Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.42 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#22
পর্ব ২০- বিধির বিধানঃ

রূপসা ও তিলোত্তমা ও অনেক ভোরে ঘুম থেকে উঠে গেছে। সকালে উঠেই তিলোত্তমা দেখে রাজুর মেসেজ। “কি তিলোত্তমা আসছ তো গরিবের বাড়ী তে” তিলোত্তমা মনে মনে একবার “পাগল একটা” বলে রিপ্লাই করে- “নিশ্চয় আসব তুমি চিন্তা করোনা”। ওরা দুজনেই বাস ধরে চলে আসে। এদিকে বাস স্ট্যান্ড এ রাজু আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল। কিছুটা দূরে লুকিয়ে ছিল সাইদুল। তিলোত্তমা রাজুকে লক্ষ্য করে মুচকি হাসে একবার। আর কিছুটা দূর থেকে সাইদুল ও লক্ষ্য করে রূপসা কে। এর আগে ও রূপসা কে এতটা গভীর ভাবে লক্ষ্য করেনি। কাল রাতে রাজুর আশ্বাস ও পেয়েছে। ও জানে রাজু যখন একবার ওকে বলেছে তখন রূপসা ওর বিছানায় কিছুদিনের মধ্যেই এসে উথবে। আজ সাইদুল খুব ভাল করে লক্ষ্য করে রূপসা কে। সত্যি বুক, পাছা কোমর সব ই মায়ের মত। খালি ড্রেস টা আলাদা। এই জন্যই রূপসা কে তিলোত্তমা আর মালতী দেবীর চেয়ে এতটা আলাদা লাগে। সাইদুল একবার মনে মনে বলে ড্রেস এ কি আসে যায়, বিছানায় তো শুধুই শরীরটা থাকবে। রাজু আর ওদের পিছু নেয়না। রূপসা ও তিলোত্তমা আসতে আসতে বাড়ীর দিকে পৌঁছে যায়। রাজু সাইদুলের সাথে আজকের সমস্ত প্ল্যানের ব্যাপারে আলোচনা করতে থাকে।
মালতী দেবী স্থির হয়ে এক জায়গায় বসে থাকেন। আর ভাবতে থাকেন ঠিক কি করে উনি তিলোত্তমা কে সব বোঝাবেন। উনি জানেন তিলোত্তমা ঠিক কতটা অভিমানি প্রকৃতির। উনি জানেন বকাঝকা করে কিছুই হবেনা। তিলোত্তমা কে শুধুই বোঝাতে হবে। আর এমন ভাবে ওকে বলতে হবে যাতে ওর মনটা ভেঙ্গে যায়। ওরা দুজনেই বাড়ীতে এসে পৌছায়।
রূপসাঃ মা আমরা কখন বেরব। আর তুমি এরকম ভাবে বসে আছ। কত কিছু গোছাতে হবে বলত।
তিলত্তমাঃ কি হয়েছে মা। দেখে মনে হচ্ছে তুমি কোন চিন্তা করছ। কি হয়েছে বল প্লিজ।
মালতী দেবীঃ তোমরা ড্রেস চেঞ্জ করে আসো। আজ তোমাদের একটা কথা বলব।
তিলত্তমাঃ কি কথা মা, প্লিজ বলনা।
মালতী দেবীঃ না আগে ড্রেস চেঞ্জ করে নাও তারপর বলব।
ওরা দুজনেই ভেতরের ঘরে চলে যায় ড্রেস চেঞ্জ করতে। কিছুক্ষন পরে ওরা আবার ফিরে আসে।
তিলত্তমাঃ হা মা এবার বল কি হয়েছে?
মালতী দেবীঃ তোমরা বস এখানে। তোমাদের আমি কিছু কথা বলব। আর রূপসা দয়া করে আজ আমার কথা গুলো মন দিয়ে শোন এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
রূপসাঃ ওহ তুমি আমায় কি ভাবো বলত মা। তুমি বল আমি মাঝে কোন কথা বলব না।
মালতী দেবীঃ তোমরা তো নিশ্চয় জানো যে আমরা যে বাড়ী তায় থাকি সেটা আসলে মানব দার। তোমাদের বাবা অত্যন্ত খ্যাতনামা একজন প্রফেসর। অন্যের দয়ায় আমরা থাকি এটা কি ওনার ব্যাক্তিত্ব অনুযায়ী ভাল লাগে।
রূপসাঃ মা তুমি কি এই বাড়ী টা ছেড়ে দিতে বলছ। আমাদের সমস্ত বন্ধু বান্ধব এই পাড়ায়। অন্য জায়গায় কি আমরা থাকতে পারব। প্লিজ তুমি বোঝো একটু।
তিলত্তমাঃ মা তুমি তো বাবাকে বলতে পার এই বাড়িটা বাবা যদি মানব কাকুর থেকে কিনে নেয় তাহলে তো আর কোন প্রব্লেম ই থাকবে না।
মালতী দেবীঃ তোমাদের দুজনের কথা ভেবে আমরা কখনই তাই এই পাড়া ছেড়ে যাইনি। আসলে প্রবলেম টা লোকে কি বলছে টা নয়। আর সত্যি ই আমরা এই বাড়ী টা কিনতেই পারি।
তিলত্তমাঃ তাহলে প্রবলেম টা কোথায় মা?
