Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981
#9
পরের পর্ব
একটু পরে সব গোছগাছ হয়ে গেলে পরে অদিতি আমার ঘরে ফিরে এল। বলল তোর মা আর কাকুর মধ্যে বেশ একটা প্রেম প্রেম বাতাবারন। শম্পা এতক্ষণ চুপ করে বসেছিল। ও বলল নতুন বিয়ে করেছে তো এখন একটু বেশী প্রেম থাকবে। দেখবি দুজন দুজনকে নিয়ে বিভোর থাকবে।এইটা বলে আমাদের দিকে তাকিয়ে একবার অশ্লীল ভাবে চোখ মারল। আমি বললাম এই বয়সে এইসব ন্যাকাপনা পোষায় নাঅদিতি ক্ষেপে উঠল কি বোকার মতন কথা বলছিস বল তো? ওদের কি এমন বয়স হয়েছে যে নিজেদের জীবন ভোগ করতে পারবে না। নিজের মার সুখের জন্য এইটুকু মানতে পারছিস না।আমিও মনে মনে জানি অদিতি ঠিকই বলছে। তেমন বয়স হয়নি ওদের। আর আমি হয়ত অবুঝের মত ব্যবহার করছি। রাহুল কাকু বেশ শক্ত সামর্থ্য আছে। উচ্চতায় আমার বাবার থেকেও একটু বেশী। যদি এটা আমার মার ব্যাপারে না হত তাহলে হয়ত আমিও বলতাম যে দুজনকে মানিয়েছে ভালই। মার উচ্চতা রাহুল কাকুর বুক অব্দি। অনেক দিন পর মাকে লালরঙের শাড়িতে খুব সুন্দর লাগছিল। মায়ের মুখে এত লাবণ্য অনেক দিন দেখিনি। নতুন বউয়ের মত লাল হয়ে আছে মুখ। গায়ের চামড়া থেকে যেন একটা আভা বেড়চ্ছে। অদিতির কল্যাণে অয়াক্সিং করায় অনেক পরিষ্কার আর সুন্দরী লাগছে। যদি এরপর থেকে নিজের প্রতি খেয়াল রাখে যেমন আমি এখন রাখি তাহলে ভালই। এখন তো আর টাকার অভাব নেই। শুনেছি রাহুল কাকু নতুন ব্যবসা শুরু করেছে এবং বেশ ভালই চলছে। মাকে বিয়ের আগে যখন সাজানো হচ্ছিল তখন অদিতিকে বলেছিল থাঙ্কু, তোর জন্য আজ যেন নিজেকে নতুন করে ফিরে পেলাম। বয়স যেন অনেকটা কমে গেছে।অদিতি মাকে ফিসফিস করে বলেছিল আসার সময় যা বলেছি মনে রেখ কাকিমা, এর পর থেকে নিজের প্রতি একটু যত্ন নিও। কাকু বেশী আদর করবে।বলে খিলখিল করে হেঁসে উঠেছিল। সত্যি অদিতির কোনও লাগাম নেই। কাকে কি বলছে কিছু বিচার করে না। বয়স বাড়ছে কিন্তু বুদ্ধি বাড়ল না। অদ্ভুত ভাবে দেখলাম মা ওর কথায় লাজুক লাজুক মুখ নিয়ে হাসছিল।
 
বিকালে রাহুল কাকু সমস্ত কাজ সেরে ফিরে এল। বাড়িতে মার সাথে আলাপ করার জন্য কিছু লোকজন এসেছে। পাড়ার লোক হবে। মা নতুন বউয়ের মতন সবার সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলছিল। প্রত্যেকেই বলছিল মা খুব ভালো বর পেয়েছে। মার কপাল খুব ভালো। রাহুল কাকুর মতন লোক হয়না। সবথেকে বিরক্তিকর ব্যাপারটা হল যখনই নতুন কেউ আসছে আমাকে গিয়ে প্রনাম করতে হচ্ছে আর অনিচ্ছা সত্ত্বেও আলাপ করতে হচ্ছে মুখে একটা খুশি খুশি ভাব দেখিয়ে। নাটক করে যাচ্ছি। আর তো কয়েকদিন। তারপর যে যার রাস্তায়। মা থাকুক তার নতুন জীবন নিয়ে। যা খুশি করুক। জীবনে নতুন বসন্ত এসেছে। উপভোগ করুক। নতুন পরিবেশে আমার ভাইয়ের দস্যিপনা আরও বেড়েছে। দেখে মনে হচ্ছে যেন বেড়াতে এসেছে। একটা জিনিস