07-01-2019, 11:40 AM
৩১।।
‘অফিসে গিয়ে সুশান্তের কি ভাবে মুখোমুখি যে হবো... কি বিচ্ছিরি একটা কান্ড ঘটে গেলো কাল।। কিন্তু আমার কি দোষ... সে যদি নিজের থেকেই মন গড়া কিছু স্বপ্ন দেখে থাকে... আমি কি করতে পারি... ভাজ্ঞিস অর্নব ছিল... তা নয় তো অনেক কিছুই হয়ে যেতে পারতো... যাকে সে এতটা বিশ্বাস করেছিল... বন্ধু ভেবেছিল... তার থেকে এই ব্যবহার পাবে... আশা করেনি কখনো... তবে... তবে সম্পূর্ন দোষ কি সুশান্তকে দেওয়া যায়? না বোধহয়... ঠিক যায় না... এখনও আমাদের সমাজ সেই জায়গায় পৌছাতে পারেনি... পারে নি একটা মেয়ের সহজ আচরণকে সহজ ভাবে মেনে নিতে পারাকে... এটা অবস্য আমাদের এই আর্থসামাজিক ব্যবস্থাই দায়ী... দায়ী এখন আমাদের সমাজে ছেলেদের কলেজ আর মেয়েদের কলেজ আলাদা থাকার ফলে... আমি নিজে কনভেন্টে পড়েছি, তাই আমার ওপজিট জেন্ডারের সাথে মিশতে কোনো অসুবিধা হয় না, সহজ ভাবেই মানিয়ে নিতে পারি... কিন্তু, হয়তো সুশান্ত সেই সুযোগ পায় নি, তাই আমার সাবলীলতাকে, সহমর্মীকতাটাকে অন্য মানে করে বসেছিল... দুম করে শুধু শুধু অপরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোটা উচিত নয়... দেখি... অফিসে গিয়ে সুশান্তর সাথে খোলাখুলিই কথা বলবো... কে জানে আবার, আমার সাথে কথা আদৌ বলবে কি না... অর্নব যে রকম ধরে পিটিয়েছে... ইশ... তখন আমি খেয়াল করি নি... কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বেশ ভালোই মেরেছে... জানি তো... আমার সোনাটা... ওর তিতিরের গায়ে কেউ হাত তুললে কি করবে... ইশ... বাপীকে কবে যে জানাতে পারবো অর্নবের কথা... মনে হচ্ছে এক্ষুনি ছুটে গিয়ে জানিয়ে দিই আমার সোনাটার কথাটা... আচ্ছা... বাপী শুনলে কি বলবে? মা তো জানি শুনেই ভিমরী খাবে... ইশ... মায়ের মুখটা কেমন হবে শুনে ভাবলেই হাসি পাচ্ছে... হয়তো শুনে বিছানা নেবে মা... নাঃ... আমি কিছু বলবো না বাবা মাকে... ও সব বাপীর ওপরেই ছেড়ে দেবো... আমার বাপী ঠিক করে দেবে সব কিছু... মাই কিং...’ গাড়ির জানলার বাইরে মুখ রেখে চুপ করে ভাবতে ভাবতে চলে পৃথা।
গাড়িটা হটাৎই ব্যবস্থা হয়েছে... বরং আরো ভালো করে বলা ভালো এটা অর্নবের হুকুম, পৃথাকে আর এই ভাবে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলা ফেরা নাকি করা চলবে না। ঘটনাটা ঘটেছিল সকালেই। অর্নবের কাছে আদর খাচ্ছিল পৃথা তাদের কথার শেষে... অবস্য অর্নব যে খুব একটা অ্যাকটিভ ছিল তা নয়, বরং নিজের পিরিয়েড হওয়া সত্বেও, ইন্টারেস্টটা ছিল পৃথারই বেশি... ইন্টারকোর্স করা যাবে না জেনেও এতটুকুও ছাড়তে চায়নি অর্নবকে নিজের শরীরের থেকে দূরে... যতটা আদর খাওয়া সম্ভব সেটা আদায় করে নিচ্ছিল ভোরের আলো গায়ে মেখে... কিন্তু বাধ সাধে কাজলের আবির্ভাবে... প্রায় বাধ্য হয়েই অর্নবকে ছেড়ে দরজা খুলতে উঠে যায় বেজার মুখে... যেতে যেতে কানে আসে অর্নবের খুকখুক হাসি... তাতে আরো মাথাটা গরম হয়ে গিয়েছিল যেন তার... দরজাটা খুলেই কড়া চোখে তাকিয়েছিল কাজলের দিকে...
‘আজ একটু সকাল সকাল এলুম... বুজলে...’ ঘরে ঢুকেই বলে কাজল।
আরো যেন খিঁচড়ে যায় মেজাজটা কাজলের কথায়... তার থেকে বাবা কেউ ছিল না, সেটাই ভালো ছিল, প্রণবদা ঘাড়ের ওপরে একটা জ্বালা গছিয়ে দিলো আমার, মনে মনে গজগজ করে পৃথা... ‘তা হটাৎ করে তাড়াতাড়ি আসতে কে বলেছিল? আমি?’ কোমরে হাত রেখে প্রশ্ন করে পৃথা... শেষ না হওয়া আদরটা যেন তখন তাকে শান্তি দিচ্ছে না...
‘ও মা... তুমি রাগ কচ্চো... আমি তো ভাবলুম তুমি খুশি হবে... যা বাওয়া...’ পৃথার মেজাজ দেখে অবাক হয় কাজল।
সাথে সাথে নিজেকে সংযত করে পৃথা... ছি ছি... এই ভাবে সে কাজলের ওপর রাগ দেখাচ্ছে কেন? সত্যিই তো, ওর কি দোষ... বরং ওর জন্যই তো বেচারী তাড়াতাড়ি এসেছে... ও জানবে কি করে একটা বদমাইশ লোক তাকে আদর করছিল?... মনে মনে ভাবে সে... ‘না, না, রাগ কোথায় করলাম, এসে তো ভালই করেছিস... আমাকেও তো আজ অফিস যেতে হবে... কাল যায় নি... কত কাজ পড়ে আছে...’ বলে পৃথা কাজলকে।
‘তোমার না কাল জ্বর হয়েচিলো? আজ আপিস যাবে, মানে?’ ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে কাজল পৃথাকে... ভাব দেখে পৃথার মনে হয় বাড়ির কত্রী ও নয়, কাজলই।
‘আমার কি মুখ দেখে অফিস পয়সা দেয়? জ্বর হয়েছে বলে বাড়ি বসে থাকলে চলবে? হু?’ বাথরুমের দিকে ফিরে যেতে যেতে উত্তর দেয় পৃথা।
‘অ... বাব্বা... সত্যিই বাবা... মেয়েটার সলিল খারাপ, তাও আপিস যেতে হবে... এই আপিসের লোকগুলোর না একটুও মন নেই, জানো... এত খাটায় কেউ...’ বলতে বলতে খেয়াল করে যাকে উদ্দেশ্য করে সে বলে চলেছে, সেই দিদিমনি বাথরুমের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে, তার কথা আদৌ শুনেছি কি শোনে নি বুঝতে পারে না সে... তাই আর অপেক্ষা না করে কিচেনে ঢুকে কাজে লেগে পড়ে।
অর্নবও বারন করেছিল তাকে আজ অফিস যেতে, বুঝিয়েছিল আজকের দিনটা বাদ দিতে, কিন্তু ওই বা কি করে, ওর’ও কি ইচ্ছা করছিলো নাকি অর্নবকে ছেড়ে অফিসের কচকচানির মধ্যে ঢুকতে, কিন্তু ও জানে, যতই সে ন্যাশানালাইজড ব্যাঙ্কএ চাকরী করুক না কেন, লোকে হয়তো ভাবে যে সরকারী ব্যাঙ্ক মানেই সেখানে লোকে শুধু শুধু সময় কাটায় আর মাসের শেষে টাকা গুনে বাড়ি নিয়ে আসে, কিন্তু বাস্তবে যে কি ভিষন চাপের মধ্যে থাকতে হয় তা পৃথা চাকরী জয়েন করার পর হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে... সকাল থেকে সন্ধ্যে অবধি হাঁফ ফেলার ফুরসৎ থাকে না এক একদিন... কতদিন হয়েছে, কাস্টমারের চাপে লাঞ্চ পর্যন্ত স্কিপ করতে হয়েছে নির্দিধায়... ম্যানেজারের ঘরের সিসি টিভি ক্যামেরার চোখ সারাক্ষন তাদের ওপরে তাকিয়ে রয়েছে... এতটুকু গল্প করা দূর অস্ত, নিজের মোবাইলের মেসেজ চেক করবে, তারও সুযোগ হয়নি কতদিন... তাই অনেক কষ্টে অর্নবকে বুঝিয়েছে সে... শেষে তাকে দিয়ে বলিয়ে নিয়েছে অর্নব যে প্রতি দু-ঘন্টা অন্তর সে ফোন করে জানাবে যে কেমন আছে... অর্নবের ছেলেমানুষি দেখে মনে মনে হেসেছে... নাঃ... শুধু হাসেই নি সে... খুশিতে মনটা ভরে গিয়েছিল... মা এই রকম ছেলেমানুষি করে, তার প্রতিটা খেয়াল রাখে, সেটা যেন খুবই স্বাভাবিক... সেখানে কোন অস্বাভাবিকত্ব নেই, কিন্তু এই অজানা, অচেনা শহরে তাকে এই ভাবে যত্নে ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখার লোক রয়েছে, সেটা ভাবতেই যেন প্রজাপতির মত হাওয়ায় ডানা মেলতে ইচ্ছা করে... ভেসে বেড়াতে ইচ্ছা করে ছোট্ট ডানায় ভর মেলে... আহহহ... এযে কি পরম পাওয়া, যে না পেয়েছে সে এর মর্ম উপলব্ধি করতে পারবে না... এই ভাবে বিরক্ত হতে সে হাজার সহস্রবার রাজি... রাজি এই ভাবে শাসনের মধ্যে থাকতে... নিজের সব কিছু উজার করে তুলে দিতে এই লোকটার হাতের মধ্যে।
