Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
26-08-2020, 10:28 AM
।। এক ।।
পার্কস্ট্রীটের এই বার টার নাম অদ্ভুত। স্টারলেট গার্ডেন। বাংলায় আমরা এর নাম দিয়েছি তারাতলা। খুব ছোট্ট একটা বার অথচ স্টারলেট গার্ডেন হল ছাপোষা মধ্যবিত্তদের স্বর্গরাজ্য। পার্কস্ট্রীটে অন্য যেসব পানশালা আছে সেখানে অনেক সুবিধা পাওয়া যায় ঠিকই কিন্তু সেগুলো অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ। তারাতলায় যারা আসেন, তাঁরা ইচ্ছে করলে পার্কস্ট্রীটের নামকরা রেস্তোঁরা বা ফাইভস্টার হোটেলে বসে মদ্যপান করতে পারেন, কিন্তু তারাতলায় না এলে এদের ভাত হজম হবে না। মদ এখানে একশো ভাগ খাঁটি এবং সবচেয়ে সস্তা। গরমকালে মনোরম ঠান্ডা পরিবেশ, বিত্তবান লোকেরা যারা এখানে আসেন, তারা এখানকার পরিবেশটা বেশ পছন্দ করেন। কলকাতায় যেন এমন ছোট অথচ সুন্দর পানশালা আর দুটি নেই।
তারাতলার এই বারে,পাশাপাশি বসে আমি আর সোমনাথদা ড্রিংক করছি। সবে মাত্র সন্ধে হয়েছে একটু আগে। এই সময়টা পেটে লিকার না পড়লে সোমনাথদার আবার চলে না। আমি অবশ্য একটু দেরী করে খাই। রাত্রে শোবার আগে, দুপেগ হূইস্কি। নেশা হয় না, তবু খাই। ড্রিঙ্ক করার অভ্যাসটা বছর খানেক আগেও খুব বেশি ছিল। এখন কমিয়ে দিয়েছি। বেশি খেলে পরের দিন শরীরটা ভারভার থাকে। অফিসে যাবার তাড়া থাকে। কাজে বেরোতে তখন অসুবিধা হয়। তাই রাতে টিভি চালিয়ে ঐ টুকু মদেই আমি সন্তুষ্ট।
প্রাইভেট কোম্পানীতে মার্কেটিং এর চাকরী করি। সারা দিন অনেক লোকের সাথেই মেলামেশা। নতুন নতুন লোকের সাথে আলাপও হয়। সোমনাথদার সাথে আলাপ আমার বছর খানেক আগে। সর্ব ঘটে কাঁঠালি কলা বলে পরিচিত সোমনাথদা ইন্সুরেন্স কোম্পানীর একজন নামকরা অফিসার। আমাদের অফিসেও ওনার নিয়মিত যাতায়াত। সেখান থেকেই আমার সাথে পরিচয়। প্রতি শনিবার নিয়ম করে অফিস ছুটীর পরে সোমনাথদার সাথে পার্কস্ট্রীট বারে আসি। এখানেই বসে মদ খাই। গল্প গুজব, হাসি ঠাট্টা মস্করা, করি। উইক এন্ডটা দারুন এনজয় হয়, সময়টা আমাদের ভালই কেটে যায়।
সোমনাথটা রেগুলার ড্রিঙ্ক করে। আমার থেকেও বেশি। সপ্তাহে একটা দিন শুধু পার্কস্ট্রীটে আসি কেবল সোমনাথদার জন্যই। দুজনের মধ্যে সম্পর্কটা দারুন গড়ে উঠেছে। অন্তত একটা দিন মিট করার জন্য আমরা দুজনেই মুখিয়ে থাকি। কোন কারনে দেখা না হলে দুজনেরই তখন মন খারাপ হয়ে যায়। সত্যি কথা বলতে কি সোমনাথদার সঙ্গ আমার ভীষন ভাল লাগে।
বছর ষাটের কাছাকাছি বয়স সোমনাথদার। রিটায়ার করবে হয়তো আর দু এক বছর পরে। মাথার চুলগুলো সব কলপ করা। লম্বা জুলফি, মোটা গোঁফ, স্বাস্থ্যও ভাল। দেখে মনে হবে বার্ধক্য যেন ছুঁতে পারেনি লোকটাকে। সোমনাথ দা এই বয়সেও খুব স্মার্ট। অফিসে এক ডাকে সোমনাথদাকে সবাই চেনে। অনেক লোক ওনার কাছ থেকে ইন্সুরেন্স করিয়েছে। উনি খুব পপুলার। আমারও তাই ভাল লাগে লোকটাকে।
কৌতুক প্রিয়, রসিক মানুষ এমনিতেই খুব জনপ্রিয় হয়। আলোচনা একবার শুরু হলে ভীষন জমিয়ে দিতে পারে লোকটা। সবাই হাঁ করে ওর কথা শোনে। হেন কোন ব্যাপার নেই, যা সোমনাথদার অজানা। জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সবই যেন নখ দর্পনে। প্রতিটা বিষয়ের ওপর সোমনাথদার এত আগ্রহ, এবং তা যেন খুব ভাল করেই সোমনাথদার জানা আছে। আমিও অফিসে যখন দেখা পাই ওর কথা শুনি। মজা লাগে, ভাল লাগে। এই অফিসে আমাকেই একমাত্র সোমনাথদা কাছের বন্ধু হিসেবে মেনে নিয়েছে।
পার্কস্ট্রীটে তারাতলায় সপ্তাহে একদিন মদ খেতে আসার অভ্যাসটা সোমনাথদার জন্যই হয়েছে। এত দরাজ লোক, আমাকে কিছুতেই বিল পেমেন্ট করতে দেয় না। চারপেগ, পাঁচপেগ যাই খেলাম, সবই চোকাবে ঐ সোমনাথদা।
কিছু বললে সোমনাথদা বলে, "টাকাটা তুমি জমিয়ে রাখ সুদীপ। ভবিষ্যতে তোমারই কাজে লাগবে। আমার তো এ দুনিয়ায় কেউই নেই। সোমনাথ সেন সপ্তাহে একদিন সুদীপ বসুকে মাল খাওয়ালে ভিখারী হবে না। এটাতো আমারই ডিউটি। তুমি আমাকে কোম্পানী দিচ্ছ। তাই না আমি দিচ্ছি। আই মাস্ট পে ফর দ্যাট।"
আজ ঠিক করেছি হূইস্কির বিলটা আমিই পেমেন্ট করব। সোমনাথদাকে কিছুতেই পেমেন্ট করতে দেব না। আগে ভাগেই বলে ফেললাম, "তুমি কিন্তু পার্স বার করবে না সোমনাথদা। আজ সব খরচ আমার।"
গতকালই প্রমোশন লেটারটা পেয়েছি সোমনাথদা জানে। অফিসের সবাইকে রোল খাইয়েছি। কিন্তু সোমনাথদা আমার স্পেশাল লোক। তাই তার জন্য তারাতলায় আমার মানিব্যাগ ভর্তি নোট। সারা রাত বসে মদ খেলেও মানিব্যাগ আমার খালি হবে না।
মদ খেতে খেতে সোমনাথদা আবার তুলল সেই পুরোনো কথাটা। আমাকে যেন আরেকবার স্মরণ করালো। হূইস্কির গ্লাস হাতে ধরে হাসতে হাসতে সোমনাথদাকে বললাম, "তুমি পাগল হয়েছ? ওখানে কেউ যায়?"
সোমনাথদা বলল, "তুমি এত বেরসিক কেন বলো তো সুদীপ? ওখানে গেলে কি হবে? তোমার ইজ্জ্বত খোয়া যাবে?"
আমি তবু হাসছিলাম। হাসতে হাসতেই বললাম, "তাহলেও, তাই বলে সোনাগাছি?"
আসলে কদিন ধরেই সোমনাথদা আমাকে তাতাচ্ছে। - "বিয়ে থা তো করলে না সুদীপ। একদিন চলো তোমাকে একটা দারুন জায়গায় নিয়ে যাব। দেখলে চিত্তির চনমন করবে।"
আমি সোমনাথদাকে বললাম, "তুমিও তো বিয়ে করোনি, আর আমাকে নিয়ে যাবে সেই নিষিদ্ধ পল্লীতে? ওখানে ঢুকলেই আমার গা ছমছম করবে।"
সোমনাথদা বলল, "তুমি জানো না তাই বলছ। ওখানকার সব ব্যাপার আমার নখদর্পনে। গেলে বুঝবে কেমন খাসা জায়গা। তুমি যার সঙ্গে যাচ্ছ সে তো আর যা তা লোক নয়। আমি হলাম গিয়ে মালপাড়ার মেশো। খাতির যত্ন কাকে বলে দেখবে। কয়েকটা মেয়ে আছে, একরাত কাটালে জীবন ধন্য হয়ে যাবে। এ শহরের মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত সব ধরনের লোকই ওখানে যায়। পয়সা দিলে অনেক উচু ধরনের পসারিনীও জুটবে। দেহসুখের জন্য একটু নিষিদ্ধ সঙ্গী পেলে ক্ষতি কি? আমি তো আনন্দ করতে যাচ্ছি।"
হাসতে হাসতে বললাম, "ওফ তোমার এ বয়সেও সখ বলিহারি। ওখানে গেলে আমি কি পাব বলো তো?"
সোমনাথদা বলল, "আনন্দ ফুর্তীর কোন বয়স নেই। মরার আগের দিন পর্যন্ত করে যেতে হবে।"
আমি বললাম, "শুনেছি ওসব জায়গায় দালাল পুলিশের প্রচুর ঝামেলা হয়। তাছাড়া ভাড়া করা মেয়ের সাথে আমি তো কোনদিন রাত কাটাইনি। আমার এসবে কোন অভিজ্ঞতাই নেই। বুক ঢিপ ঢিপ করবে।"
সোমনাথদা একটু ব্যাঙ্গ করেই বলল, "আমার সঙ্গে ছেনালি করছ? এখনও যেন কচি খোকা রয়ে গেছ? বিয়ে থা করো নি বলে তোমার মেয়েমানুষের প্রতি কোন দূর্বলতা নেই? এটাই বোঝাতে চাইছ? আরে কাম অন ইয়ার। লেটস্ এনজয় দ্য লাইফ। জীবনটাতে একটু সেক্সের মোড়ক না লাগালে সাদামাটা হয়ে যায় জীবনটা। ভালবাসার অনেক ঝামেলা। অনেক শর্ত পূরণ করতে হয়। তার থেকে একরাত মস্তি করো। মেয়েছেলে নিয়ে ফুর্তী করো। খেল খতম, পয়সাও হজম।"
আমি একটু ইতস্তত করছিলাম। সোমনাথদা বলল, "আর নেকু সেজে থেকো না তো? দামড়া কার্তিক হয়ে গেছ, এখন আবার এই নিয়ে টেনশন কিসের?"
মুখটা একটু কানের কাছে নিয়ে এসে সোমনাথ আস্তে আস্তে বলল, "আস্ত মেয়েটা যখন উলঙ্গ হয়ে দাঁড়াবে না তোমার সামনে, তখন আর বলে দিতে হবে না কি করতে হবে। সব অটোমেটিক হবে, অটোমেটিক।"
ঝামেলার কথা আর একবার বলাতে সোমনাথদা বলল, "ঝামেলা আবার কি? কিস্যু ঝামেলা নেই। তুমি সোমনাথ সেনের সাথে যাচ্ছ, তোমার আবার ঝামেলা কি? গেলেই সব বুঝতে পারবে।"
ঠিক হল, কাল ঠিক বিকেল চারটের সময় বেরোবো আমরা। সোমনাথদা এই স্টারলেট গার্ডেন থেকেই আমাকে তুলে নিয়ে সোজা চলে যাবে সোনাগাছি। তারপর ওখানে ভাল মেয়ে খুঁজে আমরা ফুর্তি করবো সারারাত। রবিবার ছুটীর দিনটা আমাদের সাঙ্গলীলা সারা হবে উত্তর কলকাতার সেই বিখ্যাত নিষিদ্ধ পল্লীতে।
যাবার আগে অবশ্য একটা ব্যাপারে নিশ্চিত করল সোমনাথদা। আমাকে একদম সোজা সাপ্টা ভাবেই বলল, "তোমার তলার ওটা আবার দাঁড়ায় তো সুদীপ? নইলে কিন্তু প্রেস্টিজ পানচার। আনাড়ী হলে ক্ষতি নেই। ওরা হাতে কলমে সব শিখিয়ে দেবে।"
কিন্তু ইন্দ্রিয় যদি সজাগ না হয়ে দূর্বল হয় তাহলে বেশ্যাবাড়ী যাওয়াটাই মাটি।
সোমনাথদাকে আশ্বস্ত করলাম। বললাম, "আমার নরমাল সাইজ চার ইঞ্চি। ফুলে গেলে ওটা সাত ইঞ্চি মতন হয়। তোমার প্রেস্টিজ থাকবে তো?"
সোমনাথদাও নিশ্চিত হয়ে বলল, "আলবাত থাকবে আলবাত, বৎস। তাহলে তো কথাই নেই।"
পরের দিন তিনটের পরেই হাজির হয়ে গেলাম স্টারলেট গার্ডেনে। সোমনাথদাও একটু পরে এসে উপস্থিত হল। বলল, "গাড়ী নিয়ে এসেছি। শুধু শুধু ট্যাক্সি করে যাবার দরকার নেই। এখন গাড়ীতেই মাল খেতে খেতে যাব। সারা রাত গাড়ী থাকবে ওখানে। তুমি একটাকে নেবে, আমি একটা। তারপর সারা রাত কাটিয়ে এই গাড়ী করেই ফিরব কাল সকালে।"
সোমনাথদাকে স্মরণ করালাম, "কিন্তু কালকের অফিস?"
উত্তরে সোমনাথদা বলল, "আরে ছাড়ো তো তোমার অফিস। একদিন অফিসে না গেলে কি এমন অসুবিধা হবে। একটা মেডিকাল লীভ নিয়ে নেবে আর কি?"
আমার মনে হলো, একেবারে তৈরী হয়ে এসেছে সোমনাথদা। ব্যাটা ঝানু মাল। ষাট বছরের বুড়ো কে বলবে? এখনও স্ফুর্তীর নেশা লেগে আছে শরীরে। আর আমিই কিনা গো বেচারার মতন ইতস্তত করছি। দেখাই যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়।
গাড়ীতে যেতে যেতেই মাল খেতে শুরু করল সোমনাথদা। আমাকেও দিল। বলল, "চীয়ার্স"
একসঙ্গে রাম খেতে খেতে সোনাগাছির দিকে যাচ্ছি। ড্রাইভার গাড়ী চালাচ্ছে। আমাকে সোমনাথদা বলল, "জানো সুদীপ, বিয়ে থা তো আমিও করিনি তাই কাজ কর্মের ফাঁকে এই একটু আধটু ফুর্তী করি আর কি। লাইফটা নইলে বোর হয়ে যেত। আমার তো সাতকূলে কেউ নেই। যা রোজগার করি, সবই মাল আর মেয়েমানুষের পেছনেই চলে যায়। তোমার সঙ্গে মেলামেশার পর থেকে এতদিন বলব বলব করেও বলা হয়নি। কি জানি তুমি আবার যদি কিছু মাইন্ড করো। আজকালকার ছেলেদের বোঝা খুব মুশকিল।"
চোঁ চোঁ করে দুপেগ গাড়ীর মধ্যেই শেষ করে সোমনাথদা বলতে লাগল, "বয়সে তুমি ছোট বলে প্রানখোলাও হতে পারছিলাম না এতদিন। আমার সন্মন্ধে তোমার ধারনাটা যদি খারাপ হয়ে যায়, মুখে তাই কুলুপ এঁটে বসেছিলাম। তুমি সন্মতি দিলে। তাই এখন আমি অনেক নিশ্চিন্ত।"
হেসে বললাম, "আপনি বুঝি অনেকদিন ধরেই ও পাড়ায় যাচ্ছেন? তা অভিজ্ঞতা কেমন?"
সোমনাথদা বলল, "তা বছর ছয়েক তো হবেই। আসলে রুচি অরুচির একটা ব্যাপার তো আছেই। যারা ওখানে যায় সবাই ঠিক আমার মতন নয়।"
একটু কৌতূহলের সাথেই জিজ্ঞাসা করলাম, "ব্যাপারটা কি রকম? ওখানেও আবার রুচি অরুচির কোন ব্যাপার আছে নাকি? বেশ্যাদের আবার জাত আছে না কি?"
সোমনাথদা হেসে বলল, "জাত আছে বৈকি। ওখানকার সব বেশ্যারা একরকম নয়। কয়েকজন আছে যারা তোমার সঙ্গে আপনি আজ্ঞে ছাড়া কথা বলবে না। ওরা সন্মান দিতে জানে, কখনও অসন্মান করে না। খদ্দেরের কোয়ালিটি বুঝে সঠিক ব্যবহার করবে। ওদের কথাবার্তার ধরনটাই অন্যরকম। প্রফেশনাল, কিন্তু ধান্দাবাজ নয়। খুব কো-অপারেটিং। অনেক তপস্যা করে সিদ্ধিলাভ করেছে। আমি এরকমই একটা মেয়েকে চিনি ওখানে। নাম রাখী। ওর ঘরে দুতিনবার গিয়েছি। মেয়েটি বেশ ভাল। সুন্দরী, আকর্ষন বোধ আছে। আমার সঙ্গে বেশ ভাল পটে গেল। আমি রাখীর জন্যই বলতে পারো সোনাগাছিতে যাই।"
আমি বললাম, "তোমার সাথে ইন্টারকোর্স হয়েছে?"
সোমনাথদা অবাক হয়ে বলল, "কি যে বলো? তা হবে না আবার? সোনাগাছিতে কি লোকে এমনি এমনি যায়? কিছু পাবার আশাতেই তো যায়। রাখীর কাছ থেকে যা পেয়েছি কোনদিন ভুলব না জীবনে।"
অবাক হয়ে ভাবছিলাম, লোকটার এই বয়সেও এখনও কি সখ। রাখীকে নিয়ে বুড়ো বয়সে মস্তি লুটছে ব্যাটাটা।
সোমনাথদা নিজে থেকেই বলল, "রাখী অবশ্য আমাকে অনেক হেল্প করেছে। লুপঝুপ শিখিয়ে দিয়েছে।"
আমি বললাম, "লুপঝুপ কি?"
সোমনাথদা বললো, "হ্যাঁ ঐ যৌনকেরামতি আর কি? বলতে পারো আমাকে সাহস জুগিয়েছে রাখীই। প্রথমে একটু ভয় ভয় ছিল। বয়স বেড়েছে। এই বয়সে মেয়েমানুষের ঝক্কি কি আর সামলাতে পারব? কিন্তু রাখী আমার আত্মবিশ্বাসটাই বাড়িয়ে দিল। বয়স বেড়েছে বলে যৌনক্ষমতাটা কমে যায় নি। এখনও ইচ্ছে করলে দুতিন ঘন্টা রাখী কে নিয়ে আমি শুতে পারি। ঢোকানো আর বার করাটা কোন ব্যাপারই নয় আমার কাছে।"
তাজ্জব বনে যাচ্ছিলাম সোমনাথদার কথা শুনে। একটু ভয় ভয়ও হচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত আমার কপালে আবার রাখীর মত কেউ না জুটলে তখন আমি আবার কি করব?
সোমনাথদা বোধহয় আন্দাজ করছিল ব্যাপারটা। আমাকে সাহস জুগিয়ে বলল, "চিন্তা করছ? তোমার ঘাবড়াবার কিছু নেই। আমি আছি তো তোমার সঙ্গে। ভাল একটা মেয়ে তোমাকেও আমি জুটিয়ে দেব শেষ পর্যন্ত।"
সোমনাথদা রাখীকে যে আমার সাথে ছাড়বে না সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। কিন্তু আমার কপালে রাখীর বদলে যে কোন পাখী এসে জুটবে সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। একটু চিন্তাগ্রস্ত হয়ে বললাম, "সোমনাথদা আর বাকী যারা ওখানে আছে তারা কেমন?"
মদের গ্লাসটা মুখে ঠেকিয়ে সোমনাথদা বলল, "নিশ্চয়ই রাখীর থেকেও সুন্দরী আরও ভাল কেউ আছে। না যাওয়া পর্যন্ত ঠিক বোঝা যাবে না। হড়বড় করে কোন লাভ হবে না। আমি ওখানে যে কটা দালাল কে চিনি তারা আমাকে খারাপ মাল গছাবে না। তোমার কেমন চাই বলো? পরী হলে চলবে?"
মনে মনে বললাম, "পরী কেন, তোমার ঐ রাখী হলে তো ভালই হত। কিন্তু সেটা মুখে তো তোমায় বলতে পারছি না। কি যে পারমানেন্ট মাল ফিট করে রেখেছ। ওখানে হাত দেবার উপায় নেই।"
সোমনাথদা যেন মনের কথা বোঝে। আমার দিকে মুচকি হেসে বলল, "কেউ না হলে শেষ পর্যন্ত রাখী তো আছে। তোমার জন্য নয় আমি স্যাক্রিফাইস করব একদিন। কি বলো হে হে।"
একটু লজ্জায় পড়ে গেলাম আমি। বললাম, "যাঃ তা হয় নাকি? তুমি তাহলে কি করবে? আমার সাথে রাখীর একবার আলাপ করে দিও, তাহলেই হবে।"
সোমনাথদা ভুরু উঁচিয়ে বললো, "আলাপ?"
হো হো করে হাসতে লাগল সোমনাথদা। মুখে বলল, "তোমার মগজে কি ঢুকেছে বলতো সুদীপ? শোবে একজনের সঙ্গে, আর আলাপ করবে আর একজনের সঙ্গে? এ আবার হয় নাকি কখনও? রাখী সুন্দরী আর স্বাস্থ্যবতী। তারপর যদি তোমার মাথা বিগড়ে যায়?"
বুঝলাম বেশ্যা নিয়ে একটু বাড়াবাড়ি করছে লোকটা। এমন ভাব করছে যেন রাখী ওর কেনা গোলাম হয়ে গেছে। অবস্থা বুঝে আমি চুপচাপ হয়ে গেলাম। রাখীকে নিয়ে সোমনাথদার কাছে আর কোন কথা তুললাম না।
গাড়ী দেখতে দেখতে ধর্মতলা ছাড়িয়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিন্যু তে ঢুকল। এখন সেন্ট্রাল এভিন্যু দিয়ে ছুটে চলেছে গাড়ী, সোমনাথদাকে জিজ্ঞাসা করলাম, "সোনাগাছিটা ঠিক কোথায়? স্পটটা আমি ঠিক চিনি না।"
সোমনাথদা বলল, "একটু পরেই বিডন স্ট্রীট আসবে, তারপরই পেট্রোল পাম্পটা। ওটা ছাড়িয়েই বাঁদিকের রাস্তাটা।"
সবই সোমনাথদার নখদর্পনে। একটা সিগারেট বার করে সোমনাথদাকে দিলাম, নিজেও ধরালাম একটা। সোমনাথদাকে বললাম, "আমাকে বাকীদের কথা কিন্তু বললে না?"
সোমনাথদা একটু নেশার ঘোরে বলল, "বাকী মানে?"
আমি বললাম, "ঐ যে বেশ্যার জাতগুলোর কথা তুমি বলছিলে।"
সোমনাথদা মাথা ঝাঁকিয়ে বললো, "ওহ হো।" তারপর বলতে লাগলো, "ওখানে কিছু শ্রেনীর আছে যারা একটু রদ্দি টাইপের। একশ টাকা দুশো টাকা দিলে তুমি সহজেই পেয়ে যাবে। কিন্তু কোন ভক্তি হবে না তোমার দেখলে। বৌবাজারের হাড়কাটা গলিতেও ওরকম অনেক আছে। মেয়েগুলো একটু বেহায়া টাইপের হয়। মুখে গালি গালাজ করবে, তুই তোয়াক্কি ছাড়া কোন কথা নেই। রঙ তামাসা, ফস্টি নস্টি যারা ওদের সাথে করে তারাও ওদের মতন হয়। তুমি আমি তা পারব না।"
মনে মনে বললাম, "সোমনাথদার কথাই ঠিক। আমাদের তো একটা রুচি বোধ আছে। বেহায়া বেশ্যা আমাদের পোষাবে না।"
গাড়ী যত এগিয়ে চলেছে, আমি যেন কেমন গুটিয়ে যাচ্ছি। চিন্তা গ্রাস করছে মনে। কি জানি বাবা, নিষিদ্ধ পল্লীর নিষিদ্ধ অভিযান কেমন হবে শেষ পর্যন্ত কে জানে?
সোমনাথদা মাল খেতে খেতে মজা করেই আমার টেনশনটা বাড়াচ্ছিল আরও বেশি করে। রসিকতা করে বলল, "শোন সুদীপ, তুমি হচ্ছো যে এখন একটা বেড়াল। এখন তোমার কপালে টাটকা মাছ জুটবে না পচা মাছ? সেটা তোমার কপালের ওপর নির্ভর করছে। অযথা টেনশন নিও না। আমি দেখছি তোমার ব্যাপারটা। টেক ইট ইজি। টেক ইট ইজি।"
পেট্রোল পাম্প এসে গেছে। সোমনাথদা ড্রাইভারকে ইশারা করল এবার বাঁদিকের রাস্তাটায় ঢুকতে। গাড়ী বাঁদিকের রাস্তায় ঢুকতেই সোমনাথদা এবার বলল, "ডানদিকে।"
ডানদিকে গাড়ী ঘুরতেই সোমনাথদা এবার ড্রাইভারকে বলে দাঁড় করালো গাড়ীটা। ব্যস ব্যস এখানেই।
গাড়ী দাঁড়িয়ে পড়েছে। আমি কাঁচ দিয়ে দেখলাম, ডানদিকে তিনতলা একটা সাদা রঙের বাড়ী। সামনের দিকে ঝোলানো দ্বোতলা আর তিনতলায় দুপাশে দুটো করে বারান্দা। একতলায় মাঝখানে সদোর দরজা। দরজার সামনে ছোট্ট একটা রক। বসে আছে দুটো ষন্ডা মার্কা লোক। পরণে লুঙ্গি আর শার্ট। দেখে অনেকটা পালোয়ান গোছের মনে হচ্ছে। সোমনাথদা গাড়ী থেকে নামতে নামতে বলল, "এই বাড়ীটীর নাম হচ্ছে নীলপুরী। এখানেই আমার রাখী থাকে। এসো খোঁজ করে দেখি তোমার জন্যও ভাল কিছু পাওয়া যায় কিনা?"
গাড়ী থেকে নামতেই ঐ পালোয়ান গোছের লোক দুটো এগিয়ে এল। সোমনাথদাকে ওরা ভাল করেই চেনে। দুজনে দুপাশ দিয়ে আমাদের ঘিরে ধরে বলল, "ক্যায়া বাবুসাব, ইতনা দিন কই খবর নেহী। আপনার রাখীকে কি আপনি ভুলে গিলেন? বহূত দিন পরে দেখলাম আপনাকে। তা বাবুসাব কিমন আছেন? নমস্কার সোমনাথবাবু।"
বুঝলাম এই পালোয়ান গোছের লোকগুলো আসলে দালাল। দেখলে একেবারে পিলে চমকে উঠবে। দু-দুটোর চেহারাই অনেকটা দানবের মত। সোমনাথদাকে দেখে ওরা আবার সেলাম ঠুকলো।
সোমনাথদা বাড়ীর সদোর দরজাটার সামনে দাঁড়িয়ে ওদের দুজনের মধ্যে একজনকে ডাকল, "এই চিন্না, ইধার আও।"
যে চিন্না সে এগিয়ে এল। সোমনাথদা পার্স বের করে একটা ১০০ টাকার নোট ওর হাতে দিয়ে বলল, "রাখীর ঘর ফাঁকা আছে?"
চিন্না ঘাড় নেড়ে বলল, "জী সাব।"
এবার সোমনাদা আমার সাথে আলাপ করালো ওকে। চিন্নাকে বলল, "এ মেরা দোস্ত হ্যায়। আচ্ছা চীজ হ্যায় অউর কোহী? মেরা এ দোস্ত কে লিয়ে?"
লোকটা আমার মুখের দিকে কিছুক্ষন তাকালো। তারপর কি যেন ভেবে ওর সাকরেদটাকে ডাকল। ওর নাম বীরজু। ওকে বলল, "যারা শুন যারা ইধার।"
বীরজু এগিয়ে এল। চিন্না আমার দিকে তাকিয়ে বীরজুকে উদ্দেশ্য করে বলল, "হামারা এ নয়া বাবুকে লিয়ে এক খুবসুরত লড়কী চাহিয়ে। উনকো থোড়া স্বপ্নপুরী মে লেকে চলা যা। আচ্ছা চীজ মিল যায়েগি উধার।"
সোমনাথদা ওকে বাধা দিয়ে বলল, "স্বপ্নপুরীতে ও একা যাবে না। আমিও যাব ওর সাথে। আজ প্রথমবার এসেছে ওর অসুবিধা হবে।"
চিন্না অবাক হয়ে সোমনাথদার দিকে তাকালো, বলল, "আপনি রাখীর ঘরে যাবেন না?"
সোমনাথদা বলল, "যায়েঙ্গে। পহেলে তুমদোনো দেখকে আও। উধার স্বপ্নপুরীমে কই খালি হ্যায় ইহা নেহী। তবতক হামদোনো রাখীকে ঘরমে থোড়ীদেরকে লিয়ে ইনতেজার করতে হ্যায়।"
দেখলাম বীরজু লোকটা চিন্নার কানে কানে কি বলল। তারপর ওরা দুজনে চলে গেল আমার জন্য সুন্দরী মালের খোঁজ করতে।
সোমনাথদা বলল, "তোমার জন্য নতুন মাছের খোঁজ করতে পাঠালাম। ততক্ষণ চলো আমরা রাখীর ঘরে গিয়ে বসি।"
এই বাড়ীটার নাম যদি হয়, নীলপুরী। তাহলে স্বপ্নপুরীটা কোথায়?
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
এটা Lekhak-র নতুন গল্প নাকি !!
•
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
(26-08-2020, 10:47 AM)Mr Fantastic Wrote: এটা Lekhak-র নতুন গল্প নাকি !!
না পুরাতন
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
।। দুই ।।
সোমনাথদা সিঁড়ি দিয়ে আমাকে নিয়ে দ্বোতলায় উঠতে উঠতে বলল, "এখানে এরকম অনেক পুরী আছে। নীলপুরী, স্বপ্নপুরী, রূপপুরী আরও অনেক। স্বপ্নপুরীতে বেশির ভাগ অবাঙালী বেশ্যার ভীড়টাই বেশি। কলকাতার বাইরে থেকেও অনেক সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে আসে এই রেড লাইট এরিয়ায় জীবিকা নির্বাহ করতে। যে যেরকম পছন্দ করে।"
একটু থেমে মুখ ঘুরিয়ে রহস্যময় গলায় বললো, "তোমার যদি ওখানে মনের মতন কাউকে জুটে যায়, তাহলে তো কথাই নেই। সুদীপ বসুকে তখন আর পায় কে? দেখ আবার, ভাল মাল পেলে আবার এই অধমকে ভুলে যেও না যেন!"
