Thread Rating:
  • 55 Vote(s) - 3.55 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Erotic Horror নিশির ডাক - বাবান
#1
Star 
[Image: 20231202-203930.jpg]



গল্প- নিশির ডাক 
লেখক ও ছবি - বাবান




আবার ফিরে এলাম আমার ছোট্ট গল্প নিয়ে। অনেকদিন আগে xossip-এ rupakpolo দার লেখা একটা গল্প পড়েছিলাম একই নামে. গল্পটি বেশ ভালো লাগে তবে গল্পটি ছিল অসমাপ্ত. তাই ভাবলাম আমি নিজের মতো করে গল্পটা লিখি। ওনার permission নিয়ে এই গল্পটা শুরু করলাম. Rupakpolo দাদাও বলেছিলো আমি যেন এই গল্পটা সম্পূর্ণ নিজের মতো করে লিখি। আমার এই গল্পটির সাথে ওই গল্পটার সামান্য কিছু মিল থাকলেও মূল গল্প সম্পূর্ণ আলাদা. একদম আমার নিজের চিন্তা থেকে লেখা. তবে বেশি বড়ো হবেনা. ৬/৭টি আপডেট দিয়ে সমাপ্ত করবো গল্পটা।

(04-05-2020, 04:22 PM)Rupakpolo1 Wrote: Baban...onek Bhalo writer amar theke...amar soubhagyo baban amar ei osomapto galpo ta Baban nijer moto kore likhche...dhonyobad baban...

অনেক ধন্যবাদ দাদা
 এরকম প্রশংসা করার জন্য. আমি গর্বিত অনুভব করছি. 



ফিসের থেকে বেশ কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে অনিমেষ এসেছে নিজের বন্ধু প্রীতমের গ্রামের বাড়ি. প্রীতম আর অনিমেষ সেই হোস্টেলের থেকে বন্ধু. যদিও কর্মসূত্রে তারা আলাদা কাজ করে কিন্তু যোগাযোগ পুরো মাত্রায় ছিল দুজনের মধ্যে. অনিমেষ শহুরে ছেলে, শহরেই তার জন্ম কিন্তু প্রীতম গাঁয়ের ছেলে. কলকাতায় পড়াশুনা সূত্রে আর কর্ম সূত্রে থাকে. ওর বাবা মা আর বোন গাঁয়েই থাকে. খুব বড়োলোক না হলেও মোটামুটি ভালোই সচ্ছল ওদের পরিবার. হোস্টেলে পড়ার সময় প্রীতম অনেকবার অনিমেষকে ওর গ্রামের কথা বলেছে. অনিমেষের গ্রাম খুব ভালো লাগে. শহরের মতো এত যানবাহন নেই, নেই কোনো দূষণ, চিল্লামিল্লি. শুধুই চারিদিকে সবুজ আর সবুজ আর নীল আকাশ. তাই প্রীতম যেদিন অনিমেষকে জানালো অফিসের থেকে ছুটি নিয়ে সে গ্রামে যাচ্ছে বাবা মায়ের কাছে তখন অনিমেষ এই সুযোগ আর ছাড়তে চায়নি. সেও বন্ধুকে জানায় যে সেও তার সাথে গ্রাম ঘুরতে যেতে চায়. প্রীতম তো শুনে খুব খুশি. 

প্রীতম : তোকে আগের বারেও বলেছিলাম চল আমার সাথে তখন এলিনা. এবারে আসবি জেনে খুব ভালো লাগছে. ভাই দেখবি.... আমাদের গ্রামে কত শান্তি, এই শহরের মতো আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি বলেই গ্রামটা এখনও নিজের আসল রূপটা ধরে রেখেছে. 

অনিমেষ : আরে আগের বারে কিকরে যাবো বল? তুই শেষ মুহূর্তে জানিয়েছিলি. ওতো শর্ট নোটিসে কি যাওয়া যায়? তাই এবারে যখন একটু আগেই জানালি তাই ভাবছিলাম অফিসের যে ছুটি গুলো জমে আছে সেগুলো কাজে লাগাই. কয়েকদিন এই দূষণ হাওয়া থেকে মুক্তি নিয়ে আসল হওয়ার স্বাদ নিয়ে আসি. 

