাথে বেড়িয়ে গেল। যাওয়ার আগে সবাইকে বলে দিয়ে গেল “রাকা, রুমি আর অদিতি এরা এখন তোমাদের গার্ডিয়ান। আর রুমি আর অদিতির কিছু দরকার হলে আলিকে বলবে, রাকা কে বলবে বা রাজু কে বলবে। অবশ্য এখানে যারা আছে এরা সবাই তোমাদের ভাই বোনের মতন, যাকে ইচ্ছে বলতে পারো। তবে একটা অনুরোধ আছে তোমাদের দুজনের কাছে। আজ কিছু জিনিসের ডেলিভারি আছে। যদি তোমরা কাগজ পত্র গুলো একটু বুঝে শুনে তোমাদের মতন করেই লিখে রাখো তো ফিরে আসার পর আমার হিসাব করে প্ল্যান করতে সুবিধা হবে। না বলবে না প্লীজ। ডাক্তার দের অফিস ওয়ার্ক দিচ্ছি, কিন্তু দু এক দিন একটু ম্যানেজ করে নিও।“ আলি কে বলল “ওরা চাইলে আমার অফিসে গিয়ে বসতে পারে। (আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল) ওখানে অনেক বই আছে। বসে বসে পড়লে সময় কেটে যাবে। ডেলিভারির সময় তুমিও থেকো (এটা আবার আলির উদ্দেশ্যে বলা)। ওদের সাহায্যের দরকার পড়তে পারে। আচ্ছা তাহলে আসি রাকা? (সবার দিকে হাত তুলে বলল) আসি হ্যাঁ? ” একটা গাড়ি এসেছে কয়েক মিনিট হল। ও উঠে বেড়িয়ে চলে গেল। ওর সাথে অবশ্য আলিও গেল ওকে ট্রেনে উঠিয়ে দিয়ে আসতে। আমি রাকা কে বললাম “রাকা দি, কিসের ডেলিভারি গো?” রাকা এসে বলল “আমি ডেলিভারি বুঝি না গো ভালো। তবে সব কিছুর কাঁচা রসিদ থাকে। দেখো, নিশ্চই বুঝতে পারবে। আমি রেডি হই গিয়ে। আমাদের আবার শুরু করতে হবে। তবে আজকের দিনটা আমাদের জন্য খুব বড় দিন। জানি না কি হবে। সব মহারথীরাই আজ যুদ্ধে গেছে। আর যাকে বলে একেবারে সামনা সামনি যুদ্ধ।“ আমি আর অদিতি আমাদের ঘরে ফিরে এলাম। আমরা তখনও জানতাম না যে আমাদের জন্যও এটা খুব খুব বড় দিন হতে চলেছে। একটু গুছিয়ে সে কথা লিখতে হবে।
আমরা ব্রাশ করার পর চায়ের গ্লাস (আজ কাপ নয় আমাদের জন্য গ্লাস, তবে স্টিলের) হাতে নিয়ে আমাদের ওষুধের আড়তে গেলাম। বাপরে বাপ এত ওষুধ এক দিনে। দু একটা মেয়ে এসেছিল সামান্য পেট খারাপ, অ্যালার্জি, র*্যাশ ইত্যাদি নিয়ে টুকিটাকি বলতে। এখানে প্রেস্ক্রিপ্সান লেখার কোনও মানে নেই। ওষুধ দিয়ে বিদায় করলাম। ততক্ষণে আলি ফিরে এসেছে। আমাদের সাথে দেখা করে বলে গেছে যে ইচ্ছে করলে আমরা অরূপদার ঘরে গিয়ে বসে বই পড়তে পারি। অদিতিটা পারেও বটে। একেও খোঁচা দিয়ে বলল “ এখন একটু এখানে কাজ করে নি। আর তোমাদের চিফ তো বলেই গেছে আমরা পুরো ক্যাম্পে যেখানে সেখানে যেতে পারি আর সব কিছু দেখতে পারি।“ আলি জিভ কেটে বলল “আমি তো না বলি নি। শুধু বলেছি, অফিসে গিয়েও বসতে পারো তোমরা।“ বুঝলাম ওর অদিতির প্রতি কোনও আকর্ষণ নেই, বা হাতে সময় নেই। প্রায় দৌড়ে বেড়িয়ে গেল। অদিতি আজ দৌড়াতে যায় নি। কিন্তু কোথা থেকে আরেক গ্লাস চা জোগাড় করে শুঁকনো রুটি আর কলা হাতে নিয়ে মাঠের মাঝে গিয়ে দাঁড়িয়ে মেয়েদের ট্রেনিং দেখছিল। আমি এই সুযোগে সুজাতার কাছে গিয়ে ড্রেসিংটা সেরে নিলাম। তারপর সীমার ড্রেসিং করে অদিতির পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। ও আমাকে ফিসফিস করে বলল “জানিস অনেক গুলো খটকা। ছেলেরা একা একা থাকে। মেয়েরা থাকে দোকলা। প্রাইভেসি? ছেলেগুলো কে মেল বেশ্যাদের মতন ব্যবহার করছে। “ আমি বললাম “এদের চোখে অনিচ্ছায় কোনও কাজ না করানো হলে কোনও দোষ নেই। কি দরকার এই সব ঝামেলার মধ্যে পড়ে। এদের প্রশ্ন করে লাভ নেই। উত্তর রেডি থাকে এদের। আমি শুধু মনে মনে প্রার্থনা করি যেন আমার আর তোর মতন দুটো গরু কোথাও থেকে এরা পেয়ে যায়। আর যত শিগগির সম্ভব পেয়ে যায়।“ ও গলা নামিয়ে বলল “জয় মা। যেন তাই হয়।“ আমরা হাঁটতে হাঁটতে নিজেদের অজান্তেই এগিয়ে চললাম অরূপদার ঘরের দিকে। দু দিন যাবত বৃষ্টি হওয়ায় মাটি পুরো কাঁদায় ভর্তি। যারা ট্রেনিং করছে তাদের পায়ে শস্তা কেডস আছে। কিন্তু আমাদের খালি পা। তাই যতই কাদা বাঁচিয়ে চলি না কেন, পা কাদায় ভরে গেছে। ঘরের সামনে গিয়ে পা শুঁকিয়ে কাদা মাখা মাটিগুলোকে বাইরে ঝেড়ে ফেলে ঘরে ঢুকলাম। আগের দু দিন খেয়াল করি নি, আজ দেখলাম স্বামীজির একটা ছবি রাখা অনেক উপরে। আর তার সামনে একটা ধুপ জ্বলছে, যদিও সেটা আয়ু প্রায় শেষ, ছাইগুলো মেঝেতে পড়ে একটা পাতলা বাদামি স্তূপের সৃষ্টি করেছে। আমরা দুজনেই ছবিটাকে প্রনাম করলাম মাথায় হাত ঠেকিয়ে। এই ভদ্রলোকের ক্যাপা ছিল সেটা এই ভূভারতের কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। অদিতি বসল বিছানায়। আমি গিয়ে বসলাম অরূপদার চেয়ারে। হঠাত দেখলাম ঘরের মধ্যে এসে হাজির হয়েছে সেই প্রথম দিনের রমা। আমি আর অদিতি দুজনেই উঠে দাঁড়াতে যাচ্ছিলাম কিন্তু ও বলল “বসো বসো। “ আমি ওকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই বললাম “এই যে ম্যাডাম। সেদিন কিডন্যাপ করার পর থেকে তো পুরো গায়েব। একবার খোঁজও নিতে আসোনি আমার।“ ও বলল “ আমি শুধু অর্ডার মেনে কাজ করেছি। এখন আপাতত জানতে এসেছি যে তোমরা কি পেটি খাও না গাঁদা খাও। না কি মাছের মাথা খাও?” আমাদের মুখে বিস্ময় দেখে বলল “ ওই যে অরূপদা বলে গেল না যে ডেলিভারি আসবে। আজ রুই আসছে। তাই আগে ভাবে জিজ্ঞেস করে গেলাম। রাকা দি জিজ্ঞেস করতে পাঠিয়েছে। “ ওর ব্যবহার সত্যিই সাবলীল। আমরা দুজনেই এক সাথে বলে উঠলাম “পেটি।“ তিন জনেরই হাঁসি এসে গেল। ও যেমন দৌড়াতে দৌড়াতে এসেছিল, ঠিক একই ভাবে সারা শরীরের বিভিন্ন জায়গার মাংসে তরঙ্গ উঠিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে গায়েব হয়ে গেল।
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
দশ
আমি চেয়ারে বসে একটা প্যাড তুলে নিলাম। উল্টে পাল্টে দেখলাম। না পুরো সাদা। তবে সামনের কয়েকটা পাতা ছেঁড়া। তবে প্যাডের প্রথম পৃষ্ঠায় বেশ কিছু অক্ষরের ছাপ রয়ে গেছে। সম্ভবত উপরের পাতায় চেপে লেখার ফল। অদিতি বিছানায় শুয়ে পড়েছে। আমার একটু কৌতূহল হল যে কি লেখা থাকতে পারে। আমি প্যাডের পাতাটাকে জানলার কাছে নিয়ে গিয়ে পড়ার চেষ্টা করলাম যে কি লেখা আছে। অদিতি কিছুক্ষণ ঘাড় ঘুরিয়ে আমাকে দেখল। তারপর উঠে বসে বলল “ঠিক কি করছিস বলবি?” বললাম “আগের পাতায় লেখা কিছু জিনিসের ছাপ চলে এসেছে। কোনও কাজ নেই তাই বসে বসে দেখার চেষ্টা করছি কি লিখেছে।“ ও তড়াক করে লাফিয়ে এসে হাত থেকে প্যাডটা নিয়ে প্রথম পাতাটা আর তার পরের কয়েকটা পাতা উল্টে পাল্টে দেখল। “না পরের পাতা গুলোর ছাপ খুব অস্পষ্ট। যা আছে এতেই আছে।“ কিন্তু এইভাবে পড়তে পারব না। আমি বললাম “ছোট বেলায় পড়েছিলাম পেন্সিল বা ওরকম কিছু ঘষে এই লেখার কিছুটা উদ্ধার করা গেলেও যেতে পারে। তবে কতটা চাপ দিয়ে লিখেছে আর হাতের লেখা জড়ানো কি না তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। “ যেমন বলা তেমন কাজ। অদিতি এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে প্রথম পাতাটা আস্তে আস্তে নিপুণ ভাবে প্যাড থেকে ছিঁড়ে নিল। তবে দুর্ভাগ্য ঘরে পেনসিল পেলাম না। আমি বললাম “আরেকটা উপায় আছে। তবে নিখুঁত না করতে পারলে পুরো জিনিসটাই হাতের বাইরে চলে যাবে। “ ও ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল কি। বললাম “মিহি মাটি ঘষে ঘষে যদি ব্যাপারটাকে একটু ...।“ ও কাগজটা ভাঁজ করতে যাচ্ছিল, আমি ওকে বাঁধা দিয়ে বললাম “ভাঁজ করিস না। দাগ ঘেঁটে যাবে।“ ও নির্লজ্জের মতন কোমর থেকে শাড়িটা খুলে নিজের পাছার ওপর কাগজটা একদম সমান্তরালে চেপে ধরল। আমাকে ইশারা করতেই আমি ওর কোমরের চার ধারে শাড়ি জড়াতে শুরু করলাম। আমরা অবশ্য এটা করার আগে চারপাশটা একবার দেখে নিয়েছিলাম। কাগজের পুরোটাই ঢাকা পড়ে গেছে ওর পাছা আর তার উপর দিয়ে যাওয়া মিহি কাপড়ের মাঝে। আমি ওকে বললাম “ আরেকটা কাজ ছিল। তখন ভুলে গেছিলাম। আমি লিখে দিয়েছিলাম ওরা আনিয়ে রেখেছে। বেশ কয়েকটা স্ট্রিপ গর্ভ নিরোধক বড়ি আনিয়েছি। বোধহয় ওরা বোঝেনি। “ ও আমাকে বলল “ তুই কি ভাবছিস বল তো?” আমি বললাম “তেমন দরকার পড়লে ছলা কলা দেখিয়ে পালানো। তুই নিশ্চই পেটে বাচ্চা নিয়ে যেতে চাস না এখান থেকে। “ ও আমাকে বলল “তুই কি পাগল। এদের সাথে আমি শোব?” আমি হেঁসে একধারে মাথা হেলিয়ে বললাম “সোনা সব কিছু কি আর নিজের ইচ্ছেয় হয়। এরাই তো শিখিয়েছে। শরীর হাতিয়ার অ্যান্ড অল।“ আমরা আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেড়িয়ে আমাদের ঘরের দিকে যাত্রা শুরু করলাম। সামনে একজনের সাথে দেখা হওয়ায় আমরা জিজ্ঞেস করলাম “ কটা বাজে বলতে পারবে?” ওর নাম আমরা জানি না। আগে দেখেছি ও কে। কিন্তু কথা বলা হয় নি। আমাদের মতন বয়স হবে। ও বলল “কেন? সীমাদিকে দেখার কথা?” বুঝলাম ও বোধহয় ভাবছে আমরা কখন কখন রুগী দেখব সেটা স্থির করার জন্য এই প্রশ্নটা করেছি। আমি বললাম “ না না। ওকে দেখা হয়ে গেছে। সুজাতা দিদি মনিকেও দেখা হয়ে গেছে। কিন্তু আজ আমাদের ঘাড়ে একটা গুরু দায়িত্ব পড়েছে সেটা তো শুনেছ। ডেলিভারি নিতে হবে। তা ওরা কখন আসবে, আর কটাই বা বাজে সেটার তো কোনও হিসাব নেই। “ ও আকাশের দিকে চোখের উপরে হাত রেখে একবার বলল “ সাড়ে নটা বাজে নি এখনও।“ ও চলে গেল আমরা হাঁটা দিলাম। অদিতি বলল “ সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠলে দিনটা অনেক বড় হয়ে যায়, সেটা ছোটবেলায় আমার বাপ অনেকবার বলেছে, কিন্তু আজ প্রথমবার বুঝলাম।“ তবে বুঝলাম ডেলিভারি কখন আসবে সেটা মেয়েটা জানে না, কারণ সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর ও দেয় নি।
