Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981
#47
পরের পর্ব
কিছুক্ষণ পরে শুয়ে পড়লাম নরম চাদরের নিচে। কিছুক্ষণ পর ছেলেদের আওয়াজ পেয়ে ঘুম চটে গেল। তুই যদি রাখিকে না ছাড়িস তাহলে কেস খারাপ হবে। মেয়েটা আমাকে বাজে কথা বলেছে। মহিলার গলার আওয়াজ পেলাম চুপ কর। আস্তে কথা বল। ঘরে আরেকজন মেয়ে আছে। ডাক্তার। ঘুমাচ্ছে। বুঝলাম গুণধর ছেলেরা বাড়ি ফিরেছে। ওদের আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল। দরজা বন্ধের শব্দ কানে এল। আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের ধনে পোদ্দারি করা আমার স্বভাব নয়। শ্যামদার মেয়ের ব্যাপারটা ছিল আলাদা।
 
সকালে ঘুম ভাংতেই দেখলাম ঘরের ঠাণ্ডা ভাবটা এখনও রয়েছে। তাড়াতাড়ি স্নান করে রেডি হয়ে নিচে নেমে এলাম। আগের দিন অনেক তাড়াতাড়ি এসেছিলাম বলে ওনার দুই ছেলের সাথে দেখা হয়নি। আজ দেখলাম। ওরা মোটামুটি রেডি। ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে কিছু একটা নিয়ে তর্ক করছে। আমাকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখে ওদের তর্ক থেমে গেল। দুজনেই আমাকে আপাদমস্তক একবার মেপে নিল। আমি ওদের হেঁসে বললাম গুড মর্নিং।ওরাও আমাকে গুড মর্নিং জানাল। বেশ লম্বা চওড়া দুজনেই। প্রায় ৫ ফুট ৯ এর কাছাকাছি। বেশ পেশীবহুল। শরীর। বাবা আর্মিতে, ছেলেদের স্বাস্থ্য যে ভালো হবে সেটা বলে দিতে হয় না। ছোট ছেলেটা ওর দাদার দিকে তাকিয়ে একবার চোখ মেরে কিছু একটা ইশারা করল। দাদা ওকে হাত দেখিয়ে থামিয়ে দিল। এসে গেছ?” রান্না ঘর থেকে আওয়াজটা এল। বললাম হ্যাঁ, গুড মর্নিং।ওনার কাজের লোক সবার জন্য রুটি আর পাতলা আলুর ঝোল নিয়ে এসে সাজিয়ে দিল। উনি আগের রাত্রের স্লিভলেস ম্যাক্সিটাই পরে আছেন। রান্না করার জন্য ঘামিয়ে গেছেন। ঘাম মুছতে মুছতে বেড়িয়ে এসে বললেন, “কিছু লাগলে লজ্জা না করে চেয়ে নেবে। আর শোন তোদের সাথে আমার কিছু কথা আছে। সন্ধ্যায় ফিরছিস কখন। আমি মুখ বুজে খাওয়া শুরু করে দিলাম। মহিলা তেলটা একটু বেশী দেন খাবারে। কিন্তু অসাধারণ রাধেন। আমি একটা কাঁচা লঙ্কা চাইতে উনি কাজের লোককে আওয়াজ দিলেন। তিনটে রুটি খেয়ে আমি উঠে পড়লাম। ওরা যে সন্ধ্যায় কখন আসবে বলল সেটা আমার ঠিক কানে ঢোকেনি। সেদিন রাত্রে আমার ফিরতে ফিরতে ৯ টা বেজে গেছে। ফিরে দেখলাম মহিলা একাই বসে আছেন। ওনার ড্রিংক করা শেষ। রান্নাও শেষ। ছেলেদের একজনও ফেরেনি। এই বয়সের ছেলে কোথায় যায়। কে জানে। আমি উপরে উঠে এক ঘণ্টার মতন পড়াশুনা করে নিচে নেমে এলাম। আজ আর মদ খাওয়ার ইচ্ছে নেই আমার। আজ অরুণের সাথে কথা হয়নি। মনটা ভীষণ খারাপ ছিল। ব্যাটা নিজেও তো ফোন করতে পারে। কিন্তু করেনি। বললাম কেমন আছেন?” বলল শরীরটা ভালোই আছে। কিন্তু ছেলেগুলো কে নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছি। একথা সেকথায় কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পর বাইরে বড় গাড়ির আওয়াজ পেলাম। ছোট ছেলে ফিরে এসেছে। আচ্ছা বলে রাখি এদের বাড়িতে একটা সিটি হণ্ডা আছে। আর তাও আবার অটো গিয়ার। বুঝতেই পারছেন। তবে এটা অন্য গাড়ির আওয়াজ। ছোট ছেলে বাড়ি ফিরেছে। বাইরে থেকে কয়েকটা ছেলে মেয়ের গলার চীৎকার পেলাম। ছোট ছেলে ঘরে ঢুকে ওর মাকে উপেক্ষা করে আমার খোলা কাঁধে হাত রেখে গুড ইভিনিং জানিয়ে ওপরে চলে গেল। সঠিক ভাবে বলতে পারি না কিন্তু ওর হাতের ছোঁয়াটা ক্ষণিকের জন্য হলেও সেটা ঠিক ভালো ছিল না। কেন যে স্লিভলেস পরে থাকি বাড়িতে। অবশ্য মহিলাও তো এরকমই পোশাক পরেন। আমি শুঁকনো ভাবে গুড ইভিনিংবললাম। বড় ছেলের কোনও দেখা পেলাম না। ১০.