18-10-2019, 01:31 PM
পরের পর্ব
পিছনে ওর গলা থেকে পশুর মতন হাসফাস করা শব্দ আসছে, শালা সত্যি ভালো সুখ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু কি করে না থেমে বা খুব অল্প থেমে এতক্ষণ ধরে করে চলেছে সেটা আমার কাছে একটা প্রশ্ন। পরে অবশ্য সেই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছিলাম, এখান থেকে চলে যাওয়ার আগে। তবে আজ পাইনি, আজ মনে হচ্ছিল অরুণ হল একজন কামদেব, এর থেকে বেশীক্ষণ নিজেকে কেউ ধরে রাখতেই পারবে না। একটা হাঁপ আর কামে ভরা জড়ানো গলায় অরুণ আমাকে বলল “ আমার হয়ে এসেছে মাগী, আর একটু ধৈর্য ধর। মাগীরে তোর এই নরম শরীরটাতে যে কি আছে তুই জানিস না। এত নরম, এমন গন্ধ সব মাগীর থাকে না। উঠছে মাগী। শালা পারছিনা। আর কয়েকটা ঠাপ। শক্ত হয়ে থাক। “ আমি বললাম “ভেতরে ফেলিস না। “ এখন আর ওর মুখে মাগী সম্বোধন শুনে খারাপ লাগার মানে হয় না। কারণ আমি তো বরাবরই একটা নোংরা মেয়ে, একটা মাগী হতে চাইতাম যাকে সব ছেলে কামনা করবে মনে মনে। আর আমি ওদের সুখ দেব আর ওদের নতুন নতুন শরীরের ছোঁয়া পেয়ে সুখের সাগরে ভাসব। বা হাতটা ও আমার থাইয়ের ভেতর থেকে সরিয়ে নিয়ে আমার ঝুঁকে থাকা নগ্ন ঘাড়টাকে শক্ত করে নিচের দিকে চেপে ধরল, আমার মুখটা যেন নোংরা পাঁচিলের ওপর ঘষে যাবে, কেটে রক্ত বেড়িয়ে যাবে, কিন্তু কোনও ভাবে মুখটাকে পাঁচিলের কর্কশ গা থেকে আলাদা করে রাখলাম। মনে হল স্তন বিভাজিকার ঠিক শুরুর একটু নিচের জায়গাটা বাম স্তন সমেত যেন পাঁচিলের ওপরে পিষে গেছে, জ্বালা করছিল। ডান স্তনটা একই ভাবে ওর হাতের মুঠোর ভেতরে ছোট দলা পাকিয়ে থেকে গেছে, এখনও ওর যন্ত্রণাভরা পেষণ সহ্য করছে। “নে মাগী ঘোর, বস।“ আমার ভেতর থেকে হঠাত ও নিজের ভিজে চকচক করা লিঙ্গটাকে বের করে নিয়েছে। আমি আস্তে আস্তে ঘুরছি দেখে ও বা হাত দিয়ে আমার বা পাছার ওপর একটা বেশ জোড়ে সশব্দ থাপ্পড় বসিয়ে দিল। ডান হাত দিয়ে আমার কোমরটা ধরে জোড় করে আমাকে ওর দিকে ঘুরিয়ে রীতিমত ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে নিচে বসিয়ে দিয়েছে। এটা আমি জানি। অদিতি আর শম্পার কাছে শুনেছি অনেক ছেলে নাকি সহবাসের পর মেয়েদের মুখের ওপর বা সাড়া গায়ে, বা স্তনের উপর বা অনেক সময় মুখের ভেতরে নিজেদের বীর্য ঢালা পছন্দ করে এবং তাতেই তারা তৃপ্তি পায়। অনেক মেয়ে নাকি সেই বীর্য মুখে নিয়ে খেয়েও থাকে। আমার ভীষণ কৌতূহল ছিল ব্যাপারটা উপভোগ করার ব্যাপারে। বুঝলাম আজ সেই সময় এসে গেছে। ও নিজের ভীষণ শক্ত হয়ে ফুলে ওঠা ভেজা লিঙ্গটাকে আমার ঠিক নাকের থেকে তিন থেকে চার সেন্টিমিটার দূরে রেখে নিজের হাতের মুঠোয় সেটাকে বন্দি করে হস্ত মৈথুন করে চলেছে। যখন নতুন অভিজ্ঞতা হবেই তখন ভালো করেই হোক। আমি ওর লিঙ্গের ওপর চেপে ধরা ডান হাতটার ওপর আমার ডান হাতের নরম আঙুলগুলো মুড়ে ধরলাম। ও নিজের হাত সরিয়ে নিতেই আমি নিজের আঙুলের মধ্যে ওর লিঙ্গটাকে নিয়ে ওর মতন একই রকম স্পীডে ঝাঁকাতে লাগলাম। আস্তে আস্তে মুখটা ওর কাঁপতে থাকা লিঙ্গের মুখের কাছে নিয়ে এসে ওর লিঙ্গটাকে নিজের মুখে নিয়ে নিলাম। এইবার হাতটা স্থির হল, কিন্তু একই বেগে আমার মুখটা ওর লিঙ্গটা দিয়ে নিজের ভেতরটা মন্থন করতে লাগল। ও আঃ আঃ করে চাপা গর্জন করছে। আমার ঠোঁট গুলো কে গোল করে ওর ফোলা লিঙ্গটার ওপরে যেন চেপে ধরে মাথাতাকে আগু পিছু করছি। ওর যৌনাঙ্গ থেকে আমার যোনীপথ থেকে নিঃসৃত করা রসের ভীষণ একটা নোংরা বোটকা আর ময়লা গন্ধ আসছে, ওর নিজের ঘাম আর কুঁচকির যৌন গন্ধ তো আছেই যেটা এইসময়ে তীব্র হয়ে ওঠে, কিন্তু আমার এতে কিছুই মনে হচ্ছে না। ও হঠাত আমার মাথাটাকে শক্ত করে নিজের ঊরুসন্ধির উপর পিষে চেপে ধরল, ওর কুঁচকির আর লিঙ্গের গন্ধে বা আমার যোনীরসের ভীষণ নোংরা স্বাদেও আমার কিছু এসে যাচ্ছিল না, কিন্তু এইবার আমার নাক মুখ সব যেন যৌনকেশের মধ্যে মধ্যে চেপে যাওয়ায় দম বন্ধ হওয়ার জোগাড়।ওর লিঙ্গের শেষপ্রান্তটা প্রায় আমার গলার কাছে, বুঝলাম মুখের ভেতরে ওর লিঙ্গটা কেঁপে কেঁপে উঠছে। অনেকবার মাথা নাড়িয়ে ওর পাছায় খামছে, ওর কুঁচকিতে ধাক্কা মেরে ওকে আমার থেকে আলাদা করে দম নিতে চাইলাম, কিন্তু পারলাম না। ও আমার মাথা ছাড়ল না। ওর বীর্যকে আমার ঘেন্না করে না, কিন্তু আমি ওর যৌনকেশের মধ্যে ফেঁসে দম নিতে পারছিলাম না। গলার ঠিক আগে অনুভব করলাম ওর লিঙ্গের মুখ থেকে একটা যেন স্বাদহীন গরম তরল ছিটকে ছিটকে আমার গলার মুখে গিয়ে পড়ছে, আমি কি সেটাকে গিলতে চাই কি চাই না সেটা এখন অবান্তর প্রশ্ন কারণ আমি দম বন্ধ হওয়ায় ঢোঁক গেলার চেষ্টা করছিলাম, ওর লিঙ্গ থেকে বেরনো বীর্যের খানিকটা আমার গলা দিয়ে আমি নিজেই ঢোঁক গিলে নিয়েছি তাতে সন্দেহ নেই। এর পরেও আমি বীর্য মুখে নিয়েছি, কিন্তু এক্ষেত্রে যেন বাধ্য হয়েই দম বন্ধ হয়ে শারীরিক প্রতিক্রিয়ার শিকার হয়েই অরুণের বীর্য আমাকে গিলতে হল। আমার মাথার ওপর ওর হাতটা আলগা হয়ে গেল। কিন্তু আমি আমার মাথার ভার যেন ওর কুঁচকির উপর ফেলে দিয়েছি, আমার মুখের ভিতরে এখনও বার বার কেঁপে কেঁপে উঠছে আর সামান্য হলেও তার মুখ থেকে বিস্বাদ তরলের ফোঁটা ফোঁটা বেড়িয়ে আমার জিভের উপর পড়ছে। আমার নিঃশ্বাস স্বাভাবিক হতেই আমি ওর পায়ের সামনে থেকে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের মুখে একটা হাত চেপে ছাদের দরজার দিকে স্থান কাল পাত্র ভুলে রুদ্ধশ্বাসে দৌড় লাগালাম। দরজা ঘুলে ভেতরে ঢুকে সোজা নিচে। আমি যে পুরো নগ্ন হয়ে বাড়ির মধ্যে দৌড়ে বেড়াচ্ছি, শ্যামদা উপরে এলে আমাকে এই অবস্থায় দেখে ফেলবে কিছুই মাথায় এল না। ছাদ থেকে আসার সময় যে আমার পরনের কাপড় আর অন্তর্বাসগুলো নিয়ে আসতে হত সেটাও মাথায় নেই। আমি ছাদ থেকে নিচে নেমে সোজা বাথরুমে চলে গেলাম। বাথরুমের দরজা বন্ধ করার কোনও প্রয়োজন বোধ করলাম না। ট্যাপের নিচে হাঁটু গেঁড়ে বসে কল খুলে দিলাম।বারবার জল মুখে নিয়ে কুলকুচি করে, গার্গেল করে মুখের ভেতরটা পরিষ্কার করার চেষ্টা চালালাম। যখন বুঝলাম ওই বিস্বাদ জিনিসটার গন্ধ, শুধু ওর বীর্য কেন, আমার যোনীপথের বোটকা গন্ধ, ওর ঊরুসন্ধির গন্ধ আজ আর আমার মুখ থেকে যাবে না তখন হাল ছেড়ে দিলাম। হাঁটু মুড়ে ঝুঁকে কলের প্রবাহমান জলের ধারার নিচে নিজের মাথাটা রাখলাম। এতক্ষণে যেন একটু আরাম পেলাম। সমস্ত মাথা ভিজে গেল। আমি সাধারণত সন্ধ্যার পর মাথায় জল দেই না। কিন্তু আজ কিছুই মাথায় এল না। মাথা ঠাণ্ডা হওয়ার পর কল বন্ধ করে উঠে আস্তে আস্তে নিজের ঘরের দিকে ফিরে চললাম। সারা ঊর্ধ্বাঙ্গে ঠাণ্ডা ভেজা ভেজা ভাবটা থেকে বুঝতে পারছিলাম যে আমার অবিন্যস্ত ভেজা চুল থেকে গড়িয়ে পড়া জল আমার সারা ঊর্ধ্বাঙ্গ ভিজিয়ে দিচ্ছে ফোঁটা ফোঁটা হয়ে পড়ে। ভালো লাগছে এতক্ষণে। কেমন যেন আমার প্রাণটা ফিরে আসছে। ঘরের সামনে গিয়ে দেখলাম দরজা আবজে বন্ধ, দরজার ফাঁক থেকে ভিতরের হলুদ আলোটা বাইরে বেড়িয়ে আসছে।