প্রীতম : আমি শনিবার দুপুরে বেরোচ্ছি. তোর জন্য টিকিট কেটে নিচ্ছি তাহলে. খুব ভালো লাগবে. কয়েকটা দিন দুই বন্ধু আনন্দে কাটাবো. বাবা মাও খুশি হবে তোকে দেখে. 

এসে গেলো সেই দিন. বাবা মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে অনিমেষ বেরিয়ে পড়লো বন্ধুর সাথে তার গ্রামের উদ্দেশ্যে. যত ট্রেন এগিয়ে যেতে লাগলো ততই যেন শহুরে পরিবেশ হারিয়ে যেতে লাগলো আর সামনে ফুটে উঠতে লাগলো লম্বা লম্বা গাছপালা আর জঙ্গল. 

স্টেশনে গাড়িটা যখন থামলো তখন সাড়ে ছটা বাজে. খুব একটা লোক নামলোনা এখানে. ওরা ছাড়া মাত্র ৫, ৬ জন. গাড়ি নিজের হর্ন বাজিয়ে এগিয়ে চললো সম্মুখে. বাইরে এসে ওরা একটা গরুর গাড়ি দেখতে পেলো. প্রীতম সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চালককে এদিকে আসতে বললো. 

অনিমেষ : বাবা !! এখানে এখনও গরুর গাড়ি চলে দেখছি.

প্রীতম : তোকে বলেছিলাম না.... এখানে সেই ভাবে শহুরে আধুনিকতার ছাপ পড়েনি. আয়. 

গরুর গাড়িতে করে এগিয়ে চললো ওরা. বেশ নিরিবিলি এলাকা. ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছে. ভালোই লাগছে অনিমেষের. অনেকদিন আগে ওর পিসির বাড়িতে বেড়াতে গেছিলো গ্রামে. সেই তখন থেকেই গ্রামের শান্ত পরিবেশ ওর খুব ভালো লাগে. তাছাড়া প্রথমবার গরুর গাড়িতে চেপেও ভালো লাগছে ওর. একটু পরেই শুরু হলো ধান ক্ষেত.  দুদিকে ক্ষেত মাঝে রাস্তা দিয়ে এগিয়ে চলেছে ওরা. কালকেই এইসব জায়গার ছবি তুলে নেবো... ভাবলো অনিমেষ. নিজের ক্যামেরাটা সেই জন্যই তো সাথে করে নিয়ে এসেছে ও. 

একটা দোতলা বাড়ির সামনে এসে থামলো গাড়িটা. বাড়ির চারপাশে বাড়ি ঘর নেই. তবে কিছুদূরে কয়েকটা ছোট বাড়ি আছে. বাড়িতে বাইরে কোনো আলো নেই কিন্তু ভেতরে আলো জ্বলছে কারণ জানলা দিয়ে আলো বাইরে সামনের ওই বট গাছটায় পড়েছে. 

ভাড়া মিটিয়ে প্রীতম বন্ধুকে নিয়ে গেট খুলে ভেতরে ঢুকলো. দরজার কাছে এসে বেল বাজালো. সামান্য পরেই বাইরের আলোচনা জলে উঠলো. দরজা খোলার শব্দ. দরজা খুলে হাসিমুখে যে ভদ্রমহিলা বেরিয়ে এলেন তিনি যে প্রীতমের মা সেটা বুঝতে অসুবিধা হলোনা অনিমেষের. পেছনে একজন ভদ্রলোক. উনি নিশ্চই ওর বাবা. প্রীতম হাসি মুখে প্রণাম করলো মাকে তারপরে বাবাকে. এখানে এখনও সন্তান নিজের বাবা মাকে প্রণাম করে তাহলে. শহরের ছেলে হলে তো আগে মাকে বাবাকে ঠেলে ঘরে ঢুকে সোফায় গা এলিয়ে দিতো. 

প্রীতম : মা... তোমাকে অনিমেষের কথা বলেছিলাম... এই সেই অনু. মানে অনিমেষ. 

প্রীতমের মা : এসো বাবা.... ভেতরে এসো. তোমার কথা ও কতবার বলেছে. আমি তো ওকে অনেকবার বলেছি তোমায় এখানে নিয়ে আসতে. 

