16-01-2019, 12:31 PM
পর্ব ১০- স্মৃতিচারণ ৩
কোনরকমে হ্যারিকেন তা জ্বালিয়ে মালতী দেবী আবার ভেতরে ঢুকলেন। এবার অন্তত প্রায় আধ ঘণ্টা পর মানব বাবু বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ তুমি কি জানো বউদি কেন আমার মন এত চঞ্চল আজ? কেন আমি এভাবে ভেঙে পরলাম?
মালতী দেবীঃ কেন আমায় বল প্লিজ?
মানব বাবুঃ না থাক অন্য একদিন ই বরং তোমায় বলব।
মালতী দেবী আর বেশি ঘাঁটালেন না মানব দাকে। ওনার আর সত্যি ই ভালো লাগছিল না। মনব বাবু আর সুবীর বাবু এততাই মদ খেয়েছে যে আজ আর ওরা কিছু খাবেনা তা উনি জানেন। ওনার ও প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে। আর নেশা তা ওনার ও কম হয়নি। ঠিক করে হাঁটতে পারছেন না। এই মুহূর্তে একবার স্নান করে শুয়ে পড়া উচিৎ। আর খুব ভালো হয়েছে কারেন্ট চলে গিয়ে। ওদের বাড়ীতে সেই সময় বাথরুম ছিলনা তাই স্নান করতে হলে কুয়পারেই করতে হবে। কারেন্ট না থাকায় অন্ধকারে সাচ্ছন্দে ও স্নান করতে পারবে।
মালতী দেবীঃ মানব দা তুমি সুয়ে পর এখানে বিছানা তো করাই আছে আমি স্নান করে শুয়ে পরবো। আর কোনও উলটো পাল্টা কিছু ভেবনা। নিজেকে একা ভাববে না কেমন। মনে রেখো আমরা সবসময় তোমার পাশেই আছি।
রুম থেকে বেরোনোর সময় মালতী দেবী একবার পেছন ঘুরে মানব বাবুর দিকে তাকালেন। মানব বাবুর একটা হাত ওনার বুকের ভেতরে, আলতো করে উনি নিজের বুকে হাত বোলাচ্ছেন আর অত্যন্ত বিশ্রী ভাবে মালতী দেবীর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছেন। এই হাসি, এই নজর, এই অচেনা দৃষ্টি মালতী দেবীর শরীরটাকে কেমন যেন নাড়িয়ে দিল একবার। কে যেন ভেতর থেকে এক নাগাড়ে বলে চলেছে – সাবধান মালতী, সাবধান, ঘরে পর পুরুষ রয়েছে সাবধান। মালতী দেবী সমস্ত কিছুর দায় পেটে পড়া কয়েক পেগ মদের ওপর চাপিয়ে আসতে আসতে হ্যারিকেন তা উঠিয়ে রুম এর বাইরে বেরলেন। কুয়পারে গিয়ে হ্যারিকেন টাকে এক কোনায় রাখলেন আর বালতি টে জল ভরতে শুরু করলেন। হ্যারিকেন এর আলো খুব মৃদু হলেও উঠোন তা মোটামুটি পরিষ্কার ই দেখা যাচ্ছিল। জল ভরা হয়ে গেলে উনি একবার আবার বারান্দার সামনে এলেন, ভেতর তা ঘুটঘুটে অন্ধকার, ভেতরের ঘর গুলো থেকে সামান্য কোনও শব্দই আসছেনা। মালতী দেবী বোকার মতো এটাই ভেবে নিলেন যে মানব বাবু ঘুমিয়ে পড়েছে। ওনার ও মাথা ঠিক থাক কাজ করছেনা, শরীরে মাদকতা। উনি আসতে আসতে আবার কুয়ো পারে এগিয়ে গেলেন এবং এক এক করে সাড়ী সায়া ব্লাউজ সব কিছু খুলে দড়ি টে টাঙিয়ে দিলেন। গায়ে জল ঢালার আগে একবার নিজের ওই যৌবনরস এ ভরপুর শরীর টায় হাত দিলেন। ওনার কি হচ্ছে তা উনিও বুঝতে পারছেন না। আজ নিজের স্পরশেও শরীরে আগুন জ্বলে যাচ্ছে। একবার ভাবলেন মানব দা সত্যি ই ঘুমিয়ে পড়েছে তো। পেছন ঘুরে আবার একবার দেখলেন, ভেতরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। আর