16-09-2019, 10:05 AM
(This post was last modified: 30-04-2022, 12:44 PM by Uttam4004. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
১৯
হানিমুনের সেই প্রথম রাতের জন্য ওর বর একটা ভাল রেড ওয়াইনের বোতল পাহাড়ে ওঠার সময়ে একটা দোকান থেকেই নিয়ে এসেছিল।
রীণা কখনও যে মদ খায় নি, সেটা এই কমাসে টুলু জেনে নিয়েছে। টুলুও যে নিয়মিত খায় তা না। কিন্তু বাইরে থাকা ব্যাচেলরদের পার্টি মাঝে মাঝে লেগেই থাকে। সেখানে গেলে একটু আধটু খায়।
রীণা একটু আপত্তি করেছিল হানিমুনে ওয়াইন খাবার ব্যাপারটায়। কিন্তু তারপরে আর বাধা দেয় নি। ওর নিজেরও ইচ্ছে ছিল একটু টেস্ট করার। এতগুলো বছর নিজের অনেক ইচ্ছেই তো ওকে দমিয়ে রাখতে হয়েছে, সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালী পরিবারের মেয়েদের কাছে সমাজ তো সেটাই দাবী করে!
কিছু বছর আগে তো প্রেম করলে বা জিন্স পরে বেরলে লোকে ট্যারা চোখে তাকাত। এখন চোখ সয়ে গেছে সবার, ঠিক যেমন বাড়ির মেয়ে বা বউ মদ খাবে, এটা যেন খারাপ লাগলেও চোখ সয়ে গেছে সমাজের। কিন্তু বিয়ের আগে শরীর দেওয়া নেওয়া এখনও মধ্যবিত্ত বাঙালী পরিবারগুলোর কাছে ভীষণরকমের ট্যাবু।
সেই বোতলটা বার করতে দেখে রীণা বলেছিল, 'আমি চেঞ্জ করে আসছি।'
অনুদিদির দেওয়া নীল লেস লাগানো নাইটিটা নিয়ে বাথরুমে চলে গিয়েছিল রীণা।
ঘরে বসে দুগ্লাস রেড ওয়াইন ঢেলে সদ্যবিবাহিত বউয়ের জন্য অপেক্ষা করতে করতে একটা সিগারেট ধরিয়েছিল টুলু।
খুট করে বাথরুমের ছিটকিনি খোলার আওয়াজ পেয়ে সে দিকে তাকিয়ে মুহুর্তের মধ্যে মুখ হাঁ হয়ে গিয়েছিল টুলুর।
এ কাকে দেখছে সে!
রীণা বাথরুমের দরজার ফ্রেমটা ধরে কোমরটা সামান্য বেঁকিয়ে দাড়িয়েছিল ওই নীল লেস লাগানো নাইটিটা পরে।
একটা ভুরু সামান্য নাচিয়ে রীণা জিগ্যেস করেছিল, 'কী টুলুসোনা কেমন লাগছে বউকে!'
সেই সন্ধ্যেতে বরকে টীজ করার একটা অদ্ভূত ইচ্ছা পেয়ে বসেছিল রীণার।
টুলু কোনওরকমে বলতে পেরেছিল, 'স্টানিং! সাংঘাতিক হট লাগছে!'
'তাই?' ঠোটের কোণে একটা হাল্কা সিডাক্টিভ হাসি এনে পাল্টা প্রশ্ন করেছিল রীণা।
ততক্ষণে বউয়ের কাছে চলে এসেছিল টুলু।
একটা আঙ্গুল বরের বুকে দিয়ে হাল্কা ঠেলে দিয়ে রীণা বলেছিল, 'উঁহু.. এখন না! আগে সেলিব্রেশান.. তারপরে..
