Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.42 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#21
পর্ব ১৯- ভোরের আলোঃ

সারা রাত ঘুম আসেনি মালতী দেবীর। হয়ত মানব বাবুর ও সারাটা রাত ই জেগে থাকা। ভোরের আলো ফোটার কিছুক্ষন আগে মালতী দেবীর দু চোখ বুজে এসেছিল। কখন যে ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে পরেছিলেন খেয়াল নেই। ঘুম ভাঙল মানব বাবু ও সুবীর বাবুর কথাবার্তায়। চোখ তা বুজেই উনি খাটে পড়ে থাকলেন। কিছুতেই যেতে চাইলেন না ওদের কাছে। সুবীর বাবু ঘুম থেকে উথেছেন প্রায় ৪ টের সময়। প্রথমেই চোখে পড়েছে পাশে সুয়ে থাকা মালতী দেবী তারপর ঘর তার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরেছেন উনি নিজের শোয়ার ঘরে নেই। বাইরে বেরিয়ে পাশের ঘরটায় উকি মেরে মানব বাবুকে লক্ষ্য করেছেন। মানব বাবুর শরীরে ওই বারমুন্দা আর ওনার নিজের শরীরে মানব বাবুর ড্রেস ওনাকে সমস্ত ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে। সুবীর বাবু জানেন যা যা ঘটেছে তার জন্য একা মানব বাবু দায়ী নয়। মানব বাবুর ফাঁদে উনি নিজেই পা দিয়েছেন। এরপর থেকে বিছানায় শুয়ে শুয়ে যন্ত্রণায় ছটপট করে গেছেন। যতবার ই মালতী দেবীর দিকে নজর পড়েছে ওনার মনে হয়েছে ঠিক কি করে উনি মুখ দেখাবেন নিজের স্ত্রীর কাছে। বারবার ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছেন যেন কোনমতেই ওনার স্ত্রী কিছু আঁচ না করেন। এতকিছুর মধ্যেও সুবীর বাবু একটি ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে গেছেন তা হোল মানব বাবুর চরিত্র। সুবীর বাবু ১০০% নিশ্চিত যে মানব বাবু দুশ্চরিত্র এবং ওনার বউ এর ওপর মানব বাবুর একটা লোভ আছে। মনে মনে নিজেকে এই বলেই স্বান্তনা দিয়েছেন যে অন্তত পক্ষে মানব বাবুর ব্যাপারে কঠোর একটা সিধ্বান্ত উনি নিতে পারবেন। এর কিছুক্ষন পর ই মানব বাবুর ঘুম ভাঙ্গে এবং উনি বাইরের ঘরটার দিকে এগিয়ে আসেন। মানব বাবুকে বাইরে দেখে সুবীর বাবুও বাইরে বেরিয়ে আসেন। নিজের অতি পরিচিত স্বকীয় ভঙ্গিতে মানব বাবু পুরো ঘটনা তা ভুলে যাওয়ার ভান করে স্বাভাবিক কথা বলতে শুরু করেন। যদিও সুবীর বাবু কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারেন না। এদিকে ওনাদের কথাবার্তা শুনে মালতী দেবীর ও ঘুম ভেঙ্গে যায়। গতরাতের ঘটনায় মানব বাবুর প্রতি ওনার মনে এততাই ঘৃণা ধুকে গেছে যে উনি বিছানায় শুয়েই ওনাদের কথা শুনতে থাকেন।
মানব বাবুঃ বুঝলি সুবীর, রূপসা মা আর তিলোত্তমা মার সাথে দেখা করতে এসেছিলাম। ওদের সাথে তো আর দেখা হলনা। ওদের বলিস যে এই সপ্তাহের মধ্যেই ক্লাব থেকে ওদের সম্বর্ধনা দেওয়া হবে।
সুবীর বাবু চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলেন।
মানব বাবুঃ তিলত্তমাকে বলবি আমি খুব খুশি হয়েছি। কলেজ এ অ্যাডমিশন হয়ে গেলে ও যেন আমায় একটা ফোন করে।
সুবীর বাবুঃ আমার কিছু কথা আছে মানব।
মানব বাবুঃ আরে কি কথা বল। কোন জিনিসের প্রয়োজন আছে তো বল আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি। আর তোদের প্লেনের টিকিট টা আমি...
সুবীর বাবুঃ আচ্ছা মানব তোর এই বাড়ী তায় আমরা এত বছর যে থাকলাম। ভেবে নে তুই আমাদের ভাড়া দিয়েছিস। কত টাকা হতে পারে বলত এই ২০ বছরের ভাড়া বাবদ। ১৫-২০ লাখ টাকা তাইত।
মানব বাবুঃ তুই কি আজে বাজে কথা বলছিস সুবীর, তুই আরাম করে তিলোত্তমা কে নিয়ে ...
