13-10-2019, 11:30 PM
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘বিয়ে তো হয় নি মনে হয়। চেষ্টা করছেন?’ ও আমার দিকে তাকাল, তারপর আবার সোজা তাকিয়ে বলল, ‘করেছিলাম চেষ্টা। একটা মেয়ে ভালোবাসতো। বিয়ে করার জন্য রাজি হয়ে গেছিল। কিন্তু বোন ভেস্তে দিল।‘ আমি বললাম, ‘তনু ভেস্তে দিল মানে? ও আবার কি করল?’ দাদা উদাস হয়ে জবাব দিল, ‘আরে জানেন না ও কি ভীষণ শত্রু আমার। মেয়ের বাড়ীতে গিয়ে আমার নামে যাতা বলে এসেছিল। বলেছিল আমি বাউন্ডুলে, আমার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। চাকরি করি না। বাবা যেকোনো দিন ঘর থেকে বার করে দিতে পারে। বাবার হোটেলে খাই। মেয়েটা পরে খুব কেঁদেছিল জানেন?’ কেন জানি দাদার জন্য মনটা কেমন করে উঠলো। যদি তনু এটা করে থাকে তাহলে খুব অন্যায় করেছিল। প্রেমের ব্যাপারে এই সব করা উচিত হয় নি। দাদার দিকে তাকিয়ে খুব খারাপ লাগলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কেন তনুর এইসব করার কি দরকার ছিল?’ দাদা একটা দোকানের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘চলুন ওখানে গিয়ে বসি। চা খেতে খেতে কথা বলব।‘ দোকানে এসে চায়ের অর্ডার দিলাম। যথাসময়ে চা এসে গেল। চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম, ‘এবারে বলুন।‘ দাদা প্যাকেট থেকে আরেকটা সিগারেট বার করে ধরালো, বলল, ‘হুম, আমার সাথে এটা করেছিল যেহেতু আমি ওকে বাঁধা দিয়েছিলাম।‘ ও, তাহলে তুমিও একি দোষে দোষী? ঠিকই করেছিল তাহলে তনু। আমি বললাম, ‘আরে বাপরে, তাহলে আপনি যদি ওই একি ব্যাপার করে থাকেন তাহলে তো তনু অন্যায় কিছু করে নি, আমি বলব ঠিকই করেছিল।‘ দাদা আমাকে থামিয়ে বলল, ‘প্রথমে শুনুন তো ব্যাপারটা। তারপরে বলবেন যা বলার।‘ আমি অপেক্ষা করলাম। ওর দাদা বলল, ‘ও পার্থর সাথে বিয়ের আগে একটা '. ছেলেকে ভালোবাসতো। বেশ কয়েক বছর ঘোরাফেরা করেছে ওর সাথে। পাড়ায় প্রায় সবাই জানতো ওদের ব্যাপার। বাবা আর মা খুব ভালো চোখে দেখেনি ব্যাপারটা। কিন্তু শেষে কি হোল জানেন?’ আমার মুখ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেড়িয়ে এলো, ‘কি?’ দাদা নির্বিকারভাবে বলল, ‘ছেলেটা ওকে প্রেগন্যান্ট করে দিয়েছিল। আমি ওকে নিয়ে গিয়ে আবোর্শন করাই।‘ আঁতকে ওঠার মত কথা। তনু তো বলেছিল ওদের মধ্যে সেক্সই হয় নি। তাহলে এটা আবার কি কথা। আমি বললাম, ‘আপনি সত্যি বলছেন?’ দাদা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো, ‘আরে সত্যি নাতো কি। এইজন্য বাবা তড়িঘড়ি করে পার্থর সাথে বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু জানের পার্থর ছোড়দিরা এই ঘটনা জানতো বলে ওরা অনেক বারন করেছিল পার্থকে। জানি না বোন কি বশ করেছিল, পার্থ ওকে ছাড়া বিয়ে করবে না বলে দিয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর বোনকে ওর বন্ধুকে বলতে শুনেছিলাম পার্থর সাথে সেক্স লাইফ নাকি ভালো না। পার্থর কোন দোষ ছিল বলে মনে হয় না, বোন দিত না।