ঘরে ঢুকেই অদিতি পিছনের দিকটা আলগা করে কাগজটা বের করে বিছানায় রেখে আমাদের জন্য বরাদ্দ ছেঁড়া বালিশটা দিয়ে আলগা ভাবে ওটাকে ঢেকে দিল। আমাকে বলল “এই যে? কেমন মাটি নিয়ে আসব?” আমি বললাম “তুই বস। আমি ছোটবেলায় এসব মস্তি অনেকবার করেছি। আমার কাছে ছিল ফুর্তি করার মতন ব্যাপার। আমিই নিয়ে আসি।“ তবে কারোর মনে সন্দেহ প্রবেশ করলে এরা আমাদের কেটে ফেলবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। হয়ত বা ভেবে বসল আমরা পুলিশের চর। অদিতি সটান বেড়িয়ে আবার হাঁটা লাগাল অরূপদার ঘরের দিকে। আলি কিছু দূর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। অদিতি দেখলাম ওকে ডাকল। “আলি দা। একবার শুনবেন।“ আমি বাইরে বেড়িয়ে এসে দাঁড়িয়েছি। ও হেঁসে বলল “আপনি বলবে না। তুমি বললেই আমি সাড়া দেব। বল। “ অদিতি বলল “ স্যার আর ম্যাডাম দুজনেই বলেছে আমি মানে আমরা ওই ঘর থেকে বই নিয়ে পড়তে পারি। ও ঘরে পাশের তাকে অনেক গুলো বই দেখেছি। একটা আনব। সময় কাটানোর জন্য। যদি তুমি সঙ্গে আসো তো... মানে বুঝতেই তো পারছ, যদি কিছু সরিয়ে ফেলেছি বলে অপবাদ রটে। “ আলি বলল “দূর সে তুমি বলছ তাই আমি যাব তোমার সাথে। আমরা কোনও রাখা ঢাকা করি না। এসো। যখন বই পড়তে ইচ্ছে করবে নিয়ে যাবে। এখন পড়বে না তো কবে পড়বে।“ শেষ কয়েকটা কথা আমার কানে এলো। “আমি যখন আলিগড় ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম, মানে ওই দিল্লীতে, পড়ায় মন বসত না। আমাদের লাইব্রেরীতে অনেক বই ছিল। অনেক গল্পের বইও ছিল। সেগুল এসে রাতের বেলায় গিলতাম। “ হাহাহা একটা উচ্চ কণ্ঠের উদার হাঁসি। আমি ওদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম। বুঝতে পারলাম এর পর ওরা গোটা রাস্তায় অনেক কথা বলল কিন্তু ওদের হাবভাব দেখার মতন সময় বা সুযোগ একটাও আমার হাতে নেই। আমি বাইরে গিয়ে বসে পড়লাম মাটিতে। ভাব খানা এমন যেন মাটির রক্ত পরীক্ষা করছি। ঘরের সামনের মাটি শুঁকিয়ে গেছে। আমি সেখান থেকেই পাথর বেছে বেছে বেশ কিছুটা শুঁকনো বাদামি কালচে মাটি হাতের মুঠোয় ভরে নিলাম। একটা পাতার জন্য এই যথেষ্ট। টেবিলের ওপর এসে মাটিগুলো হাত থেকে রাখলাম। বাইরে বেড়িয়ে এসে দেখলাম অদিতি হাতে একটা বই নিয়ে দাঁড়িয়ে আলির সাথে গায়ে পড়ে হেঁসে হেঁসে অনেক গল্প করছে। আমি দরজা থেকে নড়লাম না। অদিতি কিছু একটা বলল আর তারপর দেখলাম আলি চুপ মেরে ওপরের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল কিছুক্ষণ। তারপর ও উত্তেজিত ভাবে হাত পা নেড়ে প্রায় বিশ মিনিট ধরে অদিতিকে অনেক কিছু বলল। অদিতি দেখলাম মুখ নিচু করে দাঁড়িয়ে সেসব শুনল। আলি কে দেখে কেমন একটা উত্তেজিত বলে মনে হল। নিজের চারপাশে হাত পা ছুঁড়ে চলেছে। আমি এক সময় ভাবলাম অদিতি নিশ্চই নিজের বাচালতা দেখিয়ে কিছু একটা বলে ওকে খেপিয়ে দিয়েছে। নইলে এত উত্তেজিত হবে কেন? ওদের শান্ত করার জন্য একবার ভাবলাম ওদের দিকে যাব, আর কিছু না হোক, একটা বই নেওয়ার অজুহাতে। কিন্তু না। তার আগেই দেখলাম অদিতি ওর খোলা কাঁধে হাত বোলাচ্ছে। আলি একটা হাঁটু অব্দি লম্বা ধুতি আর একটা ফতুয়া মতন পরে আছে। মনে হল দেখে সান্তনা দিচ্ছে আলি কে। আলিকে দেখলাম নিজের চোখ মুছল। তারপর আবার আমাদের ঘরের দিকে হাঁটা শুরু করল। আমি দরজার সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম। যখন ওরা আমার কাছে এসে পৌঁছালো তখন দেখলাম আলি র চোখ লাল। বুঝলাম কেঁদেছে। অদিতি ওকে বলল “ আর মন খারাপ করে থেকো না। এই দেখো, এখানে একজন বন্ধু পেয়ে গেছ তুমি। তুমি আমাকে যা বলেছ, আমি কাউকে বলব না কথা দিলাম। তবে আরও কিছু বলে মন হালকা করতে চাইলে আমাকে বলতে এসো। (আমার দিকে দেখিয়ে বলল) ও দিদি বেশী পড়াশুনা করেছে। তাই বড় ডাক্তার। ওর সময় হবে না। কিন্তু আমার হবে। “ আলি আমাকে বলল(হিন্দি বাঙলা মেশানো কথা) “ তোমার বন্ধু শয়তান। আমার পেট থেকে কথা বের করে আমাকে কাঁদিয়ে এখন সরে পড়ছে।“ অদিতি যেন অরূপদার কায়দা রপ্ত করে ফেলেছে। খুব ধীর গলায় বলল “সরে যাব তো বলি নি। বললাম তো, যখন খুশি নিজের মনের কথা বলতে এসো। আমি শুনব। তুমিই এই ক্যাম্পে আমার প্রথম বন্ধু।“ আলি আবার ভালো করে চোখ মুছে চলে গেলো। যাবার আগে আমাদের অভ্য় দিয়ে গেলো এই বলে যে আমরা যেকোনো সময়ে যখন খুশি ওই ঘরে গিয়ে বই নিয়ে আসতে পারি, বই রেখেও দিয়ে আসতে পারি। আর ডেলিভারি বা হিসাবের দরকার হলে আমাদের ও নিজেই এসে ডেকে নিয়ে যাবে।
বললাম “কি হচ্ছিল রে?” ও বালিশে চাপা দেওয়া কাগজটা এক পাশে সযত্নে সরিয়ে রেখে বিছানায় শুয়ে পড়ে বলল “ ভাব জমালাম। (আমার দিকে চোখ মেরে বলল) আমার একটু বেশী বয়সের ছেলে ভালো লাগে। (আমি একটু ভুরু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছি দেখে আমাকে বলল) মাই লেডি লাভ, ইউ ক্যান কল দিস অ্যা ক্রাশ। যাই হোক, এই হল খবর। (ও শুরু করল) লোকটা আলিগড় থেকে পড়েছে।“ আমি ওকে থামিয়ে বললাম “সে তো আগেই শুনেছি। তো?” বলল “ ও ইকনমিক্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিল। মাসে চল্লিশ হাজার টাকার মাইনের চাকরি পেয়েছিল। কিন্তু সব ছেড়ে এখানে এসেছে। “ স্বাভাবিক প্রশ্ন “কেন?” বলল “ এখানে সবাই জানে ওর বউ কে অনেকে মিলে রেপ করে ট্রেন লাইনের ধারে ছেড়ে রেখে দিয়ে গেছিল। কিন্তু সেটা সত্যি নয় কারণ ও সত্যি কথা কাউকে বলতে পারে নি।“ আমি বললাম “ আর তোকে বলে দিল পাঁচ মিনিটের আলাপে? শালা যত সব গ্যাজাখুরি? হ্যাঁ?” ও বলল “ ধীরে বন্ধু ধীরে। এখানে কোনও মেয়ে ওর সাথে ঠিক করে কথা বলে না। অরূপদা আর বিনীতাদি ছাড়া সবাই ওকে গার্ডিয়ান বলে মেনে নিয়েছে, কিন্তু ওর সাথে সুখ দুঃখের কথা আজ অব্দি কেউ বলে নি। অ্যান্ড লাকিলি আমিই ফার্স্ট বললাম। আর শোন মেয়েদের চোখ বোঝে। আমি বললাম বউ মারা গিয়েছিল? লোকটা ইমোশানাল হয়ে ভেঙ্গে পড়ল। গল্প হল। ওর বাবা অনেক বেশী বয়সে দ্বিতীয় বিয়ে করে ওর নিজের মা মারা যাবার পর। নতুন মাকে ও ভালো বেসে ফেলেছিল। অবশ্য মায়ের মতন ভালোবাসা, এত ওপেন ভালোবাসা এর আগে ও কোনও দিন দেখে নি বলে আমার ধারণা। ওর একটা অপারেশনের সময় ওর মা ওকে সেবা যত্ন করে ভালো করে তোলে। ও ওর মাকে সেলাম না দিয়ে কোথাও বেরতো না। চাকরির ব্যাপারটা সত্যি। ও তখন চাকরি করছিল। আর ওর বাবা যাকে বিয়ে করে এনেছিল তার বয়স ভীষণ কম। মানে ওর কথায় ওর বাবার বয়সের প্রায় অর্ধেক। তবে তাতে কোনও সমস্যা ছিল না। তিন জনের সংসার ভালোই চলছিল। ওর বাবার ছিল একটা ছোট ব্যবসা। আর ও বাইরে বাইরে থাকত অফিসের কাজে। একদিন একটা বাজে খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে আসে। দু কথায় বলতে গেলে এই যে, ওর বাবার সাথে স্থানীয় কিছু পলিটিকাল লোকের সমস্যা বাঁধে। কারণ ওরা ওদের বাড়িটা কিনতে চায়। কিন্তু ওর বাবা অনেক টাকার বিনিময়েও সেই বাড়ি বিক্রি করতে রাজি হয় না। ওরা ওর যুবতী দ্বিতীয় মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রায় সাতজন মিলে রেপ করে একটা মিলের ধারে ফেলে রেখে দিয়ে যায়। ওর দ্বিতীয় মা ছিল অন্তস্বত্বা। এই আঘাত নিতে পারে নি। যখন উদ্ধার হয় ওর দেহ তখন রিগর মর্টিস সেটল করেছে। ওর বাবা সেইদিনই মারা যায়। ওর ওপর উল্টে আরোপ করা হয় যে ও আর ওর বন্ধুরা মিলে ওর স্নেহ আর মমতায় ভর্তি যুবতী মাকে গ্যাং রেপ করেছে নেশার বশে। ওর আর ওর ছয় জন বন্ধুর চাকরি যায়। দুজন আত্মহত্যা করেছে বলে ওর ধারণা। ওর দুবছর জেল হয়েছিল। অবশ্য আদেশ ছিল অনেক দিনের কিন্তু এখানকার ক্যাম্পের নির্ধারিত (গোপনে, সেটা ও ইশারায় বোঝাল) উকিল মামলা আবার শুরু করে সেটাকে আদালতের সামনে পেশ করে। অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে ও জেলের বাইরে আসে। এদের সাহায্যে যারা ওর পূজনীয়া মার এই ক্ষতি করেছিল তাদের খুঁজে বের করে খুন করে আর তারপর বহুদিন ইউপি তে ছিল গা ঢাকা দিয়ে। দু বছর আগে এদের ক্যাম্প এখানে পাঠানোর সময় ও চলে এসেছে এখানে। “ আমি বললাম “একটা ব্যাপার আশ্চর্য তাই না? কত লোক এই ভাবে ঠকে যাচ্ছে।“ অদিতি বলল “ বন্ধু তুই আর আমিও এখন সেই দলে পড়ি। কারোর ভালো রিসন থাকলেই সে যে কাউকে তুলে নিয়ে আসতে পারে না। তাহলে ওই খারাপদের থেকে এরাই বা আলাদা কিসের। আমাদের ফ্যামিলির থেকে আমাদের ভাওতা দিয়ে দূরে সরিয়ে এনে এখানে এইভাবে হাফ নেকেড করে আধ পেটা খাইয়ে রেখে দিয়েছে। এখানেই আমার কেন জানি না একটু খটকা লাগছে।“ আমি খুব গম্ভীর ভাবে ভাবছিলাম যে ও যদিও বলছে দু একটা খটকা, আমার কাছে এখনও খটকা অনেকগুলো। তবে এটা নিঃসন্দেহ যে এখানে প্রায় সবাই, বা বেশীরভাগ মেয়েই বা ছেলেই নিজেদের জীবন দিতে প্রস্তুত। আমি খোলা জানলার দিকে শূন্য দৃষ্টি নিয়ে বসে আছি দেখে ও আমার কোমরের নগ্ন চামড়ার ওপর কাতুকুতু দেওয়ার মতন করে খুঁচিয়ে বলল “কমরেড, আমি আমার রিপোর্ট পেশ করেছি। এইবার আমি বাইরে গিয়ে নজর রাখব। তুমি যে জিনিসে পারদর্শী বলে দাবি করেছ সেটা নিজের নিপুণ সার্জেনের হাতে সেরে ফেলো।“ ও উঠে বাইরে গিয়ে দাঁড়ালো।
না আমি বিফল হই নি মোটেই। লেখা উদ্ধার করা গেল। আরও পুরোটা। আমার “হয়ে গেছে “ আওয়াজ টা পেয়েই ও ভেতরে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার পিঠের উপর। লেখা কিছুটা আবিস্কার হয়েছে ঠিকই কিন্তু সত্যি বলতে কি কিছুই আবিস্কার হয় নি। লেখা গুলো এখানে ছেপে দিলাম।
1. 73 jl s (k) f-23 (a 36) 66l
2. 128 ajcb (k) f-2 (a 29) 19l
3. 11 bpnd (k) f-G (a-55) 35l (?)
4. 12 fss-3 cross—(k) f-3 (a-41) 19l
(3-4)
5. bob-ac-(12230??jesus resurrection in PL(how many pl))-dep-82l
6. -S(22)
7. -A(23)
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
11
না আমি বিফল হই নি মোটেই। লেখা উদ্ধার করা গেল। আরও পুরোটা। আমার “হয়ে গেছে “ আওয়াজ টা পেয়েই ও ভেতরে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার পিঠের উপর। লেখা কিছুটা আবিস্কার হয়েছে ঠিকই কিন্তু সত্যি বলতে কি কিছুই আবিস্কার হয় নি। লেখা গুলো এখানে ছেপে দিলাম।
1. 73 jl s (k) f-23 (a 36) 66l
2. 128 ajcb (k) f-2 (a 29) 19l
3. 11 bpnd (k) f-G (a-55) 35l (?)
