16-01-2019, 12:32 PM
পর্ব ১১- স্মৃতিচারণ ৪
সুবীর বাবুঃ হা মানব বল কি একটা জরুরী কথা বলবি বলছিলি।
মালতী দেবীঃ আরে তুমি কি গো। এই তো বাইরে থেকে এল, আগে চা করে দি। তারপর ওর থেকে শুনি।
মানব বাবুঃ না বউদি আগে বলেই দি। বউদি আমি ভোটে দাঁড়াচ্ছি তাও আবার তোমাদের ওয়ার্ড থেকে। আর মানব তোকে কিন্তু একটু প্রচার করতে হবে। তোর ওয়ার্ড এ অনেক প্রফেসর আর কলেজ টিচার রা থাকেন। তোর ওদের মধ্যে জনপ্রিয়তা বিশাল। ভাই তুই একটু আমার হয়ে ওদের কাছে প্রচার কর এই আমি চাই।
মালতী দেবীঃ সে কি এত বড় একটা খবর আমাদের এত পরে দিচ্ছ আমরা সত্যি ই বোধ হয় তোমার পর হয়ে গেলাম মানব দা।
সুবীর বাবুঃ তোর আবার কি দরকার ছিল রে এসব ঝামেলায় জড়ানোর। বেস ভালই তো ব্যবসা নিয়ে মেতে ছিলি।
মানব বাবুঃ নারে অফার তা আসার পর অনেক ভেবে দেখলাম। আমার ৩ কুলে কেউ নেই তোরা ছাড়া। এখন যদি কিছু মানুষের উপকার করা যায় তাহলে নরকে গেলেও একটু শান্তি পাব।
মালতী দেবীঃ এই কারনেই আমি তোমায় এত বকি মানব দা। এরকম কথা আর কখন বল্বেনা। কি আর বয়স তোমার। আমার কথা শোন একটা বিয়ে করে নাও। এখনো তোমায় দেখতে ফিল্মি হিরোর মতো। মেয়েদের লাইন পরে যাবে।
মানব বাবু খুব জোরে একবার হাসলেন। মালতী দেবীও হাসি মুখে রান্না ঘরে চলে গেলেন মানব দার জন্য এক কাপ চা করে দিতে। এতক্ষনে দুই বন্ধু এক জায়গায় বসলো।
সুবীর বাবুঃ কি রে শালা। এখন কোথায় থাকিস, কি করিস।
মানব বাবুঃ কাজ কিছুই নেই। ওই বিজনেস আর একটু আদতু সমাজ সেবা। আর থাকি বলতে মনে পরে গেলো। তোর সৌম্যর কথা মনে আছে?
সুবীর বাবুঃ সৌম্য মানে আমাদের সৌম্য। রবির ভাই। হা ও তো শুনেছিলাম বিএসসি তাও কমপ্লিট করতে পারেনি। ও কোথায় রবির কি খবর।
মানব বাবুঃ রবি ৪ বছর আগে মারা গেছে। সৌম্য কে আমার বিজনেস টায় সুপারভাইজার করে ঢুকিয়ে দিয়েছি। বেচারার সংসার টানতে খুব কষ্ট হয়। ৩ বছর আগে বিয়ে করে ফেলেছে এখন মাথায় হাত। বাড়ীতে বৃদ্ধ বাবা মা বউ আর ১ বছরের দুধের শিশু।
মালতী দেবী চা নিয়ে ততক্ষনে চলে এসেছেন। মানব বাবু এক হাতে চায়ের কাপ তা ধরে বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ সব বলব, কিন্তু ভাই শুধু লুচি মাংসে আমার পেট ভরবেনা।
মালতী দেবীঃ না মানব দা আমি তোমায় আজ ওইসব ছাইপাশ খেতে দেবনা। তুমি এখন আর আমাদের কাছে থাকনা আমি জানি তুমি রোজ ই খাও না বলার কেউ নেই। একবার শরীর তার কথাও ভাবো। তোমায় তিলোত্তমা আর রূপসার বিয়ে দিয়ে যেতে হবে।
মানব বাবুঃ আরে হা যে জন্য আসা এখানে। আমার মায়েরা কোথায় ওদের সাথে কথা বলতেই তো আসা এখানে। এত ভালো রেজাল্ট। ওদের পাড়া থেকে একটা সম্বর্ধনার ব্যাবস্থা করেছি। এই যে দুটো কার্ড রাখো।