সাতটার মধ্যেই কাজ সেরে চলে গিয়েছিল কাজল, আর সেও অর্নবের তত্বাবধানে গিজারের গরম জল মিশিয়ে, ছদ্ম রাগ দেখাতে দেখাতে স্নান সেরে তৈরী হয়েছিল অফিসের জন্য... হ্যাঙ্গার থেকে সালওয়ার কামিজ নামিয়ে তৈরী হচ্ছিল সে, আর তার খাবার নিয়ে পেছন পেছন ঘুরছিল অর্নব, থেকে থেকে খাইয়ে দিচ্ছিল তাকে... নিজেকে কেমন রানীর মত লাগছিল আজ তার... ভাবতেই ফিক করে হেসে ফেলে পৃথা আনমনে... গাড়ির সিটে মাথাটা হেলিয়ে ভাবতে থাকে সে।
হাতে নেওয়া সালওয়ার কামিজটা পছন্দ হয় নি অর্নবের... বলেছিল, ‘এটা কেন পরছ? এটা তো কাচা নয়? এখন জ্বরের সময় কাচা পোষাক পরাই তো ভালো...’ অবাক হয়েছিল পৃথা... কোনটা তার পরা আর কোনটা নয়, সেটাও খেয়াল রেখেছে মানুষটা? যদি সত্যিই দেখতে পেতো লোকটাকে চোখে, তাহলে ওর চোখের মধ্যে চোখ রেখে দেখতো সে, কত ভালোবাসা লুকিয়ে আছে তার ওই চোখ জোড়ায়... ভালো লেগেছিল তার ঠিকই, কিন্তু প্রকাশ করেনি মুখে... বলেছিল... ‘আচ্ছা, তুমি কি আমার সব জানো?’
অবাক গলায় প্রশ্ন করেছিল অর্নব, ‘কেন? তোমার আবার না জানা কি আছে আমার?’
‘দূর বোকা... আমার শরীর খারাপ হয়েছে জানো না? আবার কাচা একটা জামা ভাঙবো নাকি? এটাই পরে চালিয়ে দিই... সেই তো কাচতেই হবে এগুলো... তখন না হয় অন্য পরা যাবে’খন...’ হাসতে হাসতে বোঝাবার চেষ্টা করেছিল সে।
‘শরীর খারাপ হওয়ার সাথে পোষাকের কি রিলেশন?’ জিজ্ঞাসা করেছিল তার প্রিয়তম।
‘হ্যা, মশাই... রিলেশন আছে বৈকি... শরীর খারাপ হলে আর নতুন কিছু ভাঙিনা তখন... পরা ড্রেস পরেই চালিয়ে দিই... বুঝলে বুদ্ধুরাম...’ উত্তর দিয়েছিল পৃথা।
‘এটা মানতে পারলাম না আমি... এ আবার হয় নাকি? পিরিয়েড হলে আবার কেউ পুরোনা না কাচা ড্রেস পরে নাকি আবার? এ সব যত কুসংস্কার...’ বলেছিল অর্নব... বলার সময় ভুরু কুঁচকেছিল কি না কে জানে?
‘হয়তো তাই... কুসংস্কারই হবে, কিন্তু কি করবো সোনা... বরাবর এটাই দেখে এসেছি যে... মা কে ও তো দেখছি এটাই করতে, তাই নতুন করে আর সংস্কার ভাঙার কথা মনে আসে নি কখনও...’ বলার ফাঁকে ততক্ষনে প্যান্টি পরে ব্রায়ের স্ট্র্যাপে হাত গলিয়ে দিয়েছে সে... ‘একটু লাগিয়ে দাও তো স্ট্র্যাপটা...’ ব্রায়ের কাপটা নিজের সুগোল বুকের ওপরে চেপে ধরে কাঁধের ওপর দিয়ে ঘাড় তুলে বলেছিল পৃথা... ঘাড়ের ওপরে গরম নিঃশ্বাসের অনুভূতিতে সিরসির করে উঠেছিল শরীরটা তার... অক্লেশে হেলিয়ে দিয়েছিল দেহটাকে পেছনদিকে, অর্নবের চওড়া ছাতির ওপরে... ঘন আলিঙ্গনে টেনে নিয়েছিল তাকে অর্নব... জড়িয়ে ধরেছিল পেছন থেকে... প্যান্টি পরিহিত নরম বর্তুল নিতম্বের ওপরে তখন ইষৎ স্ফিত হয়ে ওঠা অর্নবের পৌরষের ছোয়া... আপনা থেকেই চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পৃথার... আবেশে... পুরুষালী কর্কশ হাতের ছোয়া নগ্ন তলপেটের, প্যান্টির ইলাস্টিক ব্যান্ডটার ওপরে ঘুরে বেড়াতে শুরু করে দিয়েছিল... ‘আহহহহ... প্লিজ অর্নব... এরকম করলে অফিস যাবো কি করে?’ গুনগুনিয়ে উঠেছিল সে তার ইষৎ ফাঁক হয়ে যাওয়া ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে... ‘এমন ভাবে আদর করলে যে আর অফিস যেতে ইচ্ছা করবে না সোনা...’ ফিসফিসিয়ে উঠেছিল আদরে গলে যেতে যেতে... তার মনে হচ্ছিল যেন সমস্ত শরীরটা একটু একটু করে শিথিল হয়ে যাচ্ছে... অবস হয়ে পড়ছিল হাতগুলো... বুঝতে পারছিল বুকের ওপরে ধরে রাখা ব্রা সমেত হাতটা এক্ষুনি নেমে যাবে হয়তো তার বুকটাকে অর্নবের হাতের জন্য ছেড়ে দিয়ে... ‘প্লিজ... সোনা... এমন কোরো না এখন... প্লিজ...’ মুখ বলেছিল, কিন্তু মন চেয়েছিল আরো, আরো আদর... ভেসে যেতে চেয়েছিল সে আদরের সমুদ্রে... কানে এসেছিল অর্নবের গাঢ় কন্ঠস্বর... ‘তোমাকে এই ভাবে দেখে ছাড়তে ইচ্ছা করছে না যে...’ দুটো তপ্ত ঠোটের স্পর্শ এসে লেগেছিল তার নগ্ন ঘাড়ের ওপরে... তলপেটের ওপরে ঘুরে বেড়ানো হাতটা আরো উঠে এসেছিল ওপর পানে... সুগোল স্তনদুটোর তলায় খেলা করে বেড়াচ্ছিল সে হাতের পাঞ্জাদুটো... ‘মমমম... আহহহহ... প্লিজ... এখন না... পরে... প্লিজ...’ গুঙিয়ে উঠেছিল পৃথা সম্ভাব্য আদর পাবার প্রবল আকাঙ্খায়... অনুভব করেছিল হাতের পাঞ্জাদুটো তার ধরে রাখা ব্রায়ের কাপের তলা দিয়ে বেয়ে উঠে আসছে আরো ওপর দিকে... তার নরম স্তনের দিকে... নিজের হাতের চাপ আলগা করে জায়গা করে দিয়েছিল অর্নবের হাতকে... চোখ বন্ধ করে আরো এলিয়ে দিয়েছিল শরীরটাকে পেছন পানে... বুঝতে পেরেছিল তার হাঁটু তার সাথে সহযোগীতা করছে না... কতক্ষন তার পক্ষে এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হয়ে সে জানে না... সে ভিজে উঠছিল... ভিষন দ্রুত... তার প্যান্টির মধ্যে থাকা স্যানিটারী ন্যাপকিনটা ভরে যাচ্ছিল যত না শারীরিয় দূষিত রক্তে, তার অধিক বেশি দেহের কামঘন রসের আধিক্যে... নাঃ... আর নয়... এবার পাগলটাকে থামাতেই হবে... তা না হলে আর অফিস যেতে পারবে না সে... প্রায় জোর করেই নিজের মনকে বোঝায় সে... ঘুরে দাঁড়িয়েছিল অর্নবের মুখোমুখি... মুচকি হেসে বলেছিল, ‘পাগল একটা... এখন এই রকম দুষ্টুমী করলে হবে? হু? আমাকে যেতে দেবে না?’