২০ নাগাদ আমি ওনার আর ওনার ছোট ছেলের সাথে খেতে বসে গেলাম। ছেলেটা বয়সে আমার থেকে কিছুটা ছোট হলেও ভীষণ পাকা। আমার সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে কোনও কথা না বললেও বারবার আমাকে আর আমার শরীরটাকে মাপছে সেটা বুঝতে পারছিলাম। ভদ্রমহিলা একটা হাতকাটা ম্যাক্সি পরে নিজের মনে খেয়ে চলেছেন। বয়সের দোষ, আর কিছুই নয়, মনে মনে নিজেকে শান্ত করে খেয়ে উপরে উঠে গেলাম। আরেকটু পড়াশুনা করে ঘুমিয়ে পড়লাম। আসলে হাতে কলমে অনেক কিছু শিখছি। আগের পড়া জিনিসগুলোই এখন নতুন ভাবে নতুন চোখে দেখতে পাচ্ছি। প্র্যাকটিকাল ক্লাস আর প্র্যাক্টিকাল করার মধ্যে অনেক তফাত। সেটা আগেই বলেছি। কোলকাতায় যেন পেশেন্টের ভিড় উপচে পড়ছে। অনেক কিছু শেখা হচ্ছে। অরুণের কথা মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে। আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম। আজ আর এসি চালাই নি। আজ আর ঘুম ভাঙেনি। ভোর সাড়ে ছটায় ঘুম ভাঙল একেবারে।
 
বিছানায় মটকা মেরে পড়ে আরও একটু ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু এল না। আমি ব্রাশ করে স্নান করে নিলাম। আজ একটু আগেই যাব ঠিক করলাম। এক ঘণ্টার মতন বই নিয়ে বসে রেডি হয়ে নিচে নেমে এলাম। দেখলাম নিচে ঘুম চোখে মহিলা বসে আছেন। কাজের লোক চলে এসেছে। আজ লুচি সবজি বানানোর কথা। আমি শুধু চা খেয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। মহিলা একটু ইতস্তত করছিলেন, বললাম হাঁসপাতালের বাইরে ব্রেকফাস্ট করে নেব। একটু আগে গেলে একটু পড়তে পারব, আর কাজ ও বেশী হবে।“ “ও হ্যাঁ, তুমি তখন ঘুমিয়ে পড়েছিলে। ওরা দুজনেই তোমার কাছে বাইলজি পড়বে। বললাম বেশ।বললেন সামনের সপ্তাহ থেকে পড়বে।বললাম ঠিক আছে।আমি বেড়িয়ে পড়লাম। আজ ফিরতে ফিরতে আবারও ৯ টা বেজে গেছে। আজ অরুণের সাথে ৫ মিনিটের জন্য কথা হয়েছে। মনটা একটু হলেও ভালো আছে। কিন্তু আজ শরীর ছেড়ে দিয়েছে। অরুনদের ওটি তে একজন মারা গেছেন আজ। ওকে ভীষণ ডাউন মনে হল। আমি ফিরে এসে দেখলাম হাওয়া উল্টো দিকে বইছে। দুই ছেলেই বাড়িতে। তবে এই সময় লোকে পড়াশুনা করে। তবে ওরা ওদের মার সাথে বসে কিছু একটা জিনিস নিয়ে ভীষণ উত্তেজিত ভাবে আলোচনা করছে। আমি আসাতে ওদের কথায় বাঁধা পড়ল। আমি ওপরে উঠে গেলাম। মহিলা আমাকে বললেন তুমি তো অদ্ভুত মেয়ে। সকালে কিছু খেয়ে যাওনি। এখন এলে। শিগগির নেমে এস। চা খাবে। তাড়াতাড়ি খাবার দিয়ে দেব। আমি প্রায় আধ ঘণ্টা পরে নেমে এলাম। ছেলে দুটো সোফার ওপর বসে টিভি দেখছে। খাবার সাজানো হয়ে গেছে। আমি গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম ওরাও খাবে তো?” মহিলা হাত দেখিয়ে আমাকে থামিয়ে দিলেন। আমাদের