'আচ্ছা? তাই?' বলেই শক্তপোক্ত চেহারার টুলু এক ঝটকায় বউয়ের কোমরটা ধরে পেচিয়ে কোলে তুলে ফেলেছিল। আর রীণাকে সামান্য বাধা দেওয়ার সুযোগও না দিয়ে ওই অবস্থাতেই ঠোটে ঠোট মিশিয়ে দিয়েছিল ওর বর।
রীণাকে অবশ্য চুমু যে এই প্রথম খাচ্ছে টুলু তা নয়।
বিয়ের রাতে আর তারপরদিন সুযোগ না পেলেও বৌভাতের রাতে যখন অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে সব অতিথি চলে যাওয়ার পরে সব কাজকর্ম মিটিয়ে ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরে এসেছিল, আর তারপরে নিজের ঘরে ঢুকে একবার স্নান করে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় এসে বসে অপেক্ষা করছিল যে কখন তার নতুন বিয়ে করা বউ ঘরে আসবে।
সেরাতে যে কোনও কিছু করা হবে না, সেটা আগেই ঠিক করে নিয়েছিল ওরা দুজনে, কিন্তু টুলুর মনে হয়েছিল প্রথম রাতে রীণাকে চুমু তো খাওয়াই যায়!
বেশ কিছুক্ষণ পরে বাড়ির মহিলা আত্মীয়স্বজনদের সাথে বসে উপহারগুলো দেখা শেষ করে যখন রীণা ঘরে ঢুকে ছিটকিনি তুলে দিয়েছিল, তখন থেকেই টুলুর হার্টবীটটা যেন বেড়ে গিয়েছিল।
ধুকপুক ধুকপুক শব্দটা যেন ও নিজে শুনতেও পাচ্ছিল।
দরজা বন্ধ করে দিয়ে রীণা ওর দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, মুখে একটা হাল্কা হাসি।
টুলু ওঠে এসেছিল ওর দিকে, হাত ধরে বিছানার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
রীণা বলেছিল, 'আগে এই সব গয়নাগাটি বেনারসী চেঞ্জ করি!'
টুলু বলেছিল, 'ও হ্যাঁ হ্যাঁ! চেঞ্জ করে নাও!'
শ্বশুরবাড়িতে আসার পরে প্রথমরাতটা রীণা এই ঘরেই কাটিয়েছে আগের দিন - একা একা। সেরাতে বরকে কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয় না!
নতুন কেনা স্টীলের আলমারিতে কিছুটা জিনিষপত্র গুছিয়ে ফেলেছিল রীণা আর অনুদিদি। সে-ও বোনকে ছাড়তে এসেছিল শ্বশুরবাড়িতে।
আগে গয়নাগুলো খুলে আলমারিতে তুলে রেখে সেখান থেকেই নতুন একটা নাইটি নিয়ে বাথরুমে চলে গিয়েছিল রীণা।
ঘরের লাগোয়া বাথরুমটা নতুন বিয়ে করা বউয়ের কথা ভেবেই সদ্য বানিয়েছে টুলু।
আলো জ্বালিয়ে ঝকঝকে বাথরুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁধের কাছে পিন দিয়ে আটকিয়ে রাখা আঁচলটা নামিয়ে দিয়েছিল রীণা।
বেনারসীর আচলটা খসে পড়তেই লাল সিল্কের ব্লাউজে ঢাকা স্তনজোড়া আয়নায় ফুটে উঠল। সেদিকে একবার তাকিয়ে তাড়াতাড়ি শাড়ির কুঁচিটা খুলে পরতে পরতে জড়িয়ে থাকা বেনারসীটা পুরোই খুলে ফেলল ও।
সায়া আর ব্লাউজটা খোলার পরে খেয়াল করল গরমে ওর ব্রা আর প্যান্টিটা ঘামে বেশ ভিজে গেছে, বদলানো দরকার। কিন্তু ওগুলো যে আনেনি!
লজ্জা পেল এবার। যদিও আজ ফুলশয্যার রাত, যে রাতে বরের সামনে নিরাভরণ হওয়াটাই রীতি যুগযুগ ধরে। তাও বাথরুমের দরজাটা সামান্য ফাক করে আস্তে আস্তে বরকে ডাকার আগে সামান্য সময় নিল ও।
তারপরে নিরাভরণ শরীরটা একটা তোয়ালেতে ঢেকে লজ্জা কাটিয়ে উঠে দরজাটা সামান্য খুলে ঘরের বাইরে থেকে যাতে না শোনা যায়, সেরকমভাবে বলল, 'এই শুনছ!'
টুলু এই ডাকে এখনও অভ্যস্ত নয়। তাই দুবার ডাকার পরে সাড়া দিল।
'হ্যাঁ! কী হল!'
