31-08-2019, 11:25 AM
৯ম পর্ব
এর কয়েকদিন পর একদিন বিকেলে টিউশনে যাচ্ছিল, হঠাৎ দেখলো ক্লাবঘরের দরজা খোলা, তারমানে আজ ওরা এসেছে, শুভ ঠিক করলো একটু ওদের কথা শুনে তারপর টিউশনে যাবে। আসতে করে ক্লাবঘরের পেছনের জানালায় গিয়ে দাঁড়ালো, ওটা যথারীতি বন্ধই ছিলো। কান খাড়া করতেই দিব্যর গলা পেলো "কিরে রানা তো এখনো এলো না?"। ধীমান - "আরে এসে যাবে, আর তুই তো হঠাৎ করেই ডাকলি, তাই হয়তো একটু টাইম লাগছে"। শুভ বুঝতে পারে দিব্যদা আজকের আড্ডা টা হঠাৎ করেই ডেকেছে, তাই ধীমানদা চলে এলেও রানাদা এখনো আসেনি। আর রানাদা আসার পরই ওদের আড্ডা শুরু হবে। এদিকে শুভর টিউশনে দেরি হচ্ছে। শুভ ভাবলো আজ ওদের কথোপকথোন অল্প শুনেই চলে যেতে হবে। এর দু তিন মিনিট পরই অবশ্য রানাদার গলা পেলো, অর্থাৎ রানা দাও চলে এসছে আর ক্লাবঘরের দরজাটাও এবার বন্ধ করে দিলো। আর রানা প্রথমেই যে কথাটা বললো তাতে শুভ রীতিমতো চমকে উঠলো "কিরে দিব্য শেষ অবধি শতরূপা ম্যাডামকেও পটিয়ে ফেললি, এলেম আছে বলতে হবে?"। শুভ নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলো না, এটা কিভাবে সম্ভব হলো, ওর মা তো দিব্যদাকে পছন্দই করে না একদম। এবার ধীমান বলে উঠলো "হ্যাঁ দিব্য, এবার গল্পটা বল, আর পারছি না ওয়েট করতে"। শুভ ঠিক করলো ওদের কথা না শুনে এখান থেকে নড়বে না। এতক্ষনে দিব্য মুখ খুললো "আরে দাড়া শুরু থেকে বলি; শতরূপাকে এর আগেও দেখেছি রাস্তা ঘাটে কয়েকবার, তবে সেরকম ভাবে খেয়াল করিনি। এমনকি ওদের সমিতির পুজোর সময় এতবার গেছি , সমিতির অনেকের সাথেই আলাপ পরিচয় হয়েছো, কিন্তু ওর সাথে তেমন কানেকশন হয়নি। গীতশ্রীদি এবার বারবার বলছিলেন অষ্টমীর ভোগ নিতে যাবার জন্য, বলছিলো তুমি এবার আমাদের এত সাহায্য করলে, ভোগ নিতে না এলে খুব খারাপ লাগবে। আমাদের জিমটা সেদিন ও খোলা থাকায় একটু বেলার দিকে ওদের মন্ডপে পৌছোলাম। তখনই শতরূপাকে ভালো করে লক্ষ্য করলাম। ওর রূপের থেকেও ওর ব্যক্তিত্ব টা আলাদা ভাবে আকর্ষণ করলো, সত্যিই কি অসাধারন পারসোনালিটি, একটু গম্ভীর ধরনের তবে ওর মুখের আলাদা একটা সৌন্দর্য রয়েছে। এবার আরেকটু ভালো ভাবে দেখলাম ভরাট বুক, মাই গুলো এখনো ঝুলে যায়নি, পেটে বয়সের ভারে সামান্য চর্বি জমেছে, একফোটা বাড়তি মেদ নেই, পাছাটা ও যেন একদম মাপ মতো, ওর হাইটটাও শরীরের গঠনকে যেন পুর্নতা দিয়েছে। ৫'৩" কি ৫'৪ হবে। তবে ও নিজের এই সৌন্দর্যটা কে আটকে রেখেছে, কখনোই প্রকাশ করেনা আর সেদিন ই ঠিক করে আর কাউকে পাই না পাই শতরূপাকে না পেলে জীবনটাই বৃথা"। একনাগাড়ে বলে থামলো দিব্য। "কিন্তু তখন তো তুই দোয়েল কাকিমার সাথে চালাচ্ছিলি"- ধীমান বলে উঠলো। "হ্যাঁ আর সেই জন্যই তাড়াহুড়ো করতে চাইনি"-দিব্য আবার বলতে শুরু করলো, "শতরূপা ৪০ বছরের, তাছাড়া একজন কলেজের প্রফেসর, এরকম একজন ম্যাচিওর মহিলাকে তুলতে হলে কাচা কাজ করলে হবে না, রীতিমতো মন জয় করেই তুলতে হবে"। "তাহলে কিভাবে মন জয় করলি শুনি?"- রানা জিজ্ঞেস করে।
