16-01-2019, 12:29 PM
পর্ব ৮- স্মৃতিচারণ ১
তিলোত্তমা বেরিয়ে যেতেই মালতী দেবী দরজাটা বন্ধ করলেন। পেছন ঘুরে আসতে গিয়েই দেখেন সুবীর বাবু ওনার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। মালতী দেবী প্রথমে চমকে গেলেও তারপর খিলখিল করে হেসে ফেললেন। সুবীর বাবু আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলেন না, দুহাতে মালতী দেবীর দুগাল ধরে সোজা কিস করতে শুরু করলেন। দীর্ঘ ১ বছরের অপেক্ষা শেষ। কত কষ্ট করেছে ওরা দুজন। মেয়েরা পড়াশুনা করবে এই ভেবে নিজেদের শরীরের খিদে গুলো জোর করে চেপে রেখেছেন। আজ সব বাধ ভেঙ্গে গেছে আজ কোনও শক্তি ই ওনাকে আটকাতে পারবেনা। আসতে আসতে সুবীর বাবু মুখটা সরালেন। অনভ্যস্ত এই যৌন আচরনে মালতী দেবী প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে পরেছেন, ঘন ঘন নিঃশ্বাস পড়ছে ওনার। কোনও রকমে নিজেকে কন্ট্রোল করে সুবীর বাবুর গলাটা দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে উনি বললেন
মালতী দেবিঃ এই তুমি কি ভুলে গেছ তুমি দুই মেয়ের বাবা। এখন কি আর এসব মানায়।
সুবীর বাবুঃ কেন মানাবে না। দু বাচ্চার মায়ের সাথেই তো পীরিত টা করছি।
এবার মালতী দেবী প্রচণ্ড জোরে হা হা করে হেসে ফেললেন। সুবীর বাবু আবার ওনাকে জড়িয়ে ধরে ওনার গালে মুখে বুকে পাগলের মতো করে আদর করতে লাগলেন।
মালতী দেবিঃ ওহ ছাড় এখন। রান্না হয়নি। সারা রাত তো পড়ে আছে।
সুবীর বাবুঃ তাই বল। তোমার সিগন্যাল আমি আগেই ধরে ফেলেছি। চা চাওয়ার আগেই পৌঁছে গেলো, না চাইতেই জলখাবার, আমি কি বুঝিনা আজ তোমার মন কি চাইছে।
মালতী দেবিঃ হা গো লুকাবনা। আজ আমার প্রচণ্ড তোমার আদর টা পেতে ইচ্ছে হচ্ছে। আর মেয়েদের জন্য কত ছাড়ব। ওরা কি কোনদিন বুঝবে আমরা কত কষ্ট করলাম।
সুবীর বাবুঃ এই এরকম বলনা। বাবা মা হিসেবে এটা তো আমাদের কর্তব্য। আর ওরা তো চলেই যাচ্ছে, আমি না হয় বুড়ো তুমি তো এখন ও যুবতী এবার থেকে রোজ রাতে তোমায় নতুন বউ এর মতো করে আদর করব। খুশি তো।
মালতী দেবিঃ হা আরও বানিয়ে বানিয়ে বল।
সুবীর বাবুঃ তোমার পুরনো কথা গুলো মনে পড়ে মালতী। মা মারা গেলো, বাবা মারা গেলো। মানবের দেওয়া একটা জমি তার ওপর কত কষ্টে আমরা এই বাড়ী টা দাড় করালাম।