পরের পর্ব
একটু যেন সংকোচ ভরা মন আর সতর্ক চাহুনি নিয়ে দরজা ঠেলে আমার ঘরে ঢুকলাম। নিজের ঘরে ঢুকতে এই প্রথম এত ভয় পাচ্ছি। চেয়ারে অরুণ বসে রয়েছে গেঞ্জি আর শর্টসটা পরে। আমি এই হলদেটে আলোয় পুরো নগ্ন হয়ে ভেজা অবস্থায় ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ও উঠে আমার হাত ধরে আমাকে এনে বিছানায় বসিয়ে দিল। গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিল। আমার মনে আছে আমাকে ও ছুঁতে আসছিল, আমার নগ্ন কাঁধ গুলোকে বোধহয়, ওর চোখে তখন একটা স্নেহভরা সান্তনা মাখা চাহুনি। আমি যেন ছিটকে ওর থেকে দূরে সরে গেলাম। নিজের নগ্নতা ওর নজর থেকে ঢাকার থেকেও বেশী প্রয়োজন মনে হচ্ছিল ওর ছোঁয়া থেকে দূরে থাকা। আমি ওর থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলাম। এরকম অভিজ্ঞতা আমার পরেও হয়েছে। কিন্তু প্রথম অভিজ্ঞতা সব থেকে বেশী মনে দাগ কাটে। আমি উগ্র আনন্দ চাইছিলাম, কিন্তু মানসিক ভাবে তৈরি ছিলাম না। এখন এই আক্ষেপ। আমি সরতে সরতে এসে খাট থেকে পড়েই যেতাম, ও আমাকে শক্ত করে নিজের দিকে টেনে নিল। আমি কিছু না ভেবে ওর বুকে বুক লুকিয়ে চাপা কান্না বের করে দিলাম। কতক্ষণ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছিলাম জানিনা। ওর হাত সারাক্ষণ আমার ভেজা চুল, কাঁধ আর মাথার উপর দিয়ে সান্তনার মতন ঘুরে বেড়াচ্ছিল। অনেকক্ষণ পর ঠাণ্ডা হলে ওর নরম চুম্বন অনুভব করলাম আমার কপালে। কামনার গন্ধ নেই সেই চুমুতে। দু চোখের পাতায় আলতো করে চুমু এঁকে দিল। ও বলল “অনেক রাত হয়েছে আমার এখন চলে যাওয়ার কথা, কিন্তু যতক্ষণ না তুই ঘুমাস আমি এই চেয়ারে বসে থাকব। তুই ড্রেস পরে ঘুমিয়ে পড়। আমার হাতটা যেন ওর দিকে আপনা হতেই এগিয়ে গেল, “একটু আমাকে জড়িয়ে ধরে শুবি?” ওর উত্তরের অপেক্ষা না করে সেই নগ্ন ভেজা শরীরটা নিয়েই আমি চাদরের তলায় ঢুকে উল্টো দিকে মুখ করে শুয়ে পড়লাম। চোখ বুজে গেল আপনা থেকে। বুঝলাম লাইটটা নিভে গেছে। সামান্য পরে বুঝলাম আমার সাথে আঁটসাঁট হয়ে অরুণ আমাকে পিছন দিক থেকে আমার নগ্ন শরীরটাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। কপালে আস্তে আস্তে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। একটু পরে ও আমাকে বলল “তোকে কি আজ আমি কোনও কিছুতে জোড় করেছি? করে থাকলে সরি, কিন্তু তুই তো না বলতে পারতিস। আমি সত্যি সরি। ” আমি সত্যি কথাটা ওর সামনে শিকার করলাম অবশেষে, “ আমার ছেলেদের সাথে মিশতে, নতুন অভিজ্ঞতা করতে, নতুন শরীরের নতুন স্বাদ পেতে ভালো লাগে। পাইনা, আর তাই বার বার চাই, কল্পনার জগতে নিজেকে এক দেহ ব্যাভিচারিনির মতন দেখতে ভালো লাগে যার পায়ের তলায় সব পুরুষ সমাজ, কিন্তু মনের দিক থেকে তার একাংশ উপভোগ করার জন্যও এখনও তৈরি নই।“ ও আমার নগ্ন শরীরটাকে নিজের বুকের সাথে একদম পিষে আঁকড়ে ধরেছিল। কিছুক্ষণ নিরবতার পর আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম “আজ অনেকক্ষণ করেছিলিস না?” বলল “আধ ঘণ্টার উপর।“ এইবার আমি ওর দিকে ফিরে ওকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। “কাল চুপি চুপি আসবি? এখানেই দুজন দুজনকে নেব?” ও বলল “আবার আজকের মতন ভেঙে পড়বি না তো? কথা দিচ্ছিস? ” বললাম “কালও তুই আজকের মতনই করতে পারবি তো?” বলল “সেটা দেখতেই পাবি।“ বললাম “প্রেমে পড়ে যাস না। “ বলল “পাগল। তবে তোর সাথে মজা করব। স্নেহটাকে প্রেম ভেবে ভুল ও করিস না। একটা কথা বলবি? “ বললাম “কি?” আমি তখন অনেক সংযত। ও বলল “আমি তোর প্রশ্নটাই তোকে করছি। হঠাত আমাকে একা একা এত প্রশ্রয় দিলি? আজ তো মদ খেয়েও নেই।“ বললাম “আগেই তো বললাম। “ ও বলল “না সেটা বলতে চাইছি না। রাজা বা সন্দীপকে তোর মনে ধরেনি? “ বললাম “কে বলেছে ওদের কে আমি পছন্দ করিনা? কিন্তু এইবার তুই কি বলবি আমাকে ওদের সাথেও শুতে হবে?” বলল “উফফ সেটা কি বলছি সোনা?” ঠাণ্ডা ভাবে বললাম “আমি শোব ওদের সাথে। ওরা না চাইলেও আমাকে একবার অন্তত শুতে হবে ওদের সাথে। অন্তত সন্দীপের সাথে আমাকে একবার হলেও করতে হবে। ওই সবার আগে আমাকে মনের কথা বলতে এসেছিল। আর সেটা যদি না করি সেটা বিশ্বাসঘাতকতা হবে। আর আমি তো বললামই আমার নতুন স্বাদ পেতে ভালো লাগে। কিন্তু কাল তুইই আসিস। আর আজকের ব্যাপারটা চেপে রাখিস প্লীজ। কোনও দিন ভুল করে মদের ঠেকেও তুলিস না। “ ও বলল “তুই এখন অনেকটা স্বাভাবিক, ঘুমিয়ে পড়। আমি আসছি। আর হ্যাঁ জামাকাপড় পরে দরজা বন্ধ করে ঘুমা। “ আমি ওর সামনেই আলো জ্বালিয়ে টপ আর লেগিন্সটা পরে নিলাম। ছেলের সাহস বেড়ে গেছে। “কিরে ব্রা বা ওইটা পরবি না? মানে প্যানটি।“ বললাম “ঘুমনোর সময় পরি না। “ ও দরজা খুলে চলে যাচ্ছিল, আমি ওকে বললাম “ তুই এতক্ষণ করলি কি করে? ভালো দম আর কন্ট্রোল আছে তো তোর।” ও হেঁসে বলল “সিক্রেট সোনা। পরে কোনও একসময় বলব। তবে তার জন্য তোকেও আমাকে খুশি করতে হবে। আর নিশ্চই বুঝতে পেরেছিস আমি খুবই অসভ্য।“ ওর ঠোঁটটা হালকা করে আমার ঠোঁটটাকে ছুঁয়ে গেল। আমি ওর বুকে একটা কিল মেরে বললাম “দূর হ অসভ্য। তোর কথা মতন তোকে খুশি করতে হবে তবে তুই নিজের সিক্রেট বলবি। শুয়োর একটা। “ ও বেরতে বেরতে বলল “ আরে খুশি করা মানে সবসময় আমার সাথে শোয়া নয়, অন্য কাজ, মানে দুঃসাহসিক কাজও তো করতে বলতে পারি! শুয়ে পড়। গুড নাইট। তুই খুবই মিষ্টি সোনা। “ আরেকবার আলতো করে নিজের ঠোঁট জোড়া আমার ঠোঁটের উপর চেপে চলে গেল। আমি লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম।