দিব্য- "দোয়েলর সাথে সম্পর্কটা শেষ করার পর সুযোগ খুজছিলাম কি করে শতরূপার সাথে কথা বলা যায়, কথা না বললে ব্যাপার টা এগোবে না; কিন্তু সুযোগ আসছিলো না, শেষমেষ একদিন দুপুরে সুযোগ এলো। ও বাজার থেকে ফেরার সময় ওর রিক্সা টার টায়ার পাংচার হলো পাড়ার মোড়ে, ওর কাছে তিনটে ব্যাগ দুটো বেশ বড়, তখন মোড়ে কেউ ছিলো না তেমন, আমিই এগিয়ে গিয়ে বললাম 'দিন আমাকে ব্যাগ দুটো,আমি ই নিয়ে যাচ্ছি", আর উপায় ছিলো না দেখে ব্যাগ দুটো আমাকে দিলো। হাটতে হাটতে জিজ্ঞেস করলাম 'কি বাজারে গেছিলেন', 'হুম' ছাড়া আর কোনো উত্তর এলো না, বুঝলাম কথা বলতে ইন্টারেস্টেড নন, তাই আমিও চুপ করে গেলাম। এমনকি বাড়ির সামনে পৌছে শুধু একটা ধন্যবাদ বললো, সেটাও যেন বলার জন্য বলা, কোনো আন্তরিকতা খুঁজে পেলাম না তাতে। বুঝতে পারলাম আমার কোনো কাহিনীই ওনার কানে যাওয়ায় আমার ওপর এই নেগেটিভ মনোভাব, তাই এই ব্যবহার, আর এটা কাটানোই হবে প্রথম কাজ"।
ধীমান- বাহ। তা সেটা কাটাতে কি ম্যাজিক করলি ?
দিব্য- ম্যাজিক কিছু না। নিজেকে প্রমানের অটোমেটিক কিছু সুযোগ এসে গেল। এর তিন চার দিন পর একদিন সকালে ব্যাঙ্কে গেলাম আর গিয়ে দেখি শতরূপা বসে আছে। ওর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম 'কি ব্যাপার এখানে?'। 'হ্যাঁ একটু দরকারে এসছি', -"আপনাকে দেখে একটু চিন্তিত লাগছে কি ব্যাপার"-আমি জিজ্ঞেস করলাম। একটু দোনামোনা করে শতরূপা বললো ও টাকা তুলতে এসেছে, অ্যামাউন্ট বেশি হওয়ায় ওকে অপেক্ষা করতে বলা হচ্ছে, আর দিকে ওর কলেজে ক্লাসও রয়েছে, দেরি হলে ওটা মিস হয়ে যাবে। আমি বললাম "কত টাকা তুলবেন?", ও বললো "৩০ বাজার"। আমি দেখছি বলে ম্যানেজারের ঘরে গেলাম। ম্যানেজার শৈলেশ দার সাথে আমার বেশ ভালো খাতির, অনেকদিন ধরেই চিনি। ওনাকে ব্যাপার টা বলাতে উনি প্রবলেম টা সলভ করে দিলেন। টাকা নিয়ে বেরোনোর সময় শতরূপা আমাকে বললো "অনেক ধন্যবাদ তোমাকে, তুমি না থাকলে আরো দেরি হতো, আজ আর ক্লাস নিতে পারতাম না"। আমি বললাম "না না তেমন কিছু না, আপনি অসুবিধেই পড়েছিলেন দেখে জাস্ট একটু সাহায্য করেছি, এর সাহায্য করাটা আমার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।" উনি একটু হেসে ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে গেলেন। সেদিন ওনার ধন্যবাদে আন্তরিকতা খুঁজে পেলাম। এরপর রাস্তায় দেখা হলে উনি হাসতেন, আমিও হাসি দিতাম। বুঝতে পারলাম নেগেটিভিটা একটু একটু করে দুর হচ্ছে। ৫-৬ দিন বাদে একদিন এম এল এ সাহেবের অফিসে একটা দরকারে গেলাম। দেখলাম ওদিন শতরূপা চেম্বারের বাইরে বসার জায়গায় বসে আছে। আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম "কি ব্যাপার হঠাৎ এখানে?"
