Thread Rating:
  • 18 Vote(s) - 3.06 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কাজলদীঘি, শ্মশান ও পীরসাহেবের থান by Mamun Jafran
#57
পার্টঃঃ২৪
সে কি করে হয়। কাকার পাওনা, আমার পাওনা। সব মিলিয়ে......।
আর দু’একশো টাকা হয়তো পাবো।
সেটাওতো টাকা, নাকি টাকা নয়।
তুই এতো হিসেব করিস না।
ঠিক আছে।
ফোনটা বেজে উঠলো।
বাসু বাইক থামালো। পকেট থেকে বার করে দেখলাম মিত্রার ফোন।
কোথায় এখন।
আমি পৌঁছেগেছি।
এতো তাড়াতাড়ি।
তুই আয় বলবো। তুই কোথায়।
আমার যেতে আরো মিনিট পনেরো লাগবে।
ঠিক আছে।
কি ম্যাডাম পৌঁছে গেছেন। বাসু বললো।
আর বলিস না, আমার অনেক জ্বালা, সংসারনেই তবু ভরাসংসার।
সত্যি তুই ছিলি, না হলে স্যারের যে কি হতো।
দুর ওই সব নিয়ে ভাবি না।
নারে অনি, ললিতাকে তোর কথা বলতেই, ও বিস্ময়ে আমার দিকে তাকায়।
তোর বউকে এর মধ্যে একদিন দেখতে যাব।
কবে যাবি।
কথা দেবোনা। হুট করে চলে যাবো।
তুই বাইক চালাতে জানিস না।
না।
সাইকেল চালাতে পারিসতো।
পারতাম। এখন পারবনা। অভ্যাস নেই।
দাঁড়া তোকে বাইকটা শিখিয়ে দেবো।
না। তার দরকার পরবে না।
কেনো।
কলকাতায় অফিসের গাড়ি চড়ি, কোথাও গেলে প্লেন কিংবা ট্রেন। বাইক চালাব কখন।
তাও ঠিক।
কথা বলতে বলতে পৌঁছে গেলাম। নার্সিংহোমের দোরগোড়ায় মিত্রার গাড়িটা রাখা আছে। বাসু বাইকটা একটা সাইড করে রাখল। আমরা দুজনে ভেতরে এলাম, সেই রিসেপসনিস্ট ভদ্রমহিলা ছিলেন, আমাদের দেখে বললেন, দাঁড়ান ম্যাডামকে খবর দিই।
আমার চশমা।
ওটা রেডি আছে। ম্যাডাম বলেছেন, আপনি এলেই খবর দিতে।
মেয়েটি ভেতরে চলে গেলো।
কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে বললো, আপনাকে একবার ভেতরে ডাকছেন।
আমি ভেতরে গেলাম, বাসুও আমার সঙ্গে এলো। বুঝলাম এটা মালিকের বসার ঘর। আরও দুতিনজন বসে আছেন, আমি কাউকে চিন্তে পারলাম না, তবে ডঃ বাসুকে চিন্তে পারলাম। আমাকে দেখে মুচকি হেসে মিত্রা বললো, বোস।
আমরা বাইরে আছি। মনে হচ্ছে মিটিং চলছে।
তোকে নিয়ে আর পারা যাবে না। মিটিং নয় একটু কথা বলছি।
ঠিক আছে তুই বল না, আমি থাকলে এনাদেরও কিছু সমস্যা থাকতে পারে।
তোর সঙ্গে আলাপ করাবার জন্য ওনাদের ডেকেছি।
বাধ্য হয়ে বসলাম।
মিত্রা একে একে সবার সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দিলো। বুঝলাম এরা সবাই ডাক্তার। এও জানাতে ভুললো না আমি কোম্পানীর ওয়ান অফ দেম মালিক। বাসু আমার দিকে একবার তাকাল। বিস্ময় ওর চোখে ঝোরে পরছে। সত্যিতো আমি এই কথাটা ওদের গোপন করেছি। বাসুই প্রথম জানলো। বাসুর চোখে যেমন বিস্ময়, ঠিক তেমনি যারা এখানে বসে আছেন তাদের চোখেও বিস্ময়। ওরা যেনো ভুত দেখছে। এরা নিশ্চই ভেবেছিলো, আমি মিত্রার খুব পরিচিত তাই সব ফ্রি করে দিয়েছে। ডাক্তাররা সবাই এবার আমাকে চেপে ধরলেন। আমি খালি একটা কথাই বললাম, মিত্রা আমার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাই এই কথা বলছে। মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে একবার হাসলো, বুবুন তুই এতবড় মিথ্যে কথাটা বলতে পারলি। আমি ওকে ফোন করবো।
