18-10-2019, 02:41 PM
পরের পর্ব
ও অনেক গুলো অভিমান ভরা এস এম এসে করেছিল, ব্যস্ততার অজুহাতে সেগুলর কোনও উত্তর দি নি। হয়ত বা সত্যি নিজের কাজে বা নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম বলে ওর এস এম এসের উত্তর দেওয়া হয় নি। দেব একদিন সময় করে। তবে হায় হ্যালো হয়ে থাকে রোজ সেই ফেরবার সময়। আর রোজই আমি ওকে একই অজুহাত দি যে আমি আজ ভীষণ ব্যস্ত ছিলাম, আর এখন বাড়ি ফিরছি, ভীষণ রকমের ক্লান্ত। এইবার আসি নতুন সেই খেলোয়াড়ের কথায়।
আমার মাসিকের দিন এগিয়ে আসছে তাই ঘরে ঢোকার আগে বাড়ির উল্টো দিকের রাস্তা পেড়িয়ে সেই আমার রেগুলার ওষুধের দোকানে গিয়ে হাজির হলাম। স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনার আগে কি মনে হওয়ায় একবার পেছনে ঘুরে তাকিয়ে মেপে নেওয়ার চেষ্টা করলাম যে এখান থেকে আমাদের বাড়িটা কতটা দেখা যায় আর ঘর গুলো কতটা দেখা যায়। ওই তো আমার ঘরের জানলা। না যতটা দূরে হবে ভেবেছিলাম ততটা নয়। আর বেশ পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি বন্ধ জানলাটা। তবে হ্যাঁ জানলার সামনেটা অন্ধকার। তবে হ্যাঁ জানলার গায়ে এসে দাঁড়ালে এখান থেকে সব স্পষ্ট দেখা যাবে। ঘরের আলো জ্বললে তো কথাই নেই। দুএকটা দোকান ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে, আর দোকানগুলো ঝাঁপি ফেলবে ফেলবে করছে। আমি ন্যাপকিন কিনে ব্যাগে চেপে ভরে বেড়িয়ে আসার পরই সোজা বাড়ির দিকে না হেঁটে ওই ফুটপাথ ধরেই একটু উল্টো পথে হেঁটে চললাম। আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম আলোটা জ্বলছিল কোথা থেকে। সঠিক না ধরতে পারলেও মোটামুটি আন্দাজ করতে পারলাম যে এই চার পাঁচটা দোকানের মধ্যেই একটা হবে যার ধার থেকে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে কালকের লোকটা আমাকে ইশারা করে আলো মারছিল। এগুলর মধ্যে একটা দোকান ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে আর তাই তার সামনেটাও এখন অন্ধকার, তবে কালকের মতন নয় কারণ আশে পাশের দোকান থেকে এখনও আলো বাইরে এসে পড়ছে। এরকম জায়গা থেকেই কাল টর্চের আলোটা আসতে দেখা গেছে। একটা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে একবার ঘুরে দেখার চেষ্টা করলাম আমার ঘরটা। ওষুধের দোকানের থেকে আরেকটু কাছে দেখা যাচ্ছে আমার ঘরটা আর ঘরের বন্ধ জানলাটা। রাস্তাটা আসলে অল্প অল্প বেঁকে গেছে এই দিকে, আর তার সাথে ফুটপাথটাও, তাই দোকান গুলো সামান্য হলেও ওই বাড়িটার কাছে সরে এসেছে। তবে তাও দূরে, কিন্তু এখানে থেকে আমার ঘরের জানলাটা আর তার চারপাশটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। ইশশ লোকটা যে কতটা দেখেছে বেশ অনুমান করতে পারছি। লজ্জায় কানটা লাল হয়ে উঠলো, আর সেই সাথে আমার অবাধ্য অসভ্য যোনীর ভেতরে একটা ক্ষীণ ভেজা ভেজা ভাবে জেগে উঠতে শুরু করেছে। না এখানে আর দাঁড়ানো ঠিক নয়। কালকের লোকটা যদি এরই মধ্যে কোনও একটা দোকানে কাজ করে আর সেই দোকানটা যদি এখনও বন্ধ না হয়ে থাকে তো ওই লোকটাও আমাকে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ফেলবে। মহা মুশকিল হয়ে যাবে। কতক্ষণ এদিক ওদিক নড়ে চড়ে আমার জানলার দূরত্ব মাপবার চেষ্টা করছিলাম জানি না, কারণ হুঁশ ফেরার পর দেখলাম সবাই একে একে নিজেদের দোকানের পাট গুঁটিয়ে ফেলতে উদ্যত হয়েছে। অভস্য হুঁশ ফেরার কারণ ছিল একটু আলাদা। হঠাত ফুটপাতের উপর দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই আমার পাছার ওপর একটা হালকা থাপ্পড়ের অনুভুতি পেলাম, থাপ্পড়টা আস্তে মারলেও একটা যেন ঠাপ মতন শব্দ হল আমার পেছন থেকে। ধড়মড় করে পিছনে ফিরে দেখলাম আমার থেকে সামান্য উচ্চতার একটা লোক হন হন করে ফুটপাত ধরে হেঁটে চলে যাচ্ছে। একবার চারপাশ দেখে নিলাম, না তেমন লোক জন নেই। সবাই দোকান বন্ধ করতে করতে পাশের দোকানের মালিক বা কর্মচারীর সাথে এটা ওটা গল্প করছে। আমি জানি না কেন, ওই লোকটার পিছু নিলাম। মনে মনে জানি বোকামি হচ্ছে, আর তাছাড়া, বেশীক্ষণ পিছু করতে পারব না, কারণ বাড়ির থেকে এই রাতে বেশী দূর যাওয়ার কোনও ইচ্ছা আর সাহস আমার ভেতর নেই। তবু হাঁটার গতিবেগ বাড়িয়ে দিলাম। ছেলেটার সাথে পেরে ওঠার কথা নয়, কিন্তু তবু মনে হল আমার বাড়ির মোড়টা যত এগিয়ে এল ততই যেন আমাদের মধ্যে দূরত্ব কমতে শুরু করল। রাস্তার মোড়ে একটা সিগারেটের দোকানের সামনে গিয়ে লোকটা দাঁড়িয়ে পড়ল। একবার পেছন ঘুরে আমার দিকে দেখে দোকানদার কে কিছু একটা বলল। একটা সিগারেট নিয়ে ঠোঁটের কোনায় ধরাল। না আমার বেশ হাঁস ফাঁস অবস্থা। না দ্রুত হাঁটার জন্য নয়, এটা উত্তেজনায়। আর কয়েক সেকন্ড পরেই জানতে পারব যে কাল কে আমাকে টর্চ মারছিল। একটা ক্ষীণ সন্দেহ এখনও আছে মনের মধ্যে। এটা কি কালকের লোকটা। আমি ভালো করে এখনও ওর মুখ দেখতে পাচ্ছি না। না কি অন্য কেউ? অন্য কেউ হলে এও কি আমাকে জানলার সামনে দাঁড়িয়ে এই সব করতে দেখেছে? নাকি সম্পূর্ণ অন্য কোনও লোক বদ মতলব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে রাস্তায় অন্ধকারের মধ্যে, একাকি মেয়ে দেখলেই শরীরের ওপর থাবা বসিয়ে আবার কেটে পড়বে। না বেশী রিস্ক নেওয়া ঠিক হবে না। তবু একবার লোকটার মুখোমুখি হতেই হবে।
