18-10-2019, 02:27 PM
পরের পর্ব
পা দুটো বেঁকিয়ে ফাঁক করে শুয়ে থাকায় ওনার চাপা স্কার্টটা একটু ফুলে উঠে কালো রঙের দাগ পড়া নোংরা থাইয়ের ত্বক বেয়ে অনেকটা উপরের দিকে উঠে গেছে। ওনার পায়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওনার চাপা স্কার্টটার ভেতরে পরা ডিপ কালো রঙের ভি কাট প্যানটিটা স্পষ্ট দেখতে পেলাম। আমাকেও এরকম কয়েকটা ভি কাট প্যানটি কিনতে হবে। বেশ স্টাইলিশ তাতে সন্দেহ নেই, আর পায়ের দু পাশটা খালি থাকায় বেশ আরামদায়ক হয় বলেও শুনেছি। উনি চোখ বুজে শুয়ে একটু জিড়িয়ে নিলেন। “সেই কখন বেড়িয়েছি, রাস্তায় ভাবছিলাম কখন এই বৃষ্টি শুরু হয়। ভয়ে ভয়ে ছিলাম। যা কালো হয়ে আছে বৃষ্টি শুরু হলে আর গাড়ি চালাতে হত না। “ চৈতালিদি একটু ধমকের স্বরে বললেন “তুই আজকেও নিজে ড্রাইভ করে এসেছিস। তোকে না গতকাল বললাম ড্রাইভার ছাড়া আসবি না এরকম সময়। তোর কোনও হুঁশ থাকে না। কিছু একটা ভালো মন্দ হয়ে গেলে কে দেখবে?” রমাদি চোখ না খুলেই বললেন “জীবনটাই তো ভালো মন্দ হয়ে গেছে, আর কি হবে। আর তাছাড়া সেই দুপুরে বেড়িয়েছি, অনেকগুলো কাজ ছিল। সব কটা সারলাম। আমাদের ড্রাইভারটা আজ ডুব। অন্য ড্রাইভার নিতে হলে ওই কাছের একটা জায়গা থেকে ভাড়া নিতে হবে। কেমন ড্রাইভার হবে কে জানে। আমি চালালে অ্যাকসিডেন্ট হতে পারে। বাজে ড্রাইভার হলে ছিনতাই, লুট আরও কত কি হতে পারে। ” চৈতালিদি বললেন “হ্যাঁ যা সব কেস শুনি, রেপ কেসের কথা পড়লাম পেপারে সেদিন একটা। মেয়েটা পার্টি থেকে রাতে একা ফিরছিল ...” রমাদি মাঝপথেই চৈতালিদিকে ঝামা দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বললেন “আমি রেপ কে ভয় পাই না। এত গুলো ছেলের সাথে শুয়ে ফুর্তি করে এখন আবার রেপের ভয়। মারধোর না করলেই হল। যখন চুদবে ভেবে নেব আমি স্বেচ্ছায় শুচ্ছি, ব্যস তাহলেই হল। অত ন্যাকামি করা আমার আর তোর মানায় না। কিন্তু হ্যাঁ ফিসিকাল ড্যামেজ করলে বিপদ। আর তাছাড়া, টাকা পয়সা গয়না গাটি নিয়ে নিলে আরও বিপদ।” আমি নিজেকে খুব বেপরোয়া বলে ভাবি। তবে এনাদের মতন বেপরোয়া হয়ে উঠতে এখনও দেরী আছে। ওনার মুখটাকে ভালো ভাবে আজ আবার দেখলাম। না সুন্দরী না হলেও কালো ব্রণর দাগ ভরা মুখে বেশ একটা লাবন্য আছে মানতেই হবে। তবে দাগ গুলো সেই লাবন্য ভাব টাকে চাপা দিয়ে দিয়েছে। চোখ খুলেই আমার সাথে ওনার চোখা চুখি হল। “কি ভাবছ অদ্ভুত মহিলা আমি তাই তো? রেপ শুনেও বলে ফুর্তি করে নেব। “ হো হো করে হেঁসে উঠলেন জোড়ে। “এত গুলো লোকের সাথে শুয়েছি ফুর্তি করার জন্য। এখন কেউ যদি হঠাত আমাকে পেতে চায় তখন সেটাকে রেপ বলে ন্যাকামি করার মানে হয় কি? আর ওই যে কথায় আছে না, রেপ যখন হবেই, তখন কামনার অনুভূতি জাগাও নিজের মধ্যে আর ব্যাপারটাকে উপভোগ কর। ব্যস তাহলেই কোনও সমস্যা নেই। “ কথাটাও আমিও জানতাম, তবে এনার জীবনে তার যে এত বড় যৌক্তিকতা বা প্রাসঙ্গিকতা থাকতে পারে সেটা নিজের কানে না শুনলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। আমি হেঁসে বললাম “না কিছুই অদ্ভুত নয়। যে যেভাবে দেখে। “ উনি উঠে বসলেন। একবার ডান হাতটা মুড়ে দামি ঘড়িটায় সময় দেখে নিয়ে বললেন “চল গ্লাস তৈরি কর। বসা যাক। আর চৈতালি তোর সাথে কিছু ব্যক্তিগত কথা আছে। “ ব্যক্তিগত কথা? আমার কি চলে যাওয়া উচিৎ? উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন “তোমার সামনেই হতে পারে সেই সব কথা। তুমি ছেলে হলে আলাদা ব্যাপার হত। কিন্তু মেয়েতে মেয়েতে এই সব কথা শেয়ার করায় কোনও ক্ষতি নেই। তুমিও আমাকে বা আমাদের কিছু মতামত জানাতে পারো। “
গ্লাসে একটা একটা করে বড় পেগ বানিয়ে বসে পড়লাম আমরা। আজ অন্যদিনের থেকে একটু ব্যতিক্রম হল। এতদিন কেউ না কেউ আমার পেগ বানিয়ে দিত। আজ আমি সবার পেগ বানালাম। তাতে একটা সুবিধা হল। নিজের পেগটা সব থেকে ছোট বানিয়েছি। আজ আউট না হয়ে এদের কথাগুলো গিলব। নিশ্চই কিছু জরুরি কথা বলতে চান রমাদি, নইলে এই পরিবেশে এত সিরিয়স ভাবে কথাগুলো বললেনই বা কেন। রমাদি আর চৈতালিদির পেগ দুটো মোক্ষম বানিয়েছি। পেগ বানাতে বানাতে শুনলাম চৈতালিদি বললেন “তুই যখন কলিং বেল বাজালি, আমি তখন স্ন্যাক্সের অর্ডার গুলো দিয়ে দিয়েছি। একটু হালকা ফুলকাই দিয়েছি। পরে লাগলে অনেক সময় আছে হাতে, আবার বলে দেওয়া যাবে। বাড়িতে এসেই দিয়ে যাবে। পরে ডিনারটা বলে দেব।” আমি মাথা না ঘুড়িয়ে একটু আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলাম “কত পড়ল টোটাল? মানে কতটা শেয়ার করব বলে দেবেন।” দুজনেই একসাথে ধমকে উঠলেন “তোমাকে আর ন্যাকামি করতে হবে না। নাক টিপলে এখনও দুধ বেরোয় খুকির, সে আবার আমাদের টাকা দেখাচ্ছে। শেয়ার করবে। কিচ্ছু লাগবে না। শুধু খাও আর মজা করো। কাল তো ছুটি তোমার।” আমি এইসব ব্যাপারে ভীষণ কান কাটা। আমি আর এই নিয়ে কোনও কথা বাড়াইনি। শেয়ার নিয়ে আর জোড়া জুড়ি করিনি। স্ন্যাক্স আসতে সময় লেগেছিল কারণ বাইরে তখন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। চিয়ার্স করে কয়েকটা চুমুক মারার পর রমাদি প্রথম মুখ খুললেন। চৈতালিদির কথায় আমি উঠে ব্যালকনির দরজাটা খুলে দিয়েছি। বাইরের ঠাণ্ডা ভেজা হাওয়া ঢুকে ঘরটাকে ভীষণ ঠাণ্ডা করে দিয়েছে। আর তার সাথে বাজের শব্দ। বেশ একটা থম