08-01-2019, 02:38 PM
পর্ব দুই – মধুমক্ষীর আহবান (#5)
দানা ওর মুখ আজলা করে নিজের দিকে তুলে জিজ্ঞেস করে, “সত্যি বলত আমাকে, আমার মতন একটা সামান্য ট্যাক্সি চালকের সাথে রাত কাটাতে তোমার এক টুকু ভয় করল না?”
ইন্দ্রাণী নাক কুঁচকে ছাতির ওপরে স্তন পিষে আবেগঘন কণ্ঠে বলে, “না গো একটুকু ভয় করেনি তোমাকে, ইচ্ছে করেই হোক বা অনিচ্ছা স্বত্তে হোক, প্রথম বার নেশার ঘোরে সব কিছু কেমন গুলিয়ে গেছিল। তারপরে কেন জানিনা আমার মন বলল যে তুমি বাকিদের মতন নও।” কিছুক্ষণ থেমে বলে, “জানো দানা, রোজ রাতে আমি কত অচেনা মানুষের সাথে কাটাই। কত লোকে আমার এই শরীরের ছোঁয়া পাওয়ার জন্য বুভুক্ষু হায়নার মতন ওঁত পেতে থাকে।” দানাও ওঁত পেতেই ছিল ওই নরম সুন্দরী শরীরের ছোঁয়া পেতে তবে মনের মধ্যে ;., করার ইতর প্রবিত্তি জাগেনি। ইন্দ্রাণী ওর লোমশ ছাতির ওপরে ঠোঁট ঘষে বলে, “পার্টিতে, ডিস্কোতে, ট্যাক্সিতে গাড়িতে যে যেখানে সুযোগ পায় সেই এখানে ওইখানে হাত লাগিয়ে দেয় মজা নেয়। এই আজকেই ওই লালবাড়ি সরকারী অফিসের এক উচ্চ পদস্থ অফিসারের সাথে রাত কাটিয়ে এসেছি। সুবিমল সাহা, রঞ্জনের বস, রঞ্জনের জন্য ওর সাথে আমাকে বেশ কিছু রাত কাটাতে হয়েছে যাতে রঞ্জন এই মহানগরে বদলি হতে পারে।” কথাটা বলতে বলতে ওর গলা ধরে আসে তাও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, “ওইদিকে রঞ্জন গ্রামের আদিবাসী মেয়েদের নিয়ে, কোয়াটারের চাকরানীর সাথে, এরতার বৌয়ের সাথে লম্পট গিরি করে বেড়ায় আর আমি এখানে নিজের কামজ্বালা মেটানোর জন্য এর তার শয্যাসঙ্গনী।” চোখের কোনে এক বিন্দু জল ছলকে ওঠে আর সেই সাথে মলিন হাসি হেসে ওকে বলে, “আমিও একটা বিবাহিত বেশ্যা, তাই না দানা?”
দানার কাছে এর উত্তর নেই, কি বলবে এর উত্তরে। পুরুষ মানুষ শত নারীর সাথে শৃঙ্গার সম্ভোগ করলেও পতিত নয়, এই পুরুষ মানুষের দেহের ক্ষুধা মেটানোর জন্য সেই আদিম জুগ থেকেই পতিতালয় তৈরি, কিন্তু এক নারী যদি বহু ভোগ্যা হয়ে যায় সমাজ তাকে পতিতা আখ্যা দিয়ে দেয়। কেন নারীর বুকের জ্বালা কোন পুরুষ বোঝে না? কমনীয় নারীর শরীর কি সবার ভোগের জন্য? পুরাতন কালে নাকি দেবতার মন্দিরে দেবদাসী হত, কেন হত, কারা সেই নারীদের ভোগ করত রাতের অন্ধকারে? এই দেশে পরস্ত্রীর বস্ত্র হরন হয়, সর্বসমক্ষে তাঁকে উলঙ্গ করে দেওয়া হয়, লজ্জায় মাথা নিচু করে সবাই, কিন্তু আসলে আড় চোখে নগ্ন নারীর যৌনতা উপভোগ করে। নিজ স্ত্রীর বস্ত্র হরন দেখেও এই দেশের মানুষ চুপ করে থাকে, ওদের কুটিল মনের অন্ধকারে কামক্ষুধা ধিকিধিকি করে জ্বলে, সবার সামনে নিজের স্ত্রীকে উলঙ্গ করা যেন একটা মজার খেলা। সতি সাধ্বী নারীকে এই পুরুষ মানুষ আগুনে পুড়িয়ে তাঁর নারীত্বের প্রমান দিতে বলে। পুরুষ শাসিত সমাজের বিরুদ্ধে কোন নারী আওয়াজ উঠালেই তাকে নির্বাসিত করা হয়। আসল পতিত হৃদয় কার, পুরুষের না নারীর?
দানা ওর মুখ আজলা করে ধরে ওর নরম গালের ওপরে বুড়ো আঙ্গুল বুলিয়ে আদর করে বলে, “না পাখী, তুমি খারাপ নও, তুমি এক জ্বলন্ত নারী যার বুকের মধ্যে আগুন।”
ইন্দ্রাণী চোখের কোল মুছে মিষ্টি হেসে দেয়, “আমি তাহলে একটা আগুনে পাখী। এত সোহাগ কোথায় রাখো গো?” বলেই শয়তানি করে উরুসন্ধি দিয়ে ওর নেতিয়ে পরা কঠিন লিঙ্গের ওপরে ঘষে দেয় আর জিজ্ঞেস করে, “এইখানে নাকি?”
দানাও মিষ্টি করে ওর পাছায় বার কতক আদরের চাঁটি মেরে বলে, “তুমি ভারি মিষ্টি, পাখী। কিন্তু এইরাতে আমাকে হটাত ডাকতে গেলে কেন?”
