26-09-2019, 01:58 PM
(This post was last modified: 26-09-2019, 02:08 PM by Newsaimon85. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
পর্ব ৩৪
(এই পর্ব পড়ার আগে আগের পর্বটা পড়ে নিলে ভাল, কারণ এই পর্বের ঘটনাপ্রবাহ আগের পর্বের সাথে চলমান )
সাহস জিনিসটা আপেক্ষিক। এক ব্যক্তি অনেক জায়গায় সাহসী হলেও একটা নির্দিষ্ট জায়গায় দেখা গেল ভীতু। আবার উল্টাও সত্য, অনেক জায়গায় ভীতু মানুষ দেখা গেল একটা স্পেসিফিক জায়গায় সাহস দেখিয়ে বসল। আমি আসলে সাহসী বা ভীতু কোন দলেই আসলে পরি না। বেশির ভাগ মানুষ পড়ে না। তারা অবস্থা ও যার যার সক্ষমতা অনুযায়ী সাহসী হয় আবার ভীতু হয়। গল্প উপন্যাসেই খালি সবর্দা সাহসী আর ভীতুদের দেখা মেলে। আমি বেশির ভাগ মানুষের দলে। পরিস্থিতি আমাদের সাহসী অথবা ভীতু করে তোলে। জুলিয়েটের সাথে ঐদিন ক্লাসের ভিতরের ঘটনার পরের কথা গুলো মাথায় ঘুরছিলো। জুলিয়েট এমনি, অগ্রাহ্য করা যায় কিন্তু অস্বীকার করা যায় না। তাই যতই মাথা থেকে তাড়াতে চেষ্টা করছি ততই মাথায় ঘুরছে সাহস দেখাতে হবে। জুলিয়েট এর আগেও একবার ঠিক রাস্তা দেখিয়েছিল। একদম লক্ষ্য বলে না দিলেও ওর সেই ফরচুন ফেবারস দ্যা ব্রেভ অন্তত মিলির সাথে আমার কর্মকান্ডের সূচনা করেছিল। এইবার জুলিয়েটের খোচা আসলে ভিতরে ভিতরে আমাকে তাতিয়ে রেখছিল। তবে তেতে থাকলেও কিছু করার ছিল না কারণ কি করব ভেবে উপায় পাচ্ছিলাম না। সাহস আর বুদ্ধি একসাথে না হলে অনেক ক্ষেত্রে খালি সাহসে কোন কাজ হয় না। আমার তখন সেই অবস্থা। সাহস দেখানোর জন্য মরিয়া তবে কোথায় সাহস দেখানো যায় সেটাই বুঝছি না। তবে কয়েকদিনের মধ্যে ঘটনাপ্রবাহে সেই সুযোগ এসে গেলো।
রাখি বাধার পর থেকেই গ্রুপের সবাই বেশ মজা নিচ্ছিল। সত্য কথা হলো গ্রুপে অন্যরা একে অন্যকে পচালেও আমাকে পচানোর সুযোগ পায় কম কারণ কথার পিঠে পালটা কথা বলাতে আমি যথেষ্ট পারঙ্গম। আর সহজে না ক্ষেপার কারণে সুযোগ আসত আর কম। এই রাখি নিয়ে একবার ক্ষেপার পর সবার ধারণা হল এই হলো আমাকে ক্ষেপানোর মোক্ষম অস্ত্র। ক্লাসের সবার সামনে রাখি নিয়ে যাতে না বলে সেই হুশিয়ারির কারণে ক্লাসের সবার সামনে না বললেও আমরা যখন নিজেরা নিজেরা থাকি তখন ওরা ক্ষেপানোর সুযোগ পেলে ছাড়ে না। দেখা গেল বসে গল্প করছি, হয়ত মিলি ঠিক তখনি হাজির হলো আর হাজির হয়েই বলবে ভাইয়া কি খবর। আমি বললাম ভাইয়া কিরে? কে ভাইয়া? ফারিয়া তখন তাল ধরে বলবে কেন আমাদের ভাইয়া। রাখি পড়িয়েছি, সন্দেহ আছে। আমি তখন যদি বলি আমি তোদের ভাইটাই হতে পারব না তখন দেখা যাবে জুলিয়েট বলে বসল কেন তাহলে সাইয়া হতে চাস নাকি। এমনকি সাদিয়া পর্যন্ত হাসতে হাসতে বলল, মাহির নতুন নাম দেওয়া যায় এখন মাহি সাইয়া। হাসতে হাসতে বাকিদের অবস্থা খারাপ। আমি অবশ্য ক্ষেপে আগুন কিন্তু বেশি রাগ দেখানো যাচ্ছে না কারণ এতে আর বেশি ক্ষেপাবে এরা। আরেকদিন সাদিয়ার ক্লাস নোটের খাতা কে বাসায় নিয়ে যাবে এটা নিয়ে সুনিতির সাথে তর্ক হচ্ছিল। আমার কথা হচ্ছে আমাকে আজকের জন্য দিয়ে দে আমি ফটোকপি করে কালকে সকালেই দিয়ে দিব। সুনিতির কথা হচ্ছে ও পুরা খাতা নিজে হাতে কপি করে রাখবে। ওর সময় লাগবে দুই দিন কিন্তু ও আমাকে আগে দিতে ইচ্ছুক না। তর্কের এক পর্যায়ে সুনিতি বলল খাতা আমাকে দে নাহলে আমি কিন্তু চিতকার দিব। আমি বললাম কি বলে চিতকার দিবি? সুনিতি বলে ভাইয়া বলে চিতকার দিব। গ্রুপের সবচেয়ে মাইল্ড ভদ্রলোকের এই অবস্থা দেখে আমার পুরো খাবি খাবার যোগাড়। তবে চোরের দশদিন হলে গৃহস্থের একদিন। সুযোগ তাই এসে গেল।