এই কালো অন্ধকারময় রাতে একমাত্র দৃশ্যমান কুয়ো পাড়, বালতি আর অবশ্যই সদ্য যুবতী হওয়া এই ২২ বছরের শরীর তা। আর কিছু ভাবতে ওনার ইচ্ছে হলনা। মগে করে জল তুলে মাথায় ঢালতে শুরু করলেন। জলের ছম ছম আওয়াজে আপাত শান্ত ও ঘুমিয়ে পড়া ঘরটা আবার জেগে উঠল। দায়সারা ভাবে এক বালতি জলে কোনরকমে স্নান করে নিয়ে উনি বা হাত তা ওপরে তুলে গামছা তা পারলেন, মিনিট ২-৩ এর মধ্যেই ওনার গা মোছা হয়ে গেলো। একবার ভিজে কাপড় গুলোর দিকে তাকিয়ে ভাবলেন আজ থাক কাল সকালে এগুলো কেচে নেব, আজ ঘুমিয়ে পড়ি। গামছা তা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে এক হাতে হ্যারিকেন তা তুলে উনি চললেন বারান্দার দিকে। হ্যারিকেন তা একটু উঁচু করে ধরতেই দেখলেন বারান্দার ঠিক ওপরে দাঁড়িয়ে এক মানুষ। মালতী দেবীর বুক তা ছ্যাঁত করে উঠল। উনি জানেন এটা মানব দা। মুহূর্তের মধ্যে নিজের মনটা শক্ত করে উনিও বারান্দার দিকে এগিয়ে গেলেন। উনি খুব ভালো করেই জানেন এই ছোট গামছা তা ওর শরীরের তুলনায় নগন্য। পরপুরুষের সামনে এই গামছা তা পরে যাওয়ার যে কি লজ্জা তা হয়ত কোনও নারী ই বোঝে। মালতী দেবী আসতে আসতে বারান্দায় উঠলেন, মানব দার দিকে না তাকিয়ে ওনাকে দেখতে না পাওয়ার ভান করলেন এবং আসতে আসতে নিজের রুম এর দিকে যেতে শুরু করলেন। হথাত মানব বাবু বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ বউদি জানো কেন আমি এত ভেঙে পরেছিলাম?
মালতী দেবী শুধুই দাঁড়িয়ে পরলেন। কিন্ত কোনও উত্তর ই দিলেন না। মানব বাবু আবার বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ লোকে বলে আমার চরিত্র খারাপ। আমি তোমাদের জন্য যা করেছি তা শুধুই নিজের জন্য।
এই কথার মানে মালতী দেবী বোঝেন। উনি জানেন এই মাতাল কে আর সত্যি ই ঘাঁটানো উচিৎ নয়। উনি পেছন ঘুরে মানব দার দিকে তাকিয়ে বললেন
মালতী দেবীঃ মানব দা, আমার শরীর তা ভালো লাগছেনা। আজ বরং ঘুমিয়ে পড়ি। কাল সকালে আবার কথা বলব।
মালতী দেবী নিজের রুম এ ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। বেশ কিছুক্ষন মানব বাবু ওখানেই দাঁড়িয়ে থাক্লেন তারপর উনিও নিজের রুম এ ঢুকে গেলেন। সেদিন রাতে মালতী দেবী ঘুমাতে পারেন নি, বারবার নিজেকে পাপী মনে হয়েছে। বহুবার নিজেকে এটা বলার চেষ্টা করেছেন যে মানব দা অনেক অনেক পরে বারান্দায় এসেছে, ও কিছুই দেখেনি। কিন্তু যুক্তি ও বাস্তব বিশ্বাস কে হারিয়েই দিয়েছে। এই ঘটনা তা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়, বরং বলা যায় এটা মানব বাবুর নিপীড়নের শুরু। আজ এক এক করে অনেক গুলো পুরনো ঘটনা মালতী দেবীর মনে পরে যাচ্ছে। আর এই ঘটনা গুলো যতবার ই মনে পরে ওনার প্রচণ্ড লজ্জা হয় আর নিজের স্বামীর ওপর রাগ হয়।