আমি সোমনাথদার কথা উড়িয়ে দিয়ে বললাম, "কি যে বলো সোমনাথদা? তুমি ভীষন রসিকতা করো। তোমাকে ছাড়া নিষিদ্ধ পল্লীতে পা রাখা? আমি জীবনে কোনদিন চেষ্টাই করতাম না।"
রাখীর ঘরটা দ্বোতলায় একদম সামনের দিকেই। সোমনাথদা বলল, "আসবার সময় বাইরের দিকে যে বারান্দা গুলো দেখলে, ওর মধ্যে একটা বারান্দা রাখীর ঘরের সাথে লাগোয়া। মাঝে মাঝে সন্ধে হলেই রাখী ওখানটায় দাঁড়িয়ে থাকে।"
দ্বোতলায় উঠে সোমনাথদা বলল, "লোকগুলো আমাকে কেমন সন্মান করে দেখলে? ওদের চেহারা দানবের মত হলেও ওরা আমার সঙ্গে কখনও অভদ্রতা করে না। টাকা পয়সা নিয়ে তো নয়ই।"
আমি সোমনাথদার পিছু পিছু যাচ্ছি। বাঁদিকে করিডর। দু পা এগিয়েই রাখীর ঘর। দরজার সামনে এসে সোমনাথদা বলল, "যার ঘরে ঢ়ুকছি, এও কিন্তু কোনকিছুতে কম যায় না। আমি সকালেই ওকে ফোন করে বলে দিয়েছি, আসছি আজ তোমার ওখানে। সাথে একটা আনাড়ী থাকবে। বোধহয় গায়ে এখনও অবধি কোন মাদী মাছি বসেনি। তোমার মত একটা সুন্দরী পিস ওর জন্য ফিট করে দিয়ে আজ আমরা সোনাগাছিতেই সারারাত কাটাব দুজনে। আমি হব তোমার চিটেগুড়ের মাছি। আর ওকে লেপ্টে দেব অন্য কারুর সঙ্গে।"
রাখীর ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বেল বাজাল সোমনাথদা। দরজা খুলল রাখীই। আমার যেন চিনতে অসুবিধে হল না। এ মেয়ে অবধারিত রাখী ছাড়া আর কেউ নয়।
রাখী আমাদের ঘরের ভেতরে অভ্যর্থনা করল। সোমনাথদা ওকে বলল, "আমার নতুন শিষ্য। যার কথা তোমাকে ফোনে বলছিলাম। একে এখন আমি তৈরী করছি। একেবারে নতুন তো।"
রাখী দরজা বন্ধ করে আমাকে বলল, "নমস্কার"। সোফা দেখিয়ে বলল, "বসুন এখানে আরাম করে।"
রাখীর কথা শুনে আমি বসলাম। সোমনাথদাও আমার পাশে বসল। রাখী বসল ঠিক আমাদের উল্টোদিকে। ওর চেহারা লক্ষ্য করলাম। প্রকৃত অর্থে বেশ সুন্দরী। রঙটা চাপা কিন্তু শরীরে একটা ঝলক আছে। চুলের খোঁপাটি বেশ বড়। মনে হয় ছড়িয়ে দিলে পাছা ছড়াবে। পরণে নীলচে সবুজ সিল্কের শাড়ী। গায়ে ম্যাচিং নীল ব্লাউজ। শাড়ীটা টেনে পড়ায় শরীরের রেখাগুলো বেশ উদ্ধত।। যৌন আবেদন আছে স্নিগ্ধতার মোড়কে।
কিছুক্ষণ তাকিয়ে মুখটা নামিয়ে নিলাম আমি। বেশি তাকালে গা শিরশির করবে। কারন আমি জানি এ ঘরে বেশিক্ষণ আমি আর থাকতে পারব না। আমাকে হয়তো নীলপুরী ছেড়ে ঐ স্বপ্নপুরীতে যেতে হবে আর কিছুক্ষনের মধ্যেই।
রাখী মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়েই ছিল। যেন ভাব জমানোর চেষ্টা করছে এখন থেকেই। আমার অস্বস্তি হচ্ছিল। চাপা উত্তেজনা বোধ করছি, কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারছি না।
সোমনাথদা বলল, "অত দূরে না বসে থেকে, কাছে এসে ওকে একটু সাহস জোগাও তো রাখী। রতিক্রিয়ায় একটু পরে সক্রিয় অংশ নেবে কারুর সাথে। অত ভেরুয়া হয়ে বসে থাকলে কি চলবে?"
রাখী সোমনাথদাকে বলল, "কার কাছে পাঠাচ্ছো ওকে? কেউ কি ঠিক হয়েছে?"
সোমনাথদা বলল, "চিন্না আর বীরজুকে পাঠিয়েছি খোঁজ করতে। ততক্ষণ তোমার এখানে একটু বসি। ওকেও তাই নিয়ে এলাম তোমার সাথে আলাপ করাতে।"
রাখী আমার দিকে তাকিয়ে সোমনাথদাকে বলল, "বেশ করেছো। তা আপনাকে তো বেশ জড়সড় দেখছি। ইচ্ছাটা আছে তো আপনার? নাকি অনীহা? সোমনাথদা জোড় করে নিয়ে এসেছে?"
একটু ঢোক গিলে বললাম, "আসলে তা নয়। আগে তো কোনদিন আসিনি, তাই....."
রাখী মাথা ঝাঁকিয়ে বললো, "জানি।" তারপর হেসে বলল, "প্রথম প্রথম একটু এরকম হয়। তারপর সব ঠিক হয়ে যায়। আপনাকে যে তুষ্ট করবে, সেই আপনাকে তার পূজারী করে নেবে। তাকে ছাড়া আপনি তখন চলতেই পারবেন না। মাঝে মাঝে তার মায়ায় আপনাকে তখন আসতে হবে এখানে। দেখছেন না আপনার সোমনাথদার কি অবস্থা হয়েছে এখন আমাকে পেয়ে।"
সোমনাথদা ফিক ফিক করে হাসছিল, আমার পাশে বসে বলল, "তাও তো আমি কতদিন বাদে এলাম রাখী। সেই কবে এসেছিলাম। আর এখন এলাম।"
আমার চোখে মুখে যেন আতঙ্কের ছাপ। রাখী বলল, "তোমার বন্ধু ঠিক সহজ হতে পারছে আমার কাছে। আমরা তো হাজার হোক প্রস্টিটিউট, তাই বোধহয় পছন্দ হচ্ছে না আমাকে।"
আমি একটু লজ্জা পেলাম। বললাম, "আসলে তা ঠিক নয়। আপনার কথা আমি সোমনাথদার মুখে অনেকবার শুনেছি। যার তারিফ শুনেছি, তার যদি আমার আচরণে কোন খারাপ লাগে তাহলে আমি খুবই দূঃখিত।"
আমার কথা শুনে, রাখী এবার উঠে এসে বসল আমার আর সোমনাথদার মাঝখানে। আমার পাশে বসেই সোমনাথদার গালে একটা চুমু খেল। আমাকে বলল, "আপনার এই দাদাটিকে আমি খুব পছন্দ করি। আপনার দাদাও পছন্দ করে আমাকে, তাই এখানে আসে। আর আপনি যখন তার সাথেই এসেছেন, তখন আপনাকেও পছন্দ না হওয়ার কোন কারন নেই। শুধু সাহসটা জোগাতে চাই আপনার মনে।"
সোমনাথদার অনুমতি নিয়ে আমার গালেও একটা চুমু খেল রাখী। দুহাতে আমার গালটা একটু টিপে দিয়ে বলল, "নিন, এবার আপনার জড়তা কেটে যাবে। আর কোন অসুবিধে হবে না।"
সোমনাথদা চেঁচিয়ে উঠে বলল, "ওফ পারি না। ধন্য হয়ে গেলে সুদীপ, ধন্য হলে। ব্রাভো ব্রাভো, আজ তোমাকে আর পায়ে কে?"
বিনোদন যেন একেই বলে। রাখি ভাগ্যিস আমাকে আর চুমু খায়েনি। নইলে সোমনাথদা আবার ভীমরী খেত। মেয়েটা দেখলাম বেশ ভাল। ঐ অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের অনেক খাতির যত্ন করল। আমি রাখীর কাস্টমার নই। আসল কাস্টমার সোমনাথদা। তাও মেয়েটার রুচী বোধ দেখে আমার বেশ ভাল লাগল।
এক হাত দিয়ে পাশ থেকে রাখীকে জড়িয়ে ধরেছে সোমনাথদা। নেশার ঘোরে রাখীর খোলা পিঠের ওপরে অল্প সল্প চুমু খাওয়ার চেষ্টা করছে সোমনাথদা।
আমার দিকে তাকিয়ে রাখী বলল, "শুনলাম আপনি নাকি বিয়ে করেন নি? কারনটা কি জানতে পারি? এ-যাবৎ কোন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক হয় নি কেন তাও তো বুঝতে পারছি না। কে কে আছেন আপনার বাড়ীতে?"
আমি বললাম, "বাড়ীতে মা ছাড়া আর কেউ নেই। অশান্তির ভয়ে বিয়ে করিনি। মায়ের কথা ভেবেই। আর মেয়েদের দিকে মুখ তুলে তাকাতেই পারিনি এতদিন। সম্পর্ক হবে কি করে?"
রাখী বলল, "বাঃ, বেশ তো এখন কথা বলছেন আমার সঙ্গে।"
আমি বললাম, "আগে আপনার সঙ্গে দেখা হলে হয়তো কোন সমস্যাই হত না। কোন নারীকে এত কাছ থেকে আমি কোনদিন দেখিনি। কারও সঙ্গে এত কথাও কোনদিন বলিনি।"
হঠাৎ রাখী আমাকে বলল, "আমাকে পছন্দ আপনার? কি মনে হচ্ছে সম্পর্ক পাতানো যাবে?"
ভীষন লজ্জায় পড়ে গেলাম। ওদিকে সোমনাথদা রাখীর পিঠে চুমু খেতে খেতে হঠাৎই মুখটা সরিয়ে নিয়েছে ওর ব্লাউজের ওপর থেকে।
সোমনাথদাকে দেখলাম একদম বিচলিত হয় নি রাখীর কথা শুনে। উল্টে আমাকে বলল, "আরে রাখী তোমাকে চাবুক করে দিচ্ছে। তুমি খুব ভাগ্যবান। যার ঘরে যাবে, সে এত সময় দেবে না তোমাকে রাখীর মতন। সবাই ঠিক ওর মতন নয়।"
সোমনাথদার কথাটাই ঠিক। মনে হল, এর সাথে শুতে না পারি, এমন একটা মেয়ে বন্ধু পেলেও মন্দ কিছু নেই। রাখীর ব্যবহার, আচার আচরণ সবই যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতন। মেয়েটার মধ্যে যেন আলাদা রকমের একটা জ্যোতি রয়েছে। খুব সহজেই লোকের সাথে মিশে যেতে পারে মেয়েটা। হয়তো পয়সার জন্যই এই জীবিকা বেছে নিয়েছে। নইলে বেশ্যা হলেও একেবারেই খারাপ নয় মেয়েটা।
রাখী এবার আমাদের দুজনকে ছেড়ে উঠে গেল কিছু খাবার দাবারের আয়োজন করতে। সোমনাথদা বাধা দিলেও ও শুনল না। বলল, "প্রথমবার তোমার বন্ধুকে নিয়ে এসেছ। কিছু অন্তত মুখে তুলে না দিলে আমিও ছাড়ব না।"
রাখীর আতিথেয়তায় সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আমাদের দুজনের জন্য দু বোতল চীলড্ বীয়ার নিয়ে এল রাখী। সাথে চানাচুর, বাদাম ভাজা আর চিকেন পকোরা। আমরা আসার আগেই গীতা মাসিকে দিয়ে এগুলো আনিয়েছে রাখী। গীতা মাসি সবার ঘরে ফাইফরমাস খেটে বেড়ায়। সোমনাথদাও ওকে ভাল করে চেনে। আমাদের সামনে বোতল দুটো রেখে আলমারী থেকে দুটো কারুকার্য করা কাঁচের গ্লাস এনে রাখল সোফার সামনে টেবিলটার ওপর।
রাখী বলল, "নিন, খান। আপনাদের জন্য ফিশ ফ্রাই আর চিকেন কাটলেট এরও অর্ডার দিয়েছি। এক্ষুনি গীতা মাসি ওগুলো নিয়ে আসবে। ততক্ষণ বাদাম আর পাকোড়া দিয়ে শুরু করুন।"
বলতে বলতে দরজায় টোকা, সম্ভবত গীতা মাসি এসেছে। রাখী দরজা খুলে খাবারের প্যাকেট টা নিয়ে ফিরে এল। আলমারী থেকে প্লেট এনে গরম গরম ফিশ ফ্রাই আর চিকেন কাটলেট সাজিয়ে দিল। নাকে সুখাদ্যের ঘ্রাণ পেলাম। সোমনাথদা ইতিমধ্যেই বীয়ারের ছিপি খুলে গ্লাসে ঢালতে শুরু করে দিয়েছে। আমার কেন জানি না রাখীকে যত দেখছিলাম, ততই অবাক হচ্ছিলাম।
সোনাগাছির এই বারবণিতাকে যত দেখছি, ততই যেন কেমন বিস্মিত আর বেমানান লাগছে। কোনরকম উগ্র কটাক্ষ্য, লাস্যময়ীর ভাব নেই। এত সুন্দর মেয়ে অথচ এই পরিবেশে এমন জীবিকার সাথে মানিয়ে আছে কি করে? সেটাই ভেবে অবাক হচ্ছি। সোমনাথদার চয়েসের সত্যি তারিফ না করে পারছি না। মনে হল একে যেন কেউ জোড় করে বন্দী করে রেখেছে এখানে। এর থাকার জায়গা সত্যি এটা নয়।
পাছে আবার বেশি দূর্বলতা এসে যায়, আমি মুখটা নিচু করে নিলাম। সোমনাথদা বলল, "রাখীর খুব বই পড়ার অভ্যাস আছে জানতো সুদীপ। সমরেশ বসু, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই পড়তে ও খুব ভালবাসে। আমি কলেজ স্ট্রীট পাড়ায় গিয়ে মাঝে মধ্যে নতুন বই কিনে এনে ওকে উপহার দিই। ও খুব খুশি হয়।"
দেখলাম, একটা আলমারীতে বেশ কিছু বইও রাখা রয়েছে ঐ সমস্ত লেখকের। আমার সত্যি খুব অবাক লাগল।
অন্ধকারের পৃথিবীতে আমি এক অচেনা মানবীকে দেখছি, আমার দূর্বলতার বদলে ওর প্রতি শ্রদ্ধাটাই যেন বাড়তে লাগল আরও বেশি করে।
রাখী একটু দুরে চলে যেতে সোমনাথদা বলল, "ওর অনেক দায়বদ্ধতা। মাসে কম করে দশ হাজার টাকা পাঠাতে হয় রাখীকে ওর মায়ের কাছে সংসার চালানোর জন্য। এই জীবিকা কি এমনি এমনি বেছেছে? কে দেবে ওকে এই টাকা? নিজেকে স্বেচ্ছায় বন্দী করে রাখতে কে চায়?"
আমার মনের ফ্রেমে রাখীর ছবিটা থেকে গেল। অমন সুন্দরী একজন মহিলাকে পেয়ে এখান থেকে কিছুতেই উঠতে ইচ্ছে করছে না। তবু আমাকে যেতে হবে। বীরজু আর চিন্না খোঁজ নিয়ে এলেই আমাদের এখান থেকে বেরোতে হবে।
সোমনাথদা একটু ঠেস মেরে বলল, "কি গো রাখী, এ যে দেখি তোমারই প্রেমে পড়ে গেল। তাহলে আমার কি হবে?"
রাখী চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে একটু দূরে। সোমনাথদাকে আস্বস্ত করে বললাম, "আমি যে ওনার প্রেমে পড়েছি, তুমি বুঝলে কি করে? ওনাকে যতটুকু দেখলাম, ততটুকু খুবই ভাল লাগল। যেন একটা আলাদা আসনে বসানো যায়। নিশ্চই ওনার কিছু দায়বদ্ধতা আছে, নইলে ওনার মত এত রুচিশীল মেয়ের এই জীবিকার সাথে মানায় না।"
বিশ্বাস হচ্ছিল না টাকার জন্য মেয়েটা একগাদা পুরুষের সঙ্গে যৌনসঙ্গম করে। বাজারী মেয়েমানুষ কখনও এমন হয় নাকি? একি সত্যিই শরীর দেয়, না শুধুই সঙ্গ করে পুরুষ মানুষের সঙ্গে। সোমনাথদা কি তাহলে শুধু গল্প করার জন্যই রাখীর কাছে আসে? তবে যে বলছিল বার দুয়েক শরীরি মিলন হয়েছে রাখীর সঙ্গে। সেটা কি সত্যি? না কি বানিয়ে বলা?
শারিরীক সম্পর্ক না হলে এমন ঠুনকো সম্পর্কের মানে কি? শরীরপাত নাই যদি হয়, তাহলে আবার গণিকাবৃত্তির মানে কি?
ধাঁধাটা ধাঁধাতেই থেকে গেল। রহস্যের উন্মোচন আর হল না। একটু পরেই বীরজু চলে এল ওপরে। দরজা খটখট করল। রাখীর ঘরে ঢুকে আমাদের দুজনকে বলল, "লাড়কী মিল গয়া বাবুসাব। বহূত আচ্ছা চীজ। আপ দোনো চলিয়ে। হাম লেকে যাতে হ্যায়।"
সোমনাথদা রাখীকে বলল, "রাখী আমি একটু পরেই আসছি আবার তোমার কাছে, আমার এই শিষ্যকে এবার সিদ্ধিলাভ করাতে হবে। অনেক তপস্যা করেছিল, তাই বোধহয় তোমার কাছে আসতে পারলো। একে শুভকামনা জানাও, যেন আমার মানটা শেষ পর্যন্ত রাখতে পারে।"
রাখী আমার দিকে তাকিয়ে হাসল। আমি রাখীকে বিদায় নমস্কার জানিয়ে বেরিয়ে এলাম ঘর থেকে। সোমনাথদার ওপর সত্যি তখন খুব রাগ হচ্ছিল। আমাকে এমন একজনের সাথে পরিচয় করালো যার সাথে আমার শরীরি মিলন কোনদিনই হবে না। মাঝখানে সোমনাথদা না থাকলে ব্যাপারটা অন্যরকম হত। আমি যদি সরাসরি কোনদিন চলে আসতাম রাখীর ঘরে? তাহলে.....
মনে মনে বললাম, "সোমনাথদা তুমি সত্যি খুব লাকি ম্যান। নইলে এ বয়সে এমন সখী জুটিয়েছ। তোমাকে দেখে হিংসে হচ্ছে। আজ তোমার কপাল ভাল। নইলে আমি হয়তো?....."
রাখীর ঘর থেকে বেরিয়ে আমি যেন কেমন অন্যরকম হতে লাগলাম। গাড়ীতে আসতে আসতে প্রথমে চারপেগ রাম তারপরে আবার বীয়ার খেয়েছি রাখীর ঘরে। পুরো ককটেল নেশা চড়েছে এবার মাথায়। নেশার ঘোরে উল্টোপাল্টা ভাবছি আর আপন মনে বকছি, আমি যেন আর আগের মতন নেই।
- "কি ভেবেছে সোমনাথদা? আমাকে নিজের পটানো মাল দেখিয়ে বাহবা নিতে চাইছে? আমি আনাড়ী বলে কি আমার কপালে রাখীর মতন কেউ জুটবে না? এবার আমিও দেখাব এই সবজান্তাটাকে। সুদীপ বসুও কোন কিছুতে কম যায় না। রাখীর থেকেও ভাল বেশ্যাকে নিয়ে শোব আজকে। বুড়োটার জন্য রাখী আমাকে প্রত্যাখান করল কেন? আমার মধ্যে কি কোন খামতি আছে? কি পাবে ও সোমনাথদার কাছে? যেন সোনাগাছির নিষিদ্ধ পল্লীতে নিজের বাদী করে রেখেছে সোমনাথদা এই রাখী বলে মেয়েটাকে।"
রাগটা আরও বাড়ল আমার যখন সোমনাথদা বলল, "অনেকদিন পরে আজকের রাত্রিটা আমার ভালই কাটবে সুদীপ, বুঝেছ? রাখীর সঙ্গ আবার অনেক দিন পরে পাচ্ছি। আমার আনন্দের শেষ নেই। শুধু তো ওর জন্যই আমার এখানে আসা।"
- "ন্যাকামির যেন শেষ নেই। মুখে শুধু রাখী রাখী আর রাখী। ও ছাড়া আর যেন কোন কথা নেই। থাকো তোমার পেয়ারের রাখীকে নিয়ে। আমিও অন্য রাখীকে জুটিয়ে নিচ্ছি এক্ষুনি!"
মানুষ যেন গিরগিটির মত রঙ পাল্টায়। মূহূর্তে আমার রঙটাও বদলে গেল নিমেষে। একটু আগে যে মেয়েটার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে তার প্রশংসা করছিলাম, এখন রাখীই হয়ে উঠল আমার দুচোখের বিদ্বেষ। সোমনাথদাকে বললাম, "অত সাদামাটা মেয়ে আমার পোষাবে না। আমি চাই উগ্র, সেক্সী, ভয়ঙ্করী। তবেই না জমবে খেলা।"
সোমনাথদাও অবাক হয়ে বলল, "তুমি ঠিক আছো তো সুদীপ? দেখো আবার শেষ পর্যন্ত কোন হতকুৎসিৎ বেশ্যাকে পছন্দ করে বোসো না। বীরজু আর চিন্না তোমার জন্য যা দেখেছে, ওটাকেই পছন্দ করে নিতে হবে। ওরা দালালি করে, জানে কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ।"
আমার কপালে শেষ পর্যন্ত যেটা জুটল তার ব্যাখ্যা খুব অল্প কথায় আমি বোঝাতে পারব না। তবে রাখীকে নিয়ে সোমনাথদার এত গর্ব আর এত অহংকার চূর্ণ করতে রীতিমত মন চেয়েছিল সেদিন। মনে হয়েছিল উপযুক্ত জবাব দেবার সুযোগ আমার কাছেও আছে। কে বলতে পারে ঐ স্বপ্ন পুরীতেই আমি এমন একজনকে পেয়ে যাব, যা ঐ নীলপুরীর রাখীর চেয়ে কিনা বহূ অংশে ভাল। সোমনাথদা যদি পছন্দের নারীকে বেছে নিতে কোন ভুল না করে, তাহলে আমি কেন পারব না? আমার কপালেও জুটবে নিশ্চয় কোন দ্বিতীয় রাখী।
মানুষ কি চায় আর কি পায়। জীবনটা কখনও কখনও রোশনাই এর আলোতে জ্বলে ওঠে। আবার দপ করে নিভেও যায়। মানুষ কখনও হয় রাজা আবার কখনও হয় ভিখারী। ওঠা নামার জীবন। আলো থেকে অন্ধকার। কিন্তু আবার পুনরায় আলোয় ফেরা? সেও কি সম্ভব এই নিষিদ্ধ পল্লীকে ঘিরেই? আমার জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে থাকবে সোনাগাছি, তখনও বুঝিনি। হঠাৎ ই আমার জীবনে কিছু একটা ঘটতে চলেছে যা আমি, তখনও জানি না। কি ঘটল এবার? তাহলে এখন দেখাই যাক।
নীলপুরী থেকে বেরিয়ে দুটো তিনটে বাড়ীর পরেই স্বপ্নপুরী। আমার স্বপ্নের বারবণিতাকে পাব এখানে। দূঃখ ভুলে নিজের মধ্যে এবার একটু জোশ আনার চেষ্টা করছি। পা দুটো একটু মাঝে মাঝে টলে যাচ্ছিল। সোমনাথদা আমার পাশে যেতে যেতেই আমাকে বলল, "তুমি ঠিক আছ তো সুদীপ? কোন অসুবিধা হচ্ছে না তো?"
একটু বিরক্তির স্বরেই সোমনাথদাকে বললাম, "ঠিক আছে ঠিক আছে। অত দরদ দেখাতে হবে না। পারো যদি এখনই চলে যাও তোমার পেয়ারের রাখীর কাছে। যাও যাও, ও তো অপেক্ষা করছে তোমার জন্য। শুধু শুধু এলে তুমি। ঐ তো বীরজু রয়েছে আমার সঙ্গে। ও ঠিক পৌঁছে দেবে আমাকে খুবসুরত চীজের কাছে।"
সোমনাথদা বুঝতেই পারছিল, আমার নেশাটা হঠাৎই বেড়ে গেছে এবার। রাখীর জন্য মনে মনে একটু ক্ষোভও জন্মেছে বোধহয় মনে। হঠাৎই কোন না কোন একটা কান্ড বাধিয়ে বসি। আমার জন্য সোমনাথদা তাহলে একেবারই অস্বস্তিতে পড়ে যাবে।
আমার মন রাখার জন্য রাখীর কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে সোমনাথদা বলল, "আরে দূর, তুমিও পড়ে আছ এখনও রাখীকে নিয়ে। আমার কপালে কি রাখী ছাড়া আর কেউ জুটবে না? দেখ আমিও তোমার মত জুটিয়ে নিচ্ছি নতুন কাউকে। এই স্বপ্নপুরীতেই পেয়ে যাব বোধহয়।"
স্বপ্নপুরীতে সিঁড়ি দিয়ে দ্বোতলায় উঠছি। এই বাড়ীটাও অনেকটা ঠিক আগেরটার মতন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার মুখে দেখলাম, সিঁড়ির একপাশে দাঁড়িয়ে একটা মাঝবয়সী লোক একটা বেশ্যাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাচ্ছে ঠোঁটে। সোহাগের কি রঙ। মেয়েটা লিপস্টিক মাখানো ঠোঁট দিয়ে রাঙিয়ে দিচ্ছে লোকটার ঠোঁট দুটোকে। পরণে শুধু শায়া আর ব্লাউজ। বুকের খাঁজের নির্লজ্জ প্রদর্শন। বীরজু বেশ্যাটার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলল, "ইসকো ঘর মে লেকে জানা। ইধর খড়ে খড়ে ক্যায়া কর রহা হ্যায়?"
বেশ্যাটাও টিপ্পনি কেটে ওকে বলল, "তেরে কো ক্যায়া? তু আপনা কাম কর্।"
আমি ঐ দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছি। সোমনাথদা পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে বলল, "আরে চলো চলো। তোমারটা ওপরে আছে। এটা নয়।"
ঠেলা খেয়ে চলে এলাম দ্বোতলায়। সেই লম্বা করিডর। দুপাশে সারি সারি নিষিদ্ধ রানীদের ঘর। ঘরের সামনে তিন চারজন রাতপরী দাঁড়িয়ে আছে কোন নতুন খদ্দের পাবার আশায়। কেউ বক্ষ প্রদর্শন করছে, কেউ আবার ছুঁড়ে দিচ্ছে ফ্লাইং কিস, কেউ আপন মনে সিগারেট টেনে যাচ্ছে একনাগাড়ে। আমি নেশার ঘোরে ভুলে একজনের কাছে চলে যাওয়াতে সে প্রায় জোড় করেই ঢুকিয়ে নিচ্ছিল আমাকে তার নিজের ঘরে। সঙ্গে সঙ্গে বীরজু ধমক লাগালো তাকে। আমাকে প্রায় ছিনিয়ে নিল বেশ্যাটার কাছ থেকে।
থতমত খেয়ে গেছি আমিও। সোমনাথদা বলল, "কি করছ বলো তো সুদীপ? একটু ধৈর্য ধরো। অত তাড়াহূড়ো কোরো না। বীরজু ঠিক নিয়ে যাবে।"
কার কাছে যে আমাকে নিয়ে যাচ্ছে আমি জানি না। মদের ঘোরে আমার তখন সব বেশ্যাগুলোকই এক রকম লাগছে।
আমি যার ঘরে আর একটু হলে ঢুকে পড়তে যাচ্ছিলাম, সেই বেশ্যাটা পেছন থেকে এবার গালাগালি দিতে লাগল বীরজুকে আর আমাদেরকে। চেঁচিয়ে বলল, "আরে মেরে য্যায়সা মিলেগি নেহী ইধর। কি গো বাবু, আমাকে পছন্দ হলো না? কার কাছে যাবে গো তোমরা? ট্যাঁকে জোড় আছে তো? শালা ঢং দেখা ইসকা। নখরা করতা হ্যায়।"
সন্ধে হয়ে রাত যত বাড়বে, এদের দাপটও তত বাড়বে সাথে সাথে। বীরজু লোকটা খুব ভাল। আমাকে আর সোমনাথদাকে বলল, "এসব বেকার চীজ হ্যায়। আসলি তো হ্যায় কামিনী। উসকো দেখেঙ্গে তো দিল খুশ হো জায়েগা।"
কামিনী নামটা শুনে, সোমনাথদা আর আমি পরষ্পর মুখ চাওয়া চাওয়ি করলাম। বুঝলাম এই কামিনীই তারমানে আজ রাতে আমার উৎকৃষ্ট যৌনসঙ্গী হতে যাচ্ছে।
কোন এক লেখকের লেখায় পড়েছিলাম, তিনি লিখেছেন, "তোমার স্নায়ুশিরা যখন লালসায় চঞ্চল হয়ে পড়বে, তখন পতিতালয়ের ওপরই তুমি বিশ্বাস রাখবে। যেখানে মেয়েরা তোমাকে সুখ দেবার জন্য অপেক্ষা করছে।"
- "কামিনী আজ আমাকে নিষিদ্ধ সুখ দেবে। উফফফফ আমি যেন কত ভাগ্যবান!"
