Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981
#19
পরের পর্ব
যখন ঘুম ভাঙল দেখলাম আমার নগ্ন শরীর তখনও ওর বাহুপাশে আবদ্ধ। সারা ঘর আলোয় ভর্তি। ওর ঘুম তখনও ভাঙেনি। আমি ওর নিস্পাপ মুখটার দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে দেখলাম। হালকা করে একটা গুড মর্নিং কিস এঁকে দিলাম ওর ফাঁক হয়ে থাকা লাল ভেজা ঠোঁটে। ও নিজের ঠোঁটে একবার ভেজা জিভটা বুলিয়ে চোখ খুলে তাকাল। গুড মর্নিং সোনা। অ্যান্ড থাঙ্কস ফর দা গুড মর্নিং কিস সোনা। “ “তুই জেগেছিলিস?” ও চোখ মেরে বলল না তবে জাস্ট ঘুম থেকে উঠছিলাম আর কি, তখনই তুই চুমু টা দিলি।ও আমার ঠোঁটে আর কপালে দুটো সশব্দ চুম্বন এঁকে দিয়ে আমার পাশ থেকে উঠে পড়ল। আমিও বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালাম। এক রাতে আমাদের মধ্যে একটা বিশাল পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। আমাদের কারোর অন্যের সামনে নিজের নগ্নতা ঢাকার তাড়া নেই। দিনের সম্পূর্ণ আলোয় আদিতির পুরো নগ্ন শরীরটা এই প্রথমবার দেখলাম। ওর যোনী দ্বারের ঠোঁট এখন বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেছে। আমার টারও একই অবস্থা। আমি ওর শরীরের দিকে তাকিয়ে আছি দেখে ও হেঁসে আমার দিকে এগিয়ে এল সেই নগ্ন হয়েই। আমার বা স্তনটাকে হাতে নিয়ে বোঁটায় সামান্য একটা মোচড় দিয়ে বলল তুই খুব সেক্সি জানিস?” হেঁসে নিজের বিছানায় গিয়ে আমার কালকের পরা কামিজ লেগিন্স ব্রা আর প্যানটিটা আমার দিকে ছুঁড়ে দিল। দুজনে দুজনের সামনেই ড্রেস পড়লাম। ঘড়িতে তখন বাজে দুপুর ১১ টা। আমরা নতুন জামা কাপড় নিয়ে বাথরুমের দিকে রওয়ানা হলাম। বাথরুমের কেবিনে একটা যখন নিজেকে আবার নগ্ন করলাম স্নানের জন্য, অনুভব করলাম আমার সারা গা থেকে যেন আদিতির গায়ের আর ঘামের গন্ধ বেরোচ্ছে। ওর গন্ধ এখন আমার ভেতরে মিশে গেছে বুঝতে পারছিলাম। ভালো করে স্নান করে ফ্রেশ হয়ে বেরনর আগে আমার আমার নির্লোম যোনীপ্রদেশ টা রেজার দিয়ে নিজেই একবার শেভ করে নিলাম। রেজার টা হালকা করে বুলিয়ে দিলাম হাত পা আর বগলের উপর দিয়ে। জানি গতকালই শেভ করেছিলাম। তাও যে আজকে কেন আরেকবার শেভ করলাম জানিনা। আমি কি নিজেকে আরও সুন্দর রাখতে চাই? হতে পারে। ক্ষতি কি। ঘরে ফিরে দেখলাম আমার আগেই অদিতি ফিরে এসেছে স্নান করে ফ্রেশ হয়ে। আমি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম। ওর কাছে গিয়ে ওর ঠোঁটে একটা ঘন চুমু এঁকে দিলাম। ও ও প্রত্যুত্তরে আমাকে একটা দীর্ঘ চুমু খেলে। খেয়াল করলাম ও কালকের সেই মগটা যেটায় আমাদের শেভ করা যৌনকেশ রাখা ছিল সাবান জলে সেটাকে পরিষ্কার করে নিয়ে এসেছে। বাঁচা গেছে। দরজায় টোকা পড়েছে। কেউ একজন এসেছে। গিয়ে দরজা খুললাম দেখলাম শম্পা দাঁড়িয়ে আছে। ঢুকে আমার বিছানায় বসে বলল কি রে এত বেলা করে উঠলি দুজনে? আমি চলে যাওয়ার পর ঘুমাস নি?” অদিতি বলল না রে আমরা বসে আরও দু পেগ করে মেরেছি।আমি হেঁসে বললাম প্রচুর নেশা হয়ে গিয়েছিল মাইরি। সকালে মাথা তুলতে পারছিলাম না। তাই আরেকটু ঘুমিয়ে নিলাম। শম্পা আমার হাতে একটা বাড়ি মেরে বলল চালিয়ে যাও গুরু, দেখছি যে, পাক্কা মাতালদের সাথে ঘর করছি!