দেখে খুব ভালো লাগল যে রিয়া যেন নিজের ভাইয়ের থেকেও আমার ভাইকে একটু বেশী ভালবাসতে শুরু করে দিয়েছে। সন্ধ্যার দিকে রাহুল কাকু একটা গাড়ি করে আমাকে নিয়ে পুরনো বাড়িতে নিয়ে গেল। আমাদের কিছু জিনিস আনতে হবে। আর তাছাড়া ২-৩ দিনে বাড়িটা খালি করে দিতে হবে। বাড়িতে ঢুকে চোখ টা জলে ভরে এসেছিল। রাহুল কাকু আমার মাথায় সস্নেহে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেছিল মায়া কাটিয়ে ফেল রুমি। চিন্তা করিস না তোর মাকে আমি ভালই রাখব।আমরা গাড়ি ভর্তি করে জিনিস নিয়ে ফিরে এলাম। রাহুল কাকু বলল কাল সকালে লোকজন নিয়ে এসে বাকি জিনিস গুলো নিয়ে যাব। তোকে আর আসতে হবে না।আর এসেই বা কি হবে। এই বাড়ি তো আর আমাদের নয়। এখন রাহুল কাকুর বাড়িতে আমরা আশ্রিত। মাকে দেখে যদিও মনে হচ্ছিল ওই বাড়ি যেন এখন ওর নিজের বাড়ি আর কতদিনের চেনা বাড়ি। কিন্তু আমার কাছে তা নয়। বাড়ি ফিরে এলাম। দেখলাম লোকজন সবাই চলে গেছে। এখন শুধু ওই পিসি আর একজন বয়স্ক ভদ্রলোক। রাহুল কাকুকে দেখেই পিসি বলে উঠল শোন যতই নতুন বউকে আদর করতে ইচ্ছে করুক না কেন আজ কিন্তু বউকে কাছে পাবি না। আজ আলাদা শুবি।রাহুল কাকু মার দিকে একটা আদর তাগিদ ভরা চোখে তাকিয়ে বলল না আমার কোনও তাড়া নেই। কাল থেকে তো কাছে পাবই। এত তাড়া নেই আমার।তাড়া নেই। শালা ঢপ অন্য কোথাও গিয়ে দিক। পারলে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। আর মুখে ন্যাকামি। আমার আর আমার বন্ধুদের সামনেই ওরা যে এইসব অশ্লীল মজা করছে তা নিয়ে ওদের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। এদিককার বিয়েতে অবশ্য এরকম মজা খুবই সাধারণ ব্যাপার। আগেই বলেছি অদিতির মুখে কোনও লাগাম নেই, স্থান কাল পাত্র বিচার করতে পারে না। বড়দের মাঝেই ফস করে বলে উঠল কাকু তোমার যে তর সইছে না সেটা তোমার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এত সেক্সি বউ পেলে আর দোষ কি। কিন্তু আজকের জন্য ব্যাড লাক।আরও বোধহয় কিছু বলতে যাচ্ছিল মা ওর পিঠে একটা আস্তে করে থাপ্পড় মেরে বলল এই তোকে আর পাকামি করতে হবে না। তোর বিয়ে হোক তখন দেখব। অদিতি কপট রাগ দেখিয়ে আমাকে নিয়ে ওপরে চলে গেল। আমি শম্পাকে অনেক্ষন কোথাও দেখছিলাম না। অদিতিকে ওর কথা জিজ্ঞেস করাতে বলল গুরু তোমার মা এখন তার নতুন বরকে নিয়ে ব্যস্ত। তোমার বাবা এখন তার সেক্সি বউকে কখন খাবে সেই চিন্তা করছে। হোয়াট আবউট আস? শম্পা গেছে প্লাস্টিকের গ্লাস আনতে। রাতটা কি তোর নির্জলা কাটানোর ইচ্ছা নাকি? সত্যি বলতে কি এখানে দিঘার থেকে কম মজা হচ্ছে না। আমি ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম কি যাতা বলছিস? আজ রাতে মদ গিলবি? লোকে জানতে পারলে কি ভাববে? নতুন জায়গায় প্রথম দিনেই এইসব নচ্ছাড়পনা না করলেই নয়।ও বলল তাতে কি। রাতের খাওয়ার পর বাইরে বসে ঠেক মারব। কার বাপের কি? আমরা কি পরের ধনে মই দিতে যাচ্ছি নাকি?” জানি ওকে দমানো আমার কর্ম নয়। এমন সময় দেখলাম শম্পা ফিরে এল। চোখের ইশারায় বুঝিয়ে দিল যা আনতে গিয়েছিল সেটা পেয়ে গেছে।
 
