16-01-2019, 12:29 PM
পর্ব ৭-মানবের আগমনঃ
রাজু হাঁটতে হাঁটতে একদম বাজারের ভেতর ঢুকে গেলো। ওকে যেতে হবে নরেন বাবুর দোকানে। এই নরেন বাবুর দোকানেই ও কাজ করে। নরেন বাবুর ইলেক্ট্রিক গুডস সাপ্লাই করার দোকান আছে। রাজু এই সব গুডস সাপ্লাই দেখভাল করে ও সমস্ত টাকা হিসেব করে এনে নরেন বাবুর হাতে দেয়। এভাবে মাসে ২০০০ টাকা ও ইনকাম করে নেয়। খারাপ কাজ নয়, সারাদিন মালতী সুন্দরীর শরীর টা ভোগ করার পর একটু সময় বাচিয়ে মাল গুলো দেখে নেওয়া আর টাকা পৌঁছে দেওয়া ব্যাস এতটুকু। আজ মাসের শেষ আজ হয়ত টাকাটা হাতে পেয়ে যাবে। আর রাজু জানে মোবাইল এ ব্যাল্যান্স ভরিয়ে রাখা উচিৎ কারন আজ যতদূর সম্ভব অন্তত একবার তিলত্তমার ফোন বা এসএমএস আসবেই। টাকা চাইতে গেলে এত গালাগালি খেতে হয় যে ওর টাকা চাইতে ভালো লাগেনা। যাই হোক ভয়ে ভয়ে ও নরেন বাবুর দোকানে ঢুকে গেলো। ওকে দেখা মাত্র নরেন বাবু চেঁচিয়ে উথলেন শালা হারামি এই সন্ধে বেলা তোর সময় হোল এখানে আসার। সারাদিন কি করছিলি। রাজু কিছু উত্তর দেওয়ার আগেই নরেন বাবু হেসে উঠে হথাত বলে উথলেন
নরেন বাবুঃ আরে মানব বাবু যে, কি সৌভাগ্য আমার। এতদিন পর আমার এই গরিবশালায়। এই রাজু দাদাকে একটা চেয়ার দে।
মানব মিত্রঃ সব বলছি আগে এক গ্লাস জল খাওয়াও দেখি।
এবার আর রাজু নরেন বাবুকে কিছুই বলতে দিলনা। নিজে বোতল থেকে জল ঢেলে গ্লাস টা মানব বাবুকে এগিয়ে দিলেন। এক ঢোকে জলটা খেয়ে নিয়ে উনি উত্তর টা দিলেন
মানব বাবুঃ আর বলবেন না। কতকরে বললাম আমায় ছেড়ে দিতে, কিছুতেই শুনল না। আমাকেই দাড় করাল। আমি কতকরে বললাম দাদা আমি ব্যবসায়ী মানুষ। এইসব রাজনীতি আমার কাজ নয় অন্য কাউকে দাড় করান। কিছুতেই শুনল না।
নরেন বাবুঃ আরে কি বলছেন দাদা। আপনি তাহলে আমাদের কাউন্সিলার হতে চলেছেন। কি সৌভাগ্য আমার। এই রাজু যা ১০০০ টাকার মিষ্টি নিয়ে আয়। দাদাকে আর পুরো বাজারকে মিষ্টি মুখ করা। ওহ এতদিনে নিজের লোক পেলাম কাউন্সিলার হিসেবে।
এবার রাজু ভালো করে ওপর থেকে নিচ অবধি একবার দেখে নিল এই মানব মিত্র নামের মানুষ টাকে। কত অপবাদ শুনেছে এর নামে। একবার কোনও মেয়ের দিকে নাকি এর চোখ পড়লে যতক্ষণ না তার সাথে খাটে শুতে পারছে এর রাতে ঘুম আসেনা।