'এদিকে এসো তো একটু,' গলা নামিয়েই ডাকল রীণা।
টুলু বাথরুমের দরজার কাছাকাছি আসার পরে রীণা শুধুমাত্র মুখটা সামান্য বাড়িয়ে বলল, 'আলমারির সেকেন্ড তাকের সাইডের দিকে দেখো আমার আন্ডারগার্মেন্টসগুলো রাখা আছে। ওখান থেকে দুটো এনে দাও না প্লিজ। আনতে ভুলে গেছি।'
টুলু মেয়েলি ব্যাপারগুলোতে অনভ্যস্ত এখনও। তাই বলে ফেলল, 'দুটো দিয়ে কী করবে!'
'ওহ ভগবান.. দুরকমের একটা একটা করে আনতে বলছি!'
'ও আচ্ছা,' বলে টুলু বাথরুমের দরজা থেকে সরে গেল!
মনে মনে রীণা বলল, এ কী ক্যাবলা বর রে !! দুটো ব্রা বা দুটো প্যান্টি না নিয়ে চলে আসে! বলে দিলেই হত একটা প্যান্টি আর একটা ব্রা আনতে!
মিনিট খানেক পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যখন টুলু ব্রা আর প্যান্টি নিয়ে ফেরত এল না, তখন রীণা আবারও বাথরুমের দরজার ফাক দিয়ে মুখটা সামান্য বার করে গলা নামিয়ে বলল, 'কী হল? পেলে না?'
টুলুকে দেখতে পেল আলমারিটা খুলে এদিক ওদিক হাতড়াচ্ছে। রীণা বলল, 'আরে ওদিকে না বাদিকে দেখ। সামনেই আছে তো!'
রীণা দেখতে পাচ্ছে যে টুলু এদিক ওদিক হাতড়াচ্ছে, কিন্তু যেদিকে আন্ডারগার্মেন্টসগুলো রাখা আছে, সেদিকে হাত দিচ্ছে না!
টুলু ওখান থেকেই বলল, 'ধুর পাচ্ছি না। তুমি বেরিয়ে এসে নিয়ে যাও!'
'এই অবস্থায় বেরতে পারব না! বাদিকে দেখ না সেকেন্ড তাকে। সামনেই আছে তো!'
টুলুকে সে দেখতে পেল ব্রা আর প্যান্টি খোঁজা ছেড়ে দিয়ে বিছানার দিকে চলে যেতে!
বিরক্ত হল রীণা! একটা সামান্য কাজও পারে না!
বাথরুমের দরজার সামান্য ফাক দিয়ে ঘরের যতটুকু দেখা যাচ্ছিল, তার বাইরে চলে গেছে টুলু!
বিরক্ত হয়েই রীণা আবার বলল, 'এই অবস্থায় বেরতে পারব না! প্লিজ.. '
টুলু আবারও বলল, 'পেলাম না। তুমি এসে নিয়ে যাও!'
কয়েক মুহুর্ত কী ভেবে তোয়ালে জড়ানো অবস্থাতেই বাথরুমের দরজাটা খুলে বেরিয়ে এসে খুব তাড়াতাড়ি হেটে আলমারির দিকে এগিয়ে গেল রীণা। ওর চোখে মুখে বিরক্তি, তার সাথে ওই অবস্থায় সদ্য বিয়ে হওয়া বরের সামনে বেরনোর অস্বস্তি।
আলমারিটা খোলাই ছিল। সেকেন্ড তাকের বাদিকের একধারে রাখা ছিল ওর আন্ডারগার্মেন্টসগুলো। পুরণো ব্যবহার করা জিনিষগুলো এ বাড়িতে আনে নি! ব্রা, প্যান্টি সবই নতুন।
সেখান থেকেই একটা ব্রা আর একটা প্যান্টি বার করতে করতেই রীণা একটু বিরক্তি নিয়েই বলছিল, 'সামনেই রাখা আছে, দেখতে পেলে.... '
বাক্যের শেষ শব্দ 'না'-টা বলার আগেই রীণা 'আআআআ' করে উঠল।
সেই ছোটবেলায় পড়া গোয়েন্দা গল্পে যেমন থাকত, 'কোথা হইতে কী হইল বুঝা গেল না কিন্তু গোয়েন্দার দুই হাতে দুটি পিস্তল গর্জিয়া উঠিল আর অন্য হাতে টর্চ জ্বলিয়া উঠিল' -- অনেকটা সেরকমই ব্যাপার হল।
---
হানিমুনের সেই প্রথম রাতের জন্য ওর বর একটা ভাল রেড ওয়াইনের বোতল পাহাড়ে ওঠার সময়ে একটা দোকান থেকেই নিয়ে এসেছিল।
রীণা কখনও যে মদ খায় নি, সেটা এই কমাসে টুলু জেনে নিয়েছে। টুলুও যে নিয়মিত খায় তা না। কিন্তু বাইরে থাকা ব্যাচেলরদের পার্টি মাঝে মাঝে লেগেই থাকে। সেখানে গেলে একটু আধটু খায়।
রীণা একটু আপত্তি করেছিল হানিমুনে ওয়াইন খাবার ব্যাপারটায়। কিন্তু তারপরে আর বাধা দেয় নি। ওর নিজেরও ইচ্ছে ছিল একটু টেস্ট করার। এতগুলো বছর নিজের অনেক ইচ্ছেই তো ওকে দমিয়ে রাখতে হয়েছে, সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালী পরিবারের মেয়েদের কাছে সমাজ তো সেটাই দাবী করে!