4. 12 fss-3 cross—(k) f-3 (a-41) 19l
(3-4)
5. bob-ac-(12230??jesus resurrection in PL(how many pl))-dep-82l
6. -S(22)
7. -A(23)
আমি বললাম “আমার হাতে যা এসেছে সেটা এই।“ ও অনেকক্ষণ ধরে কাগজ গুলো দেখে বলল “জানালা মানে গবাক্ষ। তুই এই লেখা ফুটিয়ে তোলার সাথে সাথে নিশ্চই ধাঁধা শলভ করাও শিখেছিস? তো লেগে পড়।“ আমি বললাম “শালা একটা লাইনেরও মানে বুঝতে পারছি না। কি করব। আর, না, আমি ওসব শিখিনি।“ ও যেন তেঁতে উঠলো, “শালা শিখিসনি তো মাটি ঘাঁটতে গেলি কেন। কি ভেবেছিলিস? আমাদের অরূপদা বাঙলায় আদ্যান্ত লিখে রেখে দিয়ে যাবে যাতে আমার আর তোর মতন গান্ডু সেটা একবারে পেনসিল ঘষে সব বুঝে উদ্ধার করে দেবে?” আমি এমনিতে ডানপিটে হলেও একটু নরম স্বভাবের, হঠাত করে এতগুলো ধমক খেয়ে ভাবতে শুরু করে দিয়েছি সত্যি একটু যদি ধাঁধা শিখে রাখা যেত তাহলে মঙ্গল হত। আমি চুপ করে ফুটে ওঠা লেখা গুলোর দিকে তাকিয়ে আছি দেখে ও এসে আমার খোলা ঘাড়ে হাত রেখে বলল “ রাগ করিস না। আমিও তোর মতই ফেঁসে গেছি। চল আরেকবার পড়ে দেখি যদি কিছু বের করতে পারি।“ প্রায় দশ মিনিট ধরে তাকিয়ে থেকে আমি বললাম “কিছুই বুঝতে পারছি না তবে অনেক গুলো জায়গায় ব্র্যাকেটের মধ্যে “কে” দেওয়া আছে। ওটা কি “কোলকাতা”! মনে হচ্ছে... কলকাতা হলে খারাপ গেস নয়। কারণ যা বুঝলাম সবাই প্রায় ট্রেন ধরবে। আর ডাকাতি যদি হয় তবে কলকাতা ছাড়া আর কোথায় এত বড় হাত মারবে? “ অদিতি ফিস ফিস করে চিন্তিত স্বরে বলল “ কলকাতা ছাড়া যে কোথাও বড় হাত মারতে পারবে না তেমন কোনও কথা নেই যদিও, কিন্তু কলকাতা?” অদিতি যেন হঠাত উত্তেজিত হয়ে পড়েছে, আমার ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে বলল “ইয়েস ইয়েস ইয়েস। তুই কি পড়াশুনা ছাড়া কিছুই করিস নি? আরে আমি তো শুধু ওই “কে” টা বুঝতে পারছিলাম না বলেই আঁটকে ছিলাম। এখন জলের মতন পরিষ্কার। “ আমি ঠোঁট থেকে ওর ঠোঁটের স্বাদ মুছতে মুছতে বললাম “ না আমি কলকাতায় থাকি কিন্তু খুব ভালো চিনি না।“ ও আমার কাঁধ দুটো শক্ত করে চেপে ধরে বলল “ আরে আমারও অনেক আগে বোঝা উচিত ছিল, কিন্তু বুঝিনি। দ্বিতীয় লাইনটা দেখ। এ যে সি , জগদীশ বোস রোড। এবং সেটা কলকাতায়। একশো আঠাশ নম্বর বাড়িতে ডাকাতি বা লুট। সব কটাতে এফ রয়েছে। আমি ভাবছিলাম সেটা ফ্ল্যাট নাম্বার, যদি সেটা সত্যি ওই ভাবে ব্যবহার করে থাকে। এখন মনে হচ্ছে যে হয় ফ্ল্যাট নাম্বার বা ফ্লোর নাম্বার। “ আমি বললাম “ জায়গায় জায়গায় “এ” লেখার মানে কি? আর ওই “এল”?” ও বলল “মনে হচ্ছে যদি সাধারণ ব্যাপারটা ধরে নেওয়া যায় তাহলে কোথায়, কত নম্বর ফ্লোর, কে থাকবে আর কত টাকা আন্দাজ দখল করতে পারে সে নিয়েই ওদের ভাবনা। “ এ কথাটা তো আগে ভেবে দেখিনি। এই দু তিনদিনে এরা শুধু ছেলের বয়স বা স্বাস্থ্য, কত টাকা সেখানে আছে, আর কোথায়, সেটা নিয়েই (অবশ্য কোথায় বলতে হোটেল বা জায়গার নাম ছাড়া আমাদের কিছুই বলে নি) আমাদের গল্প শুনিয়েছে। আমি বললাম “এ মানে হল এইজ, মানে বয়স?” ও আমার গালে হাত বুলিয়ে বলল “ ইয়েস মাই লেডি লাভ। আর “এল” মানে লাখ। ভুল হতে পারে। তবে আপাতত সেটাই বিশ্বাস করতে হবে। কারন সকালে রাকা বলেছিল ওর সামনা সামনি যুদ্ধে যাচ্ছে। আর আজ ওদের বিশাল বড় দিন।“ আমি বললাম “ তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়াল? “ প্রথমেই ধাক্কা খেয়ে থেমে যেতে হল। ও আমাকে বলল “তুই না একটা ইয়ে। জে এল। মানে হল জেমস লং আর পরের এস টা বাদ দিও না সোনা , সেটা হল সরণী, অর্থাৎ জেমস লং সরণী তে , এবং যেটা কোলকাতায়, সেখানে তিয়াত্তর নম্বর বাড়ির, (একটু থেমে বলল) ফ্লোর এক্ষেত্রে হওয়া মুশকিল কারণ ওই চত্বরে অত তলার বাড়ি এখন অন্তত নেই, আর তাই ফ্ল্যাট নাম্বার ধরে নিচ্ছি, তেইশ নম্বর ফ্ল্যাটে পরের ডাকাতি। বয়স ছত্রিশ, সম্ভবত পুরুষ, আর এল মানে যদি লাখ হয় তো সেখান থেকে ছেষট্টি লাখ লোটার প্ল্যান নিয়ে গেছে।“ ও বলে চলল “ পরেরটা আচার্য জগদীশ বোসের ওপর। বাড়ির নাম্বার একশ আঠাশ, তবে, এটা অবশ্য ফ্ল্যাট বা ফ্লোর দুই হতে পারে। ধরে নিচ্ছি ২ নম্বর ফ্লোর।মক্কেলের বয়স ঊনত্রিশ। আর সেখান থেকে উনিশ লাখ টাকা পাবে। পরের টা অবশ্য আমিও বুঝতে পারছি না।“ আমরা অনেকক্ষণ বাকি লাইনগুলোর দিকে তাকিয়ে হাল ছেড়ে উঠে পড়লাম। তবে ততক্ষণে আমাদের দুজনের মাথাতেই সংকেতগুলো ছাপা হয়ে গেছে। মাত্র দুই লাইনের মানে হয়ত উদ্ধার করতে পেরেছি। কিন্তু মাথার ভেতরে নিরবে অর্থহীন সংক্ষিপ্ত অক্ষর গুলো থেকে মানে বের করার প্রবল চেষ্টা চালিয়ে চলেছি। আমি হেঁসে বললাম “পি এন ডি মানে পোঁদ নয় তো?” অদিতি আমাকে বলল “সেটা হলে চাপ কম হত। চল দেখি বাইরে কি হচ্ছে। চল।“ কথায় বলে যেদিন ভগবান তোমার দিকে দাঁড়িয়ে আছেন সেদিন সব কিছু সোজা হয়ে যায়। আজ আমাদের সাথে তাই হল।
ট্রেনিং তখনও চলছে। অদিতি আমাকে বলল “ওই দিকে দেখেছিস?” ওর বাকি কথাটা শেষ হল না। আরও চার জন একটা কাটা পাঁঠার মতন ছটফট করতে থাকা মেয়েকে নিয়ে এলো। ট্রেনিং করতে গিয়ে কিসের ওপর পা পড়েছে। প্রথমে ওরা খেয়াল করে নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কিছুর একটা থেকে শরীরে বিষ ঢুকে গেছে। কলকাতা বা বড় হাঁসপাতাল হলে অনেক বড় বিভাগ থাকে এর জন্য। কিন্তু আমি আমার জ্ঞান অনুযায়ী ওষুধ আগের দিনই আনিয়ে রেখেছিলাম। বিছার কামড় খুব সম্ভবত। কেডস খুলে খালি পায়ে দৌড়াবার ফল। তবে ওষুধ একই। এর থেকে ভালো ওষুধ আমার জানা নেই, আর আমার সেই বিভাগে বেশী পড়াশুনাও নেই। তবে কাজ দিয়েছিল। একটা ইনজেকশন। অনেকক্ষণ পরে সে চাঙ্গা, যদিও রেস্টে। চারপাশে আমাদের জয় জয় কার। আমরা কেডস ছাড়া দৌড়াতে বারণ করে দিলাম। তবে তেমন বিছা হলে এই শস্তা কেডসে কিছু হবে বলে মনে হয় না। বিছা বা যাই হোক না কেন সেই ব্যাপারটা সারার পর আবার আমরা গেলাম অদিতির আগে দেখানো জায়গার দিকে। কেউ আমাদের দিকে কোনও লক্ষ্যই করছে না। রাকা (দি) ছিল কিন্তু সেও না। ওদের থেকে বেশীদূর যাওয়া ঠিক হবে না মনে করেই ফিরে এসে রাকা কেই জিজ্ঞাসা করলাম “ আচ্ছা ওখানে কি দীঘি আছে। আমাদের দুজনেরই সাঁতারের খুব শখ। “ ও একবার ওই দিকে তাকিয়ে বলল “পুকুর ওটা। সোনা মা আমাদের, ওখানে যেও না। সাপে কাটলে আর দেখতে হবে না।“ ওর কথা শেষ হল না, অদিতি আমার হাতটা চেপে ধরল। সরে যাওয়ার পর বলল “ বি পি এন ডি। বেনিয়া পুকুর । কলকাতাতেই আছে। পনড। হল পুকুর। ইচ্ছা করে “ও” টা বাদ দিয়ে দিয়েছে যাতে সাধারণ লোক বুঝতে না পারে। আই মীন হাতে কাগজটা পড়লেও যাতে একটু সময় নষ্ট হয়। “ সত্যি তো বুঝে ফেলা উচিৎ ছিল। “এগারো নম্বরে গিয়ে গ্রাউন্ড ফ্লোরে কাউকে লুটবে আর তার বয়স পঞ্চান্ন, আর শুধু তাই নয়, সে বিশাল বড় টাকার মালিক কারণ তার থেকে পয়ত্রিশ লাখ লুটবে এরা। “
আমার উত্তেজনা বেড়ে গেছে। আমি বললাম “ আর এফ এস এস? “ অদিতি বলল “জলের মতন সোজা। ওখানে থিয়েটার আর সিনেমা দেখতে যেতাম। ফ্রি কলেজ স্ট্রিট। ক্রসটা বোধহয় ক্রসিং। কত নাম্বার ক্রসিয়ে গিয়ে ওই বারো নম্বরের বাড়িটা পাবে তার সংকেত দেওয়া আছে। বাকি টা আর মুখে বলার দরকার নেই। কিন্তু তার পরের লাইনগুলো সত্যি ধোঁয়া। বড্ড সাংকেতিক হয়ে গেছে ওগুলো।“ উফফ এই বাজারে জেসাসের পুনর্জন্ম। ভগবান। আরেকটু তাকাও আমাদের দিকে। বুদ্ধি তো একেবারে তলানি তে গিয়ে ঠেকেছে। কিন্তু আমরা হাল ছাড়লাম না। ভগবান আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিলেন ঠিকই কিন্তু আরও কিছুক্ষণ পর। তবে তাতেও পুরো রহস্যের সমাধান হল না। আমি আমাদের ঘরের সামনে বসে বাসে বাকি লাইন কটার যত ছাড়ানোর চেষ্টা করছি এমন সময় দেখলাম দুটো ইয়া বড় বড় ট্রাক এসে দাঁড়াল। এতক্ষন খেয়াল করিনি। এখন দেখলাম আলি রান্নার জায়গা থেকে ছুটতে ছুটতে ওই ট্রাকের দিকে এগিয়ে গেলো। ট্রাকের ড্রাইভারদের সাথে ও অনেকক্ষণ কথা বলল। ওদের হাত থেকে কাগজ নিয়ে কিছুক্ষণ পরীক্ষা করে দেখে আমাদের দিকে তাকাল। আমরাও ওই দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। হাতের ইশারায় আমাদের ডাক দিতেই আমরা অরূপদার ঘরের দিকে হাঁটা দিলাম। পথে অদিতি আমাকে ফিস ফিস করে বলল “ তিন আর চারের দুপাশে যে ব্র্যাকেট দিয়ে রেখেছে তার একটা মানে আমি বুঝতে পেরেছি। এই দুটো জায়গার দূরত্ব আহামুরি কিছু বেশী নয়। হয়ত একই দল গিয়ে ওই দুটো জায়গা লুট করবে।“ এই নিয়ে আর কথা বলা হল না। কারণ দুটো ড্রাইভার আর রাজুকে নিয়ে আলি এসে হাজির হয়েছে অরূপদার ঘরে। চারটে বিশাল বড় বড় লিস্ট আমাদের হাতে থামিয়ে দিয়ে রাজুকে নিয়ে চলে গেল মালের তদারকি করতে। ট্রেনিং করা ছেড়ে অনেক গুলো মেয়েও দৌড়ে ট্রাকের কাছে গিয়ে জড় হয়েছে মাল নামানোর জন্য। বুঝলাম এদের পয়সা করির ভালোই আমদানি হয়েছে শেষ কিছু দিনে। কারণ লাখ লাখ টাকার আনাজ পাতি, সব্জি, চাল, দাল, মাছ, মাংস, ডিম, মোমবাতি, আটা, লুস মশলাপাতি খরিদ করা হয়েছে। আর তার সাথে প্রচুর নতুন বন্দুক আর গুলি আর বোমার আমদানি করা হয়েছে। সাথে মেয়েদের কিছু পোশাকও এসেছে। সব মিলিয়ে বিল দিয়েছে প্রায় ছাপ্পান্ন লাখ টাকার। মেয়েদের ইন্সট্রাক্সান দিয়ে আলি আবার ফিরে এসেছে। অদিতি দেখলাম আমারই মতন অঙ্কে কাঁচা। কড় গুনে গুনে যোগ করতে হচ্ছে আমাদের দুজনকে। একটা পেন ছিল টেবিলে সেটা দিয়েই টিক কেটে কেটে যোগ গুলো মেলালাম। মেয়েরা আমাদের থেকে গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়া অব্দি জিনিস নামাচ্ছে না ট্রাক থেকে। আমাদের হিসাব মেলানোর পর লিস্ট চারটে নিয়ে গেলাম ট্রাক দুটোর দিকে। আলি আর অমল (এই প্রথম ছেলেটা কে দেখলাম, মানে দেখেছি আগেই, কিন্তু এই যে অমল সেটা এখন জানতে পারলাম) একটা ট্রাকে উঠে গেল। রাজু একটা মেয়েকে নিয়ে অন্যটায় উঠে পড়ল। আমি লিস্ট পড়তে শুরু করতে যাচ্ছি হঠাত একজন ড্রাইভার আমাকে থামিয়ে আলি কে হাত দেখিয়ে বলল “ আসল জিনিসটাই তো দি নি।“ ওর কথায় হিন্দি হিন্দি একটা টান আছে। পাঞ্জাবি তুলে নিজের পায়জামার কোমরের কাছ থেকে গোঁজা একটা জিনিস বার করে কপালে ঠেকিয়ে আলির দিকে উঁচিয়ে ধরল। আমি রিভলবার শুধু পুলিশদের কোমরেই গোঁজা অবস্থায় দেখেছি, জীবনে কোনও দিন হাতে নিয়ে দেখিনি, আর এই বিষয়েও আমার জ্ঞান অত্যন্ত সীমিত। এখানে আসার পর অবশ্য দেখেছি কয়েকজনের হাতে। তবে এটা মনে হল একদম সেই ফিল্মি মার্কা সাহেবি পিস্তল। “এটার টাকা লাগবে না। এটা বেগমের কাছ থেকে সেলামি। লোডেড। কিন্তু আরও গুলি লাগলে পয়সা দিয়ে কিনতে হবে। এটার ম্যাগাজিন ভর্তি। আসাম বর্ডার পার হয়ে এসেছে। অনেকগুলো এসেছে। লাগলে বলবেন। এত শস্তায় এ জিনিস আর কোথাও পাবেন না এই বলে দিলাম।“ মনে হল পুরো দেশটাই আগুনের গোলার ওপর বসে আছে।
