Posts: 1,203
Threads: 24
Likes Received: 9,934 in 1,160 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,694
20-05-2020, 04:20 PM
(This post was last modified: 23-05-2020, 05:45 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কমলকলি আর দেবজয়ীর আলাপ জলপাইগুড়ি শহরের সবচেয়ে নামী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হবার পর।মাধ্যমিকে ভাল ফল করে সুযোগ পেয়ে ভর্তি হয়েছে এই কলেজে।দেবজয়ীর গলায় রুহিতনের মত দেখতে পেনড্যাণ্ট দেখে জিজ্ঞেস করে,বাঃ দারুন!সোনার?
–না ইমিটেশন।হেসে দেবজয়ী বলে।
কমলকলি নিজের পানের মত পেন্ড্যাণ্ট দেখিয়ে বলে,এটাও ইমিটেশন।ভাল না?
দেবজয়ী হেসে সম্মতি জানায়।কমলকলি সাইকেল চালিয়ে কলেজে আসে।সে সময় মেয়েদের সাইকেল চড়া খুব স্বাভাবিক ছিল না। সেকারনে সহজেই কমলকলি অন্যান্য মেয়েদের দৃষ্টিতে একটা স্বাতন্ত্র লাভ করেছিল।কমলকলি মুখরা উদ্ধতস্বভাব,দেবজয়ী মুখচোরা লাজুক।তা সত্বেও উভয়ের বন্ধুত্ব ক্রমশ প্রগাঢ় হয়। যেমন চুম্বকের দুই বিপরীত মেরুর পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ।শৈশব থেকেই দেবজয়ীর নাচের প্রতি অনুরাগ।এ অঞ্চলে নৃত্যকলায় যিনি সর্বাধিক পারদর্শি–সেই হিরালাল সারখেলের কাছে তার শিক্ষা।নাচের কথা শুনে কমলকলি বলে,হি-হি-হি! ওসব শুনতেই ভাল লাগে।ছোটো বেলায় অনেকেই শেখে অনেক কিছু–তারপর বিয়ের সঙ্গে সব শেষ।বাচ্চা হল তো ষোলকলা পুর্ণ।
–কেন? দেবজয়ী অন্তর্মুখিন স্বভাবের তবু তর্ক করে,মাস্টার মশাই বিবাহিত দুটি সন্তান আছে ওঁর স্ত্রী মেনকা কাকিমাও তো নাচেন।
–ছেলেদের কথা আলাদা।কিন্তু তুই বল লতা মঙ্গেস্কর বিয়ে করেছেন?
–আশা ভোঁসলে বিয়ে করেছেন।
–কতদিন টিকলো? সব কিছুর এক্সসেপশন আছে আমি সাধারনের কথা বলেছি।শত হলেও আমরা মেয়ে,বুঝলি?
–আমি সব ছাড়তে পারি কিন্তু নাচ ছাড়বো না।নাচই আমার জীবন নাচ ছাড়া আমি বাঁচবো না।
–মুখে বলা সহজ।বিয়ে করে বাচ্চা হলে মাই ঝুলে যাবে নাচলে মাইগুলোও দুলদুল করে নাচবে।হি-হি-হি।
–ধ্যেৎ। লজ্জা পায় দেবজয়ী।
সেবার কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক উৎসবে দেবজয়ী সুযোগ পেয়েছিল পারফর্ম করার মূলত মাস্টার মশাই হিরালাল কাকুর সুপারিশে।অনুষ্ঠান কলেজের হলেও আকার নিত সারা শহরের উৎসব।জেলার বাছাইকরা লোকশিল্পীরা আসতেন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে।এতবড় অনুষ্ঠানে ইতিপুর্বে নৃত্যপরিবেশন করেনি দেবজয়ী।শহর ঝেটিয়ে এসেছিল,লোক সমাগম দেখে দেবজয়ীর কেপে উঠেছিল বুক।মেকাপ ঘামে ভিজে যাচ্ছিল।রুমাল দিয়ে থুপ থুপ করে ঘাম মুছছিল।দেবজয়ীর নাম ঘোষণা করতেই মঞ্চে উঠে পা কাপছিল চোখে জল আসার যোগাড়।দর্শকাসনের আলো নিভতেই শুরু হল নাচ।দেবজয়ী তখন দেবজয়ীর মধ্যে নেই যেন কিছু ভর করেছে।নাচ শেষ হতে করতালিতে সম্বিত ফেরে।পর্দা পড়তে মঞ্চ থেকে নামতেই দেবজয়ীকে বুকে জড়িয়ে ধরেন বড়দিদিমনি।বলেন,জয়ী,তোমাকে আশির্বাদ করছি,নটরাজের করুণা ছাড়া এমন নাচ সম্ভব নয়। যত বাঁধা-বিপত্তি আসুক জীবনে, নাচ ছেড়োনা। হিরু আমার ভাইয়ের মত তোমার কথা তার কাছে শুনেছিলাম,আজ দেখলাম।
আবেগে চোখে জল চলে আসে,বড়দিকে প্রণাম করে দেবজয়ী বলে,আমি নাচ ছাড়বো না বড়দি।
পরে কমলকলি খোচা দিয়ে বলে,হি-হি-হি!ঐ এক কথা ধুমসির। নিজের গুণপনার শেষ নেই কেবল অন্যকে আশির্বাদ করা।
–কার কথা বলছিস তুই?
