Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
05-01-2021, 08:21 PM
(This post was last modified: 05-01-2021, 08:22 PM by Mr Fantastic. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
** ওগো প্রিয়তমা **
Written By Lekhak (লেখক)
সুনীলের চেহারাটা বেশ হ্যান্ডসাম। ধবধবে সাদা গায়ের রঙ। মনীষা ওর জন্য একবারে পাগল। এমন একটা সুদর্শন চেহারার ছেলের সঙ্গে ভাব জমাতে পারলে তো কথাই নেই। প্রথম দেখা হওয়ার পর থেকেই ওর মনের ভেতরে একটা খুশি খুশি ভাব। যেন আসল কাজটা এবার হাসিল হলেই হলো। অফিসে বসে মনীষা মাঝে মাঝেই ভাবে কবে সেই দিনটা আসবে।
প্রথম যেদিন চোখাচোখি হয়েছিল সুনীলের সঙ্গে, মনীষা হাসিমুখে দৃষ্টি দিয়েছিল ওর চোখে। দুজনের মুচকি হাসি বিনিময়। তারপরেই একটু নিছক কথাবার্তা, সুনিলের সঙ্গে ভাব জমানোর জন্য মনীষা তখন মরিয়া।
একই অফিসের সহকর্মী দুজনে। অফিসের টিফিনের সময় ভাবটা একটু বেশি করে জমে। মনীষা ওর মনের ইচ্ছাটা তখন সুনীলকে না বলে থাকতে পারছে না। ডালহৌসি চত্বরে রোল খেতে খেতে একদিন বলেই বসে, আমাকে পছন্দ তোমার? আমার কিন্তু তোমাকে দারুন লাগে সুনীল।
যেন গায়ে পড়ে প্রেম নিবেদন। সুনীলের মুখে কথা নেই, মনীষার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারছে না। কোনরকমে ভেতর থেকে কথা বের করে মনীষাকে বলে, আমি ইচ্ছে থাকলেও এতদিন বলতে পারি নি। তুমি আমাকে আজ সাহসটা পাইয়ে দিলে।
এত লজ্জা কিসের তোমার? মনীষা আদর করে ওর গালটা টিপে দেয়। চোখ দুটো নাচিয়ে বলে, তুমি যা হ্যান্ডসাম, যেকোনো মেয়েই পটে যাবে তোমাকে দেখলে। আমি তো প্রথম দিন থেকেই তোমার প্রেমে পড়ে গেছি।
সুনীল একটু আত্মহারা হয়ে ওঠে। অফিসের কলিগ ওর জীবনসাথী হতে যাচ্ছে, এর থেকে ভাল সময় আর কি হতে পারে?
অফিস ছুটির পরে দুজনে একসাথে হাঁটতে হাঁটতে আউট্রাম ঘাটে গঙ্গার পাড়ে চলে যায়। সিমেন্টের বেঞ্চিতে বসে দুজনে হাসি গল্পে মশগুল হয়ে যায়। হাসির হুল্লোরে মনীষা বেসামাল হয়ে ওর গায়ে গড়িয়ে পড়ছে, আবেগ স্রোতে হারিয়ে যাচ্ছে সুনীলও। প্রেম এসেছে জীবনে, যেন কত মধুর এই জীবন।
সুনীলের গায়ে গা লেগে মনীষার বুকের আঁচলটা একটু সরে যায়। সুনীল দেখে মনীষা ওতে ভ্রুক্ষেপ করছে না, যেন একটু অন্যমনস্ক হয়ে গল্প করতেই মেতে উঠেছে ও। যৌবন ভরা মনীষার শরীরের স্তনভার বেশ প্রকট, চোখে লাগার মতই। কথা বলতে বলতে সুনীল স্থির দৃষ্টি দিয়ে চেয়ে থাকে,মনীষার বড় গলা ব্লাউজের ভাঁজে দু’স্তনের মসৃণ উপত্যকার দিকে। হঠাৎই সুনীলের অপলক দৃষ্টি দেখে মনীষা বলে ওঠে, এ্যাই কি দেখছ?
সুনীল বলে, কিছু না এমনি। তোমার বুকের আঁচলটা সরে গেছে। ঠিক করে নাও।
মনীষা হাত দিয়ে সুনীলের নাকটাকে এবার নাড়িয়ে দেয়। বলে, দুষ্টু। তোমরা ব্যাটাছেলেরা এরকমই হও। আসতে আসতে নিজেই এবার ঠোঁটদুটোকে নিয়ে যায় সুনীলের ঠোঁটের খুব কাছে। সুনীল ওকে বলে কি করতে চাইছ? এখানে খেও না। কেউ দেখে ফেলবে।
এই জায়গাটা বেশ অন্ধকার, নিরিবিলি, এখানে কেউ দেখবে না। খাও চুমু আমাকে।
মনীষা আরও বেশি করে বাড়িয়ে দেয় নিজের ঠোঁটটাকে। হঠাৎই সন্মতি পেয়ে সুনীল একটু সাহস পায়। অন্ধকারে ঠোঁট মিলিয়ে মনীষার গাল দুটো ধরে চুমু খায়। মনীষাকে বলে তুমি সাহস দিলে তাই এই ইচ্ছাটা পূরণ করলাম। মনীষা খিল খিল করে হেসে ওঠে।
অন্ধকারে আউট্রাম ঘাটে বসে বসে দুজনের আরও কিছুক্ষণ গল্প হয়, মনীষা সুনীলকে বলে, বাড়ীতে আর কে কে আছে তোমার?