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
12
“ওদের দিয়ে দাও। “ আলি আমাদের উদ্দেশ্য করে বলল। আমি ছুরি কাচি অনেক ধরেছি কিন্তু বন্দুক এই প্রথম। আমার হাতে বন্দুকটা ধরাতে ধরাতে লোকটা বলল “সাবধান, ম্যাগাজিন ভরা।“ দেখতে ছোট হলেও জিনিসটা বেশ ভারী। জিনিসটা হাতে নিতেই আমার হাত কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে। মানুষের পেট কাটার সময় আমার হাত আজ অব্দি কাঁপে নি, কিন্তু এই ছোট জিনিসটা হাতে নিতেই কেমন জানি একটা ভয় মনের মধ্যে এসে জুড়ে বসল। আরেকটু হলে জিনিসটা আমার হাত থেকে মাটিতে পড়ে যেত, ঠিক এমন সময় অদিতি জিনিসটা আমার হাত থেকে তুলে নিল। “কি করছ? এই জিনিস হাত থেকে পড়ে গেলে খুব খারাপ। তার ওপর আবার সেলামির জিনিস।“ অদিতি কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে হেঁসে হেঁসেই কথা বলছে। বন্দুকটা হাতে নেওয়ার পরও ওর মধ্যে কোনও রকম অস্বস্তি চোখে পড়ল না আমার। যেন একটা খ্যালনা নিয়ে হাতে নেড়ে চেড়ে দেখছে। সাহস আছে বলতে হবে মেয়েটার। আমি লিস্ট থেকে একটা একটা করে জিনিস পড়া শুরু করলাম। খুব মেপে মেপে জিনিস নামানো হচ্ছে। সেটা স্বাভাবিক, কারণ অনেক রক্ত মাংস বেচে জীবন বিপন্ন করে উপার্জন করা টাকা দিয়ে এই জিনিস কেনা। তবে বাজারের থেকে অনেক শস্তায় পেয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। দু তিনটে জিনিস ছাড়া বাকি সব যেমন লেখা আছে তেমনটাই আছে। তবে ওজনে কারছুপি থাকলে জানি না। সব জিনিস নামানো হয়ে গেলে সবাই মিলে ট্রাকের ভেতরগুলো ভালো করে তন্ন তন্ন করে খুজে দেখে নিল যে কিছু ফেলে রাখা হয়েছে কি না। জিনিস সরিয়ে ফেলা হল। ওই দু তিনটে জিনিস ওরা বলল কালকের মধ্যে এসে দিয়ে যাবে। কিন্তু আলি বলল তার দরকার নেই কারণ বারবার এদিকে এলে পুলিশের নজরে পড়তে বেশী দেরী হবে না। ও নিজেই লোক পাঠাবে সেই তুলে নেবে। এইবার টাকা দেওয়ার পালা। একটা মেয়ে এসে দুজন ড্রাইভারের জন্য চা দিয়ে গেল। ওরা চায়ের গ্লাস হাতে নিয়ে আবার হাঁটা দিল অরূপদার ঘরের দিকে। আমি আলি আর অদিতি ওদের পিছন নিলাম। অদিতি ফিস ফিস করে আলি কে বলল “আলিদা এত অনেক অনেক জিনিস। এত লোক কোথায়?” আলি বলল “ অনেক দিনের জিনিস এসেছে। আর টুকিটাকি কিছু লাগলে যোগান আসে। তিন চার মাসে একবার দুবার এরকম রিফিল করে নি। বাকি জিনিস নিয়ে কেউ এখানে আসে না। কোথাও নামিয়ে দিয়ে যায়, আমরা সময় মতন উঠিয়ে নি। “ আরতি অবশ্য এমনটাই বলেছিল সেদিন। আলি আমাদের দুজনকে গলা নামিয়ে নিয়ে বলল “অরূপদা বলে গেছে যে একটা বাদামী খাতায় জিনিসের রেট লেখা আছে। এর আগে কোনও দিন ওর অনুপস্থিতিতে এত মালের ডেলিভারি নেওয়া হয় নি। একবার খুজে দেখ। বোধহয় হাতের কাছেই থাকবে। আমি টাকার বন্দবস্ত করছি। “ অদিতি আলির বা হাতটা চেপে ধরে বলল “ওই তিনটে জিনিস, যেগুলো আসে নি, তার টাকা দেবে না। “ আমি বলে দিলাম টোটাল কত টাকা দিতে হবে। আলি আমাদের অরূপদার ঘরে রেখে ওদের দুপুরে এখানেই খেয়ে যাওয়ার নিমন্ত্রণ জানিয়ে টাকা আনতে চলে গেল। অবশ্য যাওয়ার আগে অদিতির হাত থেকে কালো চকচকে জিনিসটা নিয়ে চলে গেল।
খুব বেশী খুজতে হয় নি, বই রাখা তাকেই পাওয়া গেল সেই বাদামী খাতা। সত্যি তাতে সব কটা জিনিসের রেট লেখা আছে। আর সাথে তারিখও দেওয়া আছে। তারিখ ছয় দিন আগের। মনে হয় সেদিনই এদের সাথে ডিল ফাইনাল করেছিল অরূপদা। না কোথাও রেটে কোনও ভুল নেই। বরং কয়েকটা জিনিসের রেট যা ধরা হয়েছে সেটা খাতায় লেখা সংখ্যার থেকে কম। আমাদের গুন যোগ করতে অনেকক্ষণ লাগলো। ইতিমধ্যে আলি ফিরে এসেছে একটা বড় ব্যাগ নিয়ে। ওদের সামনে ব্যাগটা নামিয়ে রেখে বলল “ গুনে নিয়ে একটা কাঁচা রসিদ লিখে দাও তোমরা। বাকি টাকা ওই জিনিসগুলো নেবার সময় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। “ আমরাও একটা কাঁচা রসিদ দিয়ে দিলাম। উল্লেখ করে দিলাম যে কি কি জিনিস এখনও আমাদের কাছে আসা বাকি, আর কত টাকা আমাদের তরফ থেকে ওদের দেওয়া বাকি। অদিতি এক একটা টাকার থোক গুনে গুনে অ্যাঁমাউন্টটা ওদের বলছে, ওরাও আবার নিজেরা গুনে নিয়ে মিলিয়ে নিচ্ছে। অদিতির টাকা গোণার ভঙ্গি দেখে বুঝতে পারলাম আমার মতই ও ও নোট গোণার কাজে ভীষণ অপটু। আমি বাদামী খাতাটা আবার জায়গায় রাখার সময় খেয়াল করলাম কয়েকটা বইয়ের পেছনে একটা চটি মতন বই তাকের একদম পিছনে লুকিয়ে রাখা আছে। লুকিয়ে রাখা আছে সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত কারণ, নইলে এইভাবে একদম বইয়ের স্তূপের পিছনে রাখার কোনও কারণ নেই। সহজে চোখে পড়বে না। লাকিলি আমার চোখে পড়ে গেছে। কিন্তু ওদের সামনে বের করা যাবে না বুঝে পুরো ব্যাপারটা চেপে গেলাম তখনকার মতন। টাকা গোণাও শেষ হল। শুনলাম মাছ বসানো হচ্ছে। ড্রাইভার দুজন অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও এখানে খেতে রাজি হল না। ওরা টাকার ব্যাগ হাতে রওয়ানা দিল। অরূপদার ঘরে এখন শুধু আমরা দুজন। চারপাশটা দেখে নিলাম একবার। অদিতিকে গলা নামিয়ে বললাম ওই চটি বইটার কথা। ও বলল “ যদি সত্যি লুকিয়ে রাখা থাকে, তাহলে সেটা বের করা রিস্ক হবে। কারণ পরে যদি ধরতে পারে তাহলে বলবে গুপ্তচরের কাজ করছি। এক কাজ কর তুই বাইরে নজর রাখ কেউ এলেই বলবি। আমি বইটা বের করে কি লেখা আছে দেখে নিচ্ছি। তারপর আলোচনা করা যাবে।“ আমি ওকে সাবধান করে দিলাম “দেখিস কোনও বই ফেলিস না। আর ঠিক যেভাবে আছে ঠিক সেইভাবে বইটাকে আবার রেখে যেতে হবে।“ তাকটার গভীরতা বেশ ভালো। প্রায় দুই স্তর বইয়ের পেছন থেকে অদিতি ওই চটি বইটা বের করল। আমি বাইরে গিয়ে দাঁড়ালাম পাহারা দিতে। মাঝে মাঝে আড় চোখে ঘরের ভেতরে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম যে অদিতি প্যাড থেকে একটা কাগজ ছিঁড়ে নিয়ে পেন দিয়ে তাতে ওই চটি বইটা থেকে কিসব লিখে নিচ্ছে। মেয়েটা না একটা মাথা মোটা। আগে লিখে নিয়ে তারপর প্যাড থেকে পাতাটা ছিঁড়ে নিলেই হত। এখন খড়খড়ে কাঠের টেবিলে পাতলা কাগজটা রেখে তার ওপর লিখতে রীতিমত বেগ পেতে হচ্ছে সেটা বেশ বুঝতে পারছি। আর সময়ও লাগছে বেশী। আমার তো হার্ট বিট অনেকক্ষণ ধরেই বেড়ে গেছে। যাই হোক। ওর সব কিছু নোট করে নেওয়ার আগে কেউ এলো না। ও বইটা আবার আগের জায়গায় ঢুকিয়ে রেখে ভালো করে বইয়ের স্তরের পেছনে সেটাকে লুকিয়ে রেখে কাগজটা ভাঁজ করে নাভির নিচে শাড়ির গিঁটের মধ্যে ভালো ভাবে গুঁজে নিল। এখন আর বাইরে থেকে দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। বেড়িয়ে এসে আমার হাত ধরে বলল “খাজানা পেয়ে গেছি। চল। “ বাইরে মেয়েদের ট্রেনিং ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করে দিয়েছে। কেউ কেউ তখনও নিশানা প্র্যাকটিস করছে। তবে অধিকাংশই দেখলাম কল পাড়ের দিকে হাঁটা দিয়েছে। অনেক বেলা হয়েছে। তবে জানি আজ খেতে অনেক দেরী। অদিতি ঘরে এসেই আমাকে ইশারায় বলল “বাইরে দাঁড়িয়ে দেখত কেউ আসছে কি না এই দিকে। “ আমি দরজার বাইরে গিয়ে দাঁড়াতেই অদিতি পিছনের দরজাটা খুলে বাইরে গিয়ে ওই কাগজটা একটা ঝোপের নিচে পাথরের নিচে চাপা দিয়ে ফিরে এলো।
“
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
13
ও ফিরে আসার পর ওকে আমি বললাম “তুই একটা বলদ। ওই রকম কাঠের টেবিলের ওপর কাগজ পেতে লেখা যায়? কতক্ষণ সময় লাগিয়েছিস জানিস?” ও বলল “ জানি। আর কাগজটার দু একটা জায়গা ছিঁড়েও গেছে স্বাভাবিকভাবে, তবে প্যাডের ওপরে রেখে লিখলে অরূপদা যে ভুলটা করেছে আমাদেরও সেই একই ভুল করা হত। ও ফিরে আসার পর সন্দেহ করলে প্যাডের কাগজে পেন্সিল বা মাটি ঘষে বুঝতে পারত যে ওর আকাউন্টের ডিটেল কেউ প্যাডের কাগজে নোট করে নিয়েছে। “ আমি একটু ভুরু কুঁচকে বললাম “কার অ্যাঁকাউন্ট?” ও বলল “ আমার বাপের শালার।“ তারপর চোখে ইশারা করতেই আমি চুপ করে গেলাম। ও আমাকে জিজ্ঞেস করল “তুই ইতিহাসে কেমন ছিলিস?” আমি বললাম “ খুব কাঁচা। তবে মুখস্থ করে উগড়ে দিতাম। লেটার পেয়েছিলাম।“ ও আমার সাথে হাত মিলিয়ে বলল “সাবাস রুমি ডার্লিঙ আমিও লেটার পেয়েছিলাম। এইবার একটা প্রশ্ন তোমাকে আমি করব। দেখি তোমার বিশ্ব ইতিহাস কতটা মনে আছে।“ আমি দম নিয়ে সোজা হয়ে বললাম “বল শুনি।“ ও গলা নামিয়ে বলল “জেসাসের পুনর্জন্ম বা ফিরে আসার ব্যাপারটা মনে আছে?” আমি বললাম “সোজাসুজি বল না রিসারেকশন নিয়ে জিজ্ঞেস করছিস।“ ও আমাকে বলল “হ্যাঁ। কিন্তু প্রশ্নটা হল তখন এক্স্যাক্টলি কি হয়েছিল মনে আছে। “ আমি এই প্রশ্নটার জন্য মোটেই তৈরি ছিলাম না। তাই একটু ভেবে নিয়ে বললাম “ ওই তো প্যালেস্টাইনের কিছু কিছু জায়গায় ওকে আবার দেখা গিয়েছিল।“ ও বলল “ বেশ এইবার সংকেতটা মনে পড়ে?” আমি বললাম “তা মনে আছে। bob-ac-(12230??jesus resurrection in PL(how many pl))-dep-82l”। ও আমাকে বলল “ ঠিক। “পি এল” টা কি সেটা বুঝতে পেরেছিস?” আমি চিন্তা করছি দেখে বলল “ খুব সম্ভবত প্যালেস্টাইন।“ একটু থেমে বলল “ সুক্ষ জিনিসটা খেয়াল করে ছিলিস? একটা “পি এল” ক্যাপিটালে লেখা আরেকটা ছোট হাতে। “ সত্যি তো ঠিক তাই। ও বলে চলল গলা নামিয়ে “ বড় হাতের পি এল হল প্যালেস্টাইন। আর ছোট হাতের পি এল হল সাধারণ কথায় প্লেস বা প্লুরাল করে বললে প্লেসেস। আর আমি এই ব্যাপারে মোটামুটি সিওর।“ আমার চমকের ভাব তখনও কাটেনি। বললাম “ এত সিওর হচ্ছিস কিভাবে?” ও বলল “ কটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছিল মনে পড়ে ওই লাইনে?” বললাম “দুটো।“ ও বলল “এইবার একটা জিনিস বল দেখি জেসাস কে প্যালেস্টাইনের কটা জায়গায় দেখা গিয়েছিল একই দিনে বা একই সাথে? হাউ মেনি প্লেসেস? “ ওর মুখে বিজয়িনীর হাঁসি। বললাম “তা জানি না। বা ভুলে গেছি। “ বলল “চিন্তা করে লাভ নেই আমারও মনে নেই। কিন্তু আমি উত্তরটা জানি। একুশ। “ (In a same day, Jesus appears in 21 different places of the Palestine to confirm in His Resurrection those who believe in Him.) আমি বললাম “বাপরে এটা বুঝলি কি করে?” ও গলা যতটা খাদে নামানো যায় নামিয়ে নিয়ে বলল “ দুটো প্রশ্ন বোধক চিহ্ন, মানে দুটো সংখ্যা। দুই আর এক। মিলল? এইবার আরেকটা তথ্য দিচ্ছি। বি ও বি হল ব্যাঙ্ক অফ বরদা। অ্যাঁকাউন্ট নাম্বার হল এক দুই দুই তিন শূন্য “দুই” “এক”। অ্যাঁকাউন্টের মালিক অরূপ কুমার ঘোষাল। নমিনি শ্রীমতী বিনীতা ঘোষাল। আর আগের মাসের সতের তারিখে পাশ বই শেষ বারের মতন আপডেট করা হয়েছিল। সেই দিনের হিসাব অনুযায়ী অ্যাঁকাউন্ট ব্যাল্যান্স হল ছয় কটি তিয়াত্তর লক্ষ সিক্সটি ফোর থাউজেন্ড অ্যান্ড থার্টি টু রুপিজ অনলি।