এইসব ভাবতে ভাবতেই আমি সিগারেটের দোকানের গিয়ে পৌঁছে গেছি। কি ভাবে দোকানের দিকে যাওয়া যায়? আর তাও এই এত রাত্রে। খেয়াল করলাম একটা ছোট ফ্রিজে (যেমন সব মিষ্টি বা সিগারেটের দোকানে থাকে) কোল্ড দ্রিঙ্কসের বোতল রাখা আছে। গিয়ে এক বোতল পেপসি চাইলাম। ঠাণ্ডা হয় যেন বলে দিলাম। দোকান দার আমাকে যেন দেখেও দেখল না। ওর দিকে সরাসরি না তাকালেও বুঝতে পাচ্ছিলাম ও সিগারেটে টান দিতে দিতে আমাকে আপাদ মস্তক মেপে চলেছে। কোল্ড ড্রিঙ্কসের স্ট্রয়ে একটা লম্বা সশব্দ টান মেড়ে নিজের ভেতরে একটু দম আর সাহস জড়ো করে লোকটার দিকে মুখ তুলে তাকালাম। এই প্রথম চোখাচুখি হল আমাদের দুজনের। হে ভগবান। লোক না বলে একে ছেলে বলা ভালো। উচ্চতায় আমার থেকে সামান্য বেশী। এক গাল নোংরা দাড়ি। গায়ের রঙ কুচকুচে কালো। গায়ে খুব শস্তা পোশাক। শার্টের কাঁধের কাছটা যেন একটু ছিঁড়ে গেছে, তাপ্পি মারা আছে। চোখের রঙ বেশ হলদেটে আর ঘোলাটে, যেন নেশা করে এসেছে একটু আগেই। সারা দিনের পর ছেলেদের গা থেকে যেমন পাগল করা নোংরা ঘামের গন্ধ আসে ওর গা থেকেও তেমনই আসছে। আমরা এক হাত দূরে দাঁড়িয়ে আছি। ওর বয়স খুব বেশী হলে সাতাশ বা আঠাশ হবে। আমার থেকে একটু বড়, তবে খুব একটা নয়। দেখে মনে জীবনে যুদ্ধ করতে করতে বেশ ঘেঁটে গেছে। যাই হোক। আমি আবার দোকান দারের দিকে তাকিয়ে ঠাণ্ডা তরল পান করতে লাগলাম স্ট্র দিয়ে। ও হঠাত আমাকে জিজ্ঞেস করল, আপনাকে বেশ চেনা চেনা লাগছে। আপনি ওই বাড়িতে থাকেন না। বলে আঙুল তুলে আমার পিছন দিকে কোনও একটা বাড়ির দিকে দেখিয়ে দিল। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম ও কোনও বাড়িটার দিকে ইশারা করছে। এত দূর থেকে বোঝা একটু শক্ত হলেও পরিষ্কার বোঝা গেল ও শুধু আমাদের বাড়ি নয়, আমার মন বলছে ও যেন আমার ঘরটা, ঠিক ঘরটাও নয় আমার ঘরের বন্ধ জানলাটার দিকেই ইশারা করছে। আমি কোনও উত্তর দিল না। রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে এত রাত্রে অচেনা ছেলের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কোনও মানে হয় না। “ আমি ওই দোকানটায় কাজ করি।” একটা বন্ধ দোকানের দিকে দেখিয়ে দিল। আমার অনুমান অব্যর্থ। আমি ওই জায়গারই একটা দোকানের ব্যাপারে সন্দেহ করেছিলাম। তাহলে এই গত কাল? আমার চিন্তা ধারা বেশী দূর এগতে পারল না, কারণ ও আমাকে বলল “দোকান বন্ধ করে চলে যাই, বাইরে গিয়ে খেয়ে দেয়ে এসে আবার দোকানে ঢুকে ঘুমাই। পাহাড়া দিতে হয় তো।” আর কোনও সন্দেহের অবকাশ রইল না মনে। আমি কোল্ড ড্রিঙ্কসের খালি কাঁচের বোতলটা নিচে নামিয়ে রেখে দোকানদারের হাতে একটা দশ টাকার নোট গুঁজে দিয়ে রাস্তা পেরবার জন্য উদ্যত হলাম। প্রায় পিঠের ওপর একটা বাজের নিঃশ্বাসের গন্ধ পেয়ে একটু চমকে উঠলাম যেন। ফিস ফিস শব্দ কানে এলো, “আজ রাতও খোলা থাকবে তো? একটু আলো জ্বেলে রেখো।” রাস্তায় গাড়ি নেই, তবুও যেন পা দুটো কেউ রাস্তার উপর গেঁথে দিয়েছে আমার। নড়তে পারলাম না। প্রায় কয়েক সেকন্ড পর একটু ধাতস্থ হয়ে পিছন ঘুরে দেখলাম কেউ নেই। এইবার কিন্তু ও আমাকে ছোঁয় নি, তার কারণ বোধহয় এখানে আলো ওই জায়গার থেকে কিছুটা হলেও বেশী, আর তাছাড়া সিগারেটের দোকানদারটার সামনে বোকা বোকা কিছু করে পুরো জিনিসটা কেচিয়ে দিতে চায় না। বিশ্বাস অর্জন করতে চাইছে কি আমার? মনে মনে হেঁসে ফেললাম। ধীরে ধীরে কাঁপা কাঁপা পা নিয়ে রাস্তা পাড় করলাম। আজ চাঁদের আলো কালকের থেকে অনেক কম। ভেতরটা বার বার কেঁপে কেঁপে উঠছে। হ্যান্দব্যাগ থেকে তোয়ালে রুমালটা বের করে মুখের ঘাম মুছে নিলাম। রুমালটা কাঁপা হাতে বের করতে গিয়ে ভেতরের ন্যাপকিণটা রাস্তায় পড়ে গেল। উফফ কি যে করছি না। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একজন ভদ্রলোক আর তার গিন্নি আমার রাস্তায় পড়ে থাকা নতুন ন্যাপকিনের প্যাকেটটার দিকে একটা নজর হেনে চলে গেল। তাড়াতাড়ি রাস্তা থেকে তুলে আবার ব্যাগে ভরে নিলাম ন্যাপকিনের প্যাকেটটা। এমনিতে প্যাকেটটা খবরের কাগজে মোড়াই ছিল। কিন্তু ব্যাগের মধ্যে চাপা চাপি করে সেট করার চক্করে সেই কাগজের মোড়ক আলগা হয়ে খুলে গেছে। আর তার পরেই এই লজ্জাজনক বিপর্যয়।
বাড়ি ঢুকতেই শান্তাদির মুখোমুখি পড়লাম। আমাকে দেখেই এক গাল হেঁসে বললেন “যাক তাহলে এতক্ষনে বাড়ি ফেরা হল। বিয়ের পর বর টিকলে হয়। তাড়াতাড়ি এসো এখন। আমার তো আবার ঘুম পেয়ে গেল। “ আমি একটা ছোট্ট সরি বলে প্রায় দৌড়ে উপরে উঠে গিয়ে হাত ধুয়ে খাওয়ার জন্য নেমে এলাম। অবশ্য ঘরে ঢুকেই প্রথম কাজটা করেছিলাম যেটা সেটা হল ওই দিকের জানলাটা খুলে দেওয়া। ছেলেটা খেতে গেছে, তাই এখনই টর্চের সংকেত আশা করা বোকামি। ঘরটা এমনিতে গুমোট হয়ে আছে। বাইরের বাতাস ঢুকে একটু ঠাণ্ডা করুক ততক্ষণে। ভেতরটা যা গরম হয়ে আছে, তাতে ঘরটা একটু ঠাণ্ডা না হলে রাতে ঘুমাতে পারব না। আমার মুখে হাঁসি হাঁসি ভাব দেখে শান্তাদি আমাকে ফস করে জিজ্ঞেস করে বসলেন “কি হয়েছ, হাঁসছ যে?” আমি প্রথমে একটু থতমত খেয়ে গেলেও এক মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম “আরে দূর হাসছি কই। হাঁসপাতালের একটা কথা মনে পড়তে হঠাত হাঁসি পেয়ে গেল। কিন্তু আমার জন্য আপনার খুব কষ্ট হয় না? সারা দিনের খাটা খাটুনির পর এত রাত অব্দি জেগে বসে থাকতে হয় আপনাকে?” শান্তাদি বললেন “ আজ একটু বেশী দেরী হয়ে গেল, কি ব্যাপার?” বললাম “তেমন কিছু না কাজ পড়ে গিয়েছিল।” কথা ঘোরানোর জন্য বললাম “অদিতির কোনও খবর আছে?” বললেন “ না তেমন কিছু পাই নি আজ। “ আমি আর কথা না বাড়িয়ে খাবারে মন দিলাম। খেতে বসার পরে বুঝতে পেরেছি খুব জোড় খিদে পেয়ে গিয়েছিল যেটা যৌনতার উত্তেজনায় ভুলতে বসেছিলাম। খেয়ে দেয়ে শান্তাদিকে মন থেকে একটা ধন্যবাদ জানিয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম। আজ ঘরে আসার পর আর ফ্রেশ হতে মন চাইল না। সত্যি শান্তাদির কথা ভাবলে মাঝে মাঝে খারাপ লাগে। গ্রামের মেয়ে হিসাবে দেখতে খারাপ নন। কিন্তু এত অল্প বয়সে এরকম একটা বয়স্ক বরের গলায় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এখন এই বয়সে যখন সব মেয়েরা বরের গলা জড়িয়ে পড়ে পড়ে রাতের মুহূর্তগুলো উপভোগ করে তখন ইনি বরের থেকে আলাদা হয়ে একা একা রাতের তারা গোনেন। সত্যি কি পোড়া কপাল ওনার। আর ওনার বর এই বয়সে আর দাঁড়ায় বলে তো মনে হয় না। যাই হোক। পোশাক পরেই একবার খোলা জানলাটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার ব্যাকুল চোখ এই মুহূর্তে সেই টর্চের আলোর ঝলকানির খোঁজ করছে বাইরের অন্ধকারে। না কোথায় খেতে যায় কে জানে। এত তাড়াতাড়ি কি ফিরবে। আমি শালোয়ারের গিটটা খুলতে যাচ্ছি, হঠাত খেয়াল হল পিছনে দরজাটা খোলা। উফফ বাজে চিন্তা মাথায় এলে আমার আর কোনও দিকে হুঁশ থাকে না। এত ক্যাবলা