থমে অথচ জমজমাট ব্যাপার। “তোর বড় ছেলে কোথায়?” চৈতালি দি বললেন “বোধহয় সমুদ্রে গেছে বন্ধু বান্ধবের সাথে।” রমাদি একটু ভুরু কুঁচকে বললেন “তুই কাল বলেছিলি ও দীঘা গেছে তাইত?” চৈতালিদি মাথা নেড়ে সায় দিলেন, চুমুক দিয়ে গ্লাসটা এক পাশে রেখে বললেন “সেরকমই বলে গেছে।” রমাদি একটু চিন্তার স্বরে বললেন “সেরকম বলে গেছে মানে? মানে তুই ঠিক করে জানিস না কোথায় গেছে?” চৈতালিদি মাথা নাড়িয়ে না বুঝিয়ে দিলেন। “জানিসই তো ও আমার কোনও কথা শোনে না। জিজ্ঞেস করেছিলাম, বলেছিল দীঘা যাচ্ছি বন্ধুদের সাথে, গাড়ি বুক করা হয়ে গেছে। আমার থেকে বেশ কিছু টাকাও নিয়ে গেছে। “ রমাদি একটু চুপ করে থেকে বললেন “একটা জিনিস জানিস, এখন পর পর দুদিন ছুটি বলে দীঘায় পুরো ভিড় উপচে পড়ে। মানে কলকাতার ধারে কাছে এর থেকে শস্তা জায়গা আর নেই যেখানে ঘুরতে যাওয়া যায়। “ আবার একটু থামলেন, “ আজ সকালে আমাদের এক রিলেটিভ ফোন করেছিল। আমি তখনও ঠিক ঘুম থেকে উঠতে পারিনি। তাই ওকে আবার পরে করতে হয়েছিল। “ চৈতালিদি বললেন “ কি বলেছেন?” রমাদি জবাব দিলেন “দুদিন ছুটি পেয়ে ওরাও ফ্যামিলি নিয়ে দীঘায় গেছে। ওরা রাখীকে ওদের হোটেলে দেখেছে। রাখীও আমাকে বলে গেছে যে কিছু বান্ধবীর সাথে ধারে কাছে কোথাও বেড়াতে যাচ্ছে। তবে দীঘা বলে নি। বলেছিল অন্য জায়গা। সে যাই হোক। এখন কথা হল, যে ফোন করেছিল ওর বক্তব্য ওরা রাখীকে আর তিনটে ছেলেকে একসাথে ওদের হোটেলে দেখেছে। এবং ওর ধারণা ওরা চারজনেই একটা বড় ঘর ভাড়া করে একটা বেড এক্সট্রা ভাড়া করে একই সাথে আছে। মানে ” ওনার মুখে একরাশ চিন্তার রেখা ফুটে উঠেছে। চৈতালিদির মুখেরও একই অবস্থা। হয়ত আমার নিজের মুখটা এই মুহূর্তে দেখতে পেলে আমাকেও ওরকমই দেখাত। অবশ্য বীরের কাছ থেকে এই জিনিস আমার গতকালই শোনা হয়ে গেছে। তাই এর মধ্যে নতুন কিছু নেই। তবু বুঝতে দিলাম না যে আমি এই জিনিসটা ইতিমধ্যে জেনে গেছি। তবে এটা জানতাম না যে রাখী এখন দীঘায় গিয়ে তিনটে ছেলের সাথে একই ঘরে আছে। ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগলো। অবশ্য এটা জানার কথা বীরের নয়। রমাদি বলে চললেন “ ও দুপুরেও আমাকে আবার ফোন করেছিল। রাখীর সাথে ওর সামনা সামনি হয়েছিল একবার। রাখী নাকি এত ড্রাঙ্ক ছিল যে ওকে এত কাছ থেকে দেখেও চিনতে পারেনি। ওই তিনটে ছেলেরও একই অবস্থা। ওদের চার জনের গা থেকেই প্রচুর মদের গন্ধ বেরোচ্ছে। ওরা একই ঘরে আছে এটা ও হোটেল থেকে চেক করে জেনেছে। যদিও ছেলে গুলোর নাম হোটেল থেকে জানায় নি, কারণ সেটা জানানো ওদের বারণ। কিন্তু ও দেখেছে ওরা একই ঘর থেকে বেরোচ্ছে , একই ঘরে গিয়ে ঢুকছে। এর থেকে বেশী আর কিছু বলতে পারলো না। বলল আর কিছু দেখলে ফিরে এসে জানাবে। কাল বিকেলে ফিরছে ও আর ওর ফ্যামিলি।“ রমাদি আবার একটু থেমে বললেন “আমি তোর ছেলের ব্যাপারে জানি না। কিন্তু ওরা দুজনেই দীঘা গেছে, মানে ব্যাপারটা কি কাকতালীয়?” আমি আর চৈতালিদি দুজনেই বুঝলাম যে রমাদি কি বোঝাতে চাইছেন। আমি একটু বোকা সেজে জিজ্ঞেস করলাম “ মানে ওরা কি দুজন দুজন কে চেনে?” আমি একটু বুঝে নিতে চাই যে এই দুজন বেপরোয়া মহিলা নিজেদের সন্তান সন্ততির ব্যাপারে কতটা খবর রাখেন। দুজনেই একসাথে মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে রাখী আর চৈতালিদির সুপুত্র দুজন দুজন কে চেনে। আমার আর কিছু বলার নেই। রমাদি বললেন “তুই হোটেলের নাম জানিস না, তাই না?” চৈতালি কিছু বলার আগে আমি বলে দিলাম যে যেদিন এই নিয়ে কথা হয়েছিল সেদিন আমিও সামনে ছিলাম, ও ঠিক খোলা খুলি ভাবে কিছুই বলেনি বার বার জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও।
রমাদির মুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম উনি অনেকগুলো না বলা প্রশ্ন নিরবে চৈতালিদির দিকে ছুঁড়ে দিয়েছেন। চৈতালিদির ভুরু কুঁচকে আছে ঠিকই কিন্তু কিছুই বলছেন না। আমি নিরবটা ভেঙ্গে চৈতালিদিকে জিজ্ঞেস করলাম “ আপনি কি জানেন যে ওদের মধ্যে এরকম ঘনিষ্ঠতা আছে কিনা।” আমি জানি চৈতালিদি জানেন। কারণ ওই রাতে বীর আর রথী (ওনার বড় ছেলের ডাক নাম) রাখীকে নিয়ে চৈতালিদির সামনেই ঝগড়া করছিল। আর চৈতালিদি মধ্যস্থতা করে ওদের চুপ করাচ্ছিলেন। চৈতালিদি নিজের গ্লাসের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলেন। আমি জানি উনি এখন সঠিক শব্দ চয়ন করার চেষ্টা করছেন। বাইরে ঝুম ঝুম বৃষ্টি আর বাজের আওয়াজ ছাড়া ঘরে আর কোনও শব্দ নেই। আমি হঠাত কি মনে হওয়ায় জিজ্ঞেস করলাম “আচ্ছা বীর আর রথী তো একই ঘরে থাকে। তেমন কিছু থাকলে নিশ্চই ও কিছু জানতো বা বলতে পারতো। “ এই প্রশ্নের মধ্যে আমার আরেকটা প্রশ্ন লুকিয়ে ছিল। সেটা হল, বীর এখন কোথায়। চৈতালিদি এইবারও মুখ খুললেন না। শুধু এক মনে নিজের গ্লাসের দিকে চেয়ে রইলেন। জল ভর্তি গ্লাসটা ওনার ফর্সা কোলের উপর রাখা, ঠাণ্ডা গ্লাসের গায়ের বাইরে ফোঁটা ফোঁটা হয়ে জমা জল গড়িয়ে পড়ে ওনার নির্লোম থাইয়ের অনেকটা উপরের অংশ আর চাপা জিন্সের শর্টসের সামনে যোনী দেশের উপরের ঢাকা জায়গাটা ভিজিয়ে দিয়েছে, যোনীদেশের উপরের জায়গায় একটা অশ্লীল কালো ভেজা ছোপের সৃষ্টি হয়েছে। ওনাকে দেখে মনে হল না এই ঠাণ্ডা স্পর্শে বা ওই অশ্লীল ভেজা ছোপের দিকে ওনার কোনও নজর আছে। উনি এখন অন্য কোনও জগতে বিচরণ করছেন। আবারও