09-08-2019, 01:05 AM
পার্টঃঃ২৭
তাই।
হ্যাঁ। তুই গেলি গেলি ম্যাডামকে সঙ্গে নিলি কেনো।
কি হয়েছে বলবিতো।
ম্যাডামের সঙ্গে তোকে জড়িয়ে হুইসপারিং ক্যাম্প চলছে। তোকে ফোটাবার ধান্দা। তুই হচ্ছিস চম্পকদা আর সুনিতদার পথের কাঁটা।
সেতো সেইদিন থেকে যেদিন মিত্রার ডাকা মিটিংয়ে ওদের ঝেরেছিলাম।
ম্যাডামের সঙ্গে তোর সম্পর্ক কিরে অনি।
জেনে লাভ।
বলনা। জানতে ইচ্ছে করছে।
কিহবে জেনে।
আমার চাকরি যায় যায়, কালকে আমাকে শোকজের নোটিস ধরাবে শুনতে পাচ্ছি।
কেনো ?
এখনো জানি না। তবে পর্শুদিনের এডিটোরিয়াল পেজে একটা ভুল খবর ছাপা হয়েছিল।
ওই পেজের দায়িত্বে এখন কে আছে ?
নিতাই হারামীর বাচ্চা।
তাহলে তোকে কেনো শোকজ করবে ?
নিউজটা আমি করেছিলাম।
ভুল নিউজ করলি কি করে ? কপি কোথায় ?
খুঁজে পাচ্ছি না। নিউজটা ভুল নয়, অনেক পুরনো।
ছাপা হলো কিকরে।
সেটাইতো আমি বুঝতে পারছি না।
ইনফর্মার ছেলেটি কে। নাম জানতে পেরেছিস।
আমাদের পরিচিত কেউ নয়।
থাকে কোথায়।
তোদের গ্রামেই থাকে মনে হচ্ছে।
কিকরে বুঝলি।
তোদের মেলা থেকে ভয়েজ অন করে কথা বলছে।
নাম বল।
তুই আমাদের প্রেসে চিফ মেসিনম্যান অতীশবাবুকে চিনিস।
না। কোনদিন প্রেসে আমাকে যেতে দেখেছিস।
অতীশবাবু ছেলেটির পিসেমশাই।
ও।
কি বলেছে।
সব কি জানতে পারছি। তবে তোরা ওখানে আছিস। হাত ধরাধরি করে ঘোরা ঘুরি করছিস সেই নিয়ে একটা কেচ্ছা।
ম্যাডামের খতি হচ্ছে এতে। আমি বললাম।
ছারতো। ওরা বড়লোক। তোর মতো দুচারটে ছেলেকে ওরা কেপ্ট হিসাবে রাখে। তারপর প্রয়োজন ফোরালে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। কোটি কোটি টাকার মালিক ওরা।
ঠিক বলেছিস। আমি এতটা বুঝি নি। ম্যাডাম আস্তে চাইলো তাই নিয়ে এলাম।
শালা।
সত্যি আমি জি এ এন ডি ইউ।
আমরটা আমাকে ঝারলি।
আমার ভীষণ ভয় করছেরে সন্দীপ, চাকরি গেলে খাবো কি।
দূরশালা তুই ম্যাডামকে নিয়ে ঘুরছিস আবার বলছিস চাকরি গেলে খাব কি।
সত্যিরে।
দাঁড়া তুই ধরে রাখ। আমার একটা ফোন এসেছে। কিছু নতুন নিউজ পাবো।
ঠিক আছে।
আমি ধরে রইলাম। বাসু আমার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। ও কিছুই বুঝতে পারছে না। তবে সামথিংস-রং এটা বুঝে নিতে ওর অসুবিধে হচ্ছে না। যতই হোক ও একজন ব্যবসায়ী। থট রিডিংটা ও জানে।
হ্যাঁ। শোন।
বল।
ছেলেটার নাম দিবাকার মন্ডল। ও অতীশবাবুর শালার ছেলে। পড়াশুনায় বেশ ভালো। রেজাল্টও ভাল। বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি থেকে বাংলায় এমএ করেছে।
তোর ইনফর্মার কে।
সুনিতদার ঘরেই কাজ করে।
ঠিক ঠিক দিচ্ছেতো না এডিটোরিয়াল পেজের মতো হবে।
তুই এভাবে বলিস না, তোর কথা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালনা করছি।
বল।
সুনিতদা ওর বায়োডাটা নিয়ে আজ সনাতন বাবুর সঙ্গে ঝামেলা করেছে। ওকে আজই এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিতে হবে।
সনাতনবাবু কি বলছে।
ম্যাডাম এলে সব হবে, বলে এড়িয়ে গেছেন।
কাগজ বেরোচ্ছে।
গত সাতদিনে এক লাখ সার্কুলেশন পরেছে।
কেনো।