অদিতি বলল দেখ কে কি বলছে? শালা তোর থেকে মদ খাওয়া শিখেছি আর তুই জ্ঞান মারছিস শালা। দূর হ। শম্পা ততক্ষণে আমার বিছানার উপর কেলিয়ে পড়েছে। আমি জিনিস গুছিয়ে বই নিয়ে বসব ভাবছি এমন সময় ক্যারির আগমন হল। এখন মাঝে মাঝে ও নিজেই আমাদের ঘরে আসে। একটু চুপচাপ থাকে, কিন্তু তাও আসে। ৪ মাসকেটিয়ারস আবার এক হয়েছি। পড়াশুনা মাথায় উঠল। আমরা কিন্তু ওদের সামনে একদম স্বাভাবিক ব্যবহার করছিলাম। যদিও আমি আর অদিতি মনে মনে জানি যে আমাদের মধ্যে আর সব কিছু আগের মতন নেই। এখন ও আমার বর আর আমি ওর নতুন বউ। দুপুরে খাওয়ার পর ঘরে এসে দোর দিয়ে আবার আমরা এক বিছানায় শুয়ে কিছুক্ষণ নিজেদের কে কচলালাম। না ফিঙ্গারিং করে অরগ্যাস্ম অব্দি যাই নি, কিন্তু ওই জামার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে স্তন নিয়ে খেলা করা বা শর্টস বা লেগিন্সের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে একটু যোনী দ্বারটা ঘেঁটে দেওয়া এই আর কি। হালকা হালকা জল বেরচ্ছিল। আরাম লাগছিল। এখন আমাদের মধ্যে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমরা এখন একে ওপরের সামনে নগ্ন হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করি, রাতে শুতে যাওয়ার আগে আমি অদিতির সামনেই আমার ব্রা আর প্যানটি খুলি। যদি মেজাজ হয় তো দুজন দুজনকে রতি ক্রীড়ায় সুখ দি সেই প্রথম রাতের মতন। রোজ যে চাঁদের আলোয় করি তা নয়। কখনও কখনও ফুল টিউব লাইটের আলোয় নগ্ন হয়ে আমরা মগ্ন হই যৌন খেলায় একে অন্যের সাথে। আলোয় দুজন দুজনের নগ্নতা যেন বেশী উপভোগ করা যায়। সেদিন রোমান্স ছিল বেশী, যৌনতা ছিল কম। এখন যৌনতা বেশী থাকে, রোমান্স আগের মতই আছে। বেশীকরে ভোগ করি দুজন দুজনকে।আগে শনিবার শনিবার করে আমি বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে একাকীত্বে নিজেকে পরিষ্কার করতাম। এখন শনিবার শনিবার আমাদের ঘরেই আমরা দুজন দুজন কে শেভ করিয়ে দি। অদিতিটার অসভ্যতা দিনকে দিন বেড়ে চলেছে। তাতে অবশ্য আমার ভালোই লাগে। শেভ করার সময় মাঝে মাঝে এখানে সেখানে জিভ বুলিয়ে দিয়ে আমাকে উত্যক্ত করে তোলে। ওই আমার জীবনে প্রথম মেয়ে যে শেভ করার পরে আমার নগ্ন বগলে জিভ লাগিয়ে ছিল, যোনী তে তো সেই প্রথম রাতেই যা করার সব করে নিয়েছে। পরে অবশ্য যৌন খেলায় মেতে ওঠার সময় আমরা দুজনেই দুজনের নির্লোম বগলে চুমু আর থুতুর বন্যা করেছি জিভ দিয়ে চেটে। ওর কাছে আমার আর আমার কাছে ওর শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এখন চেনা। প্রত্যেকটা রোমকুপে আমাদের কেমন স্বাদ, কেমন গন্ধ আমাদের জানা। এমনও হয়েছে আমরা কোথাও বেড়াতে যাচ্ছি, সব রেডি, ও হঠাত আমার পেছন থেকে এসে আমার লেগিন্সের কোমরের ইলাস্টিকটা টেনে ফাঁক করে দেখেছে আমি কি রঙের প্যানটি পরেছি। ও হয়ত বলবে ছি তুই লাল আর আমি সবুজ। ভালো নয়। কোনও দিন হয়ত ও চেঞ্জ করে আমার মতন লাল প্যানটি পরে বেড়িয়েছে, কোনও দিন বা আমি চেঞ্জ করে ওর রঙের প্যানটি পরে বেড়িয়েছি। জানি কথাগুলো শুনতে ফালতু লাগবে। কিন্তু মজা করতাম আর কি। একটা চাপা উত্তেজনা সারাক্ষণ নিজেদের মধ্যে কাজ করত। আরেকটা ভালো জিনিস ছিল। আমরা তখন পড়াশুনাও করতাম এক সাথে। তাতে শেখাও হত অনেক ফাস্ট। আমরা একজন ছিলাম আরেকজনের পরিপূরক সব ব্যাপারে। শুধু একটাই দুঃখ ছিল আমার যেটা আমি ওকে অনেকবার বলেছি, ও ছেলে নয় কেন। এত কেয়ারিং আর রোমান্টিক বর পেলে আমি বর্তে যেতাম। ও শুনে হেঁসে বলত সেক্স চেঞ্জ করে নি তাহলে? নিজের আসল বর আসুক, ওর সাথে লাগানোর পর দেখব আমাকে তুই কত মনে রাখিস।আমিও হেঁসে ফেলতাম। ছেলেদের ছোঁয়া আর মেয়েদের ছোঁয়ার মধ্যে অনেক তফাত আছে। দুটো দুরকমের সুখ প্রদান করে আর তাই দুটোই উপভোগ্য।
 
