18-10-2019, 02:41 PM
পরের পর্ব
সত্যি উফফ। এই কয়েক মিনিটে যা হল, তাতে উফফ বলা ছাড়া অন্য কিছুই বলা যায় না। বিছানা থেকে উঠে আস্তে আস্তে সুইচ বোর্ডের দিকে গিয়ে ফ্যানটা চালিয়ে দিলাম, আর তার সাথে লাইটটাও জ্বালিয়ে দিলাম। আলো জ্বলে উঠতেই খেয়াল করলাম যে তোয়ালেটা দরজার সামনেই পড়ে আছে। দরজায় খিল দেওয়ার সময় বোধ হয় হাত থেকে পড়ে গেছে। তখন কি আর হুঁশ ছিল আমার! উফফ খুব বাঁচা গেছে। টেবিল থেকে জলের বোতলটা তুলে নিয়ে আবার বিছানায় গিয়ে বসলাম। বিছানায় বসার সময় ঘম্রাক্ত পাছার নিচে একটা ঠাণ্ডা ভেজা ভাব অনুভব করলাম। বুঝতে অসুবিধা হল যে আগের বার যখন বিছানার ওপর বসে হাপাচ্ছিলাম তখন আমার শরীরের ঘামে পাছার নিচে বিছানার চাদরটা ভিজে চপচপে হয়ে গেছে। বেশ হয়েছে। বা হাতে বোতলটা মুখের উপর চেপে ধরলাম। ঢক ঢক করে এক গাদা জল গলার ভেতর ঢেলে দিলাম এক নিঃশ্বাসে। শরীরের ভেতরটা যেন আস্তে আস্তে জলের পরশে ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। উফফ এই জন্যই বলে জল এর আরেক নাম জীবন। জল খাওয়া হলে বোতলটা মুখের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় একটা বাজে গন্ধ নাকে এল। হাত তুলে জল খাওয়ায়র জন্য বগলের জায়গাটা খুলে যাওয়ায় ঘর্মাক্ত বগল থেকে বাজে গন্ধটা আমার নাসারন্ধ্রের দিকে আক্রমণ করেছে। বোতলটা টেবিলে নামিয়ে রেখে ডান হাতের মধ্যাঙ্গুলি দিয়ে বা দিকের বগলের নরম চামড়া থেকে কিছুটা ঘাম মুছিয়ে নিয়ে নাকের সামনে নিয়ে এলাম। দুর্গন্ধে নাকটা আপনা থেকে সিটকে গেল। পচা আতপ চালের থেকেও নোংরা ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোচ্ছে ওখান থেকে। সারা দিনের খাটা খাটুনির পর এমনিতেই এই সব জায়গা থেকে নোংরা গন্ধ বেরোয়। আর তার ওপর একটু আগে যা হল। উফফ এখনও ঘামিয়ে চলেছি, যদিও ঘামের তীব্রতা আগের থেকে ধীরে ধীরে কমে এসেছে। খুব বাঁচা বেচেছি আজ। যোনীর ভেতরে মধ্যাঙ্গুলিটা ঢুকিয়ে একবার দেখে নিলাম ওখানকার কি অবস্থা। কারণ মুখটা অনেকক্ষণ ধরেই কুট কুট করে চলেছে। না, ভালোই জলের প্রাচুর্য সেখানে আর সেটা হওয়াই স্বাভাবিক। ভয় লাগুক আর যাই লাগুক, যে পরিমাণ শারীরিক উত্তেজনা ভোগ করেছি এতক্ষন তাতে এমনটাই হওয়ার কথা। মনের ফ্যান্টাসি, তার সাথে যোগ দিয়েছে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়। কোনও নিষিদ্ধ কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়ার যে ভয়টা মনের মধ্যে আসে সেটাই সেই নিষিদ্ধ কাজ করার উত্তেজনা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। আমার ক্ষেত্রেও একই জিনিস হয়েছে। ঘরের আলো জ্বালিয়ে রেখেই জানলার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম সম্পূর্ণ নগ্ন ভাবে। বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে জানলার সামনে থেকে সরে যাওয়ার ভান করলাম। একটু সরে এসে আবার জানলার বাইরে উঁকি মারলাম। না কোনও টর্চের আলো দেখতে পেলাম না। বোধহয় আজ আর দাঁড়িয়ে নেই সেই লোকটা। হতে পারে ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। ওরও তো সারা দিনের অনেক খাটা খাটুনি থাকে। আলো নিভিয়ে দিলাম। পরিত্যক্ত জামা কাপড় গুলো বিছানার ওপর থেকে পাশের চেয়ারের উপর অগোছালো ভাবে রেখে দিয়ে শুয়ে পড়লাম। এখনও বেশ গরম লাগছে। আজ আর গায়ের ওপর পাতলা চাদরটা চাপালাম না। শরীর যদিও চাইছে আরেকটু জল ঝরাতে, মন চাইছে একবার আত্মরতিতে মেতে উঠি, কিন্তু নিজেই নিজেকে ধমক দিয়ে দমিয়ে দিলাম। আজকের জন্য অনেক হয়েছে। শরীরের খিদে একটু চেপে রাখা ভালো। কাল নিজেকে নিয়ে আবার খেলায় মেতে ওঠা যাবে। চোখের ওপর ডান হাতটা উল্টো করে রেখে চোখ বুঝলাম। না আবার ডান দিকের বগলতলি থেকে সেই নোংরা গন্ধটা নাকে আসতে শুরু করে দিয়েছে। বিছানা থেকে উঠে তোয়ালে দিয়ে দুটো বগল আর কুঁচকি সমেত সারা শরীর থেকে ভালো ভাবে ঘাম মুছে নিয়ে আবার শুয়ে পড়লাম। একবার ভাবলাম একটু ডিও স্প্রে করে নি বগলে, কিন্তু এখন তো শুয়ে পড়ব, অজথা জিনিস নষ্ট করে কি লাভ। শুয়ে পড়লাম এক পাশ ফিরে। ধীরে ধীরে চোখের পাতায় ঘুমের ছায়া নেমে এল। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখলাম পূর্ণ দিনের আলোয় বাজারের ভেতর দিয়ে আমি নগ্ন হয়ে হেঁটে চলেছি আর আমার এক পাশে কালকের দেখা সেই ছেলেটা আর আরেক পাশে এই চটি বইয়ের বিক্রেতা আমার নগ্ন কোমর শক্ত হাতে জড়িয়ে ধরে হেঁটে চলেছে। ওরাও আমার মতন নগ্ন। বারবার নিচের দিকে তাকিয়ে ওদের নগ্ন উরুসন্ধির উপর চোখ রেখে ওদের আসল জিনিসটা দেখার বা মাপার চেষ্টা করলাম, কিন্তু অনেক চেষ্টা করা সত্ত্বেও ওদের লিঙ্গের অবয়ব দেখতে পেলাম না।