একদিন বিকাল বেলা আমি আর জুলিয়েট হেটে হেটে শাহবাগের দিকে যাচ্ছি। আজিজের পাশ থেকে রিক্সা নিয়ে বাসায় যাবে জুলিয়েট। ভাষা ইনিস্টিউটের সামনে থেকে সাদিয়া রিক্সা নিল হলের দিকে আর মিলির হল এখানেই, ও হলে ঢুকে গেল। আমি আর রোকেয়া হলের গেইট থেকে লাইব্রেরির সামনে দিয়ে শাহবাগের দিকে হাটা দিলাম। লাইব্রেরির সামনে এসে দেখি আমাদের ক্লাসের কয়েক জন তাস খেলছে। আমাদের দেখে ডাক দিল। কথায় কথায় জুলিয়েট জিজ্ঞেস করল এই যে তোরা সারাদিন লাইব্রেরির সামনে এই যে তাস খেলিস বোরিং লাগে না। ওরা বলল আরে না। খেলায় হার জিতের যে টেনশন এটার সাথে অন্য কিছুর কি তুলনা হয়। জুলিয়েট জিজ্ঞেস করল খালি এই হার জিতের জন্য সারাদিন ধরে খেলা? এরশাদ বলল, আরে খালি এটা না। খেলায় হারলে কিছু না কিছু দিতে হবে। জুলিয়েট জিজ্ঞেস করল কি? বলল ধর এই দান খেলার আগে ঠিক হইছে যে হারবে শেষ পর্যন্ত ওরে আমাদের বিকালের নাস্তা খাওয়াতে হবে। কথায় কথায় বের হলো সেদিনের হারু পার্টি আজমল। তাই যারা খেলছিল ওদের সহ আমাদের দুই জন কে নাস্তা করাল আজমল। নাস্তা খেতে খেতে জুলিয়েট বলল, কিরে কি বুঝলি? আমি বললাম বুঝার কি আছে। জুলিয়েট বলল হারলে কিছু না কিছু দিতে হয়। আমাকে কি দিবি? আমি বললাম কোন খেলা। জুলিয়েট বলল কেন সাহসের খেলা। মনে নাই সেইদিন ক্লাসে কি হল ভাইয়া। আমি মুচকি হেসে বললাম তা কি চাস। ও বলল যাওয়ার সময় একটা চকবার খাওয়াইস। আমি বললাম ঠিক আছে। এটা বলতে বলতে মাথার ভিতর একটা আইডিয়া আসল। আমি বললাম একটু দাড়া। আমি টয়লেট থেকে আসছি। এই বলে লাইব্রেরির ভিতর টয়লেটে গেলাম। হারা জিতা আর খেলা শেষে জয়ী পক্ষের কে কিছু দেওয়ার আইডিয়া থেকে মাথায় আসল সাহস দেখানোর। দেখা যাক কি হয়। আমার আন্ডারওয়ার খুলে পকেটে নিলাম। লাইব্রেরির থেকে বের হয়ে আইসক্রিম খাওয়া শেষে দুইজন মিলে হেটে হেটে শাহবাগ পর্যন্ত গেলাম। আমি বললাম জুলিয়েট তুই সাহসের খেলায় জিতে খালি আইসক্রিম খেতে চাইলি? জুলিয়েট বলল আর কিছু চাইলে দেওয়ার মত সাহস আর সাধ্য তোর নেই। আমি বললাম তাই? তাহলে তো আমাকেই ঠিক করতে হয় কি দিতে হয়। জুলিয়েট বলল দেখি কি দেস। আমি বললাম দেখ তাহলে, এইবলে পকেট থেকে আন্ডারওয়ার বের করে জুলিয়েট কে দিলাম। প্রথমে জুলিয়েট বুঝল না কি দিচ্ছি, হাতে নিয়ে দেখতেই বুঝল কি জিনিস। বলল কিরে মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি। আমি বললাম না ঠিক আছে তবে তোর সাহসের পুরষ্কার দিলাম। মনে আছে তুই একবার আমাদের রাতের চ্যাটের সময় বলেছিলি ছেলেরা যদি মেয়েদের আন্ডার গার্মেন্টেসের প্রতি ফেসিনেটেট হতে পারে তাহলে মেয়েরাও ছেলেদের আন্ডার গার্মেন্টেরসের প্রতি ফেসিনেটেট হতে পারে। পুরাটাই হরোমোনাল ব্যাপার, ফেরোমেনোন। তুই তো আর সাহস করে কারো কাছে চাইতে পারবি না তাই আমি দিয়ে দিলাম। এটাই তোর সাহসের পুরষ্কার। জুলিয়েট প্রথমে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে পরে আস্তে কতে ওর ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলল আন্ডারওয়ার টা। সাহসের খেলায় যে একদফা চমকে দিতে পারলাম এই ব্যাপারে সন্দেহ রইলো না।