সুবীর বাবুঃ চল ২৫ লাখ ই ধরলাম। আমি আজ ই আগের প্রোজেক্ট তার জন্য ২৫ লাখ টাকা পাচ্ছি। ২ দিনের মধ্যে ওই টাকা টা তোর।
এবার মালতী দেবী সজাগ হয়ে সব শুনছেন। উনি জানেন এমন কিছু ঘটেছে ওনাদের মধ্যে যা উনি জানেন না বা কোনদিন ও জানবেন না। নিজের স্বামীর ওপর যে রাগ ওনার হয়েছিল এক মুহূর্তের জন্য টা কথায় যেন হারিয়ে গেল। এদিকে মানব বাবু কোন কথার আর উত্তর দিতে পারলেন না। উনি হতবম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন।
সুবীর বাবুঃ তুই আর আমাদের সাথে কোন কন্টাক্ট রাখিস না। তোর দয়া বল দান বল হয়ত তার জন্য এতগুলো বছর আমি অনেক কিছুই মেনে নিয়েছি তবে আর নয়। আজ থেকে আমার একটা নতুন জীবন শুরু হোল।
মানব বাবুঃ তোর প্রচুর টাকা হয়েছে না। তুই বেইমান সুবীর।
সুবীর বাবুঃ শুধু টাকা নয়রে নাম ও হয়েছে প্রচুর। আমাকে এক ডাকে গোটা কলকাতা চেনে। আমি তোর থেকে এই বেইমান অপবাদ টা আশা করেছিলাম।
মানব বাবুঃ টাকা দিয়ে তুই আমার ঋণ শোধ করতে পারবিনা।
সুবীর বাবুঃ জানি তো। টাকা টা শুধুই তোর মুখ বন্ধ করার জন্য। তোর ঋণ অনেক আগেই শোধ হয়ে গেছে। বাজারে রাস্তায় কখনো কান পাতবি দেখবি তোর জন্য আমাদের পরিবার তার কি অপবাদ রয়েছে। আর এগুলো যে সব ই তুই আমাকে অপদস্থ করার জন্য করেছিস তা তুইও জানিস।
এবার মালতী দেবী বিছানা থেকে উঠে আসতে আসতে ওনাদের সামনে এসেছেন। সুবীর বাবুর এই রুপ উনি এর আগে কখনো দেখেন নি। সুবীর বাবু রাগে ফুঁসছেন। মালতী দেবী কে দেখে উনি বলে ওঠেন
সুবীর বাবুঃ মালতী তোমার কথা আমি মেনে নিলাম। আমরা আর এখানে থাকবনা। একটা পুরনো ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে। আমরা ওখানেই চলে যাব। আমি আজ ই কথাবার্তা বলে রাখছি।
মানব বাবুঃ তুই বাড়িতে ডেকে আমায় এভাবে অপমান করলি। বউদি একবার তুমি কিছু...
সুবীর বাবুঃ মালতীর সাথে তোর কোন কথা নেই। আমি ওর স্বামী আমি যা বলব ওকে তাই মানতে হবে। মালতী তুমিও আমার সাথে যাবে তিলোত্তমার অ্যাডমিশন এর জন্য। তুই আর কখনো আমাদের কাছে আসবিনা মানব। আজ থেকে সব সম্পর্ক শেষ আমাদের।
মানব বাবু একবার তাকালেন সুবীর বাবু ও মালতী দেবীর দিকে তারপর গটগট করে হেঁটে বেরিয়ে চলে গেলেন। মালতী দেবীর মনে আর কোন রাগ নেই। এই প্রথম বারের জন্য ওনার নিজের স্বামী কে খুব সাহসী মনে হয়েছে। আজ এত লজ্জা কষ্টের মধ্যেও মালতী দেবী প্রচণ্ড খুশি।
সুবীর বাবুঃ মালতী তুমি এখানেই দাঁড়াও। আমি দরজা তা বন্ধ করে আসি। তোমার সাথে আমি এই মুহূর্তেই কিছু কথা বলতে চাই।
মালতী দেবী চুপ করে ওখানে দাঁড়িয়ে থাকলেন। সুবীর বাবু দরজা তা লাগিয়ে দিয়ে আবার ফিরে এলেন ওখানে।
সুবীর বাবুঃ মালতী তুমি সব ই বোঝ। আজ একটা সত্যি কথা তোমায় আমি বলছি। মানবের তোমার ওপর নজর ছিল। আমি বহুদিন ধরে তা লক্ষ্য করতাম কিন্তু কাল ও সব সীমা অতিক্রম করে গেছে। আমি চাইনা তুমি আর কোনদিন মানবের সাথে কথা বল।