এবার মালতী দেবী একটু চুপ করে গেলেন। উনিও স্বিকার করেন মানব বাবু না থাকলে কখনই এই জায়গাতে ওরা পৌঁছাতে পারতনা। সত্যি নিজের ভাই এর জন্য ও কেউ এরকম করেনা যা মানব বাবু নিজের বন্ধুর জন্য করেছেন। এটাও সত্যি এরজন্য মানব বাবুর প্রতি উনি চিরকৃতজ্ঞ। কিন্তু একটা খটকা মালতী দেবীর মনে আজও রয়ে যায়। সেটা অন্য কেউ কখনো বুঝবেনা।
মালতী দেবী কে চুপ করে যেতে দেখে সুবীর বাবু বলে অথেন
সুবীর বাবুঃ মালতী আমি জীবনে কখনো মানবের উপকার ভুলতে পারবনা। তুমিও ভুলনা।
মালতী দেবীঃ না গো আমি কখনো ওটা ভুলিনি। সত্যি কি ছিল আমাদের? বিয়ের ৫ বছর পর তুমি চাকরী টা পেলে, টিউশন এর টাকায় সংসার চলতো না। তুমি মুখ ফিরে চাইতে পারতে না। তাই ও নিজে জোর করে প্রতি মাসে তোমায় কিছু টাকা দিয়ে যেত।
সুবীর বাবুঃ জানতো মালতী, শেষ দিক টায় আমি খুব হতাশ হয়ে পরেছিলাম। না কলেজ না কলেজ কোথাও কিছু হচ্ছিলনা। ওর থেকে আর টাকা নিতে পারতাম না। যতবার ই ও হাতে টাকা টা দিত আমার চোখ জলে ভরে যেত। তাই ও আমাদের বাড়ী তে খেতে শুরু করে যাতে আমার মনে হয় ওর ওই দুবেলা খাওয়ার বদলে আমি কিছু টাকা ওর থেকে নিচ্ছি।
মালতী দেবীঃ শুধু তাই কেন আমাদের বাড়ীতে বর্ষাকালে জল জমে যেত, দুটো বাচ্চা মেয়েকে নিয়ে থাকা জেতনা। নিজের বাড়ী তে আমাদের নিয়ে গিয়ে রেখেছিল।
সুবীর বাবুঃ ভেবেছিলাম ওর যখন ছেলে মেয়ে হবে একদম নিজের মতো করে মানুষ করব বিশাল কিছু তৈরি করব আর এভাবে ওর ঋণ শোধ করব। কিন্তু হতচ্ছাড়া টা বিয়েই করলনা।
মালতী দেবীঃ হা কি অদ্ভুত। ওর তো অভাব কিছু নেই। দেখতেও রাজপুত্রের মতো ছিল। তাহলে বিয়ে করলনা কেন।
সুবীর বাবুঃ আর বলনা। সে এক খামখেয়ালিপনা। কোনও এক মেয়েকে এক নজর দেখেই ভালো লেগে যায়, টাকে ছাড়া কাউকেই বিয়ে করবেনা ঠিক করে। পড়ে জানতে পারে সে বিবাহিত। ব্যাস এটাই। কত বুঝিয়েছি কখনই বোঝেনি।
মালতী দেবীঃ ওর দাদা তো ওর জন্য কিছু করতে পারত। এভাবে ভাইকে অবিবাহিত রেখে দেওয়ার তো কোনও মানেই হয়না।
সুবীর বাবুঃ আর ওই পাষণ্ড দাদার কথা বলনা। ওর বাবা যদি ওর নামে কিছু বিষয় সম্পত্তি না লিখে যেত আজ ওকে পথে বসতে হত।
মালতী দেবীঃ সত্যি ই মানুষ তার কি কষ্ট। বেশি বয়সে কে দেখবে বলত?
