Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Fantasy একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981
#8
পরের পর্ব
দুপুর গড়িয়ে গেল। রাহুল কাকু এল। বাড়ির থমথমে ভাবটা ওর যে চোখ এড়ায়নি সেটা জানি। ও নিজেও খুব একটা কিছু বলল না। আমাদের সাথেই দুপুরের খাবার খেল। মা ওকে ওর বাচ্চা গুলোর কথা জিজ্ঞেস করল। বলল ভালো আছে। কলেজে গেছে। অবশেষে রাহুল কাকু আমাকে মার সামনেই জিজ্ঞেস করল। বল রুমি তোর কি মতামত?” আমার অনেক কিছু জিজ্ঞেস করার ছিল। কিন্তু পারলাম না। এতটাও মুখরা মেয়ে নই আমি। গলা পরিষ্কার করে জিজ্ঞেস করলাম কাল মার মুখে সব শুনেছি। তবু একবার তোমার মুখে শুনতে চাই। তুমি কি মাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছ?” রাহুল কাকু একটুও না ঘাবড়ে বলল হ্যাঁ তাই দিয়েছি।আমি বোকার মতন জিজ্ঞেস করলাম তারপর?” রাহুল কাকু বলল তারপর কি আমরা একসাথে থাকব। তুই চিন্তা করিস না তোর বাবা যা তোদের জন্য রেখে গেছে তাতে আমি হাত দেব না” (সেটা আমিও জানি) ও বলে চলল তোর মার সাথে কথা হয়েছে। এই বাড়িটা বিক্রি করে দেব। যা আসবে অর্ধেকটা তোর নামে আর বাকি অর্ধেকটা ওর নামে করে দেব। এইবার তুই বল। তোর কি মতামত।আমি বললাম আমার পরীক্ষা সামনে। তোমরা কবে বিয়ে করতে চাইছ? কারণ এখন করলে আমি এত হুল্লোড় নিতে পারব না। পরীক্ষা খারাপ হবে। মা বলল কি বলছিস তুই? তোর পড়াশুনার থেকে বেশী জরুরি আমাদের বিয়ে? তোর ডাক্তার হওয়াটা তোর বাবার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু এটাও সত্যি তুই না এলে আমরা কিছু করব না। তোকে আসতেই হবে আর থাকতেই হবে। রাহুল কাকু বলল রুমি আর তোকে না বললেও তুই এটা বুঝবি এই বিয়েতে হইচই খুব একটা হবে না। তোর মত পেলে আমরা আমাদের বাকি আত্মীয়দের জানাব। সামান্য অনুষ্ঠান আর রেজিস্ট্রি বিয়ে। ব্যস। রাহুল কাকু একবার মার দিকে তাকাল। মা আমার মাথায় হাত রেখে বলল মা পরিষ্কার করে বল তুই কি চাইছিস?” আমি বললাম বিয়ের তারিখ ঠিক করে আমাকে জানাও। আমি চলে আসব। তবে ২ মাস পরে করলে ভালো হয়। রাহুল কাকু মার হাতটা আমার সামনেই ধরে বলল, “দেখেছ, বললাম না এই মেয়ে অনেক সমঝদার। মালতীকে নিয়ে যখন কোলকাতায় ছিলাম তখনই বুঝেছিলাম এই মেয়ে খুবই ভাল আর পরিণত। আমি কষ্ট করে হাঁসার চেষ্টা করলাম। বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। মা স্নেহের সাথে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল। আমাকে বলল চিন্তা করিস না মা। তোর পড়াশুনার ক্ষতি হোক এমন কিছু আমরা করব না। আমরা দিন তারিখ ঠিক করে জানাচ্ছি।আমি যদি আগের রুমি হতাম তাহলে আধঘণ্টার মধ্যে কোলকাতায় চলে আসতাম। কিন্তু সত্যি আমি এখন অনেক পরিণত। ৩ দিনের জন্য এসেছিলাম। ৩ দিন থেকে তবেই হাসি হাসি মুখ নিয়ে কোলকাতায় ফিরে এলাম।
 
