18-10-2019, 02:05 PM
পরের পর্ব
কিন্তু সেই মিলন দুজনের সম্মতিতে হলেই সেটাকে মিলন বলে। যাই হোক, কোলকাতায় চলে এলাম। সেইদিন রাতে ওর আচরণে আমি খুব দুঃখ পেয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু কোলকাতায় এসে বাবাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সেই রাতের স্মৃতির জাহাজটা যেন মনের গভীরে চাপা পড়ে গেল। বাবা সেরে উঠল। কয়েকদিন পর ও এসে আমাকে দিল্লী নিয়ে চলে গেল। আবার সেই একই জীবন। সময় দ্রুত কেটে যাচ্ছিল, কারণ আমার ছেলের দুষ্টুমি, সংসার সামলানোর দায় ভার, আর বরের সেই উগ্র আদরের মাঝে কখন যেন বছর ঘুরে গেল। বুঝলাম আবার আমার বরের অংশ আমার পেটে চলে এসেছে। দ্বিতীয় সন্তান আসতে চলেছে। আবার সবাই খুব খুশি। যেদিন বুঝলাম যে আবার আমি মা হতে চলেছি সেদিনই বাবা মা কোলকাতা থেকে উড়ে এসে আমাদের দেখে গিয়েছিল। মুম্বাই থেকে আমার শশুর বাড়ির লোকেরাও এসেছিল দেখা করতে। মনে হচ্ছিল আমার জন্মই হয়েছে আমার বরকে খুশি করে শুধু এই বাচ্চা তৈরি করার জন্য। দ্বিতীয় বাচ্চা হওয়ার সময় খুব বাড়াবাড়ি রকমের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। সার্জারির পর শুনেছিলাম বাচ্চা আর আমি দুজনেই সুস্থ আছি। কিন্তু কিছু একটা প্রবলেম হওয়ার জন্য আমি হয়ত আর মা হতে পারব না কোনওদিন। (এরকম অনেক ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। নতুন কিছু নয়।) আমি মনে মনে একটু খুশি হয়েছিলাম। কারণ আমারও স্বপ্ন ছিল দুটো সন্তানের, যদিও এত তাড়াতাড়ি নয়, কিন্তু যাই হোক যখন হয়েই গেল তখন আর চিন্তা কি। খুব আশ্চর্য হয়েছিলাম যখন ও আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল হাঁসপাতালে। আমাকে বলেছিল, আর চিন্তা নেই, এইবার যা খুশি করতে পারব, তোমাকে আর প্রেগন্যান্ট হতে হবে না। একেমন ভালোবাসা জানি না। একটু আগেই আমি মরতে মরতে বেচে গেছি সেই নিয়ে তার কোনও চিন্তা নেই। কয়েকমাস কেটে গেল দুই সন্তানের চাপে। একজন আয়া রাখা হয়েছিল। আমার ছোট ছেলের যখন ১ বছর, তখন প্রথম আমরা বিয়ের পর বেড়াতে গেলাম। লোকেরা বিয়ের পরে পরেই বেড়াতে যায় আমি গেলাম কয়েক বছর পরে। যাই হোক তবু গেলাম তো। গোটা হিমাচল ঘুরেছিলাম আমরা। নতুন ভাবে যেন আমাদের ভালোবাসা হল। হানিমুন বলতে চাইলে বলতে পার। আক্ষরিক অর্থে সেটাই আমার জীবনে হানিমুন। ফিরে আসার কিছুদিনের মধ্যেই আরেকটা সুখবর আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। ওর বদলি হয়ে গেছে কোলকাতায়। ওকে দেখে মনে হল না যে ও খুব একটা খুশি এই ব্যাপারটায় কিন্তু আমি ভেতরে ভেতরে খুব খুশি হয়ে উঠলাম। ওর গায়ে পড়া ভাব এই কয়েক বছরে আমার অভ্যেস হয়ে গেছে। কোলকাতায় গেলে অন্তত কিছু পুরনো বন্ধুদের সাথে কথা বলা যাবে, দেখা করা যাবে। তবে হ্যাঁ একটা জিনিস বলতে হয়, অনেক সোনা দানা, দামি জামা কাপড় এই সব আমাকে নিয়মিত উপহার দিয়ে চলত আমার বর। আমি সেজে গুঁজে টিপটপ থাকলে ও খুব খুশি হত। কোলকাতায় আসার কিছুদিনের মধ্যে আমার শশুর মশাই মারা গেলেন। আমার শাশুড়ি বহু দিন ধরে এমনি ভুগছিলেন। ওনাদের অনেক বয়স হয়েছিল। শশুর মশাইয়ের বিশাল সম্পত্তি এসে পড়ল আমার বরের কাঁধে। নিজে ব্যবসায়ী ছিলেন। আমার বর অবশ্য ব্যবসার দিকে যায়নি নিজের চাকরি ছেড়ে। আমার বাবা নিজেও তখন ব্যবসা করছেন, মোটের ওপর ভালোই চলছে আমার বাবার ব্যবসা। আমার বাবা ওকে বলেছিলেন যে চাইলে ব্যবসায় হেল্প করতে পারেন, কিন্তু ও ব্যবসায় ঢোকেনি। আর্মির লোকদের ডিউটি ব্যাপারটা একটু বেশীই হয়। আমার বাবাকে বলেছিল, আমার বাবার মতন আগে রিটায়ার করবে দিয়ে ব্যবসা শুরু করবে কিনা ভাববে। আমি আর কিছু হোক না হোক ওর এই আর্মির কাজটাকে ভীষণ সম্মানের চোখে দেখতাম। একটা আলাদা গ্ল্যামার বা গর্ব কাজ করত আমার মধ্যে যখন আমি ওর সাথে কোথাও যেতাম। যাই হোক জীবন বয়ে চলল আগের মতন। আমাদের কাছে আসার পর আমার শাশুড়ি আর বেশিদিন বাচেননি। আসলে ওনার ওইরকম শরীরের অবস্থায় আমার শশুর মশাইয়ের চলে যাওয়াটা ঠিক হজম করতে পারেননি। এক একটা সময় আসে দেখবে যখন উপর থেকে যেন খুশির বৃষ্টি হয়। তুমি চাইছ না কিন্তু এত খুশি আর সুখ কোথা থেকে তোমার রাস্তায় কেউ সাজিয়ে দিচ্ছে তুমি বুঝতে পারবে না। আর ঠিক তেমনই হয় যখন দুঃখ আসে একের পর এক। একের পর এক আঘাত চলে আসছে। কিছুতেই যেন খারাপ সময় আর কাটতে চাইছে না। আমাদের খারাপ সময় আমার শশুর মশাইয়ের চলে যাওয়া থেকে শুরু হয়েছিল। তারপর গেলেন শাশুড়ি, আর তার এক বছরের মধ্যেই বিনা মেঘে বাজের মতন আমার বাবা মা একটা অ্যাকসিডেন্টে আমাদের ছেড়ে চলে গেল। (মহিলার চোখ যেন একটু ছল ছল করছে। একে দুঃখের স্মৃতি, তার ওপর পেটে মদ পড়েছে। একটু ইমোশানাল তো হবেনই। ) বাবার ব্যবসা চালানোর মতন বিদ্যে আমার নেই। কিন্তু আমার বরের মতনই আমার বাবার পুরো সম্পত্তি আমিই পেলাম। প্রথম দিন মনে আছে তোমাকে বলেছিলাম যে আমার টাকা পয়সার কোনও অভাব নেই। এদিকে আমার ছেলেদের কলেজ শুরু হয়েছে। কয়েকদিন থিতু হতে না হতে আবার আমার বরের বদলি হয়ে গেল এনসিআরে। আমি ওকে বলেছিলাম, এইভাবে বারবার জায়গা বদল করলে বাচ্চাদের পড়াশুনার কি হবে কে জানে। ও আমাকে কোলকাতাতেই রেখে দিয়ে নিজে দিল্লী চলে গেল। আমাদের বাড়িটা আমি আমার বাবা মার মৃত্যুর পরে পরেই বেচে দিয়েছিলাম। একমাস পরে ও আমাকে জানিয়েছিল যে ও ওদের পৈতৃক বাড়িটা বেচে দিয়েছে ভালো দামে। মুম্বাইয়ে বাড়ির দাম কি হয় সেটা নিশ্চই তোমাকে বলে দিতে হবে না। (এখন জানি মুম্বাইয়ে বাড়ির সমস্যার কথা, তখন জানতাম না যদিও। তবুও বিজ্ঞের মতন মাথা নাড়ালাম।) কোলকাতায় এই বাড়িটা বানাল। এরপর আমি এখানে আমার জীবনে সন্তুষ্ট ছিলাম। ও মাঝে মাঝে এসে আমাদের সাথে থেকে যেত। সত্যি বলতে কি এই সময় ওর আদর আমি সব থেকে বেশী অনুভব করতাম। অনেকদিন ওকে কাছে না পাওয়ার পর ওকে কাছে পেতে ইচ্ছে করত। ঠিক করেই রেখেছিলাম আমার এইভাবে একলা একলা থাকতে আর ভালো লাগছে না। ছেলেদের একটা বোর্ডিং এ পাঠিয়ে চলে যাব। বেশ কয়েক বছর এইভাবে কেটে গেল। লোকাবো না তোমার সামনে, আমার যেমন ওকে কাছে পেতে তখন ইচ্ছে করত, আবার এই বাড়িটা আর কোলকাতার উপর মায়া আমি কাটিয়ে উঠতে পারছিলাম না কিছুতেই। এখানে অনেক পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হত, গল্প হত, সে অনেক কথা। ও নিজেও আমাকে ঠিক ওর সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোড় করত না। আমার ছেলেদের কোনও বোর্ডিং এ হল না। একটা জিনিসে মাঝে মাঝে একটু অদ্ভুত লাগত, যে লোকটা আমাকে না ছুঁয়ে এক মুহূর্ত বা একটা রাতও থাকতে পারত না সে কিভাবে এতদিন আমাকে না পেয়ে দিন কাটাচ্ছে। মনকে বুঝিয়েছিলাম, এখন আমি পুরনো খ্যালনা হয়ে গেছি, তাই আর আমার ব্যাপারে তেমন আকর্ষণ বোধ করে না। এটা বয়সের সাথে সাথে হয়েই থাকে। ব্যাপারটা ভালো নয়, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক আর অনিবার্য। “ উনি থামলেন। নিচে নেমে গেলেন ঠাণ্ডা কোল্ড ড্রিঙ্কের বোতল আনার জন্য, আর আমি দৌড় লাগালাম বাথরুমের দিকে। প্রায় একই সময়ে দুজনে ফিরে এলাম।
