Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981
#32
পরের পর্ব
পরের দিন শুরু হল। আমরা রওয়ানা হওয়া অব্দি পুলিশ আসেনি আমাদের এখানে। বাকি দিনটা গতকালের মতই ব্যস্ততার মধ্যে কেটে গেল। রান্নার বই পড়া আর নিজে রান্না করার মধ্যে যে আকাশ পাতালের তফাত সেটা আমরা প্রত্যেকেই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলাম। যেই পারছেন সেই আমাদের প্রচুর প্রচুর বকা দিচ্ছেন। লাঞ্চের ইচ্ছা কারুরই ছিল না আজ কারণ বকা খেয়েই পেট ভরে গেছে। শহরের থেকে দূরে এই পাড়া গাঁয়ে থাকার জন্য এখানকার ডাক্তারদের মধ্যে মনে হয় একটা হতাশা কাজ করে। সবার মধ্যে না করলেও, অনেকের মধ্যেই যে করে সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। ভীষণ খিটখিটে মেজাজ বেশিরভাগ লোকের। পান থেকে চুন খসলেই বকা। নতুন অভিজ্ঞতাও হল অনেক। ওটি তে মরণপ্রায় রোগীকে ইনজেকশন দেওয়া যে কি কঠিন কাজ এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। ছুরি কাঁচি ধরার আসল চাপ বুঝতে পারছি। আজও ফিরতে দেরী হয়ে গিয়েছিল। সবাই ভীষণ রকম ক্লান্ত ছিলাম। আমি এসে আর কারোর সাথে কথা না বাড়িয়ে ওপরে চলে গেলাম ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে শ্যামদার মেয়েকে দেখতে পেলাম। মেয়েটাকে দেখে বেশ স্বাভাবিক মনে হল আজ। হাতে হাতে নিজের বাবাকে একাজে সেকাজে সাহায্য করে দিচ্ছে। উৎসাহের অভাব চোখে পড়ল না। অনেক সুস্থ লাগছে ওকে দেখে, আসলে অল্প বয়স তো, খুব তাড়াতাড়ি সেরে উঠেছে। তবু আমি শ্যামদাকে বললাম যে খাওয়ার আগে একবার ওকে দেখে নিতে চাই তাই ওনার মেয়েকে যেন এখন একবার আমার ঘরে পাঠিয়ে দেন। অবশ্য আমার এই ক্ষেত্রে অন্য একটাও উদ্দেশ্য ছিল। চেষ্টা করে দেখব যদি মেয়েটার পেট থেকে কিছু কথা বাড় করা যায়। চেকআপ করে বুঝলাম আপাতত বেশ ভালোই আছে। কথা বলে বুঝতে পারলাম বেশ হাসিখুশি, কথা বার্তা শুনে বা হাবভাব দেখে মনেই হবে না যেই মেয়ে গতকাল মরতে মরতে ফিরে এসেছে। কিন্তু এই মেয়ের মনে কি যে আছে সেটা আন্দাজ করা মুশকিল। ওকে দেখা শেষ হলে একথা সেকথা বলার পর ওকে বললাম গতকাল তুমি যে এমন করলে, যদি তোমার ভালো মন্দ কিছু একটা হয়ে যেত, ভেবে দেখেছ শ্যামদার কি হত? খুব খারাপ কাজ করেছ কিন্তু কাল। আমি তো বুঝতে পারছি না তুমি এমনটা করতে গেলে কেন হঠাত?” মেয়েটা সরাসরি উত্তর দিল দিদি, আমি কিন্তু ইচ্ছা করে এরকমটা করতে চাইনি একেবারে। কেই বা অকারণে মরতে চায়? কিন্তু মামা মামির জোরাজুরিতে এমনটা করতে আমি বাধ্য হয়েছি। নইলে আমার বিয়ে দিয়ে দিত একটা বাজে ছেলের সাথে। এমনকি এখন তো দেখছি তারা বাবাকেও আমার বিয়ের ব্যাপারটা জানায়নি। বাবা মানুক বা না মানুক আমি যেটা বলছি সেটাই সত্যি। হাঁসপাতালে মামা যা বলেছে সব মিথ্যে। ওকে বললাম একটা কথা কি জানো, তুমি যাই বল না কেন তোমার কথা কিন্তু বিশ্বাস করতে এখনও কষ্ট হচ্ছে। দেখ আজ নয়ত কাল শ্যামদা কিন্তু ওখানে যেতেনই। তখন উনি সব কিছুই জানতে পারতেন যে তোমার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তখন কি আর কোনও কিছু রাখা ঢাকা থাকত? আর তখন তোমার মামাও তোমার বাবাকে কি বলতেন? তোমার মামা যদি তোমার বিয়ে দিতেই চান তো এরকম একটা ঝুঁকি নিতেই বা যাবেন কেন? ওনার যদি তোমাকে ওনাদের কাছে রাখতে কোনও সমস্যা থাকে তো অনেক সহজ সমাধান হল শ্যামদাকে বলে তোমাকে এখানে রেখে দিয়ে যাওয়া। তার জন্য নিজেরা খরচ করে বিয়ে দিতে যাবেন? “ ও আমাকে বলল দিদি, তুমি ঠিক আমার কথা বুঝতে পারছ না। বাবা গিয়ে আমার খোঁজ করলে বলত যে আমি কোনও একটা ছেলের সাথে কাউকে না জনিয়ে পালিয়ে গেছি। ওরা