সময় ডানা মেলে উড়ে চলেছিল। আর সেই সাথে আমরাও। ওর আমার রতিক্রীড়ার গল্প তো অনেক লিখলাম। এখন আর সেই একঘেয়ে গল্প লিখে পাতা ভরিয়ে লাভ নেই। আমরা সপ্তাহে দু থেকে তিনবার যৌনখিদে মেটাতাম একে অন্যের। একে অন্যকে শেভ করে দিতাম। একে ওপরের সাথে ঠিক বর বউয়ের মতনই থাকতাম। এখানেই ইতি টানছি। এইসময় একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়েছিল। এমনি ঘটনা কিন্তু উল্লেখযোগ্য। এই বার সেই কথাটাই লিখছি। এক শনিবার অদিতি বাড়ি গিয়েছিল। সোমবার খুব ভোরে ফিরে আবার কলেজ অ্যাঁটেন্ড করেছিল। ওকে দেখে বুঝতে পারছিলাম কিছু একটা পরিবর্তন হয়েছে। সারাক্ষণ ওর মনটা যেন অন্য কোথাও পড়ে আছে। সারাক্ষণ যেন কিছু একটা ভাবছে। সারাদিন জিজ্ঞেস করার সুযোগ পাইনি কি হয়েছে। কলেজের পর সেদিন আমার পড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। মনে মনে ভাবছিলাম হলটা কি আমার বরের। পড়িয়ে ফিরে এসে দেখি অদিতি বিছানায় ঠায় হয়ে শুয়ে আছে। আমি ওর কাছে গিয়ে ওর গলা জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে সোনা। সোনার আমার মুড অফ মনে হচ্ছে।ও বলল তেমন কিছু না। গতকাল বিকালে আমাকে ছেলে দেখতে এসেছিল। আমাকে দেখে ওদের পছন্দ হয়েছে। সব কথা পাকা হয়ে গেছে। ৬ মাস পরে বিয়ে। বিয়ের ডেটটা যদিও এখনও ফাইনাল হয়নি। কিন্তু মোটামুটি ওই সময়েই হবে।আমি ভেতরে ভেতরে একটা ধাক্কা খেলাম যেন। ও যদি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকত তাহলে ঠিক ধরতে পারত। কিন্তু ও তাকিয়ে ছিল বিছানার দিকে। আমি নিজেকে স্বাভাবিক করলাম। বললাম শালা এত বড় একটা খবর সারাদিন জানালি না? তুই কি মাল রে?” ও আমাকে বলল কোন মুখে জানাব বল? আমি তো এখন শুধু তোকে ভালোবাসি।আমি ওর পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম দেখ আমাদের ব্যাপারটা যে একদিন না একদিন বন্ধ করতেই হত সেটা তুই জানতিস আমিও জানতাম (আমি জানলেও মন থেকে মানতে পারতাম না যদিও)। আর আমাদের তো বিয়ে একদিন না একদিন হবেই। আমার আগে তোর সম্বন্ধ এসেছে। ওই মেয়ে, ছেলেটা কি করে রে? বয়স কত? দেখতে কেমন? একলা কথা বলার সুযোগ পেয়েছিস?” আমি ওকে একের পর এক প্রশ্নের তীরে জর্জরিত করতে থাকলাম। ও নীরবে উঠে হ্যান্ড ব্যাগ থেকে একটা ছবি বের করে আমার হাতে দিয়ে দিল। হুম, মন্দ নয়। শুধু বিয়ের পর গোঁফটা ছেঁটে ফেলতে বলিস। তাহলে আরও হ্যান্ডসাম লাগবে। হাইট?” উত্তর এল আমারই মতন বা সামান্য একটু বেশী হবে। খুব আহামরি লম্বা নয়। ঠিক ঠাক। “ “কি করে আমার সতীন?” ও হেঁসে বলল পাকামি করিস না। প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করে। কোলকাতাতেই থাকে। সামনের বছর দিল্লী চলে যেতে পারে। আর আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। ব্যবহার ভালোই। আর কিছু?” আমি হেঁসে বললাম ওহহো এন আর আই? আমার অদিতি ডার্লিং তাহলে এর পরে নন রিটারনিং ইন্ডিয়ানদের দলে পড়বে। ভাবলেই ভালো লাগে। আমি ড্রেস চেঞ্জ করতে শুরু করে দিলাম। মনের কোনটা জ্বালা করছিল। কিন্তু বাইরে বুঝতে দেইনি। আমরা যদিও এরপরও একে অন্যের সামনে নগ্ন হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করতাম, কিন্তু আমরা এর পরে আর কোনও দিনও যৌনখেলায় মেতে উঠিনি। এরপর আমরা আর কোনও দিনও একে অন্য কে শেভ করে দিতাম না। একে অন্যকে ছুঁয়ে দেখিনি কখনও। এইটা আমরা দুজনেই উপলব্ধি করেছিলাম যে আমাদের মাঝে একটা দেওয়াল উঠে গেছে। যদিও এটা মানতেই হবে আমাদের বন্ধুত্বে কোনও ছেদ পড়েনি। আমরা আগের মতই মজা করতাম, বাইরে যেতাম। এবং এই হাঁসি মজা কথাবার্তা কোনটাই মেকি ছিল না। কিন্তু আমাদের শারীরিক সম্পর্কটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ওর মনে মনে ইচ্ছে থাকলেও আমার দিক থেকে তেমন কোনও সিগন্যাল পেত না বলেই হয়ত ও আর এগোত না। যখনই আমাদের মধ্যে শারীরিকভাবে একাত্ব হওয়ার সুযোগ আসত আমার মধ্যে একটা ছেলেমানুষি চাপা অভিমান