ইন্দ্রাণী ওর শরীরের ওপর থেকে নেমে পাশে শুয়ে ওকে বলে, “আবার সেই এক প্রশ্ন, বললাম ত তোমার আচরনে বন্ধুত্তের ছোঁয়া ছিল। আমার এহেন নেশা গ্রস্থ অবস্থা দেখে ফাঁকা ট্যাক্সিতেই ;., করে কোথাও ফেলে পালাতে পারতে। চাইলে তুমি আমাকে এইখানে বেঁধে ;., করতে পারতে। ঠিক কিনা, কিন্তু করনি কেন? তুমি অন্য ধাতুর তৈরি, তোমার ওপরে নির্ভর করা যায়, তাই আবার নিজেকে সঁপে দিলাম।”
দানা কি সত্যি কিছু করেনি, কিন্তু ইন্দ্রাণীকে দেখে মনে হল মনের কথাটা বলে ফেলাই উচিত, “তুমি যখন পেছনের সিটে এলিয়ে পড়েছিলে তখন তোমার লাল প্যান্টি বেড়িয়ে গেছিল, সেটা দেখেছি। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়ে তোমার বুকে পাছায় বারেবারে আমার হাত পরে গেছে, ওই যখন তুমি আমাকে নিজের ওপরে টেনে ধরলে তখন ত সবকিছু হয়ে গেল তাই না...”
ইন্দ্রাণী লজ্জায় হেসে ওর বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে ফেলে, “ব্যাস ব্যাস অনেক হয়েছে। এইটুকু জানি যে আমার মন বলল এই অশোধিত ট্যাক্সিচালক মূর্তির পেছনে একটা ভালো মানুষ লুকিয়ে তাই ধরা দিলাম।”
একে গ্রীষ্ম কাল, রাত ছোট হয় তার ওপরে পূর্ব প্রদেশে সূর্য তাড়াতাড়ি উদয় হয়, দেয়াল জুড়ে বিশাল কাঁচের জানালা দিয়ে ভোরের মৃদু আলো ওদের দুইজনের নগ্ন শরীরে মাখামাখি হয়ে যায়। ফ্লাট বাড়ির সামনে প্রচুর গাছপালা, পাখীর কিচিরমিচিরে প্রভাত ওদের এক নতুন দিনের হাতছানি দেয়। কোনোদিন এসি চালানো ঘরে থাকেনি দানা, কোনদিন এই নরম বিছানায় শোয়ার ভাগ্য হয়নি ওর।
কিছু পরে ইন্দ্রাণী বিছানা ছেড়ে উঠে ওকে চা পান করার প্রস্তাব দেয়, দানা মিচকি হেসে সম্মতি জানায়। উলঙ্গ হয়েই ইন্দ্রাণী রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায়, দানা বিছানায় শুয়ে শুয়ে বিভোর হয়ে ইন্দ্রাণীর নিটোল গোলগাল নরম পাছার দুলুনি দেখে আর মনে মনে হাসে, শেষে কি না এক ধনী সুন্দরী নারীর শয্যা সঙ্গী হতে পারল আবার সেই কামিনী নিজে হাতে চা বানিয়ে ওর কাছে আনবে, সত্যি না স্বপ্ন। দানা বিছানার ছেড়ে বাথরুমে ঢোকে, পকেট থেকে বিড়ি বের করে ধরাতে গিয়ে নিজের ছাতি পিঠ দেখে হেসে ফেলে। সারা শরীরের রাতের উদ্দাম কামকেলির চিহ্ন, ইন্দ্রাণীর নখের আঁচরের কামরের দাগ। বিড়ি ধরিয়ে শোয়ার ঘর ছেড়ে উলঙ্গ অবস্থাতেই বেড়িয়ে আসে, পেছন থেকে ইন্দ্রাণীর নগ্ন মোহিনী রুপ দুই চোখের ভেতর দিয়ে মাথার মধ্যে এঁকে নেয়। পায়ের আওয়াজ শুনে ইন্দ্রাণী ঘাড় ঘুরিয়ে ওকে শোয়ার ঘরে যেতে বলে আর জানায় একটু পরেই চা নিয়ে আসছে।
দানা পিঠের পেছনে বালিশ দিয়ে সামনের দিকে পা ছড়িয়ে বসে ইন্দ্রাণীর অপেক্ষা করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ইন্দ্রাণী চায়ের ট্রে আর বেশ কিছু বিস্কুট নিয়ে সারা অঙ্গে ছন্দ তুলে ওর কোলের ওপরে এসে বসে পরে। শিথিল লিঙ্গ পুনরায় নরম পাছার চাপে পরে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। দানা ওর পাতলা কোমর জড়িয়ে ওর গালে বুকে নাক মুখ ঘষে আদর করে দেয়। সুন্দরী লাস্যময়ী ইন্দ্রাণীকে কিছুতেই ছাড়তে ইচ্ছে করে না কিন্তু জানে যে সকাল হয়ে গেছে এবারে নিজের নিজের পথে বেড়িয়ে পড়তে হবে।
ইন্দ্রাণী একটা চায়ের কাপ ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “এবারে তোমার কথা বল, তোমার আসল নাম কি? কোথায় থাকো?”