ডিউটাইমে বেরোয় নি। বিটে কাগজ যাচ্ছে না।
সনাতনবাবু কি করছে।
সনাতনবাবুকে মানলেতো।
ও।
আর দুজন নতুন এসেছে কিংশুক আর অরিন্দম বলে। যেহেতু ম্যাডামের এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ওদের কাছে আছে, তাই কেউ কিছু বলে ওঠার সাহস পাচ্ছে না। তবে ওরা এক সাইড হয়ে গেছে।
পার্টিগত দিক থেকে কোনো ফর্মেসন।
একটা হয়েছে। তবে এখনো প্রকাশ্যে নয়।
তোকে যেখানে যেতে বলেছিলাম, গেছিলি।
গেছিলাম। কিছু কাজ হয়েছে। সেই জন্য তো এখনো পার্টি ইনভলভ হয় নি। ফর্মেসনও হয় নি। তুই এলে তোর সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটা ঠিক হবে।
তুই আজকের লেটেস্ট নিউজ আমায় দে যত রাতেই হোক। তোর আজ কি ডিউটি।
নাইট।
গুড। তুই এখন কোথায়।
ময়দানে। প্রেসক্লাবের লনে।
প্রেসক্লাবে ব্যাপারটা চাউর হয়েছে নাকি।
আমাদের হাউসের ছাগল গুলো আছে না। কম পয়সায় মাল খেয়ে বাওল করেছে।
ঠিক আছে। ছেলেটার নাম কি বললি, দিবাকর মন্ডল।
হ্যাঁ তুই মালটাকে খুঁজে বার কর। শুয়োরের বাচ্চা এক নম্বরের খান.... ছেলে।
খিস্তি করিস না।
খিস্তি করছি সাধে। একটা ছেলের জন্য হাউসটার আজ সর্ব্বনাশ হতে বসেছে।
ঠিক আছে ঠিক আছে। রাখি। রাত একটার পর তোকে ফোন করবো।
না। আজ কাগজ ছাড়তে ছাড়তে দেরি হবে।
ট্রেন ধরাবি কি করে।
এইকদিন ফার্স্ট ট্রেন ধরছে না।
ঠিক আছে।
রেকর্ডিংটা সেভ করলাম। বাঁধের ওপর ঘাসের ওপর থপকরে বসে পরলাম। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। বাসুর দিকে তাকালাম।
অনাদিকে খবর দেবো।
ওর দিকে হাত দেখিয়ে বললাম না।
ও আমার পাশে বসে আমার কাঁধে হাত রাখলো।
অফিসে কোনো গন্ডগোল।
মাথা নারলাম।
দিবাকরের ব্যাপারে কি বলছিলো।
আমিও ঠিক বুঝতে পারছি না। আমায় একটু একা থাকতে দে। তুই চলে যা। মিত্রা খুঁজলে বলবি আমি একটু ঘুরতে গেছি। আমি এখানেই থাকবো। না হলে অন্ধকারে ওই কলেজ ঘরে।
আচ্ছা।
বাসু হন হন করে চলে গেলো। আমি পকেট থেকে সিগারেট বার করে ধরালাম। অনেকক্ষণ ভাবলাম। একবার উঠে গিয়ে সামনের একটা চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে চলে এলাম। পাশ থেকে দু’চারজন হেঁটে চলে গেলো। এটুকু আমার দৃঢ় বিশ্বাস খাতা কলমে পাওয়ার আমার হাতে। কোম্পানীর সম্বন্ধে আমারও কিছু বলার থাকতে পারে। কিন্তু চাইলেই এখুনি বলতে পারবো না। সময় চাই।
মিত্রাকে জানাবো কি করে ? যেটুকু ও বলেছে তাতেই বুঝতে পেরেছি। ওর লাইফটা শেষ। হিমাংশুকে একটা ফোন করবো ? না থাক। আমারও পছন্দ অপছন্দ বলে কিছু থাকতে পারে। এইকদিনে যা ঘটলো তাহলে কি সব মিথ্যে। মিঃ ব্যানার্জী, অমিতাভদার বাড়িতে আমার ঘরে দাঁড়িয়ে যা যা বলেছেন, তা অভিনয়! হতে পারে। সেদিন মিত্রা মিঃ ব্যানার্জীকে বাস্টার্ড বলেছে। নিশ্চই এমন কিছু আছে যাতে একথা বলতে মিত্রার মতো মেয়ে বাধ্য হয়েছে। কথায় কথায় মিত্রা বলেছিল মিঃ ব্যানার্জীর যা কিছু প্রসার তা মিত্রার জন্য।