সুবীর বাবুঃ হা এই কথাটা আমিও ভাবি। আর কিছুদিন যাক, ওকে একদম পাকাপাকি ভাবে এখানেই চলে আসতে বলব।
এবার মালতী দেবী একটু চুপ করে গেলেন। আসলে কিছু ঘটনা আছে, যা হয়ত মালতী দেবীর জীবনে কোনও প্রবলেম তৈরি করেনি কিন্তু এটা খুব সত্যি যে যা খুব অনভিপ্রেত। মালতী দেবী কে চুপ করে যেতে দেখে সুবীর বাবুও চুপ করে গেলেন, আসলে উনিও জানেন বা আঁচ করেন এমন কিছু ঘটনা।
সুবীর বাবুঃ মালতী আজ কিন্তু তাড়াতাড়ি রান্না করে নিয়ো। আমি একটু বাজারে যাচ্ছি কিছু কেনাকাটা আছে।
মালতী দেবীর মনটা আবার শান্ত হোল। কেনাকাটা মানে কি টা মালতী দেবী বোঝেন। মুচকি হেসে মালতী দেবী রান্না ঘরে চলে গেলেন। এদিকে সুবীর বাবু ও ভেতরের ঘরে গেলেন ড্রেস চেঞ্জ করতে।
রান্না ঘরে মালতী দেবী রান্না শুরু করলেও ওনার মনটা বড়ই চঞ্চল হয়ে উঠেছে। কারন একটাই সুবীর বাবু সেই পুরনো কথা গুলো টেনে তুললেন। আসলে মানব বাবুকে নিয়ে এমন কিছু ঘটনা আছে যা আপাত দৃষ্টিতে সাধারন মনে হলেও একটি মেয়ের কাছে খুব ই লজ্জার। মালতী দেবীর মনে মানব বাবুকে নিয়ে শ্রদ্ধার কোনও খামতি নেই। হয়ত নিজের স্বামীর চেয়েও উনি মানব বাবুকে বেশি শ্রদ্ধা করেন। তবুও কিছু কিন্তু রয়ে গেছে। এগুলই মালতী দেবী ভাবতে লাগলেন। বিয়ের প্রথম রাত, বরপক্ষ বলতে একজন কেই দেখেছিলেন উনি সে হোল মানব বাবু, ওর স্বামীর প্রানের বন্ধু। অত্যন্ত মিশুকে আর নম্র স্বভাবের মানুষ ছিলেন এই মানব বাবু। প্রথম কথাতাও মালতী দেবীর আজ ও মনে আছে। “বউদি প্রথমেই বলে রাখি আপনি নয় তুমি আমায় তুমি করে বলবে। হা বেশি সম্মান জানাতে চাইলে মানবদা চলতে পারে” সেই থেকে তৈরি হোল একটা নতুন সম্পর্ক মানব দা ও বউদির সম্পর্ক। প্রথম প্রথম কথায় কথায় ইয়ার্কি করা বউদির গায়ে পরে মেলামেশা করা এগুলো কোনটাই মালতী দেবীর অস্বাভাবিক মনে হত না। সাধারনত বরের ছোট ভাই ও বউ এর সম্পর্ক এরকম ই হয়। মালতী দেবী ও মানব বাবুর প্রতিটা ইয়ারকির জবাব ইয়ারকি করেই দিতেন। প্রথম দিকে এই ইয়ারকি গুলো ভেজ থাকলেও বউদির আস্কারা পেয়ে টা নন-ভেজ টাইপ এর হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে মালতী দেবীর খুব অসুবিধা হতে শুরু করে। কিন্তু এটাকে শুধুই ইয়ারকি ভেবে উনি হেসে উরিয়ে দিতেন বা “বউদির সাথে অসভ্যতা হচ্ছে” টাইপের কিছু কমেন্ট করে এড়িয়ে যেতেন।