মানব বাবুঃ আরে না একদম নয়, আমার এমনিতেই সুগার। আগে জিতি তারপর মিষ্টি নয় হুইস্কি আর দেশী মুরগীর মাংস খাওয়াব। ঠিক আছে একবার টিভি টা খোলো দেখি। কিছুক্ষনের মধ্যেই হয়ত ঘোষণা হয়ে যাবে।
রাজু সাথে সাথে টিভি টা খুলে দিল, হা একদম সঠিক খবর। এবারে এখান থেকে ভোটে দারাচ্ছেন মানব বাবু, বীপরিতে যারা আছেন তারা নগণ্য। অর্থাৎ জিত একেবারে পাক্কা।
নরেন বাবুঃ দাদা আমার পাশের ওই জায়গা টা নিয়ে বহুদিন ধরে ঝামেলা চলছে, এবার একটু মুখ তুলে দেখুন প্লিজ।
মানব বাবুঃ আরে দেখব দেখব। আগে আমায় একটা খবর দাও তো।
বলেই একবার রাজুর দিকে কটমট করে দেখল।
নরেন বাবুঃ ও রাজু, আমার খুব বিশ্বস্ত। খুব কাজের ছেলে। ওকে বিশ্বাস করুন।
মানব বাবুঃ আচ্ছা আমাদের মনা মানে মনোজ কে দেখলাম কাল বিকেলে। ও কি করে কোথায় থাকে এখন?
নরেন বাবুঃ (একটু ফিস ফিস করে) মনা না মনার বউ কার কথা জানতে চাইছেন?
মানব বাবুঃ (আবার রাজুর দিকে তাকিয়ে) তুমি সব ই বোঝো। কি ব্যাপার বলত ওই ছেলে ওরকম একটা মাল জোগাড় করল কি করে। আর মনা কি করছে এখন?
নরেন বাবুঃ মনা একটা ছোট দোকান করেছে পান বিড়ি এসব বিক্রি করে। খুব অভাবের সংসার। (আবার ফিসফিস করে) দাদা আপনি একটা চেষ্টা করতে পারেন।
মানব বাবুঃ আরে ধুর আর কি মানায় এসব। বয়স হয়েছে। ঠিক আছে আমি এবার যাই, ওবাড়ী থেকে ঘুরে আসি একবার।
নরেন বাবুঃ (খুব হেসে) এই যে বললেন বয়স হয়েছে। আমি কিন্তু পুরো বাজার কে বলে দিয়েছি বউদি আর মেয়েদের থেকে কোনও টাকা না নিতে।
মানব বাবু হেসে বেরিয়ে গেলেন। মানব বাবু চলে যেতেই রাজুর দিকে তাকিয়ে নরেন বাবু বলে উথলেন
নরেন বাবুঃ বুঝলি রাজু, সব ই বিজনেস। এই বিজনেস সেন্স টা একবার তোর মধ্যে ঢুকে গেলে পুরো পৃথিবী তোর মুঠোয়। দেখ এই হারামী টাকে আমার ই কলেজের সিনিয়র। শালা ক্লাস ৮ এ বার বার ফেল করে পরাশুনা ছেড়ে দিল। আর আমি বিকম কমপ্লিট করেও এই বালের দোকানে বসে আছি। ওই একি কলেজ এ ওর ই ক্লাস এর ১ম হত সুবীর বাবু। শালা এত ভালো লোক অথচ কি অবস্থা। ছার এসব বাইরে না বলাই ভালো।
রাজুঃ কেন দাদা ওনার কি প্রবলেম, শুনেছি তো বিশাল গবেষক। তাহলে?