‘ সেকিরে ভাই, কার সাথে বন্ধুত্ব আমার? ঠিক করছি কি তনুর সাথে সম্পর্ক রেখে?আমার মুখ দেখে দাদা বলল, ‘আশ্চর্য হচ্ছেন না শুনে? আমার বোন এই। ওই যে চক্রবর্তী। দেখুন শেষে আমাদের মধ্যেই ওর বিয়ে হোল মানে আমাদের রিলেশনে এলো। কিন্তু চক্রবর্তী যা বলে বেরিয়েছে আমাদের পাড়ায়। জানেন নিশ্চয়ই ও এখানকার ছেলে। সুতরাং ও যা বলে বেড়িয়েছে পাড়ায় সবই আমার কানে এসেছিল। ও বলে বেড়িয়েছে যে বোনকে নাকি ও খুব উপভোগ করেছে। এমন উপভোগ করেছে যে পেটে বাচ্চা পর্যন্ত এনে দিয়েছে। আপনার কথাও বলেছে। তার থেকে তো জানি আমি সব।‘ গাঁড় মেরেছে, ও কি এটাও জানে যে আমার সাথে তনুর মৌখিক সেক্স হয়েছে। কিন্তু ওটা তো চক্রবর্তী জানবে না। তাহলে কতটুকু জানে ও? জিজ্ঞেস করবো? করেই ফেললাম, ‘আমার সম্বন্ধে কি জানেন আপনি?’ দাদা উত্তর দিল, ‘ওই, আপনার মাইনের প্রায় পুরো টাকাটা আপনি তনুর পিছনে খরচা করতেন। কেন করতেন সেটা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছিল চক্রবর্তী, আপনি বুঝতেই পারছেন কি সব বলেছিল। একটা ছেলে একটা মেয়ের পিছনে কেন টাকা খরচা করে।‘ আমি স্তব্দ হয়ে বসে রইলাম। আমি ওখানে কি করছিলাম আর কোলকাতায় আমার সম্বন্ধে কিসব রটেছিল। ভয়ে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে। যাক মনে মনে আশ্বস্ত হলাম যে ঘটনা ছিল না সব রটনা ছিল। ওতে অতো চিন্তা করার কিছু নেই। দাদার কথা শুনলাম, ‘তাই বলেছিলাম স্নেহা পার্থর নয়, ওটা চক্রবর্তীর। দেখবেন মুখটা ভালো করে। পার্থর সাথে কোন মিল নেই মুখের, বরং চক্রবর্তীর মুখের মিল স্নেহার মধ্যে পাওয়া যায়।‘ আমি কখনো লক্ষ্য করিনি। এবারে করতে হবে। একটা ব্যাপার ঠিক যে তনু আমাকে অনেক মিথ্যে বলেছে। আবার এটাও ঠিক তাতে আমার কিছু যায় আসে নি। আমি তনুকে ভোগ করতে চেয়েছিলাম, ভোগ করে নিয়েছি। ও বাল কি করল লাইফে আমার বয়েই গেছে। আমার কাছে এই মুহূর্তে খবর স্নেহা পার্থর মেয়ে নয়। আর বেশি বসলাম না। উঠে পড়লাম। বাড়ীতে আসতেই তনু দাদার সাথে আমাকে দেখে বলল, ‘কিরে কোথায় গিয়েছিলি? ওর সাথে ঘুরছিলি নাকি?’ আমি তাড়াতাড়ি বললাম, ‘আরে নারে। ঘুরতে ঘুরতে বাড়ীর গলিটা হারিয়ে ফেলেছিলাম। দাদাকে দেখে নিয়ে এলাম যাতে ফিরতে পারি।‘ তনু বলল, ‘আয় আয় খেয়ে নে। এই তুই খাবি তো খেয়ে নিতে পারিস।‘ দাদার দিকে না তাকিয়েই তনু কথাগুলো বলল। আমরা খেয়ে নিলাম সবাই। আমাকে তনুর বিছানার উপর শুতে বলল তনু, ‘এখানে একটু বিশ্রাম কর। আমি আসছি।‘