Thread Rating:
  • 146 Vote(s) - 3.45 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery হেমন্তের অরণ্যে
#1
হেমন্তের অরণ্যে 

(এই উপন্যাসের চরিত্র, স্থান সমস্ত কাল্পনিক। যে সমস্ত স্থান ও চরিত্র উপন্যাসে রয়েছে তা বাস্তবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কল্পনা প্রসূত করে তোলা হয়েছে। ভৌগলিক ভাবে স্থানগুলির বর্ণনাও সঠিক নয়। গল্পের উদ্দেশ্য কোনো জাতি, বর্ণ, ধর্মকে আঘাত করা নয়। এই উপন্যাসে নন্দনতত্ব না খুঁজে নিছক ইরো সাহিত্য হিসেবে দেখা ভালো। উপন্যাসে কঠোর ভাবে যৌনতা দৃশ্য থাকলেও, যৌনতা বিষয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো চরিত্র রাখা হয়নি। যৌনতার স্বার্থে ও বাস্তবতা কেন্দ্রিক করে তুলতে যেমন কিছু অশ্লীল ভাষা এখানে ব্যবহার করা হয়েছে, তেমন অনেক অবাস্তব কাল্পনিক বিষয়ও রয়েছে। সবমিলিয়ে এই উপন্যাস কঠোর ভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য একটি উপভোগ্য গল্প।) 

খাঁচার টিয়াটাকে বুলি শেখানোর চেষ্টা করছে কাবেরী। রোজই চালায়, এই দুপুরের নির্জন সময়ে। পাখি কথা বলবে না, কাবেরী কথা বলাবে, এ নিভৃত খেলা। 
মাসখানেক আগে স্কুল থেকে ফিরবার সময় রাস্তার ধারে বিক্রি হতে দেখেছিল। কড়কড়ে সবুজ রঙের, গলার কাছে বকলেসের মত স্পষ্ট কালো দাগ। টিয়াটা আশি টাকায় কিনে নিয়েছিল কাবেরী। নেহাতই শখের বশে কেনা বললে ভুল হবে, কাবেরীর মামার বাড়িতে এরকম একটা টিয়া ছিল। অরুণাভ অফিস থেকে ফিরে নতুন অতিথিকে দেখে হেসে বলেছিল--যাইহোক তোমার একটা সঙ্গী জুটল।  

কাবেরীর প্রাথমিক স্কুলের দিদিমণি। সকালে স্কুল। সারা দিন একাই বাড়িতে কাটে। তাতানের কলেজ থাকে। ও প্রেসিডেন্সিতে ফিজিক্স নিয়ে পড়ছে। পাপানের সামনে এইচ এস। অরুণাভর দশটা-আটটা অফিস। 

কাবেরী চেষ্টা চালাচ্ছে, কিন্তু টিয়াটা কথা বলছে কই! পাখিওলা বলেছিল পোষ মানে, কথা কয়। কিন্তু এ টিয়া একমাস ধরে একটা কর্কশ ডাক ছাড়া আর কিছুই করে না। কাবেরী ভাবছে একদিন বিরক্ত হয়ে নিজেই খাঁচাটা খুলে দেবে। আর ফুড়ুৎ করে উড়ে যাবে আকাশে। 

নাহ, হাল ছাড়া চলবে না। তাতান ছোটবেলায় অঙ্কে কি কাঁচা না ছিল, সামান্য গুন-ভাগ করতে দিলে ভয়ে সিঁটিয়ে যেত। চিবিয়ে চিবিয়ে ছাল ওঠাতো পেন্সিলের। বুঝতে পারছি না মা! হচ্ছে না মা! পারব না মা! সেই ছেলের পেছনে লেগে, তাতাই একদিন মাধ্যমিকে অঙ্কে একশো পেল। উচ্চমাধ্যমিকেও অঙ্কে একশো, ফিজিক্স নিয়ে পড়ছে। অঙ্কের ভয় দূর করানোর চেয়ে কি পাখির মুখে বুলি ফোটানো কঠিন! 
খাঁচায় টোকা দিয়ে কাবেরী বলল---কি রে কথা বলবি না? 
পাখিটা খাঁচার অন্য প্রান্তে গিয়ে সেঁধিয়ে গেল। একবার ঘাড় বেঁকিয়ে দেখল কাবেরীকে। 
----বল অরুণাভ, অ-রু-ণা-ভ।   
টিয়ার মোটেই আগ্রহ নেই। কাবেরী হেসে বলল---বুঝতে পেরেছি আমার বরকে তোর পছন্দ নয়। হবেই বা কেন ও কি তোকে ভালোবাসে? 
টিয়ার এতটুকু চাঞ্চল্য দেখা গেল না। কাবেরী ঠোঁট টিপে হাসল---বল তবে তাতাই, পাপাই...
সেই কুৎসিত আওয়াজ করে খাঁচার মেঝেতে বসল টিয়া। ঝটপট করতে লাগলো নিজের মত। 
---দাদাদেরও পছন্দ নয়? ভারী অসভ্য তো?  
খাঁচার মধ্যে দোল দিয়ে জিম্যান্সটিক দেখাতে লাগলো টিয়া। 
---আচ্ছা বাবা, কাউকে ডাকতে হবে না। আমার নাম ধরে ডাক কা-বে-রী... তা নাহলে খুকু..... খু-কু... 
খুকু কাবেরীর ছোটবেলার নাম। বহুদিন এই নামে কেউ ডাকে না। মা যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তিনিই শেষ এই নামে ডাকতেন।  কাবেরী আবার বলল---খু-কু...
পাখিটা আবার কর্কশ করে বলল---ওরা তোকে ঠিক চিনেছে। তুই একটা বুড়ো হদ্দ। পাজির পাঝড়া। তোর সঙ্গে আর কথা বলব না, যাঃ। 