নরেন বাবুঃ বলিস না যেন কাউকে। শালা এক নাম্বারের হারামি এই মানব মিত্র টা। সুবীর বাবু ছোট থেকেই পরাশুনায় খুব ভালো ছিলেন, উচ্চাশা ছিল। কিন্তু কিসমত ই ফুটো কড়ির মতো ওর। বিএসসি ও এমেসসি দুটোতেই গোল্ড মেডালইসট। কলেজ এর প্রফেসর রা বললেন ছোট খাটো চাকরী না করে গবেষণা করতে। ভর্তি হলেন পিএইচডি তে। সেসময় কোনও টাকা পাওয়া যেত না গবেষণা করে। হথাত একদিন মা মারা গেলো। বাড়ীর একমাত্র ছেলে, দিদিদের বিয়ে হয়ে গেছিল তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলতে হোল। ওরা থাকতো উত্তর কলকাতার এক ভাড়া বাড়ীতে, ওখানে বউ কে নিয়ে থাকা সম্ভব নয়। যে বারীটায় ওরা থাকে সেই জমি টা আসলে মানবদের। ও লং টার্ম বিনিয়োগ করতে জানে। ও জানত এই জমির বদলে ও বিশাল কিছু ফেরত পাবে। এখন মালতী দেবী কে যা দেখিস টা কিছুই নয়। বিয়ের সময় অপরুপ সুন্দরী ছিল। প্রথম দরশনেই মানবের ওর ওপর নজর পড়ে যায়। সুবীরদের ফামিলি টা মানব ই টানত। বিয়ের একমাস পর বেচারা সুবীরের বাবা ও মারা যায়। আর তার সাথে সাথে শুরু হয় যখন তখন সুবীরের বাড়ীতে মানবের যাতায়াত। কতটুকুই বা বাড়ী টা ছিল সেইসময়। একটা শোয়ার ঘর, একটা বারান্দা ও একটা পায়খানা। মানব মাঝে মধ্যেই ওখানে গিয়ে থাকা শুরু করে। এর চেয়ে বেশি আমি কিছু জানিনা। সুনেছি মালতী দেবী নাকি আসলে মানবের রক্ষিতা। এও শুনেছি ওই যে দুটো মেয়ে তিলোত্তমা আর রূপসা ওরা আসলে মানবের ই সন্তান। হয়ত এতটাও ঠিক নয়, কিন্তু কিছুটা হলেও তো সত্যি।
রাজু কোনও উত্তর দিলনা। শুধু চুপ করে বসে সব ভাবতে লাগলো। নরেন বাবু রাজুকে ওখানে বসতে বলে নিজে একটু বাইরে গেলেন। হথাত রাজুর মোবাইল এ একটা মেসেজ এল।
হাই আমি তিলোত্তমা। রাজুদা তুমি আমার জন্য যা করেছ টা কোনদিন ভুলব না আমি। আমরা কি বন্ধু হতে পারি। দয়া করে আর ওই ধনী গরিবের তত্ব টা দেবেনা। আর যদি মনে করো আমি খুব খারাপ তাহলে উত্তর দিয়না।
রাজু ঠিক করল উত্তর দেবে কারন মাছ জালে ধরা পরেছে। না তিলোত্তমা আমি তোমায় খারাপ মেয়ে মনে করি না। ঠিক আছে আজ থেকে আমরা ভালো বন্ধু। কিন্তু তোমায় আমার সব কথার সত্যি উত্তর দিতে হবে।
কিছুক্ষনের মধ্যেই উত্তর এল। ঠিক আছে সব সত্যি বলব। জানতো আমরা যমজ বোন। আমার বোন রূপসা আজ বাড়ী আসবেনা ও পিসির বাড়ী হেদুয়া তে গেছে। পিসি আমাকেও দেকেছে আমি ভাবছি যাবো কিনা। আসলে আজ যা হোল, আমি খুব আপসেট।