আমার অনেক খোঁজ করেছে, কিন্তু আমার খোঁজ পায়নি। আমি তোমাকে বলছি ওই ছেলে আর আমাকে নিয়ে কোনওদিন এই বাসায় ফিরত না। জিজ্ঞেস করলাম মানে? আর তুমি কি করে জানলে ছেলে ভালো নয়?” একটু থেমে ওকে বললাম আমি বুঝতে পারছি তুমি অন্য কাউকে পছন্দ কর। কিন্তু এই ছেলেটা খারাপ বা তোমার মামা মামি তোমার ক্ষতি করতে চাইছেন এই চিন্তাটা তোমার মাথায় এলোই বা কি করে। তোমার মামাকে দেখে তো মনে হল তোমার এরকম করায় উনি মনে মনে বেশ কষ্ট পেয়েছেন। ও আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল দিদি, ওখানে একটা ঘটকালি করার লোক আছে। মাঝে মাঝে এক একটা ছেলেকে কোথা থেকে জোগাড় করে নিয়ে আসে। এর তার সাথে সম্বন্ধ করার চেষ্টা করে। কয়েকদিনের মধ্যেই কারুর না কারুর বাড়ির মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় ওই ছেলের সাথে। মেয়ে শশুর বাড়ির দিকে রওয়ানা দিয়ে দেয়। এর পর মাস ঘুরে যায়, বছর ঘুরে যায়, কিন্তু মেয়ে বা জামাই কেউ আর এসে দেখা করে না। একটু দম নিয়ে বলল আমার এক বন্ধুর দিদির বিয়ে হয়েছিল এমন একটা ছেলের সাথে। ওই ভদ্রলোকই সম্বন্ধ এনেছিলেন। বিয়ের পর প্রায় দুবছর হয়ে গেল, কিন্তু মেয়ে বা জামাই কেউ একবারের জন্যও এল না দেখে শেষে ওর বাবা শহরে গিয়েছিল জামাইয়ের খোঁজ করতে। ওখানেও গিয়ে মেয়ে বা জামাই কাউকে দেখতে পায়নি। জামাই বিয়ের সময় যে ঠিকানাটা দিয়েছিল সেটা নাকি ভুয়ো। সেখানে অন্য লোক থাকে আর বহুদিন ধরেই থাকে। শহরে একবার পুলিশের কাছেও গিয়েছিল। পুলিশ না দেখে শুনে বিয়ে দেয়ার জন্য নাকি খুব বকা ঝকা করে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। আমাকে অবশ্য এইগুলো আমার বন্ধু বলেছে। ওদের ধারণা ওদের মেয়েকে ওই ছেলেটা মেরে ফেলে চলে গেছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করতে বাধ্য হলাম সব মানলাম কিন্তু ওই ঘটকালি করা লোকটা যে ওদের সম্বন্ধটা করেছিল ওকে গিয়ে তোমার বন্ধুর বাবা মা ধরল না কেন?” ও বলল দিদি, কে বলল জিজ্ঞেস করেনি। ধরেছিল। কিন্তু ওই লোকটাও কিছুই বলতে পারেনি। ওর কথা হল ওর কাছে নাকি অন্য কেউ এসে এই ছেলেটার সম্বন্ধের ব্যাপারে বলেছিল। ভালো ছেলে বলে শুনেছিল তাই উনি আমার বন্ধুর বাবা কে গিয়ে ছেলের সম্বন্ধের কথা শুনিয়েছে। বেশ করে দু কথা শুনিয়েও দিয়েছিল আমার বন্ধুর বাবা কে। ওর নাকি কোনও স্বার্থই নেই ওনার মেয়ের বিয়ে দেওয়ার। ভালো ছেলে ভেবেই নাকি ওদের বাড়িতে নিয়ে এসেছিল শুধু কথা বলার বা আলাপ করানোর জন্য। বাকি সব দোষ নাকি আমার বন্ধুর পরিবারের। ওরা কেন কেউ দেখে শুনে বিয়ের আগে ভালো করে খোঁজ নেয় নি। ওদের পছন্দ না হলে ও অন্য কোনও বাড়ির মেয়ের জন্য সম্বন্ধ দেখত। এতে ওর করার কিছুই নেই। বিয়ের সব সিদ্ধান্ত আর তার দায় আমার বন্ধুর বাবার ওপর চাপিয়ে বিদায় করে দিয়েছিল। একটু থেমে অনেক কষ্ট করে ও বলল আসলে কি জান দিদি, আমরা এত গরীব না যে কি বলব। অনেকের বাড়িতে মেয়ের বয়স হয়ে গেলেও মেয়ে বাড়িতেই বসে থাকে। পয়সার অভাবে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যায় না। গ্রামের কোনও পরিবারে বিয়ে দিতে চাইলে ছেলের বাড়ি থেকে মোটা পণ চাওয়া হয় আর সেই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা প্রায় কারুরই নেই। তাই শহর থেকে ভালো সম্বন্ধ এলে কিছু না ভেবেই সবাই মেয়ের বিয়ে দিয়ে বিদায় করে দেয়। ওর সাথে কথা বলে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে মেয়েটা এই পাড়া গাঁয়ের মেয়ে হলে কি হবে, বয়সের আর লেখা পড়ার তুলনায় অনেক বেশী বুদ্ধিমতী আর পরিপক্ক। যদি ও যা বলছে সেটা