ওদিকে অন্য ঘরটায় সুবীর বাবু ও ড্রেস পড়তে পড়তে বহু পুরনো ঘটনা ভাবছিলেন। মালতী দেবী যে একাই সব জানেন তা নয়, সুবীর বাবু ও অনেক কিছু জানেন। বহু কষ্টে সুবীর বাবু নিজের মনকে শান্ত করে বোঝানোর চেষ্টা করেন নিজেকে এখন এসব ভেবে কি লাভ এগুলো তো অতীত। আর এখন তো মানবের উৎপাত নেই বললেই চলে, সেই ৩ মাস আগে একবার এসেছিল তাও ২ ঘণ্টার জন্য। মনে মনে ভাবেন যৌবন কালে সবার ই এরকম একটু উগ্রতা থাকে, মালতী আমার স্ত্রী হলেও এটা সত্যি যে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও সুন্দরী মহিলা। ওর প্রতি যেকোনো পুরুষের ই আকর্ষণ খুব স্বাভাবিক। যদি মানব তা ঠিক সময় বিয়ে করে নিত হয়ত এত প্রবলেম হতনা। আর এটা সত্যি যে ও কিন্তু কোনদিন ই আমাদের কোনও ক্ষতি করেনি, শুধু দিয়েই গেছে। হয়ত পাশের ঘরে মালতী দেবীর যুক্তি গুলো ও এক। ওরা দুজনেই নিজেকে শান্ত করে।
সুবীর বাবুঃ মালতী আমি বাজারে যাচ্ছি, বাড়ীর জন্য কিছু আনতে হবে কি?
মালতী দেবীঃ হা বাড়ীতে আলু নেই, তুমি বরং ২ কিলো আলু নিয়ে এস।
সুবীর বাবু তাড়াতাড়ি বাজারের ব্যাগ তা নিয়ে বাজারে যেতে উদ্দত হলেন। একবার চেঁচিয়ে বলে দিলেন “মালতী দরজা তা বন্ধ করে দিয়ো আমি বাজারে যাচ্ছি” সুবীর বাবু দরজা তা খুলতেই বাইরে দেখেন মানব বাবু দাঁড়িয়ে। প্রথম এ ওনাকে দেখে সুবীর বাবু একটু ঘাবড়েই যায়। মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে সামলে নিয়ে মানব বাবুকে জড়িয়ে ধরেন।
মানব বাবুঃ কি রে শালা এতদিন বাদে বন্ধুর কথা মনে পড়েছে। যা রাগ হচ্ছেনা মনে হচ্ছে মাটিতে ফেলে তোকে মারি। মালতী তাড়াতাড়ি এখানে এস, দেখো কে এসেছে।
মালতী দেবীও ওর এই কথায় হন্তদন্ত করে দরজার সামনে ছুটে চলে এলেন।
মালতী দেবীঃ আরে কি ব্যপার মানব দা, আমাদের তো আর পাত্তাই দেন না। হু শুনেছি এখন নেতা হয়েছেন। আর কি আমাদের মতো সাধারন জনতার দিকে তাকানোর সময় হবে।
এক নিঃশ্বাসে কথা তা শেষ করে বাচ্চা দের মতো করে হে হে করে হেসে ফেললেন মালতী দেবী।
সুবীর বাবুঃ আচ্ছা ঠিক আছে, আগে ওকে ঢুকতে তো দাও। আয় মানব ভেতরে আয়।
মানব বাবু সুবীর বাবুর আলিঙ্গন থেকে মুক্ত হয়ে এক পা ভেতরে এসে দাঁড়ালেন। এবার একদম মালতী দেবীর মুখোমুখি। মালতী দেবী জানেন এবার কি হতে চলেছে। একবার তাই উনি আড় চোখে সুবীর বাবুর দিকে তাকালেন। সুবীর বাবু হথাত ই খুব গম্ভীর আর কিছুটা পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে মুখ তা ঘুরিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। মানব বাবু এবার মুখটা হাসি হাসি করে দু হাত মালতী দেবীর কাধে রেখে বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ তোমাদের কি ভুলতে পারি বউদি। আমি ভুলিনি তাই তো চলে এলাম।
মালতী দেবীঃ ভুলেছ বই কি। আমার বুঝি দুষ্টু দেওর টাকে দেখতে ইচ্ছে হয়না। এতদিন কোথায় ছিলে তুমি?