- আসলে একটা জরুরী দরকারে এসছি।
- কি দরকার?
- আমাদের কলেজে গার্লস হোস্টেল বানানো হচ্ছে। কাজও হাফ কমপ্লিট হয়েছে। এর মধ্যে ওটা নিয়ে কিছু অভিযোগ ওঠা আমাকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি ইনসপেকশন করতে গিয়ে দেখি বাজেট অনুযায়ী কাজ হয়নি, গাফিলতি দেখে সেদিন মিটিং এ এই ব্যাপারটা তুলি। Principal ম্যাডাম ব্যাপার টা দেখবেন বলেছেন, তবে তাতে কাজ হয়নি। এখন কাজটা গড়িমসি করে হচ্ছে। MLA স্যার কলেজ পরিচালন সমিতিতে আছেন, তাই ব্যাপারটা ওনাকে জানানোই ঠিক মনে করলাম, তাই এখানে আসা।
- খুব ভালো কাজ করেছেন, এসব দেখলে অবশ্যই প্রতিবাদ করা উচিৎ।
- করেই বা কি হলো, মিটিং এ অনেকেই আমাকে সাপোর্ট করলো, অথচ এখানে আসার সময় সবাই পাশ কাটিয়ে গেল।
- এখানে যখন এসেছেন তখন ঠিক বিচার পাবেন
- সেটাও মনে হচ্ছে না, অলরেডি একদিন এসে ঘুরে গেছি।
- আসলে স্যার খুবই ব্যস্ত, সব কথা ওনার কাছ অবধি পৌছোতে দেরি হয়; তবে আপনি চিন্তা করবেন না, দেখছি কি করা যায়।
এরপর গিয়ে স্যারের P.A অনুজ দাকে ব্যাপার টা পরিষ্কার করে বললাম। অনুজ দা বললো ঠিক আছে তুই চিন্তা করিস না, আমি স্যারের সাথে একটা অ্যাপায়েনটমেন্ট ঠিক করে দিচ্ছি। এরপর আমি ওখান থেকে চলে আসলাম।
"সেদিন ওর সাথে আর দেখা হয়নি?"- রানা জিজ্ঞেস করে। দিব্য- "না, তবে তার মোটামুটি এক সপ্তাহ পর একদিন বাজারে শতরূপার সাথে দেখা, আমি দেখিনি, ঐ প্রথমে হাত দেখালো, আমি কাছে যেতেই বললো 'তোমাকই খুজছিলাম এতদিন?'। -'কেন, আর আপনার কলেজের সমস্যা মিটলো?'। শতরূপা- 'হ্যাঁ সেটাই বলার জন্য, MLA সাহেবের PA ফোন করে ডেকেছিলেন, স্যারকে সব বললাম, উনি আশ্বাস দিলেন দেখবেন ব্যাপার টা, আর সত্যিই এখন খুব ভালো ভাবে কাজ চলছে, কারোর কোনো অভিযোগ নেই'।
-বাহ এতো খুব ভালো কথা।
- আর এটাও হয়েছে তোমার জন্য, এতদিন তোমার কাজের প্রশংসা শুনতাম, গত কয়েকদিনে সেগুলোর প্রমানও পেলাম।
- নাহ আসলে যারা ভালো কাজ করে তাদের পাশে সবসময়ই আমি থাকি, অনেকে অনেক অনৈতিক কাজের কথা বলে, সে সবে সায় না দেবার জন্য অনেক উলটো পাল্টা কথাও রটায়।
আমার এই কথাটা শতরূপাকে ভালো ভাবে স্ট্রাইক করে। আমাকে নিয়ে ওর নেগেটিভিটা শেষ করার জন্যই এটা বলি। ও বলে "আসলে অনেক সময় ভালো কাজ করলে অনেকে তার ফায়দা নিতে চায়, আর সে সব প্রশয় না দেওয়াই উচিৎ"। শতরূপার কথা শুনে বুঝলাম আগের কথাটা বলা বেশ কাজে দিয়েছে। "তবে মাঝে একদিন রাস্তায় আপনাকে দেখেছিলাম, আপনি আমাকে দেখেননি"। শতরূপা- "সেকি ডাকো নি কেন?"। আমি বললাম তখন তো আর কোনো বিপদে পড়েন নি। শতরূপা হেসে বললো কেন এমনি বুঝি ডাকা যেতো না। আমি বললাম ঠিক আছে এবার থেকে না হয় ডাকবো আপনাকে। এরপর ও চলে গেল। তবে এটা বুঝলাম আমাকে নিয়ে নেগেটিভিটা ওর মন থেকে একেবারে দুর হয়ে গেছে।"