মুখে কোন উত্তর দেয়নি অর্নব... ঘাড় কাত করে মুখটা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে চেপে ধরেছিল নিজের তপ্ত ঠোট জোড়া পৃথার পাতলা ঠোটের ওপরে... মুখের মধ্যে জিভটা পুরে দিয়েছিল সে... খুঁজে নিয়েছিল প্রিয়ার জিভটাকে... খুজে পেতে খেলা করে বেড়াতে শুরু করেছিল জিভদুটো একে অপরে সাথে... পৃথার প্যান্টি ঢাকা নরম বর্তুল পাছার দাবনাদুটোকে দুই হাতের তেলোয় খামচে ধরেছিল প্রায়... তুলতুলে নরম সুগোল দাবনাদুটো নিষ্পেশিত হচ্ছিল অর্নবের পুরুষালী কড়া হাতের তালুর মধ্যে... সেই ভাবে ধরেই পৃথার শরীরটাকে টেনে চেপে ধরেছিল সে নিজের দৃঢ় হয়ে ওঠা পুরুষাঙ্গের ওপরে... দুটো মসৃণ উরুর মাঝে প্রায় সেঁদিয়ে গিয়েছিল সেই শক্ত হয়ে এগিয়ে বাড়িয়ে থাকা অর্নবের পৌরষটা... ‘উমমমম...’ অর্নবের মুখের মধ্যে গুঙিয়ে উঠেছিল পৃথা... নির্দিধায় নিজের থেকেই ঠেসে এগিয়ে দিয়েছিল আপন জঙ্ঘাটাকে প্রেমিকের কোলের দিকে... হাত তুলে জড়িয়ে ধরেছিল প্রিয় মানুষটাকে প্রগাঢ় আলিঙ্গনে... চোখ বন্ধ করে নিজেকে সমর্পিত করেছিল প্রিয়তমের ছাতির পরে... ঘর্ষন খাচ্ছিল লোমশ ছাতির ওপরে ব্রা খসে পড়া বুক দুটো... ‘নাহহহ... আহহহ... এবার ছাড়ো প্লিজ... আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারবো না এরপরে আর... প্লিজ সোনা... আর নআআআআহহহ...’ ঠোটের ওপরে থেকে নিজের ঠোটটা ছাড়িয়ে নিয়ে কোনরকমে অনুনয় করে উঠেছিল পৃথা... মন তখন দূরন্ত গতিতে আরো মিলে যেতে চাইছিল তার প্রিয়তমের দেহের সাথে... কিন্তু বাস্তবিক সেটা সম্ভব নয় সে জানতো... একে তার শরীরের বাধা, তার ওপরে অফিসের তাড়া... শেষে প্রায় বেরসিকের মতই জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে সরিয়ে নিয়েছিল অর্নবের থেকে তফাতে... আলমারীর গায়ে হেলান দিয়ে প্রায় হাঁফাতে হাঁফাতে না দেখা প্রেমিকের পানে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠেছিল, ‘ডাকাত একটা... সব লুঠ করে নেবার তাল...’ বলতে বলতেই অনুভব করে উষ্ণ নিঃশ্বাস অর্নবের, নিজের মুখের ওপরে... ‘এই না... আর না... লক্ষ্মী সোনা... আর তো দুটো দিন... তারপর তুমি যেমন খুশি তেমনি আদর কোরো তোমার তিতিরকে... তখন আর কোন বাধা থাকবে না... প্লিজ সোনা... আজকে ছেড়ে দাও...’ কাতর কন্ঠে বলে উঠেছিল সে... বলেছিল ঠিকই মুখে, কিন্ত হাত বাড়িয়ে ফের আলিঙ্গনের বেঁধে নিয়েছিল তার প্রিয়তমকে... নিজের নরম বুকটাকে চেপে ধরেছিল অর্নবের পুরষালী লোমশ বুকের ওপরে... ‘আমাকে অফিস যেতে দেবে না সোনা?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করেছিল পৃথা... প্রশ্ন করলেও, নিজের ঠোটটাকে এগিয়ে দিয়েছিল শূণ্যপানে... অর্নবের অবস্থান বুঝে... আর তখনই বাইরের দরজায় অনাহুতের মত বেলের আওয়াজ কানে আসে... টিং টং... টিং টং...
একরাশ বিরক্তিতে ভুরু কুঁচকে গিয়েছিল পৃথার... কাজল তো নিজের কাজ করে চলে গিয়েছে... তবে আবার কে? প্রশ্ন বহুল চোখে তাকিয়েছিল নিরাকার অর্নবের পানে... তারপর তাড়াতাড়ি হাউসকোটটা হ্যাঙ্গার থেকে টেনে নিয়ে গায়ে পড়ে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়েছিল দরজা খুলতে।
আই হোলে চোখ রেখে এক অপরিচিত অল্প বয়সি যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিল পৃথা... দেখে ইতঃস্থত করেছিল খানিক, তারপর মনে পড়ে গিয়েছিল যে সে একা নয়, তার সাথে অর্নবও রয়েছে... তাই নির্দিধায় দরজা খুলে মেলে ধরেছিল সে... ‘কাকে চাই?’ গম্ভীর মুখে প্রশ্ন করেছিল আগুন্তুকের দিকে তাকিয়ে।
‘মিস মুখার্জি...’ ইতস্থত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করেছিল আগুন্তক।
‘আমি... কি চাই?’ ফের প্রশ্ন করেছিল পৃথা।
‘আজ্ঞে, আমি ইসমাইল, আমাকে সাহেব গাড়ি দিয়ে পাঠালেন...’ উত্তর এসেছিল আগুন্তুকের থেকে।
‘সাহেব গাড়ি দিয়ে পাঠালেন মানে? কোন গাড়ি? কার গাড়ি? কোন সাহেব পাঠিয়েছেন? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না...’ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করে পৃথা।
‘না... মানে কর্মকার স্যর গাড়ি পাঠিয়েছেন... আপনার কাছে...’ ফের ইতস্থত উত্তর এসেছিল ছেলেটির কাছ থেকে।
আরো কিছু হয়তো প্রশ্ন করত পৃথা, কিন্তু তার আগেই ভেতরের ঘর থেকে অর্নবের গলা ভেসে এসেছিল, ‘ওকে বলো নীচে ওয়েট করতে...’