কাজ করত। অভিমান আর সেক্স একসাথে চলতে পারেনা। ও আমার মধ্যে কোনও সিগন্যাল পেত না তাই আর। তবে এটাই বোধহয় স্বাভাবিক নিয়ম। আমরা বোধহয় মাঝে কিছুদিন প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে সমকামিতায় মেতে উঠেছিলাম। এখন প্রকৃতির অলঙ্ঘনীয় নিয়মেই আবার যে যার রাস্তায় ফিরে এসেছি। কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক এখন সেই যুক্তি দিয়ে লাভ নেই। আধুনিক সমাজ কাঠামোয় অনেকে বলেন সমকামিতা কোনও দোষ নয়। কিন্তু আমার চোখে ছিল দোষের। আর সেইটাই আসল। এখন আর আমি সেই দোষ করছিনা। মনে মনে এইভাবে ব্যাপারটাকে মেনে নিয়েছিলাম, বুঝিয়েছিলাম নিজেকে। এক শুক্রবার আমি কলেজ থেকে হস্টেলে ফিরে দেখলাম অদিতি খুব সাজগোজ করে কোথাও যাচ্ছে। জিজ্ঞেস করলাম হবু বরের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিস?” বলল হ্যাঁ।লাজুক হেঁসে বেড়িয়ে গিয়েছিল। আমি জানতাম ওর হবু বর প্রায়ই হস্টেলে ফোন করে অদিতির সাথে কথা বলে। অদিতিও আস্তে আস্তে ওর প্রেমে পড়ছে সেটা আর বলে দিতে হয় না। আমাকে অদিতি এত সহজে ভুলে যাচ্ছে এটা অভিমানের মতন কাজ করলেও যা হচ্ছিল ভালোই হচ্ছিল। সেদিন অনেক রাত করে অদিতি হস্টেলে ফিরেছে। আমি খেয়ে দেয়ে ডাইরি লিখে আরেকপ্রস্থ পড়তে বসে ছিলাম। এখনও ফিরছে না দেখে একটু চিন্তাই হচ্ছিল অদিতির জন্য। শেষে দেখলাম প্রায় রাত সাড়ে ১২ টায় মেয়ে ফিরল। আজ আমাদের ভোদকা খাওয়ারও কথা ছিল। শম্পা ডিনারের পর অনেকক্ষণ ধরে অদিতির জন্য অপেক্ষা করে শেষে ক্যারির সাথে নিজের রুমে ফিরে গেল। ও যখন ঘরে ঢুকল ঠিক তখনই লক্ষ্য করেছি ওর চোখে মুখে একটা চাপা উত্তেজনা মাখা আনন্দের ভাব। কিছু যে একটা হয়েছে সেটা একটা বাচ্চাও দেখে বলে দিতে পারবে। ও আমার সামনে ড্রেস চেঞ্জ করে বিছানায় বসার পর আমি গিয়ে ওকে চেপে ধরলাম। এই কি হয়েছে রে? বেশ খুশি খুশি ভাব?” ও একটা বেশ লাজুক লাজুক মুখ করে আমাকে বলল ছেলেটা আজকে আমাকে প্রেম নিবেদন করেছে। আমি হ্যাঁ বলে দিয়েছি। জানিস আমাকে বেশ কয়েকটা চুমু দিয়েছে। গালে কানে গলায় আর হাতে। কি অসভ্য জানিস রেস্টুরেন্টে বসে বসে চুমু খেয়েছে। যত বলছি থাম। কিছুতেই থামে না। আমার প্রেমে পুরো পাগল। ছেলেটা খুব ভালো জানিস। আমাকে খুব ভালবাসবে।“ “হুম এত তাড়াতাড়ি আমাকে ভুলে গেলি খচ্চড় মেয়ে। নতুন ছেলে কি পেলি আমাকে লাথ মারলি শালা শয়তান মেয়ে। দেখাচ্ছি মজা তোকে দাঁড়া। ওর পিঠে আমি কপট রাগ দেখিয়ে একটা কিল মারলাম। যাক মেয়েটার তাহলে একটা সদগতি হল। নিশ্চই খুব ভালো ছেলে হবে। বললাম নে ভালোমন্দ খেয়ে এসেছিস, এইবার ঘুমাগে পেছন উল্টে। আমি আরেকটু পড়ে নি। বুঝলাম আজ ও ভীষণ শান্তিতে আছে। কারণ বিছানায় পড়তেই দেখলাম ঘুমিয়ে পড়ল। ঘন ঘন নিঃশ্বাস পড়া শুরু করেছে। আমি পড়ায় মন দিলাম। যখন শুলাম আমার মন আমাকে বলছিল গান্ডু একটা তুই। দেখ আবার তুই একলা হয়ে গেলি। আমাকে কেউ ভালোবাসে না। একযুগ হয়ে গেছে অদিতির সাথে শুয়ে। এই কদিনে কেউ আমাকে একটা চুমুও খায়নি। ছেলেগুলো ফ্লার্ট করতে আসে কিন্তু সাহস নেই একটারও। আমি কি ওদের চিবিয়ে খেয়ে নেব নাকি? এরপর মাঝে মাঝেই অদিতি এসে ওর হবু বরের গল্প বলবে আর আমি জ্বলে পুড়ে মরব। আমিও পুরুষের সান্নিধ্য চাই। যে করেই হোক। আমি এখন হাঁসফাঁস করছি একটু উষ্ণতার জন্য। আমি এখন ডেস্পারেট। তবে আমি এখনই বিয়ের পিড়িতে বসতে চাই না।ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখলাম একটা ছেলে আমার দিকে ছুটে ছুটে আসছে, আমাকে যখনই জড়িয়ে ধরতে যাচ্ছে তখনই আমার আর ওর মাঝে কোথা থেকে যেন অদিতি এসে দাঁড়িয়ে পড়ছে, ছেলেটা যতবার আমাকে চুমু খেতে যাচ্ছে সব চুমু গিয়ে পড়ছে অদিতির গালে। উদ্ভট সব স্বপ্ন, বাব্বা। ঘুম ভেঙে গেল। দেখলাম সাড়ে তিনটে বাজে। উঠে জল খেয়ে একটু ঠাণ্ডা হয়ে আবার শুয়ে পড়লাম। এবার আর ঘুম ভাঙল না।
 