–বলছি ঐ নি-মাইয়ের কথা।বুক দেখেছিস যেন বুকের উপর দিয়ে রোলার চালিয়ে সমান করে দিয়েছে।মেয়েদের বুক দেখলে ছেলেদের মুখে লালা গড়াবে।বুক হল মেয়েদের ঐশ্বর্য।
বড়দির বুক বেশি উচু নয়।দেবজয়ী বলল, ছিঃ কলি উনি আমাদের বড়দি।
–ছাড় তো,বর পালিয়েছে কি সাধে?হি-হি-হি!
–উনি ডিভোর্সি?
–জানি না ভোসি না মোসি? কলেজের কেরানি পশুপতিবাবু দাদার মত, রোজ সন্ধ্যে বেলা ওর বাড়িতে যায়।উনি দাদাকে রান্না করে খাওয়ান।মাগিটা ঐ বুড়োয় কি রস পায় কে জানে? যাকগে পরের কথায় কি দরকার বাপু?
কলি যেভাবে ভাবে এবং বলতে পারে জয়ী সেভাবে বলতে পারবে না তবু ওর কথায় একটা অমোঘ আকর্ষণ বোধ করে। এক-এক সময় মনে হয় কলির হৃদয় বলে কিছু নেই।কলেজের ছুটির পর একদিন কলি বলল,এখন বাড়ি গিয়ে কি করবি?চল করোলা নদীকে দেখে আসি।নদী আমার খুব প্রিয় কেমন দুঃখি-দুঃখি কারো তোয়াক্কা করেনা।একা-একা চলেছে তো চলেছে।তার কথা কে ভাবছে কি ভাবছে না কিছু যায় আসে না।
কলির কথাগুলো শুনতে ভালো লাগে।দু -জনে নদীর ধারে গিয়ে বসল।টলটলে করোলার জল তির তির করে বয়ে চলেছে।প্রান্তসীমা বিলীন দূর দিগন্তে।নদী উদাস করে মনকে। জয়ী ভাবছে কলির কথাগুলো।হৃদয় না-থাকলে এভাবে কেউ ভাবতে পারে না।
–দ্যাখ-দ্যাখ একটা মাছরাঙ্গা পাখি।কেমন নিরীহ দেখতে নজর শিকারের দিকে।হঠাৎ কলি বলল।
এপাশ-ওপাশ কোথাও কোন পাখি নজরে পড়ল না।জিজ্ঞেস করে,কোথায় মাছ রাঙা?
–হি-হি-হি! দেখছিস না কেমন নদীর দিকে তাকিয়ে উদাস-উদাস ভাব মন পড়ে আছে আমার দিকে।ছেলেগুলো এমন ন্যাকা হয় না?
দেবজয়ী ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল,ওদের থেকে বেশ খানিকটা দূরে একটি ছেলে চোখে চশমা পিছনে হাতের ভর দিয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে কি যেন গভীরভাবে দেখছে।এদিকে তাকাচ্ছে না।
–কি করে বুঝলি তোকে দেখছে?
–ওর নাম সঞ্জীব,নিজেকে মনেকরে ওকে দেখতে শাহরুকের মত।আমার প্রেমিক,যেখানে যাবো ঠিক সেখানে হাজির।হি-হি-হি! দেখবি একটা মজা? উঠে দাড়া,চল।
ওরা উঠে পড়ল,বাড়ির দিকে হাটতে শুরু করে। কাকুরে পথ, কিছুক্ষন হাটার পর কলি বলল,পিছন দিকে দ্যাখ।
জয়ী পিছন ফিরে দেখল সেই ছেলেটিও আসছে।ওরা দাঁড়িয়ে পড়ল। সঞ্জীব নীচু হয়ে রাস্তায় কি যেন খুজছে।
কলি বলল,ওখানে কি হচ্ছে এদিকে আয়।
ছেলেটি এদিক-ওদিক দেখে বলল,আমাকে বলছেন?
--ন্যাকামো হচ্ছে?ডাকছি না?
সঞ্জীব কাছে এসে মাথা নীচু করে সামনে দাড়ায়।কলি বলে,তুই কথা বলতে পারিস না?মুখে না-বলতে পারিস চিঠি দিয়েও তো বলতে পারিস মনের কথা।
সঞ্জীব যেন জেগে উঠল, মুখ তুলে তাকায় চোখে বিস্ময়!তারপর মাথা নীচু করে বলে,চিঠি দেবো? রাগ করবে নাতো?