সেদিন রাতে চ্যাটে নক দিল জুলিয়েট। বলল লাইভে আয়। লাইভে আসতে দেখলাম পাজামা আর গেঞ্জি পড়ে আছে। বলল কিরে খুব সাহস বেড়েছে। মেয়েদের আন্ডারগার্মেন্টস গিফট দিস না। আমি বললাম গিফট না সাহসের পুরষ্কার। তুই বারবার বললি তুই সাহস দেখিয়েছিস আর এটা তোর কাছে খেলা। লাইব্রেরির সামনে এরশাদদের সাথে কথা বলার সময় আমার মাথায় আসল এটা খেলা হলে জিতার জন্য পুরষ্কার থাকা উচিত। এমন পুরষ্কার যাতে পরের খেলতে আগ্রহী হয় খেলোয়াড়। জুলিয়েট বলল, ওরে! তুই আবার চাস না। শয়তান, আসলে বল হ্যান্ডজব চাস। ওটাই আসল কথা। আমি বললাম ওটা তো হারু পার্টির সান্তনা। জুলিয়েট বলল তোর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তুই এখন কথায় আগের তুলনায় অনেক চালু হইছিস। কেমন করে বলছিস যেন একদম আমি জিতে গেছি দেখে আমাকে পুরষ্কার দিচ্ছিস আর তুই কিছু পাস নি। আবার আরেকবার খেলতে চাস। আমি বললাম ওটা তো আমার অংশ গ্রহণের পুরষ্কার। জুলিয়েট বলল আবার কথার চাল। আবার খেলতে চাইলে তোকে সাহস দেখাতে হবে। আমার মত। এমন কিছু করতে হবে যা সবার সামনে কিন্তু কেউ টের পাবে না। আমি বললাম সেটা পরে হবে, আগে বল আমার দেওয়া পুরষ্কার কি করছিস। জুলিয়েট এবার মুচকি হেসে বলল কোন পুরষ্কার। আমি বললাম কেন আমার আন্ডারওয়ার। জুলিয়েট বলল, আন্ডারওয়ার। হুহ। জাইংগা বল জাঙ্গিয়া। আমি হেসে বললাম তুই যখন মুখ খারাপ করিস তখন এটা শুধু তোকেই মানায়। জুলিয়েট বলল খাইছে, তুই দেখি কথায় দারুণ ওস্তাদ হয়ে যাচ্ছিস। মেয়ে পটানোর ধান্দায় আছিস নাকি। আমি বললাম কেন তোর সমস্যা আছে তাতে? জুলিয়েট বলল পটা আমার কোন সমস্যা নাই খালি আমি ডাকলে আসতে হবে। আমি বললাম কেন? বলল কেন পরের খেলা গুলোর পুরষ্কার তোর কাছ থেকে নিতে হবে না। আমি বললাম আগে কে জিতে দেখ। জুলিয়েট বলল দেখা যাবে। আমি বললাম এই পুরষ্কার কি করেছিস। বলল জাইঙ্গা কি করে? আমি বললাম পড়ে। জুলিয়েট বলল আমিও পড়ে আছি। পাওলোর কাছে অনেকবার চেয়েছি দেয় নি, বলছে ব্যাপারটা ফ্রিকি। তাই তুই দিলি ভাল হয়েছে। আমার এক বান্ধবী আছে ও সবসময় রাতে ঘুমানোর সময় ওর বয় ফ্রেন্ড থেকে নেওয়া জাইঙ্গা পড়ে ঘুমায়। এতে নাকি ঠিক জায়গায় আরাম পাওয়া যায়। আমি বললাম তুই শালা আসলেই ফ্রিকি। জুলিয়েট বলল তাই। এই বলে ও উঠে দাঁড়িয়ে আস্তে আস্তে ওর পাজামা নামিয়ে দেখাল আমার জাইংগা টা। ওর ঘুড়ে দাড়াল। ওর পাছায় টাইট হয়ে চেপে আছে। সামনে ফিরতে মনে হল সামনের যোনিদেশের রেখা যেন ফুটে উঠেছে। এইবার জুলিয়েট জাংগিয়ার উপর দিয়ে গুদের উপর দুই বার চাপড় দিয়ে বলল যা আজকের শো শেষ। এইবার ঘুমা। সুইট ড্রিম। এইবলে অফলাইন হয়ে গেল। জুলিয়েটের মুড উঠলে ভিডিও চ্যাটে অনেক কিছু করে, সে তুলনায় আজকে কিছুই না কিন্তু কেন জানি ব্যাপারটা খুব ইরোটিক। সকালে আমার পড়ে থাকা জাইঙ্গা ও পড়ে ঘুমাচ্ছে মনে হতেই মনে হল আমার বাড়ার স্পর্শ যেন কাপড়ের স্পর্শে ওর যোনিতে গিয়ে লাগছে। সে রাতে আসলেই সুইট ড্রিমস হয়েছিল। স্বপ্নে অনেকবার জুলিয়েট এসেছিল তাই।