সুনীল বলে, সেরকম কেউ নেই, আমার এক বৃদ্ধা মা ছাড়া। মার এখন বয়স হয়েছে, বলতে পারো একরকম শয্যাশায়ী। উঠতে বসতে পারেন না। চলাফেরা তো অনেক দিন আগে থেকেই বন্ধ। এই সময়টা আমার বিয়ে করা খুব দরকার ছিল মনীষা, বলতে পারো, তোমাকে পেয়ে আমার খুব সুবিধাই হল।
সুনীলের কথা শুনে মনীষা বলে, বিয়ে করবে আমাকে?
কিন্তু তোমার বাবা মা? তাদের অনুমতি নিতে হবে না?
মনীষা সুনীলের মুখের কাছে আবার মুখটা নিয়ে এসে বলে, আমার কেউ নেই, এই আজ থেকে কেবল তুমি ছাড়া।
অবাক হয় সুনীল, বলে, সেকি তোমার বাবা মা?
তারা নেই। মারা গেছেন অনেকদিন আগে। মনীষার চোখটা একটু ছলছল করে ওঠে। সুনীল বলে, তারমানে তুমি একা? আর কেউ নেই?
হ্যাঁ, আমি একা। কেউ নেই। দমদমে একটা ছোট্ট ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকি। চাকরিটা ভাগ্য করে পেয়েছিলাম, তাই খেয়ে পড়ে বেঁচে রয়েছি।
সুনীল মনীষাকে বলে, চলো কালকেই তোমাকে আমি আমার বাসায় নিয়ে যাব। মার সাথে তোমার দেখা করাবো, নতুন বউ ঘরে আসছে শুনলে মা খুশি হবে।
মনীষা সুনীলের ইচ্ছেতে সন্মতি দেয়। বলে, তার আগে আমার একটা অনুরোধ রাখতে হবে তোমায়। সুনীল বলে কি? মনীষা বলে, কাল অফিস ছুটির পরে তুমি আমার বাসায় যাবে, তারপর আমি তোমার মায়ের কাছে যাব।
সুনীল রাজী হয়। বলে ঠিক আছে, কাল তাহলে আমরা দুজনেই একসাথে বেরিয়ে পড়ব বিকেল বেলা, তারপরে দমদমে তোমার ফ্ল্যাটে, আমার হবু বউ এর বাসায়। এই সুনীল যাবে তোমার সাথে। কোন চিন্তা নেই। মনীষা খুশিতে সুনীলের গালে একটা চুমু খায়, ওকে খুব আদর করে। গঙ্গার পাড়ে বসে প্রেমের কথা বলতে বলতে অনেক রাত্রি হয়ে যায়। সুনীল বলে এবার উঠতে হবে মনীষা, অনেক রাত্রি হল, মা একা রয়েছে বাড়ীতে, চিন্তা করবে।
দুজনের দুজনকে ছেড়ে যেতে চাইছে না কেউই। অথচ কাল সকালেই আবার অফিসে দেখা হবে। মনীষাকে মেট্রো রেলে তুলে দিয়ে সুনীল বাড়ী ফেরে। ওর তখন মনীষার প্রতি অগাধ ভালবাসা তৈরী হয়ে গেছে।
জীবনে প্রেম এলে এভাবেই সাড়া ফেলে দেয় মনে। নারী এবং প্রেম, পুরুষমানুষে জীবনকে অনেক স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে, একটা ভালবাসার টানে জর্জরিত হয়ে সে তখন বাঁচতে চায় অন্যভাবে, তার সুখের সাথীকে ঘিরে।
রাত্রে বাড়ী ফিরে সুনীল ওর মাকে মনীষার কথাটা বলে। কথা বলতে বলতে তখন একটা আনন্দ উচ্ছ্বাস ওর চোখে মুখে। মনীষারও ওকে ভাল লেগেছে, ওর ও মনীষাকে। বলে, মা মনীষা বড় ভাল মেয়ে। অফিসে এরকম মেয়ে দেখা যায় না। আমি কাল বাদ পরশুই তোমার কাছে এনে হাজির করছি ওকে। দেখবে ওর কথা শুনে আর ওকে দেখে তুমি মুগ্ধ হয়ে যাবে।
ছেলের কথা শুনে মা খুব খু্শি হয়। বলে, ভালো একটা বৌমা পেলে সব মায়েরাই খুশি হয়। তুই তাড়াতাড়ি ওকে আমার কাছে নিয়ে আয়। আমি দেখি আমার বৌমাকে।
কথার ফাঁকে সুনীল মাকে এটাও বলে, মা যেন তো ওর কেউ নেই। মা নেই, বাবা নেই, কেউ নেই। ও একা থাকে।
মা বলে, সেকি রে? একা থাকে? তুই শিঘ্রী ওকে বিয়ে করে নিয়ে আয়। অমন মেয়েটা একা একা কত কষ্ট করছে। চাকরী করে। এবার থেকে ও তোর বউ হয়েই থাকবে। তোর কষ্টটাও লাঘব হবে।
শায়িত মাকে জড়িয়ে ধরে সুনীল, বলে, এবার আমি বিয়ে করতে চলেছি মা, আমাকে আশীর্ব্বাদ করো। মা বিছানায় শোয়া অবস্থায় সুনীলকে আশীর্বাদ করে। ওর মাথায় চুমু খায়।
ঘরে নতুন বৌমা আসছে, খুশির আবেগে সুনীলের মায়ের চোখে জল এসে যায়। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলে, আজ তোর বাবা নেই। থাকলে তোর বাবাও কত খুশি হতো। না আমারও খুব দেখতে ইচ্ছে করছে মেয়েটাকে।
মাকে আশ্বাস দেয় সুনীল। বলে, মা চিন্তা কোরো না। মনীষা আমাকে কথা দিয়েছে। ও খুব শিঘ্রীই এখানে আসবে। মা ওর কথা শুনে নিশ্চিন্ত হয়।
রাত্রে শুয়ে শুয়ে মনীষার মুখটা ভেসে ওঠে সুনীলের চোখের সামনে। ভাবে কাল যখন মনীষা ওকে যেতে বলেছে নিজের বাসায়, তখন নিশ্চই কিছু গিফট্ রেখে দিয়েছে ওর জন্য। সুনীল গেলেই তবে ওটা নিজের হাতে দেবে। মনীষার প্রেমে বিভোর হয়ে ওর চোখে আসতে আসতে ঘুম নেমে আসে।
পরের দিন অফিস থেকে ওরা দুজন বেরোয় খুব তাড়াতাড়ি। ডালহৌসি থেকে পায়ে হেঁটে ধর্মতলা। তারপর ওখান থেকে মেট্রৌ ধরে সোজা দমদম, মনীষার বাড়ী। রাস্তায় যেতে যেতে মনীষা সুনীলকে বলে, জানো কাল রাতে শুয়ে শুয়ে আমি শুধু তোমার কথা চিন্তা করে গেছি। ঘুমোতে পারিনি অনেক্ষণ।
মনীষাকে সুনীল বলে, আমিও ঠিক তাই। কাল সারা রাত ধরে তোমার মুখটা খালি ভেসে উঠছিল চোখের সামনে। ঘুমোতে পারিনি আমিও। আমি কাল মাকে তোমার কথা বলেছি।
-বলেছ? কি বললেন তোমার মা?