যদিও আমার মন চাইছে ছেলের ছোঁয়া কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষা এখন দোর গোঁড়ায় চলে এসেছে। মাইক্রসফট ওয়ার্ডের এই ডক টা ১০১ পাতায় পৌঁছেছে, আর আমি যখনকার কথা বলছি তখন আমি ভাবছিলাম কি করে এই ঘটনা বহুল সাড়ে ৪ বছর যেন দেখতে দেখতে কেটে গেল। ভালো বন্ধু হল। আমার অনেক পরিবর্তন হল, শরীরে মনে। একসময় আমার থেকে আমার বন্ধুকে কেউ কেড়ে নিল। আমার পারিবারিক জীবনেও অনেক পরিবর্তন। আমার বাড়ি ফেরার পথ অলিখিত ভাবে এখন আমার সামনে বন্ধ। না এইবারে আর মিনিস্কার্ট পড়ে নাভি আর বুকের খাঁজ দেখিয়ে সাজেশন জোগাড় করতে হয়নি। প্রিপারেশন বেশ ভালোই ছিল। পরীক্ষা এল এবং চলে গেল। জীবনে একটা ভালো কাজ সম্পূর্ণ করলাম। এখন দুটো কাজ। এক, ইন্টারনশিপ করে অভিজ্ঞতা লাভ, দুই মাস্টারস করা। কিন্তু একটা প্রেম ও চাই। শারীরিক হলেও ক্ষতি নেই। তার সাথে মানসিক হলে তো ভালোই। আমি একটু গরম ছোঁয়া চাই। কবে বিয়ে হবে, কবে একটা ছেলে আমাকে ছোঁবে সেই আশায় বসে থাকলে আর দেখতে হবে না। আর আমি এখনই বিয়ে করব না। আর আমার বিয়ে দেবেই বা কে। আমি রুরাল ইন্টার্নশিপ পেয়েছিলাম। আমার কিছু করার ছিল না। এটা একটা জঘন্য ব্যাপার, যে এই বাঁশ টা খেয়েছে সে ছাড়া আর কেউ আমার দুঃখ বুঝবে না। অবশ্য কেউ কেউ এটাকে খুবই পছন্দ করে। আমি আবার সত্যি বলতে কি এখন কোলকাতার ডিসকমফর্ট ছেড়ে বেশী দিন বাইরে থাকতে পারি না। লোড শেডিং, ট্র্যাফিক জ্যাম, সব কিছুর জন্যই লাইন দেওয়া আর কেউ সেই লাইন ভেঙে এগোলে তাকে আচ্ছাসে গালি দেওয়া, বাসে ট্রামে ছেলেদের অশ্লীল চাহুনি আর রাস্তা ঘাটে তাদের অশ্লীল মন্তব্য, পাবলিক প্লেসে প্রয়োজনের থেকে একটু বেশী শরীর দেখিয়ে আনডিউ সুযোগ নেওয়া , এইসব অস্বস্তি থেকে বেশীদিন দূরে আমার থাকতে আর ভালো লাগে না। আর হ্যাঁ, যেখানে যেতে হবে ভোদকা পাওয়া যায় সেখানে? ভোদকা ছাড়া থাকব কি করে? শালা রুরাল ইন্টার্নশিপের মা কি আঁখ। ইন্টার্নশিপের আগে মা অনেকবার বাড়িতে যেতে বলেছিল। কিন্তু আমি যাইনি। ঠিক করেছিলাম এখান থেকেই রওয়ানা দেব। জায়গাটার বর্ণনা দেব, নাম নাই বা বললাম। অদিতি আর শম্পা দুজনেরই কোলকাতায় ইন্টার্নশিপ হয়েছিল। ওদের জন্য সমস্যা নেই। কিন্তু আমার তো পেছনে আছোলা বাঁশ ঢুকে গেছে। অদিতি এখন ওর হবু বরের সাথে প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। আর আমি বসে বসে ব্যাগ গোছাচ্ছি। আমার পড়ানো শেষ। এখন ইন্টার্নশিপের দিন কটা সরকারি স্ট্রাইপেন্ডের ভরসায় চলতে হবে। আমি তো ছাতার মাথা জানিও না আমার সাথে কে কে যাচ্ছে। একা নিশ্চই যেতে হবে না। আমি এমন ক্যালানে মেয়ে যে আমি শালা জানিও না যে ওই গ্রামে আমার সাথে কে কে যাবে। কোথায় যাচ্ছি জানি, আর কোন ট্রেনে বসে যাব জানি, ব্যস এইটুকু। অবশ্য একটা ব্যাপার এক্ষেত্রে ভালোই হয়েছিল। আমি কয়েকদিনের জন্য অদিতির থেকে আলাদা থাকতে চাইছিলাম। ওর প্রেমের হাবুডুবু খাওয়া ভাবটা আমি ঠিক নিতে পারছিলাম না। বেড়িয়ে পড়লাম ট্রেনে চেপে গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে। আমার ট্রেন ছিল রাত্রে। ট্রেন পৌঁছানোর কথা ছিল ভোরে। কিন্তু পৌঁছালো প্রায় ৪ ঘণ্টা লেট করে। শালা আমি ট্রেনে চরলেই ট্রেন লেট হয়ে যায়। কে জানে রেল বিভাগ আমাকে এত খারাপ চোখে দেখে কেন। যাই হোক। পৌঁছে দেখলাম স্টেশন প্রায় খালি। খুব একটা বেশী