কখন ঘুম ভাঙল জানিনা। কিন্তু চোখ খুলে দেখলাম বাইরেটা অন্ধকার। আমার দরজায় কেউ বা কারা দুমদুম করে শব্দ করছে। আমি ভালো করে চোখ কচলে উঠে দেখলাম না বাইরেটা সত্যি অন্ধকার। মনের সেই ক্লেদ আর নেই। বাইরে থেকে একটা সোঁদা গন্ধ আসছে। এখানে আমরা মশারি টাঙ্গিয়েই রাখি। বেরনর সময় তুলে দিয়ে চলে যাই। শোয়ার সময় নামিয়ে নি। এটা বলতে ভুলে গেছিলাম। বাইরে থেকে আসা সোঁদা মাটির গন্ধে বুঝছিলাম আজও বৃষ্টি হয়ে গেছে। কিন্তু কটা বাজে। টেবিল থেকে হাত ঘড়িটা নিয়ে লাইট জ্বালিয়ে দেখলাম ৩.৪৭ বাজে। কে রে বাবা। বাইরে থেকে রাজার গলা পাওয়া গেল। আমি চোখ ডলতে ডলতে দরজা খুললাম। এখন আর ওদের সামনে রাখা ঢাকা করিনা। অন্তর্বাস পরে নেই বুঝলে বুঝুক, হঠাত ঘুম থেকে উঠে চলে আসায় শরীরের কিছু বেশী অংশ ওরা দেখতে পেলে দেখুক। ওদেরও তেমন মাথা ব্যথা থাকার কথা নয়, আমারও নয়। দেখলাম রাজা আর সন্দীপ আর অরুণ তিনজনেই দাঁড়িয়ে আছে। বললাম “কি রে কি হয়েছে?” একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম সবাই রেডি। ঘুম জড়ানো গলায় জিজ্ঞেস করলাম “ এত রাতে কি হয়েছে? শ্যামদার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তুই আয়। “ আমি তো পুরো থ মেরে গেছি। শ্যামদার মেয়ে কোথা থেকে উদয় এল এই রাত দুপুরে। কি মুশকিল? আমি কোনও মতে ওই আলুথালু অবস্থাতেই ছুঁতে বাথরুমে গিয়ে ব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে ফিরে এসে গায়ে কিছু একটা চাপিয়ে নিলাম। রেডি হয়ে নিচে নেমে এসে দেখি ওরা সবাই রেডি হয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। শ্যামদাকে দেখলাম না। “শ্যামদা কোথায়” জিজ্ঞেস করতে যাব, এমন সময় দেখি আমাদের বাড়িটার সামনে মরচে ধরা ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করতে করতে চার টে রিক্সা এসে দাঁড়াল। একটা রিক্সা থেকে শ্যামদাকে নামতে দেখে বুঝলাম শ্যামদা রিক্সা ডাকতে গেছিল। রিক্সাওয়ালাদের বাড়িগুলো কাছেই। এখন যেহেতু ওরা বাড়িতেই থাকে তাই এই সময় ওদের ডেকে আনা খুব সহজ। কিন্তু একবার ওরা কাজে বেড়িয়ে গেলে তখন আর এই চত্বরে একটাও রিক্সা পাওয়া দুষ্কর। রিক্সার শব্দ শুনে আমাদের খাবার জায়গা থেকে আরেকটা অচেনা মুখ বেড়িয়ে এল। পরে শুনেছিলাম এই ভদ্রলোক নাকি একে তাকে ধরে এই রাত্রে এসেছিল শ্যামদার মেয়ের খবরটা দিতে। ও আমাদের সাথেই ফিরবে। আমি আর রাজা একটা রিক্সায় উঠে বসলাম। সন্দীপ আর অরুণ আরেকটা রিক্সায় চড়ে বসল। শ্যামদা একা একটা রিক্সায় বসলেন আর ওই ভদ্রলোক আরেকটা রিক্সায় চেপে বসলেন। রিক্সা রওয়ানা দিয়ে দিল। রাজা কে কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতে রাজা বলল “ শ্যামদার মেয়ে বিষ খেয়েছে। খুব শোচনীয় অবস্থা। জানিনা গিয়ে কি দেখব।“ আমি কেমন জানি হকচকিয়ে গেলাম। যদিও এরকম ঘটনা গ্রামে হয়ে থাকে সেরকম আগেও শুনেছি। শুধু গ্রাম কেন শহরেও হয়ে থাকে। জিজ্ঞেস করলাম “হঠাত কি এমন হল যে সোজা সুইসাইড করার চেষ্টা?” রাজা বলল “ কেউ জানে না। শ্যামদাও জানে না। ওই লোকটাও জানে না। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম লোকটাকে, ও বলল মেয়ে বেহুঁশ, আর তাছাড়া এইসব জিজ্ঞেস করার কোনও সময় সে পায়নি। তাকে ডেকেই তড়িঘড়ি শ্যামদাকে ডাকতে পাঠিয়ে দিয়েছে। “ মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। আমার শ্যামদাকে খুব ভালো লাগত, খুব সহজ সরল একটা মানুষ, সারা দিন মুখ বন্ধ করে আমাদের ফাই ফরমায়েশ খেটে চলেছে সামান্য কয়েকটা টাকার জন্য। বেরনর সময় শ্যামদার মুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম যে শ্যামদা নিজে প্রচণ্ড রকম ভেঙে পড়েছেন। আপাতত আমরা ধেয়ে চলেছি শ্যামদার ছোট শালার বাড়ির উদ্দেশ্যে। এটা অবশ্য আমাদের জানা খবর যে ওনার মেয়ে ওনার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে ওনার ছোট শালার বাড়িতে থাকে। ওদের নিজেদের ছেলেপুলে নেই, তাই খুব যত্ন করে ওরা ওনার মেয়েকে। রিক্সা বেশ স্পীডেই যাওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু রাস্তা ভালো নয়, তাই গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে বেশ ভালোই সময় লাগলো। রাজাকে পথে জিজ্ঞেস করেছিলাম “তোরা এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলি যে?” ও বলল “তেমন কিছু না। আরেকজন ডাক্তার ছিলেন। লোকটা ভালো আছে দেখে আমাদের দুজনকে চলে যেতে বললেন। আমরাও কেটে পড়লাম।“ বললাম “হুম।“
রাজা বলল “তারপর এখানে ফিরে দেখি শ্যামদা অসহায়ের মতন দৌড়াদৌড়ী করছেন। অরুণ ততক্ষণে উঠে গেছে। শ্যামদাই ওকে ডেকে তুলেছেন। দেখলাম অরুণও হন্তদন্ত ভাবে ড্রেস পরে রেডি হচ্ছে। তারপর তো শুনলাম এই ব্যাপার ঘটে গেছে। “ শ্যামদার ছোট শালার বাড়ি পৌঁছে দেখলাম বাড়ির বাইরে রীতিমত লোকের ভিড় জমে গেছে। আমরা তড়িঘড়ি রিক্সা থেকে নেমে দৌড়ে ভেতরে ঢুকে গেলাম। একজন বয়স্ক মতন লোককে দেখলাম, উনি বসে মৃতপ্রায় মেয়েটার পালস ধরে দেখছে। উনি এই গ্রামের বদ্যি। আমরা মেয়েটাকে সামান্য পরীক্ষা করেই বুঝলাম ভীষণ বাজে অবস্থা, যখন তখন যা কিছু হয়ে যেতে পারে। এখানে অ্যাম্বুলেন্সের কোনও গল্প নেই। এই অবস্থায় নিয়ে যাব কি করে? রাজা দেখলাম শ্যামদার সাথে কথা বলছে। আমি মেয়েটাকে ভালো করে দেখলাম। বয়স ১৬ কি ১৭। ছিপছিপে শরীর, গায়ের রঙ চাপা, দেখতে কেমন বলতে পারব না কারণ এখন মেয়েটার মুখ ব্যথায় কুঁকড়ে আছে। আমরা আর দেরী না করে ওকে এই মুহূর্তে রিক্সায় তুলতে বললাম। দেখে বুঝলাম বাইরে ডাক্তারদের দাদাগিরি দেখে বদ্যি বাবু বেশ মনক্ষুণ্ণ হয়েছেন। তাতে আমাদের ভারি বয়ে গেল। আমাদের একটা দুশ্চিন্তা হচ্ছিল যে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাস্তায় কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। আমাদের এখন অবশ্য কিছুই করার নেই। আর এই রাস্তা বড্ড খারাপ আর লম্বা, হাসপাতাল পৌঁছাতে সময় লাগবে তাতে সন্দেহ নেই। তবে এই জিনিস বদ্যির বিদ্যার বাইরে তাতে আমাদের সন্দেহ নেই, তাই আমরা সেই লোকটাকে কোনও রকম পাত্তা দেই নি। তবে বেরনর আগে সবাইকে বলে দিয়েছিলাম যে মন শক্ত করে রাখতে। শ্যামদার শালার বউকে দেখে মনে হচ্ছিল উনি যেন নিজেকে ধরে রাখতে পারছেন না। যেকোনো মুহূর্তে বেহুঁশ হয়ে যাবেন। আমি মেয়েটাকে নিয়ে একটা রিক্সায় রওয়ানা দিয়ে দিলাম। বাকিরা জোড়ায় জোড়ায় অন্য রিক্সা গুলোতে যাত্রা শুরু করল। গোটা রাস্তা আমি মেয়েটাকে শক্ত করে ধরে বসেছিলাম যাতে ঝাঁকুনিতে পড়ে না যায়। বার বার দেখতে হচ্ছিল আছে