মিত্রা আমার শরীরে শরীর মিশিয়ে মিঃ ব্যানার্জীকে বাস্টার্ড বললো। সেটাও অভিনয়। না আমি মনে হচ্ছে মনে মনে দুর্বল হয়ে পরছি। এসব ফালতু চিন্তা করছি। মিত্রা জোর করে আমায় কোম্পানীর শেয়ার কিনিয়েছে। সত্যি যদি তাই হতো তাহলে আমার পেছনে মিত্রা ১৫০ কোটি টাকা খরচ করতো না। তাও আবার সাদা কালো মিশিয়ে।
আমি চেষ্টা করলেও সারা জীবনে এত টাকা ইনকাম করতে পারবো না। একটা গুডনিউজ আমার মালিকানার খবর এখনও ওরা জানতে পারে নি। আমি যদি কোন ড্রস্টিক স্টেপ নিই মিত্রা নিশ্চই বাধা দেবে না। তবু মন মানছে না। সন্দীপ ঠিক কথা বলেছে। ওদের পয়সা আছে। প্রোয়োজন ফোরালে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। তবু জীবনে অনেক মানুষ দেখেছি। আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না।
কাঁসর ঘন্টা বেজে উঠলো। রথ বের হচ্ছে। খুব ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু ভালো লাগল না। বাজি ফাটছে। মিত্রার আনা বাজি পোরানো হচ্ছে। সত্যি ছোট সময়ে এই বাজি ফাটাবার জন্য কতো আগ্রহ ছিলো। উনামাস্টার এই মেলার প্রেসিডেন্ট ছিলো। কাকা সেক্রেটারি। একটা বাজি চেয়েছিলাম বলে একটা থাপ্পর জুটেছিল। তারপর থেকে আর কোনদিন বাজি ফাটাবার নাম মুখে আনিনি। লোকে ফাটিয়েছে। আমি দেখেছি। অনাদিরা বাজি ফাটাবার কথা বললে বলেছি আমার ভয় করে।
দিবাকর মন্ডল আর আমার বন্ধু দিবাকর মন্ডল কি একব্যক্তি। এটা আমাকে প্রথমে জানতে হবে। সন্দীপ যা বায়োডাটা দিচ্ছে তাতে দিবাকরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। কাকে দিয়ে খবরটা নেবো। তিনটে ছায়া মূর্তি আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। চমকে তাকালাম, অনাদি বাসু চিকনা। ওরা আমার পাশে এসে বসলো। ভাবলাম ওদের কিছু বুঝতে দেবো না। ক্যাজুয়েল থাকার চেষ্টা করলাম। ওদের দেখে হাসলাম।
কিরে তোরা এই সময়। ফাংসন আরম্ভ হয়েছে।
কোন কথার উত্তর নেই। চোখ গুলো সব চিতাবাঘের মতো জ্বলছে। আমি এই চাঁদনীরাতেও ওদের পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি।
কিরে কথা বলছিস না কেনো। মিত্রা কোথায় ?
পায়ের তলাটা দেখেছিস। অনাদি বললো।
আমি দেঁতো হাসি হেসে অনাদির দিকে তাকালাম। বিকেলের দেখা অনাদি আর এখনকার অনাদির মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। নিচের দিকটা একবার দেখে নিয়ে অনাদির চোখে চোখ রাখলাম। গনগনে আগুনের কয়লার টুকরো।
কেনো।
এইটুকু সময় কটা সিগারেট খেয়েছিস।
হ্যাঁ শেষ হয়ে গেছে। চিকনা একটা সিগারেট দিবি।
তুইতো এতো সিগারেট খাস না।
খাই না, আজ খেতে ভালো লাগছে।
চিকনা প্যাকেটটা এগিয়ে দিলো। একটা সিগারেট বার করে নিলাম। তারপর আবার প্যাকেটটা ফেরত দিলাম।
চিকনা বললো, তোর কাছে রাখ। আমি পাশে রাখলাম।
ফোনটা বেজে উঠলো। সন্দীপ।
হ্যাঁ আমি তোকে পরে ফোন করছি। আমার কথা বলা শেষ হলো না, অনাদি ফোনটা ছোঁমেরে আমার হাত থেকে নিয়ে নিলো। কানে তুলে বললো, আপনি কে বলছেন। এরি মধ্যে ও ভয়েসমুড অন করে দিয়েছে, রেকর্ডিং বটম টিপে দিয়েছে।
আমি অনির বন্ধু সন্দীপ বলছি।
এখুনি অনির গলা পেলাম, আপনি কে ?