এই ইয়ার্কি গুলোর মাত্রা আসতে আসতে বাড়তে থাকে। মানব বাবুর সবচেয়ে বড় গুন হোল ওনার স্মার্টনেস। এরকম ই একদিন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সাধারনত সুবীর বাবু মদ্যপান করেন না। কিন্তু এই প্রানের বন্ধু মানবের পাল্লায় পরে কখনো কখনো তাকেও মদ্যপান করতে হয়। তবে সেটা খুব ই কিঞ্চিৎ হয়ত ৬ মাসে একবার। তাই মালতী দেবী এই নিয়ে কোনও আপত্তি করতেন না। যেদিন সুবীর বাবু মানব বাবুর সাথে মদ্যপান করতে বসতেন সেদিন একদম বেহুশ হয়েই শেষ করতেন। আসলে মদ খাওয়ার ক্ষমতায় মানব বাবুর সাথে সুবীর বাবুর কোনও তুলনা হয় ই না। মানব বাবুর একটা অদ্ভুত আবদার ছিল তা হোল মদ খাওয়ার সময় কোনও না কোনও সঙ্গী ওর ছাই, যেসময় সুবীর বাবু সেন্সলেস হতেন তখন মানব বাবু হয়ত মাঝ পথ অব্ধিও আসেন নি। এই বাকি ৩-৪ ঘণ্টা সময় মানব বাবুর সঙ্গ দেওয়ার জন্য মালতী দেবী কে ওখানে বসতে হত। আর যেহেতু ৬ মাস কি বছরে একবার এই ঘটনা টি ঘটত তাই মালতী দেবী ও সব সহ্য করে নিতেন। এরকম ই একদিন কাউকে কিছু না বলে মানব বাবু এক লিটার মদ কিনে নিয়ে চলে আসেন। তার আগেরদিন একটা গবেষণার কাজে সুবীর বাবুর সারা রাত জাগা, শরীর আর কুলচ্ছেনা। আবার প্রানের বন্ধুকে কিছু বলাও যায়না। তাই বাধ্য হয়ে বসলেন মদ খেতে। সেদিন প্রচণ্ড গরম ছিল, সুবীর বাবু সকালে স্নান করার ও সময় পান নি। এমনি তেই ওনার গা তা হাঁসফাঁস করছিল। কিছুটা জোর করেই উনি মদ তা খেতে শুরু করলেন। প্রথমে খুব আসতে আসতে চুমুক দিলেন কিন্তু এক পেগ পেটে পরার পর ই শরীরের কথা আর ওনার খেয়াল থাকেনা। মুহূর্তের মধ্যেই দুজনের ৩ পেগ শেষ হয়ে গেলো। এর পরের পেগ তা খাওয়ার কোনও ইচ্ছে ই ওনার ছিলনা কিন্তু কিছুটা জোর করেই মানব বাবু ওনাকে খেতে বাধ্য করলেন। আর যা হয়ার তাই হোল কিছুটা খাওয়ার পর ই ওনার গা প্রচণ্ড গুলাতে শুরু করল। মানব বাবু ধরে ওনাকে কুয়পার অবধি নিয়ে গেলেন। ২-৩ বার বমি করার পর সুবীর বাবু বলে উথলেন “আমি সুয়ে পড়ব মানব তুমি খাও মালতী তোমায় সঙ্গ দেবে” মালতী দেবী সাম্নেই ছিলেন। উনি জানেন স্বামীর এই আদেশ মান্তেই হবে। কারন সামনের লোকটা মানব বাবু যার দয়ায় ওরা এখানে আছে। এই ঘটনা তা ঠিক সেই সময় যখন ২-৩ মাস হবে সুবীর বাবু কলেজ এ চান্স পেয়েছেন।
মালতী দেবী ভেতরের ঘরে ঢুকে বিছানা করে দিলেন। মানব বাবু কোনরকমে সুবীর কে নিয়ে এসে ওখানে সুইয়ে দিলেন আর আবার অন্য ঘর টায় চলে গেলেন। এদিকে মালতী দেবী লাইট অফ করে দরজা তা ভিজিয়ে দিয়ে ওখানে মানে মানব বাবুর কাছেই ফিরে আসলেন। উনি দেখলেন মানব বাবু সব কিছু গুটিয়ে নিচ্ছেন। মালতী দেবী বলে উথলেন