একটু আগে রাখীর ঘরে যখন বসেছিলাম, তখন আমার মধ্যে একটা জড়তা ছিল। এখন সেটা নেই। পেটে মাল পরে যেন তেজ বেড়ে গেছে। আমার মধ্যে একটা পরিবর্তন এসেছে। নিষিদ্ধ পল্লীর নিষিদ্ধ ছোঁয়া লেগে মার্কেটিং এর কাজ করা সুদীপ বসু যেন আর আগের আর মত নেই।
নিজেকে আয়নায় দেখলে হয়তো চিন্তে পারতাম না। চোখ দুটো মদ খেলে লাল হয়ে গেছে আমার। কথা বলতে গিয়ে আটকে যাচ্ছে জিভ। অথচ তখন আমি এক যৌনসুখের নেশায় টগবগ করে ফুটছি। ঐ রাখী মেয়েটাই আমাকে শক্তি জুগিয়ে দিয়েছে। চুম্বনের এত শক্তি আমি আগে জানতাম না।
সোমনাথদাকে একটু ঠেস মেরে বললাম, "জানি তুমি এ বয়সেও কামক্রীড়ায় অসীম বলবান। কিন্তু বিছানার খেলা খেলতে আমিও পারি। বলে দিও তোমার ঐ পেয়ারের রাখীকে। আর সেইসাথে ওকে আমার হয়ে ধন্যবাদটাও দিয়ে দিও, আমার গালে কিস টা করার জন্য।"
সোমনাথদা এতক্ষণ বাদে বলল, "বুঝেছি তোমার রাগ হয়েছে সুদীপ। আই অ্যাম ভেরী সরি। চলো তোমাকে রাখীর কাছেই আবার নিয়ে যাই আমি। কামিনীর কাছে যেতে হবে না তোমাকে।"
একটু হকচকিয়ে বীরজুও দাঁড়িয়ে পড়ল মাঝপথে। সোমনাথদা আমার হাত ধরে তখন টানাটানি করছে। হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম, "থাক। কোন সহানুভূতির দরকার নেই। আমার কাউকে দরকার নেই। আই অ্যাম ওকে। আমি রাখীর কাছে যাব না। আমি কামিনীর কাছেই যাব।"
একটা ঘরের সামনে এসে আমাদের দুজনের দিকে ঘুরে তাকাল বীরজু। বলল, "এসে গেছি বাবুসাব। ইধার আইয়ে, কামিনী ব্যাইঠা হ্যায় ইয়াহাঁ। দেখ লিজিয়ে।"
একটা বেশ বড় ঘর। অনেকগুলো লোকের একসাথে বসার আয়োজন রয়েছে সেখানে। একাধিক হেলান দেওয়া সোফা। বসে আছে দুজন হোমরা চোমরা মার্কা লোক। নিষিদ্ধ পল্লীর নিষিদ্ধ আনন্দে ডুবতে এসেছে এরাও। আমাদেরকেও ওদের পাশে বসতে অনুরোধ করা হল। একজন রোগা মতন লোক আমাদের বসতে বলল। উল্টোদিকে বসে আছে তিনজন অতি আকর্ষনীয়া দেহপসারিনী। ওরা দুজন লোক মেয়ে তিনটিকে ভাল করে দেখছিল। মেয়েগুলোও সব তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। একজন তাদের মধ্যে একটু অন্যরকম। আমি আর সোমনাথদা দুজনেই ওকে দেখলাম। ঐ অবস্থায় বুঝতে অসুবিধা হল না এর মধ্যে কামিনী কে?
বীরজু, রোগা লোকটাকে কি যেন ইশারা করল। রোগা লোকটা ঘাড় নেড়ে বলল, "ঠিক আছে।" তারপর বীরজু সোমনাথদারও কানে কানে কি যেন বলে আবার চলে গেল।
আমি ঢুলু ঢুলু চোখে ওদের তিনজনের মধ্যে কামিনীকেই ভাল করে দেখার চেষ্টা করছি। চোখের সামনে একি দেখছি আমি। যেন এক তপ্ত যৌবন ভরা দেহ। এমন সৌন্দর্য তো কোন মুনিঋষির ব্রহ্মচর্যকেও জ্বালিয়ে দিতে পারে। ওর কাছে আমি যেন নিতান্তই শিশু, খেলনার মতন। যত আমি তাকিয়ে থাকব, বশীভুত হয়ে যাব। কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারব না।
পাশে বসে সোমনাথদা ফোড়ন কেটে আমার কানের কাছে মুখটা নিয়ে এসে আসতে আসতে বলল, "কি গো, কেমন দেখছ? তুমি তো নাক সিটকোচ্ছিলে এখানকার নাম শুনে। এখন কেমন? তুমি যাকে মুগ্ধ হয়ে দেখছ, আমিও তাকে দেখছি। এখন বলো, কে যাবে ওর কাছে? আমি না তুমি?"
হাতের কাছে এমন খাসা মাল পেয়েও নির্বুদ্ধিতায় তাকে হাতছাড়া করব এমন বোকা আমি আর নই। রাগ দেখিয়ে সোমনাথদাকে বললাম, "কেন, আর বুঝি রাখীকে তোমার মনে পড়ছে না? এটাকেই নিয়ে শুতে হবে? যাও না রাখী কাছে আবার। তোমার তো সঙ্গিনীর এখানে অভাব নেই।"
এক ঝলক কামিনীকে দেখেই বুঝলাম এই নিষিদ্ধ পল্লীতে যেন ওর মত আর দ্বিতীয়টি কেউ নেই। বাকীরা চারপাশে যারা ঘুরছে সবই সাদামাটা। কেউই পাতে দেবার মত নয়। এবার হয়তো সোমনাথদা এই মেয়েটিকেও গলায় ঝুলিয়ে আমাকে শেষ পর্যন্ত উপোস করে মারবে। সেক্সের মজা না পেয়ে আমাকে হয়তো খালি হাতেই ফিরে যেতে হবে এই নিষিদ্ধ পল্লী থেকে। রাখী, কামিনী সবই কি সোমনাথদার কপালেই জুটবে? আমার ভাগ্যে কিছুই নয়?
মেয়েটির জন্য সোমনাথদার পায়ে পড়ে ভিক্ষা প্রার্থনা করতে ইচ্ছা করছিল। মনে মনে বললাম, "প্লীজ, প্লীজ, একে তুমি ছেড়ে দাও সোমনাথদা। এখানে আসার আনন্দটাই নইলে মাটি হয়ে যাবে।"
মেয়েটি একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছে আমার দিকে। কি লাস্যময়ী। চোখের চাউনি ইতিমধ্যেই বশীভূত করে ফেলেছে আমাকে। সন্মোহনী শক্তি আমাকে যেন ঘায়েল করে দিচ্ছে। পাশের লোকদুটোর দিকে না তাকিয়ে ও আমার দিকেই বেশি করে তাকাচ্ছিল। মাথা খারাপ হবার জোগাড়। বশীভূত আমি আগেই হয়ে গেছি, এবার গায়ের লোমগুলোও সব খাঁড়া হতে লাগল এক একটা করে। দেখলাম ও একটা দামী সিগারেট ধরিয়েছে মুখে। জ্বলন্ত সিগারেটটা লিপস্টিক মাখা পুরু ঠোঁটের মধ্যে ধরে এমন সুখটান দিচ্ছে যা দেখে শিরশিরানি অনুভূতিতে একেবারে পিলে চমকে উঠতে হয়।
সোমনাথদা পাশ থেকে বলল, "মেয়েটাকে ভাল করে দেখছ তো সুদীপ? ভাল করে ওর শরীরটাকে দেখো।"
অনেকটা রাখীর মতই নীল রঙের একটা হাতকাটা ব্লাউজ আর ম্যাচিং করানো নীল রঙের শাড়ী পড়েছে মেয়েটা। শরীরের উপরিভাগে দুটি সুগঠিত বৃহৎ আকারের স্তন। পুরুষের যৌনকামনাকে চাগিয়ে তুলতে এমন অহংকারী স্তনই মোক্ষম কাজ করে। আমার চোখ দুটোকে ভালভাবেই টানছিল। কয়েক মূহূর্ত চোখদুটো আটকে রইল ওর ভরাট বুকদুটোর ওপরে। আমাকে দেখানোর জন্য শাড়ীর আঁচলটা সরিয়ে দিল মেয়েটা। গর্বিত বুকের গভীর খাঁজ ছটফট করে তুলছে অশান্ত মনকে। ঠিক যেন চুম্বকের তীব্র আকর্ষন।
শরীর ঘাঁটার লোভে কেন মানুষ সোনাগাছিতে আসে, এবার বুঝতে পারছি। লোভকে তখন আমিও সামলাতে পারছি না। দেখলাম ও দুটো স্তন তো নয় যেন দুটি ঠাসা বুক। বুকের ঢেউটা নিমেষের মধ্যে আরও প্রকট হয়ে গেল যখন মেয়েটা শাড়ীর আঁচলটা সরিয়ে ফেলল বুকের ওপর থেকে। খাঁজটা যেন শরীরের রক্ত গরম করে দেবার মতন। বুঝলাম শালীনতাবোধ এখানে দেখানোর কোন দরকার নেই। যেখানে এসেছি, সেখানে সবাই এসে নিয়ন্ত্রণ হারায়।
এমন বুকের ঔদ্ধত্য দেখলে এ মেয়েকে যে কেউ বুক করে নেবে আগাম টাকা দিয়ে। নিজেকে উৎসর্গ করবে ঐ অপার যৌবনে। সোমনাথদার পাল্লায় পড়ে সেক্স চরিতার্থ আর ফুর্তি লুটতে এসেছি বেশ্যাখানায়। এমন জম্পেশ হবে ব্যাপারটা আশা করিনি। আমি ক্রমশ মোহিত হয়ে দেখতে লাগলাম, মেয়েটার কি চোখ ধাঁধানো সেক্স। সোনাগাছির বারবণিতাকে দেখে যে এমন মাথা ঘুরে যাবে, ভাবতেই পারিনি।
সোমনাথদা বুঝতেই পারছিল আমি চোখ দিয়ে পুরো গিলছি কামিনীকে। আপন মনেই বলল, "এই হচ্ছে শালা নারীর জাদু শক্তি! শরীরি মায়ায় যে কোন পুরুষকে কত সহজে ঘায়েল করে দিতে পারে এরা। নাও এবার গলায় লটকে যাও। আর দেরী কেন?"
আমি যে এখানে এসে এর দিওয়ানা বনে যাব আগে জানতাম না। বোধহয় মাথাটা খারাপ হবার অপেক্ষায় ছিল। চোখের দেখা দেখতে পেলেই আগুন জ্বলতে শুরু করবে শরীরে আর জল গড়াতে শুরু করবে জিভ দিয়ে। আমার তো তেমনটাই এখন হচ্ছে।
সোমনাথদা আমাকে বলল, "বীরজু আমাকে বলে গেছে, এই চত্তরে এর মত চোখটাটানো বেশ্যা আর নাকি দ্বিতীয়টি নেই। খদ্দের রা সবাই এসে আগে এর খোঁজ করে। কপাল ভাল থাকলে জুটল, নইলে বাকীদের সাথে ঐ সাদামাটা।"
আমি সোমনাথদাকে বললাম, "ওর রেটটা এইজন্যই বুঝি বেশি? এত ঢেউ খেলানো যার শরীর। কম টাকায় হাতে পাওয়া বড়ই কঠিন। একবার জিজ্ঞেস করে দেখই না কত চায়?"
সোমনাথ বলল, "ও দরদাম করবে পরে। আগে খদ্দেরকে দেখে পছন্দ করবে। যাচাই করে নেবে ওর মন পসন্দ কিনা? তারপর করবে দরাদরি। যাকে তাকে নিজের ঘরে ও ঢোকায় না। তোমার কপাল ভাল মেয়েটা তোমাকে দেখছে।"
আমাকে একটু উস্কানি দিয়ে সোমনাথদা বলল, "আজ সত্যি তোমার পয়া দিন সুদীপ। দেখ কেমন একদৃষ্টে তোমাকে ওর মায়াবী চাউনি দিয়ে দেখছে। একটু পরেই তোমাকে ইশারা করে ডাকবে। মনে হচ্ছে পছন্দ হয়েছে তোমাকে। মনে যখন ধরেছে তখন কেল্লা এবার ফতে।"
ট্রেন্ড যৌন-কর্মীরা নাকি এমনটাই হয়। শরীরের প্রতিটি রোমকূপকে ওরা ব্যবহার করতে পারে যৌন-সুখ প্রদানের জন্য। একেবারে পোড় খাওয়া গণিকারা যেমন হয়, সেভাবেই ও ঝড় তুলতে লাগল আমার শরীরে। মদের নেশার সাথে শরীরি নেশাটাও জাঁকিয়ে বসেছে মনে। সোমনাথদাকে বললাম, "এ তো একেবারে দুর্লভ বস্তু গো। কোথায় ছিল এতদিন? আগে তো দেখিইনি কোনদিন এমন। আমাকে দেখছে অনেকক্ষন ধরে। মনে হচ্ছে মনে ধরেছে এবার।"
সোমনাথদাও বলল, "ঠিকই ধরেছ তুমি। এবার ও তোমাকে ডাকবে। দরাদরি যা করার এবার করে নাও।"
দেহ পসারিনী তার খদ্দেরকে বাজিয়ে দেখে নিচ্ছে শোবার উপযুক্ত কিনা? তারপর তাকে নিজের শরীর বেচবে, বেশ্যাখানায় যে এমনটা হয়, আগে কখনও শুনিনি। পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে পাশ করে গেছি, আমার বেশ আনন্দ হচ্ছিল।
স্বপ্নপুরীতে এই নাকি সবচেয়ে দামী বেশ্যা। অনেক স্বনামধন্য ব্যাক্তিরা ওর সাথে রাত কাটাতে আসে এখানে। সেদিক থেকে আমি খুবই লাকি ম্যান। এবার আমার পুরুষালি ক্ষমতাটা ওকে দেখিয়ে দিতে হবে। সোমনাথদা বলল, "এবার আর দেরী কোরো না সুদীপ, ফাক হার ইমিজিয়েটলি, নইলে অন্য কাউকে ও ঘরে ঢুকিয়ে নেবে।"
কিন্তু কামিনী আমাকে ইশারা না করলে আমি যাব কেমন করে? ও তো এখনও আমাকে ডাকেনি।
আমাকে ধমক দিয়ে সোমনাথদা বলল, "আস্ত গবেট তুমি একটা। এতোক্ষণ ধরে তোমাকে দেখছে, সেটাই কি যথেষ্ট নয়? যাও যাও শীগগীর এগিয়ে যাও। নইলে পাখী পালিয়ে যাবে।"
যেমন বলা তেমন কাজ। সোমনাথদার তাড়া খেয়ে আমি কামিনীর দিকে এগোতে যাচ্ছিলাম সোফা ছেড়ে। দেখলাম আমার দিকে তাকিয়ে এবার মুচকী মুচকী হাসছে কামিনী। রোগা প্যাটকা লোকটা এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল চুপচাপ, সে হঠাৎ এগিয়ে এসে আমাকে বলল, "আপনি বসুন। আমি নিয়ে যাব আপনাকে ওর ঘরে।"
কামিনী উঠে দাঁড়িয়ে কোমরটা দোলাতে দোলাতে আমাদের পাশ দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। চোখে সেই মায়াবী চাউনি। চোখ দুটো বড় বড় করে তাকানোটাই কেমন যেন অন্যরকম। বুঝলাম, তারমানে আমাকে সন্মতি জানিয়ে গেল। এবার আমাকে ঢুকতে হবে শয়নকক্ষে। ওফ কি যে হবে আজকের রাতটা ভাবতেই পারছি না।
সোমনাথদা পাশে বসে গালে হাত দিয়ে বলল, "আমার কি হবে সুদীপ? ও তো তোমায় পছন্দ করেছে, আমায় তো করেনি।"
রাগটা মনের মধ্যে রয়েছে, তবু বললাম, রসিকতা তো ভালই জানো তুমি। ওদিকে রাখীকে বলে এসেছ, "আমি আসছি একটু পরেই, আর এখানে এসে ঢং করছ? যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানো না। একটা কে যখন বাঁদী করে রেখেছ, তখন ওটাকেই সামলাও না। আবার পরের দেখে হিংসে কেন?"
আমার হঠাৎই কামসুখের প্রবৃত্তি তৈরী হয়েছে, ভোগের ইচ্ছাও বেড়েছে। সোমনাথদা এই প্রথম বুঝল, নিমেষে কেমন ভোল পাল্টে ফেলেছে ছেলেটা। একেবারে রসালো মাছ জুটেছে কপালে। বিড়াল এখন খাবার জন্য পুরোপুরি তৈরী।
কামিনীর এক রাতের দর হল পাঁচ হাজার টাকা। সোমনাথদা বলল, "ওর প্রচন্ড হাই রেট। তোমার কাছে টাকা আছে তো? আমি তিন হাজার টাকা পর্যন্ত তোমাকে দিতে পারি। তাই বলছিলাম....."
খালি হাতে বেশ্যপট্টিতে কেউ আসে না। আমিও আসিনি। সোমনাথদাকে বললাম, "তুমিই আমার জেদটা বাড়িয়ে দিলে সোমনাথদা। এই তো সব এখানকার ছিরি। যাও বা একটাকে মনে ধরল, টাকার জন্য পিছিয়ে যাব? সুদীপ বসু আজ লুটিয়ে দেবে পয়সা। তোমাকে এই নিয়ে একদম চিন্তা করতে হবে না।"
জীবনটা এখন নারীর নিষিদ্ধ সান্নিধ্যে প্রবেশ করতে চলেছে। কে কাকে জিতে নিল, যেন এই খেলা চলছে। আমার নেশার ঘোরে মনে হল, কামিনীকে জিতে নিয়েছি আমি। সোমনাথদাকে এবার উপযুক্ত জবাব আমি দিতে পেরেছি।
যার হাত ধরে এলাম, তাকেই অবজ্ঞা করে আমি গটগট করে হাঁটতে লাগলাম ঐ রোগা লোকটার পিছু পিছু। ও আমাকে কামিনীর ঘরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেন কামিনীর ঐ কটাক্ষ চাউনি আর পাগল করা শরীরটা আমাকে তখন টানছে। সোমনাথদাকে আমি ঘুরেও লক্ষ্য করলাম না ও কোথায় রয়েছে। আমাকে শুধু পেছন থেকে একবার বলল, "কাল সকালে কিন্তু একসাথে ফিরব সুদীপ। গাড়ী এখন এখানেই রয়েছে।"
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
।। তিন ।।
কামিনীর মধ্যে আমি কি দেখেছিলাম জানি না। তবে সোমনাথদার মতন এমন মিশুকে লোককে আমি যে ভুল বুঝলাম শুধু মাত্র ঐ রাখীর জন্যই, এটা আমাকে বড্ড বেদনা দিয়েছিল পরবর্ত্তী কালে। নিষিদ্ধ পল্লীতে বেশ্যার সাথে রাত কাটাতে আসা মানুষ যে ও রকম হতে পারে আমার ধারনা ছিল না। এক লাস্যময়ী বেশ্যাকে পেয়ে আমার মনে হল, এখন আমার আর কাউকে দরকার নেই। সেরকম হলে আমি কাল সকালে একাই চলে যেতে পারব। হ্যাঁ এখন আমার সোমনাথদাকেও দরকার নেই।
আমি কামিনীর ঘরের সামনে এলাম। রোগা লোকটা আমাকে বলল, "মেরা বকশিশ বাবু?"
ওকে দুশো টাকা বার করে দিলাম। গরমে তখন টাকাও আমার দেদারে বেরোচ্ছে। লোকটা সেলাম ঠুকে চলে গেল। আমি কামিনীর ঘরের দরজাটা আলতো করে ঠেলা দিলাম। দরজাটা খুলে গেল।
ভেতরে চওড়া বুক নিয়ে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে কামিনী। শরীর দিয়ে যেন তখনও আগুনের হলকা বেরোচ্ছে। হলফ করে বলতে পারি এই দাউ দাউ আগুনে পুড়ে মরবার জন্যই সবাই এ ঘরে আসে। আমার মনে হল মেয়েমানুষের প্রথম ছ্যাঁকা লাগতে চলেছে শরীরে, তাও আবার এরকম একটা লাস্যময়ী বেশ্যার। আমি কি পুড়ে ছাই হব? না আগুনে ছটফট করে মরব আজকের রাতটা।
কামিনী চোখ ঝলসানো শরীরটা নিয়ে আর একটু এগিয়ে এল আমার দিকে। আমার পাশে দাঁড়িয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিল ভেতর থেকে। দেখলাম নিজের ঠোঁটটাকে নিজের দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে গা গরম করা চাউনি দিয়ে আমার শরীরের ভেতরটা কেমন চূড়মাড় করে দিচ্ছে। আমাকে বলল, "এই প্রথম আসছ মনে হচ্ছে বেশ্যাখানায়। তোমার বউ বুঝি পালিয়ে গেছে তোমায় ছেড়ে?"
আমি কি জবাব দেব বুঝতে পারছি না। ভাবলাম, এখানে কি বিবাহিতরাই তাহলে বেশি আসে? আমি তো বিবাহিত নই, তাহলে ও আমাকে এরকম জিজ্ঞেস করল কেন?
বললাম, "না আমি তো বিয়ে করিনি। এখনও অবিবাহিতই আছি।"
আমার আর একটু কাছে এগিয়ে এল কামিনী, বলল, "আর তোমার সাথে যে বুড়ো লোকটাকে দেখলাম? ও কি তাই?"
আমি বললাম, "ঐ লোকটা আমার বন্ধু হয়। উনিও বিয়ে করেন নি।"
আমার কথা শুনে এমন গায়ের লোমখাঁড়া করে দেওয়ার হাসি দিল কামিনী, যে আমি শুধু হাঁ করে চেয়ে রইলাম ওর দিকে। হাসতে হাসতে বলল, "ঐ বুড়ো লোকটা তোমার বন্ধু? তা তুমি তো চলে এলে এখানে। আর তোমার ঐ বুড়ো বন্ধুর এখন কি হবে?"
আমি বললাম, "ও রাখীর ঘরে যাবে একটু পরে।"
কামিনী এগিয়ে এসে আমার শরীরে একটু স্পর্ষ দিয়ে আমার ঠোঁটের কাছে ঠোঁটটা নিয়ে এসে বলল, "কে রাখী গো?"
একেবারে ঠোঁটের কাছে ওর উষ্ণ নিশ্বাস পড়ছে। আসতে আসতে ওর চাবুক বুকটা আমার বুকের সাথে ঠেকে যাচ্ছে। শরীরের রক্তটা উত্তাল হয়ে যাবার জোগাড়। আমাকে প্রায় দুহাতে জড়িয়ে নিল কামিনী। ঠোঁটের নীচে ঠোঁটটা রেখে বলল, "রাখী আমার থেকেও ভাল?"
বুকের ছোঁয়া আর ঠোঁট দুটোকে কাছে নিয়ে এসে এমন যৌন আবেদন, মনে হল আমি কার দ্বারস্থ হয়েছি আজকে? এতো রাখীকে অনায়াসেই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবে। ঝলসানো শরীরটা দিয়ে আমাকে একেবারে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে কামিনী বলল, "কি হলো, বললে না?"
কোমরটা দুহাতে জড়িয়ে ধরে আমার বুকে একটু মাথা রাখার চেষ্টা করছিল কামিনী। ওকে বললাম, "না না, রাখী তোমার মত নয়। ও তো সোমনাথদার পরিচিত, সোমনাথদা ওর ঘরে প্রায়শই যায়। আজ তাই ওখানেই যাবে। আমাকে ছেড়ে দিয়ে গেল এখানে।"
আমার বুক থেকে মাথা তুলল কামিনী। আমাকে বলল, "এই প্রথম এসেছ বুঝি আজকে? এবার থেকে আসবে তো আমার জন্য?"
আবার ওর ঠোঁটটা নিয়ে এসেছে আমার ঠোঁটের খুব কাছে। বলল, "কি আসবে তো বলো?"
আমার মুখের মধ্যে থেকে লিকারের গন্ধ বেরোচ্ছে। কামিনী বলল, "মদ খেয়েছ বুঝি? কেন আমার এখানেই তো খেতে পারতে?"
কি বলব বুঝতে পারছি না। আমতা আমতা করে বললাম, "না ঐ রাখীর ঘরে খেয়েছি। আর গাড়ীতে আসতে আসতে খেয়েছি অনেকটা।"
কামিনী আমার গালে ওর আঙুলগুলো দিয়ে একটু সুড়সুড়ি দিল। বলল, "আর কোথাও খাবে না বুঝেছ? এবার থেকে শুধু আমার এখানেই।"
মদের থেকেও মেয়েমানুষের শরীর যে পুরুষমানুষকে বেশী কাঁপন ধরাতে পারে, তার নমুনা এবার চোখের সামনেই দেখাতে শুরু করল কামিনী। ও এবার রক্তে আগুন ঝরানো শরীরটাকে উন্মুক্ত করতে শুরু করল আমার সামনে। শাড়ী খোলার পরে ওর অস্বাভাবিক বুকের খাঁজের শরীরি ঝলক দেখলাম। দুটো বড় বড় স্তনের এমনই দাপট, যে ঐ বুকের ওপর ব্লাউজের আবরণটা যেন কিছুই নয়। উদ্ধত শরীরের উদ্ধত দুটি বুক এমন ঝলক দেখাচ্ছে, খেলুড়ে পুরুষমানুষরা এখনই ঐ বুক নিয়ে খেলা করতে শুরু করে দেবে। কিন্তু আমি কেন পারছি না বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
বুকে হাত দিয়ে ব্লাউজটা খুলতে গিয়েও খুললো না কামিনী। আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "এসো তুমি খুলে দাও।"
বিস্ফোরিত চোখে ওর যৌনতার ঝিলিক দেখে আমার মুখের ভেতরে জিভ আর আলজিভ দুটোই মনে হচ্ছে জড়িয়ে আসছে। একটু সোহাগ করে আমার দিকে দুহাত বাড়িয়ে বলল, "কি হল? এসো না কাছে।"
সাধে কি সোমনাথদা বলেছে আমি আনাড়ী? ঘরের বাইরে এতক্ষণ ধরে খুব তড়পাচ্ছিলাম, আর এখন কামিনীর এই শরীর দেখে আমার সব তড়পানি বন্ধ।
কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে, আবার মুখের কাছে মুখ নিয়ে এসে কামিনী বলল, "আ মরে যাই। শুধু আমার বুকই দেখে খালি মরে যায় শোনা। এটা শুধু দেখলে হবে? হাত লাগিয়ে খুলতে হবে না?"
মনে হল সোমনাথদা আমার পেছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে আর আমাকে তাড়া দিয়ে বলছে, "জাগো জাগো সুদীপ, আর কখন জাগবে? এবার ওর বুকে হাত দাও। ব্লাউজ খুলে ওকে উন্মুক্ত করো। বিশাল স্তনের অধিকারীনীকে এবার তুমি নিজের হাতে উন্মুক্ত করো সুদীপ। জাগো সুদীপ এবার জাগো। আর কখন জাগবে?"
আমার আড়ষ্টতা দেখে কামিনী এবার হেসেই ফেললো। আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, "কি গো, চুমুটাও কি খাবে না আমাকে? নাগর আমার, অত লজ্জা পেলে চলবে? খাও। আমাকে, চুমুটা খাও।"
বলেই ঠোঁট দুটো বাড়িয়ে দিল আমার ঠোঁটের সামনে।
পৃথিবীতে বোধহয় আমিই প্রথম ব্যক্তি, যার চুমু পাওয়ার আশায় কোন বেশ্যা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এমন শিরদাঁড়া কাপানো পরিস্থিতি অথচ আমার মনে হল, চুমু খাব? তার পরে যদি ও আমার ঠোঁটটা ছাড়তে না চায়?
কামিনী ঠিক তখনই একধাপ বাড়িয়ে বলে ফেললো, "তুমি ঠোঁট চুষতে পারো? চোষো না একটু আমার ঠোঁটটা।"
কি যে হল ছাই বুঝতে পারছি না। এত কাছে কামিনীর ঠোঁট, তাও আমি সঙ্কোচে কেমন কাঁপছি। আমার ঠোঁটও কাঁপছে সেই সাথে আমার শরীরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে।
মনে পড়ল রাখীর সেই সাহস জোগানোর কথাটা। মেয়েটা আমার গালে চুমু দিয়ে হঠাৎই কেমন একটা তেজ বাড়িয়ে দিয়েছিল শরীরের মধ্যে। সোমনাথদা বলেছিল সব অটোমেটিক হবে, অটোমেটিক। শুধু নিজের কামনার ইচ্ছাটাকে একটু জাগ্রত করা দরকার।
ওর গালদুটো ধরে এবার একটা সজোরে চুমু খেলাম কামিনীর ঠোঁটে। যেন আমার এই প্রথম সিদ্ধিলাভ হল। চুমুটা খাবার পর দেখলাম, কামিনী আমার ঠোঁট ছাড়ার নামই করছে না। ওর সাথে ঠোঁটে ঠোঁটে আবদ্ধ হয়ে চোষাটা দেখলাম বেশ ভালমতন রপ্ত হয়ে গেল আমার কাছে।
নিজে থেকে একবার শুধু চুম্বনরত অবস্থায় কামিনী বলল, "আমার ঠোঁট একবার পেলে কেউ ছাড়তে চায় না অত সহজে। তুমিও চোষো আমার ঠোঁট ,শোনা। চোষো, চোষো।"
যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধিকারক অমন পুরু ঠোঁটের রসালো চুম্বন খেয়ে, সেই যে আমার ভেতরটা তোলপাড় হতে শুরু করল, আর থামল না সহজে।
ওর বুকের গভীর খাঁজের মধ্যে আমার মুখটা চুবিয়ে দিয়ে কামিনী বলল, "কি, এবার ভাল লাগছে?"
দেখলাম আমার মাথার চুলে হাত বুলিয়ে ও আমাকে আদর করছে আর ওর বুকে মুখ ঘসার জন্য আহ্বান করছে আমাকে।
নিজে থেকেই এবার বলল, "ব্লাউজটা আমি খুলে দেব? তুমি চুষবে? আমার বুক চুষতে তোমার ইচ্ছা করছে না?"
