08-01-2019, 10:29 AM
PART 1
আআহহহ রাজকুমার!! অতি দুরন্ত রাজকুমারের জ্বালায় নিজের মাতৃসুলভ আবেগে একটু উচ্চস্বরে বলে উঠল মৈথিলী। ছোট রাজকুমার বীরবাহু কে নিজের সবল বাহু তে জড়িয়ে ধরে বিশাল প্রান্তরের মতন রাজ প্রাসাদের ছাদের কিনারা থেকে টেনে নিয়ে চলে এল মৈথিলী। ছাদ থেকে নামবার আগে পশ্চিম আকাশের ঢলে পরা কালো মেঘের ফাঁকে উঁকি দেওয়া রক্তিম সূর্য কে নিরীক্ষণ করল মৈথিলী।রক্তিম আভা কালো মেঘের সাথে সন্ধি করে কেমন ভয়ার্ত করে দিয়েছে আকাশ টা কে। যুদ্ধের ডামাডোল এ এমন সুন্দর রক্তিম সূর্য যেন মনে হচ্ছে, কোন সুদুর থেকে বয়ে নিয়ে আসা মৃত্যুর প্রতীক। ছ্যাঁত করে উঠল মৈথিলীর বুক। বড় রাজ কুমার বিজয় গেছেন সকালেই যুদ্ধের আগাম সংবাদ আনতে। এখনো ফেরেন নি।
আর অপেক্ষা করল না মৈথিলী। ছোট রাজকুমার কে পালকের মতন তুলে নিজের কোলে তুলে যথা সম্ভব দ্রুত নেমে এল কক্ষে।রাজকুমারের কক্ষে থরে থরে সাজান ফলমূল মিষ্টান্ন। বিশাল কক্ষের ঠিক মাঝেই ছোট রাজকুমারের শয্যা। মৈথিলী রাজকুমার কে কোল থেকে নামিয়ে ছেড়ে দিল কক্ষে। রাজকুমার ঠিক পুতুলের মতই আবার দৌড়তে শুরু করল কোল থেকে নামাবার সাথে সাথেই। মৈথিলী এই কষ্ট আর বুক ভরা ঝঞ্ঝার মাঝেই হেসে ফেলল রাজকুমার কে দেখে। রাজপরিবারে গত দুই বৎসর সে আছে। আর তখন থেকেই দুই রাজকুমার এর দেখাশনার দায়িত্বে মৈথিলী। দুই রাজকুমার কে প্রানের থেকেও বেশি ভালবাসে সে। এই উল্লম রাজবংশের কাছে মৈথিলী কৃতজ্ঞ। বড় খারাপ সময়ে এখানে আশ্রয় পেয়ে সে নতুন জীবন পেয়েছে। উল্লম বংশের সব থেকে মহান রাজা, মহারাজ কিরীটী র মহাসভায় মৈথিলীর দাদা ভানুপ্রতাপ সভাসদ।
.........বেশ কিছু ফল কেটে একটি রুপোর থালায় সাজিয়ে রাজকুমার কে খাওয়াতে খাওয়াতে মৈথিলী এই সব কথাই ভেবে চলেছিল। একজন দাসি এসে রেড়ির তেলের বড় বড় প্রদীপ গুলো জ্বালিয়ে দিয়ে গেল। মানে আঁধার হয়ে গেছে। বুক টা যেন ফের খালি মনে হল মৈথিলীর। বড় রাজকুমার এখনো ফেরেন নি। মৈথিলী থাকলে জেতে দিত না যুবরাজ কে। কিন্তু মৈথিলী স্নানে ব্যস্ত ছিল তখন মাত্র সাতজন দেহরক্ষী নিয়ে যুবরাজ নিজের ঘোড়া নিয়ে বেরিয়ে গেছেন সশস্ত্র হয়ে।
রাজকুমার কে খাইয়ে নিয়ে, কিছু পুস্তক রাজ কুমারের সামনে রাখল মৈথিলী। প্রতিদিনের মতই পুস্তকে অনীহা প্রকাশ করল রাজকুমার। কিন্তু মৈথিলী তাতে কান না দিয়ে নিজের অঙ্গুলি ইশারা করল রাজকুমার কে পুস্তকের দিকে। প্রদীপের উজ্জ্বল আলো তে রাজকুমার পুস্তকে মনোনিবেশ করলেন অনিচ্ছাতেই। ঠিক সেই সময়েই একজন দাসি একটু ব্যস্ত হয়েই প্রবেশ করল কক্ষে।
- কি খবর লতিকা? মৈথিলীর গলার স্বর টা যেন মনে হল একটু ভারি
