Posts: 1,199
Threads: 24
Likes Received: 9,882 in 1,156 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,681
13-05-2020, 10:24 AM
(This post was last modified: 13-05-2020, 03:03 PM by kumdev. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
দিপালি কলেজ হতে ফিরে স্নান করতে ঢুকল বাথরুমে।কলেজে যাওয়া আসার পথের ধারে হ্যাবলার মত দাঁড়িয়ে থাকে দেখলে গা জ্বলে যায়।ভীতুর ডিম একটা। উলঙ্গ হয়ে সাবান ঘষতে ঘষতে হঠাৎ আবিস্কার করল শুয়োপোকার রোমের মত রেশমি লোম যোনীর চার পাশে বস্তি প্রদেশে গজিয়েছে কচি ঘাসের মত।মনের মধ্যে শুরু হল তুমুল আলোড়ন।কোমর বেকিয়ে বস্তিদেশ মেলে ধরে শাওয়ারের নীচে।উপর হতে ছরছর করে পড়ে জলধারা।দু-আঙ্গুলে ধরে মৃদু টান দিতে অনুভব করে শিহরন। কি সুন্দর নরম রেশমের মত!আস্তে আস্তে হাত বোলায় যোণীর চার পাশে।সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে অনির্বচনীয় সুখানুভুতি।একটা মুখ মুহুর্তের জন্য উকি দেয় মনে।তুমি চিরকাল দাড়িয়েই থাকো,হাঁদারাম একটা।
বুকের নীচে শ্বাস আটকে আছে, হাসফাস করে মন।ঘটনাটা একজন কাউকে শেয়ার না-করা পর্যন্ত স্বস্তি হয় না।স্নান করে বেরিয়ে আসে দিপালি। মনে পড়ে কলেজে সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু নুপুরের কথা।ওর সঙ্গে সব কথা শেয়ার করে। অনেককিছু জানে নুপুর।দুজনের কথা হয় খোলাখুলি।সব গোপন কথা বলে দিপালিকে যা সবাইকে বলা যায় না।ওর লাভার যেদিন নুপুরকে কিস করেছিল প্রথম সেকথা বলেছিল দিপালিকে।নুপুরেরও কি তার মত হয়েছে? নুপুরের বুক দিপালির চেয়ে উচু তাহলে নিশ্চয়ই হয়েছে। কতক্ষনে দেখা হবে নুপুরের সঙ্গে? কাল কলেজের আগে সম্ভব নয়।ইচ্ছে করছে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কেমন লাগছে দেখতে কিন্তু মিতালি যে কোন সময় চলে আসতে পারে।কখন নুপুরের সঙ্গে দেখা হবে সব কথা ওকে বলবে সেই চিন্তায় তর সইছেনা।
ডাক্তার দেবাঞ্জন বোসের দুই মেয়ে,দিপালি এবং মিতালি।দিপালি এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে,মিতালি সপ্তম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হল।দুজনেই মেধাবী ভাল ফলাফল করে ক্লাসে ওঠে।ভাল ডাক্তার হলেও সাংসারিক ব্যাপারে একেবারে আনাড়ি।সে দায়িত্ব সামলাতে হয় স্ত্রী দেবারতিকে। স্বাভাবিকভাবে তিনি স্ত্রীর অতিশয় অনুগত।
ভোর বেলা স্নান সেরে কলেজ যাবার জন্য তৈরী হয় দিপালী।নূপুরকে সব বলতে হবে মনে মনে ভাবে।কলেজে বেরোবার আগে মিতালি এসে বলে,দিদিভাই অঙ্কটা একটু দেখিয়ে দিবি?
--আমার এখন সময় নেই।দিপালি বোনকে হতাশ করে বলে।
এবার মিতুর ক্লাসে বীজগণিত শুরু হবে।দেবারতি টিউটরের খোজ করছেন।দিপুকে দিয়ে হবে না তা ছাড়া ওর কদিন পরে পরীক্ষা।হীরুবাবুকে বলেছেন একজন ভাল শিক্ষকের জন্য।ভদ্রলোক দিপুর গানের শিক্ষক,পাড়ায় বেশ পরিচিতি।দেবারতি বিদুষী আধুনিকা মহিলা,সাজগোজেই তার অধিকতর রুচি।পাড়ার লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা কম।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজগোজ করছে দিপালি।হঠাৎ মনে হল বকুলতলায় কি আজ দাঁড়াবে ছেলেটা? সেই নাইন হতে দেখে আসছে বকুলতলায় দাঁড়িয়ে থাকে উদাস দৃষ্টি মেলে।কেমন বোকা বোকা,মনে মনে হাসে দিপালী। অন্যসব ছেলেরা কলেজের গেটের কাছে দাড়ায়।সুদিপও নুপুরের সঙ্গে প্রেম হবার আগে গেটের কাছেই দাড়াত।কিন্তু এই ছেলেটা গেট হতে অনেকটা দূরে বকুলতলায় অতল দিঘীর মত চোখ মেলে দাঁড়িয়ে থাকে।ওর নাম নীল অঞ্চলে উচ্চ-মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে।সবাই বলে পাড়ার গর্ব।দিপালির ঠোট কুচকে যায়,গর্ব না হাঁদারাম একটা।কিছু বলার থাকলে বল।
নুপুর বলেছিল,দিপা তোর জন্য দাঁড়িয়ে আছে।বকুলতলা অতিক্রম করতে গিয়ে দম চেপে কান খাড়া করে রেখেছে, প্রতিদিন ভাবতো এইবুঝি ছেলেটা এগিয়ে এসে কিছু বলবে।বকুলতলা পার হতে বুক ঢিপঢিপ করতো। দিনের পর দিন যায় কিন্তু পাথরের নড়াচড়ার কোন লক্ষন নেই।কি ভাবে নীল নিজেকে? দিপালি উপযাচক হয়ে তার সঙ্গে কথা বলবে? যার মা লোকের বাড়িতে কাজ করে,কিসের এত অংহ্কার তার?
এখন ঘড়িতে সাড়ে-ছটা,সাতটায় ক্লাস।টেস্টের রেজাল্টের পর যদিও নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না,কিছু স্পেশাল ক্লাস হয় মেয়েরাও আসে কম।তবু পৌছাতে হবে সময়মত।নুপুর আসে সুদিপের জন্য।সুদিপ নাকি ওকে বলেছে নুপুরকে না-দেখলে ঘুম আসে না।আদিখ্যেতা,যেন ওরাই প্রেম করছে আর কেউ করে না।দুর হতে নজরে পড়ে দাঁড়িয়ে আছে ছেলেটা।কোন বাড়ির ট্রাঞ্জিষ্টার হতে গান ভেসে আসছে--'গোলাপের অলি আছে ফাগুনের আছে বাহার সকলের সাথী আছে কেউ নেই আমার...।'এই একটা ব্যাপারে নুপুরের চেয়ে নিজেকে ছোট মনে হয়।নীলের প্রতি রাগ হয়,এরকম মেনিমুখো ছেলে তার ভাল লাগে না।থাকো তুমি ঐভাবে দাঁড়িয়ে যতক্ষন ইচ্ছে যত দিন ইচ্ছে।অভিমানে চোখে জল এসে যায়।
নুপুর হাফাতে হাফাতে এসে জিজ্ঞেস করে ,কিরে কি ভাবছিলি?তখন থেকে ডাকছি,শুনতে পাসনি?
--ও তুই? একদম খেয়াল করিনি।
--সেই মালটা বকুল গাছের নীচে দাঁড়িয়েছিল দেখেছিস? নুপুর হাসতে হাসতে বলে।
--কে ওই ক্যাবলাকান্ত? আমার দেখতে বয়ে গেছে।
--আরে টেম্পুরারি কাজ চালা না।নুপুর মজা করে বলে।
দিপালির এমনিতে ছেলেটার প্রতি রাগে গা জ্বলছিল,নুপুরের কথায় মনটা চিড়বিড়িয়ে ওঠে,তোর দরকার হয় তুই চালা।
--আমার তো সুদেব আছে,না হলে দেখতাম।গর্বিত গলায় বলে নুপুর।
নুপুরের প্রতি হিংসা হয়।যখন সুদেবের গল্প করে মনে হয় পৃথিবীতে ওর মত সুখী কেউ নেই। সুদেবকে দেখেছে দিপালি।আহামরি কিছু দেখতে নয়।নুপুর বলে শাহরুকের মত দেখতে।কোন কলেজে বি.এ পড়ে।নীলের সঙ্গেই পাস করেছে।অবশ্য নীল ওর চেয়ে হাজার গুন ভাল লেখাপড়ায়। নীলের রঙ ময়লা মাজা ,মাথায় ঝাকড়া এলোমেলো চুল।ব্যাটাছেলের রং-এ কিছু এসে যায় না।
--কি রে কি ভাবছিস বল তো?নুপুর জিজ্ঞেস করে।
--তোকে একটা কথা বলবো--খুব প্রাইভেট।দিপালি বলে।
নুপুর অবাক হয়ে তাকায়,দিপাকে কেমন অন্যরকম মনে হচ্ছে।কিছু হয়েছে নাকি বকুলতলায়?কি কথা বলতে চায় দিপা?দীপা ইতস্তত করে রোম গজানোর কথা ওকে বলবে কিনা?যদি হাসাহাসি করে?