না আর নেই। তবে ভগবান সেদিন আমাদের সহায় ছিলেন। মেয়েটা হাঁসপাতাল অব্দি বেঁচে গেল। তাড়াতাড়ি এমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানে একজন অন ডিউটি ডাক্তার ছিলেন। তার হাতে আমরা শ্যামদার মেয়েটিকে হস্তান্তরিত করে দিলাম। আমরাও অবশ্য তখন রয়ে গেলাম। কিন্তু একটা হেস্ত নেস্ত না হওয়া পর্যন্ত ফেরার কোনও মানে হয় না। ওয়াশ করা হল। অবস্থা তবুও ভালো হল না। প্রায় আধঘণ্টা খানেক পর আমরা বুঝলাম এই যাত্রা বেঁচে গেছে মেয়েটা। এতক্ষণ আমাদের ভাববার কোনও সময় ছিল না কেন এমন করল এই মেয়েটা। মেয়েটা একটু ধাতস্থ হয়ে দেখে আমরা হাঁসপাতাল থেকে ফিরে এসে আবার ফ্রেশ হয়ে একই রিক্সা ধরে হাঁসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলাম। জলখাবার বানানোর লোক আজ নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারে ব্যস্ত। তাই কিছু করার নেই, ঠিক হল সময় পেলে হাঁসপাতালেই কিছু একটা খেয়ে নেওয়া যাবে কারণ লাঞ্চ করতে এখনও অনেক দেরী। গিয়ে দেখলাম শ্যামদা আগের মতনই ভীষণ উৎকণ্ঠা নিয়ে ঠায় বসে আছেন। ওনার ছোট শালা ওনাকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পরে একসময় রাজা আমাদের বলল যে রাজা নাকি শ্যামদাকে জিজ্ঞেস করেছিল যে কেন ওনার মেয়ে এমন করল, কিন্তু উনি বলতে পারলেন না। মেয়ের সেন্স পুরোপুরি আসেনি। সেন্স আশা না পর্যন্ত কিছুই জানা সম্ভব নয়। দুপুরের দিকে শুনলাম ওর সেন্স ফিরে এসেছে। বিকালে আমাদের স্যার শ্যামদাকে ডেকে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যেতে বললেন। মেয়ে এইবার প্রথমবার মুখ খুলল। তার বক্তব্যর সারমর্ম করলে এই দাঁড়ায়। সে আর মামার সাথে যাবে না। মেয়ে তার বাবার সাথেই থাকতে চায়। ওর মামা নাকি ওকে ওর অমতে জোড় করে বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছিল। মেয়েটা একটা ছেলেকে ভালোবাসে। অনেকদিনের সম্পর্ক। ছেলেটাকে না পেলে ও গলায় দড়ি দেবে। মামা মেয়েটার কোনও কথাই শুনতে রাজি নয়। ছেলেটা একটা ছোট কাজ পেয়েছে শহরে। এখন সে গ্রামে নেই। আর এই সুযোগে ওর মামা ওর অন্য এক জায়গায় বিয়ে দিতে চাইছে। এরকম অবশ্য গ্রামে হামেশাই হয়ে থাকে। কিন্তু যেটা সবথেকে আশ্চর্য লাগল সেটা হল এই যে শ্যামদা নিজের মেয়ের এই বিয়ের ব্যাপারটা জানতেনই না। শ্যামদা বিয়ে কথাটা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লেন। ওনার মেয়ের বক্তব্য ওকে নাকি ওর মামা আর মামি বুঝিয়েছে শ্যামদা এই বিয়ের ব্যাপারে জানেন। শ্যামদা পাত্রকেও দেখেছেন। পাত্র শ্যামদার পছন্দ হয়েছে। বিশেষ কাজে শ্যামদাকে এখন অনেক দিন শহরে থাকতে হবে তাই বিয়েতে থাকতে পারবেন না। কিন্তু ওনারও ইচ্ছা যেন বিয়েটা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায় কারণ এরকম পাত্র নাকি আর পাওয়া যাবে না। শ্যামদার অবর্তমানে শ্যামদার ইচ্ছা অনুযায়ী ওর মামাই ওর কন্যাদান করবে। ওরা যখন বিয়ের পর শহরে চলে আসবে তখন শ্যামদা ওদের সাথে দেখা করে আশীর্বাদ দিয়ে আসবেন। সত্যি সন্দেহের ব্যাপার, কারণ শ্যামদা এসবের কিছুই জানেন না।
ওর মামাকে জিজ্ঞেস করাতে উনি ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেন। আমরা বললাম পুলিশ ডাকতে তারাই যা করার করবে। পুলিশ ডাকার দরকার পড়েনি। কারণ আত্মহত্যার ব্যাপার বলে হাঁসপাতালের তরফ থেকেই পুলিশ ডাকা হয়েছিল। একটা ছোট পুলিশ চৌকি আছে। ওরা মেয়েটার সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিল। ওরা মেয়েটার বয়ান নিল। শ্যামদার ছোট শালারও বয়ান নিল। ওনাকেও দেখে মনে হচ্ছে উনি ভীষণ ভেঙে পড়েছে। একবার ব্যাপার আমাদের মনে হচ্ছিল। মেয়েটা যেকোনও কারনেই হোক আত্মহত্যা করার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু তাতে ও হঠাত করে মামাকে ঘিরে এরকম একটা গল্প কেন বলল। এরকম একটা অবিশ্বাস্য কারণে নিজের মামার নাম জড়াতে যাবেই বা কেন। রাজাও আমাদের বলল “খুবই আশ্চর্য। সুইসাইড করতে গেলে যাক, কিন্তু যে মামার সাথে এতদিন ছিল, তার নামে এরকম একটা গাঁজাখুরি গল্প বানাবে। আর তেমন বাচ্চা মেয়ে তো মনে হল না। ও কি বুঝছে না আমরা কেউ ওর কথা বিশ্বাস করব না। অথচ ও ভীষণ প্রত্যয়ের সাথে এই মামার নামে দোষারোপ করছে। আর ওর মুখ দেখে স্পষ্ট যে ও কিছুতেই ওর মামার সাথে যাবে না। কোনও কারণে ভয় পেয়ে আছে। “ ওর মামা ভেঙে পড়লেও ঘাবড়ায় নি একফোঁটা। কে যে সত্যি কথা বলছে বলা খুব শক্ত। আমরা দিনের ডিউটি করে রাত্রে ফিরে এলাম। শ্যামদা অবশ্য ওনার মেয়েকে সাথে নিয়ে আগেই ফিরে গিয়েছিলেন। মেয়েটি এখন কিছুদিন শ্যামদার সাথে ওর ঘরেই থাকবে। অন্যদিকে পুলিশ গুলোকে দেখে মনেই হল না যে তারা মেয়েটার কথাটাকে সিরিয়সলি নিচ্ছে। তাদের বক্তব্য ওর মামাই ঠিক বলছে। ওর কোনও বিয়ের বন্দবস্ত করা হয়নি। হতে পারে মেয়েটা প্রেমে ধোঁকা খেয়েছে, যে ছেলেটার কথা বলছে সে হয়ত অনেক প্রতিজ্ঞা করে শহরে চলে গেছে এখন আর বিয়ে করতে চাইছে না, বা অন্য কোনও কারন হতে পারে, আর তাই আত্মহত্যার চেষ্টা। এরকম কেস নাকি এরা প্রচুর দেখেছে। আমার ব্যক্তিগত ভাবে কিন্তু বার বার মনে হচ্ছিল যে মেয়েটা মিথ্যা বলছে না, তাও আবার এরকম কাঁচা বোকা বোকা মিথ্যা। যদিও পুলিশের কথাগুলো উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ওরা যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিল ওরা দু একদিনের মধ্যে শ্যামদার ছোট শালার বাড়ির দিকে ঢুঁ মারবে, যদি তেমন কিছু খবর পায় তো শ্যামদাকে এসে জানিয়ে যাবে। বাড়ি ফেরার পর মাথায় এল আজ আবার অরুণের আমার ঘরে আসার কথা। কিন্তু এইসব ঘটনা, পুলিশ, আত্মহত্যা আর তার সাথে সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনি, আমরা দুজনেই আজ মানসিক ভাবে ক্লান্ত। সবার অলক্ষে দুজনে দুজনে খাবার টেবিলে চোখের ইশারায় বুঝিয়ে দিলাম যে আজ থাক। বুঝলাম আজ আমাদের দুজনের কারুরই ওইসব করার ইচ্ছা নেই। আজ বিশ্রাম চাই। আমরা অবশ্য সেদিন খাবার টেবিলে শ্যামদাকে জানিয়ে দিয়েছিলাম যে মেয়ের কোনও রকম শরীর খারাপ করলেই যেন আমাদের বিনা দ্বিধায় খবর দেয়। আমরা যতটা পারি সাহায্য করব। আমাদের এখন কাল আর পরশু, এই দুই দিন হাঁসপাতাল আছে, তারপরের দিন আবার অফ। কিন্তু পরশু দিন রাতে আমরা আগের বারের মতন কোনও পিকনিকের কথা এইবার কেউ মুখেও আনিনি।