মালতী দেবীঃ একি মানব দা তুমি উঠে যাচ্ছ কেন খাও আমি বসছি তো।
মানব বাবুঃ আরে বউদি তোমার সাথে বসে মদ খাব কেমন একটা লাগছে।
মালতী দেবীঃ কিছুই লাগছে না। তুমি বস। বস বলছি। (জোরে একটা ধমক দিয়ে)
তিলোত্তমা বেরিয়ে যেতেই মালতী দেবী দরজাটা বন্ধ করলেন। পেছন ঘুরে আসতে গিয়েই দেখেন সুবীর বাবু ওনার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। মালতী দেবী প্রথমে চমকে গেলেও তারপর খিলখিল করে হেসে ফেললেন। সুবীর বাবু আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলেন না, দুহাতে মালতী দেবীর দুগাল ধরে সোজা কিস করতে শুরু করলেন। দীর্ঘ ১ বছরের অপেক্ষা শেষ। কত কষ্ট করেছে ওরা দুজন। মেয়েরা পড়াশুনা করবে এই ভেবে নিজেদের শরীরের খিদে গুলো জোর করে চেপে রেখেছেন। আজ সব বাধ ভেঙ্গে গেছে আজ কোনও শক্তি ই ওনাকে আটকাতে পারবেনা। আসতে আসতে সুবীর বাবু মুখটা সরালেন। অনভ্যস্ত এই যৌন আচরনে মালতী দেবী প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে পরেছেন, ঘন ঘন নিঃশ্বাস পড়ছে ওনার। কোনও রকমে নিজেকে কন্ট্রোল করে সুবীর বাবুর গলাটা দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে উনি বললেন
মালতী দেবিঃ এই তুমি কি ভুলে গেছ তুমি দুই মেয়ের বাবা। এখন কি আর এসব মানায়।
সুবীর বাবুঃ কেন মানাবে না। দু বাচ্চার মায়ের সাথেই তো পীরিত টা করছি।
এবার মালতী দেবী প্রচণ্ড জোরে হা হা করে হেসে ফেললেন। সুবীর বাবু আবার ওনাকে জড়িয়ে ধরে ওনার গালে মুখে বুকে পাগলের মতো করে আদর করতে লাগলেন।
মালতী দেবিঃ ওহ ছাড় এখন। রান্না হয়নি। সারা রাত তো পড়ে আছে।
সুবীর বাবুঃ তাই বল। তোমার সিগন্যাল আমি আগেই ধরে ফেলেছি। চা চাওয়ার আগেই পৌঁছে গেলো, না চাইতেই জলখাবার, আমি কি বুঝিনা আজ তোমার মন কি চাইছে।
মালতী দেবিঃ হা গো লুকাবনা। আজ আমার প্রচণ্ড তোমার আদর টা পেতে ইচ্ছে হচ্ছে। আর মেয়েদের জন্য কত ছাড়ব। ওরা কি কোনদিন বুঝবে আমরা কত কষ্ট করলাম।
সুবীর বাবুঃ এই এরকম বলনা। বাবা মা হিসেবে এটা তো আমাদের কর্তব্য। আর ওরা তো চলেই যাচ্ছে, আমি না হয় বুড়ো তুমি তো এখন ও যুবতী এবার থেকে রোজ রাতে তোমায় নতুন বউ এর মতো করে আদর করব। খুশি তো।
মালতী দেবিঃ হা আরও বানিয়ে বানিয়ে বল।