প্রতিদিন ভোরে মর্নিং ওয়াক করতে বেরোয় নীলকণ্ঠ সেন।সঙ্গে থাকে তার সহপাঠি শিবেন।শিবেন অবস্থাপন্ন পরিবারের ছেলে। নীলের বিধবা মা লোকের বাড়ি কাজ রান্নার করলেও শিবেন মাকে খুব সম্মানের সঙ্গে মাসীমা বলে ডাকে।তারপর পৌনে সাতটা নাগাদ বকুলতলায় দাঁড়িয়ে বিশ্রাম করে।দীপুকে দেখতে ওর খুব ভাল লাগে।দুরে একঝাক মেয়ের মধ্যে যখন থাকে চিনতে অসুবিধে হয় না এত ফর্সা।পাকা পেয়ারার মত গায়ের রং।কেউ দীপুকে টিটকিরি দিলে নীলের বুকে বাজে।কিন্তু স্বপ্নেও দীপুকে নিজের বলে ভাবতে পারে না।নিজেকে বোঝায় ভালো লাগলেই তা পেতে হবে নাকি?
শিবেন যথেষ্ট উৎসাহ দিলেও সেসব ভাবতে সাহস হয়নি।ওর বাবা ডাক্তার সমাজে প্রতিষ্ঠিত, বিশাল প্রাসাদোপম বাড়ি।কিসে আর কিসে?তবু মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারেনা। ঘুরে ফিরে মুখটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে।ও যখন আড়চোখে তাকায় শিরশির করে বুকের মধ্যে।
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই গল্পটা পোস্ট করার জন্য
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(13-05-2020, 10:24 AM)kumdev Wrote: likhe abar delete kore dilen. Sir sudhu apnar golpo porar kono exclusive site ba blog ache ki. Karon ekhane ashi shudhu apnar golpo porte. Please jodi janan tahole khub bhalo lagbe..
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
আরো একটা অসাধারণ সামাজিক শিক্ষামূলক গল্প।
Posts: 1,199
Threads: 24
Likes Received: 9,882 in 1,156 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,681
।।২।।
যতক্ষন দীপাকে দেখা যাচ্ছিল নীল তাকিয়ে থাকে অপলক।অনেকটা যাবার পর দীপা একবার পিছন ফিরে তাকাল নীল মাটির দিকে তাকিয়ে কি যেন দেখতে থাকে।দীপা ঠোট বেকিয়ে আবার হাটতে শুরু করে। বেলা হল আবার কলেজ যেতে হবে।দীপা কলেজে ঢুকে গেলে বাড়ির দিকে পা বাড়ায় নীল।শিবেন এসে জিজ্ঞেস করে,কিছু হল?
ম্লান হাসে নীল।কি আবার হবে? রোজ যা হয়,এক পলক দেখা,চোখে চোখে মিলন।পৃথিবীতে অনেক কিছুই আছে কিন্তু সব সবার জন্য নয়।দেশের বাড়িতে একটা সেতু ছিল পার হলে জঙ্গল। জঙ্গল নিয়ে ছড়িয়ে ছিল নানা কাহিনী। পাড়ার লোকজন সেতু পেরোতে ভয় পেত।সবাই তাকে বলত নিষিদ্ধ সেতু।মনে মনে হাসল নীলু।
--তোর যত হেয়ালী।শিবেন বিরক্ত হয়ে বলল।
নীলু ভাবে শিবেন তার অবস্থা বুঝবে না। এখন তার সমস্যা কি করে পড়াশুনা চালিয়ে যাবে?উদয়াস্ত খাটছে মা,ছেলেকে যে করেই হোক দাড় করিয়ে যেতে হবে।এই চিন্তাটাই নীলকে অহরহ তাড়িয়ে নিয়ে ফেরে,মায়ের পরিশ্রম যেন বৃথা না হয়।প্রাণপণে আকড়ে ধরে বই।রাত জেগে যখন পড়ে মা বলে,এখন বই রেখে ঘুমো বাবা,আবার কাল পড়িস।
নুপুর জিজ্ঞেস করে,তুই কি বলবি বলছিলি?
দীপার কাছে সবটা শুনে নুপুর বলে,চল বাথরুমে যাই।
ক্লাসে বইয়ের ব্যাগ রেখে বাথরুমে গেল দুই বন্ধু।দীপার প্যাণ্ট নামিয়ে যোণীর উপর হাত রাখে নুপুর।সত্যি খুব মোলায়েম।রুদ্ধশ্বাসে দীপা মাথা নীচু করে দেখছে নুপুরের কাণ্ড।আচমকা চেরার মধ্যে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিল নুপুর।
দীপা শিউরে উঠে বলে,এ্যাই কি করছিস?
--ভাল লাগছে না?নুপুর জিজ্ঞেস করে।
--তুই না ভীষণ অসভ্য।তোর কোন ঘেন্না-পিত্তি নেই।মনে মনে খুশি হলেও দীপা প্রকাশ করে না।কি সুন্দর লাগল।
--তুই এত ফর্সা তাই কচিবাল এত সুন্দর লাগছে।পরে দেখবি বিরক্তিকর লাগবে।
--কেন?
নুপুরের যতটা জ্ঞান আছে সেই মত বোঝাবার চেষ্টাকরে। 'মাসিক হলে রক্তে ভিজে জট পাকিয়ে যাবে।যখন কেউ চুষতে যাবে মুখে বাল ঢুকে--।'দীপা চোখ বড় করে শুনছে নুপুরের কথা।ওখানে কেউ চুষবে কেন বলল?
--কে চুষবে?লাজুক গলায় জিজ্ঞেস করে দীপা।
--ছেলেরা ওখানে চুষতে ভালবাসে।বিজ্ঞের মত বলে নুপুর।
--ছেলেরা ওইখানে মুখ দেয় কি করে জানলি? সুদিপ কি--?
--পাগল? এখন ঐসব না,আমি সুদিপকে বলে দিয়েছি বিয়ের আগে পর্যন্ত কষ্ট করতে হবে।তোকে কামদেবের একটা বই দেবো। গোপনে পড়বি,অনেক কিছু জানতে পারবি।
দীপার কৌতুহল তীব্র হয়, নুপুর বই পড়ে এইসব জেনেছে।দীপা বলল, এখন না,পরীক্ষার পরে দিস।
একটা মোটে ক্লাস হল।ফালতু সময় নষ্ট কাল থেকে আর কলেজে আসবে না।কলেজে আসার একটা আকর্ষণ ম্যাড়াকান্ত।রোজ দাঁড়িয়ে থাকে দেখতে দেখতে মায়া পড়ে গেছে।এখন রাগ হয়,কিছু বলার থাকলে বল।
সন্ধ্যেবেলা কোচিং হতে বেরিয়ে রিক্সাস্ট্যাণ্ডে আসতে রিক্সাওয়ালা ভাড়া বেশি চায়।সঙ্গে নুপুরও ছিল।
--আমরা কি নতুন নাকি? রোজ আসছি--।নুপুর ঝাজিয়ে ওঠে।
--এ্যাই মেমসাবকে নিয়ে যা।উঠিয়ে মেমসাব।
রিক্সাওয়ালা ভয়ে সিটিয়ে যায়।নুপুর মিচকি হাসে।দীপা তাকিয়ে দেখে একটি সুদর্শন ছেলে পাশে এসে দাড়িয়েছে।আড়চোখে দীপাকে দেখে।জিন্সের প্যাণ্ট টি-শার্ট গায়ে, চুলের মাঝখানে সিথি কাটা,হিন্দি সিনেমার হিরোর মত দেখতে।
--চলিয়ে মেমেসাব।রিক্সাওয়ালা বলে।
--কত ভাড়া? দীপা জিজ্ঞেস করে।পরে ভাড়া নিয়ে গোলমাল তার পছন্দ নয়।
--যা আপনের মর্জি।
যা আমার মর্জি? এই চমৎকারি ফলে অবাক হয় দীপা।দুজনে রিক্সায় ওঠে।
--কিরে কি ভাবছিস?জিজ্ঞেস করে নুপুর।
--ছেলেটা কে বলতো?