না এই উপকার তোকে করতে হবে না। ফেরার দিন সময় নিয়ে আসবো, জমিয়ে গল্প করা যাবে।
একটু কফি খা।
এখানে এসে এই ঘরে বসে কফি খেতে ভালো লাগবে না। তার থেকে বরং বাইরে কোথাও বাঁশের বেঞ্চিতে বসে চা খাবো।
আসর ভাঙলো। আমি সবার আগে বেরোলাম, কাউন্টারে এসে চশমাটা চাইতেই মেয়েটি দিয়ে দিলো। আমি ডঃ বাসুর চেম্বারে একবার গেলাম, উনি বসেছিলেন। আমি দরজাটা ফাঁক করে বললাম, আসতে পারি। দেখলাম ডঃ বাসু চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন, একি বলছেন স্যার। ভাবটা এরকম পারলে আমার চেয়ারে আপনি বসুন। আমি চশমার ব্যাপারে ওনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, উনি সব বলে দিলেন, বললেন কোন অসুবিধে হবে না। দিন সাতেক রেসট্রিকসন-এ থাকতে বলুন, আর ওষুধ গুলো পনেরোদিন কনটিনিউ চলবে। পনেরো দিন পর একবার দেখাতে হবে।
ঠিক আছে।
উনি একবার দেঁতো হাসি হাসলেন। বাইরে বেরিয়ে এসে দেখি, মিত্রা কাউন্টারের কাছে দাঁরিয়ে। আমি বললাম চল।
দাঁড়া রবিন একটু বাইরে গেছে।
ইসমাইল আসে নি।
ওর বাচ্চাটার একটু শরীর খারাপ। রবিন এই এলাকার ছেলে, বললো সব চিনি।
কিছুক্ষণ পর রবিন এলো, ধোপদুরস্ত পোষাক, অফিসের ড্রেস কোড, মাথায় টুপি কোমরে বেল্ট আমায় দেখে হেসে ফেললো, স্যার।
ও তুমি।
হ্যাঁ স্যার।
তুই চিনিস।
চিনবোনা মানে, ওকে সারাজীবন মনে রাখবো।
কেনো।
তোর বাড়িতে প্রথম দিন ওই ঢুকতে দেয়নি।
রবীন মাথা চুলকোচ্ছে।
না স্যার মানে তখন......।
চিনতে না। এখন চিনে ফেলেছো।
হ্যাঁ স্যার।
বাসু আমার কীর্তিকলাপ দেখে হাসছে, মিত্রা হাসতে গিয়েও গম্ভীর হতে চাইছে, ওর মুখটা অদ্ভূত লাগছে।
চল তাহলে।
তুই ওকে বলে দে।
গাড়িতে উঠি আগে।
আমরা বেরিয়ে এলাম, দুচারজন ডাক্তার পেছন পেছন এসেছিলো গাড়ির কাছ পর্যন্ত, আফটার অল মালকিন বলে কথা।
মিত্রাকে বললাম, তুইতো গাড়ি চালাতে পারিস, এই টুকু রাস্তা তুই চালিয়ে নিয়ে চল।
মিত্রা আমার দিকে একবার কট কট করে তাকালো।
পেছন দিকে বসার জায়গা রেখেছিস।
মিত্রা অপ্রস্তুত হয়ে পরলো।
রবীন বাসুর বাইকে বসুক। আমি সামনের সিটে বসি। তুই ড্রাইভ কর।
মিত্রার চোখে দুষ্টুমির হাসি খেলে গেলো। বাসু আমার দিকে একবার চাইল।
আর একটা কথা বাসু, আনাড়ি ড্রাইভার, সামনে তুই থাকবি একটু আস্তে চালাস।
বাসু হাসলো।
মিত্রা গাড়ি স্টার্ট দিলো। বাসু সামনে সামনে যাচ্ছে। আমরা পেছনে।
মিত্রা আজ একটা ঢাকাই জামদানী পরেছে, লাইট তুঁতে কালারের। তারসঙ্গে ম্যাচিং করে তুঁতে কালারের ব্লাউজ ওকে দারুন লাগছে। অনেক দিন পর ওকে শাড়ি পরা অবস্থায় দেখলাম, মিত্রার চোখ সামনের দিকে। সব জানলার কাঁচ বন্ধ, ভেতরটা বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা।
এসিটা চালাবো।
চালা।
মিত্রা সুইচ অন করলো।
টেঙ্কি ভরে এনেছিস।
কেনো।
এখানে ২৫ কিমির আগে কোন পেট্রল পাম্প পাবি না।