মানব বাবুঃ সব বলব। আগে ভেতরে চল।
মানব বাবু আর মালতী দেবি ভেতরে যেতে শুরু করলেন, মানব বাবু পেছন ঘুরে একবার দেখলেন সুবীর বাবুর দিকে। সুবীর বাবু দরজার দিকে তাকিয়েই দাঁড়িয়ে আছে।
মানব বাবুঃ কিরে সুবীর আয় ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন, ভেতরে আয় অনেক কথা আছে।
সুবীর বাবু কোনও উত্তর না দিয়ে ওদের পেছন পেছন আসতে লাগলেন। মালতী দেবি জানেন সুবীর বাবুর এই আকস্মিক নীরবতার কারন। কিন্তু মালতী দেবীর তো কিছুই করার নেই। ৫-৬ মাসে লোকটা একবার হয়ত আসে, সব দ্বিধা দ্বন্দ্ব সরিয়ে রেখে ঠিক করে ব্যাবহার না করলে কি ভাববে ও যে এখন অবস্থা ফিরে গেছে তাই আর ওর দরকার নেই। মালতী দেবী মনে মনে ঠিক করে নেন, না যাই হোক না কেন সব ভুলে উনি মানব দার সাথে খুব ভালভাবে মিশবেন আর তাতে সুবীর বাবু যতই খারাপ ভাবুক না কেন।
মানব বাবুঃ সুবীর আয় ভেতরে, কিছু কথা আছে। আমি আধ ঘণ্টার মধ্যেই বেরিয়ে যাবো।
মালতী দেবীঃ না মানব দা বাড়ীতে ঢোকা তা তোমার ইচ্ছে অনুযায়ী হবে কিন্তু বেরনো তা আমার ইচ্ছে অনুযায়ী হবে। তুমি যতই চেষ্টা করো যাই তোমার রাজকাজ থাক আমি কাল সকালের আগে তোমায় ছারছিনা।
মানব বাবুঃ আরে বউদি এরকম বলনা। আমায় আজ যেতেই হবে। প্রচণ্ড ব্যাস্ততার মধ্যে আছি আমি।
সুবীর বাবুঃ আরে তুই এই রাতে কি আর কাজ করবি। তোকে আজ এখানেই থাকতে হবে কোনও কথা শুনছি না আমি। মালতী আজ তুমি লুচি বানাও আমি বাজার থেকে মুরগী নিয়ে আসছি। বহু দিন লুচি মাংস খাইনি।
মানব বাবুঃ আরে সুবীর তুই এখনো আমার ওই লুচি মাংসর লোভ তা ভুলতে পারলিনা বল। ঠিক আছে এই লুচি মাংসের জন্য আমি সব ই পারি। ঠিক আছে আজ রাত তা আমি এখানেই থাকছি, তোদের জ্বালাতন করতে।
কোনরকমে হ্যারিকেন তা জ্বালিয়ে মালতী দেবী আবার ভেতরে ঢুকলেন। এবার অন্তত প্রায় আধ ঘণ্টা পর মানব বাবু বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ তুমি কি জানো বউদি কেন আমার মন এত চঞ্চল আজ? কেন আমি এভাবে ভেঙে পরলাম?