--ওর নাম বলু।সকলে ওকে খুব ভয় পায়।দেখলি না রিক্সাওয়ালা কেমন জোকের মুখে নুন পড়ার মত কুকড়ে গেল।হি-হি-হি।
--যাই হোক ছেলেটা বেশ ভদ্র।দীপা বলে।এদের জন্য রাস্তা-ঘাটে বাদরামি অনেক কম হয়।
--তোর পছন্দ হয়েছে বল?নুপুর মজা করে বলে।
--ধ্যাৎ খালি বাজে কথা।দীপা বলে, যা সত্যি তাই বললাম। ন্যাকা মার্কা ছেলে আমি দু-চক্ষে দেখতে পারি না।কথাটা সম্ভবত নীলের কথা ভেবে বলল।বটতলার কাছে আসতে নুপুর নেমে যায়।নামার আগে জিজ্ঞেস করে,কাল কলেজে আসবি?
--না আর কলেজে যাব না।দীপা বলে।
--আমাকে সুদিপের জন্য আসতেই হবে।নুপুর হেসে হাটা শুরু করে।রাস্তা বাক নিতেই ভুতের মত সামনে আবির্ভুত হয় বলু।
--দিদি বাড়ি চললেন?
নুপুর ভাবে আমি ওর দিদি?উপকার করে তার প্রতিদান চায় নাকি?এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখে বলল,হ্যা বাড়ী যাচ্ছি।
--আপনের বন্ধুর নাম কি আছে?
--ড.দেবাঞ্জন সেনের মেয়ে,দীপালি সেন।
--আমার উপর গুসসা হয়নি তো?
--কেন আপনি কি করেছেন?
--রিক্সাআলাটাকে ধমকাইলাম--।
নুপুর মনে মনে হাসে,বোকাচোদা ফেসেছে।বলুর সঙ্গে কথা বলতে দেখলে সুদীপ রেগে যেতে পারে।মৃদু হেসে বলল,সে কথা আপনি ওকেই জিজ্ঞেস করবেন। নুপুর ওকে অতিক্রম করে বাড়ীর দিকে পা বাড়ায়।
নূপুর কলেজে যাবে সুদীপের জন্য। দীপা মনে মনে ভাবে ঢং,যেন প্রেম ও একাই করছে। দীপা কার জন্য যাবে,ঐ ম্যাড়াকান্তটার জন্য?হা-করে দাঁড়িয়ে ফ্যাল-ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে দেখলে গা জ্বলে যায়।কথা বলতে পারেনা বোবা নাকি? আজকের ছেলেটা বেশ স্মার্ট।রিক্সাওলা ভয়ে চুপষে গেছিল।এসব এখন না পরীক্ষার আর বাকী নেই।দীপালি বাড়ি ঢুকে গেল।কালও হয়তো বকুলতলায় তীর্থের কাকের মত দাঁড়িয়ে থাকবে।যখন তাকে দেখতে পাবে না দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে যাবে।দৃশ্যটা কল্পনা করে দীপা বেশ মজা পায়।
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
না নীল এগিয়ে আসছে না দীপা উদ্যোগ নিচ্ছে
•
Posts: 1,199
Threads: 24
Likes Received: 9,882 in 1,156 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,681
।।৩।।
বাস্তব বোধ আর আবেগের সম্পর্ক মধুর ছিল না কোনদিন।বাস্তব পথ চলে পা টিপে অঙ্ক কষে সতর্ক নজর মাটির দিকে,আবেগ তীব্র গতিপ্রবন, কোন কিছুর তোয়াক্কা করে না।প্রতিপদে তার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বাস্তব বোধ।বাস্তবকে বলা যায় আবেগের অভিভাবক।অবাধ্য সন্তান অনেক সময় অভিভাবকের বিরুদ্ধে চলে যায় তেমনি আবেগও অস্বীকার করে কখনও বাস্তবের খবরদারি।নীল এসব একেবারে ভাবে না তা নয়।তবু প্রতিদিন এসময় এই বকুলগাছের নীচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে।ডাক্তারবাবুর মেয়েকে একপলক না দেখলে স্বস্তি হয় না।মগ ডালে ফুটে থাকা ফুল আয়ত্তে নেই জেনেও কি মানুষ তার শোভা উপভোগ করেনা। নিজেকে বুঝিয়েছে,অন্যের বাড়ি কাজ করে তার মা।যত কেন মর্যাদা বোধ থাকুক, সবার কাছে 'কাজের লোক' বই অন্য কিছু না।দিপালির বাবা ডাক্তার সমাজে মান্যগন্য।এতো আকাশ কুসুম কল্পনা! ম্লান হয়ে আসে নীলের মুখ।
একটু আগে দিপালি কলেজে গেল তার দিকে উপেক্ষার দৃষ্টি ছুড়ে দিয়ে।হীরেণ বাবুর সঙ্গে কথা বলছিল তখন নীলু।হিরেনবাবু মুখ চেনা, আলাপ ছিল না।ডাক্তার বাবু ডেকেছেন। চেম্বারে দেখা করবে বলতে হীরেন বাবু বললেন,না, বাড়িতে এসো।ওর স্ত্রী কথা বলবেন।
দিপালি কি কিছু বলেছে বাড়িতে?কথাটা একবার ঝিলিক দিয়ে যায়।কি বলবে? সেতো কোনদিন দিপাকে অসম্মান করেনি।তবে কি বানিয়ে বানিয়ে কিছু বলে থাকবে?
--আচ্ছা উনি কি আমাকে চেনেন? আমাকে কেন ডাকলেন? নীলু প্রশ্ন করে।
--এ অঞ্চলে তোমাকে চেনে না এমন কেউ আছে নাকি? তুমি অঞ্চলের গর্ব।হেসে হীরেন বাবু বলেন।
গর্ব? কে হতে চায় গর্ব? শুধু দিপালি যদি তার প্রতি সদয় হত?মনে মনে ভাবে নীলু,ম্লান হেসে হীরেন বাবুকে বলে,ঠিক আছে বিকেল বেলা যাবো।
হীরেন বাবু চলে যাবার পর শিবেন এল।নীলুর সঙ্গে পড়ে এক কলেজে।শিবেনের বাবা ভাল চাকরি করেন,অবস্থা ভাল।নীলের মা লোকের বাড়ি কাজ করে বলে তাকে অন্যচোখে দেখে না।শিবেন মাকে মাসীমা বলে ডাকে।মাও ওকে খুব স্নেহ করে শিবুকে।
--ওই ভদ্রলোকের নাম হীরেন বাবু।
--আমি চিনি।ডা.বোসের মেয়েকে গান শেখায়।আমার কাছে তোর খোজ করছিল,আমিই তো পাঠিয়েদিলাম।কি বলছিল রে?
--ডাক্তার বোসের বউ ডেকে পাঠিয়েছে।নীল বলে।
--এইতো মওকা গুরু ,চলে যা।
শিবুর কথায় মৃদু হাসি ফোটে নীলের মুখে।কি বলবে শিবুকে,ও অতশত বুঝতে চায় না।
--বেলা হল,চল বাড়ি যাই।
দুজনে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।নীলুর মুখ-চোখ দেখে শিবু আর কোন উচ্চবাচ্য করে না।একসময় ভেবেছিল নীল জয়েণ্ট পরীক্ষায় বসবে।যদি ডাক্তারিতে সুযোগ পায়ও পড়া চালাবার টাকা কোথায়? টাকার জন্য পড়া হবে না জানলে মা কষ্ট পাবে।সূর্য অনেকটা উপরে উঠে এসেছে।বিকেলে ড বোসের বাড়ী যাবে কথা দিয়েছে।
সরমা কাজ সেরে বাড়ি ফিরে এসেছে,ছেলে ফিরল তার ঘণ্টা খানেক পর।বাড়ি ঢুকতে মা জিজ্ঞেস করে,কি রে এত বেলা অবধি ছিলি কোথায়?
--শিবুর সঙ্গে গল্প করছিলাম।তুমি কখন ফিরলে?
--আমি ফিরেছি অনেক্ষন আগে।আজ একটা মজা হয়েছে।উকিলবাবুর বউটা ভাল।আজ মাংস রান্না করেছি।ভদ্রমহিলা বলল,নীলুর মা একটা টিফিন কেরিয়ারে একটু মাংস নিয়ে যাও।
--মাংস এনেছো?নীলু জিগেস করে।
সরমার মুখটা করুন হয়ে গেল।তারপর হেসে বলল,আমি বিধবা মানুষ মাংস নিয়ে কি করবো?তখন বলে,তুমি না খাও,তোমার ছেলের জন্য নিয়ে যাও।
--আমি মাংস খাবো না।নীলু বলে।
সরমা হেসে বলে, আনলে তো খাবি।ভদ্রমহিলার মুখটা কালো হয়ে গেল।খুব খারাপ লাগছিল।
--তা হলে আনলে না কেন?