ঘুম ভাঙল খুব ভোরে। বাইরে পাখির ডাক শুরু হয়ে গেছে। গায়ে কোনও মতে কিছু একটা চাপিয়ে নিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড় লাগালাম। এই যে নতুন খেলায় মেতে উঠেছি, আজ সেই খেলার এক বিশেষ দিন। সরাসরি সেই কথায় চলে আসছি। এমনিতে সারা দিনে তেমন উল্লেখ্য কোনও জিনিস ঘটে নি যেটা লিখে পাতা ভরানো যায়। হাঁসপাতালে একটু খালি সময় পেয়ে একটু পড়াশুনো করে নিয়েছি। কারণ বাড়িতে এই কদিন পড়াশুনো একদম মাথায় উঠেছে। আজ ছাড়া পেয়েছি অনেক আগে। কিন্তু ইচ্ছা করেই বেরলাম না। কফি কাউন্টারে গিয়ে এক কাপ কফি নিয়ে একটা বইয়ের উপর ঝুঁকে বসে থেকে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিলাম। অবশেষে ঘড়ি মিলিয়ে ঠিক গতকালের মতন একই সময়ে হাঁসপাতাল থেকে বের হলাম। বাড়ির মোড়ের কাছে গিয়ে আবার গতকালের মতনই বাড়ির দিকে না গিয়ে ওই লোকটার দেখানো দোকানের দিকে হেঁটে চললাম ধীর গতিতে। আজও দোকানগুলোর ঝাঁপি ফেলার সময় হয়ে গেছে। সবাই উঠবে উঠবে করছে। হঠাত একটা দোকানের সামনে গিয়ে থমকে গেলাম। ওই তো সেই গতরাতে আলাপ হওয়া লোকটা। বেশ বড় দোকান। দোকানের নাম “আধুনিকা” (এই নামটা অপরিবর্তিত রাখলাম, কারণ দিল্লী থেকে ফিরে দেখেছিলাম যে দোকানটা একজন কিনে সেখানে রেস্টুরেন্ট খুলে বসেছে। তাই এই নামটা সঠিক লিখলে কোনও ক্ষতি হবে না।) দোকানের ওপরে বিশাল বড় একটা নামের ফলকে ওই হলুদের ওপর কালো কালি দিয়ে লেখা নামটার পাশে আরও অনেক জিনিস লেখা আছে অপেক্ষাকৃত ছোট লাল হরফে। সেখানে যেমনটা লেখা ছিল তেমনটাই লিখে দিলাম। “চিরাচরিত থেকে অত্যাধুনিক, মেয়েদের জন্য সব রকমের পোশাক সেরা মূল্যে উপলব্ধ। শাড়ি, ব্লাউজ, শালয়ার-কামিজ, জিন্স, স্কার্ট, টপ, নাইটি, কলেজ ড্রেস, শেমিজ, ব্রা, প্যান্টি ইত্যাদি সব পাওয়া যায়। (সবার নিচে ব্র্যাকেটের মধ্যে ছোট করে লেখা আছে) টেলারিং করার লোক আছে। ট্রায়াল দেওয়ার ঘর আছে।“ বুঝতেই পারছেন এটা কিসের দোকান। মেয়েদের সব রকমের জামা কাপড় পাওয়া যায়। আর বেশ বড় দোকান। দেখলাম একটা অল্প বয়সী মেয়ে কিছু একটা কিনে নিয়ে উঠব উঠব করছে। একজন মাঝ বয়সী মহিলা ওর হাতে জিনিস গুলো গছিয়ে দিয়ে হেঁসে ওকে বিদায় করে উঠে পড়লেন কাউন্টার ছেড়ে। বেশ ভুষা থেকে মনে হল ইনিই এই দোকানের মালকিন। ওই লোকটা একটু দূরে দাঁড়িয়ে দোকানের টেবিলের ওপর দুটো খাটা খুলে এক মনে কিছু একটা লিখে চলেছে। মহিলা লোকটাকে কিছু একটা বললেন, শেষ কথাটা বললেন দোকানের ঠিক মুখের সামনে এসে, তাই শেষের কথাগুলোই কানে এলো “নামিয়ে দে। আমি এগচ্ছি। কিছু লাগলে ফোন করিস।” আমার কি মনে হতে ইচ্ছে করে একদম ওনার সামনে গিয়ে হাজির হলাম। মুখে একটু কাচুমাচু ভাব এনে বললাম “ওহহ বন্ধ করে দিচ্ছেন বুঝি। আসতে বড্ড দেরী হয়ে গেল। ঠিক আছে কালই আসব।” গ্রাহককে ফিরিয়ে দেওয়া খুব খারাপ, মহিলা হেঁসে তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলেন “আরে না না। আসুন। কি কিনবেন।” আমি বললাম “না তেমন হলে আপনি এগিয়ে যান। আমি ওনার কাছ থেকেই দেখে নিচ্ছি। (ছেলেটার সাথে আমার ততক্ষনে একবার চোখাচুখি হয়ে গেছে। ও যেন আমাকে দেখেও দেখল না। বুঝলাম মালকিনের সামনে কোনও ভুল সংকেত দিতে নারাজ ছেলেটা। ) মহিলা আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে “বাবু, ম্যাডামের কি লাগবে দেখে দিয়ে দে। আমি আসছি। কোনও সমস্যা হলে আগামীকাল আসবেন, আমি থাকবো। একটু আগে এলে সময় নিয়ে দেখাতে পারব।” উনি বেড়িয়ে পড়লেন। একটা কথা এখানে বলে রাখা ভালো যে অনেক মেয়েদের পোশাকের দোকানেই, এমনকি আন্ডারগার্মেন্টসের দোকানেও পুরুষ বিক্রেতা থাকে, আর এতে বিশেষ সংকোচের কিছু নেই। আর মেয়েদের পুরুষ টেলার থাকে সেটাতো সবাই জানে। যাকগে আমি মহিলা কে হেঁসে হ্যাঁ বলে বাবুর দিকে এগিয়ে গেলাম। অদ্ভুত নাম এই বাবু। সব থেকে প্রচলিত নামগুলোর মধ্যে একটা এই “বাবু”। ছেলেটা খাতার থেকে মুখ না তুলেই বলল “কি লাগবে বলুন।” দেখলাম আড় চোখে বাইরে তাকিয়ে দেখছে। একটা রিক্সা ওর মালকিনকে নিয়ে বেড়িয়ে যেতেই, খাতার মাঝে একটা পেন গুঁজে খাতাটা বন্ধ করে রাখল। দুজনের চোখাচুখি হতেই দুজনেই একে ওপরের দিকে একটা মুচকি হাঁসি দিলাম। আমি যতটা সম্ভব মার্জিত স্বরে বললাম “ কয়েকটা জিনিস কিনতে হবে। আপনারা কার্ড নেন?(যত সব নাটক। আমিও জানি আমি কিছু সত্যি কিনলে ক্যাশেই দাম মেটাবো, তবুও জিজ্ঞেস করলাম।) ছেলেটা আমাকে আশ্চর্য করে দিয়ে বলল “হ্যাঁ হয়।” অনেক দিন সত্যি কিছু কেনা হয়নি। এত টাকা জমিয়ে লাভ কি? ভালো কিছু পেলে এই সুযোগে কিনে নেওয়া যাবে। একবার হ্যান্ড ব্যাগ খুলে দেখে নিলাম টাকা আছে কিনা। হ্যাঁ আছে।
বললাম “টপ আছে?” ছেলেটা দেখলাম আমাকে আপাদ মস্তক মেপে চলেছে দোকানের আলোয়। তবে মাঝে মাঝে ছেলেদের চোখে যে উগ্র কামনার আগুন দেখা যায় তেমন কিছু ওর চোখে দেখলাম না। আমি যখন প্রশ্নটা করলাম ওর চোখ তখন আমার পেটের ওপর নিবদ্ধ। মুখ তুলে বলল “হ্যাঁ আছে। কেমন রঙের চাই? আর কেমন রেঞ্জে দেখাবো? “ আমি বললাম “একটু হালকা রঙের হলে ভালো হয়। আগে তো দেখি, তারপর পছন্দ হলে দাম দেখে নির্ণয় করব খন।” ছেলেটা সাদার ওপর কালো রঙ দিয়ে ডোরাকাটা দাগ আঁকা হাফ হাতা টপ আমার সামনে রেখে দিয়ে আরো কিছু খোঁজা শুরু করল। আমি বললাম “স্লিভলেসও দেখান।“ ছেলেটা মাথা না ঘুরিয়েই উত্তর দিল “ সব দেখাচ্ছি, আপনি ভালো করে দেখে নিন। “ আমি কাপড়ের কোয়ালিটি দেখলাম মন্দ নয়। হলদেটে একটা ফুল হাতা টপ টেবিলের ওপর ছুঁড়ে দিল। বাহ এটারও কাপড়ের কোয়ালিটি বেশ ভালো। দামের স্টিকারটা উল্টে দেখে নিলাম দুটোরই। না শস্তাই বলা চলে। শুধু রঙ না উঠলেই হল। আমি বললাম “ বেশী জিনিস কিনলে দাম কমাবেন না? আর এই রঙ উঠবে না তো ধুলে?” ছেলেটা মাথা না ঘুরিয়েই উত্তর দিল “ আগে তো বাছুন। আপনার জন্য ভুল দাম লাগাবো না। রঙ উঠবে না আমার গ্যারান্টি।” শেষের কথাটা অবশ্য সব দোকানদার বলে থাকে। কেউ কি আর নিজের মুখে স্বীকার করবে যে রঙ উঠতে পারে। তাহলে আর ব্যবসা করে খেতে হবে না। একটা গাড় লাল রঙের হাত কাটা টপ টেবিলের দিকে ছুড়তে যাচ্ছিল কিন্তু আমি বাঁধা দিয়ে বললাম “এরকম আমার আছে। এটা লাগবে না।” ছেলেটা আরও কয়েকটা প্লেইন আর ডিজাইন করা হাফ হাতা আর হাতকাটা টপ টেবিলের ওপর সাজিয়ে রেখে বলল “ এমনি বাইরে পরার জন্য কিনছেন? না কি, পার্টি বা বেড়াতে যাওয়ার জন্য কিনছেন? ঘরের পরার শস্তা টপও আছে। “ আমি আসলে ঘরে পরার জিনিস খুব একটা আলাদা করে কিনি না। পুরনো জামা কাপড়গুলোকেই মোটা মুটি ঘরে ব্যবহার করে ফেলি একটা সময়ের পর থেকে। বিশেষ করে টপগুলো এইভাবেই ব্যবহার করে থাকি। যাই হোক আমি বললাম “ পার্টিতে পরার মতন জিনিস থাকলেও দেখাতে পারেন। কিন্তু প্রধানত বাইরে রেগুলার ব্যবহার করার জন্য কিনতে এসেছি।” টেবিলে রাখা টপগুলোর দিকে আঙুল দেখিয়ে বলল “এই সব কটাই আপনি রেগুলার ব্যবহার করতে পারবেন। অনেকবার ধুলেও কোনও সমস্যা নেই। রঙ উঠবে না। আর দাম মোটামুটি শস্তার দিকেই দেখালাম। এর থেকেও দামি জিনিস আছে। “ সত্যি বলতে কি কয়েকটা টপের দাম বড্ড বেশী শস্তা মনে হচ্ছিল। আমি বললাম “এর থেকে আরেকটু ভালো জিনিস দেখান। এই গুলো আপাতত এখানেই থাকুক। এই দুটো তুলে রাখুন। এইগুলো নেব না।” দুটো টপ সরিয়ে দিতে বললাম। দোকান বন্ধ করার সময়ে এসে মনের সুখে টপ বেছে চলেছি, কিন্তু ছেলেটার কোনও তাড়াহুড়া নেই। ও নিজেও বুঝতে পেরেছে যে টপ কেনাটা বাহানা, আমি আপাতত ওর সাথেই একটু মুখোমুখি হতে এসেছি। ও কয়েকটা টপ ভর্তি স্বচ্ছ প্লাস্টিকের বড় বড় ব্যাগ নিচে নামিয়ে টেবিলে রাখল। আমি ওকে একবার জিজ্ঞেস করলাম “আপনার খেতে যেতে দেরী হবে না তো?” ও আমাকে বলল “আমি যেখানে খাই সেখানে রাত দুটো অব্দি খাবার পাওয়া যায়।” আমি আর কথা বাড়ালাম না। হ্যাঁ এইবার ও যেই টপ গুলো টেবিলে বের করে রাখছে, সেই গুলো দেখে চোখ ধাধিয়ে যাওয়ার জোগাড়। আমার মুখ দেখে ও যে ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে সেটা ওর পরের কথা থেকেই বোঝা গেল। “ এগুলো আপনার পছন্দ হবেই, জানতাম।” কয়েকটা টপ ভীষণ খোলা মেলা, সেগুল যে কেউ পরলেই তাকে ভীষণ সেক্সি লাগতে বাধ্য, ছেলেদের চোখ টেড়িয়ে যাবে। তবে এগুলোরও দাম খুব একটা বেশী নয়। অনেক দিন পর শপিং করতে এসেছি তাই আর কার্পণ্য করলাম না। দুটো ভীষণ উগ্র দেহ দেখানো টপ আর দুটো সাধারণ হাত কাটা টপ তুলে নিয়ে বললাম “ট্রায়াল দিয়ে দেখে নি?” ছেলেটা হাত তুলে ট্রায়াল রুম দেখিয়ে দিল। আসলে স্লিভলেস ড্রেস পরে যারা একবার অভ্যস্ত হয়ে যায় তারাই একমাত্র জানে যে কি আরাম, হাফ হাতা জিনিস পরতে এরপর আর ইচ্ছে করে না। একটা ব্যাগিস স্টাইলের ঢিলে ছোট হাতা হলুদ রঙের টপও আমার মনে ধরেছিল, সেটাও উঠিয়ে নিলাম। ওকে ইশারায় বাকি গুলো উঠিয়ে রাখতে বললাম। ট্রায়াল রুমটাও বেশ প্রশস্ত। একটা একটা করে সব কটা টপ পরে সামনে পিছনে ঘুরে নিজেকে মেপে ঝোঁকে দেখে নিয়ে বেড়িয়ে এলাম। ওই দুটো টপে যা লাগছে না, পরলে যে কারোর চোখ ঠিকরে বেড়িয়ে আসতে বাধ্য। ইচ্ছে করে সামান্য একটু ঢিলে নিলাম। কারণ একদম টাইট নিলে কোমর, পেট বা স্তনের সাইজ বাড়লে তখন আর পরতে পারব না।
বেশ করিৎকর্মা ছেলে। বেড়িয়ে এসে দেখলাম সব কটা প্লাস্টিকের ব্যাগ টেবিল থেকে সরিয়ে ফেলেছে। ও যেন ধরেই নিয়েছে যে আমি এই সব কটা নেব। আমি ওকে হেঁসে বললাম “আপনি যে সব সরিয়ে রাখলেন, কোনটা কোনটা নেব এখনও তো বলিনি।” ও হেঁসে বলল “সে দেখা যাবে। দাম কমিয়ে দেব। “ আমি কোনও জিনিস কিনতে গেলে আগে দাম দেখে মনে মনে যোগ করে নি। এক্ষেত্রেও তাই করে নিয়েছি অনেকক্ষণ আগে। যদি দাম নাও কমায় তাও কুছ পরোয়া নেই। আসলে মাসে খুব বেশী হলে দুই বোতল ভোদকা আর মেসের ভাড়া ছাড়া আর আমার তেমন কোনও খরচ নেই। পার্লারে যাওয়া তো প্রায় উঠেই গেছে। নিজেই শেভ করে নি সারা শরীর। এখানে আসার পর মাত্র একবার পার্লারে গিয়ে পুরো মেক ওভার করিয়ে ছিলাম। যদিও এইবার আরেকবার যেতে হবে বলে মনে হচ্ছে, কারণ পিঠের অয়াক্সিং করাতে হবে আর মুখে থ্রেডিং করাতে হবে, নইলে কয়েকদিন পর গোঁফ বেরোবে। ও হ্যাঁ, আর চুলটাকেও একটু ট্রিমিং করাতে হবে। সুতরাং ইন্টার্ন এর বাকি টাকা আর ওই এফ ডি গুলোর ইন্টারেস্টের টাকা মাসে মাসে জমেই থাকে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় একটু ফুর্তি করি, কিন্তু এখানে সবার ভীষণ টানাটানি, আর ঠিক বন্ধু কেউ হয় নি। আর তাছাড়া হাঁসপাতালের চাপের মাঝে ফুর্তি ল্যাজ গুঁটিয়ে পালিয়ে গেছে। সেদিন যে বীরের সাথে গেছিলাম, সেদিনও সব খরচ ওই দিয়েছিল। মেয়ে হওয়ার এটা একটা বিশাল লাভ। হাহা। আমি বললাম “ঠিক আছে এগুলো রেখে দিন পাশে, মেয়েদের শর্টস আছে?” ও কিছু বলার আগেই আমি কোমরের মাপ বলে দিলাম আর থাইয়ের মাঝ বরাবর হাত দেখিয়ে দৈর্ঘের ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিলাম। এই পাক্কা বিক্রেতা। রাতে আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে, অন্ধকারে পাছায় হাত দিয়েছে গতকাল, কিন্তু আজ ওর থেকে আমি শর্টসের মাপ দেখাচ্ছি, কিন্তু ওর চোখে কোনও বিকার নেই। ও বলল “ জিন্সের আছে, কটনের ও আছে। কটনের যেগুলো আছে সেগুল কিন্তু বাইরে পরতে পারবেন ম্যাডাম। ঘরে পরার মতন শস্তাও আছে।” আমি বললাম “ বাইরে পরার মতনই দেখান।” আবার একটা স্টুলের উপর উঠে দাঁড়িয়ে পড়ল। নেমে বলল “না এখানে নেই। আপনি একটু দাঁড়ান। কাউন্টারটা একটু দেখবেন। আমি আসছি।” একটা কাঠের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেল। একটু পরে ওপর থেকে আওয়াজ এল “ খুব টাইট দেব নাকি একটু আলগা? মানে গায়ের সাথে...” ওকে উত্তর শেষ করতে না দিয়েই গলা উঠিয়ে বললাম “ যা আছে দেখান। একটু চাপা হলেই ভালো। কিন্তু ট্রায়াল দিয়ে দেখে নেব। আর হ্যাঁ। ওই একই দৈর্ঘের স্কার্ট থাকলেও নিয়ে