-মা তোমাকে দেখতে চেয়েছে তাড়াতাড়ি। বলেছি কাল বাদ পরশুই নিয়ে আসব তোমার কাছে। মা খুশি হয়েছেন।
মেট্রোতে এরপর ওরা দুজনে উঠে পাশাপাশি বসে, দুজনে গায়ে গা ঘেষে। মনীষা সুনীলকে বলে, আচ্ছা সুনীল, একটা রহস্য বলো তো? তুমি এত সুন্দর হলে কি হলে? তোমার মা বুঝি খুব সুন্দর? নাকি তোমার বাবা সুন্দর ছিলেন?
জবাবে সুনীল বলে, মা আমার খুবই সুন্দরী। তবে বাবা আরও সুন্দর ছিলেন। ধবধবে সাহেবদের মত গায়ের রঙ ছিলো ওনার। আমি বাবার অনেক কিছুই পেয়েছি।
মনীষা বলে, সত্যি আমি অনেক পুরুষ দেখেছি, কিন্তু তোমার মত এত সুন্দর পুরুষ দেখিনি। সুনীল খুশি হয়। মনীষারও তারিফ করে, ওকে বলে, তুমিও তো কম সুন্দরী নও। হাসলে গালে আবার টোল পড়ে তোমার। আমার তো তোমার মুখশ্রী দারুন লাগে। খুব কম মেয়েরই এমন রূপ থাকে।
দুজনে মেট্রো চড়ে এরপর দমদম পৌঁছোয়। স্টেশন থেকে একটা রিক্সা ভাড়া করে ওরা পাশাপাশি দুজনে উঠে বসে। রিক্সা করে মনীষার বাড়ী যেতে দশ মিনিট। রিক্সায় যেতে যেতে সুনীলকে মনীষা বলে, যেন তো আমার ঘরে একটা পোষা কুকুর আছে, টমি। সারাদিন আমাকে দেখতে না পারলে ছটফট করে। ওকে অফিসে আসার সময় বেধে রেখে আসি। যেই বাড়ী ফিরি ও আমাকে দেখতে পেয়ে জড়িয়ে ধরে। ভীষন ভালবাসে আমাকে। তবে খুব শান্ত কুকুর। একদম চেঁচায় না। নতুন লোক দেখলেও নয়। দেখবে তোমাকে দেখে কেমন গা চাটবে তোমার। টমি আমার দারুন আদরের।
সুনীল মনিষাকে বলে, ভালই তো। তোমাকে বিয়ে করে টমিকেও নিয়ে আসব তোমার সাথে। তোমার শ্বশুড়বাড়ীতে টমি তোমার সঙ্গে থাকবে।
মনীষা সুনীলের কথা শুনে হাসতে থাকে হো হো করে। সুনীলকে বলে, সত্যিই দারুন বলেছ।
রিক্সা থেকে নেমে সুনীল ভাড়া দিতে যায়। মনীষা ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে টাকা বের করে বলে, দাড়াও, তুমি দিও না। ভাড়া আমি দেব। সুনীল তবু দিতে যায় জোড় করে। রিক্সাওয়ালাও ভাড়া নিতে চায় না। বলে, দিদিকে আমি চিনি। উনি না বললে আমি নেবই না আপনার কাছ থেকে। ও কিছুতেই ভাড়া সুনীলের কাছ থেকে নেয় না। মনীষাই দেয়। তারপর সুনীলকে বলে এস এবার আমার ঘরে, তোমাকে আমার ফ্ল্যাটটা দেখাই। ফ্ল্যাটের তালা খুলে মনীষা ওকে ভেতরে ঢোকায়। বলে এই হচ্ছে আমার ছোট্ট কুঠুরী।
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
দুই রুমের ছোট্ট অথচ সুন্দর মনীষার ফ্ল্যাট। এখানেই ও একা থাকে ওর পেয়ারের টমিকে নিয়ে। সুনীল অবাক হয়ে মনিষাকে বলে, একা থাকো তুমি, তোমার ভয় করে না?