--মাংস খেলে কি লাভ হত জানি না, কিন্তু যদি আনতাম স্বভাবটা নষ্ট হয়ে যেত।
মার কথা শুনে ভেঙ্গে পড়া মনটা চাঙ্গা হয়ে যায়।দীপালির উপেক্ষার জ্বালা এখন তেমন বাজছে না।মনটা হাল্কা বোধ হয়।বিকেলবেলা ওদের বাড়ি যেতে হবে কথা দিয়েছে।সন্ধ্যে বেলা দুটো টীউশনি আছে।
মানুষ এত নির্বিকার হয় কিভাবে।দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকে মুখে বাক্যটি নেই।হাবাগোবা নয় লেখাপড়ায় চৌখস ভেবে পায় না দীপা।নূপুরটা এত ফাজিল ও আছে ওর শাহ্রুককে নিয়ে একটা বুদ্ধি দে তা নয় খালি উল্টোপাল্টা কথা।খাতাপত্তর নিয়ে কোচিং যাবার জন্য প্রস্তুত হয়।
সূর্য হেলে পড়েছে পশ্চিমে।এবার বেরোতে হবে।
--এখন আবার কোথায় বেরোছিস?
--রানি পার্কের দিকে যাব।একটা কাজ সেরে টিউশনি করে রাতে ফিরবো।
--জয়েণ্টে বসলি না,বি.এসসি.তে ভর্তি হয়ে গেলি।এলোমেলো ভাবে নয় একটা লক্ষ্য ঠিক করে এগোতে হয় বাবা।
মায়ের দু-কাঁধে হাত রেখে স্থির তাকিয়ে থাকে নীল।তারপর ধীরে ধীরে বলে,মাগো, আমার লক্ষ্য এইযে তুমি বাড়ি বাড়ি পঞ্চ ব্যঞ্জন রান্না করছো নিজের ঘরে ডাল-ভাতের সংস্থানের জন্য--এইটা বন্ধ করা।
--তাড়াতাড়ি ফিরিস।দ্রুত কথাটা বলে সরমা অন্যদিকে চলে যায়।চোখের জল লুকোতে?
রানীপার্কে রাস্তার ধারে বিশাল বাড়ি।দরজায় নাম ফলক Dr.Debanjon Bose.নীল কবজি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখে পাঁচটা বাজতে তখনও মিনিট পাঁচেক বাকি।কলিং বেল টিপবে কিনা ইতস্তত করে।দীপার সঙ্গে দেখা হলে তার কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে মনে মনে ভাবে।হঠাৎ দরজা খুলে যেতে দেখল,দাড়িয়ে একজন মহিলা, সম্ভবত পরিচারিকা। পোষাক দেখে তাই মনে হল।
--ভিতরে আসেন।
নীলু মহিলাকে অনুসরন করে দোতলায় উঠে গেল।একটি ঘরে বসতে বলে মহিলাটি চলে গেল।খুব গরম না তবু নীলু অস্বস্তি বোধ করে।রুমাল বের করে মুখ মোছে। আয়নায় মুখটা দেখতে পারলে ভাল হত।
--তুমি এসে গেছো?
নীলু তাকিয়ে দেখে তার সামনে দাঁড়িয়ে ফর্সা মাঝ বয়সী একজন মহিলা।ইনি মিসেস বোস হতে পারেন।তাড়াতাড়ি দাঁড়িয়ে ওঠে নীলু।
--বোসো-বোসো।তোমার নাম তো নীলু?
--জ্বি।কথাবার্তা শুনে মনে হয় না ভদ্রমহিলার মনে তার প্রতি কোন বিদ্বেষ আছে।
--আমি মিসেস বোস,আমাকে আণ্টি বলতে পারো।
এবার চোখ তুলে তাকায় নীলু।গলার নীচে প্রশস্ত বুক নজরে পড়ে।অনেকটা খোলা থাকায় স্তন দ্বয় ঈষৎ উন্মুক্ত।আধুনিকারা এসব দিকে একটু উদার নীলুর ধারনা। সেই মহিলাটি ঢুকে চায়ের ট্রে সামনের টেবিলে রাখে।আন্টি বলল,চা খাও।
কোনো অভিযোগ আছে মনে হয় না, নীলু কাপ নিয়ে চায়ে চুমুক দেয়।
--তুমি আমার মেয়েকে তো চেনো?
নীলুর হাত কেপে গেল।এ প্রশ্ন কেন বুঝতে পারে না নীলু।ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো।
--লেখাপড়ায় ভাল কিন্তু অঙ্কটা নিয়ে মুস্কিল।
নীলু শুনেছে দীপালি লেখাপড়ায় সত্যিই ভাল।হঠাৎ সেই প্রসঙ্গ কেন?
--ওকে যদি তুমি একটু অঙ্কটা শিখিয়ে দাও--।
--কদিন পরে তো পরীক্ষা, এখন--?
--কদিন পরে মানে?এখনো সাত-আট মাস বাকি।সবে তো ফেব্রুয়ারী চলছে।মিতু এবার সেভেনে উঠেছে।এবার তো বীজগনিত করতে হবে।
নীলু ভুল বুঝতে পারে,দীপালি নয় মিতালির কথা বলছে।
--কি ভাবছো? তুমি কিছু বলছো না?আণ্টি তাগাদা দেয়।
এতক্ষনে ব্যাপারটা পরিষ্কার হল তাকে টুইশনির জন্য ডাকা হয়েছে। চোখ তুলে তাকাতে আণ্টির স্তনজোড়া চোখে পড়ে।স্তনের উপর কাল তিল।চোখ নামিয়ে নিয়ে বলে নীলু,চেষ্টা করবো।
--চেষ্টা করবো মানে?তোমার কথা বুঝলাম না।তোমাকে শেখাতেই হবে।
--শেখা ব্যাপারটা যে শেখে আর যে শেখায় দুই জনের উপর নির্ভর করে।আমি চেষ্টা করব।
হেসে ফেলেন মিসেস বোস।বেশ কথা বলে ছেলেটি মিসেস বোসের খুব পছন্দ হয় নীলুকে।মানদা বলে উচু গলায় ডাকতে সেই মহিলা এসে দাঁড়ায়।
--ফ্রিজ থেকে ফিশ ফ্রাই বের করে ভেজে নিয়ে আয়।
--না না আমি কিছু খাব না।নীলু আপত্তি করে।
--আমি তাহলে খুব দুঃখ পাবো।
পোষাক চেহারা যাই হোক মনটা সেই নারীর মত মমতা মাখানো।দীপালি কেন অমন রুঢ়ভাষী হল ভেবে অবাক লাগে।
--এবার বলো তোমাকে কত দিতে হবে?
--আমি কিন্তু সপ্তাহে দুদিন আসবো।
--মোটে দুদিন ?তাতে কি হবে? মিতু ,এ ঘরে এসো।
--সেটা আমার দায়িত্ব--।
মিতালি প্রবেশ করে,বোঝা গেল আশপাশেই ছিল।দিপালিও কাছে-পিঠে আছে হয়তো।
--দিপু ফেরেনি?মেয়েকে জিজ্ঞেস করে মিসেস বোস।
--দিদিভাই কোচিং হতে ফেরেনি।
আণ্টির মুখ দেখে মনে হল মেয়ের জন্য উৎকণ্ঠা।মিতুকে বললেন, উনি তোমাকে অঙ্ক করাবেন,মাস্টারমশায়ের নাম নীলু।
--আমি তো চিনি।তুমি খুব ভালো ছেলে?
--তুমি কি আপনি বলো।মিসেস বোস বললেন।
নীলু হেসে বলল,না না ঠিক আছে।
Posts: 912
Threads: 1
Likes Received: 867 in 546 posts
Likes Given: 3,345
Joined: Dec 2018
Reputation:
40
Ba sundor suru .... Choluk ...
Posts: 16
Threads: 0
Likes Received: 12 in 11 posts
Likes Given: 154
Joined: Oct 2019
Reputation:
0
অন্ন গল্পর মত এটাও বেশ ভাল।
Posts: 504
Threads: 1
Likes Received: 510 in 219 posts
Likes Given: 339
Joined: May 2019
Reputation:
12
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
"বাস্তবকে বলা যায় আবেগের অভিভাবক।" অত্যন্ত দামি কথা
•
Posts: 1,199
Threads: 24
Likes Received: 9,882 in 1,156 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,681
।।৪।।
দীপালি রিক্সায় বসে,তার চোখদুটো এদিক-ওদিক কি যেন খোঁজে।ছেলেটা হা-করে চেয়ে থাকে, একেবারে ক্যাবলা কান্ত।কিছু বলার থাকলে বল।রোজ দেখতে দেখতে ঘুরে ফিরে এখন কেবল মুখটা মনে পড়ে।কোথাও সেই মুখটা নজরে পড়ল না। দীপালির রাগ হয়,কেন রোজ পথের ধারে হ্যাংলার মত দাঁড়িয়ে থাকে? ভীরু কাপুরুষ পাড়ার গৌরব ত কি হয়েছে? খুজলে ওরকম ভাল ছেলে ভুরি ভুরি বেরোবে।দীপার চোখে জল চলে আসে। রিক্সা বাড়ির সামনে থামতেই ঘ্যাচ করে একটা বাইক সামনে এসে ব্রেক কষে।
--কি ম্যাডাম,রিক্সাওয়ালা কোন গোলমাল করেনি তো? বাইকের দুদিকে পা রেখে জিজ্ঞেস করে বলু।
--না-না।ধন্যবাদ।কিছুটা থতমত দীপালি আচমকা প্রশ্নে।
--শুধু ধন্যবাদ দিয়ে কাজ সারবেন?