আমি বললাম “ আমি থাকাতে কথা বলতে অসুবিধা হলে আমি না হয় কিছুক্ষণ অন্য ঘর থেকে ঘুরে আসছি। আপনারা কথা শেষ করে নিন। “ আমি বিছানার ধার থেকে উঠতে যাচ্ছিলাম চৈতালিদি আমার হাতটা ধরে আমাকে বসিয়ে দিলেন। আবার সেই অস্বস্তিকর নিরবতা। রমাদি এক মুহূর্তের জন্যও চৈতালিদির মুখের ওপর থেকে নিজের নজর সরাননি। অবশেষে চৈতালিদি মুখ খুললেন “ আমি সত্যি জানি না রথী দীঘায় কোন হোটেলে উঠেছে। আর এটাও জানি না যে ওরা কতজন আর কে কে গেছে। তবে আমার ধারণা তোর ওই আত্মীয় ঠিকই দেখেছেন। রাখী আর রথী একই সাথে গেছে। আমার ওদের সম্পর্কের ব্যাপারে সঠিক ধারণা নেই। কিন্তু এটা জানি যে ওরা দুজন দুজনকে চেনে। আর বীর আর রথীর মধ্যে কিছু কথা শুনে আমার মনে হয়েছে যে রথী আর রাখীর মধ্যে কিছু একটা ইয়ে আছে। যদিও সেটা যে এত গভীর সেটা বুঝে উঠতে পারিনি। কিন্তু কি করব জানি না। কিছু বললে তো শোনে না আমার কথা। “ এতদূর বলে চৈতালিদি থামলেন। দুজনেই একসাথে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। আমি বুঝতে পারছি ওদের নিরাশার কারণ। একজনের ছেলে উচ্ছন্নে গেছে, আরেকজনের মেয়ে উচ্ছন্নে যাচ্ছে। এনারা দুজন ভালো বন্ধু তাই একে ওপরকে প্রত্যক্ষ ভাবে কোনও দোষারোপ করতে পারছেন না যেমন এক্ষেত্রে সচরাচর ছেলে্র আর মেয়ের অভিভাবকেরা একে ওপরের করে থাকেন। একটা দিক ভালো এখানে, যেহেতু এনারা একে ওপরের ওপর দোষারোপ করতে পারছেন না তাই তারা বাধ্য হচ্ছেন নিজেদের গর্ভজাত রত্নগুলোর দোষ গুন বিচার করতে, যেটা সচরাচর অভিভাবকেরা করতে ভুলে যান। রমাদি গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন “তুই কি ভাবছিস এই ব্যাপারটা নিয়ে?” চৈতালিদি একটা বড় চুমুক মেরে বললেন “জানি না। তবে ব্যাপারটা যদি সিরিয়স হয় তবে মাস খানেক ধরে চলেছে তাতে সন্দেহ নেই। “ রমাদি আরও কিছু কথা বললেন, চৈতালিদিও আরও কিছু বললেন, কিন্তু বুঝলাম কোনও নির্ণয়ে পৌঁছাতে পারছেন না। একই কথায় গোল গোল ঘুরে চলেছেন দুজনে। হঠাত রমাদি আমার হাত ধরে বললেন “এই মেয়ে তুমি কিছু বলবে না?” আমি অনেকক্ষণ ধরেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করলে কি বলব। আমি বললাম “ রাখীর ব্যাপার জানি না, তবে চৈতালিদি কিছু মনে করবেন না রথী হাতের বাইরে বেড়িয়ে গেছে।” রমাদি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন “রাখীও অনেক অনেক দিন হল হাতের বাইরে চলে গেছে। আস্কারা পেয়ে পেয়ে মাথায় চড়েছে। একই প্রবলেম বাপের শাসন পায় না। “ এখানে যদি সত্যি প্রত্যুত্তর দিতে হত তাহলে সেটা হত এই যে, বাপের শাসন পায় না সেটা না হয় বুঝলাম কিন্তু মায়েরা নিজেরাও যে এক একটা জিনিস সেটা নিজেরাই ভুলে যাচ্ছেন। ওইটা মুখে না এনে বললাম “ দেখুন এইসব ক্ষেত্রে সচরাচর যা হয় সেটা হল এই সম্পর্কগুলো বেশিদিন টেকে না। এইবার সেই সময়টা কত তাড়াতাড়ি আসবে সেটা জানি না। কিন্তু এটা ভাঙবে সেটার ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত আমি। “ চৈতালিদি আর রমাদির মুখে দেখলাম একটা স্বস্তির ছাপ ফুটে উঠলো। দেখলাম ওরা নিজেরা ধীরে ধীরে প্রসঙ্গ বদলাতে চলেছে। এইবার আমি একটা বাজ ফেললাম। বললাম “তবে, “ , রমাদি আবার ভুরু কুঁচকে বললেন “তবে কি?” আমি বললাম “কিছু মনে করবেন না। আসলে বয়সটা অপরিণত তো। দেখুন কিছুটা ছেলে মানুষী ব্যাপার স্যাপার কাজ করে চলেছে এদের মধ্যে, নইলে এইভাবে বাইরে গিয়ে একসাথে থাকে এখন? আরেকটা ব্যাপার, এত কথার মাঝে ভুলবেন না, আরও দুজন ছেলে ওদের সাথে একই ঘরে আছে। তো এখন ওরা কি করছে বা করতে চলেছে বা ইতিমধ্যে করে ফেলেছে সেটা আপনাদের থেকে ভালো নিশ্চই কেউ জানে না। চৈতালিদি কিছু মনে করবেন না, রাখী বয়সে ছোট, এই সব ক্ষেত্রে যখন সম্পর্ক কাটে তখন ছেলেরা খুব সহজে হাত ধুয়ে ফেলে, কিন্তু মেয়েরা, মানে যদি তেমন কোনও ভুল করে ফেলে তো তার দাগ থেকে যায়। শুধু মানসিক নয়, অনেক সময় শারীরিক দাগও থেকে যায়। আশা করি বুঝতে পারছেন যে কি বলতে চাইছি। তবে আমার মনে হয় অনেক দিন ধরেই ওদের মধ্যে এই রকম সম্পর্ক চলছে, এত দিনেও যখন তেমন কিছু গণ্ডগোল হয়নি, তো এখনও মনে হয় না তেমন কিছু সমস্যা হবে। তবে একটু সাবধান করে দেওয়া উচিৎ ওদের। “ একটু থেমে বললাম “আর, হ্যাঁ আরেকটা কথা। ওদের নিজেদের সম্পর্ক যাই হোক না কেন, এরকম বাইরে বেড়াতে গিয়ে আরও দুজনকে সাথে করে নিয়ে গিয়ে তাদের সাথে একসাথে একই ঘরে থাকাটা খুব একটা স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এই ব্যাপারটাতেও একটু সাবধান করে দেবেন। আমার আর কিছু বলার নেই। “