চেষ্টা করছি নিজের মধ্যে জড়তাটা কাঠিয়ে ওঠার। কিন্তু পারছি না। কামিনী ঠিক বুঝতে পেরে বলল, "মনে হচ্ছে মেয়েমানুষের বুক চোষার সৌভাগ্য এখনও অবধি জোটেনি তোমার। এত পয়সা করে আমার সাথে রাত কাটাচ্ছ, এভাবে জবুথবু হয়ে বসে থাকলে চলবে? নাও আমি খুলছি, তুমি এবার নিজের মত করে চোষো।"
আমি জীবনে কোনদিন মেয়েমানুষের সঙ্গে এমন চোষাচুষির খেলা খেলিনি। সুদীপ বসুর জড়তা কাটিয়ে দেবার জন্য কামিনী তখন নিজেকে আরও মেলে ধরার জন্য প্রস্তুত। ব্লাউজটা নিজেই হাত লাগিয়ে খোলবার সময় ওর চোখ ঝলসানো শরীর থেকে এমন তাপ বেরোতে লাগল যেন মনে হল সেই আঁচে পুড়ে যাচ্ছে আমার স্নায়ুমন্ডলী।
জড়তা কাটিয়ে দৃষ্টিটা পুরোপুরিই লোলুপ হচ্ছে এবার আস্তে আস্তে। কামিনী ব্লাউজ খুলে স্তন উন্মুক্ত করে এবার আমার মুখটাকে চেপে ধরল ওর বুকের ওপরে। ঠোঁটের ওপরে বৃহৎ স্তনের স্পর্শ পেয়েই মনে হল ভেতরটা আমার পুরো চুরমার হয়ে গেল।
প্রবলতর যৌন উত্তেজনা আর শীর্ষসুখকে বাড়িয়ে তোলার মূহূর্ত। যেন অপরিসীম এক আনন্দ। আমি কামিনীর বুক চুষছি। ওর স্তনের বোঁটা আমার ঠোঁটের মধ্যে নিমজ্জিত। আর বিদ্যুত দ্রুত গতিতে আমার শরীরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নিষিদ্ধ পল্লীর নিষিদ্ধ আনন্দে তলিয়ে যাবার জন্য সোনাগাছিতে পা রেখেছি আজকে। কামিনীর উজাড় করা সোহাগে আপ্লুত হয়ে আমি উত্তেজনায় এতটাই পাগল হতে লাগলাম, যা জীবনে কোনদিন হইনি এর আগে।
নিজের বুকের মধ্যে আমাকে ধরে রেখে উদ্দাম নির্লজ্জ্ব যৌনতায় স্তন বিলোচ্ছে কামিনী। অনায়াসে তানপুরার মতন স্তনটাকে মেলে ধরে রেখেছে আমার ঠোঁটের ওপরে।
সুখের আতিশয্যে পৌঁছে যাচ্ছি। সারা শরীর জুড়ে বাজনা বাজছে। মনে হচ্ছে কামনার সমুদ্র তরঙ্গে ভাসতে শুরু করেছি এবার।
মারাত্মক যৌন আবেদন কামিনীর সারা শরীর দিয়ে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে। আমার গালে এবার একটা চুমু খেল ও। বুক থেকে মুখ তোলার পর এবার আমার ঠোঁটেও চুমুটা খেল প্রবল তাপ মিশিয়ে।
পাগল দিওয়ানা আমি। কেউ আমাকে কামপিপাসায় জর্জরিত করেছে, তার প্রতি প্রবল আসক্তিতে ছটফট করতে শুরু করে দিয়েছি। এই প্রথম যৌনতাড়নার তাগিদে কোন মেয়েকে নিয়ে সারারাত শুধু আনন্দে ভেসে যেতে ইচ্ছে করছে। আমার একবারও মনে হল না আরে ও তো বেশ্যা। এরা শুধু এক রাত্রিরেরই খোরাক। শুধুই পুরুষমানুষকে বিনোদনের জন্য পসরা সাজিয়ে বসেছে। আমি কি ওকে নিয়ে সারাজীবন কাটাতে পারি নাকি?
এতটাই আকর্ষিত আমি। কামিনীকে বলেই বসলাম, "আমি যদি তোমার ঘরে রোজ আসি কামিনী? আমাকে তুমি বরন করে নেবে?"
কামিনী বলল, "এবার থেকে রোজ আসবে তুমি এখানে। কে তোমায় বারণ করেছে? এ শরীরটা তো তোমারই।"
জীবনে প্রথম যৌনতার অভিষেক ঘটাতে চাইছি এক সোনাগাছির বেশ্যার সাথে। চরম উপভোগের জন্য কামিনী শরীরের উপরিভাগ পুরোটাই উন্মুক্ত করে ফেলেছে। আমাকে বলল, "তুমি ছাড়বে না তোমার পোষাকটা? আমাকে বিছানায় নিয়ে কি এমনি ভাবেই শোবে? জামাটা খুলে ফেল। প্যান্টটাও। আর আমার শায়ার দড়িটা তুমি হাত লাগিয়ে খোলো। এখানে লোকে এসে কি করে তুমি জানো না? আমার শরীরে নইলে প্রবেশ করবে কি করে তুমি?"
ওর শায়ার দড়িতে হাত লাগিয়ে খোলবার সময় রক্তস্রোতটা মাথায় চলে আসছিল। আমাকে বিছানায় বসিয়ে দিল কামিনী। দড়িতে হাত লাগাতেই নিজের ঠোঁটটা দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরল কামিনী। মনে হল ঠোঁট কামড়ে ও হয়তো আরাম পাচ্ছে, কিন্তু স্বস্তি পাচ্ছে না। খদ্দেরকে যতক্ষণ না কামিনী নিজের শরীরের মধ্যে ঢোকাতে না পারছে, ততক্ষণ ওরও শান্তি নেই।
উদ্দাম শরীরটা চোখের সামনে উলঙ্গ হবে, তার আগেই আমার দাঁত সুড়সুড় করতে শুরু করে দিয়েছে। নগ্ন শরীর দেখার তাগিদে যাদের জিভের রসনা বেড়ে যায়, আমারও তাদের মতই হচ্ছিল। বুঝতে পারছিলাম, আমি এবার যৌন আনন্দের স্বাদে মাতোয়ারা হতে চাইছি। নিজেকে ভাসিয়ে দিতে চাইছি ওর শরীরে। আমার আর পেছনে তাকানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
শায়াটা খোলা মাত্রই ওটা মাটিতে পড়ে গেল স্তুপাকৃতি হয়ে। কামিনী এবার আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার ঠোঁটে চুমু খেল। আমার ঠোঁটটা ক সেকেন্ড ঠোঁটে নিয়ে চুষল।
আমি ওর সুপারিশ মেনে চলার জন্য যেন কত বাধ্য। কামিনী আমার ঠোঁটটা চুষতে চুষতেই বলল, "কি, এখনও আমাকে ভালবাসতে পারছ না?"
এমন একটা শিহরণ জাগানো চুমু। পা থেকে মাথা পর্যন্ত শরীরকে দুলিয়ে দেয়। সেক্সী ঠোঁটের ভালবাসায় আমার মনে হল, ওকে ভাল না বেসে উপায় নেই। কামিনী ছাড়া আমার মনে হয়, জীবনটাই আর চলবে না এখন থেকে। এমন একটা বেশ্যার সান্নিধ্যে এলাম, যার রূপ, যৌনতা আর সোহাগ চুম্বকের মতন টানছে আমাকে। এত শক্তিশালী চুম্বক। এর থেকে নিজেকে ছাড়ানোর কোন উপায় নেই। এমন যৌন আবেদনময়ী নারী। আমার তো শোবার আগেই তীব্রতা বেড়ে গেছে এখন থেকে।
কামিনী এমন ভাবে চুমুর পর চুমু খেতে লাগল আমার ঠোঁটে, বুঝলাম, দিনটা সত্যিই একটা স্মরনীয় দিন হতে চলেছে আমার কাছে।
ও আমার জামা প্যান্টটা নিজের হাতে খুলে দিল। ঘরের মধ্যে আমিও তখন নগ্ন, সেই সাথে কামিনীও।
একটু দূরে গিয়ে কামিনী বলল, "আমার কাছে এসে অনেকে এই জায়গাটায় আগে মুখ দিতে চায়। তুমি দেবে না?"
বিবসনা এক নারী, তার অপূর্ব যোনীকে কিভাবে মেলে ধরতে চাইছে আমার সামনে, তারই নমুনা দেখলাম। ও বিছানাটার পাশেই সোফাটার ওপর গিয়ে বসল। আমার দিকে তাকিয়ে পা টা অল্প শূন্যে তুলে উরু ফাঁক করে গোপনাঙ্গ আড়াল থেকে মুক্তি দিল কামিনী। উলঙ্গ নারী দেহ। যাদের শুধু চোখের দেখা দেখেই তৃপ্তি অনেক। আমি যেন তার থেকে অনেক কিছুই বেশী পাচ্ছি কামিনীর কাছ থেকে।
বিশাল দুই স্তন, প্রসারিত উরু এবং উন্মুক্ত ক্ষুধার্ত যৌনাঙ্গ নিয়ে সোফায় পড়ে রয়েছে কামিনী। আমার দিকে তাকিয়ে নিজের আঙুলটা যোনিগর্ভে প্রবেশ করাতে লাগল আসতে আসতে। হস্তমৈথুন শুরু করেছে। দেখাতে চাইছে আমাকে আত্মরতির কি বৈচিত্র। ওর এই দেখানোর মধ্যেই একটা অদ্ভূত তৃপ্তি। বুক কেঁপে উঠছে ওর নিজস্ব উত্তেজনায়। স্তন দুটো দুলছে। চোখ বন্ধ করে কামিনী নিজেই হাত দিয়ে ঐ জায়গাটায় ডলতে লাগল।
আমি দেখতে লাগলাম, আঙুল দিয়ে যোনির অভ্যন্তরে ঢেউ তুলছে কামিনী। দ্রুত থেকে দ্রুততর। একেবারে যৌনাঙ্গের কেন্দ্রস্থলে দৃষ্টিটা গিয়ে পড়েছে তখন আমার। সামান্য দূরত্ব থেকেই আমি বুঝতে পারছি, ওর যোনিগর্ভে প্রবিষ্ট আঙুল ক্রমশ ভিজে যাচ্ছে।
তীব্র কামনার অনুভূতি, আর প্রবল যৌনক্ষিধের তাগিদে আমি তখন ওর কাছাকাছি যেতে চাইছি। কামিনী বলল, "এসো না কাছে। মুখ দাও এখানে। কতক্ষণ শুধু আর আঙুলই ঘসব আমি?"
যোনিদ্বার জিভ দিয়ে স্পর্ষ করা মানেই উত্তেজক অনুভূতি। নাভির তুলতুলে নরম মাংসের নিচে ঠোঁট নিয়ে ঘোরাফেরা। যৌনাঙ্গের ঝোপে কোঁকড়া রোমরাশির মধ্যে জিভ ঢুকিয়ে ফাটলে মিশে যাওয়া। নাকে কড়া কটু গন্ধ নেই। যেন মিষ্টি মধুর ভেজা অংশ প্রানভরে চেটেপুটে খাওয়া। আমার মনে হল, রোমাঞ্চকর এই অনূভূতির অভিজ্ঞতা লাভ করতে চলেছি আজকে।
ওর উন্মুক্ত প্রসারিত যোনি আমাকে প্রবল ভাবে টানছে। আমাকে জিভ ছোঁয়াতে হবে ওখানে। এক মূহূর্ত আর দেরী নয়।
কামিনীর কাছে গিয়ে ওর দেহের ওপর ঝুঁকে পড়লাম। নিজের দু’পা ফাঁক করে আমার মাথা আর মুখটা যথাস্থানে স্থাপন করল কামিনী। নিম্নাঙ্গের ফাঁকে মাথাটা চেপে বসেছে, কামিনীরই হাতের চাপে। মুখটা তুলে আমি আবার ওর দুই উরু লেহনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। কামিনী বলল, "ওখানে নয়রে বোকা। ভেতরে মুখ দাও।"
শরীরের সবচেয়ে উত্তেজক জায়গাটা জিভ দিয়ে স্পর্ষ করলাম। চোখ বুজল কামিনী। চোখ বুজলাম আমিও।
যৌনফাটলে শিহরণ। শরীরে আনন্দের কম্পণ। জিভ ঘোরাফেরা শুরু করেছে নিম্নাঙ্গের গভীরে। গোঙানির আনন্দে শুধু একটা কথাই বারে বারে ভেসে আসছিল কামিনীর মুখ দিয়ে, আহ্ কি আরাম।
লাল আবরণের মধ্যে আমি বারে বারে জিভ চালনা করছি। সুখকর এমন তীব্র মূহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে আমি যেন গহ্বরের মধ্যেই হারিয়ে যেতে লাগলাম। রসালো যোনী আর ডোবানো জিভ, এক যৌনবিশারদ নারী আর কামার্ত পুরুষ। দুজনেই আমরা উন্মাদের মতন আচরণ শুরু করেছি বিছানার ওপরে। কামিনী যখনই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিল না আমার চুলের মুঠিটা চেপে ধরছিল শক্ত করে।
লাগাতার যোনি চুষে ওকে পাগল করে দিচ্ছি, তাও যেন ওর ইচ্ছা কমছে না কিছুতেই। মাথাটা দু’হাতে শক্ত করে ধরে এবার বলল, "আরও। আরও কর। চোষো। ভাল লাগছে আমার।"
মনে মনে বললাম, "আমাকে প্রশ্রয় দিচ্ছ কামিনী! তুমি যদি প্রশ্রয় দাও, আমি কিন্তু মাথায় উঠব"
চেটেপুটে শুধুই কামরসের তৃপ্তি আস্বাদনে মাতোয়ারা হচ্ছি। মাত্রা ছাড়া চোষন, যেন শতকরা একশ ভাগ খুশি করে আমাকে অতল যৌনসাগরে তলিয়ে দিচ্ছে কামিনী।
আমাকে হঠাৎ ই বলে বসল কামিনী, "তোমার ডান্ডাটাকে চোষাবে না আমার মুখ দিয়ে? দাও এবার মুখে। চুষে একটু আরাম দিই।"
বিছানায় শায়িত করল আমাকে। ডান্ডা আমার উর্দ্ধমুখী। দুষ্টুমি মুখের চাউনিতে প্রবল উদ্দীপনা নিয়ে মুখের মধ্যে গ্রহন করে নিতে ও প্রস্তুত। কেমন যেন অবশ করে দিল আমার সারা শরীরটাকে। গর্বের ধন মুখে পুরে স্বচ্ছন্দে চুষতে শুরু করে দিয়েছে, শক্ত পুরুষাঙ্গটা কখনও মুখের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে পুরোটা, কখনও বেরিয়ে আসছে মুখের বাইরে। লিঙ্গমুখে ঘন ঘন চুমু খাচ্ছে কামিনী। নীচের বীর্য থলি কামড়ে ধরেছে, শ্বাস প্রশ্বাস ক্রমেই বাড়ছে, কামিনীকে বললাম, "আমি নিজেকে আর সামাল দিতে পারছি না কামিনী। তুমি আরও কত চুষবে বলো? এবার কি থামবে না?"
পুরুষমানুষের উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে গেলে বিছানার সেই আনন্দ আর থাকে না। কামিনীর লিঙ্গ চোষার পারদর্শীতায় আমি মুগ্ধ অথচ নিজেকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করব বুঝতে পারছি না। অভূতপূর্ব কায়দায় ও এবার উঠে চলে এল আমার ওপরে। বালিশে আমার মাথা। কামিনীর শরীর তখন ভর করেছে আমার মুখের ওপরে। ও উপুর হয়ে বসে যোনি দ্বারটা ঠিক মেলে ধরল আমার মুখের সামনে। বিশুদ্ধ অথচ উত্তেজনায় ভরপুর। এক বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে আমি ওর লাল গহ্বরের ছোঁয়া পেতে লাগলাম বারে বারে। কামিনী বালিশের পাশে পা দুটো রেখে উপুর হয়ে বসে লাল পাপড়ি ঠেকিয়ে রেখেছে আমার মুখের সাথে। নিজে কিছুক্ষণ ঐভাবে ওঠা নামা করতে করতে বলল, "ধরো এবার আমার কোমরটা। দুহাত দিয়ে ধরো। আর আমার তলাটা মুখে ধরে যতক্ষণ পারো আনন্দ করে চোষো।"
চরম আনন্দের খোঁজে মানুষ কেন বেশ্যাখানায় আসে, কামিনীর ঐ উজাড় করা ভঙ্গীমাতে আনন্দকে দীর্ঘায়িত করতে আমার মন প্রাণ প্রবল ভাবে সাড়া দিতে লাগল আরও। ওর কোমর দুহাতে ধরে শুষে নিতে লাগলাম নিসৃত যোনীরস। মনে প্রাণে কামিনীও চাইছিল, আমি ওটা শুষে নিই, আরও আরও। উত্তেজনায় ও কাঁপছে, উরু পাক খাচ্ছে প্রবল ভাবে। অথচ দ্বিগুন উৎসাহে আমাকে যোনী চোষনের আনন্দ প্রদান করে যাচ্ছে। এবার নিজেই আঙুল স্পর্ষ করে যোনিফাটল কে আরও বিস্তৃত করার চেষ্টা করতে লাগল কামিনী। আমার সুবিধার জন্য যাতে জিভ ভাল করে প্রবিষ্ট করতে পারি। হাতের দু’আঙুলের মৃদু কম্পনে আলোড়ন তুলেছে ও আমার জিভের ওপরে। যেন এক্ষুনি কামরস প্রবল বেগে বিস্ফোরিত হবে।
আমি মরীয়া হয়ে গেলাম এবার নিজেই। একটু আগে স্বচ্ছন্দে আমার ডান্ডা মুখে পুরে চুষছিল কামিনী, আমি উঠে বসে এবার নিজে থেকেই ওটা ধরিয়ে দিলাম কামিনীর হাতে। কামিনী মুখে পুরে নিল। শক্ত পুরুষাঙ্গ আমি সঙ্গমের মুদ্রায় ঠেলতে লাগলাম। আখাম্বা যন্ত্রটা বারে বারে কামিনীর গলায় গিয়ে ঠেকছে। কামিনী এমন ভাবে চুষতে লাগল, ওর মাথার চুলগুলো সব এলোমেলো হয়ে কাঁধের পাশে ছড়িয়ে গেল। আমি কামিনীর চুলে হাত বুলিয়ে এবার ওকে আদর করতে লাগলাম। মাথায় আমার হাতের আদর খেতে খেতে চুষতে চুষতে একবার মুখ তুলে আমার দিকে তাকালো কামিনী।
বারুদ ভরা স্তুপ, যৌনতার প্রবল আঁচে ঝলসে যাচ্ছি আমি। কামিনী বলল, "তুমি কখনও এরকম, এত সুখ পাবে না কারোর কাছ থেকে। আমি কামিনী। আমি যা সুখ দিতে পারব, কেউ পারবে না।"
কারুকার্য মেশানো এমন নিপুন দক্ষতায় আমার লিঙ্গটাকে জিভ দিয়ে খেলতে খেলতে কামিনী যে আমাকে কোথায় পৌঁছে দিচ্ছিল আমি নিজেই জানি না। মনে হল এইভাবে ওর মুখের মধ্যে রমণে রমণে বিদ্ধস্ত হতে লাগলে খুব তাড়াতাড়িই বীর্যপাত হয়ে যাবে আমার। সঙ্গম আনন্দের মজাটা যে নিতে বাকী। কামিনীকে না ভোগ করে আমি আজ শান্তি পাব না।
এই মূহূর্তে শুধুই মিলন পিয়াসী আমি। কামিনীর শরীরের প্রতিটি লোমকূপ দিয়ে আগুনের স্ফুলিঙ্গ বেরিয়ে আসছে। প্রফুল্ল মন নিয়ে ও আয়েশে একনাগাড়ে চুষে যাচ্ছে। আমাকে শুধু তীব্র আবেগ দিয়ে বলে উঠল, "এটা এখন আমার হয়ে গেছে। তোমার কাছে ফিরিয়ে দিতে আমার একদমই ইচ্ছে করছে না।"
অধৈর্য হয়ে পড়েছি আমিও। এবার সেই বহু প্রতীক্ষিত সঙ্গমের সুখ চাই আমার।
লিঙ্গটাকে মুখ থেকে বার করে এবার গভীর চুম্বনে ওকে আবদ্ধ করে নিতে লাগলাম। আমার ঠোঁটের পরশ দিয়ে চুম্বনের পর্যাপ্ত সুখ আদায় করে নিয়ে ওকে বললাম, "এত শক্তি সঞ্চার করলে আমার মধ্যে। এবার আমাকে তোমার মধ্যে নেবে না?"
পৌরুষের অহঙ্কারে শেষ সীমানায় নিয়ে যেতে চাইছি নিজেকে। কাঙ্খিত চরম রতির মূহূর্তটাকে পাওয়ার জন্য আমার ছটফটানি দেখে কামিনী বলেই উঠল, "এত অধৈর্য হয়ে পড়েছ তুমি। সারারাত আমার সাথে কাটাবে কি করে? একবার করলেই তো ব্যাস ক্লান্ত হয়ে পড়বে।"
পৃথিবীতে নেই আর এমন কিছু যা দিতে পারে এমন সুমধুর আনন্দ। ও আমাকে কোলে ওপর শুইয়ে শুধুই শিশুর মতন চোষাতে লাগল এবার ওর স্তন। সুখ সাগরে ভেসে যাওয়ার কি অঢেল আয়োজন। বুকে দুধ নেই, অথচ এক অদ্ভূত আবেশে ভরে যাচ্ছে আমার মন।
কামিনী বলল, "আরও শক্তি দিচ্ছি তোমাকে। এবার দেখি কেমন ঠাপাতে পারো তুমি আমাকে।"
স্তন চোষার আনন্দ দিয়ে কপালে অনবরত চুমু খেতে খেতে সোহাগের অন্যমাত্রা যোগ করছিল কামিনী। আমার চুলে হাত বুলিয়ে এমন ভাবে আমাকে ভরিয়ে দিচ্ছিল, মনে হচ্ছিল ওর স্তন নিয়ে বাচ্চাদের মতন খেলা করি। শক্ত কাঠের মত লিঙ্গ এদিকে চুপ থাকতে পারছে না। রাশি রাশি আনন্দ বুক থেকে ঝরিয়ে দিচ্ছে কামিনী। আমার ডান্ডাটাকে এবার ও হাত দিয়ে চেপে ধরল। মনে হল শরীরের ভেতরটা কেমন অন্যরকম হয়ে গেল।
পাগলের মতন কামিনীর বুক চুষতে লাগলাম। কামিনী আমার চুলে হাত বুলিয়ে বলল, "কি, ভালো লাগছে এবার?"
ওর স্তন এমন ভাবে অপূর্ব তৃপ্তিতে চুষে চলেছি, মনে হল ভাললাগা শুধু নয়, আমি যেন এই শরীরের কাঙাল হয়ে গেলাম আজ থেকে। নিষিদ্ধ পল্লীতে না এলে কামিনী কে কোনদিন পেতাম না। এই ভাললাগা অতৃপ্তই থেকে যেত সারাজীবন।
কামিনী আমাকে বলল, "আমি প্রথমে তোমার ওপরে চড়ে বসি। তারপর তুমি আমার ওপরে। কেমন?"
প্রস্তাবে রাজী হলাম এক নিমেষে। বিছানায় শুয়ে ওকে শরীরের ওপরে তুলে নিলাম। লিঙ্গটাকে এবার হাতে ধরে আসতে আসতে নিজের যৌনফাটলে প্রবেশ করাতে লাগল কামিনী।
ঘোড়সওয়ার হয়ে এবার আমার সঙ্গে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হল কামিনী। ডান্ডাটা গভীরতায় চলে যাচ্ছে। নিজেকে প্রবল ভাবে গেঁথে নিচ্ছে কামিনী। নগ্ন শরীরটা দুহাতে জাপটে ধরে ওর স্তন মুখে নিলাম।
যৌনভোগের চূড়ান্ত। আমি ওর স্তন দুটোর বোঁটা কামড়ে ধরে আদর করছিলাম আর ও আমার মাথাটা আরও জোড়ে চেপে ধরছিল নিজের বোঁটার ওপরে। নিজেই ওপর নীচ করতে করতে আমাকে সুখের পরশ দিচ্ছে, লিঙ্গমুখ ঘর্ষিত হচ্ছে যৌনফাটলে, অবিরাম সংঘর্ষে যেন তৃপ্তির সঙ্গম। সেক্স আর কামের বন্যা বয়ে যাচ্ছে কামিনীর শরীরে। ঠাপ দিতে দিতে ওর ভারী বুক দুটো জিভ দিয়ে চাটতে লাগলাম। আনন্দ সাগরে ডুবে যাচ্ছি। কামিনী ঝুঁকে পড়ে ঠোঁট দুটো বাড়িয়ে দিল আমার ঠোঁটের ওপরে। নিজের ঠোঁট ওর ঠোঁটের সাথে গাঢ় চুম্বনে ডুবিয়ে দিলাম। লম্বা চুলের গোছা শুদ্ধু মাথাটা এক হাত দিয়ে ধরে ওর ঠোঁটটা আরামে চুষতে লাগলাম।
মনে হল, ওকে যদি সারাজীবন পেতাম এইভাবেই। ভাললাগায় মনটা ভরে যাচ্ছে। কামিনী আমাকে পৃথিবীর সেরা সুখ দিচ্ছে। ওকে ছেড়ে থাকা আমার আর সম্ভব নয়।
এক একটা ধাক্কা থেকে সঙ্গমের সমধুর ধ্বনি বেরিয়ে আসছে। চরম সীমানা অতিক্রম করে দেহ উপভোগের উদ্দাম যৌনসুখ। শরীরটাকে নিয়ে এমন ভাবে ওঠানামা করাচ্ছিল, ওর বুক দুটোও একজায়গায় স্থির থাকতে পারছিল না। স্প্রিং এর মতন দুলছে, লাফাচ্ছে। অসম্ভব এক তীব্র ঠাপুনিতে আমার মুখের ভেতরে প্রবিষ্ট স্তনের বোঁটা, মুখ থেকে বারে বারে বেরিয়ে যাচ্ছে। বোঁটাটাকে মুখে ধরে রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না।
এক হাতে একটা বুক ধরে দখলে নেবার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম। কামিনী নিজেই স্তনটা এবার হাতে ধরে,আমার ঠোঁটের ফাঁকে প্রবেশ করালো। স্তন খেতে খেতে লিঙ্গ নীচে থেকে গভীরে প্রবেশ করছে। সঙ্গম সুখকে বহুগুন বাড়িয়ে তোলার সমস্ত মাল মশলাই রয়েছে ওর মধ্যে। উন্মাদনা আর তীব্র যৌন অনুভূতিতে মনে হল, যৌনতার ব্যাপারে ওর কি দেবার কোন শেষ নেই? কোথায় পাবে কেউ এমন সুখ প্রদানকারী নারী? আমাকে তো ওর শরীরের স্বাদ নিতে হলে ছুটে আসতে হবে এই সোনাগাছির নিষিদ্ধ পল্লীতে। আমি আসব। বারে বারে আসব। প্রতিদিন। কামিনীর জন্য আমার না এসে আর কোন উপায় নেই।
এতক্ষণ ধরে যে শক্তি সঞ্চয় হয়েছিল শরীরে। ওকে বিছানায় চিৎ করে শুইয়ে এবার পুরোটাই ঢেলে দিতে লাগলাম লিঙ্গ দিয়ে। ওকে প্রবল গতিতে ধাক্কা দিচ্ছি, ঢেউ আর সঙ্গমের উগ্রতায় আমি মাতোয়ারা। স্ট্রোকের সাথে সাথে আমাদের দুজনের নিঃশ্বাসটা এক সাথে মিশে যাচ্ছিল। তাল মিলিয়ে আমাকে একাধিক বার প্রবিষ্ট করে নিচ্ছিল কামিনী। দেখলাম শুয়ে শুয়ে দুষ্টুমিষ্টি হাসিতে দেখছে আমাকে। আমি যত দেখছি ওকে, কামনার আগুনে জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছি। বুঝতে পারছি এ আগুন নেভানোর কোন উপায় নেই আমার কাছে।
ঘন্টাব্যাপী কামিনীর সাথে যৌনসঙ্গম করে আমি ওর শরীরের মধ্যে ডুবে গেলাম। একেবারে শেষ মূহূর্তে আমার বীর্যটা ঝলকে ঝলকে পড়ল ওর যোনির মধ্যে। কামিনী দুটো পা আমার কোমরের ওপর তুলে দিয়ে হাত দিয়ে শরীরটাকে সাপের মতন জড়িয়ে থাকল কিছুক্ষণ।
আমি ঝড়ের শেষে অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়েছি। কামিনী বলল, আমি তোমার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। তুমি আমার বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকো এখন। যদি ঘুম আসে, তাহলে আমার বুকেই মুখ রেখে ঘুমিয়ে পড়ো চুপটি করে।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 978
Threads: 14
Likes Received: 1,972 in 660 posts
Likes Given: 9
Joined: Aug 2019
Reputation:
117
এমন টপ ক্লাস লেখনী! চমৎকার! লাজওয়াব!
কী ভাষায়, কী বর্ণনায়! উহ্! দারুণ!
•
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
।। চার ।।
অস্বাভাবিক যৌনক্রীড়া করেছি কামিনীর সঙ্গে। রাতে ঘুমটাও এল কখন টের পাইনি। কামিনীর বুকে মাথা রেখে শুয়েছিলাম কিছুক্ষণ। সকালে চোখ খুলে দেখলাম বিছানায় কামিনী নেই। আয়নার সামনে বসে চুল পরিচর্যা করছে চিরুনী দিয়ে। মনে হয় একটু আগেই স্নান সেরেছে। ভিজে চুলে, খোলা কেশরাশিতে যেন রাজকীয় লাগছে কামিনীকে। সকালবেলাই কামিনীর রূপটা যেন ঝলমল করছে।
আমাকে আয়নাতে দেখতে পেয়ে চোখের মণিতে বিদ্যুত খেলে গেল কামিনীর। সারা চুল ওর মুখটাকে কেমন শোভাময় করে তুলেছে। মুখে যেন চন্দন সাবানের প্রলেপ লাগানো। অঙ্গ প্রতঙ্গ দু’চোখ ভরে শুধু দেখে যেতে হয়।
আমাকে ঘুম থেকে উঠতে দেখে কামিনী বলল, "ঘুম ভাঙল তোমার? আমি তো ভাবছিলাম, সারাদিন তুমি এভাবেই শুয়ে থাকবে!"
বিছানায় উঠে বসে ঘাড় চুলকাচ্ছি। কাল রাতে ওর সাথে চরম আনন্দদায়ক যৌনসঙ্গমের কথাটা মনে পড়ে যাচ্ছিল। কি যেন হয়েছিল কালকে, বেশ্যা অথচ সে আমার প্রিয়তমা কামিনী। কত সুন্দর। শরীরটা দেখার পর থেকে শুধু যৌনকামনায় হাবুডুবু খেয়েছি। কিন্তু সকালে উঠে মায়াটা কেমন কেটে গেছে আমার। মার কথা মনে পড়ছে। মা বাড়ীতে রয়েছে। আমাকে এখন ফিরতে হবে।
কামিনী বলল, "একটু আগে বীরজু এসে তোমার খোঁজ করে গেছে।"
আমি বললাম, "কেন?"
কামিনী বলল, "ওই যে বুড়ো লোকটা এসেছে তোমার সঙ্গে। ওই পাঠিয়েছিল বীরজুকে। বলল, একসাথে ফিরবে তোমরা। তাই ডাকতে এসেছে।"
কামিনীকে বললাম, "কখন এসেছিল বীরজু?"