আসবেন। প্লিটেড আর প্লেন দুটোই। “ ওর জবাব আসতে দেরী হল না। “আনছি। রঙ?” আমি বললাম “স্কার্ট একটু ডিপ রঙের চাই। “ পর পর কয়েকটা স্বচ্ছ প্লাস্টিকের বস্তা ধুপ ধাপ শব্দ করে নিচে এসে পড়ল। সব কটা বিভিন্ন রঙের কাপড়ে বোঝাই করা। একটু ভালো করে তাকিয়ে বুঝলাম কোনও টা স্কার্টের আর কোনও টা শর্টসের। একটু পরে নিজের হাতে করে আরেকটা ব্যাগ নিয়ে ও খুব সাবধানে মাথা বাঁচিয়ে কাঠের সিঁড়ি বেয়ে নেমে এল। “আগে শর্টসই দেখাই কেমন।” ওর নোংরা শ্যাম বর্ণের কপালে ঘামের ফোঁটা জমে গেছে। বুঝলাম আমার জন্য বেশ কসরত করতে হচ্ছে ওকে। আমি চটপট বেশ কয়েকটা জিন্স আর কটনের শর্টস আর স্কার্ট পছন্দ করে ট্রায়াল দেওয়ার জন্য চলে গেলাম। ঢিলে আর চাপা দুইই নিয়েছি। এইবার ও আর খুব শস্তা কিছু দেখায় আগের বারের মতন। কিন্তু যেগুলো দেখিয়েছে সেগুলর দামও বেশ কম। “ ব্যাগ ওঠাবেন না এইবার। এতগুল নেব না। ট্রায়াল দিয়ে বলছি। তবে বাকি গুলো তুলে রাখতে পারেন।“ এইবার ট্রায়াল রুমে বেশ একটু সময় লাগলো। একবার মনে হল বাইরে ও কারোর সাথে কথা বলছে। এইরে আমাকে কোনও বিপদে ফেলার ছক কষছে না তো? যদি ওর কোনও সাকরেদ...। না একটু কান খাড়া করে বুঝলাম কারোর সাথে কথা বলছে ফোনে, মনে হল সেই মহিলার সাথে। কয়েকটা কথা কানে এল, “ঠিক আছে, কোনও তাড়াহুড়া করছি না। ভালো ভাবে দেখে শুনে নিক। তবে ওই বেশ কয়েকটা জিনিস তো। দাম গুলো... হ্যাঁ। দেব...। সমস্যা নেই।না না আপনি চিন্তা করবেন না। কাল সকালে হিসাবে তুলে দেব। ট্রায়াল দিচ্ছেন। (একটু হেঁসে বলল) হ্যাঁ দিয়ে দেব। হ্যাঁ, কার্ডও দিয়ে দেব। ঠিক আছে। ফিরে এসে ফোন করব। “ বুঝলাম ফোন কেটে দিয়েছে। যাক ছেলেটার কোনও বদ মতলব নেই। যদিও আমি ট্রায়াল রুমের ভেতর আমার মোবাইল সমেত হ্যানড ব্যাগটা নিয়েই এসেছি। মনে মনে ভাবছিলাম কোনও বেগতিক দেখলেই হাঁসপাতালে চেনা কাউকে একটা ফোন করে ডেকে নেব।
ছেলেটা ভুল বলেনি। কটনের শর্টসগুলো পরলে মন্দ লাগবে না। এমন একটা লুক দিয়েছে জিনিস গুলোর, যে একটা জিন্স জিন্স লুক আছে। আর সত্যি কথা বলতে জিন্সের থেকেও কটনের শর্টসগুলো পরে অনেক বেশী আরাম লাগছিল। আমি ঢিলে শর্টসগুলো বাতিল করে দুটো জিন্সের শর্টস আর একটা কটনের শর্টস ওর হাতে দিয়ে বুঝিয়ে দিলাম যে এগুলো আমি নেব। দুটো শর্ট স্কার্টও পছন্দ করেছি। তবে পিছনের দিকে যেন একটু ঢিলে থাকে সেই দিকে নজর রেখেছি স্কার্ট পছন্দের সময়। নইলে অশ্লীল ভাবে পেছন দিকে উঠে থাকবে পাছার ওপর আর একটু এদিক ওদিক হলেই প্যান্টি সমেত পাছা গোটা দুনিয়ার সামনে বেড়িয়ে পড়বে। আমার পাছা এখনও খুব বড় না হলেও, কয়েকদিনের মধ্যে যে ওখানকার মাংসেও বৃদ্ধি হবে সেটা আমিও ভালো মতন জানি। তবে হ্যাঁ দৈর্ঘ ওই অর্ধেক থাইয়ের থেকে বেশী নিলাম না, কিন্তু খুব চাপা নয় এই যা। দামের ব্যাপারটা ওকে বলতেই ও বলল “ ম্যাডামের ফোন এসেছিল। উনিও বলেছেন বেশী জিনিস নিলে ভালো ছুট দিতে। আপনি চিন্তা করবেন না। “ আমি বললাম “শস্তা ঠিক এই সাইজের ঘরে পরার মতন শর্টস দেখান না। তবে এটা কটনের চাই। বাড়িতে জিন্স পরে থাকতে পারি না। “ ও কিছু বলার আগেই আমি যোগ করে দিলাম “চাপা শর্টসই নেব। কিন্তু কাপড়টা যেন পাতলা হয়। নইলে পরে ঘুমাতে খুব অসুবিধা হয়। “ ও বাতিল করা জিনিসগুলো প্লাস্টিকে ভরে মাটিতে একধারে ফেলে রেখে আবার উপরে উঠে গেল আমাকে কাউন্টারের ওপর নজর রাখতে বলে। একটা জিনিস অদ্ভুত লাগলো। আমি তো কোনও বদ মতলব নিয়েও আসতে পারি। আর জানলা দিয়ে আমাকে যা দেখেছে তাতে আমাকে ভালো মেয়ে ভাবার কোনও কারণ নেই। কিন্তু তবুও আমাকে ভরসা করে চলে যাচ্ছে? একবার জিনিস পত্র নিয়ে বিদায় নিলে, ও আমার মেসে গিয়েও কিছু করতে পারবে না। এখানে কার্ডে পেমেন্ট করার মেশিন আছে বটে, কিন্তু কোনও ক্যামেরা নেই যেমন অনেক বড় দোকানে থাকে। সুতরাং কিছু প্রমান করতে পারবে না। ও কয়েকটা শর্টস হাতে নেমে এল। সত্যি বলতে কি, খারাপ পছন্দ করে নি। এগুলো ভীষণ শস্তা। দাম দেখে ওকে জিজ্ঞেস করতে বাধ্য হলাম “এইগুলো যে এত শস্তা টিকবে তো?” ও একটু গলা খাটো করে বলল “ আমাদের লোক আছে যারা এগুলো বানায়। আমাদের থেকে অনেকে কিনে নিয়ে গিয়ে ব্র্যান্ডের লেবেল বসিয়ে বেশী দামে বেচে। “ একটা মৃদু হেঁসে বলল “কোনটা নেবেন বলুন? সব কটা দিয়ে দি?” বললাম “পাগল? আচ্ছা, আপনি যে আমার হাতে কাউন্টার ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বারবার, যদি আমার কোনও বাজে মতলব থাকে?” বলল “তাহলে আমার চাকরি যাবে। তবে সেই ছোট বেলা থেকে এই লাইনে আছি ম্যাডামের সাথে। আমি লোক চিনি। তেমন লোক হলে কাল আসতে বলে দিতাম। “ আমি দুটো ঘরে পরার শর্টস পছন্দ করে বাকি গুলো ফিরিয়ে দিলাম। এইবার আর হিসাব করতে পারলাম না। মোবাইল বার করে ক্যালকুলেটারে সব কটার দাম যোগ করে দেখে নিলাম। বেশ শস্তা দোকান বলতেই হয়। আমি এত হিসাব করছি দেখে ও বলল “ আপনি কি অনেক দিন পর শপিং করতে এসেছেন?” আমি বললাম “হ্যাঁ আসলে সময় পাই না। বাড়ির বাইরে থাকি তো, তাই সব কাজ নিজেকেই করতে হয়, আর তার ওপর হাঁস... (এই অব্দি বলেই থেমে গেলাম, কারণ আমার আসল পরিচয় এইভাবে দেওয়া ঠিক হবে না।) ইয়ে কাজের প্রচুর চাপ আছে। প্রায় অনেক দিন পর নিজের জন্য কেনা কাটা করতে এসেছি। “ ও বলল “ভালো জায়গায় এসেছেন। অনেক কালেকশান আমাদের, আর সব থেকে বেশী ছাড় আমরাই দি এখানে। “ পাশের একটা দোকানের নাম করে বলল “ওখানে কোনও দিনও যাবেন না। ওরা লোক ঠকায়। বাজে জিনিস দেয়।” বুঝলাম প্রতিযোগিতা তুঙ্গে দুই দোকানের মধ্যে।