কিছু বছর আগে তো প্রেম করলে বা জিন্স পরে বেরলে লোকে ট্যারা চোখে তাকাত। এখন চোখ সয়ে গেছে সবার, ঠিক যেমন বাড়ির মেয়ে বা বউ মদ খাবে, এটা যেন খারাপ লাগলেও চোখ সয়ে গেছে সমাজের। কিন্তু বিয়ের আগে শরীর দেওয়া নেওয়া এখনও মধ্যবিত্ত বাঙালী পরিবারগুলোর কাছে ভীষণরকমের ট্যাবু।
সেই বোতলটা বার করতে দেখে রীণা বলেছিল, 'আমি চেঞ্জ করে আসছি।'
অনুদিদির দেওয়া নীল লেস লাগানো নাইটিটা নিয়ে বাথরুমে চলে গিয়েছিল রীণা।
ঘরে বসে দুগ্লাস রেড ওয়াইন ঢেলে সদ্যবিবাহিত বউয়ের জন্য অপেক্ষা করতে করতে একটা সিগারেট ধরিয়েছিল টুলু।
খুট করে বাথরুমের ছিটকিনি খোলার আওয়াজ পেয়ে সে দিকে তাকিয়ে মুহুর্তের মধ্যে মুখ হাঁ হয়ে গিয়েছিল টুলুর।
এ কাকে দেখছে সে!
রীণা বাথরুমের দরজার ফ্রেমটা ধরে কোমরটা সামান্য বেঁকিয়ে দাড়িয়েছিল ওই নীল লেস লাগানো নাইটিটা পরে।
একটা ভুরু সামান্য নাচিয়ে রীণা জিগ্যেস করেছিল, 'কী টুলুসোনা কেমন লাগছে বউকে!'
সেই সন্ধ্যেতে বরকে টীজ করার একটা অদ্ভূত ইচ্ছা পেয়ে বসেছিল রীণার।
টুলু কোনওরকমে বলতে পেরেছিল, 'স্টানিং! সাংঘাতিক হট লাগছে!'
'তাই?' ঠোটের কোণে একটা হাল্কা সিডাক্টিভ হাসি এনে পাল্টা প্রশ্ন করেছিল রীণা।
ততক্ষণে বউয়ের কাছে চলে এসেছিল টুলু।
একটা আঙ্গুল বরের বুকে দিয়ে হাল্কা ঠেলে দিয়ে রীণা বলেছিল, 'উঁহু.. এখন না! আগে সেলিব্রেশান.. তারপরে..
'আচ্ছা? তাই?' বলেই শক্তপোক্ত চেহারার টুলু এক ঝটকায় বউয়ের কোমরটা ধরে পেচিয়ে কোলে তুলে ফেলেছিল। আর রীণাকে সামান্য বাধা দেওয়ার সুযোগও না দিয়ে ওই অবস্থাতেই ঠোটে ঠোট মিশিয়ে দিয়েছিল ওর বর।
রীণাকে অবশ্য চুমু যে এই প্রথম খাচ্ছে টুলু তা নয়।
বিয়ের রাতে আর তারপরদিন সুযোগ না পেলেও বৌভাতের রাতে যখন অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে সব অতিথি চলে যাওয়ার পরে সব কাজকর্ম মিটিয়ে ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরে এসেছিল, আর তারপরে নিজের ঘরে ঢুকে একবার স্নান করে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় এসে বসে অপেক্ষা করছিল যে কখন তার নতুন বিয়ে করা বউ ঘরে আসবে।
সেরাতে যে কোনও কিছু করা হবে না, সেটা আগেই ঠিক করে নিয়েছিল ওরা দুজনে, কিন্তু টুলুর মনে হয়েছিল প্রথম রাতে রীণাকে চুমু তো খাওয়াই যায়!