ওমা ভয় করবে কেন? টমি তো আছে সাথে।
সুনীল বলে ও তো তোমার ছোট্ট শান্ত কুকুর। বিপদ হলে টমি একা কি করে বাঁচাবে তোমাকে? আজকাল চোর ছেঁচোররা কুকুরকেও ভয় পায় না।
বলতে বলতে টমি এবার এগিয়ে আসে সুনীলের দিকে। মনীষা ঘরে ঢুকে তখন ওর গলার বাধন খুলে দিয়েছে। আশ্চর্য সুনীলকে দেখে একদম বিরক্ত বোধ করে না ও। সুনীলের গায়ে উঠে ওর গা চাটতে থাকে মনীষার কথা মতন। মনীষা হাসতে থাকে, বলে, দেখেছ তোমার সাথে কেমন ভাব হয়ে গেছে ওর। আমি টমিকে এইজন্যই এত ভালবাসি।
মনীষার ডাকে টমি এবার ওর দিকেও যায়, মনীষা ওকে জড়িয়ে আদর করে। চুমু খায়। তারপর টমিকে বলে, টমি এবার পাশের ঘরে যাও। আমরা দুজনে এখন কথা বলবো। বাধ্য কুকুরের মতন টমি লেজ নেড়ে চলে যায় পাশের ঘরে।
সুনীল বলে, ও তো তোমার শান্ত কুকুর। ওকে পাশের ঘরে পাঠালে কেন? এখানেই বসে থাকতো।
একটু কাছে এগিয়ে আসে মনীষা। সুনীলের চোখে চোখ রেখে বলে, আমার টমিও বোঝে, যাকে এনেছি ঘরে, সে আমার কে?
একটু হাসে সুনীল, বলে আমি তোমার কে?
মনীষা সুনীলের গলাটা জড়িয়ে ধরে, মুখের কাছে মুখটা নিয়ে যায়, বলে আগে বলো, আমি তোমার কে?
দুটো হাত দিয়ে মনীষার গাল দুটো ধরে সুনীল চেয়ে থাকে অনেক্ষণ ধরে। ভালবাসার আবেগে ভেসে যেতে থাকে প্রেমিকার মুখের দিকে তাকিয়ে। চোখে চোখ রেখে বলে, তুমি আমার প্রিয়তমা। আমার মনীষা। যাকে ভালবেসেছি আমি, আমার সারাজীবনের সাথী করব বলে। মিষ্টি মেয়েটা তুমি, এবার বলো আমি তোমার কে?
মনীষা ঠোঁটটা নিয়ে যায় সুনীলের ঠোঁটের খুব কাছে। আবেশ জড়ানো ঢুলু ঢুলু চোখের ভাষায় বলে, আমিও তোমাকে খুব ভালবেসে ফেলেছি সুনীল। প্রিয়তমা হিসেবে প্রিয়তমর কাছ থেকে ভালবাসার স্পর্ষ পেতে চাইছি। আমাকে তুমি চুমু খাবে না?
চোখ দুটো বুজে ফেলে মনীষা, ভালবাসার মূলমন্ত্র, যোগসূত্র, চুমু খাওয়াকে এবার গভীর ভাবে প্রত্যাশা করে সুনীলের কাছ থেকে।
সুনীল চুমু খায়, মনীষার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে। কিন্তু আরও গভীরভাবে চুমু খেতে মনীষা আবদার করে সুনীলকে।
-বাড়ীতে কেউ নেই। শুধু আমি আর আমার ঐ কুকুরটা। গলাটা দুটো জড়িয়ে বলে, এটুকুতে যে মন ভরে না সুনীল।
এক তীব্র অনুভূতিতে সুনীল ঠোঁট আঁকড়ে ধরে প্রিয়তমার ঠোঁটদুটিকে। যৌথভাবে ওষ্ঠ ও জিভের চোষণে দুজনে দুজনকে প্ররোচিত করে আস্বাদ নিতে থাকে মিষ্টি চুমুর স্বাদ। সুনীলের ঠোঁটকে ছাড়তে চায় না মনীষা। বলে আর একটু আর একটু।
পরিশ্রিত কোন মধুর চেয়ে মিষ্টি মনীষার ঠোঁটের স্বাদ। সুনীল আবেগে কিছুক্ষণ ঠোঁটদুটোকে আলগা করে আবার চেয়ে থাকে মনীষার দিকে, বলে, আজ আমার হৃদয় গেল ভরে, তোমার মুখ থেকে আমি যে সুধারস পান করলাম। অতুলনীয় তোমার ঠোঁটের পরশ। আমি ধন্য হলাম মনীষা।
মনীষা এবার নিজে থেকেই আঁকড়ে ধরে সুনীলের ঠোঁটটাকে। চুমুর দেওয়া নেওয়ার খেলা খেলতে থাকে শুধু সুনীলের সঙ্গে। মন চায় শুধু অনুভূতির আমেজটকে দীর্ঘায়িত করতে। মনীষাকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকের ওপর চলে আসে সুনীলের একটা হাত। মনীষা বলে, তোমাকে প্রথম দেখাতেই ভালবেসে ফেলেছি সুনীল। যদি চাও, প্রিয়তমাকে আজ রাতেই তুমি নিজের করে নাও। আজ আমি যে তোমাকে আর বাধা দিতে যে পারব না সুনীল।
সমস্ত হৃদয়টাকে উজাড় করে দিয়ে সুনীল ভালবেসে ফেলেছে মনীষাকে। ঠিক এই মূহূর্তে চুমুর আবেশে ও যেন দিশাহারা। মনীষার মাখনের মতন নরম শরীরটাকে এক হাতে পেঁচিয়ে ধরে বুকের ওপর আর একহাত রেখে, নিবিড় আলিঙ্গনে রোমাঞ্চিত, পুলকিত হওয়া। সুনীল তবু বলে, ইচ্ছে তো হয়, তোমাকে আরও আদর করতে। কিন্তু মনীষা তোমাকে এভাবে আজ একান্তে পেয়েছি। তুমি মন থেকে সব মেনে নেবে তো আজকে?