মালতী দেবীঃ এই পাড়া টা খুব অসামাজিক। একটা ব্যাপার আমি তোমাদের থেকে লুকিয়েছি। তোমরা এখন বড় হয়েছ। তাই তোমাদের সব খুলে বলব। কিন্তু তোমরা কখনো অন্য কাউকে এব্যাপারে কিছু বলবে না।
রূপসাঃ এমন কি আছে। যা তুমি কোনদিন আমাদের বলনি।
মালতী দেবীঃ শুধু তোমাদের কেন আমি কখন ও তোমার বাবাকেও বলিনি। কিন্তু বাধ্য হয়েই কাল রাতে বলেছি। তোমরা তো জানো আমি কিছুতেই বাথরুম এ স্নান করতে পারিনা। এই পাড়ায় একটা ছেলে আছে ভীষণ বাজে ছেলে। ওর সম্বন্ধে আমি অনেকের থেকেই বাজে কথা শুনেছি। ছেলেটা প্রায় ২-৩ বছর ধরে লুকিয়ে লুকিয়ে আমার স্নান করা দেখত। আমি অনেকবার ধরেও ফেলেছি। আমাকে দেখা মাত্র ও পালিয়ে যেত। কাল ও প্রচুর বারাবারি করেছে। আমি স্নান করছিলাম তখন ও পাঁচিল টপকে ভেতরে চলে আসে। আমি দৌড়ে ঘরে ঢুকে যেই কাপড় পরে বাইরে বেরিয়েছি দেখি ও পালিয়ে গেছে।
রূপসাঃ ওহ কি বাজে ছেলে গো। আমি সামনে পেলে জুতো খুলে ওকে মারতাম। ছেলেটার নাম কি? কেমন দেখতে ওকে?
মালতী দেবীঃ ওর নাম রাজু। পাশের ই বস্তিতে থাকে। লম্বা রোগা মত গায়ের রঙ ফরসা। একটা দোকানে কাজ করে।
তিলোত্তমার মাথা ঘুরতে শুরু করে। কিছুতেই নিজের মায়ের এই কথা গুলো ওর বিশ্বাস হচ্ছিল না। বারবার মনে হচ্ছিল ওর মা মিথ্যে বলছে। যে ওর সম্মান বাচিয়েছে সে কিনা এরকম। তিলোত্তমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পরতে লাগলো। মালতী দেবী তা লক্ষ্য ও করলেন।
মালতী দেবীঃ না রূপসা তুমি এসব কিছুই করতে যাবেনা। ছেলেটা খুব ই খারাপ। ব্যাবহার এমন মিষ্টি যে যেকোনো মেয়ের ই মন গলিয়ে দিতে পারে। তোমরা জানো সেদিন ই রুমিদি বলছিলেন ছেলেটার মধ্যে কি আছে কি জানি রুমিদির মেয়েকে এক সময় নিজের প্রেমে ফাঁসিয়ে দিয়েছিল। প্রমিলা কে তোমরা তো দেখেছ। বিশাল সুন্দরী আর সেরকম সুন্দরী, এখন বিয়ে হয়ে গেছে। একসময় ওই রাজু ওকেও ভুলিয়ে ভালিয়ে নিজের প্রেমে ফেলেছিল। বহু কষ্টে ওর বাবা মা সামলেছেন ব্যাপারটা। ছেলেটা একটা জানোয়ার। প্রমিলা কে ছাড়ার জন্য ওর বাবা মার থেকে ১ লাখ টাকা নিয়েছিল।
তিলোত্তমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পরতে শুরু করল।
মালতী দেবীঃ তোমরাই বল এতকিছুর পর কি আমাদের আর এখানে থাকা উচিত। তোমার বাবা সারাদিন বাড়ীতে থাকেন না। তোমরা ও বড় হয়ে গেছ। কিছু বিপদ হলে কে দেখবে বল তো।
তিলত্তমাঃ মা বাবাকে বল একটা ফ্ল্যাট দেখতে আমাদের এই পাড়ায় থাকা উচিত নয়।
তিলোত্তমা কথাটা শেষ করেই ভেতরে চলে গেল। মালতী দেবি জানেন তিলোত্তমা খুব কষ্ট পেয়েছে। কিন্তু মালতী দেবি ও তো মিথ্যে কিছু বলেন নি। রূপসার মানতে কষ্ট হলেও ও কিছু বলল না।
কিছুক্ষনের মধ্যেই সুবীর বাবু এসে হাজির হলেন। তখন ও রূপসা ওখানেই বসে ছিল
সুবীর বাবুঃ হা একদম পাকা কথা বলে এলাম। বালিগঞ্জ এ খুব অল্প দামে ফ্ল্যাট টা পেয়ে যাচ্ছি। তোমরা রাজি হয়ে গেলে আমি আজ ই পেমেন্ট করে দেব। মা রূপসা তুই আর না বলিস না রে। এখানে আমার আর তোর মায়ের থাকতে সত্যি ই আর ভাল লাগেনা। আর তোরাও তো এখানে থাকবি না, থাকবি হোস্টেল এ। দেখবি কলেজ এ কত নতুন নতুন বন্ধু হয়ে যাবে।
রূপসা কিছুই বলল না, ভেতরে তিলোত্তমার কাছে চলে গেল।
সুবীর বাবুঃ মালতী, কি হোল ওরা কি রাজি? তুমি ঠিক করে বুঝিয়ে বলেছ তো?