সুবীর বাবুঃ তোমার পুরনো কথা গুলো মনে পড়ে মালতী। মা মারা গেলো, বাবা মারা গেলো। মানবের দেওয়া একটা জমি তার ওপর কত কষ্টে আমরা এই বাড়ী টা দাড় করালাম।
এবার মালতী দেবী একটু চুপ করে গেলেন। উনিও স্বিকার করেন মানব বাবু না থাকলে কখনই এই জায়গাতে ওরা পৌঁছাতে পারতনা। সত্যি নিজের ভাই এর জন্য ও কেউ এরকম করেনা যা মানব বাবু নিজের বন্ধুর জন্য করেছেন। এটাও সত্যি এরজন্য মানব বাবুর প্রতি উনি চিরকৃতজ্ঞ। কিন্তু একটা খটকা মালতী দেবীর মনে আজও রয়ে যায়। সেটা অন্য কেউ কখনো বুঝবেনা।
মালতী দেবী কে চুপ করে যেতে দেখে সুবীর বাবু বলে অথেন
সুবীর বাবুঃ মালতী আমি জীবনে কখনো মানবের উপকার ভুলতে পারবনা। তুমিও ভুলনা।
মালতী দেবীঃ না গো আমি কখনো ওটা ভুলিনি। সত্যি কি ছিল আমাদের? বিয়ের ৫ বছর পর তুমি চাকরী টা পেলে, টিউশন এর টাকায় সংসার চলতো না। তুমি মুখ ফিরে চাইতে পারতে না। তাই ও নিজে জোর করে প্রতি মাসে তোমায় কিছু টাকা দিয়ে যেত।
সুবীর বাবুঃ জানতো মালতী, শেষ দিক টায় আমি খুব হতাশ হয়ে পরেছিলাম। না কলেজ না কলেজ কোথাও কিছু হচ্ছিলনা। ওর থেকে আর টাকা নিতে পারতাম না। যতবার ই ও হাতে টাকা টা দিত আমার চোখ জলে ভরে যেত। তাই ও আমাদের বাড়ী তে খেতে শুরু করে যাতে আমার মনে হয় ওর ওই দুবেলা খাওয়ার বদলে আমি কিছু টাকা ওর থেকে নিচ্ছি।
মালতী দেবীঃ শুধু তাই কেন আমাদের বাড়ীতে বর্ষাকালে জল জমে যেত, দুটো বাচ্চা মেয়েকে নিয়ে থাকা জেতনা। নিজের বাড়ী তে আমাদের নিয়ে গিয়ে রেখেছিল।
সুবীর বাবুঃ ভেবেছিলাম ওর যখন ছেলে মেয়ে হবে একদম নিজের মতো করে মানুষ করব বিশাল কিছু তৈরি করব আর এভাবে ওর ঋণ শোধ করব। কিন্তু হতচ্ছাড়া টা বিয়েই করলনা।
মালতী দেবীঃ হা কি অদ্ভুত। ওর তো অভাব কিছু নেই। দেখতেও রাজপুত্রের মতো ছিল। তাহলে বিয়ে করলনা কেন।
সুবীর বাবুঃ আর বলনা। সে এক খামখেয়ালিপনা। কোনও এক মেয়েকে এক নজর দেখেই ভালো লেগে যায়, টাকে ছাড়া কাউকেই বিয়ে করবেনা ঠিক করে। পড়ে জানতে পারে সে বিবাহিত। ব্যাস এটাই। কত বুঝিয়েছি কখনই বোঝেনি।
মালতী দেবীঃ ওর দাদা তো ওর জন্য কিছু করতে পারত। এভাবে ভাইকে অবিবাহিত রেখে দেওয়ার তো কোনও মানেই হয়না।
সুবীর বাবুঃ আর ওই পাষণ্ড দাদার কথা বলনা। ওর বাবা যদি ওর নামে কিছু বিষয় সম্পত্তি না লিখে যেত আজ ওকে পথে বসতে হত।
মালতী দেবীঃ সত্যি ই মানুষ তার কি কষ্ট। বেশি বয়সে কে দেখবে বলত?