একটা কথা শিকার করতে বাধ্য হচ্ছি, ওনারা মুখে বা হাবে ভাবে যতই দেখান না কেন যে ওনারা ওনাদের ছেলে মেয়েদের ব্যাপারে খুব সিরিয়স, কিন্তু বাস্তবে হয়ত ততটা নন, বা আদৌ সিরিয়স কি না সেই ব্যাপারেও আমার যথেষ্ট স্নদেহের অবকাশ আছে। নইলে যখন বললাম ওদের সম্পর্ক একদিন না একদিন কেটে যাবে সেই কথাটা এত সহজে মেনে নিতেন না। আমি শেষে যে কথাগুলো বললাম সেটা ওনাদের আগেই নিজেদের স্বাভাবিক ভাবে ভেবে নেওয়া উচিৎ ছিল। ওনাদের দেখে আমার মনে হয় ওনাদের ভেতরে একটা চাপা টেনশন কাজ করে, কিন্তু ওনারা কোনও একটা অছিলায় সেই টেনশন টা শুধু কাটিয়ে ফেলতে চান তার কোনও সমাধান না করে। এই রকম অভিভাবকরা স্বার্থপরতার আদর্শ উদাহরণ। ওনারা নিজেদের জীবনে অনেক কিছু হারিয়েছেন হয়ত, কিন্তু এটাও সত্যি যে ওনারা যেকোনো অজুহাতে চান ছেলে মেয়েদের দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেতে, সমাজের চোখে সেটা সম্ভব নয়, তাই এই চিন্তিত হওয়ার নাটক। মরুকগে। তবে আমার শেষ কথাগুলো ওনাদের মনে দাগ কেটেছে সেটা বুঝতে পারলাম। ওনারা মাঝে একথা সেকথায় মেতে উঠতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু আমি তাতে ইচ্ছে করেই জল ঢেলে দিয়েছি, এখন আমার কথার কোনও সদুত্তর ওনাদের কাছে না থাকায় আবার সেই চিন্তিত হওয়ার নাটক। হয়ত আমি বাড়িয়ে বলছি এনাদের ব্যাপারে, আর সত্যি বলতে আমার হয়ত বলার অধিকারও নেই, কিন্তু যে কথা গুলো বললাম সেগুলোর সত্যতা একটু ভাবলেই বোঝা যায়। আমাদের তিনজনের গ্লাসই শেষ। রমাদি আমার চিবুকটা একটু টিপে দিয়ে খুব গম্ভীর ভাবে বললেন “মেয়ে, তুমি যা বলেছ, সেটা একটু ভেবে দেখা উচিৎ। তুমি যখন এই ব্যাপারটা বললে তখন তুমিই বলে দাও কি করা উচিৎ।” কি মুশকিল। এরকম আদিখ্যেতা আমি সহ্য করতে পারি না। এটা আমি কি এমন হাতি ঘোড়া নতুন কথা বলেছি যেটা একজন নিজের সন্তানের ব্যাপারে সত্যিকারের চিন্তিত মানসিক ভাবে সুস্থ মায়ের মাথায় আসবে না। ওই যে বললাম, এনারা চান ছেলে মেয়েদের ব্যাপারে কিছু একটা বলে ভান করবেন চিন্তা করার, তারপর কিছু একটা অছিলায় আবার বর্ষার কুকুরের মতন সেক্সের মধ্যে ঢুকে যাবে। এনারা মদ আর সেক্স এই দুটো জিনিসের বাইরে কোনও কিছু বোঝেন না। এখন অনেকক্ষণ হয়ে গেছে এনারা এই নাটক নাটক খেলে চলেছেন, এখন তাই বোর হয়ে গেছেন, এখন কোনও মতে এই নাটকের যবনিকা পতন করাতে পারলে বেচে যান। আমিও চাই না ওনাদের মুড নষ্ট হোক, তাও আবার এই সেক্সি পরিবেশে। বললাম “এই ব্যাপারে আমার আর কিছুই বলার নেই। আপনাদের ছেলে মেয়ে, আপনারা দুজন দুজনের খুব ভালো বন্ধু, এখন আপনারা নিজেরাই ঠিক করুণ কিভাবে ওদের শাসনে রাখবেন। আমি বলার কেউ নই। “ শেষের কথাগুলো একটু সরাসরি বলে দিলাম। উঠে পড়লাম পরের পেগ বানানোর জন্য। আমার ধারণাটা পুরোপুরি না হলেও যে অনেকটাই সত্যি সেটা বুঝতে পারলাম চৈতালিদির পরের কথায়। “এই অনেকক্ষণ হয়ে গেল, এখনও স্ন্যাক্স এলো না?” এত কথার পরেও ওনার মাথায় সেই স্ন্যাক্স ঘুরছে। সত্যিই অসহ্য, কিন্তু বাড়িওয়ালী, আর তার ওপর আমার সাথে কোনও দিন খারাপ ব্যবহার করেননি, উপরন্তু বাড়ির মেয়ের মতন যথেষ্ট যত্নেই রেখেছেন। এখন আগ বাড়িয়ে ফোঁড়ন কাটলে বিপদ। আর এমন কিছু নেশাও চড়েনি যে আবার আমি ওনাদের ফুর্তির মাঝে আমার জ্ঞানের ঝড় বইয়ে দিয়ে সব মাটি করে দেব। এতক্ষন কথা বলার সময় গম্ভীর ব্যাপার নিয়ে আলোচনা চলছিল তাই খেয়াল করিনি। রমাদির নিজেরও বোধহয় খেয়াল নেই, উনি উঠে বসার পর, ওনার চাপা স্কার্টটা গুঁটিয়ে কোমরের কাছে উঠে গেছে। কালো রঙের স্টাইলিশ প্যান্টিতে ঢাকা ওনার যোনীদেশ আর ওনার থাই এখন সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। আমি চোখ ঘুরিয়ে নিলাম। আমার মায়ের মতন মায়ের যদি আমার মতন মেয়ে হয় তো এরকম মা হলে রাখীর মতন মেয়ে হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তবে একটাই তফাত আমি পড়াশুনাটা ঠিক মতন করেছিলাম, আর এখনও করি, এদের মধ্যে সেই জিনিসটার বড়ই অভাব। চৈতালিদি বিছানা ছেড়ে উঠে গেছিলেন, মোবাইল নিয়ে আবার স্ন্যাক্সের লোকগুলোকে ফোন করতে। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন, আধা আধা কথা কানে আসছিল। বাইরের পরিবেশ ভীষণ সুন্দর, এক কথায় ভয়ানক। একটু পড়ে চৈতালিদি ফিরে এসে বিছানায় বসে বললেন “উফফ এদের নিয়ে আর পারা যাচ্ছে না। এখন বলছে আরও সময় লাগবে। বৃষ্টির জন্য সব দেরী হয়ে গেছে, ডিলেইড। কোনও কথার ঠিক নেই এদের। এবার কখন কি হবে। কখন স্ন্যাক্স হবে, কখন ডিনার। ” আমারও খিদে খিদে পাচ্ছে অনেকক্ষণ ধরে। আবারও মনের মধ্যে একটা কথা খেলে গেল তাই সেটা না লিখে পারছি না, এই ভয়ানক পরিবেশে, যেখানে বৃষ্টির চোটে বাইরে কিছু দেখা যাচ্ছে না, ভয়ানক ঝড় হচ্ছে আর বাজের শব্দে কান পাতা দায়, সেই অবস্থায় বীর বাড়িতে নেই। অন্য যে কোনও মায়ের প্রথম চিন্তা আসত তার ছেলে এখন কোথায় আছে কি করছে এই নিয়ে। কিন্তু চৈতালিদির বীরের ব্যাপারে কোনও মাথা ব্যথা দেখলাম না, শুধুই স্ন্যাক্স নিয়ে চিন্তা। আমি একবার জিজ্ঞেস করলাম “বীর কোথায়?” কোনও পাত্তা না দিয়ে বললেন “গেছে কোথাও একটা। জানি না। ডিনার রাখা থাকবে ফিরে এলে খাবে, তখন দেখা যাবে।” সত্যি বিচিত্র মহিলা। বললাম “একবার ফোন করে দেখে নিন, কারণ বাইরে যা চলছে, “ উনি আমাকে হাত তুলে থামিয়ে দিয়ে রমাদিকে বললেন “তোর খিদে পাচ্ছে জানি। কিন্তু একটু ওয়েট কর। রাতে কি খাবি?” বাকি কথা গুলো আমার আর কানে ঢুকল না। সেইদিন বীরের পরিবর্তন দেখে ওনাকে দেখে মনে হয়েছিল ওনার বুকের ওপর চিন্তার একটা পাথর রাখা ছিল যেটা নেমে গেল। আমি ভাবছিলাম উনি নিজে যাই করুণ না কেন নিজের ছেলের ব্যাপারে খুব চিন্তায় আছেন। এখন বুঝতে পারলাম সে সব সাময়িক আর যথার্থ অর্থে মেকি। ডিনারের মেনু ঠিক করার পর আমাকে বললেন “ আমাকে বলে যায় নি কোথায় যাচ্ছে। তাই এখন আমার চিন্তা করে কি লাভ।” যথার্থ অর্থে মাতৃসুলভ উত্তর। বীরকে নিয়ে আমার একটু চিন্তা হচ্ছিল বটে, কিন্তু কাটিয়ে দিলাম। মরুকগে।