--আর কি দেব?মুচকি হাসে দীপালি।
--সব আমি বলে দেব? আচ্ছা বলব কাল।
-- আমি তো এখন কলেজে যাই না।এখন পরীক্ষা-।মৃদু হাসি ফোটে দীপার ঠোটে।
--ওকে,পরীক্ষার পর দেখা হবে।অল দা বেস্ট।.
হুশ করে চলে যায় বাইক।স্বল্প সময়ের কথাবার্তায় দীপার কপালে ঘাম জমে। কলেজে যায় কি যায়না ওকে বলার কি দরকার ছিল।যাকগে বললে কি হয়েছে? রুমাল বের করে কপালে বুলিয়ে রিক্সাওলাকে জিজ্ঞেস করে, কত দেব?
--আপনের যা ইচ্ছা দেন।রিক্সাওয়ালা বলে।
ব্যাগ হতে তিন টাকা বের করে রিক্সাওয়ালার হাতে দিয়ে বাড়িতে ঢুকে যায়।মনের মধ্যে কিসের এক আলোড়ন অনুভব করে।বলু ছেলেটা বেশ স্মার্ট দুহাতে হ্যাণ্ডেল ধরে যেভাবে অবলীলায় বাইক ছোটালো দেখে মনে হচ্ছিল যেন ফিল্মি হিরো।এতক্ষন নীলের কথা ভাবছিল,মূহুর্তে ভাবনায় স্থান করে নেয় বলু।মনে মনে ভাবে দাঁড়িয়ে থাকুক ক্যাবলাটা রাস্তার ধারে বলুলতলায়।যতদিন ইচ্ছে যতকাল ইচ্ছে কিছু যায় আসেনা দীপার। যদি দেখে বলুর সঙ্গে ঘুরছে ক্যাবলাকান্তর টনক নড়বে,সেই সময় চেহারাটা কেমন হবে দেখতে ইচ্ছে করে।
সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে ভুত দেখার মত চমকে ওঠে দীপা।ক্যাবলাটা তাদের বাড়িতে? নীল পাশ কাটিয়ে নীচে নেমে যায়।ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে দীপা,কিন্তু নীলু একবারের জন্য পিছন ফিরে দেখলো না।ভীতুটাকে দেখে মজা পায়।ঘরে ঢুকে মাকে জিজ্ঞেস করে,ঐ ক্যাবলাকান্তটা কেন এসেছিল?
মিসেস বোস বুঝতে পারে্ন না মেয়ের কথা।মিতালির খুব রাগ হয় মাস্টার মশায় সম্পর্কে এরকম কথায়।
--মোটেই ক্যাবলাকান্ত নয়।দিদিকে শুনিয়ে দেয় মিতালি।
--ও তুই নীলের কথা বলছিস?এতক্ষন পরে বুঝতে পারেন মিসেস বোস।
--তুই ওর কি জানিস? মিতুকে বলে দিপু।
--আমার বেশি জানার দরকার নেই।কি সহজ করে নীলদা বোঝায় যেন শেখাচ্ছে না, গল্প করছে।
দীপা অবাক হয়,কি বলছে মিতু?শেখাচ্ছে না গল্প করছে?কি শেখাচ্ছে?
--সত্যি তো তুই ক্যাবলাকান্ত বলছিস কেন।তবে কি সহজ-সরল,আজকালকার দিনে সরলদের মানুষ বোকা মনে করে।নীল মিতুকে আজ থেকে অঙ্ক শেখানো শুরু করল। মিসেস বোস মৃদু হেসে বলেন।
দীপুর বিস্ময়ের মাত্রা বাড়ে।এর মধ্যে এত কাণ্ড হয়ে গেছে আর সে কিছুই জানে না।তাকে অন্ধকারে রেখে এরা এতদুর এগিয়ে গেছে অভিমান হয়।অভিমান রাগে রূপ নেয়।
--ওর মা কি করে জানিস?মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল কথাটা।
--ছিঃ মা এভাবে কথা বলেনা।মিসেস বোস বলেন।
দীপা একটু লজ্জিত হয়,কথাটা নিজের কানেই খারাপ লাগছিল।বইয়ের ব্যাগ নামিয়ে নিজের ঘরে চলে যায়।দরজা বন্ধ করে জামা খুলে আয়নার সামনে দাড়ায়।স্তনের উপর হাত বোলায়।মিতুকে পড়াবে যাবার সময় একবার তাকে দেখল না!লেখাপড়ায় ভালো বলে এত অহংকার।মনে পড়ল একটু আগে বলুর বাইক ছুটিয়ে যাওয়া দৃশ্যটা। যখন যাচ্ছিল লম্বা লম্বা চুলের গোছা হাওয়ায় উড়ছিল দৃশ্যটা মনে পড়তে মনের মধ্যে শুরু হল রঙ্গীন আলোর খেলা।
একে একে জামা পায়জামা খুলে ফেলল।আয়নার সামনে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজেকে দেখে।নিপলে মৃদু চিমটি কাটে।কবে যে আরো বড় হবে? মেয়েদের স্তন ছেলেদের খুব খুব প্রিয়।শুধু ধন্যবাদ নয় আরো কিছু চাইছিল বলু।দীপার গালে দেখা যায় লালিমা।মনে মনে ভাবে,কি নেবে,কি পেলে তুমি খুশি হবে বলু?
--দিদিভাই দরজা খোল।মিতুর ডাকে সম্বিত ফেরে।দ্রুত জামা বদলে দরজা খুলে দেয়।
মিতু ঘরে ঢুকে অবাক হয়ে দিদিকে দেখতে থাকে।দীপালি মনে মনে অস্বস্তি বোধ করে।কি দেখছে মিতু?হেসে জিজ্ঞেস করল,এ ঘরে এলি কেন,কি দরকার?
মিতালি খাটে পা ঝুলিয়ে বসে পা দোলাতে দোলাতে বলল,এমনি।
--ক্যাবলাকান্তটা তোকে অঙ্ক শেখাবে?
--দিদিভাই তুমি নীলদাকে ওরকম বলবে না।জানো খুব মজা হয়েছে।
দীপালি সজাগ হয় মজার কথা শোনার জন্য।নিশ্চয়ই বোকার মত কিছু আচরণ করেছে।
--মামণি যখন জিজ্ঞেস করল,তোমাকে কত দিতে হবে?হি-হি-হি--।
--এতে হাসির কি হল?
--তুমি যদি দেখতে যত জিজ্ঞেস করে কতদিতে হবে খালি অন্য কথায় চলে যায়।নীলদা মুখ ফুটে কিছুতেই বলল না কত দিতে হবে।মামণি বলছিল ভীষণ লাজুক নিজের চাওয়াটাও মুখ ফুটে বলতে পারেনা।
না বললে তোমায় সেধে সেধে দিতে যাবার কার দায় পড়েছে।দীপার মনে পড়ল বকুলতলায় দাঁড়িয়ে থাকা নীলের মুখটা।মজা করে বলল,মামণির খুব সুবিধে হয়ে গেল সামান্য কিছু দিয়ে একটা টিচার পেয়ে গেল।
--মোটেই না।নীলদাকে মামণির খুব ভাল লেগেছে।
--টিচার কেমন পড়ায় সেটাই আসল,এতে ভাল লাগালাগির কি হল?
--দিদিভাই নীলদার উপর তোমার এত রাগ কেন?
দীপালি ধরা পড়ে যাওয়ায় বোনকে ধমক দেয়,এখন যাতো।আমি পড়তে বসবো। খালি পাকা-পাকা কথা?একদিন পড়েই নীলদার প্রশংসায় পঞ্চমুখ, রেজাল্ট বেরোলেই বুঝতে পারবো কেমন তোর নীলদা?