বেশ কিছুক্ষণ পরে বাড়ির মহিলা আত্মীয়স্বজনদের সাথে বসে উপহারগুলো দেখা শেষ করে যখন রীণা ঘরে ঢুকে ছিটকিনি তুলে দিয়েছিল, তখন থেকেই টুলুর হার্টবীটটা যেন বেড়ে গিয়েছিল।
ধুকপুক ধুকপুক শব্দটা যেন ও নিজে শুনতেও পাচ্ছিল।
দরজা বন্ধ করে দিয়ে রীণা ওর দিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, মুখে একটা হাল্কা হাসি।
টুলু ওঠে এসেছিল ওর দিকে, হাত ধরে বিছানার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
রীণা বলেছিল, 'আগে এই সব গয়নাগাটি বেনারসী চেঞ্জ করি!'
টুলু বলেছিল, 'ও হ্যাঁ হ্যাঁ! চেঞ্জ করে নাও!'
শ্বশুরবাড়িতে আসার পরে প্রথমরাতটা রীণা এই ঘরেই কাটিয়েছে আগের দিন - একা একা। সেরাতে বরকে কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয় না!
নতুন কেনা স্টীলের আলমারিতে কিছুটা জিনিষপত্র গুছিয়ে ফেলেছিল রীণা আর অনুদিদি। সে-ও বোনকে ছাড়তে এসেছিল শ্বশুরবাড়িতে।
আগে গয়নাগুলো খুলে আলমারিতে তুলে রেখে সেখান থেকেই নতুন একটা নাইটি নিয়ে বাথরুমে চলে গিয়েছিল রীণা।
ঘরের লাগোয়া বাথরুমটা নতুন বিয়ে করা বউয়ের কথা ভেবেই সদ্য বানিয়েছে টুলু।
আলো জ্বালিয়ে ঝকঝকে বাথরুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কাঁধের কাছে পিন দিয়ে আটকিয়ে রাখা আঁচলটা নামিয়ে দিয়েছিল রীণা।
বেনারসীর আচলটা খসে পড়তেই লাল সিল্কের ব্লাউজে ঢাকা স্তনজোড়া আয়নায় ফুটে উঠল। সেদিকে একবার তাকিয়ে তাড়াতাড়ি শাড়ির কুঁচিটা খুলে পরতে পরতে জড়িয়ে থাকা বেনারসীটা পুরোই খুলে ফেলল ও।
সায়া আর ব্লাউজটা খোলার পরে খেয়াল করল গরমে ওর ব্রা আর প্যান্টিটা ঘামে বেশ ভিজে গেছে, বদলানো দরকার। কিন্তু ওগুলো যে আনেনি!
লজ্জা পেল এবার। যদিও আজ ফুলশয্যার রাত, যে রাতে বরের সামনে নিরাভরণ হওয়াটাই রীতি যুগযুগ ধরে। তাও বাথরুমের দরজাটা সামান্য ফাক করে আস্তে আস্তে বরকে ডাকার আগে সামান্য সময় নিল ও।
তারপরে নিরাভরণ শরীরটা একটা তোয়ালেতে ঢেকে লজ্জা কাটিয়ে উঠে দরজাটা সামান্য খুলে ঘরের বাইরে থেকে যাতে না শোনা যায়, সেরকমভাবে বলল, 'এই শুনছ!'
টুলু এই ডাকে এখনও অভ্যস্ত নয়। তাই দুবার ডাকার পরে সাড়া দিল।
'হ্যাঁ! কী হল!'
