17-01-2019, 03:32 PM
একটু পরই জয় কামদেব বাবা ধ্বনির মধ্যে বাবা প্রবেশ করলেন।এবার তার দিকে ভাল করে দেখলাম ।প্রায় ছ ফুটের মতো,ফর্সা ,দাড়ি গোফ সুন্দর করে কামানো, খাড়া নাক,পুরু দুই ঠোট,বড় বড় চোখের দৃষ্টিতে করুনা ঝরে পরছে। গরদের ধুতি,খালি গায়ে পেশিবহুল চেহারায় তাকে একেবারেই সাধু সন্যাসী মনে হয় না ।বয়েস বোঝা শক্ত,ষাট না আশি । বাবা বেদীর উপর বসে আমাদের এমন হাত নাড়িয়ে ঢেকে নিলেন যেন কতকালের পরিচয় । বাবার বেদির গায়ে এক রক্তবস্ত্র পরা,পাকা চুল দাড়ির এক সন্যাসীর ফটো । আমরা তিনজন মাথা নিচু করে তাই দেখছিলাম,হঠাৎ বৌটা বলে উঠলো,"বাবা,ইনি কি আপনের বাবা?" বাবা ওর মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিয়ে বল্লেন" জনমদাতা নয় তবু বাবা"।আমি সেই সাধুর নাম জিজ্ঞেস করতে যেতেই হাত দিয়ে আমায় থামিয়ে বল্লেন "সে এক লম্বা কাহানী,শোন.....
আমার জন্ম পাকিস্তানের লহোরে । ৪৭সালে দেশ স্বাধীন হবার পর দু দেশে দাঙ্গা লেগে গেল,আমার বাবামা অন্ধকারে পালিয়ে এ দেশে আসছিল,আমি অন্ধকারে বাবামাকে হারিয়ে ফেল্লাম।তখন আমার তিন বছর বয়স ।রাস্তায় বসে কাঁদছি,এক দয়ালু মানুষ আমায় কোলে তুলে নিলেন,জিগেস করলেন কোথায় যাবো,বাবা বলেছিলো গুরুদাসপুরে এক রিস্তেদার মনজিত সিং এর বাড়ি,তাই বোল্লাম ।উনি গুরুদাসপুরের দিকে যে সব রিফ্যুজীরা যাচ্ছিল,তাদের একজনের সাথে আমায় ছেড়ে দিলেন। গুরুদাসপুর পৌছে অনেক খোঁজ করলাম,খুঁজে পেলাম না, ওর বাড়িতেই থেকে সন্তানের মতই মানুষ হতে লাগলাম।
তখন আমার চার বছর বয়স,ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি,বারান্দায় এক সাধু বসে আছেন। আমার মা বল্লো " সতনাম, জংলিবাবাকি পাও মে পড় যা বেটা"।
লালাকাপড় পরা,মাথায় বড় বড় চুল,মুখ ভরা গোফ দাড়ি,গলায় রুদ্রাক্ষের মালা, দেখলেই ভয় করে, আমিও ভয়ে চোখ বুজে ফেললাম ।দুদিন জংলি বাবা খেলা করলো । যাবার সময় মা কে বললো"এ বাচ্চাকো মুঝে দে দে বেটি"। মাতো এককথায় রাজী হযে রাজি।জংলিবাবা আমায় কাঁধে করে বেরিয়ে পরলো। হেঁটে হেঁটে ভক্তদের বাড়ি,কোথায় দুদিন,কোথাও তিন দিন ।হরিয়ানা,দিললী ,কানপুর,এলাহাবাদ,বেনারস ,পাটনা হয়ে এক জংগলে এসে বাবা বললো" এখানেই ডেরা বান্ধবো বাচ্চা" প্রায় ছবছর বাবার সাথে ঘুরেছি,অনেককিছু অল্প অল্প বুঝেছি।এই জংগলে তখন হায়না,চিতা,বুনো শুয়োরের বাস।বাবার কাছে একটা লাঠি ছাড়া কিছু নেই কিন্তু ওরা আমাদের ডেরার কাছে এলে জংলিবাবার হুংকারেই পালিয়ে যেত । বাবার লিঙ্গটা ছিল প্রায় 10্চির মতো বড়। যখন শুয়ে থাকত,লিঙ্গটাও আকাশের দিকে খাঁড়া হয়ে থাকতো ।