সুবীর বাবুঃ মানব তুই বউদির সাথে গল্প কর, আমি বাজার থেকে ঘুরে আসি। নয়ত দেরী হয়ে যাবে।
সুবীর বাবু বাজারের ব্যাগ তা নিয়ে বেরিয়ে পরলেন আর সুবীর বাবুর চেয়ার টায় মালতী দেবী এসে বসলেন। মানব বাবু হাতের মধ্যে থাকা প্যাকেট তা মালতী দেবীর হাতে দিলেন।
মানব বাবুঃ এটা নাও বউদি। তোমার জন্য নতুন কিছু জামা কাপড় এনেছি। পুজাতে তো আসা হয়নি তাই এখন ই দিলাম।
মালতী দেবীঃ (এক হাতে প্যাকেট তা ধরে) না মানব দা প্লিজ আমি এটা নিতে পারবনা। তোমার বন্ধু জানতে পারলে খুব রাগ করবে। প্লিজ আমায় এটা দিয়না।
মানব বাবুঃ কেন রাগ কেন করবে? তোমাদের অবস্থা ফিরে গেছে তাই?
মালতী দেবীঃ (উনি এই কথার মানে বোঝেন) না এরকম কিছু নয়। ওহ দাও তো তুমি না সবসময় উল্টোপাল্টা ভাবো। এবার আমি যাই, আঁটা মাখতে হবে।
মানব বাবুঃ না বউদি, গেলে চলবে না। আগে এই কাপড় তা পরে তোমায় দেখতে হবে কেমন লাগছে।
মালতী দেবীঃ আমি পড়তে পারি। কিন্তু রান্না করতে হবে তো। রান্না হয়ে গেলে পড়লে হয়না।
মানব বাবুঃ ঠিক আছে, সুবীর আসুক তার পড়েই পর। ঠিক আছে তুমি রান্না করো এখন আমি পেপার পড়ি।
এদিকে সুবীর বাবু তখন সবে গেট এর সামনে। উনি সব ই শুনেছেন। মনের মধ্যে সেই পুরনো জ্বালা গুলো আবার মাথাচাড়া দিয়ে উথছে। সুবীর বাবু গেট তা খুলে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। আজ একটু অদ্ভুত ধরনের ই অন্যমনস্ক উনি। মাথার মধ্যে বহু পুরনো ঘটনা ঘুরপাক খাচ্ছে।
তখন সবে সুবীর বাবুর বিয়ে হয়েছে। কলকাতার একটা এক কামরার ভাড়া বাড়ী তে বউ আর বাবাকে নিয়ে থাকেন। অততুকু জায়গায় বউ কে নিয়ে থাকা অসম্ভব তাও আবার বাবা শয্যাশায়ী। মানব বাবু প্রায় প্রতিদিন ই আসতেন। হথাত একদিন ওরা দেখে বাড়ীর সামনে ৩ তে বড় বড় লরি দাঁড়িয়ে। ওপরে এসে মানব বাবু বলেন “সুবীর বউকে নিয়ে এখানে থাকা সম্ভব নয়। তুই চল আমি একটা ব্যাবস্থা করেছি” এতটাই অসহায় ছিলেন ওরা এক কথায় বেরিয়ে পরেন। সেই সময় ই এই বাড়ীতে ওদের প্রবেশ। তখন বাড়ী বলতে ছিল একটা ঘর, বারান্দা আর এই উঠোন আর উঠোনে একটা পায়খানা আর কুয়ো। তা হলেও ভাড়াবাড়ির থেকে অনেক ভালো ছিল। সুবীর বাবু চাকরি তা পেয়েছিলেন আরও ৫ বছর পর। এই সময় টায় বেঁচে থাকতে মানব বাবুর ই মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতে হত। আর এটা মালতী দেবী ও বুঝতেন। তাই বাড়িতে মানব দার জন্য ও আলাদা খাতির যত্নই করত। রান্না হত ওর ইচ্ছে মতো, বাড়ীর কাজ হত ওর ইচ্ছে মতো। মানব