পুরোটা মিথ্যাও হয় তবুও আমাকে এক মুহূর্তের জন্য হলেও ভাবতে বাধ্য করেছে যে ওর কথায় সত্যতা আছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম সবই তো বুঝলাম। আমিও শহর থেকেই এসেছি। কিন্তু একটা ব্যাপার জান কি যে শহরের ছেলের সাথে বিয়ে দিতেও অনেক খরচা হয়। গ্রামে বিয়ে দিতে পারছে না আর শহরের একটা ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়? এটা কেমন কথা হল বল তো? সেই খরচা করতে পারে তোমাদের ওখানকার লোকেরা? ” মেয়েটা বলল এই লোকটা যে সম্বন্ধগুলো আনে সেই সব ছেলেরা কেউ পণ নিতে চায় না। উল্টে দেখেছি বিয়ের আগে বলে যে ওদের শুধু মেয়েই চাই। বিয়েটা তাড়াতাড়ি হয়ে গেলেই ভালো। তাই বিয়ে দিতে অসুবিধা হচ্ছে দেখলে ওরাই নিজে থেকে এসে সাহায্য করে টাকা দিয়ে যাতে বিয়েতে কোনও বাঁধা না পড়ে। কিন্তু ওই যে বললাম বিয়ে হয়ে একবার শহরে চলে গেলে আর কারুর খোঁজ পাওয়া যায় না, কেউ আর ফিরে আসে না। খোঁজ করতে গেলে জানা যায় যে ছেলেদের যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে সব ভুয়ো।
 
পরের পর্ব
বললাম এসব কথা তুমি তোমার বাবাকে বলনি কেন খুলে? “ ও বলল বাবাকে বলেছি। কিন্তু বাবা আমার কথা বিশ্বাস করতে চাইছে না। বাবা মামা কে ভীষণ বিশ্বাস করে। আসলে মা মারা যাওয়ার পর থেকে ওরাই তো আমাকে দেখা শুনা করত তাই আর কি। আমার মামা আমার বাবাকে না জানিয়ে আমার বিয়ে দিয়ে দেবে সেটা কিছুতেই মন থেকে মানতে পারছে না। বললাম হুম তাও বটে। কিন্তু একটা কথা বল, তোমার বাবা তো তোমাকে বলেছিল যে তোমার বাবার মতামত নিয়ে এই সম্বন্ধ করে তোমার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তুমি কি ছেলেটাকে কখনও দেখেছিলে? “ ও মাথা নাড়িয়ে বলল হ্যাঁ একবার দেখেছিলাম। বাড়িতে এসেছিল ওই লোকটা ওই ছেলেটাকে নিয়ে। ছেলেটা কথা বার্তায় আর দেখতে শুনতে ভালোই। কিন্তু আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি বলে না বলে দিয়েছিলাম। আর তাছাড়া আমার ভয় হয় অন্যদের মতন আমাকেও শহরে নিয়ে গিয়ে এই ছেলেটাও আমাকে মেরে ফেলবে। বললাম হুম।ও বলল মামা মামি আমাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে ওদের আমার বিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। খুব ভালো ছেলের সম্বন্ধ এসেছে তাই বিয়ে দিয়ে দেওয়াই ভালো। আমার বয়স হয়ে যাচ্ছে। এরপর বাড়িতে বসে থাকলে পাঁচটা লোকে পাঁচটা খারাপ কথা শোনাবে। সেটা কি ভালো? তাই বিয়েটা করে ফেল।আমি ওকে বললাম বেশ বুঝলাম তোমার কথা। এইবার তুমি যাও। এখন দু এক দিন শরীরের যত্ন নিও, বেশী কাজ কর ন। ও হেঁসে চলে গেল। আমিও আমার ঘরে তালা লাগিয়ে ওর পিছন পিছন নিচে নেমে এলাম। রাজার ঘর থেকে সবার গলা আসছিল। ওখানে গিয়ে দেখলাম রাজার ঘরে ওদের মদের ঠেক বসেছে। আমি ঢুকে দরজাটা লাগিয়ে দিলাম। ওরা অবাক চোখে আমাকে দেখল কিছুক্ষণ যেন ভুত দেখছে। রাজা ঠাট্টা মেরে আমাকে বলল ওই মেয়ে শ্যামদা জেগে আছেন। এখন তুই চাইলেও আমরা তোকে কিছু করতে পারব না। আরেকটু সবর করুণ মহারাণী। শরীরের আঁচ সামান্য কমিয়ে রাখ যতক্ষণ না ওরা ঘুমায়। আমি ভীষণ জোড় একটা ধ্যাতানি মারলাম ওকে চুপ কর শালা। তোরা ক্রমশ বর্ষা কালের ওই রাস্তার নেড়ি কুত্তা গুলোর মতন সেক্স পাগল হয়ে যাচ্ছিস। অন্য কথা বলতে এসেছি। মন দিয়ে শোন। আর তোরা কি ভাবছিস আমাকে জানা। সন্দীপ আমার সামনেই একটা তোয়ালে পরে বিচ্ছিরি অশ্লীল ভাবে চেয়ারের ওপর হাঁটু মুড়ে পা তুলে বসেছিল। হাঁটুর ওপরে তোয়ালে উঠে গিয়ে ওর সংক্ষিপ্ত ফ্রেঞ্চি কাটিং এর জাঙ্গিয়াটাও দেখা যাচ্ছিল তোয়ালের ফাঁক দিয়ে। আমি দেখতে