আমি অনাদি, অনির বন্ধু।
অনি নেই।
ধরুন।
অনাদি ইশারায় কথা বলতে বললো।
হ্যাঁ বল।
শোন পাক্কা খবর। দিবাকর মন্ডল তোর বন্ধু। তোর সঙ্গে ও এক সঙ্গে পরেছে। এমনকি তোর ডিটেলস পর্যন্ত এখানে দিয়ে দিয়েছে। আর কি বলবো তোকে, কথাটা বলতে তোকে খুব খারাপ লাগছে। সুনিতদার মন পেতে বলেছে, তোর বাপ-মার ঠিক নেই। এখন এখানে লাইভ রেকর্ডিং চলছে। ছেলেটি মনে হয় ম্যাডামের খুব কাছাকাছি আছে। এমন কি ম্যাডামের গলাও শুনতে পাচ্ছে এরা।
কোথায় চলছে রেকর্ডিং।
সুনিতদার ঘরে।
আর কে আছে।
যারা থাকার তারাই আছে। তুই এর একটা বিহিত কর অনি।
আমি অফিসে ঢুকছি। দেখি লাস্ট আপডেট কি হয়।
ঠিক আছে। তুই ফোন কর। আমার ফোন অন থাকবে।
লাইনটা কেটে গেলো।
অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে। চিকনা চেঁচিয়ে উঠলো, অনাদি তুই একবার পারমিশন দে, আমি ওকে কাল সকালের মধ্যে গাইপ করে দেবো।
ঘাউরামি করিস না। আমি বললাম।
বাসু চুপচাপ, শুধু বললো, ওকে হাতে মেরে কিছু হবে না, ভাতে মারতে হবে।
ঠিক বলেছিস।
ও এখন কোথায়রে চিকনা।
উঃ তোরা থাম না। আমি বললাম।
থামার সময় এখন নেই অনি। মালটা আমি বুঝতে পেরেছি।
কিছুই বুঝিস নি।
তুই বোঝা।
কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকলাম। চোখ দুটো কেমন জ্বালা জ্বালা করছে। জীবনে বাবা-মাকে ঠিক মনে পরে না। কিন্তু জ্ঞানতঃ কোনদিন বাবা-মাকে আমি অশ্রদ্ধা করি নি। কিন্তু আজ প্রথম বাবা-মার সম্বন্ধে কোন খারাপ কথা শুনলাম। বুকের ভেতরটা ভীষণ যন্ত্রনা করছে। মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে আসবে। তিনজোড়া চোখ আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে। ওদের বুঝতে দেওয়া যাবে না। তাহলে একটা বিচ্ছিরি কান্ড ঘটে যাবে। আমি মাথা নীচু করে বসে আছি।
অনি শরীর খারাপ লাগছে। বাসু আমার পিঠে হাত দিলো।
আমি বাসুর মুখের দিকে তাকালাম। হয়তো চোখটা ছল ছল করে উঠেছিলো।
অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। চিকনার দিকে তাকিয়ে বললো, আজ রাতেই কাজ হাসিল কর।
কথা বলতে গিয়ে আমার গলা ধরে এসেছে। আমি অনাদির হাত চেপে ধরে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। না এরকম করিস না। প্লিজ।
তোকে যে অপমান করে সে আমাদেরও অপমান করেছে।
ঠিক আছে। তার জন্য....।
তুই জানিস না এই গ্রামটাকে ও জ্বালিয়ে দিচ্ছে। খালি বন্ধু বলে ও পার পেয়ে যাচ্ছে।
দূর বোকা। হিংসার রাজনীতি করতে নেই। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা কর। সব ঠিক হয়ে যাবে।
অনাদি একটু ঠান্ডা হলো।
আমি চিকনার দিকে তাকিয়ে বললাম, একটু চা খাওয়াবি।
চিকনা ছুটে চলে গেলো।
অনাদি আমার হাত চেপে ধরলো। অনি তুই বল। তুই একা চাপ নিস না। আমি জানি তোর সমস্যা তুই একলাই সলভ করবি। আমরা যদি তোকে কিছুটা হেল্প করতে পারি। যেহেতু ব্যাপরটা আমাদের এখানকার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। তুই এখান থেকে ১০ বছর ডিটাচ। এখানের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তুই দিন চারেকে তার কিছুই জানতে পারবি না। ওপর ওপর সবাই ভালো। ভেতর থেকে ছুঁরি চালাবর লোক প্রচুর। তুই অনেক কষ্ট করে এখানে এসে দাঁড়িয়েছিস। আমরা তোকে হারাতে চাই না।
মিত্রা কোথায়।
ও সামনে বসে ফাংসন দেখছে।
ছবিটবি তুলছে না।
সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। উনি আমাদের গেস্ট, তুই আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখ, ওনার কোন অসুবিধে হবে না।
দিবাকর কোথায়।
ওর ব্যবস্থা করছি।
এখন নয়।
ঠিক আছে তুই বল।
চিকনা চা নিয়ে চলে এলো।
আমি ওদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কথা বললাম। ওদের গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে গেলো। অফিসিয়াল ব্যাপারটা এত জটিল ওরা কিছুতেই ধরতে পারছে না। আমি চিকনাকে বললাম, মেলার মজাটা আজ করতেই পারলাম না। তুই এক কাজ করবি।
বল।
এমন কোন বিশ্বস্ত লোক আছে, যে দিবাকরকে ফলো করবে।
এই কাজ, তোকে চিন্তা করতে হবে না। তোকে আধঘন্টার মধ্যে ডিটেলস দিয়ে দিচ্ছি।
না। ওকে মনিটরিং কর। যেন কিছু বুঝতে না পারে। ফাংসন কখন শেষ হবে।
১২টা বাজবে।
তাই।
হ্যাঁ। তুই গেলি গেলি ম্যাডামকে সঙ্গে নিলি কেনো।
কি হয়েছে বলবিতো।
ম্যাডামের সঙ্গে তোকে জড়িয়ে হুইসপারিং ক্যাম্প চলছে। তোকে ফোটাবার ধান্দা। তুই হচ্ছিস চম্পকদা আর সুনিতদার পথের কাঁটা।
সেতো সেইদিন থেকে যেদিন মিত্রার ডাকা মিটিংয়ে ওদের ঝেরেছিলাম।
ম্যাডামের সঙ্গে তোর সম্পর্ক কিরে অনি।
জেনে লাভ।
বলনা। জানতে ইচ্ছে করছে।
কিহবে জেনে।
আমার চাকরি যায় যায়, কালকে আমাকে শোকজের নোটিস ধরাবে শুনতে পাচ্ছি।
কেনো ?