পিছনে ওর গলা থেকে পশুর মতন হাসফাস করা শব্দ আসছে, শালা সত্যি ভালো সুখ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু কি করে না থেমে বা খুব অল্প থেমে এতক্ষণ ধরে করে চলেছে সেটা আমার কাছে একটা প্রশ্ন। পরে অবশ্য সেই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছিলাম, এখান থেকে চলে যাওয়ার আগে। তবে আজ পাইনি, আজ মনে হচ্ছিল অরুণ হল একজন কামদেব, এর থেকে বেশীক্ষণ নিজেকে কেউ ধরে রাখতেই পারবে না। একটা হাঁপ আর কামে ভরা জড়ানো গলায় অরুণ আমাকে বলল “ আমার হয়ে এসেছে মাগী, আর একটু ধৈর্য ধর। মাগীরে তোর এই নরম শরীরটাতে যে কি আছে তুই জানিস না। এত নরম, এমন গন্ধ সব মাগীর থাকে না। উঠছে মাগী। শালা পারছিনা। আর কয়েকটা ঠাপ। শক্ত হয়ে থাক। “ আমি বললাম “ভেতরে ফেলিস না। “ এখন আর ওর মুখে মাগী সম্বোধন শুনে খারাপ লাগার মানে হয় না। কারণ আমি তো বরাবরই একটা নোংরা মেয়ে, একটা মাগী হতে চাইতাম যাকে সব ছেলে কামনা করবে মনে মনে। আর আমি ওদের সুখ দেব আর ওদের নতুন নতুন শরীরের ছোঁয়া পেয়ে সুখের সাগরে ভাসব। বা হাতটা ও আমার থাইয়ের ভেতর থেকে সরিয়ে নিয়ে আমার ঝুঁকে থাকা নগ্ন ঘাড়টাকে শক্ত করে নিচের দিকে চেপে ধরল, আমার মুখটা যেন নোংরা পাঁচিলের ওপর ঘষে যাবে, কেটে রক্ত বেড়িয়ে যাবে, কিন্তু কোনও ভাবে মুখটাকে পাঁচিলের কর্কশ গা থেকে আলাদা করে রাখলাম। মনে হল স্তন বিভাজিকার ঠিক শুরুর একটু নিচের জায়গাটা বাম স্তন সমেত যেন পাঁচিলের ওপরে পিষে গেছে, জ্বালা করছিল। ডান স্তনটা একই ভাবে ওর হাতের মুঠোর ভেতরে ছোট দলা পাকিয়ে থেকে গেছে, এখনও ওর যন্ত্রণাভরা পেষণ সহ্য করছে। “নে মাগী ঘোর, বস।“ আমার ভেতর থেকে হঠাত ও নিজের ভিজে চকচক করা লিঙ্গটাকে বের করে নিয়েছে। আমি আস্তে আস্তে ঘুরছি দেখে ও বা হাত দিয়ে আমার বা পাছার ওপর একটা বেশ জোড়ে সশব্দ থাপ্পড় বসিয়ে দিল। ডান হাত দিয়ে আমার কোমরটা ধরে জোড় করে আমাকে ওর দিকে ঘুরিয়ে রীতিমত ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে নিচে বসিয়ে দিয়েছে। এটা আমি জানি। অদিতি আর শম্পার কাছে শুনেছি অনেক ছেলে নাকি সহবাসের পর মেয়েদের মুখের ওপর বা সাড়া গায়ে, বা স্তনের উপর বা অনেক সময় মুখের ভেতরে নিজেদের বীর্য ঢালা পছন্দ করে এবং তাতেই তারা তৃপ্তি পায়। অনেক মেয়ে নাকি সেই বীর্য মুখে নিয়ে খেয়েও থাকে। আমার ভীষণ কৌতূহল ছিল ব্যাপারটা উপভোগ করার ব্যাপারে। বুঝলাম আজ সেই সময় এসে গেছে। ও নিজের ভীষণ শক্ত হয়ে ফুলে ওঠা ভেজা লিঙ্গটাকে আমার ঠিক নাকের থেকে তিন থেকে চার সেন্টিমিটার দূরে রেখে নিজের হাতের মুঠোয় সেটাকে বন্দি করে হস্ত মৈথুন করে চলেছে। যখন নতুন অভিজ্ঞতা হবেই তখন ভালো করেই হোক। আমি ওর লিঙ্গের ওপর চেপে ধরা ডান হাতটার ওপর আমার ডান হাতের নরম আঙুলগুলো মুড়ে ধরলাম। ও নিজের হাত সরিয়ে নিতেই আমি নিজের আঙুলের মধ্যে ওর লিঙ্গটাকে নিয়ে ওর মতন একই রকম স্পীডে ঝাঁকাতে লাগলাম। আস্তে আস্তে মুখটা ওর কাঁপতে থাকা লিঙ্গের মুখের কাছে নিয়ে এসে ওর লিঙ্গটাকে নিজের মুখে নিয়ে নিলাম। এইবার হাতটা স্থির হল, কিন্তু একই বেগে আমার মুখটা ওর লিঙ্গটা দিয়ে নিজের ভেতরটা মন্থন করতে লাগল। ও আঃ আঃ করে চাপা গর্জন করছে। আমার ঠোঁট গুলো কে গোল করে ওর ফোলা লিঙ্গটার ওপরে যেন চেপে ধরে মাথাতাকে আগু পিছু করছি। ওর যৌনাঙ্গ থেকে আমার যোনীপথ থেকে নিঃসৃত করা রসের ভীষণ একটা নোংরা বোটকা আর ময়লা গন্ধ আসছে, ওর নিজের ঘাম আর কুঁচকির যৌন গন্ধ তো আছেই যেটা এইসময়ে তীব্র হয়ে ওঠে, কিন্তু আমার এতে কিছুই মনে হচ্ছে না। ও হঠাত আমার মাথাটাকে শক্ত করে নিজের ঊরুসন্ধির উপর পিষে চেপে ধরল, ওর কুঁচকির আর লিঙ্গের গন্ধে বা আমার যোনীরসের ভীষণ নোংরা স্বাদেও আমার কিছু এসে যাচ্ছিল না, কিন্তু এইবার আমার নাক মুখ সব যেন যৌনকেশের মধ্যে মধ্যে চেপে যাওয়ায় দম বন্ধ হওয়ার জোগাড়।ওর লিঙ্গের শেষপ্রান্তটা প্রায় আমার গলার কাছে, বুঝলাম মুখের ভেতরে ওর লিঙ্গটা কেঁপে কেঁপে উঠছে। অনেকবার মাথা নাড়িয়ে ওর পাছায় খামছে, ওর কুঁচকিতে ধাক্কা মেরে ওকে আমার থেকে আলাদা করে দম নিতে চাইলাম, কিন্তু পারলাম না। ও আমার মাথা ছাড়ল না। ওর বীর্যকে আমার ঘেন্না করে না, কিন্তু আমি ওর যৌনকেশের মধ্যে ফেঁসে দম নিতে পারছিলাম না। গলার ঠিক আগে অনুভব করলাম ওর লিঙ্গের মুখ থেকে একটা যেন স্বাদহীন গরম তরল ছিটকে ছিটকে আমার গলার মুখে গিয়ে পড়ছে, আমি কি সেটাকে গিলতে চাই কি চাই না সেটা এখন অবান্তর প্রশ্ন কারণ আমি দম বন্ধ হওয়ায় ঢোঁক গেলার চেষ্টা করছিলাম, ওর লিঙ্গ থেকে বেরনো বীর্যের খানিকটা আমার গলা দিয়ে আমি নিজেই ঢোঁক গিলে নিয়েছি তাতে সন্দেহ নেই। এর পরেও আমি বীর্য মুখে নিয়েছি, কিন্তু এক্ষেত্রে যেন বাধ্য হয়েই দম বন্ধ হয়ে শারীরিক প্রতিক্রিয়ার শিকার হয়েই অরুণের বীর্য আমাকে গিলতে হল। আমার মাথার ওপর ওর হাতটা আলগা হয়ে গেল। কিন্তু আমি আমার মাথার ভার যেন ওর কুঁচকির উপর ফেলে দিয়েছি, আমার মুখের ভিতরে এখনও বার বার কেঁপে কেঁপে উঠছে আর সামান্য হলেও তার মুখ থেকে বিস্বাদ তরলের ফোঁটা ফোঁটা বেড়িয়ে আমার জিভের উপর পড়ছে। আমার নিঃশ্বাস স্বাভাবিক হতেই আমি ওর পায়ের সামনে থেকে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের মুখে একটা হাত চেপে ছাদের দরজার দিকে স্থান কাল পাত্র ভুলে রুদ্ধশ্বাসে দৌড় লাগালাম। দরজা ঘুলে ভেতরে ঢুকে সোজা নিচে। আমি যে পুরো নগ্ন হয়ে বাড়ির মধ্যে দৌড়ে বেড়াচ্ছি, শ্যামদা উপরে এলে আমাকে এই অবস্থায় দেখে ফেলবে কিছুই মাথায় এল না। ছাদ থেকে আসার সময় যে আমার পরনের কাপড় আর অন্তর্বাসগুলো নিয়ে আসতে হত সেটাও মাথায় নেই। আমি ছাদ থেকে নিচে নেমে সোজা বাথরুমে চলে গেলাম। বাথরুমের দরজা বন্ধ করার কোনও প্রয়োজন বোধ করলাম না। ট্যাপের নিচে হাঁটু গেঁড়ে বসে কল খুলে দিলাম।বারবার জল মুখে নিয়ে কুলকুচি করে, গার্গেল করে মুখের ভেতরটা পরিষ্কার করার চেষ্টা চালালাম। যখন বুঝলাম ওই বিস্বাদ জিনিসটার গন্ধ, শুধু ওর বীর্য কেন, আমার যোনীপথের বোটকা গন্ধ, ওর ঊরুসন্ধির গন্ধ আজ আর আমার মুখ থেকে যাবে না তখন হাল ছেড়ে দিলাম। হাঁটু মুড়ে ঝুঁকে কলের প্রবাহমান জলের ধারার নিচে নিজের মাথাটা রাখলাম। এতক্ষণে যেন একটু আরাম পেলাম। সমস্ত মাথা ভিজে গেল। আমি সাধারণত সন্ধ্যার পর মাথায় জল দেই না। কিন্তু আজ কিছুই মাথায় এল না। মাথা ঠাণ্ডা হওয়ার পর কল বন্ধ করে উঠে আস্তে আস্তে নিজের ঘরের দিকে ফিরে চললাম। সারা ঊর্ধ্বাঙ্গে ঠাণ্ডা ভেজা ভেজা ভাবটা থেকে বুঝতে পারছিলাম যে আমার অবিন্যস্ত ভেজা চুল থেকে গড়িয়ে পড়া জল আমার সারা ঊর্ধ্বাঙ্গ ভিজিয়ে দিচ্ছে ফোঁটা ফোঁটা হয়ে পড়ে। ভালো লাগছে এতক্ষণে। কেমন যেন আমার প্রাণটা ফিরে আসছে। ঘরের সামনে গিয়ে দেখলাম দরজা আবজে বন্ধ, দরজার ফাঁক থেকে ভিতরের হলুদ আলোটা বাইরে বেড়িয়ে আসছে।
