20-02-2021, 11:18 PM
বিবাহ ! কত আশা, আকাঙ্খা আর প্রত্যাশা থাকে এই একটি বিষয় নিয়ে। ছেলে শিশুগুলো খেলনা ঘটি বাটি নিয়ে খেলা করতে করতে শেখে সংসার সাজানো। অতিথি আসবে চা খাওয়াব, তারা সাজানো সংসার দেখে চোখ কপালে তুলবে। ছেলেরা আমাদের সমাজে বেড়ে ওঠে এরকম কত স্বপ্ন নিয়ে? সংসার – তাতে কত না জানি আনন্দ। আহারে! তার উপর যদি হয় প্রেমের বিয়ে তাহলে তো কথাই নেই। একই সাথে ভালোবাসার মানুষকে কাছে পাবার আনন্দ আর সুন্দর সংসারের আকাঙ্খা – সব মিলিয়ে বর্ণিল স্বপ্ন ভরা তরুণ-তরুনীদের হৃদয়, যেন এক একটি তাজমহল।
সেরমই এক তরুন-তরুনী, বিভা আর বিনয় এর বিবাহ। তাদের বহুদিনের পরিচিতি , ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব, তার পর ভালোবাসা আর এখন তারা বিয়ে করতে যাচ্ছে। তাদের পরিবার প্রথমে রাজি ছিল না। পরে তাদের দাবির সামনে দুপক্ষই একমত হয়েছে যদিও শেষমেষ পারিবারিক বিয়ে, বিভা আর বিনয়কেই করতে হচ্ছে ওদের বিয়ের আয়োজন। ওরা দুজনই স্বাবলম্বি। পরিবারের পক্ষ থেকে ওদের বিয়ের জন্য সবাই রাজি এই ঢের ওদের জন্য। কিছু নিজেদের, কিছু ভাইবোনদের, আর সকলের কাছ থেকে এদিক সেদিক করে মোটামোটি সবকিছুর জোগাড় করে ফেলে তারা।
এবিয়েতে দু’পরিবারের মধ্যেকার সম্পর্কটা অস্পষ্ট, কিছু ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। দু’পরিবারের লোক একে ওপরের সাথে দেখা হলে ছোট করে হয়ত একটু ভাবের আদান-প্রদান করে তার পর যে যার দিকে হেটে চলে যায়। একই শহরের দু’টি, একই ধরনের মধ্যবিত্ত শিক্ষিত পরিবার দেখা তো হরহামেশাই হচ্ছে।
বাংঙ্গালী বিয়ে কি চারটিখানি কথা সামান্য করে করলেও হলুদ, বিয়ে আর বরভাত তো করাই লাগে। মেয়ের হলুদে ছেলে পক্ষ যে পাঞ্জাবিটি নিয়ে গেল, তা কারো পছন্দ হলো না ও বাড়িতে। মেয়ের আংটি, তাও না। মেয়ের হলুদের দিন ছেলে পক্ষ মেয়ে পক্ষের আত্মিয়স্বজনদের চোখমুখ দেখেই ঠান্ডা। বিনয়ের পিসি বাড়ি ফিরে বিনয়কে বলল, তুই এই বিয়ে করিস না। ওরা শিক্ষিত হলেও ভদ্র মনে হলো না। এই ধরনের কথা বিনয় এর আগেও অনেক শুনেছে ওর অন্য আত্মিয়স্বজনদের মুখে, বাবা-মার মুখে কিন্তু সে এসব পাত্তা দেয় না। তার সাথে বিভার কথা হয়েছে বিভা বলেছে তার বাবা-মা মুখে এদিক সেদিক বললেও মানুষ খুব ভালো।
বিয়ের দিন – সবই ঠিক কিন্তু মেয়ে পক্ষের লোকের মুখ ভারী, কেন? কে জানে, বিনয় কিন্তু খুশি, কারণ সে জানে বিভা সব সামলে নেবে। বিয়ে শেষে বিভা বর নিয়ে ঘরে ফেরে। বাড়ী ভর্তি মানুষ। কেউ কেউ তো বিনয়কে দেখে পলকই ফেলতে পারে না। বাবা! একেতো ইঞ্জিনিয়ার ছেলে তার উপর