এখনো জানি না। তবে পর্শুদিনের এডিটোরিয়াল পেজে একটা ভুল খবর ছাপা হয়েছিল।
ওই পেজের দায়িত্বে এখন কে আছে ?
নিতাই হারামীর বাচ্চা।
তাহলে তোকে কেনো শোকজ করবে ?
নিউজটা আমি করেছিলাম।
ভুল নিউজ করলি কি করে ? কপি কোথায় ?
খুঁজে পাচ্ছি না। নিউজটা ভুল নয়, অনেক পুরনো।
ছাপা হলো কিকরে।
সেটাইতো আমি বুঝতে পারছি না।
ইনফর্মার ছেলেটি কে। নাম জানতে পেরেছিস।
আমাদের পরিচিত কেউ নয়।
থাকে কোথায়।
তোদের গ্রামেই থাকে মনে হচ্ছে।
কিকরে বুঝলি।
তোদের মেলা থেকে ভয়েজ অন করে কথা বলছে।
নাম বল।
তুই আমাদের প্রেসে চিফ মেসিনম্যান অতীশবাবুকে চিনিস।
না। কোনদিন প্রেসে আমাকে যেতে দেখেছিস।
অতীশবাবু ছেলেটির পিসেমশাই।
ও।
কি বলেছে।
সব কি জানতে পারছি। তবে তোরা ওখানে আছিস। হাত ধরাধরি করে ঘোরা ঘুরি করছিস সেই নিয়ে একটা কেচ্ছা।
ম্যাডামের খতি হচ্ছে এতে। আমি বললাম।
ছারতো। ওরা বড়লোক। তোর মতো দুচারটে ছেলেকে ওরা কেপ্ট হিসাবে রাখে। তারপর প্রয়োজন ফোরালে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। কোটি কোটি টাকার মালিক ওরা।
ঠিক বলেছিস। আমি এতটা বুঝি নি। ম্যাডাম আস্তে চাইলো তাই নিয়ে এলাম।
শালা।
সত্যি আমি জি এ এন ডি ইউ।
আমরটা আমাকে ঝারলি।
আমার ভীষণ ভয় করছেরে সন্দীপ, চাকরি গেলে খাবো কি।
দূরশালা তুই ম্যাডামকে নিয়ে ঘুরছিস আবার বলছিস চাকরি গেলে খাব কি।
সত্যিরে।
দাঁড়া তুই ধরে রাখ। আমার একটা ফোন এসেছে। কিছু নতুন নিউজ পাবো।
ঠিক আছে।
আমি ধরে রইলাম। বাসু আমার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। ও কিছুই বুঝতে পারছে না। তবে সামথিংস-রং এটা বুঝে নিতে ওর অসুবিধে হচ্ছে না। যতই হোক ও একজন ব্যবসায়ী। থট রিডিংটা ও জানে।
হ্যাঁ। শোন।
বল।
ছেলেটার নাম দিবাকার মন্ডল। ও অতীশবাবুর শালার ছেলে। পড়াশুনায় বেশ ভালো। রেজাল্টও ভাল। বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি থেকে বাংলায় এমএ করেছে।
তোর ইনফর্মার কে।
সুনিতদার ঘরেই কাজ করে।
ঠিক ঠিক দিচ্ছেতো না এডিটোরিয়াল পেজের মতো হবে।
তুই এভাবে বলিস না, তোর কথা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালনা করছি।
বল।
সুনিতদা ওর বায়োডাটা নিয়ে আজ সনাতন বাবুর সঙ্গে ঝামেলা করেছে। ওকে আজই এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিতে হবে।
সনাতনবাবু কি বলছে।
ম্যাডাম এলে সব হবে, বলে এড়িয়ে গেছেন।
কাগজ বেরোচ্ছে।
গত সাতদিনে এক লাখ সার্কুলেশন পরেছে।
কেনো।
ডিউটাইমে বেরোয় নি। বিটে কাগজ যাচ্ছে না।
সনাতনবাবু কি করছে।
সনাতনবাবুকে মানলেতো।
ও।
আর দুজন নতুন এসেছে কিংশুক আর অরিন্দম বলে। যেহেতু ম্যাডামের এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ওদের কাছে আছে, তাই কেউ কিছু বলে ওঠার সাহস পাচ্ছে না। তবে ওরা এক সাইড হয়ে গেছে।