কয়েকদিন ধরে নিজেকে অনেক বোঝাতে চেষ্টা করলাম কি হতে চলেছে। একজন মানুষ মারা গেছে। একজন না দুজন। আর তাদের সাথে যারা এতদিন ঘর করেছে তারা এখন একে অপরের সাথে আবার ঘর বাঁধতে বসেছে। কি বিচিত্র এই জীবন। হয়ত ভাবছেন যা মেয়ে এ আর বাড়িতে ফোন করলে হয়। না উপর উপর সবটা স্বাভাবিক রেখেছিলাম। রোজ ফোন করতাম। তবে মা আমার পরীক্ষার আগে বিয়ের ব্যপার নিয়ে একটাও কথা বলেনি। এটাও ভাবতে পারেন যে এ তো নিজেই একটা সেলফ সার্টিফায়েড নষ্ট মেয়ে। এর মাথায় এত সব চিন্তা শোভা পায়? হয়ত পায় না। কিন্তু আবেগ ভাবনা মানুষের ব্যক্তিগত। তাতে ভাল খারাপ যুক্তি তর্ক সব সময় খাটে না। পরীক্ষা হয়ে গেল। সেদিন রাতে অদিতি রুমে ভদকা নিয়ে এসেছিল। হস্টেল খালি। গুটি কয়েক মেয়ে পড়ে আছে। আমরা রাতের খাবারের পর দরজা আটকে বসে ভদকা খাচ্ছি। একটু পরে শম্পা এসে যোগ দিল। প্রায় একঘণ্টা খাওয়ার পর আমাকে অদিতি জিজ্ঞেস করল এই মেয়ে কি হয়েছে রে তোর? কেমন যেন অন্যমনস্ক সবসময়। কিছু সমস্যায় পড়েছিস তো বল। অদিতি অ্যান্ড শম্পা কনসালটেন্সি তোকে ফ্রি সার্ভিস দেওয়ার জন্য রেডি।ভদকার নেশা নাকি অন্য কিছু ? জনিনা, ওদের হাউমাউ করে কেঁদে সব কথা বলে ফেললাম। ওরা আমাকে অনেক কিছু বোঝানোর চেষ্টা করল। কিন্তু আমার তখন চড়ে গেছে। আমি ওদের কোনও কথাই বুঝতে পারছি না। ভদকা খাওয়া শেষ হল। নেশা নিয়ে আমরা তিনজন শুয়ে পড়লাম। শম্পা আর সেদিন রুমে ফেরেনি। আমাদের ঘরেই আমার বিছানায় শুয়ে পড়েছিল। পরের দিন ওদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলাম মজার আমেজ এইভাবে নষ্ট করার জন্য। ওরা আমার চিবুক ধরে বলেছিল ডোন্ট। ইট ইস ওকে।স্নান করার সময় আমার মাথায় একটা কথা এল। আমার মা বা রাহুল কাকু বোধহয় যেচে আমাকে বিয়ের ব্যপারে কিছু জানাতে সংকোচ করছে। ঠিক করলাম আজ বিকালেই জিজ্ঞেস করব। কারণ ওইদিকে নিশ্চই সব ঠিক হয়ে গেছে এতদিনে। বিকালে বেশ খুশি খশি গলা করে মাকে জিজ্ঞেস করলাম মা বিয়ের তারিখ নিয়ে কিছু জানালে না তো?” একটু মজার স্বর নিয়েই বললাম বিয়ের শপিং হচ্ছে তো ঠিক ঠাক? নাকি আমাকে গিয়ে তদারকি করতে হবে?” মা হেঁসে বলল সব হয়ে গেছে। তোর পরীক্ষা ছিল বলে তোকে জানানো হয়নি। তুই সামনের সপ্তাহের মধ্যে চলে আয়। পরের পরের সপ্তাহে বিয়ে।আমি গলায় একইরকম খুশির আভাস রেখে জিজ্ঞেস করলাম বাব্বা আমাকে ছাড়াই সব শপিং শেষ! ঠিক আছে চলে আসছি। তোমার উনি কেমন আছেন? “ মা বলল ফোনে ফাজলামি করিস না। আমার উনি ভালই আছে। তোর খবর রোজ নেয়।“ “আমার উনিকথাটা শুনে বুকটা ছ্যাঁত করে উঠল। কিন্তু মুখে তা প্রকাশ করলাম না। দিন ঘনিয়ে এসেছে।
 