এক নাগাড়ে কথা বলে দিব্য থামলো। এবারে ধীমান জিজ্ঞেস করলো "মানে ঐদিনের পর থেকে তোদের মধ্যে কথা শুরু হলো?"। দিব্য- "ইচ্ছে করলে বলা যেতো, কিন্তু আমি তাও আরো সময় নিতে চাইছিলাম, এর দু তিন দিন পর একদিন সকালে দেখি শতরূপা হন্তদন্ত হয়ে কলেজ যাচ্ছে। আমি বাইক নিয়ে কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম 'কি ব্যাপার কোথায় যাচ্ছেন?'। 'আর বোলো না কলেজে বিকেল ৩টেয় মিটিং হবার কথা ছিলো, এখন হঠাৎ ফোন করে বলছে ১২টার সময় হবে, তাই আরকি'- ও উত্তর দিলো। আমি বললাম 'এখন বাসে গেলেও তো টাইমে পৌছোতে পারবেন না', 'সেটাই তো ভাবছি'। 'কিছু মনে না করলে আমার বাইকে বসুন ছেড়ে দিচ্ছি আপনাকে'। শতরূপা কিছুক্ষণ ভেবে বাইকে উঠে বসলো, আমি ওকে নিয়ে কলেজের দিকে রওনা দিলাম"।
এর কয়েকদিন পর একদিন বিকেলে টিউশনে যাচ্ছিল, হঠাৎ দেখলো ক্লাবঘরের দরজা খোলা, তারমানে আজ ওরা এসেছে, শুভ ঠিক করলো একটু ওদের কথা শুনে তারপর টিউশনে যাবে। আসতে করে ক্লাবঘরের পেছনের জানালায় গিয়ে দাঁড়ালো, ওটা যথারীতি বন্ধই ছিলো। কান খাড়া করতেই দিব্যর গলা পেলো "কিরে রানা তো এখনো এলো না?"। ধীমান - "আরে এসে যাবে, আর তুই তো হঠাৎ করেই ডাকলি, তাই হয়তো একটু টাইম লাগছে"। শুভ বুঝতে পারে দিব্যদা আজকের আড্ডা টা হঠাৎ করেই ডেকেছে, তাই ধীমানদা চলে এলেও রানাদা এখনো আসেনি। আর রানাদা আসার পরই ওদের আড্ডা শুরু হবে। এদিকে শুভর টিউশনে দেরি হচ্ছে। শুভ ভাবলো আজ ওদের কথোপকথোন অল্প শুনেই চলে যেতে হবে। এর দু তিন মিনিট পরই অবশ্য রানাদার গলা পেলো, অর্থাৎ রানা দাও চলে এসছে আর ক্লাবঘরের দরজাটাও এবার বন্ধ করে দিলো। আর রানা প্রথমেই যে কথাটা বললো তাতে শুভ রীতিমতো চমকে উঠলো "কিরে দিব্য শেষ অবধি শতরূপা ম্যাডামকেও পটিয়ে ফেললি, এলেম আছে বলতে হবে?"। শুভ নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলো না, এটা কিভাবে সম্ভব হলো, ওর মা তো দিব্যদাকে পছন্দই করে না একদম। এবার ধীমান বলে উঠলো "হ্যাঁ দিব্য, এবার গল্পটা বল, আর পারছি না ওয়েট করতে"। শুভ ঠিক করলো ওদের কথা না শুনে এখান থেকে নড়বে না। এতক্ষনে দিব্য মুখ খুললো "আরে দাড়া শুরু থেকে বলি; শতরূপাকে এর আগেও দেখেছি রাস্তা ঘাটে কয়েকবার, তবে সেরকম