অনিমেষ হেসে আগে বন্ধুর মাকে আর বাবাকে প্রণাম করলো তারপরে বললো : আমিও আসার কথা বহুবার ভেবেছি কাকিমা... কিন্তু কখনো পড়াশুনার চাপে আবার কখনো কাজের চাপে আসাই হয়ে ওঠেনি. এবারে যখন একটু কাজের চাপ কম তাই ভাবলাম ঘুরেই আসি ওর সাথে. 

প্রীতমের মা : খুব ভালো করেছো বাবা. এসো এসো. 

অনিমেষ দেখলো. ছোটোখাটো বাড়ি হলেও বেশ ভালোই. গ্রামের সুন্দর বাড়ি, আধুনিকতার কোনো ছাপ নেই এই বাড়িতে আর না আছে প্রীতমের বাবা মায়ের মধ্যে. ওদের ঘরে নিয়ে গিয়ে বিছানায় বসিয়ে ওর মা ওদের জন্য খাবার আনতে গেলো. ঘরে আগে থেকেই একটি মেয়ে বসে ছিল. ওদের দেখে উঠে দাঁড়ালো. দাদা বলে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরলো প্রীতমকে. অনিমেষ বুঝলো এই তাহলে বন্ধুর বোন. বেশ সুন্দরী. প্রীতম আলাপ করিয়ে দিলো অনিমেষের সাথে ওর বোনকে. একটু পরেই ঘরে ঢুকলো ওর মা হাতে লুচি তরকারি নিয়ে.  সত্যি... গ্রামের মানুষদের মধ্যে পবিত্র মনে অতিথি সেবার যে ব্যাপারটা আছে সেটা অনিমেষের খুব ভালো লাগে. প্রীতমের থেকেও অনিমেষের বেশি সেবা হতে লাগলো ওরা. খাওয়া দাওয়ার সাথে গল্প চলতে লাগলো. কিছুক্ষনের মধ্যেই অনিমেষ আপনজন হয়ে গেলো ওদের সাথে. 

রাতের খাবার পরে দুই বন্ধু চলে এলো দোতলায়. দোতলায় একটাই বড়ো ঘর. সেখানেই ও থাকে. প্রীতমের মা অনিতা কাকিমা আগে এসেই ঘোরটা গুছিয়ে রেখে গেছে. নতুন চাদর, দুটো মাথার বালিশ আর কোলবালিশ রেখে গেছেন. দুই বন্ধু শুয়ে গল্প করতে করতে বেশ কিছুক্ষন সময় কাটালো. একসময় প্রীতম ঘুমিয়ে পড়লো কিন্তু অনিমেষের ওতো তাড়াতাড়ি ঘুম আসেনা তাই ও সিগারেট ধরিয়ে ঘরের এদিক ওদিক দেখতে লাগলো. ঘরে  বেশ অনেকগুলো ছবি. কয়েকটা প্রীতমের ছোটবেলার আবার কয়েকটা ওর বাবা মায়ের সাথে. আবার কয়েকটা ওর বোনের সাথে. কণিকাকে দেখতে কিন্তু বেশ সুন্দর. অনিমেষ সবসময় ভাবতো গ্রামের ছেলে হয়েও প্রীতমকে এত সুন্দর দেখতে কিকরে? আজ সে ওর মাকে দেখে বুঝলো সেটা কেন. কাকিমা এই বয়সেও খুব সুন্দর দেখতে. ঘরে একটা দেয়ালে প্রীতমের বাবা মায়ের আর ওর একটা ছবি টাঙানো ছিল. দেখে বোঝাই যাচ্ছে ছবিটা প্রীতমের ছোটবেলার. সাদা কালো একটা ছবি. ছবিতে সবচেয়ে আকর্ষণের ব্যাপার হলো প্রীতমের মায়ের মুখটা. সত্যি প্রীতমের মা কমবয়সে খুবই সুন্দরী ছিলেন. যদিও অনিমেষ শ্রদ্ধার চোখেই ওর মায়ের ছবিটা দেখছিলো কিন্তু একটা জিনিস ও ভালো করে লক্ষ্য করছিলো এই মুখের সাথে প্রীতমের বোনের আজকের মুখের অনেক মিল. যেন এই ফটোটা প্রীতমের মায়ের নয়, ওর বোনেরই. কিন্তু পরোক্ষনেই অনিমেষ ভাবলো এটাতে আবার অবাক হবার কি আছে? মেয়ের মুখ মায়ের মতো হবে সেটাই তো স্বাভাবিক. শুধু একটা ব্যাপার মায়ের  মুখের থেকে মেয়ের মুখকে আলাদা করে. সেটা লক্ষ করতে  করতে অনিমেষ আর বেশি না ভেবে শুয়ে পড়লো.