সাহস দেখানোর সুযোগ খুজলেও পাওয়া গেল না। কেন না জুলিয়েটের মত ক্লাসের মধ্যে কিছু করার সাহস আসলে নাই অন্য কোথাও বা কি করব ভেবে পেলাম না। জুলিয়েট অবশ্য সুযোগ পেলেও বলছে কিরে ভীতু কি খবর। অন্যরা জিজ্ঞেস করছে ভীতু বলছিস কেন মাহি কে। জুলিয়েট ঘুরিয়ে উত্তর দিচ্ছে আরে অন্যরা কে কি বলবে তাতে সে রাখির ঘটনা ক্লাসে বলতে দিবে না, তাহলে ভীতু নাতো কি। এখন অন্তত ভীতু বলে মজা নিতে দে। বাকিরা না বুঝেই বলল হ্যা ঠিক কথা। আমি কিছু বললাম না কারণ অপেক্ষা করলে সুযোগ একটা না একটা আসবেই। আর জুলিয়েটের মধ্যে কম্পেটেটিভ ব্যাপারটা বেশ ভাল পরিমানে আছে। তাই ও আমার সাথে একা হয়ে পড়ে এমন কোন পরিস্থিতিতে যাচ্ছে না। ও জানে আমি পাগলের মত কিছু করব না যাতে ওর ক্ষতি হয় তবে এমন চাইছে না যাতে আমি পরের রাউন্ডে জিতে যেতে পারি। ফলে দুই জনের কেউ আর সুযোগ পাচ্ছি না সাহস দেখানোর। এর মধ্যে একদিন বিকালের ক্লাস শেষে আড্ডা জমে উঠল চারুকলায়। আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম ঢুকেই বিল্ডিংটার ছাদে। মিলি ঐদিন টিউশনিতে যায় নি, বাকি সবাই আছে। আড্ডা নানা প্রসংগ ঘুরে বেড়াতে লাগল। এর মধ্যে আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হয়ে আসছে, অন্ধকার নামছে। মশাও কামড়াচ্ছে ভাল। উপরে যে দুই একটা জুটি ছিল তারা আমাদের গ্রুপের হাসাহাসি আর কথার তোড়ে আস্তে করে নেমে গেল। জুটি গুলি সাধারণত দেখবেন অন্য জুটি বসা থাকলে অস্বস্তি বোধ করে না কিন্তু কোন গ্রুপ আড্ডা শুরু হলে সেখান থেকে সরে পরে। এর মধ্যে অনেকক্ষণ চলে গেছে। ক্ষুধাও লেগেছে বেশ। কি খাওয়া যায় এ নিয়ে কথা উঠল। কেউ বেশি দূরে যেতে চায় না। আবার জুলিয়েট বলল ওর পায়ে ব্যাথা তাই ও উঠতে পারবে না আর যদি উঠোতে হয় তাহলে রিক্সা ঠিক করে চলে যাবে। সাদিয়া বলল তাহলে তুই থাক আমরা খাবার নিয়ে আসি। কথা হলো চারুকলার গেটের সামনে যে ফ্রাই হয় সেখান থেকে খাবার আনা হবে।
সবাই মিলে নিচে নামার সময় মনে হল ফ্রেশ হয়ে নেওয়া উচিত খাবার খাবার আগে। তাই সিড়ি দিয়ে দোতলায় নেমে হাতের বামে ওয়াশরুমের দিকে গেল মেয়েরা। আমি একটু সামনে এগিয়ে ছেলেদের ওয়াশরুমে গেলাম। ইউরিনালে থাকতে থাকতে হঠাত করে মাথায় একটা বুদ্ধি আসল। তাড়াতাড়ি বের হয়ে দেখি ফারিয়া আর সুনিতি বাইরে দাঁড়ানো। আমি জিজ্ঞেস করলাম বাকিরা কই। ওরা বলল এখনো বের হয় নি। বলতে না বলতে বাকিরা বের হল। মিলি বলল চল চিকেন ফ্রাই কিনে আনি। এইবার আমি বললাম আমাকে যেতে হবে? ওরা বলল কেন? আমি বললাম আমার যেতে ইচ্ছে করছে না, গিয়ে সেই লাইনে দাড়া। আমি উপরে গিয়ে বসছি তোরা নিয়ে আয়। সুনিতি বলল ছেলে মানুষ খালি বসে থাকতে চাস কেন, তোরে আসলেই রাখি পড়ানো উচিত। আমি এইবার মূল অস্ত্র বের করলাম। বললাম এই যে নারীবাদি কথা বলিস, নারীমুক্তি আর এখন একটা ফ্রাই কিনতে ছেলেদের লাগে। দেখলাম অস্ত্র ঠিক জায়গায় লেগেছে। ফারিয়া বলল থাক থাক, তোর আর যাওয়ার দরকার নাই। আমরাই কিনে আনতে পারি। মিলি আবার ফোড়ন কাটল শালা টাকা বাচানোর ধান্দা। আমি বললাম মেয়েদেরো কখনো কখনো খরচ করা উচিত। এইবার ষোলকনা পূর্ন হল। ওরা ধূপধাপ করে নেমে গেল। বলল যা যা উপরে গিয়ে বস। মেয়েরা কি পাড়ে দেখাচ্ছি তোকে। আমি কথা না বাড়িয়ে উপরে উঠে এলাম। ছাদে কেউ নেই। অন্ধকার নেমে এসেছে পুরোপুরি। কাছের ল্যাম্পপোস্ট সম্ভবত নষ্ট তাই আলো প্রায় নেই ছাদে। জুলিয়েট মোবাইল টিপছে বসে, সেই আলোতে দেখা গেল আগের জায়গায় বসে আছে ও, ছাদের দূরতম প্রান্তে। আমি গিয়ে কাছে বসলাম। ও বলল বাকিরা কই। আমি বললাম আসছে। ও বলল তুই গেলি না। আমি গলার স্বর ড্রামাটিক করে বললাম, ওরা চিকেন ফ্রাই কিনতে গেছে আর আমি সাহস দেখাতে আসছি। জুলিয়েট হেসে বলল আসছে আমার সাহসী। আমি বললাম দেখতে চাস সাহস? জুলিয়েট বলল পারলে দেখা।