অর্নবের গলার স্বরে পৃথা একবার ঘাড় ফিরিয়ে পেছন পানে ঘরের দিকে তাকিয়ে নিয়ে, কি ভেবে আগুন্তুকের উদ্দেশ্যে সে বলে উঠেছিল, ‘আচ্ছা, তুমি নীচে ওয়েট করো...’
ছেলেটিও আর অপেক্ষা করে নি, তরতর করে নেমে গিয়েছিল সিড়ি বেয়ে... পৃথা দরজা বন্ধ করার আগে একবার নজর বুলিয়ে নিয়েছিল পাশের ফ্ল্যাটের দিকে... দেখে মনে মনে নিশ্চিন্ত হয়েছিল সে, ‘নাঃ, আজ আর দরজা খুলে দেখছে না... নিশ্চয় অন্য কাজে ব্যস্ত আছে... তা না হলে এতক্ষনে দরজা খুলে মুখটা উঁকি মারতোই...’ ভাবতে ভাবতে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল সে।
‘তোমার গাড়ি এসে গিয়েছে... তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নাও...’ প্রায় ঘাড়ের কাছে অর্নবের গলা পেয়ে ফিরে দাঁড়ায়।
‘এই দাঁড়াও... দাঁড়াও... আমার গাড়ি মানে? এ সব আবার কি?’ অবাক গলায় প্রশ্ন করেছিল পৃথা।
‘তোমার গাড়ি মানে তোমার গাড়ি...’ হাসতে হাসতে উত্তর এসেছিল অর্নবের কাছ থেকে।
ঘরের দিকে হাঁটতে হাঁটতে গায়ের থেকে হাউসকোটটা খুলে ফেলতে শুরু করেছিল সে... সাথে প্রশ্ন করেছিল, ‘আরে ব্যাপারটা তো খুলে বলবে? হটাৎ আমার জন্য প্রণবদা আবার গাড়ি পাঠালো কেন? আমার আবার কবে থেকে গাড়ির প্রয়োজন হলো?’ কথা শেষে ততক্ষনে সে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল... তাদের খানিক আগের আদরের ঠেলায় হাত থেকে খসে পড়ে থাকা ব্রাটা মাটির থেকে তুলে নিয়ে পড়তে শুরু করে দিয়েছিল ফের।
এবার আর দুষ্টুমী করে নি অর্নব... পেছন থেকে পৃথার মসৃণ পীঠের ওপরে ব্রায়ের হুকটা লাগিয়ে দিতে দিতে উত্তর দিয়েছিল, ‘আমার তিতিরের শরীর খারাপ, আর সে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে অফিস যাবে? আর আমি ঘরে বসে সেটা দেখবো?’
ব্রায়ের হুকটা লাগানো হলে ফিরে দাড়িয়েছিল সে, ‘এ বাবা, এটা ঠিক নয়... আমার জন্য প্রণবদা অফিসের গাড়ি পাঠিয়ে দেবে... ছি ছি... এটা যেন কেমন...’ বিব্রত মুখে বলে উঠেছিল পৃথা।
‘প্রণবদা কি নিজের গাড়ি পাঠিয়েছে?’ চোখের সামনে শুধু মাত্র ব্রা আর প্যান্টি পরিহিত পৃথার তম্বী শরীরটা দেখতে দেখতে কয়’একপা এগিয়ে এসেছিল অর্নব... সেটা অনুভব করে তাড়াতাড়ি মুচকি হেসে হাত তুলে তাকে আটকে বলে উঠেছিল পৃথা, ‘এই... আর দুষ্টুমী নয় কিন্তু...’
‘তোমাকে কি অসম্ভব সেক্সি দেখতে লাগছে, সেটা তুমি জানো?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করেছিল অর্নব।
‘বদমাইশ ডাকাত একটা...’ খিলখিলিয়ে হেসে উঠেছিল পৃথা অর্নবের কথায়... মনে মনে ভিষন খুশি হয়েছিল সে... তাড়াতাড়ি করে নিজের বুকের ওপরে হাত চাপা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছিল অর্নবের নাগাল থেকে... বিছানার ওপরে পড়ে থাকা কুর্তিটা তুলে গলিয়ে নিয়েছিল গলার থেকে... ‘পাজি, অসভ্য বুড়ো একটা...’ হাসতে হাসতে বলে উঠেছিল পৃথা পরণের পোষাকটাকে ভালো করে নিজের শরীরের ঢাকতে ঢাকতে।
‘কোই... বললে না তো... প্রণবদা হটাৎ কেন আমার জন্য গাড়ি পাঠালো? এই ভাবে অন্য লোকের গাড়ি ব্যবহার করতে কিন্তু আমার একদম ভালো লাগে না... আর তাছাড়া আমাকে তো সেই পাবলিক ট্রান্সপোর্টেই যাতায়াত করতে হবে বলো... সেখানে একদিন দু-দিন এই ভাবে গাড়ি চড়ে লাভ কি?’ বিছানায় বসে পা’টাকে লেগিংসের মধ্যে গলিয়ে দিয়ে বলে উঠেছিল পৃথা।
‘একদিন দুই-দিনএর জন্য কে বললো তোমায়?’ অর্নবের প্রশ্ন ভেসে এসেছিল বিছানার ওই ধার থেকে।
বিছানার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে লেগিংসটাকে কোমরের কাছে টেনে ঠিক করতে করতে প্রশ্ন করেছিল, ‘সে আবার কি? আমি কি সারা জীবনই প্রণবদার অফিসের গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াবো?’
হাল্কা হাসির আওয়াজ কানে আসতে মুখ তুলে তাকিয়েছিল পৃথা... ‘প্রথমত হ্যা... তুমি এবার থেকে গাড়িতেই যাতায়াত করবে... আর দ্বিতীয়তঃ গাড়িটা আমার... বুঝেছ? তাই তুমি চড়বে না তো কে চড়বে? হু?’ উত্তর দিয়েছিল অর্নব।
‘তোমার গাড়ি?’ একটু অবাকই হয়েছিল পৃথা।
‘কেন? আমার গাড়ি থাকতে নেই?’ ফিরিয়ে প্রশ্ন করেছিল অর্নব।
‘না... তা বলছি না...’ আমতা আমতা করেছিল পৃথা।
‘বলছো না... কিন্তু মনের মধ্যে থেকে দ্বিধাটাও তো যাচ্ছে না...’ বলেছিল অর্নব।
‘না... মানে...’ তাও ইতস্থত করেছিল পৃথা।
‘আরে বাবা, প্রণবের অফিস মানে তো আমারও অফিস, নাকি? আর আমার তো আরো একটা গাড়ি ছিল, আগের গাড়িটা পুড়ে যাওয়া সত্তেও, এই গাড়িটা ওর কাছেই রাখা থাকতো, আমার বেরোনোর প্রয়োজন হলে প্রণব নিয়ে চলে আসতো, এখন থেকে তুমি এটায় চড়বে... এখানে এতো সংশয়ের কি, সেটাই তো বুঝতে পারছি না... নিজের বরের গাড়ি কি অন্য লোকে চড়বে?’ এবার একটু বিরক্তির সুরেই বলেছিল অর্নব।
অর্নবের কথায় থমকে গিয়েছিল পৃথা, তারপর ফিক করে হেসে ফেলেছিল... বিছানা ঘুরে এগিয়ে গিয়েছিল অর্নবের গলার স্বর লক্ষ্য করে... দুহাত বাড়িয়ে অর্নবের গলাটা জড়িয়ে ধরে বলে উঠেছিল... ‘ইশ... এই লোকটাই আগে তো আমাকে নিজের বলে মানতেই চাইছিল না... আর এখন দেখো... বিয়ের আগেই বউকে গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছে...’
পৃথার কথায় দুজনেই এক সাথে হেসে উঠেছিল...
গাড়ির বন্ধ কাঁচের এপার থেকে বাইরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওঠে পৃথা, সকালের কথাগুলো ভাবতে ভাবতে।
ক্রমশ...