খাওয়া হয়ে গেল। আমি ওপরে চলে এলাম। বই নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করে ঘুমিয়ে পড়লাম। কালকের দিনটা আমার কাছে খুব স্পেশাল। আমার জন্মদিন। ও হ্যাঁ এখানে আসার পর আমি বাড়িতে এদের ঠিকানা আর ফোন নাম্বার জানিয়ে দিয়েছিলাম। অরুণও এই নাম্বার আর ঠিকানা জানে। সকালে ৭ টায় আমার ঘুম ভাঙল। আমি রেডি হয়ে নিচে নেমে দেখলাম মহিলা আবার সেই আগের রাতের ম্যাক্সিতে ঘুম ঘুম চোখে বসে চা খাচ্ছেন। আমাকে দেখে একটু হাসলেন। বললেন তোমার বাড়ি থেকে ফোন এসেছিল। বলল আবার ফোন করবে। বললাম ঠিক আছে। আজ ব্রেকফাস্ট তৈরি মোটামুটি। ফোন বাজল উনি উঠে গেলেন। একটু হু হা বলে আমাকে বললেন তোমার ফোন। আমি গিয়ে হ্যলো বলাতে রাহুল কাকুর গলা পেলাম হ্যাপি বার্থ দে। মাও জানাল আমার তিন ভাই বোন জানালো। মহিলা পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন একটু হাঁসি হাঁসি মুখ নিয়ে। আমি থ্যাংক ইউ প্রণাম ইত্যাদি জানিয়ে ফোন কেটে দিলাম। উনি আমাকে আস্তে করে জড়িয়ে ধরে বললেন হ্যাপি বার্থডে। ওনার গা থেকে একটা অদ্ভুত আর উগ্র ঘামের গন্ধ আসছে। তাড়াতাড়ি স্নান করে নিলেই ভালো। আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বসে পড়লাম। ব্রেড টোস্ট খেয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। দুপুরের দিকে অরুণের ফোন এসেছিল হাঁসপাতালে, আমাকে শুভেচ্ছা দিল। আজ কাজ অনেক ছিল। কেউ জানে না আজ আমার জন্মদিন।তা সত্ত্বেও আজ কাজ তাড়াতাড়ি হয়ে গেল। আমার ছুটি হয়ে গেল। আমি ফিরে এলাম। কি মনে হতে একটা হাফ বোতল ভোদকা কিনে নিলাম। খুব দামি কিছু নয়, স্মারনঅফ। ফিরে গিয়ে দেখলাম মহিলা একা বসে আছে। খাবার টেবিলের ওপর গ্লাস দেখে বুঝলাম ড্রিংক করছেন। বললাম আমি আজ নিয়ে এসেছি। যদি ...” “নো প্রবলেম। মহিলা ড্রিংক ভরা গ্লাসটা রান্না ঘরে নিয়ে গিয়ে সিঙ্কে ফেলে দিলেন। দুটো গ্লাস ধুয়ে নিয়ে এসে টেবিলে রেখে দিলেন। আমি বোতলটা ওনার হাতে দিয়ে ওপরে চলে গেলাম। বাহ আমিও তো এটাই খাই। উপরে যেতে যেতে ওনার গলা কানে এল। একটু পরে ফ্রেশ হয়ে নেমে এলাম। উনি দুজনের জন্য পেগ বানিয়ে রেখেছেন। রাতের খাবার তৈরি। উনি বললেন তুমি আজ চাইলে খেয়ে নাও।বললাম না ওরা ফিরুক তারপরেই খাব। আমরা ওনার ঘরের ব্যালকনিতে গিয়ে বসে গেলা শুরু করলাম। আমার আনা বোতলটা শেষ হয়ে গেছে। দেখে উনি একটা স্মারনফের বোতল নিয়ে এলেন। আরও এক পেগ খাওয়ার পর বুঝলাম নেশা ভালোই চড়েছে। বললাম চলুন খেয়ে নি গিয়ে। আমরা মুখ বুজে নিচে নেমে এসে রাতের আগার করে নিলাম। মদের নেশা আর স্বাদে জিভের অবস্থা খারাপ। নইলে খাবার বেশ ভালোই ছিল। বিছানায় মাথা দিতেই ঘুমিয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ পরে ভীষণ চ্যাঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে গেল। কিন্তু উঠলাম না। রাখির সাথে তুই কি করেছিস। এরপর ওর বাপ আসবে। তখন সামলাস। আবার ঘুমে ঢলে পড়লাম। কি এসে যায়। এক বছর বেড়ে গেল। মানে মৃত্যুর দিকে আরেক কদম এগিয়ে গিয়েছি। সকালে ৭ টায় ঘুম ভেঙে গেল। না কোনও হ্যানওভার নেই। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে নেমে দেখি, সূর্য পশ্চিমে উঠেছে আজ। আমার আগেই দুজন তৈরি। মহিলা সেই আগের রাতের ম্যাক্সি পরে খাবার বাড়ছেন। বাব্বা এত তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট তৈরি। আমি দুধ ব্যাপারটা খুব একটা ভালবাসিনা। কিন্তু এখানে কিছু বলার নেই। দুধ কর্নফ্লেক্স খেয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। খাবার সময় ওনার দুই ছেলেই আমাকে বিলেটেড হ্যাপি বার্থ ডে জানাল। ছোট ছেলের নজরটা ভীষণ চোখে পড়ার মতন খারাপ। বেড়িয়ে পড়লাম। আরও দুদিন কেটে গেল একই ভাবে। কাল অফ। আজ মনটা ভীষণ ভালো। কাল আর রক্ত ঘাঁটতে হবে না। তবে একটা খুব কিউট বাচ্চাকে আজ দেখেছি। ওর অবস্থা দেখে মনটা ভেঙে গেছে। অরুণকে বলেছি ফোনে। রাতে ফিরে এসে ম্যাডামকে বলে দিতে হবে যে কাল লাঞ্চ করব। সেটা অবশ্য ভারায় ধরাই আছে। ফিরে এলাম। আজ বাড়ি ভর্তি। মানে দুই ছেলে ফেরত এসেছে। উনিও আছেন। তিনজনে মিলে কিছু একটা দেখছে টিভিতে। আমি সম্ভাষণ করে বলে দিলাম কাল আমার অফ। কাল লাঞ্চ করব। উঠে গেলাম। আজ আর আমার ভদকা খাওয়া হয়নি। আজ সময়ে একসাথে বসে চারজন ডিনার সারলাম। কালকের ঘটনা একটু বিস্তারিত ভাবে বলব।
 
আজ রবিবার। শনিবার আমাদের অফ থাকে না। কিন্তু ওনার ছেলেদের চাপ কম থাকে, শুধু প্রাইভেট টিউশন থাকে। তাই তারা কাল আগে ফিরেছে। আমি বলে দিয়েছিলাম যে আজ একটু বেশী বেলা অব্দি ঘুমাব, যদি সমস্যা হয় তো আমার জন্য ব্রেকফাস্ট বানাতে হবে না। ঘুম ভাঙল প্রায় দশটায়। স্নান করে ফ্রেশ জামা কাপড় পরে নিচে নামছি, কিন্তু একি এ কাদের গলার আওয়াজ আসছে। এরা কোথা থেকে এল? কান শুনলেও ভেতর থেকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। সিঁড়ির ওপর থেকে মুখটা একটু বাড়িয়ে দেখেই থমকে গেছি। রাহুল কাকু, মা, আমার তিন ভাই বোন সবাই নিচে বসে আছে। একটু ভদ্র ভাবে সেজে গুঁজে আসা উচিত ছিল । একটা স্লিভলেস টপ আর লং স্কার্ট পরে আছি। চুলটা অদ্ভুত তেরা মেরা ভাবে মাথার পিছনে ক্লিপ দিয়ে আটকানো। স্নানও করিনি। আমি এসে রাহুল কাকুকে প্রণাম করলাম। মা আমাকে জড়িয়ে ধরল। অনেক দিন তোকে দেখিনি তাই সবাই চলে এলাম।রিয়া আমাকে একটা গিফটের জিনিস ধরিয়ে দিল। আমার ভাইয়ের মুখে কথার ফুলঝুরি। আদিত্যর গালটা যেন আরও ফুলে গেছে। ওরা বসে চা খাচ্ছে। রাহুল কাকু বলল আমরা একটু বাইরে খাওয়া দাওয়া করলে আপত্তি নেই নিশ্চই। আমি বললাম বাবা আমি আসলে আজ লাঞ্চের কথা বলে দিয়েছি। মহিলা আমাকে থামিয়ে বললেন কিচ্ছু হবে না। সারা দিন ভীষণ পরিশ্রম করে আপনার মেয়ে। ঘুমায় একটু খানি। আবার ফিরে এসে পড়াশুনাও করে। আর আমার কপালে জুটেছে দুটো অপদার্থ। এই, তুমি যাও, গিয়ে বাইরে খেয়ে নাও। শেষ কথাটা বলল আমাকে লক্ষ্য করে। ওনার ছেলেরা সকালেই কোথাও একটা চলে গেছে। হয়ত প্রাইভেটে পড়তে। আমি রিয়াকে ওপরে নিয়ে এলাম। স্নান করে ফ্রেশ হয়ে ওর চোখে বেশ করে কাজল আর ঠোঁটে লিপস্টিক মাখিয়ে, চুলগুলো ঠিক করে নিচে নিয়ে এলাম। আমরা প্রথমে গেলাম ভিক্টোরিয়ায়। আমার মা কোনও দিন এখানে আসেনি। ও হ্যাঁ গিফটটা আমি নিচেই ফেলে গিয়েছিলাম। ওটা রাহুল কাকু সাথে করে নিয়ে এসেছে। ট্যাক্সি চড়ে ঘুরছি আমরা। মার মধ্যে সামান্য হলেও পরিবর্তন দেখলাম। একটা গোলাপি শাড়ি আর চাপা গোলাপি রঙের ব্লাউজ পরেছে, স্লিভলেস নয়, কিন্তু একদম ছোট হাতা। বেশ মানিয়েছে বলতেই হয়। সারা হাত নির্লোম। হুম রাহুল কাকু বেশ ভালো নজর রাখছে মার। ভিক্টোরিয়া দেখা হলে রাহুল কাকু জিজ্ঞেস করল, আমি কি খাব। আমি বললাম সবাই যা খাবে আমিও তাই খাব।