মালতী দেবীঃ হা তিলোত্তমা কে এমন ভাবে বুঝিয়েছি যে ও আর জিবনে কখনো ওই ছেলেটার সাথে কথা বলবে না। জানত মেয়েটা খুব কষ্ট পেয়েছে। আমি দেখছিলাম ওর চোখ দিয়ে জল পড়ছিল।
সুবীর বাবুঃ তুমি যা করেছ তাতে ওর ভালই হবে। তুমি কোন চিন্তা করোনা, এবার থেকে আর আমাদের কোন প্রবলেম ই থাকবে না।
এদিকে তিলোত্তমার মোবাইল এ একের পর এক রাজুর মেসেজ আসছে। তিলোত্তমা ঠিক যতটা নরম ঠিক তততাই কঠোর। প্রথম টা ওর মেনে নিতে প্রচুর কষ্ট হয়েছিল কিন্তু তারপর ও নিজের মন কে শক্ত করে। ও রিপ্লাই করে “রাজুদা প্লিজ আমায় আর মেসেজ করোনা। আমি কাল রাতে অনেক ভেবেছি। আমার একটা স্ট্যাটাস আছে যার সাথে তুমি বেমানান। সত্যি আমরা কখনই বন্ধু হতে পারিনা। তুমি ভাল থেকো আর আমায় মেসেজ করোনা। আমি আমার নাম্বার চেঞ্জ করে নেব”। রাজু এই মেসেজ টা দেখে ঘাবড়ে যায়। ওর সমস্ত প্ল্যান ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যায়। ও সাইদুলের কাছে যায় আর ওকে বলে কি হচ্ছে ভেতরে তা খেয়াল করতে। সাইদুল ও যথারীতি দুধ নিয়ে সুবীর বাবুর বাড়িতে আসে। সুবীর বাবু ওকে দেখা মাত্র বলেন
সুবীর বাবুঃ ভাল হয়েছে সাইদুল তুমি তাড়াতাড়ি এসে গেছ। আমরা এই বাড়ি তা ছেড়ে দিচ্ছি। অন্য জায়গায় চলে যাব। তুমি এই মাসের টাকা টা নিয়ে নাও।
সাইদুল কিছুই বুঝতে না পেরে রাজুকে এসে সব বলে। রাজু খুব হতাশ হয়ে যায় কিন্তু ওর পক্ষে আর কিছুই করার থাকেনা।
সুবীর বাবুদের সন্ধ্যের সময় ফ্লাইট ওনারা সবকিছু গুছিয়ে নেন। এরমধ্যেই একবার সুবীর বাবু ফ্ল্যাটের জন্য আডভান্স করে আসেন। কিছু লেবারের সাথেও কথা হয়, ওরা এই মাঝের দুদিনে বাড়ির মালপত্র ওখানে নিয়ে জাবেন আর দেখভাল করবেন বিপ্লব বাবু। রাজু ও সাইদুল উদাস দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু ওদের পক্ষে সত্যি ই কিছুই করার ছিলোনা। ওরা দুজনেই হাল ছেড়ে দেয়। সুবীর বাবুও একবার মানব বাবুকে ফোন করেন ও বলেন ঘরের চাবি বিপ্লব বাবুর থেকে নিয়ে নিতে ওরা একদম ফ্ল্যাটেই চলে যাবে। মানব বাবুও হতাশ হয়ে পড়েন।
নির্দিষ্ট সময়েই সুবীর বাবু নিজের দুই মেয়ে আর স্ত্রী কে নিয়ে প্লেন এ ওঠেন। বাড়ি টা ছাড়ার সময় ওনাদের প্রত্যেকের ই চোখে জল এসে গেছিল। কিন্তু বিধির বিধান বোধ হয় কেউ ই খণ্ডাতে পারেনা।


(প্রথম খণ্ড শেষ)
[+] 1 user Likes manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 17-01-2019, 10:05 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)