আর ভুলো হলে মহা বিপদে পড়ব। কোনও দিন হয়ত দরজা খোলা রেখে নগ্ন হয়ে ঘুমিয়ে পড়ব। পরের দিন শান্তাদি এসে সব দেখে ফেলবে। গিয়ে দরজাটায় খিল তুলে দিলাম। সারা দিনের বাসী ঘামে ভেজা নোংরা কাপড় গুলো গা থেকে খুলে বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে আবার জানলার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম আমার ব্যাকুল নগ্ন শরীরটা নিয়ে। না এই বারও প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে ঘরের মধ্যে আলো জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেও সেই আলোর হদিশ পাওয়া গেল না। মাল নিশ্চই এখনও ফেরেনি। ঠিক আছে। বাকিরা সব শুয়ে পড়েছে। একটু দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে করছে হঠাত। নগ্ন অবস্থাতেই আলো জ্বেলে রেখে একবার দরজার খিল খুলে দিয়ে ঘরের বাইরেটা ভালো ভাবে দেখে নিলাম। না আমার ঘরের বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। শুধু হালকা চাঁদের আলো, তবে আজ চাঁদ বাবা জীবন মেঘের আড়াল থেকে বেরনোর জন্য যুদ্ধে লিপ্ত। আলো কালকের মতন তীব্র নয়। দরজাটা ভালো ভাবে ভেজিয়ে রেখেই নগ্ন ভাবে আমার কাপড় রাখার জায়গায় এগিয়ে গিয়ে সবুজ রঙের শুঁকনো তোয়ালেটা তুলে নিয়ে গায়ে আলগা ভাবে জড়িয়ে নিলাম। তোয়ালেটা গোল করে নিজের গায়ের ওপর জড়িয়ে ধরে একবার আয়নায় নিজেকে দেখলাম ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। উফফ কি লাগছে আমাকে। খেয়াল রাখা ভালো কারণ দরজাটা কিন্তু শুধু আব্জে রাখা আছে। আমার খেয়াল আছে, আপনাকে আবার মনে করিয়ে দিলাম ব্যাপারটা। কেউ এলেই মহা বিপদে পড়ে যাব। নিজের লজ্জা ঢাকার মতন কিছুই হাতের কাছে বের করে রাখি নি। কিন্তু কেউ এলো না। প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে হঠাত করে কি হল যে এরকম উত্তেজিত হয়ে উঠলাম। কিছুই না, এখন আমার এইসব কাজের পেছনে যে মানসিক অবস্থা কাজ করে চলেছে সেটার ব্যাখ্যা করে দেখলে শুধু একটাই কথা বলা যায়, মন চাইছে টর্চের আলো, কিন্তু টর্চের আলো দেখতে না পেয়ে ভেতরটা আনচান করতে শুরু করে দিয়েছে। ওই লোকটা আমাকে বাইরে থেকে চোরের মতন তাকিয়ে তাকিয়ে না দেখলেও এখন এই মুহূর্তে একটু অভিযান করার নেশা আমাকে পেয়ে বসেছে।
নিজের মুখে নিজের প্রশংসা করা উচিৎ নয়, কিন্তু আয়নায় যা দেখলাম তাতে নিজেকেই নিজে বাহাদুরির জন্য একটা চুমু না দিয়ে পারলাম না। সত্যি অদ্ভুত সেক্সি দেখতে লাগছে আমাকে। সবুজ রঙের রোঁয়া ওঠা তোয়ালেটা আমার নগ্ন স্তনের মাঝ বরাবর চলে গেছে, অর্ধেকের বেশী স্তন বিভাজিকা, পুরো ঘাড় কাঁধ আর গলা তোয়ালের উপরে নগ্ন। আয়নাটা একটু নামিয়ে দেখলাম, তোয়ালেটা কোনও মতে আমার নগ্ন যোনী দেশটা ঢেকে রেখেছে। অর্ধেকের বেশী থাই আর পুরো নির্লোম পা দুটো তোয়ালের নিচে খোলা। পিছন দিকটা দেখার জন্য একটু কসরত করতে হল। কারণ হাত ঘুরিয়ে বেঁকে আয়নাটা পিছন দিকে ধরতে হয়েছে। উপর দিকটা ঠিক আছে, পিঠের মাঝ বরাবর চলে গেছে কর্কশ তোয়ালেটা, অর্ধেকের বেশী পিঠের উপরিভাগ নগ্ন। পিঠের ওপর বিন্দু বিন্দু ঘামের আভাষ দেখতে পেলাম ঠিক যেমন জমেছে স্তন বিভাজিকার ওপর। পাছার মাঝ অব্দি তোয়ালেটা ঢেকে রাখতে সক্ষম হয়েছে, তোয়ালের তলা দিয়ে পাছার ফরসা ফোলা ফোলা মাংসল অংশের বাকি অর্ধেকটা বেড়িয়ে থেকে অদ্ভুত সেক্সি লাগছে। শরীরটাকে বেঁকিয়ে হাত পিছনে রেখে পিছন দিকটা দেখতে গিয়ে আলগা অবাধ্য তোয়ালেটা একবার মাটিতে পড়ে গেল। উফফ কি অদ্ভুত রোমাঞ্চ লাগছে না! ঘর আলোয় আলোকিত। দরজা ভেজানো। আমি ঘরের মাঝখানে আয়না হাতে দাঁড়িয়ে আছি, সারা গায়ে একটা সুতো পর্যন্ত নেই। তোয়ালেটা সাপের মতন বেড়ি করে পায়ের চারপাশে গোল হয়ে পড়ে আছে। একবার বন্ধ দরজার দিকে দেখে নিয়ে নগ্ন ভাবেই হেঁটে গিয়ে জানলার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। মিনিট খানেক দাঁড়িয়ে থেকেও সেই টর্চের আলোর হদিশ না পেয়ে আবার বিছানার কাছে ফিরে এসে মাটি থেকে তোয়ালেটা তুলে নিয়ে আগের মতন করেই আবার নিজের শরীরের ওপর ওটাকে আলগা ভাবে জড়িয়ে নিয়ে বা বগলের তলায় তোয়ালের একটা কোণা আলগা ভাবে গুঁজে রাখলাম। আলোটা নিভিয়ে দিয়ে দরজা খুলে এই অবস্থাতেই ঘরের বাইরে এসে দাঁড়ালাম। ঘরের বাইরে পা রাখতেই নগ্ন স্তন বিভাজিকা সমেত স্তনের অনাবৃত উপরিভাগে, গলায় আর নগ্ন কাঁধের উপর বাইরের ঠাণ্ডা হাওয়ার পরশ লাগলো, এক অশ্লীল গা ছম ছম করা নিষিদ্ধ উত্তেজনায় সারা শরীরটা তিরতির করে কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে। বা বগলের তলায় হাত দিয়ে তোয়ালের কোণাটা একটু ভালো ভাবে গুঁজে দিলাম। এই প্রায় নগ্ন অবস্থাতেই আস্তে আস্তে হাঁটতে শুরু করলাম সামনের দিকে। ছন্দাদের ঘরের বন্ধ দরজার সামনে চলে এসেছি, কয়েক মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে থাকলাম ওদের ঘরের সামনে। যোনীর ভেতরে তোলপাড় হতে শুরু করেছে। শরীরে কারোর ছোঁয়া নেই, শুধু মাত্র বাইরের শীতল হাওয়া আমার শরীরটাকে আস্তে আস্তে আদর করে দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও বুঝতে পারছি বোঁটা গুলো অদ্ভুত ভাবে শক্ত হয়ে উঠেছে ঘরের বাইরে পা রাখার সাথে সাথে। অন্ধকার বাড়ির মধ্যে এই ভৌতিক পরিবেশে প্রায় নগ্ন ভাবে এগিয়ে চলল আমার দুটো পা সিঁড়ির দিকে। সিঁড়ির নিচে একবার উঁকি মেড়ে দেখে নিলাম। না কেউ নেই। নিচটা পুরো অন্ধকার। আস্তে আস্তে সিঁড়ি বেয়ে নামতে শুরু করলাম। পুরো সিঁড়িটা অন্ধকার, আর এখন আলো জালানো যাবে না, তাই ডান হাত রেলিঙ্গে চেপে রেখে আর বা হাতটা দেওয়ালের ওপর রেখে খুব ধীরে ধীরে মেপে মেপে পা ফেলতে হচ্ছে প্রত্যেকটা ধাপে, নইলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, আর এই অবস্থায় পড়ে গেলে যে কি হবে সেটা ভাবতেই কেমন যেন গায়ে কাঁটা দিল। অর্ধেকটা নেমেছি হঠাত বুঝতে পারলাম তোয়ালেটা আমার শরীরের ওপর থেকে যেন ধীরে ধীরে আলগা হয়ে নেমে যাচ্ছে। এক মুহূর্তের মধ্যে বুঝতে পারলাম যে বা