কাবেরী পাখি কিনতে গিয়ে এর আগেও ঠকেছে। একবার একটা মুনিয়া কিনে এনেছিল। একদিন নোংরা খাঁচা ফেলে, সুযোগ বুঝে উড়ে পালালো। আর অরুণাভ সেদিন ঠাট্টা করে বলেছিল---ওটা ময়না না ছাই, গাঙশালিখ ছিল। বাপের সাথে তাল মিলিয়ে তাতান-পাপান হেসে উঠেছিল। একবার পুজোর সময় দু জোড়া মুনিয়া কিনেছিল জোর করে, অরুণাভ অবশ্য বলেছিল নকল বলে। তখন তাতান-পাপান ছোট, দোলের দিন জল পিচকারী দিয়ে ধুইয়ে দিতেই বর্ণচোরা মুনিয়া হয়ে উঠেছিল চটচটে চড়াই। 

অরুণাভ কাবেরীর এই পাখি পোষার শখে কোনদিন বাধা না দিলেও ঠাট্টা প্রায়শই করে। মাঝে মধ্যে বলে----দেখো এই টিয়া আবার একদিন কাক হয়ে ওঠে কিনা।  
পাখিটার হাল ছেড়ে দোতলার বারান্দা থেকে শোবার ঘরে ঢুকল কাবেরী। মালতি শুকনো শাড়ি-জামাগুলো ছাদ থেকে তুলে এনে বিছানায় ডাই করে রেখে গেছে। সেগুলো থেকে পাপাই-তাতাইয়ের বারমুডা, টি শার্ট, অরুণাভর পাজামা, গেঞ্জি, নিজের শাড়ি-ব্লাউজ আলাদা আলাদা করে কোনটা রাখলো আলনায়, কোনটা রেখে এলো ছেলেদের ঘরে। কোনটা আলমারিতে তুলে রাখলো। খাটের উপর গড়ালো কিছুক্ষণ। সকালের কাগজটা এপাশ ওপাশ উল্টে পড়ে রাখলো। চোখটা বুজে আসছিল ঘুমে, ওমনি ফোনটা বেজে উঠল। এখন আর ল্যান্ড লাইনে কেউ ফোন করে না। একমাত্র অরুণাভ বাড়িতে ফোন করলে ওতেই করে। রিসিভারটা তুলে কাবেরী বলল---বলো...
---ঘুমিয়ে পড়েছিল নাকি? 
---না, এই একটু। 
---পারোও বটে। সুখে আছো...। 
---এইটা বলার জন্য ফোন করেছো?
---ঘুমটা ভাঙ্গালাম বলে চটে আছো ডার্লিং? 
কাবেরী ম্লান হাসলো।---ঢং না করে বলো? বড্ড ঘুম পাচ্ছে। 
---টেবিলের ওপর দেখো দেখি নীল রঙের ফাইলটা ফেলে এসেছি কিনা? 
----হুম্ম, ওটা তোমার ড্রয়ারে রেখে দিয়েছি। 
---ওহঃ বাঁচালে। আমি ভাবছিলাম ট্যাক্সিতে ফেলে এলাম কিনা।
----তুমি আজ টিফিন বক্সও নিয়ে গেলে না। কাবেরী এবার সামান্য ঝাঁঝালো সুরে বলল। 
---আরে ব্যাগে এতগুলো ফাইল ভরবার পর আর জায়গা থাকে নাকি...
---আর তার জন্য টিফিন বক্সটাই বাদ গেল। তারপর ওই ক্যান্টিনের খাবার খেলে? তারপর অম্বল হলে বোলো...
কাবেরীর স্কুল থেকে বাড়ী ঢুকতে সাড়ে ন'টা বাজে। ওই সময়টা কাবেরীর সবচেয়ে ব্যস্ততম সময়। ঘোড়ায় জিন দিয়ে ছুটতে হয় তাকে। জামাটা ইস্ত্রী করে দাও না মা...কাবেরী ভাত কমাও... মা আমার স্যান্ডো কোথায়....তারমাঝে তিনজনের টিফিন রেডি করা থেকে জলের বোতল রেডি করে ডাইনিং টেবিলে রাখা যাতে নজরে আসে, বিছানার বাজুতে অরুণাভর মোজাটা রেখে আসা ইত্যাদি নানাবিধ। অবশ্য কলেজে ওঠার পর তাতান আর টিফিন নেয় না। মালতি অবশ্য টুকিটাকি সাহায্য করে। ঘর মুছে দেওয়া, রান্নার সময় এটা ওটা হাতের কাছে পৌঁছে দেওয়া এসব।  
ফস করে অবান্তর ভাবে কাবেরী জিজ্ঞেস করল---বাড়ী ফিরছ কখন? 
---সাড়ে আটটা বাজবে...যা চাপ ইয়ার এন্ডিংয়ে। তোমার মত স্কুলের সাতটা-দশটা চাকরী করলে সুখী হতে পারতাম। 
কাবেরী এড়িয়ে গিয়ে বলল---আর কিছু বলবে?
---রাগ করলে নাকি? 
---অফিস করো। আমার বড্ড ঘুম পাচ্ছে। ফোনটা রেখে দিল কাবেরী। 
ঘুমটা এলোমেলো হয়ে গেছে কাবেরীর। সময় যখন কাটতে চায় না, তখন সাড়ে আটশ স্কোয়ার ফিটের এই দোতলা বাড়িটাকেও জনহীন প্রান্তর বলে মনে হয়। 

সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। ইচ্ছেগুলো দুর্বল হতে হতে অস্তিত্ব হারায়। আসলে কাবেরীর জীবনটা বরাবরই বড় অগোছালো প্লাটফর্মের মত। বিয়ের দেড়বছরের মাথায় তাতান এসে যায়। তারপর ছেলেকে বড় করবার পালা। অরুণাভ চেয়েছিল আরেকটা বাচ্চা। তাতান আর পাপানের মাঝে তিন বছরের গ্যাপ। বাচ্চা-কাচ্চা হবার পর সাধারণ আর পাঁচটা মেয়ে দৈব বা আপ্তবাক্যের মত স্বামী-সন্তান নিয়ে ঘর সংসার করে থাকে। সংসার নামক যাঁতাকলে পড়ে কাবেরীও হারিয়ে গেল পুরোদস্তুর। একদিকে স্কুলের চাকরী, অন্যদিকে সংসারের অতিদীর্ঘ পথ একাই সামলে চলল বাইশ বছর। মোটা মাইনের ব্যাংক ম্যানেজার অরুণাভ মুখার্জীর স্ত্রী মিসেস মুখার্জী, এই পরিচয়ের মধ্যে প্রাথমিক স্কুলের কাবেরী দিদিমণি এই পরিচয়টা আবদ্ধ হয়ে রইল শুধু সাতটা-দশটা স্কুল গন্ডির মধ্যে। কাবেরীর শ্বশুরমশাই তখন বেঁচে, বড্ড ভালোবাসতেন কাবেরীকে। শাশুড়িও ছিলেন ভীষণ কো-অপারেটিভ। ফলে চাকরিটা সামলাতে অসুবিধে হয়নি কাবেরীর। বাড়িটা তখন গমগম করত। এতজনের মধ্যেও কাবেরী তখনও অপেক্ষা করত অরুণাভ কখন বাড়ি ফিরবে। আজকের মধ্যবয়সে এসে নিয়মতান্ত্রিক দাম্পত্য সম্পর্কের মত রুক্ষ ছিল না তখন। কাবেরীর তখন প্রতিটা দিন নতুন মনে হত। অফিস থেকে ফিরবার পথে অরুণাভ কাবেরীর জন্য পারফিউম, মিষ্টি, ফুল এসব প্রায়শই কিছু না কিছু আনত। তাতান জন্মাবার পরও অরুণাভর ফুল আনা অভ্যেসটা ছিল। তারপর দুই ছেলে, সংসার, সকালে স্কুলের চাকরি সব সামলাতে সামলাতে কাবেরী যেমন ব্যস্ত হয়ে উঠেছিল, তেমন প্রমোশন পেতে অরুণাভও হয়ে উঠল একজন মধ্যবয়স্ক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ম্যানেজার; যার লক্ষ্য টার্ন ওভার কত দেখানো। মধ্যবয়সে এসে প্রতিটা দাম্পত্য জীবন এমনই হয়, কাবেরীর কাছেই যে নতুন তা নয় ঠিকই। তবু এখনকার দমচাপা ফাঁকাটা কাবেরীর একারই মনে হয়। তবে পাপাই-তাতাই বড় হতেই কাবেরীর সময়টা এখন খালি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন কাবেরী টের পায় তার চারদিকটা ব্যস্ত হয়ে রয়েছে এখনো, তাতাইয়ের কলেজ, পাপাইয়ের এইচ এস, ব্যস্ত অরুণাভ। এহেন অরুণাভ একদিন কথায় কথায় কাবেরীকে বলেছিল---তুমি তো মনটা করে রাখলে সোনায় মোড়া হিরের মতন। অনামিকা থেকে কেবলই দ্যুতি ছড়াচ্ছে। কিন্তু কারো দ্যুতি গ্রহণ করতে শেখনি। নিজেকে বিলোতে গেলে, অন্যকেও গ্রহণ করতে হবে। তা নাহলে লাইফ এনজয় করতেই পারবে না। 