পাচ্ছি দেখেও ও নিজের পা বা তোয়ালে কোনও কিছু ঠিক করল না, অবশ্য আমি এতে কিছু মাইন্ড করলাম না। এখন যে আমাদের মধ্যে তেমন আর কোনও রাখ ঢাক নেই সেকথা তো আগেই বলেছি। আমি বিছানায় বসে শ্যামদার মেয়ে আমাকে যা যা বলেছে সব উগড়ে দিলাম ওদের সামনে। ওরা কোনও কথা না বলে মন দিয়ে আমার পুরো কথা শুনল। আমার কথা শেষ হওয়ার পর প্রথম মুখ খুলল সন্দীপ, ওর চোখে মুখে যেন একটা কৌতূহল মাখা উত্তেজনা। বলল চল পরশু তো আমাদের কিছু করার নেই। এখানে এইভাবে না বসে থেকে ওর মামার বাড়ির দিকে একটা ঢুঁ মেরে আসি। লোকজনদের গিয়ে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখি, যদি কিছু জানা যায়।ব্যাটার সব ব্যাপারেই ভীষণ বাড়াবাড়ি। রাজা দিল এক ধমক শালা গোয়েন্দাগিরি করার শখ? শালা ওটি তে পেট কাটা দেখলে ভিরমি খাস। আর ওখানে বেপাড়ায় গিয়ে মস্তানি করবি। গোয়েন্দাগিরি করছিস কেউ ধরতে পারলে না ওই জাঙ্গিয়ার তলায় যেটা রয়েছে সেটা কেটে লোকজন নিয়ে নেবে। তখন সারা জীবন ধরে হাত তালি দিয়ে বেড়াস। আমিও রাজার সাথে একমত এই ব্যাপারে। নিজেদের যেচে এই ব্যাপারের সাথে যুক্ত করা মানে যেচে বাওয়াল করে বিপদ ডেকে আনা। আর আমরা এখানে কাজ শিখতে এসেছি। আমাদের এইসব কিছুর মধ্যে পড়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই। রাজা মাথা নেড়ে বলল হ্যাঁ যেচে বাওয়াল করে কোনও লাভ নেই। কিন্তু শ্যামদাকে ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলতে হবে। আর তারপর যাতে শ্যামদা গিয়ে পুলিশকে সব বলে সেটা দেখতে হবে। তারপর যা করার পুলিশ করুক। খোঁজ খবর করে দেখুক কে সত্যি বলছে আর কে মিথ্যা। আমরা সবাই মেনে নিলাম এটাই উত্তম প্রস্তাব। রাজা সন্দীপকে বলল এই শালা শ্যামদাকে ডাকছি। তুই ঠিক ভাবে বস।আমি গিয়ে শ্যামদা আর ওর মেয়েকে রাজার ঘরে ডেকে নিয়ে এলাম।
 
রাজা কোনও রকম ভণিতা না করে সরাসরি কাজের কথায় চলে গেল। আপনি আপনার মেয়েকে বিশ্বাস করছেন না কেন জানতে পারি?” শ্যামদা বললেন এত দিন আমার মেয়ে ওদের বাড়িতে আছে। ওরা ওদের ক্ষমতা মত আমার মেয়ের দেখাশুনা করার কোনও ত্রুটি রাখেনি। একথা আমার মেয়েও মানবে। আমার গিন্নি মারা গেছিল বেশ কয়েক বছর আগে। সেই তখন থেকে আমার মেয়ে রয়েছে ওদের সাথে। ওদের নিজেদের কোনও বাচ্চা নেই। আমার মেয়েকে ওরা নিজের মেয়ের মতন ভালোবাসে। রাজা শ্যামদাকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে বলল দেখুন আপনার সব কথাই বুঝতে পারছি। কিন্তু আমরা শুনলাম আর বুঝলাম। কিন্তু এটা কি সত্যি যে যাদের মেয়েদের ওই লোকটার আনা ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যায় তারা আর শহর থেকে কোনও দিনও ফেরত আসেনা। এটা জাচাই করে দেখেছেন? এটা যদি সত্যি হয় তাহলে এর মানে করলে কি হয় সেটা ভেবে দেখেছেন একবারের জন্য হলেও?” শ্যামদা বললেন ধরে নিচ্ছি এইটা সত্যি কথা। কিন্তু তাতে কি? আমার শালা আমাকে পরিষ্কার করে বলেছে যে ওর জন্য কোনও বিয়ের সম্বন্ধ দেখা হয়নি। আর আমাকে না জানিয়ে ওর বিয়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আমি বললাম আপনি কিন্তু নিজে একবার ওখানে গিয়ে একটু খোঁজ নিয়ে দেখতে পারতেন। আপনার জানা শুনা আছে। খবর নেওয়া আপনার জন্য অনেক সহজ হত। আর সত্যি বলতে কি এই ঘটকালি করার লোকটাকে আমাদের খুব একটা সুবিধের মনে হচ্ছে না যা শুনলাম তারপর। শ্যামদাকে দেখে বুঝতে পাচ্ছিলাম যে উনি আমাদের এইভাবে নাক গলানোতে বেশ ক্ষুণ্ণ হচ্ছেন, কিন্তু মুখে সেটা বলতে পারছেন না। আমি শ্যামদার সামনেই ওর মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম কত ঘন ঘন ওই