পার্টিগত দিক থেকে কোনো ফর্মেসন।
একটা হয়েছে। তবে এখনো প্রকাশ্যে নয়।
তোকে যেখানে যেতে বলেছিলাম, গেছিলি।
গেছিলাম। কিছু কাজ হয়েছে। সেই জন্য তো এখনো পার্টি ইনভলভ হয় নি। ফর্মেসনও হয় নি। তুই এলে তোর সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটা ঠিক হবে।
তুই আজকের লেটেস্ট নিউজ আমায় দে যত রাতেই হোক। তোর আজ কি ডিউটি।
নাইট।
গুড। তুই এখন কোথায়।
ময়দানে। প্রেসক্লাবের লনে।
প্রেসক্লাবে ব্যাপারটা চাউর হয়েছে নাকি।
আমাদের হাউসের ছাগল গুলো আছে না। কম পয়সায় মাল খেয়ে বাওল করেছে।
ঠিক আছে। ছেলেটার নাম কি বললি, দিবাকর মন্ডল।
হ্যাঁ তুই মালটাকে খুঁজে বার কর। শুয়োরের বাচ্চা এক নম্বরের খান.... ছেলে।
খিস্তি করিস না।
খিস্তি করছি সাধে। একটা ছেলের জন্য হাউসটার আজ সর্ব্বনাশ হতে বসেছে।
ঠিক আছে ঠিক আছে। রাখি। রাত একটার পর তোকে ফোন করবো।
না। আজ কাগজ ছাড়তে ছাড়তে দেরি হবে।
ট্রেন ধরাবি কি করে।
এইকদিন ফার্স্ট ট্রেন ধরছে না।
ঠিক আছে।
রেকর্ডিংটা সেভ করলাম। বাঁধের ওপর ঘাসের ওপর থপকরে বসে পরলাম। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। বাসুর দিকে তাকালাম।
অনাদিকে খবর দেবো।
ওর দিকে হাত দেখিয়ে বললাম না।
ও আমার পাশে বসে আমার কাঁধে হাত রাখলো।
অফিসে কোনো গন্ডগোল।
মাথা নারলাম।
দিবাকরের ব্যাপারে কি বলছিলো।
আমিও ঠিক বুঝতে পারছি না। আমায় একটু একা থাকতে দে। তুই চলে যা। মিত্রা খুঁজলে বলবি আমি একটু ঘুরতে গেছি। আমি এখানেই থাকবো। না হলে অন্ধকারে ওই কলেজ ঘরে।
আচ্ছা।
বাসু হন হন করে চলে গেলো। আমি পকেট থেকে সিগারেট বার করে ধরালাম। অনেকক্ষণ ভাবলাম। একবার উঠে গিয়ে সামনের একটা চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে চলে এলাম। পাশ থেকে দু’চারজন হেঁটে চলে গেলো। এটুকু আমার দৃঢ় বিশ্বাস খাতা কলমে পাওয়ার আমার হাতে। কোম্পানীর সম্বন্ধে আমারও কিছু বলার থাকতে পারে। কিন্তু চাইলেই এখুনি বলতে পারবো না। সময় চাই।
মিত্রাকে জানাবো কি করে ? যেটুকু ও বলেছে তাতেই বুঝতে পেরেছি। ওর লাইফটা শেষ। হিমাংশুকে একটা ফোন করবো ? না থাক। আমারও পছন্দ অপছন্দ বলে কিছু থাকতে পারে। এইকদিনে যা ঘটলো তাহলে কি সব মিথ্যে। মিঃ ব্যানার্জী, অমিতাভদার বাড়িতে আমার ঘরে দাঁড়িয়ে যা যা বলেছেন, তা অভিনয়! হতে পারে। সেদিন মিত্রা মিঃ ব্যানার্জীকে বাস্টার্ড বলেছে। নিশ্চই এমন কিছু আছে যাতে একথা বলতে মিত্রার মতো মেয়ে বাধ্য হয়েছে। কথায় কথায় মিত্রা বলেছিল মিঃ ব্যানার্জীর যা কিছু প্রসার তা মিত্রার জন্য।
মিত্রা আমার শরীরে শরীর মিশিয়ে মিঃ ব্যানার্জীকে বাস্টার্ড বললো। সেটাও অভিনয়। না আমি মনে হচ্ছে মনে মনে দুর্বল হয়ে পরছি। এসব ফালতু চিন্তা করছি। মিত্রা জোর করে আমায় কোম্পানীর শেয়ার কিনিয়েছে। সত্যি যদি তাই হতো তাহলে আমার পেছনে মিত্রা ১৫০ কোটি টাকা খরচ করতো না। তাও আবার সাদা কালো মিশিয়ে।