লোকজন নেই। অনেকগুলো চিন্তা মাথায় ঘুরছে এখন। বিদ্যুৎ পৌঁছেছে তো এখানে। খাওয়া দাওয়ার কি হবে। সব থেকে বড় কথা জল। আমি বাজে জল খেলেই পেট খারাপ। তখন আবার ডাক্তারের জন্য ডাক্তার ডাকতে হবে। যেখানে থাকার বন্দবস্ত হবে সেখানে কি সুযোগ সুবিধা পাব? ভাবতে হাঁসি পায়, যেন ইন্টার্নশিপের জন্য নয়, হানিমুনে এসেছি। তবে সবথেকে বড় চিন্তা এই মুহূর্তে হল আমার কলেজের আর কে কে এসেছে এখানে। আমি একা হলে পুরো কেস খেয়ে গেছি। তবে এমন হয় বলে কখনও শুনিনি। টিকেট কালেক্টরের হাতে টিকিট দিয়ে বেড়িয়ে দেখলাম প্রচুর রিক্সা দাঁড়িয়ে আছে সারি বেঁধে। কিন্তু প্যাসেঞ্জার নেই। যারাই আমার মতন ট্রেন থেকে নেমে ষ্টেশনের বাইরে আসছে তাদের সবারই ষ্টেশনের পাশে একটা জায়গায় সাইকেল রাখা আছে। ৫০ পয়সা করে একজনের হাতে দিয়ে সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে। আমাদের বাড়ি যেখানে ছিল সেখানেও এই ব্যাবস্থা ছিল। নতুন কিছু নয়। আর যাদের সাইকেল নেই, তারা বেড়িয়েই দৌড় লাগাচ্ছে ষ্টেশনের কিছু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা একটা বাসের দিকে। বাসটা ভিড়ে উপচে পড়েছে, কিন্তু কোলকাতার মতন এখানেও যতক্ষণ বাসে এক সুতো জায়গাও থাকবে বাস নিজের জায়গা থেকে একটুও হেলবে না। পরে শুনেছিলাম যে এখানে বাসের সংখ্যা খুব কম কারণ লোক বেশী নেই। তাই ওরা বাসের টাইমিং এমন করে রেখেছে যে বাসটা ঠিক ষ্টেশনের সামনে সেই সময়েই এসে পৌঁছায় যখন একটা বা একাধিক ট্রেন এসে পৌঁছায়। এখানকার লোকেরা ট্রেন থেকে নেমে সোজা গিয়ে বাসে উঠবে। তারপর বাস ছাড়বে। ওদের মোটামুটি আন্দাজ আছে কখন কত লোক হওয়ার কথা। অতগুলো লোক না হওয়া অব্দি চাকা ঘুরবে না। ওই বাসে যাওয়ার কোনও প্রশ্ন ওঠেনা। আমি ঠিক করলাম রিক্সাতেই যাব। এখানে এসে একজনের সাথে দেখা করে হাসপাতালে যাব। তারপর সব ব্যবস্থা হবে। শুনেছি হাসপাতালটা নাকি খুব একটা দূরে নয়। কাছেই। এত যখন রিক্সার প্রাচুর্য তখন চিন্তা করে লাভ নেই। ভাবলাম স্টেশন থেকে বেরনর আগে এক কাপ চা খেয়ে নি। একটা চায়ের দোকান দেখলাম। গিয়ে চা চাইলাম। সমস্যা হল সবাই এমন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে দেখল যেন তারা ভুত দেখছে। পরে অনুমান করেছিলাম সচরাচর বোধহয় এখানে কোনও মেয়ে একলা এসে এইভাবে চা খায় না এতগুলো ছেলের মাঝে দাঁড়িয়ে। আমার বেশভুসা সব কিছুই জানান দিচ্ছে যে আমি এদের থেকে আলাদা, অন্য জায়গা থেকে এসেছি, আর সেটাই আমার অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাড়াতাড়ি চা খেয়ে বাইরে এসে লাইনের সবথেকে আগে দাঁড়িয়ে থাকা রিক্সাওয়ালাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম যে অমুক জায়গায় যাবে কিনা? বলল যাবে। আমি জানি বাইরের লোকদের কে রিক্সাওয়ালারা ঠকানোর সুযোগ ছাড়ে না। তাই বিজ্ঞের মতন ভাব দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম দাদা কত ভাড়া?” বলল ৫ টাকা।যাক বাঁচা গেল। যখন জায়গাটা অচেনা তখন রিক্সা ছাড়া গতি নেই। আর সাথে দুটো বড় বড় লাগেজ আছে। যদি পাশের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্যও ৫ টাকা নেয় তাও সই। বললাম চল। কতদূর জায়গাটা?” বলল খুবই কাছে।