Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981
#10
পরের পর্ব
আমাদের তিনজনেরই চড়ে ছিল। গ্লাস ভর্তি এখনও ভদকা পড়ে রয়েছে। অদিতি আমার পেছনে এসে দাঁড়াল। আমার গলা জড়িয়ে ধরে বলল, “ সোনা তুই কি আবার সেই বোরিং হয়ে যাচ্ছিস? শালা ফুল শয্যায় লোকে কি করে সেই নিয়ে বিয়ে বাড়িতে মজা হয়। আমাদের এত ভাল সুযোগ আছে। আর আমরা এইসব বালের কথা ভেবে টাইম নষ্ট করছি। তোর কথা বুঝতে পারছি। কিন্তু কাল আমি মজা করব। আমাকে বাঁধা দিস না প্লীজ।আমি বলতে বাধ্য হলাম তোকে বাঁধা দিলে তুই যেন কত শুনবি?” হঠাত বাথরুমের দরজায় টোকা পড়ল। মার গলা এল। কিরে তোরা কি করছিস বদের বাসা গুলো?” অদিতি হঠাত উঠে দরজা খুলে দিল। বোধহয় মার গলা শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিল। আমরা গ্লাস গুলো লুকোনোরও সময় পাইনি। অদিতিটা না সত্যি একটা ইয়ে। লাল শাড়ি পরে মা যখন ঘরে ঢুকল আমাদের তিনজনেরই চোখ লাল। আমাদের চোখগুলো মাটির দিকে চলে গেল। আমাদের ভদকা ভরা গ্লাস গুলো মা যেন দেখেও দেখল না। শম্পার কাছে এগিয়ে গেল অদিতির হাত ধরে। দুজনকে হঠাত বুকে জড়িয়ে ধরে বলল থ্যাঙ্কস। তোরা কাল খুব মজা করিস। ওকে একটু সামলে রাখিস। আর কি বলব? তোরা আমার মেয়ের মতন নস। তোরা আমার মেয়েই। ওর থেকে অনেক বেশী বুঝেছিস আমাকে। মদ খেতে হলে খা কিন্তু গলা নামিয়ে মাতলামি কর। আর রুমি, কাদিস না এত।আমার অজান্তে চোখ দিয়ে জল গড়াচ্ছিল। নে দরজা টা বন্ধ করে দে।মা চলে গেল। আমি ছোট হয়ে গেলাম সবার চোখে। এরপর আমরা অনেক্ষণ ভদকা খেয়েছিলাম। কিন্তু সব নেশা নেমে গেছে। মা হয়ত শম্পার কথা গুলো শুনেছে। যা বোঝার বুঝেছে। আমাদের কারোর মুখে কোনও কথা ছিল না। ভেতর থেকে আসছিল না কথা। কান্না বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মনে আছে অদিতি অনেক্ষন ধরে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে যাচ্ছিল। সেদিন রাত্রে আমরা প্রায় আড়াইটা অব্দি ভদকা খেয়েছি। কিন্তু এর পর আমরা প্রায় কোনও কথা বলিনি। আড়াইটার পর টলতে টলতে উঠে সবাই বাথরুম থেকে ফিরে এসে এর ওর গায়ে ঢলে পড়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। আমার মনে আছে অদিতি আমাকে ওর ডান হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে শুয়েছিল। আর কিছু মনে নেই।
 
আমরা আজকেও সবার পরে ঘুম থেকে উঠলাম। ঘুম থেকে উঠেই আয়নায় গিয়ে নিজের চোখ গুলো দেখলাম। না ফোলা ফোলা লাগছে না। কাল রাত্রে যে কেঁদেছি তার ছাপ নেই মুখে। আমরা যখন বেরলাম তখন দেখলাম বেশী কেউ আসেনি। আমরা সবার সাথে খুব হেঁসে কথা বললাম। প্রায় পাঁচবার অদিতি আমাকে এসে জিজ্ঞেস করেছে যে ওকে কেমন দেখতে লাগছে। আর তার থেকেও বড় প্রশ্ন মুখ থেকে মদের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না তো? ওরে গাধা আমি কি করে বুঝব ওর মুখ থেকে মদের গন্ধ বেরচ্ছে কিনা? বেরলে তো আমারও মুখ থেকে বেরচ্ছে। দুপুরে তিনজন যখন একান্তে এলাম শম্পা বলল আমার জিভের টেস্ট বদলে রয়েছে। কিছু একটা করা দরকার। আমার মনে হয় আমাদের মুখ থেকে মদের গন্ধ সবাই পাবে। আমাদের কাল বেশী খাওয়া হয়ে গেছে। আমি বললাম চল বেরই।