সুবীর বাবুঃ হা এই কথাটা আমিও ভাবি। আর কিছুদিন যাক, ওকে একদম পাকাপাকি ভাবে এখানেই চলে আসতে বলব।
এবার মালতী দেবী একটু চুপ করে গেলেন। আসলে কিছু ঘটনা আছে, যা হয়ত মালতী দেবীর জীবনে কোনও প্রবলেম তৈরি করেনি কিন্তু এটা খুব সত্যি যে যা খুব অনভিপ্রেত। মালতী দেবী কে চুপ করে যেতে দেখে সুবীর বাবুও চুপ করে গেলেন, আসলে উনিও জানেন বা আঁচ করেন এমন কিছু ঘটনা।
সুবীর বাবুঃ মালতী আজ কিন্তু তাড়াতাড়ি রান্না করে নিয়ো। আমি একটু বাজারে যাচ্ছি কিছু কেনাকাটা আছে।
মালতী দেবীর মনটা আবার শান্ত হোল। কেনাকাটা মানে কি টা মালতী দেবী বোঝেন। মুচকি হেসে মালতী দেবী রান্না ঘরে চলে গেলেন। এদিকে সুবীর বাবু ও ভেতরের ঘরে গেলেন ড্রেস চেঞ্জ করতে।
রান্না ঘরে মালতী দেবী রান্না শুরু করলেও ওনার মনটা বড়ই চঞ্চল হয়ে উঠেছে। কারন একটাই সুবীর বাবু সেই পুরনো কথা গুলো টেনে তুললেন। আসলে মানব বাবুকে নিয়ে এমন কিছু ঘটনা আছে যা আপাত দৃষ্টিতে সাধারন মনে হলেও একটি মেয়ের কাছে খুব ই লজ্জার। মালতী দেবীর মনে মানব বাবুকে নিয়ে শ্রদ্ধার কোনও খামতি নেই। হয়ত নিজের স্বামীর চেয়েও উনি মানব বাবুকে বেশি শ্রদ্ধা করেন। তবুও কিছু কিন্তু রয়ে গেছে। এগুলই মালতী দেবী ভাবতে লাগলেন। বিয়ের প্রথম রাত, বরপক্ষ বলতে একজন কেই দেখেছিলেন উনি সে হোল মানব বাবু, ওর স্বামীর প্রানের বন্ধু। অত্যন্ত মিশুকে আর নম্র স্বভাবের মানুষ ছিলেন এই মানব বাবু। প্রথম কথাতাও মালতী দেবীর আজ ও মনে আছে। “বউদি প্রথমেই বলে রাখি আপনি নয় তুমি আমায় তুমি করে বলবে। হা বেশি সম্মান জানাতে চাইলে মানবদা চলতে পারে” সেই থেকে তৈরি হোল একটা নতুন সম্পর্ক মানব দা ও বউদির সম্পর্ক। প্রথম প্রথম কথায় কথায় ইয়ার্কি করা বউদির গায়ে পরে মেলামেশা করা এগুলো কোনটাই মালতী দেবীর অস্বাভাবিক মনে হত না। সাধারনত বরের ছোট ভাই ও বউ এর সম্পর্ক এরকম ই হয়। মালতী দেবী ও মানব বাবুর প্রতিটা ইয়ারকির জবাব ইয়ারকি করেই দিতেন। প্রথম দিকে এই ইয়ারকি গুলো ভেজ থাকলেও বউদির আস্কারা পেয়ে টা নন-ভেজ টাইপ এর হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে মালতী দেবীর খুব অসুবিধা হতে শুরু করে। কিন্তু এটাকে শুধুই ইয়ারকি ভেবে উনি হেসে উরিয়ে দিতেন বা “বউদির সাথে অসভ্যতা হচ্ছে” টাইপের কিছু কমেন্ট করে এড়িয়ে যেতেন।