মালতী দেবীঃ কেন আমায় বল প্লিজ?
মানব বাবুঃ না থাক অন্য একদিন ই বরং তোমায় বলব।
মালতী দেবী আর বেশি ঘাঁটালেন না মানব দাকে। ওনার আর সত্যি ই ভালো লাগছিল না। মনব বাবু আর সুবীর বাবু এততাই মদ খেয়েছে যে আজ আর ওরা কিছু খাবেনা তা উনি জানেন। ওনার ও প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছে। আর নেশা তা ওনার ও কম হয়নি। ঠিক করে হাঁটতে পারছেন না। এই মুহূর্তে একবার স্নান করে শুয়ে পড়া উচিৎ। আর খুব ভালো হয়েছে কারেন্ট চলে গিয়ে। ওদের বাড়ীতে সেই সময় বাথরুম ছিলনা তাই স্নান করতে হলে কুয়পারেই করতে হবে। কারেন্ট না থাকায় অন্ধকারে সাচ্ছন্দে ও স্নান করতে পারবে।
মালতী দেবীঃ মানব দা তুমি সুয়ে পর এখানে বিছানা তো করাই আছে আমি স্নান করে শুয়ে পরবো। আর কোনও উলটো পাল্টা কিছু ভেবনা। নিজেকে একা ভাববে না কেমন। মনে রেখো আমরা সবসময় তোমার পাশেই আছি।
রুম থেকে বেরোনোর সময় মালতী দেবী একবার পেছন ঘুরে মানব বাবুর দিকে তাকালেন। মানব বাবুর একটা হাত ওনার বুকের ভেতরে, আলতো করে উনি নিজের বুকে হাত বোলাচ্ছেন আর অত্যন্ত বিশ্রী ভাবে মালতী দেবীর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছেন। এই হাসি, এই নজর, এই অচেনা দৃষ্টি মালতী দেবীর শরীরটাকে কেমন যেন নাড়িয়ে দিল একবার। কে যেন ভেতর থেকে এক নাগাড়ে বলে চলেছে – সাবধান মালতী, সাবধান, ঘরে পর পুরুষ রয়েছে সাবধান। মালতী দেবী সমস্ত কিছুর দায় পেটে পড়া কয়েক পেগ মদের ওপর চাপিয়ে আসতে আসতে হ্যারিকেন তা উঠিয়ে রুম এর বাইরে বেরলেন। কুয়পারে গিয়ে হ্যারিকেন টাকে এক কোনায় রাখলেন আর বালতি টে জল ভরতে শুরু করলেন। হ্যারিকেন এর আলো খুব মৃদু হলেও উঠোন তা মোটামুটি পরিষ্কার ই দেখা যাচ্ছিল। জল ভরা হয়ে গেলে উনি একবার আবার বারান্দার সামনে এলেন, ভেতর তা ঘুটঘুটে অন্ধকার, ভেতরের ঘর গুলো থেকে সামান্য কোনও শব্দই আসছেনা। মালতী দেবী বোকার মতো এটাই ভেবে নিলেন যে মানব বাবু ঘুমিয়ে পড়েছে। ওনার ও মাথা ঠিক থাক কাজ করছেনা, শরীরে মাদকতা। উনি আসতে আসতে আবার কুয়ো পারে এগিয়ে গেলেন এবং এক এক করে সাড়ী সায়া ব্লাউজ সব কিছু খুলে দড়ি টে টাঙিয়ে দিলেন। গায়ে জল ঢালার আগে একবার নিজের ওই যৌবনরস এ ভরপুর শরীর টায় হাত দিলেন। ওনার কি হচ্ছে তা উনিও বুঝতে পারছেন না। আজ নিজের স্পরশেও শরীরে আগুন জ্বলে যাচ্ছে। একবার ভাবলেন মানব দা সত্যি ই ঘুমিয়ে পড়েছে তো। পেছন ঘুরে আবার একবার দেখলেন, ভেতরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। আর এই কালো অন্ধকারময় রাতে একমাত্র দৃশ্যমান কুয়ো পাড়, বালতি আর অবশ্যই সদ্য যুবতী হওয়া এই ২২ বছরের শরীর তা। আর কিছু ভাবতে ওনার ইচ্ছে হলনা। মগে