বাবু ও মালতী দেবী কে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন। এই সময় সুবীর বাবুর নিজেকে প্রচণ্ড কাপুরুষ মনে হত। মানব বাবুর ইয়ার্কি গুলো আর মালতী দেবীর হেসে হেসে উত্তর দেওয়া সুবীর বাবুর গা জ্বালিয়ে দিত। ধীরে ধীরে এই ব্যাপার গুলো আর ৪ দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলো না। পাড়ায় বিভিন্ন রকমের সব গুজব শুরু হোল। প্রথম প্রথম সুবীর বাবু এগুলকে পাত্তা দিতেন না। গুজব গুলোর মাত্রা আরও বাড়ল সুবীর বাবুর বাবা মারা যাওয়ার পর। সুবীর বাবু সকাল থেকে সন্ধে বাড়ীর বাইরে থাকতেন, বাড়ী ফিরে দেখতেন মানব বাবু বসে আছে। ও কখন আসতো কি করত তা উনি জানতেন না। এরকম ই এক রবিবার সুবীর বাবু বাজারে গেছেন কিছু কেনাকাটা করতে। সামনের রেশন দোকান তার সামনে একটা ছোট খাটো জটলা দেখে উনি থমকে দাঁড়ান। ওরা কি নিয়ে আলোচনা করছে তা জানার জন্য উলটো দিকের পান দোকান টায় উনি দাঁড়ান।
প্রথম ভদ্রলোকঃ আরে মশাই কাল কি দেখলাম জানেন? আমি তখন বাইরে বেরিয়ে দাঁত মাজছি। উঠতে একটু দেরী হয়ে গিয়েছিল। দেখি আমার পাঁচিল তার পেছনে ওই হারামি মানব টা ঘাপটি মেরে দাঁড়িয়ে আছে। আমায় ও দেখতে পায়নি। আমিও ওকে দেখে রাস্তার উলটো দিকের ওই গাছ তার পেছনে লুকিয়ে গেলাম। ওখান থেকে তো ওদের বাড়ীর মেন গেট টা পরিষ্কার দেখা যায়। দেখি দরজা টা খোলা, সুবীর সাইকেল নিয়ে বাইরে বেরচ্ছে আর পেছনে ওই মাগী টা। মাগিটা এসে রাস্তার এপারে দাঁড়ালো। সুবীর ওকে হাত নেড়ে সাইকেল টা নিয়ে হেটে হেটে যেতে শুরু করল। আর আপনাদের কি বলব মশাই মাগী টা আমার পাঁচিল তার দিকে তাকিয়ে হাতের ইশারা করল আর অমনি ওই হারামি টা উবু হয়ে মাথা ঝুকিয়ে এক দৌড়ে দরজার ভেতরে ঢুকে দাঁড়িয়ে থাকলো। মাগী টা ওখানেই থাকলো যতক্ষণ সুবীর কে দেখা যায় তারপর দরজার সামনে গেলো। তারপর কি হোল জানেন হারামি মালটা মাগিটার কোমর ধরে এক টান মারল আর মাগী টা ভেতরে গিয়ে একদম ওর বুকের ওপর পড়ল। ব্যাস দরজা বন্ধ।
বাকিরাঃ তারপর কি হোল। যা হওয়ার তাই হোল। আমি ভদ্রলকের ছেলে কেন অন্যের বাড়ীতে উঁকি মারতে যাবো।
দ্বিতীয় ভদ্রলোকঃ আরে মশাই সেদিন আমি বউ কে নিয়ে গেছি বাজারে, বউ এর খুব সখ নতুন সাড়ী কিনবে। ধুকেই দেখি মানব আর ওই মেয়েটা। জানেন ওরা কি করছিল? মানব ওপর থেকে একটা ঝুলে থাকা ব্রা পারল। সে ব্রা যা তা ব্রা নয়। লাল রঙের, গায়ে আবার ফুটো ফুটো। হিরোইন গুলো যেসব জিনিস পরে। ওই ব্রা টা মানব মেয়েটাকে দিল আর কি তাজ্জব মশাই মেয়েতাও নিয়ে নিল। শুধুই কি ব্রা নাকি তারপর নাইটি ব্লাউজ প্রায় সব ই কেনা হোল। সব ই এমন টাইপ এর যে আমরা কখনো বাড়ীতে বউ এর জন্য নিয়ে যেতে পারব না।
