11-01-2019, 08:27 AM
দানার কথার অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝে ফেলে, মহুয়া চোখ পাকিয়ে মিচকি হেসে বলে, “তুমি না, কি যে বলব তোমাকে, ধ্যাত। এখন এই মিষ্টি কয়টা শেষ কর, রাতের খাবারের অনেক দেরি আছে।”
দানা ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে, “আরো কত দেরি লাগবে ডিনার করতে?” চোখ টিপে ক্ষেপানর ছলে বলে, “দেখে মনে হচ্ছে সব কিছু তৈরি আছে একদম, শুধু একটু হাত লাগাতে দেরি।”
মেয়ের সামনে ওই ভাবে ওকে উত্যক্ত করার জন্য মহুয়া কপট রাগ দেখিয়ে, “কোথায় হাত লাগানোর কথা বলছ তুমি?” ওর দিকে চড়ের ইশারা করে বলে, “এমন মারব না, তখন বুঝতে পারবে।”
দানাও কম যায় না, “দেখে মনে হচ্ছে অর্ধেক রান্না হয়ে গেছে। তাই বলছিলাম বাকি টুকু না হয় দুইজনে মিলে সেরে ফেলি।”
কথাটা শুনেই লজ্জায় মহুয়ার কানে গালে রঙ ধরে যায়, ঠোঁট দাঁতে কেটে বলে, “যাও আর কথাই বলব না। তোমার সাথে কথা বলা মানেই... তুমি না একদম যাচ্ছেতাই মানুষ।”
বহুদিন পরে, প্রায় নয় দশ মাস পরে মহুয়া নিজের হাসি ফিরে পায়। মহুয়ার চোখের ঝিলিক আর ঠোঁটের হাসি দেখে দানার বুকের চাঞ্চল্য বেড়ে ওঠে, মিলন পিয়াসী মন হুহু করে ধেয়ে যায় মহুয়ার দিকে কিন্তু কোলে রুহি তাই আর হাত বাড়িয়ে মহুয়াকে ছুঁতে পারে না। দানার হাত ওর দিকে অগ্রসর হতে দেখেই মহুয়া খিলখিল করে হেসে সরে যায়। চোখের তারায় দুষ্টুমি ভরা হাসি দিয়ে ইশারায় জানিয়ে দেয়, বেশ হয়েছে, শয়তানি করলে এই রকম হয়।
মহুয়া দানাকে নিজের ফ্লাট ঘুরিয়ে দেখায়। চার খানা বারান্দা, পাঁচ খানা শয়ন কক্ষ, পাঁচ খানা বাথরুম সব মিলিয়ে তিন হাজার স্কোয়ার ফিটের বিশাল ফ্লাট, বসার হল ঘরটা বিশাল। রান্না ঘর খানা বিশাল আর খোলামেলা, খাবার ঘরের সাথেই লাগানো। বেশির ভাগ ঘরের সাথেই বাথরুম লাগোয়া। ঝকঝকে দুধ সাদা দামী মার্বেল পাথরের মেঝে, আয়নার মতন নিজের প্রতিফলন দেখা যায়। বিশাল রান্নাঘরে বিদেশীদের মতন সাজানো, তবে এখন সব তৈজসপত্র কিনে ওঠা হয়নি। এক কোনায় একটা ছোট চাকরদের ঘর আছে, সেই সাথে একটা স্টাডি। এক খানা ঘর নিজেদের শোয়ার জন্য এবং এক খানা অতিথিদের জন্য কোন রকমে সাজানো হয়েছে। বসার ঘরে শুধু সোফা আর খাবারের টেবিল ছাড়া কোন আসবাব পত্র এখন কিনতে পারেনি বলে আক্ষেপ করে মহুয়া। দানা ওকে বলে সময় পরে আছে, ধিরে ধিরে ঘর সাজিয়ে নেবে। মহুয়ার ইচ্ছে মেয়ের ঘর হাল্কা গোলাপি রঙ করবে, ছাদে এক নকল আকাশ তৈরি করবে, ছোট ছোট আলো দিয়ে তারা, সাদা থারমোকল দিয়ে মেঘ বানিয়ে সাজাবে। মেয়ের কথা বলতে বলতে মহুয়া কেমন যেন হারিয়ে যায়। সব দেয়ালে শুধু মাত্র সাদা প্রাইমার মারা, দেয়ালে রঙ করা বাকি, ঘর সাজানো অনেক বাকি। পাঁচ খানা বাথরুমের মধ্যে নিজদের জন্য তিন খানা বাথরুম তিন রকম ভাবে সাজাতে চায়। নিজের বাথরুমে একটা বড় বাথটাব বসাতে চায়, মেয়ের বাথরুমে ঝর্না লাগাতে চায়, ইত্যাদি।
কোল্ড ড্রিঙ্কস শেষ করে দানা প্রশ্ন করে, “একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি কি তোমাকে?”
