04-09-2019, 12:50 PM
(This post was last modified: 04-09-2019, 01:02 PM by Newsaimon85. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
পর্ব ৩২
পরের দিন সকালে আটটায় উঠতে হল। বুয়া আসছে রান্না করতে। সকাল সকাল রান্না করে চলে যায়। আমি বললাম আজকে চার জনের জন্য রান্না করতে। ঢাকা শহরের আর বাকি বুয়াদের মত অতি দ্রুত কাজ করে সাড়ে নয়টার মধ্যে বুয়া পগার পার। নাস্তা খেয়ে নিয়েছি আগেই। ফোন দিলাম। কেউ এগারটার আগে এসে পৌছাবে না। রুম একটু গুছানো দরকার, ভাবলাম একটু শুই। কালকে রাতে অনেকক্ষণ ধরে স্ট্যাটের জিনিস পত্র দেখেছি, বুয়ার জন্য সকালে উঠতে হয়েছে, কেউ এগারটার আগে আসবে না তাই ভাবলাম আধাঘন্টার একটা ছোট ঘুম দিয়ে নিই। সেই ঘুম ভাংগল ফারিয়ার কলে। ধরতেই বলল আমরা বাইরে দরজা খুল। তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দিতেই হুড়মুড় করে সব ঢুকে পড়ল। আমার বাসা হচ্ছে গ্রুপের সবার গ্রুপ স্টাডির জায়গা। নিজেদের কোন এসাইনমেন্ট বা পরীক্ষার আগে গ্রুপ স্টাডি সব কিছুর জন্য আজিজের উপরের এই ফ্ল্যাট হচ্ছে বন্ধুদের গন্তব্য স্থল। বাবা মায়ের গোয়েন্দাগিরির চেষ্টা নেই, বাসাই ঢুকে আংকেল আন্টি কি ভাববে এটা ভাবার দরকার নেই, ক্যাম্পাসে টিএসসিতে বসে গরমে হইচইয়ে পড়ায় মন বসানোর কসরত করার দরকার নেই- এইসব কারণে আজিজের এই বাসা আমাদের গ্রুপের গন্তব্য স্থল। এমন কি আমি যদি কোন এসাইনমেন্ট গ্রুপে না থাকি তাও গ্রুপের বাকিরা এই বাসাকেই বেছে নেয় কারণ ঐযে বললাম এখানে অন্য চিন্তা বাদ দিয়ে খালি পড়া নিয়ে থাকা যায় আর মন খুলে কথা বলা যায়।
পড়া শুরু হয়ে গেল। কার কি দরকার সব এক এক করে বলা হল, সাদিয়া লিখে নিয়ে সিরিয়াল করে বোঝানো শুরু করল। সাদিয়ার বোঝানোর ক্ষমতা ভাল, পরিশ্রমও করে তাই পড়াশুনার ব্যাপারে ওর মাথা একদম পরিষ্কার। পড়তে পড়তে মাঝে মধ্যে একথা সেকথা যে হলো না তা। এর মধ্যে দুইটা বেজে গেল। খাওয়ার জন্য বিরতি, সাদিয়া পাশের রুম গিয়ে নামায পড়ে নিল। এর মধ্যে কারেন্ট গেল চলে। খেতে বসা হল। বুয়ার খাবারে এমনিতেই ঝাল থাকে বেশি, তারপর বাইরের কড়া রোদ, কারেন্ট নাই ফ্যান নাই। গরমে সবার সিদ্ধ হওয়ার অবস্থা। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দেখে মনে হল সাদিয়ার। গরমে সবাই ঘামছে। সাদিয়া দুই বার মুখ ধুয়ে এসেছে, ওর পুরা সাফোকেশনের অবস্থা। সাদিয়া বলল ও আর থাকতে পারবে না এই গরমে, চলে যাবে। এইবার আমরা সবাই মিলে ধরলাম, থাক প্লিজ। ফারিয়া বলল তুই না হয় * খুলে রাখ, সুনিতি বলল হ্যা রাখ। আমি কিছু না বলে চুপ করে থাকলাম। সাদিয়া বলল আরে না না। ফারিয়া বলল তুই তো কমন রুমে * খুলে রাখিস, হলেও * খুলে চলিস। এখানে সব আমরা আমরা। * খুলে আরাম করে বস। আর আমাদের আর কিছু সময় দে। আমার দিকে তাকিয়ে সাদিয়া না বলল। ফারিয়া বলল আরে মাহী আমাদের লোক। ওরে বাইরের লোক ভাবলে কিভাবে হবে। ক্লাসের পোলাপাইন যে ওকে হাফ লেডিস বলে জানিস, এই বলে আমার দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটল। আমি রাগব না অবাক হব বুঝলাম না কারণ পোলাপাইন সরাসরি কিছু বলে নাই