এই কথা গুলো সুবীর বাবুর প্রচণ্ড খারাপ লেগেছিল কিন্তু তবুও উনি নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন কারন উনি জানেন এই অঞ্চলের মানুষের এই সব গসিপ করা স্বভাব। কিন্তু তৃতীয় ভদ্রলোকের কথাটা ওনার মাথা থেকে পা অবধি নড়িয়ে দিয়েছিল। উনি আর কোনও কিছু না ভেবে সোজা বাড়ীর দিকে চলে এসেছিলেন।
তৃতীয় ভদ্রলোকঃ আরে মশাই আপনারা তো অনেক কিছুই দেখেন নি যা আমি দেখেছি। ওদের বাড়ীর পেছনে যে বট গাছ টা আছে সেখানে আমি একদিন গেছিলাম পেচ্ছাপ করতে। হথাত মেয়ে মানুষের গোঙানির শব্দ পাই। ভাবলাম কোনও বিপদ তিপদ হয়েছে। তাই পাঁচিল টার ওপাশে উঁকি মারলাম। যা দেখলাম মশাই আমার মাথা ঘুরতে শুরু করল। মাগী টা পুরো লাংটো হয়ে পা দুটো ছড়িয়ে শুয়ে আছে। আর মানব পায়ের মাঝে মাথাটা গুঁজে পাগলের মতো চেটে যাচ্ছে আর শুঁকছে। ছি ছি কি বলব মশাই।
সেদিন আর সুবীর বাবু বাজারে থাকতে পারেন নি। সোজা বাড়ীর দিকে রওনা দেন।
সুবীর বাবুঃ হা মানব বল কি একটা জরুরী কথা বলবি বলছিলি।
মালতী দেবীঃ আরে তুমি কি গো। এই তো বাইরে থেকে এল, আগে চা করে দি। তারপর ওর থেকে শুনি।
মানব বাবুঃ না বউদি আগে বলেই দি। বউদি আমি ভোটে দাঁড়াচ্ছি তাও আবার তোমাদের ওয়ার্ড থেকে। আর মানব তোকে কিন্তু একটু প্রচার করতে হবে। তোর ওয়ার্ড এ অনেক প্রফেসর আর কলেজ টিচার রা থাকেন। তোর ওদের মধ্যে জনপ্রিয়তা বিশাল। ভাই তুই একটু আমার হয়ে ওদের কাছে প্রচার কর এই আমি চাই।
মালতী দেবীঃ সে কি এত বড় একটা খবর আমাদের এত পরে দিচ্ছ আমরা সত্যি ই বোধ হয় তোমার পর হয়ে গেলাম মানব দা।
সুবীর বাবুঃ তোর আবার কি দরকার ছিল রে এসব ঝামেলায় জড়ানোর। বেস ভালই তো ব্যবসা নিয়ে মেতে ছিলি।
মানব বাবুঃ নারে অফার তা আসার পর অনেক ভেবে দেখলাম। আমার ৩ কুলে কেউ নেই তোরা ছাড়া। এখন যদি কিছু মানুষের উপকার করা যায় তাহলে নরকে গেলেও একটু শান্তি পাব।
মালতী দেবীঃ এই কারনেই আমি তোমায় এত বকি মানব দা। এরকম কথা আর কখন বল্বেনা। কি আর বয়স তোমার। আমার কথা শোন একটা বিয়ে করে নাও। এখনো তোমায় দেখতে ফিল্মি হিরোর মতো। মেয়েদের লাইন পরে যাবে।
মানব বাবু খুব জোরে একবার হাসলেন। মালতী দেবীও হাসি মুখে রান্না ঘরে চলে গেলেন মানব দার জন্য এক কাপ চা করে দিতে। এতক্ষনে দুই বন্ধু এক জায়গায় বসলো।
সুবীর বাবুঃ কি রে শালা। এখন কোথায় থাকিস, কি করিস।
মানব বাবুঃ কাজ কিছুই নেই। ওই বিজনেস আর একটু আদতু সমাজ সেবা। আর থাকি বলতে মনে পরে গেলো। তোর সৌম্যর কথা মনে আছে?