যাক বাঁচা গেল। আমি অবশ্য এমনটাই শুনে এসেছি যে খুবই কাছে। আমি উঠে বসলাম আর রিক্সাওয়ালা ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করে রিক্সা ছুটিয়ে দিল। দেখলাম জনশূন্য একটা বাস স্ট্যান্ডের পাশ দিয়ে রিক্সাটা বেড়িয়ে গেল। একটা পাকা বাজারের মতন জায়গা ছেড়ে রিক্সাটা একটা ফাঁকা কাঁচা রাস্তা ধরল। শালা এতো চলেই চলেছে। যাচ্ছে কোথায়। যতবার জিজ্ঞেস করি আর কতদূর, বলে এইতো কাছে। শালা শেষ ১০ মিনিটে এইটা ৪ বার শুনে ফেলেছি কমপক্ষে। মনে হচ্ছে আমি যেন পিকনিকে যাচ্ছি। রাস্তা আর শেষ হয় না। আর আমার চালক যেন ভগবান ব্রম্ভা। সৃষ্টিকর্তার কথা বলছি আর কি। ওনার যেমন এক মুহূর্ত মানে আমাদের কাছে কয়েক বছর, ঠিক ওনার মতই এরও একটু কাছেমানে আমাদের মতন সাধারণ মানুষদের কাছে অনেক অনেক দূর। শালা বুঝতে পেরেছে আমি বাইরের মেয়ে। কোনও বদ মতলব নেইতো এই বুড়োটার? এক এক সময় জন মানব শূন্য এক একটা রাস্তা পেড়িয়ে আবার মোড় ঘুরে অন্য রাস্তা নিচ্ছে। রাস্তায় কয়েকজন সাইকেল চড়া লোক দেখে তাও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিলাম। মাঝে কয়েকটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামও পাড় করে এল। মালটা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে কোথায়। অনেক কু চিন্তা মাথায় আসতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু এখন কিছু করার নেই। প্রায় পুরো ছড়িয়ে থাকা গ্রাম টা ছাড়িয়ে আরও অনেক দূর গিয়ে শেষে দূরে দেখতে পেলাম একটা সাদা বড় বাড়ি। দূর থেকে না বুঝতে পারলেও পরে দেখেছিলাম হাসপাতালটার ব্যপ্তি ভালোই বড়। একটাই হাসপাতাল এখানে। পুরো লোকালয়ের বাইরে। শুধু বাইরেই নয় , লোকালয় থেকে অনেক দূরে। অবশেষে রিক্সাটা গিয়ে হাসপাতালের সামনে পৌঁছাল। চালকের অবস্থা দেখে বুঝতে পারলাম কাঠ ফাটা রোদ্দুরে এতটা পথ আসতে আসতে ওর ও পুরো ফেটে গেছে। আসলে লোক হয় না বলে ৫ টাকাতে এতদূর চলে এল। কোলকাতা হলে আরামসে ৩০ থেকে ৪০ টাকা চাইত। আর এদের এই কাছেইব্যাপারটা খুবই সন্দেহজনক ব্যাপার, সেটা বুঝতে পেরেছি। আমি একটা ২০ টাকার নোট বার করে ওনার হাতে দিয়ে দিলাম হাঁসি মুখে। উনি আমার লাগেজ নামিয়ে, ঘাম মুছে টাকাটা হাতে নিয়ে বলল সকালে ভালো লোক হয়নি, তাই বেশী খুচরা নেই। দেখছি কত আছে। নইলে আপনাকেই খুচরা দিতে হবে দিদিমণি।আমি ওনাকে বললাম দাদা রাখুন ওটা, কিছু ফেরত দিতে হবে না।দেখলাম উনি আমতা আমতা করছেন, ৫ টাকার জায়গায় ২০ টাকা, মনে হয় আজ অব্দি কেউ দেয়নি। আমি বললাম এইসব ছাড়ুন। একটা কথা বলুন আরও ৫ মিনিট এখানেই দাঁড়াবেন? আমি একটু ভেতরে গিয়ে খোঁজ করে আসি। পরে আবার লাগেজ নিয়ে হয়ত কাছেই (হাহা আবার কাছেই) কোথাও যেতে হবে।ওর বত্রিশ পাটি দাঁত দেখা গেল। বলল হ্যাঁ আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি। আপনি জান দিদি। আপনার কেউ ভর্তি আছে?” বললাম না। আসলে আমি ডাক্তার।উফফ আমার বুকটা যেন আত্মবিশ্বাসে ভরে গেল। বলল উফফ ডাক্তার দিদি, চলুন আপনার জিনিস গুলো পৌঁছে দি। আমি ওনাকে ক্ষান্ত করে বললাম দাদা দাঁড়ান, আগে খবর নি, আপনি শুধু লাগেজ গুলো হাসপাতালের সামনে ঢুকিয়ে দিন।
 
আমি ভেতরে গিয়ে বসের সাথে দেখা করার কথা বললাম। মানে ওনার নাম আমাকে আগে বলা ছিল। উনি একজন সার্জেন। এখানে কি করছেন সেটা মা গঙ্গাই জানেন। উনি ওটি তে ছিলেন। এখানে আমার সবকিছুতেই জ্ঞান লাভ করতে হবে হাতে কলমে। একবছর সময় আছে আমার হাতে। এক কথায় ইন্টার্নশিপের ব্যাপারটা হল সর্ব ঘটের কাঁঠালি কলা হওয়ার মতন ব্যাপার। যাই হোক কিছুক্ষনের মধ্যে দেখলাম উনি বেড়িয়ে এসেছেন। আমাকে আপাদমস্তক যেন একবার মাপলেন (কোনও সেক্স নেই এই কথায়। তাই ভাববেনও না।)। এখানে তো চট করে কোনও মেয়েকে পাঠানো হয় না।তুমি কি করে?“ ওনার বাকি কথাটা অসমাপ্ত রয়ে গেল কারণ একজন নার্স এসেছে ওনার সাথে কথা বলতে। আমাকে ঘাড় না ঘুরিয়েই বললেন তোমার নাম আমি শুনেছি।