চলবে..... 


বন্ধুরা... কেমন লাগলো জানাবেন।
ভালো লাগলে Reps আর Like দেবেন।
[Image: 20230816-221934.png]
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
ভাল হয়েছে next update এর জন্য wait করছি
[+] 2 users Like Arkd R's post
Like Reply
#3
Khub bhalo update
[+] 1 user Likes Rupakpolo1's post
Like Reply
#4
এই নতুন লেখা নিয়ে অনেক শুভেচ্ছা রইলো. খুব ভালো শুরু হয়েছে|| Likes দিলাম|
[+] 1 user Likes dipmdr's post
Like Reply
#5
অসাধারন লেখা! চালিয়ে যান
[+] 1 user Likes maximum duno's post
Like Reply
#6
অসাধারন লেখা! চালিয়ে যান
[+] 1 user Likes maximum duno's post
Like Reply
#7
আবার একটা সুন্দর গল্পের অপেক্ষায়।।
[+] 1 user Likes Amihul007's post
Like Reply
#8
valo laglo.
[+] 1 user Likes chndnds's post
Like Reply
#9
আশাকরি এবারে নতুন কিছু এলিমেন্ট অ্যাড হবে ! একটা নতুন পার্টএর অপেক্ষা করবো !   Smile
[Image: 8432513890895499359e1ca6a375c129.png]
[+] 3 users Like bratapol's post
Like Reply
#10
solid start.... waiting for next update

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
#11
খুব ভালো ভাবে শুরু হলো গল্পটি.
আর তার সাথে photo editing and drawing দুটোই খুব সুন্দর.
Reps added
[+] 1 user Likes Avishek's post
Like Reply
#12
Great beginning. Looks very promising.
[+] 1 user Likes swank.hunk's post
Like Reply
#13
Posted by swank.hunk - 5 hours ago
Great beginning. Looks very promising.
Posted by Avishek - 5 hours ago
খুব ভালো ভাবে শুরু হলো গল্পটি.
আর তার সাথে photo editing and drawing দুটোই খুব সুন্দর.
Reps added
Posted by Nalivori - 6 hours ago
solid start.... waiting for next update
Posted by bratapol - 6 hours ago
আশাকরি এবারে নতুন কিছু এলিমেন্ট অ্যাড হবে ! একটা নতুন পার্টএর অপেক্ষা করবো !   [Image: smile.png]
Posted by chndnds - 7 hours ago
valo laglo.
Posted by Amihul007 - 9 hours ago
আবার একটা সুন্দর গল্পের অপেক্ষায়।।
Posted by maximum duno - 10 hours ago
অসাধারন লেখা! চালিয়ে যান
Posted by maximum duno - 11 hours ago
অসাধারন লেখা! চালিয়ে যান
Posted by dipmdr - Today, 06:23 AM
এই নতুন লেখা নিয়ে অনেক শুভেচ্ছা রইলো. খুব ভালো শুরু হয়েছে|| Likes দিলাম|
Posted by Rupakpolo1 - Today, 04:33 AM
Khub bhalo update


ধন্যবাদ বন্ধুরা. পরবর্তী আপডেট কবে আসবে সেটা আগে থেকে জানিয়ে দেবো 
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#14
Baban..bro can you finish an unfinished Bengali Story ??... it was a great starting but writer just left...it ws written a way back...
Like Reply
#15
[Image: 20200512-025152.jpg]
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#16
দারুন শুরু করেছেন।
চালিয়ে যান।।
খেলা হবে। খেলা হবে।
Like Reply
#17
অপেক্ষায় আছি।
Like Reply
#18
[Image: 20200512-191157.jpg]

সকালে দরজায় টক টক আওয়াজে বাথরুম থেকে বাইরে এলো অনিমেষ. শেভিং করছিলো ও. কেউ দরজায় টোকা দিচ্ছে. পাশে তাকিয়ে দেখলো প্রীতম বাবু তখনো আয়েশ করে মুখ হা করে ঘুমিয়ে. ডাকলোনা ওকে. নিজেই উঠে দরজা খুললো অনিমেষ. দরজা খুলতেই দেখলো সামনে কণিকা দাঁড়িয়ে হাতে চায়ের ট্রে নিয়ে. ঠিক যেন কাকিমা দাঁড়িয়ে তবে আজকের কাকিমা নয়, ২০ বছর আগের কাকিমা. সেই এক চোখ, এক মুখ এক ঠোঁট. 