‘অফিসে গিয়ে সুশান্তের কি ভাবে মুখোমুখি যে হবো... কি বিচ্ছিরি একটা কান্ড ঘটে গেলো কাল।। কিন্তু আমার কি দোষ... সে যদি নিজের থেকেই মন গড়া কিছু স্বপ্ন দেখে থাকে... আমি কি করতে পারি... ভাজ্ঞিস অর্নব ছিল... তা নয় তো অনেক কিছুই হয়ে যেতে পারতো... যাকে সে এতটা বিশ্বাস করেছিল... বন্ধু ভেবেছিল... তার থেকে এই ব্যবহার পাবে... আশা করেনি কখনো... তবে... তবে সম্পূর্ন দোষ কি সুশান্তকে দেওয়া যায়? না বোধহয়... ঠিক যায় না... এখনও আমাদের সমাজ সেই জায়গায় পৌছাতে পারেনি... পারে নি একটা মেয়ের সহজ আচরণকে সহজ ভাবে মেনে নিতে পারাকে... এটা অবস্য আমাদের এই আর্থসামাজিক ব্যবস্থাই দায়ী... দায়ী এখন আমাদের সমাজে ছেলেদের কলেজ আর মেয়েদের কলেজ আলাদা থাকার ফলে... আমি নিজে কনভেন্টে পড়েছি, তাই আমার ওপজিট জেন্ডারের সাথে মিশতে কোনো অসুবিধা হয় না, সহজ ভাবেই মানিয়ে নিতে পারি... কিন্তু, হয়তো সুশান্ত সেই সুযোগ পায় নি, তাই আমার সাবলীলতাকে, সহমর্মীকতাটাকে অন্য মানে করে বসেছিল... দুম করে শুধু শুধু অপরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোটা উচিত নয়... দেখি... অফিসে গিয়ে সুশান্তর সাথে খোলাখুলিই কথা বলবো... কে জানে আবার, আমার সাথে কথা আদৌ বলবে কি না... অর্নব যে রকম ধরে পিটিয়েছে... ইশ... তখন আমি খেয়াল করি নি... কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বেশ ভালোই মেরেছে... জানি তো... আমার সোনাটা... ওর তিতিরের গায়ে কেউ হাত তুললে কি করবে... ইশ... বাপীকে কবে যে জানাতে পারবো অর্নবের কথা... মনে হচ্ছে এক্ষুনি ছুটে গিয়ে জানিয়ে দিই আমার সোনাটার কথাটা... আচ্ছা... বাপী শুনলে কি বলবে? মা তো জানি শুনেই ভিমরী খাবে... ইশ... মায়ের মুখটা কেমন হবে শুনে ভাবলেই হাসি পাচ্ছে... হয়তো শুনে বিছানা নেবে মা... নাঃ... আমি কিছু বলবো না বাবা মাকে... ও সব বাপীর ওপরেই ছেড়ে দেবো... আমার বাপী ঠিক করে দেবে সব কিছু... মাই কিং...’ গাড়ির জানলার বাইরে মুখ রেখে চুপ করে ভাবতে ভাবতে চলে পৃথা।
গাড়িটা হটাৎই ব্যবস্থা হয়েছে... বরং আরো ভালো করে বলা ভালো এটা অর্নবের হুকুম, পৃথাকে আর এই ভাবে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলা ফেরা নাকি করা চলবে না। ঘটনাটা ঘটেছিল সকালেই। অর্নবের কাছে আদর খাচ্ছিল পৃথা তাদের কথার শেষে... অবস্য অর্নব যে খুব একটা অ্যাকটিভ ছিল তা নয়, বরং নিজের পিরিয়েড হওয়া সত্বেও, ইন্টারেস্টটা ছিল পৃথারই বেশি... ইন্টারকোর্স করা যাবে না জেনেও এতটুকুও ছাড়তে চায়নি অর্নবকে নিজের শরীরের থেকে দূরে... যতটা আদর খাওয়া সম্ভব সেটা আদায় করে নিচ্ছিল ভোরের আলো গায়ে মেখে... কিন্তু বাধ সাধে কাজলের আবির্ভাবে... প্রায় বাধ্য হয়েই অর্নবকে ছেড়ে দরজা খুলতে উঠে যায় বেজার মুখে... যেতে যেতে কানে আসে অর্নবের খুকখুক হাসি... তাতে আরো মাথাটা গরম হয়ে গিয়েছিল যেন তার... দরজাটা খুলেই কড়া চোখে তাকিয়েছিল কাজলের দিকে...
‘আজ একটু সকাল সকাল এলুম... বুজলে...’ ঘরে ঢুকেই বলে কাজল।
আরো যেন খিঁচড়ে যায় মেজাজটা কাজলের কথায়... তার থেকে বাবা কেউ ছিল না, সেটাই ভালো ছিল, প্রণবদা ঘাড়ের ওপরে একটা জ্বালা গছিয়ে দিলো আমার, মনে মনে গজগজ করে পৃথা... ‘তা হটাৎ করে তাড়াতাড়ি আসতে কে বলেছিল? আমি?’ কোমরে হাত রেখে প্রশ্ন করে পৃথা... শেষ না হওয়া আদরটা যেন তখন তাকে শান্তি দিচ্ছে না...
‘ও মা... তুমি রাগ কচ্চো... আমি তো ভাবলুম তুমি খুশি হবে... যা বাওয়া...’ পৃথার মেজাজ দেখে অবাক হয় কাজল।
সাথে সাথে নিজেকে সংযত করে পৃথা... ছি ছি... এই ভাবে সে কাজলের ওপর রাগ দেখাচ্ছে কেন? সত্যিই তো, ওর কি দোষ... বরং ওর জন্যই তো বেচারী তাড়াতাড়ি এসেছে... ও জানবে কি করে একটা বদমাইশ লোক তাকে আদর করছিল?... মনে মনে ভাবে সে... ‘না, না, রাগ কোথায় করলাম, এসে তো ভালই করেছিস... আমাকেও তো আজ অফিস যেতে হবে... কাল যায় নি... কত কাজ পড়ে আছে...’ বলে পৃথা কাজলকে।
‘তোমার না কাল জ্বর হয়েচিলো? আজ আপিস যাবে, মানে?’ ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে কাজল পৃথাকে... ভাব দেখে পৃথার মনে হয় বাড়ির কত্রী ও নয়, কাজলই।
‘আমার কি মুখ দেখে অফিস পয়সা দেয়? জ্বর হয়েছে বলে বাড়ি বসে থাকলে চলবে? হু?’ বাথরুমের দিকে ফিরে যেতে যেতে উত্তর দেয় পৃথা।
‘অ... বাব্বা... সত্যিই বাবা... মেয়েটার সলিল খারাপ, তাও আপিস যেতে হবে... এই আপিসের লোকগুলোর না একটুও মন নেই, জানো... এত খাটায় কেউ...’ বলতে বলতে খেয়াল করে যাকে উদ্দেশ্য করে সে বলে চলেছে, সেই দিদিমনি বাথরুমের মধ্যে ঢুকে গিয়েছে, তার কথা আদৌ শুনেছি কি শোনে নি বুঝতে পারে না সে... তাই আর অপেক্ষা না করে কিচেনে ঢুকে কাজে লেগে পড়ে।
অর্নবও বারন করেছিল তাকে আজ অফিস যেতে, বুঝিয়েছিল আজকের দিনটা বাদ দিতে, কিন্তু ওই বা কি করে, ওর’ও কি ইচ্ছা করছিলো নাকি অর্নবকে ছেড়ে অফিসের কচকচানির মধ্যে ঢুকতে, কিন্তু ও জানে, যতই সে ন্যাশানালাইজড ব্যাঙ্কএ চাকরী করুক না কেন, লোকে হয়তো ভাবে যে সরকারী ব্যাঙ্ক মানেই সেখানে লোকে শুধু শুধু সময় কাটায় আর মাসের শেষে টাকা গুনে বাড়ি নিয়ে আসে, কিন্তু বাস্তবে যে কি ভিষন চাপের মধ্যে থাকতে হয় তা পৃথা চাকরী জয়েন করার পর হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে... সকাল থেকে সন্ধ্যে অবধি হাঁফ ফেলার ফুরসৎ থাকে না এক একদিন... কতদিন হয়েছে, কাস্টমারের চাপে লাঞ্চ পর্যন্ত স্কিপ করতে হয়েছে নির্দিধায়... ম্যানেজারের ঘরের সিসি টিভি ক্যামেরার চোখ সারাক্ষন তাদের ওপরে তাকিয়ে রয়েছে... এতটুকু গল্প করা দূর অস্ত, নিজের মোবাইলের মেসেজ চেক করবে, তারও সুযোগ হয়নি কতদিন... তাই অনেক কষ্টে অর্নবকে বুঝিয়েছে সে... শেষে তাকে দিয়ে বলিয়ে নিয়েছে অর্নব যে প্রতি দু-ঘন্টা অন্তর সে ফোন করে জানাবে যে কেমন আছে... অর্নবের ছেলেমানুষি দেখে মনে মনে হেসেছে... নাঃ... শুধু হাসেই নি সে... খুশিতে মনটা ভরে গিয়েছিল... মা এই রকম ছেলেমানুষি করে, তার প্রতিটা খেয়াল রাখে, সেটা যেন খুবই স্বাভাবিক... সেখানে কোন অস্বাভাবিকত্ব নেই, কিন্তু এই অজানা, অচেনা শহরে তাকে এই ভাবে যত্নে ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখার লোক রয়েছে, সেটা ভাবতেই যেন প্রজাপতির মত হাওয়ায় ডানা মেলতে ইচ্ছা করে... ভেসে বেড়াতে ইচ্ছা করে ছোট্ট ডানায় ভর মেলে... আহহহ... এযে কি পরম পাওয়া, যে না পেয়েছে সে এর মর্ম উপলব্ধি করতে পারবে না... এই ভাবে বিরক্ত হতে সে হাজার সহস্রবার রাজি... রাজি এই ভাবে শাসনের মধ্যে থাকতে... নিজের সব কিছু উজার করে তুলে দিতে এই লোকটার হাতের মধ্যে।