অপরূপ সুন্দর, যেন একটি মূর্তি বসে আছে। বিনয় লক্ষ্য করে তার শশুরের কোন ক্লান্তি নেই সে একনাগারে রান্না করেই যাচ্ছে। এক ফাকে তার কানে আসে তিনি বলছেন ’মানুষ মরে গেলে মরা বাড়ীতেও খাওন লাগে। আর এ তো বিয়ে বাড়ী।’ বাড়ীতে একটি মাত্র ছোট কাজের ছেলে তাকে নিয়ে কাজ করে চলেছে তার শ্বশুর। তবে ও বাড়ীর ছেলেরা কিছু করছে না। বিনয় কিছুটা আচ করতে পারে এবাড়ীর নিয়ম।
এ বাড়ীতে নাকি জোরে হাসা নিষেধ। তার শাশুড়ি পছন্দ করে না। বিনয় একথা তার শালার মুখে শুনে তো অবাক। হাসার উপর কি সরকার টেক্স নেয় নাকি যে জোরে হাসা যাবে না। কি আশ্চর্য নিয়ম! বিনয়ের শ্বশুরবাড়ীর নিয়ম অন্যরকম। এসব নিয়ম বুঝে নিতে অনেক সময় লাগে বিনয়ের। ততদিনে মায়ের বাড়ী ফিরে যাবার সময় হয়ে যায়। তাদের পারিবারিক প্রথা আড়াই দিন পর ছেলেকে ফিরতি নিতে আসে, ছেলের বাড়ীর লোক।
এই আড়াইদিনে কি ঘটল তা ফিরে ভাববার সাহস হয় না বিনয়ের, অজানা আতঙ্ক ছেয়ে যায় তার বুকে। মুখে শুধু একটি কথা ’আমি এ কি করলাম’। অভাব অভিযোগ, বিপদ হলে কাটিয়ে উঠা যেত কিন্তু মানুষের মনের ভিতরের কুসংস্কার কিভাবে মুছে দেয়া যেতে পারে। বাইরের লোকেদের এমন হলে মেনে নেয়া যেত কিন্তু নিজের ঘরের মানুষ কিভাবে এমন হলে সহ্য করা যায়। বিনয় তো এভাবে বেড়ে ওঠেনি।
বিনয় বাবা-মার একমাত্র ছেলে। তার একটি বোন আছে। তার বাবা-মার স্বপ্নের মতো সাজানো সংসারে সে বড় হয়েছে। তার মা কখন তাদের দুই ভাই-বোনকে একটি আচড়ও কাটেনি। অথচ ওর শাশুড়ি কথায় কথায় তার ছেলেমেয়েদের ভৎসনা করছেন। বিয়ের আজের মধ্যেই এমন তাহলে স্বাভাবিক অবস্থায় না জানি কেমন।
সেরমই এক তরুন-তরুনী, বিভা আর বিনয় এর বিবাহ। তাদের বহুদিনের পরিচিতি , ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব, তার পর ভালোবাসা আর এখন তারা বিয়ে করতে যাচ্ছে। তাদের পরিবার প্রথমে রাজি ছিল না। পরে তাদের দাবির সামনে দুপক্ষই একমত হয়েছে যদিও শেষমেষ পারিবারিক বিয়ে, বিভা আর বিনয়কেই করতে হচ্ছে ওদের বিয়ের আয়োজন। ওরা দুজনই স্বাবলম্বি। পরিবারের পক্ষ থেকে ওদের বিয়ের জন্য সবাই রাজি এই ঢের ওদের জন্য। কিছু নিজেদের, কিছু ভাইবোনদের, আর সকলের কাছ থেকে এদিক সেদিক করে মোটামোটি সবকিছুর জোগাড় করে ফেলে তারা।
এবিয়েতে দু’পরিবারের মধ্যেকার সম্পর্কটা অস্পষ্ট, কিছু ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। দু’পরিবারের লোক একে ওপরের সাথে দেখা হলে ছোট করে হয়ত একটু ভাবের আদান-প্রদান করে তার পর যে যার দিকে হেটে চলে যায়। একই শহরের দু’টি, একই ধরনের মধ্যবিত্ত শিক্ষিত পরিবার দেখা তো হরহামেশাই হচ্ছে।