দানা ওকে জড়িয়ে ধরে উত্তর দেয়, “বলেছিলাম ত আমার নাম দানা।”
ইন্দ্রাণী কপট অভিমান দেখিয়ে বুকের ওপরে কামড় বসিয়ে বলে, “বল না হলে কামড়ে দেব।”
দানা উত্তরে বলে নিজের সব কথা ইন্দ্রাণীর সামনে মেলে ধরে, “আমার একটা নাম ছিল, বিশ্বজিৎ মন্ডল, কিন্তু বস্তিতে কেউ আমাকে ওই নামে ডাকে না।” তারপরে দানা নিজের কথা জানায়, কালী পাড়ার বস্তিতে ওর ঘর, বারো ক্লাস পর্যন্ত পড়েছে, আরো পড়াশুনা করার ইচ্ছে ছিল কিন্তু মা মারা যাওয়াতে আর এগতে পারে না ইত্যাদি ওর জীবনের সব কথা। সাথে সাথে এও জানায় যে একসময়ে একটা মেয়েকে ভালবাসতে চেয়েছিল সেও কারুর স্ত্রী কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওকে ধোঁকা দিয়ে ওর অনেক টাকা খুইয়ে পালিয়ে যায়। দানার কথা শুনে ইন্দ্রাণী হেসে বলে যে ওর লিঙ্গ কেন বারেবারে পরস্ত্রীর নারীঅঙ্গ খোঁজে, সেই শুনে দানাও হেসে দেয়।
ইন্দ্রাণী চা খেতে খেতে নিজের কথা বলে, এই মহানগরের বুকে এক নামী কলেজ থেকে পড়াশুনা করেছে, এক নামী কলেজ থেকে ইংরাজি নিয়ে পড়াশুনা করেছে। বাবা খুব বড়লোক ব্যাবসায়ি ছিলেন, ছোটবেলা থেকে খুব দুরন্ত মেয়ে ছিল ওর পিঠে যেন দুটো পাখা লাগান থাকত তাই ওর মা নাম রাখেন পাখী। বড় হতে হতে হয়ে গেল উড়নচণ্ডী মেয়ে, কলেজে পড়া কালীন একজনকে ভালবাসে কিন্তু সেই ছেলে বিদেশ চলে যায় আর বিদেশে গিয়ে সেই ছেলেটা অন্য মেয়েকে বিয়ে করে। সেই ঘটনায় ইন্দ্রাণী বড় ধাক্কা পায় কিন্তু নিজেকে সামলে নেয় আর শান্ত হয়ে যায়। বাবা মায়ের দেখাশুনা করা ছেলে রঞ্জনের সাথে বিয়ে হয় কলেজে পড়া চলাকালীন, তখন ওর বয়স মাত্র বাইশ। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই একটা ফুটফুটে মেয়ে হয় তার তিন বছর পরে এক ছেলে। মেয়ের নাম শুচিস্মিতা আর ছেলে দেবাদিত্য। রঞ্জন চাকরি সুত্রে এই মহানগরের বাইরে থাকে, প্রথমে ছেলে মেয়ে যখন কচি ছিল তখন রঞ্জনের সাথেই থাকত ওই গ্রামে থাকত, স্বামী কন্যা আর পুত্র নিয়ে ভরাট সংসার।
রঞ্জন যে কামুকী স্বভাবের সেটা আগে থেকে জানত না। রঞ্জনের তখন ধুলিবাড়ি গ্রামে পোস্টিং ছিল, এক রাতে জল খেতে উঠে দেখে, রঞ্জন বাড়ির কাজের মেয়ের সাথে যৌন সঙ্গমে মত্ত। সকালে রঞ্জনের সাথে প্রচন্ড বসচা হয়, রঞ্জন ক্ষমা চেয়ে প্রতিজ্ঞা করে দ্বিতীয় বার করবে না। সেই গ্রামে থাকাকালীন ওর চোখের সামনে ওই ঘটনা আর হয়নি, তবে পেছনে হয়েছে কি না তার ব্যাপারে কিছু জানে না। ছেলে মেয়ে একটু বড় হতেই ওদের পড়াশুনার জন্য ওকে এই মহানগরে ফিরে আসতে হয়। ওর বাবা যৌতুকে এই বিশাল ফ্লাট দিয়েছিল সেইখানেই ওঠে। ছেলে মেয়েরা আরো একটু বড় হওয়ার পরে দুর হস্টেলে পাঠিয়ে দিল শিক্ষার জন্য আর ইন্দ্রাণী এই ফ্লাটে একা হয়ে গেল। ইন্দ্রাণী ভাবল যে রঞ্জনের কাছে ফিরে যাবে, গ্রাম হোক কি হয়েছে, স্বামীর ঘরে ফিরে যাবে আর ঘর কন্না করবে।
রঞ্জনকে অবাক করে দেবে ভেবে একদিন ওকে না জানিয়ে ওর কোয়াটারে গিয়ে দেখে কোন এক আদিবাসী মেয়ের সাথে যৌন সঙ্গমে মত্ত। সেই জঘন্য ছবি দেখে আর রঞ্জনের সাথে বচসায় যায় না। ওর বুঝতে দেরি হয়না যে রঞ্জন একটা কুকুরের লেজ, বারো বছর একটা নলের মধ্যে রেখে দিলেও সোজা হবে না। ইন্দ্রাণী যেমন চুপিচুপি ওইখানে গিয়েছিল ঠিক তেমনি ভাবে ওকে না জানিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। মহানগরের বুকে ফিরে ঠিক করে যে নিজের শারীরিক চাহিদা নিজেই মেটাবে, ওর মতন সুন্দরী নারীর একরাতের দাম অনেক। ব্যায়াম করে জিমে গিয়ে নিজেকে আগের মতন সুন্দরী করে তোলে আর ঠিক করে যে নিজের কামক্ষুধা মেটাবে বিত্তবান ধনী লোকের শয্যা সঙ্গিনী হয়ে। বিভিন্ন অফিস পার্টি, ইত্যাদি পার্টিতে যায়, লোকজনের সাথে ওঠা বসা করে, যদি ভাবে যে এই লোকের পকেটে পয়সা আছে আর সেই পুরুষ তার যৌন ক্ষুধা মেটাতে পারবে তবেই তার সাথে যায়। তবে প্রথম বারের সাক্ষাতে সবকিছু বোঝা