29-08-2019, 06:44 PM
4)
আসলে সেবার আমার ক্লাশ সেভেনেই উঠার কথা। বেশ কিছুটা দিন স্মৃতিশক্তিগুলো হারিয়ে থাকলেও, স্মৃতিগুলো মাথার ভেতর জাগ্রত হয়ে উঠছিলো ধীরে ধীরেই।
নুতন এই বাড়ীটাতে, আমার ঘুমানোর জায়গা হয়েছিলো, বসার ঘরটাতেই। সবাই ঘুমিয়ে গেলে, এই বসার ঘরের মেঝেতেই, দামী কার্পেটটার উপর ঘুমিয়ে পরতাম। আর লোপাও, সেই বসার ঘরেই, সোফায় বসে, সামনের খাটো টেবিলটার উপর বই খাতা রেখেই পড়ালেখা করতো।
লোপার বোধ হয় অংক মিলছিলো না। নিজের উপরই রাগ করে খাতাটা ছুড়ে ফেললো মেঝেতে। আমি তখন মেঝেতে বসেই, টি, ভি, দেখছিলাম। নিতান্তই সময় কাটানোর লক্ষ্যে।
লোপার খাতাটা প্রায় আমার গায়ের উপর এসে পরাতেই, আমি খাতাটা তুলে নিয়ে লোপার দিকেই এগিয়ে গেলাম। বললাম, আপুমণি, কি হলো?
লোপা মিষ্টি গলাতেই বললো, ভাইয়া, সবাই তার ছোট বোনকে নাম ধরে ডাকে। তুমি আমাকে আপুমণি বলে ডাকো কেনো?
লোপার প্রশ্নে তাৎক্ষণিকভাবে কিছুই বলতে পারলাম না আমি। খানিকটা ভেবেই বললাম, অনেক সময় মা বাবারা মেয়েকে আদর করে আম্মু বলে ডাকে, বড়রা ছোটদের এমন করে ডাকতেই পারে! তাতে দোষের কিছু আছে?
লোপা বললো, না, তা নেই। কিন্তু, তুমি কলেজে যাওনা কেনো?
আমি বললাম, আমার কলেজ এই বাড়ীটাই। বাজার করা, বাগানটা সাফ করা, আর মাঝে মাঝে মায়ের কাজে সাহায্য করা।
লোপা বললো, ভাইয়া, তুমি কলেজে গেলে খুব ভালো হতো। জানো, সোমার বড় ভাইয়াও তোমার সমান। সে সব সময় সোমাকে অংক বুঝিয়ে দেয়!
আমি বললাম, ঠিক আছে, এখন থেকে আমিও তোমাকে অংক বুঝিয়ে দেবো।
লোপা চোখ কপালে তুলেই বললো, ওমা, তুমি তো কখনো কলেজেই যাওনি! আমাকে অংক বুঝাবে কি করে?
আমি বললাম, পৃথিবীতে এমন অনেক অংকবিদ, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক আছে, যারা কখনোই কলেজে যায়নি। অথচ, পৃথিবী শ্রেষ্ঠ! তুমি কোন অংকটা পারছো না সেটাই বলো।