সত্যি উফফ। এই কয়েক মিনিটে যা হল, তাতে উফফ বলা ছাড়া অন্য কিছুই বলা যায় না। বিছানা থেকে উঠে আস্তে আস্তে সুইচ বোর্ডের দিকে গিয়ে ফ্যানটা চালিয়ে দিলাম, আর তার সাথে লাইটটাও জ্বালিয়ে দিলাম। আলো জ্বলে উঠতেই খেয়াল করলাম যে তোয়ালেটা দরজার সামনেই পড়ে আছে। দরজায় খিল দেওয়ার সময় বোধ হয় হাত থেকে পড়ে গেছে। তখন কি আর হুঁশ ছিল আমার! উফফ খুব বাঁচা গেছে। টেবিল থেকে জলের বোতলটা তুলে নিয়ে আবার বিছানায় গিয়ে বসলাম। বিছানায় বসার সময় ঘম্রাক্ত পাছার নিচে একটা ঠাণ্ডা ভেজা ভাব অনুভব করলাম। বুঝতে অসুবিধা হল যে আগের বার যখন বিছানার ওপর বসে হাপাচ্ছিলাম তখন আমার শরীরের ঘামে পাছার নিচে বিছানার চাদরটা ভিজে চপচপে হয়ে গেছে। বেশ হয়েছে। বা হাতে বোতলটা মুখের উপর চেপে ধরলাম। ঢক ঢক করে এক গাদা জল গলার ভেতর ঢেলে দিলাম এক নিঃশ্বাসে। শরীরের ভেতরটা যেন আস্তে আস্তে জলের পরশে ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। উফফ এই জন্যই বলে জল এর আরেক নাম জীবন। জল খাওয়া হলে বোতলটা মুখের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় একটা বাজে গন্ধ নাকে এল। হাত তুলে জল খাওয়ায়র জন্য বগলের জায়গাটা খুলে যাওয়ায় ঘর্মাক্ত বগল থেকে বাজে গন্ধটা আমার নাসারন্ধ্রের দিকে আক্রমণ করেছে। বোতলটা টেবিলে নামিয়ে রেখে ডান হাতের মধ্যাঙ্গুলি দিয়ে বা দিকের বগলের নরম চামড়া থেকে কিছুটা ঘাম মুছিয়ে নিয়ে নাকের সামনে নিয়ে এলাম। দুর্গন্ধে নাকটা আপনা থেকে সিটকে গেল। পচা আতপ চালের থেকেও নোংরা ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোচ্ছে ওখান থেকে। সারা দিনের খাটা খাটুনির পর এমনিতেই এই সব জায়গা থেকে নোংরা গন্ধ বেরোয়। আর তার ওপর একটু আগে যা হল। উফফ এখনও ঘামিয়ে চলেছি, যদিও ঘামের তীব্রতা আগের থেকে ধীরে ধীরে কমে এসেছে। খুব বাঁচা বেচেছি আজ। যোনীর ভেতরে মধ্যাঙ্গুলিটা ঢুকিয়ে একবার দেখে নিলাম ওখানকার কি অবস্থা। কারণ মুখটা অনেকক্ষণ ধরেই কুট কুট করে চলেছে। না, ভালোই জলের প্রাচুর্য সেখানে আর সেটা হওয়াই স্বাভাবিক। ভয় লাগুক আর যাই লাগুক, যে পরিমাণ শারীরিক উত্তেজনা ভোগ করেছি এতক্ষন তাতে এমনটাই হওয়ার কথা। মনের ফ্যান্টাসি, তার সাথে যোগ দিয়েছে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়। কোনও নিষিদ্ধ কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়ার যে ভয়টা মনের মধ্যে আসে সেটাই সেই নিষিদ্ধ কাজ করার উত্তেজনা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। আমার ক্ষেত্রেও একই জিনিস হয়েছে। ঘরের আলো জ্বালিয়ে রেখেই জানলার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম সম্পূর্ণ নগ্ন ভাবে। বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে জানলার সামনে থেকে সরে যাওয়ার ভান করলাম। একটু সরে এসে আবার জানলার বাইরে উঁকি মারলাম। না কোনও টর্চের আলো দেখতে পেলাম না। বোধহয় আজ আর দাঁড়িয়ে নেই সেই লোকটা। হতে পারে ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। ওরও তো সারা দিনের অনেক খাটা খাটুনি থাকে। আলো নিভিয়ে দিলাম। পরিত্যক্ত জামা কাপড় গুলো বিছানার ওপর থেকে পাশের চেয়ারের উপর অগোছালো ভাবে রেখে দিয়ে শুয়ে পড়লাম। এখনও বেশ গরম লাগছে। আজ আর গায়ের ওপর পাতলা চাদরটা চাপালাম না। শরীর যদিও চাইছে আরেকটু জল ঝরাতে, মন চাইছে একবার আত্মরতিতে মেতে উঠি, কিন্তু নিজেই নিজেকে ধমক দিয়ে দমিয়ে দিলাম। আজকের জন্য অনেক হয়েছে। শরীরের খিদে একটু চেপে রাখা ভালো। কাল নিজেকে নিয়ে আবার খেলায় মেতে ওঠা যাবে। চোখের ওপর ডান হাতটা উল্টো করে রেখে চোখ বুঝলাম। না আবার ডান দিকের বগলতলি থেকে সেই নোংরা গন্ধটা নাকে আসতে শুরু করে দিয়েছে। বিছানা থেকে উঠে তোয়ালে দিয়ে দুটো বগল আর কুঁচকি সমেত সারা শরীর থেকে ভালো ভাবে ঘাম মুছে নিয়ে আবার শুয়ে পড়লাম। একবার ভাবলাম একটু ডিও স্প্রে করে নি বগলে, কিন্তু এখন তো শুয়ে পড়ব, অজথা জিনিস নষ্ট করে কি লাভ। শুয়ে পড়লাম এক পাশ ফিরে। ধীরে ধীরে চোখের পাতায় ঘুমের ছায়া নেমে এল। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখলাম পূর্ণ দিনের আলোয় বাজারের ভেতর দিয়ে আমি নগ্ন হয়ে হেঁটে চলেছি আর আমার এক পাশে কালকের দেখা সেই ছেলেটা আর আরেক পাশে এই চটি বইয়ের বিক্রেতা আমার নগ্ন কোমর শক্ত হাতে জড়িয়ে ধরে হেঁটে চলেছে। ওরাও আমার মতন নগ্ন। বারবার নিচের দিকে তাকিয়ে ওদের নগ্ন উরুসন্ধির উপর চোখ রেখে ওদের আসল জিনিসটা দেখার বা মাপার চেষ্টা করলাম, কিন্তু অনেক চেষ্টা করা সত্ত্বেও ওদের লিঙ্গের অবয়ব দেখতে পেলাম না।