সুবীর বাবুঃ সৌম্য মানে আমাদের সৌম্য। রবির ভাই। হা ও তো শুনেছিলাম বিএসসি তাও কমপ্লিট করতে পারেনি। ও কোথায় রবির কি খবর।
মানব বাবুঃ রবি ৪ বছর আগে মারা গেছে। সৌম্য কে আমার বিজনেস টায় সুপারভাইজার করে ঢুকিয়ে দিয়েছি। বেচারার সংসার টানতে খুব কষ্ট হয়। ৩ বছর আগে বিয়ে করে ফেলেছে এখন মাথায় হাত। বাড়ীতে বৃদ্ধ বাবা মা বউ আর ১ বছরের দুধের শিশু।
মালতী দেবী চা নিয়ে ততক্ষনে চলে এসেছেন। মানব বাবু এক হাতে চায়ের কাপ তা ধরে বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ সব বলব, কিন্তু ভাই শুধু লুচি মাংসে আমার পেট ভরবেনা।
মালতী দেবীঃ না মানব দা আমি তোমায় আজ ওইসব ছাইপাশ খেতে দেবনা। তুমি এখন আর আমাদের কাছে থাকনা আমি জানি তুমি রোজ ই খাও না বলার কেউ নেই। একবার শরীর তার কথাও ভাবো। তোমায় তিলোত্তমা আর রূপসার বিয়ে দিয়ে যেতে হবে।
মানব বাবুঃ আরে হা যে জন্য আসা এখানে। আমার মায়েরা কোথায় ওদের সাথে কথা বলতেই তো আসা এখানে। এত ভালো রেজাল্ট। ওদের পাড়া থেকে একটা সম্বর্ধনার ব্যাবস্থা করেছি। এই যে দুটো কার্ড রাখো।
সুবীর বাবুঃ মানব তুই বউদির সাথে গল্প কর, আমি বাজার থেকে ঘুরে আসি। নয়ত দেরী হয়ে যাবে।
সুবীর বাবু বাজারের ব্যাগ তা নিয়ে বেরিয়ে পরলেন আর সুবীর বাবুর চেয়ার টায় মালতী দেবী এসে বসলেন। মানব বাবু হাতের মধ্যে থাকা প্যাকেট তা মালতী দেবীর হাতে দিলেন।
মানব বাবুঃ এটা নাও বউদি। তোমার জন্য নতুন কিছু জামা কাপড় এনেছি। পুজাতে তো আসা হয়নি তাই এখন ই দিলাম।
মালতী দেবীঃ (এক হাতে প্যাকেট তা ধরে) না মানব দা প্লিজ আমি এটা নিতে পারবনা। তোমার বন্ধু জানতে পারলে খুব রাগ করবে। প্লিজ আমায় এটা দিয়না।
মানব বাবুঃ কেন রাগ কেন করবে? তোমাদের অবস্থা ফিরে গেছে তাই?