কিন্তু পাচ জন মেয়ের সাথে সারাক্ষণ ঘুড়লে বাংলাদেশের পুরুষ সমাজ এর থেকে ভাল আর কিছু বলবে না। নিজেরা মেয়েদের সাথে মিশতে না পারার মন যন্ত্রনা মেটাবে অন্য কে টিজ করে। আমি ক্ষেপে বললাম, কে ? কে বলছে? ফারিয়া বলল আরে জ্বালা এত ক্ষেপস কেন, কে বলছে তোর লাভ কি এটা দিয়া আমরা বলি নাই। সাদিয়া হেসে দিল আমার রিএকশনে। সুনিতি বলল আমি আমার কোন ক্লাসমেট কে রাখি বাধি নাই এই পর্যন্ত মাহি কে বাধছি রাখি। ফারিয়া হেসে বলল মাহি ক্লাসের গণভাই। এরকম কয়েক মিনিট আমার উপর দিয়ে চলার পর সাদিয়া হেসে বলল ঠিক আছে। আমি * খুলছি না। তবে আর কিছুক্ষণ থাকব, যা বুঝার এর মধ্যে বুঝে নে। তবে একটা শর্ত আছে মাহির হাতে আমি রাখি বেধে দিব। এইবার ফারিয়া আর সুনিতি হাসতে হাসতে শেষ। আমি ক্ষেপবো না হাসবো বুঝলাম না, অবাক হয়ে বললাম আমার হাতে রাখি কেন? সাদিয়া বলল এতক্ষণ এমন ভাবে তুই তর্ক করলি যেন আমাদের ভাই হতে তোর সমস্যা আছে। আমি তোতলাতে তোতলাতে বললাম তোদের ভাই হতে সমস্যা নাই কিন্তু ক্লাসের গণভাই হতে সমস্যা আছে। ফারিয়া বলল ঠিক আছে ক্লাসের গণভাই হওয়া লাগবে আমাদের ভাই হ। আজকে সাদিয়া আর আমি দুই জনই তোরে রাখি বাধব। ফারিয়া এমন, সুযোগ পেলে টিজ করার চান্স মিস করবে না। সুনিতিও যোগ দিল বলল দাড়া আমি রাখির ব্যবস্থা করি। এই বলে ওর ব্যাগ থেকে চুলে বাধার দুইটা রবার ব্যান্ড বের করল, বলে এই নে এইটা মাহির হাতে পড়িয়ে দে এটাই হবে ওর জন্য তোদের রাখি।
আমি নাছোড়বান্দা, জান যদি যায় যাক জান তবু নাহি দিব সম্মান। এটা বলা মাত্রই সবাই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ল। আমাকে ঠেলে চেয়ারে বসানোর চেষ্টা শুরু করল। হঠাত করে তাল সামলাতে না পেরে আমি চেয়ারের উপর পড়লাম। বাকিরাও পড়ল আমার উপর। ফারিয়ার ওজন এখানে সবচেয়ে বেশি তাই ও আমাকে চেপে ধরে রাখতে চাইলো। সুনিতি বলল এখন রাখি পড়া। সুনিতি এক হাত চেপে রেখেছে আরেক হাত ফারিয়া আর রাখি পড়ানোর চেষ্টা করছে সাদিয়া। আমাকে পড়ার টেবিলের চেয়ারে বসিয়ে তারা রাখি পড়ানোর চেষ্টা করছে। আমি যতই হাত বাকিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছি এরা ততই জেদের সাথে রাখি পড়ানোর চেষ্টা করছে। এই চেষ্টার মাঝে হঠাত মন হল মুখের উপর নরম কিছুর ছোয়া পেলাম। আসলে ফারিয়া আমাকে চেয়ারে ঠেসে ধরার জন্য এক হাত ধরে রেখে শরীর দিয়ে আমার কাধে ধাক্কা দিয়ে আমাকে স্থির করে রাখতে চাইছে যাতে আমি বেশি নড়াচড়া না করতে পারি তাই। এদিকে হুড়োহুড়ির মাঝে ও খেয়াল করে নি, বাকিরা তো নয়ই ওর বুক এসে আমার মুখের উপর পড়েছে। একটু নিশ্বাস নিতে কষ্ট হলেও মনে হল যেন অন্য কিছুর ছোয়া পেয়েছি। ব্যাপারটা ঘটল মাত্র দশ সেকেন্ডের জন্য, এর মাঝেই সাদিয়া আমার হাতে রাখি পড়িয়ে দিল আসলে বললে আমি ঐ দশ সেকেন্ড সম্পূর্ণ ফ্রিজ হয়ে ছিলাম। ফারিয়ার দুধ পুরো আমার মুখের উপর পড়েছিল, চাইলে ঐ জামার উপর দিয়ে আমি কামড়ে দিতে পারতাম বা চাটতে পারতাম। মাথায় তখন এসেছিল কামড়ে দেবার ব্যাপারটা অনেক কষ্টে সামলিয়েছি নিজেকে। আর প্রত্যেক মানুষের শরীরে একটা ঘ্রাণ আছে, অন্য সবার থেকে সেটা আলাদা। আমরা