রাতে শুয়ে এপাশ ওপাশ করে ঘুম আসতেই চায় না।নীলের থেকে বলু অনেক স্মার্ট যেন মনে হয় সবকিছু উড়িয়ে নিয়ে চলেছে।মানুষ ওর সামনে কিছু বলতে সাহস পায় না আড়ালে বানিয়ে বানিয়ে অনেক খারাপ কথা বলে।দীপাকে খুব সমীহ করে।এখন এসব চিন্তা করতে চায়না পরীক্ষাটা ভালোয় ভালোয় মিটুক তারপর ভাবা যাবে।কোচিং যাবার পথে বলু এলে পরিষ্কার বলে দেবে পরীক্ষার আগে কোনো কথা নয়।
নীলু আরেক বাড়ীর দিকে দ্রুত হাটতে থাকে।একটু দেরী হয়ে গেল।এখন মনে হচ্ছে বলতে পারতো অমুক বাড়িতে এত টাকা দেয়।আসলে একটা মেয়েকে একটু দেখিয়ে দেবে তার জন্য টাকা চাইতে লজ্জা করে।মিসেস বোস বিদুষী এবং বুদ্ধিমতী উনি যা ভালো বুঝবেন দেবেন।প্রাচীন কালে গুরু গৃহে ছাত্ররা শ্রম দান করত,গুরুমশায় শিক্ষা ভরন পোষণের দায়িত্ব নিতেন।এখন শিক্ষাদান কার্যও অন্যান্য শ্রমের মত মজুরী দিয়ে মূল্যায়ন হয়।
Posts: 1,199
Threads: 24
Likes Received: 9,882 in 1,156 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,681
14-05-2020, 09:18 PM
(This post was last modified: 14-05-2020, 10:45 PM by kumdev. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
।।৫।।
সময় নদী স্রোতের মত চলমান।অতীতকে সরিয়ে ফাক জায়গা করে নেয় বর্তমান। দেওয়ালে ঝোলানো ক্যালেণ্ডারের পাতা বদলে বদলে যায়।পুরানো গিয়ে এসেছে নতুন বছর। দীপালি প্রথম বিভাগে পাস করে উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ছে।মিতু অঙ্কে আটের ঘরে নম্বর পেয়ে নতুন ক্লাসে উঠেছে।নীল ম্যাথ অনার্স নিয়ে সেকেণ্ড ক্লাস পেয়ে পাস করলেও দীপা তার কাছে অঙ্ক শিখতে চায় না।মিসেস বোসের বকাবকিতেও সম্মত হয়নি মেয়ে।কোচিংযে পড়তে যায়।দীপালির অভিমান হয় কেন যেচে যাবে, নীল নিজে একবার বলতে পারতো।একটু একা হলে নীলের কথা মনে পড়ে,তার নিরীহ চাউনি যেন সব সময় তাকে ছুয়ে থাকে।ঝিয়ের ছেলের এত দেমাক কোথা হতে আসে ভেবে পায় না দীপালি।সামনে এলে গা জ্বালা করে। এতদিন হয়ে গেল মিতুকে পড়াচ্ছে তবু চোখাচুখি ছাড়া একটা শব্দ বিনিময় করেনি নীলের সঙ্গে দীপা।একদিন সুযোগ করে দিয়েছিল ভেবে আজ লজ্জা হয়।
মিতুকে পড়াচ্ছে দীপা ঢুকে বলল,বোন দেখতো মা কেন ডাকছে?
--আমি এখন পড়ছি।
--যাও বড়দের কথা শুনতে হয়।নীল বলল।
অগত্যা অনিচ্ছে সত্বেও মিতু চলে গেল।ঘরে কেউ নেই দীপা অপেক্ষা করে কখন পাথরে প্রাণ আসে।আড়চোখে দেখল বইটা নিয়ে কি দেখছে।সেভেনের অঙ্ক বই অত দেখার কি হল? মিতু ঢুকে বলল,কই মা তো কিছু বলল না।খালি ইয়ার্কি ভালো লাগে না।
--ছিঃ মিতু বড়দের সঙ্গে ওভাবে কথা বলে না।
দীপা ঘর থেকে মুখ কালো করে বেরিয়ে এল। ছেলেটা কি ভাবে কি নিজেকে? এইসব মেনিমুখোদের দীপা দু-চোখে দেখতে পারেনা। তুলনায় বলু কত স্মার্ট।ভাল রেজাল্ট করলেই হয়না,আদব কায়দা জানতে হয়।মেয়েদের সঙ্গে কিভাবে মিশতে হয় বলুর কাছে ওর শেখা উচিত।
বলুর কথায় মনে পড়ল,বেশ কিছু কাল সে নিরুদ্দেশ ছিল।তাকে নিয়ে নানাজনে অন্তরালে নানা কথা বলে।শিবেন খবর এনেছে ওর নাম বলদেও তিওয়ারি।আদি বাড়ি উত্তর প্রদেশ।দীর্ঘকাল এ রাজ্যে থেকে বাংলা শিখেছে চমৎকার।কিছুদিন আগে নাকি জেলে ছিল।নীল ছাড়া আর কাউকে বলেনি শিবেন খবরটা।
--নীল তুই দীপাকে কিছু বলিস নি?
--কি বলবো? হাসে নীল।
--কাউকে তো বলতে হবে। দ্যাখ কোন স্থান শূন্য থাকে না। মানুষ ক্ষিধের সময় খাবার না-পেলে অখাদ্য-কুখাদ্য খায়।শিবেন গম্ভীর ভাবে বলে।
বন্ধুর কথাটা নিয়ে নীল মনে মনে নাড়াচাড়া করে।বেশ বলেছে শিবু।ব্যাটা কবিতা লেখে বলে সব ব্যাপারে কাব্য।শিবেনকে কি করে বোঝাবে দীপা ওকে ঘৃনা করে,মানুষ বলে মনে করেনা।দীপাকে বললে ভাববে হিংসায় বানিয়ে বলছে।
কিছুক্ষন পর শিবেন বলে,কথাটা কেন বললাম জানিস?
--কত কথাই তো তুই বলছিস,কোন কথা?
--দীপাকে দেখা গেছে বলুর বাইকের পিছনে।
কিভাবে বাইকের পিছনে বসে বলুকে জাপ্টে ধরে বসেছিল শিবেন সেকথা চেপে গেল। দীপাকে হেলমেট পরিয়েছে যাতে কেউ চিনতে না পারে।নীল দাঁতে ঠোট চেপে কি যেন ভাবে।শিবেন তাকে মিথ্যে বলবে না।আর মিথ্যে বলবেই বা কেন? মিসেস বোসকে কথাটা বলা ঠিক হবে কিনা ভাবে।নীলের কথা কি আণ্টি বিশ্বাস করবে? অপরের ব্যাপারে মাথা গলাবার কি দরকার? কিছু বলতে গেলে ভাববে তার কোনো স্বার্থ আছে।একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।
রাতে মিতুকে পড়িয়ে সিড়ি দিয়ে নামছে, একেবারে দীপুর সামনা-সামনি।কি যে হল কে জানে মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল,দীপু শোনো--।
চমকে উঠে থমকে দাঁড়িয়ে গেল দীপালি একপলক দেখে বলে,তুমি আমাকে দীপু বলবে না।
মিইয়ে গেল নীল আমতা আমতা করে বলল,না বলছিলাম কি--।
--কিছুই বলতে হবে না।আমার সঙ্গে কি দরকার তোমার?
--ও,আচ্ছা।নীল বিমর্ষ বোধ করে।নিজেকে ধমকায় কি দরকার ছিল আগ বাড়িয়ে কথা বলতে যাওয়ার?
--কি বলবে বলছিলে?দীপা জিজ্ঞেস করে।
--না,থাক।নীলের আগ্রহ নেই আর।
দীপার মনে হয় কথা বলার একটা ছুতো আসলে কিছুই বলার নেই।মজা করার জন্য বলে,আহা ভাল ছেলে থাকবে কেন? কি বলছিলে বলো।
--না মানে বলছিলাম কি মানে, বলদেও ছেলেটা ভাল না।
--কে বলদেও? দীপা জিজ্ঞেস করে।
--যাকে সবাই বলু বলে জানে।ও আসলে উত্তর প্রদেশের ছেলে।
দীপা ভ্রু কুচকে কিছুক্ষন তাকিয়ে লক্ষ্য করে নীলুকে।আজই বলু জোর করে চুমু খেয়েছে, হাত দিয়েছে বুকে।যার রেশ এখনো লেগে আছে।নীলের এসব জানার কথা নয়। ব্যাপারটা বোঝার জন্য বলে,এসব কথা আমাকে বলছো কেন?
--না,মানে তোমার যদি কোন ক্ষতি হয়ে যায়--।
--আমার জন্য তোমাকে ভাবতে হবে না।কি আমার হিতৈষী এলরে! তুমি কি ভাবছো তোমার কথা আমি বিশ্বাস করছি?
--দেখো আমি মিথ্যে-মিথ্যে বানিয়ে বলতে যাব কেন?
