Thread Rating:
  • 32 Vote(s) - 3.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
মহানগরের আলেয়া
#28
পর্ব তিন – অচিনপুরের রাজকন্যে (#1)



যেদিন রাতে ইন্দ্রাণীর সাথে দেখা হয় না সেরাতে চুপচাপ নিঃসাড় হয়ে মশার কামড় খেতে খেতে ভাঙ্গা তক্তপোষে শুয়ে ওই নাম না জানা রাজকন্যের স্বপ্ন দেখে। ওই রকম সুন্দরী যদি কেউ ওকে ভালবাসত তাহলে ওর স্বপ্ন পূর্ণ হত, কিন্তু ওই নাম না জানা রাজকন্যে ওর ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ওর ট্যাক্সিতে যেসব সুন্দরীরা চাপে তারা শুধু মাত্র ধনী পুরুষের সাথী হয়, ওর মতন ট্যাক্সি চালকের সাথী হয় না। বেশ কয়েকদিন ইন্দ্রাণীর সাথে দেখা হয়নি, ছেলে মেয়ের সাথে দেখা করার জন্য দুর পাহাড়ে ওদের হস্টেলে ঘুরতে গেছে। ইন্দ্রাণী পাশে না থাকলে দানার বুকে অপার শূন্যতা দেখা দেয় তবে নিছক আলেয়া ভেবে সেই শূন্যতা বারেবারে দূরে ঠেলে দেয়।
সেদিন অন্যদিনের চেয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে, সারাদিনে ট্যাক্সি চালিয়ে আর অধির বাবুর টাকা মিটিয়ে তিনশ টাকা আয় হয়েছে। সন্ধ্যের সময়ে বস্তি সোরগোলে ভরে ওঠে, বর্ষায় ধানা জমি যেন জীবনদান পেয়েছে। অনেকে কাজ করে বাড়ি ফিরে এসেছে, ছোট কচি কাঁচারা কেউ কেউ গলা হাঁকিয়ে পড়তে বসেছে অথবা কেউ গলির মধ্যে খেলে বেড়াচ্ছে। পুরুষ গুলো এক না হয় রুমার রুটির দোকানে বসে আড্ডা মারছে না হয় রাস্তার ওপাশে চিনুর চায়ের দোকানে আড্ডা মারছে। দানা চিনুর চায়ের দোকানে কোনোদিন যায় না। পাশের ঘরে এক মাঝ বয়সি দম্পতি এসেছে, ওই রেল স্টেসানের পাশে একটা ছোট ফলের দোকান। দম্পতির চারখানা পুত্র কন্যে, কচি কাঁচার সোরগোল অনেক রাত পর্যন্ত চলে আর বিজলী চলে গেলে কথাই নেই। আসার সময়ে মদনার দোকান থেকে চোলাই কিনে এনেছিল, ভেবেছিল ঘরে চানাচুর থাকবে কিন্তু এদিক ওদিকে খুঁজে কিছু না পেয়ে ফের বাজারে বের হতে হল। 


দানা রাস্তা পেরিয়ে বাজারের দিকে হাঁটা লাগায়, রাস্তার ওপাশের এলাকার নাম পাল বাগান। কি করে ওই নাম পড়েছে সেটা অবশ্য সবার অজানা। পাল বাগানের রাস্তার ধারের বেশ কয়েকটা ফ্লাটের নির্মাণ কোন কারনে অনেক দিন থেকেই বন্ধ। সেই অর্ধ নির্মিত ফ্লাট বাড়ির পেছন দিকে থাকে দানার নাম না জানা রাজকন্যে। এইদিকের বাজারে সচারাচর আসেনা দানা কিন্তু সেদিন কি মনে করে পাল বাগানের বাজারের দিকে হাঁটা লাগালো। যেতে যেতে এক বার ওই চারতলা ফ্লাটের জানালার দিকে তাকায়, ওই জানালার ওইপাশে হয়ত ওর ওই নাম না জানা রাজকন্যে বসে আছে তার সাদা ঘোড়ায় চড়া রাজপুত্রের অপেক্ষায়। 

সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে ভিড় ভর্তি বাজারের অলিগলি আপন মনে পেরিয়ে চলে, ওর হাতে অঢেল সময়, এখুনি চোলাই গিলতে বসতে ইচ্ছুক নয়। রাতে একটা ইংরাজি সিনেমা দেখবে তারপরে আয়েশ করে তক্তপোষের ওপরে পা ছড়িয়ে চোলাই গিলবে। চলতে চলতে আশেপাশের নরনারীর দিকে চোখ চলে যায়। বিবাহিত বাঙালি মেয়েরা শাড়ি পরা একপ্রকার ছেড়ে দিয়েছে, বেশির ভাগ বিবাহিত মহিলারা সালোয়ার কামিজ অথবা জিন্স টপ পরে বের হয়। একে গ্রীষ্ম কাল তায় এই গুমোট গরম, সেই কারনে মেয়েদের পোশাক একটু বেশি রকমের খোলামেলা হয়ে গেছে, না কি এটাই আজকালকার রেওয়াজ। হাতা বিহীন চাপা কামিজ, মহিলাদের ঊর্ধ্বাঙ্গের সাথে আঠার মতন লেপটে, কেউ মোটা, কেউ শীর্ণকায়, কারুর আবার নধর লোভনীয় গঠন। অধিকাংশ জিন্সের প্যান্ট গুলো হাঁটু পর্যন্ত, ঊর্ধ্বাঙ্গে চাপা টপ, কারুর হাতা ছোট, কোনটা হাতা বিহীন, কারুর বগল মসৃণ কামানো, কারুর বগলে কালো চুল। পোশাকের ধরন কেমন যেন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতন মনে হয়। কেউ কেউ আবার স্কারট ব্লাউজ অথবা ফ্রকের মতন পোশাক পরে বরের সাথে অথবা প্রেমিকের সাথে ঘুরতে বেড়িয়েছে। এইবারে বেশ আম কাঁঠাল বাজারে এসেছে, সেই আম কাঁঠালের গন্ধে বাজার মম মম করছে। সামনে মনে হয় গরমের ছুটি অথবা ছুটি হয়ে গেছে তাই কচি কাঁচার দলে বাজার ভর্তি। 

এমন সময়ে এক মিঠে কণ্ঠস্বর ওর মনে দোলা দেয়, “কি দাদা কি বলছেন, এই আমের দাম কবে আবার পঞ্চাশ টাকা হল। এইত কাল কে চল্লিশ টাকায় কিনলাম এর মধ্যেই দশ টাকা বাড়িয়ে দিলেন?”

দানা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে ওই মিঠে কণ্ঠের অধিকারিণীকে, সে কন্যে আর কেউ নয়, সেই কন্যে ওর নাম না জানা রাজকন্যে। এত কাছ থেকে ওকে দেখতে পাবে সেটা ধারনা করতে পারেনি। এতদিন বেশ দুর থেকে দেখে গেছে, কোনোদিন ওর কণ্ঠ স্বর পর্যন্ত শোনেনি। পরনে সাদা রঙের চাপা জিন্স আর গোলাপি ছোট হাতার টপ। ভারি মিষ্টি দেখতে ওই রাজকন্যে, ঠিক যেন পটে আঁকা ছবি। একপাসে সিঁথি করে ঘাড় পর্যন্ত ঢেউ খেলা চুল আঁচড়ানো, চিবুকে একটা ছোট কাটা দাগ, যেটা আগে কোনোদিন লক্ষ্য করেনি। হাসলে পরে দুই টোপা গালে টোল পরে, গোলাপি নরম ঠোঁটের মাঝে মুক্তর মতন সাজানো দাঁতের পাটি। বয়স কত হবে, না দানা জানে না। পড়াশুনা কি শেষ না পড়াশুনা করছে, সেটাও দানার অজানা। সুন্দর প্রলুব্ধকর দেহের গঠন, বুকের ওপরে সুউন্নত কুঁচ যুগল বুকের শোভা বাড়িয়ে তুলেছে, ক্ষীণ কটিদেশ আর চাপা জিন্স ওই রাজকন্যের কোমরের নিচের অঙ্গে সাথে আঠার মতন লেপটে। এই রাজকন্যের দিকে তাকিয়ে ওর মনে কোনোদিন কোন খারাপ ধারনা আসেনি, কোনোদিন ওকে দেখে যৌন উত্তেজনা আসেনি। ওকে দেখে শুধুমাত্র ভালো লাগে যেটা আর কাউকে দেখে ওর লাগে না। সেই কারন দানার অজানা, কেন এত সুন্দরীকে দেখেও ওর মনে কামোত্তেজনা জাগে না? 