উনি আবার শুরু করলেন জড়ানো গলায়। “ একবার উনি যখন এলেন তখন ওর ব্যাগ গোছানর সময় একটা মেয়ের ছবি দেখলাম। (বুঝলাম এই কথাটা ওনাকে খুব কষ্ট করে বলতে হল।) অল্প বয়সী মেয়ে। দেখতে ভালো। মন কু ডাক ডাকতে শুরু করেছে। কিন্তু ওকে কিছু বোঝালাম না। অদ্ভুত ব্যাপার দেখলাম এত দিন পর এসেও একবারের জন্যও আমাকে ছুঁয়ে দেখল না। আমি তো বুড়িয়ে যাইনি, আমারও ইচ্ছা হয় আমার বর আমাকে একটু ভালবাসুক, আদর করুক। কিন্তু ওর আচরণে আমি আমি যেমন আশ্চর্য হচ্ছিলাম তেমনই আঘাত পাচ্ছিলাম। যাওয়ার আগের দিন আমি নিজেই এসেছিলাম ওর সাথে ঘন হতে। কেমন যেন পাশ কাটিয়ে গেল। ও ফিরে গেল। মেয়েটার কথা আমি আর ওকে জিজ্ঞেস করতে পারলাম না। প্রায় পনের দিন পর ওর একটা কুরিয়র এল আমার নামে। বাড়ির দলিল আমার বর আমার নামে লিখে দিয়েছে। আগের বার এসেই সব বন্দবস্ত করে গিয়েছিল। আর তার সাথে একটা ছোট চিঠি, লেখা আছে, আমি আর ফিরছি না, এই বাড়িটা তোমার। বাচ্চাদের জন্য কখনও কোনও দরকার পড়লে আমাকে অবশ্যই খবর দিও। নাম্বার একই আছে। নাম্বার বদলালে তোমাকে জানিয়ে দেব। ডিভোর্স চাইলে নিতে পার, কিন্তু আমি নিজে থেকে যেচে কিছু বলতে চাই না। কোনও অসুবিধা হলে জানাতে ভুলবে না। রিনার সাথে পরে কোনও দিন সুযোগ হলে আলাপ করিয়ে দেব। আলাপ করে খারাপ লাগবে না। এখন আমরা এক সাথে থাকি। “ মহিলা চোখের জল মুছলেন। আমারও যেন চোখে জল এসে গেছে। সামলে নিলাম নিজেকে। মহিলা একটু থেমে বললেন “ মনে করবে না যে মেয়েটার সাথে নিজের তুলনা করছি। মেয়েটার অবশ্য সেই একটাই ছবি দেখেছিলাম। মেয়েটা সুন্দরী, স্টাইলিশ আর বাকি কিছু বলতে পারব না। কিন্তু আমি কি ওর চোখে আর সুন্দরী নই? আমিও তো কম স্টাইলিশ নই। বিয়ের পর থেকে কয়েক বছর ধরে রাতের পর রাত আমার ইচ্ছা অনিচ্ছার দিকে খেয়াল না করে আমাকে নিয়ে যা খুশি করেছে। আমিও আমার সব ইচ্ছে মেরে ফেলেছিলাম ওর জন্য। জানি না মেয়েটা ওকে কি এমন দিতে পারে যেটা আমার কাছ থেকে ও পায়নি, বা , আমি ওকে দিতে পারি না। সব দিয়েছিলাম জানো ওকে “ মহিলা আর কথা শেষ করতে পারলেন না। নিজের দুহাতের মধ্যে নিজের মুখটা ঢেকে নিচু হয়ে কিছুক্ষণ বসে রইলেন। একটু সামলে ওঠার পর আমি জিজ্ঞেস করলাম “ব্যস সেই চিঠিটাতেই সম্পর্কের ইতি? ফোন করেন নি? বা দেখে আসেন নি গিয়ে? ” মাথা নেড়ে বললেন “না। আমার মন থেকে সব কিছু মুছে যাচ্ছিল। তবে ছেলেদের নিয়ে আমি এখানেই থাকব ঠিক করে ফেলেছিলাম। বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে থাকব, আজকাল তো চ্যাটিং করলেও সময় কেটে যায়। কি দরকার গায়ে পড়ে ওর কাছে ফেরার চেষ্টা করার। ডিভোর্স নেব না কারণ আমার ছেলেদের একটা বাবার পদবীর দরকার। মাঝে মাঝে দু একটা মামুলি চিঠি লিখে আমাদের খোঁজ নিত। আমি উত্তর দিতাম না। একসময় সেই চিঠি আসাও বন্ধ হয়ে গেল। ও নিজেও আমাকে কোনও দিন ফোন করেনি, আমিও আর করিনি। “ একটু দম নিয়ে বললেন “এখন আমি নিজের জীবন নিজের মতন করে ভোগ করি। টাকার অভাব নেই। টাকা থাকলে দুনিয়ায় এমন কিছু জিনিস নেই যা কিনতে পারা যায় না। ভালোবাসার আর দরকারও নেই। অনেক হয়েছে। শুধু মাঝে মাঝে মনে হয়, বাদর দুটোকে মানুষ করতে পারলাম না। ওদের বাবার জায়গাটা আমি পূরণ করতে পারিনি। “ আমি যেটা ওনাকে জিজ্ঞেস করতে গেলাম সেটা উনি নিজেই বলে দিলেন। “আমার ছেলেরা জানে সব ব্যাপার। আমি নিজেই বলে দিয়েছি। এই সব ব্যাপার চেপে রেখে কোনও লাভ নেই। একদিন না একদিন ওরা জানতেই পারবে। ওরা এই ব্যাপারে কি ভাবে আমি জানি না। কিন্তু বাবার শাসন না পেয়ে পেয়ে ওদের পড়াশুনা হল না। এই বয়স থেকে প্রেম করে এর তার সাথে ঘুরে সময় কাটায়। ওদের কম্পুটার খুললে যা সব জিনিস দেখেছি, বললে বিশ্বাস করবে না। সময় বদলাচ্ছে, এখন বোধহয় সব ছেলে মেয়েদের কাছেই এইসব থাকে। “ এই অনেকক্ষণ পরে আবার উনি হাসলেন, “শুধু ওরা কেন, আমাদের কাছেও থাকে।“ হেঁসে উঠলেন উচ্চস্বরে। আমি বুঝতে পেরেছি উনি কি বলতে চাইছেন। আমিও ওনার সাথে হাঁসিতে যোগ দিলাম। পরিস্থিতি অনেকক্ষণ পরে একটু যেন হালকা হল। এইবার আমি নিজে যেচেই ওনাকে আরেকটা পেগ বানাতে বললাম। বললাম “ কৌতূহল থাকা বাজে নয়। ওদের কে যে পড়ানোর ব্যাপারটা বলেছিলেন?” আমি একটু ইতস্তত করছি দেখে উনি আমাকে গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “ওদের সাথে কথা হয়েছে, কালকের দিনটা ছেড়ে দাও, পরশু থেকে শুরু কর। তবে নিজের পড়াশুনা বা কাজের ক্ষতি করে নয়। বাড়িতে যখন অবসর সময়ে বসে থাকবে তখন পড়িয়ে দিও। “ আমি ওনাকে থামিয়ে দিয়ে বলতে বাধ্য হলাম “আপনি এত শত চিন্তা করবেন না। ঠিক সামলে নিতে পারব। আর না পারলে বলে দেব। “ আমি ভেবেছিলাম ওনার কথা এখানেই শেষ, কিন্তু সেটা ছিল আমার ভুল ধারণা। এইবার ওনার আরেকটা নতুন রূপ বের হল।
আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম “আপনার ছেলেরা এত দেরী করে বাড়ি ফেরে কেন? টিউশন আছে বুঝি?” বললেন “সঠিক করে বলতে পারব না। ওই যে বললাম শাসনের অভাবে গোল্লায় গেছে। পড়াশুনার কি হাল সেটা তুমি নিজের চোখেই দেখে নিও পরশু। “ উনি কিছু একটা ভেবে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন “তোমার যে বয়ফ্রেন্ড আছে তার কি খবর।“ আমি সংক্ষেপে আমার ইন্টার্ন আর অরুণের সাথে আলাপের গল্পটা বললাম। ওর সাথে আর রাজা আর সন্দীপের সাথে করা সবরকম কেচ্ছা গুলো বেমালুম চেপে গেলাম। উনি একটু গম্ভীর ভাবে বললেন “মনের মিল থাকলেই ভালো।“ এর কোনও উত্তর হয় না। উনি বললেন “তবে সত্যি কথা বলতে এখন বিচ্ছেদের পর নিজের মতন জীবন কাটাতে পেরে অনেক ভালো লাগে। বাড়িতে থাকলে একটা একাকীত্ব থাকেই। কিন্তু বাইরে নিজের খুশি মতন লোক জনের সাথে মিশতে পারি, বন্ধুত্ব করতে পারি। “ আমি ওনার কথার মাঝেই জিজ্ঞেস করে ফেললাম “এত দিন একা একা আছেন, আপনার আগের হাসব্যান্ডকে লিগালি ডিভোর্স দিয়ে নতুন করে তো সংসার শুরু করতে পারেন। আমার মাও তো “ উনি আমাকে থামিয়ে দিলেন হাত তুলে। গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে বাইরের দিকেই তাকিয়ে তাকিয়ে বললেন “তোমার মা বিয়ে করে কোনও আঘাত পায় নি। তাই উনি আবার বিয়ে করতে পেরেছেন মন থেকে। আমি আসলে এমন ঠকেছি যে এখন আর কোনও পুরুষের হাতে নিজের জীবনটা ছাড়তে ইচ্ছা করে না। বিয়ের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তবে লুকিয়ে লাভ নেই, এখানে যখন আছ হয়ত কিছু কিছু বুঝতে পারবে পরে, তাই আগেই বলে রাখছি, আমি বাইরে ছেলে মেয়েদের সাথে অবাধ মেলা মেশা করি। রোজ নয় কিন্তু যখন ভেতর থেকে আর্জ আসে তখন। পয়সা থাকলে ফুর্তি বাজ ছেলে মেয়েদের জোগাড় করা কি কোনও সমস্যা। কয়েক ঘণ্টার তো ব্যাপার। “ নিজের থাইয়ের ওপর বেশ কয়েকবার জোড়ে জোড়ে হাত দিয়ে থাপ্পড় মেরে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন “আর এটাও আমি হলপ করে বলতে পারি, আমি এখনও অনেক ছেলের মাথা ঘুরিয়ে দিতে পারি। ডানা কাটা সুন্দরী না হলেও দেখতে যে আমি খারাপ নই আর আমার যে ফিগার খারাপ নয় সেটা আমি জানি। আর যদি বল লোকে জানাজানি হলে কি হবে, তো সোজা সুজি বলে দিচ্ছি, আমার কিসসু এসে যায় না। লোকে কি জানল না জানল, কি বুঝল না বুঝল, আমার পেছনে কি বলে না বলে সে নিয়ে মাথা ব্যথা নেই আমার। আমি কারোরটা খাইও না আর পরিও না। তাই তারা আমার সম্বন্ধে যা খুশি বলতে পারে। “ থামলেন উনি। ওনাকে দেখে একটু সন্দেহ হয়েছিল কারণ এত টিপটপ থাকেন। যথেষ্ট সুন্দরী, বেশ একটা সেক্সি ব্যাপার আছে ওনার ভেতরে। এতদিন বরকে ছেড়ে ডিভোর্স না নিয়ে একা একা থাকবেন। তার ওপর ড্রিংক করে রেগুলার। মাঝে মাঝে দেখে মনে হয় যথেষ্ট খোলা মেলা পোশাকে নিজেকে সাজাতে ভালোবাসেন। সকালে তো দেখে প্রায়ই মনে হয় যে এইভাবে আমাদের সামনে আগের রাত্রের আলুথালু পোশাকে হাঁটতে ওনার কোনও অসুবিধাই হয় না। এরকম মহিলার এক আধটা আফেয়ার থাকবে সেটা কি খুব অবিশ্বাস্য। অবশ্য উনি স্টাইলিশ ভাবে থাকলেও, আলুথালু থাকেন শুধু সকালেই, আর তখন অবশ্য বাড়িতে লোক বলতে ওনার ছেলেরা আর আমি আর কাজের মেয়ে। তাই হয়ত নিজেকে খুব একটা ঢেকে রাখেন না। কে জানে। আমি এই সব আবল তাবল ভাবছি এমন সময় উনি আমাকে একটা অদ্ভুত প্রস্তাব দিলেন। “তুমি তো এখন প্রাপ্তবয়স্ক, আর আমরা এখন বন্ধুর মতই, আমার সাথে একদিন বাইরে আউটিঙ্গে যাবে?” আমার সেই রাতের পিকনিকের কথা মনে পড়ে গেল। তবে আউটিং জিনিসটা আমাকে টানে ভালো। আমি জিজ্ঞেস করলাম “কোথায় আউটিং?” উনি হেঁসে বললেন “আরে আউটিং মানে বেড়াতে যাওয়া নয়। আমরা দুতিনজন আড্ডা মারতে যাই ।“ এটুকু বলে আমার দিকে ঢুলুঢুলু চোখে তাকিয়ে একবার চোখ মেরে বললেন “ ভালো ফুর্তি হয়। তবে ভালো মেয়ের মতন সেজে থাকলে ওইসব জায়গায় যাওয়ার দরকার নেই। “ বললাম “কেমন খরচ পড়ে?” বললেন “তোমাকে কিছু দিতে হবে না। গিয়ে তো দেখ যে কি ব্যাপার।“ আরেকবার চোখ মেরে বললেন “ ভালো ফুর্তি হয়। ছেলেরাও আসে। “ আমি বোধহয় এরকম খোলামেলা ভাবে ওনার মুখে এইসব কথা শুনে একটু হকচকিয়ে গিয়েছি, আমার মুখের দিকে তাকিয়ে উনি জোড়ে হেঁসে উঠলেন। “ভালো মেয়ে সেজে থাকলে দরকার নেই। ভালো কনেটি সেজে বিয়ের পিড়িতে গিয়ে বসে যেও। তবে আমি জানি তুমি বেশী খরচা করতে পারবে না। এসব জায়গায় আমাকেও কোনও খরচা প্রায় করতে হয় না। তাই তুমিও এইসব নিয়ে কিছু ভেব না। ও হ্যাঁ, শুধু একটু সেজে গুঁজে যেতে হয়। বুঝলে তো? “ আবার হো হো করে হেঁসে উঠলেন “ তুমি হাঁসপাতালে যেভাবে গুড গার্লের মতন যাও তেমন ভাবে গেলে চলবে না। “ আবার এক প্রস্থ হাঁসি। আমি মনে মনে বললাম আমিও এমন সেজে বেরোতে পারি যে লোকে দেখলে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাবে। মনে একটা অদ্ভুত কৌতূহল আসছে কিন্তু মুখে সেটা প্রকাশ না করেই বললাম “ একটু ভেবে দেখি। তারপর আপনাকে জানাব খন। আর গেলে কবে যাব? আমি কিন্তু বেশী রাত করতে পারব না। পরের দিন ডিউটি থাকবে তো। “ বললেন তোমার পরে কবে অফ আছে? বললাম “ছ দিন মতন পর। “ বললেন “বেশ তাহলে যেদিন অফ আছে তার আগের দিন সন্ধ্যায় ফিরে এস দিয়ে ফ্রেশ হয়ে যাওয়া যাবে খন। আর এইসব ফান সন্ধ্যার আগে হয় কি?” আবার এক প্রস্থ হাঁসি। ওনার হাঁসি দেখে বুঝতে পারছি যে আমারও যেন বেশ চড়েছে। এইবার যদি ওনার ছেলেরা ফেরে তো ওদের সামনে গিয়ে বসে খাবার খাব কি করে, বেফাঁস যদি মুখ থেকে কিছু বেড়িয়ে যায় তো সলিড কেস। ওরা হয়ত ওদের মাকে এইভাবে নেশা করতে দেখে অভ্যস্ত, কিন্তু আমি বাইরের মেয়ে। উঠে বাথরুমে গিয়ে হালকা হয়ে ভালো করে চোখে মুখে জল দিলাম। না তেমন রাত হয় নি। আমি ওনার ঘরের বাইরে গিয়ে ভেতরে তাকিয়ে দেখলাম এখনও উনি ব্যাল্কনিতে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে মদ গিলছেন। বাইরে থেকেই আমি বললাম “আমার আজকের মতন হয়ে গেছে। ডিনার করার সময় কিছু কি সাহায্য করব?” বললেন “সব তৈরি আছে, শুধু ভাত তৈরি করলেই হবে। “
আজ একটু এসি তে শোওয়া দরকার। আমি আমার ঘরে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে একটু এসিটা চালিয়ে দিলাম। বেশ আরাম লাগছিল। ইচ্ছা করছিল পরনের লেগিন্স আর হাত কাটা টপটার ভেতর থেকে অন্তর্বাসগুলো খুলে একটু আরাম করে শুই। কিন্তু না। একটু পরেই তো খাবার ডাক আসবে। আবার পরতে হবে। এমনি শুয়ে শুয়ে মহিলার কথাগুলো ভাবতে লাগলাম। মহিলা সত্যি একা। আবার ওনার আরেকটা দিকও জানা গেল। দোটানায় পড়ে গেলাম, ওনার এই প্রস্তাব নেব কি নেব না। কি হয় না হয় কে জানে। অরুণকে কি এই ব্যাপারটা জানাব? ভাবলাম হাতে তো আরও কয়েকদিন সময় আছে, ভেবে দেখে নি, তারপর যা করার করা যাবে খন। উনি তো জোরাজুরি করছেন না। আর এইসব বড়লোক তথাকথিত লোনলি বউদের বা মেয়েদের পার্টি বা আউটিং কেমন হয় সেটা জানার একটা অদম্য ইচ্ছাও আমাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে। ঠিক করলাম আজ মদ পড়েছে পেটে, কাল