লোকটা ছেলে নিয়ে আসে সম্বন্ধের জন্য?” মেয়েটা একটু ভেবে বলল তেমন ঠিক কিছু নেই। কখনও মাসে একবার, কখনও বা মাসে দুবারও আসে। কোনও কোনও মাসে একেকবার দু-দুটো ছেলের সম্বন্ধ নিয়ে এসে হাজির হয়। আমি বললাম তোমার সম্বন্ধটা ওই নিয়ে এসেছিল?” ও বলল না তো বলছি কি?” বললাম কোথায় থাকে সেই লোকটা জানো? তোমাদের পাড়াতেই নাকি কাছাকাছি কোথাও? চেন ওর বাড়ি? “ বলল না আমি ওর বাড়ি চিনি না, কিন্তু অনেকেই চেনে ওর বাড়ি। বিশেষ করে যাদের বাড়িতে সম্বন্ধ নিয়ে এসেছিল তারা মোটামুটি সবাই ওর বাড়ি চেনে। সন্দীপ কে দেখে মনে হচ্ছিল সারাদিন খাঁটা খাটুনির পর ওর আর মদের আড্ডায় এইসব জটিল ব্যাপার নিয়ে বাড়াবাড়ি আর কচকচানি ভালো লাগছে না। এখন আর এইসব ব্যাপারে ওর কোনও আকর্ষণ নেই, কিন্তু, একটু আগে ওই বলছিল যে নিজে গিয়ে গ্রামে তদন্ত করে খোঁজখবর করে আসবে। কোথায় যে সেই উদ্যম হারিয়ে গেল জানি না। ওর চোখ দুটো লক্ষ্য করছিলাম, ও যেন অন্য কোনও একটা দুনিয়ায় বিচরণ করছে। শ্যামদা বা ওর মেয়ের, এমনকি আমাদের বলা কোনও কথা ওর কান দিয়ে ঢুকে ব্রেন অব্দি পৌঁছাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। ও নিজের মতন মাথা উঁচু করে চোখ বন্ধ করে বসে একমনে মদের গ্লাসে ঘন ঘন চুমুক দিয়ে চলেছে। আমাদের কথার মাঝেই ওর গ্লাস শেষ হওয়ায় ও উঠে নিজের পেগ বানিয়ে নিয়ে আবার চেয়ারে এসে বসল। আমাদের কথা শেষ হলে শ্যামদা যাবে যাবে করছিলেন ওনার মেয়েকে নিয়ে। কিন্তু সন্দীপ চোখ খুলে সোজা হয়ে উঠে বসে হঠাত একটা বাজে প্রশ্ন করে বসল।
 
তোমরা ওখানে বাড়িতে কি খাও? রাত্রে বা দুপুরে?” প্রশ্নটা করেছিল শ্যামদার মেয়েকে। মেয়েটা বলল রুটি বা দুটো ভাত খাই।প্রশ্ন এল তার সাথে?” মেয়েটা বলল ডাল।“ “ব্যস? আর কিছু না?” মেয়েটা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বোঝাল। তাতে পেট ভরে তোমাদের?” মেয়েটা বলল চলে যায়। মামা খুব কম খায় আর মামিও। অভ্যাস হয়ে গেছে। সন্দীপ জিজ্ঞেস করে চলেছে তোমার মাছ মাংস কিছু খাওনা? মানে কখনও খেতে ইচ্ছে করে না?” আমি ভেতরে ভেতরে খুব বিরক্ত হচ্ছিলাম। একটা অসহায় গরীব মেয়েকে এইভাবে আমাদের সামনে জিজ্ঞেস করছে ওরা কি খেতে পায় আর কি খেতে পায় না। ওর কি মদ খাওয়ার মনুষ্যত্ব বলে জিনিসটা মরে যায়? অরুণ দুবার হাত দেখিয়ে সন্দীপকে থামানর চেষ্টা করল, কিন্তু ওকে দমানো গেল না। মেয়েটাকে দেখে বুঝতে পারছিলাম ওকে নিজেদের এই করুণ দরিদ্র অবস্থার কথা নিজের মুখে আমাদের সামনে স্বীকার করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। মেয়েটা বলল না মাছ মাংস আমাদের তেমন হয় না। আগে খুব বেশী হলে দুমাসে একবার বাড়িতে মাংস হত, তাও খুব কম পেতাম। তবে মাসে একবার মাছ হত।সন্দীপ খুব গম্ভীর ভাব দেখিয়ে একটা ঢেঁকুর তুলে বলল হুম। শ্যামদার মুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম ওনার সামনে ওনার মেয়েকে এইসব প্রশ্ন করায় উনি মনে মনে খুব আহত হচ্ছেন। তুমি বললে যে তোমাদের বাড়িতে দুমাসে একবার করে মাংস হত আগে (আগে কথাটা বেশ জোড় দিয়ে বলল ও) ?” মেয়েটা নীরবে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল। আর এখন?” মেয়েটা সাথে সাথে উত্তর দিল এখন মাসে দুতিনদিন মাছ হয়। একদিন অন্তত মাংস হয়ই হয়। মামার অফিসে পোস্ট ভালো হয়েছে। সন্দীপের যেন এই উত্তরটাই আশা করছিল, কারণ ওকে দেখে মনে হল ওর পরের প্রশ্নটা তৈরি ছিল, মেয়েটার কথা শেষ হতে হতে তীরের মতন জিজ্ঞেস করল কবে হল এই পদন্নতি? হ্যাঁ? মানে তোমার মামার মাইনে বাড়ল কবে কিছু জান? “ মেয়েটা সরল ভাবে ঘাড় নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিল সে জানে। কবে?” আবার ভারি গলায় প্রশ্নটা এল। মাস দেড়েক আগে। সন্দীপ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে হুমবলে কি ভাবার জন্য একটু যেন থামল। আর যদি ধরেই নি তোমার কথাটাই সত্যি, তাহলে তোমার জন্য ওই ছেলেটির সম্বন্ধ নিয়ে এসেছিল কবে সেই ঘটকালি করা লোকটা?” মেয়েটা একটু ভেবে বলল তা দাদা মাস দুয়েক বা তার থেকে সামান্য বেশী। মাস দুয়েকই হবে।