ফলের দোকানির সাথে প্রায় মিনিট পনেরো বচসা করে শেষ পর্যন্ত চল্লিশ টাকায় এক কিলো আম কিনে ছোট ভাইয়ের হাত ধরে আবার হাঁটা লাগায় অন্যদিকে। ওকে দেখে দানা চানাচুর কেনার কথা ভুলে যায়, ওর পিপাসিত চোখ ওই রাজকন্যেকে অনুসরন করে। কিছ দুর এগিয়ে আবার একটা দোকানে দাঁড়িয়ে নিজের জন্য প্রসাধনী কেনে, কোন এক দোকানে দাঁড়িয়ে ভাইয়ের জন্য ক্যাডবেরি কেনে, নিজেও একটা ক্যাডবেরি কিনে দুই ভাই বোনে মিলে খেতে খেতে আবার বাজারের পথে ঘোরাফেরা করে। দানা ওদের বেশ খানিক তফাতে দাঁড়িয়ে ওকে অনুসরন করে চলে। এইভাবে বেশ কিছুক্ষণ ওই রাজকন্যে নিজের ভাইয়ের সাথে বাজার করে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়, সেই সাথে দানা চানাচুর কেনা ভুলে ওকে অনুসরন করে। 

পথ মাঝে হটাত করে দাঁড়িয়ে ভাইকে বলে, “এই বাপ্পা, তুই এই জিনিস পত্র নিয়ে বাড়ি যা আমি এক্ষুনি আসছি।”

ওর ভাইয়ের নাম তাহলে বাপ্পা, একজনের নাম জানা গেছে অবশেষে। কিন্তু কি মনে করে দাঁড়িয়ে পরে সুন্দরী? দানা পাশের একটা দোকান থেকে বিড়ি কিনে, ধরিয়ে অদুর এক অন্ধকার কোনায় দাঁড়িয়ে ওই ললনার নজর এড়িয়ে ওকে লক্ষ্য করে। কোনোদিন কথা বলতে পারবে না কিন্তু এই একটু চোখের দেখায় মন ভরিয়ে নিতে চায়। 

ভাইটাও বেশ শয়তান, দিদির বাজুতে চিমটি কেটে বলে, “কাল কিন্তু এর চেয়ে বড় একটা চকলেট চাই, না হলে বাবাকে বলে দেব।”

সুন্দরী ললনা চোখ পাকিয়ে মিষ্টি হেসে ভাইয়ের মাথার চুলে বিলি কেটে বলে, “ঠিক আছে রে শয়তান, কাল কলেজ থেকে ফেরার পথে তোর চকলেট এনে দেব, এখন তুই যা আমি এখুনি আসছি।”

যাক, দানা ঠিক ধরেছিল, কলেজে পড়াশুনা করে। কিন্তু কোন কলেজে কি পড়াশুনা করে, সবকিছু অজানা। বাপ্পা দিদির হাত থেকে জিনিসের ব্যাগ নিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা লাগায়। ওই অনামিকা ললনা জিন্সের পকেট থেকে মোবাইল বের করে কারুর সাথে হেসে হেসে কথা বলতে শুরু করে। দানা বিড়ি জ্বালিয়ে অচেনা রাজকন্যের মিষ্টি কণ্ঠ স্বর শোনার জন্য কাছে চলে আসে। এদিকে ওদিকে তাকাতা তাকাতে বেশ কিছু দূরে দাঁড়িয়ে ওই অচেনা রাজকন্যের কথাবার্তা পরিষ্কার শুনতে পায়। 

সুন্দরী ললনা ফোনে গল্প করে, “এই কি করছিস তুই? ...... তুই কি পরে যাবি... না না, আমি ক্যাপ্রি আর ফ্রিল শার্ট পরব রে... হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক আছে আমি কাল ঠিক দশটা নাগাদ যদুহাট পৌঁছে যাবো......” নাক কুঁচকে আবেদন মাখা কণ্ঠে বলে, “তুই সোনা প্লিস দেরি করিস না যেন...” সঙ্গে সঙ্গে মুখ ভঙ্গিমা বদলে যায়, অভিমানি কণ্ঠে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ আমি যেন দেরি করি, যাঃ তাহলে... তোর সাজতে সবসময়ে দেরি লাগে... না না ওই সিনেমা দেখব না...” আবার খিল খিল করে হেসে ওঠে, “হ্যাঁ হয়ে গেছে শুধু ভিসা পেতে একটু সময় লাগবে এই যা...... ইসসস তুই কি আর সিনেমা দেখবি রে... তুই না যাতা একটা যাঃ...... ওকে বাই ডারলিং মনে থাকে যেন। আচ্ছা রাতে ফোন করিস...”