নেশা নামুক তারপর সবদিক ভেবে চিনতে দেখা যাবে। কতক্ষণ শুয়ে ছিলাম খেয়াল নেই। বেশ শীত শীত করতে শুরু করায় উঠে এসি টা বন্ধ করে দিলাম। মহিলার ইলেকট্রিক বিল বাড়িয়ে কি লাভ। ওনার দুই ছেলেই সেদিন খাবারের আগে বাড়ি ফিরে এসেছে। আমি নিচে নামার আগে আমার পোশাক আশাক একটু ঠিক করে নিলাম। ওনার ছোট ছেলের নজর বড্ড খারাপ আগেই বলেছি, যেন চোখ দিয়ে পারলে আমাকে নগ্ন করে খেয়ে নেবে। জুভেনাইল কৌতূহল ঠিক এটাকে বলে না। পরের দিন রুটিন মাফিক কেটে গেল। সকালে উঠে তাড়াহুড়া করে বেড়িয়ে গেলাম। ওনার ছেলেরা তখনও তৈরি হয় নি। মহিলা সেই আগের রাতের আলুথালু ম্যাক্সি পরে খাবার বাড়ছেন। একটা কথা মানতেই হবে, এখানে ব্রেকফাস্টের বেশ তারতম্য আছে। কোনও দিন, ব্রেড টোস্ট অমলেট, কোনোদিন দুধ কর্ণফ্লেক্স, কোনও দিন রুটি আলুর তরকারি, কোনও দিন লুচি সবজি আবার কোনও দিন স্যান্ডউইচ। এইবার আসি ওনার ছেলেদের পড়ানোর কথায়। ঠিক হয়েছিল নিচে ড্রয়িং রুমেই পড়াব। বাইলজি পড়াব। আগের ব্যাচ গুলো কে পড়ানোর সময় আমার নোটসের সাথে আরও কিছু নতুন নোটস তৈরি করেছিলাম। সেইগুলো আবার বের করতে হল। কি পড়ছে, কতদূর পড়েছে, এইসব কথা বলার পর বুঝতে পারলাম এত কাঁচা ছাত্র বোধহয় এর আগে আমি নিজে কোনও দিন চোখে দেখিনি। দুজনেই পড়াশুনায় বৃহস্পতি। ছোটটি যদিও কোনও মতে কাজ চালিয়ে নিতে পারবে, বড়টি মানে ঠিক যাকে বলে একটু আস্ত গুণধর। তবে দুজনের হাব ভাব একটু আলাদা। বড়টির একমাত্র লক্ষ্য নিজের হোম ওয়ার্ক আমাকে দিয়ে শেষ করা। ওদের আবার হোমওয়ার্কের গ্রেড হয়। পরীক্ষার সময় কি করবে সেটা নিয়ে এখন আপাতত চিন্তিত নয় দুজনের কেউই। ছোট টার মন বই থেকে বেশী আমার বুকের উপরে। সেদিন আমি ইচ্ছা কৃত ভাবে ফুল হাতা একটা কামিজ আর লেগিন্স পরে ওদের পড়াতে বসেছি, কিন্তু তাতে কি ওর চোখে যেন এক্সরে আছে। যা কিছু দেখা যায় সব গিলে খাবে। চোখা চুখি হলে অবশ্য খাতার দিকে চোখ নামিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যে আবার ফেরত আসছে আমার উপর। আমি ঠিক করলাম ওকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করব। অনেক নোটস দিলাম দুজনকে। মহিলা মাঝে মাঝে এসে আমার পড়ানো , বোঝানো এইসব দেখে যাচ্ছেন, ওনার মুখ দেখে মনে হল উনি ওনার ছেলেদের নিয়ে যতটা হতাশ, আমার পড়ানোর চেষ্টা নিয়ে ঠিক ততটাই খুশি। প্রথম দিনের পড়ানোর শেষের পর উনি আমাকে বলেই ফেললেন এত দিন তোমার মতন যত্ন নিয়ে কাউকে পড়াতে দেখিনি। এইবার ওদের কিছু একটা হবেই। আমার ওপর ওনার ভরসা আরও বেড়ে পরের পরের দিন যখন ওনার বড় ছেলে বাড়ি এসে আমাদেরকে বেশ গর্বের সাথে বলল যে ক্লাসে এই প্রথম ওর স্যার খুব প্রশংসা করেছেন। হোমওয়ার্কে সবথেকে ভালো গ্রেড পেয়েছে। ওর ছোট ভাইও সেদিন উপস্থিত ছিল। বুঝলাম ভাইকে বেশ এক হাত নিল। ভদ্রমহিলাকে দেখে বুঝতে পারলাম যে উনি আজ সব থেকে খুশি। ওনার ধারণা ওনার বড় ছেলে ঠিক পথে ফেরত এসেছে। একটা সাবজেক্টে যদিও বা হয় তো কম কি। কিন্তু আমার ছক টা ছিল অন্য। ওনার বড় ছেলে আমাকে দিয়ে নিজের হোম ওয়ার্ক করাতে চায়, আমি সেটা চুপ চাপ ওকে দিয়ে করিয়ে নেব। এমনিতে ওর বড় ছেলে যে কিছুই শিখছে না তাতে আমার কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু ওদের দুজনকেই নোটস দেওয়ার সাথে সাথে সব কিছু বুঝিয়ে বলতাম, আর সে নিয়ে আমি কোনও কার্পণ্য করি নি। ঘোড়াকে জলের কাছে নিয়ে যাওয়া আমার কাজ, ঘাস খাওয়া না খাওয়া ঘোড়ার ব্যাপার। তবে আজ আমি আগের দিনের মতন অত রেখে ঢেকে এসে বসিনি। ওনার ছোট ছেলের নজর আমি দেখেও সম্পূর্ণ উপেক্ষা করছি আজ। আজ আমি একটা ঢিলে স্লিভলেস টপের সাথে হাঁটুর থেকে একটু লম্বা স্কার্ট পরেছি। ঠিক লং স্কার্ট নয়, কিন্তু হাঁটুর নিচে অর্ধেকটা পা ঢাকা। ওদের মাও বাড়িতে এইসব পরেন, তো আমি পরলে কিসের ক্ষতি। আগে ওনার ছোট ছেলের চোখের আক্রমন ছিল শুধু আমার বুকের ওপর বা যদি সুযোগ পায় তো হয়ত বগল বা বগলের নিচের স্তনের পাশের দিকের অনাবৃত অংশে, কিন্তু আজ দেখলাম ওর নজর মাঝে মাঝে আমার নির্লোম পায়ের অনাবৃত অংশেও ঘোরা ফেরা করছে, তবে যা করছে সব কিছু আমার নজর এড়িয়ে। আমিও দেখে না দেখার ভাণ করছি। সব কিছু হওয়ার পর ওনার ছোট ছেলে আমার সামনেই ওর মাকে বলল আমি খুব ভালো পড়াচ্ছি। ও আমার কাছেই পড়তে চায়। আমি মনে মনে হাসলেও মুখে বললাম “আমি পড়ালে যদি তোমার রেজাল্ট ভালো হয় তো তোমারই ভালো। “
ওদের মায়ের জোরাজুরিতে সেদিন ওরা দুজন আমাদের আগেই খেয়ে নিল। ওরা উপরে উঠে যাওয়ার পর আমি আর ওই মহিলা একসাথে খেতে বসলাম। আমাকে উনি সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন পরশু তো তোমার অফ। আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম হ্যাঁ। বললেন “তো কাল আমার সাথে বেরোবে? আগের দিন যেমন কথা হয়েছিল?“ আমি একটু ইতস্তত করে বললাম “আপনার সাথে আমার যাওয়াটা কি ঠিক হবে?” উনি বললেন “ আমরা এখন বন্ধু। চলো না একদিন। জোড় করছি, না, কেউ কিছু করতে বা খেতে তোমাকে জোড় করবে না আমি কথা দিচ্ছি। যদি ভালো না লাগে তো পরের দিন যেও না। “ এইবার সিঁড়ির দিকটা দেখে নিয়ে গলা নামিয়ে বললেন “ তবে কোথায় যাচ্ছি কি করছি এইসব কিন্তু বাইরের কাউকে বলবে না। মনে থাকবে তো?“ আমি বুঝলাম আমার চোখের চাহুনিতে যে চাপা উত্তেজনা মাখা কৌতূহল রয়েছে সেটা উনি অনুধাবন করে ফেলেছেন। আমার হ্যাঁ বা না বলার জন্য অপেক্ষা না করেই সরাসরি ধরে নিয়েছেন যে আমি আগামিকাল ওনার সাথে কোনও এক ফুর্তির জায়গায় যাব, যেখানে কিছু বকাটে ছেলে পুলে এক জোটে ফুর্তি করবে। ওনার হাবভাব দেখে ভালোই বোঝা যাচ্ছে যে খুব ভালো কিছু ওরা করে না, আর তাই এই সতর্কতা। তবে এইসব আউটিনে শুনেছি অনেক কিছু হয়। দেখাই যাক একদিন গিয়ে। অনেক কিছুই তো করলাম। চলতি কথায় যাকে বলে গ্রুপ সেক্স সেটাও তো করেছি। এখানে নিশ্চই এই মহিলা তেমন কিছু করে না। হয়ত মদ খেয়ে গায়ে ঢলাঢলি করে মাতলামি করবেন। মন্দ কি। আর এখানে আসার পর অনেক দিন হয়ে গেছে, ঠিক তেমনভাবে কিছুই করা হয়নি। ফুর্তির বয়সের দিনগুলো বেকার চলে যাচ্ছে। বললাম “ঠিক আছে, আমি হাঁসপাতাল থেকে ফিরে তৈরি হয়ে নেব। কিন্তু আর কে কে থাকবে ওখানে?“ বললেন “তেমন কিছু ঠিক নেই। চলো গিয়ে দেখতে পাবে। আসলে আমার এক বান্ধবী আছে, সেই সব কিছু ঠিক ঠাক করে। “