যায় না, অনেক সময়ে অনেক রকমের দুশ্চরিত্র পুরুষের কবলে পরে, তখন মুখ বুজে সহ্য করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। এইভাবে দিন চলে যায়, একদিন হটাত রঞ্জন ওকে একটা হোটেলে দেখে ফেলে একজনের সাথে বেড়িয়ে আসছে, তবে রঞ্জনের সাথেও এক নারী ছিল। দুইজনের মধ্যে বোঝাপড়া হয়ে যায়, কেউ কারুর জীবনে দখল দেবে না। ইচ্ছে ছিল রঞ্জনকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে, কিন্তু ছেলে মেয়ের মুখ দেখে ডিভোর্সের পথে হাটেনি কেউ। ওদের বোঝাপড়া, ইন্দ্রাণী যা ইচ্ছে তাই করতে পারে আর সেই এক ছুট রঞ্জনকে দিয়ে দিয়েছে। দুইজনের বাবা মা এখন বেঁচে তাই মাঝে মাঝে ভদ্রতার খাতিরে রঞ্জন বাড়িতে আসে তবে ওই শনিবার বিকেলে এসে রবিবার বিকেলে আবার নিজের কর্মস্থলে ফিরে যায়। ইন্দ্রাণী আর রঞ্জনের মাঝের বন্ধন শুধু মাত্র ওদের পুত্র কন্যের মুখ চেয়ে টিকিয়ে রাখা ছাড়া আর কিছু নয়। ছেলে মেয়ে দুইজনেই দুর পাহাড়ি কলেজে পড়াশুনা করে, গরমের ছুটিতে পুজোর ছুটিতে বাড়ি ফেরে। তখন ওদের জন্য ইন্দ্রাণী রঞ্জনের কোয়াটারে যায় অথবা রঞ্জন কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে এই ফ্লাটে চলে আসে থাকার জন্য। পুত্র কন্যেকে ঘুণাক্ষরেও জানতে দেয়নি ওরা কেউ যে ওদের মধ্যে এক বিশাল দেয়াল উঠে গেছে আর সেই কথা ওদের বাবা মায়েরা ও জানেন না।
ইন্দ্রাণীর ইচ্ছে, ভবিষ্যতে বাচ্চাদের জন্য একটা ইংরেজি মিডিয়াম কলেজ খুলবে কিন্তু অত টাকা ওর কাছে নেই। আবার পড়াশুনা শুরু করতে চায়, বি এড, এম এড করতে চায়, হালে কয়েকটা কলেজে ইন্টারভিউ দিয়েছে কিন্তু কোন উত্তর পায়নি। এই ভাবে এরতার সাথে শুতে আর ভালো লাগে না তবে টাকার প্রয়োজনে আর কামক্ষুধা নিবারণের জন্য মাঝে মাঝেই বেড়িয়ে পরে। রঞ্জনের সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে এমন কিছু টাকা ওকে পাঠায় না। এত কথা বলার পরে ইন্দ্রাণী চুপ করে যায়, ওর চোখ জোড়া ওই খোলা জানালা দিয়ে বাইরের আকাশ দেখে। কাজল কালো চোখের কোল বেয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু বয়ে যায়। পুব আকাশে লাল রঙের সূর্য গাছের পেছন থেকে উঁকি ঝুকি মারছে। সোনা গলানো রোদ ভিজিয়ে দেয় অপ্সরার ন্যায় সুন্দরী ইন্দ্রাণীকে।
দানার মন উদাস হয়ে যায় ইন্দ্রাণীর কাহিনী শুনে। ওর কাছে টাকা থাকলে কি করত, হয়ত কোন কিছু করে এই সুন্দরী নারীর দুঃখমোচন করতে চেষ্টা করত। চা শেষ করে ইন্দ্রাণীকে একটা চুমু খেয়ে উঠে দাঁড়ায় দানা। দানাকে উঠে দাঁড়াতে দেখে ইন্দ্রাণী বুঝতে পারে যে ওদের বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে। ইন্দ্রাণীকে জড়িয়ে ধরে অভয় প্রদান করে, জানায় যে এক সময়ে এই কালো মেঘ সরে গিয়ে সুন্দর সকাল ওর জীবনে উদয় হবে। এবারে ওর যাওয়া উচিত, একটা ট্যাক্সি চালকের এত অলীক স্বপ্ন দেখা উচিত নয়। এক রাতে হয়ত ভুলে ওদের যৌন সঙ্গম হয়ে গিয়েছিল তাই বলে এই ধনী নারী কি প্রতি রাতে ওর অঙ্কশায়িনী হবে? যদি এই নারীর দুঃখমোচন করতে হয় তাহলে ওকে অনেক অনেক টাকা রোজগার করতে হবে।
দুইহাতে দানার গলা জড়িয়ে ধরে আবেগ মাখানো কণ্ঠে বলে, “আমরা কি বন্ধু হতে পারি?”
দানার মন কেমন করে ওঠে, ওর কোমর জড়িয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে বলে, “নিশ্চয় পাখী, আমরা বন্ধু হতেই পারি, কিন্তু আমি একজন সামান্য ট্যাক্সি চালক আর তুমি এক ধনী শিক্ষিতা নারী।”
মিষ্টি হেসে ইন্দ্রাণী জবাব দেয়, “বন্ধুত্তের মধ্যে ধনী গরীব আসে না দানা।”
দানা পোশাক পরে নেয়, ওরা মোবাইল নাম্বার আদান প্রদান করে নেয়। দরজায় দাঁড়িয়ে ইন্দ্রাণীকে শেষ বারের মতন আদর করে ফ্লাট ছেড়ে বেড়িয়ে আসে।
দানা ওর মুখ আজলা করে নিজের দিকে তুলে জিজ্ঞেস করে, “সত্যি বলত আমাকে, আমার মতন একটা সামান্য ট্যাক্সি চালকের সাথে রাত কাটাতে তোমার এক টুকু ভয় করল না?”