এমন লুকিয়ে যখন ফোনে কথা বলছে তাহলে নিশ্চয় অপর পাশের ব্যাক্তি ওই সুন্দরী ললনার প্রেমিক। সেটা ভাবতেই দানার বুকের ভেতরটা কেমন টনটন করে ওঠে। ওর বুক এক কথা বলে ওইদিকে ওর মাথা ওকে সাবধান বাণী শোনায়, না দানা না, এই সুন্দরী ললনা তোমার প্রেমিকা হতে পারে না, এহেন অলীক স্বপ্ন দেখা, এহেন তাসের ঘর বানানো ছেড়ে দাও। বিবেক বুদ্ধি সবসময়ে কি উচিত পথ দেখায়, মাঝে মাঝে হৃদয়ের কাছে হার মেনে যায় এই বিবেক বুদ্ধি। সুন্দরী ললনা ঢেউ খেলা চুলের এক গুচ্ছ আঙ্গুলে জড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলে চলে, মাঝে মাঝে ছোট ছোট পায়ে এদিকে ওদিকে হেঁটে বেড়ায়, আবার কখন নাচের ছন্দে নেচে ওঠে। সুন্দরী ললনার এহেন আচরনে দানার মন একদিকে খুশিতে ভরে ওঠে অন্য দিকে ব্যাথায় টনটন করে। এর মতন কোন সুন্দরীকে কি কোনোদিন নিজের করে নিতে পারবে, দানা?

দেখতে দেখতে প্রায় কুড়ি মিনিট ফোনে গল্প করে ওই ললনা সারা অঙ্গে মাদকতাময় ছন্দ তুলে ফ্লাটের সিঁড়ির দিকে পা বাড়ায়। দানা বেশ কিছুক্ষণ ওই ললনার চলে যাওয়ার পথের দিকে চেয়ে থাকে, মনে হয় যেন এই আবার ওই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে ওকে জিজ্ঞেস করবে, কি হয়েছে এতক্ষণ ধরে ওকে কেন দেখছে, অথবা ওকে ওর নাম জিজ্ঞেস করবে কি করে জিজ্ঞেস করবে। না তেমন কিছুই হয় না দানার সাথে। দানা যদি ওই সুন্দরী ললনার দৃষ্টি আড়াল করে ওর কাছাকাছি যেতে পারত তাহলে ওর নাম জানা হয়ে যেত। ইতিমধ্যে দুটো বিড়ি শেষ করে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়। বাড়ি ফেরার পথে মানসের মুদি দোকান থেকে শেষ পর্যন্ত চানাচুর কেনে। কিছু না হোক বাজারে যাওয়া ওর সার্থক, এতদিন পরে অনেক কাছ থেকে ওই অচেনা রাজকন্যের দেখা পেয়েছে। 

বাড়ি ফেরার পথে বরুনের ঘরে বসে ওর সাথে গল্প করে আসে। ঘরে দিকে পা বাড়ানোর সময়ে ওর মোবাইল বেজে ওঠে। শুধু মাত্র কেষ্ট আর ইন্দ্রাণী ছাড়া ওকে কেউ বিশেষ ফোন করে না। পকেট থেকে ফোন বের করে স্ক্রিনে দেখে ইন্দ্রাণীর ছবি, ওর দিকে চোখ টিপে নিচের ঠোঁট কামড়ে এক লাস্যময়ী হাসি দিয়ে তাকিয়ে, তারমানে ওই ফোন করেছে। ইন্দ্রাণীর ওই উত্তেজক হাসির ছবি ক্ষণিকের মধ্যে ওই বুকে আঁকা সুন্দরী ললনার ছবি মুছে দেয়। এই এক নারী, ধরা ছোঁয়ার বাইরে হলেও মাঝে মাঝেই হাতের নাগালে চলে আসে।

ওইপাশ থেকে ইন্দ্রাণী ওকে জিজ্ঞেস করে, “কি গো দানা কেমন আছো?”

মিষ্টি মধুর কণ্ঠস্বর শুনে দানার মন ভরে ওঠে, বেশ কিছুদিন হয়ে গেল ইন্দ্রাণীর দেখা নেই তাই বিষণ্ণ সুরে উত্তর দেয়, “এই চলে যাচ্ছে, তুমি নেই কি আর করি বল।” বলেই হেসে দেয়।

ইন্দ্রাণী ফিসফিস করে বলে, “ইসসস এইখানে আমারো বড্ড একা একা লাগছে, জানো।”

দানা জিজ্ঞেস করে, “ফিরছো কবে ওইখানে কাউকে জুটিয়ে নিলে নাকি?”