মহুয়া উল্টে প্রশ্ন করে, “তোমার সামনে আমি খোলা বই, অনেক কিছু পড়েছ আর কি জানার বাকি আছে।”
দানার বড় জানতে ইচ্ছে করে কি ভাবে, রাজস্থানের এক কম বয়সী, কম পড়াশুনা জানা মেয়ে, এই মহানগরের এক ক্ষমতাশালী প্রতিপত্তিশালী বাড়ির বউ হল। সেটা জানার জন্য মহুয়াকে প্রশ্ন করে, “প্রশ্নটা একটু ব্যাক্তিগত।”
মহুয়া যেন ওর মনের ভেতরে উঁকি দেওয়া প্রশ্নটা পড়ে ফেলেছে তাই গভীর ভাবে ওর দিকে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে উত্তর দেয়, “রুহির খাওয়া দাওয়া হয়ে যাক, তোমার সব প্রশ্নের উত্তর আমি দেব।”
মেয়েকে খাওয়াতে খাওয়াতে মহুয়া নিজের বাড়ির গল্প করে। রাজস্থানের আজমের নামক জায়গায় ওদের বাড়ি, পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে ওই ছোট মেয়ে, ওর ওপরে তিন বোন আর ওর পরে এক ভাই। ওর বাবার একটা কাঠের দোকান আছে, খাট আলমারি, টেবিল ইত্যাদি তৈরি করেন। তিন বোনের মধ্যে ওকে সব থেকে সুন্দরী দেখতে, কলেজে অনেক ছেলেই ওর পেছনে লাগত তাই ক্লাস টেনের পরে ওর বাবা পড়াশুনা ছাড়িয়ে দিল। পড়াশুনা করতে চাইলেও আর বেশি দুর এগোতে পারল না। দিদিদের বিয়ের জন্য পণের টাকা যোগাড় করতে করতে প্রায় সর্ব শান্ত হয়ে গেছেন ওর বাবা। বাড়ির কারুর এতদুর বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু ওর শ্বশুর, লোকেশ কোন পণ ছাড়াই ছোট ছেলে রাজেশের সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন, তখন মহুয়ার বয়স মাত্র বাইশ। প্রথম এক বছর সব ঠিক ছিল, তারপরে বুঝতে পারল যে মহুয়ার মর্যাদা এই বাড়ির একজন কাজের মেয়ের চেয়ে বেশি কিছু নয়। বাড়িতে একজন সুন্দরী কাজের লোকের দরকার ছিল যে বিনা বাক্যব্যায়ে সব কাজ করবে, গ্রাম্য এক মেয়েকে বিয়ে করে আনলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। বিয়ের এক বছরের মধ্যে রুহি পেটে আসে, মেয়ের জন্ম দিয়েছে বলে ওর মান মর্যাদা বাড়িতে আরও নেমে যায়। ভাসুর সোমেশের দুই ছেলে, তাঁর দাম অনেক। ছেলে মানেই বিয়ের বাজারে ব্ল্যাংক চেক, যত ইচ্ছে পণের টাকা লিখে দাও। স্বামী, রাজেশের কাছে স্ত্রীর মর্যাদা বিশেষ পায়নি কিন্তু যতদিন রাজেশ বেঁচে ছিল ততদিন লোকেশ ওর ধারে কাছে আসেনি। রাজেশ একটু মাথা গরম, খামখেয়ালী ছেলে ছিল, বাবার কথা অমান্য করে নিজের ব্যাবসা শুরু করতে চেয়েছিল, তাতে প্রচুর টাকা লোকসান করিয়ে দিয়েছিল। তারপরে একদিন গভীর রাতে গাড়ির দুর্ঘটনায় রাজেশ প্রান হারায়।
দানা ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে, “আরো কত দেরি লাগবে ডিনার করতে?” চোখ টিপে ক্ষেপানর ছলে বলে, “দেখে মনে হচ্ছে সব কিছু তৈরি আছে একদম, শুধু একটু হাত লাগাতে দেরি।”