বগলের তলায় গুঁজে রাখা তোয়ালের কোণাটা আলগা হয়ে বেড়িয়ে এসেছে। কিছু করে উঠবার আগেই তোয়ালেটা আবার আমার শরীরের উপর থেকে নিজের আবরণ সরিয়ে নিয়ে নিচে লুটিয়ে পড়ল পায়ের চারপাশে গোল করে। ইশশ এই রাত্রে বেলায় নির্জন অন্ধকার সিঁড়ির মাঝে আমি নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। এক মুহূর্তের জন্য যেন আমার হৃৎস্পন্দন বন্ধ হতে বসেছিল। না কোথাও কোনও শব্দ নেই, নেই কোনও আলোর আভাষ। একটু ধাতস্থ হয়ে ধীরে ধীরে নিচের দিকে ঝুঁকে তোয়ালেটা তুলে নিয়ে আবার আগের মতন করে জড়িয়ে নিয়ে আবার ধীরে ধীরে নিচে নামতে শুরু করলাম। নিচের দুটো ঘরের পাশ দিয়ে আস্তে আস্তে নিঃশব্দে হেঁটে পাড় হয়ে গেলাম। এ যে কি অনুভুতি সেটা লিখে বোঝানো অসম্ভব। সিঁড়ির কাছে এসে একবার শান্তাদির ঘরের দরজার দিকে গিয়ে উঁকি মারলাম। ভেতর থেকে ফ্যানের শব্দ কানে আসছে। দরজা বন্ধ, দরজার তলা দিয়ে কোনও আলোর ঝিলিক দেখতে পেলাম না। ক্লান্ত শরীর নিয়ে উনি নিশ্চই ঘুমিয়ে পড়েছেন। দেওয়ালে হাত রেখে ধীরে ধীরে এগিয়ে চললাম সিঁড়ির দিকে। খুব বেশী হলে মেপে মেপে তিন ধাপ উঠেছি সিঁড়ি বেয়ে। হঠাত একটা খুঁট মতন শব্দ পেলাম দোতলায়। ছন্দাদের ঘরের দরজা খোলার শব্দ। কোনও শব্দ না করে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লাম সেখানেই। ভাবছি কি করব এখন।
কথায় বলে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়। এক ফোঁটা নড়বার সাহস নেই। কারণ নড়লে যদি শব্দ হয় তো মহা বিপদ। ওপরের আলো জ্বলে উঠলো। কারুর একটা পায়ের শব্দ। সিঁড়ির দিকেই এগিয়ে আসছে। ঠিক এই সময় তোয়ালেটা আবার আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে আমার শরীরের থেকে তৃতীয়বারের জন্য নিচে পড়ে গেল। সিঁড়ির উপরে আলো জ্বলে উঠল। আমার হৃত স্পন্দন বন্ধ ভীষণ তীব্র হয়ে উঠেছে এক সেকন্ডে। এই বার কি করব? কেউ যদি নিচে নেমে আসে। উপরে জ্বলে ওঠা আলোর কিছুটা নিচের দিকের সিঁড়ির ধাপ গুলকেও আলোকিত করে তুলেছে। আবছা আলোয় নিজেকে একবার দেখলাম। দরদর করে ঘামিয়ে চলেছি। ঘামের ফোঁটা গুলোর ওপর আলোর আবছা কিরন এসে পড়ায় সারা শরীরটা চকচক করছে। নড়বার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। কান খাড়া উপরের দিকে। না পায়ের ধাপটা সিঁড়ির দিকে এলো না। সিঁড়ির মুখ পাড় করে বাথরুমের দিকে চলে গেল। বাথরুমের দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ পেতেই যেন হুঁশ ফিরে পেলাম। কোনও মতে তোয়ালেটা মাটি থেকে তুলে নিয়ে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থাতেই দৌড় মারলাম উপরের দিকে। এখন আর তোয়ালে দিয়ে শরীর ঢাকার সময় নেই। বাথরুম থেকে বেড়িয়ে যদি সে নিচের দিকে আসে তো ফেঁসে যাব। এখন আর পা মেপে মেপে ফেলতে হচ্ছে না কারণ আবছা আলোয় প্রতিটা ধাপ পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি। দৌড় শুরু করার সময় বুঝতে পারলাম যে অসম্ভব রকম জোড়ে জোড়ে ওঠানামা করে চলেছে আমার নগ্ন স্তন গুলো। বোঁটাগুলো এখনও সেই একই রকম পাথর হয়ে রয়েছে। একফোঁটা দৌড়া দৌড়ী করি নি এতক্ষন, কিন্তু কেমন যেন হাঁপ ধরে গেছিল উত্তেজনায়। কিন্তু এখন জিরিয়ে নেওয়ার সময় নেই। অনুভব করলাম দৌড়ানোর সময় প্রতিটা পদক্ষপের সাথে সাথে আমার নগ্ন স্তন গুলো আমার বুকের উপর উদ্যাম বাঁধনহীন ভাবে লাফিয়ে উপর নিচ করে চলেছে। অন্য সময় হলে হয়ত একটা হাত দিয়ে স্তন গুলো কে বুকের সাথে চেপে ধরে ওদের এই লাফালাফি বন্ধ করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু এখন সেই সব করার কথা মাথায় এলো না। সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছে বা দিকে ঝুঁকে একবার বাথরুমের দিকে দেখে নিলাম। না দরজা বন্ধ ভেতর থেকে। ডান দিকে একটু বেঁকে সামনের দিকে ঝুঁকে দেখলাম ছন্দাদের ঘরের দরজা হাঁ করে খোলা। এখন শব্দ করা যাবে না। তাই আর দৌড়াতে পারলাম না। পা টিপে টিপে প্রায় কোনও শব্দ না করে যতটা সম্ভব দ্রুত নিজের ঘরের দিকে নিয়ে চললাম নিজের নগ্ন শরীরটাকে। বাইরের দালানটা হলদে বাল্বের আলোয় উজ্জ্বল ভাবে আলোকিত। আর সেইখানে আমি রাত্রে বেলায় সম্পূর্ণ নগ্ন ভাবে ডান হাতে একটা তোয়ালে নিয়ে চোরের মতন সন্তর্পণে হেঁটে চলেছি। ওদের ঘরের দরজা পাড় করে দু পা এগতেই বাথরুমে জলের শব্দ পেলাম। বাইরেটা নিঃশব্দ, শুধু আমার বুকের ধুকপুক আর ঘন নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ ছাড়া কোনও শব্দ নেই। জলের শব্দ পেতেই বুঝতে পারলাম যে কাজ সারা হয়ে গেছে। এখন পা টিপে টিপে গেলে আর দেখতে হবে না। জানি না কে গেছে বাথরুমে। যেই গিয়ে থাকুক না কেন, সে বেড়িয়ে এলেই এই পূর্ণ আলোয় আমার নগ্ন শরীরটা দেখতে পাবে। ভাবার আর সময় নেই। দৌড় মারলাম নিজের ঘরের দিকে। দরজা খোলাই রেখে গিয়েছিলাম। ঘরের ভেতর ঢোকা অব্দি বাথরুম খোলার শব্দ পাই নি। আর পেছন দিকে ঘুরে দেখার সাহস বা সুযোগ বা সময় কোনওটাই আর এখন আমার হাতে নেই। ঘরে ঢুকেই যতটা পারি নিঃশব্দে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলাম, এইবার আর বেশী সাহস দেখালাম না। খিল তুলে দিলাম ভালো ভাবে। আলো জ্বালাতে পারলাম না। নিজের ঘরের ভেতরেই চোরের মতন কোনও শব্দ না করে বিছানায় গিয়ে বসে পড়লাম। নিজের কানে নিজের ঘন নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের আর হৃতস্পন্দনের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। স্তন গুলো এখনও অল্প অল্প কেঁপে চলেছে। যদিও দৌড় থামিয়ে দিয়েছি কয়েক সেকন্ড হয়ে গেছে। শব্দ হওয়ার ভয়ে ফ্যানটাও চালাই নি। সারা গায়ে ঘামের ঘন ঘটা। বেশ কয়েকটা ঘামের ফোঁটা শরীরের উপরিভাগ থেকে আমার শরীরের নগ্নতার স্বাদ গ্রহণ করতে করতে নিচের দিকে কল কলিয়ে নেমে চলেছে অনবরত। এখনও আমার কান খাড়া বাথরুমের দিকে। দরজা খোলার শব্দ পেলাম। একটু পরে আলো নিভে গেল। ওদের ঘরের দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ পেলাম অবশেষে। মুখ দিয়ে আপনা থেকেই একটা চাপা উফফ মতন শব্দ বেড়িয়ে গেল।