সন্দীপ বলল শ্যামদা আমার মনে হয় কাল সক্কাল সক্কাল গিয়েই পুলিশকে এইসব ব্যাপার জানিয়ে দেওয়া উচিত। ওর কথায় যদি এতটুকুও সত্যতা থাকে, তাহলে একবার ভাবুন আপনার শালা আপনার মেয়েকে জেনে বুঝে বেচে দিচ্ছিল। পরে আপনার মেয়েকে শহরে নিয়ে যাওয়ার পর ওর সাথে কি কি করত সেটা আমরা জানিনা। আর কেন বললাম জেনে শুনে, কারণ ওই লোকটি যে দালাল আর খুব শয়তান তাতে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। আসলে আপনাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ বলে কোনও ভালো সম্বন্ধ এলেই আপনরা কিছু খোঁজখবর না করেই বিয়ে দিয়ে দেন। আর ওই লোকটা আপনাদের সেই দুর্বলতার সুযোগ নেয়। কিন্তু আপনার এই গুণধর শালাটি সব জেনে শুনে আপনার মেয়েকে বেচে দিচ্ছিল। যদি আপনার শালার মনে কোনও বদ মতলব না থাকত তাহলে আপনাকে একবার হলেও জানাত। কিন্তু আপনার মেয়েকে আপনার নামে মিথ্যে কথা বলে আপনার মেয়েকে বিদায় করে দিচ্ছিল। আমি নিশ্চিত যে ওরা আপনার শালাকে টাকা দিয়েছে আর যেই জন্য আপনার শালা আপনাকে জানায় নি, কারণ আপনি খোঁজ খবর নিয়ে সম্বন্ধ ভেঙে দিলে ওদের বিপদ। ব্যাপারটা খুব গোলমেলে। একটু থেমে বলল অবশ্যি যদি আপনার মেয়ের কথায় এক ফোঁটাও সত্যতা থাকে তো। নইলে আমরা নিজেদের সময় নষ্ট করছি সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শ্যামদা কি একটু ভেবে বলল আমি তো পুলিশের কাছে গিয়ে এইসব বলে বোঝাতে পারব না। আপনারাই না হয় কথা বলে দেখুন।রাজা এতক্ষণে মুখ খুলল আমাদের এর মধ্যে জড়িয়ে পড়া ঠিক হবে না কারণ আমরা দুদিন আগে বাইরে থেকে এসেছি। আমাদের কথায় পুলিশ তেমন গুরুত্ব দেবে না। আপনি বরং এক কাজ করুণ কাল সকালে আরেকটা রিক্সা নিয়ে আসবেন। আপনি আপনার মেয়েকে নিয়ে আমাদের সাথে হাঁসপাতালে যাবেন। আমরা আমাদের স্যারকে সব কথা খুলে বলব। উনি এখানে অনেকদিন আছেন আর যা বুঝেছি সবাই ওনাকে খুব সম্মান করেন, আপনাদের পুলিশও। ওনাকে বলব পুলিশের সাথে কথা বলতে, উনি বললে ব্যাপারটায় বেশ জোড় পড়বে। তারপর বাকিটা পুলিশের হাতে। মেয়েটার মুখের দিকে এতক্ষণ তাকাতে পারিনি। এখন তাকিয়ে দেখলাম চোখ জলে ভরে টলটল করছে। ওর যে কত বড় সর্বনাশ হতে চলেছিল বলেই হয়ত আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। আমাদের দিকে বেশ একটা কৃতজ্ঞতা ভরা চাহুনি নিয়ে তাকিয়ে ছিল। আমি উঠে ওর পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম পাগলি কাঁদছিস কেন? এখন তো তুই এখানে আছিস আমাদের সাথে আর তোর বাবার সাথে। কাল সকাল সকাল গিয়ে পুলিশকে সব জানাতে হবে। একটুও ভয় পাবি না। যা জানিস সব ভেবে ভেবে উগড়ে দিবি। তারপর যা হয় দেখা যাবে। ওরা দুজনে মাথা হেলিয়ে ঘর থেকে চলে গেল। ওরা বেড়িয়ে যেতেই আমরা তিনজন বেশ প্রশংসা ভরা চোখে সন্দীপের দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ ধরে। সন্দীপ একটু অপ্রস্তুত হয়ে বলল কি দেখছিস?” আমি গিয়ে ওর চিবুকটা আঙুল দিয়ে একটু নাড়িয়ে দিয়ে আঙুলগুলোকে আমার ঠোঁটে নিয়ে এসে একটা চুমু খেয়ে বললাম একই অঙ্গে এত রূপ? বাব্বা। ডাক্তার আর তার সাথে গোয়েন্দা আর তার সাথে উকিল!