আমি চেষ্টা করলেও সারা জীবনে এত টাকা ইনকাম করতে পারবো না। একটা গুডনিউজ আমার মালিকানার খবর এখনও ওরা জানতে পারে নি। আমি যদি কোন ড্রস্টিক স্টেপ নিই মিত্রা নিশ্চই বাধা দেবে না। তবু মন মানছে না। সন্দীপ ঠিক কথা বলেছে। ওদের পয়সা আছে। প্রোয়োজন ফোরালে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। তবু জীবনে অনেক মানুষ দেখেছি। আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না।
কাঁসর ঘন্টা বেজে উঠলো। রথ বের হচ্ছে। খুব ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু ভালো লাগল না। বাজি ফাটছে। মিত্রার আনা বাজি পোরানো হচ্ছে। সত্যি ছোট সময়ে এই বাজি ফাটাবার জন্য কতো আগ্রহ ছিলো। উনামাস্টার এই মেলার প্রেসিডেন্ট ছিলো। কাকা সেক্রেটারি। একটা বাজি চেয়েছিলাম বলে একটা থাপ্পর জুটেছিল। তারপর থেকে আর কোনদিন বাজি ফাটাবার নাম মুখে আনিনি। লোকে ফাটিয়েছে। আমি দেখেছি। অনাদিরা বাজি ফাটাবার কথা বললে বলেছি আমার ভয় করে।
দিবাকর মন্ডল আর আমার বন্ধু দিবাকর মন্ডল কি একব্যক্তি। এটা আমাকে প্রথমে জানতে হবে। সন্দীপ যা বায়োডাটা দিচ্ছে তাতে দিবাকরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। কাকে দিয়ে খবরটা নেবো। তিনটে ছায়া মূর্তি আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। চমকে তাকালাম, অনাদি বাসু চিকনা। ওরা আমার পাশে এসে বসলো। ভাবলাম ওদের কিছু বুঝতে দেবো না। ক্যাজুয়েল থাকার চেষ্টা করলাম। ওদের দেখে হাসলাম।
কিরে তোরা এই সময়। ফাংসন আরম্ভ হয়েছে।
কোন কথার উত্তর নেই। চোখ গুলো সব চিতাবাঘের মতো জ্বলছে। আমি এই চাঁদনীরাতেও ওদের পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি।
কিরে কথা বলছিস না কেনো। মিত্রা কোথায় ?
পায়ের তলাটা দেখেছিস। অনাদি বললো।
আমি দেঁতো হাসি হেসে অনাদির দিকে তাকালাম। বিকেলের দেখা অনাদি আর এখনকার অনাদির মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। নিচের দিকটা একবার দেখে নিয়ে অনাদির চোখে চোখ রাখলাম। গনগনে আগুনের কয়লার টুকরো।
কেনো।
এইটুকু সময় কটা সিগারেট খেয়েছিস।
হ্যাঁ শেষ হয়ে গেছে। চিকনা একটা সিগারেট দিবি।
তুইতো এতো সিগারেট খাস না।
খাই না, আজ খেতে ভালো লাগছে।
চিকনা প্যাকেটটা এগিয়ে দিলো। একটা সিগারেট বার করে নিলাম। তারপর আবার প্যাকেটটা ফেরত দিলাম।
চিকনা বললো, তোর কাছে রাখ। আমি পাশে রাখলাম।
ফোনটা বেজে উঠলো। সন্দীপ।
হ্যাঁ আমি তোকে পরে ফোন করছি। আমার কথা বলা শেষ হলো না, অনাদি ফোনটা ছোঁমেরে আমার হাত থেকে নিয়ে নিলো। কানে তুলে বললো, আপনি কে বলছেন। এরি মধ্যে ও ভয়েসমুড অন করে দিয়েছে, রেকর্ডিং বটম টিপে দিয়েছে।
আমি অনির বন্ধু সন্দীপ বলছি।
এখুনি অনির গলা পেলাম, আপনি কে ?