চা.....

কথাটা শুনে ধ্যান ভঙ্গ হলো অনিমেষের. নিজেকে সামলে নিয়ে বললো : আ... আ... আজ্ঞে? 

কণিকা : চা এনেছি. 

অনিমেষ : ওহ হ্যা.... দিন 

কণিকা : আমাকে আপনি করে বলবেন না. 

অনিমেষ হেসে : আচ্ছা... এসো ভেতরে এসো. দাও আমাকে দাও. 

প্রীতমের দিকে তাকিয়ে ডাকলো : এই প্রীতম..... ওঠ.. সকাল হয়েছে গেছে ওঠ. 

কণিকা : দাদার ঘুম খুব কড়া. একবার ঘুমোলে না ডাকলে দাদার ঘুমই ভাঙ্গেনা. 

অনিমেষ : যা বলেছো.... এই ব্যাটা.. ওঠ. মেয়েটা কতক্ষন দাঁড়িয়ে থাকবে? 

প্রীতম : উঠছি ভাই....উমমম... উঠছি. 

প্রীতমের ব্যাপার দেখে ওরা দুজনে হেসে উঠলো. কণিকার থেকে ট্রে নিয়ে বিছানায় রাখলো অনিমেষ. তবে কণিকা নিজের হাতে ওকে চায়ের কাপটা এগিয়ে দিলো. কণিকার হাত থেকে কাপটা নেবার সময় হাতের সাথে ওর হাত স্পর্শ হলো. 

প্রীতম : ওহ চা.... দে দে.

কণিকা : এই... আগে মুখ ধুয়ে নে. 

প্রীতম : কাক  ... মার খাবি কিন্তু বেশি পাকামো করিস না. 

কণিকা : খবরদার দাদা... কাক ডাকবিনা. 

প্রীতম : হাজার বার ডাকব... কাক... পেত্নীর মতো দেখতে... আবার বলে কাক না ডাকতে 

অনিমেষ হাসি মুখে ভাই বোনের খুনসুটি দুস্টুমি দেখছিলো. ওর কোনো বোন নেই, একমাত্র ছেলে ও. তাই বোনের সাথে দুস্টুমি করা হয়ে ওঠেনি. তাই বন্ধুর সাথে তার বোনের মিষ্টি ঝগড়াটা বেশ ভালোই লাগছে. যদিও সামনে বসে থাকা মেয়েটিকে দেখে ওর মনে বোনের অনুভূতি একটুও হচ্ছেনা... বরং উলটোটাই  হচ্ছে. 

বোনের জ্বালানিতে শেষমেষ আগে প্রীতমকে দাঁত মাজতেই যেতে হলো. কি জ্বালা রে ভাই. ও গেলে কণিকা ভালো করে বিছানায় বসলো আর একটা কাপ তুলে নিলো. এতক্ষন অনিমেষ লক্ষই করেনি যে কণিকা তিনটা কাপ এনেছিল. মানে মেয়েটি এইখানেই ওদের সাথে চা পান করবে বলেই এসেছে. অর্থাৎ কিছুক্ষন সময় কাটানো যাবে এই রমণীর সাথে. ভেবে কেমন একটা ভালো লাগলো অনিমেষের. চা খেতে খেতে কিছুক্ষন গল্প করলো ওরা তারপরে প্রীতমও ওদের সাথে যোগ দিলো. কণিকা ট্রে নিয়ে চলে গেলো আর বলে গেলো একটু পরে নীচে নামতে. মা খেতে দেবে. একটু পরে রেডি হয়ে দুজনে নীচে নামলো আর অনিমেষ দেখলো অনিতা কাকিমা অনেক পদ রান্না করেছে. দুজনে খেতে বসলো. সকালের খাবারেই পেট ভরে গেলো অনিমেষের. আর কাকিমার রান্নার হাত অসাধারণ. প্রীতমের বাবা বাজারে বেরিয়ে ছিলেন, একটু পরে ফিরে এলেন মটন নিয়ে. আজ দুই বন্ধুর জন্য কাকিমা মাংস রাঁধবেন. 