মালতী দেবীঃ তুমি যা বলবে তাই হবে।
সুবীর বাবুঃ মালতী আমি আজ ই ওই ফ্ল্যাট টা দেখে আসব। যদি পছন্দ হয়ে যায় তাহলে দুদিনের মধ্যেই আমরা এই বাড়ী টা ছেড়ে দেব।
মালতী দেবীঃ হা আমিও তাই চাই। এই জায়গাটা প্রচণ্ড অসামাজিক। আমি এটা ছেড়ে চলে যেতে চাই।
সুবীর বাবুঃ আর ও একটা কথা। এটা তিলোত্তমার ব্যাপারে। তুমি মাথা ঠাণ্ডা রাখবে আর ওকে বকাঝকা করবে না।
মালতী দেবীঃ তিলোত্তমা কি করেছে? ও কি প্রেম ভালোবাসা করছে নাকি? দেখলে তো তোমায় কতবার আমি বলেছি মেয়েদের এত স্বাধীনতা দিয়না। তুমি আমার কথা শুনতেই চাওনা।
সুবীর বাবুঃ না সেরকম কিছু নয়। ও কোন অন্যায় করেনি। তবে ও খুব বোকা আর সহজ সরল, তাই এই মুহূর্তেই ওকে বুঝিয়ে বলা উচিত সব।
মালতী দেবীঃ আরে তুমি এইসব ভনিতা করা বন্ধ করে আমায় বল কি হয়েছে।
সুবীর বাবুঃ কাল আমি যখন কলেজ থেকে ফিরছি বাজারের সামনে দেখলাম তিলোত্তমা বাস থেকে নামছে সাথে একজন ছেলে। আমি ওদের পিছু নিলাম। ছেলেটার মুখ দেখার পর আমার মাথা খারাপ হয়ে গেল। আমাদের পাড়ায় রাজু বলে ভীষণ বাজে একটা ছেলে আছে। তিলোত্তমা কি করে ওরকম একটা ছেলের সাথে কথা বলে আমি জানিনা। যদিও আমি খুব ভাল করে দেখেছি ও বুঝেছি সম্পর্ক টা পরিনয় নয়। হয়ত পাড়ার ছেলে সেই হিসেবেই তিলোত্তমা ওর সাথে কথা বলেছে। কিন্তু ছেলেটা ভীষণ বাজে। সব তোমায় বুঝিয়ে বলা সম্ভব নয়।
সুবীর বাবুর মুখে এই কথা শুনে মালতী দেবী স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন। এতক্ষন মানব বাবু ও কালকের ঘটনা টা নিয়ে যে ওনার মনে যে ঝড় বইছিল টা হথাত বন্ধ হয়ে গিয়ে নতুন এক তুফান। রাজু ঠিক কি পরিমান বাজে টা মালতী দেবীর চেয়ে ভাল আর কেউ ই হয়ত জানেন না। সুবীর বাবু একদৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকলেন মালতী দেবীর দিকে।
সুবীর বাবুঃ শোন মালতী ওরা বড় হচ্ছে। তুমি আমায় কথা দাও বকাঝকা করবে না। আমার কথা শোন দুই মেয়েকে কাছে ডেকে ভাল করে বোঝাও। মা হয়ে তুমি ই পারবে মেয়েদের এই ব্যাপারগুলো বুঝিয়ে বলতে।
মালতী দেবী মাথা ঠাণ্ডা করে সব শুনলেন। উনি জানেন এই মুহূর্তে ওনার ওপরে বিশাল এক দায়িত্ব।
সুবীর বাবুঃ যদি আমি প্লেনের টিকিট জোগাড় করতে পারি তাহলে আজ রাতে বেরব। আমি বাজারে গিয়ে একবার বিপ্লব বাবুর সাথে কথা বলে দেখি। উনি ই আমায় ফ্ল্যাট তার কথা বলেছিলেন। সেরকম হলে আজ ই আডভান্স করে দেব। রূপসা আর তিলোত্তমা হয়ত কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে যাবে। তুমি ওদের সাথে কথা বল। আমি একটু দেরি করে ফিরব।
সুবীর বাবু বাজারে বেরিয়ে গেলেন এদিকে মালতী দেবী মাথা ঠাণ্ডা করে ভাবতে লাগলেন ঠিক কি ভাবে উনি মেয়েদের বোঝাবেন।
[+] 1 user Likes manas's post
Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 17-01-2019, 10:01 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)