আমি অনাদি, অনির বন্ধু।
অনি নেই।
ধরুন।
অনাদি ইশারায় কথা বলতে বললো।
হ্যাঁ বল।
শোন পাক্কা খবর। দিবাকর মন্ডল তোর বন্ধু। তোর সঙ্গে ও এক সঙ্গে পরেছে। এমনকি তোর ডিটেলস পর্যন্ত এখানে দিয়ে দিয়েছে। আর কি বলবো তোকে, কথাটা বলতে তোকে খুব খারাপ লাগছে। সুনিতদার মন পেতে বলেছে, তোর বাপ-মার ঠিক নেই। এখন এখানে লাইভ রেকর্ডিং চলছে। ছেলেটি মনে হয় ম্যাডামের খুব কাছাকাছি আছে। এমন কি ম্যাডামের গলাও শুনতে পাচ্ছে এরা।
কোথায় চলছে রেকর্ডিং।
সুনিতদার ঘরে।
আর কে আছে।
যারা থাকার তারাই আছে। তুই এর একটা বিহিত কর অনি।
আমি অফিসে ঢুকছি। দেখি লাস্ট আপডেট কি হয়।
ঠিক আছে। তুই ফোন কর। আমার ফোন অন থাকবে।
লাইনটা কেটে গেলো।
অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে। চিকনা চেঁচিয়ে উঠলো, অনাদি তুই একবার পারমিশন দে, আমি ওকে কাল সকালের মধ্যে গাইপ করে দেবো।
ঘাউরামি করিস না। আমি বললাম।
বাসু চুপচাপ, শুধু বললো, ওকে হাতে মেরে কিছু হবে না, ভাতে মারতে হবে।
ঠিক বলেছিস।
ও এখন কোথায়রে চিকনা।
উঃ তোরা থাম না। আমি বললাম।
থামার সময় এখন নেই অনি। মালটা আমি বুঝতে পেরেছি।
কিছুই বুঝিস নি।
তুই বোঝা।
কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকলাম। চোখ দুটো কেমন জ্বালা জ্বালা করছে। জীবনে বাবা-মাকে ঠিক মনে পরে না। কিন্তু জ্ঞানতঃ কোনদিন বাবা-মাকে আমি অশ্রদ্ধা করি নি। কিন্তু আজ প্রথম বাবা-মার সম্বন্ধে কোন খারাপ কথা শুনলাম। বুকের ভেতরটা ভীষণ যন্ত্রনা করছে। মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে আসবে। তিনজোড়া চোখ আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে। ওদের বুঝতে দেওয়া যাবে না। তাহলে একটা বিচ্ছিরি কান্ড ঘটে যাবে। আমি মাথা নীচু করে বসে আছি।
অনি শরীর খারাপ লাগছে। বাসু আমার পিঠে হাত দিলো।
আমি বাসুর মুখের দিকে তাকালাম। হয়তো চোখটা ছল ছল করে উঠেছিলো।
অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। চিকনার দিকে তাকিয়ে বললো, আজ রাতেই কাজ হাসিল কর।
কথা বলতে গিয়ে আমার গলা ধরে এসেছে। আমি অনাদির হাত চেপে ধরে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। না এরকম করিস না। প্লিজ।
তোকে যে অপমান করে সে আমাদেরও অপমান করেছে।
ঠিক আছে। তার জন্য....।
তুই জানিস না এই গ্রামটাকে ও জ্বালিয়ে দিচ্ছে। খালি বন্ধু বলে ও পার পেয়ে যাচ্ছে।
দূর বোকা। হিংসার রাজনীতি করতে নেই। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা কর। সব ঠিক হয়ে যাবে।
অনাদি একটু ঠান্ডা হলো।
আমি চিকনার দিকে তাকিয়ে বললাম, একটু চা খাওয়াবি।
চিকনা ছুটে চলে গেলো।
অনাদি আমার হাত চেপে ধরলো। অনি তুই বল। তুই একা চাপ নিস না। আমি জানি তোর সমস্যা তুই একলাই সলভ করবি। আমরা যদি তোকে কিছুটা হেল্প করতে পারি। যেহেতু ব্যাপরটা আমাদের এখানকার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। তুই এখান থেকে ১০ বছর ডিটাচ। এখানের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তুই দিন চারেকে তার কিছুই জানতে পারবি না। ওপর ওপর সবাই ভালো। ভেতর থেকে ছুঁরি চালাবর লোক প্রচুর। তুই অনেক কষ্ট করে এখানে এসে দাঁড়িয়েছিস। আমরা তোকে হারাতে চাই না।
মিত্রা কোথায়।
ও সামনে বসে ফাংসন দেখছে।
ছবিটবি তুলছে না।
সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। উনি আমাদের গেস্ট, তুই আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখ, ওনার কোন অসুবিধে হবে না।
দিবাকর কোথায়।
ওর ব্যবস্থা করছি।
এখন নয়।
ঠিক আছে তুই বল।
চিকনা চা নিয়ে চলে এলো।
আমি ওদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কথা বললাম। ওদের গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে গেলো। অফিসিয়াল ব্যাপারটা এত জটিল ওরা কিছুতেই ধরতে পারছে না। আমি চিকনাকে বললাম, মেলার মজাটা আজ করতেই পারলাম না। তুই এক কাজ করবি।
বল।
এমন কোন বিশ্বস্ত লোক আছে, যে দিবাকরকে ফলো করবে।
এই কাজ, তোকে চিন্তা করতে হবে না। তোকে আধঘন্টার মধ্যে ডিটেলস দিয়ে দিচ্ছি।
না। ওকে মনিটরিং কর। যেন কিছু বুঝতে না পারে। ফাংসন কখন শেষ হবে।
১২টা বাজবে।