ও অনেক গুলো অভিমান ভরা এস এম এসে করেছিল, ব্যস্ততার অজুহাতে সেগুলর কোনও উত্তর দি নি। হয়ত বা সত্যি নিজের কাজে বা নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম বলে ওর এস এম এসের উত্তর দেওয়া হয় নি। দেব একদিন সময় করে। তবে হায় হ্যালো হয়ে থাকে রোজ সেই ফেরবার সময়। আর রোজই আমি ওকে একই অজুহাত দি যে আমি আজ ভীষণ ব্যস্ত ছিলাম, আর এখন বাড়ি ফিরছি, ভীষণ রকমের ক্লান্ত। এইবার আসি নতুন সেই খেলোয়াড়ের কথায়।
আমার মাসিকের দিন এগিয়ে আসছে তাই ঘরে ঢোকার আগে বাড়ির উল্টো দিকের রাস্তা পেড়িয়ে সেই আমার রেগুলার ওষুধের দোকানে গিয়ে হাজির হলাম। স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনার আগে কি মনে হওয়ায় একবার পেছনে ঘুরে তাকিয়ে মেপে নেওয়ার চেষ্টা করলাম যে এখান থেকে আমাদের বাড়িটা কতটা দেখা যায় আর ঘর গুলো কতটা দেখা যায়। ওই তো আমার ঘরের জানলা। না যতটা দূরে হবে ভেবেছিলাম ততটা নয়। আর বেশ পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি বন্ধ জানলাটা। তবে হ্যাঁ জানলার সামনেটা অন্ধকার। তবে হ্যাঁ জানলার গায়ে এসে দাঁড়ালে এখান থেকে সব স্পষ্ট দেখা যাবে। ঘরের আলো জ্বললে তো কথাই নেই। দুএকটা দোকান ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে, আর দোকানগুলো ঝাঁপি ফেলবে ফেলবে করছে। আমি ন্যাপকিন কিনে ব্যাগে চেপে ভরে বেড়িয়ে আসার পরই সোজা বাড়ির দিকে না হেঁটে ওই ফুটপাথ ধরেই একটু উল্টো পথে হেঁটে চললাম। আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম আলোটা জ্বলছিল কোথা থেকে। সঠিক না ধরতে পারলেও মোটামুটি আন্দাজ করতে পারলাম যে এই চার পাঁচটা দোকানের মধ্যেই একটা হবে যার ধার থেকে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে কালকের লোকটা আমাকে ইশারা করে আলো মারছিল। এগুলর মধ্যে একটা দোকান ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে আর তাই তার সামনেটাও এখন অন্ধকার, তবে কালকের মতন নয় কারণ আশে পাশের দোকান থেকে এখনও আলো বাইরে এসে পড়ছে। এরকম জায়গা থেকেই কাল টর্চের আলোটা আসতে দেখা গেছে। একটা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে একবার ঘুরে দেখার চেষ্টা করলাম আমার ঘরটা। ওষুধের দোকানের থেকে আরেকটু কাছে দেখা যাচ্ছে আমার ঘরটা আর ঘরের বন্ধ জানলাটা। রাস্তাটা আসলে অল্প অল্প বেঁকে গেছে এই দিকে, আর তার সাথে ফুটপাথটাও, তাই দোকান গুলো সামান্য হলেও ওই বাড়িটার কাছে সরে এসেছে। তবে তাও দূরে, কিন্তু এখানে থেকে আমার ঘরের জানলাটা আর তার চারপাশটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। ইশশ লোকটা যে কতটা দেখেছে বেশ অনুমান করতে পারছি। লজ্জায় কানটা লাল হয়ে উঠলো, আর সেই সাথে আমার অবাধ্য অসভ্য যোনীর ভেতরে একটা ক্ষীণ ভেজা ভেজা ভাবে জেগে উঠতে শুরু করেছে। না এখানে আর দাঁড়ানো ঠিক নয়। কালকের লোকটা যদি এরই মধ্যে কোনও একটা দোকানে কাজ করে আর সেই দোকানটা যদি এখনও বন্ধ না হয়ে থাকে তো ওই লোকটাও আমাকে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ফেলবে। মহা মুশকিল হয়ে যাবে। কতক্ষণ এদিক ওদিক নড়ে চড়ে আমার জানলার দূরত্ব মাপবার চেষ্টা করছিলাম জানি না, কারণ হুঁশ ফেরার পর দেখলাম সবাই একে একে নিজেদের দোকানের পাট গুঁটিয়ে ফেলতে উদ্যত হয়েছে। অভস্য হুঁশ ফেরার কারণ ছিল একটু আলাদা। হঠাত ফুটপাতের উপর দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই আমার পাছার ওপর একটা হালকা থাপ্পড়ের অনুভুতি পেলাম, থাপ্পড়টা আস্তে মারলেও একটা যেন ঠাপ মতন শব্দ হল আমার পেছন থেকে। ধড়মড় করে পিছনে ফিরে দেখলাম আমার থেকে সামান্য উচ্চতার একটা লোক হন হন করে ফুটপাত ধরে হেঁটে চলে যাচ্ছে। একবার চারপাশ দেখে নিলাম, না তেমন লোক জন নেই। সবাই দোকান বন্ধ করতে করতে পাশের দোকানের মালিক বা কর্মচারীর সাথে এটা ওটা গল্প করছে। আমি জানি না কেন, ওই লোকটার পিছু নিলাম। মনে মনে জানি বোকামি হচ্ছে, আর তাছাড়া, বেশীক্ষণ পিছু করতে পারব না, কারণ বাড়ির থেকে এই রাতে বেশী দূর যাওয়ার কোনও ইচ্ছা আর সাহস আমার ভেতর নেই। তবু হাঁটার গতিবেগ বাড়িয়ে দিলাম। ছেলেটার সাথে পেরে ওঠার কথা নয়, কিন্তু তবু মনে হল আমার বাড়ির মোড়টা যত এগিয়ে এল ততই যেন আমাদের মধ্যে দূরত্ব কমতে শুরু করল। রাস্তার মোড়ে একটা সিগারেটের দোকানের সামনে গিয়ে লোকটা দাঁড়িয়ে পড়ল। একবার পেছন ঘুরে আমার দিকে দেখে দোকানদার কে কিছু একটা বলল। একটা সিগারেট নিয়ে ঠোঁটের কোনায় ধরাল। না আমার বেশ হাঁস ফাঁস অবস্থা। না দ্রুত হাঁটার জন্য নয়, এটা উত্তেজনায়। আর কয়েক সেকন্ড পরেই জানতে পারব যে কাল কে আমাকে টর্চ মারছিল। একটা ক্ষীণ সন্দেহ এখনও আছে মনের মধ্যে। এটা কি কালকের লোকটা। আমি ভালো করে এখনও ওর মুখ দেখতে পাচ্ছি না। না কি অন্য কেউ? অন্য কেউ হলে এও কি আমাকে জানলার সামনে দাঁড়িয়ে এই সব করতে দেখেছে? নাকি সম্পূর্ণ অন্য কোনও লোক বদ মতলব নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে রাস্তায় অন্ধকারের মধ্যে, একাকি মেয়ে দেখলেই শরীরের ওপর থাবা বসিয়ে আবার কেটে পড়বে। না বেশী রিস্ক নেওয়া ঠিক হবে না। তবু একবার লোকটার মুখোমুখি হতেই হবে।