কামিনী বলল, "তা অনেকক্ষণ। আমি বললাম, ঘুমোচ্ছে তো সে। এখন যাবে কি করে? ঘুম ভাঙলে পাঠিয়ে দেব তখন।"
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম, বেলা বারোটা বাজে এখন। তারমানে সোমনাথদা এখনও আমার জন্য অপেক্ষা করছে। বোধহয় রাখীর ঘরেই রয়েছে। আমাকে তো ফোন করেনি? একটা ফোন তো করতে পারত?
প্যান্টের পকেটে মোবাইলটা রয়েছে। কামিনীকে বললাম, "আমার মোবাইলটা দেবে কামিনী। দেখি সোমনাথদাকে একটা ফোন করে।"
উলঙ্গ শরীরটা নিয়ে বিছানায় শুয়েছিলাম বলে, কামিনী একটা দামী চাদর দিয়ে ঢেকে দিয়েছে আমার শরীরের ওপরটা। চাদরটা শুদ্ধু উঠতে পারছি না। কামিনী মোবাইলটা নিয়ে আমার কাছে এগিয়ে এসে এমন ভাবে আমাকে জড়িয়ে ধরল, যেন মনে হল কালকের রেশটা বোধহয় এখনও কাটেনি কামিনীরও।
চাদরটা একটু সরিয়ে দিয়ে আমার খালি গা টা জড়িয়ে ধরে বলল, "তুমি বুঝি চলে যাবে এখন? থাকবে না? একদিনেই বাসী হয়ে গেলাম তোমার কাছে?"
দেখি আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার বুকে মুখ ঘসছে। ওর জিভের ছোঁয়া লাগছিল ঠিক বুকের মাঝখানটায়। পুরুষমানুষকে উত্তপ্ত করতে যেন কত সহজেই যৌনকলা গুলো প্রয়োগ করে মেয়েটা।
কাল রাতে নেশার ঘোরে কামিনীর সঙ্গে উল্টোপাল্টা শরীরি কসরত করেছি। সকালবেলাও শরীরটা এভাবে উত্তপ্ত করে দিতে শুরু করবে, ভাবিনি। ওর চুমুর ঠেলায় আমি ফোনটাও করতে পারছিলাম না সোমনাথদাকে। কি যে ভাবল, লোকটা কে জানে। কাল রাতে খুব খারাপ ব্যবহার করেছি সোমনাথদার সঙ্গে। একটু অনুশোচনা হচ্ছিল। ফোনটা না করলে আবার সোমনাথদা চিন্ত করবে আমাকে নিয়ে।
বুকে কামিনীর জিভের প্রলেপ আর চুমু খেতে খেতেই সোমনাথদাকে ধরার চেষ্টা করলাম। দু’দুবার রিং হতেই ফোনটা রিসিভ করে নিল সোমনাথদা।
সোমনাথদা বললো, "কে সুদীপ?"
আমিমি বললাম, "হ্যাঁ আমি সুদীপ বলছি।"
বেশ রঙ্গ করে ইয়ার্কীর ছলেই বলল সোমনাথ দা, "আরে তুমি যে দেখছি আমাকেও হারিয়ে দিলে। শোনো সুদীপ, স্বয়ং কামদেবও এখন তোমার ওপর খুব সন্তুষ্ট। শরীরি খেলায় তুমি যথাযোগ্য ভাবে উর্ত্তীর্ণ হয়েছ। এখন তোমার কাছেই আমাকে অনেক কিছু শিখতে হবে। গুরু শিষ্যর জায়গাটা একটু অদল বদল করে নাও। এখন আমি তোমার শিষ্য হতে চাই। আর তুমি আমার গুরু হয়ে যাও।"
আমি বললাম, "কি যে বলেন না সোমনাথ দা। আপনি ভীষন রসিকতা করেন।"
সোমনাথদা হাসতে হাসতে বলল, "তা জমল কেমন?"
ওদিকে কামিনী আমার বুকে চুমু খেতে খেতে, মুখটা গলার কাছে নিয়ে এসেছে। ঠোঁট লাগিয়ে চকাম করে একটা চুমু খেয়ে বসল আমার থুতনীতে। সোমনাথদা ও প্রান্ত থেকে বলল, "মনে হচ্ছে এখনও কিছু চলছে। সকাল সকালই শুরু করে দিয়েছ নাকি আবার?"
মনে হল, কামিনী যেন অপেক্ষা করছে আমার কাছ থেকে প্রত্যুত্তর চুমুটা পাবার জন্য। ওকে বুকে আগলে ধরেই বললাম, "দাঁড়াও, দাঁড়াও। একটু সোমনাথদার সাথে কথা বলে নিই। তারপর, তোমায় আদর করছি।"
কামিনী যেন অসন্তুষ্ট হল। আমাকে ছাড়িয়ে আবার ফিরে গেল ড্রেসিং টেবিলের আয়নাটার কাছে।
সোমনাথদা বলল, "বেলা যে অনেক হল সুদীপ। এবার বাড়ী ফিরতে হবে তো? ভাড়া গাড়ী নিয়ে এসেছি। এবার তো বসে বসে ভাড়াই গুনতে হবে। তুমি ফিরবে না?"
আমি বললাম, "হ্যা হ্যা ফিরব ফিরব। নইলে বাড়ীতে মা আবার চিন্তা করবে আমাকে নিয়ে। আপনি রেডী? আমি আসছি কিছুক্ষণের মধ্যে।"
কামিনী আবার এগিয়ে এল আমার দিকে। চোখ দুটো বড়ো বড়ো করে বলল, "কাল রাতে বিড় বিড় করে যেসব কথাগুলো বলেছিলে, সেগুলো কি মিথ্যি?"
আমি বললাম, "কোন কথা গুলো? মনে পড়ছিল না কি বলেছি আমি?"
কামিনী বললো, "আমার বুকে মাথা রেখে তো বিড় বিড় করেই গেলে সারা রাত। মনে নেই? এ শরীরটার জন্য তুমি আমার কাঙাল। তো কোথায় গেল তোমার কাঙালপনা? পয়সা দিয়ে মেয়েমানুষের সাথে শুলে তার সাথে আর সোহাগ হয় না। তাই, না? সব ব্যাটাছেলে গুলোই একরকম। সব শরীর লুটতে তোমরা আসো এখানে। বেশ্যা কে কি আর মন দেওয়া যায়? আমরা তো বেশ্যা তাই না? ও সব হৃদয় ভালবাসা কখনও হয় না বেশ্যাদের সাথে।"
এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে কামিনী থামল। ওর চোখের দিকে তাকালে পারছিলাম না। যেন ভস্ম করে দেবে আমাকে। বেশ্যার এমন ভয়ঙ্করী রূপ দেখিনি আগে। পরমূহূর্তেই ও আমাকে আবার জড়িয়ে ধরল। আমার ঠোঁটকে কামড়ে ধরল ঠোঁট দিয়ে। চোষার জন্য পৃথিবীতে আমার ঠোঁটের চেয়ে ভাল যেন আর কিছু নেই। শরীরের এমন আকর্ষনীয় চেহারাটা বানিয়ে দিয়েছে ভগবান। শেষ পর্যন্ত একটা বেশ্যা আমাকে নিয়ে এত মেতে উঠবে। কল্পনাও করতে পারিনি।
একটু ভয় হচ্ছিল। মনের মধ্যে একটা চিন্তাও বাসা বাঁধছিল। এরকম কেন হল? ওতো একজন যৌনকর্মী। যারা শুধু পয়সা নিয়েই যৌনসঙ্গম করে পুরুষমানুষের সঙ্গে। এর আগে নিশ্চই অনেক মানুষের সঙ্গে শুয়েছে কামিনী। কিন্তু আমার প্রতিই ওর এত দূর্বলতা কেন? পারমানেন্ট খদ্দের তৈরী করতে চায় বলে? কিন্তু রোজ রোজ কড়কড়ে পাঁচহাজার টাকা দিয়ে আমি বারবধুর সাথে রাত্রিযাপন করব। অত বিলাসী আমি নই।
কামিনী আমার ঠোঁট ছাড়তেই চাইছে না। যেন সাধের এমন মহামূল্যবান বস্তুটাকে পেয়েছে। সহজে হাতছাড়া করতে রাজী নয়। ও চুষেই যেতে লাগল একেবারে লাগাম ছাড়া উদ্দামতায়।
সোমনাথদা বুঝতে পেরেছে কিছু একটা হচ্ছে। শুধু শুধু আমার ফোনের বিল বাড়বে বলে লাইনটা ছেড়ে দিয়েছে নিজে থেকেই। আমি কামিনীকে কিছু বলার অবকাশ পেলাম না। দেখলাম চুমু খেতে খেতে আমার মুখের মধ্যে জিভটাকে প্রবিষ্ট করে দিয়েছে কামিনী।
বুকের আঁচল সরিয়ে এবার সেই দুর্লভ স্তন দুটোর মাঝখানে আমার মুখটাকে চেপে ধরল কামিনী। এমন ভাবে বুকে ধরে রইল, যে ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে গেলেও ওর বুকের ওপর থেকে আমার মুখটাকে বিচ্যুত করতে চাইবে না সে।
কামিনী বলতে লাগলো, "আমি কোনদিন কাউকে এত মন প্রাণ দিয়ে চাইনি। তুমি বুঝতে পারছ না? তুমি কিন্তু কথা দিয়েছিলে, আমার এখানে তুমি রোজ আসবে। কথা দাও আজকেও আসবে আবার রাত্রিরে।"
কাল রাতে আমার মধ্যে যে ভাবটা এসেছিল, যেন সকাল হতেই সেই ভাবটা দেখা দিয়েছে এখন কামিনীর মধ্যে। একরাতের খোরাক ভেবে আমি ভুলে গেছি কালকের কথা। অথচ কামিনী আমাকে ভুলতে পারছে না।
বুকের মধ্যে আমাকে জড়িয়ে ধরার পর, আমার মুখমন্ডলের কোনো জায়গাটাই চুমু খেতে বাদ রাখছিল না কামিনী। ঠোঁট, চিবুক, গাল, চোখ, কপাল, সর্বত্রই চুমুর প্রলেপে ভরিয়ে দিচ্ছে। একবার শুধু খানিক বিরতি দিয়ে বলল, "আমি আর পয়সা নেব না তোমার কাছ থেকে। তুমি আসবে তো?"
অবাক হয়ে গেলাম ওর কথা শুনে। ও কি কামনায় হৃদয় মথিত? বিনা পারিশ্রমিকে কামিনী দেহদানের চুক্তি করতে চাইছে ওর হল টা কি?
আমি কামিনী একটু গাঢ় আর উত্তাপ মেশানো চুমুটা না খেলে ও আমায় ছাড়ত না। ওর আবদারে ওর বুকের মধ্যে মুখ রেখে স্তনও চুষতে হল কিছুক্ষণ। কামিনীকে বললাম, "তুমি এভাবে আমাকে বলবে, আমি বুঝতে পারিনি। আসলে আমি ইতস্থতটা করছিলাম টাকাটার জন্যই। রোজ রোজ অত টাকা আমি কি করে দেব কামিনী? আমার তো সে সম্বল নেই।"
কামিনী বলল, "আমার অনেক টাকা আছে। তোমাকে দিতে লাগবে না। তুমি শুধু আসলেই হবে।"
ইচ্ছে করছিল কামিনীর শরীরে আর গা টা ভাসাতে। মায়ের কথা চিন্তা করে মনটা ভীষন উতলা হচ্ছে। আজ রাতে ফের এখানে আসা মানে, মাকে একা বাড়ীতে ফেলে আসা। কিন্তু কামিনী এমন করছে, আমিই বা অনিচ্ছা দেখাই কি করে?
চাদরের তলায় শরীরটা নগ্ন অবস্থাতেই ছিল। কামিনী এবার শাড়ী খুলে চলে এলো গা ভাসাতে। শরীরে শরীরে আবদ্ধ হয়ে দেহমিলন পর্ব শুরু করলাম আবার। মিলে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে ওর আমার দুটি কাম জর্জরিত দেহ। কামিনী আমাকে একাধিক বার ওর শরীরের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে নিয়ে যেন প্রবল শান্তি পেল।
প্রায় এক ঘন্টা পরে আবার ফোন করল সোমনাথ দা। আমাকে বলল, "কি হল সুদীপ? তুমি কি যাবে? না আমি একাই ফিরে যাব গাড়ী নিয়ে?"
একদিকে মেয়েটা লেপ্টে রয়েছে আমার সাথে, অন্যদিকে সোমনাথদা তাগাদা মারছে। বেলা বাড়ছে এদিকে, এবার বাড়ী ফেরাটা সত্যি খুব দরকার। কামিনীকে অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে রাজী করালাম। নইলে ও হয়তো আমাকে ফিরতেই দিত না শেষ পর্যন্ত। জোর করে আমার মোবাইল নম্বরটাও নিয়ে নিল কামিনী। বলল, "সন্ধে সাতটার মধ্যে আবার এখানে চলে আসবে। নইলে আমি কিন্তু ফোন করব তোমাকে।"
আমাকে কাছে রাখার জন্য এমন ছটফটানি, কামিনীর আমার প্রতি এই তুমুল আগ্রহটা সোমনাথদাকে না জানিয়ে থাকতে পারলাম না। গাড়ীতে ফেরার সময়, সোমনাথদা চাইছিল আমি নিজে থেকে কিছু বলি। এই প্রথমবার নিষিদ্ধপল্লীর অভিজ্ঞতা কেমন হল, কাল রাত থেকে আজ সকাল অবধি, সোনাগাছির কীর্তিটা নিজ মুখেই বলব, সোমনাথদা যেন হাঁ করেই ছিল, কথাগুলো গেলার জন্য।
কামিনীর চিন্তাটা আমার একেবারেই মাথা খারাপ করে দিচ্ছে। গাড়ীতে যেতে যেতে একটা সিগারেট ধরালাম। নিজে থেকেই বললাম, "এ তুমি আমায় কোথায় নিয়ে এলে বলো তো সোমনাথদা?"
সোমনাথদা যেন সবকিছুই মজা করে নিতে চায়। আমার সামনে এমন ভাব করল, যেন কাল রাতে যা আনন্দ ফুর্তী করার, করেছি শুধু আমি। সোমনাথদা রাখীর সঙ্গে নাকি কিছুই করেনি।
আমাকে বলল, "বুঝলে সুদীপ, কাল শুধু লবেঞ্চুসই চুষেছি সারারাত ধরে। আমার কপালে এবারের ভিজিটে তেমন কিছু আর জুটল না। তোমার কপালটা সত্যি ভালো। কাল যা বরাতে জুটেছিল তোমার। সবার ভাগ্যে কিন্তু এমন জোটে না। উফ কি চোখ ধাঁধানো শরীর, ঢলঢলে মুখখানা, এখনও চোখের সামনে ভাসছে, তা তোমার এক্কা দোক্কা খেলা কেমন জমল? বলো দেখি,একটু শুনি।"
আমি বললাম, "কেন তুমি বুঝি কিছুই করো নি? এমনি এমনি রাত কাটিয়েছ রাখীর ঘরে?"
সোমনাথদা বলল, "সত্যি বিশ্বাস করো। কিছুই করিনি। সারা রাত শুধু মশা মেরেছি, রাখীর ঘরে বসে।"
আমি অবাক হয়ে বললাম, "মশা?"
সোমনাথদা চোখ নাচিয়ে বললো, "হ্যাঁ গো। কি মশা কাল রাখীর ঘরে। কোথাথেকে এসেছিল কে জানে? সারারাত আমার আর রাখীর মশা মারতে মারতেই চলে গেল। কিছুই আর করা হল না।"
পয়সা খরচা করে সোনাগাছিতে এসে সোমনাথদা সাধের রাখীকে নিয়ে কিছুই করেনি, আমার একেবারেই বিশ্বাস হল না কথাটা। নিজেরটা না বলে আমারটাই শুনতে বেশী আগ্রহী। আমি তবু মন খুলেই বললাম, "জীবনে এমন সুখ কারুর কাছ থেকে পাব, কোনদিন আশাই করিনি। কামিনী আমাকে যেটা দিয়েছে, ওটা হল চরম। ওর থেকে বেশী আর কিছু হতেই পারে না।"
যেন এটারই শোনার অপেক্ষায় ছিল সোমনাথদা। গাড়ীতে একেবারে চেঁচিয়ে উঠে বলল, "তার মানে ফুলটুস মস্তি? ওতো কালই বুঝেছি আমি। যেমন চমকাচ্ছিল ও। কেমন ঢং করে তোমাকে ডেকে নিয়ে গেল নিজের ঘরে। আমি ভাবছিলাম, বয়সটা যদি তোমার মতন আমারও একটু কম হত। ওফ তাহলে কি ভালটাই না হত। টানটান চোখদুটো দিয়ে অমন নিষিদ্ধ স্বাদের আমন্ত্রণ। কেউ কি ফেরাতে পারে? তুমি তো এমনই টা টা বাই বাই করে চলে গেলে, আর ফিরেও তাকালে আমার দিকে।"
সোমনাথদার কথায় এবার সত্যি লজ্জা পাচ্ছিলাম। কাল রাত থেকে কামিনীই আমাকে অমন করে দিয়েছিল আমি জানি। সেই উদ্দাম, উল্লাস, একটা যেন উগ্রতা ভর করেছিল আমার মধ্যে। তারমধ্যে কোথায় আবার একটা আকুতি আর ভালবাসাও মিশে গেছে কামিনীর সঙ্গে। এই বেশ্যা সুন্দরীকে নিয়ে আমি এখন কি করব, সেটাই ভাবছি।
বললাম, "আমি খুব চিন্তায় পড়ে গেছি, সোমনাথদা। এখন কি করব, সেটাই তো ভাবছি।"
সোমনাথদা বুঝতে পারেনি আমার কথাটা। বলল, "চিন্তা মানে? চিন্তা আবার কিসের? কার কথা চিন্তা করছ তুমি?"
আমি বললাম, "আমি কামিনীর কথা বলছি সোমনাথদা। ও আজকেও আমাকে যেতে বলেছে ওর ঘরে। আমাকে ছাড়তেই চাইছে না।"
এতক্ষণ ধরে মজা করে এবার যেন একটু সিরিয়াস হয়ে গেল সোমনাথদা। অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "এ টি এম থেকে কত টাকা তুলেছ কালকে? লটারী তে নাম উঠেছে নাকি তোমার? কালকের পরে আবার আজকেও ওর ঘরে যাবে, তোমার কি দিমাগ খারাপ হয়ে গেছে নাকি? গিভ এন্ড টেক পলিসি ছাড়া ও কি তোমার সঙ্গ দেবে? কড়কড়ে পাঁচ হাজার টাকা আবার বেরিয়ে যাবে। সুদীপ তুমি কি পাগল?"
আমি বললাম, "পাগল তো আমি শুধু একা হইনি সোমনাথদা। পাগল তো কামিনীও হয়েছে আমার জন্য।"
চোখ কপালে তুলে সোমনাথদা বলল, "কি বলছ তুমি?"
আমি মাথা ঝাঁকালাম, "ঠিকই বলছি। ও চায় আমি ওর ঘরে প্রতিদিনই যাই। রাত কাটাই ওর সঙ্গে। ওর শরীরটা নিয়ে যা খুশি করি। নিজের গণিকা পেশাকে বিসর্জন দিয়ে কামিনী এখন আমাকেই সঁপে দিতে চায় শরীরটাকে। টাকা ছাড়া নিজের পছন্দের মানুষকে দেহদান করতে চাইছে, এ কখনও শুনেছ?"
জীবনে এমন কিছু প্রশ্নের সন্মুখীন হতে হয়, যার উত্তর আমাদের জানা নেই। এমন কিছু সমস্যা আসে, যার সমাধানের পথও খুঁজে পাওয়া যায় না। উত্তরটা আমি যেন সোমনাথদার কাছেই খোঁজার চেষ্টা করছিলাম। উল্টে সোমনাথদাই আমাকে বলে বসল, "এ তো দেখছি, এখন ঘোরতর সমস্যা। এখন উপায়?"
আমি বললাম, "সেটা তো আমিও ভাবছি। সেইজন্য তো সব খুলে বললাম তোমাকে। এখন বলো কি করব আমি?"
সোমনাথদা একটু বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "আমার বাপু বিশ্বাস হচ্ছে না। তুমি কি বলছ বিলিভ ই করতে পারছি না। নিজের দূর্বলতা ঢাকতে কামিনীর ঘাড়ে সব চাপাচ্ছো না তো? দেখ সুদীপ, সেরকম কিছু থাকলে আমায় বলো। আমার কাছে লুকিয়ে তোমার কোনো লাভ হবে না। তোমাকে এখানে বয়ে নিয়ে এসেছি আমি। তোমার যাতে খারাপ না হয়, সেদিকটাও দেখব আমি।"
আমি একটু অস্থির গলায় বললাম, "আমি সত্যি বলছি। ওর প্রতি দূর্বলতাটা যেটুকু হয়েছিল, সেটুকু শুধু কাল রাত্রে। সকালে উঠে দেখলাম, ওই পীড়াপীড়ি করছে আমাকে। তুমি তাড়া না লাগালে হয়তো আসতেই পারতাম না কামিনীকে ছেড়ে। ও কেমন অস্বাভাবিক আচরণ করছিল আমার সঙ্গে। কোন বেশ্যার আচরণের মতন নয়। মনে হল, সবকিছুই ছেড়েছুড়ে দেবে আমারই জন্য। আমাকে বলল, আমার টাকা চাই না, কিছু চাই না। আমার শুধু তোমাকে চাই। আসবার সময় মোবাইল নম্বরটাও নিয়ে নিয়েছে জোড় করে। বলেছে সন্ধে হলেই আমাকে ফোন করবে। আমাকে যেতেই হবে ওখানে। সোমনাথদা তুমি কি আসবে আবার আমার সঙ্গে?"
ভূরু কুঁচকে সোমনাথদা খালি আমার দিকে তাকাচ্ছিল। বুঝতেই পারছিলাম, আমার মতই এক অতল জলে পড়েছে সোমনাথদা। সোনাগাছি তে এসে ফুর্তী মারার মজাটা এবার বেরিয়ে যাচ্ছে।
ব্যাপারটাকে সহজ করে নিয়ে বলল, "দূর! ওসব ভাব ভালবাসা আবার বেশ্যাদের হয় নাকি? এ সমস্ত তোমাকে ফাঁদে ফেলার ব্যাপার। দুদিন খালি হাতে সঙ্গ দিয়েই তারপর তোমাকে দুইবে। কামিনীর ঘরে রেগুলার যাওয়া আসা করলে তুমি ফতুর হয়ে যাবে সুদীপ। এসব চক্করে পা মাড়িও না।"
ঘুরে ফিরে আবার সেই কথাটাই চলে এল। সোমনাথদাকে বললাম, "আমার এখানে না এলেই বোধহয় ভাল হত। কেন যে তুমি আমায় নিয়ে এলে?"
একটু পরে সোমনাথদা আমাকে গাড়ীতে করে বাড়ী ছেড়ে দিল। কালরাতে বন্ধুর বাড়ীতে অনুষ্ঠান ছিল, এই বলে বেরিয়েছি। মা জানে আমি ওখান থেকেই ফিরছি। চোখে মুখে জল দিয়ে অল্প কিছু মুখে দিয়ে সারা দুপুরটাই পড়ে পড়ে ঘুমোলাম। ইচ্ছে করে মোবাইলটা সুইচ অফ করে দিয়েছি। কাজের জায়গা থেকে কেউ আমায় ডিস্টার্ব করতে পারবে না। মোবাইল বন্ধ থাকলে কামিনীর হাত থেকেও রেহাই পেয়ে যাব। ও আমাকে আর যোগাযোগ করতে পারবে না। সন্ধেবেলা সোনাগাছি আর যাব না, এটাই মনে মনে ঠিক করে নিয়েছি।
হঠাতই এক বেশ্যার রূপ যৌবনের অন্ধ মোহে তার প্রতি আকর্ষিত হয়ে গিয়েছিলাম। এখন অনেকটাই সুস্থ আমি। কামিনী যতই চেষ্টা করুক, আমাকে আর দূর্বল করে দিতে পারবে না। আমি মনে মনে নিজেকে খুব শক্ত করে নিয়েছি। কিছুতেই নিষিদ্ধ পল্লীতে আর ফিরে যাব না।
একটা সংকল্প আর জেদ নিয়েই মরার মতন পড়েছিলাম বিছানায়। আমার ফোন না পেয়ে সোমনাথদাও একটু চিন্তায় পড়ে গেছে। ট্যাক্সি নিয়ে চলে এল বাড়ীতে। আমাকে এসে বলল, "ফোনটা কি বন্ধ করে রেখেছ কামিনীর জন্য? আমি ভাবলাম, তুমি আবার চলে গেলে নাকি আমাকে বাদ দিয়েই? এত টেনশনের কি আছে? ও তো তোমার অনুমতি ছাড়া গলায় লটকাতে পারবে না তোমাকে। এক রাতে কামিনীকে যা উশুল করার করে নিয়েছ। এখন ঐ চ্যাপ্টার ক্লোজড্। এখন চলো পার্কস্ট্রীট থেকে একটু ঘুরে আসি। মনটাও ভালো হবে। পেটে দুতিন পেগ পড়লে শরীরও চাঙা হয়ে যাবে।"
আমাকে বলল, "ফোনটা অন করো তো। অত ভয় পেও না। কামিনী ফোন করলে আমি কথা বলব।"
মনের মধ্যে কিছু ইতস্তত ভাব নিয়েই ফোনটা আবার অন করলাম। কামিনী বলেছিল ঠিক সন্ধে হলেই আমাকে ফোন করবে, যদি আমি না পৌঁছোই ওখানে। ফোন অফ দেখে হয়তো হাল ছেড়ে দিয়েছে।
সোমনাথদা বলল, "কপাল ভাল তোমার। মায়া কেটে গেছে। দেখ হয়তো অন্য খদ্দের ধরে কামিনী এখন তার সেবা করছে। এসব ন্যাকা পোনামির কোনো মানে হয়? একটা বেশ্যা। সে আবার ভাব করবে তোমার সঙ্গে? কাল রাতে কামিনীকে নিয়ে নিশ্চই কোন প্রেম ভালবাসার স্বপ্ন দেখেছ। সারাদিন হয়ে গেল। এখনও কামিনীর জটটা মাথা থেকে একদম যাচ্ছে না তোমার।"
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
।। পাঁচ ।।
আমার যাবার তেমন ইচ্ছে ছিল না। সোমনাথদা প্রায় জোড় করেই নিয়ে গেল আমায়। তারাতলায় ঢুকে সবে একপেগ হুইস্কি নিয়ে বসেছি দুজনে। ফোনটা সামনেই রাখা রয়েছে টেবিলে। মাঝে মাঝে ফোনটার দিকে তাকাচ্ছি আর ভেতরটা কেমন যেন করছে। সোমনাথদাও আমার মতন তাকাচ্ছে। যেন কামিনীর ফোন এলেই ধরবে। আগ বাড়িয়ে কথা বলবে কামিনীর সঙ্গে। আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "তুমি কি গো? একটু মজা করব বলে তোমাকে ওখানে নিয়ে গেলাম, আর তুমি কিনা কামিনীর খপ্পরে পড়ে বসে আছ? একটা বেশ্যাকে সামলাতে পারলে না। তুমি কি?"
হুইস্কির গ্লাসে মুখ ঠেকিয়ে শুধু সোমনাথদার দিকে তাকাচ্ছি। কিন্তু আমার মনটা যেন কেমন চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। গোল্ডেন প্রোডাক্টস কোম্পানীর সেলস এক্সিকিউটিভ সুদীপ বসু এখন যাকে নিয়ে চিন্তা করছে, সে ঐ কাল রাতের শিহরণ তোলা নারী কামিনী। কামের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছিল শরীরে। কোথায় লাগে আর বাকীরা? একটা বারুদের স্তুপ কে নিয়ে দেশলাই কাঠির মতন জ্বলে উঠেছিলাম কালকে। এত সহজে কি ও আমাকে রেহাই দেবে? নাকি ভনিতা করেছে সকালবেলা। কামিনী আমার জন্য বেশ্যাবৃত্তি ছেড়ে দেবে। এ যেন অকল্পনীয় ব্যাপার।
সোমনাথদা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "তোমার মাথাটা সত্যিই গেছে সুদীপ। এখনও ঐ মাগীটাকে নিয়ে পড়ে রয়েছো?"
আমি কোন জবাব দিচ্ছি না দেখে সোমনাথদা বলল, "তোমার কি হয়েছে বলোতো? সেই থেকে দেখছি ওই একই টেনশনে। কামিনী যেন তোমার রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। তুমি কি ভয় পাচ্ছো? না সত্যি ওকে দিল দিয়ে বসে আছ? কামিনীকে সাথে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরতে গিয়ে মস্তি করবে? বলো তাহলে, আমি ব্যাবস্থা করে দেব? বীরজুকে একটা ফোন লাগাই। দেখি ও কি বলে? বীরজুর ফোন নম্বর আছে আমার কাছে।"
পকেট থেকে নিজের সেল ফোনটা বার করে কথা বলতেই যাচ্ছিল। তারপর হঠাৎ কি মনে করে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "কিন্তু সে তো অনেক খরচার ব্যাপার। তোমার তো পকেট খালি হয়ে যাবে সুদীপ।"
আমি সোমনাথদার দিকে তাকিয়ে বললাম, "কিন্ত কামিনী তো আর পয়সা নেবে না আমার কাছ থেকে। ও তো তাই বলেছে। এমনি এমনিই....."
আগেও বলেছি কথাটা। সোমনাথদার বিশ্বাস হয়নি। এবারও হল না। কিন্তু টেবিলে বসে এমন অট্টহাসি দিল, পাশের টেবিলে বসা লোকগুলোও আমাদের কে দেখতে লাগল অবাক চোখে। সোনাগাছির মাগী নিয়ে কি কান্ডটাই না হচ্ছে তারাতলায় বসে। যেন আলোচনার একটা চরম বিষয় পাওয়া গেছে। কামিনী সেই যে ঘাড়ে চেপে বসেছে, আর ঘাড় থেকে নামতেই চাইছে না। আমার অবস্থা শোচনীয়।
একটু রসিকতা করে সোমনাথদা বলল, "দাঁড়াও না। ওর ফোনটা আসতে দাও। তারপর কেমন রসিয়ে রসিয়ে কথা বলি ওর সাথে তুমি দেখো। ফ্রীতে বেশ্যাভোগ? আমিও চান্স নেব আজকে। যদি তোমার আপত্তি না থাকে।"
আমি এবার একটু সিরিয়াস হলাম। সোমনাথদাকে বললাম, "তুমি আমার অবস্থাটা বুঝতে পারছ না সোমনাথদা। ও আমার ফোন নম্বর নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। ফোনটা যখন তখন আসতে পারে। সবসময় কি ফোন অফ করে রেখে দেব? তোমাকে তো পাব না? ও যদি সত্যি ফোন করে?"