পিসিই এখানে সব খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করছে। দেখলাম রাতের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা বেশ ভালই। খাওয়ার আগে অবশ্য রাহুল কাকু আমাকে নিয়ে পুরো বাড়িটা ঘুরিয়ে দেখাল। বেশ বড় বাড়ি। ঘরের ছড়াছড়ি। আমার জন্য ওদের পাশের বড় বেডরুমটা বরাদ্দ হয়েছে। একটা ইয়া বড় বিছানা ঘরের মাঝে। ঠিক হল অদিতি আর শম্পা আমার সাথেই শোবে। পাশের ঘরটা ওর আর মার। আমার আর ওদের ঘরের মাঝে একটা কমন বাথরুম যাতে চাইলে আমিও যেতে পারি আর ওরাও যেতে পারে। যে যাবে সে অন্য দিককার দরজাটা খিল দিয়ে দিলেই হয়। দুদিকেই দরজা আছে যেমন অনেক বাড়ি বা হস্টেলেই আজকাল থাকে। রাহুল কাকু বলল কম জায়গা থেকে বেশী ঘর বার করার জন্য এই ব্যবস্থা করেছে। আগে এই ঘরটা খালি পড়ে থাকত। এখন থেকে আমি এলে থাকব। আদিত্য আর আমার ভাই এখন রিয়া আর আদিত্যর ঘরে শোবে। বেচারা রিয়ার জন্য একটা ছোট ঘর বরাদ্দ হয়েছে। তা নিয়ে অবশ্য ওর যে খুব দুঃখ আছে দেখে মনে হল না। রাহুল কাকু আজ ওপরের তলার একটা ঘরে শোবে। মা জিজ্ঞেস করেছিল ওপরে শুতে পারবে? বিছানা পরিষ্কার আছে? এটা আছে ওটা আছে?” আমার কানে আর ঢুকল না। খাওয়া শেষ হওয়ার পর পিসি রাহুল কাকুকে জিজ্ঞেস করল ওর ট্রেনের টিকিট হয়ে গেছে কিনা?” রাহুল কাকু বলল হয়ে গেছে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি ফিরে যাচ্ছ কেন? আর কয়েকদিন থেকে গেলে পারতে।পিসি ধমক দিয়ে বলে উঠল আর ন্যাকামি করিসনা। নতুন বউকে ছেড়ে আমার প্রতি দরদ? আমি কি ছাদে শোব নাকি? কাল থেকে তো এই ঘরে তুই শুবি।ঠিক হল কাল বউভাতের প্রথম ব্যাচে খেয়ে পিসিকে গাড়ি ষ্টেশনে ছেড়ে আসবে। পিসি আর ওই ভদ্রলোক একই সাথে ট্রেন ধরবে। তখনকার দিনে আমাদের ওইদিকে বুফে ব্যাপারটার চল ছিল না। পাত পেড়ে আরাম করে খেতেই লোকে বেশী ভালোবাসত। রাতে খাওয়ার শেষে সবাই বসে গল্প করছিল। আমার ইচ্ছে না থাকলেও বসে সঙ্গ দিতে হচ্ছিল। খেয়াল করছিলাম রাহুল কাকু আর মা আমাদের নজর বাঁচিয়ে চোরা চাহুনিতে একে ওপরের সাথে মাঝে মাঝে চোখাচুখি করছে। রাহুল কাকুর নজরে একটা তীব্র খিদে ঠিক যেমন বাঘের নজরে থাকে যখন নিজের শিকারের দিকে তাকায়। মার চোখে একটা লজ্জা মাখা ভিতু হরিণের চাহুনি। অদিতি যদিও ফাজিলের মতন বড়দের কথার মাঝে ফোঁড়ন কাটতে ভালবাসে। কিন্তু এখন ওকে দেখে বুঝতে পারছিলাম ওর আর শম্পার আর তর সইছে না। বুঝলাম ওদের এখন ভদকার বোতল দুটো হাত ছানি দিয়ে ডাকছে। আমার ভাই আদিত্য আর রিয়া ঘুমিয়ে পড়েছে খানিকক্ষণ হল। ওদের আর শরীর দিচ্ছিল না। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটার সময় আসর ভাঙল। আমরা যে যার ঘরে ঢুকে গেলাম। রাহুল কাকু আমাদের গুড নাইট জানিয়ে ওই ভদ্রলোককে সাথে নিয়ে ওপরে উঠে গেল। ভদ্রলোক যে রাহুল কাকুর ঠিক কে হয় সেটা আগে বুঝতে পারিনি। খাবারের পর গল্পের সময় জানলাম যে উনি রাহুল কাকুর এক দূর সম্পর্কের দাদা। তবে বয়স রাহুল কাকুর থেকে অনেক বেশী। তবে ভদ্রলোক বেশ অমায়িক। সবার সাথেই হাসি মশকরা করছিলেন। মালতী কাকিমার কাজের সময় যদি এখানে আসতাম তাহলে ওনার সাথে আলাপ হত।
বাইরের বাতি নিভে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর শম্পা চুপি চুপি বাইরে বেড়িয়ে দুটো জলের বোতল নিয়ে এল। আজ আর কোল্ড ড্রিংক নেই। আমি ওদের বললাম তোরা কিন্তু পাক্কা মাতালে পরিণত হচ্ছিস দুটো।অদিতি বলল চুপ করত।হঠাত হেরে গলায় গান ধরল যখন কেউ আমাকে মাতাল বলে “ , আমি ওকে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বললাম কথাটা মাতাল নয় পাগল।ও বলল তুই গান নিয়েই থাক। আমি মদ নিয়ে থাকি।কমন বাথরুমের যে দরজাটা আমাদের ঘরের দিকে ছিল সেটা আমি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বলা তো যায় না পিসি বা মা যদি হঠাত করে ঘরে ঢুকে পড়ে তো পুরো কেস খেয়ে যাব। আমাদের যেন আজকে একটু তাড়াতাড়ি নেশা চড়ে গেল। আমাদের মধ্যে কিছু কথপকথন হয়েছিল সেটা এখন বলছি। ও হ্যাঁ তার আগে বলি ওরা যখন পেগ বানাচ্ছিল আমি তখন সেদিনকার মতন ডাইরি টা লিখে নিলাম। শম্পা বাইরে গিয়ে কোথা থেকে ১০ টার মতন পাতি লেবু জোগাড় করে নিয়ে এসেছিল। এই ব্যাপারে ওর উৎসাহের কোনও শেষ নেই। ২ মিনিটে আমার লেখা হয়ে গেল দেখে অদিতি ঠাট্টার সুরে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল আজ কি ব্যাপার আমাদের ডাইরি দিদিমণির এত তাড়াতাড়ি লেখা হয়ে গেল?” আমি বলেছিলাম আজ তেমন লেখার কিছু নেই। শুধু কয়েক লাইন লিখলাম।ওরা জোরাজুরি করছিল কি লিখেছি বলার জন্য। সেদিন প্রথমবার আমি আমার ডাইরি কাউকে পড়ে শুনিয়েছিলাম। আজ এখানেও লিখছি।
লিখেছিলাম বিয়ে জিনিসটা ঠিক কি? সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটা মেলবন্ধন, যেখানে সামাজিক নিরাপত্তার সাথে মিশেছে সমর্পণ, সমর্পণের সাথে যোগ দিয়েছে অধিকারের স্বীকৃতি, তার সাথে আছে দেওয়া নেওয়া, ভালোবাসা, প্রেম, বিশ্বাস, ভোগ আর কামনা। একে অপরের কাছে উজাড় করে দেওয়ার সামাজিক ছাড়পত্র। কুৎসিত আর উন্মাদ সমাজকে স্থিতিশীল রাখার প্রচেষ্টায় একটা সামাজিক রীতি আর নিয়মের লক্ষণরেখা।