রাজু উত্তর দিলঃ না তুমি ও যাও। পিসি নিজে দেকেছেন যখন যাওয়া উচিৎ। আজ যা হয়েছে টা একটা দুর্ঘটনা। প্লিজ সব ভুলে যাও। তুমি যাবে কিন্তু।
আবার উত্তর এলঃ হা আমি যাবো, কিন্তু তোমায় আমার সাথে মেসেজ এ কথা বলতে হবে কিন্তু।
রাজু উত্তর দিলঃ ঠিক আছে খুব সাবধানে যাও। তুমি পৌঁছে যাও তারপর তোমার সাথে আমি মেসেজ এ কথা বলছি। বাই।
রাজু মনে মনে ভাবতে লাগলো, তিলোত্তমা যেভাবে পটে যাচ্ছে মাত্র দুদিনের মধ্যেই ওর সতিছিদ্র ও ফাটাবেই। আর এতে কোনও ভুল নেই মানব বা অভিষেক রা করলে ঠিক আর রাজুরা করলেই ভুল। রাজু তিলত্তমার পরের মেসেজ এর জন্য ওয়েট করতে লাগলো। হয়ত ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই নতুন কোনও মেসেজ এসে যাবে।
এদিকে সুবীর বাবু প্রায় ১ ঘণ্টা হয়ে গেলো ঘরে ফিরে এসেছেন। উনি চা বা জলখাবার চাওয়ার আগেই মালতী দেবী সব কিছু ওনার হাতের কাছে নিয়ে চলে এসেছেন। বউ এর এই অতি স্বামী প্রেম দেখে সুবীর বাবু যতবার ই নিজের বউ এর দিকে তাকিয়েছেন মালতী দেবী শুধু মুচকি হেসেছেন। সুবীর বাবু এই হাসির মানে বোঝেন। উনি একবার নিজের ব্যাগ টা হাতড়ে দেখলেন, না কনডম বা ভিয়াগ্রা কিছুই নেই। অর্থাৎ বাজার একবার যেতেই হবে। চিন্তার কিছু নেই। সবে তো ৭ টা বাজে। মালতী দেবী আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন আজ রূপসা পিসির বাড়ী শোবে আর তিলোত্তমা ও যেতে পারে। ব্যাস সোনায় সোহাগা সব কিছু। মিনিট ৫ পর তিলোত্তমা এগিয়ে এসে বলে মা আমি চললাম পিসির বাড়ী। মালতী দেবী মেয়েকে গেট অবধি ছাড়তে যাওয়ার সময় একবার পেছন ঘুরে সুবীর বাবুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। সুবীর বাবু এই হাসির মানে বোঝেন।
রাজু হাঁটতে হাঁটতে একদম বাজারের ভেতর ঢুকে গেলো। ওকে যেতে হবে নরেন বাবুর দোকানে। এই নরেন বাবুর দোকানেই ও কাজ করে। নরেন বাবুর ইলেক্ট্রিক গুডস সাপ্লাই করার দোকান আছে। রাজু এই সব গুডস সাপ্লাই দেখভাল করে ও সমস্ত টাকা হিসেব করে এনে নরেন বাবুর হাতে দেয়। এভাবে মাসে ২০০০ টাকা ও ইনকাম করে নেয়। খারাপ কাজ নয়, সারাদিন মালতী সুন্দরীর শরীর টা ভোগ করার পর একটু সময় বাচিয়ে মাল গুলো দেখে নেওয়া আর টাকা পৌঁছে দেওয়া ব্যাস এতটুকু। আজ মাসের শেষ আজ হয়ত টাকাটা হাতে পেয়ে যাবে। আর রাজু জানে মোবাইল এ ব্যাল্যান্স ভরিয়ে রাখা উচিৎ কারন আজ যতদূর সম্ভব অন্তত একবার তিলত্তমার ফোন বা এসএমএস আসবেই। টাকা চাইতে গেলে এত গালাগালি খেতে হয় যে ওর টাকা চাইতে ভালো লাগেনা। যাই হোক ভয়ে ভয়ে ও নরেন বাবুর দোকানে ঢুকে গেলো। ওকে দেখা মাত্র নরেন বাবু চেঁচিয়ে উথলেন শালা হারামি এই সন্ধে বেলা তোর সময় হোল এখানে আসার। সারাদিন কি করছিলি। রাজু কিছু উত্তর দেওয়ার আগেই নরেন বাবু হেসে উঠে হথাত বলে উথলেন
নরেন বাবুঃ আরে মানব বাবু যে, কি সৌভাগ্য আমার। এতদিন পর আমার এই গরিবশালায়। এই রাজু দাদাকে একটা চেয়ার দে।
মানব মিত্রঃ সব বলছি আগে এক গ্লাস জল খাওয়াও দেখি।
এবার আর রাজু নরেন বাবুকে কিছুই বলতে দিলনা। নিজে বোতল থেকে জল ঢেলে গ্লাস টা মানব বাবুকে এগিয়ে দিলেন। এক ঢোকে জলটা খেয়ে নিয়ে উনি উত্তর টা দিলেন
মানব বাবুঃ আর বলবেন না। কতকরে বললাম আমায় ছেড়ে দিতে, কিছুতেই শুনল না। আমাকেই দাড় করাল। আমি কতকরে বললাম দাদা আমি ব্যবসায়ী মানুষ। এইসব রাজনীতি আমার কাজ নয় অন্য কাউকে দাড় করান। কিছুতেই শুনল না।
নরেন বাবুঃ আরে কি বলছেন দাদা। আপনি তাহলে আমাদের কাউন্সিলার হতে চলেছেন। কি সৌভাগ্য আমার। এই রাজু যা ১০০০ টাকার মিষ্টি নিয়ে আয়। দাদাকে আর পুরো বাজারকে মিষ্টি মুখ করা। ওহ এতদিনে নিজের লোক পেলাম কাউন্সিলার হিসেবে।
এবার রাজু ভালো করে ওপর থেকে নিচ অবধি একবার দেখে নিল এই মানব মিত্র নামের মানুষ টাকে। কত অপবাদ শুনেছে এর নামে। একবার কোনও মেয়ের দিকে নাকি এর চোখ পড়লে যতক্ষণ না তার সাথে খাটে শুতে পারছে এর রাতে ঘুম আসেনা।
মানব বাবুঃ আরে না একদম নয়, আমার এমনিতেই সুগার। আগে জিতি তারপর মিষ্টি নয় হুইস্কি আর দেশী মুরগীর মাংস খাওয়াব। ঠিক আছে একবার টিভি টা খোলো দেখি। কিছুক্ষনের মধ্যেই হয়ত ঘোষণা হয়ে যাবে।
রাজু সাথে সাথে টিভি টা খুলে দিল, হা একদম সঠিক খবর। এবারে এখান থেকে ভোটে দারাচ্ছেন মানব বাবু, বীপরিতে যারা আছেন তারা নগণ্য। অর্থাৎ জিত একেবারে পাক্কা।
নরেন বাবুঃ দাদা আমার পাশের ওই জায়গা টা নিয়ে বহুদিন ধরে ঝামেলা চলছে, এবার একটু মুখ তুলে দেখুন প্লিজ।
মানব বাবুঃ আরে দেখব দেখব। আগে আমায় একটা খবর দাও তো।
বলেই একবার রাজুর দিকে কটমট করে দেখল।
নরেন বাবুঃ ও রাজু, আমার খুব বিশ্বস্ত। খুব কাজের ছেলে। ওকে বিশ্বাস করুন।
মানব বাবুঃ আচ্ছা আমাদের মনা মানে মনোজ কে দেখলাম কাল বিকেলে। ও কি করে কোথায় থাকে এখন?
নরেন বাবুঃ (একটু ফিস ফিস করে) মনা না মনার বউ কার কথা জানতে চাইছেন?
মানব বাবুঃ (আবার রাজুর দিকে তাকিয়ে) তুমি সব ই বোঝো। কি ব্যাপার বলত ওই ছেলে ওরকম একটা মাল জোগাড় করল কি করে। আর মনা কি করছে এখন?
নরেন বাবুঃ মনা একটা ছোট দোকান করেছে পান বিড়ি এসব বিক্রি করে। খুব অভাবের সংসার। (আবার ফিসফিস করে) দাদা আপনি একটা চেষ্টা করতে পারেন।
মানব বাবুঃ আরে ধুর আর কি মানায় এসব। বয়স হয়েছে। ঠিক আছে আমি এবার যাই, ওবাড়ী থেকে ঘুরে আসি একবার।
নরেন বাবুঃ (খুব হেসে) এই যে বললেন বয়স হয়েছে। আমি কিন্তু পুরো বাজার কে বলে দিয়েছি বউদি আর মেয়েদের থেকে কোনও টাকা না নিতে।
মানব বাবু হেসে বেরিয়ে গেলেন। মানব বাবু চলে যেতেই রাজুর দিকে তাকিয়ে নরেন বাবু বলে উথলেন
নরেন বাবুঃ বুঝলি রাজু, সব ই বিজনেস। এই বিজনেস সেন্স টা একবার তোর মধ্যে ঢুকে গেলে পুরো পৃথিবী তোর মুঠোয়। দেখ এই হারামী টাকে আমার ই কলেজের সিনিয়র। শালা ক্লাস ৮ এ বার বার ফেল করে পরাশুনা ছেড়ে দিল। আর আমি বিকম কমপ্লিট করেও এই বালের দোকানে বসে আছি। ওই একি কলেজ এ ওর ই ক্লাস এর ১ম হত সুবীর বাবু। শালা এত ভালো লোক অথচ কি অবস্থা। ছার এসব বাইরে না বলাই ভালো।
রাজুঃ কেন দাদা ওনার কি প্রবলেম, শুনেছি তো বিশাল গবেষক। তাহলে?
নরেন বাবুঃ বলিস না যেন কাউকে। শালা এক নাম্বারের হারামি এই মানব মিত্র টা। সুবীর বাবু ছোট থেকেই পরাশুনায় খুব ভালো ছিলেন, উচ্চাশা ছিল। কিন্তু কিসমত ই ফুটো কড়ির মতো ওর। বিএসসি ও এমেসসি দুটোতেই গোল্ড মেডালইসট। কলেজ এর প্রফেসর রা বললেন ছোট খাটো চাকরী না করে গবেষণা করতে। ভর্তি হলেন পিএইচডি তে। সেসময় কোনও টাকা পাওয়া যেত না গবেষণা করে। হথাত একদিন মা মারা গেলো। বাড়ীর একমাত্র ছেলে, দিদিদের বিয়ে হয়ে গেছিল তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলতে হোল। ওরা থাকতো উত্তর কলকাতার এক ভাড়া বাড়ীতে, ওখানে বউ কে নিয়ে থাকা সম্ভব নয়। যে বারীটায় ওরা থাকে সেই জমি টা আসলে মানবদের। ও লং টার্ম বিনিয়োগ করতে জানে। ও জানত এই জমির বদলে ও বিশাল কিছু ফেরত পাবে। এখন মালতী দেবী কে যা দেখিস টা কিছুই নয়। বিয়ের সময় অপরুপ সুন্দরী ছিল। প্রথম দরশনেই মানবের ওর ওপর নজর পড়ে যায়। সুবীরদের ফামিলি টা মানব ই টানত। বিয়ের একমাস পর বেচারা সুবীরের বাবা ও মারা যায়। আর তার সাথে সাথে শুরু হয় যখন তখন সুবীরের বাড়ীতে মানবের যাতায়াত। কতটুকুই বা বাড়ী টা ছিল সেইসময়। একটা শোয়ার ঘর, একটা বারান্দা ও একটা পায়খানা। মানব মাঝে মধ্যেই ওখানে গিয়ে থাকা শুরু করে। এর চেয়ে বেশি আমি কিছু জানিনা। সুনেছি মালতী দেবী নাকি আসলে মানবের রক্ষিতা। এও শুনেছি ওই যে দুটো মেয়ে তিলোত্তমা আর রূপসা ওরা আসলে মানবের ই সন্তান। হয়ত এতটাও ঠিক নয়, কিন্তু কিছুটা হলেও তো সত্যি।