“ টাকার অঙ্কটা শুনে মাথা ঘুরে গেল আমার। মুখ থেকে আপনা আপনি বেড়িয়ে গেল “এত টাকা এলো কোথা থেকে?” ও আমার দিকে হাঁসি হাঁসি মুখে তাকিয়ে বলল “দ্যাটস অ্যাঁ মিলিয়ন ডলার কোশ্চেন। আলি দার সাথে একটু কথা বলতে পারলে ভালো হত। তবে ও অরূপদার ব্যাপারে জেনে বুঝে মুখ খুলবে বলে মনে হয় না।“ আমি বললাম “অর্থাৎ dep-82l মানে হল যাকে এই সংকেতটা জানাবে সে অ্যাঁকাউন্ট নম্বরটা উদ্ধার করে তাতে বিরাশি লাখ টাকা জমা দেবে। কিন্তু কে সে?” ও বলল “আমিও ততটুকুই দেখেছি যতটা তুই দেখেছিস। তবে আলি দা বা বাকিরা এখানে ভীষণ সজাগ। হিসাব নিকাশ কেউ দেখে না ঠিকই, কিন্তু এত বড় অঙ্কের টাকার গড়মিল হলে ওদের চোখে পড়ার কথা। অন্য কিছু ঘাপলা আছে সোনা, অন্য বড় কিছু ঘাপলা। “ ও আমাকে এরপর একটা বাজে প্রশ্ন করল “ আচ্ছা আমার পিরিয়ডস হয়েছিল অমুক তারিখে। এখন কি আমার সেফ পিরিয়ড? “ মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলাম “না।“ বলল “এখন পিল খেলে কাজে দেবে?” আবার বুঝিয়ে দিলাম না। বললাম “তোর মতলব খানা কি বলত?” বলল “ আলির উত্তেজনার মুহূর্তে ওর পেট থেকে কিছু কথা বের করা।“ আমি বললাম “আমার এখন সেফ পিরিয়ড চলছে। কিন্তু... “ ও বলল “তাহলে তুই ওকে আজ বিছানায় তোল। আগের দিন রাজুর সাথে বিনীতা যখন করছিল তখন যা বুঝেছি, তাতে এরা সবাই ভেতরে ফেলে অভ্যস্ত। আর আলি দা কত দিন অভুক্ত কে জানে। ভেতরেই ফেলতে চাইবে বলে মনে হয়।“
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
14
আমাদের কথা ওখানেই থেমে গেল। দেখলাম আলি দা এগিয়ে আসছে। চাপা গলায় বললাম “অনেক দিন বাঁচবে তাতে সন্দেহ নেই। “ ও আরও গলা নামিয়ে বলল “ এগিয়ে পড়। “ মনে প্রচণ্ড দ্বিধা আমার। মন থেকে ব্যাপারটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। শুধু মাত্র সেফ পিরিয়ড চলছে বলে এই লোকটার সাথে শুতে হবে কিছু কথা বার করার জন্য। ও এসে বলল “ আরেকটু সময় লাগবে আজ খাবার তৈরি হতে। “ অদিতি বলল “ তোমাকে কিন্তু আমার বন্ধুর খুব মনে ধরেছে। সারা দিন এত খাটা খাটনি কর সবার জন্য। আমাদের এত খেয়াল রাখো। কি? ঠিক বলিনি?” শেষ প্রশ্ন দুটো আমাকে লক্ষ্য করে ছোড়া। আলি দেখলাম খুব একটা অপ্রস্তুত হল না। আমি খুব বোকা বনে গেছি। লাজুক লাজুক মুখ নিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম। “কিন্তু আমি তো শুনেছি তোমার একজন বয় ফ্রেন্ড আছে। আর তোমরা না কি খুব শিগগির বিয়ে করতে পারো।“ জানি না এর পরে কি হবে কিন্তু এখন কিছু একটা উত্তর না দিলেই নয়। নইলে সব ব্যাপারটা কেঁচে যাবে। বললাম “আছে কিন্তু। অনেক দিন... বুঝতেই পারছ।“ ও একটা শান্ত হাঁসি হেঁসে বলল “ঠিক আছে। এই নিয়ে পরে কথা হবে। “ অদিতি আগ বাড়িয়ে বলল “ বিকালের দিকে রোদ পড়ে ওকে নিয়ে একটু ঘুরিয়ে দেখাও না জায়গাটা।“ আলি বলল “কিন্তু কালকে তো দাদা আর দিদি (বউদি ডাকে না কেউ) দুজনেই তোমাদের ঘুরিয়ে দেখিয়েছে। “ অদিতি একটা চোখ মেরে ইঙ্গিতপূর্ণ স্বরে বলল “ ওদের দেখানো আর তোমার দেখানো কি এক ওর কাছে? আচ্ছা বেশ অকেই জিজ্ঞেস করে নাও। “ আমার ঘাড়ে আলতো করে হাত বুলিয়ে ও ঘরে ঢুকে গেল। আমি কি বলব ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। চুপ করে আলির মুখের দিকে শূন্য দৃষ্টি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। ও বলল “বেশ সাড়ে চারটার পরে এসে তোমাকে নিয়ে চারপাশটা ঘুরিয়ে দেখাব। “ লোকটা সরল। কারণ আমার সাথে ওর খুব একটা কথা বার্তা হয় নি। এত সহজে ব্যাপারটা মেনে নিল কি করে। অদিতি নিজে যদি এই কথা বলত তাহলে তাও না হয় মানতাম, কারণ ওর সাথে ওর সকাল বেলায় অনেকক্ষণ ব্যক্তিগত কথা হয়েছে। ওদের মধ্যে বন্ধুত্বও হয়েছে। কিন্তু আমার ব্যাপারে দুম করে মেনে নিল কি করে? লোকটা হয়তো সত্যি অনেক দিন নারী সঙ্গ থেকে বর্জিত, হঠাত করে একটা সুযোগ পেয়ে গিয়ে ছাড়তে পারছে না। আর নয়ত, নয়ত যে কি সেটা মাথায় আসছে না। হঠাত করে কোনও মেয়ের ওকে মনে ধরেছে দেখে সুপ্ত পুরুষালি চেতনাগুলো জেগে উঠলো? কিন্তু এখন আমি কি করব? আমি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে ঘরে ঢুকে গেলাম। অদিতি চোখের ওপর হাত রেখে শুয়ে পড়েছে। শাড়িটা ওপরে উঠে প্রায় কোমরের কাছে চলে গেছে। ওর হালকা গোলাপি যোনীদেশ দু পায়ের ফাঁক থেকে দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট। খোঁচা খোঁচা লোম গজিয়েছে তাতে। ও হাতের ফাঁক দিয়ে দেখল যে আমি ওর গোপন জায়গার দিকে দেখছি, কিন্তু শাড়ি ঠিক করার কোনও তাগিদ দেখলাম না ওর মধ্যে। আলি আমাদের ঘরের বাইরেই দাঁড়িয়ে আছে। ও চোখের ওপর থেকে হাতটা সরিয়ে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা আলি কে একবার দেখে নিয়ে বলল “ হিসাবের গড়মিলের ব্যাপারটা জানাটা মাস্ট।“
আমি মনে মনে একটা হিসাব কষে নিলাম। বিকালে হাঁটতে বেড়িয়েই ওকে মিষ্টি মিষ্টি কথার ফাঁকে কথাটা জিজ্ঞেস করতে হবে। তবে তখন পেট থেকে কিছু বের না করতে পারলে জানি না কি হবে। তবে হ্যাঁ অনেকগুলো অসংগতি এই পুরো সংগঠনে। অরূপদা কি সত্যি ভালো না কি মুখোশের আড়ালে অন্য একটা শয়তান লুকিয়ে আছে। মাছ ভাজা দিয়ে দুপুরের খাওয়াটা মন্দ লাগলো না আমার। মেয়েরা একটু রেস্ট নিয়ে আবার চলে গেল মাঠে। অদিতি আর আমি ঘরে ঢোকার সাথে সাথে অদিতি আমাকে বলল “ বাইরে দেখ কেউ আসছে কি না। কাগজটা নিয়ে আসি। ও কাগজটা নিয়ে আসার সাথে সাথে দুজনে হুমড়ি খেয়ে পড়লাম কাগজটার ওপর। ও খুব ছোট ছোট অক্ষরে পাশবুকের শেষের কয়েকটা পাতার সব তথ্য টুকে এনেছে। একটা ব্যাপার জলের মতন পরিষ্কার। পাঁচ থেকে সাতটা লোক প্রতি মাসে নিয়মিত লাখ দুয়েক বা তিনেক টাকা ওর অ্যাঁকাউন্টে ফেলে যায়। টাকার পরিমাণ প্রত্যেক মাসে একদম এক। মানে যে লোক ছয় মাস আগে ৩ লাখ ফেলেছে, সেই লোক তার পরের প্রত্যেক মাসে একই দিনে তিন লাখ টাকা জমা করেছে ওর অ্যাঁকাউন্টে। যে লোক দুই করেছে, সে প্রত্যেক মাসে একই তারিখে দুই লাখ করে ফেলে গেছে। একটা অ্যাঁকাউন্ট থেকে দেখলাম শুরুতে বারো লাখ টাকা ঢুকেছে, তারপর প্রত্যেক মাসে সে নিয়মিত দুই লাখ করে জমা দিয়ে যাচ্ছে। অ্যাঁকাউন্ট থেকে নগদ টাকা ওঠানো একবারও হয় নি শেষ ছয় মাসে। এরকম দশ বারো লাখ টাকার আরও কয়েকটা এন্ট্রি দেখলাম বিভিন্ন অ্যাঁকাউন্ট থেকে আসা। অদিতি দুটো তারিখ আমাকে মুখস্ত করে নিতে বলল। একটা হল পাঁচই জুলাই, সে দিন বারো লাখ টাকা ওর ব্যাঙ্কে ঢুকেছে। আরেকটা হল বাইশে জুলাই, সেদিনও প্রায় বারো লাখ টাকা ওর ব্যাঙ্কে ঢুকেছে। অবশ্য এর পর থেকে প্রতি মাসে ওই দুই অ্যাঁকাউন্ট থেকেই দু লাখ করে ঢুকে চলেছে আমাদের পূজ্য অরূপদার অ্যাঁকাউন্টে। অদিতি কাগজটা ছিঁড়ে ফেলে পেছনের জানলা দিয়ে বাইরে ফেলে এসে বলল “ জানতে হবে এক থেকে পাঁচই জুলাইয়ের মধ্যে কি হয়েছিল। আর দ্বিতীয়ত, উনিশ থেকে বাইশে জুলাইয়ের মধ্যে কি হয়েছিল। “ আমি বললাম “সেটা তো এমনিতে হাঁটতে হাঁটতেই আমি জেনে নেবার চেষ্টা করব। “ ও বলল “বেস্ট অফ লাক। লোকটার মুখ দেখে মনে হল অনেক দিন নারী শরীরের রস থেকে বঞ্চিত। এখানে গ্রুপ সেক্স অ্যাঁলাউড কি না জানা নেই। নইলে...।“ একটা তির্যক হাঁসি দিয়ে আমার পাশে শুয়ে পড়ল। ফুল ম্যাড মেয়েটা।
বিকালে ঘুম ভাঙল আলির ডাকে। এখানে দরজা খুলেই ঘুমাই। কারণ এতগুলো খোলা জানলা থাকায় দরজা আঁটকে আর আব্রু রক্ষা করা সম্ভব নয়। আর দরজা বন্ধ করলে লোকের সন্দেহ হতে পারে। অদিতি ও উঠে পড়ল। বলল “ সত্যি বলতে কি আমারও তোমাকে খুব মনে ধরেছে। তবে মনের থেকে বেশী শরীরে ধরেছে। কিন্তু তোমাদের মধ্যে কাবাবে হাড্ডি হওয়ার ইচ্ছে আমার নেই। তোমারাই যাও বেড়াতে। “ আলি বলল “উফফ তা কেন? এসো। তুমিও এসো।“ আমার মাথায় শুধু একটা কথা খেলে গেল “গ্রুপ সেক্স।“ কিছুদুর হাঁটার পর অদিতিই কথা শুরু করল। “ আচ্ছা আলি দা, এখানে সবাই খুব বিশ্বাসী না? “ ও সংক্ষেপে উত্তর দিল “ খুবই। সবাই সবাই কে বিশ্বাস করে। আজ অব্দি কেউ বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে বলে জানি না।“ এই সাঁড়াশি আক্রমণের সময় এসেছে। আমি কথায় যোগ দিলাম। আমি ওর একটা হাত নিজের হাতে ধরে নিলাম। ভাবখানা অবশ্য এমন করলাম যে এই এবড়ো খেবড়ো মাঠে যাতে পড়ে না যাই তাইই এই বীরপুরুষের হাত ধরে হাঁটছি। আমি মিন মিন করে বললাম “আজ দেখলাম এত টাকার খরিদ হল। তার মানে অনেক টাকা আসে।“ ও বলল “ না গো না। আসে না। আর এতগুলো মানুষের এই টাকায় চলে না। অরূপদার নিজের যা টাকা ছিল সব শেষ করে দিয়েছে ক্যাম্প তৈরির সময়। এখন ওরও কোনও টাকা নেই। “ আমি আর অদিতি একবার চোখা চুখি করে নিলাম। বললাম “ না সেকথা বলছি না। ধরো, এই যে দশ, বারো, কি পনের লাখ লুটে নিয়ে আসা হচ্ছে, কেউ যদি মাঝখান থেকে টাকা ঝেড়ে উড়ে যায়?” ও বলল “এখন অব্দি তেমন হয় নি। আর এটা আমাদের ছোট একটা পরিবার। সবাই যা করছে পরিবারের জন্যই করছে। আমিই টাকা গুনে তুলে রাখি। যত টাকা পেয়েছে বলে জানা যায়, ঠিক তত টাকাই মজুত হয়েছে আজ অব্দি। উনিশ বিশ হয়ে থাকে। আর সেটা সাধারণ ব্যাপার। কারণ হয়ত খবর আছে বিশ লাখ টাকা, কিন্তু আসলে হয়ত আঠারো লাখ লুট হয়েছে। আবার মাঝে মাঝে হয়ত শুনেছি দশ লাখ টাকা, কিন্তু লুট হয়েছে বিশ লাখ টাকা। তবে ফায়ার আর্মসের দাম এত বেশী যে টাকা জলের মতন বেড়িয়ে যায়। কিন্তু তোমাদের এই নিয়ে এত কৌতূহল কেন?” অদিতি বলল “কৌতূহলের কি আর কোনও কারণ থাকে। মনে হল এত টাকা নিয়ে একটা মেয়ে বা কেউ ফিরছে, যদি তার মাথায় বদ মতলব আসে তো তখন তো পুরোটাই লস। “ ও বলল “এখানে দুটো কথা জেনে রাখো। এরকম হলে তাকে আমরা বিশ্বাস ঘাতক বলি। তাকে খুজে বের করে চরম সাজা দেওয়া হয়। মেরেও ফেলতে পারি। আর যারা এইসব কাজ করছে, তাদের হয়ত অনেকের ছবি পুলিশের কাছে আছে। ওরা এই ক্যাম্পেই সব থেকে সেফ। আর তাছাড়া তোমরা একথা ভুলে যেও না, যে এটা আমাদের সবার ঘর, পরিবার। আমরা সবাই একে ওপরের জন্য আছি। আমাদের বাইরে এদের আর কেউ নেই। যাবেই বা কোথায়? আর সিকিউরিটিই বা কে দেবে?”