প্রথমবার পড়ার পর অদিতি খুব ভাবুক মুখ নিয়ে বলল প্লীজ রিপিট।আমি আবার পড়লাম। ও আবার বলল রিপিট ওয়ান্স মোর প্লীজ। আবার পড়লাম। ও হঠাৎ করে উঠে এসে আমার গালে একটা চুমু দিয়ে দিল। আমি বললাম লেসবিয়ান হয়ে যাচ্ছিস দিন কে দিন।ও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল শুনে ভালো লাগল। তোর চিন্তার গভীরতা আছে। আমি এত ভাবতে পারি না। শম্পা গ্লাস নিয়ে এসে বিছানায় একটা পেপারের ওপর রেখে বলল মাইরি বলছি, এই মদ ছুঁয়ে বলছি, তোর লেখাটা শুনে হেভি লেগেছে। তুই শালা ডাক্তার না হয়ে সাহিত্য নিয়ে পড়তে পারতিস। এখানে পেশন্ট না মাড়িয়ে কিছু লিখতিস। আর আমরা দিনের শেষে এসে পড়ে শুতে যেতাম।আমি বললাম এইসব বন্ধ করে দে পেগ মারি। শালা তোদের পাল্লায় পড়ে আমিও পাক্কা ভকদাখোর হয়ে যাচ্ছি।এইবার আসি নেশা চড়ার পরের কথায়। আমি কিছুক্ষণ চুপ করে বসেছিলাম দেখে শম্পা আমাকে জিজ্ঞেস করল কিরে? কি হয়েছে? যা হচ্ছে একটু মেনে নিতে শেখ। আমি সত্যি জানি না আমার মার সাথে অন্য কারোর বিয়ে হলে আমি কিরকম ভাবতাম। কিন্তু একটা পয়েন্ট আছে, সেটা হল কাকিমার কিন্তু বয়স তেমন কিছু হয়নি। তুই ওনাকে ওনার মতন লাইফ লিড করতে দে। আর কাকুকে দেখেও খারাপ মনে হল না। বেশ একটা প্রেম প্রেম ভাব দুজনের।আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম তাহলে সেটা তোদেরও নজর এড়ায়নি?” অদিতি বলল নজর এড়ানোর মতন জিনিস এটা নয়।আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম মেনে নেওয়া ছাড়া আর রাস্তাও নেই। মেনে নিয়েছি তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু মনে কয়েকটা প্রশ্ন আছে।শম্পা বলল দারুর আড্ডায় কথা লুকোতে নেই সোনা। বলে ফেল। মন হালকা হয়ে যাবে।আমি কিছুক্ষণ চুপচাপ গলায় ভদকা ঢেলে চললাম। তারপর বললাম একটা জিনিস আমাকে বলবি? মা কেন হঠাৎ করে এই নির্ণয় টা নিল। আমি বলছি না নির্ণয় টা খারাপ। কিন্তু হঠাৎ কেন? আর এছাড়া আমার আরেকটা খুব বাজে প্রশ্ন আছে। তোদের বললে তোরা হয়ত খারাপ ভাববি। কিন্তু এটা আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে।অদিতি আমাকে বলল খোলসা করে বলত ঠিক কি ভাবছিস তুই?” আমি বললাম এত তাড়াতাড়ি মা বাবাকে ভুলে গেল? মা কি সত্যি রাহুল কাকুকে মন থেকে মেনে নিতে পারছে? নাকি শুধু সামাজিক নিরাপত্তার জন্য এমনটা করল? আরও কিছু প্রশ্ন আছে? যতদূর জানি আমার বাবা মার মধ্যে ভালোবাসা ভালোই ছিল। আমি জানি ওদের বয়স খুব বেশী নয়। তাই তো জিজ্ঞেস করছি, মা, এরপর, মানে, “ বাকিটা আর আমি শেষ করতে পারলাম না। দেখলাম শম্পা আর অদিতি দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। শম্পা আদিতিকে চোখ দিয়ে একটা ইশারা করল যার মানে দাঁড়ায় তুইই বল। আমি অদিতির দিকে তাকাতে অদিতি আমাকে বলল আমার দিকে অমনি করে তাকিয়ে থেক না সোনা। প্রেমে পড়ে যাব তোমার। দেখ আমরা একসাথে এসেছি। এখানে সব কিছু দেখলাম। তুই যখন আজ কাকুর সাথে ওই বাড়িতে গিয়েছিলিস তখন আমার আর শম্পার কিছু কথা হয়েছে। সেটা তোকে বলতে পারি যদি তুই কথাগুলোকে অন্যভাবে না নিস।আমি বিরক্তির স্বরে বললাম এইবার তুইও আমার সামনে ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলা শুরু করে দিলি? তোরা কি ভাবছিস পরিষ্কার করে বল।