আমরা বেড়িয়ে গেলাম। অসুধের নাম টা লিখছি না। অনেক গুলো দোকান ঘুরে শেষে পেলাম। খেলাম। এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভাঙল বিকাল সাড়ে ৪ টায়। একদম ঝরঝরে। ওষুধে কাজটা দিয়েছে। উঠেই দেখলাম সাজসাজ রব। আমরাও সাজতে শুরু করলাম। রাহুল কাকু মাকে সাজানর জন্য একজনকে বলেছিল। সে চলে এসেছিল। সবাই আমাদের তাড়া দিতে শুরু করল। আমার মনের ক্লেদ ধুয়ে গেছে। কিন্তু আমি রাহুল কাকুকে সম্মান করলেও কোনোদিন বাবা হিসাবে মানব না। সেটা আমার কাছে পরিষ্কার। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। ওই মেয়েটা ভালোই সাজায়। আমরা তিনজনও ওর হাতে সেজে নিলাম। পুরো বিউটি পার্লারের ব্যাপারটা মিটিয়ে নিলাম। এখন পরের সপ্তাহ অব্দি নিশ্চিন্ত। টাকাটা দিয়েছিল রাহুল কাকু। আজ রাতে তুমি আমার মাকে পাবে, আর সেই মার বড় মেয়ে আর তার বন্ধুদের জন্য এইটুকু করবে না? চলবে না। ও হ্যাঁ সারা দিন দেখলাম রাহুল কাকু আমার মার পিছনে ঘুর ঘুর করছে গায়ে ঘেঁষে। কিছু বলার ছুতোয় সুযোগ পেলেই কখনও কাঁধে আলতো করে হাত রাখছে বা কখনও পিঠে আলতো করে হাত রাখছে। তবে অশ্লীল কোনও কিছু করেছে বলে মনে করতে পারছিনা। মার সাজা শেষ হলে মাকে দেখে আমার মাথা ঘুরে গেল। ঠিক যেন নতুন বউ। দেবী প্রতিমার মতন লাগছে কপালের বড় টিপ আর মোটা করে পরা ঘন সিদুরের জন্য। অদিতি মার চিবুক টিপে ধরে বলল কি লাগছে গুরু।মা কপট রাগের ভাণ করে বলল দূর হ আসভ্য কোথাকার।
লোক আসা শুরু হল। আমরা ভেবেছিলাম তেমন লোক হবে না। কিন্তু এ তো দেখি সমুদ্র। পরে শুনেছিলাম রাহুল কাকু নাকি সব হিসাব করেই রেখেছিল। যারা এসে সবাই প্রায় অচেনা। আমাদের দিক থেকে গুটিকয়েক আত্মীয় এসেছিল। কিন্তু ওরা সংখ্যালঘুদের ভিড়ে হারিয়ে গেছিল। মধ্যমণি ছিল আমার মা। সবার সাথে হেঁসে কথা বলেই চলেছে। এত যে হাসছে ক্লান্ত হচ্ছে না? এনার্জি প্রচুর স্বীকার করতেই হয়। আমি আর আজকে নিজে থেকে মা যেখানে ছিল সেখানকার ধারে কাছে যাই নি। বেশী আলাপ করতে আমার ভালো লাগে না। আমি কি দেশের প্রধান মন্ত্রী নাকি যে লোকে আমাকে চিনলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাবে। দেড় ঘণ্টা কেটে গেলে। লোকের ভিড় বাড়ছে। খাওয়া দাওয়া শুরু হয়ে গেছে। প্রথম ব্যাচ। হয়ে যাওয়ার পর দেখলাম ওই পিসি আর ওই ভদ্রলোক সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল একটা গাড়িতে চড়ে। ভদ্রতার খাতিরে প্রণাম করতে হল বিদায়ের সময়। আমাকে দুজনেই ওদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য নেমন্তন্ন করে গেল। যাওয়া যে হবে না সেটা আমি জানি। ওরা বোধহয় জানে। এই সব অনুষ্ঠানে সবাই সবাইকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। যে করছে সেও জানে এরা আসবে কিনা সন্দেহ আর যাকে করছে সেও হয়ত মনে মনে জানে যে কখনও যাওয়া হবে না। অদিতি বলল চল বোরিং লাগছে।