অনিমেষ : কাকিমা.... দারুন রান্না হয়েছে. 

প্রীতমের বাবা : আরে এটাতো সবে সকালের সামান্য জল খাবার. দুপুরের খাওয়াটা খাও... খেলে আর এখান থেকে যেতেই চাইবেনা. তা বাবা বেশি সময় নিয়ে এসেছো তো? 

অনিমেষ : আজ্ঞে না কাকু.... বুধবার জয়েন করতে হবে. 

প্রীতমের বাবা : সেকি? বুধবারই... মাত্র এই কদিন থাকবে? তা কি আর করা যাবে.... কাজ যখন.....তাহলে এই কদিনে বন্ধুর সাথে এদিক ওদিক ঘুরে এসো. এই বাবলু..... অনিমেষকে আমাদের গ্রামটা ঘুরিয়ে দেখা. 

প্রীতম : হুম.... সেতো ঘোরাবোই. এই তো একটু পরেই বেরোবো. নদীর পারটা ঘুরিয়ে আনবো আজ. তাছাড়া যা খেলাম হাটাহাটি করাটা দরকার. নইলে দুপুরের মাংসটা ঠিক কব্জা করতে পারবোনা. 

আমরা সবাই হেসে উঠলাম. 

একটু পরেই হাঁটতে বেরোলো ওরা. অনিমেষ সাথে ওর ক্যামেরাটা নিয়ে নিয়েছে. যা সুন্দর লাগছে তারই ছবি ক্যামেরায় তুলে নিচ্ছে. হাঁটতে হাঁটতে ওরা নদীর পারে চলে এলো. কি সুন্দর পরিবেশ. অনিমেষের মন জুড়িয়ে গেলো. জেলেরা জলে জাল ফেলছে, দুটো নৌকা নদীর মাঝে এগিয়ে চলেছে, চারিদিকে সবুজ আর সবুজ আর নীচে ওপরে শুধু নীল. নিজেকে আটকে রাখতে পারলোনা অনিমেষ. ক্যামেরা তুলে পরপর চার পাঁচটা ছবি তুলে নিলো ও. এই পরিবেশ শহরে দেখা অসম্ভব. 

অনিমেষ : উফফফফ ভাই... কি জায়গাতে থাকিস তুই. কি অপরূপ জায়গা. 

প্রীতম : তা ঠিক. শহরে থেকে থেকে আমিও শহুরে হয়ে গেছি কিন্তু এই মনোরম পরিবেশ.... সত্যি দারুন.... এসব আর কলকাতায় কোথায়? 

অনিমেষ : এখনই যদি এমন পরিবেশ হয় তাহলে তোর ছোটবেলায় এই জায়গাটা কেমন ছিল. নিশ্চই আরও দারুন ছিল? 

এই প্রথম ও দেখলো প্রীতমের হাসিমুখটা একটু কেমন পাল্টে গেলো. তারপরে আবার হেসে বললো : চল চল তোকে এখানকার মন্দিরে নিয়ে যাই. চল. ওরা হেঁটে এগিয়ে যেতে লাগলো. মন্দির দর্শনের পর প্রীতম ওকে বললো : চল তোকে এখানকার বিখ্যাত মিষ্টির দোকানে নিয়ে যাই. একবার চন্দু কাকার দোকানের মিষ্টি খেয়ে দেখ. প্রীতম অনিমেষকে দোকানে নিয়ে গেলো আর চন্দু কাকার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো. কাকা ওদের দুজনকেই বিনামূল্যে মিষ্টি দিলো. সত্যিই অমৃত. খেতে খেতে ওখানেই কাকার সাথে কিছুক্ষন গল্প করলো ওরা. 

প্রীতম: চল ভাই.... এবারে ফিরি. আকাশটা কালো হয়ে আসছে. যখন তখন ঝেপে নামবে মনে হচ্ছে. চল শর্টকাট দিয়ে ফিরি. 