ঘুম ভাঙল খুব ভোরে। বাইরে পাখির ডাক শুরু হয়ে গেছে। গায়ে কোনও মতে কিছু একটা চাপিয়ে নিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড় লাগালাম। এই যে নতুন খেলায় মেতে উঠেছি, আজ সেই খেলার এক বিশেষ দিন। সরাসরি সেই কথায় চলে আসছি। এমনিতে সারা দিনে তেমন উল্লেখ্য কোনও জিনিস ঘটে নি যেটা লিখে পাতা ভরানো যায়। হাঁসপাতালে একটু খালি সময় পেয়ে একটু পড়াশুনো করে নিয়েছি। কারণ বাড়িতে এই কদিন পড়াশুনো একদম মাথায় উঠেছে। আজ ছাড়া পেয়েছি অনেক আগে। কিন্তু ইচ্ছা করেই বেরলাম না। কফি কাউন্টারে গিয়ে এক কাপ কফি নিয়ে একটা বইয়ের উপর ঝুঁকে বসে থেকে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিলাম। অবশেষে ঘড়ি মিলিয়ে ঠিক গতকালের মতন একই সময়ে হাঁসপাতাল থেকে বের হলাম। বাড়ির মোড়ের কাছে গিয়ে আবার গতকালের মতনই বাড়ির দিকে না গিয়ে ওই লোকটার দেখানো দোকানের দিকে হেঁটে চললাম ধীর গতিতে। আজও দোকানগুলোর ঝাঁপি ফেলার সময় হয়ে গেছে। সবাই উঠবে উঠবে করছে। হঠাত একটা দোকানের সামনে গিয়ে থমকে গেলাম। ওই তো সেই গতরাতে আলাপ হওয়া লোকটা। বেশ বড় দোকান। দোকানের নাম “আধুনিকা” (এই নামটা অপরিবর্তিত রাখলাম, কারণ দিল্লী থেকে ফিরে দেখেছিলাম যে দোকানটা একজন কিনে সেখানে রেস্টুরেন্ট খুলে বসেছে। তাই এই নামটা সঠিক লিখলে কোনও ক্ষতি হবে না।) দোকানের ওপরে বিশাল বড় একটা নামের ফলকে ওই হলুদের ওপর কালো কালি দিয়ে লেখা নামটার পাশে আরও অনেক জিনিস লেখা আছে অপেক্ষাকৃত ছোট লাল হরফে। সেখানে যেমনটা লেখা ছিল তেমনটাই লিখে দিলাম। “চিরাচরিত থেকে অত্যাধুনিক, মেয়েদের জন্য সব রকমের পোশাক সেরা মূল্যে উপলব্ধ। শাড়ি, ব্লাউজ, শালয়ার-কামিজ, জিন্স, স্কার্ট, টপ, নাইটি, কলেজ ড্রেস, শেমিজ, ব্রা, প্যান্টি ইত্যাদি সব পাওয়া যায়। (সবার নিচে ব্র্যাকেটের মধ্যে ছোট করে লেখা আছে) টেলারিং করার লোক আছে। ট্রায়াল দেওয়ার ঘর আছে।“ বুঝতেই পারছেন এটা কিসের দোকান। মেয়েদের সব রকমের জামা কাপড় পাওয়া যায়। আর বেশ বড় দোকান। দেখলাম একটা অল্প বয়সী মেয়ে কিছু একটা কিনে নিয়ে উঠব উঠব করছে। একজন মাঝ বয়সী মহিলা ওর হাতে জিনিস গুলো গছিয়ে দিয়ে হেঁসে ওকে বিদায় করে উঠে পড়লেন কাউন্টার ছেড়ে। বেশ ভুষা থেকে মনে হল ইনিই এই দোকানের মালকিন। ওই লোকটা একটু দূরে দাঁড়িয়ে দোকানের টেবিলের ওপর দুটো খাটা খুলে এক মনে কিছু একটা লিখে চলেছে। মহিলা লোকটাকে কিছু একটা বললেন, শেষ কথাটা বললেন দোকানের ঠিক মুখের সামনে এসে, তাই শেষের কথাগুলোই কানে এলো “নামিয়ে দে। আমি এগচ্ছি। কিছু লাগলে ফোন করিস।” আমার কি মনে হতে ইচ্ছে করে একদম ওনার সামনে গিয়ে হাজির হলাম। মুখে একটু কাচুমাচু ভাব এনে বললাম “ওহহ বন্ধ করে দিচ্ছেন বুঝি। আসতে বড্ড দেরী হয়ে গেল। ঠিক আছে কালই আসব।” গ্রাহককে ফিরিয়ে দেওয়া খুব খারাপ, মহিলা হেঁসে তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলেন “আরে না না। আসুন। কি কিনবেন।” আমি বললাম “না তেমন হলে আপনি এগিয়ে যান। আমি ওনার কাছ থেকেই দেখে নিচ্ছি। (ছেলেটার সাথে আমার ততক্ষনে একবার চোখাচুখি হয়ে গেছে। ও যেন আমাকে দেখেও দেখল না। বুঝলাম মালকিনের সামনে কোনও ভুল সংকেত দিতে নারাজ ছেলেটা। ) মহিলা আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে “বাবু, ম্যাডামের কি লাগবে দেখে দিয়ে দে। আমি আসছি। কোনও সমস্যা হলে আগামীকাল আসবেন, আমি থাকবো। একটু আগে এলে সময় নিয়ে দেখাতে পারব।” উনি বেড়িয়ে পড়লেন। একটা কথা এখানে বলে রাখা ভালো যে অনেক মেয়েদের পোশাকের দোকানেই, এমনকি আন্ডারগার্মেন্টসের দোকানেও পুরুষ বিক্রেতা থাকে, আর এতে বিশেষ সংকোচের কিছু নেই। আর মেয়েদের পুরুষ টেলার থাকে সেটাতো সবাই জানে। যাকগে আমি মহিলা কে হেঁসে হ্যাঁ বলে বাবুর দিকে এগিয়ে গেলাম। অদ্ভুত নাম এই বাবু। সব থেকে প্রচলিত নামগুলোর মধ্যে একটা এই “বাবু”। ছেলেটা খাতার থেকে মুখ না তুলেই বলল “কি লাগবে বলুন।” দেখলাম আড় চোখে বাইরে তাকিয়ে দেখছে। একটা রিক্সা ওর মালকিনকে নিয়ে বেড়িয়ে যেতেই, খাতার মাঝে একটা পেন গুঁজে খাতাটা বন্ধ করে রাখল। দুজনের চোখাচুখি হতেই দুজনেই একে ওপরের দিকে একটা মুচকি হাঁসি দিলাম। আমি যতটা সম্ভব মার্জিত স্বরে বললাম “ কয়েকটা জিনিস কিনতে হবে। আপনারা কার্ড নেন?(যত সব নাটক। আমিও জানি আমি কিছু সত্যি কিনলে ক্যাশেই দাম মেটাবো, তবুও জিজ্ঞেস করলাম।) ছেলেটা আমাকে আশ্চর্য করে দিয়ে বলল “হ্যাঁ হয়।” অনেক দিন সত্যি কিছু কেনা হয়নি। এত টাকা জমিয়ে লাভ কি? ভালো কিছু পেলে এই সুযোগে কিনে নেওয়া যাবে। একবার হ্যান্ড ব্যাগ খুলে দেখে নিলাম টাকা আছে কিনা। হ্যাঁ আছে।
বললাম “টপ আছে?” ছেলেটা দেখলাম আমাকে আপাদ মস্তক মেপে চলেছে দোকানের আলোয়। তবে মাঝে মাঝে ছেলেদের চোখে যে উগ্র কামনার আগুন দেখা যায় তেমন কিছু ওর চোখে দেখলাম না। আমি যখন প্রশ্নটা করলাম ওর চোখ তখন আমার পেটের ওপর নিবদ্ধ। মুখ তুলে বলল “হ্যাঁ আছে। কেমন রঙের চাই? আর কেমন রেঞ্জে দেখাবো? “ আমি বললাম “একটু হালকা রঙের হলে ভালো হয়। আগে তো দেখি, তারপর পছন্দ হলে দাম দেখে নির্ণয় করব খন।” ছেলেটা সাদার ওপর কালো রঙ দিয়ে ডোরাকাটা দাগ আঁকা হাফ হাতা টপ আমার সামনে রেখে দিয়ে আরো কিছু খোঁজা শুরু করল। আমি বললাম “স্লিভলেসও দেখান।“ ছেলেটা মাথা না ঘুরিয়েই উত্তর দিল “ সব দেখাচ্ছি, আপনি ভালো করে দেখে নিন। “ আমি কাপড়ের কোয়ালিটি দেখলাম মন্দ নয়। হলদেটে একটা ফুল হাতা টপ টেবিলের ওপর ছুঁড়ে দিল। বাহ এটারও কাপড়ের কোয়ালিটি বেশ ভালো। দামের স্টিকারটা উল্টে দেখে নিলাম দুটোরই। না শস্তাই বলা চলে। শুধু রঙ না উঠলেই হল। আমি বললাম “ বেশী জিনিস কিনলে দাম কমাবেন না? আর এই রঙ উঠবে না তো ধুলে?” ছেলেটা মাথা না ঘুরিয়েই উত্তর দিল “ আগে তো বাছুন। আপনার জন্য ভুল দাম লাগাবো না। রঙ উঠবে না আমার গ্যারান্টি।” শেষের কথাটা অবশ্য সব দোকানদার বলে থাকে। কেউ কি আর নিজের মুখে স্বীকার করবে যে রঙ উঠতে পারে। তাহলে আর ব্যবসা করে খেতে হবে না। একটা গাড় লাল রঙের হাত কাটা টপ টেবিলের দিকে ছুড়তে যাচ্ছিল কিন্তু আমি বাঁধা দিয়ে বললাম “এরকম আমার আছে। এটা লাগবে না।” ছেলেটা আরও কয়েকটা প্লেইন আর ডিজাইন করা হাফ হাতা আর হাতকাটা টপ টেবিলের ওপর সাজিয়ে রেখে বলল “ এমনি বাইরে পরার