মেয়ের সামনে ওই ভাবে ওকে উত্যক্ত করার জন্য মহুয়া কপট রাগ দেখিয়ে, “কোথায় হাত লাগানোর কথা বলছ তুমি?” ওর দিকে চড়ের ইশারা করে বলে, “এমন মারব না, তখন বুঝতে পারবে।”
দানাও কম যায় না, “দেখে মনে হচ্ছে অর্ধেক রান্না হয়ে গেছে। তাই বলছিলাম বাকি টুকু না হয় দুইজনে মিলে সেরে ফেলি।”
কথাটা শুনেই লজ্জায় মহুয়ার কানে গালে রঙ ধরে যায়, ঠোঁট দাঁতে কেটে বলে, “যাও আর কথাই বলব না। তোমার সাথে কথা বলা মানেই... তুমি না একদম যাচ্ছেতাই মানুষ।”
বহুদিন পরে, প্রায় নয় দশ মাস পরে মহুয়া নিজের হাসি ফিরে পায়। মহুয়ার চোখের ঝিলিক আর ঠোঁটের হাসি দেখে দানার বুকের চাঞ্চল্য বেড়ে ওঠে, মিলন পিয়াসী মন হুহু করে ধেয়ে যায় মহুয়ার দিকে কিন্তু কোলে রুহি তাই আর হাত বাড়িয়ে মহুয়াকে ছুঁতে পারে না। দানার হাত ওর দিকে অগ্রসর হতে দেখেই মহুয়া খিলখিল করে হেসে সরে যায়। চোখের তারায় দুষ্টুমি ভরা হাসি দিয়ে ইশারায় জানিয়ে দেয়, বেশ হয়েছে, শয়তানি করলে এই রকম হয়।
মহুয়া দানাকে নিজের ফ্লাট ঘুরিয়ে দেখায়। চার খানা বারান্দা, পাঁচ খানা শয়ন কক্ষ, পাঁচ খানা বাথরুম সব মিলিয়ে তিন হাজার স্কোয়ার ফিটের বিশাল ফ্লাট, বসার হল ঘরটা বিশাল। রান্না ঘর খানা বিশাল আর খোলামেলা, খাবার ঘরের সাথেই লাগানো। বেশির ভাগ ঘরের সাথেই বাথরুম লাগোয়া। ঝকঝকে দুধ সাদা দামী মার্বেল পাথরের মেঝে, আয়নার মতন নিজের প্রতিফলন দেখা যায়। বিশাল রান্নাঘরে বিদেশীদের মতন সাজানো, তবে এখন সব তৈজসপত্র কিনে ওঠা হয়নি। এক কোনায় একটা ছোট চাকরদের ঘর আছে, সেই সাথে একটা স্টাডি। এক খানা ঘর নিজেদের শোয়ার জন্য এবং এক খানা অতিথিদের জন্য কোন রকমে সাজানো হয়েছে। বসার ঘরে শুধু সোফা আর খাবারের টেবিল ছাড়া কোন আসবাব পত্র এখন কিনতে পারেনি বলে আক্ষেপ করে মহুয়া। দানা ওকে বলে সময় পরে আছে, ধিরে ধিরে ঘর সাজিয়ে নেবে। মহুয়ার ইচ্ছে মেয়ের ঘর হাল্কা গোলাপি রঙ করবে, ছাদে এক নকল আকাশ তৈরি করবে, ছোট ছোট আলো দিয়ে তারা, সাদা থারমোকল দিয়ে মেঘ বানিয়ে সাজাবে। মেয়ের কথা বলতে বলতে মহুয়া কেমন যেন হারিয়ে যায়। সব দেয়ালে শুধু মাত্র সাদা প্রাইমার মারা, দেয়ালে রঙ করা বাকি, ঘর সাজানো অনেক বাকি। পাঁচ খানা বাথরুমের মধ্যে নিজদের জন্য তিন খানা বাথরুম তিন রকম ভাবে সাজাতে চায়। নিজের বাথরুমে একটা বড় বাথটাব বসাতে চায়, মেয়ের বাথরুমে ঝর্না লাগাতে চায়, ইত্যাদি।
কোল্ড ড্রিঙ্কস শেষ করে দানা প্রশ্ন করে, “একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি কি তোমাকে?”