বাকি অংশ পরের পৃষ্ঠায়
(এই পর্ব পড়ার আগে আগের পর্বটা পড়ে নিলে ভাল, কারণ এই পর্বের ঘটনাপ্রবাহ আগের পর্বের সাথে চলমান )
সাহস জিনিসটা আপেক্ষিক। এক ব্যক্তি অনেক জায়গায় সাহসী হলেও একটা নির্দিষ্ট জায়গায় দেখা গেল ভীতু। আবার উল্টাও সত্য, অনেক জায়গায় ভীতু মানুষ দেখা গেল একটা স্পেসিফিক জায়গায় সাহস দেখিয়ে বসল। আমি আসলে সাহসী বা ভীতু কোন দলেই আসলে পরি না। বেশির ভাগ মানুষ পড়ে না। তারা অবস্থা ও যার যার সক্ষমতা অনুযায়ী সাহসী হয় আবার ভীতু হয়। গল্প উপন্যাসেই খালি সবর্দা সাহসী আর ভীতুদের দেখা মেলে। আমি বেশির ভাগ মানুষের দলে। পরিস্থিতি আমাদের সাহসী অথবা ভীতু করে তোলে। জুলিয়েটের সাথে ঐদিন ক্লাসের ভিতরের ঘটনার পরের কথা গুলো মাথায় ঘুরছিলো। জুলিয়েট এমনি, অগ্রাহ্য করা যায় কিন্তু অস্বীকার করা যায় না। তাই যতই মাথা থেকে তাড়াতে চেষ্টা করছি ততই মাথায় ঘুরছে সাহস দেখাতে হবে। জুলিয়েট এর আগেও একবার ঠিক রাস্তা দেখিয়েছিল। একদম লক্ষ্য বলে না দিলেও ওর সেই ফরচুন ফেবারস দ্যা ব্রেভ অন্তত মিলির সাথে আমার কর্মকান্ডের সূচনা করেছিল। এইবার জুলিয়েটের খোচা আসলে ভিতরে ভিতরে আমাকে তাতিয়ে রেখছিল। তবে তেতে থাকলেও কিছু করার ছিল না কারণ কি করব ভেবে উপায় পাচ্ছিলাম না। সাহস আর বুদ্ধি একসাথে না হলে অনেক ক্ষেত্রে খালি সাহসে কোন কাজ হয় না। আমার তখন সেই অবস্থা। সাহস দেখানোর জন্য মরিয়া তবে কোথায় সাহস দেখানো যায় সেটাই বুঝছি না। তবে কয়েকদিনের মধ্যে ঘটনাপ্রবাহে সেই সুযোগ এসে গেলো।
রাখি বাধার পর থেকেই গ্রুপের সবাই বেশ মজা নিচ্ছিল। সত্য কথা হলো গ্রুপে অন্যরা একে অন্যকে পচালেও আমাকে পচানোর সুযোগ পায় কম কারণ কথার পিঠে পালটা কথা বলাতে আমি যথেষ্ট পারঙ্গম। আর সহজে না ক্ষেপার কারণে সুযোগ আসত আর কম। এই রাখি নিয়ে একবার ক্ষেপার পর সবার ধারণা হল এই হলো আমাকে ক্ষেপানোর মোক্ষম অস্ত্র। ক্লাসের সবার সামনে রাখি নিয়ে যাতে না বলে সেই হুশিয়ারির কারণে ক্লাসের সবার সামনে না বললেও আমরা যখন নিজেরা নিজেরা থাকি তখন ওরা ক্ষেপানোর সুযোগ পেলে ছাড়ে না। দেখা গেল বসে গল্প করছি, হয়ত মিলি ঠিক তখনি হাজির হলো আর হাজির হয়েই বলবে ভাইয়া কি খবর। আমি বললাম ভাইয়া কিরে? কে ভাইয়া? ফারিয়া তখন তাল ধরে বলবে কেন আমাদের ভাইয়া। রাখি পড়িয়েছি, সন্দেহ আছে। আমি তখন যদি বলি আমি তোদের ভাইটাই হতে পারব না তখন দেখা যাবে জুলিয়েট বলে বসল কেন তাহলে সাইয়া হতে চাস নাকি। এমনকি সাদিয়া পর্যন্ত হাসতে হাসতে বলল, মাহির নতুন নাম দেওয়া যায় এখন মাহি সাইয়া। হাসতে হাসতে বাকিদের অবস্থা খারাপ। আমি অবশ্য ক্ষেপে আগুন কিন্তু বেশি রাগ দেখানো যাচ্ছে না কারণ এতে আর বেশি ক্ষেপাবে এরা। আরেকদিন সাদিয়ার ক্লাস নোটের খাতা কে বাসায় নিয়ে যাবে এটা নিয়ে সুনিতির সাথে তর্ক হচ্ছিল। আমার কথা হচ্ছে আমাকে আজকের জন্য দিয়ে দে আমি ফটোকপি করে কালকে সকালেই দিয়ে দিব। সুনিতির কথা হচ্ছে ও পুরা খাতা নিজে হাতে কপি করে রাখবে। ওর সময় লাগবে দুই দিন কিন্তু ও আমাকে আগে দিতে ইচ্ছুক না। তর্কের এক পর্যায়ে সুনিতি বলল খাতা আমাকে দে নাহলে আমি কিন্তু চিতকার দিব। আমি বললাম কি বলে চিতকার দিবি? সুনিতি বলে ভাইয়া বলে চিতকার দিব। গ্রুপের সবচেয়ে মাইল্ড ভদ্রলোকের এই অবস্থা দেখে আমার পুরো খাবি খাবার যোগাড়। তবে চোরের দশদিন হলে গৃহস্থের একদিন। সুযোগ তাই এসে গেল।