কয়েকদিন আমার ছাত্রগুলোকে চড়িয়েই কেটে গেল। হয়ত ভাবছেন নষ্ট মেয়েটার লাইফ থেকে মজা কোথায় গেল। কে রে ভাই, রোজ কি মজা হয় নাকি। তার চেয়েও বড় সত্যি টা এই যে এই ব্যাপারটা জানার পর থেকে আমার নিজের জীবন থেকে সব শান্তি চলে গেছে। শান্তি না থাকলে মানসিক উন্মাদনাটা আসবে কোথা থেকে? অনেকদিন আমি নিজের জন্য কিছু কিনিনি। অনেকগুলো টাকা জমে গিয়েছিল। বিউটি পার্লার আর কত পকেট সাফ করতে পারে। আমাদের দিঘা যাওয়াটা আমার জন্যই ভেস্তে গেল সেটা বুঝতে পারলাম। সেদিন অদিতির সাথে গিয়ে ফেসিয়াল ইত্যাদি করলাম। পরে দোকানে গিয়ে মার জন্য একটা শাড়ি আর রাহুল কাকু ওরফে আমার নতুন বাবার জন্য একটা শার্ট আর প্যান্টের পিস কিনলাম। বাবার জন্য একটা প্যান্টের পিস কিনলাম। জানি বাবা সেটা আর পরে দেখতে পারবে না। তবু বাবার নামে কিনলাম। রাহুল কাকু, উফফ বারবার কাকু বেড়িয়ে যাচ্ছে। বদ অভ্যাস। বদলাতে হবে নইলে প্রচুর কেস খাব। আমার নতুন ভাই বোনদের জন্য কয়েকটা ড্রেস কিনলাম। আমার পুচকেটার জন্যও ড্রেস কিনলাম। নিজের জন্য কিছু কিনতে পারলাম না। মন থেকে এল না। ঘরে ফেরার পর আমাকে অদিতি বলল, “ তুই জানিস খুব ভালো।আমি এই কথা শুনে হকচকিয়ে গেছিলাম। বললাম শরীর খারাপ করল নাকি? না ছেলেদের সাথে না মিশে মিশে লেসবিয়ান হয়ে যাচ্ছিস?” ও হাঁসতে হাঁসতে আমকে এসে জড়িয়ে ধরে বলল, “ ডারলিং বলে তো দেখ এমন সুখ দেব না তোকে সাড়া জীবন ভুলবি না। তবে যেটা বললাম সেটা সত্যি। তোকে দেখে মাঝে মাঝে বড্ড ভাল লাগে।আমি ওর হাতটা জড়িয়ে ধরে বললাম ছাড় বদের বাসা। নইলে চীৎকার করে লোক ডেকে বলব তুই আমাকে রেপ করছিস।খানিকক্ষণ দুজন খুব হাসলাম। খেয়ে এসে একথা সেকথার পর ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন অদিতি চলে গেল। কয়েকদিন আমি একাই কাটালাম হস্টেলে।
 