--চিঠি না পড়ে কি করে বলবো?কলি বলল।
--ঠিক আছে।
কথাটা বলেই আর দাঁড়ায় না,হন হন করে হেটে চলে যায়।সেদিকে তাকিয়ে কলি বলল,দ্যাখ এতেই কি খুশি হি-হি-হি। হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে কলি।
–যদি সত্যি-সত্যি চিঠি দেয় কি হবে? জয়ী প্রশ্ন করে।
–দিলে দেবে।হি-হি-হি! প্রেমপত্র জমানো আমার হবি।
–আমার ভয় করে।খেলতে-খেলতে শেষে একদিন কিছু না হয়ে যায়।
–আমার জন্য তোর খুব চিন্তা তাই না?কথাটা বলেই আচমকা রাস্তার মধ্যে জয়ীকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় কমলকলি।হাতের তালু দিয়ে মুখ মুছে জয়ী দেখে আশপাশে কেউ নেই তো?ভাল লাগলেও বলে দেবজয়ী,কলি তুই না…যদি কেউ দেখতো?
–তোকে সত্যিই আমি ভালবাসিরে জয়ী।ইচ্ছে করে তোকেই বিয়ে করি।
দেবজয়ীর কান লাল হয়,মনে মনে ভাবে,বিয়ের পর কলি কি তাকে চিরকাল নাচার অনুমতি দেবে?
–অ্যাই শোন তুই আমাকে বলবি কমল।আমি তোর বর।হি-হি-হি!আবার চুমু খেতে আসে।
জয়ী বাঁধা দেয়,এ্যাই না..কে দেখে ফেলবে।
Posts: 912
Threads: 1
Likes Received: 867 in 546 posts
Likes Given: 3,345
Joined: Dec 2018
Reputation:
40
Posts: 1,560
Threads: 1
Likes Received: 1,541 in 969 posts
Likes Given: 5,258
Joined: Jan 2019
Reputation:
194
খুব সুন্দর। সাথে আছি দাদা।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,447 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
Another classic !!
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,994 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
ভিন্ন স্বাদের গল্প আর বেশ ইন্টারেস্টিং।
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,447 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
Eta ki lesbo oriented kono galpo hote choleche !
Too early to judge. Dekha jak ki hoy.
Shuru ta darun laglo...
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,447 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
Sokal theke chatok er mato bose achi, Update er jonno
•
Posts: 263
Threads: 1
Likes Received: 577 in 139 posts
Likes Given: 42
Joined: Jun 2019
Reputation:
133
আপনাকে আবার নতুন করে লিখতে দেখে খুব ভাল লাগল দাদা। আবার একটা নতুন ক্লাসিক উপহার দিবেন আশা করি।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,447 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(21-05-2020, 12:56 PM)Newsaimon85 Wrote: আপনাকে আবার নতুন করে লিখতে দেখে খুব ভাল লাগল দাদা। আবার একটা নতুন ক্লাসিক উপহার দিবেন আশা করি।
After a very long waiting period got your latest on BONDHU.
Emni thik ache kintu ektu monotonic hoye gache. Sei ek bondhu der pacha aar dudh etc
Apni amader mane jara golpo pore tader standard onek uchu korechilen.
2012 theke xossip er galpo porhi. BONDHU was started in 2014 or 15 probably.
Jai hok. All the best Newsaimaon85 bondhu
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,447 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
good one. waiting for update
•
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,994 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
আপডেটের অপেক্ষায় আছি। কামদেব বাবু আপনি সুস্থ আছেন তো?
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,447 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
23-05-2020, 08:11 AM
(This post was last modified: 23-05-2020, 09:25 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(22-05-2020, 05:59 PM)Mr Fantastic Wrote: আপডেটের অপেক্ষায় আছি। কামদেব বাবু আপনি সুস্থ আছেন তো?
Ha, chinta hochhe.
Din kaal emnitei kharap cholche.
Kumdev Sir, fire asun taratari....