মহুয়া উল্টে প্রশ্ন করে, “তোমার সামনে আমি খোলা বই, অনেক কিছু পড়েছ আর কি জানার বাকি আছে।”
দানার বড় জানতে ইচ্ছে করে কি ভাবে, রাজস্থানের এক কম বয়সী, কম পড়াশুনা জানা মেয়ে, এই মহানগরের এক ক্ষমতাশালী প্রতিপত্তিশালী বাড়ির বউ হল। সেটা জানার জন্য মহুয়াকে প্রশ্ন করে, “প্রশ্নটা একটু ব্যাক্তিগত।”
মহুয়া যেন ওর মনের ভেতরে উঁকি দেওয়া প্রশ্নটা পড়ে ফেলেছে তাই গভীর ভাবে ওর দিকে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে উত্তর দেয়, “রুহির খাওয়া দাওয়া হয়ে যাক, তোমার সব প্রশ্নের উত্তর আমি দেব।”
মেয়েকে খাওয়াতে খাওয়াতে মহুয়া নিজের বাড়ির গল্প করে। রাজস্থানের আজমের নামক জায়গায় ওদের বাড়ি, পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে ওই ছোট মেয়ে, ওর ওপরে তিন বোন আর ওর পরে এক ভাই। ওর বাবার একটা কাঠের দোকান আছে, খাট আলমারি, টেবিল ইত্যাদি তৈরি করেন। তিন বোনের মধ্যে ওকে সব থেকে সুন্দরী দেখতে, কলেজে অনেক ছেলেই ওর পেছনে লাগত তাই ক্লাস টেনের পরে ওর বাবা পড়াশুনা ছাড়িয়ে দিল। পড়াশুনা করতে চাইলেও আর বেশি দুর এগোতে পারল না। দিদিদের বিয়ের জন্য পণের টাকা যোগাড় করতে করতে প্রায় সর্ব শান্ত হয়ে গেছেন ওর বাবা। বাড়ির কারুর এতদুর বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু ওর শ্বশুর, লোকেশ কোন পণ ছাড়াই ছোট ছেলে রাজেশের সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন, তখন মহুয়ার বয়স মাত্র বাইশ। প্রথম এক বছর সব ঠিক ছিল, তারপরে বুঝতে পারল যে মহুয়ার মর্যাদা এই বাড়ির একজন কাজের মেয়ের চেয়ে বেশি কিছু নয়। বাড়িতে একজন সুন্দরী কাজের লোকের দরকার ছিল যে বিনা বাক্যব্যায়ে সব কাজ করবে, গ্রাম্য এক মেয়েকে বিয়ে করে আনলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। বিয়ের এক বছরের মধ্যে রুহি পেটে আসে, মেয়ের জন্ম দিয়েছে বলে ওর মান মর্যাদা বাড়িতে আরও নেমে যায়। ভাসুর সোমেশের দুই ছেলে, তাঁর দাম অনেক। ছেলে মানেই বিয়ের বাজারে ব্ল্যাংক চেক, যত ইচ্ছে পণের টাকা লিখে দাও। স্বামী, রাজেশের কাছে স্ত্রীর মর্যাদা বিশেষ পায়নি কিন্তু যতদিন রাজেশ বেঁচে ছিল ততদিন লোকেশ ওর ধারে কাছে আসেনি। রাজেশ একটু মাথা গরম, খামখেয়ালী ছেলে ছিল, বাবার কথা অমান্য করে নিজের ব্যাবসা শুরু করতে চেয়েছিল, তাতে প্রচুর টাকা লোকসান করিয়ে দিয়েছিল। তারপরে একদিন গভীর রাতে গাড়ির দুর্ঘটনায় রাজেশ প্রান হারায়।