একদিন বিকাল বেলা আমি আর জুলিয়েট হেটে হেটে শাহবাগের দিকে যাচ্ছি। আজিজের পাশ থেকে রিক্সা নিয়ে বাসায় যাবে জুলিয়েট। ভাষা ইনিস্টিউটের সামনে থেকে সাদিয়া রিক্সা নিল হলের দিকে আর মিলির হল এখানেই, ও হলে ঢুকে গেল। আমি আর রোকেয়া হলের গেইট থেকে লাইব্রেরির সামনে দিয়ে শাহবাগের দিকে হাটা দিলাম। লাইব্রেরির সামনে এসে দেখি আমাদের ক্লাসের কয়েক জন তাস খেলছে। আমাদের দেখে ডাক দিল। কথায় কথায় জুলিয়েট জিজ্ঞেস করল এই যে তোরা সারাদিন লাইব্রেরির সামনে এই যে তাস খেলিস বোরিং লাগে না। ওরা বলল আরে না। খেলায় হার জিতের যে টেনশন এটার সাথে অন্য কিছুর কি তুলনা হয়। জুলিয়েট জিজ্ঞেস করল খালি এই হার জিতের জন্য সারাদিন ধরে খেলা? এরশাদ বলল, আরে খালি এটা না। খেলায় হারলে কিছু না কিছু দিতে হবে। জুলিয়েট জিজ্ঞেস করল কি? বলল ধর এই দান খেলার আগে ঠিক হইছে যে হারবে শেষ পর্যন্ত ওরে আমাদের বিকালের নাস্তা খাওয়াতে হবে। কথায় কথায় বের হলো সেদিনের হারু পার্টি আজমল। তাই যারা খেলছিল ওদের সহ আমাদের দুই জন কে নাস্তা করাল আজমল। নাস্তা খেতে খেতে জুলিয়েট বলল, কিরে কি বুঝলি? আমি বললাম বুঝার কি আছে। জুলিয়েট বলল হারলে কিছু না কিছু দিতে হয়। আমাকে কি দিবি? আমি বললাম কোন খেলা। জুলিয়েট বলল কেন সাহসের খেলা। মনে নাই সেইদিন ক্লাসে কি হল ভাইয়া। আমি মুচকি হেসে বললাম তা কি চাস। ও বলল যাওয়ার সময় একটা চকবার খাওয়াইস। আমি বললাম ঠিক আছে। এটা বলতে বলতে মাথার ভিতর একটা আইডিয়া আসল। আমি বললাম একটু দাড়া। আমি টয়লেট থেকে আসছি। এই বলে লাইব্রেরির ভিতর টয়লেটে গেলাম। হারা জিতা আর খেলা শেষে জয়ী পক্ষের কে কিছু দেওয়ার আইডিয়া থেকে মাথায় আসল সাহস দেখানোর। দেখা যাক কি হয়। আমার আন্ডারওয়ার খুলে পকেটে নিলাম। লাইব্রেরির থেকে বের হয়ে আইসক্রিম খাওয়া শেষে দুইজন মিলে হেটে হেটে শাহবাগ পর্যন্ত গেলাম। আমি বললাম জুলিয়েট তুই সাহসের খেলায় জিতে খালি আইসক্রিম খেতে চাইলি? জুলিয়েট বলল আর কিছু চাইলে দেওয়ার মত সাহস আর সাধ্য তোর নেই। আমি বললাম তাই? তাহলে তো আমাকেই ঠিক করতে হয় কি দিতে হয়। জুলিয়েট বলল দেখি কি দেস। আমি বললাম দেখ তাহলে, এইবলে পকেট থেকে আন্ডারওয়ার বের করে জুলিয়েট কে দিলাম। প্রথমে জুলিয়েট বুঝল না কি দিচ্ছি, হাতে নিয়ে দেখতেই বুঝল কি জিনিস। বলল কিরে মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি। আমি বললাম না ঠিক আছে তবে তোর সাহসের পুরষ্কার দিলাম। মনে আছে তুই একবার আমাদের রাতের চ্যাটের সময় বলেছিলি ছেলেরা যদি মেয়েদের আন্ডার গার্মেন্টেসের প্রতি ফেসিনেটেট হতে পারে তাহলে মেয়েরাও ছেলেদের আন্ডার গার্মেন্টেরসের প্রতি ফেসিনেটেট হতে পারে। পুরাটাই হরোমোনাল ব্যাপার, ফেরোমেনোন। তুই তো আর সাহস করে কারো কাছে চাইতে পারবি না তাই আমি দিয়ে দিলাম। এটাই তোর সাহসের পুরষ্কার। জুলিয়েট প্রথমে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে পরে আস্তে কতে ওর ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলল আন্ডারওয়ার টা। সাহসের খেলায় যে একদফা চমকে দিতে পারলাম এই ব্যাপারে সন্দেহ রইলো না।