--কাজ-কাম নেই লোকের পিছনে স্পাইং করে বেড়ানো?মিনমিনে স্বভাব দু-চক্ষে দেখতে পারিনা। তোমার কথায় আমি ভুলবো ভেবেছো?পড়ানো হয়েছে ,বাড়ি যাও।শেষ দিকে দীপার গলা ধরে আসে।
কান লাল হয়ে যায়। নীল আজকের ঘটনার জন্য দায়ী করে শিবেনকে।গাল বাড়িয়ে চড় খাওয়ার কি দরকার ছিল।মিতুর জন্য খারাপ লাগে না হলে এ বাড়ীতে আর ঢুকতো না। দীপা ঘরে এসে বই-খাতা নামিয়ে আচল দিয়ে চোখ মোছে।এতগুলো কড়া কথা না বললেই পারতো। নীলই বা কেন চুপচাপ শুনল,মুখ নেই কথা বলতে পারেনা।জোর খাটাতে পারেনা? কি যেন নাম বলছিল? বলদেও তিওয়ারি? কথা শুনে তো মনে হয় নি অবাঙ্গালি।পদবি কি জানতে চায়নি কখনো।অবাঙ্গালি হয়ও যদি তাতে কি হয়েছে?অনেকে বিদেশে গিয়ে মেম বিয়ে করে আনছে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঠোটে হাত বুলায়।লাল হয়ে ফুলে উঠেছে। যেন ছিড়ে নেবে দস্যু কোথাকার। আয়নায় প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে চোখ টেপে। প্রতিবিম্বও প্রত্যুত্তর দেয়। জামা খুলে বুঝতে পারে তার অগোচরে স্তনের আয়তন বেড়েছে।দু-আঙ্গুলে নিপলে চুমকুড়ি দেয়। মাইদুটোর উপর বলুর খুব লোভ।আজ অনেক কষ্টে সামলেছে।পার্কের অন্ধকারে পাগলের মত করছিল।হাত ঢুকিয়ে সোনাটা ছুতে চাইছিল।দীপালি হাত চেপে বাধা দিয়ে বলেছে, এখন না এসব বিয়ের পর।বলু আর জবরদস্তি করেনি।নুপুর একদিন পুচ করে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়েছিল। নুপুরটা ভারী অসভ্য। এর মধ্যে বুলুরটা ঢুকলে কেমন লাগবে?বেশি মোটা নয়তো,প্যাণ্টের উপর দিয়ে ধরেছিল ঠিক বোঝা যায়নি। ইদানীং লক্ষ্য করেছে নুপুর তাকে এড়িয়ে চলে। সুদিপের সঙ্গে প্রেম করলে দোষ নেই? তার বেলাই যত দোষ। বয়ে গেছে,দীপা কাউকে পরোয়া করেনা। ক্যাবলাকান্তকে আগে মনে হত বোবা। আজ বোল ফুটেছে।হঠাৎ গায়ে পড়ে উপকার করার ইচ্ছে হল কেন? ঠোটের উপর জিভ বোলায়,জ্বালা করছে।একটু বোরোলিন লাগিয়ে দিল।
মনে ফুর্তির জোয়ার চোখে স্বপ্নের ঘোর।তার সুখে অনেকের চোখ টাটাবে দীপালি ওসব পরোয়া করেনা।বলু যখন বাপিকে বলতে আসবে কি প্রতিক্রিয়া হবে তখন ভেবে শিউরে ওঠে।মনে হয়না বাপি এককথায় রাজি হয়ে যাবে।মাম্মী কান্না কাটি করবে।শেষে মেয়ের সুখের কথা ভেবে মেনে নেবে।বাপিও আর অভিমান করে থাকতে পারবে না।বলুর যা বুদ্ধি ও ঠিক বাপি মামণিকে ম্যানেজ করে নেবে।দীপালি তিওয়ারি? পদবীটা তেমন পছন্দ হয়না।তিওয়ারি না হয়ে সিং হলে ভাল হতো।বলুর পদবী কি সত্যিই তিওয়ারী?নীল কি করে জানল? ওর এত ইণ্টারেষ্ট কেন?আগে মনে হতো পড়াশুনা নিয়ে থাকে অন্যের ব্যাপারে মাথা ব্যথা নেই।কিন্তু এখন বুঝতে পারছে খোজ খবর নিয়েছে।অন্য কেউও ওকে বলতে পারে।ওর সঙ্গে একটা ছেলেকে দেখেছে সেই ওকে বলেছে হয়তো।হতে পারে, একদিন বাইকে যাবার সময় ছেলেটা ওকে দেখছিল।
মানুষের কোনো একটা রিপু তীব্র হলে তার জ্ঞান বুদ্ধি বিবেচনা ঠিকমত কাজ করে না।দীপা বিস্মৃত হয় তার শিক্ষা সামাজিক স্ট্যাটাস তার বিদ্রোহী মন ভাবে যেন এক সাহসিক পদক্ষেপ নিয়েছে। সমস্ত বাধা অতিক্রম করে তাকে জিততেই হবে।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
Posts: 1,199
Threads: 24
Likes Received: 9,882 in 1,156 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,681
(14-05-2020, 09:29 PM)ddey333 Wrote: Repeat hoye galo....
thank you brother that has been corrected.
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
বিস্মৃত হয় তার শিক্ষা সামাজিক স্ট্যাটাস তার বিদ্রোহী মন ভাবে যেন এক সাহসিক পদক্ষেপ নিয়েছে
Ei bhul ta bohu meye kare. Kharap lagche Deepa r jonno......
Posts: 127
Threads: 2
Likes Received: 190 in 92 posts
Likes Given: 581
Joined: Jun 2019
Reputation:
20
Abar IAS/IPS er golpo ?...
But ontim porinoti bedonadayok ...
Btw purono holeu bes valo golpo eta...
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(14-05-2020, 10:56 PM)ddey333 Wrote: বিস্মৃত হয় তার শিক্ষা সামাজিক স্ট্যাটাস তার বিদ্রোহী মন ভাবে যেন এক সাহসিক পদক্ষেপ নিয়েছে
Ei bhul ta bohu meye kare. Kharap lagche Deepa r jonno......
উঠতি বয়সের মেয়েদের অনেকেই এই ভুলটা করে। পেপার খুললেই দেখা যায়, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চাপা থাকে।
•
Posts: 1,199
Threads: 24
Likes Received: 9,882 in 1,156 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,681
।।৬।।
এখন আর ভেবে লাভ নেই,সম্পর্ক এমন পর্যায়ে পৌছেচে ইচ্ছে করলেই ফিরে আসা সম্ভব নয়।তবু নিছক কৌতুহল বশত বাইকের পিছনে বসে কোমর জড়িয়ে ধরে দীপা জিজ্ঞেস করে,তোমার নাম কি বলদেও?
গিয়ার একে নামিয়ে জিজ্ঞেস করে বলু ,কোন বোকাচোদা বলেছে জানু?ঐ শালা তোমার বোনের মাস্টার?
--মুখ খারাপ করবে না।সত্যি কিনা বলো।
বলু কোমরে জড়িয়ে থাকা হাতটা বা-হাতে তুলে চুমু খেয়ে বলে,তোমার পছন্দ নয়?
--তোমার মাতৃভাষা হিন্দি?
গিয়ার টপে তুলে দিয়ে বলু বলে,হিন্দি আমাদের রাষ্ট্রভাষা।এসব কেন বলছো জানু?
দীপা গালটা বলুর পিঠে চেপে বলে,এমনি।
--তুমার ছোয়া পেয়ে দেখো কি অবস্থা। দীপার হাতটা টেনে প্যাণ্টের উপর দিয়ে নিজের ঠাটানো ধোনের উপর চেপে ধরে।
--আঃ কি হচ্ছে, এ্যাক্সিডেণ্ট করবে না কি,খালি দুষ্টুমি? হাত টেনে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে দীপা।
--আক্সিডেণ্ট হলে একসাথে মরবো জানু।
এখনই মরার ইচ্ছে নেই দীপার কিন্তু 'একসাথে মরবো' কথাটা দীপার হৃদয়ের গভীরে ছুয়ে যায়।
কথাটা নীল মিথ্যে বলেনি,এখন বুঝতে পারে দীপা। অবশ্য ওর দীঘির মত নির্মল টলটলে চোখ দেখে বোঝা যায় কিভাবে মিথ্যে বলতে হয় জানে না। বলু আর নীল দুই ভিন্ন মেরুর বাসিন্দা। ছুটে চলেছে ট্রেন দুরন্ত গতিতে।পুরানো স্মৃতিগুলো জানলার বাইরে থেকে হাতছানি দিয়ে ডাকলেও চলন্ত ট্রেন হতে নামা সম্ভব নয় এখন। দেখা যাক কোথায় কোন লক্ষ্যে পৌছে দেয়, কি হয় জীবনের পরিনতি।বাজে ব্যাপার নিয়ে ভাবার সময় নেই। বলুর সঙ্গে তার জীবনের পথ গাথা হয়ে গেছে।আমরা দুজনে চলতি হাওয়ার পন্থী।পিছনে তাকাবার সময় নেই।বাতাস ভেদ করে ছুটে চলেছে বাইক।দীপা আরও জোরে চেপে ধরে বলুকে।
তারপরই ঘটনাটা ঘটলো।সন্ধ্যে হবার মুখে,সবার বাসায় ফেরার ব্যস্ততা। শিবু আর নীল ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে বলতে কোথায় যেন যাচ্ছিল।হঠাৎ কানে এল, এই বোকাচোদা।
এইনামে কেউ ডাকতে পারে ধারনা ছিল না।আমল না দিয়ে ওরা হাটতে থাকে। একটা বাইক এসে পথরোধ করে দাঁড়ায়।
--কিবে শালা শুনতে পাস না? বাইকে বসে বলু,পিছনে আর একজন ষণ্ডা মত।
--আমাকে বলছেন? নীলের অবাক জিজ্ঞাসা।
--বোকাচোদা চুগলিবাজি? কথাটা বলেই নীলের মুখে গদাম করে এক ঘুষি। আচমকা ঘুষিতে নীল চিৎ হয়ে পড়ে যায়। আশপাশের লোকজন চলাচল করছে স্বাভাবিক ছন্দে।দেখেও কেউ দেখে না কি ঘটছে।যেচে ঝামেলায় জড়াতে কেউ চায় না।বরং পরে অবসর মত নিরাপদ স্থানে বসে সমালোচনা করা যাবে। শিবু ঝাপিয়ে পড়ে,কি ব্যাপার ওকে মারছেন কেন? কি করেছে?