অদিতি হঠাত বলে উঠল “ আচ্ছা একটা কথা। (আরতি এখানে নেই বলেই বোধহয় ওর নাম বলেছে।) আরতিদি বলছিল যে কয়েক মাস আগে, মানে এই জুলাইয়ের একদম শুরুতে কোথায় নাকি একটা বড় হাত মেরেছিলে তোমরা। আর উনিশ কুড়ি তারিখেও বড় হাত মেরেছিলে?” আমি বললাম “হ্যাঁ গল্পটা চলছিল, কিন্তু মাঝপথে লোক এসে যাওয়ায় কেঁচে গেল। তবে একই মাসে দুটো বড় বড় হাত। তোমাদের এত রিস্ক নিতে ভয় করে না?” ও হেঁসে বলল “ জুলাইয়ে মাত্র ছটা লুট আমরা পেয়েছি। তার মধ্যে চারটেই সোজা সুজি ডাকাতি করতে হয়েছে। তিন তারিখে একটা করেছিল রেশমি। তাতে এক বড় বিজনেসম্যানকে লুটেছিল। প্রায় সতেরো লাখ টাকার উপর। আর একুশ তারিখে করেছিল বিনীতাদি। সেদিনও প্রায় সতেরো-আঠারো লাখ লুটেছিল। তবে একটা সমস্যা হয়েছিল। মাঝে এক দালাল কে দু লাখ দিতে হয়েছিল ওকে। ও প্রতিবাদ করেছিল এতগুল টাকা বিনা কাজে দিতে। কিন্তু এইসব লাইনে লোক হাতে রাখতে হয়। পনের লাখ নিয়ে ফিরেছিল। তবে একদম নিখুঁত কাজ হয়েছে দুটোই। “ আমরা আরও দু একটা টুকিটাকি কথা বললাম। আমার মনে না থাকলেও দেখলাম অদিতি এর ওর নাম ভাঁড়িয়ে আরও তিনটে ডেটের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে নিল। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই একই ঘটনা। মেয়েরা গিয়ে লুট করেছে। যাকে লুট করা হয়েছে সে বিশাল বড় লোক। আর অদ্ভুত যোগ হল এই যে সেই ঘটনার পরেই একটা বড় রকম ঢুকেছে অরূপদার অ্যাঁকাউন্টে। আর তার পর থেকে প্রত্যেক মাসে মাসে লাখ দুয়েক তিনেক করে টাকা ঢুকছে একই অ্যাঁকাউন্ট থেকে। অনেকক্ষন ঘোরার পর, অন্ধকার নেমে এলো বাইরে। আমরা আমাদের ঘরের দিকে ফিরে এলাম। অদিতি বলল “ ইয়ে একটা কথা জিজ্ঞেস করলে কি খারাপ ভাববে?” আলি বলল “আরে মন খুলে কথা বলবে এখানে। এখানে সবাই সবার নিজের। “ অদিতি বলল “ বিনীতাদি বলছিল যে এখানে কোনও মেয়ের যদি কাউকে মনে ধরে তো... যদি সেই ছেলের ... মানে... আমরা তো নতুন। “ অনেকক্ষণ আগে আমি আলির হাতটা নিজের হাতে নিয়েছিলাম। এত কথা বার্তার মধ্যে খেয়াল করি নি যে কখন ও নিজেই আমার হাতটা ওর গরম হাতের মধ্যে চেপে ধরেছে। ও হেঁসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল “ তোমার যদি আমার কাছে আসতে ইচ্ছে করে তো রাত্রে খাবার পরে চলে এসো।“ অদিতি বলল “ আর আমারও যদি তোমাকে পেতে ইচ্ছে করে তো?” ও বলল “ তুমিও এসো একটু পরে। তবে জানি না। তোমার কতটা ভালো লাগবে।“ অদিতি বলল “সত্যি বলতে কি, এইসব ব্যাপারে আমি রিস্ক নি না। আমি খুব খারাপ মেয়ে। যদি ওর আপত্তি না থাকে তো আমরা কি তোমাকে ভাগাভাগি করে নিতে পারি?” ওর চোখে এক মুহূর্তের জন্য কেমন যেন একটা বিজলীর আলো খেলে গেল। নিজেকে সামলে নিল তৎক্ষণাৎ। ও খুব শান্ত স্বরে বলল “ আমার তোমাদের দুজনকেই পছন্দ। বাকিটা তোমরা নিজেরা বুঝে নাও। “ অদিতি বলল “ একটু মহুয়ার বন্দবস্ত করতে পারবে? আগের দিন আমাদের কেউ দেয় নি।“ ও বলল “এইসব জিনিস কেউ দেয় না। চেয়ে নিয়ে নেবে।“ অদিতি দুষ্টুমি করে হেঁসে বলল “ বেশ তাহলে আজ যা চাই সেটা আদায় করেই তবে ছাড়ব। কেমন? “
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
15
আমি ওকে একলা পেয়ে বললাম “তোর মতলবটা কি বলত? এইসব নোংরামি না করলেই নয়? আর তুই ওদের মতন মহুয়া খাবি?” ও আমাকে বলল “ সাঁড়াশি আক্রমণ করে তাঁতিয়ে তুলতে হবে। এই সুযোগ ছাড়ার নয়। অনেক প্রশ্ন আছে। যতটা ওর পেট থেকে বের করতে পারি ততই ভালো। আর সব থেকে বড় কথা ওর চোখে বিশ্বাস যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। আর মহুয়া আমরা সামান্য খাব বা খাবার ভান করব। খাওয়াতে হবে ওকে। তবে এই সব পোড় খাওয়া লোকগুলোর মহুয়ায় কি হয় জানা নেই। “ সন্ধ্যায় আজও ভয়ানক সুন্দর হাওয়া শুরু হয়েছে। বেশ ঠাণ্ডা। দু একটা মামুলি কেস এসেছে আমাদের কাছে। বাকি সময়টা আমরা গড়িমসি করেই কাটিয়ে দিলাম। আজ রাতে নিরামিষ। বাইরে আসর জমেছে। আলি কে দেখলাম বসে বসে একটা দোনলা বন্দুক পরিষ্কার করছে। রাতের সাদা মাটা খাবার খেয়ে আমরা ঘরে ফিরে এলাম। তখন রাত হবে প্রায় দশটা। অদিতি জানলার ধারে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ও আমাকে জানালার সামনে ডেকে বলল “ ওই দেখ। অভিসারে যাওয়া শুরু করেছে মেয়েরা। চল আমরাও যাই।“ দু একটা মেয়েকে দেখলাম অন্ধকারে হেঁটে হেঁটে গিয়ে নিজের আজকের রাতের নাগরের ঘরে ঢুকে গেছে। অদিতি দেখলাম ভীষণ স্বাভাবিক ভাবে আলির ঘরের দিকে এগিয়ে গেল। দরজা খোলাই ছিল। আলি ভিতরে বসে একটা কাঁচের গ্লাসে মহুয়া খাচ্ছে। বোধহয় আরও কিছু মিশিয়েছে। ঘরে ঢুকতেই একটা বোটকা মতন গন্ধ নাকে এলো। দেখলাম আরও দুটো গ্লাস রাখা আছে উপুড় করে। সত্যি আমি ভাবতে পারি নি যে অদিতি এখানে এসে এরকম একটা অশ্লীল প্রস্তাব দেবে। ও ঘরে ঢুকেই ওর একদম গা ঘেঁসে গিয়ে বলল “ শোনো না। আমাদের না সকাল বেলায় ওদের সাথে এইভাবে সবার সামনে মাঠে গিয়ে ওই সব করতে লজ্জা লাগে। বিনীতাদিকে বলেছি আমরা রাতেই যা করার করব। স্নানও। স্নান না হয় পরেই করব। কিন্তু আমাদের সাথে এখন একটু আসবে? বাইরে এত অন্ধকার। আর কাল একটা কিছুতে পা কেটেছে বলে মনে হয়। ভয় লাগে। ও নিজের নির্লোম নগ্ন পাটা তুলে ধরল আলির সামনে। প্রায় দু দিন আগের কাটা জায়গাটা দেখিয়ে দিয়ে বলল “ দেখো কাল কেটে গেছে।“ দেখলাম আলি বুভুক্ষুর মতন ওর নগ্ন পায়ের কাটা জায়গায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল "চলো। তোমাদের আপত্তি না থাকলে আমি যাচ্ছি তোমাদের সাথে। “ ও হাতে ধরা গ্লাসটার তরল পুরোটা একেবারে গলায় ঢেলে দিয়ে বিছানার পাশে দাঁড় করানো একটা বন্দুক তুলে নিল। টেবিল থেকে তুলে নিল মোমবাতিটা। আমি আর অদিতি ওর দুই হাত ধরে বেড়িয়ে এলাম। বাইরে বেশ ভালো ঠাণ্ডা হাওয়া দিচ্ছে। অন্ধকার মাঠের দিকে এগিয়ে চলেছি আমরা তিনজন। ও বলল “আমি আগুনটা গার্ড করছি। নইলে নিভে যাবে। ভালো হাওয়া দিচ্ছে। “ আমরা মগ ভর্তি জল নিয়ে ওর থেকে একটু দূরে একটা পরিষ্কার জায়গায় গিয়ে বসে পড়লাম। আমরা ওর দিকে পিঠ করে বসেছি। শাড়ি কোমরের ওপর তুলে ওর সামনে এরকম অশ্লীল ভাবে পাছাটা নগ্ন করে বসার সাথে সাথে পাছার ঠিক ওপর থেকে একটা শিহরণ খেলে গেল। আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম অদিতিও বসেছে। ও আমাকে বলল “শাড়িটা যতটা পারিস উঠিয়ে ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে কর যা করার। এদের মধ্যে “র” ব্যাপারটা বেশী থাকে। যদিও নোংরা, কিন্তু কিছু করার নেই। আজ ওকে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ দেব না। “ পেট খালি হল। গতকালও দেখেছি অদিতি এই সময় বড্ড শব্দ করে। আমারও প্রয়োজন হয়, কিন্তু কোনও মতে দমিয়ে রাখি। কিন্তু ওর মধ্যে কোনও লজ্জা শরম নেই। বাড়িতে আমি হ্যান্ড অয়াশ ব্যবহার করি। কিন্তু এখানে কল পারে রাখা যেকোনো একটা বহুবার ব্যবহৃত শস্তা সাবান দিয়েই হাত ধুতে হবে। ভীষণ ঘেন্না লাগে আমার। সব মেয়েরা আর ছেলেরা এই গুলোই ব্যবহার করছে। আমি আর অদিতি পরিষ্কার হয়ে আলির সাথে ওর ঘরে ফিরে এলাম। মনের ভেতরটা কেমন যেন করছে। একটু পরে এই বুভুক্ষু লোকটা আমার শরীরে প্রবেশ করবে। কিন্তু ওকে বশ না করতে পারলে পালাতে পারব না।
ঘরে ঢুকেই অদিতি বলল “কই দেখি দাও তো ওই জিনিসটা। যদিও আমরা কোনও দিনও খাই নি। কিন্তু সেদিন থেকে তোমাদের দেখে আমাদের ওইটার প্রতি লোভ জন্মেছে। অবশ্য সব কিছুর আগে দুটো কথা বলে রাখি। না করতে পারবে না। “ ও আমাদের গ্লাসে কিছুটা তরল ঢালতে ঢালতে ওর মুখের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল। অদিতি ভীষণ ন্যাকা ন্যাকা স্বরে বলল “ আমাদের কিন্তু সত্যি এইসব খাওয়ার অভ্যেস নেই। যদি খেয়ে হুঁশ না থাকে তাহলে কিন্তু আমাদেরকে ঘর অব্দি ছেড়ে দিয়ে আসার দায়িত্ব তোমার। “ আলি হেঁসে বলল “দূর সে আর এমন কি? আর দ্বিতীয় কথাটা?” অদিতি একই রকম ন্যাকা ন্যাকা স্বরে বলল “ তুমি আমাদের দুজনকেই আদর করবে, ভালবাসবে, কিন্তু তোমার ভালোবাসার তরল পদার্থটা কিন্তু ওর মধ্যেই দিও। আমার ভেতরে দিলে আমার পেট হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। ওর ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা অনেক কম।“ আলি কিছু না ভেবে নিয়েই বলল “ জো হুকুম।