সেকিরে।
সেকিরে না। গ্রাম দেখার সখ এবার মিটে যাবে। আর আসতে চাইবি না।
তোকে বলেছে। রবীন আছে, ঠিক ব্যবস্থা করবে।
পেছনে এত কি নিয়ে এসেছিস।
একটা আমার জামা কাপড়ের ব্যাগ, আর একটায় ক্যামেরা, আর তোর বাজি।
এতো কি বাজি নিয়ে এসেছিস। বাজার শুদ্ধু তুলে এনেছিস নাকি।
আমি জানি না যা, ইসমাইলকে বললাম, ওর কোন পরিচিত দোকান থেকে নিয়ে এসেছে।
কত টাকার নিয়ে এসেছিস।
পয়সাই দিই নি।
তার মানে।
ইসমাইল বললো, ম্যাডাম ফিরে এসে দেবেন। ওরা এখন দোকান বন্ধ করছে।
আমি সামনের দিকে তাকিয়ে আছি। গাড়িটা যে চলছে বুঝতেই পারছিনা। কোন জার্কিং নেই, খুব স্মুথ চলছে, মিত্রার হাতটাও ভালো। বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে। বাইরে রোদ ঝলমল করছে। কটা বাজে ? রোদ দেখে মনে হচ্ছে দুটো কিংবা আড়াইটের মাঝা মাঝি।
কিরে বললিনাতো আমায় কেমন লাগছে ?
মিত্রার দিকে তাকালাম, ফিচলেমি করার খুব ইচ্ছে হচ্ছে, কিন্তু ও গাড়ি চালাচ্ছে, ওর তলপেটের অনেকটা অংশ নিরাভরণ আমার চোখ ওদিকে চলে গেলো। সুপার্ব, কামরে খেতে ইচ্ছে করছে।
ধ্যাত।
মিত্রা ব্রেক কষলো। যেখানে ব্রেক কষলো গাড়ি সেখানেই থামলো। আমার কপাল সামনের বোনেটে ধাক্কা খেলো। চেখে জল এসে গেলো। মাথায় হাত দিয়ে মুখ তুললাম। মিত্রা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। আমার হাতটা চেপে ধরেছে। দেখলাম বাসু বাইক থামিয়ে নেমে আসছে। রবীন ওর পেছন পেছন। মিত্রা আমার দিকে কাঁচুমাচু মুখ করে তাকিয়ে। কানে এলো।
কিহলো।
ওই ছাগলের বাচ্চাটা।
ম্যাডাম খুব সাবধানে, এখানে মানুষ চাপা দিলে কেশ খাবেন না। তবে ছাগল চাপা দিলে আপনার জরিমানা হবে। তোর আবার কিহলো।
আর বলিশ না প্রাণ হাতে নিয়ে এই সিটে বসেছি।
আমি এমন ভাবে বললাম, সবাই হেসে ফেললো, চল। পরেছি যবনের হাতে খানা খেতে হবে সাথে।
কি বললি।
না কিছু নয়।
খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
ওরা বাইক স্টার্ট দিলো। মিত্রা গাড়ি চালাচ্ছে।
খুব লেগেছে।
একটুও না। বোনেটটা আমার কপালে চুমু দিলো।
ঠিক আছে চল গিয়ে বরফ লাগিয়ে দেবো।
বরফ ! কোথায় পাবি।
কেনো ফ্রিজ নেই।
ফ্রিজ। এমন ভাবে বললাম মিত্রা হেসে ফললো।
সত্যি বলনা।
এখানে ফ্রিজ বলতে পানাপুকুরের পচা পাঁক।
তুই সত্যি.....।
নিজের চোখে দেখবি চল না। অনি সত্যি না মিথ্যে।
কি করবো বল ছাগল বাচ্চাটা লাফাতে লাফাতে.....।
দেখ এখনো আমি বিয়ে করি নি, বাপ হই নি.....।
বিয়ে করার অত শখ কিসের, পরের বউকে নিয়ে রয়েছো তাতেও শখ মিটছে না।
যতই হোক পরের বউতো।
মিত্রার গলাটা গম্ভীর হয়ে গেলো, নিজের বউ করেনে।
চুপ চাপ থাকলাম, মিত্রার চোখ সামনের দিকে। চোখে জল টলটল করছে। আমি ওর সিটে হাত রাখলাম। এরকম করলে এনজয়টাই নষ্ট হয়ে যাবে।
মিত্রার হাত স্টিয়ারিংয়ে একবার ডান দিক একবার বাঁদিক করছে।
তুই ওরকম বললি কেনো।
আচ্ছা বাবা আর বলবো না।