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,994 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
ঝড়ের জন্য নেট কানেকশন বন্ধ আছে কলকাতার অনেক জায়গায়। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎও নেই।
•
Posts: 1,203
Threads: 24
Likes Received: 9,934 in 1,160 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,694
23-05-2020, 02:29 PM
(This post was last modified: 23-05-2020, 02:31 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
।দুই।।
করোলার প্রবাহের মত সময় বয়ে যায়।কমল-সঞ্জীব পত্র চালাচালি শুরু হয়ে গেছে।জমে উঠেছে প্রেম।দু-বছর কেটে যায়।দুজনেই ভালভাবে পাশ করে উচ্চ-মাধ্যমিক।কমলকলি শহরের ভাল কলেজে ভর্তি হল।গুরুজি ডেকে দেবজয়ীকে বললেন,বেটি আমার যা ছিল সব তোকে দিয়েছি,আর কিছু দেওয়ার নেই।আগে বাড়তে হলে তোকে কলকাত্তা যেতে হবে। দেবজয়ী পাড়ি দেয় স্বপ্ন শহর কলকাতায়,বহুবিধ উদ্দেশ্য মনে।প্রখ্যাত নৃত্যগুরু শিবপ্রসাদের কাছে নাড়া বাঁধা।দেবজয়ীর কাছে দুর্লভ সুযোগ।তবে হিরালাল সারখেলের সুপারিশ তাকে অনেকটা সাহায্য করে গুরুজির প্রসাদ লাভে।এবার মনপ্রাণ ঢেলে অনুশীলন।নৃত্য-জগতে এমন কেউ নেই শিবপ্রসাদ পট্টবর্ধনের নাম শুনে শ্রদ্ধায় যার মাথা নত হবেনা।
কমলকলির বাবা সরকারি চাকুরে।মা-বাবা আর দুটি বোনের স্বচ্ছল পরবার।দেবজয়ীর পরিবারে সেই স্বচ্ছলতা ছিল না।বাবা-মা আর সে মিলে সংসারে তিনটি প্রাণী।চিররুগ্ন বাবার শহরে ছিল ছোট্ট একটা রেডিমেড জামা-কাপড়ের দোকান।অসুস্থতার কারণে অর্ধেকদিন থাকতো বন্ধ।বসতবাড়ি দোকান-পাট দুঃসম্পর্কিয় আত্মীয়কে বিক্রি করে টাকা-পয়সা নিয়ে অনেকদিনের বাসনা পুরনের জন্য চলে গেলেন কলকাতায়।খিদিরপুরে বস্তিমত অঞ্চলে ঘরভাড়া নিয়ে শুরু হল নতুন জীবন। জলপাইগুড়ি ছাড়ার দিন দুইবন্ধু পরস্পরকে জড়িয়ে কাঁদল কিছুক্ষন।তারপর গলার চেন বদল করে কমলকলি বলল,এভাবে আমরা দুজনে বাঁধা থাকবো দুজনের কাছে।কমলকলির গলায় এল রুহিতন আর দেবজয়ীর গলায় হরতন।কমলকলি বলল, মনে করে চিঠি দিস।
দেবজয়ী হেসে বলে,সঞ্জীবের খবর জানাতে ভুলিস না।
কমলকলি একমুহূর্ত চুপচাপ, কথাটা জয়ীকে বলবে কিনা ভাবে।জয়ী ওর প্রাণের বন্ধু, ইতস্তত করে বলল,জানিস জয়ী সঞ্জীবের সঙ্গে এখন কেটে গেছে।
চোখ বড় করে বলে জয়ী,তুই ত বলিস নি? কি হয়েছিল কি?
–বায়না দিন দিন বাড়ছিল।আড়ালে-আবডালে চুমু খেয়েছে মাই টিপেছে আমি কিছু বলিনি।তাও তৃপ্তি হয়নি,ঐসব করতে চায়।আমি বলে দিয়েছি,বিয়ের আগে একদম না।
–মনে আছে তোকে একদিন বলেছিলাম খেলতে-খেলতে একদিন—।
–আমি অত বোকা নই।সব ছেলের নজর আমাদের ঐটার দিকে–আহা! হাতেরমোয়া!তবে মৃন্ময় ছেলেটা অন্যরকম।
–সে আবার কে?
–এখন যার সঙ্গে প্রেম চলছে।হি-হি-হি! দারুন দেখতে ইংলিশ অনার্স পড়ে। জানিস তোর মত মৃণ্ময়েরও কবিতা লেখার বাতিক।কি সুন্দর লেখে,আমি অবশ্য বুঝতে পারি না।ভীষণ ভালবাসে আমাকে একদিন না দেখে থাকতে পারে না–পাগল।
দেবজয়ী বলল,আসিরে গোছগাছ করতে হবে।দেবজয়ী ভাবে কে পাগল কে জানে।কমল খুব চঞ্চল প্রকৃতি।
বাবা মাকে সঙ্গে নিয়ে দেবজয়ী কলকাতার ট্রেনে চেপে বসে।ঠাই হল খিদিরপুরের একটা পুরানো আমলের বাড়ীতে।খিদিরপুর থেকে আলিপুর গিয়ে নিয়মিত গুরুজির তত্ত্বাবধানে নৃত্যশিক্ষার তালিম নেয়।নাচ তার ধ্যান-জ্ঞান সবটুকু নিংড়ে দিতে চায়।সেজন্য বাড়ির কাছে সাধারণ একটা কলেজে ভর্তি হয়।কমল পড়ে সাম্মানিক অর্থনীতি।কলকাতায় এসে বাবার শরীর ভেঙ্গেছে।মেয়ের সাধনার কথা ভেবে যা করেছেন সেটা এখন মনে হচ্ছে ভুল।মেয়েকে সেকথা বলেন না।জমা টাকা যা ছিল--সে আর কতো? দিন আর চলতে চায় না।মার ছিল সেলাইয়ের শখ এখন সেই সেলাই কাজে আসছে।এদিক-ওদিক সেলাই ফোড়াই করে ঘরে আসছে কিছু টাকা।গুরুজি একটা টিউশন ঠিক করে দিয়েছেন, মেয়েটিকে নাচ শিখিয়ে জয়ীও কিছু উপার্জন করে।