পা দুটো বেঁকিয়ে ফাঁক করে শুয়ে থাকায় ওনার চাপা স্কার্টটা একটু ফুলে উঠে কালো রঙের দাগ পড়া নোংরা থাইয়ের ত্বক বেয়ে অনেকটা উপরের দিকে উঠে গেছে। ওনার পায়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওনার চাপা স্কার্টটার ভেতরে পরা ডিপ কালো রঙের ভি কাট প্যানটিটা স্পষ্ট দেখতে পেলাম। আমাকেও এরকম কয়েকটা ভি কাট প্যানটি কিনতে হবে। বেশ স্টাইলিশ তাতে সন্দেহ নেই, আর পায়ের দু পাশটা খালি থাকায় বেশ আরামদায়ক হয় বলেও শুনেছি। উনি চোখ বুজে শুয়ে একটু জিড়িয়ে নিলেন। “সেই কখন বেড়িয়েছি, রাস্তায় ভাবছিলাম কখন এই বৃষ্টি শুরু হয়। ভয়ে ভয়ে ছিলাম। যা কালো হয়ে আছে বৃষ্টি শুরু হলে আর গাড়ি চালাতে হত না। “ চৈতালিদি একটু ধমকের স্বরে বললেন “তুই আজকেও নিজে ড্রাইভ করে এসেছিস। তোকে না গতকাল বললাম ড্রাইভার ছাড়া আসবি না এরকম সময়। তোর কোনও হুঁশ থাকে না। কিছু একটা ভালো মন্দ হয়ে গেলে কে দেখবে?” রমাদি চোখ না খুলেই বললেন “জীবনটাই তো ভালো মন্দ হয়ে গেছে, আর কি হবে। আর তাছাড়া সেই দুপুরে বেড়িয়েছি, অনেকগুলো কাজ ছিল। সব কটা সারলাম। আমাদের ড্রাইভারটা আজ ডুব। অন্য ড্রাইভার নিতে হলে ওই কাছের একটা জায়গা থেকে ভাড়া নিতে হবে। কেমন ড্রাইভার হবে কে জানে। আমি চালালে অ্যাকসিডেন্ট হতে পারে। বাজে ড্রাইভার হলে ছিনতাই, লুট আরও কত কি হতে পারে। ” চৈতালিদি বললেন “হ্যাঁ যা সব কেস শুনি, রেপ কেসের কথা পড়লাম পেপারে সেদিন একটা। মেয়েটা পার্টি থেকে রাতে একা ফিরছিল ...” রমাদি মাঝপথেই চৈতালিদিকে ঝামা দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বললেন “আমি রেপ কে ভয় পাই না। এত গুলো ছেলের সাথে শুয়ে ফুর্তি করে এখন আবার রেপের ভয়। মারধোর না করলেই হল। যখন চুদবে ভেবে নেব আমি স্বেচ্ছায় শুচ্ছি, ব্যস তাহলেই হল। অত ন্যাকামি করা আমার আর তোর মানায় না। কিন্তু হ্যাঁ ফিসিকাল ড্যামেজ করলে বিপদ। আর তাছাড়া, টাকা পয়সা গয়না গাটি নিয়ে নিলে আরও বিপদ।” আমি নিজেকে খুব বেপরোয়া বলে ভাবি। তবে এনাদের মতন বেপরোয়া হয়ে উঠতে এখনও দেরী আছে। ওনার মুখটাকে ভালো ভাবে আজ আবার দেখলাম। না সুন্দরী না হলেও কালো ব্রণর দাগ ভরা মুখে বেশ একটা লাবন্য আছে মানতেই হবে। তবে দাগ গুলো সেই লাবন্য ভাব টাকে চাপা দিয়ে দিয়েছে। চোখ খুলেই আমার সাথে ওনার চোখা চুখি হল। “কি ভাবছ অদ্ভুত মহিলা আমি তাই তো? রেপ শুনেও বলে ফুর্তি করে নেব। “ হো হো করে হেঁসে উঠলেন জোড়ে। “এত গুলো লোকের সাথে শুয়েছি ফুর্তি করার জন্য। এখন কেউ যদি হঠাত আমাকে পেতে চায় তখন সেটাকে রেপ বলে ন্যাকামি করার মানে হয় কি? আর ওই যে কথায় আছে না, রেপ যখন হবেই, তখন কামনার অনুভূতি জাগাও নিজের মধ্যে আর ব্যাপারটাকে উপভোগ কর। ব্যস তাহলেই কোনও সমস্যা নেই। “ কথাটাও আমিও জানতাম, তবে এনার জীবনে তার যে এত বড় যৌক্তিকতা বা প্রাসঙ্গিকতা থাকতে পারে সেটা নিজের কানে না শুনলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। আমি হেঁসে বললাম “না কিছুই অদ্ভুত নয়। যে যেভাবে দেখে। “ উনি উঠে বসলেন। একবার ডান হাতটা মুড়ে দামি ঘড়িটায় সময় দেখে নিয়ে বললেন “চল গ্লাস তৈরি কর। বসা যাক। আর চৈতালি তোর সাথে কিছু ব্যক্তিগত কথা আছে। “ ব্যক্তিগত কথা? আমার কি চলে যাওয়া উচিৎ? উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন “তোমার সামনেই হতে পারে সেই সব কথা। তুমি ছেলে হলে আলাদা ব্যাপার হত। কিন্তু মেয়েতে মেয়েতে এই সব কথা শেয়ার করায় কোনও ক্ষতি নেই। তুমিও আমাকে বা আমাদের কিছু মতামত জানাতে পারো। “
গ্লাসে একটা একটা করে বড় পেগ বানিয়ে বসে পড়লাম আমরা। আজ অন্যদিনের থেকে একটু ব্যতিক্রম হল। এতদিন কেউ না কেউ আমার পেগ বানিয়ে দিত। আজ আমি সবার পেগ বানালাম। তাতে একটা সুবিধা হল। নিজের পেগটা সব থেকে ছোট বানিয়েছি। আজ আউট না হয়ে এদের কথাগুলো গিলব। নিশ্চই কিছু জরুরি কথা বলতে চান রমাদি, নইলে এই পরিবেশে এত সিরিয়স ভাবে কথাগুলো বললেনই বা কেন। রমাদি আর চৈতালিদির পেগ দুটো মোক্ষম বানিয়েছি। পেগ বানাতে বানাতে শুনলাম চৈতালিদি বললেন “তুই যখন কলিং বেল বাজালি, আমি তখন স্ন্যাক্সের অর্ডার গুলো দিয়ে দিয়েছি। একটু হালকা ফুলকাই দিয়েছি। পরে লাগলে অনেক সময় আছে হাতে, আবার বলে দেওয়া যাবে। বাড়িতে এসেই দিয়ে যাবে। পরে ডিনারটা বলে দেব।” আমি মাথা না ঘুড়িয়ে একটু আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলাম “কত পড়ল টোটাল? মানে কতটা শেয়ার করব বলে দেবেন।” দুজনেই একসাথে ধমকে উঠলেন “তোমাকে আর ন্যাকামি করতে হবে না। নাক টিপলে এখনও দুধ বেরোয় খুকির, সে আবার আমাদের টাকা দেখাচ্ছে। শেয়ার করবে। কিচ্ছু লাগবে না। শুধু খাও আর মজা করো। কাল তো ছুটি তোমার।” আমি এইসব ব্যাপারে ভীষণ কান কাটা। আমি আর এই নিয়ে কোনও কথা বাড়াইনি। শেয়ার নিয়ে আর জোড়া জুড়ি করিনি। স্ন্যাক্স আসতে সময় লেগেছিল কারণ বাইরে তখন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। চিয়ার্স করে কয়েকটা চুমুক মারার পর রমাদি প্রথম মুখ খুললেন। চৈতালিদির কথায় আমি উঠে ব্যালকনির দরজাটা খুলে দিয়েছি। বাইরের ঠাণ্ডা ভেজা হাওয়া ঢুকে ঘরটাকে ভীষণ ঠাণ্ডা করে দিয়েছে। আর তার সাথে বাজের শব্দ। বেশ একটা থম থমে অথচ জমজমাট ব্যাপার। “তোর