এইসব ভাবতে ভাবতেই আমি সিগারেটের দোকানের গিয়ে পৌঁছে গেছি। কি ভাবে দোকানের দিকে যাওয়া যায়? আর তাও এই এত রাত্রে। খেয়াল করলাম একটা ছোট ফ্রিজে (যেমন সব মিষ্টি বা সিগারেটের দোকানে থাকে) কোল্ড দ্রিঙ্কসের বোতল রাখা আছে। গিয়ে এক বোতল পেপসি চাইলাম। ঠাণ্ডা হয় যেন বলে দিলাম। দোকান দার আমাকে যেন দেখেও দেখল না। ওর দিকে সরাসরি না তাকালেও বুঝতে পাচ্ছিলাম ও সিগারেটে টান দিতে দিতে আমাকে আপাদ মস্তক মেপে চলেছে। কোল্ড ড্রিঙ্কসের স্ট্রয়ে একটা লম্বা সশব্দ টান মেড়ে নিজের ভেতরে একটু দম আর সাহস জড়ো করে লোকটার দিকে মুখ তুলে তাকালাম। এই প্রথম চোখাচুখি হল আমাদের দুজনের। হে ভগবান। লোক না বলে একে ছেলে বলা ভালো। উচ্চতায় আমার থেকে সামান্য বেশী। এক গাল নোংরা দাড়ি। গায়ের রঙ কুচকুচে কালো। গায়ে খুব শস্তা পোশাক। শার্টের কাঁধের কাছটা যেন একটু ছিঁড়ে গেছে, তাপ্পি মারা আছে। চোখের রঙ বেশ হলদেটে আর ঘোলাটে, যেন নেশা করে এসেছে একটু আগেই। সারা দিনের পর ছেলেদের গা থেকে যেমন পাগল করা নোংরা ঘামের গন্ধ আসে ওর গা থেকেও তেমনই আসছে। আমরা এক হাত দূরে দাঁড়িয়ে আছি। ওর বয়স খুব বেশী হলে সাতাশ বা আঠাশ হবে। আমার থেকে একটু বড়, তবে খুব একটা নয়। দেখে মনে জীবনে যুদ্ধ করতে করতে বেশ ঘেঁটে গেছে। যাই হোক। আমি আবার দোকান দারের দিকে তাকিয়ে ঠাণ্ডা তরল পান করতে লাগলাম স্ট্র দিয়ে। ও হঠাত আমাকে জিজ্ঞেস করল, আপনাকে বেশ চেনা চেনা লাগছে। আপনি ওই বাড়িতে থাকেন না। বলে আঙুল তুলে আমার পিছন দিকে কোনও একটা বাড়ির দিকে দেখিয়ে দিল। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম ও কোনও বাড়িটার দিকে ইশারা করছে। এত দূর থেকে বোঝা একটু শক্ত হলেও পরিষ্কার বোঝা গেল ও শুধু আমাদের বাড়ি নয়, আমার মন বলছে ও যেন আমার ঘরটা, ঠিক ঘরটাও নয় আমার ঘরের বন্ধ জানলাটার দিকেই ইশারা করছে। আমি কোনও উত্তর দিল না। রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে এত রাত্রে অচেনা ছেলের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কোনও মানে হয় না। “ আমি ওই দোকানটায় কাজ করি।” একটা বন্ধ দোকানের দিকে দেখিয়ে দিল। আমার অনুমান অব্যর্থ। আমি ওই জায়গারই একটা দোকানের ব্যাপারে সন্দেহ করেছিলাম। তাহলে এই গত কাল? আমার চিন্তা ধারা বেশী দূর এগতে পারল না, কারণ ও আমাকে বলল “দোকান বন্ধ করে চলে যাই, বাইরে গিয়ে খেয়ে দেয়ে এসে আবার দোকানে ঢুকে ঘুমাই। পাহাড়া দিতে হয় তো।” আর কোনও সন্দেহের অবকাশ রইল না মনে। আমি কোল্ড ড্রিঙ্কসের খালি কাঁচের বোতলটা নিচে নামিয়ে রেখে দোকানদারের হাতে একটা দশ টাকার নোট গুঁজে দিয়ে রাস্তা পেরবার জন্য উদ্যত হলাম। প্রায় পিঠের ওপর একটা বাজের নিঃশ্বাসের গন্ধ পেয়ে একটু চমকে উঠলাম যেন। ফিস ফিস শব্দ কানে এলো, “আজ রাতও খোলা থাকবে তো? একটু আলো জ্বেলে রেখো।” রাস্তায় গাড়ি নেই, তবুও যেন পা দুটো কেউ রাস্তার উপর গেঁথে দিয়েছে আমার। নড়তে পারলাম না। প্রায় কয়েক সেকন্ড পর একটু ধাতস্থ হয়ে পিছন ঘুরে দেখলাম কেউ নেই। এইবার কিন্তু ও আমাকে ছোঁয় নি, তার কারণ বোধহয় এখানে আলো ওই জায়গার থেকে কিছুটা হলেও বেশী, আর তাছাড়া সিগারেটের দোকানদারটার সামনে বোকা বোকা কিছু করে পুরো জিনিসটা কেচিয়ে দিতে চায় না। বিশ্বাস অর্জন করতে চাইছে কি আমার? মনে মনে হেঁসে ফেললাম। ধীরে ধীরে কাঁপা কাঁপা পা নিয়ে রাস্তা পাড় করলাম। আজ চাঁদের আলো কালকের থেকে অনেক কম। ভেতরটা বার বার কেঁপে কেঁপে উঠছে। হ্যান্দব্যাগ থেকে তোয়ালে রুমালটা বের করে মুখের ঘাম মুছে নিলাম। রুমালটা কাঁপা হাতে বের করতে গিয়ে ভেতরের ন্যাপকিণটা রাস্তায় পড়ে গেল। উফফ কি যে করছি না। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একজন ভদ্রলোক আর তার গিন্নি আমার রাস্তায় পড়ে থাকা নতুন ন্যাপকিনের প্যাকেটটার দিকে একটা নজর হেনে চলে গেল। তাড়াতাড়ি রাস্তা থেকে তুলে আবার ব্যাগে ভরে নিলাম ন্যাপকিনের প্যাকেটটা। এমনিতে প্যাকেটটা খবরের কাগজে মোড়াই ছিল। কিন্তু ব্যাগের মধ্যে চাপা চাপি করে সেট করার চক্করে সেই কাগজের মোড়ক আলগা হয়ে খুলে গেছে। আর তার পরেই এই লজ্জাজনক বিপর্যয়।
বাড়ি ঢুকতেই শান্তাদির মুখোমুখি পড়লাম। আমাকে দেখেই এক গাল হেঁসে বললেন “যাক তাহলে এতক্ষনে বাড়ি ফেরা হল। বিয়ের পর বর টিকলে হয়। তাড়াতাড়ি এসো এখন। আমার তো আবার ঘুম পেয়ে গেল। “ আমি একটা ছোট্ট সরি বলে প্রায় দৌড়ে উপরে উঠে গিয়ে হাত ধুয়ে খাওয়ার জন্য নেমে এলাম। অবশ্য ঘরে ঢুকেই প্রথম কাজটা করেছিলাম যেটা সেটা হল ওই দিকের জানলাটা খুলে দেওয়া। ছেলেটা খেতে গেছে, তাই এখনই টর্চের সংকেত আশা করা বোকামি। ঘরটা এমনিতে গুমোট হয়ে আছে। বাইরের বাতাস ঢুকে একটু ঠাণ্ডা করুক ততক্ষণে। ভেতরটা যা গরম হয়ে আছে, তাতে ঘরটা একটু ঠাণ্ডা না হলে রাতে ঘুমাতে পারব না। আমার মুখে হাঁসি হাঁসি ভাব দেখে শান্তাদি আমাকে ফস করে জিজ্ঞেস করে বসলেন “কি হয়েছ, হাঁসছ যে?” আমি প্রথমে একটু থতমত খেয়ে গেলেও এক মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম “আরে দূর হাসছি কই। হাঁসপাতালের একটা কথা মনে পড়তে হঠাত হাঁসি পেয়ে গেল। কিন্তু আমার জন্য আপনার খুব কষ্ট হয় না? সারা দিনের খাটা খাটুনির পর এত রাত অব্দি জেগে বসে থাকতে হয় আপনাকে?” শান্তাদি বললেন “ আজ একটু বেশী দেরী হয়ে গেল, কি ব্যাপার?” বললাম “তেমন কিছু না কাজ পড়ে গিয়েছিল।” কথা ঘোরানোর জন্য বললাম “অদিতির কোনও খবর আছে?” বললেন “ না তেমন কিছু পাই নি আজ। “ আমি আর কথা না বাড়িয়ে খাবারে মন দিলাম। খেতে বসার পরে বুঝতে পেরেছি খুব জোড় খিদে পেয়ে গিয়েছিল যেটা যৌনতার উত্তেজনায় ভুলতে বসেছিলাম। খেয়ে দেয়ে শান্তাদিকে মন থেকে একটা ধন্যবাদ জানিয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম। আজ ঘরে আসার পর আর ফ্রেশ হতে মন চাইল না। সত্যি শান্তাদির কথা ভাবলে মাঝে মাঝে খারাপ লাগে। গ্রামের মেয়ে হিসাবে দেখতে খারাপ নন। কিন্তু এত অল্প বয়সে এরকম একটা বয়স্ক বরের গলায় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এখন এই বয়সে যখন সব মেয়েরা বরের গলা জড়িয়ে পড়ে পড়ে রাতের মুহূর্তগুলো উপভোগ করে তখন ইনি বরের থেকে আলাদা হয়ে একা একা রাতের তারা গোনেন। সত্যি কি পোড়া কপাল ওনার। আর ওনার বর এই বয়সে আর দাঁড়ায় বলে তো মনে হয় না। যাই হোক। পোশাক পরেই একবার খোলা জানলাটার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার ব্যাকুল চোখ এই মুহূর্তে সেই টর্চের আলোর ঝলকানির খোঁজ করছে বাইরের অন্ধকারে। না কোথায় খেতে যায় কে জানে। এত তাড়াতাড়ি কি ফিরবে। আমি শালোয়ারের গিটটা খুলতে যাচ্ছি, হঠাত খেয়াল হল পিছনে দরজাটা খোলা। উফফ বাজে চিন্তা মাথায় এলে আমার আর কোনও দিকে হুঁশ থাকে না। এত ক্যাবলা