চকে এসে বাসু দাঁড়ালো, আমরাও দাঁড়ালাম। চা খাওয়া হলো, মিত্রা তাকিয়ে তাকিয়ে চারিদিক দেখছে, বিস্ময়ে ওর চোখের পাতা পরে না। বাঁশের তৈরি বেঞ্চে বসে চা খেলাম। মিত্রা এক চুমুক দিয়ে আমার দিকে তাকালো। সত্যি অনি তোর কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। আমি ওর দিকে চেয়ে হাসলাম। রবীন একটু দূরে দূরে।
বাসু বললো, ম্যাডাম এবার রবিন চালাক, আর মিনিট পনেরোর পথ।
মিত্রা বললো, কেনো আমি পারবো না।
পারবেন। তবে রবিন চালাক।
তাই হোক। মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, তুই কোথায় বসবি।
আমি বাসুর পেছনে বসছি।
ওর মনপসন্দ হলো না। মুখ দেখেই বুঝতে পারছি। কিন্তু মুখে কিছু বললো না। রবিন স্টিয়ারিংয়ে বসলো। আমরা আধাঘন্টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম। বাসু মনে হয় ফোন করে সব ঠিক করে রেখেছিলো। গাড়ি থামতেই সবাই ঘিরে ধরলো। আমি বললাম বাসু ব্যাগগুলো পৌঁছবার ব্যবস্থা করতে হবে।
তোকে ভাবতে হবে না। বরং চল তোদের পৌঁছে দিয়ে আসি।
তোর বাইকে তিনজন। মিত্রার দিকে তাকালাম। মিত্রা ঘার নাড়ছে। যাবেনা। রবীন বললো ম্যাডাম আমাকে যদি ছুটি দেন কালকেই চলে আসবো।
মিত্রা বললো, ছুটি মানে! তুমি কোথায় যাবে ?
রবীন বললো, পাশের গ্রামেই আমার আত্মীয়ের বাড়ি। তাছাড়া এখান থেকে গাড়ি আর কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে না। আপনাকে পায়ে হেঁটেই....।
আমি হাসলাম, ঠিক আছে যাও। কালকে সকালে চলে আসবে কিন্তু। মিত্রা আমার দিকে তাকালো।
এখান থেকে মিনিট কুড়ি হাঁটতে হবে।
তাই চল।
রাসপূর্নিমার মেলা বলে আজ এই জায়গাটা ফাঁকা ফাঁকা। নাহলে এতোক্ষণ ভির হয়ে যেতো।
আমরা হাঁটতে আরম্ভ করলাম, সত্যি মিনিট কুড়ি লাগলো। বাসু তার আগেই বাড়িতে সব পৌঁছে দিয়েছে, কাকা ওকে জিজ্ঞাসা করেছে, এত ব্যাগ বাগিচা কার। বাসু কোন জবাব দেয় নি, চলে এসেছে। রাস্তায় আমার সাথে দেখা হতে খালি বললো, সারা পারা মনে হয় রাষ্ট্র হয়ে গেছে। তোর সারপ্রাইজ রসাতালে যাবে।
তুই তাড়াতাড়ি খেয়েদেয়ে আয়।
ঠিক আছে।
দুজনে মিলে খামারে এসে দাঁড়াতেই কাকা কাকীমা সুরমাসি ছুটে এলেন। সবাই অবাক মিত্রাকে দেখে, মিত্রা সবাইকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলো। কাকা চেঁচামিচি আরম্ভ করে দিয়েছে।
আমি বললাম, তুমি থামো, ওরজন্য তোমায় ব্যস্ত হতে হবে না।
কাকীমা ছুটে গিয়ে সরবত নিয়ে এলেন। এক হুলুস্থূলুস ব্যাপার। মিত্রা আরাম করে বেঞ্চিতে বসেছে। পায়ে ধুলো জড়িয়ে আছে। আমি বললাম, দেরি করিস না। বেলা গড়িয়ে গেছে। হাত-মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নিই। মেলায় যেতে হবে। মিত্রা চোখের ইশারায় বাথরুমের খোঁজ করছে, বাধ্য হয়ে বললাম, চল আমার ঘরে।
আমি ওর ক্যামেরার ব্যাগ আর জামাকাপরের ব্যাগ হাতে নিয়ে ওবাড়িতে গেলাম। মিত্রা আমার পেছন পেছন। আমি ওপরের ঘরে এলাম। লাইট জালালাম। মিত্রা ঘরে ঢুকেই বললো আগে বাথরুম কোথায় বল।
বাথরুম!
ন্যাকা আমার তলপেট ফেটে যাচ্ছে।
এই গ্রামের গোটাটাই বাথরুম। তুই যেখানে খুশি বসে ব্যবহার করতে পারিস।
সত্যি বুবুন বলনা।
সত্যি বলছি।
আমি কষ্ট পাচ্ছি। তুই মজা করছিস।
আচ্ছা আয় আমার সঙ্গে। নিচে নেমে এসে পেছনের খিড়কি দিয়ে পুকুর ধারে এলাম। এখানে কর।
ধ্যাত।
তোকে কালকে বলেছিলাম।
তুই মিথ্যে বলেছিলি। ওদিক দিয়ে যদি কেউ দেখে ফেলে।
ওদিকটা জনমানব শূন্য, পুকুরের ধারেই খাল, যার পাশ দিয়ে বাঁধে বাঁধে এতোক্ষণ এলি।
আচ্ছা তুই ভেতরে যা।
কেনো।
যা না।
মিত্রা আমাকে ঠেলে ভেতরে ঢুকিয়ে দিলো। খিড়কি দরজা ভেজিয়ে দিল। আমি ওপরে চলে এলাম। ব্যাগ গুলো ঠিক ঠাক ভাবে গুছিয়ে রাখলাম।
বুবুন। মিত্রা তারস্বরে চিৎকার করে ডাকলো।
কিহলো।
কোথায় তুই।
এইতো ওপরে।
তুই শিগগির নীচে আয়।
দৌড়ে নীচে এলাম। মিত্রা খিড়কি দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে কাঠ।
কি হয়েছে।
ওই দেখ। আঙুল দিয়ে নিচটা দেখাল। দেখলাম একটা গিরগিটি ওর দিকে জুল জুল করে তাকিয়ে আছে। আমি হেট করতেই গিরগিটিটা দৌড় লাগালো, মিত্রা পরি কি মরি করে আমার বুকে এসে ঝাঁপিয়ে পরলো। থর থর কাঁপছে। আমি হাসছি।
তুই হাসছিস!
কি করবো কাঁদবো।
ধ্যাত।
সিনেমায় গ্রাম দেখো, এবার অরিজিন্যাল গ্রাম দেখো।
অনি ও অনি। কাকীমার গলা।
চল কাকীমা ডাকছেন। হ্যাঁ যাই কাকীমা।
সাবানটা নিয়েনে, হাত মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নিই।
কি খাওয়াবি।
পান্তা আর চিংড়িমাছের টক। খাবিতো।
হ্যাঁ। কোন দিন খাই নি।
খাসনি। খাবি।
কেমন খেতে।
খলেই জানতে পারবি।
ওপরে এলাম, ও ব্যাগ খুলে ওর লিকুইড সোপ বার করলো। কাপর খুলবো না।
এখন নয় খাওয়া দাওয়ার পর।
পেন্টিটা ভিজে গেছে।
উঃ তোকে নিয়ে আর পারা যাবে না।
তুই আসতে বললি কেনো।
আমি বললাম কোথায়, তুইতো নাচলি।
খুলে ফেলি।
খোল।
তুই ওদিকে তাকা।
কেনো দেখে ফেলবো।
উঃ তাকা না।
আমি পেছন ফিরলাম, মিত্রা কাপর তুলে পেন্টি খুললো, রাখবো কোথায় ?
ওইতো আলনাটায়।
কেউ দেখেফেলে যদি।
দেখলে কিহবে।
তুইনা কিছু বুঝিস না।
বোঝার দরকার নেই। চল।
মিত্রা কাপরটা একবার ঠিক ঠাক করে নিলো। ওকে নিয়ে এবাড়িতে এলাম। কারা যেনো এসেছে, আমাদের দেখলো, কাকা চেয়ারে বসে আছেন। আমরা ভেতরবাইর (বাড়ির ভেতরের উঠান) দিয়ে পুকুর ঘাটে এলাম। সুরমাসি কাকীমা পেছন পেছন এলেন।
পুকুরে নামবি না বালতি করে জল এনে দেবো ?
পুকুরে নামব।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজলদীঘি, শ্মশান ও পীরসাহেবের থান by Mamun Jafran - by sagor69 - 31-07-2019, 11:14 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)