বড় ছেলে কোথায়?” চৈতালি দি বললেন “বোধহয় সমুদ্রে গেছে বন্ধু বান্ধবের সাথে।” রমাদি একটু ভুরু কুঁচকে বললেন “তুই কাল বলেছিলি ও দীঘা গেছে তাইত?” চৈতালিদি মাথা নেড়ে সায় দিলেন, চুমুক দিয়ে গ্লাসটা এক পাশে রেখে বললেন “সেরকমই বলে গেছে।” রমাদি একটু চিন্তার স্বরে বললেন “সেরকম বলে গেছে মানে? মানে তুই ঠিক করে জানিস না কোথায় গেছে?” চৈতালিদি মাথা নাড়িয়ে না বুঝিয়ে দিলেন। “জানিসই তো ও আমার কোনও কথা শোনে না। জিজ্ঞেস করেছিলাম, বলেছিল দীঘা যাচ্ছি বন্ধুদের সাথে, গাড়ি বুক করা হয়ে গেছে। আমার থেকে বেশ কিছু টাকাও নিয়ে গেছে। “ রমাদি একটু চুপ করে থেকে বললেন “একটা জিনিস জানিস, এখন পর পর দুদিন ছুটি বলে দীঘায় পুরো ভিড় উপচে পড়ে। মানে কলকাতার ধারে কাছে এর থেকে শস্তা জায়গা আর নেই যেখানে ঘুরতে যাওয়া যায়। “ আবার একটু থামলেন, “ আজ সকালে আমাদের এক রিলেটিভ ফোন করেছিল। আমি তখনও ঠিক ঘুম থেকে উঠতে পারিনি। তাই ওকে আবার পরে করতে হয়েছিল। “ চৈতালিদি বললেন “ কি বলেছেন?” রমাদি জবাব দিলেন “দুদিন ছুটি পেয়ে ওরাও ফ্যামিলি নিয়ে দীঘায় গেছে। ওরা রাখীকে ওদের হোটেলে দেখেছে। রাখীও আমাকে বলে গেছে যে কিছু বান্ধবীর সাথে ধারে কাছে কোথাও বেড়াতে যাচ্ছে। তবে দীঘা বলে নি। বলেছিল অন্য জায়গা। সে যাই হোক। এখন কথা হল, যে ফোন করেছিল ওর বক্তব্য ওরা রাখীকে আর তিনটে ছেলেকে একসাথে ওদের হোটেলে দেখেছে। এবং ওর ধারণা ওরা চারজনেই একটা বড় ঘর ভাড়া করে একটা বেড এক্সট্রা ভাড়া করে একই সাথে আছে। মানে ” ওনার মুখে একরাশ চিন্তার রেখা ফুটে উঠেছে। চৈতালিদির মুখেরও একই অবস্থা। হয়ত আমার নিজের মুখটা এই মুহূর্তে দেখতে পেলে আমাকেও ওরকমই দেখাত। অবশ্য বীরের কাছ থেকে এই জিনিস আমার গতকালই শোনা হয়ে গেছে। তাই এর মধ্যে নতুন কিছু নেই। তবু বুঝতে দিলাম না যে আমি এই জিনিসটা ইতিমধ্যে জেনে গেছি। তবে এটা জানতাম না যে রাখী এখন দীঘায় গিয়ে তিনটে ছেলের সাথে একই ঘরে আছে। ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগলো। অবশ্য এটা জানার কথা বীরের নয়। রমাদি বলে চললেন “ ও দুপুরেও আমাকে আবার ফোন করেছিল। রাখীর সাথে ওর সামনা সামনি হয়েছিল একবার। রাখী নাকি এত ড্রাঙ্ক ছিল যে ওকে এত কাছ থেকে দেখেও চিনতে পারেনি। ওই তিনটে ছেলেরও একই অবস্থা। ওদের চার জনের গা থেকেই প্রচুর মদের গন্ধ বেরোচ্ছে। ওরা একই ঘরে আছে এটা ও হোটেল থেকে চেক করে জেনেছে। যদিও ছেলে গুলোর নাম হোটেল থেকে জানায় নি, কারণ সেটা জানানো ওদের বারণ। কিন্তু ও দেখেছে ওরা একই ঘর থেকে বেরোচ্ছে , একই ঘরে গিয়ে ঢুকছে। এর থেকে বেশী আর কিছু বলতে পারলো না। বলল আর কিছু দেখলে ফিরে এসে জানাবে। কাল বিকেলে ফিরছে ও আর ওর ফ্যামিলি।“ রমাদি আবার একটু থেমে বললেন “আমি তোর ছেলের ব্যাপারে জানি না। কিন্তু ওরা দুজনেই দীঘা গেছে, মানে ব্যাপারটা কি কাকতালীয়?” আমি আর চৈতালিদি দুজনেই বুঝলাম যে রমাদি কি বোঝাতে চাইছেন। আমি একটু বোকা সেজে জিজ্ঞেস করলাম “ মানে ওরা কি দুজন দুজন কে চেনে?” আমি একটু বুঝে নিতে চাই যে এই দুজন বেপরোয়া মহিলা নিজেদের সন্তান সন্ততির ব্যাপারে কতটা খবর রাখেন। দুজনেই একসাথে মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে রাখী আর চৈতালিদির সুপুত্র দুজন দুজন কে চেনে। আমার আর কিছু বলার নেই। রমাদি বললেন “তুই হোটেলের নাম জানিস না, তাই না?” চৈতালি কিছু বলার আগে আমি বলে দিলাম যে যেদিন এই নিয়ে কথা হয়েছিল সেদিন আমিও সামনে ছিলাম, ও ঠিক খোলা খুলি ভাবে কিছুই বলেনি বার বার জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও।
রমাদির মুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম উনি অনেকগুলো না বলা প্রশ্ন নিরবে চৈতালিদির দিকে ছুঁড়ে দিয়েছেন। চৈতালিদির ভুরু কুঁচকে আছে ঠিকই কিন্তু কিছুই বলছেন না। আমি নিরবটা ভেঙ্গে চৈতালিদিকে জিজ্ঞেস করলাম “ আপনি কি জানেন যে ওদের মধ্যে এরকম ঘনিষ্ঠতা আছে কিনা।” আমি জানি চৈতালিদি জানেন। কারণ ওই রাতে বীর আর রথী (ওনার বড় ছেলের ডাক নাম) রাখীকে নিয়ে চৈতালিদির সামনেই ঝগড়া করছিল। আর চৈতালিদি মধ্যস্থতা করে ওদের চুপ করাচ্ছিলেন। চৈতালিদি নিজের গ্লাসের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলেন। আমি জানি উনি এখন সঠিক শব্দ চয়ন করার চেষ্টা করছেন। বাইরে ঝুম ঝুম বৃষ্টি আর বাজের আওয়াজ ছাড়া ঘরে আর কোনও শব্দ নেই। আমি হঠাত কি মনে হওয়ায় জিজ্ঞেস করলাম “আচ্ছা বীর আর রথী তো একই ঘরে থাকে। তেমন কিছু থাকলে নিশ্চই ও কিছু জানতো বা বলতে পারতো। “ এই প্রশ্নের মধ্যে আমার আরেকটা প্রশ্ন লুকিয়ে ছিল। সেটা হল, বীর এখন কোথায়। চৈতালিদি এইবারও মুখ খুললেন না। শুধু এক মনে নিজের গ্লাসের দিকে চেয়ে রইলেন। জল ভর্তি গ্লাসটা ওনার ফর্সা কোলের উপর রাখা, ঠাণ্ডা গ্লাসের গায়ের বাইরে ফোঁটা ফোঁটা হয়ে জমা জল গড়িয়ে পড়ে ওনার নির্লোম থাইয়ের অনেকটা উপরের অংশ আর চাপা জিন্সের শর্টসের সামনে যোনী দেশের উপরের ঢাকা জায়গাটা ভিজিয়ে দিয়েছে, যোনীদেশের উপরের জায়গায় একটা অশ্লীল কালো ভেজা ছোপের সৃষ্টি হয়েছে। ওনাকে দেখে মনে হল না এই ঠাণ্ডা স্পর্শে বা ওই অশ্লীল ভেজা ছোপের দিকে ওনার কোনও নজর আছে। উনি এখন অন্য কোনও জগতে বিচরণ করছেন। আবারও আমি বললাম “ আমি থাকাতে