পারফিউম দিয়ে সেটা গোপন করে রাখি কিন্তু কখনো কখনো সে ঘ্রাণ বহুদামে কেনা সুগন্ধী থেকে আর বেশি মাদকতাময়। এই গরমে সবাই ঘেমে পুরো ভিজে আছে, হয়ত অন্য কোন সময় এই একই ঘামের গন্ধ পেলে বলতাম কির ডিউডেরেন্ট ইউজ কর। তবে পরিস্থিতি সেই গন্ধটা কে যেন মাদকতাময় করে তুলেছে, যেন আমার জন্যই এই মাদকতাময় ঘ্রাণ। মনে হচ্ছিল একবার চেটে দিই। হয়ত বিশ্বাস হবে মাত্র দশ সেকেন্ডে কিভাবে মাথার ভিতর এত চিন্তা খেলা করে তবে সত্য হচ্ছে দেখবেন অনেক সময় দশ সেকেন্ডে যেন শত শত চিন্তার রেলগাড়ি ছুটে যায় মাথার ভিতর। তাই আমাকে রাখি পড়ানো শেষে যখন ওরা সবাই সরে গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছিল আর বলছিল কিরে কেমন মজা হল ভাই? ওরা ভাবছিল বারবার ভাই ডাকায় আমি ক্ষেপে যাব কিন্তু আমি হেসে দিলাম, সাদিয়া, ফারিয়া আর সুনিতি ভাবল আমি বুঝি হার স্বীকার করে নিয়ে ওদের হাসিতে যোগ দিচ্ছি। আসলে আমার মাথার ভিতর তখন ঐ দশ সেকেন্ডের নরম স্পর্শ অনুভূতি, তীব্র সোদা গন্ধ। ভাই ডাকের বিনিময়ে এই সোদা গন্ধ, নরম অনুভূতি আবার পেলে মন্দ কি।
এটা ভাবতে ভাবতেই মাথায় হঠাত একটা দুষ্ট বুদ্ধি এল। বললাম শর্ত ছিল আমি রাখি পড়লে সাদিয়া * খুলে থাকবে। সাদিয়া হই হই করে উঠল, বলল এমন শর্ত ছিল না। আমি বলেছি রাখি বাধলে আমি থাকব, * খুলব না বলে দিয়েছি। আমি বললাম আমি ভাবলাম তুই * খুলবি বলেছিলি, আর * না খুললে এই গরম কম লাগার উপায় নেই, আর তুই যেভাবে ঘামছিস তখন না আবার অজ্ঞান হয়ে যাস। ফারিয়া দুষ্টমিতে এক কাঠি উপরে সাথে আজকে সুনিতিরো কি হয়েছে তাই দুই জনেই বলল হ্যা তুই অজ্ঞান হয়ে গেলে কি হবেরে। আবার শুরু হল দ্বিপাক্ষিক তর্ক। এবার আমি, ফারিয়া আর সুনিতি একদিকে আর সাদিয়া একদিকে। ফারিয়া বলল মাহি কে রাখি বেধে কি লাভ হল যদি ওর সামনে একটু ফ্রি হয়ে বসতে না পারিস। সাদিয়া বলল এটার সাথে রাখি বাধার বা ভাই ভাবার কি আছে। আমার হয়ে আসল কাজটা সুনিতিই করে দিল, বলে তুই মাহি কে ভাই ভাবিস না কি ভাবিস তাহলে অন্য কিছু। এই বলেই দুষ্ট হাসি দিল। সাদিয়া বলল আমার ভিতরে ভাল জামা কাপড় পড়া নাই। এইবার ফারিয়া বলল জামা কাপড় পড়া থাকলেই হবে ভাল হওয়া লাগবে না। আমরা তো আর পাত্র দেখতে আসি নাই পড়তে আসছি। তুই আরাম করে বসে পড়া। এইবার মনে হল সাদিয়া হয়ত নিমরাজি। শেষ পর্যন্ত অনেক জোরাজুরি শেষে সাদিয়া * খুলতে রাজি হল। বলল আমি বাথরুম থেকে * চেঞ্জ করে আসি। সুনিতি বলল খালি খুলে ফেললেই তো হয়, আমি বললাম থাক ও যদি কমর্ফোটেবল হয় তাহলে তাই করুক। আমরা রুমে বসে অপেক্ষা করতে করতেই সাদিয়া * খুলে বের হয়ে আসল। একটা কলারওয়াল মেরুন রঙের গেঞ্জি আর জিন্স পড়া, চুল পিছনে খোপায় বাধা। এমনিতেই সাদিয়ার ফেস কাটিং খুব মায়ামায়া। আজকে এই ড্রেসে ওকে দেখে পুরাই অন্যরকম লাগছে। ফারিয়া ফাইজলামি করে শিস দিল আর আমরা হাত তালি দিয়ে উঠলাম। সাদিয়া শিসের সাথে উলটা ঘুরে আবার চলে যেতে চাইছিল কিন্তু সুনিতি আর ফারিয়া গিয়ে ধরে নিয়ে আসল। কথা হল অনেক দুষ্টমি হয়েছে এবার পড়াশুনা করা দরকার। সাদিয়া আবার বুঝানো শুরু করল স্ট্যাটের খুটিনাটি।