সোমনাথদা এবার একটু সিরিয়াস হল। বলল, "তোমার সত্যি বিশ্বাস আছে ও ফোন করতে পারে?"
আমি প্রশ্নটা সোমনাথদার দিকেই ছুঁড়ে দিলাম। বললাম, "ধরে নাও যদি করে?"
এবার একটু হতাশ গলায় আপেক্ষের সুরে সোমনাথদা বলল, তাহলে তো ধরতে হবে, "সত্যি তোমার গলায় লটকেছে। ফ্রীতে একটা চান্স নেব বলে ঠিক করেছিলাম। সেটা আর হল না।"
আমি এবার যথেষ্টই সিরিয়াস। সোমনাথদাকে বললাম, "আর যদি করে, জেনে রেখো এবার ওর এসপার কি ওসপার। সব টেনশন আমি দূর করে নেব নিজেই।"
চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকাচ্ছে সোমনাথদা, বলল, "কি করবে তুমি? এসপার ওসপার মানে?"
হুইস্কির গ্লাসটা মুখে ঠেকিয়ে বললাম, "ওকে ওখান থেকে তুলে নিয়ে আসব।"
প্রায় আঁতকে উঠল সোমনাথদা। বলল, "তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? কার সাথে পাঙ্গা নেবে তুমি? ওটা রেডলাইট এরিয়া। বাইরে থেকে মস্তানরা এসেও দাদাগিরি দেখাতে পারে না ওখানে। তোমাকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। চাবকে পিঠের ছাল তুলে নেবে তোমার। পাগল হয়েছ নাকি তুমি? তাছাড়া একটা বেশ্যাকে তুলে নিয়ে আসবে ঘরে? সুদীপ তোমার মা কি ভাববে? কি উল্টোপাল্টা ভাবছ? এক রাত্রিরের খোরাক ভেবে ওটা মন থেকে মুছে ফেল।"
আমি বললাম, "সত্যিই তো মন থেকে মুছে ফেলতে চাইছি। কিন্তু পারছি কোথায়?"
এবার আমার হাত দুটো ধরে ফেললো সোমনাথদা। কাতর স্বরে একেবারে অনুনয় বিনয় করে বড় ভাইয়ের মত বলল, "জীবনে অনেক মেয়ে জুটবে সুদীপ। আমি বলছি, ঐ বেশ্যাটাকে তুমি ছেড়ে দাও। একটা ভাল মেয়ে দেখে এবার বিয়ে করে ফেল। আমার সত্যি ভুল হয়ে গেছে, তোমাকে কাল সোনাগাছি নিয়ে গিয়ে। এখন বুঝতে পারছি।"
অযথা টেনশন বাড়িয়ে আমি সোমনাথদাকেও অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছি। বুঝতে পারছি মেয়েছেলের হাওয়া কোনদিন গায়ে লাগেনি বলেই আজ আমার এমন অবস্থা। সবাই ওখানে মস্তি করতে যায়। আর আমি কিনা ওকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছি।
আলোচনার বিষয়বস্তুটা পাল্টাতে চাইছিলাম। সোমনাথদা এবার নিজে থেকেই বলল, "এই কারনে আমি রাখী ছাড়া অন্য কারুর ঘরে যাই না। পুরো বেশ্যাপট্টীতে ওই শুধু অন্যরকম। কারুর সাথে ভণিতা করা ও পছন্দ করে না। মেয়েটা খুবই ভাল মেয়ে, জানো তো সুদীপ। ওর জন্য কষ্ট হয়। পাকে চক্রে এই পেশায় এসে অবতীর্ণ হয়েছে, নয়তো ওর মত মেয়েকে সত্যি ওখানে মানায় না। রাখীর জন্য আমার খুব মায়া হয়।"
আমি বললাম, "কাল তো ভালই কেটেছে তোমার রাতটা। একে ভাল মেয়ে, সুন্দরী। তারপর আবার তুমি বলছ ও একেবারেই অন্যরকম।"
সোমনাথদা বলল, "কেন তুমি কাল রাতে ওকে দেখে কিছু বোঝোনি? বুঝবে কি করে? এখনও তো কামিনীর নেশায় বুঁদ হয়ে আছো। কামিনী ছাড়া আর কি কাউকে ভাল লাগবে তোমার?"
একটু অবাক হলাম, সোমনাথদার কথা শুনে। বললাম, "আমার ভাল লাগা না লাগায় কি যায় আসে? যার সাথে তোমার এত মাখো মাখো সম্পর্ক, সেখানে আমিই বা মাথা গলাতে যাব কেন? তাছাড়া বেশ্যা মানে তো বেশ্যাই। হতে পারে ও একটু অন্য ধরনের। কাল আমারও ওকে ভাল লেগেছিল ওর আন্তরিকতায়। কিন্তু যার সাথে তোমার দৈহিক সম্পর্ক, তাকে তো তোমার একটু বেশী করে ভাল লাগবেই।"
সোমনাথদা হূইস্কির গ্লাসটা এক ঢোঁকে পুরো শেষ করে দিয়ে বলল, "দৈহিক সম্পর্ক? ভালোই বলেছো!"
আমি এবার বেশ অবাক হলাম, বললাম, "তার মানে তুমি সত্যি কিছু করোনি? কাল রাতে তো মশা মেরেছো শুনলাম। এর আগে কোনোদিন?"
সোমনাথদা মাথা নাড়লো, "না সুদীপ। রাখীর সঙ্গে কোনদিন আমার দৈহিক সম্পর্ক হয় নি।"
একেবারে তাজ্জব হয়ে গেলাম সোমনাদার কথা শুনে। বুড়ো লোকটা পয়সা খরচা করে সোনাগাছিতে যায় এমনি এমনি? শুধুই কি গল্প করার জন্য? এতো অবিশ্বাস্য ব্যাপার। রাখী একজন প্রস্টিটিউট। তার ওপর সোমনাথদা তার বাঁধা খদ্দের। এমন খদ্দেরের মুখে এসব কি কথা?
আমার দিকে তাকিয়ে সোমনাথদা বলল, "আমি জানি তোমার আমার কথা বিশ্বাস হবে না। কিন্তু আসল ব্যাপারটা তাই ই সুদীপ। আমি রাখীর একজন ভাল বন্ধু। এর বেশী কিছু নয়। ওকে জড়িয়ে ধরে মাঝে ওর গায়ে একটু চিমটি কেটে দিই, আদর করি, মস্করা করি। কিন্তু ইন্টারকোর্স রাখীর সাথে আমার কোনদিন হয় নি।"
আমি একটু আগ্রহের সাথেই বললাম, "কিন্তু কেন সোমনাথদা? তোমার আনন্দটাই তো তাহলে মাটি। শুধু গল্প করার জন্য তুমি একটা বেশ্যার কাছে যাও? এটা তো অদ্ভূত ব্যাপার। কাল রাতে তুমি তাহলে....."
সোমনাথদা বলল, "হ্যাঁ কিছুই করিনি আমি। আর করব না কোনদিন।"
আমি বললাম, "কিন্তু কেন?"
সোমনাথদা বললো, "ও আমাকে অন্যরকম চোখে দেখে সুদীপ। আমাকে শ্রদ্ধা করে। অনেক দূঃখ করে বলেছে ওর জীবনের কথা। রাখী এই জীবিকা থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। গণিকার জীবন ওরও ভাল লাগে না। কোন এক পুরুষকে ভালবেসে আজ ও এই জায়গায়, রাখী পড়াশুনা করেছে। ইচ্ছে করলে ও ভাল চাকরীও করতে পারত। নিয়তি ওকে টেনে আনল সোনাগাছির বেশ্যাপট্টীতে।"
আমি বললাম, "কিন্তু সোমনাথদা, তুমিও বলেছ, বেশ্যাদের ভাবভালবাসা কখনও হয় না। তাহলে রাখীর বেলায় কেন এটা?"
সোমনাথদা বললো, "রাখী যখন ভালবাসত কাউকে, তখনও ও বেশ্যা হয় নি। নিষ্পাপ মেয়েটির মধ্যে অগাধ ভালবাসা ছিল ঐ ছেলেটির জন্য। কিন্তু ছেলেটিই ওর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে।"
আমি অবাক হয়ে শুনছি সোমনাথদার কথা। বললাম, "তারপর?"
সোমনাথদা বলল, "তারপরটা খুব মর্মান্তিক সুদীপ। রাখী সেই ঘটনা যেদিন আমায় বলেছিল, ওর দুচোখে দেখেছিলাম জল। কান্না চেপে রাখতে পারেনি। কি সাংঘাতিক বর্বরতার কাজ করেছিল ঐ ছেলেটা।"
আমি জানতে চাইলাম, "কি করেছিল?"
সোমনাথদা খুলে বললো, "ছেলেটা রাখীকে একদিন বাড়ীতে ডেকে নিয়ে আসে। ওর দুজন বন্ধুও ছিল সেই সময়। ফাঁকা বাড়ীতে রাখীর সাথে প্রথমে খুব জমিয়ে গল্প করে ওরা। রাখীও বুঝতে পারেনি মতলবটা। রাখীর শরবতের সাথে ওরা কিছু মিশিয়ে দেয়। নিস্তেজ রাখীর শরীরটাকে বিছানাতে শুইয়ে একপ্রকার ছেলেটির উপস্থিতিতেই ওরা রাখীকে ''. করে। ছেলেটিরও এতে মদত ছিল। মন প্রাণ দিয়ে যাকে ভালবাসত, এমন বিশ্বাসঘাতকতায় রাখী ভীষন ভেঙে পড়ে। ভাবতেও পারেনি যাকে ভালবাসতো, সেই এরকম কাজ করে বসবে।
আমি বললাম, "ছেলেগুলোর কোনো সাজা হয় নি তারপরে?"
সোমনাথদা মাথা ঝাঁকালো, হ্যাঁ, জেল খাটছে এখন। সেই সাথে রাখীর প্রেমিকও। রাখীর বাড়ীতে রাখীর মা সব শুনে খুব ভেঙে পড়েন। পাড়াপড়শী জানতে পারে। তারপর থেকে রাখী কাউকে মুখ দেখাতে পারত না। একদিন মাকে ছেড়ে ও চলে আসে। দুসম্পর্কের এক বদমায়েশ মামা ছিল ওর। কোনরকম সহানূভূতি দেখানো তো দূরের কথা। অসহায় রাখীকে মামা বলে, তোর তো জীবনে আর মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই। ভালবেসে নিজের দেহটাকেই খুইয়ে বসেছিস তুই। এখন থেকে শরীর বেচে রোজগারের ধান্দা কর। আমি তোকে ভাল একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি। মামার হাত ধরেই রাখী তারপর থেকে সোনাগাছিতে। এখনও আমাকে বলে, সত্যি সেদিন নিজের জীবনের ওপর ঘেন্না ধরে গিয়েছিল সোমনাথদা। আমার ইচ্ছা না থাকলে মামা আমাকে জোড় করে এখানে নিয়ে আসতে পারত না। কিন্তু আজ বুঝি, জীবনটাকে যদি নতুন করে আবার ফিরে পেতাম। এই বেশ্যার জীবন আমার আর ভাল লাগে না। পয়সা নিয়ে লোককে শরীর বেচা। আমার শরীরতো এমনিই এঁটো হয়ে গেছে সোমনাথদা।"
কিছুক্ষণের জন্য সোমনাথদার কথা শুনে পুরো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। সোমনাথদা বলল, "আমিও তাই মেয়েটার কাছে যাই, কিন্তু গল্প ছাড়া কিছুই করি না। ও বাড়ীতে মাকে মাসে মাসে যে টাকাটা পাঠায়, ওটা আমিই দিই। মেয়েটার জন্য আমার সত্যি দয়া হয়।"
আমি চোখ কপালে তুললাম, "কি বলছ তুমি সোমনাথদা!"
সোমনাথদা স্মিত হাসলো, "সত্যিই বলছি।"
জীবনে এমন নিস্বার্থ, দয়ালু প্রকৃতির লোক দেখিনি। লোকটার প্রতি আমার ভালবাসা আর শ্রদ্ধাটা যেন নতুন করে তৈরী হল। কাল শুধু শুধু আমি সোমনাথদাকে ভুল বুঝেছিলাম, তার জন্য খুবই আফসোস হচ্ছে এখন।
সোমনাথদা বলল, "আমি রাখীকে একবার বলে দেখব নাকি? কামিনীর ব্যাপারটা। ও যদি শুনে সত্যি মিথ্যে ব্যাপারটা যাচাই করে দেয়।"
আমি সোমনাথদাকে বাধা দিলাম। বললাম, "না না রাখীকে বলতে যেও না। আমি নিজেই এ ব্যাপারটা সামাল দিয়ে দেব।"
স্টারলেট গার্ডেন থেকে আমরা দুজনে যখন মাল খেয়ে বেরোলাম, তখন অনেক রাত্রি। সোমনাথদা একটা ট্যাক্সি ধরল। বলল, "তোমাকে বাড়ীতে ড্রপ করে দিই?"
আমি বললাম, "না তার দরকার নেই। শুধু শুধু তোমাকে অনেকটা পথ ঘুরতে হবে। আমি একটা অন্য ট্যাক্সি ধরে নিচ্ছি।"
সোমনাথদা আমাকে গুডনাইট করে চলে গেল। যাবার সময় বলে গেল, "ভয় নেই। একটা দিক দিয়ে তুমি রেহাই পেলে। কামিনী তোমাকে যখন আর ফোন করেনি, তখন আর করবেও না। তুমি নিশ্চিন্তে এখন বাড়ী যাও।"
আমি বললাম, "হ্যাঁ মনে তো হচ্ছে তাই।"
একটা ট্যাক্সি আমিও ধরলাম। ড্রাইভারকে বললাম, বাড়ী যাব। মল্লিকবাজার হয়ে মৌলালি ধরতে। ও সেভাবেই রওনা দিল। একটা সিগারেট ধরিয়ে নিশ্চিন্ত মনে সুখটান দিলাম। হাতে নিয়ে মোবাইলটা নড়াচড়া করছি আর ভাবছি টেনশন যেটা ছিল, সেটা অনেকটাই কেটে গেছে এখন। কামিনী নিজেই ওর ভূতটা আমার ঘাড় থেকে নামিয়ে দিয়েছে।
গাড়ী মল্লিকবাজার ক্রশ করে মৌলালির দিকে যাচ্ছে, আমার একটু চোখে ঘুম ঘুম এসেছে। গাড়ীর জানলা দিয়ে বাইরের হাওয়া এসে লাগছে মুখে। চোখটা বুজে সীটে গা টা এলিয়ে দিয়েছিলাম। এমন সময়ই ফোনটা হঠাৎই বাজতে লাগল। চোখ খুলে ধড়মড় করে সীটের ওপর বসে পড়েছি। কে ফোন করল?
কানে নিয়ে হ্যালো বলতেই, উল্টো দিক দিয়ে কন্ঠস্বর ভেসে এল, "আমি কামিনী বলছি। কি ব্যাপার? ফোনটা অফ করে রেখেছিলে? আমি তো সেই সন্ধে থেকে তোমাকে চেষ্টা করে যাচ্ছি। বলেছিলাম না তোমাকে সন্ধে হলেই তোমাকে চলে আসতে। কোথায় এখন তুমি? আমি বসে আছি তোমার জন্য। শীগগীর চলে এসো এক্ষুনি।"
কামিনীর ফোন পেয়ে আমার ভেতরটা ছ্যাঁক করে উঠল। শেষ পর্যন্ত যে ওর ফোনটা আসবে, আমি কল্পনাও করতে পারিনি। এ কি খেলা শুরু হয়েছে আমার জীবন নিয়ে? মেয়েছেলেকে টাকা দিয়ে ফুর্তী করেছি, তারপরেও আমার ঘাড়ে চেপে বসেছে, এখনও পিছু ছাড়ছে না, কোন মানে হয়?
কামিনী যেন নাছোড়বান্দা, আমাকে বলল, "তুমি আসবে কিনা বলো? নইলে....."
আমি এবার একটু রেগে গেলাম, বললাম, "নইলে মানে? কি করবে তুমি?"
কামিনী বলল, "আমি অনেক কিছুই করতে পারি।"
ওকে ফোনে বললাম, "আমার যাওয়া না যাওয়াটা সম্পূর্ণ আমার নিজের ইচ্ছের ওপর। তাছাড়া....."
কামিনী বলল, "তুমি কিন্তু আমাকে কথা দিয়েছিলে। সন্ধে হলেই চলে আসবে।"
ফোনটা ধরে ট্যাক্সির মধ্যেই একটু উত্তেজিত হয়ে গেলাম, বললাম, "কথা দিলেই তো সব সময় কথা রাখা যায় না। তাছাড়া বাড়ীতে আমার মা রয়েছেন, তাকে ফেলে রোজ রোজ বাইরে কাটানো আমার সম্ভব নয়। তোমার জন্য আমি মাকে অসুবিধেয় ফেলতে পারব না।"
কামিনী এবার একটু ব্যাঙ্গ করল আমাকে, বলল, "মায়ের প্রতি অতই দরদ যখন মায়ের আঁচলের তলাতেই পড়ে থাকতে পারতে, ফুর্তী লোটাতে সোনাগাছি এলে কেন?"
ওর কথা শুনে রাগে মাথা গরম হয়ে গেল আমার, মাথায় রক্ত চড়ে গেছে, কামিনীকে বললাম, "মুখ সামলে কথা বলো কামিনী, তোমার সাথে ফুর্তী করেছি বিনা পয়সায় নয়। পাঁচ হাজার টাকা গুনে গুনে দিয়েছি তোমায়, শরীরে বেচে ধান্দা করো, তোমাদের মুখে আবার এসব কথা কেন?"
ট্যাক্সিওয়ালাও বুঝলো, কোন একটা মেয়ের সাথে কথা বলতে বলতে, আমি এমন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছি, আমার রীতিমতন লড়াই হচ্ছে তার সাথে, শেষ পর্যন্ত মেয়েটাকে আমি না গালাগাল দিয়ে বসি।
কামিনী বলল, "ফোনটা অফ করে রেখে দিয়েছিলে কেন? আমার ভয়ে?"
আমি বললাম, "তা কেন? আমার শরীরটা আসলে ভাল ছিল না, সন্ধেবেলা শুয়েছিলাম।"
কামিনী বললো, "তাহলে এখন কোথায় তুমি?"
আমি বললাম, "একটা কাজে বেরিয়েছিলাম, কাজটা সেরে এখন বাড়ী ফিরছি।"
কামিনী বলল, "এসো না রাজা। দেখো তোমার জন্য তোমার রানী কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে।"
একটু আগে ওর কথার মধ্যে যে ঝাঁঝালো ভাবটা ছিল এখন সেটা পাল্টে গেল নিমেষেই। ফোনে রীতিমতন কাকুতি মিনতি করে আমার মনটাকে আবার দূর্বল করে দেবার চেষ্টা করতে লাগল কামিনী।
আমাকে বলতে লাগল, "তোমাকে না দেখতে পেলে আমার সারারাত ঘুমই হবে না ডারলিং। এই কামিনী এখন তোমার দিওয়ানী হয়ে গেছে। তোমার জন্য বেশ্যাবৃত্তি ছেড়ে দিলাম, আর তুমি কিনা আমার মনটাই বুঝতে পারলে না?"
আমি চুপ করে শুনছি ওর কথা, সোমনাথদার কথাটা মনে পড়ল, ওকে বললাম, "সবই বুঝতে পারছি কামিনী, তোমার আমাকে ভাল লেগেছে, আমারও তোমাকে। কিন্তু তুমি যে পেশাটার সঙ্গে জড়িয়ে আছ, সেটা থেকে বেরোনো কি সম্ভব? তোমার জগৎটা একরকম, আর আমারটা আর এক রকম। সম্পূর্ণ আলাদা পরিবেশের মানু্ষ আমরা দুজন, তোমাকে নিয়ে ঘর বাঁধতে হলে, আমাকে মুখ লুকিয়ে থাকতে হবে অনেকের কাছে, তাছাড়া তুমিই বা ওখান থেকে আসবে কি করে? রোজ রোজ ভালবাসার খেলা খেলতে আমি তোমার ওখানে যাব? এও কি সম্ভব?"
কামিনী বলল, "রোজ তোমাকে আসতে হবে না রাজা, অন্তত আজকের রাতটার জন্য তো আসো? তোমাকে দেখতে না পেলে মরে যাব আমি। সারারাত ছটফট করে মরব, তারপরে হয়তো মনের দূঃখে কিছু একটা করে বসবো, জেনে রেখো, তুমি যখন নেই এই কামিনীও তোমার নেই। তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারব না রাজা, তুমি আমার জান, আমার সব কিছু।"
রাত বিরেতে এ কি ঝেমেলা। মেয়েটা যে দেখছি সত্যি সত্যি দিল দিয়ে বসে আছে আমাকে। জীবনে চরম পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে কি করব, তাই ভাবছি। আমার মনে হল, এত জোড় দিয়ে যখন বলছে, তারমানে কামিনীর ভালবাসার মধ্যে কোন খাদ নেই।
ফোনটা তখনও ছাড়ে নি ও, আমাকে শেষ বারের মতন বলল, "তুমি আসছো তো তাহলে? আমি অপেক্ষা করছি তোমার জন্য।"
কঠিন একটা সিদ্ধান্ত নিতে সত্যি কষ্ট হচ্ছিল আমার, মনের মধ্যে যে আশঙ্কাটা রয়ে গিয়েছিল, সেটাই কামিনী বাস্তব করে দেখালো। সোমনাথদার কথাও সত্যি হল না, আমার জীবনে সবকিছুই যেন কেমন ওলোটপালোট হয়ে গেল।
বাড়ীতে মা আমাকে দেখতে না পেলে আবার চিন্তা করবে, কামিনীকে বললাম, "ঠিক আছে আমি মায়ের সাথে একটু দেখা করে তারপর তোমার কাছে আসছি।"
ট্যাক্সি ততক্ষণে বাড়ীর কাছে এসে গেছে, আমি ট্যাক্সিটাকে ছাড়লাম না। ড্রাইভারটা আমার মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে, ওকে বললাম, "একটু দাঁড়ান আমি ভেতর থেকে এক্ষুনি আসছি।"
মায়ের সাথে দেখা করলাম, মা'কে বললাম, "মা একটু কাজে বেরোচ্ছি, অফিসের কাজে একটু শিলিগুড়ি যেতে হবে আমাকে।"
মা বলল, "সেকীরে এত রাত্রে? হঠাৎ?"
আমি বললাম, "কাজ পড়েছে মা। অফিস থেকে ফোন এসেছিল, এক্ষুনি বাস বা ট্রেন যা হোক ধরে যেতে হবে, কাল সকালে গিয়ে পৌঁছোবো, সারাদিন কাল শিলিগুড়িতে কাজ করে তারপর আবার ব্যাক করব।"
এক বেশ্যার ভালবাসার মোহে আবদ্ধ হয়ে আমাকে মায়ের কাছে মিথ্যে কথাটা বলতে হল, কাজের নাম করে আমি আবার সেই সোনাগাছিতেই যাচ্ছি, মা'কে বুঝতেও দিলাম না।
একটা ছোট্ট সুটকেশের মধ্যে কিছু জামাকাপড় নিয়ে নিলাম। মা বুঝল, সত্যিই তার মানে আমি অফিসের কাজেই যাচ্ছি, এই সুদীপ বসুর গন্তব্যস্থল যে শিলিগুড়ি নয়, সোনাগাছি, সেটা মা ঘূণাক্ষরেও টের পেল না।
ট্যাক্সিওয়ালাকে গাড়ীতে উঠে বললাম, "চলুন আমি এখন সোনাগাছি যাব।"
রীতিমতন হকচকিয়ে যাবার মতন অবস্থা, তবুও ড্রাইভারটা আমাকে না করল না, গাড়ী ঘুরিয়ে সোনাগাছির দিকে রওনা দিয়েছি, মনে হল, ফয়সলাটা আজ আমাকে ওখানে গিয়ে করতেই হবে, রোজ রোজ কামিনী যদি ফোন করে বিব্রত করে আমায়, আমার কাজকর্ম সব ব্যহত হবে। স্বাভাবিক জীবনে কালো অন্ধকার নেমে আসবে আমার। আমি কামিনীকে বোঝাবো, "রোজ রোজ এখানে আসা তো আমার পক্ষে সম্ভব নয়, তার চেয়ে তুমিই সব পোঁটলা পুঁটলি বেঁধে চলো আমার সাথে, আমি রাজরানী করে রাখব তোমাকে। ভালবাসার জন্য এই নোংরা জায়গাটাকে কাল থেকে ছাড়তেই হবে তোমাকে। তুমি যদি না চলো, তাহলে জেনে রেখো এই সুদীপ বসুও কোনদিন আসবে না তোমার ডাকে। হাজার বার চেষ্টা করেও এই বান্দাকে তখন টলাতে পারবে না তুমি। আজ এলাম, এটাই আমার শেষ আসা তোমার কাছে!"
সোমনাথদা আমাকে বলেছিল, ওখানে গিয়ে দাদাগিরিটা দেখাতে যেও না, সেটাও আমার মাথায় ছিল, ঠিক করলাম, কামিনীকে ভালভাবে বোঝাতে হবে ব্যাপারটা। ও যেন আমার ইচ্ছেটাকে মেনে নিতে রাজী হয়, ভালবাসার অগ্নিপরীক্ষা এবার কামিনীকেই দিতে হবে, আমার জন্য। নিজের খোলস ছেড়ে কামিনী কিভাবে গন্ডী ছেড়ে বাইরে বেরোয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ট্যাক্সি গিয়ে পৌঁছোলো সোনাগাছিতে। আমি ট্যাক্সি থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে কামিনীর ঘরের দিকে এগোতে লাগলাম। আশে পাশে বীরজু, চিন্না, মোটাসোটা দালালগুলোর কাউকেই তেমন নজর পড়ল না। বুঝলাম অন্য খদ্দেরকে নিয়ে ধান্দা করছে মনে হয়, নয়তো মদ ভাঙ খেয়ে পড়ে আছে অন্য কোথাও, আমার ওদিকে নজর করে লাভ নেই।
সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে সেই বেশ্যাটাকে আবার নজর পড়ল, যে আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়েছিল ঘরের মধ্যে। সামনা সামনি পড়ে চোখাচুখি হতেই ও বলল, "আরিব্বাস ফির আ গ্যয়া? কউন জাদু কিয়া রে তেরে পর? যারা হাম কো ভী বাতানা?" বলেই আমার পথ আগলে দাঁড়ালো।
আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, "আমাকে যেতে দাও, আমি কামিনীর ঘরে যাব।"
মেয়েটা আমার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে ফেললো। বলল, "কামিনী? কামিনী জাদু কিয়া তেরে পর? উসকো সাম্ভাল নেহী পায়েগা তু। জরিলা সাপ হ্যায় ও। নাগিন হ্যায় নাগিন। খা যায়েগি তেরে কো।"
একটা বেশ্যা হয়ে আর একটা বেশ্যার সন্মন্ধে খারাপ খারাপ কথা বলছে, এরা মনে হয় খদ্দের নিয়ে নিজেদের মধ্যে রেশারেশি করে, কামিনীর শরীরের মধ্যে যে চোখ ধাঁধানো ব্যাপারটা আছে, সেটা বাকীদের নেই বলেই কি এত রাগ? সব ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছে?
মেয়েটা আমাকে রাস্তাই ছাড়ত না, যদি না আর একজন খদ্দের চলে না আসত তক্ষুনি। আমাকে ছেড়ে দিয়ে ঐ রেন্ডীটা আর একজনকে নিয়ে পড়ল। আমি রেহাই পেয়ে তাড়াতাড়ি কামিনীর ঘরের সামনে চলে এলাম।
ঘরটা চিনে নিতে আমার অসুবিধে হয় নি। কাল রাতে এই ঘরেই আমার কামলালসা চরিতার্থ করেছি, আজ সুদীপ বসু কোন কামলালসা পূরণ করার জন্য এখানে আসেনি, এসেছে কামিনীকে বোঝাতে, তার জীবনটাকে নিয়ে খেলা করার অধিকার একটা বেশ্যার নেই। সে যদি তাকে সত্যিই ভালবাসে, তাহলে সব ছেড়েছুড়ে চলুক এখান থেকে। আজই একশ শতাংশ কথা দিতে হবে কামিনীকে, নইলে তাকে ভুলে যাওয়া ছাড়া আমার আর কোন রাস্তা নেই।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 266
Threads: 1
Likes Received: 246 in 166 posts
Likes Given: 1,782
Joined: Apr 2019
Reputation:
9
•
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
26-08-2020, 07:35 PM
(This post was last modified: 26-08-2020, 07:50 PM by Kolir kesto. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
।। ছয় ।।
দরজাটা দুবার ধাক্কা মারতেই কামিনী এসে খুললো। দেখলাম আগুনের মত শরীরটা নিয়ে আমার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে কামিনী। সেই সাজ, সেই চুলের বাহার, কিন্তু কোন এক ভালবাসার মানুষকে পাওয়ার জন্য ওর মনটা আজ ভীষন ছটফটে, দেখে মনে হচ্ছে, এত সুন্দর শরীরটা থাকতেও সারাটা দিন উপোস করে মরেছে শুধু আমারই জন্য।
কামিনী আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে যে চুমুটা খেল, সেটা অনেকদিন মনে থাকবে। ওর শরীর আমাকে দেখা মাত্রই তপ্ত হয়ে উঠেছে, কামিনীর চুম্বনের মধ্যে ভীষন তীব্রতা অনুভব করলাম, আমার ঠোঁটকে একটা মেয়ে কামড়ে ধরে ডাঁটা চোষার মতন চুষছে, বুঝলাম এখন কোন কথা নয়, আগে যেন শরীরি খেলাতেই ভেসে যেতে চাইছে ওর মন প্রাণ। কামিনী আমাকে আসল কথাটা বলতেই দিতে চাইছে না, শুরুতেই জমিয়ে দিতে চাইছে খেলা। প্রথমে ঠোঁট, তারপরে কামড়ে ধরে আমার পুরো শরীরটাকেই ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া, দুই স্তন মুখে তুলে দিয়ে সোহাগিনীর মতন আমার বোঁটা চোষাকে উপভোগ করা, তারপর বিছানায় সেই মন মাতানো যৌনসঙ্গম, একে অন্যের শরীরকে তুষ্ট করার প্রয়াস। আজ যেন কোন মেয়েছেলে ক্ষেপে উঠেছে চরম ভাবে, এক্ষুনি তার শরীরের অভ্যন্তরে আমাকে সে আশ্রয় দিতে চায়, এত কামনার হাহাকার, কামিনীকে আমার এই মূহূর্তে আমার তৃপ্তি দেওয়া ছাড়া আর কোন গতি নেই।
দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে উলঙ্গ হতে বেশী সময় নিল না কামিনী। আমার ভেতরে ভেতরে যে দুশ্চিন্তা বাড়ছে ওকে নিয়ে সেটা ব্যাক্ত করতেও সময় দিল না কামিনী। নিজের জামা প্যান্ট খোলার গরজ যতটা আমার, তার চেয়েও বেশী গরজ দেখিয়ে নিজেই হাত লাগিয়ে জামার বোতামগুলো খুলতে লাগল পটপট করে।
ওকে বললাম, "আমাকে একটু বসতেও দেবে না কামিনী? এত তাড়াতাড়ি?"