ইন্দ্রাণী নাক কুঁচকে ছাতির ওপরে স্তন পিষে আবেগঘন কণ্ঠে বলে, “না গো একটুকু ভয় করেনি তোমাকে, ইচ্ছে করেই হোক বা অনিচ্ছা স্বত্তে হোক, প্রথম বার নেশার ঘোরে সব কিছু কেমন গুলিয়ে গেছিল। তারপরে কেন জানিনা আমার মন বলল যে তুমি বাকিদের মতন নও।” কিছুক্ষণ থেমে বলে, “জানো দানা, রোজ রাতে আমি কত অচেনা মানুষের সাথে কাটাই। কত লোকে আমার এই শরীরের ছোঁয়া পাওয়ার জন্য বুভুক্ষু হায়নার মতন ওঁত পেতে থাকে।” দানাও ওঁত পেতেই ছিল ওই নরম সুন্দরী শরীরের ছোঁয়া পেতে তবে মনের মধ্যে ;., করার ইতর প্রবিত্তি জাগেনি। ইন্দ্রাণী ওর লোমশ ছাতির ওপরে ঠোঁট ঘষে বলে, “পার্টিতে, ডিস্কোতে, ট্যাক্সিতে গাড়িতে যে যেখানে সুযোগ পায় সেই এখানে ওইখানে হাত লাগিয়ে দেয় মজা নেয়। এই আজকেই ওই লালবাড়ি সরকারী অফিসের এক উচ্চ পদস্থ অফিসারের সাথে রাত কাটিয়ে এসেছি। সুবিমল সাহা, রঞ্জনের বস, রঞ্জনের জন্য ওর সাথে আমাকে বেশ কিছু রাত কাটাতে হয়েছে যাতে রঞ্জন এই মহানগরে বদলি হতে পারে।” কথাটা বলতে বলতে ওর গলা ধরে আসে তাও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, “ওইদিকে রঞ্জন গ্রামের আদিবাসী মেয়েদের নিয়ে, কোয়াটারের চাকরানীর সাথে, এরতার বৌয়ের সাথে লম্পট গিরি করে বেড়ায় আর আমি এখানে নিজের কামজ্বালা মেটানোর জন্য এর তার শয্যাসঙ্গনী।” চোখের কোনে এক বিন্দু জল ছলকে ওঠে আর সেই সাথে মলিন হাসি হেসে ওকে বলে, “আমিও একটা বিবাহিত বেশ্যা, তাই না দানা?”
দানার কাছে এর উত্তর নেই, কি বলবে এর উত্তরে। পুরুষ মানুষ শত নারীর সাথে শৃঙ্গার সম্ভোগ করলেও পতিত নয়, এই পুরুষ মানুষের দেহের ক্ষুধা মেটানোর জন্য সেই আদিম জুগ থেকেই পতিতালয় তৈরি, কিন্তু এক নারী যদি বহু ভোগ্যা হয়ে যায় সমাজ তাকে পতিতা আখ্যা দিয়ে দেয়। কেন নারীর বুকের জ্বালা কোন পুরুষ বোঝে না? কমনীয় নারীর শরীর কি সবার ভোগের জন্য? পুরাতন কালে নাকি দেবতার মন্দিরে দেবদাসী হত, কেন হত, কারা সেই নারীদের ভোগ করত রাতের অন্ধকারে? এই দেশে পরস্ত্রীর বস্ত্র হরন হয়, সর্বসমক্ষে তাঁকে উলঙ্গ করে দেওয়া হয়, লজ্জায় মাথা নিচু করে সবাই, কিন্তু আসলে আড় চোখে নগ্ন নারীর যৌনতা উপভোগ করে। নিজ স্ত্রীর বস্ত্র হরন দেখেও এই দেশের মানুষ চুপ করে থাকে, ওদের কুটিল মনের অন্ধকারে কামক্ষুধা ধিকিধিকি করে জ্বলে, সবার সামনে নিজের স্ত্রীকে উলঙ্গ করা যেন একটা মজার খেলা। সতি সাধ্বী নারীকে এই পুরুষ মানুষ আগুনে পুড়িয়ে তাঁর নারীত্বের প্রমান দিতে বলে। পুরুষ শাসিত সমাজের বিরুদ্ধে কোন নারী আওয়াজ উঠালেই তাকে নির্বাসিত করা হয়। আসল পতিত হৃদয় কার, পুরুষের না নারীর?
দানা ওর মুখ আজলা করে ধরে ওর নরম গালের ওপরে বুড়ো আঙ্গুল বুলিয়ে আদর করে বলে, “না পাখী, তুমি খারাপ নও, তুমি এক জ্বলন্ত নারী যার বুকের মধ্যে আগুন।”
ইন্দ্রাণী চোখের কোল মুছে মিষ্টি হেসে দেয়, “আমি তাহলে একটা আগুনে পাখী। এত সোহাগ কোথায় রাখো গো?” বলেই শয়তানি করে উরুসন্ধি দিয়ে ওর নেতিয়ে পরা কঠিন লিঙ্গের ওপরে ঘষে দেয় আর জিজ্ঞেস করে, “এইখানে নাকি?”
দানাও মিষ্টি করে ওর পাছায় বার কতক আদরের চাঁটি মেরে বলে, “তুমি ভারি মিষ্টি, পাখী। কিন্তু এইরাতে আমাকে হটাত ডাকতে গেলে কেন?”