করে জল তুলে মাথায় ঢালতে শুরু করলেন। জলের ছম ছম আওয়াজে আপাত শান্ত ও ঘুমিয়ে পড়া ঘরটা আবার জেগে উঠল। দায়সারা ভাবে এক বালতি জলে কোনরকমে স্নান করে নিয়ে উনি বা হাত তা ওপরে তুলে গামছা তা পারলেন, মিনিট ২-৩ এর মধ্যেই ওনার গা মোছা হয়ে গেলো। একবার ভিজে কাপড় গুলোর দিকে তাকিয়ে ভাবলেন আজ থাক কাল সকালে এগুলো কেচে নেব, আজ ঘুমিয়ে পড়ি। গামছা তা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে এক হাতে হ্যারিকেন তা তুলে উনি চললেন বারান্দার দিকে। হ্যারিকেন তা একটু উঁচু করে ধরতেই দেখলেন বারান্দার ঠিক ওপরে দাঁড়িয়ে এক মানুষ। মালতী দেবীর বুক তা ছ্যাঁত করে উঠল। উনি জানেন এটা মানব দা। মুহূর্তের মধ্যে নিজের মনটা শক্ত করে উনিও বারান্দার দিকে এগিয়ে গেলেন। উনি খুব ভালো করেই জানেন এই ছোট গামছা তা ওর শরীরের তুলনায় নগন্য। পরপুরুষের সামনে এই গামছা তা পরে যাওয়ার যে কি লজ্জা তা হয়ত কোনও নারী ই বোঝে। মালতী দেবী আসতে আসতে বারান্দায় উঠলেন, মানব দার দিকে না তাকিয়ে ওনাকে দেখতে না পাওয়ার ভান করলেন এবং আসতে আসতে নিজের রুম এর দিকে যেতে শুরু করলেন। হথাত মানব বাবু বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ বউদি জানো কেন আমি এত ভেঙে পরেছিলাম?
মালতী দেবী শুধুই দাঁড়িয়ে পরলেন। কিন্ত কোনও উত্তর ই দিলেন না। মানব বাবু আবার বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ লোকে বলে আমার চরিত্র খারাপ। আমি তোমাদের জন্য যা করেছি তা শুধুই নিজের জন্য।
এই কথার মানে মালতী দেবী বোঝেন। উনি জানেন এই মাতাল কে আর সত্যি ই ঘাঁটানো উচিৎ নয়। উনি পেছন ঘুরে মানব দার দিকে তাকিয়ে বললেন
মালতী দেবীঃ মানব দা, আমার শরীর তা ভালো লাগছেনা। আজ বরং ঘুমিয়ে পড়ি। কাল সকালে আবার কথা বলব।
মালতী দেবী নিজের রুম এ ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। বেশ কিছুক্ষন মানব বাবু ওখানেই দাঁড়িয়ে থাক্লেন তারপর উনিও নিজের রুম এ ঢুকে গেলেন। সেদিন রাতে মালতী দেবী ঘুমাতে পারেন নি, বারবার নিজেকে পাপী মনে হয়েছে। বহুবার নিজেকে এটা বলার চেষ্টা করেছেন যে মানব দা অনেক অনেক পরে বারান্দায় এসেছে, ও কিছুই দেখেনি। কিন্তু যুক্তি ও বাস্তব বিশ্বাস কে হারিয়েই দিয়েছে। এই ঘটনা তা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়, বরং বলা যায় এটা মানব বাবুর নিপীড়নের শুরু। আজ এক এক করে অনেক গুলো পুরনো ঘটনা মালতী দেবীর মনে পরে যাচ্ছে। আর এই ঘটনা গুলো যতবার ই মনে পরে ওনার প্রচণ্ড লজ্জা হয় আর নিজের স্বামীর ওপর রাগ হয়।