কামিনী আমার জামা খুলে ওর নগ্ন স্তন আমার মুখে তুলে দিয়ে বলল, "বসা, কথা, সব হবে ডারলিং, আগে এখন শুধু আমাদের শোবার কাজটা করি, রাতটায় অনেক কষ্টে পেয়েছি তোমাকে, এখন শুধু তুমি আর আমি, আমার শরীরে তুমি, আর তোমার শরীরে আমি, এই নিয়ে চলুক তোমার আমার ভালবাসাবাসির খেলা। কথা তো আজীবন পড়ে আছে শোনা, আদর দিয়ে তোমার কামিনীকে একটু সুখ দাও এখন, তারপর তুমি আমি গল্প করব, সারা রাত ধরে। কামিনী তো এখন শুধু তোমারই হয়ে গেছে কাল রাত থেকে।"
প্রতিরাতেই নতুন নতুন পুরুষমানুষের সাথে যে সঙ্গ করে, শুধুমাত্র একজনের ভালবাসা পাওয়ার জন্য সে এত কাতর, আমার সবকিছুই যেন স্বপ্ন দেখার মতন মনে হচ্ছিল। তবু অবাস্তব কে বাস্তবে পরিণত করতে শুরু করেছে কামিনী, ও সেইভাবেই আমাকে ওর স্তন চোষাতে শুরু করল। বোঁটাটা মুখের মধ্যে পুরে দিয়ে শুধু ঠেলে ঠেলে বারবার চুবিয়ে দিতে চাইল ঠোঁটের সাথে। যেন স্তন বিলোনোর এমন উজাড় করা ভঙ্গীমাকে দেখে মনে হবে, সে এক নির্লজ্জ নারী, পুরুষ মানুষকে মাদী মাকড়শার মতন গ্রাস করে নিতে তার মতন দ্বিতীয় কেউ নেই।
কামানের গোলার মতন স্তন দুটো চুষতে চুষতে আমার সেক্স এবার বাড়তে লাগল, বোঁটা দুটোর ওপরে আমার জিভের লালা লেগে ভিজে যাচ্ছে ক্রমশ, কামিনীর নিসঙ্কোচে স্তন খাওয়ানো তোলপাড় করছে আমার শরীরটাকে, মনে হচ্ছে বোঁটাতে কামিনী যেন মধু লাগিয়ে রেখেছে আমি যাবার আগে থেকেই, এত মিষ্টি স্তন। চুষতে চুষতে, আমার শৈশব ফিরে এসেছে আবার।
ওর বুক চুষিয়ে প্রবল ভাবে আমাকে কামে আসক্ত করে কামিনী এবার প্যান্ট খুলে আমাকে নগ্ন করে দিল, আমার লিঙ্গ মুখে পুরে চুষতে লাগল পাকা যৌনকর্ম্মীর মতন। চোষক, তার সাধের ডান্ডাকে মুখে পুরে চুষছে, আমি এক নীরব দর্শক, শুধু হাত দিয়ে কামিনীর মাথাটা দুপাশ থেকে ধরে ওর লিঙ্গ চোষার প্রক্রিয়াকে উপভোগ করতে লাগলাম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। কামিনী আমার লিঙ্গকে মেঝেতে হাঁটু মুড়ে বসে চুষে চুষেও ক্ষান্ত হল না, ও এবার আমাকে বিছানায় শুইয়ে দিল। শরীরটাকে কোনমতেই নড়াচড়া করতে না দিয়ে খাটের একপাশে পা ঝুলিয়ে, আমার লিঙ্গ মুখে নিয়ে চুষতে লাগল অবিরাম ভাবে। নিজের কামের আগুনকে জ্বালিয়ে দিয়ে ছাই করে দিতে চাইছে আমার শরীরটাকে। লিঙ্গতে কামিনীর নিপুণ জিভের কারুকার্য, আমার শিরা উপশিরায় ছড়াচ্ছে উত্তেজনার অস্বাভাবিক রক্তশ্রোত, আমি পারছি না আর, এই মূহূর্তে কামিনী আমাকে ওর শরীরে বরণ করে না নিলে, আমি পারব না এই রক্তশ্রোতকে শেষপর্যন্ত সামাল দিতে।
স্তনের পরে নিজের যোনী চোষানোর তাগিদটাও আমি কামিনীর মধ্যে এবার লক্ষ্য করলাম। আমাকে স্বতস্ফূর্ত ভাবে নিজের কামরস এক উন্মাদিনী কামাগ্নির মতন চোষাতে লাগল কামিনী। আমি ওর যোনীভান্ডার জিভ দিয়ে ঘাঁটছি, চুষছি, চাটছি, ক্লিটোরিস নিয়ে খেলা করছি, কামিনী সেই খেলায় পুরোদস্তুর সহযোগীতা করে যাচ্ছে আমার সাথে।
এক নাগাড়ে অনেক্ষণ ধরে নিজের কামরস পান করিয়ে এবার আমাকে নিজের শরীরে প্রবেশ করিয়ে নিল কামিনী। টাইফুন ঝড় শুরু করে ওর শরীরে আমি তান্ডব বইয়ে দিতে লাগলাম, আমার প্রতিটি আঘাত থেকে মধুর ধ্বনি বেরিয়ে আসছে, বর্ষার ফলার মতন গেঁথে যাচ্ছে লিঙ্গ। কামিনী শুধু আমাকে বলল, তোমার শরীরে যত শক্তি আছে, সবটুকু প্রয়োগ করে আজ এই কামিনীকে শুধুই আঘাত দাও রাজা। কামিনী আঘাত সহ্য করবে এই আঘাত, তোমার এই ভালবাসাকে সমস্ত শক্তি দিয়ে আজ বরণ করে নেবে কামিনী, মধুর যন্ত্রণাটাকে কাল রাতের মতই পাওয়ার জন্য আমি যে সারাদিন শুধুই অপেক্ষা করেছি তোমারই জন্য। এখন করো আমাকে আঘাত, চিরে দাও, আরও তছনছ করে দাও ভেতরটা।
প্রবল কামনায় লিঙ্গের আঘাত সহ্য করতে করতে ও আমার ঠোঁট ঠোঁটে নিয়ে চুষতে লাগল, আঘাতে আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েও উদ্দীপনাকে চরম ভাবে জীইয়ে রেখে আমাকে আরও উৎসাহ প্রদান করতে লাগল কামিনী। টাইফুনের ঝড় শুরু হয়ে যখন থামলো, তখন আমার রসালো বীর্যে থক থক করছে কামিনীর যোনীর ভেতরটা। কামিনী আমাকে জড়িয়ে রেখেছে সাপের মতন, নিস্তেজ হওয়া লিঙ্গটাকে তখনও আঁকড়ে রেখে ভালবাসার চুম্বন এঁকে যাচ্ছে ঠোঁটে। দেহ পসারিনী তার নতুন খদ্দেরকে নিয়ে অন্য খেলায় মেতে উঠেছে। এ খেলার শুরুর শেষ আদৌ কি হবে? আমি তখনও তা জানি না।
সারারাত ধরে কামিনীর সাথে ভরপুর আনন্দ করে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। যে কথাটা বলব ঠিক করে আমি এসেছিলাম, সেটা আর বলা হল না। শরীর মন উজাড় করে, অফুরন্ত দেহ সুখ দিয়ে কামিনী এমন মাতিয়ে রাখলো আমাকে, আমার একবারও মনে হল না, নিষিদ্ধপল্লীতে এসে এক বেশ্যার সাথে দ্বিতীয়বার আবার যৌনসঙ্গম করলাম আমি, তার মানে এটাই আমার শখ মেটানোর চির ঠিকানা হতে পারে না। সুদীপ বসুর চাকরী আছে, ঘরে মা আছে, শুধু শুধু একটা বেশ্যার টানে আমি প্রতিদিন এখানে আসব? অথচ কামিনীকে এই মূহূর্তে আমি এখান থেকে কিছুতেই বার করে নিয়ে যেতে পারব না। আমাকে আরও কিছুদিন এরজন্য অপেক্ষা করতে হবে।
সকালবেলা ও আমাকে আদর করতে করতে বলল, "এত তাড়া কিসের আমার জান্? এখান থেকে বেরোতে হলে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে বেরোতে হবে আমাদের। অত সহজে আমাকে নিয়ে যেতে পারবে না তুমি। দেখছ না কেমন কুকুরের মতন পাহাড়া দেয় ঔ ষন্ডাগুলো। আমার একটা শত্রু আছে এখানে। ওর চোখে ধূলো দিয়ে আমাদেরকে এখান থেকে যেতে হবে।"
জিজ্ঞেস করলাম, "কে সে?"
কামিনী বলল, "ওর নাম বাবুয়া। ঐ আমাকে এনেছে এখানে। আমার ঘরে লোক থাকলে ও কিছু বলবে না। কিন্তু আমি এখান থেকে পালালেই সর্বনাশ।"
আমাকে বলল, "তুমি চিন্তা কেন করছ? আমি আছি না তোমার সাথে? এমনি কি ছেড়ে দিলাম খদ্দেরগুলোকে? এ আমি কার জন্য করলাম রাজা? শুধু তো তোমারই জন্য?"
কামিনী আমাকে কথা দিয়ে ওর প্রতি আমার বিশ্বাসটাকে আরও গাঢ় করে দিল, ভালবাসা দিয়ে শুধু ক্ষণে ক্ষণে চুমু খাচ্ছিল ঠোঁটে, যেন আমার জন্য সোনাগাছি ছেড়ে দিতে ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কামিনী অনুরোধ করল আমায়, বলল, এই কটাদিন শুধু ওর কথা ভেবেই আমাকে সোনাগাছিতে বারে বারে আসতে, আমি কামিনীর জন্য শুধু আসব, আর কামিনী অপেক্ষা করবে আমারই জন্য। তারপর সুযোগ বুঝে কামিনী একদিন পাততাড়ি গোটাবে এখান থেকে। শুধু তারজন্যই আর কটা দিনের অপেক্ষা।
পরের দিনটাও একই ভাবে কাটল আমাদের দুজনের। আমাকে বাড়ী ফিরতে দিল না কামিনী। নিজের কাছেই রাখলো। রাত্রে আবার সেই একে অপরের দেহের মধ্যে মিশে যাওয়া। কোন বাঁধা নেই, আড়ালে কারুর সমালোচনা করার ভয় নেই, আমি এখন এক বেশ্যার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি, আমার জীবনে কামিনীর ভূমিকাটাই এখন প্রকট। ও যেভাবে আমাকে চালাচ্ছে, আমিও সেভাবেই চলছি। বাড়ীতে যে মা তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে চিন্তা করছে, কামিনীর শরীরি মায়ায় জড়িয়ে আমি সেটাও ভুলে গেছি। দিন ফুরোলেই রাত শুরু হচ্ছে, আমি ট্যাক্সি নিয়ে চলে আসছি সোনাগাছিতে। কামিনীর কাছে এসে আমার শুধু ট্যাক্সিভাড়াটাই লাগছে, নিয়মিত ওর সাথে সঙ্গম করছি, তার জন্য কামিনীকে কোন পারিশ্রমিক দেবার ব্যাপার নেই। মুফতে আমার একটা শরীর জুটেছে কপালে, যাকে নিয়ে শুধুই ভোগ করা ছাড়া আমি আর কিছুই ভাবতে পারছিনা জীবনে।
একদিনের জন্যই শুধু বাড়ী গিয়েছিলাম মাঝখানে, মা'কে বলে এলাম, "মা, অফিসের কাজে আমাকে বাইরে যেতে হচ্ছে কদিনের জন্য। ততদিন আমাকে নিয়ে তুমি বেশী চিন্তা কোরো না।"
ছেলে কোথায় যাচ্ছে মা জানে না। অফিসের সময়টুকু বাদ দিয়ে আমার মন পড়ে আছে সবসময় কামিনীর জন্য। এই কদিনে আমি সোমনাথদাকেও ভুলে গেছি, দেখা সাক্ষাত নেই, কথা বার্তাও নেই, সোমনাথদাও আমাকে ফোন করে কিছুতেই পাচ্ছে না। সুদীপ বসু হঠাৎ গায়েব, শনিবারের তারাতলাতে, যেখানে আমাদের অতি প্রিয় ঠেক। সেখানেও দুটো শনিবার পেরিয়ে গেল, অথচ আমি ওখানে আর কিছুতেই যাচ্ছি না।
বুঝতে পারছি না, এই কামিনীর নেশা আমার জীবনটাকে কোনদিকে নিয়ে যাচ্ছে, একটা শরীরের মধ্যে শুধুই ঝড়। সেই ঝড়ে দিগভ্রষ্ট, বিভ্রান্ত আমি। কামিনীকে আদৌ সোনাগাছি থেকে আমি বের করে নিয়ে আসতে পারব কিনা আমি জানি না। অথচ ওরই মায়ায় আমার সবকিছু পন্ড হওয়ার মুখে, চাকরীতেও মন দিতে পারছি না, কামিনী কি করছে? ওকে নিয়ে শুধুই স্বপ্ন দেখা, যেন এগুলোই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আমার মনকে।
সোমনাথদা যতবারই আমাকে ফোনে ধরার চেষ্টা করেছে, আমি টেলিফোন রিসিভ করিনি, কখনও বা অন্য নম্বর থেকে ফোন করেছে সোমনাথদা, গলার আওয়াজ শুনে আমি লাইন কেটে দিয়েছি, লোকটার সঙ্গে সামান্য ভদ্রতাটুকু দেখানোরও প্রয়োজন মনে করিনি। পাছে সোমনাথদা সব শুনে আমাকে না করবে, কামিনীর মায়াজাল থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বলবে আমাকে, আমি সব জেনেবুঝেই সোমনাথদাকে অ্যাভোয়েড করছি। দুটো তিনটে দিন শুধু আশা নিয়ে বসে থাকা, কামিনী বলেছে সামনের বুধবারই সোনাগাছি থেকে আমার সাথে বেরিয়ে আসবে, তারজন্য সমস্ত রকম প্ল্যান নাকি তার ছকা হয়ে গেছে। শত্রুপক্ষ ঘূণাক্ষরেও টের পাবে না, সেভাবেই ফন্দী এঁটেছে কামিনী। অপেক্ষা করছি সেই মূহূর্তটার জন্য। কবে কামিনী আমার ঘরনী হবে? তখনই আমি সোমনাথদার ফোন ধরব, তার আগে কিছুতেই নয়।
অফিস থেকে আজ একটু তাড়াতাড়ি বেরোবো ঠিক করেছি। কামিনী বলেছে ৬টার মধ্যে ওর ডেরায় পৌঁছে যেতে। ধর্মতলা থেকে ওর জন্য একটা শাড়ী কিনে নিয়ে যেতে বলেছে, সেই মত অফিসে একটা পেমেন্ট জমা করে তাড়াহূড়ো করে বেরোবার তোড়জোড় করছি, এমন সময় সোমনাথদাকে অফিসে এসে হাজির। হঠাৎই অফিসে এভাবে দেখা হয়ে যাবে আমি যেন তারজন্য প্রস্তুত ছিলাম না। কোনরকমে মুখ লুকিয়ে পালানোর চেষ্টা করছি, সোমনাথদা ধরে ফেললো আমাকে।
অবাক গলায় বললো সোমনাথদা, "কি ব্যাপার সুদীপ? পালিয়ে কোথায় যাচ্ছো? হঠাৎ তোমার কোন হদিশ নেই, ফোন ধরছ না, কথা বলছ না কি হয়েছে তোমার?"
আমি একটু ইতস্তত ভাব নিয়ে সোমনাথদাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছি, সোমনাথদা বলল, "বয়স তো আমার অনেক হল সুদীপ। না বললেও বুঝতে অসুবিধে হয় না, তুমি কোন রমনীকে নিয়ে এখন ব্যস্ত আছো, তোমার হাবভাব দেখে তো তাই মনে হচ্ছে।"
আমি বললাম, "আসলে তা নয় সোমনাথদা, অফিসের কাজের চাপটা প্রচন্ড বেড়েছে তাই এই কটা দিন কোন কথা হয়নি আমাদের মধ্যে। আমি আর কদিন পরেই তোমাকে ফোন করতাম।"
সোমনাথদা বলল, "তুমি পরপর দুহপ্তাহ স্টারলেট গার্ডেনেও এলে না। আমি অনেকক্ষণ তোমার জন্য অপেক্ষা করে করে চলে গেলাম, কি হয়েছে বলতো আসলে সুদীপ? তুমি কি আমার কাছে কিছু লুকোচ্ছ?"
আমি বললাম, আরে না না, তেমন কিছু নয়, আমি তো এই হপ্তাহেই যাব ঠিক করেছি, আমাকে আর কটা দিন শুধু টাইম দাও।"
সোমনাথদা বলল, "টাইম? কিসের টাইম? কি করতে চলেছ তুমি?"
যেন সময় হলেই সবকিছু বলব সোমনাথদাকে, কোনকিছুই লুকোবো না। আমি সেইভাবেই আস্বস্ত করলাম লোকটাকে। আমার মুখের ওপর সোমনাথদা আর কিছু বললো না, শুধু বড় ভাইয়ের মত একটা অনুরোধ করল আমাকে, বলল, "সুদীপ ঝোঁকের বশে কিছু করে বোসো না। তোমার যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকটায় সবসময়ই দেখবো আমি। তোমার বিপদে আপদে সোমনাথদা সবসময়ই তোমার পাশে আছে, এটা জেনে রাখবে। এই লোকটাকে তোমার কিছু আড়াল করতে যাতে কোন অসুবিধে না হয়।"
আমি যেন কেমন অন্যমানুষ হয়ে গেছি, কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ? সে বিচার করার ক্ষমতা আমি হারিয়ে ফেলেছি, শুধু ওপরওয়ালাকে ডাকছি, কামিনীকে নিয়ে আমার স্বপ্ন দেখাটা যেন সত্যি হয়। ও যেন সত্যিই আমার সাথে নতুন জীবন শুরু করতে পারে। বড় দাদা হিসেবে সোমনাথ যদি আমায় আশীর্ব্বাদ করে, তাহলেই আমার মনোস্কামনা পূর্ণ হয়। আমি সোমনাথদার কাছ থেকে এই মূহূর্তে সাহায্য চাইছি না। চাইছি একটু মনের জোড়, আগামী বুধবার আমাদের আসল কাজটা সফল হলেই আমি সোমনাথদাকে নিজে থেকে ফোন করব, বলব কামিনীর কথা, এতদিন ধরে নিয়ম করে শুধু ওর ওখানে গেছি, এই আজকের দিনটার জন্যই। কামিনী এখন মুক্ত বিহঙ্গ, সে আর সোনাগাছির বারবণিতা নয়, আমার চিরজীবনের সাথী, আমার একমাত্র ঘরনী।
চলে আসার আগে, সোমনাথদা হঠাৎ রাখীর কথাটা তুলল, বলল, "জানো তো? তোমার কথা বারবার জিজ্ঞেস করছিল রাখী। বলছিল বন্ধুটা কোথায় তোমার? সেই যে গেল আর দেখছি না।"
মনে মনে বললাম, আমি তো যাচ্ছি রাখীর ওখানেই, তবে ঠিক রাখীর ঘরে নয়, ওর ঘর থেকে কিছুটা দূরে, অন্য বাড়ীটায়, যেখানে থাকে কামিনী, আমার ভবিষ্যতের ঘরনী, আমার যৌনজীবনের একমাত্র সঙ্গিনী।
সন্ধে হওয়ার ঠিক আগেই আমি সোনাগাছি পৌঁছে গেলাম। ধর্মতলা থেকে সোজা ট্যাক্সি নিয়েই আমি কামিনীর ওখানে গেছি। নিউ মার্কেট থেকে একটা সুন্দর শাড়ী কিনেছি কামিনীর জন্য। রঙটা ঠিক ওর মনের মতন। লাল রঙের ওপর বুটির কাজ করা। কামিনী বলেছে, আজ রাতে শাড়ীটা পড়ে আমাকে ওর সাজ দেখাবে, তারপর আমার দৃষ্টি হরণ করে আমাকে ও শয্যাসুখ দেবে।
ট্যাক্সি থেকে নামতেই দেখি বীরযু এগিয়ে আসছে আমার দিকে। এতদিন দালালটাকে দেখতে পাইনি। মনে হল এবার আমার কাছ থেকে ও কিছু উশুল করে ছাড়বে। যা সন্দেহ করেছিলাম তাই হল, বীরযু এগিয়ে এসে বলল, "ক্যায়া বাবুসাব? একদম মনপসন্দ হো গিয়া না আভী? ম্যায়নে বোলাথা না আপকো। বহূত মস্ত চীজ হ্যায়।"
মনে মনে বললাম, মস্ত চীজ তো বটেই, নইলে কি আর রোজ রোজ আসি? আমার তো ধ্যান, জ্ঞান, মন সবই পড়ে আছে কামিনীর জন্য।
আমার সামনে দাঁড়িয়ে মাথা চুলকে বীরযু বলল, "হামকো ভী থোড়া খুশ কর দিযিয়ে সাব। ইতনা বড়া কাম কিয়া আপকে লিয়ে। কুছ মিলেগা তো আপন ভী খুশ হো যায়েগা।"
পকেট থেকে দুশো টাকা বার করে ওকে দিলাম। আমার পকেটে আর বিশেষ টাকা নেই। কালকে ফেরার গাড়ীভাড়াটা শুধু রেখে দিয়েছি, ওটা থাকলেই আমার কাজ চলে যাবে। বীরযু খুশি হয়ে চলে গেল, আমি কামিনীর ঘরের দিকে এগোতে লাগলাম, তখনও জানি না আমার ভাগ্যে এবার কি অপেক্ষা করছে।
দরজা খুললো কামিনী। রোজকার মতন জড়িয়ে ধরল আমাকে। আমি শাড়ী কিনে এনেছি, ওকে খুলে দেখাতেই পট পট করে চুমু খেতে লাগল আমার ঠোঁটে। কামিনীকে আদর করে বললাম, "কবে আসবে গো বুধবারটা? আমার তর সইছে না। তোমাকে যতক্ষণ না এখান থেকে নিয়ে যেতে পারছি, আমার শান্তি নেই।"
কামিনী বলল, "বাবুয়া মনে হয় কিছু আঁচ করেছে ব্যাপারটা। ও এসেছিল, সকালে আমার ঘরে।"
কামিনীর কথা শুনে আমার মুখটা কেমন শুকিয়ে গেল। ওকে বললাম, "বাবুয়া কি করে জানলো?"
কামিনী বলল, "ও হচ্ছে নম্বর ওয়ান শয়তান, কিছু হলেই সব বুঝতে পারে। আমাকে সবসময় চোখে চোখে রাখার চেষ্টা করে, কিন্তু আমিই বা ওর কেনা গোলাম নাকি? বাবুয়াকে আমি ভয় পাই না।"
কামিনীকে বললাম, "এই বাবুয়াটা আসলে কে বলো তো? তুমি বারবার ওর নাম নিচ্ছ? বাবুয়া কি তোমার গড ফাদার নাকি? যে তার হূকুম মতন তোমাকে সব তামিল করতে হবে? কেন এত প্ল্যান খাটাচ্ছো? তুমি যদি রাজী থাকো, আজই তোমাকে নিয়ে যাব এখান থেকে। কেউ আমাকে আটকাতে পারবে না।"
কামিনী গ্লাসে মদ ঢেলে ওটা মুথে ঠেকিয়ে আমার জন্য প্রসাদ করে দিল। আমাকে বলল, "তুমি একটু আরাম করো তো এখন। তোমাকে এই নিয়ে এত চিন্তা করতে হবে না। আমি সব ব্যাপারটা সামলে নিচ্ছি।"
বসে বসে বোতলের হূইস্কিটা থেকে একটার পর একটা মদের পেগ ঢালতে লাগলাম গ্লাসে। আমি মদ খেতে খেতে কামিনীর অর্ধ উলঙ্গ শরীরটাকে দেখছি, ও নতুন শাড়ীটা প্যাকেট থেকে আবার বার করেছে, আমার সামনে পড়বে বলে। শাড়ীটা পড়ে চুলের গোছাটাকে ঘাড়ের দুপাশে ছড়িয়ে দিল কামিনী। কেশরাশির সুন্দর বিন্যাস, আমার মনে হল রাজকীয় লাগছে ওকে। ঠোঁটে লাল লিপস্টিক মেখে কামিনী এগিয়ে আসছে আমার দিকে।
আমি বুঝতে পারছি, লিপস্টিক মাখা এই লাল ঠোঁট এক্ষুনি মিশে যাবে আমার সাথে। তারপর ঠোঁটে ঠোঁটে ভালবাসার প্রগাঢ় চুম্বন, কামিনী আমার ঠোঁটটাকে কতক্ষণ ওর ঠোঁটে ধরে রাখবে আমি জানি না।
সামনে এসে আমার ঠোঁটে চুমু খাওয়ার বদলে কামিনী ওর বুকেই চেপে ধরল আমার ঠোঁট। আমার এক হাতে কাঁচের গ্লাস, আরেক হাতে সিগারেটের নিকোটিন পুড়ছে ধোঁয়ার কুন্ডলী পাকিয়ে। পাহাড়সম বুকে মুখটা ঘসে যাচ্ছিল। কামিনী সিগারেটটা আমার হাত থেকে টেনে নিয়ে নিজেই দুটান মেরে আমার মুখে ধোঁয়া ছেড়ে আবার আমাকে চেপে ধরল নিজের প্রশস্ত বুকে। মুখে শুধু বলল, "ও আমার রাজা। তুমি না এলে যে আমার কিছুই ভাল লাগে না রাজা।"
কাঁচের গ্লাসটা হাতে নিয়েই ওর বুকে পাগলের মতন মুখ ঘসছি, মদের নেশা, বুকের নেশা, সব মিলে মিশে একাকার। কামিনী আমাকে বুকে ধরে উত্তেজনার খোরাক জোগাচ্ছে, মনে হচ্ছে এই মেয়েটাকেই যখন এখান থেকে নিয়ে যাব, তখন না জানি আরও কত সুখ অপেক্ষা করে আছে শুধু আমারই জন্য।
বুক থেকে মুখটা তুলে সবে মাত্র গ্লাসে আবার মুখটা ঠেকিয়েছি। জ্বলন্ত সিগারেট অ্যাস্ট্রে তে রেখে কামিনী আমাকে মোহিনী দৃষ্টি দিয়ে দেখছে, আদরটা ওকে আবার করতে যাব, সেই সময় হঠাৎই কামিনীর ঘরের দরজাটা দড়াম করে খুলে গেল। কে যেন বাইরে থেকে লাথি মেরেছে সজোরে, এমন সপাটে লাথি, দরজার একটা পাল্লা কাত হয়ে হেলে পড়েছে সামনের দিকে।
আমি চমকে উঠে তাকিয়ে দেখি, একটা লোক দরজা ভেঙে ঢুকে পড়েছে সোজা ঘরের মধ্যে। আমাকে ছেড়ে দিয়ে একটু দূরে চলে গেছে কামিনী। লোকটা একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে দেখছে, ঠিক মোষের মতন চেহারা। এক হত কুৎসিত কুচকুচে কালো লোককে আমি জীবনে দেখিনি।
আমার সামনে দাঁড়িয়ে লোকটা বলল, "আমাকে চিনিস তুই? আমার নাম বাবুয়া!"