বলল বাঙালী খাবি নাকি বিরিয়ানি।আমার তিন ভাই বোন চেঁচিয়ে উঠল বাঙালী খাব। আমি হেঁসে বললাম আমিও তাই খাব। সেই প্রথম ভজহরি মান্নায় আসা। রাহুল কাকু ভাড়া মিটিয়ে দিল । পুরো উল্টো পথে এসেছি। রাহুল কাকু খোঁজ নিতে গেল। পেছন পেছন তিনজন দৌড়ালো। আমি মাকে অনেক দিন পর সামনে পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম ভালো আছো? মানে কোনও কষ্ট নেই তো?” মা বলল তোকে অনেক দিন দেখতে পাচ্ছিলাম না। আর তুই তো আমাদের সাথে সম্পর্ক কেটেই দিয়েছিস। আমি ভালো আছি। ও (রাহুল কাকুর দিকে চোখে ইশারা করে বলল) বারবার তোর কথা বলে। একবারও কি বাড়িতে আসতে নেই? আমি খুবই ভালো আছি। একবার অন্তত আয়। বললাম মা এখানে এত চাপ সব মাথা থেকে বেড়িয়ে গেছে। ইন্টার্নের ছুটি আছে কয়েক দিনের জন্য, তখন যাব। তখনই যাওয়া সম্ভব। তুমি বাবাকে বলে দিও। মন খারাপ করবে না একদম। আমারও তোমাদের কথা মনে পড়ে বারবার। টেবিল খালি আছে। আমরা ভেতরে ঢুকে গেলাম।
 
গিফট টা খোলা হল। বলা ভালো ছেঁড়া হল। না আমার নিজের বাবা দিলে হয়ত সত্যি জড়িয়ে ধরতাম। এখানে সেটা করতে পারলাম না। রাহুল কাকু আমার জন্য একটা মোবাইল নিয়ে এসেছে। রেলাইন্স এর সিম লক্ট মোবাইল। কিন্তু এখন আম্বানি সাহেবের লুটে যাওয়ার সময়। ভীষণ সব শস্তা অফার চলছে। আমি বললাম খুব ভালো হয়েছে। পরে ভুলে যাব তাই একটা কথা না বললেই নয়। আমাকে রাহুল কাকু ব্যাল্যান্স চেক করা শিখিয়ে দিয়েছে। আমি দেখলাম আমার মোবাইলের ব্যাল্যান্স ১২৩ টাকা। পরের নয় মাস অব্দি বিনা রিচার্জ করে আমার মোবাইলের ব্যাল্যান্স একই ছিল। আমি লোকাল কল করেছি, এস টি ডি করেছি। না এ যেন কুবেরের ধন। কমে না কিছুতে। আজকাল বাজারে শুনতে পাই রেভিনিউ অ্যাসিওরেন্স। তখন আমি বোধহয় রেলাইন্সের এক লাখ টাকা উড়িয়েছি। এস এম এস করো, ফোন করো, টাকা কাটবে না। হাহাহা। আমাকে জোড় করে কাকু ইলিশ খাওয়ালো। খুব ভালো খাওয়ার পর আমি বললাম মা একটা কথা ছিল। আমি দিল্লী চলে যাচ্ছি যান নিশ্চই। মা বলল সেটা খুবই ভালো খবর। আমি বললাম আমি একজনকে ভালোবাসি। ও নিজেও মাস্টার্স করতে যাচ্ছে। ও জেনারেল লাইনে সার্জারি করবে, আমি গাইনো। কিন্তু আমরা দুজনেই দুজনকে কথা দিয়েছি যে আমরা একই সাথে এগব। রাহুল কাকু আর মা দুজনের মুখেই হাঁসি ফুটল। যাক মেয়ে তাহলে পাত্র খুঁজে পেয়েছে। যেদিন কথা বলার দরকার হবে আমাকে বলিস। আমি বলে আসব। রাহুল কাকু বা হাতে আমার চিবুকটা ধরে একটু নাড়িয়ে দিল। ডাক্তার তো?” আমি ঘাড় নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে দিলাম। আমার ভাইটা যে কি হয়েছে সেটা এক্ষুনি বুঝলাম। জড়ানো উচ্চারনে বলল তুমিও গুড নাইট কিস দেবে যেমন মা বাবাকে ” “ভীষণ বদ হয়ে গেছিস। চুপ কর। ও তোর দিদি। মা ধমকে থামিয়ে দিল। আমাদের প্লেট বাড়া হয়ে গেছিল। খাবার