Thread Rating:
  • 32 Vote(s) - 3.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
মহানগরের আলেয়া
#78
দানার বুক ফুলে যায়, কালী পাড়ার বস্তি উন্নয়নের চেয়েও মনে হয় অনেক বড় একটা অসুর নিধন করেছে হেসে উত্তর দেয় মহুয়াকে, “না, না, তোমার সাথে ওই রকম কিছু হতেই দিতাম না আমি

মহুয়া প্রায় লাফিয়ে উঠে ওকে বলে, “গত কাল বাবা মা রাজস্থান চলে গেলেন, আমাকেও সাথে যেতে বলছিলেন তারপরে আমি ভাবলাম ... না থাক তুমি আবার কি ভাববে এই শোন না, তুমি কাল বিকেলে আমাদের বাড়িতে চলে এস

দানা ইয়ার্কি মেরে জিজ্ঞেস করে, “মা দুর্গা কি এইবারে এই দানা নামক দানবকে সংহার করতে চায় নাকি?”

মহুয়া কপট রাগ দেখিয়ে বলে, “ধুত কি যে বল না তুমি না এলে সত্যি সত্যি খেয়ে ফেলবো আমি কিন্তু কিছু জানি না, তোমাকে আসতেই হবে” 

দানা জানিয়ে দেয় যে পরেরদিন সন্ধ্যে নাগাদ মহুয়ার নিমন্ত্রন রাখতে ওর বাড়িতে পৌঁছে যাবে ফোন রেখে মনে হয়, এই রকম অধিকার আরো একজন করত, কেমন আছে সে? এতদিনে ওর কথা প্রায় ভুলতেই বসেছিল, যদি না মহুয়া ওইখেয়ে ফেলারকথা মিষ্টি অধিকার মাখা কণ্ঠে না বলত মোবাইল খুলে ইন্দ্রাণীর হাসি হাসি ছবি দেখে, হটাত যেন মনে হয় ওই ঠোঁট আর সেই হাসি নেই, ওই দুই কাজল কালো চোখ ওকে বারেবারে ধিক্কার জানিয়ে দূরে ঠেলে দিচ্ছে ক্ষমা কি সত্যি পেতে পারে না দানা? সেদিন যদি ইন্দ্রাণী ফোন উঠিয়ে ওর প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিত তাহলে কি আর এই সব হত? কিন্তু অদৃষ্টের লিখন, ইন্দ্রাণী সেদিন নিজের ছেলে মেয়েদের নিয়ে ব্যাস্ত ছিল, পরে দানাকে ফোন করতে ভুলে গিয়েছিল পরের বার যখন ফোন করেছিল ততক্ষণে দানা কঙ্কনা আর নাস্রিনের আলেয়ার হাতছানির ডাকে অনেক নিচে তলিয়ে গেছে 

পরের দিন রুহির জন্য নতুন একটা জামা, বেশ কিছু চকোলেট পুতুল ইত্যাদি আর মহুয়ার জন্য একটা সুন্দর শাড়ি কিনে নোনা ঝিলে মহুয়ার নতুন ফ্লাটে ঠিক সন্ধ্যে নাগাদ পৌঁছে যায় মহুয়া যেন ওর জন্যেই অপেক্ষা করে বসেছিল, দরজায় কলিং বেল বাজতেই দৌড়ে এসে খুলে দেয় দরজা মহুয়ার নতুন উচ্ছল রূপ দেখে দানার বেশ ভালো লাগে দানা মহুয়ার হাতে ওর উপহার ধরিয়ে দেওয়ার সময়ে আঙ্গুলের সাথে আঙ্গুল ছুঁয়ে যায় নরম আঙ্গুলের পরশে দানার শরীর চঞ্চল হয়ে ওঠে উপহারের বাক্সের নিচে দানার হাতে হাত রেখে দাঁড়িয়ে পরে মহুয়া, ওর হাতের ছোঁয়ায় অদৃশ্য বন্ধন মহুয়াকে দানার হাতের সাথে আটকে রেখে দেয় নির্বাক দুইজনে পরস্পরের দিকে নিস্পলক চোখে তাকিয়ে থাকে মহুয়ার চেহারা দানার চাহনির ফলে লালচে রঙ ধরে যায় বেশিক্ষণ ওই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না, ছোট্ট রুহিমাম্মা মাম্মাবলতে বলতে দৌড়ে এসে মহুয়াকে জড়িয়ে ধরতেই, মহুয়া আর দানা সম্বিত ফিরে পায়

মহুয়া ওর হাত থেকে বাক্স গুলো নিয়ে বলে, “বাপ রে, পুরো বাজার কিনে এনেছ মনে হচ্ছে

দানা সোফায় বসে ঘিয়ে রঙের চাপা সালোয়ার কামিজে মহুয়ার নধর দেহ পল্লবের সৌন্দর্য সুধা নিস্পলক চোখে দেখে রুহিকে কোলে বসিয়ে একটা ছোট সোফায় বসে গল্পে মেতে ওঠে ওরা নতুন পুতুল নতুন জামা পেয়ে কচি মেয়েটা ভারী খুশি রুহি লাফিয়ে দানাকে জড়িয়ে ধরে, “থ্যাঙ্কু আঙ্কেলবলে একটা ছোট্ট চুমু খায় 

দানা রুহিকে জিজ্ঞেস করে, “খুশি?”

ছোট্ট মাথা নাড়িয়ে ঝুঁটি দুলিয়ে খিলখিল করে হেসে জানিয়ে দেয় ভারী খুশি পুতুল পেয়ে

দানা মহুয়াকে জিজ্ঞেস করে, “শাড়িটা একবার খুলে দেখ, কেমন লাগবে জানি না কোনোদিন কারুর জন্য কিনিনি

মহুয়া শাড়ি না দেখেই হেসে বলে, “দেখার প্রশ্নই আসে না তুমি হাতে করে এনেছ তাতেই আমি খুব খুশিদানাকে বসতে বলে উঠে গিয়ে ওর জন্য এক প্লেট ভর্তি খাদ্য দ্রব্য নিয়ে ওর সামনে রেখে বলে, “আমার কাছে হুইস্কি, বিয়ার কিছু নেই কিন্তু” 

দানা কোল্ড ড্রিঙ্কসের গেলাসে চুমুক দিয়ে বলে, “হুইস্কি আর বিয়ারে আর নেশা হয় না বুঝলে

মহুয়া চোখ পাকিয়ে প্রশ্ন করে, “এখানে কি নেশা করার জন্য এসেছ?”

মহুয়ার চোখে চোখ রেখে দানা বলে ফেলে, “যখন থেকে এসেছি একপ্রকার নেশার মধ্যেই আছি

কথার অর্থ বুঝতে পেরে মহুয়া লজ্জা ঢাকতে অন্যদিকে মুখ করে বলে, “হ্যাঁ অনেক হয়েছে আমি নিরামিষ ভোজী সুতরাং আমিষ ছাড়া যা চাইবে তাই দিতে চেষ্টা করব

দানা বলতে যাচ্ছিল, “তোমাকে পারলে আজ রাতে খাবোকিন্তু হেসে কোল্ড ড্রিঙ্কসের গেলাস তুলে বলে, “নিরামিষের মধ্যে আমি আমিষ খুঁজে নেব চিন্তা নেই মহুয়া যা খেতে চাইব তাই দেবে, কথাটা যেন শেষ পর্যন্ত মনে থাকে
[+] 1 user Likes Nilpori's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মহানগরের আলেয়া - by Nilpori - 11-01-2019, 08:27 AM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)