জন্য কিনছেন? না কি, পার্টি বা বেড়াতে যাওয়ার জন্য কিনছেন? ঘরের পরার শস্তা টপও আছে। “ আমি আসলে ঘরে পরার জিনিস খুব একটা আলাদা করে কিনি না। পুরনো জামা কাপড়গুলোকেই মোটা মুটি ঘরে ব্যবহার করে ফেলি একটা সময়ের পর থেকে। বিশেষ করে টপগুলো এইভাবেই ব্যবহার করে থাকি। যাই হোক আমি বললাম “ পার্টিতে পরার মতন জিনিস থাকলেও দেখাতে পারেন। কিন্তু প্রধানত বাইরে রেগুলার ব্যবহার করার জন্য কিনতে এসেছি।” টেবিলে রাখা টপগুলোর দিকে আঙুল দেখিয়ে বলল “এই সব কটাই আপনি রেগুলার ব্যবহার করতে পারবেন। অনেকবার ধুলেও কোনও সমস্যা নেই। রঙ উঠবে না। আর দাম মোটামুটি শস্তার দিকেই দেখালাম। এর থেকেও দামি জিনিস আছে। “ সত্যি বলতে কি কয়েকটা টপের দাম বড্ড বেশী শস্তা মনে হচ্ছিল। আমি বললাম “এর থেকে আরেকটু ভালো জিনিস দেখান। এই গুলো আপাতত এখানেই থাকুক। এই দুটো তুলে রাখুন। এইগুলো নেব না।” দুটো টপ সরিয়ে দিতে বললাম। দোকান বন্ধ করার সময়ে এসে মনের সুখে টপ বেছে চলেছি, কিন্তু ছেলেটার কোনও তাড়াহুড়া নেই। ও নিজেও বুঝতে পেরেছে যে টপ কেনাটা বাহানা, আমি আপাতত ওর সাথেই একটু মুখোমুখি হতে এসেছি। ও কয়েকটা টপ ভর্তি স্বচ্ছ প্লাস্টিকের বড় বড় ব্যাগ নিচে নামিয়ে টেবিলে রাখল। আমি ওকে একবার জিজ্ঞেস করলাম “আপনার খেতে যেতে দেরী হবে না তো?” ও আমাকে বলল “আমি যেখানে খাই সেখানে রাত দুটো অব্দি খাবার পাওয়া যায়।” আমি আর কথা বাড়ালাম না। হ্যাঁ এইবার ও যেই টপ গুলো টেবিলে বের করে রাখছে, সেই গুলো দেখে চোখ ধাধিয়ে যাওয়ার জোগাড়। আমার মুখ দেখে ও যে ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে সেটা ওর পরের কথা থেকেই বোঝা গেল। “ এগুলো আপনার পছন্দ হবেই, জানতাম।” কয়েকটা টপ ভীষণ খোলা মেলা, সেগুল যে কেউ পরলেই তাকে ভীষণ সেক্সি লাগতে বাধ্য, ছেলেদের চোখ টেড়িয়ে যাবে। তবে এগুলোরও দাম খুব একটা বেশী নয়। অনেক দিন পর শপিং করতে এসেছি তাই আর কার্পণ্য করলাম না। দুটো ভীষণ উগ্র দেহ দেখানো টপ আর দুটো সাধারণ হাত কাটা টপ তুলে নিয়ে বললাম “ট্রায়াল দিয়ে দেখে নি?” ছেলেটা হাত তুলে ট্রায়াল রুম দেখিয়ে দিল। আসলে স্লিভলেস ড্রেস পরে যারা একবার অভ্যস্ত হয়ে যায় তারাই একমাত্র জানে যে কি আরাম, হাফ হাতা জিনিস পরতে এরপর আর ইচ্ছে করে না। একটা ব্যাগিস স্টাইলের ঢিলে ছোট হাতা হলুদ রঙের টপও আমার মনে ধরেছিল, সেটাও উঠিয়ে নিলাম। ওকে ইশারায় বাকি গুলো উঠিয়ে রাখতে বললাম। ট্রায়াল রুমটাও বেশ প্রশস্ত। একটা একটা করে সব কটা টপ পরে সামনে পিছনে ঘুরে নিজেকে মেপে ঝোঁকে দেখে নিয়ে বেড়িয়ে এলাম। ওই দুটো টপে যা লাগছে না, পরলে যে কারোর চোখ ঠিকরে বেড়িয়ে আসতে বাধ্য। ইচ্ছে করে সামান্য একটু ঢিলে নিলাম। কারণ একদম টাইট নিলে কোমর, পেট বা স্তনের সাইজ বাড়লে তখন আর পরতে পারব না।
বেশ করিৎকর্মা ছেলে। বেড়িয়ে এসে দেখলাম সব কটা প্লাস্টিকের ব্যাগ টেবিল থেকে সরিয়ে ফেলেছে। ও যেন ধরেই নিয়েছে যে আমি এই সব কটা নেব। আমি ওকে হেঁসে বললাম “আপনি যে সব সরিয়ে রাখলেন, কোনটা কোনটা নেব এখনও তো বলিনি।” ও হেঁসে বলল “সে দেখা যাবে। দাম কমিয়ে দেব। “ আমি কোনও জিনিস কিনতে গেলে আগে দাম দেখে মনে মনে যোগ করে নি। এক্ষেত্রেও তাই করে নিয়েছি অনেকক্ষণ আগে। যদি দাম নাও কমায় তাও কুছ পরোয়া নেই। আসলে মাসে খুব বেশী হলে দুই বোতল ভোদকা আর মেসের ভাড়া ছাড়া আর আমার তেমন কোনও খরচ নেই। পার্লারে যাওয়া তো প্রায় উঠেই গেছে। নিজেই শেভ করে নি সারা শরীর। এখানে আসার পর মাত্র একবার পার্লারে গিয়ে পুরো মেক ওভার করিয়ে ছিলাম। যদিও এইবার আরেকবার যেতে হবে বলে মনে হচ্ছে, কারণ পিঠের অয়াক্সিং করাতে হবে আর মুখে থ্রেডিং করাতে হবে, নইলে কয়েকদিন পর গোঁফ বেরোবে। ও হ্যাঁ, আর চুলটাকেও একটু ট্রিমিং করাতে হবে। সুতরাং ইন্টার্ন এর বাকি টাকা আর ওই এফ ডি গুলোর ইন্টারেস্টের টাকা মাসে মাসে জমেই থাকে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় একটু ফুর্তি করি, কিন্তু এখানে সবার ভীষণ টানাটানি, আর ঠিক বন্ধু কেউ হয় নি। আর তাছাড়া হাঁসপাতালের চাপের মাঝে ফুর্তি ল্যাজ গুঁটিয়ে পালিয়ে গেছে। সেদিন যে বীরের সাথে গেছিলাম, সেদিনও সব খরচ ওই দিয়েছিল। মেয়ে হওয়ার এটা একটা বিশাল লাভ। হাহা। আমি বললাম “ঠিক আছে এগুলো রেখে দিন পাশে, মেয়েদের শর্টস আছে?” ও কিছু বলার আগেই আমি কোমরের মাপ বলে দিলাম আর থাইয়ের মাঝ বরাবর হাত দেখিয়ে দৈর্ঘের ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিলাম। এই পাক্কা বিক্রেতা। রাতে আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে, অন্ধকারে পাছায় হাত দিয়েছে গতকাল, কিন্তু আজ ওর থেকে আমি শর্টসের মাপ দেখাচ্ছি, কিন্তু ওর চোখে কোনও বিকার নেই। ও বলল “ জিন্সের আছে, কটনের ও আছে। কটনের যেগুলো আছে সেগুল কিন্তু বাইরে পরতে পারবেন ম্যাডাম। ঘরে পরার মতন শস্তাও আছে।” আমি বললাম “ বাইরে পরার মতনই দেখান।” আবার একটা স্টুলের উপর উঠে দাঁড়িয়ে পড়ল। নেমে বলল “না এখানে নেই। আপনি একটু দাঁড়ান। কাউন্টারটা একটু দেখবেন। আমি আসছি।” একটা কাঠের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেল। একটু পরে ওপর থেকে আওয়াজ এল “ খুব টাইট দেব নাকি একটু আলগা? মানে গায়ের সাথে...” ওকে উত্তর শেষ করতে না দিয়েই গলা উঠিয়ে বললাম “ যা আছে দেখান। একটু চাপা হলেই ভালো। কিন্তু ট্রায়াল দিয়ে দেখে নেব। আর হ্যাঁ। ওই একই দৈর্ঘের স্কার্ট থাকলেও নিয়ে আসবেন। প্লিটেড আর