বলু স্নিকার পরা পায়ে একলাথি কষিয়ে দিয়ে বলে,কি করেছে ,তোর বন্ধুকে জিজ্ঞেস কর।
--মারবেন না,থানায় যাব বলে দিচ্ছি।শিবু বলে।
বলদেও হো-হো করে হেসে ওঠে।একটা রিক্সা ডেকে বলে,শুয়ারের বাচ্চাগুলোকে থানায় নিয়ে যা।
নীলের নাক ফেটে রক্ত ঝরছে।শিবু রুমাল দিয়ে নাক চেপে রিক্সায় উঠে বসে। বলদেও রিক্সা ঠিক করে দিল থানায় যাবার জন্য, গিয়ে লাভ নেই।ওরা ডাক্তার বোসের চেম্বারে গিয়ে রিক্সা থামায়। চেম্বারে ঢুকতে ড.দেবাঞ্জন রুগি ছেড়ে লাফিয়ে উঠে বিস্মিত চোখে গৃহ-শিক্ষককে দেখে বলেন, একী! কি করে হল?
--বলু গুণ্ডা মেরেছে।শিবেন বলে।
--ছেলেটা দেখছি খুব বাড়াবাড়ি করছে।কম্পাউণ্ডারকে ডেকে একটা টিটেনাস দিতে বলেন,নাকে লিওকোপ্লাষ্ট লাগিয়ে দিলেন।ব্যথার ট্যাবলেট লিখে দিয়ে বললেন, তোমরা থানায় গেছিলে?
--এই রিক্সা বলদেও ঠিক করে দিল থানায় যাবার জন্য।শিবেনের গলায় শ্লেষ।
--ও বুঝেছি।কিন্তু ওকে মারলো কেন?
শিবেন কি বলতে যাচ্ছিল,তাকে থামিয়ে দিয়ে নীল বলে,ডাক্তারবাবু এদের কোন কারন দরকার হয় না।টাকা দিতে গেলে দেবাঞ্জন বলেন,ঠিক আছে।
--আচ্ছা আসি।নীল বলে।
রিক্সায় উঠতে গেলে নীল আপত্তি করে,আমি ঠিক আছি।চল হেটেই চলে যাই। ডাক্তারবাবু মানুষটা খারাপ না।খারাপ লাগছে যখন জানতে পারবেন মেয়ের কথা, কি অবস্থা হবে?
--কি রে কি ভাবছিস? কথা বলছিস না--।শিবু জিজ্ঞেস করে।
--ভাবছি মাকে কি বলবো?
--মাসীমা দেখলে খুব ঘাবড়ে যাবেন।কিছুক্ষণ হাটার পর শিবেন বলল,আমার মনে হয় জানোয়ারটাকে দীপা কিছু লাগিয়েছে।
নীলেরও কথাটা মনে হয়নি তা নয় কিন্তু বিশ্বাস করতে মন চাইছে না।দীপা এই মস্তানটাকে দিয়ে তাকে মার খাওয়াবে? এরা যা না তাই করে বেড়াবে,কেউ কিছু বলতে পারবে না,পুলিশ দেখেও দেখে না।পুলিশ তাহলে আছে কি জন্য?পুলিশ কিছু করুক না করুক এখন মনে হচ্ছে থানায় একবার যাওয়া উচিত ছিল।একটা কথা মনে হতে শিবেনকে জিজ্ঞেস করে,আচ্ছা শিবে, আই.পি.এস. পরীক্ষায় বসলে কেমন হয়?
--পুলিশের চাকরি মাসীমা কি রাজি হবেন?শিবেন কিছুক্ষন ভাবে তারপর হেসে বলে,তুই একা কি পারবি বদলাতে পুলিশি ব্যবস্থা? কবে দেখবি তুইও হয়ত ওদের মত হয়ে গেছিস।শালা সিস্টেমটাই এরকম।মাইনে যা বা-হাতি আয় তার কয়েকগুন।
--এটা কাজের কথা নয়,দায় এড়ানো কথা।সবাই এরকম ভাবলে কি দশা হবে ভেবেছিস?
--তোর মনের জোরকে আমি শ্রদ্ধা করি। শিবু মুগ্ধ চোখে বন্ধুকে দেখে।
এত কাণ্ডের পরও নীল পরেরদিন পড়াতে এল। আণ্টি দেখে অবাক নীলের চিবুকে হাত দিয়ে বলে, দেবের কাছে সব শুনেছি। তুমি আজ এলে কেন?
--আপনি চিন্তা করবেন না আণ্টি।আমার কিসসু হয় নি।
--ওই জানোয়ারটা এ অঞ্চলে কোথা হতে এল?আণ্টির গলায় ক্ষোভ ঝরে পড়ে।
নারী মমতাময়ী,আণ্টির গায়ের গন্ধ চোখের উদবেগ নীলকে বিমুগ্ধ করে।লক্ষ্য করলো, দরজার আড়াল হতে সরে গেল দীপা।মিতু বই খাতা নিয়ে প্রবেশ করে বলল,বাপি বলছিল নীলদা গুণ্ডাটা তোমাকে মেরেছে। গালে কপালে নরম হাত বুলিয়ে দেয়।নীলের যত গ্লানি যেন বাচ্চা মেয়েটার স্পর্শে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেল।দীপা কি নিজেকে অপরাধী ভাবছে?
পাশের ঘরে দীপা ভাবছে,বলুর সঙ্গে দেখা হোক আচ্ছা করে বকে দেবে,খালি দুষ্টুমি। এরকম করলে আর কথা বলবে না।আচ্ছা ও কি করে? চাকরি তো করেনা তাহলে নিয়মিত অফিস যেতে হত।হঠাৎ বইয়ের তাকে নজরে পড়ে কামদেবের বইটা,নুপুর দিয়েছিল।ফেরৎ দেওয়া হয়নি।কতবার পড়েছে,পড়ে পড়ে যেন আশ মিটতে চায় না।নিজের বিপরীতে বলুকে কল্পনা করে কত ইচ্ছে বুকের মধ্যে চেপে রেখেছে। সেদিন বলু বাইকে নিজের ধোনটা হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল,ভীষণ অসভ্য। কবে যে সুযোগ হবে প্রতিটি ভঙ্গীতে একে একে চোদাবে আর তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করবে।
রাত হয়েছে,পর্দার নীচ দিয়ে দেখতে পেল নীল চলে যাচ্ছে।ক্যাবলা-ক্যাবলা দেখতে হলেও ছেলেটার মনের জোর আছে।দুপুরে মার খেয়েও সন্ধ্যে বেলা পড়াতে এসেছে।বুকের মধ্যে শির শিরাণি বোধ করে।বলু ওকে হঠাৎ মারতে গেল কেন?নীল ত কারো সাতে-পাঁচে থাকে না।অবশ্য কিছু না করলে খামোখা মারতেই বা যাবে কেন?যাইহোক দেখা হলে বলুকে বলতে হবে পথে ঘাটে মারামারি করা দীপা পছন্দ করেনা।বাপি মামণির কাছে বলু কত ছোট হয়ে গেল।মামণি বলুকে জানোয়ার বলছিল,দীপা হাসে মনে মনে।এই জানোয়ার একদিন তোমার প্রিয় জামাই হবে।ষষ্ঠীতে নেমন্তন্ন করে বাড়ীতে এনে আদর করে খাওয়াতে হবে। বাঙালিদের মত বলুদেরও কি জামাই ষষ্ঠী আছে?
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
baldeo chuduk dipali ke. aar kono sympathy nei depalir proti.
•
|