এতকষ্টের মধ্যেও যখন সেই দীর্ঘদেহী কাধ পর্যন্ত বাবরিচুল টানা-টানা চোখ গুরুজির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে দেবজয়ী শরীর মনে ফিরে পায় এক নতুন উদ্যম।তখন অভাব অনটন সামনে এসে দাঁত খিচিয়ে ভয় দেখাতে পারে না।শরীরের প্রতিটী মাশল চনমন করে ওঠে।
কমলের চিঠি আসে জমজমাট চলছে প্রেম।দুজন কোরালের ধারে গিয়ে কত স্বপ্নের গল্প করে।দেবজয়ীর কথাও ওঠে ওদের আলোচনায়।এখানে কোরাল নেই কিন্তু গঙ্গা আছে।গঙ্গার ধারে গিয়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয় দেবজয়ী।
জোর কদমে চলছে নাচ পরীক্ষার পর আমেদাবাদে যেতে হবে।যাতায়াত সহ দিন সাতেকের প্রোগ্রাম সেখানে।গুরুজি বিদেশি ট্যুর কমিয়ে দিয়েছেন।বাবা মাকে প্রণাম করে আশির্বাদ নিয়ে আমেদাবাদের ট্রেনে চেপে বসল।ফিরল দিন সাতেক পর সঙ্গে নিয়ে এল প্রচুর খ্যাতি নিয়ে,বিভিন্ন সংবাদ পত্রে ভুয়সী প্রশংসা বেরোল ছবি সহ।বাড়িতে পা দিতে শুনলো,বাবা নেই,মারা গেছেন তিনদিন আগে।
সাধক-সাধিকাদের সহজে বিচলিত হলে চলে না।শ্রাদ্ধ-শান্তি মিটলে জোর কদমে চলল অনুশিলন।অনেক পথ পেরোতে হবে তাকে।তুচ্ছ শোকতাপে ডুবে থাকার মত বিলাসিতা তাকে মানায় না।
কমল বাবার মৃত্যু-সংবাদ পেয়ে দুঃখ করল।মৃন্ময়ের সঙ্গে বিয়ের কথা বার্তা চলছে।কুঞ্জ উকিলের বকাটে গেজেল ছেলে সুভাষও তাকে প্রেম নিবেদন করেছে।হি-হি-হি!এইসব নানাকথায় ভরা চিঠি পেল কমলের।
কুঞ্জ উকিল শহরের নামকরা উকিল একডাকে চেনে সবাই।ওনার কি রকম বোন মনোরমা বিবাহ বিচ্ছিন্না।শোনা যেত সুভাষের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল।একদিন সুভাষের পিসি বাড়ি থেকে পালিয়ে গেল চাকদা না কোথায় খোরপোষের টাকায় ভরসা করে।
মার সেলাই-ফোড়াইয়ের টাকায় সংসার চলা দায় হয়ে উঠল।কি করবে এখন দেবজয়ী? ঘরে জমা হয়েছে দিনের পর দিন নানা ধরনের প্রাইজ তা দিয়ে সংসার চলেনা।নাচে ঢিলেমি আসে,গুরুজি তিরস্কার করেন,আবার বোঝান 'মা ঈশ্বর তোমার উপর করুণা করেছেন তাকে তুমি অবহেলা কোরনা। জীবনে বাধা বিঘ্ন আসবে তাকে উপেক্ষা করে চালিয়ে যেতে হবে সাধনা।ধ্যান করো মা ধ্যান করো।'বড় বড় মানুষের উদাহরণ দিলেন তারা কিভাবে কষ্ট করে দারিদ্রকে জয় করে খ্যাতির চুড়ায় আরোহণ করেছিলেন।গুরুজির কথায় আলোর আভাস থাকলেও অন্ধকার কাটতে চায় না।তার মধ্যেও বাড়িতে চলতে থাকে অনুশিলন–তা-ধিন-ধিন-তাক..তা-ধিন-ধিন-তাক।গুরুজির সুপারিশে ডাক পেল এক জলসায়।কিছু দক্ষিণা সহ গাড়ি করে নিয়ে যাবে আবার পৌছে দিয়ে যাবে।যে ছেলেটি নিতে এল তার নাম তপন।তার নাচ দেখে মুগ্ধ,ফেরার পথে নানা কথা হল ট্যাক্সিতে।অনুষ্ঠানের কর্ম কর্তাদের একজন।জলসা মিটে গেলেও তপন যোগাযোগ রেখেছিল।ভদ্র ব্যবহার শিল্পানুরাগী,ছোক ছোক ভাব নেই,দেখতে শুনতে মন্দ না।বাড়িতে এলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলে যেত,মাকে বলতো মাসিমা।নিত্য যাতায়াত ছিল বাড়িতে।
কমলের চিঠি এল।'মৃন্ময় আগে একদিন দেখা না হলে থাকতে পারতো না।এখন এড়িয়ে চলে।চুমু খেয়ে কষ নিয়েছি কিন্তু রস নিইনি।সবার বোকাচোদার গানের এক সুর।সঞ্জীবকে মনে আছে?মিচকেটা এত হারামি আমার প্রেমপত্রের গোছা নিয়ে দেখিয়েছে মৃন্ময়ের মাকে।বলেছে একসঙ্গে নাকি শুয়েছে।ওর মা বলেছে প্রান থাকতে অমন মেয়েকে ঘরে নেবে না।আমি নাকি দুশ্চরিত্র।মেনিমুখো মৃন্ময় মায়ের অবাধ্য হতে পারবে না শালা মাতৃভক্ত হনুমান।বোকাচোদা প্রেম করার সময় মায়ের অনুমতি নিয়েছিলি?'