সাতটার মধ্যেই কাজ সেরে চলে গিয়েছিল কাজল, আর সেও অর্নবের তত্বাবধানে গিজারের গরম জল মিশিয়ে, ছদ্ম রাগ দেখাতে দেখাতে স্নান সেরে তৈরী হয়েছিল অফিসের জন্য... হ্যাঙ্গার থেকে সালওয়ার কামিজ নামিয়ে তৈরী হচ্ছিল সে, আর তার খাবার নিয়ে পেছন পেছন ঘুরছিল অর্নব, থেকে থেকে খাইয়ে দিচ্ছিল তাকে... নিজেকে কেমন রানীর মত লাগছিল আজ তার... ভাবতেই ফিক করে হেসে ফেলে পৃথা আনমনে... গাড়ির সিটে মাথাটা হেলিয়ে ভাবতে থাকে সে।
হাতে নেওয়া সালওয়ার কামিজটা পছন্দ হয় নি অর্নবের... বলেছিল, ‘এটা কেন পরছ? এটা তো কাচা নয়? এখন জ্বরের সময় কাচা পোষাক পরাই তো ভালো...’ অবাক হয়েছিল পৃথা... কোনটা তার পরা আর কোনটা নয়, সেটাও খেয়াল রেখেছে মানুষটা? যদি সত্যিই দেখতে পেতো লোকটাকে চোখে, তাহলে ওর চোখের মধ্যে চোখ রেখে দেখতো সে, কত ভালোবাসা লুকিয়ে আছে তার ওই চোখ জোড়ায়... ভালো লেগেছিল তার ঠিকই, কিন্তু প্রকাশ করেনি মুখে... বলেছিল... ‘আচ্ছা, তুমি কি আমার সব জানো?’
অবাক গলায় প্রশ্ন করেছিল অর্নব, ‘কেন? তোমার আবার না জানা কি আছে আমার?’
‘দূর বোকা... আমার শরীর খারাপ হয়েছে জানো না? আবার কাচা একটা জামা ভাঙবো নাকি? এটাই পরে চালিয়ে দিই... সেই তো কাচতেই হবে এগুলো... তখন না হয় অন্য পরা যাবে’খন...’ হাসতে হাসতে বোঝাবার চেষ্টা করেছিল সে।
‘শরীর খারাপ হওয়ার সাথে পোষাকের কি রিলেশন?’ জিজ্ঞাসা করেছিল তার প্রিয়তম।
‘হ্যা, মশাই... রিলেশন আছে বৈকি... শরীর খারাপ হলে আর নতুন কিছু ভাঙিনা তখন... পরা ড্রেস পরেই চালিয়ে দিই... বুঝলে বুদ্ধুরাম...’ উত্তর দিয়েছিল পৃথা।
‘এটা মানতে পারলাম না আমি... এ আবার হয় নাকি? পিরিয়েড হলে আবার কেউ পুরোনা না কাচা ড্রেস পরে নাকি আবার? এ সব যত কুসংস্কার...’ বলেছিল অর্নব... বলার সময় ভুরু কুঁচকেছিল কি না কে জানে?
‘হয়তো তাই... কুসংস্কারই হবে, কিন্তু কি করবো সোনা... বরাবর এটাই দেখে এসেছি যে... মা কে ও তো দেখছি এটাই করতে, তাই নতুন করে আর সংস্কার ভাঙার কথা মনে আসে নি কখনও...’ বলার ফাঁকে ততক্ষনে প্যান্টি পরে ব্রায়ের স্ট্র্যাপে হাত গলিয়ে দিয়েছে সে... ‘একটু লাগিয়ে দাও তো স্ট্র্যাপটা...’ ব্রায়ের কাপটা নিজের সুগোল বুকের ওপরে চেপে ধরে কাঁধের ওপর দিয়ে ঘাড় তুলে বলেছিল পৃথা... ঘাড়ের ওপরে গরম নিঃশ্বাসের অনুভূতিতে সিরসির করে উঠেছিল শরীরটা তার... অক্লেশে হেলিয়ে দিয়েছিল দেহটাকে পেছনদিকে, অর্নবের চওড়া ছাতির ওপরে... ঘন আলিঙ্গনে টেনে নিয়েছিল তাকে অর্নব... জড়িয়ে ধরেছিল পেছন থেকে... প্যান্টি পরিহিত নরম বর্তুল নিতম্বের ওপরে তখন ইষৎ স্ফিত হয়ে ওঠা অর্নবের পৌরষের ছোয়া... আপনা থেকেই চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পৃথার... আবেশে... পুরুষালী কর্কশ হাতের ছোয়া নগ্ন তলপেটের, প্যান্টির ইলাস্টিক ব্যান্ডটার ওপরে ঘুরে বেড়াতে শুরু করে দিয়েছিল... ‘আহহহহ... প্লিজ অর্নব... এরকম করলে অফিস যাবো কি করে?’ গুনগুনিয়ে উঠেছিল সে তার ইষৎ ফাঁক হয়ে যাওয়া ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে... ‘এমন ভাবে আদর করলে যে আর অফিস যেতে ইচ্ছা করবে না সোনা...’ ফিসফিসিয়ে উঠেছিল আদরে গলে যেতে যেতে... তার মনে হচ্ছিল যেন সমস্ত শরীরটা একটু একটু করে শিথিল হয়ে যাচ্ছে... অবস হয়ে পড়ছিল হাতগুলো... বুঝতে পারছিল বুকের ওপরে ধরে রাখা ব্রা সমেত হাতটা এক্ষুনি নেমে যাবে হয়তো তার বুকটাকে অর্নবের হাতের জন্য ছেড়ে দিয়ে... ‘প্লিজ... সোনা... এমন কোরো না এখন... প্লিজ...’ মুখ বলেছিল, কিন্তু মন চেয়েছিল আরো, আরো আদর... ভেসে যেতে চেয়েছিল সে আদরের সমুদ্রে... কানে এসেছিল অর্নবের গাঢ় কন্ঠস্বর... ‘তোমাকে এই ভাবে দেখে ছাড়তে ইচ্ছা করছে না যে...’ দুটো তপ্ত ঠোটের স্পর্শ এসে লেগেছিল তার নগ্ন ঘাড়ের ওপরে... তলপেটের ওপরে ঘুরে বেড়ানো হাতটা আরো উঠে এসেছিল ওপর পানে... সুগোল স্তনদুটোর তলায় খেলা করে বেড়াচ্ছিল সে হাতের পাঞ্জাদুটো... ‘মমমম... আহহহহ... প্লিজ... এখন না... পরে... প্লিজ...’ গুঙিয়ে উঠেছিল পৃথা সম্ভাব্য আদর পাবার প্রবল আকাঙ্খায়... অনুভব করেছিল হাতের পাঞ্জাদুটো তার ধরে রাখা ব্রায়ের কাপের তলা দিয়ে বেয়ে উঠে আসছে আরো ওপর দিকে... তার নরম স্তনের দিকে... নিজের হাতের চাপ আলগা করে জায়গা করে দিয়েছিল অর্নবের হাতকে... চোখ বন্ধ করে আরো এলিয়ে দিয়েছিল শরীরটাকে পেছন পানে... বুঝতে পেরেছিল তার হাঁটু তার সাথে সহযোগীতা করছে না... কতক্ষন তার পক্ষে এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হয়ে সে জানে না... সে ভিজে উঠছিল... ভিষন দ্রুত... তার প্যান্টির মধ্যে থাকা স্যানিটারী ন্যাপকিনটা ভরে যাচ্ছিল যত না শারীরিয় দূষিত রক্তে, তার অধিক বেশি দেহের কামঘন রসের আধিক্যে... নাঃ... আর নয়... এবার পাগলটাকে থামাতেই হবে... তা না হলে আর অফিস যেতে পারবে না সে... প্রায় জোর করেই নিজের মনকে বোঝায় সে... ঘুরে দাঁড়িয়েছিল অর্নবের মুখোমুখি... মুচকি হেসে বলেছিল, ‘পাগল একটা... এখন এই রকম দুষ্টুমী করলে হবে? হু? আমাকে যেতে দেবে না?’