পরের পর্ব
একটু যেন সংকোচ ভরা মন আর সতর্ক চাহুনি নিয়ে দরজা ঠেলে আমার ঘরে ঢুকলাম। নিজের ঘরে ঢুকতে এই প্রথম এত ভয় পাচ্ছি। চেয়ারে অরুণ বসে রয়েছে গেঞ্জি আর শর্টসটা পরে। আমি এই হলদেটে আলোয় পুরো নগ্ন হয়ে ভেজা অবস্থায় ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ও উঠে আমার হাত ধরে আমাকে এনে বিছানায় বসিয়ে দিল। গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিল। আমার মনে আছে আমাকে ও ছুঁতে আসছিল, আমার নগ্ন কাঁধ গুলোকে বোধহয়, ওর চোখে তখন একটা স্নেহভরা সান্তনা মাখা চাহুনি। আমি যেন ছিটকে ওর থেকে দূরে সরে গেলাম। নিজের নগ্নতা ওর নজর থেকে ঢাকার থেকেও বেশী প্রয়োজন মনে হচ্ছিল ওর ছোঁয়া থেকে দূরে থাকা। আমি ওর থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলাম। এরকম অভিজ্ঞতা আমার পরেও হয়েছে। কিন্তু প্রথম অভিজ্ঞতা সব থেকে বেশী মনে দাগ কাটে। আমি উগ্র আনন্দ চাইছিলাম, কিন্তু মানসিক ভাবে তৈরি ছিলাম না। এখন এই আক্ষেপ। আমি সরতে সরতে এসে খাট থেকে পড়েই যেতাম, ও আমাকে শক্ত করে নিজের দিকে টেনে নিল। আমি কিছু না ভেবে ওর বুকে বুক লুকিয়ে চাপা কান্না বের করে দিলাম। কতক্ষণ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছিলাম জানিনা। ওর হাত সারাক্ষণ আমার ভেজা চুল, কাঁধ আর মাথার উপর দিয়ে সান্তনার মতন ঘুরে বেড়াচ্ছিল। অনেকক্ষণ পর ঠাণ্ডা হলে ওর নরম চুম্বন অনুভব করলাম আমার কপালে। কামনার গন্ধ নেই সেই চুমুতে। দু চোখের পাতায় আলতো করে চুমু এঁকে দিল। ও বলল “অনেক রাত হয়েছে আমার এখন চলে যাওয়ার কথা, কিন্তু যতক্ষণ না তুই ঘুমাস আমি এই চেয়ারে বসে থাকব। তুই ড্রেস পরে ঘুমিয়ে পড়। আমার হাতটা যেন ওর দিকে আপনা হতেই এগিয়ে গেল, “একটু আমাকে জড়িয়ে ধরে শুবি?” ওর উত্তরের অপেক্ষা না করে সেই নগ্ন ভেজা শরীরটা নিয়েই আমি চাদরের তলায় ঢুকে উল্টো দিকে মুখ করে শুয়ে পড়লাম। চোখ বুজে গেল আপনা থেকে। বুঝলাম লাইটটা নিভে গেছে। সামান্য পরে বুঝলাম আমার সাথে আঁটসাঁট হয়ে অরুণ আমাকে পিছন দিক থেকে আমার নগ্ন শরীরটাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। কপালে আস্তে আস্তে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। একটু পরে ও আমাকে বলল “তোকে কি আজ আমি কোনও কিছুতে জোড় করেছি? করে থাকলে সরি, কিন্তু তুই তো না বলতে পারতিস। আমি সত্যি সরি। ” আমি সত্যি কথাটা ওর সামনে শিকার করলাম অবশেষে, “ আমার ছেলেদের সাথে মিশতে, নতুন অভিজ্ঞতা করতে, নতুন শরীরের নতুন স্বাদ পেতে ভালো লাগে। পাইনা, আর তাই বার বার চাই, কল্পনার জগতে নিজেকে এক দেহ ব্যাভিচারিনির মতন দেখতে ভালো লাগে যার পায়ের তলায় সব পুরুষ সমাজ, কিন্তু মনের দিক থেকে তার একাংশ উপভোগ করার জন্যও এখনও তৈরি নই।“ ও আমার নগ্ন শরীরটাকে নিজের বুকের সাথে একদম পিষে আঁকড়ে ধরেছিল। কিছুক্ষণ নিরবতার পর আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম “আজ অনেকক্ষণ করেছিলিস না?” বলল “আধ ঘণ্টার উপর।“ এইবার আমি ওর দিকে ফিরে ওকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। “কাল চুপি চুপি আসবি? এখানেই দুজন দুজনকে নেব?” ও বলল “আবার আজকের মতন ভেঙে পড়বি না তো? কথা দিচ্ছিস? ” বললাম “কালও তুই আজকের মতনই করতে পারবি তো?” বলল “সেটা দেখতেই পাবি।“ বললাম “প্রেমে পড়ে যাস না। “ বলল “পাগল। তবে তোর সাথে মজা করব। স্নেহটাকে প্রেম ভেবে ভুল ও করিস না। একটা কথা বলবি? “ বললাম “কি?” আমি তখন অনেক সংযত। ও বলল “আমি তোর প্রশ্নটাই তোকে করছি। হঠাত আমাকে একা একা এত প্রশ্রয় দিলি? আজ তো মদ খেয়েও নেই।“ বললাম “আগেই তো বললাম। “ ও বলল “না সেটা বলতে চাইছি না। রাজা বা সন্দীপকে তোর মনে ধরেনি? “ বললাম “কে বলেছে ওদের কে আমি পছন্দ করিনা? কিন্তু এইবার তুই কি বলবি আমাকে ওদের সাথেও শুতে হবে?” বলল “উফফ সেটা কি বলছি সোনা?” ঠাণ্ডা ভাবে বললাম “আমি শোব ওদের সাথে। ওরা না চাইলেও আমাকে একবার অন্তত শুতে হবে ওদের সাথে। অন্তত সন্দীপের সাথে আমাকে একবার হলেও করতে হবে। ওই সবার আগে আমাকে মনের কথা বলতে এসেছিল। আর সেটা যদি না করি সেটা বিশ্বাসঘাতকতা হবে। আর আমি তো বললামই আমার নতুন স্বাদ পেতে ভালো লাগে। কিন্তু কাল তুইই আসিস। আর আজকের ব্যাপারটা চেপে রাখিস প্লীজ। কোনও দিন ভুল করে মদের ঠেকেও তুলিস না। “ ও বলল “তুই এখন অনেকটা স্বাভাবিক, ঘুমিয়ে পড়। আমি আসছি। আর হ্যাঁ জামাকাপড় পরে দরজা বন্ধ করে ঘুমা। “ আমি ওর সামনেই আলো জ্বালিয়ে টপ আর লেগিন্সটা পরে নিলাম। ছেলের সাহস বেড়ে গেছে। “কিরে ব্রা বা ওইটা পরবি না? মানে প্যানটি।“ বললাম “ঘুমনোর সময় পরি না। “ ও দরজা খুলে চলে যাচ্ছিল, আমি ওকে বললাম “ তুই এতক্ষণ করলি কি করে? ভালো দম আর কন্ট্রোল আছে তো তোর।” ও হেঁসে বলল “সিক্রেট সোনা। পরে কোনও একসময় বলব। তবে তার জন্য তোকেও আমাকে খুশি করতে হবে। আর নিশ্চই বুঝতে পেরেছিস আমি খুবই অসভ্য।“ ওর ঠোঁটটা হালকা করে আমার ঠোঁটটাকে ছুঁয়ে গেল। আমি ওর বুকে একটা কিল মেরে বললাম “দূর হ অসভ্য। তোর কথা মতন তোকে খুশি করতে হবে তবে তুই নিজের সিক্রেট বলবি। শুয়োর একটা। “ ও বেরতে বেরতে বলল “ আরে খুশি করা মানে সবসময় আমার সাথে শোয়া নয়, অন্য কাজ, মানে দুঃসাহসিক কাজও তো করতে বলতে পারি! শুয়ে পড়। গুড নাইট। তুই খুবই মিষ্টি সোনা। “ আরেকবার আলতো করে নিজের ঠোঁট জোড়া আমার ঠোঁটের উপর চেপে চলে গেল। আমি লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম।
