Thread Rating:
  • 32 Vote(s) - 3.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
মহানগরের আলেয়া
#75
মহুয়া ফোনে ঠোঁট চেপে বলে, “কেন দানা, কেন আমার জন্য এত বড় ঝুঁকি নিচ্ছ? তুমি কি আমার...” কথাটা শেষ করার আগেই মহুয়া ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে অন্যপাশে

দানা বুঝতে পারে মহুয়া কি বলতে চায়, সেই পথে উত্তর না দিয়ে ওকে বলে, “আমি রুহির জন্য করছি, মহুয়া দয়া করে কেঁদো না, নিজেকে শক্ত কর তাহলেই হবে এবারে আমার পরিকল্পনা মন দিয়ে শোন আগামী কাল রাতের বেলা তুমি লোকেশকে বল তোমার সাথে সহবাস করার আগে যেন ভালো করে স্নান করে ঠিক তার আগে তুমি কাজের মেয়েটাকে দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করাবে, আর ঠিক তারপরে বাথরুমের মেঝেতে স্নানের জেল ঢেলে পিচ্ছিল করে দেবে এর ফলে তোমার ওপরে সন্দেহ জাগবে না কারুর তুমি বাথ টাবের পর্দা গুলো ঢিলে করে দেবে লোকেশের স্নানের সময়ে কোন কাজের আছিলায় নিজে বাথরুমে যাবে না, কাজের মেয়েটাকে সাথে পাঠাবে লোকেশ এমনিতেই ভালো ভাবে হাঁটতে চলতে পারে না, তোমার সাথে সঙ্গম করার উত্তেজনায় এই ফাঁদে পা দেবেই দেবে আর বাথরুমে গিয়ে পা পিছলে পরবে, পিঠে চোট লাগবে, আকস্মিক পরে গিয়ে মাথা ফাটাতে পারে আর এর মাঝে আমরা আর কোন ফোন করব না

পরিকল্পনা শুনতে শুনতে মহুয়ার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে, ভয়ার্ত কণ্ঠে বলে, “আমার খুব ভয় করছে দানা যদি শশুরজি বাথরুমে না যায় তাহলে কি হবে, যদি কাজ না হয় তাহলে বড় বিপদে পরে যাবো কিন্তু

দানা ওকে শান্তনা দিয়ে বলে, “লোকেশকে উস্কাও ভালো ভাবে উস্কাও, উত্তেজিত করে তোল ওকে যেমন লম্পট কামুক স্বভাবের মানুষ তোমার কথা অনুযায়ী নিশ্চয় বাথরুম যাবে

লোকেশের ড্রাইভার, দানা শঙ্কর রামিজের হাতে মার খেয়ে আধ মরা হয়ে হসপিটালে ভর্তি, একদিনে বিশ্বাসযোগ্য ড্রাইভার পাওয়া সম্ভব নয় পুজো শেষ, তাও খুদে বাজার এলাকা খুব জমজমাট দানা, মানুষের ভিড়ে মিশে লোকেশের বাড়ির ওপরে কড়া নজর রাখে দেখতে দেখতে সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত নেমে আসে রাত টা বাজতে যায় কিন্তু লোকেশের বাড়ি থেকে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে দানা অস্থির হয়ে ওঠে ওর পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি লোকেশ বাথরুমে যায় তাহলে পড়তে বাধ্য আর যদি না যায় তাহলে ভিন্ন পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে ঠিক রাত দশটা নাগাদ বাড়িতে লোকজন আসতে শুরু করে, সবাই ত্রস্ত মহুয়া সবার নজর এড়িয়ে দানাকে ফোন করে জানিয়ে দেয় লোকেশের দুর্ঘটনার ব্যাপারে পরিকল্পনা মতন কাজের মেয়েটা লোকেশকে নিয়ে বাথরুমে ঢুকেছিল কামুক লম্পট লোকেশ, বিধবা ছোট বৌমার সাথে জলকেলি করবে সেই ইচ্ছেতে হুইল চেয়ার ছেড়ে বাথটাবের দিকে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় জেল ভর্তি পিচ্ছিল মেঝেতে পা রাখতেই পিছল খেয়ে পরে আর বাথটাবের কোনাতে লেগে মাথা ফেটে যায় রক্তে বাথরুম ভেসে গেছে, মহুয়াও নকল আর্তনাদ করে বাড়ির সবাইকে জড় করে দেয় কাজের মেয়ের ওপরে সবাই চোটপাট শুরু করে দিয়েছে, এ্যাম্বুলেন্স খবর দেওয়া হয়ে গেছে 

কিছুক্ষণের মধ্যে এ্যাম্বুলেন্স চলে আসে রক্তাক্ত লোকেশকে নিয়ে মহুয়া আর মহুয়ার ভাসুর সোমেশ হস্পিটালের দিকে যাত্রা শুরু করে, পেছনে গাড়িতে বাকি আত্মীয় সজ্জন দানা একটা ট্যাক্সি নিয়ে ওদের পেছন পেছন হাসপাতালে পৌঁছে যায় অপারেশান থিয়েটারের সামনে লোকে লোকারণ্য, এক কোনায় মহুয়া রুহিকে কোলে নিয়ে মেকি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে বড় ছেলে সোমেশ আর তার পরিবার ইতস্তত বিক্ষিপ্ত, সবাই উৎকণ্ঠায় ডাক্তারের অপেক্ষায় দানা বেশ কিছু তফাতে দাঁড়িয়ে ওদের লক্ষ্য করে যায় কিছুপরেই দানার মোবাইলে ডক্টর মানস সোমের একটা মেসেজ আসে, “ডোন্ট অরি (কিছু ভেব না)ডক্টর মানস অপারেশান থিয়েটারে ঢোকার আগে লোকেশের আত্মীয় সজ্জনদের সান্ত্বনা বাক্য শুনিয়ে ঢুকে পরে লোকেশের আত্মীয় সজ্জনের ফিস ফিসানিতে দানা জানতে পারে, লোকেশের মাথা ফেটে প্রচুর রক্ত ক্ষয় হয়ে গেছে কিছু কিছু আত্মীয় সজ্জন লোকেশের মৃত্যু কামনা করে, বলে লোকটা একটা পয়সা পিচাশ শয়তান ছিল, কেউ বলে লোকটা একজন লম্পট দানা মনে মনে হাসে, তাহলে ওকে মেরে দানা কোন পাপ করেনি দুই ঘন্টা কেটে যায়, বাইরে লোকজন সবার চোখে মুখে চাপা উত্তেজনা 

মহুয়া এক কোনায় চুপচাপ ছোট্ট রুহিকে কোলে নিয়ে বসে, ওর চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই এই দুর্ঘটনায় কত খুশি দানার সাথে চোখ মিলতেই মহুয়ার চোখের তারা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, ফ্যাকাসে ঠোঁটে রঙ লাগে, রক্তহীন গালে নতুন রক্তের সঞ্চার হয় মহুয়ার মনে নেচে ওঠে, মনে হয় সবার সামনে দানাকে জড়িয়ে ধরে ধন্যবাদ জানায় সবার অলক্ষ্যে দূরে দাঁড়িয়ে দানা ইশারা করে ওকে শান্ত থাকতে অনুরোধ করে 
[+] 1 user Likes Nilpori's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মহানগরের আলেয়া - by Nilpori - 11-01-2019, 08:25 AM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)