দিতে এসে এক ছোকরা হেঁসে ফেলল আমার ভাইয়ের কথা শুনে। সবাই কটমট চোখে তাকানোতে সামলে নিল। ভীষণ ভালো খাইয়েছিল রাহুল কাকু সেদিন। বেরনোর পর দেখলাম রাহুল কাকুর হাতটা নিজের দুহাতের মধ্যে জড়িয়ে ধরে আমার মা রাস্তা পার হচ্ছে। আমি ঠিক যেমন অরুণের হাত ধরে করতাম। ভালোবাসা টগবগ করছে। ভালোই। আমাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে রাহুল কাকু চলে গেল। বিদায়ের আগে মা অনেকক্ষণ ধরে কাদছিল। ফিরে গেল ওরা। সত্যি এত দিন ধরে মাকে এত ভালবাসছে যে মা ...। ভালো। সত্যি ভালো। আমি নিশ্চিন্ত হলাম। আজ দিনটা সত্যি ভালো গেল। আমি যে নিজের পরিবারে না ফিরলেও তাদের ওপর থেকে মায়া কাটাতে পারিনি সেটা আজ বুঝলাম। কিছুই না নিজের ব্যাপারে একটা নতুন জিনিস বুঝলাম।
 
রাতে খাবার আবার এই বাড়িতে। সন্ধ্যার কিছু আগেই আমি বাড়ি ফিরে এলাম। আকাশ তখনও অন্ধকার হয়নি পুরোপুরি। আজকের সন্ধ্যাটা আমার জীবনের জন্য আরেকটা বিশেষ সন্ধ্যা। তাই সন্ধ্যার কথা একটু গুছিয়ে বলছি। সদর দরজা খোলাই ছিল। উনি ড্রয়িং রুমে বসে চা খেতে খেতে কিছু একটা পড়ছিলেন। আমাকে দেখে মহিলা জিজ্ঞেস করলেন কেমন সময় কাটালে?” বললাম খুব ভালো।আমি উপরে উঠে যাচ্ছি এমন সময় উনি আবার আমায় জিজ্ঞেস করলেন তুমি বলোনি তো যে তোমার উনি দ্বিতীয় পক্ষের বাবা। আমি কি বলব ঠিক জানি না। একটু হকচকিয়ে গেছি। বুঝলাম আমি নিচে নামার আগে ওনাদের মধ্যে কিছু কথা হয়েছে নিশ্চই। বললাম বাবার মতনই খেয়াল রাখেন কিনা।একটা শুঁকনো হাঁসি হেঁসে আমি নিজের ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম। খুবই ভদ্র উনি। কথা বলে খুবই ভালো লাগলো।পেছন থেকে মহিলার গলা পেলাম। আজ আমার মন মেজাজ ভীষণ ভালো ছিল। হাতে অনেক সময় আছে দেখে ঘরের সব কাজ, জামা কাপড় কাঁচা ইত্যাদি সব করে নিলাম। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর সব কাজ শেষ করে ভালো করে স্নান করে নিচে নেমে এলাম। দেখি যদি মহিলার কোনও হেল্প লাগে। আর তাছাড়া ভীষণ একা একা থাকেন। নিচে নেমে ওনাকে কোথাও দেখতে পেলাম না। রান্না ঘর অন্ধকার। ড্রয়িং রুমেও উনি নেই। গেলেন কোথায় মহিলা। হয়ত নিজের ঘরে চলে গেছেন। থাক আর অনধিকার প্রবেশ করে কাজ নেই। উপরে উঠে নিজের ঘরে ঢুকতে যাব মহিলার গলা পেলাম। উনি নিজের ঘর থেকে বেড়িয়ে আসছেন। আমাকে খুঁজতে গিয়েছিলে?” বললাম হ্যাঁ, যদি কোনও হেল্প লাগে, রান্নায়।“ “এস,” উনি আমাকে ওনার ঘরে নিয়ে গেলেন। মহিলা প্রায় রোজ মদ গেলেন, অল্প হলেও রোজ চাই। আমি একথা সেকথার পর ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি যে সারাদিন একা একা বাড়িতে থাকেন বোর লাগে না?” মহিলা বললেন সেরকম না। মাঝে মাঝে দুপুরের দিকে গাড়ি নিয়ে বেরই। একটা ড্রাইভার আছে। ফোন করলে চলে আসে। জিজ্ঞেস করলাম শপিঙে যান?” বললেন ঠিক তা না। বাজার হাট শপিং, একটা ক্লাবের মেম্বার আমি। মাঝে মাঝে কয়েকজন বন্ধুর সাথে গিয়ে ওখানে আড্ডা মেরে আসি। আমাকে উনি ড্রিংক অফার করলেন। সত্যি বলতে কি আজ আমার গেলার ইচ্ছে নেই। কিন্তু তাও ওনার জোরাজুরিতে না বলতে পারলাম না। ওনার কথা বার্তা শুনে বুঝলাম উনার পেগ দুয়েক শেষ হয়ে গেছে আমি