কখন ঘুম ভাঙল জানিনা। কিন্তু চোখ খুলে দেখলাম বাইরেটা অন্ধকার। আমার দরজায় কেউ বা কারা দুমদুম করে শব্দ করছে। আমি ভালো করে চোখ কচলে উঠে দেখলাম না বাইরেটা সত্যি অন্ধকার। মনের সেই ক্লেদ আর নেই। বাইরে থেকে একটা সোঁদা গন্ধ আসছে। এখানে আমরা মশারি টাঙ্গিয়েই রাখি। বেরনর সময় তুলে দিয়ে চলে যাই। শোয়ার সময় নামিয়ে নি। এটা বলতে ভুলে গেছিলাম। বাইরে থেকে আসা সোঁদা মাটির গন্ধে বুঝছিলাম আজও বৃষ্টি হয়ে গেছে। কিন্তু কটা বাজে। টেবিল থেকে হাত ঘড়িটা নিয়ে লাইট জ্বালিয়ে দেখলাম ৩.৪৭ বাজে। কে রে বাবা। বাইরে থেকে রাজার গলা পাওয়া গেল। আমি চোখ ডলতে ডলতে দরজা খুললাম। এখন আর ওদের সামনে রাখা ঢাকা করিনা। অন্তর্বাস পরে নেই বুঝলে বুঝুক, হঠাত ঘুম থেকে উঠে চলে আসায় শরীরের কিছু বেশী অংশ ওরা দেখতে পেলে দেখুক। ওদেরও তেমন মাথা ব্যথা থাকার কথা নয়, আমারও নয়। দেখলাম রাজা আর সন্দীপ আর অরুণ তিনজনেই দাঁড়িয়ে আছে। বললাম “কি রে কি হয়েছে?” একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম সবাই রেডি। ঘুম জড়ানো গলায় জিজ্ঞেস করলাম “ এত রাতে কি হয়েছে? শ্যামদার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তুই আয়। “ আমি তো পুরো থ মেরে গেছি। শ্যামদার মেয়ে কোথা থেকে উদয় এল এই রাত দুপুরে। কি মুশকিল? আমি কোনও মতে ওই আলুথালু অবস্থাতেই ছুঁতে বাথরুমে গিয়ে ব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে ফিরে এসে গায়ে কিছু একটা চাপিয়ে নিলাম। রেডি হয়ে নিচে নেমে এসে দেখি ওরা সবাই রেডি হয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। শ্যামদাকে দেখলাম না। “শ্যামদা কোথায়” জিজ্ঞেস করতে যাব, এমন সময় দেখি আমাদের বাড়িটার সামনে মরচে ধরা ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করতে করতে চার টে রিক্সা এসে দাঁড়াল। একটা রিক্সা থেকে শ্যামদাকে নামতে দেখে বুঝলাম শ্যামদা রিক্সা ডাকতে গেছিল। রিক্সাওয়ালাদের বাড়িগুলো কাছেই। এখন যেহেতু ওরা বাড়িতেই থাকে তাই এই সময় ওদের ডেকে আনা খুব সহজ। কিন্তু একবার ওরা কাজে বেড়িয়ে গেলে তখন আর এই চত্বরে একটাও রিক্সা পাওয়া দুষ্কর। রিক্সার শব্দ শুনে আমাদের খাবার জায়গা থেকে আরেকটা অচেনা মুখ বেড়িয়ে এল। পরে শুনেছিলাম এই ভদ্রলোক নাকি একে তাকে ধরে এই রাত্রে এসেছিল শ্যামদার মেয়ের খবরটা দিতে। ও আমাদের সাথেই ফিরবে। আমি আর রাজা একটা রিক্সায় উঠে বসলাম। সন্দীপ আর অরুণ আরেকটা রিক্সায় চড়ে বসল। শ্যামদা একা একটা রিক্সায় বসলেন আর ওই ভদ্রলোক আরেকটা রিক্সায় চেপে বসলেন। রিক্সা রওয়ানা দিয়ে দিল। রাজা কে কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতে রাজা বলল “ শ্যামদার মেয়ে বিষ খেয়েছে। খুব শোচনীয় অবস্থা। জানিনা গিয়ে কি দেখব।“ আমি কেমন জানি হকচকিয়ে গেলাম। যদিও এরকম ঘটনা গ্রামে হয়ে থাকে সেরকম আগেও শুনেছি। শুধু গ্রাম কেন শহরেও হয়ে থাকে। জিজ্ঞেস করলাম “হঠাত কি এমন হল যে সোজা সুইসাইড করার চেষ্টা?” রাজা বলল “ কেউ জানে না। শ্যামদাও জানে না। ওই লোকটাও জানে না। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম লোকটাকে, ও বলল মেয়ে বেহুঁশ, আর তাছাড়া এইসব জিজ্ঞেস করার কোনও সময় সে পায়নি। তাকে ডেকেই তড়িঘড়ি শ্যামদাকে ডাকতে পাঠিয়ে দিয়েছে। “ মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। আমার শ্যামদাকে খুব ভালো লাগত, খুব সহজ সরল একটা মানুষ, সারা দিন মুখ বন্ধ করে আমাদের ফাই ফরমায়েশ খেটে চলেছে সামান্য কয়েকটা টাকার জন্য। বেরনর সময় শ্যামদার মুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম যে শ্যামদা নিজে প্রচণ্ড রকম ভেঙে পড়েছেন। আপাতত আমরা ধেয়ে চলেছি শ্যামদার ছোট শালার বাড়ির উদ্দেশ্যে। এটা অবশ্য আমাদের জানা খবর যে ওনার মেয়ে ওনার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে ওনার ছোট শালার বাড়িতে থাকে। ওদের নিজেদের ছেলেপুলে নেই, তাই খুব যত্ন করে ওরা ওনার মেয়েকে। রিক্সা বেশ স্পীডেই যাওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু রাস্তা ভালো নয়, তাই গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে বেশ ভালোই সময় লাগলো। রাজাকে পথে জিজ্ঞেস করেছিলাম “তোরা এত তাড়াতাড়ি ফিরে এলি যে?” ও বলল “তেমন কিছু না। আরেকজন ডাক্তার ছিলেন। লোকটা ভালো আছে দেখে আমাদের দুজনকে চলে যেতে বললেন। আমরাও কেটে পড়লাম।“ বললাম “হুম।“
রাজা বলল “তারপর এখানে ফিরে দেখি শ্যামদা অসহায়ের মতন দৌড়াদৌড়ী করছেন। অরুণ ততক্ষণে উঠে গেছে। শ্যামদাই ওকে ডেকে তুলেছেন। দেখলাম অরুণও হন্তদন্ত ভাবে ড্রেস পরে রেডি হচ্ছে। তারপর তো শুনলাম এই ব্যাপার ঘটে গেছে। “ শ্যামদার ছোট শালার বাড়ি পৌঁছে দেখলাম বাড়ির বাইরে রীতিমত লোকের ভিড় জমে গেছে। আমরা তড়িঘড়ি রিক্সা থেকে নেমে দৌড়ে ভেতরে ঢুকে গেলাম। একজন বয়স্ক মতন লোককে দেখলাম, উনি বসে মৃতপ্রায় মেয়েটার পালস ধরে দেখছে। উনি এই গ্রামের বদ্যি। আমরা মেয়েটাকে সামান্য পরীক্ষা করেই বুঝলাম ভীষণ বাজে অবস্থা, যখন তখন যা কিছু হয়ে যেতে পারে। এখানে অ্যাম্বুলেন্সের কোনও গল্প নেই। এই অবস্থায় নিয়ে যাব কি করে? রাজা দেখলাম শ্যামদার সাথে কথা বলছে। আমি মেয়েটাকে ভালো করে দেখলাম। বয়স ১৬ কি ১৭। ছিপছিপে শরীর, গায়ের রঙ চাপা, দেখতে কেমন বলতে পারব না কারণ এখন মেয়েটার মুখ ব্যথায় কুঁকড়ে আছে। আমরা আর দেরী না করে ওকে এই মুহূর্তে রিক্সায় তুলতে বললাম। দেখে বুঝলাম বাইরে ডাক্তারদের দাদাগিরি দেখে বদ্যি বাবু বেশ মনক্ষুণ্ণ হয়েছেন। তাতে আমাদের ভারি বয়ে গেল। আমাদের একটা দুশ্চিন্তা হচ্ছিল যে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাস্তায় কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। আমাদের এখন অবশ্য কিছুই করার নেই। আর এই রাস্তা বড্ড খারাপ আর লম্বা, হাসপাতাল পৌঁছাতে সময় লাগবে তাতে সন্দেহ নেই। তবে এই জিনিস বদ্যির বিদ্যার বাইরে তাতে আমাদের সন্দেহ নেই, তাই আমরা সেই লোকটাকে কোনও রকম পাত্তা দেই নি। তবে বেরনর আগে সবাইকে বলে দিয়েছিলাম যে মন শক্ত করে রাখতে। শ্যামদার শালার বউকে দেখে মনে হচ্ছিল উনি যেন নিজেকে ধরে রাখতে পারছেন না। যেকোনো মুহূর্তে বেহুঁশ হয়ে যাবেন। আমি মেয়েটাকে নিয়ে একটা রিক্সায় রওয়ানা দিয়ে দিলাম। বাকিরা জোড়ায় জোড়ায় অন্য রিক্সা গুলোতে যাত্রা শুরু করল। গোটা রাস্তা আমি মেয়েটাকে শক্ত করে ধরে বসেছিলাম যাতে ঝাঁকুনিতে পড়ে না যায়। বার বার দেখতে হচ্ছিল আছে না আর নেই। তবে ভগবান সেদিন আমাদের