নার্সকে বললেন ও হল ….” আমার বসের বয়স প্রায় ৫০ ছুঁই ছুঁই। ভীষণই ভদ্র সেকথা বলতেই হয়। ডুবে আছেন যেন কাজের সমুদ্রে। নার্স সামান্য হেঁসে চলে গেল। বললেন কাল থেকে জয়েন কর। এখন তো এটাই তোমার বাড়ি ঘর। অমুক জায়গায় তোমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। একটু থিতু হয়ে নাও। কাল কিন্তু একদম টাইমে আসা চাই। আমি দেরী সহ্য করব না। অনেক দায়িত্ব এখানকার। আমি মিন মিন করে জিজ্ঞেস করলাম স্যার জায়গাটা কত দূরে? এটাতো প্রায় পুরো লোকালয়ের বাইরে। তাই, মানে, আর কি?“ উনি একটুও চিন্তা না করে বললেন শোনো, এটা লোকালয়ের বাইরে কারণ লোকালয়ের ভিতরে হাসপাতাল বানানোর মতন এত বড় জমি পাওয়া যায় নি। এমনটাই বলা হয়েছে আমাকে। কয়েকদিন থাক, সব জানতে পারবে। সময় আছে হাতে। তবে মাঝে বদলি হয়ে গেলে বলা যায় না। তবে সন্ধ্যার পর আর গ্রামের দিকে যাবে না। বাকিদেরকেও বলে দিও এটা। ওখানে মেসের মতন খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা আছে। খুবই শস্তা। বাইরে খাওয়ার তেমন ব্যবস্থা নেই। আর, সেই চেষ্টাও কর না। তোমার জন্য দুপুরের খাবার কথা বলে দিয়েছি। কোনও দিন না খেলে একজন লোক এসে ওনাকে ডেকে নিয়ে গেল। উনি যেতে যেতে বললেন চলে যাও। কিসে এসেছ?” বললাম রিক্সায় স্যার।বললেন ওই রিক্সায় চেপে চলে যাও চটপট। আজকের দিনটা গোছাও। ওখানে না পোষালে নদীর ধারে তাবু খাঁটিয়ে মশার কামড় খেতে খেতে শুতে হবে। যাও খেয়ে নাও। কাল কিন্তু টাইমে আসবে, কি করে আসবে জানি না। কিন্তু আসতে, “ বাকি কথাটা ওনার সাথেই গায়েব হয়ে গেল। অগত্যা। প্রায় দৌড়ে বাইরে বেড়িয়ে এলাম। রিক্সাটা চলে গেলে প্রচুর কেস খাব। কাউন্টারে আমার লাগেজ রেখে গিয়েছিলাম। এসে আগে দৌড় লাগালাম রিক্সা ধরার জন্য। না ভদ্রলোক যান নি। আমার জন্যে অপেক্ষা করছেন। বললাম দাদা, শুনছেন, লাগেজ ওঠান, অমুক জায়গায় যাব।বলল সে তো এই কাছেই।ও যতক্ষণ আমার লাগেজ ওঠাচ্ছিল আমি মনে মনে ভাবলাম স্যারও বলেছেন কাছে, তাই এটা নিশ্চই কাছেই হবে, মানে কাছে বলতে যা আমরা সাধারণ মানুষ বুঝে থাকি। বললাম কত ভাড়া নেবেন?” বলল কিছু দিতে হবে না এমনি পৌঁছে দিচ্ছি।আবার শুরু হল রিক্সা জার্নি। আবার সেই একই অবস্থা, চলেছি তো চলেছি। উত্তম বাবু আর সুচিত্রা ম্যাডামের বার পাঁচেক এই পথ যদি না শেষ হয়গান শেষ হয়ে যেত এবং বিজ্ঞাপন সমেত, কিন্তু আমি আমার মেসে পৌঁছালাম না। কতক্ষণ জানি না চলেই চলেছি, শেষে পৌঁছালাম। আমি হ্যান্ড ব্যাগ খুলে টাকা বের করছি দেখে ভদ্রলোক কাঁচুমাচু মুখ করে বললেন থাক দিদি লাগবে না।তবু আমি ওনার হাতে আরেকটা ২০ টাকার নোটটা গুঁজে দিলাম। রিক্সার ক্যাঁচ ক্যাঁচ আওয়াজ শুনে জনা তিনেক ছেলে বেড়িয়ে এসেছে একতলার একটা ঘর থেকে। বুঝলাম এখানে রিক্সা খুব একটা আসে না। হ্যাঁ এইবার যেন স্বস্তি পেলাম। চেনা মুখ দেখলাম এতক্ষণে। আমার অবস্থা এতক্ষণ রিক্সা চড়ে পুরো কাহিল। আরেকজন লোক ছিল যাকে টাকা দিতে হয় আর সেই সব বন্দবস্ত করে। সেই আমার লাগেজ গুলো আমার জন্য বরাদ্দ করা ঘরে পৌঁছে দিল। ওদের মুখ দেখে মনে হচ্ছিল আমাদের যেন বনবাসে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এমন ভাবার কোনও কারণ নেই যে আমাদের রেজাল্ট খারাপ তাই আমাদের এখানে পাঠিয়েছে। আমাদের ৪ জনেরই রেজাল্ট যথেষ্ট ভালো। পরে শুনেছিলাম আরেকজনের আসার কথা ছিল, কিন্তু সে কোনও একটা ফাঁক ফোঁকর দেখে অন্য জায়গায় পেয়ে গেছে। ব্যাক চ্যানেল যেটাকে বলে আর কি। সেই নিয়ে এই তিনজনের খুব রাগ।
[+] 1 user Likes pcirma's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981 - by pcirma - 18-10-2019, 01:10 PM



Users browsing this thread: