11-10-2019, 12:06 AM
আমি বললাম, ‘আবার রান্না করা কেন? চল বাইরে খেয়ে আসি। আজকেই তো চলে যাবো।‘ স্নেহা জেদ করলো, ‘না কাকু আজ যেয়ো না। কাল যাবে তুমি।‘ বলে আমার থাইয়ের উপর মাথা রেখে শুয়ে পড়ল। আমি স্নেহার মাথায় হাত বুলতে বুলতে বললাম, ‘নারে সোনা, একদিনের ছুটি নিয়ে এসেছি। নাহলে বস আবার রাগ করবে। আবার তো পড়ে আসবো।‘ স্নেহা রাগ করে গুম হয়ে থাইয়ের উপর শুয়ে রইল। ওর টপটা পেটের উপর উঠে গেছে। পাতলা পেট দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু ওখানকার চামড়া ওইরকম খসখসে কেন? আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘ওটা কিরে তোর ওখানকার চামড়া ওরকম খসখসে কেন রে?’ স্নেহা বলল, ‘ওমা তুমি জানো না?’ আমি বললাম, ‘নাহ, আমাকে তোর মা বা বাবা কেউ বলে নি। অবশ্য বলবেই বা কি করে। তোর জন্মের আগে থেকে তো আমাদের আড়ি হয়ে গেছিল।‘স্নেহা বলল, ‘ছোটবেলায় আমার পেটে গরম জল ফেলে দিয়েছিল মা।‘ আমি অবাক হয়ে বললাম, ‘তাই নাকি? কিভাবে?’ স্নেহা উঠে পেটের উপর আরেকটু টপটা তুলে বলল, ‘হ্যাঁগো, আমি নাকি রান্নাঘরে শুয়ে ছিলাম মানে মা শুইয়ে রেখেছিল যাতে বিছানা থেকে না পড়ে যাই। মা সাঁড়াশি দিয়ে গ্যাস থেকে গরম জলের পাত্র নামাতে গিয়ে সাঁড়াশিটা স্লিপ করে আর বাটি উল্টে সারা গরম জল আমার গায়ে।‘ আমি দৃশ্যটার বীভৎসতা চিন্তা করে শিউরে উঠলাম। জিজ্ঞেস করলাম, ‘তখন তোর কত বয়স?’ স্নেহা ঠোঁট উল্টে চিন্তা করে বলল, ‘কত আবার, খুব বেশি হলে ৮/৯ মাস হবে হয়তো।‘ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘তারপর?’ স্নেহা বলল, ‘তারপর আবার কি। ডাক্তার, হাসপাতাল এইসব। আমার জানো তো অন্নপ্রাশন হাসপাতালে হয়েছিল। প্রায় ৩ মাস পর আমি হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েছিলাম।‘ আমি কৌতূহল নিয়ে বললাম, ‘দেখি কাছে আয়। পেটটা একটু ছুঁয়ে দেখি।‘ স্নেহা ওইরকম টপ তোলা অবস্থায় আমার কাছে এলো। আমি হাত বুলিয়ে ফিল করলাম স্কিনটা কেমন মাছের আঁশ ওঠার মত। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কতটা এফেক্ট হয়েছে?’ স্নেহা উত্তর দিল, ‘এই বুকের নিচের থেকে কোমর পর্যন্ত।‘ আমি প্রশ্ন করলাম, ‘ডাক্তার কি বলছে? ঠিক হবে না স্কিন?’ স্নেহা জবাব দিল, ‘বলেছিল তো মালিশ করতে করতে ঠিক হয়ে যাবে। হয়েছে একটু। জানি না শেষ পর্যন্ত কতটা ঠিক হবে।‘ এইসময় তনু ঢুকল ঘরে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘স্নেহার যে এই ব্যাপারটা ঘটেছে বলিস নি তো আগে?’ তনু হাত উল্টে বলল, ‘অবাক কাণ্ড। বলবো কি করে তোকে? তার আগেই তো কাটকুট হয়ে গেল আমাদের।‘ আমি দেখলাম ঠিক কথা। বর্ষাও বোধহয় জানে না কেসটা। আমি স্নেহাকে বললাম, ‘যে মলমটা দিয়েছে ডাক্তার লাগানোর জন্য ওটা কিন্তু মনে করে লাগাস। ভুলিস না। পড়ে বিয়ে হবে না দেখবি।‘ স্নেহা ফুট করে হাসল। আমি বুঝলাম না কেন ও হাসল। এরপরে আমরা স্নান করে জামা কাপড় পড়ে আবার হোটেলে গেলাম খেতে। খেয়ে এসে একটু বিশ্রাম নিয়ে আমি বেড়িয়ে পরলাম আমার ঠিকানার উদ্দেশ্যে। দুজনকেই কথা দিয়ে এলাম আবার আসবো বলে। স্নেহা বিশেষ করে বলে দিল আমি যেন ওকে ফোন করতে না ভুলি। ফোন করেই বেশ কয়েক মাস কেটে গেল। এর মধ্যে আমি একবার বাড়ীর থেকে ঘুরেও এলাম। আসবার সময় দুদিন আগে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এলাম। তনুকে বললাম, ‘দ্যাখ আমি দুদিন আগে বাড়ি থেকে বেরচ্ছি। আমি পুনে হয়ে যাবো। তোরা যদি পারিস পুনেতে এসে আমার সাথে দেখা কর। দুদিন একটা হোটেলে থেকে তারপর আমি সাইট ফিরে যাবো। তোরা বাড়ি চলে যাবি।‘ তনু তক্ষুনি কোন ডিসিশন নিল না। বলল, ‘স্নেহা কলেজ থেকে ফিরলে তবে বলতে পারবো।‘ আমি বেড়িয়ে পড়েছি। একান্তই যদি ওরা না আসতে পারে তাহলে আমি সাইটেই চলে যাবো এই চিন্তা করে রেখেছি মাথায়। কিন্তু যেতে যেতে ফোন এলো স্নেহার। আমি ধরতে স্নেহা বলল, ‘পুনেতে কিন্তু একটা ভাল হোটেলে রাখবে বলে দিলাম। মায়ের সাথে কথা বোলো।‘ আমাকে কিছু বলতে দেবার আগেই স্নেহা মাকে ফোন দিয়ে দিল। তনু বলল, ‘শোন আমরা যাচ্ছি। আমি আর স্নেহা। তুই বলে দিবি কখন বেরবো আর কোথায় দেখা করবো, কেমন?’ আমি ওকে সব বুঝিয়ে দিলাম কিভাবে আসতে হবে, কোথায় দেখা করতে হবে এবং কখন। একটা কনট্রাকটরকে ডেকে বলে দিলাম পুনেতে একটা ভালো হোটেল বুকিং করতে। সে ব্যাটা হেসে বলল, ‘কেয়া বাত হ্যাঁয় সাহেব, কিসিকো বুলায়া কেয়া?’ আমি বললাম, ‘তুমসে মতলব? যো বাতায়া ওহি করো। জ্যাদা বাত করনেকা জরুরত নেহি সমঝে?’ সে বলল, ‘জি সমঝ গায়া।