সহায় ছিলেন। মেয়েটা হাঁসপাতাল অব্দি বেঁচে গেল। তাড়াতাড়ি এমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানে একজন অন ডিউটি ডাক্তার ছিলেন। তার হাতে আমরা শ্যামদার মেয়েটিকে হস্তান্তরিত করে দিলাম। আমরাও অবশ্য তখন রয়ে গেলাম। কিন্তু একটা হেস্ত নেস্ত না হওয়া পর্যন্ত ফেরার কোনও মানে হয় না। ওয়াশ করা হল। অবস্থা তবুও ভালো হল না। প্রায় আধঘণ্টা খানেক পর আমরা বুঝলাম এই যাত্রা বেঁচে গেছে মেয়েটা। এতক্ষণ আমাদের ভাববার কোনও সময় ছিল না কেন এমন করল এই মেয়েটা। মেয়েটা একটু ধাতস্থ হয়ে দেখে আমরা হাঁসপাতাল থেকে ফিরে এসে আবার ফ্রেশ হয়ে একই রিক্সা ধরে হাঁসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলাম। জলখাবার বানানোর লোক আজ নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারে ব্যস্ত। তাই কিছু করার নেই, ঠিক হল সময় পেলে হাঁসপাতালেই কিছু একটা খেয়ে নেওয়া যাবে কারণ লাঞ্চ করতে এখনও অনেক দেরী। গিয়ে দেখলাম শ্যামদা আগের মতনই ভীষণ উৎকণ্ঠা নিয়ে ঠায় বসে আছেন। ওনার ছোট শালা ওনাকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পরে একসময় রাজা আমাদের বলল যে রাজা নাকি শ্যামদাকে জিজ্ঞেস করেছিল যে কেন ওনার মেয়ে এমন করল, কিন্তু উনি বলতে পারলেন না। মেয়ের সেন্স পুরোপুরি আসেনি। সেন্স আশা না পর্যন্ত কিছুই জানা সম্ভব নয়। দুপুরের দিকে শুনলাম ওর সেন্স ফিরে এসেছে। বিকালে আমাদের স্যার শ্যামদাকে ডেকে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যেতে বললেন। মেয়ে এইবার প্রথমবার মুখ খুলল। তার বক্তব্যর সারমর্ম করলে এই দাঁড়ায়। সে আর মামার সাথে যাবে না। মেয়ে তার বাবার সাথেই থাকতে চায়। ওর মামা নাকি ওকে ওর অমতে জোড় করে বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছিল। মেয়েটা একটা ছেলেকে ভালোবাসে। অনেকদিনের সম্পর্ক। ছেলেটাকে না পেলে ও গলায় দড়ি দেবে। মামা মেয়েটার কোনও কথাই শুনতে রাজি নয়। ছেলেটা একটা ছোট কাজ পেয়েছে শহরে। এখন সে গ্রামে নেই। আর এই সুযোগে ওর মামা ওর অন্য এক জায়গায় বিয়ে দিতে চাইছে। এরকম অবশ্য গ্রামে হামেশাই হয়ে থাকে। কিন্তু যেটা সবথেকে আশ্চর্য লাগল সেটা হল এই যে শ্যামদা নিজের মেয়ের এই বিয়ের ব্যাপারটা জানতেনই না। শ্যামদা বিয়ে কথাটা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লেন। ওনার মেয়ের বক্তব্য ওকে নাকি ওর মামা আর মামি বুঝিয়েছে শ্যামদা এই বিয়ের ব্যাপারে জানেন। শ্যামদা পাত্রকেও দেখেছেন। পাত্র শ্যামদার পছন্দ হয়েছে। বিশেষ কাজে শ্যামদাকে এখন অনেক দিন শহরে থাকতে হবে তাই বিয়েতে থাকতে পারবেন না। কিন্তু ওনারও ইচ্ছা যেন বিয়েটা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায় কারণ এরকম পাত্র নাকি আর পাওয়া যাবে না। শ্যামদার অবর্তমানে শ্যামদার ইচ্ছা অনুযায়ী ওর মামাই ওর কন্যাদান করবে। ওরা যখন বিয়ের পর শহরে চলে আসবে তখন শ্যামদা ওদের সাথে দেখা করে আশীর্বাদ দিয়ে আসবেন। সত্যি সন্দেহের ব্যাপার, কারণ শ্যামদা এসবের কিছুই জানেন না।
ওর মামাকে জিজ্ঞেস করাতে উনি ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেন। আমরা বললাম পুলিশ ডাকতে তারাই যা করার করবে। পুলিশ ডাকার দরকার পড়েনি। কারণ আত্মহত্যার ব্যাপার বলে হাঁসপাতালের তরফ থেকেই পুলিশ ডাকা হয়েছিল। একটা ছোট পুলিশ চৌকি আছে। ওরা মেয়েটার সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিল। ওরা মেয়েটার বয়ান নিল। শ্যামদার ছোট শালারও বয়ান নিল। ওনাকেও দেখে মনে হচ্ছে উনি ভীষণ ভেঙে পড়েছে। একবার ব্যাপার আমাদের মনে হচ্ছিল। মেয়েটা যেকোনও কারনেই হোক আত্মহত্যা করার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু তাতে ও হঠাত করে মামাকে ঘিরে এরকম একটা গল্প কেন বলল। এরকম একটা অবিশ্বাস্য কারণে নিজের মামার নাম জড়াতে যাবেই বা কেন। রাজাও আমাদের বলল “খুবই আশ্চর্য। সুইসাইড করতে গেলে যাক, কিন্তু যে মামার সাথে এতদিন ছিল, তার নামে এরকম একটা গাঁজাখুরি গল্প বানাবে। আর তেমন বাচ্চা মেয়ে তো মনে হল না। ও কি বুঝছে না আমরা কেউ ওর কথা বিশ্বাস করব না। অথচ ও ভীষণ প্রত্যয়ের সাথে এই মামার নামে দোষারোপ করছে। আর ওর মুখ দেখে স্পষ্ট যে ও কিছুতেই ওর মামার সাথে যাবে না। কোনও কারণে ভয় পেয়ে আছে। “ ওর মামা ভেঙে পড়লেও ঘাবড়ায় নি একফোঁটা। কে যে সত্যি কথা বলছে বলা খুব শক্ত। আমরা দিনের ডিউটি করে রাত্রে ফিরে এলাম। শ্যামদা অবশ্য ওনার মেয়েকে সাথে নিয়ে আগেই ফিরে গিয়েছিলেন। মেয়েটি এখন কিছুদিন শ্যামদার সাথে ওর ঘরেই থাকবে। অন্যদিকে পুলিশ গুলোকে দেখে মনেই হল না যে তারা মেয়েটার কথাটাকে সিরিয়সলি নিচ্ছে। তাদের বক্তব্য ওর মামাই ঠিক বলছে। ওর কোনও বিয়ের বন্দবস্ত করা হয়নি। হতে পারে মেয়েটা প্রেমে ধোঁকা খেয়েছে, যে ছেলেটার কথা বলছে সে হয়ত অনেক প্রতিজ্ঞা করে শহরে চলে গেছে এখন আর বিয়ে করতে চাইছে না, বা অন্য কোনও কারন হতে পারে, আর তাই আত্মহত্যার চেষ্টা। এরকম কেস নাকি এরা প্রচুর দেখেছে। আমার ব্যক্তিগত ভাবে কিন্তু বার বার মনে হচ্ছিল যে মেয়েটা মিথ্যা বলছে না, তাও আবার এরকম কাঁচা বোকা বোকা মিথ্যা। যদিও পুলিশের কথাগুলো উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ওরা যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিল ওরা দু একদিনের মধ্যে শ্যামদার ছোট শালার বাড়ির দিকে ঢুঁ মারবে, যদি তেমন কিছু খবর পায় তো শ্যামদাকে এসে জানিয়ে যাবে। বাড়ি ফেরার পর মাথায় এল আজ আবার অরুণের আমার ঘরে আসার কথা। কিন্তু এইসব ঘটনা, পুলিশ, আত্মহত্যা আর তার সাথে সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনি, আমরা দুজনেই আজ মানসিক ভাবে ক্লান্ত। সবার অলক্ষে দুজনে দুজনে খাবার টেবিলে চোখের ইশারায় বুঝিয়ে দিলাম যে আজ থাক। বুঝলাম আজ আমাদের দুজনের কারুরই ওইসব করার ইচ্ছা নেই। আজ বিশ্রাম চাই। আমরা অবশ্য সেদিন খাবার টেবিলে শ্যামদাকে জানিয়ে দিয়েছিলাম যে মেয়ের কোনও রকম শরীর খারাপ করলেই যেন আমাদের বিনা দ্বিধায় খবর দেয়। আমরা যতটা পারি সাহায্য করব। আমাদের এখন কাল আর পরশু, এই দুই দিন হাঁসপাতাল আছে, তারপরের দিন আবার অফ। কিন্তু পরশু দিন রাতে আমরা আগের বারের মতন কোনও পিকনিকের কথা এইবার কেউ মুখেও আনিনি।