মনীষা এবার হাসে সুনীলের কথা শুনে। বলে, কেন নয়? যাকে ভালবেসেছি, তাকে মন প্রাণ ঢেলে সব কিছু দেওয়া যায়। আমি যে তোমায় ভালবাসি সুনীল। আজ এসো, আমরা দুজনে দুজনকে ভালবেসে, সুখের সাগরে ভেসে যাই।
সুখের আবেশে চোখ বন্ধ করে মনীষা নিজেই সুনীলের হাতটা চেপে ধরে নিজের বুকে। নিজেকে আরও উজাড় করে ধরা দেয় সুনীলের কাছে।
ভালবাসার অধিকার যেন শরীরি আকাঙ্খায় পরিণত হয়ে গেছে। বাঁধভাঙা নদীর আছড়ে পড়া শ্রোতের মতন শরীরে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে একটু একটু করে। সুনীল মনীষার ঠোঁট ঠোঁটে নিয়ে চাক্-ভাঙা মধুর আস্বাদে, সুরাপানের নেশার মতন চুষতে থাকে। এক হাতে টিপতে থাকে, ওর গোলাকার দুই স্তন। বুক থেকে শাড়ী সরে গিয়ে, ব্লাউজে আবদ্ধ বক্ষ সম্পদ তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে দিচ্ছে সুনীলের শরীরে। টিপতে টিপতে হঠাৎই ব্লাউজের খোদলের মধ্যে ঢুকে যায় সুনীলের হাত। মনীষাকে ওকে উৎসাহ দেয়। সুনীল ওকে ছাড়ে না। কামনায় জর্জরিত, স্নায়ুন্ডলী উত্তেজিত, যেন যৌনমিলনের ইচ্ছায় কাঁপছে দুটি নরনারীর শরীর।
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
অস্ফুট স্বরে মনীষা বলে ওঠে, আমাকে তুমি শরীরে নেবে সুনীল? যদি চাও?
সুনীল বলে, আমিও আর পারছি না মনীষা। আমাকে আজ তুমি যে কি করে দিলে?
সঙ্গমেচ্ছু আকাঙ্খা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। মনীষার দূর্দান্ত শরীরটা যেন এই মূহূর্তে অবহেলা করার মতন নয়। ভালবাসা যেন কত গাঢ় হয়ে উঠেছে, প্রবল আকাঙ্খাকে মিশিয়ে ফেলে একাকার করে দিতে ইচ্ছে করছে মূহূর্তটাকে।
চোখের চাহনিটা অস্পষ্ট করে মনীষা শরীরটা পুরোটাই সঁপে দেয় সুনীলের কাছে। ঠোঁট থেকে সুনীলের মুখ নেমে আসে মনীষার গলায়, বুকে। ব্লাউজের ওপর পাগলের মতন মুখ ঘসতে থাকে সুনীল। সহবাসের এটাই যেন উপযুক্ত সময়।
মনীষা সুনীলকে বলে, আর দেরী কোরো না সুনীল। এসো, চলো, আমরা বিছানায় যাই। তোমাকে আবার ফিরতে হবে বাড়ীতে, মা একা রয়েছেন, এই টুকু সময়, তুমি যতপারো আমাকে আরও নিজের করে নাও।
দুজনের তপ্ত অমৃতধারা গলে গলে পড়ে, কামনার জারকরসের শেষ বিন্দু ঝরে না পড়া পর্যন্ত থামবে না। মিলন সুখের প্রথম হাতছানি। রোমাঞ্চকর পরিস্থিতিতে মনীষার প্রবল সন্মতিতে আত্মহারা হয়ে সুনীল টগবগ করে ফুটতে থাকে। প্রিয়তমা এই মূহূর্তে ওকে কামনা করছে।
হাত লাগিয়ে সুনীলের জামার বোতামগুলো খুলতে শুরু করে মনীষা। নিজেকেও উন্মুক্ত করতে চাইছে সুনীলের সামনেই। সুনীলের জামা খুলে একটু দূরে সরে যায় মনীষা। এবার নিজের শাড়ী খুলে ব্লাউজটাকেও উন্মুক্ত করতে থাকে আসতে আসতে। শরীরের আবরণ ঘুচিয়ে মনীষার তখন মন-মোহনী রূপ। নগ্ন শরীরটার দিকে স্থির চোখে তাকিয়ে আছে সুনীল। মনীষা দুটো হাত বাড়িয়ে ওকে বলে, নাও আমাকে নাও। নেবে না আমাকে?
এক মধুর অঙ্গের মধুর হাতছানি। কি অপরূপ সৌন্দর্যময় মনীষার দেহ। উন্মুক্ত স্তনযুগল মুগ্ধ চোখে, মনভরে, প্রাণভরে দেখছে সুনীল। ভরাট বুক, স্তনবৃন্তদ্বয় যেন মধুশালার আগ্নেয়গিরি। পুরুষের আসন্ন স্পর্ষসুখ পাওয়ার জন্য উদগ্রীব ও রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষা।
শেষ মূহূর্তে আর অপেক্ষা করতে পারে না মনীষা। কাতর গলায় সুনীলকে বলে ওঠে, আমি জীবনে, এই প্রথম কাউকে ভালবেসেছি সুনীল। আমার সবকিছু আজ উজাড় করে দিতে চাইছি তোমাকে। এসো, আর দেরী কোর না। প্লীজ। আমাকে করতে শুরু করো।
বিহ্বল সুনীল নগ্ন মনীষার শরীরটা এবার পাঁজা কোলা করে বিছানায় শুইয়ে দেয়। নগ্ন ওকেও হতে হবে। বীরপুরুষের মতন পুরুষদন্ডটাকে ঢুকিয়ে দিতে হবে মনীষার যৌন গহ্বরে। মধুভান্ড নিয়ে মনীষা অপেক্ষা করছে কাতর ভাবে।
প্যান্ট খুলে মনীষার শরীরের ওপর শুয়ে পড়ে সুনীল। প্রবিষ্ট হতে চেয়ে ও মনীষাকে বলে, একটু তোমার পা টা ফাঁক করো মনীষা, এটা আমি ঢোকাই।
লিঙ্গটা হাতে নিয়ে দুবার নেড়েচেড়ে এবার ফাটলে ঢোকানোর চেষ্টা করতে থাকে সুনীল। মনীষা ওকে দেখছে আর আসন্ন সুখের আনন্দে মাতছে এখন থেকেই। সুনীলের লিঙ্গমুখ মনীষার ত্রিভুজের মুখ স্পর্ষ করেছে। থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে মনীষা এবার সুনীলকে বুকে টেনে নেয়। ওর ঠোঁটে গভীর ভাবে চুমু দিয়ে বলে, আজ আমার নারী জীবন সার্থক হচ্ছে। এবার করতে শুরু করো সুনীল। আমার আঘাতের ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রেখো না। সম্পূর্ণভাবে প্রবেশ করো। আমি তোমাকে জায়গায় ঠিক সাজিয়ে নেব।
কাল বিলম্ব না করে সুনীল এবার প্রবিষ্ট হয় মনীষার মধ্যে। কিন্তু একি? ওর পুরুষাঙ্গ তো সেভাবে দামাল হয়ে উঠছে না। সেই আকৃতি কোথায়? যা না হলে নারীর প্রকৃত সুখ হয় না। আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে নিজের পুরুষত্বকে প্রমাণ করার। কিন্তু সবই যেন বিফলে যাচ্ছে। ছোট্ট দন্ডটি কি করে ওই গুহার মধ্যে সুখের ঝড় তুলবে ও নিজেও বুঝে পারছে না।
দু-তিনবার পেরেক পোঁতার আপ্রাণ চেষ্টা করে বিফল হয় সুনীল। মনীষার মুখটা আস্তে আস্তে শুকিয়ে যাচ্ছে। সেই উৎসাহ,উদ্দীপনাটা হারিয়ে ফেলেছে। এ কাকে ভালবাসল ও? যার কিনা এত সুপুরুষ চেহারা, সে তার প্রিয়তমাকে মিলনের সুখটাই দিতে পারল না। এ কেমন হল? যৌন সম্পর্ক ছাড়া বিবাহিত জীবন? ভালবাসা কি টিকিয়ে রাখা যায়?
মুখটা একটু করুন মত করে মনীষা বলে, তোমার কি কোন অসুবিধে হচ্ছে সুনীল? তাহলে আজ ছাড়ো। আমরা বরং অন্য কোনদিন।
নিজের প্রতি হতাশায়, মনীষার নগ্ন শরীরটাকে ছেড়ে উঠে পড়ে সুনীল। প্যান্ট, জামা গলিয়ে নেয়। মনীষাও তাড়াতাড়ি শরীরটা ঢেকে নেয় শাড়ী দিয়ে। দেখে সুনীল ওর দিকে তাকাতে পারছে না লজ্জ্বায়। হঠাৎই মেয়েমানুষের কাছে ধরা পড়ে গেছে শরীরি খুঁতে। স্বপ্ন, আকাঙ্খা সব ভেঙে চূড়ে ধুলিস্যাত হবার অপেক্ষায়। এই প্রথম জীবনে কোন এক পরীক্ষা দিতে গিয়ে অকৃতকার্য হয়েছে সুনীল। কি করে মুখটা দেখাবে মনীষাকে, ও ভেবে পাচ্ছে না।
তাড়াতাড়ি শাড়ীটা পড়ে নিয়ে মনীষা সুনীলকে বলে, দোষটা আমার। বড্ড বেশী তাড়াহূড়ো করতে গেলাম। আসলে তুমি মনটা বসাতে পারো নি। প্রথম প্রথম এরকম হয় সুনীল। আমি কিচ্ছু মনে করিনি। তুমি নিজেকে খারাপ ভেবো না।
সুনীলকে উপহার দেবার জন্য একটা দামী ঘড়ি কিনেছে মনীষা। ওটা সুনীলের হাতে দেয়। সুনীল এখনও তাকাতে পারছে না মনীষার দিক। মনীষা বলে, তুমি কি খুবই আপসেট সুনীল? আর একবার চেষ্টা করে দেখবে? কেন এত মন খারাপ করছ? এমন তো হতেই পারে।
নিজের প্রতি একটা ধিক্কার এসে যাচ্ছে। মনীষাকে নিজের পুরুষত্বটা দেখাতে পারেনি বলে, কেমন যেন নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে গেছে।
সুনীল ঘড়িটা মনীষার হাত থেকে নিয়ে আর দাঁড়ায় না। বলে, মনীষা আজ আমি যাই। কাল অফিসে আবার দেখা হবে।
পাশের ঘর থেকে কুকুরটা আবার চলে এসেছে। সুনীলকে দেখে ল্যাজ নাড়ছে। মনীষা সুনীলকে নিজের ফোন নম্বরটা দেয়। বলে, রাত্রে আমাকে ফোন কোরো। ওকে বিদায় জানিয়ে সুনীল বেরিয়ে পড়ে ওর দমদমের ফ্ল্যাট থেকে। বিষন্ন মনীষার মুখ। প্রথম মিলনটা হতে হতেও যেন হল না শেষ পর্যন্ত।
বাড়ী ফিরে মায়ের সাথেও ভাল করে কথা বলে না সুনীল। রাতে বিছনায় শুয়ে দুশ্চিন্তা, জ্বালা, যন্ত্রনায় মনটাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে ও। ঘুম আজকেও আসতে চাইছে না। ভালবাসার মূল্য কি শেষ পর্যন্ত চোকাতে পারবে ও? এই একদিনেই সব যেন ঝড়ের মত ওলোট পালোট হয়ে গেছে ওর জীবনে। কি যে হবে শেষ পর্যন্ত কে জানে?