আমি জিজ্ঞেস করলাম চল মানে কোথায় চল?” অদিতি বলল মানে এখানে ভিড়ের মধ্যে আর ভালো লাগছে না। বাইরে হেঁটে আসি। শম্পারও দেখলাম তাই মত। আমিও আর না করলাম না। তিনজনে ভিড় ছেড়ে বাইরে বেড়িয়ে গেলাম। শম্পা বেড়িয়ে এসে বলল, এত হই হট্টগোল থেকে বাড়ি ফিরে গিয়ে ফাঁকা ফাঁকা লাগবে। ফাঁকা ফাঁকা যে আমরও লাগবে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু সেটা আর ভেঙ্গে ওদের বললাম না। কিছু দাঁড়িয়ে তিন চারটে ছেলে সিগারেট খাচ্ছিল। আমরা ওদের চিনিনা। ওরাও আমাদের চেনে না। ওদের কিছু কথা বার্তা শুনে আমাদের কান খাড়া হয়ে গেল। ছেলে গুলোর বয়স ত্রিশের নিচেই হবে। একজন বলল রাহুলদা খাসা জিনিস পটিয়েছে মাইরি।আরেকজন বলল সে আর বলতে। ক্যাপা আছে বলতেই হবে। প্রথমজন বলল একবার পেলে না।পরের জন বলল রাহুলদাকে খুশিতে ভরপুর লাগছে। হবে না। শালা রাত্রে যা ঠুসবে না!!সবাই হাহা করে হেঁসে উঠল। এই কথাগুলো অশ্লীল হলেও বিয়ে বাড়িতে যারা আসে তাদের মধ্যে এইসব কথা বোধহয় হয়েই থাকে। শম্পা বলল কিছু ভাবিস না। এটা নর্মাল ব্যাপার।বললাম আমি কিছু ভাবছি না। কাল তোরা যা বুঝিয়েছিস সবটাই বুঝেছি। চিন্তা করিস না।অদিতি অনেকক্ষণ চুপছাপ কি একটা ভাবছিল। হঠাত বলল এই শ্যম্পু ডার্লিং একটা মজা করবি। কিন্তু সাবধানে করতে হবে। আমি বললাম কি রে?” অদিতি বলল তোর জন্য নয় বেবি। তুই গুড গার্ল।শম্পাকে বলল এই ফুলশয্যায় কি হয় আজ শুনব।আমি বললাম আচ্ছা তোর কি মাথা পুরোটাই গেছে। অদিতি বলল কে রে বাল। তোর ইন্টারেস্ট আসে না জানতে যে ফুলশয্যায় কি কথা বলে কি করে জানতে। আমার কিন্তু বস করে। শম্পা তুই?” শম্পা বলল নেকি ওউর পুছ পুছ। আমার তো দেখতে ইচ্ছে করে। কিন্তু দেখা তো যাবে না। শুনেই তৃপ্তি নেব। অদিতি বলল সবাই বাইরে থেকে মশকরা করবে। কিন্ত শুধু আমরাই শুনব।বলে আমাদের দিকে তাকিয়ে চোখ মারল। আমার মাথাটা ভোঁ ভোঁ করছে। বুঝতে পারছি ওরা কি বলছে। বাথরুমে গিয়ে নিঃশব্দে কান পাততে চাইছে। আমি জানিনা। মেয়েটা দিনকে দিন অসভ্য হয়ে যাচ্ছে। ফুলশয্যায় কি হয় সেটা জানার কৌতূহল সবারই থাকে। কিন্তু এখনা কনে আমার মা কিনা তাই আমার তেমন উৎসাহ আসছে না। বরং লজ্জাই লাগছে। অদিতির হাব ভাব কেমন যেন অসহ্য। আমার সামনেই এসব বলছে। তাও আবার কোনও ভনিতা ছাড়া। ইচ্ছে করছিল কানের গোরায় একটা আচ্ছা করে দি। কিন্তু ওদের থামানো আমার কর্ম নয়। চারপাশে যা চলছে তার অনেক কিছুই আমি চাইছি না। কিন্তু কি বা করতে পারছি। ওরা বিয়ে বাড়ির মজা নিচ্ছে। আমার এই অসভ্য বন্ধুগুলোও তার ব্যতিক্রম নয়। কাকে ছেড়ে কাকে দোষ দেব। দেখি ওরা আজ আবার কি করে। আমি ওদের বললাম তোর অসভ্যতা করবি, আমি