প্রীতম ওকে নিয়ে জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে ফিরতে লাগলো. দুদিকে জঙ্গল আর মাঝে ইঁটের রাস্তা. কিন্তু যা হবার নয় সেটাই হলো. পৌঁছানোর আগেই তেড়ে বৃষ্টি নামলো. যদিও ঝড় নয়, একটু পরেই হয়তো থেমে যাবে কিন্তু এখন বৃষ্টির বেগ ভয়ানক. মুহূর্তেই ভিজে গেলো ওরা. ছুটতে লাগলো দুজনে. ছুটতে ছুটতে হঠাৎ অনিমেষের নজর পড়লো জঙ্গলের মধ্যে ভাঙা একটা পোড়োবাড়ির. ও হঠাৎ রাস্তা ছেড়ে ওদিকে দৌড়োতে লাগলো. 

প্রীতম : আরে কিরে? ওদিকে কোথায় যাচ্ছিস? আমাদের রাস্তা তো এদিকে. 

অনিমেষ : আরে ভাই এই অবস্থায় বাড়ি যাওয়া যাবেনা...... আমরা কিছুক্ষনের জন্য ওই বাড়িটার নীচে দাঁড়াই আয়... বৃষ্টি কমলে বেরিয়ে যাবো. 

অনিমেষ ছুট্টে বাড়িটার সামনে পৌঁছে গেলো আর বাড়িটার নীচে দাঁড়িয়ে পড়লো কিন্তু দেখলো প্রীতম তখনো রাস্তায় দাঁড়িয়ে ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে আছে. 

অনিমেষ : আরে তোর কি ভিজে জ্বরে পড়ার ইচ্ছা হলো নাকি? আয় তাড়াতাড়ি. 

প্রীতম এইবার ছুটে এসে বন্ধুর পাশে দাঁড়ালো. 

অনিমেষ : কিরে? পাগলের মতো এতক্ষন দাঁড়িয়ে ছিলি কেন? 

প্রীতম : না মানে... ইয়ে... মানে এমনি. 

প্রীতম বাড়িটার নীচে দাঁড়িয়ে বার বার বাড়িটার ভাঙা দরজা দিয়ে ভেতরে তাকাচ্ছিলো. অনিমেষ দেখলো ওর চোখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট. 

অনিমেষ : আচ্ছা.... বুঝেছি কেনো তুই এখানে দাঁড়াতে চাইছিস না...... নিশ্চই বলবি এটা একটা ভুতুড়ে পোড়ো বাড়ি? এখানে ভুত থাকে.. কি? তাইতো? 

প্রীতম : না.. না.. ভুত না.... ভুত না. ওসব কিছু না. 

অনিমেষ : ভুত নয়তো আবার এমন গোল গোল চোখে কি দেখছিস ভেতরে? 

প্রীতম আনমনে বলে ফেললো : ওই ঘরটা ...... ওই ঘরটাতেই সেদিন..... 

অনিমেষ : ঐ ঘরটাতে কি? কোনদিন? 

প্রীতম নিজেকে সামলে নিয়ে : হ্যা? না... না.... কিছু না.... 

অনিমেষ তাও একবার ভেতরে ঢুকলো. একদম নোংরা জায়গা. ভেতরে গাছপালা গজিয়ে গেছে. নিশ্চই একশো বছরের বাড়ি বা তারও বেশি. কিন্তু ওটা কি? অনিমেষ এগিয়ে গেলো সামনে. ঘরের কোণে একটা খর্গ. অনেক পুরোনো, একদম জং হয়ে গেছে.   

অনিমেষ : ভাই দেখ... একটা কবেকার খর্গ. এটা কি এইবাড়ির নাকি? 

প্রীতমও তাকালো ওই খর্গর দিকে. আবার বড়ো বড়ো চোখ হয়ে গেলো ওর. অনিমেষের হাত ধরে ও বললো : চল.. চল বৃষ্টি থেমে গেছে. এখান থেকে যাই চল. এই বলে প্রায় টেনে ওকে বাইরে নিয়ে গেলো আর এগিয়ে যেতে লাগলো বাড়ির উদ্দেশে.

চলবে.... 

ভালো লাগলে 
লাইক আর রেপুটেশন দেবেন বন্ধুরা 
[Image: 20230816-221934.png]
[+] 17 users Like Baban's post
Like Reply
#19
Super..... Vai
[+] 2 users Like S2929's post
Like Reply
#20
গল্পের শিকড়, কান্ড তৈরি হচ্ছে, এরপর শাখা-প্রশাখা গজানোর অপেক্ষা!
[+] 1 user Likes Black_Rainbow's post
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)