অদিতি বলল শ্যাম্পু ডার্লিং একটা পেগ দে। পেগ না মারলে আজ মাথা খুলছে না।আমারও গ্লাস শেষ হয়ে গিয়েছিল। শম্পা আমার জন্যও একটা পেগ বানিয়ে নিয়ে এল। আদিতি একটা বড় চুমুক মেরে মুখটা বেঁকিয়ে (হয়ত ভদকার গন্ধর জন্য) শুরু করল একটা কথা মানতে বাধ্য হচ্ছি কাকিমা নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখে না। এখন দেখছিস কেমন সুন্দরী লাগছে। কোলকাতা হলে এতদিনে অনেক গুলো প্রেমের প্রপোসাল পেয়ে যেত তাতে সন্দেহ নেই। এই বয়সের মহিলাদের কিন্তু কোলকাতায় বা বড় শহরে দেখবি বেশ ভালোই ছুঁকছুঁক থাকে। আমি বলছি না তোর মার সেটা আছে। কিন্তু আমার মনে হয় অন্যরকম কিছু একটা হয়েছে। কাকিমাকে দেখে যতটা বুঝেছি উনি সংসার ছেলে মেয়ে এইসব নিয়েই থাকতে ভালবাসে। এতে আমাদের কোনও সন্দেহ নেই। কাকু, মানে তোর বাবা মারা যাওয়ার পর কাকিমা বোধহয় খুব একলা ফিল করছিল। যেটা স্বাভাবিক। তখন আমাদের ধারণা তোর এই মানে বাবার সাথে আলাপ হয়। আলাপ বোধকরি আগেই ছিল। (আমি মাথা নাড়ালাম ও এগিয়ে চলল) কারণ উনি কিন্তু তোদের সমস্ত বাইরের কাজ দেখত। এটা তুইও জানিস। আমার ধারণা এর থেকে মানে রেগুলার দেখা হতে হতে দুজনে দুজনের প্রতি মানে, বুঝতে পারছিস কি বলতে চাইছি। দেখ তুই অন্য ভাবে নিস না। তোর এই, মানে , মানে, আমি বলতে চাইছি কাকুর যে প্রথম পক্ষের স্ত্রী, মানে আগের কাকিমা, তিনি বহু দিন ধরে ভুগছিলেন। এর থেকে একটা স্বাভাবিক ধারণা করা যায় যে ওনাদের মধ্যে তেমন কোনও সম্পর্ক অনেক দিন ধরেই ছিল না। মানে এটা আমাদের ধারণা।আমি বাঁধা দিয়ে বললাম এক সেকন্ড। সেটা আমিও জানি আমার বাবা মার মধ্যেও তেমন ছিল না। বিয়ের এত বছর পর সেটা কি খুব অস্বাভাবিক?” অদিতি বলল একেবারেই না। আর আমি তোকে সেটাই বলতে যাচ্ছিলাম। তোর বাবা যত দিন ছিলেন তখন কি ছিল আমি জানি না। কিন্তু সবার একটা জৈবিক চাহিদা থাকে। এই বয়সে খারাপ থাকে না। যদি সুস্থ হয় তো! তোর মার চাহিদা সংসার আর একঘেয়েমির বোঝা নিয়ে মরে গিয়েছিল। তোর মা একা ছিল। এইসময় তোর এই বাবার সাথে তার মন দেওয়া নেওয়া হয়। যেটা দোষের কিছু নয়। উনি তোদের দায়িত্ব নিচ্ছিল যেখানে তোর মালতী কাকিমাও কোনও বাঁধা দেয় নি। আজ ওদের দেখে আমার যেটা মনে হয়েছে এইবার সেখান থেকে কিছু বলি। তুই যে বলছিস তোর মা তোর বাবা কে এত সহজে ভুলে গেল কি করে? বা তোর এই বাবাকে ও মেনে নিতে পারবে কিনা? আমার মনে হয় ব্যাপারটাকে একটু অন্যভাবে দেখ। ওদের দেখে কিন্তু মনে হচ্ছিল ওদের মধ্যে ভালই কেমিস্ট্রি আছে। যেটা দুদিনে তৈরি হয়নি। আমার মনে হয় ওরা নিজেদের চাওয়া শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু যতদিন না তোর মালতী কাকিমা মারা গেছেন ততদিন সেটা নিজেরা কেউ বুঝতে পারেনি। তোর মার তোর বাবার ওপর নিশ্চই ভালোবাসা ছিল। কিন্তু তোর এই বাবা ওর জীবনে আসার পর সেই ভালবাসাটা, যেটা তোর আগের বাবার উপর ছিল, সেটা, রূপান্তরিত হয়েছে সম্মানে, বা হয়ত বলতে পারিস স্মৃতিতে। এখনও ওর কথা শুনলে দেখবি তোর মা উদাস হয়ে যাবে। বা হয়ত কেঁদে ফেলবে। কিন্তু সেটা এখন আর ভালোবাসা বলা যায় না। সেটা এখন এক কথায় যাকে বলে একটা মিষ্টি স্মৃতি। তোর এখনকার বাবার কথা যদি বলি তো বলতে হয়, ভদ্রলোক তখন তোর মাকে চিনতে শুরু করল। মানে তোর বাবা মারা যাওয়ার পর। বাড়িতে একজন অসুস্থ স্ত্রী। তার প্রতি কিন্তু ও কোনও অবহেলা করেছে কেউ কখনও বলতে পারবে না। কিন্তু বোধহয় হাঁপিয়ে উঠেছিল ভেতরে ভেতরে। যেটা, , যতদিন না তোর কাকিমা মারা গেছে সেটা বুঝতে পারেনি। আর যদি সেরকম কিছু নাও হয়ে থাকে। তবুও এটা বলা যায়, ওর স্ত্রী মারা যাওয়ার পরও কিন্তু তোদের সব কাজ ও করে গেছে। এখানে দুটো জিনিস চিন্তা কর। ওই শ্যাম্পু ডার্লিং ওয়ান মোর পেগ প্লীজ।ও ওর বক্তৃতা থামাল। আমি উঠে বাথরুমে গেলাম। আমার পর অদিতিও গেলে। ফিরে এসে বলল তোর মা এখনও ঘুমায় নি। পিসির সাথে গল্প মারছে। পেগ মারতে চাইলে আমরা ফ্রিতে কয়েকটা পেগ অফার করে দিতাম। আমি বললাম তুই জীবনে শুধরাবি না ঠিক করে ফেলেছিস।ও আমাকে বলল তোর পিসি তোর মাকে বলছিল তোর এই বাবা কি কি খেতে ভালোবাসে। আমি মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলাম আমিও সেই কথা শুনেছি। বাথরুম থেকে পরিষ্কার কথা শোনা যাচ্ছিল। আমি বললাম তুই ও এইবার আস্তে গলা নামিয়ে তোর বক্তৃতা দে। নইলে ওরাও বাথরুমে গেলে আমাদের সব কথা শুনতে পাবে।
অদিতি বলল ঠিক আছে ম্যাডাম, এইবার আগের কথায় ফেরা যাক। ও তোদের জন্য সব রকম সাহায্য করে চলেছে। ওর বউ মারা যাওয়ার পরও তোদের সব কাজ করে যাচ্ছে। একদিণের জন্য ও বন্ধ করেনি। এর থেকে আমি বলব মনের কোনও একটা জায়গায় ওর তোর মা মানে কাকিমার প্রতি একটা দুর্বলতা কাজ করছিল। হয়ত সেটা তখন অব্দি ও জানত না। ভেবে দেখ নইলে নিজের বউ মরার পর ও এত দায়িত্ব কেউ কেন পালন করবে। দুজন সুস্থ সবল মানুষ অবাধে মেলা মেশা করছে। তুই নিজে মেয়ে। তুই জানিস দিনের শেসে তুই নিরাপত্তা চাস। তোর মা দেখল যে এই লোকটার কাছে ও নিরাপত্তা পাচ্ছে। একটা , কি বলব, এইসব সময়ে যা হয়ে থাকে একটা হয়ত কৃতজ্ঞতা কাজ করছিল। অনুধাবন করা খুব কঠিন নয় যে এই সময়েই তোর মা নিজেকে ধীরে ধীরে তোর এখনকার বাবার সামনে মেলে ধরে। তোর মায়ের হাতের রান্না ভালো। উনি ঘরোয়া। এবং যথেষ্ট সুন্দরী আর সেক্সি। ওর নিজের বউ মারা যাওয়ার পর তোর মা নিশ্চই ওকে অনেক সান্তনা দিয়েছিল। তোর মা যে খুব ঘরোয়া আর সংবেদনশীল সেটা একটা গাধাও