বারণ করলেও শুনবি না। কিন্তু ধরা পড়ে গেলে কি হবে ভেবে নিস। অদিতি আমাকে বলল তুই না মাইরি বড্ড ভয় পাস। সত্যি বলছি এটা আমার মা হলেও ফুলশয্যায় কি হয় সেটা জানার আমার কৌতূহল হত। আসল মজাটাই তো সেটা। তুই ঘুমাস আমি আর শম্পা কান পাতবই পাতব। তবে জানি না কিছু শুনতে পাব কিনা। আর যাই বলিস না কেন একমাত্র আমাদের সেই সুযোগ আছে। বাকিরা শুধু বাইরে থেকে ফাজলামি করবে আর কমেন্ট পাস করবে। বাল ছিঁড়ুক। আমরা ফুর্তি করব। তবে হ্যাঁ। যা করব নিঃশব্দে। এটা মনে থাকে যেন। শম্পা বলল কিছু মনে করিস না। বিয়ে বাড়িতে এসে মজা করব না তাই কখনও হয়। আর আজকের মজাটাই তো আসল। তীরে এসে তরী ডুবে যাবে সেটা হতে দেওয়া যায় না।অদিতি ওর সাথে হাত মিলিয়ে বলল একদম। চল ডার্লিং এইবার ভেতরে যাই। খেতে বসতে হবে।
 
না খাওয়া তখন হল না। অনেক ভিড় দেখে সরে পড়লাম। আমাদের অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে বুঝতে পারলাম। অদিতি আর শম্পা খেয়ে নিতে পারে। কিন্তু আমি পারব না। চাই বা না চাই এটা আমারই বাড়ির বিয়ে। এখানে সবার আগে বসে যাওয়াটা ভালো দেখাবে না। ওরাও আমাকে ছেড়ে বসল না। যাদের খাওয়া হয়ে যাচ্ছিল তাদের কথাবার্তা থেকে বুঝতে পারছিলাম যে খাওয়া দাওয়া বেশ ভালোই হয়েছে। শেষে আমাদেরও সময় হল। আমরা খেতে বসে গেলাম। শেষ ব্যাচ। মা আর রাহুল কাকুও খেতে বসেছে। খাওয়া দাওয়া সত্যি ভালো। আমিও প্রশংসা না করে পারলাম না। আমাদের রাহুল কাকু বারবার বলছিল ভালো করে খেতে।খাওয়া দাওয়া হল। আমরা বাড়ি ফিরে এলাম। বাইরে তখন ভীষণ আড্ডা চলছে। আমরা বাথরুমের দরজাটা ভেতর থেকে লাগিয়ে দিলাম। আমি ডাইরি নিয়ে বসলাম। অদিতি আর শম্পা একথা সেকথা বলে সময় কাটাচ্ছিল। আমি জানি ওদের মন পড়ে আছে ওই ঘরে কি হয় সেটা জানার জন্য। আজ আমার ডাইরিতে মন বসছিল না। আজ বাবার ছবির সামনে রাহুল কাকু মার ওপর নিজের অধিকার সিদ্ধ করবে। বাবা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে। বাইরের শব্দের ওপর অনেকক্ষণ খেয়াল ছিল না। হঠাত দেখলাম অদিতি লাফিয়ে উঠে লাইট নিভিয়ে দিল। আমি বললাম কি হল রে?” ও আমার মুখটা চেপে ধরল। ফিসফিস করে বলল চুপ। একটাও কথা বলবি না। আমরা তিনজন নিঃশব্দে কিছুক্ষণ বসে রইলাম। বাইরে আড্ডা ভেঙে গেছে বুঝলাম। সবাই বেড়িয়ে গেল। পাশের ঘরের দরজার শব্দ পেলাম পরিষ্কার। এই ঘর থেকে কিছু শুনতে পাওয়া যাবে না জানি। তবু অদিতি আর শম্পা আমাদের দিকের দরজাটাতেই গিয়ে কান পেতে দাঁড়িয়ে থাকল, মানে বাথরুমের। একসময় আমার কাছে এসে কানে ফিসফিস করে বলল আয়। এত মেদা মেরে থাকিস না। আমাকে নিঃশব্দে প্রায় জোড় করে দরজায় টেনে নিয়ে গেল। ইচ্ছা না থাকলেও শব্দ করলাম না। আমি মজা পাচ্ছি না বলে ওদের মজা নষ্ট করে কি লাভ। 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981 - by pcirma - 18-10-2019, 12:54 PM



Users browsing this thread: