02-08-2019, 09:55 PM
ফুল শয্যা
মানুষের জীবনটাই বুঝি মিলনে বিরহে ভরপুর। কোনদিন ভাবতেও পারিনি কেয়া আপার সাথে বিদায়ের ঘন্টাটি বাজাতে হবে! সেই রাতে সিলভীও খুব শখ করে, আনুষ্ঠানিকভাবেই কেয়া আপাকে বিদায় জানানোর জন্যে, বাসর রাতের সূচনাও করেছিলো। কি হতে কি হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারলাম না। শেষ পর্যন্ত সিলভীর সাথেই প্রলয় এক যৌন কর্ম করে, ক্লান্ত দেহে ঘুমিয়ে পরেছিলাম, সিলভীর নরোম পিঠের উপরই। যখন ঘুমটা ভাঙলো, তখন দেখলাম চমৎকার একটি সকাল। ইদানীং যে সকালগুলোতে পাশে ঘুমানো কেয়া আপার ডাকেই ঘুম ভাঙতো, সেদিন ঘুম ভাঙলো, কেয়া আপার ডাকেই! তবে, কেয়া আপা তার দাঁত মাজতে মাজতেই আমার ঘরে ঢুকে ডাকছিলো, অনেক ঘুমিয়েছো! কেয়া আপার ডাকেই লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। অথচ, সিলভী তখনো বেঘোর ঘুমে। তখন আমার দেহে যেমনি কোন পোষাক ছিলোনা, সিলভীর দেহেও না। সকালের স্নিগ্ধ আলোতে নগ্ন দেহের সিলভীর পিঠ আর ভারী পাছাটা দেখে, নিজের অজান্তেই নুনুটা আবার চরচরিয়ে উঠলো। কেয়া আপাও আমার সেই চরচরিয়ে উঠা নুনুটার দিকে চোখ রাখলো! কেয়া আপা তা দেখে আর রাগ থামিয়ে রাখতে পারলো না। বললো, যথেষ্ট হয়েছে। বাথরুমে গিয়ে গোসলটা সেরে নাও! আমি সিলভীর পিঠে চাপর দিয়ে ডাকতে চাইলাম, সিলভী! সিলভী! কেয়া আপা ধমকে বললো, ঠিক আছে, আমি ডাকছি! তুমি বাথরুমে যাও! আমার বুঝতে বাকী রইলোনা যে, কেয়া আপা এক অতৃপ্তির জ্বালাতেই সারা রাত জ্বলে পুড়ে মরেছে। তাই তার মেজাজটা এমন গরম। আসলে গত রাতে এমন একটি ব্যাপার ঘটে যাবার জন্যে মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। সিলভীই যেনো সব প্যাঁচ পুঁচ লাগিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু, কেয়া আপার এই বিদায়ের কাছাকাছি দিনগুলোতে তাকে কোন কষ্টও দিতে ইচ্ছে হলো না। আমি সিলভীকে আর না ডেকে, বাথরুমের দিকেই এগিয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ পরই বাথরুমের দরজায় টুকার শব্দ শুনতে পেলাম। আমি শাওয়ারে ভিজতে ভিজতেই বললাম, এই তো, আমার গোসল আর একটুতেই শেষ হবে! দরজার বাইরে সিলভীর ফিস ফিস গলা শুনতে পেলাম, এই, আমাকেও ঢুকাও! তোমার সংগে আমারও গোসল করতে খুব ইচ্ছে করছে! আমি দরজাটা খোলে সামন্য ফাঁক করে বললাম, কি সব পাগলামী করছো বলো তো! কেয়া আপা কি ভাবছে বলো তো? সিলভী দরজাটা আরো ফাঁক করে ভেতরে ঢুকে, ভেতর থেকে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে বললো, যা করছি, সব ঠিকই করছি! আমি সব প্লান মাফিকই করেছি! কেমন বোকা বানালাম মেয়েটাকে দেখলে? আমি বললাম, মানে? সিলভী তার নগ্ন দেহটা শাওয়ারের নীচে ভিজিয়ে ভিজিয়ে বলতে থাকলো, কি সাহস বলো তো, সাধারন একটা কাজের মেয়ে! সিলভীর ভেজা নগ্ন দেহটা আমি মুগ্ধ হয়েই দেখছিলাম! তার পেয়ারার মতো বক্ষ দুটো গড়িয়ে গড়িয়ে কি চমৎকার করে পানির ধারাগুলো গড়িয়ে গড়িয়ে পরছে! আমি তা উপভোগ করতে করতেই বললাম, কেয়া আপা কাজের মেয়ে ঠিকই, কিন্তু, আমার কাছে একটি রত্ন! সিলভী চেঁচিয়েই বললো, রাখো তোমার রত্ন! রত্নের বুঝো কি তুমি? একটা বোকা মেয়ে! আমি ভয় দেখিয়ে, যা যা করতে বললাম, সবই করলো! বোকা না হলে কি, কেউ এমন করে? আমি বললাম, মানে? সিলভী বললো, আসলে গতকাল বিকালে তোমার আর আমার প্রেমের ব্যাপারটা খোলে বলার জন্যেই তোমাদের বাড়ী এসেছিলাম। সব কিছু বলার পর কেয়া কিনা বললো, আমি নাকি ঠিক করিনি! তার পেটে নাকি তোমার সন্তান! মেজাজটা লাগে কেমন বলো! আমি মন খারাপ করেই বললাম, কথাটা মিথ্যে নয়! সিলভী তার গায়ে সাবান মাখাতে মাখাতে বললো, হুম, আমিও অনুমান করেছিলাম! তাই বলে একটা সাধারন কাজের মেয়ে, একটা সুযোগের ব্যবহার করে তোমাকে ব্ল্যাকমেইল করবে! বাবাকে কত বড় মুখ করে বলেছিলাম, তুমি আমার ভালো বন্ধু! তোমার নামে এমন একটা রিউমার ছড়ালে বাবাকে আমি মুখ দেখাতাম কেমন করে? আমি বললাম, স্যরি, তার জন্যে আমি নিজেও প্রস্তুত ছিলাম না। কি হতে যে কি হয়ে গেলো, নিজেই এখন বুঝতে পারছিনা। সিলভী তার পেয়ারার মতো স্তন দুটোতেও সাবান মাখিয়ে মাখিয়ে ভালো করে করে মর্দন করতে করতে বললো, আসলে তুমিও বোকা! কাল বিকালে তাৎক্ষণিকভাবে যদি এসব উপস্থিত বুদ্ধিগুলো কাজে না লাগাতাম, তাহলে সত্যিই তোমার মহা বিপদ হতো! এই সমাজে মুখ দেখাতে পারতে না! আমি আমতা আমতা করেই বললাম, কি উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়েছো? সিলভী বললো, এই যে বাসর রাত! বোকা মেয়েটাকে একটু লোভই না শুধু দেখালাম! কোন কিছু করতে দিয়েছি বলো? এতে করে যদি খানিকটা অপমান বোধ লাগে, তাহলে লাগুক! ভালোয় ভালোয় এখান থেকে কেটে পরুক! আমি খানিকটা রাগ করেই বললাম, তুমি কি জোড় করে কেয়া আপাকে এখান থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইছো? সিলভী বললো, আমি তাড়াতে যাবো কেনো? নিজেই তো বললো, কার সাথে নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে আছে! তাই আমিও বললাম, ঐ তার সাথেই যেনো তাড়াতাড়ি বিয়েটা সেরে ফেলে। টাকা পয়সা যা লাগে সব আমিই দেবো! আমি বললাম, কিন্তু, এত সবের কারন? সিলভী বললো, কারন একটাই! আমি কখনো হারতে চাইনা! এমন কি আমার প্রথম প্রেমের কাছেও না! সিলভীকে আমিও ভালোবাসি। তারপরও সিলভীর কথাবার্তা মোটেও ভালো লাগলো না। কেয়া আপাকে কষ্ট দিয়ে সিলভীর ভালোবাসা জয় করার মতো মন আমার কখনোই ছিলো না। আমি আর কথা বাড়ালাম না। সেদিন কলেজে যেতেও মন চাইলো না। সিলভীও গেলো না। তবে, বেলা এগারটা পর্যন্তই আমার পাশাপাশি ছিলো। সেই সময়টাতে কেয়া আপা মন খারাপ করেই বারান্দার সিঁড়িতে বসে ছিলো। আমি সিলভীকে বললাম, কেয়া আপা তো তোমারও ভালো বান্ধবী ছিলো! কেয়া আপা মন খারাপ করে বসে আছে, তোমার কি এখন খারাপ লাগছে না? সিলভী বললো, মোটেও না! কিছু কিছু ব্যাপারে বান্ধবীরাও যদি শেয়ার করতে চায়, তখন কেউ আর বান্ধবী থাকে না। আমি বললাম, কলেজেও গেলে না, বাড়ীতে যাবে না? সিলভী বললো, না, কোথ্থাও যাবো না। বাড়ীতে বলে এসেছি, বান্ধবীর বিয়ে! তাই এক সপ্তাহ বান্ধবীর বাড়ীতেই থাকবো! তাই কেয়ার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের বাড়ী থেকে এক পাও নড়ছিনা! সিলভীর ব্যাপারটা সত্যিই আমাকে ভাবিয়ে তুললো! আমার চোখের সামনে কেয়া আপা এমন করে ধুকে ধুকে, নীরবে চোখের জল গোপন করবে, শুধুমাত্র সিলভীর ভয়ে! তা কি করে হয়? আমি বললাম, তুমি তো তোমার বান্ধবীর বিয়েতেই এসেছো! সেই বান্ধবীটা তো কেয়া আপাই! ঠিক আছে, আমিই কেয়া আপাকে বিয়ে করবো! বাবাকে আমি সব খোলে বলবো! সিলভী চোখ পাঁকিয়েই বললো, করেই দেখো না! আমার বাবা চেয়ারম্যান পদে নাই ঠিকই! তবে, অনেক ক্ষমতা এখনো রাখে! তোমাদেরকে গ্রাম ছাড়া করে ছাড়বো না! আমি মরিয়া হয়ে বললাম, তুমি এমন পাগলামী করছো কেনো বলো তো? সিলভী অতিরিক্ত ক্ষিপ্ত হয়েই বললো, পাগলামী আমি করছি? নাকি আমাকে পাগল বানিয়ে দিয়েছো! না পারছি তোমাকে ভালোবাসতে, না পারছি তোমাকে ঘৃণা করতে! আমার কথা একবার ভেবে দেখেছো! আমার সব বান্ধবীরা জানে, তোমার সাথে আমার প্রেম আছে! এখন এসব জানাজানি হলে আমার লজ্জাটা কেমন হবে, ভাবতে পারো? এই বলে সিলভী হু হু করে কাঁদতে থাকলো। কথা বলার মতো কোন ভাষা আমি খোঁজে পেলাম না। মানুষ বোধ হয় অনেক রকমের আঘাতই সয়ে নিতে পারে। অথচ, ফুলের মতো এই দুটি মেয়ের আঘাত কিছুতেই সইতে পারলাম না। সিলভী সত্যি সত্যিই আমাদের বাড়ী রয়ে গেলো ব্রিটীশ সাম্রাজ্যবাদীদের মতোই। চৌদ্দ বছর বয়সের একটা মেয়ে, নিজেই ছুটাছুটি করতে থাকলো কেয়া আপার বিয়ের আয়োজন নিয়ে। এমন কি কেয়া আপার সাথে যে ধীরে সুস্থে একটু কথা বলবো, সে সুযোগটিও সে দিলো না। পরদিন চোখের জল ফেলতে ফেলতেই বিদায় নিতে চাইলো কেয়া আপা। সিলভীর সামনেই বললো, অনি, অনেক কিছুই তো হয়ে গেলো! তোমার কাছে আমার কিছু চাইবার নেই। শুধু একটি অনুরোধ রাখবে আমার? আমি বললাম, কি? কেয়া আপা সহজভাবেই বললো, আমার হাতটা ধরে, আমাকে আমাদের বাড়ী পৌঁছে দেবে! আমার বয়স তখন চৌদ্দ! সমাজ সংস্কার এর অনেক কিছু বুঝি, আবার বুঝিও না! আমার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরতে থাকলো টপ টপ করে! সিলভীকে আমি আর কোন পাত্তা দিলাম না। মনে হতে থাকলো, সিলভী আমার জীবনে না এলেও পারতো। আমি কেয়া আপার হাতটা শক্ত করেই চেপে ধরলাম। তারপর বললাম, চলো!
(প্রথম খন্ড সমাপ্ত)