এই ইয়ার্কি গুলোর মাত্রা আসতে আসতে বাড়তে থাকে। মানব বাবুর সবচেয়ে বড় গুন হোল ওনার স্মার্টনেস। এরকম ই একদিন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সাধারনত সুবীর বাবু মদ্যপান করেন না। কিন্তু এই প্রানের বন্ধু মানবের পাল্লায় পরে কখনো কখনো তাকেও মদ্যপান করতে হয়। তবে সেটা খুব ই কিঞ্চিৎ হয়ত ৬ মাসে একবার। তাই মালতী দেবী এই নিয়ে কোনও আপত্তি করতেন না। যেদিন সুবীর বাবু মানব বাবুর সাথে মদ্যপান করতে বসতেন সেদিন একদম বেহুশ হয়েই শেষ করতেন। আসলে মদ খাওয়ার ক্ষমতায় মানব বাবুর সাথে সুবীর বাবুর কোনও তুলনা হয় ই না। মানব বাবুর একটা অদ্ভুত আবদার ছিল তা হোল মদ খাওয়ার সময় কোনও না কোনও সঙ্গী ওর ছাই, যেসময় সুবীর বাবু সেন্সলেস হতেন তখন মানব বাবু হয়ত মাঝ পথ অব্ধিও আসেন নি। এই বাকি ৩-৪ ঘণ্টা সময় মানব বাবুর সঙ্গ দেওয়ার জন্য মালতী দেবী কে ওখানে বসতে হত। আর যেহেতু ৬ মাস কি বছরে একবার এই ঘটনা টি ঘটত তাই মালতী দেবী ও সব সহ্য করে নিতেন। এরকম ই একদিন কাউকে কিছু না বলে মানব বাবু এক লিটার মদ কিনে নিয়ে চলে আসেন। তার আগেরদিন একটা গবেষণার কাজে সুবীর বাবুর সারা রাত জাগা, শরীর আর কুলচ্ছেনা। আবার প্রানের বন্ধুকে কিছু বলাও যায়না। তাই বাধ্য হয়ে বসলেন মদ খেতে। সেদিন প্রচণ্ড গরম ছিল, সুবীর বাবু সকালে স্নান করার ও সময় পান নি। এমনি তেই ওনার গা তা হাঁসফাঁস করছিল। কিছুটা জোর করেই উনি মদ তা খেতে শুরু করলেন। প্রথমে খুব আসতে আসতে চুমুক দিলেন কিন্তু এক পেগ পেটে পরার পর ই শরীরের কথা আর ওনার খেয়াল থাকেনা। মুহূর্তের মধ্যেই দুজনের ৩ পেগ শেষ হয়ে গেলো। এর পরের পেগ তা খাওয়ার কোনও ইচ্ছে ই ওনার ছিলনা কিন্তু কিছুটা জোর করেই মানব বাবু ওনাকে খেতে বাধ্য করলেন। আর যা হয়ার তাই হোল কিছুটা খাওয়ার পর ই ওনার গা প্রচণ্ড গুলাতে শুরু করল। মানব বাবু ধরে ওনাকে কুয়পার অবধি নিয়ে গেলেন। ২-৩ বার বমি করার পর সুবীর বাবু বলে উথলেন “আমি সুয়ে পড়ব মানব তুমি খাও মালতী তোমায় সঙ্গ দেবে” মালতী দেবী সাম্নেই ছিলেন। উনি জানেন স্বামীর এই আদেশ মান্তেই হবে। কারন সামনের লোকটা মানব বাবু যার দয়ায় ওরা এখানে আছে। এই ঘটনা তা ঠিক সেই সময় যখন ২-৩ মাস হবে সুবীর বাবু কলেজ এ চান্স পেয়েছেন।
মালতী দেবী ভেতরের ঘরে ঢুকে বিছানা করে দিলেন। মানব বাবু কোনরকমে সুবীর কে নিয়ে এসে ওখানে সুইয়ে দিলেন আর আবার অন্য ঘর টায় চলে গেলেন। এদিকে মালতী দেবী লাইট অফ করে দরজা তা ভিজিয়ে দিয়ে ওখানে মানে মানব বাবুর কাছেই ফিরে আসলেন। উনি দেখলেন মানব বাবু সব কিছু গুটিয়ে নিচ্ছেন। মালতী দেবী বলে উথলেন
মালতী দেবীঃ একি মানব দা তুমি উঠে যাচ্ছ কেন খাও আমি বসছি তো।
মানব বাবুঃ আরে বউদি তোমার সাথে বসে মদ খাব কেমন একটা লাগছে।
মালতী দেবীঃ কিছুই লাগছে না। তুমি বস। বস বলছি। (জোরে একটা ধমক দিয়ে)