কথা বলতে অসুবিধা হলে আমি না হয় কিছুক্ষণ অন্য ঘর থেকে ঘুরে আসছি। আপনারা কথা শেষ করে নিন। “ আমি বিছানার ধার থেকে উঠতে যাচ্ছিলাম চৈতালিদি আমার হাতটা ধরে আমাকে বসিয়ে দিলেন। আবার সেই অস্বস্তিকর নিরবতা। রমাদি এক মুহূর্তের জন্যও চৈতালিদির মুখের ওপর থেকে নিজের নজর সরাননি। অবশেষে চৈতালিদি মুখ খুললেন “ আমি সত্যি জানি না রথী দীঘায় কোন হোটেলে উঠেছে। আর এটাও জানি না যে ওরা কতজন আর কে কে গেছে। তবে আমার ধারণা তোর ওই আত্মীয় ঠিকই দেখেছেন। রাখী আর রথী একই সাথে গেছে। আমার ওদের সম্পর্কের ব্যাপারে সঠিক ধারণা নেই। কিন্তু এটা জানি যে ওরা দুজন দুজনকে চেনে। আর বীর আর রথীর মধ্যে কিছু কথা শুনে আমার মনে হয়েছে যে রথী আর রাখীর মধ্যে কিছু একটা ইয়ে আছে। যদিও সেটা যে এত গভীর সেটা বুঝে উঠতে পারিনি। কিন্তু কি করব জানি না। কিছু বললে তো শোনে না আমার কথা। “ এতদূর বলে চৈতালিদি থামলেন। দুজনেই একসাথে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। আমি বুঝতে পারছি ওদের নিরাশার কারণ। একজনের ছেলে উচ্ছন্নে গেছে, আরেকজনের মেয়ে উচ্ছন্নে যাচ্ছে। এনারা দুজন ভালো বন্ধু তাই একে ওপরকে প্রত্যক্ষ ভাবে কোনও দোষারোপ করতে পারছেন না যেমন এক্ষেত্রে সচরাচর ছেলে্র আর মেয়ের অভিভাবকেরা একে ওপরের করে থাকেন। একটা দিক ভালো এখানে, যেহেতু এনারা একে ওপরের ওপর দোষারোপ করতে পারছেন না তাই তারা বাধ্য হচ্ছেন নিজেদের গর্ভজাত রত্নগুলোর দোষ গুন বিচার করতে, যেটা সচরাচর অভিভাবকেরা করতে ভুলে যান। রমাদি গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন “তুই কি ভাবছিস এই ব্যাপারটা নিয়ে?” চৈতালিদি একটা বড় চুমুক মেরে বললেন “জানি না। তবে ব্যাপারটা যদি সিরিয়স হয় তবে মাস খানেক ধরে চলেছে তাতে সন্দেহ নেই। “ রমাদি আরও কিছু কথা বললেন, চৈতালিদিও আরও কিছু বললেন, কিন্তু বুঝলাম কোনও নির্ণয়ে পৌঁছাতে পারছেন না। একই কথায় গোল গোল ঘুরে চলেছেন দুজনে। হঠাত রমাদি আমার হাত ধরে বললেন “এই মেয়ে তুমি কিছু বলবে না?” আমি অনেকক্ষণ ধরেই ঠিক করে রেখেছিলাম যে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করলে কি বলব। আমি বললাম “ রাখীর ব্যাপার জানি না, তবে চৈতালিদি কিছু মনে করবেন না রথী হাতের বাইরে বেড়িয়ে গেছে।” রমাদি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন “রাখীও অনেক অনেক দিন হল হাতের বাইরে চলে গেছে। আস্কারা পেয়ে পেয়ে মাথায় চড়েছে। একই প্রবলেম বাপের শাসন পায় না। “ এখানে যদি সত্যি প্রত্যুত্তর দিতে হত তাহলে সেটা হত এই যে, বাপের শাসন পায় না সেটা না হয় বুঝলাম কিন্তু মায়েরা নিজেরাও যে এক একটা জিনিস সেটা নিজেরাই ভুলে যাচ্ছেন। ওইটা মুখে না এনে বললাম “ দেখুন এইসব ক্ষেত্রে সচরাচর যা হয় সেটা হল এই সম্পর্কগুলো বেশিদিন টেকে না। এইবার সেই সময়টা কত তাড়াতাড়ি আসবে সেটা জানি না। কিন্তু এটা ভাঙবে সেটার ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত আমি। “ চৈতালিদি আর রমাদির মুখে দেখলাম একটা স্বস্তির ছাপ ফুটে উঠলো। দেখলাম ওরা নিজেরা ধীরে ধীরে প্রসঙ্গ বদলাতে চলেছে। এইবার আমি একটা বাজ ফেললাম। বললাম “তবে, “ , রমাদি আবার ভুরু কুঁচকে বললেন “তবে কি?” আমি বললাম “কিছু মনে করবেন না। আসলে বয়সটা অপরিণত তো। দেখুন কিছুটা ছেলে মানুষী ব্যাপার স্যাপার কাজ করে চলেছে এদের মধ্যে, নইলে এইভাবে বাইরে গিয়ে একসাথে থাকে এখন? আরেকটা ব্যাপার, এত কথার মাঝে ভুলবেন না, আরও দুজন ছেলে ওদের সাথে একই ঘরে আছে। তো এখন ওরা কি করছে বা করতে চলেছে বা ইতিমধ্যে করে ফেলেছে সেটা আপনাদের থেকে ভালো নিশ্চই কেউ জানে না। চৈতালিদি কিছু মনে করবেন না, রাখী বয়সে ছোট, এই সব ক্ষেত্রে যখন সম্পর্ক কাটে তখন ছেলেরা খুব সহজে হাত ধুয়ে ফেলে, কিন্তু মেয়েরা, মানে যদি তেমন কোনও ভুল করে ফেলে তো তার দাগ থেকে যায়। শুধু মানসিক নয়, অনেক সময় শারীরিক দাগও থেকে যায়। আশা করি বুঝতে পারছেন যে কি বলতে চাইছি। তবে আমার মনে হয় অনেক দিন ধরেই ওদের মধ্যে এই রকম সম্পর্ক চলছে, এত দিনেও যখন তেমন কিছু গণ্ডগোল হয়নি, তো এখনও মনে হয় না তেমন কিছু সমস্যা হবে। তবে একটু সাবধান করে দেওয়া উচিৎ ওদের। “ একটু থেমে বললাম “আর, হ্যাঁ আরেকটা কথা। ওদের নিজেদের সম্পর্ক যাই হোক না কেন, এরকম বাইরে বেড়াতে গিয়ে আরও দুজনকে সাথে করে নিয়ে গিয়ে তাদের সাথে একসাথে একই ঘরে থাকাটা খুব একটা স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এই ব্যাপারটাতেও একটু সাবধান করে দেবেন। আমার আর কিছু বলার নেই। “