মুখে কোন উত্তর দেয়নি অর্নব... ঘাড় কাত করে মুখটা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে চেপে ধরেছিল নিজের তপ্ত ঠোট জোড়া পৃথার পাতলা ঠোটের ওপরে... মুখের মধ্যে জিভটা পুরে দিয়েছিল সে... খুঁজে নিয়েছিল প্রিয়ার জিভটাকে... খুজে পেতে খেলা করে বেড়াতে শুরু করেছিল জিভদুটো একে অপরে সাথে... পৃথার প্যান্টি ঢাকা নরম বর্তুল পাছার দাবনাদুটোকে দুই হাতের তেলোয় খামচে ধরেছিল প্রায়... তুলতুলে নরম সুগোল দাবনাদুটো নিষ্পেশিত হচ্ছিল অর্নবের পুরুষালী কড়া হাতের তালুর মধ্যে... সেই ভাবে ধরেই পৃথার শরীরটাকে টেনে চেপে ধরেছিল সে নিজের দৃঢ় হয়ে ওঠা পুরুষাঙ্গের ওপরে... দুটো মসৃণ উরুর মাঝে প্রায় সেঁদিয়ে গিয়েছিল সেই শক্ত হয়ে এগিয়ে বাড়িয়ে থাকা অর্নবের পৌরষটা... ‘উমমমম...’ অর্নবের মুখের মধ্যে গুঙিয়ে উঠেছিল পৃথা... নির্দিধায় নিজের থেকেই ঠেসে এগিয়ে দিয়েছিল আপন জঙ্ঘাটাকে প্রেমিকের কোলের দিকে... হাত তুলে জড়িয়ে ধরেছিল প্রিয় মানুষটাকে প্রগাঢ় আলিঙ্গনে... চোখ বন্ধ করে নিজেকে সমর্পিত করেছিল প্রিয়তমের ছাতির পরে... ঘর্ষন খাচ্ছিল লোমশ ছাতির ওপরে ব্রা খসে পড়া বুক দুটো... ‘নাহহহ... আহহহ... এবার ছাড়ো প্লিজ... আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারবো না এরপরে আর... প্লিজ সোনা... আর নআআআআহহহ...’ ঠোটের ওপরে থেকে নিজের ঠোটটা ছাড়িয়ে নিয়ে কোনরকমে অনুনয় করে উঠেছিল পৃথা... মন তখন দূরন্ত গতিতে আরো মিলে যেতে চাইছিল তার প্রিয়তমের দেহের সাথে... কিন্তু বাস্তবিক সেটা সম্ভব নয় সে জানতো... একে তার শরীরের বাধা, তার ওপরে অফিসের তাড়া... শেষে প্রায় বেরসিকের মতই জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে সরিয়ে নিয়েছিল অর্নবের থেকে তফাতে... আলমারীর গায়ে হেলান দিয়ে প্রায় হাঁফাতে হাঁফাতে না দেখা প্রেমিকের পানে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠেছিল, ‘ডাকাত একটা... সব লুঠ করে নেবার তাল...’ বলতে বলতেই অনুভব করে উষ্ণ নিঃশ্বাস অর্নবের, নিজের মুখের ওপরে... ‘এই না... আর না... লক্ষ্মী সোনা... আর তো দুটো দিন... তারপর তুমি যেমন খুশি তেমনি আদর কোরো তোমার তিতিরকে... তখন আর কোন বাধা থাকবে না... প্লিজ সোনা... আজকে ছেড়ে দাও...’ কাতর কন্ঠে বলে উঠেছিল সে... বলেছিল ঠিকই মুখে, কিন্ত হাত বাড়িয়ে ফের আলিঙ্গনের বেঁধে নিয়েছিল তার প্রিয়তমকে... নিজের নরম বুকটাকে চেপে ধরেছিল অর্নবের পুরষালী লোমশ বুকের ওপরে... ‘আমাকে অফিস যেতে দেবে না সোনা?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করেছিল পৃথা... প্রশ্ন করলেও, নিজের ঠোটটাকে এগিয়ে দিয়েছিল শূণ্যপানে... অর্নবের অবস্থান বুঝে... আর তখনই বাইরের দরজায় অনাহুতের মত বেলের আওয়াজ কানে আসে... টিং টং... টিং টং...
একরাশ বিরক্তিতে ভুরু কুঁচকে গিয়েছিল পৃথার... কাজল তো নিজের কাজ করে চলে গিয়েছে... তবে আবার কে? প্রশ্ন বহুল চোখে তাকিয়েছিল নিরাকার অর্নবের পানে... তারপর তাড়াতাড়ি হাউসকোটটা হ্যাঙ্গার থেকে টেনে নিয়ে গায়ে পড়ে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়েছিল দরজা খুলতে।
আই হোলে চোখ রেখে এক অপরিচিত অল্প বয়সি যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিল পৃথা... দেখে ইতঃস্থত করেছিল খানিক, তারপর মনে পড়ে গিয়েছিল যে সে একা নয়, তার সাথে অর্নবও রয়েছে... তাই নির্দিধায় দরজা খুলে মেলে ধরেছিল সে... ‘কাকে চাই?’ গম্ভীর মুখে প্রশ্ন করেছিল আগুন্তুকের দিকে তাকিয়ে।
‘মিস মুখার্জি...’ ইতস্থত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করেছিল আগুন্তক।
‘আমি... কি চাই?’ ফের প্রশ্ন করেছিল পৃথা।
‘আজ্ঞে, আমি ইসমাইল, আমাকে সাহেব গাড়ি দিয়ে পাঠালেন...’ উত্তর এসেছিল আগুন্তুকের থেকে।
‘সাহেব গাড়ি দিয়ে পাঠালেন মানে? কোন গাড়ি? কার গাড়ি? কোন সাহেব পাঠিয়েছেন? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না...’ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করে পৃথা।
‘না... মানে কর্মকার স্যর গাড়ি পাঠিয়েছেন... আপনার কাছে...’ ফের ইতস্থত উত্তর এসেছিল ছেলেটির কাছ থেকে।
আরো কিছু হয়তো প্রশ্ন করত পৃথা, কিন্তু তার আগেই ভেতরের ঘর থেকে অর্নবের গলা ভেসে এসেছিল, ‘ওকে বলো নীচে ওয়েট করতে...’