সেদিন রাতে চ্যাটে নক দিল জুলিয়েট। বলল লাইভে আয়। লাইভে আসতে দেখলাম পাজামা আর গেঞ্জি পড়ে আছে। বলল কিরে খুব সাহস বেড়েছে। মেয়েদের আন্ডারগার্মেন্টস গিফট দিস না। আমি বললাম গিফট না সাহসের পুরষ্কার। তুই বারবার বললি তুই সাহস দেখিয়েছিস আর এটা তোর কাছে খেলা। লাইব্রেরির সামনে এরশাদদের সাথে কথা বলার সময় আমার মাথায় আসল এটা খেলা হলে জিতার জন্য পুরষ্কার থাকা উচিত। এমন পুরষ্কার যাতে পরের খেলতে আগ্রহী হয় খেলোয়াড়। জুলিয়েট বলল, ওরে! তুই আবার চাস না। শয়তান, আসলে বল হ্যান্ডজব চাস। ওটাই আসল কথা। আমি বললাম ওটা তো হারু পার্টির সান্তনা। জুলিয়েট বলল তোর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তুই এখন কথায় আগের তুলনায় অনেক চালু হইছিস। কেমন করে বলছিস যেন একদম আমি জিতে গেছি দেখে আমাকে পুরষ্কার দিচ্ছিস আর তুই কিছু পাস নি। আবার আরেকবার খেলতে চাস। আমি বললাম ওটা তো আমার অংশ গ্রহণের পুরষ্কার। জুলিয়েট বলল আবার কথার চাল। আবার খেলতে চাইলে তোকে সাহস দেখাতে হবে। আমার মত। এমন কিছু করতে হবে যা সবার সামনে কিন্তু কেউ টের পাবে না। আমি বললাম সেটা পরে হবে, আগে বল আমার দেওয়া পুরষ্কার কি করছিস। জুলিয়েট এবার মুচকি হেসে বলল কোন পুরষ্কার। আমি বললাম কেন আমার আন্ডারওয়ার। জুলিয়েট বলল, আন্ডারওয়ার। হুহ। জাইংগা বল জাঙ্গিয়া। আমি হেসে বললাম তুই যখন মুখ খারাপ করিস তখন এটা শুধু তোকেই মানায়। জুলিয়েট বলল খাইছে, তুই দেখি কথায় দারুণ ওস্তাদ হয়ে যাচ্ছিস। মেয়ে পটানোর ধান্দায় আছিস নাকি। আমি বললাম কেন তোর সমস্যা আছে তাতে? জুলিয়েট বলল পটা আমার কোন সমস্যা নাই খালি আমি ডাকলে আসতে হবে। আমি বললাম কেন? বলল কেন পরের খেলা গুলোর পুরষ্কার তোর কাছ থেকে নিতে হবে না। আমি বললাম আগে কে জিতে দেখ। জুলিয়েট বলল দেখা যাবে। আমি বললাম এই পুরষ্কার কি করেছিস। বলল জাইঙ্গা কি করে? আমি বললাম পড়ে। জুলিয়েট বলল আমিও পড়ে আছি। পাওলোর কাছে অনেকবার চেয়েছি দেয় নি, বলছে ব্যাপারটা ফ্রিকি। তাই তুই দিলি ভাল হয়েছে। আমার এক বান্ধবী আছে ও সবসময় রাতে ঘুমানোর সময় ওর বয় ফ্রেন্ড থেকে নেওয়া জাইঙ্গা পড়ে ঘুমায়। এতে নাকি ঠিক জায়গায় আরাম পাওয়া যায়। আমি বললাম তুই শালা আসলেই ফ্রিকি। জুলিয়েট বলল তাই। এই বলে ও উঠে দাঁড়িয়ে আস্তে আস্তে ওর পাজামা নামিয়ে দেখাল আমার জাইংগা টা। ওর ঘুড়ে দাড়াল। ওর পাছায় টাইট হয়ে চেপে আছে। সামনে ফিরতে মনে হল সামনের যোনিদেশের রেখা যেন ফুটে উঠেছে। এইবার জুলিয়েট জাংগিয়ার উপর দিয়ে গুদের উপর দুই বার চাপড় দিয়ে বলল যা আজকের শো শেষ। এইবার ঘুমা। সুইট ড্রিম। এইবলে অফলাইন হয়ে গেল। জুলিয়েটের মুড উঠলে ভিডিও চ্যাটে অনেক কিছু করে, সে তুলনায় আজকে কিছুই না কিন্তু কেন জানি ব্যাপারটা খুব ইরোটিক। সকালে আমার পড়ে থাকা জাইঙ্গা ও পড়ে ঘুমাচ্ছে মনে হতেই মনে হল আমার বাড়ার স্পর্শ যেন কাপড়ের স্পর্শে ওর যোনিতে গিয়ে লাগছে। সে রাতে আসলেই সুইট ড্রিমস হয়েছিল। স্বপ্নে অনেকবার জুলিয়েট এসেছিল তাই।