ইন্দ্রাণী ওর শরীরের ওপর থেকে নেমে পাশে শুয়ে ওকে বলে, “আবার সেই এক প্রশ্ন, বললাম ত তোমার আচরনে বন্ধুত্তের ছোঁয়া ছিল। আমার এহেন নেশা গ্রস্থ অবস্থা দেখে ফাঁকা ট্যাক্সিতেই ;., করে কোথাও ফেলে পালাতে পারতে। চাইলে তুমি আমাকে এইখানে বেঁধে ;., করতে পারতে। ঠিক কিনা, কিন্তু করনি কেন? তুমি অন্য ধাতুর তৈরি, তোমার ওপরে নির্ভর করা যায়, তাই আবার নিজেকে সঁপে দিলাম।”
দানা কি সত্যি কিছু করেনি, কিন্তু ইন্দ্রাণীকে দেখে মনে হল মনের কথাটা বলে ফেলাই উচিত, “তুমি যখন পেছনের সিটে এলিয়ে পড়েছিলে তখন তোমার লাল প্যান্টি বেড়িয়ে গেছিল, সেটা দেখেছি। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়ে তোমার বুকে পাছায় বারেবারে আমার হাত পরে গেছে, ওই যখন তুমি আমাকে নিজের ওপরে টেনে ধরলে তখন ত সবকিছু হয়ে গেল তাই না...”
ইন্দ্রাণী লজ্জায় হেসে ওর বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে ফেলে, “ব্যাস ব্যাস অনেক হয়েছে। এইটুকু জানি যে আমার মন বলল এই অশোধিত ট্যাক্সিচালক মূর্তির পেছনে একটা ভালো মানুষ লুকিয়ে তাই ধরা দিলাম।”
একে গ্রীষ্ম কাল, রাত ছোট হয় তার ওপরে পূর্ব প্রদেশে সূর্য তাড়াতাড়ি উদয় হয়, দেয়াল জুড়ে বিশাল কাঁচের জানালা দিয়ে ভোরের মৃদু আলো ওদের দুইজনের নগ্ন শরীরে মাখামাখি হয়ে যায়। ফ্লাট বাড়ির সামনে প্রচুর গাছপালা, পাখীর কিচিরমিচিরে প্রভাত ওদের এক নতুন দিনের হাতছানি দেয়। কোনোদিন এসি চালানো ঘরে থাকেনি দানা, কোনদিন এই নরম বিছানায় শোয়ার ভাগ্য হয়নি ওর।
কিছু পরে ইন্দ্রাণী বিছানা ছেড়ে উঠে ওকে চা পান করার প্রস্তাব দেয়, দানা মিচকি হেসে সম্মতি জানায়। উলঙ্গ হয়েই ইন্দ্রাণী রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায়, দানা বিছানায় শুয়ে শুয়ে বিভোর হয়ে ইন্দ্রাণীর নিটোল গোলগাল নরম পাছার দুলুনি দেখে আর মনে মনে হাসে, শেষে কি না এক ধনী সুন্দরী নারীর শয্যা সঙ্গী হতে পারল আবার সেই কামিনী নিজে হাতে চা বানিয়ে ওর কাছে আনবে, সত্যি না স্বপ্ন। দানা বিছানার ছেড়ে বাথরুমে ঢোকে, পকেট থেকে বিড়ি বের করে ধরাতে গিয়ে নিজের ছাতি পিঠ দেখে হেসে ফেলে। সারা শরীরের রাতের উদ্দাম কামকেলির চিহ্ন, ইন্দ্রাণীর নখের আঁচরের কামরের দাগ। বিড়ি ধরিয়ে শোয়ার ঘর ছেড়ে উলঙ্গ অবস্থাতেই বেড়িয়ে আসে, পেছন থেকে ইন্দ্রাণীর নগ্ন মোহিনী রুপ দুই চোখের ভেতর দিয়ে মাথার মধ্যে এঁকে নেয়। পায়ের আওয়াজ শুনে ইন্দ্রাণী ঘাড় ঘুরিয়ে ওকে শোয়ার ঘরে যেতে বলে আর জানায় একটু পরেই চা নিয়ে আসছে।
দানা পিঠের পেছনে বালিশ দিয়ে সামনের দিকে পা ছড়িয়ে বসে ইন্দ্রাণীর অপেক্ষা করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ইন্দ্রাণী চায়ের ট্রে আর বেশ কিছু বিস্কুট নিয়ে সারা অঙ্গে ছন্দ তুলে ওর কোলের ওপরে এসে বসে পরে। শিথিল লিঙ্গ পুনরায় নরম পাছার চাপে পরে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। দানা ওর পাতলা কোমর জড়িয়ে ওর গালে বুকে নাক মুখ ঘষে আদর করে দেয়। সুন্দরী লাস্যময়ী ইন্দ্রাণীকে কিছুতেই ছাড়তে ইচ্ছে করে না কিন্তু জানে যে সকাল হয়ে গেছে এবারে নিজের নিজের পথে বেড়িয়ে পড়তে হবে।
ইন্দ্রাণী একটা চায়ের কাপ ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “এবারে তোমার কথা বল, তোমার আসল নাম কি? কোথায় থাকো?”