“ আমি গ্লাসটা মুখে লাগানোর সাথে সাথেই ভীষণ বাজে একটা গন্ধে নাকটা সিটকে গেল। মেয়ে গুলো এই জিনিসগুলো গেলে কি করে? তাও হেভি খেতে লাগছে এমন ভান করে পর পর কয়েকটা চুমুক দিলাম। আমি বিছানায় বসে ছিলাম আর আলি ওই কাঠের চেয়ারে। অদিতি টেবিলের পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। এক হাতে গ্লাসটা ঠোঁটে ছুঁয়ে রেখেছে, যদিও মনে হচ্ছে না কিছু শরীরের ভেতরে নিচ্ছে বলে, আর আরেকটা হাত দিয়ে আলির ঘাড়ের ওপর আস্তে আস্তে আদর করে নরম ভাবে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। ওর এই ছোঁয়ায় আলির মধ্যে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কি না সেটা ওর মুখ দেখে ঠিক বুঝতে পারছি না। অদিতি নিজের গ্লাসটা টেবিলে নামিয়ে রেখে আমাকে একবার চোখ মারল। আলির পিছনে দাঁড়িয়েই ওর মাথার ওপর ঝুঁকে ওর মাথার ওপর একটা চুমু খেল। আলি মাথাটা ঘুরিয়ে ওর মুখের দিকে তাকাতেই ও নিজের ভেজা ঠোঁটদুটো চেপে ধরল আলির ঠোঁটে। আলির ঠোঁটদুটো ওর ঠোঁটের দ্বারা নিপীড়িত হয়ে মৃদু মৃদু কাঁপতে শুরু করেছে। চুম্বন আরও গভীর হল। ক্ষণিকের জন্য নিজের ঠোঁটদুটোকে ও আলির ঠোঁটের ওপর থেকে সরিয়ে নিয়েই আবার ঠোঁট দুটো অল্প ফাঁক করে আড়াআড়ি ভাবে চেপে ধরল আলির হাঁ করা ঠোঁটের ওপর। মুহূর্তে বুঝতে পারলাম ওর গোলাপি জিভটা প্রবেশ করল আলির মুখের ভেতর। কিছুক্ষণ চলল এই খেলা। এই মুহূর্তে আমি শুধু মাত্র দর্শক। তবে মনে মনে জানি খুব শিগগির আমাকেও এর মধ্যে অংশ গ্রহণ করতে হবে। চুম্বন না ভেঙ্গেই অদিতি ওর হাত দুটো আলির বেঁকে থাকা শরীরের দু পাশ দিয়ে নরম ভাবে ঘষতে ঘষতে নিয়ে গেল ওর পরনের পাতলা ফতুয়ার একদম শেষ প্রান্তে। কোমরের কাছে ফতুয়াটাকে ধরে আস্তে আস্তে ওঠাতে শুরু করে দিয়েছে ও। চুম্বনরত অবস্থায় আলি বা হাত দিয়ে এতক্ষন ওর নরম গালটাকে আদর করছিল, কিন্তু এইবার ওর গাল থেকে হাত সরিয়ে দুটো হাত ওপরে সোজা করে রেখে সাহায্য করল গায়ের ফতুয়াটা খুলে নিতে। অদিতি ওর মুখের ওপর থেকে নিজের মুখটা সরিয়ে নিয়ে এক মুহূর্তে টেনে খুলে নিল ওর ঊর্ধ্বাঙ্গের এক মাত্র আবরণ। আলির পরনের ফতুয়াটা একবার নাকে চেপে শুকে ছেনালি করে বলল “ উফফ কি সুন্দর তোমার গায়ের গন্ধ। “ আমাকে লক্ষ্য করে হেঁসে হেঁসে বলল “ এই নে। পরে বলিস না যে আমি একাই সব খেয়ে ফেলেছি, তোকে একটুও দি নি। “ আমার মুখের ওপর ছুঁড়ে মারল ওর পরনের ফতুয়াটা। ছেলেদের গায়ের গন্ধ মেয়েদের গায়ের গন্ধের থেকে অনেক আলাদা হয়। আলির ফতুয়ার গন্ধটা এই মুহূর্তে খুব যে অপছন্দ হল সেটা হলপ করে বলতে পারি না।
আলির ঠোঁটে একটা সংক্ষিপ্ত চুম্বন এঁকে দিয়েই আলির ডান হাতটা নিজের হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে ওর হাতটা উঠিয়ে নিয়ে এল ওর (আলির) ঠোঁটের কাছে। চোখের ইশারা ওকে বোঝাল ওতে চুমুক দিতে। আলি এক চুমুক দিতে না দিতেই আলির হাতটা নিজের হাতেই ধরে রেখে নিয়ে এল নিজের ঠোঁটের কাছে। চুমুক দিল আলির গ্লাসে। আলির মুখ দেখছি আস্তে আস্তে লাল হয়ে উঠছে। ওর হাত পা রোদে পুড়ে কালো হলেও, ওর গায়ের ঢাকা অংশগুলো একটু ফর্সার দিকেই। সারা গায়ে তেমন লোম না থাকলেও বুকে ঘন লোমের একটা আস্তরণ আছে। ব্যায়াম করা পেটানো শরীর, তবে ঠিক মাস্কিউলার বলা চলে না। আলি আমাদের থেকে একটু দ্রুতই খেয়েছে। আর এখন তো আবার দুজন মিলে একই গ্লাসে ভাগাভাগি করে চুমুক বসাচ্ছে। এতক্ষনে ওর গ্লাসটা প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। অদিতি ওর প্রায় খালি হয়ে যাওয়া গ্লাসটা নিজের হাতে নিয়ে টেবিলে গিয়ে সেটাকে আবার সেই নোংরা পানীয় ঢেলে ভরে দিল। ও হাতে গিয়ে গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়ে কিঞ্চিত জোর করেই ওকে সামনের দিকে ঘুরিয়ে বসাল। আলিকে দেখে বুঝতে পারছিলাম ও অদিতিকে চুমু খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে উঠেছে, কিন্তু আপাতত অদিতির ইঙ্গিত মেনে নিয়ে সামনে ফিরে সোজা হয়ে দরজার দিকে মুখ করে বসল। অদিতি ওর পেছনে দাঁড়িয়েই ওর পিঠের ওপর ঝুঁকে পড়ে ওর নগ্ন কাঁধের ওপর একটা ভেজা চুমু বসাল। সামান্য কেঁপে উঠলো ওর শরীর। চেয়ারে বসা অবস্থাতেই কাঁপতে কাঁপতে একটু যেন এগিয়ে এলো সামনের দিকে। অদিতি ঝুঁকে পড়েছে ওর পিঠের ওপর। ওর মুখটা ধীরে ধীরে ওর চওড়া পিঠের পিছনে গায়েব হয়ে গেল। আলি নিজের হাতে ধরা গ্লাসটা ঠোঁটে ছোঁয়াল সেখান থেকে বিষ গলায় ঢালার জন্য। কিন্তু পারল না। ওর চোখ দুটো যেন একবার জ্বলে উঠেই আরামে বুজে গেল। প্রতিনিয়ত ওর সারা শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে সামনের দিকে। লোমে ঢাকা কালো স্তনবৃন্তগুলো শক্ত হয়ে ফুটে উঠেছে বুকের উপর। কয়েক ফোঁটা তরল ওর কাঁপা হাতে ধরা গ্লাসের ভেতর থেকে ছলকে কোলের ওপর পড়ে ওর সাদা ধুতির সামনের কিছুটা ভিজিয়ে দিল। বুঝতে অসুবিধা হল না যে পিছন থেকে অদিতি নিজের ঠোঁট আর জিভ দিয়ে ভয়ানক আক্রমণ শুরু করেছে ওর বুভুক্ষ শরীরের ওপর। আমি পাথরের মতন স্থির হয়ে বসে এই ভালোবাসার অত্যাচার লক্ষ্য করে চলেছি। এক সময় দেখলাম অদিতি ওর পিঠের পেছন থেকে নিজের মাথাটা ওর কাঁধের ওপর উঠিয়ে আমার সাথে চোখা চুখি করে চোখ মেরে মাথাটা একদিকে হেলিয়ে আমাকে ইশারা করল খেলায় নেমে পড়তে।
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
16
অদিতির অত্যাচারে বোধহয় বেচারার গলা শুঁকিয়ে গেছে। এই এক মুহূর্তের জন্য কামনার আক্রমণ থেকে বিরতি পেয়েই ঢক ঢক করে নিজের পান পেয়ালার পুরোটা পানীয় নিজের গলার ভেতরে সাবাড় করে দিয়েছে। বেচারা জানতেও পারল না যে অদিতি আমাকে আহ্বান করেছে ওর উপর ভালোবাসার আক্রমণ হানার জন্য। এইবার সাঁড়াশি আক্রমণ করে ওকে নিজেদের মায়া জালে বেঁধে ফেলার সময় উপস্থিত। যতই নোংরা আর নিচ লাগুক না কেন আমাকে পারতেই হবে। এখন ওর যা অবস্থা তাতে ওর বিছানার পেছেনে রাখা বন্দুকটা হাতে তুলে নিয়ে ওকে বশ করা এমন কিছু কঠিন হবে না। কিন্তু ও যে খুব কোমল ধাতুতে গড়া নয় সেটা জানি। ও নিজের প্রানের মায়া ত্যাগ করে চেঁচামেচি করলে তো কথাই নেই, এক্ষুনি সারি সারি লোক জন বেড়িয়ে এসে আমাদের দুজনকে গুলি মেরে ঝাঁঝরা করে দেবে, নয়ত আমাদের বশ করে বন্দী করে তারপর অত্যাচার শুরু করবে। ও নিজে না চ্যাচালেও আশে পাশের ঘরে অনেক এখনও জেগে আছে। ওদেরই মধ্যে কেউ যদি দেখে ফেলে তাহলেও সেই একই পরিণতি হবে আমাদের দুজনের। এই রিস্ক নেওয়া যাবে না। সুতরাং প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করা ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা আমার বা আমাদের হাতে নেই এই মুহূর্তে। আর বন্দুক উঠিয়েই বা কি হবে আমাদের দুজনের কেউ তো কোনও দিন বন্দুক চালাই নি। হাতের গ্লাসটা মাটিতে নামিয়ে রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে পড়লাম। মুখে যতটা সম্ভব জৈবিক চাহিদা আর কামনার অভিব্যক্তি ফুটিয়ে ওর অর্ধনগ্ন শরীরটার দিকে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম। অদিতি আমাকে ইশারা করেই আবার ওর লকলকে কাম-বিষে ভরা জিভ নামিয়ে এনেছে ওর ভেজা পিঠের ওপর। ওর চোখ আবার আরামে বুজে গেছে। আমার পায়ের আওয়াজ পেয়ে একবার ঘোলাটে চোখ নিয়ে আমার দিকে চেয়ে দেখল। বোধহয় আমার চোখেও ও সেই কামনার অভিব্যক্তি দেখতে পেয়েছে যেটা ও ভেতরে ভেতরে কামনা করছিল। ঝিমিয়ে পড়ল আবার। চোখ গুলো আধ বোজা রেখেই কেঁপে কেঁপে উপভোগ করতে থাকল অদিতির ভালোবাসার ছোঁয়া। আমি এগিয়ে এসে ওর একদম সামনে এসে দাঁড়ালাম। ওর চোখের ওপর আমার নজর স্থির। কাঁপা কাঁপা হাতে কোমরের গিঁট থেকে শাড়ির আঁচলটা খুলে নিয়ে যতটা ধীরে ধীরে পারা যায় বুকের ওপর থেকে সরিয়ে নগ্ন করলাম নিজের ফোলা ফোলা স্তনগুলো। আঁচলটা ছেড়ে দিলাম হাত থেকে, লুটিয়ে পড়ল নোংরা মেঝেতে। নিজের স্তনদুটো নিজের দুহাতের মুঠোয় নিয়ে খাড়া ভাবে উঁচিয়ে ধরলাম উপরের দিকে। ওর আরও কাছে ঘন হয়ে এলাম। নিজের শক্ত হয়ে যাওয়া বাদামী স্তনবৃন্তগুলো চেপে ধরলাম ওর মুখের একদম সামনে। ওর নাক মুখ থেকে একটা ভেজা গরম নিঃশ্বাস ঠিকরে বেড়িয়ে এসে আছড়ে পড়ছে আমার স্তনের বোঁটাগুলোর উপর। বা হাত দিয়ে খামচে ধরল আমার কোমর। উফফ কি গরম হয়ে গেছে আলি। পাতলা শাড়ির কাপড় ভেদ করে ওর উত্তাপ যেন আমার নগ্ন কোমরের নরম ত্বককে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে চাইল। মুখটা সামান্য হাঁ করেই ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইল আমার নগ্ন উঁচিয়ে ধরা স্তনের ওপর, কামড়ে ধরতে চাইল যেন আমার বোঁটাটাকে। কিন্তু না। আমি কোমর বেঁকিয়ে কোনও মতে ওর হাত থেকে ছাড়িয়ে নিলাম নিজেকে। নিশ্চিত ও ছাড়তে চাইছিল না, বা বলা ভালো ওর ভেতরে যে কামনার ঢেউ উঠেছে সেটা ওকে আমার কোমর থেকে ওর হাতের বাঁধন শিথিল করতে বারণ করছিল। শেষ মুহূর্তে কেমন যেন খামচে ধরেছিল আমার নরম কোমরটাকে। শাড়ির উপর দিয়েই নখ বসিয়ে দিয়েছিল কোমরের চামড়ায়। ওকে আরও উত্যক্ত করতে হবে। বিছানার খেলায় ছেলেদের কি করে উত্যক্ত করতে হয় সে আমার অজানা নয়।
ওর আহত শরীরের থেকে দুই পা পিছিয়ে এসে ওর চোখে চোখ রেখে এক নিমেষে খুলে ফেললাম কোমরের ছোট গিঁটটা। সময় নষ্ট না করে শাড়িটা নিজের শরীরের ওপর থেকে সরিয়ে নিয়ে অগোছালো ভাবে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম বিছানায় পড়ে থাকা ওর ফতুয়াটার ওপর। ওর উত্তপ্ত নজর ছুটে বেড়াচ্ছে আমার নগ্ন শরীরের প্রতিটা কোনায়। কখনও স্তনে গিয়ে ওর নজর হামলে পড়ছে, কখনও বা নাভির ওপর গিয়ে আছড়ে পড়ছে, আবার কখনও বা ভেদ করতে চাইছে আমার নির্লোম ফর্সা যোনীদেশের কালচে অন্ধকারে ভরা উপত্যকা। অদিতি ওর আক্রমন থামায় নি এক মুহূর্তর জন্য। মাঝে মাঝে শুধু ওর চওড়া পিঠের ওপর মুখ তুলে লক্ষ্য করছিল আমার কার্যকলাপ। ওর চোখে চোখ স্থির রেখেই হাত তুলে মাথার উপর খোলা চুলগুলো বেঁধে নিলাম খোঁপা করে। মনে হল ও নিজের জ্বলন্ত নেশাগ্রস্ত চোখ দুটো দিয়েই বারবার লেহন করে নিতে চাইছে আমার ফোলা ফোলা নির্লোম বগলের ফর্সা নরম ত্বক, কামড়ে ধরতে চাইছে বগলের ঠিক তলা থেকে ঢেউ খেলিয়ে নেমে আসা স্তনের দুপাশের ফোলা ফোলা অসহায় মাংসগুলোকে। যতটা সম্ভব ধীরে ধীরে নিজের শরীরের সামনের প্রত্যেকটা সুন্দর গোপন অংশ ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে খোঁপাটা ঠিক করে বেঁধে নিলাম মাথার ওপরে। ওর কামুক অসহায় চাহুনিটাকে যেন কিছুটা অবজ্ঞা করেই পিছনে ঘুরে কোমরটা যতদূর পারা যায় দুলিয়ে দুলিয়ে, আমার পাছার নরম মাংসের ওপর ঢেউ খেলিয়ে খেলিয়ে হেঁটে গেলাম খোলা দরজাটার দিকে। জানি না আমার নগ্ন পিঠ বা পাছা বা কোমর ওকে কতটা উত্যক্ত করতে পেরেছে। দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ফিরে এলাম ওর