- বড় রাজকুমার এখনো ফেরেন নি, আর...। লতিকার মুখে কথাটা শুনেই মৈথিলী তাকাল লতিকার দিকে। ভীত অথচ বড়ই শান্ত স্বরে জিজ্ঞাসা করল,
- আর কি লতিকা?” একটু ভীত হয়ে, এদিক ওদিক তাকিয়ে লতিকা জবাব দিল
“এখান থেকে সাত মাইল দূরে, প্রধান যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে মাইল তিনেক আগে একটা ছোট লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। চর জানিয়েছে সেখানে বড় রাজকুমারের ছোট টুকরি টা কে লড়তে দেখা গেছে”।।
মৈথিলী চুপ হয়ে গেল যেন। চিন্তিত অভিব্যক্তি নিয়ে ইশারায় লতিকা কে চলে যেতে বলে দিল। রাজকুমার কে একবার দেখে বেরিয়ে এল বাইরে। রাজ প্রাসাদের ঝলমলে আলোতেও বাইরের আকাশে মেঘের ঘনঘটা স্পষ্ট প্রত্যক্ষ করল মৈথিলী। আর তার সাথেই বিশাল উঁচু বৃক্ষের ক্রমাগত দোদুল্যমান অবয়বের দিকে তাকাতেই মৈথিলী বুঝে গেল ঝড়ের পূর্বাভাস।ঝড় শুধু বাইরে নয়। মনের ভিতরেও উঠেছে প্রবল ভাবে মৈথিলীর। রাজকুমার কে ও চোখের আড়াল করতে পারে না। আর সেই রাজকুমার মৃত্যু মুখে? ছিঃ! ছিঃ!, কি ভাবছে ও। বুকের ভিতরে যেন মুগদরের দামামা। নাহ কিচ্ছু হবে না কুমারের। নিজের ছিপছিপে শরীর টা টান টান করে দাঁড়িয়ে, মূহুর্ত কাল ভেবে নিলো যেন মৈথিলী। সামান্য সময় ও নষ্ট করল না ও। ছোট রাজকুমার কে নিজের কোলে নিয়ে সাত মহলা রাজ প্রাসাদের গর্ভ মহলে এলো।
আআহহহ রাজকুমার!! অতি দুরন্ত রাজকুমারের জ্বালায় নিজের মাতৃসুলভ আবেগে একটু উচ্চস্বরে বলে উঠল মৈথিলী। ছোট রাজকুমার বীরবাহু কে নিজের সবল বাহু তে জড়িয়ে ধরে বিশাল প্রান্তরের মতন রাজ প্রাসাদের ছাদের কিনারা থেকে টেনে নিয়ে চলে এল মৈথিলী। ছাদ থেকে নামবার আগে পশ্চিম আকাশের ঢলে পরা কালো মেঘের ফাঁকে উঁকি দেওয়া রক্তিম সূর্য কে নিরীক্ষণ করল মৈথিলী।রক্তিম আভা কালো মেঘের সাথে সন্ধি করে কেমন ভয়ার্ত করে দিয়েছে আকাশ টা কে। যুদ্ধের ডামাডোল এ এমন সুন্দর রক্তিম সূর্য যেন মনে হচ্ছে, কোন সুদুর থেকে বয়ে নিয়ে আসা মৃত্যুর প্রতীক। ছ্যাঁত করে উঠল মৈথিলীর বুক। বড় রাজ কুমার বিজয় গেছেন সকালেই যুদ্ধের আগাম সংবাদ আনতে। এখনো ফেরেন নি।
আর অপেক্ষা করল না মৈথিলী। ছোট রাজকুমার কে পালকের মতন তুলে নিজের কোলে তুলে যথা সম্ভব দ্রুত নেমে এল কক্ষে।রাজকুমারের কক্ষে থরে থরে সাজান ফলমূল মিষ্টান্ন। বিশাল কক্ষের ঠিক মাঝেই ছোট রাজকুমারের শয্যা। মৈথিলী রাজকুমার কে কোল থেকে নামিয়ে ছেড়ে দিল কক্ষে। রাজকুমার ঠিক পুতুলের মতই আবার দৌড়তে শুরু করল কোল থেকে নামাবার সাথে সাথেই। মৈথিলী এই কষ্ট আর বুক ভরা ঝঞ্ঝার মাঝেই হেসে ফেলল রাজকুমার কে দেখে। রাজপরিবারে গত দুই বৎসর সে আছে। আর তখন থেকেই দুই রাজকুমার এর দেখাশনার দায়িত্বে মৈথিলী। দুই রাজকুমার কে প্রানের থেকেও বেশি ভালবাসে সে। এই উল্লম রাজবংশের কাছে মৈথিলী কৃতজ্ঞ। বড় খারাপ সময়ে এখানে আশ্রয় পেয়ে সে নতুন জীবন পেয়েছে। উল্লম বংশের সব থেকে মহান রাজা, মহারাজ কিরীটী র মহাসভায় মৈথিলীর দাদা ভানুপ্রতাপ সভাসদ।