বলে দিতে পারে। হতে পারে সেই সমবেদনা তোর বাবার মধ্যে মানে এখনকার বাবার মধ্যে অন্য একটা ফিলিংস তৈরি করেছে। তোর এখনকার বাবা ও ধীরে ধীরে মানে তোর মার প্রতি আকৃষ্ট হয়। সেটা নর্মাল। তোর বাবাকে আমরা ভালো ভাবে চিনি না। হয়ত তোর বাবার মধ্যে তোর মা এমন একটা মানুষ খুঁজে পেয়েছে যার হাতে নিজেকে ছেড়ে দিলে নিশ্চিন্ত হতে পারবে। ভেবে দেখ তুই তোর মার জায়গায় থাকলে কি করতিস? তোর আগের মানে বাবার মায়া কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করল তোর এখনকার বাবা। যেটা ছিল ভালোবাসা সেটা হয়ে গেল শুধুই স্মৃতি। আর স্মৃতিতে ধুলো জমতে বেশী সময় লাগে না সোনা। তোর একটা ছোট ভাই আছে। একজন ভালো অভিভাবক ও তো চাই নাকি? একথাটা অস্বীকার করতে পারিস? মোট কথা ওরা দুজন দুজনকে কাছে পেতে চাইছিল। তুই হ্যাঁ বলার পর ওদের রাস্তা সরল হল। আর তুই হ্যাঁ বলে ভালোই করেছিস।অদিতি থেমে একটু নিঃশ্বাস নিল। আমাদের তিনজনের গ্লাস কখন শেষ হয়ে গেছে আমরা বুঝিও নি।
আমি গ্লাস টা তুলে শম্পার দিকে বাড়িয়ে দিলাম। তখন জানতাম না এদের কি বলে যারা রেস্টুরেন্টে পেগ বানায় খদ্দেরদের জন্য। কিন্তু এখন জানি তো তাই বলছি আমরা শম্পা কে বার আটেন্ডার বানিয়ে দিয়েছিলাম। শম্পা লেবু চিপে চরম একটা করে পেগ বানিয়ে নিয়ে এল। আমাকে অদিতি চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। আমি যাকে বলে bigotryএর থেকে ভালো শব্দ পেলাম না তাই এটাই লিখলাম। কিন্তু ওর কথায় অনেক সত্যতা আছে। সেটাও জানি। আমাদের চুপ করে বসে থাকতে দেখে শম্পা শেষ অব্দি মুখ খুলল। দেখ ওদের নিজেদের বর বা বউ যতদিন বেঁচে ছিল তত দিন ওরা কেউ অন্য কারোর প্রতি আকৃষ্ট হয়নি। আজ ওরা একলা ফিল করছে। কেন ? সে প্রশ্নটা অবান্তর। তোর রাহুল কাকু, তুই ওকে বাবা মানছিস না , তাই কাকুই বললাম, ও যদি তোর মাকে পেতে চায় আর তোর মা যদি নিজেকে ওর হাতে দিতে চায় তুই বাঁধা দেওয়ার কে? আমি কাকিমাকে আগে দেখিনি। কিন্তু তোর মা আজ খুব খুশি। শান্তিতে ঘুমাবে। এটা তোর জন্যও একটা সুখের কথা। তোর বাবা কে তোর মা ভুলে গেল, নাকি ভোলে নি সেটা নিয়ে তর্ক করে এখন কি লাভ। আমি তোর মার খুশি দেখছি। তোর নিজের মা। তোর মানতে মনে লাগছে। হয়ত তোর বাবার চিন্তা মাথায় বার বার আসছে। তাই না? মেনে নিচ্ছি। কিন্তু তুই ই একটা কিছু কারণ বের কর তাহলে যাতে তুই এই সম্পর্কটাকে মেনে নিতে পারিস। নিজেই বের করনা একটা যেকোনো কারণ। ঠিক পারবি তুই। আর তোর প্ল্যান কি?” আমি বললাম, “ প্ল্যান হল, আমি কয়েকদিন পর চলে যাব আর ফিরব না। তবে তোদের কে অসংখ থ্যঙ্কস। আমি মেনে নিলাম।
[+] 1 user Likes pcirma's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981 - by pcirma - 18-10-2019, 12:52 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)