পরের দিন সকালে অফিসে গিয়েই মনীষার সাথে চোখাচোখি হয় সুনীলের। মনীষা ওর সাথে কথা বলতে চাইছে, অথচ সুনীল বলছে না। নিজেকে ভীষন অপরাধী বলে মনে হচ্ছে। পাশ কাটিয়ে, এড়িয়ে, মনীষার সাথে কথা না বলেই সুনীল অফিস ছুটীর আগেই বেরিয়ে আসে অফিস থেকে। নিজের সেল ফোন থেকে ফোন করে, ছোটবেলার এক বন্ধুকে। বলে, তোর সাথে একটু ধর্মতলায় মিট করতে চাই। আসতে পারবি?
ছোটবেলার বন্ধু জীতেন এক কথায় রাজী হয়। বলে, আসছি আমি এক ঘন্টার মধ্যে। তুই মেট্রো সিনেমা হলের সামনে আমার জন্য ওয়েট কর।
সুনীল জীতেনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। ঠিক একঘন্টার মধ্যেই জীতেন এসে হাজির হয়। দুজনে একটা রেস্তোরায় ঢোকে। খাবারের অর্ডার দিয়ে সুনীল খুলে বলে ওর অসুবিধার কথাটা। মিলন ঘটাতে গিয়ে একটা ফাঁক বেরিয়ে পড়েছে শরীর থেকে। এখন বন্ধু যদি কোন উপায় ওকে বাতলে দিতে পারে।
প্রাণের বন্ধু জীতেন সব শুনে একটাই সুরাহা দেয় সুনীলকে। এ সমস্যায় এখন ভুগছে অনেকেই। যৌন সম্পর্ক ছাড়া বিবাহিত জীবন কখনও সুখের হয় না। আমার মনে হয় তুই কোন ভাল ডাক্তারের কাছে গেলেই এই সমাধানের পথ খুঁজে পাবি। তোর মনীষা যদি সত্যি তোকে ভালবেসে থাকে, তাহলে তোকে ছেড়ে যাবে না। তবে সে সম্ভাবনা কম। পৃথিবীতে বিচ্ছেদের হার যেভাবে বাড়ছে, বিবাহিত জীবনে অনেকে সুখী নয় বলেই।
সুনীল সব শুনে বলে, কিন্তু মনীষা তো এখনও আমাকে চাইছে। ওতো অফিসেও আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে অনেকবার। আমিই কথা বলিনি।
রীতিমতন তাজ্জব হয় জীতেন, বলে সেকিরে? তুই কথা বলিস নি? কেন? মেয়েটা তো তাহলে ভাল বলতে হবে। ব্যাপারটাকে তুচ্ছ মনে করে সেন্টিমেন্টে নেয় নি। তোর এখুনি উচিত মনীষার সাথে কথা বলা।
নিজের ভুলটাকে বুঝতে পেরে সুনীল ফোনে ধরার চেষ্টা করে মনীষাকে। অফিসে ওকে দেখতে না পেয়ে মনীষা এতক্ষনে হয়তো রওনা দিয়ে দিয়েছে বাড়ীর দিকে।
দুতিনবার বাজতেই ফোনটা রিসিভ করে মনীষা। সুনীলকে বলে, কি হল? তুমি আজকে তোমার মায়ের কাছে আমাকে নিয়ে গেলে না? আমি তোমাকে দেখতে না পেয়ে অফিস থেকে চলে এলাম। কোথায় চলে গেলে তুমি?
বুকের ভেতর থেকে আবেগটা বেরিয়ে এসে কন্ঠরোধ করে দিয়েছে। কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে সুনীল বলে, মনীষা এরপরেও তুমি?
ও প্রান্ত থেকে মনীষা বলে, কেন কি হয়েছে?
সুনীল বলে, মানে কাল রাতে তোমাকে আমি আপসেট করেছি, তাই কেমন পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। মনীষা আমি খুব ডিস্টার্ব হয়ে আছি।
একটা ভালবাসার কিস ফোনের মধ্যেই ছুঁড়ে দিয়ে মনীষা বলে, আজ যদি তোমার বদলে আমার কোন সমস্যা হত? তুমি কি আমাকে ছেড়ে যেতে? আমাকে তুমি এতটাই খারাপ ভাবলে?
অবাক হয় সুনীল। মনীষার কথার জবাব দিতে পারে না। ফোনে মনীষাই স্মরণ করায় ওকে। জানো আজকের দিনটা কি?
সুনীল বলে, কি?