আসলে সুখ জিনিসটা কি কাবেরী এখনো বুঝে উঠতে পারলো না। অরুণাভর মোটা মাইনের চাকরী, লেক টাউনে বড় দোতলা বাড়ি, বলতে বলতে তাতনের থার্ড ইয়ার হয়ে গেল। এসব নিয়ে তার সুখী হবারই কথা। সংসারে বাইশ বছর কেটে গেলেও চুয়াল্লিশে পা দেওয়া কাবেরীর জীবনে কোথাও যেন খামতি থেকে গেছে। 

নাঃ ঘুমিয়ে লাভ নেই। সোফাটা ঝাড়তে লাগলো কাবেরী। টুকটাক কাজ এগিয়ে রাখা ভালো। মালতি যথেষ্ট যত্ন নিয়ে ঝাড়াঝাড়ি করে, তবু কাবেরীর পছন্দ হয় না। সে একটু শুচিবাই ধরণের। ক্যাবিনেটের গায়ে, সেন্টার টেবিলে, টিভির কাচে অদৃশ্য ধুলো দেখতে পায় কাবেরী, এগুলোই কি সংসারের মায়া? 
কিছুক্ষণ সোফায় ঝুম হয়ে বসে রইল সে। তারপর কি ভেবে টিভিটা চালিয়ে দিল। আগে এক আধটা টিভি সিরিয়াল দেখতো, এখন বিরক্তির উদ্রেক হয়। সংলাপ, নড়াচড়া সবকিছুই ধারাবাহিক চললেও কিছুই মেলাতে পারে না। টিভিটা চললে বরং একটু ঘুমঘুম আসে। যদি খানিকটা সোফায় ঘুমিয়ে নেওয়া যায়। 
নাঃ ঘুমোবার উপায় নেই। বেল পড়ল আচমকা। এলোমেলো চুলের খোঁপাটা বেঁধে নিতে যেটুকু সময় লাগে তার মধ্যেই বেল পড়ল আরেকবার। এবারটা বেশ জোরালো গলায় ডেকে উঠল পাপান---মা আ আ....
---যাচ্ছি। যতটা উচ্চস্বরে বললে নীচতলার দরজা অবধি পৌঁছায়, ততটা জোরেই ডাকলো কাবেরী। 

দরজা খুলতেই পাপান হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল। জুতো জোড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলল সিঁড়ির তলায়। কাবেরী জুতোগুলো পা দিয়ে যথাস্থানে রাখতে রাখতে বলল----কি রে স্কুল থেকে কোচিংয়ে যাসনি? 
---না, স্যার নেই। 
---ওমা পরীক্ষার সময় কামাই কেন করছেন? 

পাপান ছাদে উঠে হাতের কালো ফিতের ডিজিটাল স্পোর্টস ওয়াচটা খুলতে খুলতে বলল--- উফঃ কি গরম পড়েছে...এসিটা দাও না মা। 

বাড়ির দুটো শোবার ঘর ছাড়া, ড্রয়িং রুমেও এসি রয়েছে। খুব গরম না পড়লে কাবেরী বা অরুণাভ এসি চালায় না, ফ্যানটাই যথেষ্ট। কিন্তু ছেলে দুটোর বেশ অভ্যেস। কাবেরী রিমোট নিয়ে এসিটা দিয়ে বলল---ফ্রেশ হয়ে নে। আমি টিফিন রেডি করছি। 
খালি গায়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে বারমুডা পরে বেরিয়ে এলো পাপান। ছেলেটা বেশ পাতলা, তবে লম্বায় মাকে ইতিমধ্যেই হারিয়েছে। বাবা-মায়ের মত তাতান বা পাপান দুজনেই ফর্সা। তবে তাতনের হাইটটা একটু কম। ওর বাবার সমান হবে। পাপান ইতিমধ্যেই বাবাকেও এক ইঞ্চি টপকেছে। 

ফলে এলার্জি নেই পাপানের, তাতানের আছে। ওকে ফল খাওয়ানো কঠিন। পাপান ফলের কুচি মুখে ফেলতে ফেলতে টিভির চ্যানেল বদলে স্পোর্টস চ্যানেলটা বদলে থমকে গেল। ইন্ডিয়া-নিউজিল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ চলছে। ফলটা শেষ করে ফ্রিজের দিকে এগোতেই রান্নাঘর থেকে কাবেরীর চোখ পড়ল পাপানের দিকে---ফের কোল্ড ড্রিংক? 
---মা প্লিজ.... বেশ গরম...
---এজন্যই তোর বাপিকে আনতে না বলি এসব। 
পাপান ছেলেমানুষের মত মাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল---মা একটু খাবো...
--- না তারপর ঠান্ডা...
পাপান মায়ের শাড়িতে গাল ঘষতে ঘষতে আবদার করতে লাগলো। দুই ছেলের হুমহাম আবদার যত কাবেরীর কাছে। তবে তাতানটা আস্তে আস্তে বড় হয়ে যাচ্ছে। একটা লোক লোক ভাব আনে নিজের মধ্যে। ছেলেকে দেখে তখন হাসি পায় কাবেরীর। একসময় পাপাইয়ের চেয়েও বড়ছেলে বেশি মা ঘেঁষা ছিল। স্কুল, খেলার মাঠ, কোচিং ক্লাস, রাজ্যের সব খবর মাকেই বলা চাই তার। কাবেরী জানে আর কটা দিন পর পাপাইও কলেজে যাবে। দুটি ছেলেই বৃত্ত পেয়ে যাবে তার। বৃত্ত নয় ডানা। অরুণাভ এজন্য কাবেরীকে বলে---বাচ্চারা কি সারাজীবন ছোটো থাকবে, ওদের প্রাইভেসি আছে, ওদের মত থাকতে দাও। ওদের সামনে এখন সুনীল আকাশ। 

চারটে নাগাদ মালতী এলো বাসন মাজতে। প্রেসার কুকারে মটর সেদ্ধ করতে বসিয়েছে কাবেরী। সন্ধেবেলা স্টেশনমার্কেটে যাওয়া দরকার। তাতান এলেই বেরোবে। ফ্রিজে যে মাছ আছে, কুচো মাছ। অরুণাভই দিন দুয়েক আগে এনেছিল। তাতান পোনা ছাড়া পছন্দই করে না। 
++++++

হালকা একটা তাঁত শাড়ি পরেই বাজার বেরিয়েছে কাবেরী। পাপান ঠিকই বলেছিল, জ্যৈষ্ঠের সন্ধ্যেটা বেশ গুমোট হয়ে রয়েছে। এমনিতে কলকাতায় গাছ কমে যাচ্ছে, তার ওপর ফ্ল্যাট বাড়ি উঠতেই থাকছে। বেল দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো কাবেরী। পাপাই এসে দরজা খুলে বলল---তোমাকে ফোন করতেই যাচ্ছিলাম, কে একজন এসেছে? 
----কে? 
---জানি না। বলল তোমার মা জানেন।
এই সন্ধেবেলা কে আসবে? ব্লাউজ, ব্রেসিয়ার ঘামে ভিজে একসা হয়ে রয়েছে, বদল করতে পারলে বাঁচে। তারপরে আবার কে এসে এসময় জুটেছে! 

চলবে
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
হেমন্তের অরণ্যে - by Henry - 03-10-2022, 09:04 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)