কিন্তু সেই মিলন দুজনের সম্মতিতে হলেই সেটাকে মিলন বলে। যাই হোক, কোলকাতায় চলে এলাম। সেইদিন রাতে ওর আচরণে আমি খুব দুঃখ পেয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু কোলকাতায় এসে বাবাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সেই রাতের স্মৃতির জাহাজটা যেন মনের গভীরে চাপা পড়ে গেল। বাবা সেরে উঠল। কয়েকদিন পর ও এসে আমাকে দিল্লী নিয়ে চলে গেল। আবার সেই একই জীবন। সময় দ্রুত কেটে যাচ্ছিল, কারণ আমার ছেলের দুষ্টুমি, সংসার সামলানোর দায় ভার, আর বরের সেই উগ্র আদরের মাঝে কখন যেন বছর ঘুরে গেল। বুঝলাম আবার আমার বরের অংশ আমার পেটে চলে এসেছে। দ্বিতীয় সন্তান আসতে চলেছে। আবার সবাই খুব খুশি। যেদিন বুঝলাম যে আবার আমি মা হতে চলেছি সেদিনই বাবা মা কোলকাতা থেকে উড়ে এসে আমাদের দেখে গিয়েছিল। মুম্বাই থেকে আমার শশুর বাড়ির লোকেরাও এসেছিল দেখা করতে। মনে হচ্ছিল আমার জন্মই হয়েছে আমার বরকে খুশি করে শুধু এই বাচ্চা তৈরি করার জন্য। দ্বিতীয় বাচ্চা হওয়ার সময় খুব বাড়াবাড়ি রকমের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। সার্জারির পর শুনেছিলাম বাচ্চা আর আমি দুজনেই সুস্থ আছি। কিন্তু কিছু একটা প্রবলেম হওয়ার জন্য আমি হয়ত আর মা হতে পারব না কোনওদিন। (এরকম অনেক ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। নতুন কিছু নয়।) আমি মনে মনে একটু খুশি হয়েছিলাম। কারণ আমারও স্বপ্ন ছিল দুটো সন্তানের, যদিও এত তাড়াতাড়ি নয়, কিন্তু যাই হোক যখন হয়েই গেল তখন আর চিন্তা কি। খুব আশ্চর্য হয়েছিলাম যখন ও আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল হাঁসপাতালে। আমাকে বলেছিল, আর চিন্তা নেই, এইবার যা খুশি করতে পারব, তোমাকে আর প্রেগন্যান্ট হতে হবে না। একেমন ভালোবাসা জানি না। একটু আগেই আমি মরতে মরতে বেচে গেছি সেই নিয়ে তার কোনও চিন্তা নেই। কয়েকমাস কেটে গেল দুই সন্তানের চাপে। একজন আয়া রাখা হয়েছিল। আমার ছোট ছেলের যখন ১ বছর, তখন প্রথম আমরা বিয়ের পর বেড়াতে গেলাম। লোকেরা বিয়ের পরে পরেই বেড়াতে যায় আমি গেলাম কয়েক বছর পরে। যাই হোক তবু গেলাম তো। গোটা হিমাচল ঘুরেছিলাম আমরা। নতুন ভাবে যেন আমাদের ভালোবাসা হল। হানিমুন বলতে চাইলে বলতে পার। আক্ষরিক অর্থে সেটাই আমার জীবনে হানিমুন। ফিরে আসার কিছুদিনের মধ্যেই আরেকটা সুখবর আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। ওর বদলি হয়ে গেছে কোলকাতায়। ওকে দেখে মনে হল না যে ও খুব একটা খুশি এই ব্যাপারটায় কিন্তু আমি ভেতরে ভেতরে খুব খুশি হয়ে উঠলাম। ওর গায়ে পড়া ভাব এই কয়েক বছরে আমার অভ্যেস হয়ে গেছে। কোলকাতায় গেলে অন্তত কিছু পুরনো বন্ধুদের সাথে কথা বলা যাবে, দেখা করা যাবে। তবে হ্যাঁ একটা জিনিস বলতে হয়, অনেক সোনা দানা, দামি জামা কাপড় এই সব আমাকে নিয়মিত উপহার দিয়ে চলত আমার বর। আমি সেজে গুঁজে টিপটপ থাকলে ও খুব খুশি হত। কোলকাতায় আসার কিছুদিনের মধ্যে আমার শশুর মশাই মারা গেলেন। আমার শাশুড়ি বহু দিন ধরে এমনি ভুগছিলেন। ওনাদের অনেক বয়স হয়েছিল। শশুর মশাইয়ের বিশাল সম্পত্তি এসে পড়ল আমার বরের কাঁধে। নিজে ব্যবসায়ী ছিলেন। আমার বর অবশ্য ব্যবসার দিকে যায়নি নিজের চাকরি ছেড়ে। আমার বাবা নিজেও তখন ব্যবসা করছেন, মোটের ওপর ভালোই চলছে আমার বাবার ব্যবসা। আমার বাবা ওকে বলেছিলেন যে চাইলে ব্যবসায় হেল্প করতে পারেন, কিন্তু ও ব্যবসায় ঢোকেনি। আর্মির লোকদের ডিউটি ব্যাপারটা একটু বেশীই হয়। আমার বাবাকে বলেছিল, আমার বাবার মতন আগে রিটায়ার করবে দিয়ে ব্যবসা শুরু করবে কিনা ভাববে। আমি আর কিছু হোক না হোক ওর এই আর্মির কাজটাকে ভীষণ সম্মানের চোখে দেখতাম। একটা আলাদা গ্ল্যামার বা গর্ব কাজ করত আমার মধ্যে যখন আমি ওর সাথে কোথাও যেতাম। যাই হোক জীবন বয়ে চলল আগের মতন। আমাদের কাছে আসার পর আমার শাশুড়ি আর বেশিদিন বাচেননি। আসলে ওনার ওইরকম শরীরের অবস্থায় আমার শশুর মশাইয়ের চলে যাওয়াটা ঠিক হজম করতে পারেননি। এক একটা সময় আসে দেখবে যখন উপর থেকে যেন খুশির বৃষ্টি হয়। তুমি চাইছ না কিন্তু এত খুশি আর সুখ কোথা থেকে তোমার রাস্তায় কেউ সাজিয়ে দিচ্ছে তুমি বুঝতে পারবে না। আর ঠিক তেমনই হয় যখন দুঃখ আসে একের পর এক। একের পর এক আঘাত চলে আসছে। কিছুতেই যেন খারাপ সময় আর কাটতে চাইছে না। আমাদের খারাপ সময় আমার শশুর মশাইয়ের চলে যাওয়া থেকে শুরু হয়েছিল। তারপর গেলেন শাশুড়ি, আর তার এক বছরের মধ্যেই বিনা মেঘে বাজের মতন আমার বাবা মা একটা অ্যাকসিডেন্টে আমাদের ছেড়ে চলে গেল। (মহিলার চোখ যেন একটু ছল ছল করছে। একে দুঃখের স্মৃতি, তার ওপর পেটে মদ পড়েছে। একটু ইমোশানাল তো হবেনই। ) বাবার ব্যবসা চালানোর মতন বিদ্যে আমার নেই। কিন্তু আমার বরের মতনই আমার বাবার পুরো সম্পত্তি আমিই পেলাম। প্রথম দিন মনে আছে তোমাকে বলেছিলাম যে আমার টাকা পয়সার কোনও অভাব নেই। এদিকে আমার ছেলেদের কলেজ শুরু হয়েছে। কয়েকদিন থিতু হতে না হতে আবার আমার বরের বদলি হয়ে গেল এনসিআরে। আমি ওকে বলেছিলাম, এইভাবে বারবার জায়গা বদল করলে বাচ্চাদের পড়াশুনার কি হবে কে জানে। ও আমাকে কোলকাতাতেই রেখে দিয়ে নিজে দিল্লী চলে গেল। আমাদের বাড়িটা আমি আমার বাবা মার মৃত্যুর পরে পরেই বেচে দিয়েছিলাম। একমাস পরে ও আমাকে জানিয়েছিল যে ও ওদের পৈতৃক বাড়িটা বেচে দিয়েছে ভালো দামে। মুম্বাইয়ে বাড়ির দাম কি হয় সেটা নিশ্চই তোমাকে বলে দিতে হবে না। (এখন জানি মুম্বাইয়ে বাড়ির সমস্যার কথা, তখন জানতাম না যদিও। তবুও বিজ্ঞের মতন মাথা নাড়ালাম।) কোলকাতায় এই বাড়িটা বানাল। এরপর আমি এখানে আমার জীবনে সন্তুষ্ট ছিলাম। ও মাঝে মাঝে এসে আমাদের সাথে থেকে যেত। সত্যি বলতে কি এই সময় ওর আদর আমি সব থেকে বেশী অনুভব করতাম। অনেকদিন ওকে কাছে না পাওয়ার পর ওকে কাছে পেতে ইচ্ছে করত। ঠিক করেই রেখেছিলাম আমার এইভাবে একলা একলা থাকতে আর ভালো লাগছে না। ছেলেদের একটা বোর্ডিং এ পাঠিয়ে চলে যাব। বেশ কয়েক বছর এইভাবে কেটে গেল। লোকাবো না তোমার সামনে, আমার যেমন ওকে কাছে পেতে তখন ইচ্ছে করত, আবার এই বাড়িটা আর কোলকাতার উপর মায়া আমি কাটিয়ে উঠতে পারছিলাম না কিছুতেই। এখানে অনেক পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হত, গল্প হত, সে অনেক কথা। ও নিজেও আমাকে ঠিক ওর সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোড় করত না। আমার ছেলেদের কোনও বোর্ডিং এ হল না। একটা জিনিসে মাঝে মাঝে একটু অদ্ভুত লাগত, যে লোকটা আমাকে না ছুঁয়ে এক মুহূর্ত বা একটা রাতও থাকতে পারত না সে কিভাবে এতদিন আমাকে না পেয়ে দিন কাটাচ্ছে। মনকে বুঝিয়েছিলাম, এখন আমি পুরনো খ্যালনা হয়ে গেছি, তাই আর আমার ব্যাপারে তেমন আকর্ষণ বোধ করে না। এটা বয়সের সাথে সাথে হয়েই থাকে। ব্যাপারটা ভালো নয়, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক আর অনিবার্য। “ উনি থামলেন। নিচে নেমে গেলেন ঠাণ্ডা কোল্ড ড্রিঙ্কের বোতল আনার জন্য, আর আমি দৌড় লাগালাম বাথরুমের দিকে। প্রায় একই সময়ে দুজনে ফিরে এলাম।