বাড়ি যাওয়ার দিন চলে এল। ও হ্যাঁ, জানিনা রত্না আর শম্পা আসবে কিনা, কিন্তু ওদের দুজনকে আমি এই অনুষ্ঠানে নেমন্তন্ন করেছিলাম। বাড়ি এসে দেখলাম সাজ সাজ রব। অনেক আত্মীয় এসে গেছে। সবাইকে দেখে মনে হল প্রচন্ড খুশি। যদিও এই সময়টা বরের কনের বাড়িতে আসা বারণ থাকে বলেই জানতাম। কিন্তু এক্ষেত্রে সেই নিয়ম খাটে না। দুদিন পরে বিয়ে। নতুন বাবা এসে আমাকে নিয়ে বেড়িয়ে গেল। ও হ্যাঁ তার আগে আমি মাকে আর ওকে সবার জন্য আনা জিনিস গুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। ওরা দুজনেই খুব খুশি হয়েছে বুঝতে পারলাম। মা জিজ্ঞেস করল এই টাকাগুলো পেলি কোথা থেকে?” বললাম তোমাকে বলা হয়নি আমি অনেক দিন ধরে বাইরে দুটো ব্যাচ পড়াচ্ছি। সেই থেকে জমিয়ে জমিয়ে।অন্য সময় হলে মা হয়ত বকাবকি করত। আজ কেন জানিনা কিছু বলল না। বা বলতে পারল না। সেটা কি আবেগ না কি অন্য কিছু কে জানে। এরকম বিশ্লেষণ করা যেতেই পারে যে মার কিছু সত্যি বাইরে এসেছে , সত্যি বলছি কারণ বিয়ের সিদ্ধান্ত তো আর একদিনে হয়না তাই। তাই আমিও আজ নির্ভয়ে বলে দিলাম। মাও হয়ত কিছু বলতে পারল না। যাইহোক, সত্যি বললে মন হালকা হয়। কে বলেছে জানিনা। আমার কথাটা বলার সময় মানসিক অবস্থা ছিল এই যে এটা শুনে তুমি যাই বল না কেন তাতে আমার ভারি বাল ছেরা যায়। তুমি জিজ্ঞেস করলে তাই জানালাম। আমার যা ইচ্ছা আমি করব। তাই মনের ওজন মাপলে আগে বা পরে কোনও পার্থক্য পাওয়া যাবে না। উফফ আবার বাজে কথা বলছি। রাহুল কাকু থুরি বাবা আমাকে ব্যঙ্কে নিয়ে গেল। বাড়ি বিক্রি পাকা পাকি হয়ে গেছে। আমার সাইন চাই। করে দিলাম । আরেকজন লোক এসেছিল। সেও সাইন করে দিল । কি কথা হল বাকিটা বুঝলাম না। এইটুকু বুঝলাম লোকটা একটা মোটা অঙ্কের টাকা আমার নামে যে অ্যাকাউন্ট আছে তাতে ফেলবে আর বাকিটা মার নামে যে অ্যাকাউন্ট আছে তাতে ফেলবে। সব কথা পাকা পাকি হয়ে গেল। না আমি কখনও ভাবিনি রাহুল কাকু, উফফ আবার, বাবা বাবা বাবা, টাকা মারবে। তাও আমাদের মতন গরীবদের। এইগুলো আমার কাছে এখন তুচ্ছ।একটাই লাভ কয়েকদিনে স্বাবলম্বী হয়ে যাব বুঝতে পারলাম। বাড়ি ফিরে এসেই হঠাৎমনটা ভালো হয়ে গেল।
 
বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে শুনলাম প্রচণ্ড হই হট্টগোল। যেন পুরো মাছের বাজার। আমি অনেকদিন কোনও বিয়ে বাড়িতে যাইনি। জানি চীৎকার হয় তবে এমন? আমার আসলে মনটা এত বিরক্ত হয়ে আছে যে কি বলব। বাবাও (অবশেষে) আমার সাথে ঢুকল। বুঝলাম মাকে ঘিরে জটলা হয়েছে। আর কেউ বা কারা কিসব বলছে আর লোকজন করতে হবে করতে হবে বলে চ্যাচাচ্ছে। একটা গলা যেন চেনা চেনা ঠেকল। আরে এ আমি কাদের দেখছি। দেখি অদিতি আর শম্পা এসেছে । ওরা আমার মাকে কিসব বলে চলেছে। সেই নিয়ে মা বলছে না। আর ওরা জোড় জাড় করে চলেছে। ওরা আমাকে দেখে ছুটে এসে প্রায় জড়িয়ে ধরল। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না ওরা সত্যি আসবে। অদিতি বলল শালা তোর জন্য আমাদের দিঘার প্ল্যান চটকেছে এইবার আমাদের এই কদিন খাওয়ানর দায়িত্ব তোর।দিয়ে চারপাশতা একবার দেখে নিয়ে ফিসফিস করে বলল ২ টো ৭৫০ এর ভদকা এনেছি। যদিও এটা তোর বাপের খাওয়ানোর কথা। ওরা বুঝল আমি কিছু বাজে কথা বলে দিতে পারি, তাই আমাকে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়েই ওখান থেকে সরে পড়ল। ওরা বলল আমরা কাকিমাকে নিয়ে একটু ডেন্তিং পেন্টিং করাতে যাচ্ছি। তুই গিয়ে রেস্ট নে। বাড়ি ভর্তি লোক। তবু একটা নির্জন কোণা খুঁজে নিয়ে ডাইরি খুলে বসলাম। কিছু জিনিস এখনই না লিখে রাখলে পরে ভুলে যাব। দুপুরে খাওয়াতা সত্যি বলতে জব্বর হয়েছিল। কিন্তু আমার খুব একটা ক্ষিদে ছিল না। ওরা মাকে নিয়ে বেড়িয়ে গেল। প্রায় ৫ ঘণ্টা পর ফিরল। আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাত ঝাঁকুনি খেয়ে উঠে সামনে একজনকে প্রথমে ঘুম চোখে চিনতে পারিনি। করেছে কি পাগলা। মাকে দেখে ঠিক চিনতে পারিনি। মুখ থেকে শুধু বললাম হুম। জানিনা এত সাজগোজ কার জন্য। মা চলে গেল। আমার মনে হয় আমার মারও একই অনুভূতি হয়েছে নিজেকে দেখে যেমন আমার প্রথম দিন হয়েছিল। আমি অদিতিকে বললাম কি কি করালি?” বলল যা যা তোর করিয়ে ছিলাম। সেইসব। বিয়ে করতে যাচ্ছে । আমরা মেয়ে পক্ষ বলে কথা। শালা সবার চোখ টেড়িয়ে যাবে।সত্যি বলতে মার বয়স যেন ১০ বছর কমে গেছে। বলতে বাঁধা নেই আমার থেকে অনেক বেশী সুন্দরী লাগছে। স্কিন যে কি মসৃণ আর নরম লাগছে বলে বোঝাতে পারব না। এইসব গুণগত মান থেকে দেখলে বলতে হয় সত্যি ভালো। কিন্তু মন যে মানছে না। কি করব? ঠিক করলাম ৪ দিনের ব্যাপার। মানুষের স্রোতে মিশে যাই। পরে দেখা যাবে।
 
মাকে দেখে সবাই অনেক মশকরা করল। অনেক ফাজলামি হল। অদ্ভুত ব্যাপার দেখলাম মা সব কথা শুনে যেন নতুন বউয়ের মতন লজ্জা পাচ্ছে। শালা কয়েকবছর আগে আমার বাবা মারা গেল। আর এখন সব লোকজনের দাবীতে মা বসে বসে মেহেন্দিও মাখল। এইবার অন্য একজনের নাম হাতের রঙে। না বলতে বাধ্য হতে হবে, মা নিজের খেয়াল রাখলে অনেক বেশী সুন্দরী। ফিগার কেমন সেটা আর আমার বলে কাজ নেই। সেটার মালিক এখন অন্য একজন। এখনও না হলেও আর তো দুদিন। আরেকটা জিনিস মানতে বাধ্য হচ্ছি, মার মতন বয়সী আর চেহারার মহিলারা, মানে আমি গঠন আর চেহারা সব মিলিয়ে বলছি যেকোনো মধ্য বয়সী লোককেই আকর্ষণ করবে তাতে সন্দেহ নেই। রাতে মা আমাকে বলল আমার সাথে শো। আমি বললাম না উপরে অদিতি আর শম্পার সাথে শোব। মা বলল একবার তাহলে বস।