মনীষা বলে আজকে হল ভ্যালেনটাইন ডে। প্রেমিক প্রমিকারা কখনও বিষন্ন মনে থাকে না আজকে। এসো আমি অপেক্ষা করছি তোমার জন্য ধর্মতলার মেট্রোতে। আজই যাব আমি তোমার মায়ের কাছে।
আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে সুনীল। জীতেনকে বলে, মনীষা এখন ধর্মতলাতেই আছে। আমার জন্য অপেক্ষা করছে। যাই ওকে মায়ের সাথে দেখা করিয়ে নিয়ে আসি।
জীতেনকে বিদায় জানিয়ে সুনীল চলে আসে মেট্রো স্টেশনের কাছে। মনীষা হাসি মুখে ওখানে দাঁড়িয়ে আছে। সুনীল ওকে দেখে ভীষন খুশি হয়। জীবনে এমন আনন্দ পায়েনি কখনও আগে।
ট্যাক্সি করে মনীষাকে পাশে বসিয়ে সুনীল নিয়ে আসে নিজের বাড়ীতে। অসুস্থ মাকে বিছানা থেকে উঠতে না দিয়ে মনীষা প্রথমে ওনাকে একটা প্রনাম করে। তারপর জড়িয়ে ধরে সুনীলের মাকে। হবু শ্বাশুড়িও মনের মতন বউমা পেয়ে খুশীতে বিহ্বল হয়ে পড়েন।
এর ঠিক মাস খানেকের মধ্যেই সুনীল মনীষার বিয়ে হয়। মনীষা ওর দমদমের ফ্ল্যাট ছেড়ে দেয়। সাধের কুকুর টমিও চলে আসে সুনীলের বাড়ীতে। বিবাহিত জীবন খুব সুখের সাথেই কাটতে থাকে।
ডাক্তারের কাছে মনীষাকে সাথে নিয়েই গিয়েছিল সুনীল। উনি সব শুনে বলেন, আপনার যেটা সমস্যা, সেটা খুবই সামান্য। যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অ্যাডযাস্টমেন্ট ঠিক থাকে,এই সমস্যা গুলো সহজেই কাটিয়ে ওঠা যায়। কিন্তু দূঃখের ব্যাপার, সেক্স সন্মন্ধীয় ভাল নলেজ না থাকার জন্য অনেক দম্পতিই একে অপরকে ঠিক মতন বুঝতে না পেরে ডিভোর্সের রাস্তাটাই বেছে নেন। সেদিক থেকে আপনি লাকি। সত্যিই একজন বোঝার মতন স্ত্রী আপনি পেয়েছেন।
প্রিয়তমা মনীষা সুনীলের জন্য যেটা করেছিল, সেটা কোন স্বার্থত্যাগ নয়। একপ্রকার সহযোগীতা। যেটা অনেকেই করেন না, বা বোঝেন না। কিছু যৌনসন্মন্ধীয় ডাক্তারি সিডি নতুন দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছিলেন সেই ডাক্তার। কিভাবে রমনী একজন পুরুষকে বা একজন স্ত্রী তার স্বামীকে, সোহাগ, আদর ও রমনের মাধ্যমে শরীরি ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করছেন এবং তার যৌনশক্তিকে সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারছেন খুব অনায়াসেই।
মনীষার সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন আজও সুনীলকে পুরোনো স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। অনেক ভাগ্য করেই ও যেন এই প্রিয়তমাকে ওর জীবনে পেয়েছিল।।
। । সমাপ্ত। ।
খুব কাছ থেকে শোনা একজনের ভালবাসাকে ফিরে পাবার জীবন কাহিনী।
সত্যি ঘটনা অবলম্বনে লিখিত।
Posts: 127
Threads: 2
Likes Received: 190 in 92 posts
Likes Given: 581
Joined: Jun 2019
Reputation:
20
এক বিখ্যাত লাইন তোমার জন্য একটু চেঞ্জ করে দিলাম
Mr Fantastic এর সংগ্রহের ঝুলি থেকে গল্পগুলো সব আনর বাছা বাছা।
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
06-01-2021, 08:24 AM
(05-01-2021, 11:53 PM)Buro_Modon Wrote: এক বিখ্যাত লাইন তোমার জন্য একটু চেঞ্জ করে দিলাম
Mr Fantastic এর সংগ্রহের ঝুলি থেকে গল্পগুলো সব আনর বাছা বাছা।
আরে মদনদা কি যে বলেন, হেঁ হেঁ, সব তো এই Lekhak-র দুর্মূল্য সৃষ্টি
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,067 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
খুব ভালো লাগলো গল্পটা. ছোটোর মধ্যে বেশ সুন্দর. স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা বিশ্বাস ও বন্ধুত্ব বজায় থাকলে অনেক প্রবলেম এমনি solve হয়ে যায়. ❤❤
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(06-01-2021, 08:11 PM)Baban Wrote: খুব ভালো লাগলো গল্পটা. ছোটোর মধ্যে বেশ সুন্দর. স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা বিশ্বাস ও বন্ধুত্ব বজায় থাকলে অনেক প্রবলেম এমনি solve হয়ে যায়. ❤❤
ঠিক, স্বামী-স্ত্রী (আসলে প্রেমিক-প্রেমিকা)-র মধ্যে প্রগাঢ় ভালোবাসা, অটুট বিশ্বাস আর হাতে হাত রেখে সব বাধা জয় করার মানসিকতা থাকলে কোনো সমস্যাই আর সমস্যা নয়
Posts: 24,400
Threads: 10
Likes Received: 12,323 in 6,189 posts
Likes Given: 8,024
Joined: Jun 2019
Reputation:
162
22-08-2021, 12:04 AM
(This post was last modified: 22-08-2021, 12:05 AM by 212121. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
Posts: 24,400
Threads: 10
Likes Received: 12,323 in 6,189 posts
Likes Given: 8,024
Joined: Jun 2019
Reputation:
162
(06-01-2021, 11:19 PM)Mr Fantastic Wrote: ঠিক, স্বামী-স্ত্রী (আসলে প্রেমিক-প্রেমিকা)-র মধ্যে প্রগাঢ় ভালোবাসা, অটুট বিশ্বাস আর হাতে হাত রেখে সব বাধা জয় করার মানসিকতা থাকলে কোনো সমস্যাই আর সমস্যা নয়
Posts: 24,400
Threads: 10
Likes Received: 12,323 in 6,189 posts
Likes Given: 8,024
Joined: Jun 2019
Reputation:
162
22-08-2021, 12:08 AM
(This post was last modified: 22-08-2021, 12:09 AM by 212121. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
|