সাহস দেখানোর সুযোগ খুজলেও পাওয়া গেল না। কেন না জুলিয়েটের মত ক্লাসের মধ্যে কিছু করার সাহস আসলে নাই অন্য কোথাও বা কি করব ভেবে পেলাম না। জুলিয়েট অবশ্য সুযোগ পেলেও বলছে কিরে ভীতু কি খবর। অন্যরা জিজ্ঞেস করছে ভীতু বলছিস কেন মাহি কে। জুলিয়েট ঘুরিয়ে উত্তর দিচ্ছে আরে অন্যরা কে কি বলবে তাতে সে রাখির ঘটনা ক্লাসে বলতে দিবে না, তাহলে ভীতু নাতো কি। এখন অন্তত ভীতু বলে মজা নিতে দে। বাকিরা না বুঝেই বলল হ্যা ঠিক কথা। আমি কিছু বললাম না কারণ অপেক্ষা করলে সুযোগ একটা না একটা আসবেই। আর জুলিয়েটের মধ্যে কম্পেটেটিভ ব্যাপারটা বেশ ভাল পরিমানে আছে। তাই ও আমার সাথে একা হয়ে পড়ে এমন কোন পরিস্থিতিতে যাচ্ছে না। ও জানে আমি পাগলের মত কিছু করব না যাতে ওর ক্ষতি হয় তবে এমন চাইছে না যাতে আমি পরের রাউন্ডে জিতে যেতে পারি। ফলে দুই জনের কেউ আর সুযোগ পাচ্ছি না সাহস দেখানোর। এর মধ্যে একদিন বিকালের ক্লাস শেষে আড্ডা জমে উঠল চারুকলায়। আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম ঢুকেই বিল্ডিংটার ছাদে। মিলি ঐদিন টিউশনিতে যায় নি, বাকি সবাই আছে। আড্ডা নানা প্রসংগ ঘুরে বেড়াতে লাগল। এর মধ্যে আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হয়ে আসছে, অন্ধকার নামছে। মশাও কামড়াচ্ছে ভাল। উপরে যে দুই একটা জুটি ছিল তারা আমাদের গ্রুপের হাসাহাসি আর কথার তোড়ে আস্তে করে নেমে গেল। জুটি গুলি সাধারণত দেখবেন অন্য জুটি বসা থাকলে অস্বস্তি বোধ করে না কিন্তু কোন গ্রুপ আড্ডা শুরু হলে সেখান থেকে সরে পরে। এর মধ্যে অনেকক্ষণ চলে গেছে। ক্ষুধাও লেগেছে বেশ। কি খাওয়া যায় এ নিয়ে কথা উঠল। কেউ বেশি দূরে যেতে চায় না। আবার জুলিয়েট বলল ওর পায়ে ব্যাথা তাই ও উঠতে পারবে না আর যদি উঠোতে হয় তাহলে রিক্সা ঠিক করে চলে যাবে। সাদিয়া বলল তাহলে তুই থাক আমরা খাবার নিয়ে আসি। কথা হলো চারুকলার গেটের সামনে যে ফ্রাই হয় সেখান থেকে খাবার আনা হবে।
সবাই মিলে নিচে নামার সময় মনে হল ফ্রেশ হয়ে নেওয়া উচিত খাবার খাবার আগে। তাই সিড়ি দিয়ে দোতলায় নেমে হাতের বামে ওয়াশরুমের দিকে গেল মেয়েরা। আমি একটু সামনে এগিয়ে ছেলেদের ওয়াশরুমে গেলাম। ইউরিনালে থাকতে থাকতে হঠাত করে মাথায় একটা বুদ্ধি আসল। তাড়াতাড়ি বের হয়ে দেখি ফারিয়া আর সুনিতি বাইরে দাঁড়ানো। আমি জিজ্ঞেস করলাম বাকিরা কই। ওরা বলল এখনো বের হয় নি। বলতে না বলতে বাকিরা বের হল। মিলি বলল চল চিকেন ফ্রাই কিনে আনি। এইবার আমি বললাম আমাকে যেতে হবে? ওরা বলল কেন? আমি বললাম আমার যেতে ইচ্ছে করছে না, গিয়ে সেই লাইনে দাড়া। আমি উপরে গিয়ে বসছি তোরা নিয়ে আয়। সুনিতি বলল ছেলে মানুষ খালি বসে থাকতে চাস কেন, তোরে আসলেই রাখি পড়ানো উচিত। আমি এইবার মূল অস্ত্র বের করলাম। বললাম এই যে নারীবাদি কথা বলিস, নারীমুক্তি আর এখন একটা ফ্রাই কিনতে ছেলেদের লাগে। দেখলাম অস্ত্র ঠিক জায়গায় লেগেছে। ফারিয়া বলল থাক থাক, তোর আর যাওয়ার দরকার নাই। আমরাই কিনে আনতে পারি। মিলি আবার ফোড়ন কাটল শালা টাকা বাচানোর ধান্দা। আমি বললাম মেয়েদেরো কখনো কখনো খরচ করা উচিত। এইবার ষোলকনা পূর্ন হল। ওরা ধূপধাপ করে নেমে গেল। বলল যা যা উপরে গিয়ে বস। মেয়েরা কি পাড়ে দেখাচ্ছি তোকে। আমি কথা না বাড়িয়ে উপরে উঠে এলাম। ছাদে কেউ নেই। অন্ধকার নেমে এসেছে পুরোপুরি। কাছের ল্যাম্পপোস্ট সম্ভবত নষ্ট তাই আলো প্রায় নেই ছাদে। জুলিয়েট মোবাইল টিপছে বসে, সেই আলোতে দেখা গেল আগের জায়গায় বসে আছে ও, ছাদের দূরতম প্রান্তে। আমি গিয়ে কাছে বসলাম। ও বলল বাকিরা কই। আমি বললাম আসছে। ও বলল তুই গেলি না। আমি গলার স্বর ড্রামাটিক করে বললাম, ওরা চিকেন ফ্রাই কিনতে গেছে আর আমি সাহস দেখাতে আসছি। জুলিয়েট হেসে বলল আসছে আমার সাহসী। আমি বললাম দেখতে চাস সাহস? জুলিয়েট বলল পারলে দেখা।
বাকি অংশ পরের পৃষ্ঠায়