উনি আবার শুরু করলেন জড়ানো গলায়। “ একবার উনি যখন এলেন তখন ওর ব্যাগ গোছানর সময় একটা মেয়ের ছবি দেখলাম। (বুঝলাম এই কথাটা ওনাকে খুব কষ্ট করে বলতে হল।) অল্প বয়সী মেয়ে। দেখতে ভালো। মন কু ডাক ডাকতে শুরু করেছে। কিন্তু ওকে কিছু বোঝালাম না। অদ্ভুত ব্যাপার দেখলাম এত দিন পর এসেও একবারের জন্যও আমাকে ছুঁয়ে দেখল না। আমি তো বুড়িয়ে যাইনি, আমারও ইচ্ছা হয় আমার বর আমাকে একটু ভালবাসুক, আদর করুক। কিন্তু ওর আচরণে আমি আমি যেমন আশ্চর্য হচ্ছিলাম তেমনই আঘাত পাচ্ছিলাম। যাওয়ার আগের দিন আমি নিজেই এসেছিলাম ওর সাথে ঘন হতে। কেমন যেন পাশ কাটিয়ে গেল। ও ফিরে গেল। মেয়েটার কথা আমি আর ওকে জিজ্ঞেস করতে পারলাম না। প্রায় পনের দিন পর ওর একটা কুরিয়র এল আমার নামে। বাড়ির দলিল আমার বর আমার নামে লিখে দিয়েছে। আগের বার এসেই সব বন্দবস্ত করে গিয়েছিল। আর তার সাথে একটা ছোট চিঠি, লেখা আছে, আমি আর ফিরছি না, এই বাড়িটা তোমার। বাচ্চাদের জন্য কখনও কোনও দরকার পড়লে আমাকে অবশ্যই খবর দিও। নাম্বার একই আছে। নাম্বার বদলালে তোমাকে জানিয়ে দেব। ডিভোর্স চাইলে নিতে পার, কিন্তু আমি নিজে থেকে যেচে কিছু বলতে চাই না। কোনও অসুবিধা হলে জানাতে ভুলবে না। রিনার সাথে পরে কোনও দিন সুযোগ হলে আলাপ করিয়ে দেব। আলাপ করে খারাপ লাগবে না। এখন আমরা এক সাথে থাকি। “ মহিলা চোখের জল মুছলেন। আমারও যেন চোখে জল এসে গেছে। সামলে নিলাম নিজেকে। মহিলা একটু থেমে বললেন “ মনে করবে না যে মেয়েটার সাথে নিজের তুলনা করছি। মেয়েটার অবশ্য সেই একটাই ছবি দেখেছিলাম। মেয়েটা সুন্দরী, স্টাইলিশ আর বাকি কিছু বলতে পারব না। কিন্তু আমি কি ওর চোখে আর সুন্দরী নই? আমিও তো কম স্টাইলিশ নই। বিয়ের পর থেকে কয়েক বছর ধরে রাতের পর রাত আমার ইচ্ছা অনিচ্ছার দিকে খেয়াল না করে আমাকে নিয়ে যা খুশি করেছে। আমিও আমার সব ইচ্ছে মেরে ফেলেছিলাম ওর জন্য। জানি না মেয়েটা ওকে কি এমন দিতে পারে যেটা আমার কাছ থেকে ও পায়নি, বা , আমি ওকে দিতে পারি না। সব দিয়েছিলাম জানো ওকে “ মহিলা আর কথা শেষ করতে পারলেন না। নিজের দুহাতের মধ্যে নিজের মুখটা ঢেকে নিচু হয়ে কিছুক্ষণ বসে রইলেন। একটু সামলে ওঠার পর আমি জিজ্ঞেস করলাম “ব্যস সেই চিঠিটাতেই সম্পর্কের ইতি? ফোন করেন নি? বা দেখে আসেন নি গিয়ে? ” মাথা নেড়ে বললেন “না। আমার মন থেকে সব কিছু মুছে যাচ্ছিল। তবে ছেলেদের নিয়ে আমি এখানেই থাকব ঠিক করে ফেলেছিলাম। বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে থাকব, আজকাল তো চ্যাটিং করলেও সময় কেটে যায়। কি দরকার গায়ে পড়ে ওর কাছে ফেরার চেষ্টা করার। ডিভোর্স নেব না কারণ আমার ছেলেদের একটা বাবার পদবীর দরকার। মাঝে মাঝে দু একটা মামুলি চিঠি লিখে আমাদের খোঁজ নিত। আমি উত্তর দিতাম না। একসময় সেই চিঠি আসাও বন্ধ হয়ে গেল। ও নিজেও আমাকে কোনও দিন ফোন করেনি, আমিও আর করিনি। “ একটু দম নিয়ে বললেন “এখন আমি নিজের জীবন নিজের মতন করে ভোগ করি। টাকার অভাব নেই। টাকা থাকলে দুনিয়ায় এমন কিছু জিনিস নেই যা কিনতে পারা যায় না। ভালোবাসার আর দরকারও নেই। অনেক হয়েছে। শুধু মাঝে মাঝে মনে হয়, বাদর দুটোকে মানুষ করতে পারলাম না। ওদের বাবার জায়গাটা আমি পূরণ করতে পারিনি। “ আমি যেটা ওনাকে জিজ্ঞেস করতে গেলাম সেটা উনি নিজেই বলে দিলেন। “আমার ছেলেরা জানে সব ব্যাপার। আমি নিজেই বলে দিয়েছি। এই সব ব্যাপার চেপে রেখে কোনও লাভ নেই। একদিন না একদিন ওরা জানতেই পারবে। ওরা এই ব্যাপারে কি ভাবে আমি জানি না। কিন্তু বাবার শাসন না পেয়ে পেয়ে ওদের পড়াশুনা হল না। এই বয়স থেকে প্রেম করে এর তার সাথে ঘুরে সময় কাটায়। ওদের কম্পুটার খুললে যা সব জিনিস দেখেছি, বললে বিশ্বাস করবে না। সময় বদলাচ্ছে, এখন বোধহয় সব ছেলে মেয়েদের কাছেই এইসব থাকে। “ এই অনেকক্ষণ পরে আবার উনি হাসলেন, “শুধু ওরা কেন, আমাদের কাছেও থাকে।“ হেঁসে উঠলেন উচ্চস্বরে। আমি বুঝতে পেরেছি উনি কি বলতে চাইছেন। আমিও ওনার সাথে হাঁসিতে যোগ দিলাম। পরিস্থিতি অনেকক্ষণ পরে একটু যেন হালকা হল। এইবার আমি নিজে যেচেই ওনাকে আরেকটা পেগ বানাতে বললাম। বললাম “ কৌতূহল থাকা বাজে নয়। ওদের কে যে পড়ানোর ব্যাপারটা বলেছিলেন?” আমি একটু ইতস্তত করছি দেখে উনি আমাকে গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “ওদের সাথে কথা হয়েছে, কালকের দিনটা ছেড়ে দাও, পরশু থেকে শুরু কর। তবে নিজের পড়াশুনা বা কাজের ক্ষতি করে নয়। বাড়িতে যখন অবসর সময়ে বসে থাকবে তখন পড়িয়ে দিও। “ আমি ওনাকে থামিয়ে দিয়ে বলতে বাধ্য হলাম “আপনি এত শত চিন্তা করবেন না। ঠিক সামলে নিতে পারব। আর না পারলে বলে দেব। “ আমি ভেবেছিলাম ওনার কথা এখানেই শেষ, কিন্তু সেটা ছিল আমার ভুল ধারণা। এইবার ওনার আরেকটা নতুন রূপ বের হল।
আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম “আপনার ছেলেরা এত দেরী করে বাড়ি ফেরে কেন? টিউশন আছে বুঝি?” বললেন “সঠিক করে বলতে পারব না। ওই যে বললাম শাসনের অভাবে গোল্লায় গেছে। পড়াশুনার কি হাল সেটা তুমি নিজের চোখেই দেখে নিও পরশু। “ উনি কিছু একটা ভেবে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন “তোমার যে বয়ফ্রেন্ড আছে তার কি খবর।“ আমি সংক্ষেপে আমার ইন্টার্ন আর অরুণের সাথে আলাপের গল্পটা বললাম। ওর সাথে আর রাজা আর সন্দীপের সাথে করা সবরকম কেচ্ছা গুলো বেমালুম চেপে গেলাম। উনি একটু গম্ভীর ভাবে বললেন “মনের মিল থাকলেই ভালো।“ এর কোনও উত্তর হয় না। উনি বললেন “তবে সত্যি কথা বলতে এখন বিচ্ছেদের পর নিজের মতন জীবন কাটাতে পেরে অনেক ভালো লাগে। বাড়িতে থাকলে একটা একাকীত্ব থাকেই। কিন্তু বাইরে নিজের খুশি মতন লোক জনের সাথে মিশতে পারি, বন্ধুত্ব করতে পারি। “ আমি ওনার কথার মাঝেই জিজ্ঞেস করে ফেললাম “এত দিন একা একা আছেন, আপনার আগের হাসব্যান্ডকে লিগালি ডিভোর্স দিয়ে নতুন করে তো সংসার শুরু করতে পারেন। আমার মাও তো “ উনি আমাকে থামিয়ে দিলেন হাত তুলে। গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে বাইরের দিকেই তাকিয়ে তাকিয়ে বললেন “তোমার মা বিয়ে করে কোনও আঘাত পায় নি। তাই উনি আবার বিয়ে করতে পেরেছেন মন থেকে। আমি আসলে এমন ঠকেছি যে এখন আর কোনও পুরুষের হাতে নিজের জীবনটা ছাড়তে ইচ্ছা করে না। বিয়ের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তবে লুকিয়ে লাভ নেই, এখানে যখন আছ হয়ত কিছু কিছু বুঝতে পারবে পরে, তাই আগেই বলে রাখছি, আমি বাইরে ছেলে মেয়েদের সাথে অবাধ মেলা মেশা করি। রোজ নয় কিন্তু যখন ভেতর থেকে আর্জ আসে তখন। পয়সা থাকলে ফুর্তি বাজ ছেলে মেয়েদের জোগাড় করা কি কোনও সমস্যা। কয়েক ঘণ্টার তো ব্যাপার। “ নিজের থাইয়ের ওপর বেশ কয়েকবার জোড়ে জোড়ে হাত দিয়ে থাপ্পড় মেরে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন “আর এটাও আমি হলপ করে বলতে পারি, আমি এখনও অনেক ছেলের মাথা ঘুরিয়ে দিতে পারি। ডানা কাটা সুন্দরী না হলেও দেখতে যে আমি খারাপ নই আর আমার যে ফিগার খারাপ নয় সেটা আমি জানি। আর যদি বল লোকে জানাজানি হলে কি হবে, তো সোজা সুজি বলে দিচ্ছি, আমার কিসসু এসে যায় না। লোকে কি জানল না জানল, কি বুঝল না বুঝল, আমার পেছনে কি বলে না বলে সে নিয়ে মাথা ব্যথা নেই আমার। আমি কারোরটা খাইও না আর পরিও না। তাই তারা আমার সম্বন্ধে যা খুশি বলতে পারে। “ থামলেন উনি। ওনাকে দেখে একটু সন্দেহ হয়েছিল কারণ এত টিপটপ থাকেন। যথেষ্ট সুন্দরী, বেশ একটা সেক্সি ব্যাপার আছে ওনার ভেতরে। এতদিন বরকে ছেড়ে ডিভোর্স না নিয়ে একা একা থাকবেন। তার ওপর ড্রিংক করে রেগুলার। মাঝে মাঝে দেখে মনে হয় যথেষ্ট খোলা মেলা পোশাকে নিজেকে সাজাতে ভালোবাসেন। সকালে তো দেখে প্রায়ই মনে হয় যে এইভাবে আমাদের সামনে আগের রাত্রের আলুথালু পোশাকে হাঁটতে ওনার কোনও অসুবিধাই হয় না। এরকম মহিলার এক আধটা আফেয়ার থাকবে সেটা কি খুব অবিশ্বাস্য। অবশ্য উনি স্টাইলিশ ভাবে থাকলেও, আলুথালু থাকেন শুধু সকালেই, আর তখন অবশ্য বাড়িতে লোক বলতে ওনার ছেলেরা আর আমি আর কাজের মেয়ে। তাই হয়ত নিজেকে খুব একটা ঢেকে রাখেন না। কে জানে। আমি এই সব আবল তাবল ভাবছি এমন সময় উনি আমাকে একটা অদ্ভুত প্রস্তাব দিলেন। “তুমি তো এখন প্রাপ্তবয়স্ক, আর আমরা এখন বন্ধুর মতই, আমার সাথে একদিন বাইরে আউটিঙ্গে যাবে?” আমার সেই রাতের পিকনিকের কথা মনে পড়ে গেল। তবে আউটিং জিনিসটা আমাকে টানে ভালো। আমি জিজ্ঞেস করলাম “কোথায় আউটিং?” উনি হেঁসে বললেন “আরে আউটিং মানে বেড়াতে যাওয়া নয়। আমরা দুতিনজন আড্ডা মারতে যাই ।“ এটুকু বলে আমার দিকে ঢুলুঢুলু চোখে তাকিয়ে একবার চোখ মেরে বললেন “ ভালো ফুর্তি হয়। তবে ভালো মেয়ের মতন সেজে থাকলে ওইসব জায়গায় যাওয়ার দরকার নেই। “ বললাম “কেমন খরচ পড়ে?” বললেন “তোমাকে কিছু দিতে হবে না। গিয়ে তো দেখ যে কি ব্যাপার।“ আরেকবার চোখ মেরে বললেন “ ভালো ফুর্তি হয়। ছেলেরাও আসে। “ আমি বোধহয় এরকম খোলামেলা ভাবে ওনার মুখে এইসব কথা শুনে একটু হকচকিয়ে গিয়েছি, আমার মুখের দিকে তাকিয়ে উনি জোড়ে হেঁসে উঠলেন। “ভালো মেয়ে সেজে থাকলে দরকার নেই। ভালো কনেটি সেজে বিয়ের পিড়িতে গিয়ে বসে যেও। তবে আমি জানি তুমি বেশী খরচা করতে পারবে না। এসব জায়গায় আমাকেও কোনও খরচা প্রায় করতে হয় না। তাই তুমিও এইসব নিয়ে কিছু ভেব না। ও হ্যাঁ, শুধু একটু সেজে গুঁজে যেতে হয়। বুঝলে তো? “ আবার হো হো করে হেঁসে উঠলেন “ তুমি হাঁসপাতালে যেভাবে গুড গার্লের মতন যাও তেমন ভাবে গেলে চলবে না। “ আবার এক প্রস্থ হাঁসি। আমি মনে মনে বললাম আমিও এমন সেজে বেরোতে পারি যে লোকে দেখলে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাবে। মনে একটা অদ্ভুত কৌতূহল আসছে কিন্তু মুখে সেটা প্রকাশ না করেই বললাম “ একটু ভেবে দেখি। তারপর আপনাকে জানাব খন। আর গেলে কবে যাব? আমি কিন্তু বেশী রাত করতে পারব না। পরের দিন ডিউটি থাকবে তো। “ বললেন তোমার পরে কবে অফ আছে? বললাম “ছ দিন মতন পর। “ বললেন “বেশ তাহলে যেদিন অফ আছে তার আগের দিন সন্ধ্যায় ফিরে এস দিয়ে ফ্রেশ হয়ে যাওয়া যাবে খন। আর এইসব ফান সন্ধ্যার আগে হয় কি?” আবার এক প্রস্থ হাঁসি। ওনার হাঁসি দেখে বুঝতে পারছি যে আমারও যেন বেশ চড়েছে। এইবার যদি ওনার ছেলেরা ফেরে তো ওদের সামনে গিয়ে বসে খাবার খাব কি করে, বেফাঁস যদি মুখ থেকে কিছু বেড়িয়ে যায় তো সলিড কেস। ওরা হয়ত ওদের মাকে এইভাবে নেশা করতে দেখে অভ্যস্ত, কিন্তু আমি বাইরের মেয়ে। উঠে বাথরুমে গিয়ে হালকা হয়ে ভালো করে চোখে মুখে জল দিলাম। না তেমন রাত হয় নি। আমি ওনার ঘরের বাইরে গিয়ে ভেতরে তাকিয়ে দেখলাম এখনও উনি ব্যাল্কনিতে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে মদ গিলছেন। বাইরে থেকেই আমি বললাম “আমার আজকের মতন হয়ে গেছে। ডিনার করার সময় কিছু কি সাহায্য করব?” বললেন “সব তৈরি আছে, শুধু ভাত তৈরি করলেই হবে। “
আজ একটু এসি তে শোওয়া দরকার। আমি আমার ঘরে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে একটু এসিটা চালিয়ে দিলাম। বেশ আরাম লাগছিল। ইচ্ছা করছিল পরনের লেগিন্স আর হাত কাটা টপটার ভেতর থেকে অন্তর্বাসগুলো খুলে একটু আরাম করে শুই। কিন্তু না। একটু পরেই তো খাবার ডাক আসবে। আবার পরতে হবে। এমনি শুয়ে শুয়ে মহিলার কথাগুলো ভাবতে লাগলাম। মহিলা সত্যি একা। আবার ওনার আরেকটা দিকও জানা গেল। দোটানায় পড়ে গেলাম, ওনার এই প্রস্তাব নেব কি নেব না। কি হয় না হয় কে জানে। অরুণকে কি এই ব্যাপারটা জানাব? ভাবলাম হাতে তো আরও কয়েকদিন সময় আছে, ভেবে দেখে নি, তারপর যা করার করা যাবে খন। উনি তো জোরাজুরি করছেন না। আর এইসব বড়লোক তথাকথিত লোনলি বউদের বা মেয়েদের পার্টি বা আউটিং কেমন হয় সেটা জানার একটা অদম্য ইচ্ছাও আমাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে। ঠিক করলাম আজ মদ পড়েছে পেটে, কাল নেশা নামুক