আর ভুলো হলে মহা বিপদে পড়ব। কোনও দিন হয়ত দরজা খোলা রেখে নগ্ন হয়ে ঘুমিয়ে পড়ব। পরের দিন শান্তাদি এসে সব দেখে ফেলবে। গিয়ে দরজাটায় খিল তুলে দিলাম। সারা দিনের বাসী ঘামে ভেজা নোংরা কাপড় গুলো গা থেকে খুলে বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে আবার জানলার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম আমার ব্যাকুল নগ্ন শরীরটা নিয়ে। না এই বারও প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে ঘরের মধ্যে আলো জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেও সেই আলোর হদিশ পাওয়া গেল না। মাল নিশ্চই এখনও ফেরেনি। ঠিক আছে। বাকিরা সব শুয়ে পড়েছে। একটু দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে করছে হঠাত। নগ্ন অবস্থাতেই আলো জ্বেলে রেখে একবার দরজার খিল খুলে দিয়ে ঘরের বাইরেটা ভালো ভাবে দেখে নিলাম। না আমার ঘরের বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। শুধু হালকা চাঁদের আলো, তবে আজ চাঁদ বাবা জীবন মেঘের আড়াল থেকে বেরনোর জন্য যুদ্ধে লিপ্ত। আলো কালকের মতন তীব্র নয়। দরজাটা ভালো ভাবে ভেজিয়ে রেখেই নগ্ন ভাবে আমার কাপড় রাখার জায়গায় এগিয়ে গিয়ে সবুজ রঙের শুঁকনো তোয়ালেটা তুলে নিয়ে গায়ে আলগা ভাবে জড়িয়ে নিলাম। তোয়ালেটা গোল করে নিজের গায়ের ওপর জড়িয়ে ধরে একবার আয়নায় নিজেকে দেখলাম ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। উফফ কি লাগছে আমাকে। খেয়াল রাখা ভালো কারণ দরজাটা কিন্তু শুধু আব্জে রাখা আছে। আমার খেয়াল আছে, আপনাকে আবার মনে করিয়ে দিলাম ব্যাপারটা। কেউ এলেই মহা বিপদে পড়ে যাব। নিজের লজ্জা ঢাকার মতন কিছুই হাতের কাছে বের করে রাখি নি। কিন্তু কেউ এলো না। প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে হঠাত করে কি হল যে এরকম উত্তেজিত হয়ে উঠলাম। কিছুই না, এখন আমার এইসব কাজের পেছনে যে মানসিক অবস্থা কাজ করে চলেছে সেটার ব্যাখ্যা করে দেখলে শুধু একটাই কথা বলা যায়, মন চাইছে টর্চের আলো, কিন্তু টর্চের আলো দেখতে না পেয়ে ভেতরটা আনচান করতে শুরু করে দিয়েছে। ওই লোকটা আমাকে বাইরে থেকে চোরের মতন তাকিয়ে তাকিয়ে না দেখলেও এখন এই মুহূর্তে একটু অভিযান করার নেশা আমাকে পেয়ে বসেছে।
নিজের মুখে নিজের প্রশংসা করা উচিৎ নয়, কিন্তু আয়নায় যা দেখলাম তাতে নিজেকেই নিজে বাহাদুরির জন্য একটা চুমু না দিয়ে পারলাম না। সত্যি অদ্ভুত সেক্সি দেখতে লাগছে আমাকে। সবুজ রঙের রোঁয়া ওঠা তোয়ালেটা আমার নগ্ন স্তনের মাঝ বরাবর চলে গেছে, অর্ধেকের বেশী স্তন বিভাজিকা, পুরো ঘাড় কাঁধ আর গলা তোয়ালের উপরে নগ্ন। আয়নাটা একটু নামিয়ে দেখলাম, তোয়ালেটা কোনও মতে আমার নগ্ন যোনী দেশটা ঢেকে রেখেছে। অর্ধেকের বেশী থাই আর পুরো নির্লোম পা দুটো তোয়ালের নিচে খোলা। পিছন দিকটা দেখার জন্য একটু কসরত করতে হল। কারণ হাত ঘুরিয়ে বেঁকে আয়নাটা পিছন দিকে ধরতে হয়েছে। উপর দিকটা ঠিক আছে, পিঠের মাঝ বরাবর চলে গেছে কর্কশ তোয়ালেটা, অর্ধেকের বেশী পিঠের উপরিভাগ নগ্ন। পিঠের ওপর বিন্দু বিন্দু ঘামের আভাষ দেখতে পেলাম ঠিক যেমন জমেছে স্তন বিভাজিকার ওপর। পাছার মাঝ অব্দি তোয়ালেটা ঢেকে রাখতে সক্ষম হয়েছে, তোয়ালের তলা দিয়ে পাছার ফরসা ফোলা ফোলা মাংসল অংশের বাকি অর্ধেকটা বেড়িয়ে থেকে অদ্ভুত সেক্সি লাগছে। শরীরটাকে বেঁকিয়ে হাত পিছনে রেখে পিছন দিকটা দেখতে গিয়ে আলগা অবাধ্য তোয়ালেটা একবার মাটিতে পড়ে গেল। উফফ কি অদ্ভুত রোমাঞ্চ লাগছে না! ঘর আলোয় আলোকিত। দরজা ভেজানো। আমি ঘরের মাঝখানে আয়না হাতে দাঁড়িয়ে আছি, সারা গায়ে একটা সুতো পর্যন্ত নেই। তোয়ালেটা সাপের মতন বেড়ি করে পায়ের চারপাশে গোল হয়ে পড়ে আছে। একবার বন্ধ দরজার দিকে দেখে নিয়ে নগ্ন ভাবেই হেঁটে গিয়ে জানলার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। মিনিট খানেক দাঁড়িয়ে থেকেও সেই টর্চের আলোর হদিশ না পেয়ে আবার বিছানার কাছে ফিরে এসে মাটি থেকে তোয়ালেটা তুলে নিয়ে আগের মতন করেই আবার নিজের শরীরের ওপর ওটাকে আলগা ভাবে জড়িয়ে নিয়ে বা বগলের তলায় তোয়ালের একটা কোণা আলগা ভাবে গুঁজে রাখলাম। আলোটা নিভিয়ে দিয়ে দরজা খুলে এই অবস্থাতেই ঘরের বাইরে এসে দাঁড়ালাম। ঘরের বাইরে পা রাখতেই নগ্ন স্তন বিভাজিকা সমেত স্তনের অনাবৃত উপরিভাগে, গলায় আর নগ্ন কাঁধের উপর বাইরের ঠাণ্ডা হাওয়ার পরশ লাগলো, এক অশ্লীল গা ছম ছম করা নিষিদ্ধ উত্তেজনায় সারা শরীরটা তিরতির করে কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে। বা বগলের তলায় হাত দিয়ে তোয়ালের কোণাটা একটু ভালো ভাবে গুঁজে দিলাম। এই প্রায় নগ্ন অবস্থাতেই আস্তে আস্তে হাঁটতে শুরু করলাম সামনের দিকে। ছন্দাদের ঘরের বন্ধ দরজার সামনে চলে এসেছি, কয়েক মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে থাকলাম ওদের ঘরের সামনে। যোনীর ভেতরে তোলপাড় হতে শুরু করেছে। শরীরে কারোর ছোঁয়া নেই, শুধু মাত্র বাইরের শীতল হাওয়া আমার শরীরটাকে আস্তে আস্তে আদর করে দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও বুঝতে পারছি বোঁটা গুলো অদ্ভুত ভাবে শক্ত হয়ে উঠেছে ঘরের বাইরে পা রাখার সাথে সাথে। অন্ধকার বাড়ির মধ্যে এই ভৌতিক পরিবেশে প্রায় নগ্ন ভাবে এগিয়ে চলল আমার দুটো পা সিঁড়ির দিকে। সিঁড়ির নিচে একবার উঁকি মেড়ে দেখে নিলাম। না কেউ নেই। নিচটা পুরো অন্ধকার। আস্তে আস্তে সিঁড়ি বেয়ে নামতে শুরু করলাম। পুরো সিঁড়িটা অন্ধকার, আর এখন আলো জালানো যাবে না, তাই ডান হাত রেলিঙ্গে চেপে রেখে আর বা হাতটা দেওয়ালের ওপর রেখে খুব ধীরে ধীরে মেপে মেপে পা ফেলতে হচ্ছে প্রত্যেকটা ধাপে, নইলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, আর এই অবস্থায় পড়ে গেলে যে কি হবে সেটা ভাবতেই কেমন যেন গায়ে কাঁটা দিল। অর্ধেকটা নেমেছি হঠাত বুঝতে পারলাম তোয়ালেটা আমার শরীরের ওপর থেকে যেন ধীরে ধীরে আলগা হয়ে নেমে যাচ্ছে। এক মুহূর্তের মধ্যে বুঝতে পারলাম যে বা বগলের তলায় গুঁজে রাখা তোয়ালের কোণাটা আলগা হয়ে বেড়িয়ে এসেছে। কিছু করে উঠবার আগেই তোয়ালেটা আবার আমার শরীরের উপর থেকে নিজের আবরণ সরিয়ে নিয়ে নিচে লুটিয়ে পড়ল পায়ের চারপাশে গোল করে। ইশশ এই রাত্রে বেলায় নির্জন অন্ধকার সিঁড়ির মাঝে আমি নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। এক মুহূর্তের জন্য যেন আমার হৃৎস্পন্দন বন্ধ হতে বসেছিল। না কোথাও কোনও শব্দ নেই, নেই কোনও আলোর আভাষ। একটু ধাতস্থ হয়ে ধীরে ধীরে নিচের দিকে ঝুঁকে তোয়ালেটা তুলে নিয়ে আবার আগের মতন করে জড়িয়ে নিয়ে আবার ধীরে ধীরে নিচে নামতে শুরু করলাম। নিচের দুটো ঘরের পাশ দিয়ে আস্তে আস্তে নিঃশব্দে হেঁটে পাড় হয়ে গেলাম। এ যে কি অনুভুতি সেটা লিখে বোঝানো অসম্ভব। সিঁড়ির কাছে এসে একবার শান্তাদির ঘরের দরজার দিকে গিয়ে উঁকি মারলাম। ভেতর থেকে ফ্যানের শব্দ কানে আসছে। দরজা বন্ধ, দরজার তলা দিয়ে কোনও আলোর ঝিলিক দেখতে পেলাম না। ক্লান্ত শরীর নিয়ে উনি নিশ্চই ঘুমিয়ে পড়েছেন। দেওয়ালে হাত রেখে ধীরে ধীরে এগিয়ে চললাম সিঁড়ির দিকে। খুব বেশী হলে মেপে মেপে তিন ধাপ উঠেছি সিঁড়ি বেয়ে। হঠাত একটা খুঁট মতন শব্দ পেলাম দোতলায়। ছন্দাদের ঘরের দরজা খোলার শব্দ। কোনও শব্দ না করে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লাম সেখানেই। ভাবছি কি করব এখন।
কথায় বলে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়। এক ফোঁটা নড়বার সাহস নেই। কারণ নড়লে যদি শব্দ হয় তো মহা বিপদ। ওপরের আলো জ্বলে উঠলো। কারুর একটা পায়ের শব্দ। সিঁড়ির দিকেই এগিয়ে আসছে। ঠিক এই সময় তোয়ালেটা আবার আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে আমার শরীরের থেকে তৃতীয়বারের জন্য নিচে পড়ে গেল। সিঁড়ির উপরে আলো জ্বলে উঠল। আমার হৃত স্পন্দন বন্ধ ভীষণ তীব্র হয়ে উঠেছে এক সেকন্ডে। এই বার কি করব? কেউ যদি নিচে নেমে আসে। উপরে জ্বলে ওঠা আলোর কিছুটা নিচের দিকের সিঁড়ির ধাপ গুলকেও আলোকিত করে তুলেছে। আবছা আলোয় নিজেকে একবার দেখলাম। দরদর করে ঘামিয়ে চলেছি। ঘামের ফোঁটা গুলোর ওপর আলোর আবছা কিরন এসে পড়ায় সারা শরীরটা চকচক করছে। নড়বার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। কান খাড়া উপরের দিকে। না পায়ের ধাপটা সিঁড়ির দিকে এলো না। সিঁড়ির মুখ পাড় করে বাথরুমের দিকে চলে গেল। বাথরুমের দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ পেতেই যেন হুঁশ ফিরে পেলাম। কোনও মতে তোয়ালেটা মাটি থেকে তুলে নিয়ে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থাতেই দৌড় মারলাম উপরের দিকে। এখন আর তোয়ালে দিয়ে শরীর ঢাকার সময় নেই। বাথরুম থেকে বেড়িয়ে যদি সে নিচের দিকে আসে তো ফেঁসে যাব। এখন আর পা মেপে মেপে ফেলতে হচ্ছে না কারণ আবছা আলোয় প্রতিটা ধাপ পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি। দৌড় শুরু করার সময় বুঝতে পারলাম যে অসম্ভব রকম জোড়ে জোড়ে ওঠানামা করে চলেছে আমার নগ্ন স্তন গুলো। বোঁটাগুলো এখনও সেই একই রকম পাথর হয়ে রয়েছে। একফোঁটা দৌড়া দৌড়ী করি নি এতক্ষন, কিন্তু কেমন যেন হাঁপ ধরে গেছিল উত্তেজনায়। কিন্তু এখন জিরিয়ে নেওয়ার সময় নেই। অনুভব করলাম দৌড়ানোর সময় প্রতিটা পদক্ষপের সাথে সাথে আমার নগ্ন স্তন গুলো আমার বুকের উপর উদ্যাম বাঁধনহীন ভাবে লাফিয়ে উপর নিচ করে চলেছে। অন্য সময় হলে হয়ত একটা হাত দিয়ে স্তন গুলো কে বুকের সাথে চেপে ধরে ওদের এই লাফালাফি বন্ধ করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু এখন সেই সব করার কথা মাথায় এলো না। সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছে বা দিকে ঝুঁকে একবার বাথরুমের দিকে দেখে নিলাম। না দরজা বন্ধ ভেতর থেকে। ডান দিকে একটু বেঁকে সামনের দিকে ঝুঁকে দেখলাম ছন্দাদের ঘরের দরজা হাঁ করে খোলা। এখন শব্দ করা যাবে না। তাই আর দৌড়াতে পারলাম না। পা টিপে টিপে প্রায় কোনও শব্দ না করে যতটা সম্ভব দ্রুত নিজের ঘরের দিকে নিয়ে চললাম নিজের নগ্ন শরীরটাকে। বাইরের দালানটা হলদে বাল্বের আলোয় উজ্জ্বল ভাবে আলোকিত। আর সেইখানে আমি রাত্রে বেলায় সম্পূর্ণ নগ্ন ভাবে ডান হাতে একটা তোয়ালে নিয়ে চোরের মতন সন্তর্পণে হেঁটে চলেছি। ওদের ঘরের দরজা পাড় করে দু পা এগতেই বাথরুমে জলের শব্দ পেলাম। বাইরেটা নিঃশব্দ, শুধু আমার বুকের ধুকপুক আর ঘন নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ ছাড়া কোনও শব্দ নেই। জলের শব্দ পেতেই বুঝতে পারলাম যে কাজ সারা হয়ে গেছে। এখন পা টিপে টিপে গেলে আর দেখতে হবে না। জানি না কে গেছে বাথরুমে। যেই গিয়ে থাকুক না কেন, সে বেড়িয়ে এলেই এই পূর্ণ আলোয় আমার নগ্ন শরীরটা দেখতে পাবে। ভাবার আর সময় নেই। দৌড় মারলাম নিজের ঘরের দিকে। দরজা খোলাই রেখে গিয়েছিলাম। ঘরের ভেতর ঢোকা অব্দি বাথরুম খোলার শব্দ পাই নি। আর পেছন দিকে ঘুরে দেখার সাহস বা সুযোগ বা সময় কোনওটাই আর এখন আমার হাতে নেই। ঘরে ঢুকেই যতটা পারি নিঃশব্দে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলাম, এইবার আর বেশী সাহস দেখালাম না। খিল তুলে দিলাম ভালো ভাবে। আলো জ্বালাতে পারলাম না। নিজের ঘরের ভেতরেই চোরের মতন কোনও শব্দ না করে বিছানায় গিয়ে বসে পড়লাম। নিজের কানে নিজের ঘন নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের আর হৃতস্পন্দনের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। স্তন গুলো এখনও অল্প অল্প কেঁপে চলেছে। যদিও দৌড় থামিয়ে দিয়েছি কয়েক সেকন্ড হয়ে গেছে। শব্দ হওয়ার ভয়ে ফ্যানটাও চালাই নি। সারা গায়ে ঘামের ঘন ঘটা। বেশ কয়েকটা ঘামের ফোঁটা শরীরের উপরিভাগ থেকে আমার শরীরের নগ্নতার স্বাদ গ্রহণ করতে করতে নিচের দিকে কল কলিয়ে নেমে চলেছে অনবরত। এখনও আমার কান খাড়া বাথরুমের দিকে। দরজা খোলার শব্দ পেলাম। একটু পরে আলো নিভে গেল। ওদের ঘরের দরজা বন্ধ হওয়ার শব্দ পেলাম অবশেষে। মুখ দিয়ে আপনা থেকেই একটা চাপা উফফ মতন শব্দ বেড়িয়ে গেল।