মনে মনে বললাম, "ও, তার মানে তুমিই সেই বাবুয়া। তা এভাবে দরজা ভেঙে না বলে কয়ে ঘরের মধ্যে কেন? আসার আর সময় পেলে না? তোমার দাদাগিরির কথা তো আমি শুনেছি কামিনীর মুখে।"
লোকটা হঠাৎই ঠেসে একটা চড় কসালো আমার মুখে। হাত থেকে গ্লাসটা ছিটকে গিয়ে পড়ল। মাটিতে পড়ে ছনছন করে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে গেল। আচমকা এভাবে আক্রমণ আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। লোকটা এবার কামিনীর চুলের মুঠিটা গিয়ে ধরল শক্ত করে। ওকে বলল, "হারামজাদী, মাগী, ছোকরার সাথে দশদিন ধরে ফুর্তী হচ্ছে? ধান্দাপানির নাম নেই। আমার চলবে কি করে ভেবে দেখেছিস? এটা প্রেম করার জায়গা? তোকে বলেছি না খদ্দের ধরে এসব রঙ্গ তামাশা করবি না। এটাকে তাড়া এখান থেকে এক্ষুনি। নইলে ওর মুখে লাথি মেরে আমি ওকে এখান থেকে বের করবো।"
কামিনীর চুলের মুঠি আর ওর গলাটা টিপে ওকে এমন টর্চার করতে লাগল, আমার মনে হল, আমিও একটা ঘুসি চালাই ওর মুখে। তেড়ে মারতে গেলাম, ওই কুচকুচে কালো মার্কা লোকটাকে। আমাকে ওর দানবের মতন শরীরটা দিয়ে একেবারেই ধরাশায়ী করে দিল লোকটা। বুকে পেটে আমাকে দমাদ্দম লাথি মারছে, কামিনী সামনে দাঁড়িয়ে থেকেও কোন প্রতিবাদ করছে না। আমার আধমরা শরীরটাকে টেনে হিচড়ে ঘর থেকে বার করে, ঐ অবস্থাতেই আমার কলার ধরে আমাকে টানতে টানতে আমাকে নামিয়ে এনে ফেললো রাস্তায়। বেশ্যাগুলো সব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রঙ্গ তামাশা দেখছে, ষন্ডামার্কা লোক বাবুয়া তখন একাই হূঙ্কার ছাড়ছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। - "ফের যদি এখানে দেখি তো ঠ্যাঙ খোড়া করে রেখে দেব। শালা বিনা পয়সায় ভোগ করতে এসেছে আমার জানকে। জানিস তুই কে হয় ও? আমার বউ রে বউ। কামিনীকে দিয়ে আমি ধান্দা করাই। তোর মত ছোকরার সাথে বিনাপয়সায় ফুর্তি মারার জন্য আমার বউ কে এখানে বসাই নি। কামিনীর অনেক ডিমান্ড। আবে ফালতু বেমতলবে আসিস না এখানে। যা ভাগ। আর যেন দেখি না এখানে।"
আমার ম্যনিব্যাগটা ধ্বস্তাধ্বস্তিতে কোথায় পড়ে গেছে জানি না। ভেতরে একশোটা টাকা মাত্র ছিল। কি করে বাড়ী ফিরব জানি না। আমার মাথার কাছে এখন প্রচন্ড ব্যাথা। বাবুয়া খুব জোড়ে মেরেছে আমাকে। ঘাড়ের কাছটা টনটন করছে। আমার চোখের সামনে সব কিছু ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে, এখন অনেক রাত, জানি না কটা বাজে। ট্যাক্সি কি পাব? বাড়ীতে ফিরব, মাকে কি বলব? মা, পাকে চক্রে পড়ে তোমার ছেলের জীবনে একটা চরম ক্ষতি হয়ে গেছে। আর সোমনাথদা? তুমি কি বলবে? সান্তনা দেবে আমায়? সুদীপ জীবনে তো এমন হতেই পারে। বেশ্যাকে বিশ্বাস করে ঘর বাঁধা? একি হয় নাকি জীবনে? সবই তোমার অবুঝ চিন্তাভাবনা সুদীপ। অবুঝ চিন্তাভাবনা। আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম সুদীপ, কামিনীর ছায়া তুমি আর মারিও না।
টলতে টলতে পড়েই যাচ্ছিলাম, কোনমতে একটা লাইট পোষ্টকে ধরে ফেললাম। আবার সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি, দেখছি বারান্দা থেকে একটা মেয়ে লক্ষ্য করছে আমাকে। মেয়েটিকে আমি আগে দেখেছি একবার। মুখটা খুব চেনা চেনা। ওর নাম যেন কি? হ্যাঁ, রাখী। সোমনাথদার সেই রাখী। আমার এমন দূর্দশা দেখে কেমন চিন্তাগ্রস্ত চোখে তাকিয়ে আছে রাখী।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
।। সাত ।।
নিষিদ্ধপল্লীর নিষিদ্ধ স্বাদের টানেই আসে সবাই সোনাগাছিতে। কিন্তু এ আমি কি করলাম? কামিনী যে বাবুয়ারই পত্নী। আর আমি কিনা ওকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিলাম? কামিনী আমার জীবনটাকে নিয়ে খেলা করল শুধু। যেটা কোনদিনই সম্ভব নয়, মানুষ সেটা নিয়ে শুধু আশার আলো দেখে জীবনে। একটা দূঃস্বপ্নের মত এতদিন দিনগুলো কাটছিল আমার। সোনাগাছির মায়া ত্যাগ করতে পারিনি শুধু কামিনীরই জন্য, আমার আগেই বোঝা উচিৎ ছিল আগুন নিয়ে খেলা করছি আমি। এ খেলার শেষ পরিণতি যে এরকমই ভয়ঙ্কর হয়। সর্বনাশের খেলার আজই পরিসমাপ্তি ঘটেছে জীবনে, সুদীপ বসুকে এখন নতুন করে বাঁচতে হবে আবার সোনাগাছির মোহ কাটিয়ে।
জায়গাটা আমার একদমই ভাল লাগছে না। কোনরকমে হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা দূর চলে এলাম। রাখী আমাকে অনেকক্ষণ ধরে নজর করছিল, আমি আর তাকাইনি ঐ দিকে। খুড়িয়ে খুড়িয়ে অনেকটা পথ চলে এসেছি। রাস্তায় দু একটা লোক আমার দিকে তাকাচ্ছে, আমার জামা ছিড়ে গেছে, যেন মনে হচ্ছে কারুর সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তি করেছি আমি।
বেশ কিছুটা আসার পর একটা ট্যাক্সি পেলাম। প্রথমে ট্যাক্সিওয়ালা আমার ঐ দূরবস্থা দেখে আমাকে গাড়ীতে তুলতে চাইছিল না। ওকে অনেক করে বুঝিয়ে সুজিয়ে আমি গাড়ীতে উঠলাম। বললাম, "আমি বাড়ী যাব, আমাকে তাড়াতাড়ি আপনি বাড়ি নিয়ে চলুন।"
ভগবানের কি যে ইচ্ছা, কি যে মতিগতি, আমি কিছুই জানি না। জীবনটা যেন নানা রঙে মোড়া। লেগে যাওয়া কালিগুলো আমি চাইছি তাড়াতাড়ি ধুয়ে ফেলতে, অথচ কে আমার জীবনে আবার নতুন করে রঙ লাগতে চলেছে আমি নিজেই জানি না।
মোবাইল ফোনটা ভাগ্যিস পকেটেই ছিল, গাড়ীতে চলতে চলতেই দেখলাম ওটা বাজতে শুরু করেছে, হাতটাকে অনেক কষ্ট করে প্যান্টের পকেটের মধ্যে ঢোকালাম। ব্যাথায় ভীষন টনটন করছে হাতটা। পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে দেখলাম, সোমনাথদা ফোন করেছে আমায়।
লোকটার ফোনটা কিছুতেই ধরতে ইচ্ছে করছে না আমার। কি ভাববে? কেমন নাকানি চোবানি খেয়ে বিধ্বস্ত হয়েছি আমি। এটা আমার জীবনের চরমতম লজ্জ্বার ঘটনা। এ কথা কাউকে কষ্ট হলেও বলা যায় না। অথচ লোকটা আমার শুভাকাঙ্খির মতন বার বার ফোন করে যাচ্ছে আমাকে, আমি ফোনটা কিছুতেই রিসিভ করছি না।
অনেকক্ষণ ধরে ফোনে না পেয়ে সোমনাথদা একটা ম্যাসেজ পাঠালো আমাকে, "সুদীপ প্লীজ ফোনটা ধরো। আমি খুব চিন্তায় আছি তোমার জন্য।"
ম্যাসেজটা দেখতে পেয়ে আমি নিজেই ফোন করলাম, কি বলব বুঝতে পারছি না। এমন একটা পরিস্থিতি আমার নিজেরই খারাপ লাগছে।
আমি বললাম, "হ্যালো।"
সোমনাথদা ফোন ধরে বললো, "সুদীপ তুমি এখন কোথায়? কি হয়েছে তোমার?"
আমি বললাম, "আমি?....."
সোমনাথদা বললো, "হ্যা কোথায় তুমি? রাখী এইমাত্র ফোন করল আমাকে। বলল, তোমার বন্ধুকে দেখলাম, এখানে, রাস্তায় বারবার পড়ে যাচ্ছিল, মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে, তুমি শিঘ্রী ফোন করো ওকে।"
মনে মনে বললাম, "রাখী? আবার সেই পুরোনো গলি? এ গলদা আমার চেনা হয়ে গেছে সোমনাথদা, এখানে সব মেয়েই একরকম।"
সোমনাথদা আবার বললো, "কি হয়েছে তোমার সুদীপ? আমার কথার জবাব দাও। কেউ মারামারি করেছে তোমার সঙ্গে?"
আমি তবু জবাব দিচ্ছি না দেখে সোমনাথদা বলল, "রাখী বলল, তোমার জামা নাকি পুরো ছিঁড়ে গেছে, তুমি বারবার লাইটপোষ্ট ধরে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলে। কি হয়েছে সুদীপ? বলো কে মেরেছে তোমাকে? এই মূহূর্তে তুমি এখন কোথায়? সুদীপ....."
আমি তবু চুপ করে থাকি। সোমনাথদা নরম গলায় বললো, "সুদীপ?"
আমার মনটা খুব নরম, আঘাত পেলে ভেতর থেকে যেন দলা পাকিয়ে যায়, কথা বলার শক্তিটা আমি হারিয়ে ফেলি। কেউ আমাকে কষ্ট দিলে ভীষন ব্যাথা পাই। সোমনাথদাকে আমি বাবুয়ার দুর্ব্যাবহারের কথা বলতে পারছি না, শুধু একটা অস্পষ্ট আওয়াজ মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসছে। অনেক কষ্ট করে বললাম, "সোমনাথদা আমার খুব ভুল হয়ে গেছে, আমি আর কোনদিন আসব না সোনাগাছিতে।"
গলাটা বেশ কয়েকবার কেঁপে গেল কথা বলতে বলতে, সোমনাথদা বলল, "সুদীপ এই অবস্থায় তুমি বাড়ী ফিরো না, মাসীমা কষ্ট পাবেন, তোমাকে দেখলে, উনি সন্দেহ করবেন।"
আমি যেন অতি অবুঝ। বললাম, "কষ্ট পেলে পাক, আমি আজ মাকে সব কথা বলে দেব।"
সোমনাথদা বললো, "পাগল হয়েছ তুমি? এমন কথা কেউ বলে? আমি আসছি তোমার কাছে, সব কথা শুনে তারপর যা করার করবো।"
সোমনাথদাকে বললাম, "আমি এখন ট্যাক্সিতে, বাড়ী ফিরছি, আমার মানিব্যাগ খোয়া গেছে, বাড়ী না ফিরলে আমি ট্যাক্সিভাড়া দিতে পারব না।"
সোমনাথদা বলল, "তুমি ট্যাক্সিটা নিয়ে চলে এসো উল্টোডাঙা ব্রীজের কাছে, আমি ঐখানেই তোমার জন্য অপেক্ষা করছি। এসেছিলাম এখানে একটা কাজে, এইমাত্র রাখী আমাকে ফোন করল। তবে দোহাই তোমার, বাড়ী কিন্তু এই অবস্থায় কিছুতেই যেও না। আমি তোমার ট্যাক্সিভাড়া দিয়ে দেব।"
সোমনাথদার কথা শুনে ট্যাক্সিওয়ালাকে বললাম, "গাড়ী উল্টোডাঙায় নিয়ে চলুন, ওখানে একজন আমার জন্য অপেক্ষা করছে।"
ট্যাক্সি যথারীতি পৌঁছে গেল উল্টোডাঙাতে। ব্রীজের নীচটায় সোমনাথ দা দাঁড়িয়ে আছে। দেখতে পেয়ে ট্যাক্সি দাঁড় করালাম। সোমনাথদা ট্যাক্সিতে আমার পাশে উঠেই বলল, "এ কি অবস্থা হয়েছে তোমার! কে করল এমন?"
আমি কথা বলার শক্তিটা হারিয়ে ফেলেছি, তবুও অনেক যন্ত্রণা নিয়ে আসতে আসতে সব ঘটনাগুলো খুলে বললাম। সোমনাথদা আমাকে বলল, "তুমি চলো আমার বাড়ীতে। আজ রাত্রে মাসীমার ওখানে ফেরার দরকার নেই।"
গাড়ীতে যেতে যেতে সোমনাথদা বলল, "এরকম লোক বেশ্যাপট্টিতে প্রচুর আছে। স্ত্রীকে বেশ্যা বানিয়ে এরা আয়েশ ফুর্তী করে। বাবুয়া সেরকমই একজন। তোমাকে ঐজন্যই ও মেরেছে ওর ধান্দা চোপাট হয়ে যাবে বলে। সারাদিন এরা কোন কাজ করে না। বসে বসে খায়, মদ গেলে আর জুয়া খেলে। স্ত্রী শরীর বেচে অনেক পয়সা এনে দিচ্ছে ওদের আর কাজ করার দরকার কি? বেশ্যাপট্টিতে এদের কে বলে ভেড়ুয়া। সোনাগাছিতে এরকম ভেড়ুয়া অনেক আছে। অনেক সময় দেখা যায় দালালগুলোও বেশ্যাকে বিয়ে করে ফুর্তী লোটাচ্ছে, বেশ্যার হয়ে দালালগিরি করতে করতে ওরা বেশ্যাকেই বিয়ে সাধী করে নেয়। তোমার সেরকমই একজনের সাথে মোকাবিলা হয়েছে।"
সোমনাথদাকে বললাম, "কিন্তু কামিনী আমার সাথে এরকম কেন করল? ওর তো বোঝা উচিৎ ছিল।"
সোমনাথদা বলল, "বাবুয়াকে হয়তো ওর পছন্দ নয়। একে সুন্দরী, তার ওপর ভাল ছেলে দেখলে অনেকেই বন্দী খাঁচা থেকে উড়ে বেরোতে চায়। কামিনী হয়তো সেই কাজটাই করতে চেয়েছিল তোমাকে হাতিয়ার করে। বাবুয়া সব জেনে ফেলাতে, প্ল্যান সব ভেস্তে গেছে।"
সোমনাথদাকে বললাম, "খুব কষ্ট পেলাম সোমনাথদা, জীবনে এরকম ভুল আর কখনও করব না।"
সোমনাথদা বলল, "ভুল তো আমিই করেছি সুদীপ। এবার সে ভুলের প্রায়শ্চিত্ত আমি করতে চাই।"
কথাটার মানে আমি বুঝিনি। একটু অবাক চোখে তাকিয়ে বললাম, "কি রকম?"
সোমনাথদা বলল, "ঘরে চলো সুদীপ, আসতে আসতে সবই তুমি জানতে পারবে।"
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
।। অন্তিম পর্ব ।।
ট্যাক্সিটাকে ঘুরিয়ে নিয়ে সোমনাথদা আমাকে ওর বাড়ী নিয়ে গেল। একা থাকে লোকটা। কোন বাঁধন নেই। প্রাণ খোলা লোকটার সাথে অনেক রাত্রি অবধি কথা বলে আমার মনটা যেন এবার কিছুটা হালকা হল।
সোমনাথদা বলল, "এবার শুয়ে পড়ো সুদীপ। কাল সকালে তোমার সাথে এখানে কেউ দেখা করতে আসবে।"
কে আসবে জানি না, অনেক জিজ্ঞেস করতেও সোমনাথদা কিছুতেই তার নামটা বলল না, আমার মনে হল কাল সকালটা আমার বাকী জীবনের প্রথম দিন, সব কিছু ভুলে আমাকে জীবনটা আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।
কামিনীর কষ্টটা মন থেকে ঝেড়ে ফেলে আমি শুয়ে পড়লাম। সকালবেলা ঘুম ভাঙল দেরীতে। সোমনাথদা নিজের হাতে চা বানিয়ে নিয়ে এল আমার কাছে, বলল, "গুড মর্নিং। এই তো তোমাকে এবার খুব ফ্রেশ লাগছে। নাও তাড়াতাড়ি চা টা খেয়ে হাত মুখ ধুয়ে নাও, সে আসছে।"
আমি বললাম, "কে আসছে সোমনাথ দা?"
সোমনাথদা বলল, "রাখী।"
আমি অবাক হয়ে বললাম, "রাখী এখানে? কি করে?"
সোমনাথদা হেসে বললো, "বেশ্যার জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে গেছে ও সুদীপ। রাখী সোনাগাছি ছেড়ে দিয়েছে চিরকালের জন্য।"
আমি এবার আরো অবাক গেলাম, বললাম, "কি করে এটা সম্ভব হল?"
সোমনাথদা বলল, "সবই ধরে নাও হয়েছে আমারই জন্য। রাখী যার জন্য কৃতজ্ঞ আমার কাছে। আমি চাইনি মেয়েটা ওভাবে নিষিদ্ধপল্লীতে পড়ে থেকে জীবনটা নষ্ট করুক। আবার নয়তো পড়বে কোনো ভেড়ুয়ার খপ্পরে, ওর জীবনটা এমনিতেই কষ্টে ভরা, আরও নষ্ট হবে।"
আমি বললাম, "এমন অসাধ্য সাধনের কাজটা তুমি করলে কেমন করে?"
সোমনাথদা বলল, "আমার কিছু টাকা গেছে এর জন্য। একেবারে খালি হাতে তো কোন মেয়েকে নিষিদ্ধ এলাকা থেকে বের করে নিয়ে আসা যায় না। যার কাছে গচ্ছিত রেখে এসেছিল ওর সেই আত্মীয়, তাকে দিয়েছি হাজার বিশেক। তবেই মুক্তি পেয়েছে রাখী।"
অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি সোমনাথদার দিকে। এমন উদার মনের মানুষ আমি জীবনে দেখিনি।
সোমনাথ দা বলল, "আমি এর মধ্যে রাখীর বাড়ীতেও ঘুরে এসেছি সুদীপ। রাখীর মায়ের সাথেও দেখা করে এসেছি। খুব ভাল মানু্য। শুধু আমাকে বলেছেন, মেয়েটার জন্য কষ্ট হয়, ভালবেসে একটা ছেলের খপ্পরে পড়ে কি কষ্টটাই না পেল জীবনে। ও এখন কোথায় আছে জানো?"
রাখীর মা'কে আমি সত্যি কথাটা বলতে পারিনি সুদীপ। চোখে জল চলে এসেছিল। সেদিনই ঠিক করেছিলাম, রাখীকে ঐ গলতা থেকে আমি বার করব খুব শীঘ্রই।
আমি সোমনাথদাকে বললাম, "রাখী এখন তাহলে কি করবে?"
সোমনাথদা আন্তরিকভাবে হেসে বললো, "ওর জন্য আমি একটা চাকরীও ঠিক করেছি সুদীপ। রাখী তো লেখাপড়াও জানে। এখন শুধু একটা বাসার প্রয়োজন। যেখানে ও থেকে চাকরীটা অনায়াসে করতে পারবে।"
আমার হাতে চায়ের কাপটা ধরা রয়েছে, মুখে না দিয়ে সোমনাথদার কথা শুনছি। সোমনাথদা বলল, "চা খেয়ে নাও সুদীপ। তোমার চা ঠান্ডা হচ্ছে।"
এরকম মানুষও কি আছে পৃথিবীতে? ভালবাসা নেই, শরীরি লালসা নেই, অথচ একটা লোক নিঃস্বার্থভাবে মেয়েটার জন্য কত কিছু করছে। আমাকে অবাক করে সোমনাথদা বলল, "রাখীর জন্য ভাল একটা পাত্রও খুঁজছি, সুদীপ তুমি ওকে বিয়ে করবে?"
আমি চোখ দুটো গোল গোল করে তাকিয়ে আছি সোমনাথদার দিকে। আমার কাছে এসে একটু আমার চোখের দিকে ভাল করে তাকিয়ে সোমনাথদা বলল, "হাজার হোক, ও তো কামিনী নয়? তুমি যাকে ভালবেসে পাগলের মতন শুধু ছুটে গেছ সোনাগাছিতে, তোমার ভালবাসার দাম যে দিতে পারিনি, তাকে ভুলে পারবে না এই মেয়েটাকে একটা নতুন জীবন ফিরিয়ে দিতে? রাখীকে তুমি ভালবাসতে পারো নি হয়তো আমারই ভুলে, কিন্তু ও এমনই মেয়ে, যাকে সত্যি কারে ভালবাসা যায়।"
আমি কি শুনছি আমি জানি না। অথচ সোমনাথদা পাগলের মতন শুধু সেধে যাচ্ছে আমাকে।
সোমনাথদা বললো, "আমি জানি সুদীপ তোমার মনের কি অবস্থা। কিন্তু দেখো, ঐ একটা মেয়ে, শুধু তোমার কথা চিন্তা করেই আমাকে ফোন করেছে, কাল রাতে যখন বললাম, তুমি আছো আমার বাড়ীতে, আমাকে বলল, ভালই হল, তোমার বাড়ী যাচ্ছি, তোমার বন্ধুর সাথেও তাহলে দেখা হয়ে যাবে। ওনার এই মূহূর্তে মনের শান্তিটা শুধু দরকার। পাশে দরকার এমন কাউকে, যে সত্যি ওনাকে ভালবাসবে।"
একটু চুপ করে থেকে আবার সোমনাথদা বলল, "রাখী ইচ্ছে করলে কামিনীর থেকেও তোমাকে অনেক বেশী ভালবাসতে পারে সুদীপ। এ ভালবাসা নির্ভেজাল, খাঁটি বিশুদ্ধের মতন। ওর শুধু ভয় হয়, একবার ভুল ও করেছিল জীবনে, আবার যদি সেরকম হয়। তাহলে হয়তো বাঁচতে পারবে না আর জীবনে।"
এবার আমার হাতটা ধরে সোমনাথদা বলল, "আমি তোমাকে বলেছিলাম না ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে চাই। আমার ভুল এটাই, আমি তখনও বুঝিনি তুমি কোন বেশ্যাকে ভালবাসতে পারো। রাখীর ঘরে তোমাকে নিয়ে গিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু রাখীর সাথে তুমি যৌনসংসর্গ করো আমি চাইনি। সেদিন যদি বুঝতাম, তুমি কারুর প্রেমে পড়তে চাইছ? তাহলে কি....."
সব শুনে বললাম, "সোমনাথদা, তাই বলে কি রাখী রাজী হবে? ও তো আমার আর কামিনীর ব্যাপারটা শুনেছে নিশ্চই।"
সোমনাথদা বলল, "ওর জীবনেও তো এর থেকেও খারাপ ঘটনা ঘটেছে, সবকিছু তুমি যদি মানিয়ে নাও, তাহলে ও কেন পারবে না?"
আমার চোখে মুখে এবার ভেসে আসছিল কাল রাতে রাখীর দেখা সেই মুখটা, কি করুন মুখ করে চিন্তিত অবস্থায় আমার জন্য বারান্দাতে অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল রাখী, অথচ আমি একবারের জন্যও ফিরে তাকাই নি ওর দিকে। মেয়েটা সত্যি ভাল নইলে এমন......
বলতে বলতেই সোমনাথদার বাড়ীর বাইরে একটা ট্যাক্সি এসে দাঁড়ালো। সোমনাথদা বলল, "রাখী এসে গেছে, দাঁড়াও ওকে নিয়ে আসি ভেতরে। আমার বাড়ীতে আগে তো কোনদিন আসেনি, মুখটা না দেখালে চিনতে অসুবিধে হবে।"
চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে থ মেরে বসে আছি, ভাবছি আমার শরীরে তাহলে কি এক অন্য নারীর ছোঁয়া লাগতে চলেছে, এ নারী ঐ সোনাগাছিরই মেয়ে, তার হাত ধরেই ভালবাসাকে আবার ফিরে পেতে চলেছি? আমি জানি না।
ঘরের পর্দাটা সরিয়ে সোমনাথদা ঢুকলো, পেছনে পেছনে রাখী। একটা হলুদ রঙের তাঁতের শাড়ী পড়েছে, মিষ্টি রাখীকে আরও মিষ্টি দেখাচ্ছে।
আমার পাশে বসে রাখী বলল, "কেমন আছেন ভালো?"
আমি মাথাটা নাড়লাম, ঘাড়টা নিচু করলাম। সোমনাথদা বলল, "রাখী বলছিল, তোমাকে খোঁজার জন্য ও নাকি লোক পাঠিয়েছিল কালকে। অনেকক্ষণ পরে খুঁজে এসে সে বলেছে, না উনি নেই, বোধহয় চলে গেছেন।"
আমি ভাল করে তাকাতেই পারছি না রাখীর দিকে। সোমনাথদা বলল, "সুদীপ পাস্ট ইজ পাস্ট। পেছনের দিকে ভেবে কোন লাভ নেই। যা হয়েছে ভুলে যাও। আমরা দুজনেই আছি তোমার পাশে।"
রাখীর মুখের দিকে তাকালাম, দেখলাম ওর মুখে মিষ্টি হাসি, যে হাসির মধ্যে কোন ছল নেই, পুরুষমানুষকে প্রলুব্ধ করার কোন বাসনা নেই।
রাখী আমাকে বলল, "কষ্ট পেয়েছেন বলে আমার সাথেও কথা বলবেন না? বা রে? আমি যে এলাম আপনারই জন্য।"
এই রাখীই আমার লজ্জাটা কাটিয়ে দিয়েছিল একদিন, কামিনীর শরীরি প্রেমে পাগল হয়ে তাড়নার মতন ছুটে গেছি তারপর থেকে। এতদিন বাদে রাখীকে দেখতে পেয়ে লজ্জাটা যেন নতুন করে আবার ফিরে এসেছে। মুখটা তুলে বললাম, "আমি জানি, আজ আপনার নতুন জীবন শুরু হতে চলেছে।"
আমাকে অবাক করে রাখী বলল, "কামিনীকে ভালবেসে ফেলেছিলেন, আবার কি কাউকে ভালবাসতে পারবেন?"
সত্যিই কি পারবো? এর উত্তর আমি জানি না। সোমনাথদা বলল, "রাখী কিন্তু আবার নতুন করে কারুর ভালবাসা পেতে চায়। যদি তুমি সুদীপ রাজী থাকো।"
প্রাণ খোলা লোকটার কথা শুনে আমাদের দুজনেরই অস্বস্তি বেড়ে গেছে, আমি গম্ভীর, রাখীও গম্ভীর। সোমনাথদা দুটো কান ধরে বলল, "সরি বাবা, আমার খুব ভুল হয়ে গেছে। আর বলব না।"
রাখী আর আমি দুজনেই হাসতে লাগলাম সোমনাথদার কথা শুনে। ওর সাথে এরপরে আমার অনেক কথা হল। রাখী কোথায় চাকরী পেয়েছে সব জানলাম। ওর বাড়ীর গল্প, মায়ের কথা, অনেক্ষণ ধরে শুনলাম। কথা বলতে বলতেই রাখী আমার হাতটা একটু ধরলো, যেন মনে একটু শক্তি দেওয়ার মতন। আমার হাতের ওপরে রাখীর হাতের কোমল স্পর্শ। আমিও ওর হাতে হাত রাখলাম। রাখী আমার চোখের দিকে চেয়ে বলল, "আমি খুব খারাপ মেয়ে সুদীপ, পারবে কি আমায় ভালবাসতে?"
ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি চোখটা ওর ছলছল করছে। ভালবাসার কাতর প্রার্থনা একটা দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে যাওয়া লোকটাকেই করছে। ওর মুখটা দু হাত দিয়ে ধরলাম, কিছু বলতে চেষ্টা করলাম, রাখী বলল, "কাল সারারাত ঘুমোতে পারিনি তোমাকে দেখে, সোমনাথদাকে দশদিন আগেই বলেছিলাম, তোমার কথা। আমাকে বলল, সুদীপ এখন আর ফোন করে না, দেখাও হয় না। এই কদিনে ও কেমন পাল্টে গেছে, কেন জানি। আমার তো সেইদিনই তোমাকে ভাল লেগে গিয়েছিল সুদীপ, সোমনাথদাকে অন্তর থেকে বলেছিলাম ভাল লাগার কথাটা, সোমনাথদা হয়তো সেভাবে তোমাকে পায়েনি বলেই বলতে পারেনি আমার মনের কথাটা।"
ভাবতে পারছিলাম না, একই দিনে দুটো মেয়েই আমাকে এক সাথে ভালবেসে ফেলেছিল, অথচ একজনের ভালবাসাকে বুঝতে বুঝতে আমার অনেক দেরী হয়ে গেল।
আবেগে হঠাৎই রাখীর ঠোঁটের ওপর নেমে এলো আমার ঠোঁট। আমি ওর সাথে তখন চুম্বনে আবদ্ধ হয়ে গেছি। ভীষন ভালবাসার খেলা চলছে, ঠিক এই মূহূর্তে সোমনাথদা কিন্তু ঘরের ভেতরে আর নেই।
সমাপ্ত
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
নাহ, প্রশংসা করার জন্য কোনো বিশেষণই যথেষ্ট নয়। এই Lekhak কিন্তু গল্পের বুনন, ভাষাশৈলী, নিখুঁত বাস্তব বর্ণনা, চরিত্রগুলোর বাস্তবায়ণ করার ক্ষমতায় নিজেকে অনন্য আসনে তুলে ধরতে পারেন। এই গল্পটা নিঃসন্দেহে ওঁনার সেরার সেরা সৃষ্টি। খুব খারাপ লাগে এরকম একজন দক্ষ লেখক হারিয়ে গেলেন, যেভাবে আমি গল্পটা পড়তে পড়তে কাহিনীর মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিলাম। অ-সাধারণ তকমা এরকম গল্পের উপরই দেওয়া যায়।
Posts: 266
Threads: 1
Likes Received: 246 in 166 posts
Likes Given: 1,782
Joined: Apr 2019
Reputation:
9
Posts: 242
Threads: 1
Likes Received: 142 in 118 posts
Likes Given: 25
Joined: May 2019
Reputation:
5
অপ্রশংসনীয় চমৎকার একটা গল্প,একবারে পড়ে খুব ভাল লাগল।
Posts: 242
Threads: 1
Likes Received: 142 in 118 posts
Likes Given: 25
Joined: May 2019
Reputation:
5
এভাবে যদি লেখকেরা গল্প লিখে,পুরোটা একবারে না হোক কিন্তু গল্প শেষ করলেই তো হয়।পাঠকদের আশা পূরণ হয়।
•
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
(26-08-2020, 09:34 PM)Mr Fantastic Wrote: নাহ, প্রশংসা করার জন্য কোনো বিশেষণই যথেষ্ট নয়। এই Lekhak কিন্তু গল্পের বুনন, ভাষাশৈলী, নিখুঁত বাস্তব বর্ণনা, চরিত্রগুলোর বাস্তবায়ণ করার ক্ষমতায় নিজেকে অনন্য আসনে তুলে ধরতে পারেন। এই গল্পটা নিঃসন্দেহে ওঁনার সেরার সেরা সৃষ্টি। খুব খারাপ লাগে এরকম একজন দক্ষ লেখক হারিয়ে গেলেন, যেভাবে আমি গল্পটা পড়তে পড়তে কাহিনীর মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিলাম। অ-সাধারণ তকমা এরকম গল্পের উপরই দেওয়া যায়। হা উনি একজন বড় মাপের লেখক।আর উনার লেখার ভাষা অতুলনীয়!! সাইটা তো পারিবারিক গল্পের ভান্ডার হয়ে গেছে।যেটা আমি ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ করিনা !আর সব বস্তা পচা গল্প। কয় একজন লেখক আছে এখন সাইটে কিন্তু তাড়াও কেমন ঝিমিয়ে গেছে। তাই আমি কষ্ট করে আপনাদের মত রুচিশীল পাঠকদের জন্য এই গল্প গুলা পোষ্ট করার চেষ্টা করি।।
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 110
Threads: 0
Likes Received: 35 in 26 posts
Likes Given: 500
Joined: Jun 2019
•
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(27-08-2020, 02:34 PM)Kolir kesto Wrote: হা উনি একজন বড় মাপের লেখক।আর উনার লেখার ভাষা অতুলনীয়!! সাইটা তো পারিবারিক গল্পের ভান্ডার হয়ে গেছে।যেটা আমি ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ করিনা !আর সব বস্তা পচা গল্প। কয় একজন লেখক আছে এখন সাইটে কিন্তু তাড়াও কেমন ঝিমিয়ে গেছে। তাই আমি কষ্ট করে আপনাদের মত রুচিশীল পাঠকদের জন্য এই গল্প গুলা পোষ্ট করার চেষ্টা করি।।
একদমই তাই, আর এজন্য আপনার একটা রেপু অবশ্যই প্রাপ্য, দিয়ে দিলাম
•
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
•
|