মনটা খারাপ হয়ে গেল কি করতো মেয়েটা বিয়ের জন্য।শেষে ওর কপালে কি না এই? দেবজয়ী ভাবে কে জানে তার কপালে কি আছে?তপন একটা নাচের টিউশনি ধরিয়ে দিয়েছে ওদের পাড়ায়।গুরুজির সঙ্গে দেখা করতে গেলাম।ছাত্র-ছাত্রীরা ওকে ঘিরে বসে আছে,উনি কি বলছেন।
নৃত্যকলা অতি প্রাচীন বিদ্যা।রাজা-জমিদার নাচের আসর বসাতেন।পুরানেও এই বিদ্যার কথা পাবে। দেব সভায় নৃত্য প্রদর্শন করা হত।বহু মুনি-ঋষি এমন কি দেবতাদেরো ধ্যান ভেঙ্গে দিতে পারতো নৃত্য পটিয়সী অপ্সরারা।সে জন্য অভিশাপ কুড়োতে হয়েছে কম না।একবার রাজর্ষি বিশ্বামিত্র কঠোর তপস্যায় রত।অপরুপা মেনকা দেব নির্দেশে নৃত্য প্রদর্শন করলেন।নৃত্যের ছটায় ধ্যান ভেঙ্গে মিলিত হলেন ঋষিবর।পরিনামে সৃষ্টি হল শকুন্তলা…।দেবজয়ীর দিকে তাকালেন গুরুজি তারপর সবাইকে বললেন,আজ যাও।
সবাই চলে গেল।দেবজয়ী প্রণাম করল।গুরুজির গমগমে গলা শোনা গেল, বেটি তীরে এসেও তরী ভাসিয়ে রাখতে পারলি না?
–গুরুজি নাচ ছাড়া আমি বাঁচবো না।
–নটরাজের কৃপা! গুরুজি চলে গেলেন ভিতরে।একটু দাঁড়িয়ে থেকে দেবজয়ী বাসায় ফিরে এল।
মাসখানেক পর আবার কমলের চিঠি।'সুভাষকে বিয়ে করছি।অনেক করে ধরেছে।না বলতে পারলাম না।কথা দিয়েছে গাঁজা ছেড়ে দেবে।কাউকে নেমন্তন্ন করিনি কুঞ্জ উকিল খুব খুশি।সামনের সতেরো তারিখ দার্জিলিং মেলে শিয়ালদা পৌছাবো,হনিমুনে যাচ্ছি চাঁদিপুর।স্টেশনে থাকিস।
সংক্ষিপ্ত চিঠি।গেজেলটাকে বিয়ে করছে?লেখাপড়াও বেশি করেনি।চাকরি-বাকরি কি করে কিছু বলেনি।খাওয়াবে কি?করার মধ্যে একটা কাজ করত গাঁজা খাওয়া তাও নাকি ছেড়ে দেবে তাহলে সারাদিন করবেটা কি?
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,994 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
সত্যিই নদীর স্রোতের মতো জীবন কাহিনী তরতরিয়ে এগিয়ে চললো সবার।
•
Posts: 208
Threads: 0
Likes Received: 347 in 231 posts
Likes Given: 487
Joined: Apr 2020
Reputation:
19
Boss notun kore ki suru korlen....
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,447 in 27,681 posts
Likes Given: 23,741
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(23-05-2020, 08:35 PM)Karims Wrote: Boss notun kore ki suru korlen....
correct.
Ei galpo ta age xossip e dekhechi bole mone porche na.
Darun lagche porte
•
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,994 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
দেবজয়ীর ভাগ্যে কে আছে কে জানে !