আসার আগেই। ভীষণ স্পীডে খান। অনেকক্ষণ আমাদের মধ্যে কোনও কথা নেই। উনি ব্যাল্কনির বাইরে শূন্য দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছেন। এরকম চুপচাপ বসে মদ্যপান করতে আমার বেশ অস্বস্তি হচ্ছে। কিন্তু নিজে থেকে যেচে কিছু বলতে পারছি না। বেশ খানিকক্ষণ এভাবে চলার পর উনি নিজের জন্য আরেকটা পেগ বানাতে বানাতে নীরবতা ভঙ্গ করলেন অবশেষে। তোমার মা খুব লাকি। ওনার গলা ঠিক জড়িয়ে যায় নি, কিন্তু কথা বার্তা বেশ অসংলগ্ন হয়ে পড়েছে। আমি যতটা সম্ভব ওনার ভাষাতে গুছিয়ে বলার চেষ্টা করছি। কিছুটা পড়ার পর বুঝতে পারবেন ওনার অর্ধেক কথারই কোনও উত্তর । তাই আমি ওনার কথাগুলো শুধু মন দিয়ে শুনেই চললাম। আগের দিনের সারাংশ টা আজ ভাব সম্প্রসারণ করে বললেন আর কি।
 
তোমার মা খুব লাকি জানো। এই বয়সে বড্ড একা লাগে। আমি সেই কবে থেকে একা একা আছি। সেদিনই বলেছিলাম যে আমার বাবাও ছিলেন আর্মিতে। বয়স বেশী হয়নি তখনও আমার। সব কিছু বুঝতাম না। একজন অফিসারের সম্বন্ধ নিয়ে এসেছিল আমার বাবার এক কলিগ। দেখতে শুনতে ভালোই লেগেছিল। আমার বাবা ছিলেন রাশভারি লোক। বাড়িতে ওনার কথার ওপর কথা বলার সাহস ছিল না কারোর। আমি আরও বেশ কিছুদিন পরে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু না বাবার মুখের ওপর কিছু বলতে পারিনি। বিয়ে হয়ে গেল। তখন দিল্লীতে পস্টেড ছিল আমার নতুন বর। বরের হাত ধরে চলে গেলাম দিল্লী। বিয়ের পর পর যা হয় আর কি, প্রথম কয়েক মাস নতুন সংসার সামলাতে সামলাতে চোখের নিমেষে কেটে গেল। বিয়ের আগে মা আমাকে জীবনে রান্না ঘরে ঢুকতে দিতেন না। সেই বিয়ের পর গিয়ে খুন্তি নাড়ানো শিখলাম। শেখানোর কেউ ছিল না যদিও। আমার বরের সব আত্মীয়রা মুম্বাই তে আছে। সংসারে লোক বলতে শুধু আমরা দুজন। আমাকে খুব ভোরে উঠতে হত কারণ খুব সকাল সকাল ও ডিউটিতে বেড়িয়ে যাবে। সন্ধ্যা ৭.৩০ আগে ফিরে আসত। এক দিক থেকে সংসার করতে ভালোই লাগত কারণ ও যতক্ষণ বাড়িতে থাকত ততক্ষণ মনে হত ও আমাকে খুব ভালোবাসে। তুমি বড় হয়েছ, তুমি বুঝবে, নতুন বিয়ের পর কাউকে দেখে কিছু বোঝা যায় না। প্রথম প্রথম একটু অস্বস্তিই হত। বাড়িতে থাকলে গায়ে হাত না দিয়ে কোনও কথা বলতে পারত না যেন। পারলে যেন সব সময় আমার গায়ের সাথে ঘেঁষে থাকবে। (আগেই বললাম, ওনার কথা গুলো ওনার ভেতর থেকে মদের ঝোঁকে বমির মতন বেড়িয়ে আসছে। লাগাম নেই। ) পরে এই গায়ে পড়া ভাব মেনে নিয়েছিলাম। ভেবে ছিলাম এটাই ভালোবাসা। সারাদিন পর বাড়ি আসার পর বউকে একটু ছুঁতে চাইবে সেটাই স্বাভাবিক। (আমার মুখে একটা বোধহয় দুষ্টুমি মাখা হাঁসি এসে গিয়েছে, আর সেটা উনি লক্ষ্য করেছেন। একটু হেঁসে বলতে লাগলেন) পুরুষ মানুষের জাত। বুঝলে তো। এখন ভাবলে কষ্ট লাগে। জীবনের একটা বড় সময় অন্য একজনের সুখে সুখী হতে গিয়ে নষ্ট করলাম। খুব ভালো ছাত্রী ছিলাম না জানি। কিন্তু তাও নিজের জীবনে কিছু করার ইচ্ছে ছিল। সেসব স্বপ্নই রয়ে গেল। কি দেই নি ওকে। যখন যা চেয়েছে, যেভাবে চেয়েছে দিয়েছি। সত্যি বলতে কি আমার ইচ্ছা অনিচ্ছার কোনও মুল্যই ছিল না ওর কাছে। যখন যেভাবে শুতে চেয়েছে শুতে দিয়েছি, নিতে চায় নিতে দিয়েছি, ছুঁতে চেয়েছে