বাকিরা সবাই বাইরে ছিল। আমি বুঝলাম এই সুযোগে কিছু কথা বলে নিতে চাইছে। আমি বললাম বল কি বলবে?” মা বলল তুই মন থেকে খুশি নস না?” আমি ঠিক করে রেখেছিলাম নাটক করব প্রাণভরে। বললাম এটা ভুল ধারণা। আমি একটু ঘাবড়ে আছি লোকে কি বলবে সেটা ভেবে। আর কিছু না। সেটা আমার থেকে বেশী তোমাকে শুনতে হবে। এটা ছাড়া আর কোনও ব্যাপার নয়। তবে, তোমাকে সত্যি সুন্দরী লাগছে।মা হেঁসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল যা। ওদের সাথে মজা করে নে। আমি অদিতি আর শম্পার সাথে ছাদে গিয়ে বসলাম। দেখলাম ওরা তিনটে প্লাস্টিকের গ্লাস জোগাড় করে এনেছে কোথা থেকে। কোল্ড ড্রিংকও আছে। ছাদের দরজা বন্ধ করে তিনজনে হস্টেল বানিয়ে বসে পড়লাম। বেশ খানিকটা চড়ার পর শম্পা আমাকে বলল তোর মার জায়গায় আমি নিজে থাকলেও বিয়ে করে নিতাম। তবে কাকু মানে তোর নতুন বাপটা কে বলে দিস হ্যান্ডল উইথ কেয়ার।আমি সবই শুনলাম আর বুঝলাম, কিছু বলতে পারলাম না। আরও কিছুক্ষণ মদ গিললাম। দিয়ে চুপি চুপি চলে এলাম। আমি মার কাছেই শুতে এলাম। ওদের জন্য আলাদা জায়গা বরাদ্দ ছিল ওরা ওখানে চলে গেল। একটু পরে মা জিজ্ঞেস করল মজা হল।বুঝলাম মারও চোখে ঘুম নেই। মদের গন্ধ পাবে এই ভয়ে কথা বাড়ালাম না শুধু মুখ থেকে একটা হুমমতন শব্দ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। হতে পারে মা জানে যে আমি ভদকা খেয়ে এসেছি। কিন্তু যখন মা কথা তুলছে না আমিও তুলব না।
 
পরের দিন আমরা তিনজন প্রায় সবার পরে ঘুম থেকে উঠেছি। মা সবাইকে বলে দিয়েছিল যে আমরা হস্টেলে একসাথে থাকি। অনেক রাত অব্দি গল্প মেরেছি। তাই ঘুম থেকে উঠতে আমাদের দেরী হচ্ছে। অবশ্য কারোর আমাদের নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা নেই। তবে কয়েকজন অদিতি আর শম্পা যেভাবে কাল মার চেহারা বদলে নিয়ে এল তারপর থেকে ওদের ফ্যান হয়ে গেছে। আর ওরাও সবার সাথে যেন মিশে গেছে। আমরা দুপুরের দিকে বেড়িয়ে চারপাশটা একবার দেখলাম। এক বয়স্ক লোকও এসেছে। এই সময় নাকি কন্যাদান করবেন। উফফ আবারও বলছি পারি না। আজকের দিনটা বড্ড ম্যাদা মারা। একাজ সেকাজে কেটে গেল। দুপুরের দিকে ক্যাটারার এসে রান্না চড়িয়ে দিল। আমি অদিতিকে জিজ্ঞেস করলাম হঠাত ক্যাটারার কেন আজকের দিনে?” অদিতি আমাকে সেদিন লাখ কথার এক কথা বলেছিল বলল শোন তুই বিরক্ত, তুই দুঃখে আছিস, তার জন্য বাকিদের কেন কষ্ট দিচ্ছিস? চেপে যা। বিয়ে বাড়ির মজা নে। আর যদি সেটাও না নিতে পারিস, ওপরে গিয়ে ডাইরি লেখ। তোর মা ইনি। এত স্বার্থপর হস না। আমি মনে মনে বললাম আমি স্বার্থপর হলে এই বিয়েটাই হত কি? আমি সোজা না বলে দিতাম।