ইন্দ্রাণী কপট অভিমানী কণ্ঠে বলে, “কেন দানা, এই এক মাসেই আমি ফেলনা হয়ে গেলাম নাকি?”

দানা বাঁকা হেসে ওকে শান্ত করে বলে, “না না পাখী এই কথা কি তোমাকে বলেছি?”

ইন্দ্রাণী জিজ্ঞেস করে, “কি করছ এখন?”

দানা জবাব দেয়, “এই বাড়ি ফিরছি, বাড়ি ফিরে একটু দেশি গিলবো তারপরে মশাদের একটু রক্ত খাওয়াবো আর ঘুম, তুমি না থাকলে এই ত আমার রাতের কাজ।”

ইন্দ্রাণী ওকে বলে, “হুম বুঝলাম, খুব মন টাটিয়ে উঠছে দেখছি আমার জন্য? প্রেমে পরে গেলে নাকি এই আধ বুড়ির সাথে? দিন কতক গেলে কিন্তু মাথায় পাকা চুল গজাবে আমার।” বলেই ইন্দ্রাণী খিলখিল করে হেসে দেয়।

ওই হাসি শুনে দানা নিজেকে আর আয়ত্তে রাখতে পারে না, মানস চক্ষে ইন্দ্রাণীর অনাবৃত সুউন্নত স্তন যুগলের দুলুনি দেখতে পায়, গাড় বাদামি রঙের স্তনের বোঁটা জোড়া ফুলে উঠে নুড়ি পাথরের মতন শক্ত হয়ে গেছে। দানা ওর ওই স্তন জোড়া চুষতে আর ওই স্তনের বোঁটা আঙ্গুলের মাঝে নিয়ে কচলাতে বড় আনন্দ পায় আর ইন্দ্রাণী ওকে ওর স্তন জোড়া নিয়ে খেলা করাতে বড় সুখ পায়।

দানা মাথা চুলকে উত্তর দেয়, “তা একটু প্রেমে পড়তে দোষ কোথায় পাখী? তোমার মতন মিষ্টি পাখীকে ...” বলতে গিয়েও আর কথা শেষ করতে পারে না, মনে পরে যায় যে ইন্দ্রাণী ওর ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কালী পাড়ার দশ বাই দশের গুমটির দানার সাথে বিশাল ফ্লাটের মধ্য বয়সী ইন্দ্রাণীর মিলন যে হতে পারে না। 

দানাকে চুপ করে থাকতে দেখে ইন্দ্রাণী যেন ওর মনের কথা বুঝে ফেলে, হাল্কা হাসি দিয়ে বলে, “ঠিক আছে আর কিছু বলতে হবে না, বুঝতে পারছি যে এবারে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতেই হবে। যাই হোক যেই জন্য ফোন করা, আমি পরশু সন্ধ্যের ফ্লাইটে বাড়ি ফিরছি, তুমি ট্যাক্সি নিয়ে বিমান বন্দরে থেকো।”

দানা জানায়, “ঠিক আছে ম্যাডাম, সারথি হাজির হয়ে যাবে।”

কথা বলতে বলতে বাড়ির সামনে এসে দেখে যে কেষ্ট ওর জন্য অপেক্ষা করছে। ইন্দ্রাণীকে জানায় যে পরে রাতের দিকে পারলে ফোন করবে। ইন্দ্রাণী ফোন রেখে দিতেই কেষ্ট ওর দিকে তেড়ে আসে, কি ব্যাপার, কেষ্টর মূর্তি দেখে থমকে যায় দানা। কেষ্ট তেড়ে আসার সাথে সাথে আকাশে মেঘের গুড় গুড় আওয়াজ শুনতে পায়। কালো মেঘের আনা গোনা দেখে বুঝতে পারল যে কাল বৈশাখী আসন্ন। বিকেল থেকে যেমন গুমোট গরম পড়েছিল একটা ঝড় জল না হলে এই পৃথিবী আর শান্ত হতে পারছিল না। ওইদিকে পাশের বাড়ির কচিকাঁচা গুলো সোরগোলে মেতে উঠেছে। 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মহানগরের আলেয়া - by Nilpori - 08-01-2019, 02:41 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)