দানা ওকে জড়িয়ে ধরে উত্তর দেয়, “বলেছিলাম ত আমার নাম দানা।”
ইন্দ্রাণী কপট অভিমান দেখিয়ে বুকের ওপরে কামড় বসিয়ে বলে, “বল না হলে কামড়ে দেব।”
দানা উত্তরে বলে নিজের সব কথা ইন্দ্রাণীর সামনে মেলে ধরে, “আমার একটা নাম ছিল, বিশ্বজিৎ মন্ডল, কিন্তু বস্তিতে কেউ আমাকে ওই নামে ডাকে না।” তারপরে দানা নিজের কথা জানায়, কালী পাড়ার বস্তিতে ওর ঘর, বারো ক্লাস পর্যন্ত পড়েছে, আরো পড়াশুনা করার ইচ্ছে ছিল কিন্তু মা মারা যাওয়াতে আর এগতে পারে না ইত্যাদি ওর জীবনের সব কথা। সাথে সাথে এও জানায় যে একসময়ে একটা মেয়েকে ভালবাসতে চেয়েছিল সেও কারুর স্ত্রী কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওকে ধোঁকা দিয়ে ওর অনেক টাকা খুইয়ে পালিয়ে যায়। দানার কথা শুনে ইন্দ্রাণী হেসে বলে যে ওর লিঙ্গ কেন বারেবারে পরস্ত্রীর নারীঅঙ্গ খোঁজে, সেই শুনে দানাও হেসে দেয়।
ইন্দ্রাণী চা খেতে খেতে নিজের কথা বলে, এই মহানগরের বুকে এক নামী কলেজ থেকে পড়াশুনা করেছে, এক নামী কলেজ থেকে ইংরাজি নিয়ে পড়াশুনা করেছে। বাবা খুব বড়লোক ব্যাবসায়ি ছিলেন, ছোটবেলা থেকে খুব দুরন্ত মেয়ে ছিল ওর পিঠে যেন দুটো পাখা লাগান থাকত তাই ওর মা নাম রাখেন পাখী। বড় হতে হতে হয়ে গেল উড়নচণ্ডী মেয়ে, কলেজে পড়া কালীন একজনকে ভালবাসে কিন্তু সেই ছেলে বিদেশ চলে যায় আর বিদেশে গিয়ে সেই ছেলেটা অন্য মেয়েকে বিয়ে করে। সেই ঘটনায় ইন্দ্রাণী বড় ধাক্কা পায় কিন্তু নিজেকে সামলে নেয় আর শান্ত হয়ে যায়। বাবা মায়ের দেখাশুনা করা ছেলে রঞ্জনের সাথে বিয়ে হয় কলেজে পড়া চলাকালীন, তখন ওর বয়স মাত্র বাইশ। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই একটা ফুটফুটে মেয়ে হয় তার তিন বছর পরে এক ছেলে। মেয়ের নাম শুচিস্মিতা আর ছেলে দেবাদিত্য। রঞ্জন চাকরি সুত্রে এই মহানগরের বাইরে থাকে, প্রথমে ছেলে মেয়ে যখন কচি ছিল তখন রঞ্জনের সাথেই থাকত ওই গ্রামে থাকত, স্বামী কন্যা আর পুত্র নিয়ে ভরাট সংসার।
রঞ্জন যে কামুকী স্বভাবের সেটা আগে থেকে জানত না। রঞ্জনের তখন ধুলিবাড়ি গ্রামে পোস্টিং ছিল, এক রাতে জল খেতে উঠে দেখে, রঞ্জন বাড়ির কাজের মেয়ের সাথে যৌন সঙ্গমে মত্ত। সকালে রঞ্জনের সাথে প্রচন্ড বসচা হয়, রঞ্জন ক্ষমা চেয়ে প্রতিজ্ঞা করে দ্বিতীয় বার করবে না। সেই গ্রামে থাকাকালীন ওর চোখের সামনে ওই ঘটনা আর হয়নি, তবে পেছনে হয়েছে কি না তার ব্যাপারে কিছু জানে না। ছেলে মেয়ে একটু বড় হতেই ওদের পড়াশুনার জন্য ওকে এই মহানগরে ফিরে আসতে হয়। ওর বাবা যৌতুকে এই বিশাল ফ্লাট দিয়েছিল সেইখানেই ওঠে। ছেলে মেয়েরা আরো একটু বড় হওয়ার পরে দুর হস্টেলে পাঠিয়ে দিল শিক্ষার জন্য আর ইন্দ্রাণী এই ফ্লাটে একা হয়ে গেল। ইন্দ্রাণী ভাবল যে রঞ্জনের কাছে ফিরে যাবে, গ্রাম হোক কি হয়েছে, স্বামীর ঘরে ফিরে যাবে আর ঘর কন্না করবে।
রঞ্জনকে অবাক করে দেবে ভেবে একদিন ওকে না জানিয়ে ওর কোয়াটারে গিয়ে দেখে কোন এক আদিবাসী মেয়ের সাথে যৌন সঙ্গমে মত্ত। সেই জঘন্য ছবি দেখে আর রঞ্জনের সাথে বচসায় যায় না। ওর বুঝতে দেরি হয়না যে রঞ্জন একটা কুকুরের লেজ, বারো বছর একটা নলের মধ্যে রেখে দিলেও সোজা হবে না। ইন্দ্রাণী যেমন চুপিচুপি ওইখানে গিয়েছিল ঠিক তেমনি ভাবে ওকে না জানিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। মহানগরের বুকে ফিরে ঠিক করে যে নিজের শারীরিক চাহিদা নিজেই মেটাবে, ওর মতন সুন্দরী নারীর একরাতের দাম অনেক। ব্যায়াম করে জিমে গিয়ে নিজেকে আগের মতন সুন্দরী করে তোলে আর ঠিক করে যে নিজের কামক্ষুধা মেটাবে বিত্তবান ধনী লোকের শয্যা সঙ্গিনী হয়ে। বিভিন্ন অফিস পার্টি, ইত্যাদি পার্টিতে যায়, লোকজনের সাথে ওঠা বসা করে, যদি ভাবে যে এই লোকের পকেটে পয়সা আছে আর সেই পুরুষ তার যৌন ক্ষুধা