ভাবে খেয়াল করিনি। এমনকি ওদের সমিতির পুজোর সময় এতবার গেছি , সমিতির অনেকের সাথেই আলাপ পরিচয় হয়েছো, কিন্তু ওর সাথে তেমন কানেকশন হয়নি। গীতশ্রীদি এবার বারবার বলছিলেন অষ্টমীর ভোগ নিতে যাবার জন্য, বলছিলো তুমি এবার আমাদের এত সাহায্য করলে, ভোগ নিতে না এলে খুব খারাপ লাগবে। আমাদের জিমটা সেদিন ও খোলা থাকায় একটু বেলার দিকে ওদের মন্ডপে পৌছোলাম। তখনই শতরূপাকে ভালো করে লক্ষ্য করলাম। ওর রূপের থেকেও ওর ব্যক্তিত্ব টা আলাদা ভাবে আকর্ষণ করলো, সত্যিই কি অসাধারন পারসোনালিটি, একটু গম্ভীর ধরনের তবে ওর মুখের আলাদা একটা সৌন্দর্য রয়েছে। এবার আরেকটু ভালো ভাবে দেখলাম ভরাট বুক, মাই গুলো এখনো ঝুলে যায়নি, পেটে বয়সের ভারে সামান্য চর্বি জমেছে, একফোটা বাড়তি মেদ নেই, পাছাটা ও যেন একদম মাপ মতো, ওর হাইটটাও শরীরের গঠনকে যেন পুর্নতা দিয়েছে। ৫'৩" কি ৫'৪ হবে। তবে ও নিজের এই সৌন্দর্যটা কে আটকে রেখেছে, কখনোই প্রকাশ করেনা আর সেদিন ই ঠিক করে আর কাউকে পাই না পাই শতরূপাকে না পেলে জীবনটাই বৃথা"। একনাগাড়ে বলে থামলো দিব্য। "কিন্তু তখন তো তুই দোয়েল কাকিমার সাথে চালাচ্ছিলি"- ধীমান বলে উঠলো। "হ্যাঁ আর সেই জন্যই তাড়াহুড়ো করতে চাইনি"-দিব্য আবার বলতে শুরু করলো, "শতরূপা ৪০ বছরের, তাছাড়া একজন কলেজের প্রফেসর, এরকম একজন ম্যাচিওর মহিলাকে তুলতে হলে কাচা কাজ করলে হবে না, রীতিমতো মন জয় করেই তুলতে হবে"। "তাহলে কিভাবে মন জয় করলি শুনি?"- রানা জিজ্ঞেস করে।
দিব্য- "দোয়েলর সাথে সম্পর্কটা শেষ করার পর সুযোগ খুজছিলাম কি করে শতরূপার সাথে কথা বলা যায়, কথা না বললে ব্যাপার টা এগোবে না; কিন্তু সুযোগ আসছিলো না, শেষমেষ একদিন দুপুরে সুযোগ এলো। ও বাজার থেকে ফেরার সময় ওর রিক্সা টার টায়ার পাংচার হলো পাড়ার মোড়ে, ওর কাছে তিনটে ব্যাগ দুটো বেশ বড়, তখন মোড়ে কেউ ছিলো না তেমন, আমিই এগিয়ে গিয়ে বললাম 'দিন আমাকে ব্যাগ দুটো,আমি ই নিয়ে যাচ্ছি", আর উপায় ছিলো না দেখে ব্যাগ দুটো আমাকে দিলো। হাটতে হাটতে জিজ্ঞেস করলাম 'কি বাজারে গেছিলেন', 'হুম' ছাড়া আর কোনো উত্তর এলো না, বুঝলাম কথা বলতে ইন্টারেস্টেড নন, তাই আমিও চুপ করে গেলাম। এমনকি বাড়ির সামনে পৌছে শুধু একটা ধন্যবাদ বললো, সেটাও যেন বলার জন্য বলা, কোনো আন্তরিকতা খুঁজে পেলাম না তাতে। বুঝতে পারলাম আমার কোনো কাহিনীই ওনার কানে যাওয়ায় আমার ওপর এই নেগেটিভ মনোভাব, তাই এই ব্যবহার, আর এটা কাটানোই হবে প্রথম কাজ"।
ধীমান- বাহ। তা সেটা কাটাতে কি ম্যাজিক করলি ?
দিব্য- ম্যাজিক কিছু না। নিজেকে প্রমানের অটোমেটিক কিছু সুযোগ এসে গেল। এর তিন চার দিন পর একদিন সকালে ব্যাঙ্কে গেলাম আর গিয়ে দেখি শতরূপা বসে আছে। ওর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম 'কি ব্যাপার এখানে?'। 'হ্যাঁ একটু দরকারে এসছি', -"আপনাকে দেখে একটু চিন্তিত লাগছে কি ব্যাপার"-আমি জিজ্ঞেস করলাম। একটু দোনামোনা করে শতরূপা বললো ও টাকা তুলতে এসেছে, অ্যামাউন্ট বেশি হওয়ায় ওকে অপেক্ষা করতে বলা হচ্ছে, আর দিকে ওর কলেজে ক্লাসও রয়েছে, দেরি হলে ওটা মিস হয়ে যাবে। আমি বললাম "কত টাকা তুলবেন?", ও বললো "৩০ বাজার"। আমি দেখছি বলে ম্যানেজারের ঘরে গেলাম। ম্যানেজার শৈলেশ দার সাথে আমার বেশ ভালো খাতির, অনেকদিন ধরেই চিনি। ওনাকে ব্যাপার টা বলাতে উনি প্রবলেম টা সলভ করে দিলেন। টাকা নিয়ে বেরোনোর সময় শতরূপা আমাকে বললো "অনেক ধন্যবাদ তোমাকে, তুমি না থাকলে আরো দেরি হতো, আজ আর ক্লাস নিতে পারতাম না"। আমি বললাম "না না তেমন কিছু না, আপনি অসুবিধেই পড়েছিলেন দেখে জাস্ট একটু সাহায্য করেছি, এর সাহায্য করাটা আমার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।" উনি একটু হেসে ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে গেলেন। সেদিন ওনার ধন্যবাদে আন্তরিকতা খুঁজে পেলাম। এরপর রাস্তায় দেখা হলে উনি হাসতেন, আমিও হাসি দিতাম। বুঝতে পারলাম নেগেটিভিটা একটু একটু করে দুর হচ্ছে। ৫-৬ দিন বাদে একদিন এম এল এ সাহেবের অফিসে একটা দরকারে গেলাম। দেখলাম ওদিন শতরূপা চেম্বারের বাইরে বসার জায়গায় বসে আছে। আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম "কি ব্যাপার হঠাৎ এখানে?"
- আসলে একটা জরুরী দরকারে এসছি।
- কি দরকার?
- আমাদের কলেজে গার্লস হোস্টেল বানানো হচ্ছে। কাজও হাফ কমপ্লিট হয়েছে। এর মধ্যে ওটা নিয়ে কিছু অভিযোগ ওঠা আমাকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি ইনসপেকশন করতে গিয়ে দেখি বাজেট অনুযায়ী কাজ হয়নি, গাফিলতি দেখে সেদিন মিটিং এ এই ব্যাপারটা তুলি। Principal ম্যাডাম ব্যাপার টা দেখবেন বলেছেন, তবে তাতে কাজ হয়নি। এখন কাজটা গড়িমসি করে হচ্ছে। MLA স্যার কলেজ পরিচালন সমিতিতে আছেন, তাই ব্যাপারটা ওনাকে জানানোই ঠিক মনে করলাম, তাই এখানে আসা।
- খুব ভালো কাজ করেছেন, এসব দেখলে অবশ্যই প্রতিবাদ করা উচিৎ।
- করেই বা কি হলো, মিটিং এ অনেকেই আমাকে সাপোর্ট করলো, অথচ এখানে আসার সময় সবাই পাশ কাটিয়ে গেল।
- এখানে যখন এসেছেন তখন ঠিক বিচার পাবেন
- সেটাও মনে হচ্ছে না, অলরেডি একদিন এসে ঘুরে গেছি।
- আসলে স্যার খুবই ব্যস্ত, সব কথা ওনার কাছ অবধি পৌছোতে দেরি হয়; তবে আপনি চিন্তা করবেন না, দেখছি কি করা যায়।
এরপর গিয়ে স্যারের P.A অনুজ দাকে ব্যাপার টা পরিষ্কার করে বললাম। অনুজ দা বললো ঠিক আছে তুই চিন্তা করিস না, আমি স্যারের সাথে একটা অ্যাপায়েনটমেন্ট ঠিক করে দিচ্ছি। এরপর আমি ওখান থেকে চলে আসলাম।
"সেদিন ওর সাথে আর দেখা হয়নি?"- রানা জিজ্ঞেস করে। দিব্য- "না, তবে তার মোটামুটি এক সপ্তাহ পর একদিন বাজারে শতরূপার সাথে দেখা, আমি দেখিনি, ঐ প্রথমে হাত দেখালো, আমি কাছে যেতেই বললো 'তোমাকই খুজছিলাম এতদিন?'। -'কেন, আর আপনার কলেজের সমস্যা মিটলো?'। শতরূপা- 'হ্যাঁ সেটাই বলার জন্য, MLA সাহেবের PA ফোন করে ডেকেছিলেন, স্যারকে সব বললাম, উনি আশ্বাস দিলেন দেখবেন ব্যাপার টা, আর সত্যিই এখন খুব ভালো ভাবে কাজ চলছে, কারোর কোনো অভিযোগ নেই'।
-বাহ এতো খুব ভালো কথা।
- আর এটাও হয়েছে তোমার জন্য, এতদিন তোমার কাজের প্রশংসা শুনতাম, গত কয়েকদিনে সেগুলোর প্রমানও পেলাম।
- নাহ আসলে যারা ভালো কাজ করে তাদের পাশে সবসময়ই আমি থাকি, অনেকে অনেক অনৈতিক কাজের কথা বলে, সে সবে সায় না দেবার জন্য অনেক উলটো পাল্টা কথাও রটায়।
আমার এই কথাটা শতরূপাকে ভালো ভাবে স্ট্রাইক করে। আমাকে নিয়ে ওর নেগেটিভিটা শেষ করার জন্যই এটা বলি। ও বলে "আসলে অনেক সময় ভালো কাজ করলে অনেকে তার ফায়দা নিতে চায়, আর সে সব প্রশয় না দেওয়াই উচিৎ"। শতরূপার কথা শুনে বুঝলাম আগের কথাটা বলা বেশ কাজে দিয়েছে। "তবে মাঝে একদিন রাস্তায় আপনাকে দেখেছিলাম, আপনি আমাকে দেখেননি"। শতরূপা- "সেকি ডাকো নি কেন?"। আমি বললাম তখন তো আর কোনো বিপদে পড়েন নি। শতরূপা হেসে বললো কেন এমনি বুঝি ডাকা যেতো না। আমি বললাম ঠিক আছে এবার থেকে না হয় ডাকবো আপনাকে। এরপর ও চলে গেল। তবে এটা বুঝলাম আমাকে নিয়ে নেগেটিভিটা ওর মন থেকে একেবারে দুর হয়ে গেছে।"
এক নাগাড়ে কথা বলে দিব্য থামলো। এবারে ধীমান জিজ্ঞেস করলো "মানে ঐদিনের পর থেকে তোদের মধ্যে কথা শুরু হলো?"। দিব্য- "ইচ্ছে করলে বলা যেতো, কিন্তু আমি তাও আরো সময় নিতে চাইছিলাম, এর দু তিন দিন পর একদিন সকালে দেখি শতরূপা হন্তদন্ত হয়ে কলেজ যাচ্ছে। আমি বাইক নিয়ে কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম 'কি ব্যাপার কোথায় যাচ্ছেন?'। 'আর বোলো না কলেজে বিকেল ৩টেয় মিটিং হবার কথা ছিলো, এখন হঠাৎ ফোন করে বলছে ১২টার সময় হবে, তাই আরকি'- ও উত্তর দিলো। আমি বললাম 'এখন বাসে গেলেও তো টাইমে পৌছোতে পারবেন না', 'সেটাই তো ভাবছি'। 'কিছু মনে না করলে আমার বাইকে বসুন ছেড়ে দিচ্ছি আপনাকে'। শতরূপা কিছুক্ষণ ভেবে বাইকে উঠে বসলো, আমি ওকে নিয়ে কলেজের দিকে রওনা দিলাম"।