•
Posts: 1,203
Threads: 24
Likes Received: 9,934 in 1,160 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,694
।।তিন।।
স্টেশনে পরস্পরে জড়িয়ে ধরে দুই বন্ধু।তিন বছর পরে দেখা।কমল পরিচয় করিয়ে দেয় স্বপনের সঙ্গে।মাঝারি উচ্চতা,ক্ষয়াটে চেহারা স্বপনকে বেমানান লাগে কমলের পাশে।হাসলে দেখা গেল দাঁতে কালচে ছাপ।দেবজয়ীর মন খারাপ হয়।স্বপন ফিস ফিস করে বলল,তোমার বন্ধুর গাঁড়ের ঘের দেখেছো?যারা নাচে তাদের গাঁড় এরকম হেবভি হয়।কমল বিরক্ত হয়ে বলল,কি হচ্ছে শুনতে পাবে।
স্টেশন থেকে বেরিয়ে একটা হোটেলের কাছে এসে দাঁড়ায়।পথের ধারে মাল-পত্তর সমেত দাড় করিয়ে রেখে স্বপন হোটেল ঠিক করতে গেল।কমল দেখল সত্যিই জয়ীর পাছার গড়ন বেশ সুন্দর।খানিক পরে স্বপন ফিরে এসে বলল,চলো দারুন হোটেল পেয়েছি।
একটা ঘিঞ্জি গলিতে আধো অন্ধকার ঘর,বাসি খাবারের গন্ধ।দোতলার একটি ঘরে মাল-পত্তর নামিয়ে স্বপন বলে,তোমার নাচ দেখেছি টিভিতে,হেবভি নাচো মাইরি।
–হেবভি কি কথা,বলো হেভি।কমল বলে।
–এসেই শাল-আ জ্ঞান দেওয়া শুরু হল।অত ইংরেজি মারিও না তো।এসেছি হানিমুন করতে তা না সারাক্ষন জ্ঞান মারানো হচ্ছে।
–ভদ্রভাবে কথা বলো,এটা তোমার গ্যাজার মজলিস নয়।
–ভদ্দরতা শিখিয়ো নাতো ওসব তোমার মিম্ময়কে শিখিও।বোকাচোদা রস খেয়ে ছিবড়ে করে ফেলে দিল।আমি শাল-আ গাণ্ডু না হলে–।কমল আড়চোখে জয়ীকে দেখল। দরজায় ঠক ঠক শব্দ হতে সুবচন থেমে যায়।চা আর খাবারের ফরমাস দিয়ে স্নানে ঢুকল স্বপন।গাপুস-গুপুস খেয়ে সেজেগুজে স্বপন বেরোবার জন্য তৈরি।একটা কাগজের পুটলি পকেটে পুরতে গেলে কমল বলে,হাতে কি পুরিয়া?তুমি কিন্তু বলেছিল গাজা ছেড়ে দেবে?
–এতদিন পরে যাচ্ছি মনিপিসির জন্য নিয়ে যাচ্ছি।মাইরি বলছি আমি খাবো না।
জয়ীর দিকে তাকিয়ে কমল লজ্জা পেল,পিসিও গাজা খায়?
–কি করবে বলো?একা-একা থাকে কিছু একটা নিয়ে তো থাকতে হবে।
–বোকার মত কথা বোল না।কখন ফিরবে? জয়ী এখানে সারারাত থাকতে আসেনি।
–দেখি পিসি কখন ছাড়ে? পুরো হনিমুন তোমার একটা রাত পিসিকে দিতে ইয়ে ফেটে যাচ্ছে।তোমরা মেয়েরা মাইরি একটু এ্যাডজাস করে থাকতে পারোনা।বন্ধুর সঙ্গে সুখ-দুঃখের কথা বলো।আসি।
দেবজয়ী চুপচাপ ওদের আলাপ শুনছিল কোন কথা বলেনি।স্বপন বেরিয়ে যেতে বলে,এ তুই কাকে বিয়ে করলি? আর ছেলে পেলি না?
–ওকে কেন বিয়ে করলাম জানিস? প্রতিশোধ,আমি মৃন্ময়ের উপর প্রতিশোধ নিলাম।কলি তোমায় ছাড়া বাচবো না শালা কত ডায়লগ,হিংসেতে জ্বলছে এখন।
–জ্বলছে? তোর কি মাথা খারাপ? জ্বালাবার জন্য আর কোন ছেলে পেলি না? কি করে,পড়াশুনা কদ্দুর?
–পড়াশোনা?হি-হি-হি!উচ্চ-মাধ্যমিক ফেল।বাবা নামকরা উকিল প্রচুর অর্থ বিশাল বাড়ি মৃন্ময়দের কিনে বেচতে পারে।কে খাবে ওদের টাকা কেন চাকরি করে পরের গোলামী করতে যাবে?
জয়ী অবাক হয়ে বন্ধুকে দেখে কি বলছে কমল? একি সেই কমল যার হবি ছিল প্রেমপত্র জমানো?
–প্লিজ কমল তুই হনিমুনে যাস না।কী অপমান!বউকে রেখে গেল বাপের বয়সী পিসির সঙ্গে ফুর্তি করতে।কে এই পিসি?