মালতী দেবীঃ (উনি এই কথার মানে বোঝেন) না এরকম কিছু নয়। ওহ দাও তো তুমি না সবসময় উল্টোপাল্টা ভাবো। এবার আমি যাই, আঁটা মাখতে হবে।
মানব বাবুঃ না বউদি, গেলে চলবে না। আগে এই কাপড় তা পরে তোমায় দেখতে হবে কেমন লাগছে।
মালতী দেবীঃ আমি পড়তে পারি। কিন্তু রান্না করতে হবে তো। রান্না হয়ে গেলে পড়লে হয়না।
মানব বাবুঃ ঠিক আছে, সুবীর আসুক তার পড়েই পর। ঠিক আছে তুমি রান্না করো এখন আমি পেপার পড়ি।
এদিকে সুবীর বাবু তখন সবে গেট এর সামনে। উনি সব ই শুনেছেন। মনের মধ্যে সেই পুরনো জ্বালা গুলো আবার মাথাচাড়া দিয়ে উথছে। সুবীর বাবু গেট তা খুলে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। আজ একটু অদ্ভুত ধরনের ই অন্যমনস্ক উনি। মাথার মধ্যে বহু পুরনো ঘটনা ঘুরপাক খাচ্ছে।
তখন সবে সুবীর বাবুর বিয়ে হয়েছে। কলকাতার একটা এক কামরার ভাড়া বাড়ী তে বউ আর বাবাকে নিয়ে থাকেন। অততুকু জায়গায় বউ কে নিয়ে থাকা অসম্ভব তাও আবার বাবা শয্যাশায়ী। মানব বাবু প্রায় প্রতিদিন ই আসতেন। হথাত একদিন ওরা দেখে বাড়ীর সামনে ৩ তে বড় বড় লরি দাঁড়িয়ে। ওপরে এসে মানব বাবু বলেন “সুবীর বউকে নিয়ে এখানে থাকা সম্ভব নয়। তুই চল আমি একটা ব্যাবস্থা করেছি” এতটাই অসহায় ছিলেন ওরা এক কথায় বেরিয়ে পরেন। সেই সময় ই এই বাড়ীতে ওদের প্রবেশ। তখন বাড়ী বলতে ছিল একটা ঘর, বারান্দা আর এই উঠোন আর উঠোনে একটা পায়খানা আর কুয়ো। তা হলেও ভাড়াবাড়ির থেকে অনেক ভালো ছিল। সুবীর বাবু চাকরি তা পেয়েছিলেন আরও ৫ বছর পর। এই সময় টায় বেঁচে থাকতে মানব বাবুর ই মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতে হত। আর এটা মালতী দেবী ও বুঝতেন। তাই বাড়িতে মানব দার জন্য ও আলাদা খাতির যত্নই করত। রান্না হত ওর ইচ্ছে মতো, বাড়ীর কাজ হত ওর ইচ্ছে মতো। মানব বাবু ও মালতী দেবী কে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন। এই সময় সুবীর বাবুর নিজেকে প্রচণ্ড কাপুরুষ মনে হত। মানব বাবুর ইয়ার্কি গুলো আর মালতী দেবীর হেসে হেসে উত্তর দেওয়া সুবীর বাবুর গা জ্বালিয়ে দিত। ধীরে ধীরে এই ব্যাপার গুলো আর ৪ দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলো না। পাড়ায় বিভিন্ন রকমের সব গুজব শুরু হোল। প্রথম প্রথম সুবীর বাবু এগুলকে পাত্তা দিতেন না। গুজব গুলোর মাত্রা আরও বাড়ল সুবীর বাবুর বাবা মারা যাওয়ার পর। সুবীর বাবু সকাল থেকে সন্ধে বাড়ীর বাইরে থাকতেন, বাড়ী ফিরে দেখতেন মানব বাবু বসে আছে। ও কখন আসতো কি করত তা উনি জানতেন না। এরকম ই এক রবিবার সুবীর বাবু বাজারে গেছেন কিছু কেনাকাটা করতে। সামনের রেশন দোকান তার সামনে একটা ছোট খাটো জটলা দেখে উনি থমকে দাঁড়ান। ওরা কি নিয়ে আলোচনা করছে তা জানার জন্য উলটো দিকের পান দোকান টায় উনি দাঁড়ান।