 
কিছু পরে আমরা আসর ভেঙে খেতে চলে গেলাম। শ্যামদাকে দেখে মনে হল বেশ ভয় পেয়েছেন। বা অস্বস্তিতে ভুগছেন। অন্য দিন আমাদের সাথে অনেক কথা বলেন, মজা করেন। কিন্তু আজ একদম চুপ মেরে গেছেন। খাওয়া শেষে আমরা যে যার ঘরে চলে এলাম। আমার ঘরটা এখন ঠিক ওদের ঘরের মতন নোংরা হয়ে আছে। কিন্তু আজ আর ঘর গোছানর ইচ্ছে হল না। রোজকার মতন ঘরে পরার টপ আর লেগিন্সের নিচ থেকে আমার ব্রা আর প্যানটিটা খুলে টেবিলের উপর পড়ে থাকা বাকি নোংরা জামাকাপড়ের উপরে রেখে দিয়ে লাইট জ্বালিয়ে বিছানায় ঢুকে পড়লাম। মশারি গুঁজে অন্ধকার ঘরে শুয়ে শুয়ে শ্যামদার মেয়েটার কথা চিন্তা করছিলাম। যাকগে আমাদের যা করার করা হয়ে গেছে। রাত প্রায় সোয়া বারোটা বাজে। কাল দেখি সকালে একটু তাড়াতাড়ি উঠলে স্নানের সময় কিছু নোংরা কাপড় কেঁচে ফেলতে পারব। নইলে রাতে ফিরে প্রচুর কাচাকাচি করতে হবে। অনেকগুলো জামা জমে গেছে। উপুড় হয়ে নির্বাক বালিশটাকে দুহাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুম আসার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম, যেন আমার বরকে জড়িয়ে ধরে ওর শরীরের সাথে নিজের শরীর মিশিয়ে দিয়ে ঘুমের দেশে পাড়ি জমাতে চলেছি।ঠক ঠক শব্দ এল বন্ধ দরজার বাইরে থেকে। বেশ আস্তে আস্তে শব্দটা করছে। এখন আবার কে এল রে বাবা। অরুণ নয়তো? ওর কাল আসার কথা ছিল, কিন্তু কাল আসা হয়নি। এখন বাড়ি ভর্তি লোক, যদি কেউ চলে আসে, ছি ছি কি করব তখন, এইসব ভাবতে ভাবতে গিয়ে অন্ধকারে হাতরে সুইচবোরডে লাইটের সুইচ জ্বালিয়ে দরজা খুলে একটু ফাঁক করলাম। উফফ অরুণই বটে। পারেও বটে ছেলেটা। সাহস আছে মানতেই হবে। একমুখ হাঁসি নিয়ে ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে খালি গায়ে, পরনে শুধু একটা হাঁটু অব্দি সাদা তোয়ালে। কিরে ঘুমিয়ে পড়েছিলিস নাকি?” দাঁত কেলাতে কেলাতে জিজ্ঞেস করল আমাকে। ফিস ফিস করে বললাম না না ঘুমাইনি।আমার মধ্যে হঠাত করে একটা ভয় মাখা উত্তেজনা কাজ করতে শুরু করেছে। ও বোধহয় হাঁসি মুখ নিয়েই কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই আমি ওর ঠোঁটে আঙুল রেখে দিলাম শশশ, আস্তে কথা বল। আঙুল সরিয়ে নিতেই আবার বলে উঠল ভেতরে আসতে তো দে। এখানেই দাঁড় করিয়ে রাখবি নাকি সারা রাত ধরে। আমার কপাল ভালো এইবার গলার স্বর অনেকটা নামিয়ে কথা বলছে। আমি দরজাটা আরেকটু ফাঁক করে মাথাটা দরজার বাইরে গলিয়ে বের করে আমার ঘরের সামনের করিডরটার এমাথা থেকে ওমাথা একবার দেখে নিলাম। বাইরেটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। আজ যেন চাঁদও মেঘে ঢাকা পড়ে গেছে। না কেউ নেই। দরজা ছেড়ে একপাশে সরে দাঁড়ালাম, রাস্তা করে দিলাম ওর জন্য। অরুণ দরজা খুলে ঘরে ঢুকে গেল। ও ঢুকতেই আমি ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে ছিটকিনি তুলে দিলাম। তোর সাহস দিন কে দিন বেড়েই চলেছে। আজ বাড়ি ভর্তি লোক। তার মধ্যে তুই এখন এইভাবে খালি গায় শুধু কোমরে একটা তোয়ালে জড়িয়ে দোতলায় উঠে এলি, কেউ যদি তোকে এই অবস্থায় উপরে আসতে দেখত কি হত ভাবতে পারছিস? তারা কি