–হি-হি-হি!ওদের বাড়িতে থাকতো মনোরমা না কি নাম।স্বামী কেন যেন ছেড়ে চলে যায়।কুঞ্জ উকিলই ডিভোর্স করিয়ে খোরপোষের ব্যব্যস্থা করে দিল।নিজের পিসি না।
–তুই ওকে তালাক দে,আজই।বেকার নেশাখোর অসভ্য ছেলে।এখনো আমার গা ঘিনঘিন করছে।
–হি-হি-হি! আসলে কি জানিস মৃন্ময়ের মা যখন বলল দুশ্চরিত্রা আমি কেঁদে ফেলেছিলাম।কি অবস্থা তখন আমার তোকে কি বলব? জানতাম স্বপন নেশা করে কিন্তু যখন বিপদের সময় পাশে এসে পায়ে ধরে বলল আমি তোমাকে বিয়ে করবো।নেশা-ভাং ছেড়ে দেবো।তুমি যা বলবে তাই শুনবো।ভাবলাম,ভালবাসা দিয়ে ওকে মানুষ করে তুলবো।মৃন্ময়ের মাকে দেখাবো আমার প্রেমের জোর।হি-হি-হি!জয়ী এত তাড়াতাড়ি হেরে যাব আমি ভাবতে পারি না।শেষ দেখে ছাড়বো।
–জানি না মাসিমা-মেসোমশাই কি করে মেনে নিলেন?
–মা অনেক কান্না-কাটি করেছে,আমি জেদ ছাড়িনি।
দেবজয়ীর একমুহূর্ত এই হোটেলে থাকতে ইচ্ছে করছে না।শুধু কমলের মুখ চেয়ে চলে যেতেও পারছে না।
–আমার কথা ছাড় কপালে যা আছে তা হবে।তুই কি এখনো নাচ চালিয়ে যাচ্ছিস? অবশ্য একদিন ছবি দেখেছিলাম কাগজে এলাহাবাদ না কোথায় তুই নাচতে গেছিলি–।
–নাচ ছাড়লে আমি মরে যাবো।কদিন একটু ঝামেলার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।গুরুজি একটু বিরক্ত মনে হয়।
–তুই এবার বিয়ে করে ফেল।বিয়ের পরও তো নাচা যায়।হিরালাল স্যর বিয়ে করেও নাচ চালিয়ে যাচ্ছেন।তোর গুরুজি বিয়ে করে নি?
–হ্যা। গুরুমার শরীর ভাল না,গুরুজির সেই এক চিন্তা।
–তা হলে তোর বিয়ে করতে বাঁধা কোথায়?
–বিয়ে করবো না,তাতো বলিনি।
–বল তোর কি রকম ছেলে পছন্দ?
–কালো বেটে টেকো যে কোন জাত চলবে শুধু বিয়ের পর নাচতে দিতে হবে।
–দিন দিন তোর রুপ খোলতাই হচ্ছে।ক্ষীণ কোটি গুরু নিতম্ব উন্নত পয়োধর কি বলবো জয়ী একেবারে সংস্কৃত কাব্যের নায়িকা।কোন দুঃখে তুই কেলো বেটে ছেলে বিয়ে করতে যাবি?ইচ্ছে করছে তোকে ল্যাংটো করে দেখি হি-হি-হি! কোথাও প্যাড প্যাকিং দিস নি তো?
–যাঃ-আ তোর খালি ঐসব কথা।লজ্জা পেল দেবজয়ী।তপনের কথা চেপে যায়। ছেলেটা তাকে সাহায্য করার জন্য মুখিয়ে আছে।অবশ্য বলার মত কিছু হয়নি।
–কি ভাবছিস রে জয়ী?
–ভাবছি আমার সাধনা নাচ আর তোর ঐ অসভ্যটাকে সভ্য করে তোলা–। দেবজয়ী হাসতে হাসতে বলে।
এমন ঘিঞ্জি বুঝতেই পারেনি এতবেলা হল।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেবজয়ী বলে,এবার আমাকে যেতে হবে।একা-একা থাকতে হবে খুব খারাপ লাগছে।তোর স্বপনবাবু কখন আসবে?
–হি-হি-হি! তুই যা,আমার অভ্যেস হয়ে গেছে।
বিষন্নমনে হোটেল থেকে বেরিয়ে আসে দেবজয়ী।
হোটেলের একটা বয় এসে জিজ্ঞেস করে,ম্যাডাম আপনাকে কোথায় দেখেছি মনে হচ্ছে….।
দেবজয়ী হাসে,মনে মনে বলে কোথায় আবার টিভিতে বা কোন প্রেক্ষাগৃহের অনুষ্ঠানে।
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,994 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
দেবজয়ী হঠাৎ কমল-স্বপনের হোটেলে উঠলো কেন, যাচ্ছেই বা কোথায়?
•
|