প্রথম ভদ্রলোকঃ আরে মশাই কাল কি দেখলাম জানেন? আমি তখন বাইরে বেরিয়ে দাঁত মাজছি। উঠতে একটু দেরী হয়ে গিয়েছিল। দেখি আমার পাঁচিল তার পেছনে ওই হারামি মানব টা ঘাপটি মেরে দাঁড়িয়ে আছে। আমায় ও দেখতে পায়নি। আমিও ওকে দেখে রাস্তার উলটো দিকের ওই গাছ তার পেছনে লুকিয়ে গেলাম। ওখান থেকে তো ওদের বাড়ীর মেন গেট টা পরিষ্কার দেখা যায়। দেখি দরজা টা খোলা, সুবীর সাইকেল নিয়ে বাইরে বেরচ্ছে আর পেছনে ওই মাগী টা। মাগিটা এসে রাস্তার এপারে দাঁড়ালো। সুবীর ওকে হাত নেড়ে সাইকেল টা নিয়ে হেটে হেটে যেতে শুরু করল। আর আপনাদের কি বলব মশাই মাগী টা আমার পাঁচিল তার দিকে তাকিয়ে হাতের ইশারা করল আর অমনি ওই হারামি টা উবু হয়ে মাথা ঝুকিয়ে এক দৌড়ে দরজার ভেতরে ঢুকে দাঁড়িয়ে থাকলো। মাগী টা ওখানেই থাকলো যতক্ষণ সুবীর কে দেখা যায় তারপর দরজার সামনে গেলো। তারপর কি হোল জানেন হারামি মালটা মাগিটার কোমর ধরে এক টান মারল আর মাগী টা ভেতরে গিয়ে একদম ওর বুকের ওপর পড়ল। ব্যাস দরজা বন্ধ।
বাকিরাঃ তারপর কি হোল। যা হওয়ার তাই হোল। আমি ভদ্রলকের ছেলে কেন অন্যের বাড়ীতে উঁকি মারতে যাবো।
দ্বিতীয় ভদ্রলোকঃ আরে মশাই সেদিন আমি বউ কে নিয়ে গেছি বাজারে, বউ এর খুব সখ নতুন সাড়ী কিনবে। ধুকেই দেখি মানব আর ওই মেয়েটা। জানেন ওরা কি করছিল? মানব ওপর থেকে একটা ঝুলে থাকা ব্রা পারল। সে ব্রা যা তা ব্রা নয়। লাল রঙের, গায়ে আবার ফুটো ফুটো। হিরোইন গুলো যেসব জিনিস পরে। ওই ব্রা টা মানব মেয়েটাকে দিল আর কি তাজ্জব মশাই মেয়েতাও নিয়ে নিল। শুধুই কি ব্রা নাকি তারপর নাইটি ব্লাউজ প্রায় সব ই কেনা হোল। সব ই এমন টাইপ এর যে আমরা কখনো বাড়ীতে বউ এর জন্য নিয়ে যেতে পারব না।
এই কথা গুলো সুবীর বাবুর প্রচণ্ড খারাপ লেগেছিল কিন্তু তবুও উনি নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন কারন উনি জানেন এই অঞ্চলের মানুষের এই সব গসিপ করা স্বভাব। কিন্তু তৃতীয় ভদ্রলোকের কথাটা ওনার মাথা থেকে পা অবধি নড়িয়ে দিয়েছিল। উনি আর কোনও কিছু না ভেবে সোজা বাড়ীর দিকে চলে এসেছিলেন।
তৃতীয় ভদ্রলোকঃ আরে মশাই আপনারা তো অনেক কিছুই দেখেন নি যা আমি দেখেছি। ওদের বাড়ীর পেছনে যে বট গাছ টা আছে সেখানে আমি একদিন গেছিলাম পেচ্ছাপ করতে। হথাত মেয়ে মানুষের গোঙানির শব্দ পাই। ভাবলাম কোনও বিপদ তিপদ হয়েছে। তাই পাঁচিল টার ওপাশে উঁকি মারলাম। যা দেখলাম মশাই আমার মাথা ঘুরতে শুরু করল। মাগী টা পুরো লাংটো হয়ে পা দুটো ছড়িয়ে শুয়ে আছে। আর মানব পায়ের মাঝে মাথাটা গুঁজে পাগলের মতো চেটে যাচ্ছে আর শুঁকছে। ছি ছি কি বলব মশাই।
সেদিন আর সুবীর বাবু বাজারে থাকতে পারেন নি। সোজা বাড়ীর দিকে রওনা দেন।