ভাবত ভাবতে পারছিস? এই তলায় আমি ছাড়া আর কেউ নেই। তুই আসছিস মানে আমার ঘরেই আসছিস। আর এইভাবে দেখলে সবাই সব কিছু বুঝে যেত। ওকে দেখলাম সেই হাঁসি হাঁসি মুখ নিয়েই চেয়ারটার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিরে যা বলছি মাথায় ঢুকছে? পরের বার এলে ভালো ভাবে ড্রেস পরে আসবি। বুঝলি? যাতে ধরা পড়লেও একথা সেকথা বলে কিছু একটা অজুহাত দিতে পারি। সন্দীপ আর রাজা বুঝুক ক্ষতি নেই। কিন্তু শ্যামদা আর ওই বাচ্চা মেয়েটা বুঝলে আর লজ্জার সীমা থাকবে না। একটু সাবধান থাকতে বলছি। নিজেও ডুববি আর তার সাথে আমাকেও নিয়ে ডুববি। আর সারাক্ষণ এই দাঁত কেলানো বন্ধ কর। ওর মুখ থেকে হাঁসি গেল না এত ধমকের পরও। বলল ঠিক আছে সোনা, তাই হবে। এখন আর বকা ঝকা করিস না। সারাদিন পর তোকে একটু নিজের করে পেতে এসেছি আর তুই ধমকেই চলেছিস। আসলে গরম লাগছিল তাই এইভাবেই চলে এলাম। ও কথা বলতে বলতে আমার মশারির এক দিকটা তুলে সেখানে বসতে যাচ্ছিল কিন্তু কি একটা দেখে থেমে গেল। ও এক লাফে উঠে টেবিলটার কাছে চলে গেল। আমার পরিত্যক্ত কচি কলাপাতা রঙের ব্রা আর সাদা প্যানটি টা হাতে নিয়ে বলল আজকে এইগুলো পরেই গিয়েছিলিস না?” প্যানটিটা হাতে নিয়ে এদিক ওদিক নাড়িয়ে বলল এটার ব্যাপারে নিশ্চিত নই, কিন্তু এইটা বাঁহাতে আমার কচি কলাপাতা রঙের পাতলা ব্রাটাকে সুদর্শন চক্রের মতন ঘোরাতে ঘোরাতে বলল এইটার ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।মুখে একটা অশ্লীল হাঁসি এনে বলল তোর ঘাড়ের কাছে অনেক বার তোর কামিজের নিচ থেকে বেড়িয়ে পড়ছিল। আমার দোষ নেই, শুধু আমি নই সবাই দেখেছে। আর তাছাড়া ...এর বেডে যখন ঝুঁকে দেখছিলিস, তখন, উফফ, কি আর বলব মাইরি, তোর কামিজটার গলার ফাঁক দিয়ে না, মানে, সবাই তোর এই ব্রায়ে ঢাকা কচি বুক গুলো দেখেছে। ওর (মানে রোগীর) বর ও দেখেছে, আমিও দেখেছি। জানিস তো, “ একটু হেঁসে বলল এই আমার একটা অনেক দিনের প্রশ্ন, আমাকে বলবি? “ বললাম তুই কি এখানে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এসেছিস? বিদায় হ তাহলে।” “উফফ সোনা, মেয়েদের সমস্ত ব্যাপারটাই আমার কাছে প্রশ্ন। আর তোর শরীরটাতো আমার কাছে প্রশ্নমালা। বলনা, তখন তুই কি বুঝতে পারছিলিস যে তোর গলা দিয়ে তোর পুরো বুক দেখা যাচ্ছে। অবশ্য তোর বুক খুব বড় হলে অর্ধেকের বেশী দেখা যেত কিনা বলা শক্ত। কিন্তু তোর টা কিন্তু পুরোটাই দেখা যাচ্ছিল, প্রায় নাভি অব্দি। তুই নাভির নিচে শালোয়ার পরিস। কি ঠিক বলি নি? “ আমি কিছু জবাব দিচ্ছি না দেখে ও বলল শোন না, চটিস না প্লীজ, বল না যেটা জিজ্ঞেস করলাম। বললাম তখন এইসব ভাবার বা বোঝার সময় ছিল? আর শোন যদি জেনে বুঝে শরীর দেখাতেই হয় তার জন্য অনেক জায়গা আছে সেজে গুঁজে যাবার, হাঁসপাতাল নয়। “ “বেশ মেনে নিলাম। অর্থাৎ মাঝে মাঝে তুই জেনে বুঝে শরীর দেখাস বা দেখাতে চাস বল?” একটা চোখ মেরে আমাকে কথাটা বলল। এর কোনও উত্তর নেই। 
[+] 1 user Likes pcirma's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981 - by pcirma - 18-10-2019, 01:32 PM



Users browsing this thread: