22-08-2019, 02:59 PM
৫ম পর্ব
পুজো যতই এগিয়ে আসতে শতরূপার ব্যস্ততা যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। এর আগেও ও মহিলা সমিতির সাথে যুক্ত ছিলো, তবে কোনোবারই পুজোর আগে এমন দায়িত্ব পালন করতে হয়নি। তবে এরজন্য কলেজে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাকি দেয়নি। তবে ও ঠিক করেছে এবার কলেজে পুজোর ছুটি পড়ার দুদিন আগেই ছুটি নিয়ে নেবে। পুজো এগিয়ে আসার সাথে সাথে শুভর অবশ্য ভালোই হয়েছে, পড়াশোনার চাপ কমেছে, তবে বাড়ির বাইরে খুব একটা বেরোনো হচ্ছে না। ওর মা মহিলা সমিতির পুজোয় খুব ব্যস্ত, কিন্তু শতরূপা ওকে বলে দিয়েছে পুজোর আগে অহেতুক বাড়ির বাইরে না যেতে। শতরূপা এত ব্যস্ততার মধ্যেও শুভর পড়াশোনার দিকে ওর নজর কমেনি।
এরমধ্যে একদিন সন্ধ্যাবেলা শুভ টিউশন থেকে ফিরে দেখে ওদের বাড়ির গেটের তালা দেওয়া। শুভ বুঝতে পারে ওর মা কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে পুজোর কাজে বেরিয়েছে। শুভর কাছেও গেটের ডুপ্লিকেট চাবি থাকে, কিন্তু তাড়াহুড়োতে নিতে ভুলে গেছে। শুভ সাইকেল নিয়ে পুজো প্যান্ডেলের মাঠে আসে। এসে দেখে প্যান্ডেল তৈরির কাজ অনেকটাই হয়ে এসছে। এখন কয়েকজন লাইটিং এর কাজ করছে। মহিলা সমিতিরও কয়েকজন রয়েছে। কিন্তু শতরূপাকে কোথাও দেখতে পায়না। একবার মনে হয় ওর মা হয়তো মহিলা সমিতির ঘরে আছে, ওখানে গেলেই হয়তো ভালো হতো। ওখানেই যাবে কি না ভাবতে ভাবতে একসময় প্যান্ডেলের একপাশে দোয়েল, অপর্না আরও দুজন মহিলাকে গল্প করতে দেখে। হয়তো সমিতিরই সদস্যা হবে। ওদের দিকে এগিয়ে যায় শুভ। শুভকে দেখতে পেয়ে দোয়েল বলে ওঠে "কিরে শুভ এখানে?"। শুভ- "মাকে দেখেছো, আসলে বাড়ির চাবিটা মার কাছ।" দোয়েল- "শতরূপা দি একটু বাইরে গেল, তুই দ্বারা এক্ষুনি চলে আসবে"।
শুভ ওখানে দাঁড়িয়ে লাইটিং এর কাজ দেখতে থাকে। এমন সময় ওর কানে দিব্য নামটা শুনতে পায়। বুঝতে পারে নামটা ওর পাশের গল্পের জটলা থেকে এসছে। শুভ এবার কানটা খাড়া করে ওদের গল্পে মনোযোগ দেয়। অপর্না বলে "ঠিক বলেছো দোয়েলদি, দিব্য ছেলেটা সত্যি খুব কাজের, ও থাকায় এবার অনেক সুবিধেই হলো"। পাশ থেকে আরেকজন বলে "হ্যাঁ ও থাকায় প্যান্ডেলের জন্য খরচাটাও কিছুটা কম হলো"। দোয়েল- "ওর নাকি বদনামও রয়েছে, কিন্তু কথাবার্তা শুনে বেশ ভালোই মনে হল, কথাও বলে বেশ ভালো"। অপর্না- "হ্যাঁ গীতশ্রীদি এই ডিসিশনটা বেশ ভালোই নিয়েছে"। দোয়েল- "আর জানোতো ছেলেটা বেশ পরোপোকারী ও; এই তো সেদিন বাজার থেকে আসার সময় আমাকে ওর বাইকে লিফট দিলো; গত পরশুও তাই, শপিংয়ে যাবো কিচ্ছু পাচ্ছি না, দিব্য ই এসে ওর বাইকে নিয়ে গেলো, আবার শপিংয়ের পর বাড়ি অবধি নামিয়ে দিয়ে গেলো"।
অপর্না- তোমার যাতায়াতের খরচ বাঁচিয়ে দিলো
দোয়েল- তার মধ্যে আবার নিজের মোবাইল নাম্বার দিয়ে বললো কোনো দরকার হলে যেন ফোন করি।
অপর্না- তা তুমি কি করলে?
দোয়েল- নিয়ে রাখলাম নাম্বার টা। আমার অসুবিধে তোমরা কি বুঝবে!? শমীকের বাবা তো বাইরে থাকে আর শমীকও কলেজ, টিউশন নিয়ে ব্যস্ত থাকে, হঠাৎ কোনো দরকার হলে কাউকে তো চাই।
পাশ থেকে আরেকজন মহিলা জিজ্ঞেস কর "তোমার নাম্বার টা চায় নি?"
দোয়েল- আমিই ওরটা সেভ করে আমার নাম্বারটা ওকে দিলাম।
ওদের কথোপকথোন হয়তো আরও চলতো কিন্তু শতরূপা আর গীতশ্রী সেই সময় প্যান্ডেলে আসায় তখনকার মতো তা বন্ধ হলো। শতরূপাকে দেখে শুভ ওর দিকে এগিয়ে গেল। শুভকে ওখানে দেখতে পেয়ে শতরূপা বলে উঠলো "কিরে এখানে এসছিস, সব ঠিক আছে তো?"। শুভ- "চাবিটা নিতে ভুলে গেছি, ওটা নিতেই আসলাম"।
শতরূপা- ঠিক আছে, চাবিটা নিয়ে তুই বাড়ি যা, আমি আসছি একটু পরে।
শুভ শতরূপার থেকে চাবিটা নিয়ে বাড়ির পথ ধরে। সাইকেল চালাতে চালাতে ও দিব্যর কর্মকলাপ নিয়ে ভাবতে থাকে। শুভ মনে করেছিলো সেদিন দিব্যদা দোয়েল কাকিমাকে ঐভাবে দেখার পর থেকে ওদের মতো হয়তো আর যোগাযোগ হয়নি, কিন্তু মহিলা সমিতিতে এবার দায়িত্ব পেয়ে দিব্যদা দোয়েল কাকিমার সাথে বেশ ভালোই খাতির জমেছে। দোয়েল কাকিমাও দিব্যদার কাজকর্মে বেশ খুশি। তবে ওর আবার এর মধ্যে অন্যরকম কিছু মনে হলো না, কারন দোয়েল কাকিমা দরকারেই দিব্যদার বাইকে উঠেছে। আর তাছাড়া দিব্যদা যে যথেষ্ট কাজের সেটা শুভ নিজেও দেখেছে। এই জন্য দোয়েল কাকিমা শুধু নয়, আরও অনেকেই দিব্যদার প্রশংসা করে। শুভ ভাবলো ঐ হয়তো জোর করে অন্য মানে খোঁজার চেষ্টা করছে।
সেদিন রাতেই খাবার সময় শুভ শতরূপাকে জিজ্ঞেস করে "আচ্ছা দিব্যদা কি এবার তোমাদের পুজোর সাথে যুক্ত নাকি?"। শতরূপা একটু গম্ভীর মুখে উত্তর দেয় "হুমম, তোকে কে বললো?"। শুভ- "তখন পুজো প্যান্ডেলে গেলাম, দোয়েল কাকিমারা গল্প করছিলো, দিব্যদা নাকি ভালো কাজ করেছে" । "ভালো না খারাপ ওরাই বলতে পারবে, আমি বেশিরভাগ সময়টা সমিতির ঘরে থেকেই কাজ করি; লাইটিং আর প্যান্ডেলের দিকটা আমি দেখছি না"- কিছুটা বিরক্তির সুরে বলে শতরূপা। শতরূপার কথা শুনে শুভ চুপ করে যায়, আর কথা বাড়ায় না। কিছুক্ষণ পর শতরূপাই বলে ওঠে "কে কি কাজ করছে সে সবে নজর না দিয়ে পড়াশোনাতে দে, পুজোর কটা দিন তো পড়া হয় না আর এদিকে পুজোর পর ই যে পরীক্ষা সেই খেয়াল যেন থাকে"। শুভ বুঝতে পারে দিব্যদার কাজ করার ব্যাপারটা ই ওর মা ঘুরিয়ে বললো আর দিব্যদার এই সমিতির পুজোয় যুক্ত হওয়াটা যে শতরূপা এখনো মানতে পারেনি সেটাও আরো ভালো ভাবে বুঝতে পারে।
পুজো যতই এগিয়ে আসতে শতরূপার ব্যস্ততা যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। এর আগেও ও মহিলা সমিতির সাথে যুক্ত ছিলো, তবে কোনোবারই পুজোর আগে এমন দায়িত্ব পালন করতে হয়নি। তবে এরজন্য কলেজে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাকি দেয়নি। তবে ও ঠিক করেছে এবার কলেজে পুজোর ছুটি পড়ার দুদিন আগেই ছুটি নিয়ে নেবে। পুজো এগিয়ে আসার সাথে সাথে শুভর অবশ্য ভালোই হয়েছে, পড়াশোনার চাপ কমেছে, তবে বাড়ির বাইরে খুব একটা বেরোনো হচ্ছে না। ওর মা মহিলা সমিতির পুজোয় খুব ব্যস্ত, কিন্তু শতরূপা ওকে বলে দিয়েছে পুজোর আগে অহেতুক বাড়ির বাইরে না যেতে। শতরূপা এত ব্যস্ততার মধ্যেও শুভর পড়াশোনার দিকে ওর নজর কমেনি।
এরমধ্যে একদিন সন্ধ্যাবেলা শুভ টিউশন থেকে ফিরে দেখে ওদের বাড়ির গেটের তালা দেওয়া। শুভ বুঝতে পারে ওর মা কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে পুজোর কাজে বেরিয়েছে। শুভর কাছেও গেটের ডুপ্লিকেট চাবি থাকে, কিন্তু তাড়াহুড়োতে নিতে ভুলে গেছে। শুভ সাইকেল নিয়ে পুজো প্যান্ডেলের মাঠে আসে। এসে দেখে প্যান্ডেল তৈরির কাজ অনেকটাই হয়ে এসছে। এখন কয়েকজন লাইটিং এর কাজ করছে। মহিলা সমিতিরও কয়েকজন রয়েছে। কিন্তু শতরূপাকে কোথাও দেখতে পায়না। একবার মনে হয় ওর মা হয়তো মহিলা সমিতির ঘরে আছে, ওখানে গেলেই হয়তো ভালো হতো। ওখানেই যাবে কি না ভাবতে ভাবতে একসময় প্যান্ডেলের একপাশে দোয়েল, অপর্না আরও দুজন মহিলাকে গল্প করতে দেখে। হয়তো সমিতিরই সদস্যা হবে। ওদের দিকে এগিয়ে যায় শুভ। শুভকে দেখতে পেয়ে দোয়েল বলে ওঠে "কিরে শুভ এখানে?"। শুভ- "মাকে দেখেছো, আসলে বাড়ির চাবিটা মার কাছ।" দোয়েল- "শতরূপা দি একটু বাইরে গেল, তুই দ্বারা এক্ষুনি চলে আসবে"।
শুভ ওখানে দাঁড়িয়ে লাইটিং এর কাজ দেখতে থাকে। এমন সময় ওর কানে দিব্য নামটা শুনতে পায়। বুঝতে পারে নামটা ওর পাশের গল্পের জটলা থেকে এসছে। শুভ এবার কানটা খাড়া করে ওদের গল্পে মনোযোগ দেয়। অপর্না বলে "ঠিক বলেছো দোয়েলদি, দিব্য ছেলেটা সত্যি খুব কাজের, ও থাকায় এবার অনেক সুবিধেই হলো"। পাশ থেকে আরেকজন বলে "হ্যাঁ ও থাকায় প্যান্ডেলের জন্য খরচাটাও কিছুটা কম হলো"। দোয়েল- "ওর নাকি বদনামও রয়েছে, কিন্তু কথাবার্তা শুনে বেশ ভালোই মনে হল, কথাও বলে বেশ ভালো"। অপর্না- "হ্যাঁ গীতশ্রীদি এই ডিসিশনটা বেশ ভালোই নিয়েছে"। দোয়েল- "আর জানোতো ছেলেটা বেশ পরোপোকারী ও; এই তো সেদিন বাজার থেকে আসার সময় আমাকে ওর বাইকে লিফট দিলো; গত পরশুও তাই, শপিংয়ে যাবো কিচ্ছু পাচ্ছি না, দিব্য ই এসে ওর বাইকে নিয়ে গেলো, আবার শপিংয়ের পর বাড়ি অবধি নামিয়ে দিয়ে গেলো"।
অপর্না- তোমার যাতায়াতের খরচ বাঁচিয়ে দিলো
দোয়েল- তার মধ্যে আবার নিজের মোবাইল নাম্বার দিয়ে বললো কোনো দরকার হলে যেন ফোন করি।
অপর্না- তা তুমি কি করলে?