মেটাতে পারবে তবেই তার সাথে যায়। তবে প্রথম বারের সাক্ষাতে সবকিছু বোঝা যায় না, অনেক সময়ে অনেক রকমের দুশ্চরিত্র পুরুষের কবলে পরে, তখন মুখ বুজে সহ্য করা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। এইভাবে দিন চলে যায়, একদিন হটাত রঞ্জন ওকে একটা হোটেলে দেখে ফেলে একজনের সাথে বেড়িয়ে আসছে, তবে রঞ্জনের সাথেও এক নারী ছিল। দুইজনের মধ্যে বোঝাপড়া হয়ে যায়, কেউ কারুর জীবনে দখল দেবে না। ইচ্ছে ছিল রঞ্জনকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে, কিন্তু ছেলে মেয়ের মুখ দেখে ডিভোর্সের পথে হাটেনি কেউ। ওদের বোঝাপড়া, ইন্দ্রাণী যা ইচ্ছে তাই করতে পারে আর সেই এক ছুট রঞ্জনকে দিয়ে দিয়েছে। দুইজনের বাবা মা এখন বেঁচে তাই মাঝে মাঝে ভদ্রতার খাতিরে রঞ্জন বাড়িতে আসে তবে ওই শনিবার বিকেলে এসে রবিবার বিকেলে আবার নিজের কর্মস্থলে ফিরে যায়। ইন্দ্রাণী আর রঞ্জনের মাঝের বন্ধন শুধু মাত্র ওদের পুত্র কন্যের মুখ চেয়ে টিকিয়ে রাখা ছাড়া আর কিছু নয়। ছেলে মেয়ে দুইজনেই দুর পাহাড়ি কলেজে পড়াশুনা করে, গরমের ছুটিতে পুজোর ছুটিতে বাড়ি ফেরে। তখন ওদের জন্য ইন্দ্রাণী রঞ্জনের কোয়াটারে যায় অথবা রঞ্জন কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে এই ফ্লাটে চলে আসে থাকার জন্য। পুত্র কন্যেকে ঘুণাক্ষরেও জানতে দেয়নি ওরা কেউ যে ওদের মধ্যে এক বিশাল দেয়াল উঠে গেছে আর সেই কথা ওদের বাবা মায়েরা ও জানেন না।
ইন্দ্রাণীর ইচ্ছে, ভবিষ্যতে বাচ্চাদের জন্য একটা ইংরেজি মিডিয়াম কলেজ খুলবে কিন্তু অত টাকা ওর কাছে নেই। আবার পড়াশুনা শুরু করতে চায়, বি এড, এম এড করতে চায়, হালে কয়েকটা কলেজে ইন্টারভিউ দিয়েছে কিন্তু কোন উত্তর পায়নি। এই ভাবে এরতার সাথে শুতে আর ভালো লাগে না তবে টাকার প্রয়োজনে আর কামক্ষুধা নিবারণের জন্য মাঝে মাঝেই বেড়িয়ে পরে। রঞ্জনের সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরে এমন কিছু টাকা ওকে পাঠায় না। এত কথা বলার পরে ইন্দ্রাণী চুপ করে যায়, ওর চোখ জোড়া ওই খোলা জানালা দিয়ে বাইরের আকাশ দেখে। কাজল কালো চোখের কোল বেয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু বয়ে যায়। পুব আকাশে লাল রঙের সূর্য গাছের পেছন থেকে উঁকি ঝুকি মারছে। সোনা গলানো রোদ ভিজিয়ে দেয় অপ্সরার ন্যায় সুন্দরী ইন্দ্রাণীকে।
দানার মন উদাস হয়ে যায় ইন্দ্রাণীর কাহিনী শুনে। ওর কাছে টাকা থাকলে কি করত, হয়ত কোন কিছু করে এই সুন্দরী নারীর দুঃখমোচন করতে চেষ্টা করত। চা শেষ করে ইন্দ্রাণীকে একটা চুমু খেয়ে উঠে দাঁড়ায় দানা। দানাকে উঠে দাঁড়াতে দেখে ইন্দ্রাণী বুঝতে পারে যে ওদের বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে। ইন্দ্রাণীকে জড়িয়ে ধরে অভয় প্রদান করে, জানায় যে এক সময়ে এই কালো মেঘ সরে গিয়ে সুন্দর সকাল ওর জীবনে উদয় হবে। এবারে ওর যাওয়া উচিত, একটা ট্যাক্সি চালকের এত অলীক স্বপ্ন দেখা উচিত নয়। এক রাতে হয়ত ভুলে ওদের যৌন সঙ্গম হয়ে গিয়েছিল তাই বলে এই ধনী নারী কি প্রতি রাতে ওর অঙ্কশায়িনী হবে? যদি এই নারীর দুঃখমোচন করতে হয় তাহলে ওকে অনেক অনেক টাকা রোজগার করতে হবে।
দুইহাতে দানার গলা জড়িয়ে ধরে আবেগ মাখানো কণ্ঠে বলে, “আমরা কি বন্ধু হতে পারি?”
দানার মন কেমন করে ওঠে, ওর কোমর জড়িয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে বলে, “নিশ্চয় পাখী, আমরা বন্ধু হতেই পারি, কিন্তু আমি একজন সামান্য ট্যাক্সি চালক আর তুমি এক ধনী শিক্ষিতা নারী।”
মিষ্টি হেসে ইন্দ্রাণী জবাব দেয়, “বন্ধুত্তের মধ্যে ধনী গরীব আসে না দানা।”
দানা পোশাক পরে নেয়, ওরা মোবাইল নাম্বার আদান প্রদান করে নেয়। দরজায় দাঁড়িয়ে ইন্দ্রাণীকে শেষ বারের মতন আদর করে ফ্লাট ছেড়ে বেড়িয়ে আসে।