তারপর সবদিক ভেবে চিনতে দেখা যাবে। কতক্ষণ শুয়ে ছিলাম খেয়াল নেই। বেশ শীত শীত করতে শুরু করায় উঠে এসি টা বন্ধ করে দিলাম। মহিলার ইলেকট্রিক বিল বাড়িয়ে কি লাভ। ওনার দুই ছেলেই সেদিন খাবারের আগে বাড়ি ফিরে এসেছে। আমি নিচে নামার আগে আমার পোশাক আশাক একটু ঠিক করে নিলাম। ওনার ছোট ছেলের নজর বড্ড খারাপ আগেই বলেছি, যেন চোখ দিয়ে পারলে আমাকে নগ্ন করে খেয়ে নেবে। জুভেনাইল কৌতূহল ঠিক এটাকে বলে না। পরের দিন রুটিন মাফিক কেটে গেল। সকালে উঠে তাড়াহুড়া করে বেড়িয়ে গেলাম। ওনার ছেলেরা তখনও তৈরি হয় নি। মহিলা সেই আগের রাতের আলুথালু ম্যাক্সি পরে খাবার বাড়ছেন। একটা কথা মানতেই হবে, এখানে ব্রেকফাস্টের বেশ তারতম্য আছে। কোনও দিন, ব্রেড টোস্ট অমলেট, কোনোদিন দুধ কর্ণফ্লেক্স, কোনও দিন রুটি আলুর তরকারি, কোনও দিন লুচি সবজি আবার কোনও দিন স্যান্ডউইচ। এইবার আসি ওনার ছেলেদের পড়ানোর কথায়। ঠিক হয়েছিল নিচে ড্রয়িং রুমেই পড়াব। বাইলজি পড়াব। আগের ব্যাচ গুলো কে পড়ানোর সময় আমার নোটসের সাথে আরও কিছু নতুন নোটস তৈরি করেছিলাম। সেইগুলো আবার বের করতে হল। কি পড়ছে, কতদূর পড়েছে, এইসব কথা বলার পর বুঝতে পারলাম এত কাঁচা ছাত্র বোধহয় এর আগে আমি নিজে কোনও দিন চোখে দেখিনি। দুজনেই পড়াশুনায় বৃহস্পতি। ছোটটি যদিও কোনও মতে কাজ চালিয়ে নিতে পারবে, বড়টি মানে ঠিক যাকে বলে একটু আস্ত গুণধর। তবে দুজনের হাব ভাব একটু আলাদা। বড়টির একমাত্র লক্ষ্য নিজের হোম ওয়ার্ক আমাকে দিয়ে শেষ করা। ওদের আবার হোমওয়ার্কের গ্রেড হয়। পরীক্ষার সময় কি করবে সেটা নিয়ে এখন আপাতত চিন্তিত নয় দুজনের কেউই। ছোট টার মন বই থেকে বেশী আমার বুকের উপরে। সেদিন আমি ইচ্ছা কৃত ভাবে ফুল হাতা একটা কামিজ আর লেগিন্স পরে ওদের পড়াতে বসেছি, কিন্তু তাতে কি ওর চোখে যেন এক্সরে আছে। যা কিছু দেখা যায় সব গিলে খাবে। চোখা চুখি হলে অবশ্য খাতার দিকে চোখ নামিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যে আবার ফেরত আসছে আমার উপর। আমি ঠিক করলাম ওকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করব। অনেক নোটস দিলাম দুজনকে। মহিলা মাঝে মাঝে এসে আমার পড়ানো , বোঝানো এইসব দেখে যাচ্ছেন, ওনার মুখ দেখে মনে হল উনি ওনার ছেলেদের নিয়ে যতটা হতাশ, আমার পড়ানোর চেষ্টা নিয়ে ঠিক ততটাই খুশি। প্রথম দিনের পড়ানোর শেষের পর উনি আমাকে বলেই ফেললেন এত দিন তোমার মতন যত্ন নিয়ে কাউকে পড়াতে দেখিনি। এইবার ওদের কিছু একটা হবেই। আমার ওপর ওনার ভরসা আরও বেড়ে পরের পরের দিন যখন ওনার বড় ছেলে বাড়ি এসে আমাদেরকে বেশ গর্বের সাথে বলল যে ক্লাসে এই প্রথম ওর স্যার খুব প্রশংসা করেছেন। হোমওয়ার্কে সবথেকে ভালো গ্রেড পেয়েছে। ওর ছোট ভাইও সেদিন উপস্থিত ছিল। বুঝলাম ভাইকে বেশ এক হাত নিল। ভদ্রমহিলাকে দেখে বুঝতে পারলাম যে উনি আজ সব থেকে খুশি। ওনার ধারণা ওনার বড় ছেলে ঠিক পথে ফেরত এসেছে। একটা সাবজেক্টে যদিও বা হয় তো কম কি। কিন্তু আমার ছক টা ছিল অন্য। ওনার বড় ছেলে আমাকে দিয়ে নিজের হোম ওয়ার্ক করাতে চায়, আমি সেটা চুপ চাপ ওকে দিয়ে করিয়ে নেব। এমনিতে ওর বড় ছেলে যে কিছুই শিখছে না তাতে আমার কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু ওদের দুজনকেই নোটস দেওয়ার সাথে সাথে সব কিছু বুঝিয়ে বলতাম, আর সে নিয়ে আমি কোনও কার্পণ্য করি নি। ঘোড়াকে জলের কাছে নিয়ে যাওয়া আমার কাজ, ঘাস খাওয়া না খাওয়া ঘোড়ার ব্যাপার। তবে আজ আমি আগের দিনের মতন অত রেখে ঢেকে এসে বসিনি। ওনার ছোট ছেলের নজর আমি দেখেও সম্পূর্ণ উপেক্ষা করছি আজ। আজ আমি একটা ঢিলে স্লিভলেস টপের সাথে হাঁটুর থেকে একটু লম্বা স্কার্ট পরেছি। ঠিক লং স্কার্ট নয়, কিন্তু হাঁটুর নিচে অর্ধেকটা পা ঢাকা। ওদের মাও বাড়িতে এইসব পরেন, তো আমি পরলে কিসের ক্ষতি। আগে ওনার ছোট ছেলের চোখের আক্রমন ছিল শুধু আমার বুকের ওপর বা যদি সুযোগ পায় তো হয়ত বগল বা বগলের নিচের স্তনের পাশের দিকের অনাবৃত অংশে, কিন্তু আজ দেখলাম ওর নজর মাঝে মাঝে আমার নির্লোম পায়ের অনাবৃত অংশেও ঘোরা ফেরা করছে, তবে যা করছে সব কিছু আমার নজর এড়িয়ে। আমিও দেখে না দেখার ভাণ করছি। সব কিছু হওয়ার পর ওনার ছোট ছেলে আমার সামনেই ওর মাকে বলল আমি খুব ভালো পড়াচ্ছি। ও আমার কাছেই পড়তে চায়। আমি মনে মনে হাসলেও মুখে বললাম “আমি পড়ালে যদি তোমার রেজাল্ট ভালো হয় তো তোমারই ভালো। “
ওদের মায়ের জোরাজুরিতে সেদিন ওরা দুজন আমাদের আগেই খেয়ে নিল। ওরা উপরে উঠে যাওয়ার পর আমি আর ওই মহিলা একসাথে খেতে বসলাম। আমাকে উনি সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন পরশু তো তোমার অফ। আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম হ্যাঁ। বললেন “তো কাল আমার সাথে বেরোবে? আগের দিন যেমন কথা হয়েছিল?“ আমি একটু ইতস্তত করে বললাম “আপনার সাথে আমার যাওয়াটা কি ঠিক হবে?” উনি বললেন “ আমরা এখন বন্ধু। চলো না একদিন। জোড় করছি, না, কেউ কিছু করতে বা খেতে তোমাকে জোড় করবে না আমি কথা দিচ্ছি। যদি ভালো না লাগে তো পরের দিন যেও না। “ এইবার সিঁড়ির দিকটা দেখে নিয়ে গলা নামিয়ে বললেন “ তবে কোথায় যাচ্ছি কি করছি এইসব কিন্তু বাইরের কাউকে বলবে না। মনে থাকবে তো?“ আমি বুঝলাম আমার চোখের চাহুনিতে যে চাপা উত্তেজনা মাখা কৌতূহল রয়েছে সেটা উনি অনুধাবন করে ফেলেছেন। আমার হ্যাঁ বা না বলার জন্য অপেক্ষা না করেই সরাসরি ধরে নিয়েছেন যে আমি আগামিকাল ওনার সাথে কোনও এক ফুর্তির জায়গায় যাব, যেখানে কিছু বকাটে ছেলে পুলে এক জোটে ফুর্তি করবে। ওনার হাবভাব দেখে ভালোই বোঝা যাচ্ছে যে খুব ভালো কিছু ওরা করে না, আর তাই এই সতর্কতা। তবে এইসব আউটিনে শুনেছি অনেক কিছু হয়। দেখাই যাক একদিন গিয়ে। অনেক কিছুই তো করলাম। চলতি কথায় যাকে বলে গ্রুপ সেক্স সেটাও তো করেছি। এখানে নিশ্চই এই মহিলা তেমন কিছু করে না। হয়ত মদ খেয়ে গায়ে ঢলাঢলি করে মাতলামি করবেন। মন্দ কি। আর এখানে আসার পর অনেক দিন হয়ে গেছে, ঠিক তেমনভাবে কিছুই করা হয়নি। ফুর্তির বয়সের দিনগুলো বেকার চলে যাচ্ছে। বললাম “ঠিক আছে, আমি হাঁসপাতাল থেকে ফিরে তৈরি হয়ে নেব। কিন্তু আর কে কে থাকবে ওখানে?“ বললেন “তেমন কিছু ঠিক নেই। চলো গিয়ে দেখতে পাবে। আসলে আমার এক বান্ধবী আছে, সেই সব কিছু ঠিক ঠাক করে। “