কিন্তু কে জানে যদি আমি না বললেও ওরা বিয়ে করত তাহলে কি বা করতাম। ও আমাকে বলল এই বিয়ে না হলে তোর সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত? যা হচ্ছে সব কিছুতে তোর খারাপ লাগছে। তুই যা গিয়ে রেস্ট নে। ওর কথাও ঠিক। কারণ ।। কারণ যে কি জানিনা। ওর মা এইটা করলে কি ও মেনে নিতে পারত এই বয়সে? তবে হ্যাঁ ও অনেক সাহায্য করছে । আমি শুধু বিয়েটাতে শারীরিক ভাবে আছি। সব কাজ তো ওরাই করছে। আর এটাও ঠিক যদি রাহুল কাকু (উফফ আবার) আর মা চাইত তাহলে আমাকে না জানিয়েই সব সিদ্ধান্ত নিয়ে নিত। কিন্তু এরকম টা ওরা করে নি। ধরে নিচ্ছি আমিই স্বার্থপর। কিন্তু কাউকে কি করে বোঝাব, আমার বাবার ছবিটা যতবার দেখছি বুকটা ভেঙ্গে যাচ্ছে। এটা যার সাথে না হয়েছে সে বুঝবে না। কেমন জানি মনে হচ্ছে আমি হেরে যাচ্ছি। হাঁ অদ্ভুত কিন্তু আজ আমিও ন্যাকামি করছি। কাউকে বুঝতে দিচ্ছি না। কিন্তু মনের দিক থেকে ভেঙে গেছি। কি আর করব নাটক চালিয়ে গেলাম। বিয়ের আগের দিনের বাকি ঘটনার ওপর যবনিকা টেনে দিলাম। সব বাড়িতে যা হয় এখানেও টা হচ্ছিল। অদ্ভুত কিন্তু হচ্ছিল। আমার দোষ আমি কাউকে ক্ষমা করে পারিনা। না আমি কারোর কাছ থেকে ক্ষমা চাইও না। দোষ করলে ক্ষমা চেয়ে কি হবে। প্রায়শ্চিত্ত ছাড়া কি লাভ। বাবা বলেছিল। আজ বাবাকে বার বার মিস করছি। কিন্তু আমার একটা জেদ সেদিন ভেঙে গেছিল। বাবার মৃত্যুর পর আমি মনে মনে ঠিক করেছিলাম আমাকে দাঁড়াতেই হবে মা আর আমার ছোট্ট অ্যাঞ্জেলের জন্য। আর কি দরকার। এখন আমি নিজের জন্যই দাঁড়াব।
 
আদিখ্যেতার সমাপ্তি। বিয়ে এসে গেছে। বিয়েটা আমাদের বাড়ির সামনে একটা মণ্ডপ বেঁধে করা হয়েছিল। পাড়ার কিছু লোক এসেছিল। খুব ছিমছাম অনুষ্ঠান। যেমন অনেকের বিয়েতে হয় বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে তো চলছেই সেরকম এক্ষেত্রে হয়নি। একসময় মালা বদল হয়ে গেল। বুঝলাম আমার মা রাহুল কাকুর হয়ে গেল। আর আমাদের একজন নতুন অভিভাবক হল। কনে বিদায় ইত্যাদি যা সব বিয়েতে হয়ে থাকে এখানে তেমন কিছু হল না। যেটা হল সেটাকে বলে বাড়ি খালি। অর্থাৎ আমার মা, আমাকে আর আমার ভাইকে নিয়ে পরের দিন আমার নতুন বাবা নিজেদের বাড়িতে চলে গেল। রিয়া আর আদিত্য মানে ওর আগের পক্ষের যে দুজন ছেলে মেয়ে ছিল ওরা দেখলাম মাকে পেয়ে খুবই খুশি। মাকে দেখেও মনে হল, এই নতুন সংসার পেয়ে খুব খুশি। আমার ভাই তো আছে ভাইয়ের মতন। সে কি আর কিছু বুঝছে। সবচেয়ে