.........বেশ কিছু ফল কেটে একটি রুপোর থালায় সাজিয়ে রাজকুমার কে খাওয়াতে খাওয়াতে মৈথিলী এই সব কথাই ভেবে চলেছিল। একজন দাসি এসে রেড়ির তেলের বড় বড় প্রদীপ গুলো জ্বালিয়ে দিয়ে গেল। মানে আঁধার হয়ে গেছে। বুক টা যেন ফের খালি মনে হল মৈথিলীর। বড় রাজকুমার এখনো ফেরেন নি। মৈথিলী থাকলে জেতে দিত না যুবরাজ কে। কিন্তু মৈথিলী স্নানে ব্যস্ত ছিল তখন মাত্র সাতজন দেহরক্ষী নিয়ে যুবরাজ নিজের ঘোড়া নিয়ে বেরিয়ে গেছেন সশস্ত্র হয়ে।
রাজকুমার কে খাইয়ে নিয়ে, কিছু পুস্তক রাজ কুমারের সামনে রাখল মৈথিলী। প্রতিদিনের মতই পুস্তকে অনীহা প্রকাশ করল রাজকুমার। কিন্তু মৈথিলী তাতে কান না দিয়ে নিজের অঙ্গুলি ইশারা করল রাজকুমার কে পুস্তকের দিকে। প্রদীপের উজ্জ্বল আলো তে রাজকুমার পুস্তকে মনোনিবেশ করলেন অনিচ্ছাতেই। ঠিক সেই সময়েই একজন দাসি একটু ব্যস্ত হয়েই প্রবেশ করল কক্ষে।
- কি খবর লতিকা? মৈথিলীর গলার স্বর টা যেন মনে হল একটু ভারি
- বড় রাজকুমার এখনো ফেরেন নি, আর...। লতিকার মুখে কথাটা শুনেই মৈথিলী তাকাল লতিকার দিকে। ভীত অথচ বড়ই শান্ত স্বরে জিজ্ঞাসা করল,
- আর কি লতিকা?” একটু ভীত হয়ে, এদিক ওদিক তাকিয়ে লতিকা জবাব দিল
“এখান থেকে সাত মাইল দূরে, প্রধান যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে মাইল তিনেক আগে একটা ছোট লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। চর জানিয়েছে সেখানে বড় রাজকুমারের ছোট টুকরি টা কে লড়তে দেখা গেছে”।।
মৈথিলী চুপ হয়ে গেল যেন। চিন্তিত অভিব্যক্তি নিয়ে ইশারায় লতিকা কে চলে যেতে বলে দিল। রাজকুমার কে একবার দেখে বেরিয়ে এল বাইরে। রাজ প্রাসাদের ঝলমলে আলোতেও বাইরের আকাশে মেঘের ঘনঘটা স্পষ্ট প্রত্যক্ষ করল মৈথিলী। আর তার সাথেই বিশাল উঁচু বৃক্ষের ক্রমাগত দোদুল্যমান অবয়বের দিকে তাকাতেই মৈথিলী বুঝে গেল ঝড়ের পূর্বাভাস।ঝড় শুধু বাইরে নয়। মনের ভিতরেও উঠেছে প্রবল ভাবে মৈথিলীর। রাজকুমার কে ও চোখের আড়াল করতে পারে না। আর সেই রাজকুমার মৃত্যু মুখে? ছিঃ! ছিঃ!, কি ভাবছে ও। বুকের ভিতরে যেন মুগদরের দামামা। নাহ কিচ্ছু হবে না কুমারের। নিজের ছিপছিপে শরীর টা টান টান করে দাঁড়িয়ে, মূহুর্ত কাল ভেবে নিলো যেন মৈথিলী। সামান্য সময় ও নষ্ট করল না ও। ছোট রাজকুমার কে নিজের কোলে নিয়ে সাত মহলা রাজ প্রাসাদের গর্ভ মহলে এলো।