প্লেন দুটোই। “ ওর জবাব আসতে দেরী হল না। “আনছি। রঙ?” আমি বললাম “স্কার্ট একটু ডিপ রঙের চাই। “ পর পর কয়েকটা স্বচ্ছ প্লাস্টিকের বস্তা ধুপ ধাপ শব্দ করে নিচে এসে পড়ল। সব কটা বিভিন্ন রঙের কাপড়ে বোঝাই করা। একটু ভালো করে তাকিয়ে বুঝলাম কোনও টা স্কার্টের আর কোনও টা শর্টসের। একটু পরে নিজের হাতে করে আরেকটা ব্যাগ নিয়ে ও খুব সাবধানে মাথা বাঁচিয়ে কাঠের সিঁড়ি বেয়ে নেমে এল। “আগে শর্টসই দেখাই কেমন।” ওর নোংরা শ্যাম বর্ণের কপালে ঘামের ফোঁটা জমে গেছে। বুঝলাম আমার জন্য বেশ কসরত করতে হচ্ছে ওকে। আমি চটপট বেশ কয়েকটা জিন্স আর কটনের শর্টস আর স্কার্ট পছন্দ করে ট্রায়াল দেওয়ার জন্য চলে গেলাম। ঢিলে আর চাপা দুইই নিয়েছি। এইবার ও আর খুব শস্তা কিছু দেখায় আগের বারের মতন। কিন্তু যেগুলো দেখিয়েছে সেগুলর দামও বেশ কম। “ ব্যাগ ওঠাবেন না এইবার। এতগুল নেব না। ট্রায়াল দিয়ে বলছি। তবে বাকি গুলো তুলে রাখতে পারেন।“ এইবার ট্রায়াল রুমে বেশ একটু সময় লাগলো। একবার মনে হল বাইরে ও কারোর সাথে কথা বলছে। এইরে আমাকে কোনও বিপদে ফেলার ছক কষছে না তো? যদি ওর কোনও সাকরেদ...। না একটু কান খাড়া করে বুঝলাম কারোর সাথে কথা বলছে ফোনে, মনে হল সেই মহিলার সাথে। কয়েকটা কথা কানে এল, “ঠিক আছে, কোনও তাড়াহুড়া করছি না। ভালো ভাবে দেখে শুনে নিক। তবে ওই বেশ কয়েকটা জিনিস তো। দাম গুলো... হ্যাঁ। দেব...। সমস্যা নেই।না না আপনি চিন্তা করবেন না। কাল সকালে হিসাবে তুলে দেব। ট্রায়াল দিচ্ছেন। (একটু হেঁসে বলল) হ্যাঁ দিয়ে দেব। হ্যাঁ, কার্ডও দিয়ে দেব। ঠিক আছে। ফিরে এসে ফোন করব। “ বুঝলাম ফোন কেটে দিয়েছে। যাক ছেলেটার কোনও বদ মতলব নেই। যদিও আমি ট্রায়াল রুমের ভেতর আমার মোবাইল সমেত হ্যানড ব্যাগটা নিয়েই এসেছি। মনে মনে ভাবছিলাম কোনও বেগতিক দেখলেই হাঁসপাতালে চেনা কাউকে একটা ফোন করে ডেকে নেব।
ছেলেটা ভুল বলেনি। কটনের শর্টসগুলো পরলে মন্দ লাগবে না। এমন একটা লুক দিয়েছে জিনিস গুলোর, যে একটা জিন্স জিন্স লুক আছে। আর সত্যি কথা বলতে জিন্সের থেকেও কটনের শর্টসগুলো পরে অনেক বেশী আরাম লাগছিল। আমি ঢিলে শর্টসগুলো বাতিল করে দুটো জিন্সের শর্টস আর একটা কটনের শর্টস ওর হাতে দিয়ে বুঝিয়ে দিলাম যে এগুলো আমি নেব। দুটো শর্ট স্কার্টও পছন্দ করেছি। তবে পিছনের দিকে যেন একটু ঢিলে থাকে সেই দিকে নজর রেখেছি স্কার্ট পছন্দের সময়। নইলে অশ্লীল ভাবে পেছন দিকে উঠে থাকবে পাছার ওপর আর একটু এদিক ওদিক হলেই প্যান্টি সমেত পাছা গোটা দুনিয়ার সামনে বেড়িয়ে পড়বে। আমার পাছা এখনও খুব বড় না হলেও, কয়েকদিনের মধ্যে যে ওখানকার মাংসেও বৃদ্ধি হবে সেটা আমিও ভালো মতন জানি। তবে হ্যাঁ দৈর্ঘ ওই অর্ধেক থাইয়ের থেকে বেশী নিলাম না, কিন্তু খুব চাপা নয় এই যা। দামের ব্যাপারটা ওকে বলতেই ও বলল “ ম্যাডামের ফোন এসেছিল। উনিও বলেছেন বেশী জিনিস নিলে ভালো ছুট দিতে। আপনি চিন্তা করবেন না। “ আমি বললাম “শস্তা ঠিক এই সাইজের ঘরে পরার মতন শর্টস দেখান না। তবে এটা কটনের চাই। বাড়িতে জিন্স পরে থাকতে পারি না। “ ও কিছু বলার আগেই আমি যোগ করে দিলাম “চাপা শর্টসই নেব। কিন্তু কাপড়টা যেন পাতলা হয়। নইলে পরে ঘুমাতে খুব অসুবিধা হয়। “ ও বাতিল করা জিনিসগুলো প্লাস্টিকে ভরে মাটিতে একধারে ফেলে রেখে আবার উপরে উঠে গেল আমাকে কাউন্টারের ওপর নজর রাখতে বলে। একটা জিনিস অদ্ভুত লাগলো। আমি তো কোনও বদ মতলব নিয়েও আসতে পারি। আর জানলা দিয়ে আমাকে যা দেখেছে তাতে আমাকে ভালো মেয়ে ভাবার কোনও কারণ নেই। কিন্তু তবুও আমাকে ভরসা করে চলে যাচ্ছে? একবার জিনিস পত্র নিয়ে বিদায় নিলে, ও আমার মেসে গিয়েও কিছু করতে পারবে না। এখানে কার্ডে পেমেন্ট করার মেশিন আছে বটে, কিন্তু কোনও ক্যামেরা নেই যেমন অনেক বড় দোকানে থাকে। সুতরাং কিছু প্রমান করতে পারবে না। ও কয়েকটা শর্টস হাতে নেমে এল। সত্যি বলতে কি, খারাপ পছন্দ করে নি। এগুলো ভীষণ শস্তা। দাম দেখে ওকে জিজ্ঞেস করতে বাধ্য হলাম “এইগুলো যে এত শস্তা টিকবে তো?” ও একটু গলা খাটো করে বলল “ আমাদের লোক আছে যারা এগুলো বানায়। আমাদের থেকে অনেকে কিনে নিয়ে গিয়ে ব্র্যান্ডের লেবেল বসিয়ে বেশী দামে বেচে। “ একটা মৃদু হেঁসে বলল “কোনটা নেবেন বলুন? সব কটা দিয়ে দি?” বললাম “পাগল? আচ্ছা, আপনি যে আমার হাতে কাউন্টার ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বারবার, যদি আমার কোনও বাজে মতলব থাকে?” বলল “তাহলে আমার চাকরি যাবে। তবে সেই ছোট বেলা থেকে এই লাইনে আছি ম্যাডামের সাথে। আমি লোক চিনি। তেমন লোক হলে কাল আসতে বলে দিতাম। “ আমি দুটো ঘরে পরার শর্টস পছন্দ করে বাকি গুলো ফিরিয়ে দিলাম। এইবার আর হিসাব করতে পারলাম না। মোবাইল বার করে ক্যালকুলেটারে সব কটার দাম যোগ করে দেখে নিলাম। বেশ শস্তা দোকান বলতেই হয়। আমি এত হিসাব করছি দেখে ও বলল “ আপনি কি অনেক দিন পর শপিং করতে এসেছেন?” আমি বললাম “হ্যাঁ আসলে সময় পাই না। বাড়ির বাইরে থাকি তো, তাই সব কাজ নিজেকেই করতে হয়, আর তার ওপর হাঁস... (এই অব্দি বলেই থেমে গেলাম, কারণ আমার আসল পরিচয় এইভাবে দেওয়া ঠিক হবে না।) ইয়ে কাজের প্রচুর চাপ আছে। প্রায় অনেক দিন পর নিজের জন্য কেনা কাটা করতে এসেছি। “ ও বলল “ভালো জায়গায় এসেছেন। অনেক কালেকশান আমাদের, আর সব থেকে বেশী ছাড় আমরাই দি এখানে। “ পাশের একটা দোকানের নাম করে বলল “ওখানে কোনও দিনও যাবেন না। ওরা লোক ঠকায়। বাজে জিনিস দেয়।” বুঝলাম প্রতিযোগিতা তুঙ্গে দুই দোকানের মধ্যে।