খুশি মনে হল দেখে আমার নতুন বাবাকে। মাঝেই মাঝেই মায়ের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে কথা বলছে। না এখানে কালরাত্রি না কি বলে ওইসব ছিল না। বর আর কনে দুজনেই দুজনের সাথে কথা বলছিল। মা মুখে একটা লাজুক লাজুক ভাব নিয়ে ওদের ঘরে গিয়ে নিজের জিনিস পত্র গুছিয়ে রাখছিল। ওদের দিকে একজন পিসি এসেছিল। ওনাকেও দেখে মনে হল খুব খুশি। রাহুল কাকু (না বস আর বাবা ডাকতে পারছি না) আর ওর পিসি দুজন মিলে মাকে সাহায্য করছিল। আমাদের নিজেদের বাড়ি জানি বিক্রি হয়ে গেছে। কিন্তু প্রমোটার এখনও বাড়ির দখল নেয় নি কারণ আমাদের এখন ও কিছু জিনিস পড়ে আছে ওই বাড়িতে। আমরা তালা দিয়ে এসেছি এই নতুন বাড়িতে। তাই অদিতি আর শম্পাও আমাদের সাথে এই বাড়িতে চলে এসেছে। অদিতির সব ব্যাপারেই বাড়াবাড়ি। একটু পরে দেখলাম ও নিজে থেকে গিয়ে মাকে সাহায্য করতে শুরু করেছে। মা বারণ করেছিল কিন্তু ওকে দমানো যায় নি। রাহুল কাকুর চোখে যেন একটা খাই খাই ভাব। চোখ দিয়েই মাকে গিলে খেতে চাইছে। পারলে সব সময় মায়ের গায়ে পরে কথা বলছে। গায়ে হাত দিচ্ছে। মা আলমারিতে শাড়িগুলো গুছিয়ে রাখছিল। একবার তো দেখলাম মাকে সাহায্য করার ভাণ করে মার কাঁধে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরল। মা একটু লাজুক লাজুক ভাব করে রাহুল কাকুর বুক থেকে নিজেকে সরিয়ে নিল। ভাবখানা এই যে চিন্তা কর না, আমি তোমার সাথে আছি। ওদের বেডরুমে বাবার একটা ছবি লাগিয়েছিল দেওয়ালে। বাবার ছবির পাশে দেখলাম মালতী কাকিমার একটা ছবি আছে। তাতে একটা ফুলের মালা দেওয়া। মনটা খারাপ হয়ে গেল এটা ভেবে যে এখন রাহুল কাকু আমার মাকে আমার বাবা আর মালতী কাকিমার সামনেই ভোগ করবে। আর ওরা নীরবে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে। কিন্তু কিছুই করতে পারবে না। বারণও করতে পারবে না। চোখ টা ছল ছল করে উঠল। পরের দিন কিছু খাওয়া দাওয়ার আয়োজন ছিল। একটু পরে রাহুল কাকু একজন লোককে নিয়ে ক্যাটারারের সাথে কথা বলতে চলে গেল। বাবা যখনই বাইরে বেরত আমার মাকে বলতে শুনেছি সাবধানে যেও। আজ শুনলাম রাহুল কাকুকেও মা বলল সাবধানে যেও। মা যেন এই নতুন পরিস্থিতিতে খুব তাড়াতাড়ি অভ্যস্ত হয়ে গেছে। রাহুল কাকুকে যে চোখে হারাচ্ছে সারাক্ষণ। 
[+] 1 user Likes pcirma's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: একটি নাম না দেওয়া গল্প... আসুন আর পড়ুন by somsom1981 - by pcirma - 18-10-2019, 12:45 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)