একটা কথা শিকার করতে বাধ্য হচ্ছি, ওনারা মুখে বা হাবে ভাবে যতই দেখান না কেন যে ওনারা ওনাদের ছেলে মেয়েদের ব্যাপারে খুব সিরিয়স, কিন্তু বাস্তবে হয়ত ততটা নন, বা আদৌ সিরিয়স কি না সেই ব্যাপারেও আমার যথেষ্ট স্নদেহের অবকাশ আছে। নইলে যখন বললাম ওদের সম্পর্ক একদিন না একদিন কেটে যাবে সেই কথাটা এত সহজে মেনে নিতেন না। আমি শেষে যে কথাগুলো বললাম সেটা ওনাদের আগেই নিজেদের স্বাভাবিক ভাবে ভেবে নেওয়া উচিৎ ছিল। ওনাদের দেখে আমার মনে হয় ওনাদের ভেতরে একটা চাপা টেনশন কাজ করে, কিন্তু ওনারা কোনও একটা অছিলায় সেই টেনশন টা শুধু কাটিয়ে ফেলতে চান তার কোনও সমাধান না করে। এই রকম অভিভাবকরা স্বার্থপরতার আদর্শ উদাহরণ। ওনারা নিজেদের জীবনে অনেক কিছু হারিয়েছেন হয়ত, কিন্তু এটাও সত্যি যে ওনারা যেকোনো অজুহাতে চান ছেলে মেয়েদের দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেতে, সমাজের চোখে সেটা সম্ভব নয়, তাই এই চিন্তিত হওয়ার নাটক। মরুকগে। তবে আমার শেষ কথাগুলো ওনাদের মনে দাগ কেটেছে সেটা বুঝতে পারলাম। ওনারা মাঝে একথা সেকথায় মেতে উঠতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু আমি তাতে ইচ্ছে করেই জল ঢেলে দিয়েছি, এখন আমার কথার কোনও সদুত্তর ওনাদের কাছে না থাকায় আবার সেই চিন্তিত হওয়ার নাটক। হয়ত আমি বাড়িয়ে বলছি এনাদের ব্যাপারে, আর সত্যি বলতে আমার হয়ত বলার অধিকারও নেই, কিন্তু যে কথা গুলো বললাম সেগুলোর সত্যতা একটু ভাবলেই বোঝা যায়। আমাদের তিনজনের গ্লাসই শেষ। রমাদি আমার চিবুকটা একটু টিপে দিয়ে খুব গম্ভীর ভাবে বললেন “মেয়ে, তুমি যা বলেছ, সেটা একটু ভেবে দেখা উচিৎ। তুমি যখন এই ব্যাপারটা বললে তখন তুমিই বলে দাও কি করা উচিৎ।” কি মুশকিল। এরকম আদিখ্যেতা আমি সহ্য করতে পারি না। এটা আমি কি এমন হাতি ঘোড়া নতুন কথা বলেছি যেটা একজন নিজের সন্তানের ব্যাপারে সত্যিকারের চিন্তিত মানসিক ভাবে সুস্থ মায়ের মাথায় আসবে না। ওই যে বললাম, এনারা চান ছেলে মেয়েদের ব্যাপারে কিছু একটা বলে ভান করবেন চিন্তা করার, তারপর কিছু একটা অছিলায় আবার বর্ষার কুকুরের মতন সেক্সের মধ্যে ঢুকে যাবে। এনারা মদ আর সেক্স এই দুটো জিনিসের বাইরে কোনও কিছু বোঝেন না। এখন অনেকক্ষণ হয়ে গেছে এনারা এই নাটক নাটক খেলে চলেছেন, এখন তাই বোর হয়ে গেছেন, এখন কোনও মতে এই নাটকের যবনিকা পতন করাতে পারলে বেচে যান। আমিও চাই না ওনাদের মুড নষ্ট হোক, তাও আবার এই সেক্সি পরিবেশে। বললাম “এই ব্যাপারে আমার আর কিছুই বলার নেই। আপনাদের ছেলে মেয়ে, আপনারা দুজন দুজনের খুব ভালো বন্ধু, এখন আপনারা নিজেরাই ঠিক করুণ কিভাবে ওদের শাসনে রাখবেন। আমি বলার কেউ নই। “ শেষের কথাগুলো একটু সরাসরি বলে দিলাম। উঠে পড়লাম পরের পেগ বানানোর জন্য। আমার ধারণাটা পুরোপুরি না হলেও যে অনেকটাই সত্যি সেটা বুঝতে পারলাম চৈতালিদির পরের কথায়। “এই অনেকক্ষণ হয়ে গেল, এখনও স্ন্যাক্স এলো না?” এত কথার পরেও ওনার মাথায় সেই স্ন্যাক্স ঘুরছে। সত্যিই অসহ্য, কিন্তু বাড়িওয়ালী, আর তার ওপর আমার সাথে কোনও দিন খারাপ ব্যবহার করেননি, উপরন্তু বাড়ির মেয়ের মতন যথেষ্ট যত্নেই রেখেছেন। এখন আগ বাড়িয়ে ফোঁড়ন কাটলে বিপদ। আর এমন কিছু নেশাও চড়েনি যে আবার আমি ওনাদের ফুর্তির মাঝে আমার জ্ঞানের ঝড় বইয়ে দিয়ে সব মাটি করে দেব। এতক্ষন কথা বলার সময় গম্ভীর ব্যাপার নিয়ে আলোচনা চলছিল তাই খেয়াল করিনি। রমাদির নিজেরও বোধহয় খেয়াল নেই, উনি উঠে বসার পর, ওনার চাপা স্কার্টটা গুঁটিয়ে কোমরের কাছে উঠে গেছে। কালো রঙের স্টাইলিশ প্যান্টিতে ঢাকা ওনার যোনীদেশ আর ওনার থাই এখন সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। আমি চোখ ঘুরিয়ে নিলাম। আমার মায়ের মতন মায়ের যদি আমার মতন মেয়ে হয় তো এরকম মা হলে রাখীর মতন মেয়ে হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তবে একটাই তফাত আমি পড়াশুনাটা ঠিক মতন করেছিলাম, আর এখনও করি, এদের মধ্যে সেই জিনিসটার বড়ই অভাব। চৈতালিদি বিছানা ছেড়ে উঠে গেছিলেন, মোবাইল নিয়ে আবার স্ন্যাক্সের লোকগুলোকে ফোন করতে। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন, আধা আধা কথা কানে আসছিল। বাইরের পরিবেশ ভীষণ সুন্দর, এক কথায় ভয়ানক। একটু পড়ে চৈতালিদি ফিরে এসে বিছানায় বসে বললেন “উফফ এদের নিয়ে আর পারা যাচ্ছে না। এখন বলছে আরও সময় লাগবে। বৃষ্টির জন্য সব দেরী হয়ে গেছে, ডিলেইড। কোনও কথার ঠিক নেই এদের। এবার কখন কি হবে। কখন স্ন্যাক্স হবে, কখন ডিনার। ” আমারও খিদে খিদে পাচ্ছে অনেকক্ষণ ধরে। আবারও মনের মধ্যে একটা কথা খেলে গেল তাই সেটা না লিখে পারছি না, এই ভয়ানক পরিবেশে, যেখানে বৃষ্টির চোটে বাইরে কিছু দেখা যাচ্ছে না, ভয়ানক ঝড় হচ্ছে আর বাজের শব্দে কান পাতা দায়, সেই অবস্থায় বীর বাড়িতে নেই। অন্য যে কোনও মায়ের প্রথম চিন্তা আসত তার ছেলে এখন কোথায় আছে কি করছে এই নিয়ে। কিন্তু চৈতালিদির বীরের ব্যাপারে কোনও মাথা ব্যথা দেখলাম না, শুধুই স্ন্যাক্স নিয়ে চিন্তা। আমি একবার জিজ্ঞেস করলাম “বীর কোথায়?” কোনও পাত্তা না দিয়ে বললেন “গেছে কোথাও একটা। জানি না। ডিনার রাখা থাকবে ফিরে এলে খাবে, তখন দেখা যাবে।” সত্যি বিচিত্র মহিলা। বললাম “একবার ফোন করে দেখে নিন, কারণ বাইরে যা চলছে, “ উনি আমাকে হাত তুলে থামিয়ে দিয়ে রমাদিকে বললেন “তোর খিদে পাচ্ছে জানি। কিন্তু একটু ওয়েট কর। রাতে কি খাবি?” বাকি কথা গুলো আমার আর কানে ঢুকল না। সেইদিন বীরের পরিবর্তন দেখে ওনাকে দেখে মনে হয়েছিল ওনার বুকের ওপর চিন্তার একটা পাথর রাখা ছিল যেটা নেমে গেল। আমি ভাবছিলাম উনি নিজে যাই করুণ না কেন নিজের ছেলের ব্যাপারে খুব চিন্তায় আছেন। এখন বুঝতে পারলাম সে সব সাময়িক আর যথার্থ অর্থে মেকি। ডিনারের মেনু ঠিক করার পর আমাকে বললেন “ আমাকে বলে যায় নি কোথায় যাচ্ছে। তাই এখন আমার চিন্তা করে কি লাভ।” যথার্থ অর্থে মাতৃসুলভ উত্তর। বীরকে নিয়ে আমার একটু চিন্তা হচ্ছিল বটে, কিন্তু কাটিয়ে দিলাম। মরুকগে।