ওদিকে অন্য ঘরটায় সুবীর বাবু ও ড্রেস পড়তে পড়তে বহু পুরনো ঘটনা ভাবছিলেন। মালতী দেবী যে একাই সব জানেন তা নয়, সুবীর বাবু ও অনেক কিছু জানেন। বহু কষ্টে সুবীর বাবু নিজের মনকে শান্ত করে বোঝানোর চেষ্টা করেন নিজেকে এখন এসব ভেবে কি লাভ এগুলো তো অতীত। আর এখন তো মানবের উৎপাত নেই বললেই চলে, সেই ৩ মাস আগে একবার এসেছিল তাও ২ ঘণ্টার জন্য। মনে মনে ভাবেন যৌবন কালে সবার ই এরকম একটু উগ্রতা থাকে, মালতী আমার স্ত্রী হলেও এটা সত্যি যে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও সুন্দরী মহিলা। ওর প্রতি যেকোনো পুরুষের ই আকর্ষণ খুব স্বাভাবিক। যদি মানব তা ঠিক সময় বিয়ে করে নিত হয়ত এত প্রবলেম হতনা। আর এটা সত্যি যে ও কিন্তু কোনদিন ই আমাদের কোনও ক্ষতি করেনি, শুধু দিয়েই গেছে। হয়ত পাশের ঘরে মালতী দেবীর যুক্তি গুলো ও এক। ওরা দুজনেই নিজেকে শান্ত করে।
সুবীর বাবুঃ মালতী আমি বাজারে যাচ্ছি, বাড়ীর জন্য কিছু আনতে হবে কি?
মালতী দেবীঃ হা বাড়ীতে আলু নেই, তুমি বরং ২ কিলো আলু নিয়ে এস।
সুবীর বাবু তাড়াতাড়ি বাজারের ব্যাগ তা নিয়ে বাজারে যেতে উদ্দত হলেন। একবার চেঁচিয়ে বলে দিলেন “মালতী দরজা তা বন্ধ করে দিয়ো আমি বাজারে যাচ্ছি” সুবীর বাবু দরজা তা খুলতেই বাইরে দেখেন মানব বাবু দাঁড়িয়ে। প্রথম এ ওনাকে দেখে সুবীর বাবু একটু ঘাবড়েই যায়। মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে সামলে নিয়ে মানব বাবুকে জড়িয়ে ধরেন।
মানব বাবুঃ কি রে শালা এতদিন বাদে বন্ধুর কথা মনে পড়েছে। যা রাগ হচ্ছেনা মনে হচ্ছে মাটিতে ফেলে তোকে মারি। মালতী তাড়াতাড়ি এখানে এস, দেখো কে এসেছে।
মালতী দেবীও ওর এই কথায় হন্তদন্ত করে দরজার সামনে ছুটে চলে এলেন।
মালতী দেবীঃ আরে কি ব্যপার মানব দা, আমাদের তো আর পাত্তাই দেন না। হু শুনেছি এখন নেতা হয়েছেন। আর কি আমাদের মতো সাধারন জনতার দিকে তাকানোর সময় হবে।
এক নিঃশ্বাসে কথা তা শেষ করে বাচ্চা দের মতো করে হে হে করে হেসে ফেললেন মালতী দেবী।
সুবীর বাবুঃ আচ্ছা ঠিক আছে, আগে ওকে ঢুকতে তো দাও। আয় মানব ভেতরে আয়।
মানব বাবু সুবীর বাবুর আলিঙ্গন থেকে মুক্ত হয়ে এক পা ভেতরে এসে দাঁড়ালেন। এবার একদম মালতী দেবীর মুখোমুখি। মালতী দেবী জানেন এবার কি হতে চলেছে। একবার তাই উনি আড় চোখে সুবীর বাবুর দিকে তাকালেন। সুবীর বাবু হথাত ই খুব গম্ভীর আর কিছুটা পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে মুখ তা ঘুরিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। মানব বাবু এবার মুখটা হাসি হাসি করে দু হাত মালতী দেবীর কাধে রেখে বলে উঠলেন
মানব বাবুঃ তোমাদের কি ভুলতে পারি বউদি। আমি ভুলিনি তাই তো চলে এলাম।
মালতী দেবীঃ ভুলেছ বই কি। আমার বুঝি দুষ্টু দেওর টাকে দেখতে ইচ্ছে হয়না। এতদিন কোথায় ছিলে তুমি?
