11-10-2019, 12:06 AM
সব তো খুলে বসে রয়েছ।‘আমি অন্যদিকে চোখ ঘুরিয়ে নিলাম। যাতে তনু বিব্রত বোধ না করে। তনু নিজেকে ঢেকে আমাকে বলল, ‘নে এবার দেখতে পারিস। বাব্বা, মেয়ের শাসনে আর টেকা যাবে না দেখছি। চল তো দীপ, তোর সাথে চলে যাই। থাকুক ও এখানে পড়ে একা। কাকে শাসন করে দেখি।‘ স্নেহাও মায়ের মুখে মুখে উত্তর দিল, ‘যাও, তবে একা যাও। কাকুকে নিয়ে যেও না। দুদণ্ড কাকু তোমার সাথে থাকতে পারবে না।‘ তনু বলল, ‘অ্যাঁ, থাকতে পারবে না। তুই কি করে জানলি কাকু আমার সাথে থাকতে পারবে না।‘ স্নেহা জবাব দিল, ‘আমি জানি থাকতে পারবে না। জিজ্ঞেস করো কাকুকে?’ তনু আমার দিকে ঘুরে বলল, ‘কিরে দীপ, তুই নাকি আমার সাথে থাকতে পারবি না? ঠিক কি ভুল?’ আমি হতাশ হয়ে বললাম, ‘তোদের ঝগড়ায় আমাকে টানছিস কেন? নিজেরা ঝগড়া করছিস কর না।‘ তনু ঠোঁট উল্টে কপট রাগ দেখিয়ে বলল, ‘ও, তাহলে তুই উত্তর দিবি না?’ স্নেহা আমাকে বাঁচাবার জন্য জবাব দিল, ‘কাকু কি বলবে? আমি তো বলে দিচ্ছি। তনু ধরফর করে বিছানা থেকে নেমে বলল, ‘ঠিক আছে। না থাকলে নাই থাকুক। আমি চললাম।‘ বলে হনহন করে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। আমি স্নেহাকে বললাম, ‘দিলি তো মায়ের মুড খারাপ করে।‘ স্নেহা তুরি দিয়ে বলল, ‘আরে না না। মায়ের ওটা ন্যাকামো। ঠিক ফিরে আসবে।‘ তারপর চেঁচিয়ে বলল, ‘ভালো করে চা বানিয়ে নিয়ে এসো।‘ তনু বাইরে থেকে জবাব দিল, ‘চা খেতে হয় নিজে বানিয়ে নিয়ে খা। আমাকে বলবি না। আমি এখন থেকে একা থাকবো।‘ স্নেহা এইঘর থেকে মাকে ভেঙ্গিয়ে বলল, ‘ওমা রে, আমি এখন থেকে একা থাকবো রে।‘ বলে আমাকে চোখ মেরে বলল, ‘দাঁড়াও একটু মস্কা লাগিয়ে আসি, নাহলে রাগটা যাবে না।‘ ও বিছানা থেকে নেমে বাইরে চলে গেল। আমি বোকার মত খাটে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম আর শুনতে লাগলাম মা আর মায়ের কথা। তনু বলছে, ‘এই স্নেহা ছাড় বলছি। তোর সাথে আর কোন কথা নয়। দুধ দিয়ে যেন সাপ পুষেছি। ছাড়লি?’ স্নেহা উত্তর দিল, ‘ছাড়বো না, আগে বোলো রাগ করো নি?’ তনু বলল, ‘উল্টোপাল্টা কথা বলবি আর রাগ করবো না?’ স্নেহার জবাব, ‘আরে আমি তো ইয়ার্কি মারছিলাম। তুমি কি গো, ইয়ার্কিও বোঝ না?’ তনুর ঝাঁজালো উত্তর, ‘’না ওই ধরনের ইয়ার্কি আমার ভালো লাগে না। আর তোর কাকুটা কিরকম দ্যাখ, আমার কথায় সায় দিল না?’ এইরে বোকাচোদা আমাকে নিয়ে কেন আবার? বেশ তো তোরা কথা বলছিলি। আমি এইঘর থেকে চেঁচিয়ে বললাম, ‘অ্যাই, আমাকে নিয়ে কোন কথা নয়। আমি তোদের মধ্যে নেই।‘ ওরা সব হেসে উঠলো। আমি একটু স্বস্তি পেলাম যাক বাবা শান্তি এলো তবে। স্নেহা বলল ওর মাকে, ‘যাও না দীপ কাকু কখন থেকে উঠে বসে আছে। একটু চা করে নিয়ে আসো।‘ তনু জবাব দিল, ‘তুই যা কাকুর কাছে। আমি চা করে নিয়ে আসছি।‘ কিছুক্ষণ পর স্নেহা ঘরে ঢুকে বলল, ‘দেখলে কেমন ম্যানেজ করলাম। হু হু বাবা, শান্ত হবে না মানে?’ আমি চোখ পাকিয়ে বললাম, ‘আমাকে জড়িয়ে ছিলি কেন তোদের মধ্যে?’ স্নেহা খাটে উঠতে উঠতে বলল, ‘আমি বললাম না মা? বাজে কথা বোলো না একদম।‘ এর কিছু পড়ে ট্রেতে বিস্কুট আর চা নিয়ে এলো তনু। সবাইকে দিয়ে খাটে উঠে বসল। আমরা অনেকক্ষণ ধরে আড্ডা মারলাম। স্নেহা জোর করাতে আমি আমার ছোটবেলার কথা বলতে লাগলাম স্নেহাকে। শেষে ও বলল, ‘তুমি তো খুব ভালো ছেলে ছিলে দেখছি।‘ তনু মুখ বেঁকিয়ে বলল, ‘ভালো ছেলে? তোর বাবার মুখ থেকে শুনবি কি খচ্চর ছিল তোর কাকু।‘ স্নেহা হাততালি দিয়ে বলে উঠলো, ‘বোলো না কাকু বোলো না, কি রকম ছিলে? মা একটু বোলো না।‘ তনু আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘কিরে বলবো নাকি তোর কেলোর কীর্তি?’ আমি মুখ ব্যাজার করে বললাম, ‘যদি মনে হয় বলবি তো বলবি।‘ আমার ভয় হোল এদের চরিত্র বোঝা ভার। কে জানে আবার শুরু করে কিনা তনু। তনু বলল, ‘না এখন না। পড়ে বলবো।‘ স্নেহাও দেখলাম আর জোর করলো না, শুধু বলল, ‘ঠিক আছে যদি না বলতে চাও তো না বলবে।‘ আমাদের চা খাওয়া শেষ। তনু উঠে পড়লো এই বলে, ‘না বাবা, আর বেশি বসা যাবে না। রান্নার দেরি হয়ে যাবে।