অর্নবের গলার স্বরে পৃথা একবার ঘাড় ফিরিয়ে পেছন পানে ঘরের দিকে তাকিয়ে নিয়ে, কি ভেবে আগুন্তুকের উদ্দেশ্যে সে বলে উঠেছিল, ‘আচ্ছা, তুমি নীচে ওয়েট করো...’
ছেলেটিও আর অপেক্ষা করে নি, তরতর করে নেমে গিয়েছিল সিড়ি বেয়ে... পৃথা দরজা বন্ধ করার আগে একবার নজর বুলিয়ে নিয়েছিল পাশের ফ্ল্যাটের দিকে... দেখে মনে মনে নিশ্চিন্ত হয়েছিল সে, ‘নাঃ, আজ আর দরজা খুলে দেখছে না... নিশ্চয় অন্য কাজে ব্যস্ত আছে... তা না হলে এতক্ষনে দরজা খুলে মুখটা উঁকি মারতোই...’ ভাবতে ভাবতে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল সে।
‘তোমার গাড়ি এসে গিয়েছে... তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নাও...’ প্রায় ঘাড়ের কাছে অর্নবের গলা পেয়ে ফিরে দাঁড়ায়।
‘এই দাঁড়াও... দাঁড়াও... আমার গাড়ি মানে? এ সব আবার কি?’ অবাক গলায় প্রশ্ন করেছিল পৃথা।
‘তোমার গাড়ি মানে তোমার গাড়ি...’ হাসতে হাসতে উত্তর এসেছিল অর্নবের কাছ থেকে।
ঘরের দিকে হাঁটতে হাঁটতে গায়ের থেকে হাউসকোটটা খুলে ফেলতে শুরু করেছিল সে... সাথে প্রশ্ন করেছিল, ‘আরে ব্যাপারটা তো খুলে বলবে? হটাৎ আমার জন্য প্রণবদা আবার গাড়ি পাঠালো কেন? আমার আবার কবে থেকে গাড়ির প্রয়োজন হলো?’ কথা শেষে ততক্ষনে সে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল... তাদের খানিক আগের আদরের ঠেলায় হাত থেকে খসে পড়ে থাকা ব্রাটা মাটির থেকে তুলে নিয়ে পড়তে শুরু করে দিয়েছিল ফের।
এবার আর দুষ্টুমী করে নি অর্নব... পেছন থেকে পৃথার মসৃণ পীঠের ওপরে ব্রায়ের হুকটা লাগিয়ে দিতে দিতে উত্তর দিয়েছিল, ‘আমার তিতিরের শরীর খারাপ, আর সে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে অফিস যাবে? আর আমি ঘরে বসে সেটা দেখবো?’
ব্রায়ের হুকটা লাগানো হলে ফিরে দাড়িয়েছিল সে, ‘এ বাবা, এটা ঠিক নয়... আমার জন্য প্রণবদা অফিসের গাড়ি পাঠিয়ে দেবে... ছি ছি... এটা যেন কেমন...’ বিব্রত মুখে বলে উঠেছিল পৃথা।
‘প্রণবদা কি নিজের গাড়ি পাঠিয়েছে?’ চোখের সামনে শুধু মাত্র ব্রা আর প্যান্টি পরিহিত পৃথার তম্বী শরীরটা দেখতে দেখতে কয়’একপা এগিয়ে এসেছিল অর্নব... সেটা অনুভব করে তাড়াতাড়ি মুচকি হেসে হাত তুলে তাকে আটকে বলে উঠেছিল পৃথা, ‘এই... আর দুষ্টুমী নয় কিন্তু...’
‘তোমাকে কি অসম্ভব সেক্সি দেখতে লাগছে, সেটা তুমি জানো?’ ফিসফিসিয়ে প্রশ্ন করেছিল অর্নব।
‘বদমাইশ ডাকাত একটা...’ খিলখিলিয়ে হেসে উঠেছিল পৃথা অর্নবের কথায়... মনে মনে ভিষন খুশি হয়েছিল সে... তাড়াতাড়ি করে নিজের বুকের ওপরে হাত চাপা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গিয়েছিল অর্নবের নাগাল থেকে... বিছানার ওপরে পড়ে থাকা কুর্তিটা তুলে গলিয়ে নিয়েছিল গলার থেকে... ‘পাজি, অসভ্য বুড়ো একটা...’ হাসতে হাসতে বলে উঠেছিল পৃথা পরণের পোষাকটাকে ভালো করে নিজের শরীরের ঢাকতে ঢাকতে।
‘কোই... বললে না তো... প্রণবদা হটাৎ কেন আমার জন্য গাড়ি পাঠালো? এই ভাবে অন্য লোকের গাড়ি ব্যবহার করতে কিন্তু আমার একদম ভালো লাগে না... আর তাছাড়া আমাকে তো সেই পাবলিক ট্রান্সপোর্টেই যাতায়াত করতে হবে বলো... সেখানে একদিন দু-দিন এই ভাবে গাড়ি চড়ে লাভ কি?’ বিছানায় বসে পা’টাকে লেগিংসের মধ্যে গলিয়ে দিয়ে বলে উঠেছিল পৃথা।
‘একদিন দুই-দিনএর জন্য কে বললো তোমায়?’ অর্নবের প্রশ্ন ভেসে এসেছিল বিছানার ওই ধার থেকে।
বিছানার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে লেগিংসটাকে কোমরের কাছে টেনে ঠিক করতে করতে প্রশ্ন করেছিল, ‘সে আবার কি? আমি কি সারা জীবনই প্রণবদার অফিসের গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াবো?’
হাল্কা হাসির আওয়াজ কানে আসতে মুখ তুলে তাকিয়েছিল পৃথা... ‘প্রথমত হ্যা... তুমি এবার থেকে গাড়িতেই যাতায়াত করবে... আর দ্বিতীয়তঃ গাড়িটা আমার... বুঝেছ? তাই তুমি চড়বে না তো কে চড়বে? হু?’ উত্তর দিয়েছিল অর্নব।
‘তোমার গাড়ি?’ একটু অবাকই হয়েছিল পৃথা।
‘কেন? আমার গাড়ি থাকতে নেই?’ ফিরিয়ে প্রশ্ন করেছিল অর্নব।
‘না... তা বলছি না...’ আমতা আমতা করেছিল পৃথা।
‘বলছো না... কিন্তু মনের মধ্যে থেকে দ্বিধাটাও তো যাচ্ছে না...’ বলেছিল অর্নব।
‘না... মানে...’ তাও ইতস্থত করেছিল পৃথা।
‘আরে বাবা, প্রণবের অফিস মানে তো আমারও অফিস, নাকি? আর আমার তো আরো একটা গাড়ি ছিল, আগের গাড়িটা পুড়ে যাওয়া সত্তেও, এই গাড়িটা ওর কাছেই রাখা থাকতো, আমার বেরোনোর প্রয়োজন হলে প্রণব নিয়ে চলে আসতো, এখন থেকে তুমি এটায় চড়বে... এখানে এতো সংশয়ের কি, সেটাই তো বুঝতে পারছি না... নিজের বরের গাড়ি কি অন্য লোকে চড়বে?’ এবার একটু বিরক্তির সুরেই বলেছিল অর্নব।
অর্নবের কথায় থমকে গিয়েছিল পৃথা, তারপর ফিক করে হেসে ফেলেছিল... বিছানা ঘুরে এগিয়ে গিয়েছিল অর্নবের গলার স্বর লক্ষ্য করে... দুহাত বাড়িয়ে অর্নবের গলাটা জড়িয়ে ধরে বলে উঠেছিল... ‘ইশ... এই লোকটাই আগে তো আমাকে নিজের বলে মানতেই চাইছিল না... আর এখন দেখো... বিয়ের আগেই বউকে গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছে...’
পৃথার কথায় দুজনেই এক সাথে হেসে উঠেছিল...
গাড়ির বন্ধ কাঁচের এপার থেকে বাইরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওঠে পৃথা, সকালের কথাগুলো ভাবতে ভাবতে।
ক্রমশ...