মানব বাবুঃ সব বলব। আগে ভেতরে চল।
মানব বাবু আর মালতী দেবি ভেতরে যেতে শুরু করলেন, মানব বাবু পেছন ঘুরে একবার দেখলেন সুবীর বাবুর দিকে। সুবীর বাবু দরজার দিকে তাকিয়েই দাঁড়িয়ে আছে।
মানব বাবুঃ কিরে সুবীর আয় ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন, ভেতরে আয় অনেক কথা আছে।
সুবীর বাবু কোনও উত্তর না দিয়ে ওদের পেছন পেছন আসতে লাগলেন। মালতী দেবি জানেন সুবীর বাবুর এই আকস্মিক নীরবতার কারন। কিন্তু মালতী দেবীর তো কিছুই করার নেই। ৫-৬ মাসে লোকটা একবার হয়ত আসে, সব দ্বিধা দ্বন্দ্ব সরিয়ে রেখে ঠিক করে ব্যাবহার না করলে কি ভাববে ও যে এখন অবস্থা ফিরে গেছে তাই আর ওর দরকার নেই। মালতী দেবী মনে মনে ঠিক করে নেন, না যাই হোক না কেন সব ভুলে উনি মানব দার সাথে খুব ভালভাবে মিশবেন আর তাতে সুবীর বাবু যতই খারাপ ভাবুক না কেন।
মানব বাবুঃ সুবীর আয় ভেতরে, কিছু কথা আছে। আমি আধ ঘণ্টার মধ্যেই বেরিয়ে যাবো।
মালতী দেবীঃ না মানব দা বাড়ীতে ঢোকা তা তোমার ইচ্ছে অনুযায়ী হবে কিন্তু বেরনো তা আমার ইচ্ছে অনুযায়ী হবে। তুমি যতই চেষ্টা করো যাই তোমার রাজকাজ থাক আমি কাল সকালের আগে তোমায় ছারছিনা।
মানব বাবুঃ আরে বউদি এরকম বলনা। আমায় আজ যেতেই হবে। প্রচণ্ড ব্যাস্ততার মধ্যে আছি আমি।
সুবীর বাবুঃ আরে তুই এই রাতে কি আর কাজ করবি। তোকে আজ এখানেই থাকতে হবে কোনও কথা শুনছি না আমি। মালতী আজ তুমি লুচি বানাও আমি বাজার থেকে মুরগী নিয়ে আসছি। বহু দিন লুচি মাংস খাইনি।
মানব বাবুঃ আরে সুবীর তুই এখনো আমার ওই লুচি মাংসর লোভ তা ভুলতে পারলিনা বল। ঠিক আছে এই লুচি মাংসের জন্য আমি সব ই পারি। ঠিক আছে আজ রাত তা আমি এখানেই থাকছি, তোদের জ্বালাতন করতে।