'এদিকে এসো তো একটু,' গলা নামিয়েই ডাকল রীণা।
টুলু বাথরুমের দরজার কাছাকাছি আসার পরে রীণা শুধুমাত্র মুখটা সামান্য বাড়িয়ে বলল, 'আলমারির সেকেন্ড তাকের সাইডের দিকে দেখো আমার আন্ডারগার্মেন্টসগুলো রাখা আছে। ওখান থেকে দুটো এনে দাও না প্লিজ। আনতে ভুলে গেছি।'
টুলু মেয়েলি ব্যাপারগুলোতে অনভ্যস্ত এখনও। তাই বলে ফেলল, 'দুটো দিয়ে কী করবে!'
'ওহ ভগবান.. দুরকমের একটা একটা করে আনতে বলছি!'
'ও আচ্ছা,' বলে টুলু বাথরুমের দরজা থেকে সরে গেল!
মনে মনে রীণা বলল, এ কী ক্যাবলা বর রে !! দুটো ব্রা বা দুটো প্যান্টি না নিয়ে চলে আসে! বলে দিলেই হত একটা প্যান্টি আর একটা ব্রা আনতে!
মিনিট খানেক পেরিয়ে যাওয়ার পরেও যখন টুলু ব্রা আর প্যান্টি নিয়ে ফেরত এল না, তখন রীণা আবারও বাথরুমের দরজার ফাক দিয়ে মুখটা সামান্য বার করে গলা নামিয়ে বলল, 'কী হল? পেলে না?'
টুলুকে দেখতে পেল আলমারিটা খুলে এদিক ওদিক হাতড়াচ্ছে। রীণা বলল, 'আরে ওদিকে না বাদিকে দেখ। সামনেই আছে তো!'
রীণা দেখতে পাচ্ছে যে টুলু এদিক ওদিক হাতড়াচ্ছে, কিন্তু যেদিকে আন্ডারগার্মেন্টসগুলো রাখা আছে, সেদিকে হাত দিচ্ছে না!
টুলু ওখান থেকেই বলল, 'ধুর পাচ্ছি না। তুমি বেরিয়ে এসে নিয়ে যাও!'
'এই অবস্থায় বেরতে পারব না! বাদিকে দেখ না সেকেন্ড তাকে। সামনেই আছে তো!'
টুলুকে সে দেখতে পেল ব্রা আর প্যান্টি খোঁজা ছেড়ে দিয়ে বিছানার দিকে চলে যেতে!
বিরক্ত হল রীণা! একটা সামান্য কাজও পারে না!
বাথরুমের দরজার সামান্য ফাক দিয়ে ঘরের যতটুকু দেখা যাচ্ছিল, তার বাইরে চলে গেছে টুলু!
বিরক্ত হয়েই রীণা আবার বলল, 'এই অবস্থায় বেরতে পারব না! প্লিজ.. '
টুলু আবারও বলল, 'পেলাম না। তুমি এসে নিয়ে যাও!'
কয়েক মুহুর্ত কী ভেবে তোয়ালে জড়ানো অবস্থাতেই বাথরুমের দরজাটা খুলে বেরিয়ে এসে খুব তাড়াতাড়ি হেটে আলমারির দিকে এগিয়ে গেল রীণা। ওর চোখে মুখে বিরক্তি, তার সাথে ওই অবস্থায় সদ্য বিয়ে হওয়া বরের সামনে বেরনোর অস্বস্তি।
আলমারিটা খোলাই ছিল। সেকেন্ড তাকের বাদিকের একধারে রাখা ছিল ওর আন্ডারগার্মেন্টসগুলো। পুরণো ব্যবহার করা জিনিষগুলো এ বাড়িতে আনে নি! ব্রা, প্যান্টি সবই নতুন।
সেখান থেকেই একটা ব্রা আর একটা প্যান্টি বার করতে করতেই রীণা একটু বিরক্তি নিয়েই বলছিল, 'সামনেই রাখা আছে, দেখতে পেলে.... '
বাক্যের শেষ শব্দ 'না'-টা বলার আগেই রীণা 'আআআআ' করে উঠল।
সেই ছোটবেলায় পড়া গোয়েন্দা গল্পে যেমন থাকত, 'কোথা হইতে কী হইল বুঝা গেল না কিন্তু গোয়েন্দার দুই হাতে দুটি পিস্তল গর্জিয়া উঠিল আর অন্য হাতে টর্চ জ্বলিয়া উঠিল' -- অনেকটা সেরকমই ব্যাপার হল।
---