বাঁধা দেইনি, ইচ্ছা নেই তবু মেকি আনন্দ দেখিয়েছি যাতে ও মনে কষ্ট না পায়। বোঝা উচিত ছিল যে সব ক্ষেত্রে বিয়ের পর যে ফুর্তি হয় সেটাকে ঠিক প্রেম বা ভালোবাসার আখ্যা দেওয়া ভুল। ভালোবাসা জিনিসটা আরেকটু পরিণত ব্যাপার। (মহিলা একটু হেঁসে বললেন) এত ঘষা ঘষি করলে যা হয়, কিছু বোঝার আগেই আমার প্রথম বাচ্চা এসে গেল আমার ভেতরে। মন থেকে এত তাড়াতাড়ি বাচ্চা চাইনি। কিন্তু ওকে দেখলাম খুব খুশি। আমার বাড়ির লোকজনও খুব খুশি এই খবরে। মানিয়ে নিলাম নতুন এই পরিস্থিতির সাথে নিজেকে। বিয়ে করলে বাচ্চা তো নিতেই হবে কোনও না কোনও দিন। এইসব হাবিজাবি ভেবে মানিয়ে নিলাম। প্রথম বাচ্চা তো খুব অসুবিধা হয়েছিল। আর বয়স কম ছিল। বাচ্চা এল। তিন মাসের বিরতি নিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম কোলকাতায়। ওখানে ফিরে যাওয়ার পর আবার সেই আগের জীবন শুরু করলাম। তবে অদ্ভুত কি জানো এইবার যেন আমি ওকে ধীরে ধীরে ভালবাসতে শুরু করেছিলাম। বাচ্চা হওয়ার পর আমি নিজেও বেশ খানিকটা পরিণত হয়ে উঠেছিলাম। সামনে যে নতুন খ্যালনাটা দেখছি সেটা তো আমার বরেরই শরীরের অংশ। শরীরও আরেকটু পরিণত তখন। ওর উগ্র ভালোবাসার ছোঁয়া বাচ্চা হওয়ার পর যেন বেশী উপভোগ করতাম। কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হত এই শরীর আর এই বাচ্চাটা ছাড়া আমার আর কোনও কিছুই ও ভালোবাসে না সেই অর্থে। (মহিলা পেগ ঢাললেন। আমাকেও দিলেন।) এক দিনের কথা মনে আছে। রাত তখন ৯.৩০ আমরা ডিনার করছিলাম। ফোন এল বাবার স্ট্রোক হয়েছে হঠাত। ঠিক হল পরের দিন সকালেই আমাকে প্লেনে উঠিয়ে দেবে ও। কয়েকদিন আমি কোলকাতাতেই থাকব। বুঝতেই পারছ আমার মনে অবস্থা তখন কিরকম ছিল। রাতে উৎকণ্ঠা নিয়ে শুয়ে কাঁদছিলাম। সেই অবস্থাতেও, সেই রাতে, আমাকে সান্তনা দেওয়ার ভাণ করে দু দুবার নিয়েছিল আমাকে। বলেছিলাম যে আমার শরীর চাইছে না আজ। মন খারাপ। কেঁদে চলেছি, কিন্তু ও আমার শরীরটাকে নিয়ে নিজের মনের খুশিতে খেলে চলেছে। একসময় হাঁপিয়ে এক পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়ল। আচ্ছা এটাকে কি বলব? ভালোবাসা, প্রেম, না ;.,? (একটু হেঁসে বললেন) আমি বলছি না যে ছেলেদের এই সব করতে নেই। আমিও এইসব ভালোবাসি। আমরা সুস্থ সবল। বয়সের চাহিদা থাকে, সে ছেলে হোক বা মেয়ে। এখন তো অনেকে বলে যে ছেলে যত বেশী আদর করতে পারে তত ভালো। সবই মানছি, কিন্তু দুজনের মিলন দুজনের সম্মতিতে হলেই পুরো পুরি তৃপ্তি হয়। নইলে মনে হবে একজন আরেকজন কে , ওই আর কি রেপ করছে। আর একটা সত্যি কথা বলেই ফেলি, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এই মিলন খুব প্রয়োজনীয় সেটা আমিও মানি। যত নিয়মিত নিজেরা নিজেদের তৃপ্তি দেবে ততই দুজনের মধ্যে বন্ধন আরও দৃঢ় হয়। নইলে সাংসারিক জাঁতাকলে পিষে, সময়ের সাথে সাথে ভালোবাসাটা অভ্যেসে পরিণত হয়। কিন্তু সেই মিলন দুজনের সম্মতিতে হলেই সেটাকে মিলন বলে। যাই হোক, কোলকাতায় চলে এলাম।
[+] 1 user Likes pcirma's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981 - by pcirma - 18-10-2019, 02:04 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)