Posts: 3,314
Threads: 78
Likes Received: 2,091 in 1,391 posts
Likes Given: 767
Joined: Nov 2018
Reputation:
122
17
সময় নষ্ট না করে নিচের ঠোঁটটাকে জিভে দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে ঝুঁকে চুমু খেলাম ওর রেশমি লোমে ঢাকা বুকের ওপর। আলতো করে জিভ বুলিয়ে দিলাম ওর ফোলা ফোলা শক্ত বোঁটার ওপর। ওর গলা থেকে একটা চাপা ঘো ঘো মতন শব্দ বেরোচ্ছে। সেই শব্দটাকে উপেক্ষা করেই ওর সারা বুক আর পেটের ওপর জিভ বোলাতে বোলাতে নেমে এলাম ওর কোমরের কাছে। ওর ধুতির নিচ থেকে একটা বোটকা গন্ধ আসছে। এই গন্ধ আমার চেনা। এতে মিশে রয়েছে পুরুষালি শরীরের সারা দিনের ঘামের গন্ধ, গোপন ঢাকা জায়গার জৈবিক গন্ধ, কুঁচকি থেকে হরমোনাল গন্ধ, পেচ্ছাপের গন্ধ আর যৌনাঙ্গের মুখ থেকে নির্গত হওয়া কাম রসের গন্ধ। লোকটার ওখান থেকে নিশ্চই প্রিকাম বেরোচ্ছে অনেকক্ষণ ধরে। ধুতির ভাঁজের জন্য এখনও সামনে কোনও ভেজা দাগ বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছে না। আমি ওর খোলা নাভির ভিতর জিভ ঢুকিয়ে যতটা পারা যায় চেটে চেটে নাভির ভেতরটা পরিষ্কার করে মুখ আরও নামিয়ে নিয়ে গিয়ে কামড়ে ধরলাম ওর পাতলা ধুতির গিঁট। দাঁত দিয়ে কামড়েই খুলে নিলাম গিঁটের প্যাঁচ। মুখ তুলে হাত দিয়ে ওর কোমরের গিঁট পুরো পুরি খুলে টেনে নামিয়ে নিলাম ওর কোমরের ওপর গোল হয়ে বসে থাকা ধুতির আলগা বেষ্টনী। ও পাছাটা ক্ষণিকের জন্য উপরে তুলে সাহায্য করল। ধুতির দুমড়ানো মুচড়ানো কাপড়টাকে ওর পায়ের নিচ দিয়ে গলিয়ে বের করে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম ঘরের এক কোণায়। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে হাতের নরম আঙুলগুলো দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে ওর খাড়া হয়ে থাকা লিঙ্গটার ওপর হস্ত মৈথুনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। জানি না এখানকার মেয়েরা এরকম করে কি না। কিন্তু একবার ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম ও যেন নিজের ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে পারছে না। একটা ছ্যানালি মার্কা হাঁসি দিয়ে জিভটা একবার চেপে কর্কশ ভাবে বুলিয়ে দিলাম ওর লিঙ্গের মুখের চেরা বরাবর। বাহাতটা দিয়ে খামচে ধরেছে আমার পিঠের নগ্ন মাংস। আস্তে আস্তে তাড়িয়ে তাড়িয়ে মুখের গরম গহ্বরে পুড়ে নিলাম ওর লিঙ্গের মুখটা। একটা তীব্র ছটফট অনুভব করলাম ওর কোমরে। দপদপ করতে করতে কেঁপে উঠলো ওর শিরা উপশিরা নিয়ে ফুলে থাকা লিঙ্গটা। আরেকটু ভেতরে নিলাম। এইবার একবারে প্রায় পুরো লিঙ্গটা মুখের ভেতরে নিয়ে নিলাম। দৈর্ঘ্য প্রস্থে সাধারণ। হয়ত ছয় ইঞ্চি হবে আর মোটামুটি মোটা। কিন্তু আমি ভাবখানা এমন দেখাচ্ছি যেন এরকম পুরুষালি লিঙ্গ আগে কখনও দেখিনি। তবে সত্যি কথা বলতে ওর নগ্ন শরীরের ছোঁয়া, স্বাদ, গন্ধ আমাকেও নিজের অজান্তে গরম করে তুলেছে। আর তাই হয়ত আমার অভিন্য়টা এখন আর অভিনয়ের মতন লাগছে না। আমার তলপেটেও জেগে উঠেছে একটা ভেজা ভেজা ভাব, আর এই ভেজা ভাবটা আমিও খুব উপভোগ করি, যেমন আর পাঁচটা মেয়ে করে থাকে। ওর ঘন চুলে ঢাকা উরুসন্ধি ঘামে ভিজে চকচক করছে। মুখের ভিতরেই বুঝতে পারছিলাম যে লিঙ্গের মুখটা ফুলতে শুরু করেছে। লিঙ্গের শিরায় উপশিরায় উষ্ণতা প্রায় দশগুন হয়ে গেছে। প্রিকামের প্রাচুর্য বেড়ে গেছে। লিঙ্গটা এখন নিজে নিজেই কেঁপে কেঁপে উঠছে। না আর বেশী করলে মুখের ভেতরেই মাল খালাস করে দেবে। আমার ভেতরটাও ভিজে গেছে। এত পরিশ্রমের পর একটু এই খাড়া দণ্ডটাকে নিজের যোনীদ্বারের ভেতরে না নিতে পারলে মনটা ভেঙ্গে যাবে। আর তাছাড়া আমাদের কাজ আজ ওকে উত্যক্ত করে করে সহ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দেওয়া যখন ও কামনা আর মহুয়ার নেশায় নিজের হুঁশ হারিয়ে ফেলে আমাদের সামনে গোপন কিছু তথ্য উগড়ে দেবে।
আমার মাথার ওঠা নামা থামাতেই ও চেপে ধরল আমার মাথাটা ওর ক্ষুধার্ত লিঙ্গের ওপর। ভীষণ গায়ের জোড়ে চেপে আছে। এখন আর আমাকে মাথা নাড়াতে হচ্ছে না। ও নিজেই কোমরটা উঠিয়ে নামিয়ে নিজের কামনার চরিতার্থ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। আমি ওর লিঙ্গের গোঁড়া থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে ওর হাতটা নিজের মাথার ওপর থেকে সরানোর ব্যর্থ চেষ্টা করলাম। কিন্তু ও এখন কামনায় অন্ধ। পাশবিক জোড়ে আমার মাথাটা ওর ঊরুসন্ধির ওপর চেপে রেখে আমার মুখ মৈথুন করে চলেছে। অদিতি পেছন থেকে বলে উঠল “আলি দা, সব কিছু ওকেই দিয়ে দিলে আমাকে এখানে আসতে বলার মানে কি। আর এত তাড়াহুড়া করছ কেন? এখনও তো ভালো করে তোমাকে আদরই করা হয় নি। আর তুমিও তো আমাদের এখনও ভালো ভাবে নাওই নি। তোমার যদি এটা খুব ভালো লেগে থাকে, তাহলে আমিও তোমাকে সেই সুখ দিতে চাই। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে মিলন না হলে না তোমার সম্পূর্ণ সুখ হবে আর না আমাদের। তুমি ভীষণ স্বার্থপর হয়ে উঠেছ এখন। “ ওর কোমরের দপদপানি বন্ধ হল। লিঙ্গটা তখনও কেঁপে চলেছে। আমি ভয়ে ভয়ে আছি এই বোধহয় গরম সাদা লাভা উগড়ে দিল আমার মুখের ভিতর। কিন্তু তেমনটা হল না। আমার মাথার ওপর থেকে ওর হাতের চাপ শিথিল হয়ে এল। অদিতির দিকে ফিরে হাঁসি হাঁসি মুখ করে বলল “ ও তোমরা আরও ভালবাসতে চাও আমাকে?” আমি মুখ সরিয়ে নিলাম ওর লিঙ্গের ওপর থেকে। এতক্ষন খেয়াল করি নি, এই বার করলাম অদিতিও কোন ফাঁকে নিজের শরীরটা শাড়ির বেষ্টনীর থেকে মুক্ত করে নগ্ন হয়ে রেডি হয়ে গেছে। ও আলির সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল “ কোথায় ভালবাসলাম? আসল মিলনের সুখ তো আমরা কেউই পেলাম না। না তুমি না আমরা। মনে আছে? বলেছিলাম, আমরা ভালো ভাবে ভালোবাসা নিংড়ে নেব তোমার ভেতর থেকে আজ?”
আলি বলল “বেশ তাহলে এখন কি করতে চাও?” অদিতি ওকে বলল “চুপ করে মাটিতে শুয়ে পড়ো। “ আমাকে ওর খালি গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়ে বলল “এটাতে কিছুটা ঢেলে দে। বেচারির বোধহয় গলা শুঁকিয়ে গেছে। “ হাত দিয়ে নরম ভাবে আলির কপাল আর মুখের ঘাম মুছিয়ে নিল ও। ও মাটিতে গিয়ে শুয়ে পড়তেই অদিতি ওর কোমরের পাশে ঝুঁকে বসে আমার মুখের লালায় মাখা ওর খাড়া লিঙ্গটা ওর মুখের ভেতর নিয়ে নিল। ওর কাম বেগ এই কথা বার্তার মধ্যে হয়ত কিছুটা লোপ পেয়েছে। ওর নজর ঘোলাটে হলেও ওর আচরণ আবার অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে একটা হাত মাঝারি জোড়ের সাথে চেপে রেখেছে অদিতি ওঠা নামা করা মাথার ওপর। বুঝতে পারছি অদিতিরও আমার মতন ওর এই লম্বা লম্বা যৌনকেশ চোখে মুখে খোঁচা মারছে বলে অসুবিধা হচ্ছে, কিন্তু ও অনেকক্ষণ মুখ ওঠাল না। ওর মাথার ওপর আলির হাতের চাপ ক্রমশ বাড়ছে। বুঝতে পারছি আবার ও সুখের চরম সীমায় পৌঁছাতে চলেছে। আবার হারিয়ে ফেলেছে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ। আমার মতন অদিতিও ওর হাতের নিচে পড়ে কাতরাচ্ছে, কিছুতেই ছাড়িয়ে নিতে পারছে না ওর হাত। মনে হল এই বুঝি ওর ঢেলে দিল ওর সমস্ত বীর্য অদিতির মুখে। আর সেটা হলে আমাদের সব প্ল্যানে জল ঢেলে দেওয়া হবে। আগের বার যেমন অদিতি আমাকে বাঁচিয়েছিল, এইবার আমি ওকে বাঁচাতে এগিয়ে এলাম। এতক্ষন আমি ওর গ্লাসে পানীয় ঢেলে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু এইবার মাটিতে ওর মাথার পাশে বসে পড়ে বললাম “এই নাও তোমার গ্লাস।“ ও যেন আমার গলা শুনতেই পেল না। অদিতির মাথাটা নিজের হাতের নিচে চেপে ধরে থেকে নিজেই শুয়ে শুয়ে কোমর ওঠা নামা করতে শুরু করে দিয়েছে আর তাও প্রচন্ড গতিতে। আবার বললাম “তোমার গ্লাস নিয়ে এসেছি। “ এইবার ও ওর চোখ খুলল না। ওর মুখে কামনার এক অতি তীব্র অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে। এবার রীতিমত চেঁচিয়ে উঠলাম “এই নাও তোমার গ্লাস। “ হাত শিথিল হল ওর। না বীর্য বের করতে পারে নি। তবে লিঙ্গের লাল ভাবটা দেখে মনে হল আর দশ বার মুখ মৈথুনের স্বাদ পেলেই খেলা শেষ করে ফেলত। অদিতি যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। ওর ঠোঁট আর থুতনির সমস্ত জায়গা মুখের পিছিল লালায় ভিজে একশা হয়ে গেছে। ও ডান হাতের পেছন দিয়ে মুখটা পরিষ্কার করে বলল “তোমার ওটা খুব সুন্দর। “ বুঝতে পারছি ওকে আরও উত্যক্ত করতে চাইছে। আমি ততক্ষণে ওর হাতে গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়েছি। বাব্বা বাঁচা গেল। ওর মুখে আবার অমৃত পেতে পেতে না পাওয়ার ব্যর্থতা। অদিতি ওর হাতটা নিজের হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে হাতে ধরা গ্লাসটা ওর ঠোঁটের কাছে নিয়ে গেল। ও একটু আধ শোয়া মতন করে উঠে পুরো তরলটা একবারে গলার ভেতর ঢেলে দিল। অদিতি কপট রাগ দেখিয়ে বলল “ এত তাড়াতাড়ি খেলে নেশা হয়ে যাবে। তখন আমাদের মনের দুঃখ নিয়ে ফিরে যেতে হবে। “ ও গ্লাসটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল “অনেক দিন পর আজ রক্ত জেগে উঠেছে। আজ এতে নেশা হবে না। আজ নেশার অন্য সুখ আমাকে পেয়ে বসেছে। “ আমি এক ফোঁটা সময় নষ্ট না করে আবার ওর গ্লাসটা ভরে নিয়ে চলে এলাম।
|