বাংঙ্গালী বিয়ে কি চারটিখানি কথা সামান্য করে করলেও হলুদ, বিয়ে আর বরভাত তো করাই লাগে। মেয়ের হলুদে ছেলে পক্ষ যে পাঞ্জাবিটি নিয়ে গেল, তা কারো পছন্দ হলো না ও বাড়িতে। মেয়ের আংটি, তাও না। মেয়ের হলুদের দিন ছেলে পক্ষ মেয়ে পক্ষের আত্মিয়স্বজনদের চোখমুখ দেখেই ঠান্ডা। বিনয়ের পিসি বাড়ি ফিরে বিনয়কে বলল, তুই এই বিয়ে করিস না। ওরা শিক্ষিত হলেও ভদ্র মনে হলো না। এই ধরনের কথা বিনয় এর আগেও অনেক শুনেছে ওর অন্য আত্মিয়স্বজনদের মুখে, বাবা-মার মুখে কিন্তু সে এসব পাত্তা দেয় না। তার সাথে বিভার কথা হয়েছে বিভা বলেছে তার বাবা-মা মুখে এদিক সেদিক বললেও মানুষ খুব ভালো।
বিয়ের দিন – সবই ঠিক কিন্তু মেয়ে পক্ষের লোকের মুখ ভারী, কেন? কে জানে, বিনয় কিন্তু খুশি, কারণ সে জানে বিভা সব সামলে নেবে। বিয়ে শেষে বিভা বর নিয়ে ঘরে ফেরে। বাড়ী ভর্তি মানুষ। কেউ কেউ তো বিনয়কে দেখে পলকই ফেলতে পারে না। বাবা! একেতো ইঞ্জিনিয়ার ছেলে তার উপর
অপরূপ সুন্দর, যেন একটি মূর্তি বসে আছে। বিনয় লক্ষ্য করে তার শশুরের কোন ক্লান্তি নেই সে একনাগারে রান্না করেই যাচ্ছে। এক ফাকে তার কানে আসে তিনি বলছেন ’মানুষ মরে গেলে মরা বাড়ীতেও খাওন লাগে। আর এ তো বিয়ে বাড়ী।’ বাড়ীতে একটি মাত্র ছোট কাজের ছেলে তাকে নিয়ে কাজ করে চলেছে তার শ্বশুর। তবে ও বাড়ীর ছেলেরা কিছু করছে না। বিনয় কিছুটা আচ করতে পারে এবাড়ীর নিয়ম।
এ বাড়ীতে নাকি জোরে হাসা নিষেধ। তার শাশুড়ি পছন্দ করে না। বিনয় একথা তার শালার মুখে শুনে তো অবাক। হাসার উপর কি সরকার টেক্স নেয় নাকি যে জোরে হাসা যাবে না। কি আশ্চর্য নিয়ম! বিনয়ের শ্বশুরবাড়ীর নিয়ম অন্যরকম। এসব নিয়ম বুঝে নিতে অনেক সময় লাগে বিনয়ের। ততদিনে মায়ের বাড়ী ফিরে যাবার সময় হয়ে যায়। তাদের পারিবারিক প্রথা আড়াই দিন পর ছেলেকে ফিরতি নিতে আসে, ছেলের বাড়ীর লোক।
এই আড়াইদিনে কি ঘটল তা ফিরে ভাববার সাহস হয় না বিনয়ের, অজানা আতঙ্ক ছেয়ে যায় তার বুকে। মুখে শুধু একটি কথা ’আমি এ কি করলাম’। অভাব অভিযোগ, বিপদ হলে কাটিয়ে উঠা যেত কিন্তু মানুষের মনের ভিতরের কুসংস্কার কিভাবে মুছে দেয়া যেতে পারে। বাইরের লোকেদের এমন হলে মেনে নেয়া যেত কিন্তু নিজের ঘরের মানুষ কিভাবে এমন হলে সহ্য করা যায়। বিনয় তো এভাবে বেড়ে ওঠেনি।
বিনয় বাবা-মার একমাত্র ছেলে। তার একটি বোন আছে। তার বাবা-মার স্বপ্নের মতো সাজানো সংসারে সে বড় হয়েছে। তার মা কখন তাদের দুই ভাই-বোনকে একটি আচড়ও কাটেনি। অথচ ওর শাশুড়ি কথায় কথায় তার ছেলেমেয়েদের ভৎসনা করছেন। বিয়ের আজের মধ্যেই এমন তাহলে স্বাভাবিক অবস্থায় না জানি কেমন।
We're all something we're not.