দোয়েল- নিয়ে রাখলাম নাম্বার টা। আমার অসুবিধে তোমরা কি বুঝবে!? শমীকের বাবা তো বাইরে থাকে আর শমীকও কলেজ, টিউশন নিয়ে ব্যস্ত থাকে, হঠাৎ কোনো দরকার হলে কাউকে তো চাই।
পাশ থেকে আরেকজন মহিলা জিজ্ঞেস কর "তোমার নাম্বার টা চায় নি?"
দোয়েল- আমিই ওরটা সেভ করে আমার নাম্বারটা ওকে দিলাম।
ওদের কথোপকথোন হয়তো আরও চলতো কিন্তু শতরূপা আর গীতশ্রী সেই সময় প্যান্ডেলে আসায় তখনকার মতো তা বন্ধ হলো। শতরূপাকে দেখে শুভ ওর দিকে এগিয়ে গেল। শুভকে ওখানে দেখতে পেয়ে শতরূপা বলে উঠলো "কিরে এখানে এসছিস, সব ঠিক আছে তো?"। শুভ- "চাবিটা নিতে ভুলে গেছি, ওটা নিতেই আসলাম"।
শতরূপা- ঠিক আছে, চাবিটা নিয়ে তুই বাড়ি যা, আমি আসছি একটু পরে।
শুভ শতরূপার থেকে চাবিটা নিয়ে বাড়ির পথ ধরে। সাইকেল চালাতে চালাতে ও দিব্যর কর্মকলাপ নিয়ে ভাবতে থাকে। শুভ মনে করেছিলো সেদিন দিব্যদা দোয়েল কাকিমাকে ঐভাবে দেখার পর থেকে ওদের মতো হয়তো আর যোগাযোগ হয়নি, কিন্তু মহিলা সমিতিতে এবার দায়িত্ব পেয়ে দিব্যদা দোয়েল কাকিমার সাথে বেশ ভালোই খাতির জমেছে। দোয়েল কাকিমাও দিব্যদার কাজকর্মে বেশ খুশি। তবে ওর আবার এর মধ্যে অন্যরকম কিছু মনে হলো না, কারন দোয়েল কাকিমা দরকারেই দিব্যদার বাইকে উঠেছে। আর তাছাড়া দিব্যদা যে যথেষ্ট কাজের সেটা শুভ নিজেও দেখেছে। এই জন্য দোয়েল কাকিমা শুধু নয়, আরও অনেকেই দিব্যদার প্রশংসা করে। শুভ ভাবলো ঐ হয়তো জোর করে অন্য মানে খোঁজার চেষ্টা করছে।
সেদিন রাতেই খাবার সময় শুভ শতরূপাকে জিজ্ঞেস করে "আচ্ছা দিব্যদা কি এবার তোমাদের পুজোর সাথে যুক্ত নাকি?"। শতরূপা একটু গম্ভীর মুখে উত্তর দেয় "হুমম, তোকে কে বললো?"। শুভ- "তখন পুজো প্যান্ডেলে গেলাম, দোয়েল কাকিমারা গল্প করছিলো, দিব্যদা নাকি ভালো কাজ করেছে" । "ভালো না খারাপ ওরাই বলতে পারবে, আমি বেশিরভাগ সময়টা সমিতির ঘরে থেকেই কাজ করি; লাইটিং আর প্যান্ডেলের দিকটা আমি দেখছি না"- কিছুটা বিরক্তির সুরে বলে শতরূপা। শতরূপার কথা শুনে শুভ চুপ করে যায়, আর কথা বাড়ায় না। কিছুক্ষণ পর শতরূপাই বলে ওঠে "কে কি কাজ করছে সে সবে নজর না দিয়ে পড়াশোনাতে দে, পুজোর কটা দিন তো পড়া হয় না আর এদিকে পুজোর পর ই যে পরীক্ষা সেই খেয়াল যেন থাকে"। শুভ বুঝতে পারে দিব্যদার কাজ করার ব্যাপারটা ই ওর মা ঘুরিয়ে বললো আর দিব্যদার এই সমিতির পুজোয় যুক্ত হওয়াটা যে শতরূপা এখনো মানতে পারেনি সেটাও আরো ভালো ভাবে বুঝতে পারে।