রাজু কোনও উত্তর দিলনা। শুধু চুপ করে বসে সব ভাবতে লাগলো। নরেন বাবু রাজুকে ওখানে বসতে বলে নিজে একটু বাইরে গেলেন। হথাত রাজুর মোবাইল এ একটা মেসেজ এল।
হাই আমি তিলোত্তমা। রাজুদা তুমি আমার জন্য যা করেছ টা কোনদিন ভুলব না আমি। আমরা কি বন্ধু হতে পারি। দয়া করে আর ওই ধনী গরিবের তত্ব টা দেবেনা। আর যদি মনে করো আমি খুব খারাপ তাহলে উত্তর দিয়না।
রাজু ঠিক করল উত্তর দেবে কারন মাছ জালে ধরা পরেছে। না তিলোত্তমা আমি তোমায় খারাপ মেয়ে মনে করি না। ঠিক আছে আজ থেকে আমরা ভালো বন্ধু। কিন্তু তোমায় আমার সব কথার সত্যি উত্তর দিতে হবে।
কিছুক্ষনের মধ্যেই উত্তর এল। ঠিক আছে সব সত্যি বলব। জানতো আমরা যমজ বোন। আমার বোন রূপসা আজ বাড়ী আসবেনা ও পিসির বাড়ী হেদুয়া তে গেছে। পিসি আমাকেও দেকেছে আমি ভাবছি যাবো কিনা। আসলে আজ যা হোল, আমি খুব আপসেট।
রাজু উত্তর দিলঃ না তুমি ও যাও। পিসি নিজে দেকেছেন যখন যাওয়া উচিৎ। আজ যা হয়েছে টা একটা দুর্ঘটনা। প্লিজ সব ভুলে যাও। তুমি যাবে কিন্তু।
আবার উত্তর এলঃ হা আমি যাবো, কিন্তু তোমায় আমার সাথে মেসেজ এ কথা বলতে হবে কিন্তু।
রাজু উত্তর দিলঃ ঠিক আছে খুব সাবধানে যাও। তুমি পৌঁছে যাও তারপর তোমার সাথে আমি মেসেজ এ কথা বলছি। বাই।
রাজু মনে মনে ভাবতে লাগলো, তিলোত্তমা যেভাবে পটে যাচ্ছে মাত্র দুদিনের মধ্যেই ওর সতিছিদ্র ও ফাটাবেই। আর এতে কোনও ভুল নেই মানব বা অভিষেক রা করলে ঠিক আর রাজুরা করলেই ভুল। রাজু তিলত্তমার পরের মেসেজ এর জন্য ওয়েট করতে লাগলো। হয়ত ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই নতুন কোনও মেসেজ এসে যাবে।
এদিকে সুবীর বাবু প্রায় ১ ঘণ্টা হয়ে গেলো ঘরে ফিরে এসেছেন। উনি চা বা জলখাবার চাওয়ার আগেই মালতী দেবী সব কিছু ওনার হাতের কাছে নিয়ে চলে এসেছেন। বউ এর এই অতি স্বামী প্রেম দেখে সুবীর বাবু যতবার ই নিজের বউ এর দিকে তাকিয়েছেন মালতী দেবী শুধু মুচকি হেসেছেন। সুবীর বাবু এই হাসির মানে বোঝেন। উনি একবার নিজের ব্যাগ টা হাতড়ে দেখলেন, না কনডম বা ভিয়াগ্রা কিছুই নেই। অর্থাৎ বাজার একবার যেতেই হবে। চিন্তার কিছু নেই। সবে তো ৭ টা বাজে। মালতী দেবী আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন আজ রূপসা পিসির বাড়ী শোবে আর তিলোত্তমা ও যেতে পারে। ব্যাস সোনায় সোহাগা সব কিছু। মিনিট ৫ পর তিলোত্তমা এগিয়ে এসে বলে মা আমি চললাম পিসির বাড়ী। মালতী দেবী মেয়েকে গেট অবধি ছাড়তে যাওয়ার সময় একবার পেছন ঘুরে সুবীর বাবুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। সুবীর বাবু এই হাসির মানে বোঝেন।