Thread Rating:
  • 38 Vote(s) - 3.45 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
বন্ধু (As collected from Net)
২৫

পরের দিন সকাল বেলা বাসে উঠার আগে ফারিয়া আমাকে দেখে বলল বোকার মত হাসিস কেন? কি হইছে? আমি বললাম কিছু না। সাদিয়া বলল আমিও খেয়াল করছি তুই সেই কখন থেকে কি ভেবে ভেবে হাসছিস, বল কি হইছে। সুনিতিও সায় দিল ওদের কথায়। আমি এড়ানোর জন্য বললাম গতকালের একটা কথা ভেবে হাসছিলাম। সাথে মিলি ছিল। দেখলাম আমি এই কথা বলা মাত্রই ওর মুখ সাদা হয়ে গেল। আমি আর এদিকে কথা বাড়ালাম না। আর বাস ছাড়ার সময় হয়ে গেছে আর সকাল সাড়ে সাতটা সবার ঘুম তখনো ঠিক করে কাটেনি তাই বাকিরাও আর কথা না বাড়িয়ে বাসে উঠল। মিলি উঠেই জানালার পাশে একটা সিটে বসল। আমি ওর পাশে বসব বলে ঠিক করলাম কিন্তু আমাকে এদিকে আসতে দেখেই মিলি ডেকে সুনিতি কে ওর পাশে বসাল। আমি বুঝলাম আবার আমাকে এড়িয়ে যেতে চাচ্ছে। সকালবেলায় মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। গতকাল রাতে বাসের ঘটনার পর এক ধরনের কুয়াশার মধ্যে ছিলাম। ঘটনা টা ঘটেছে না ঘটেনি? আজকে মিলির আবার আমাকে এড়িয়ে যাবার চেষ্টায় তাই ঘোর কেটে গেল। বারবার একই ঘটনা ঘটছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঘটনায় আমি জোর করে কিছু করেছি তেমন না বরং মিলি এগিয়ে এসেছিল, কালকে আমি শুরু করলেও মিলি সাড়া দিয়েছে। তাই সমস্যা টা কোথায় তা বুঝতে পারলাম না। একবার সাড়া দিচ্ছে আবার নিজেই সেটা কে আড়াল করছে। আমি একটা সংশয়ে পরে যাচ্ছি। মিলির আচরণ কোন ভাবেই হিসেবে মিলাতে পারছি না। তাই সকাল বেলায় মনটা খারাপ হয়ে গেল। সকাল বেলা ফিল্ড ট্রিপে যাবার সময় সবাই বাসে গান গাইল, নাচল। আমার কিছুই ভাল লাগল না। তাই পুরোটা সময় জানালা দিয়ে বাতাস খেতে খেতে আর বাইরে দেখতে দেখতে ফিল্ডে পৌছে গেলাম।

আবার শুরু হল কাজ। মাঝখানে সাড়ে এগারটার দিকে ব্রেক ছিল একটা। সবাই এক জায়গায় জমা হয়ে হালকা নাস্তা খেল। মিলি আবার আমাকে দেখে অন্য দিকে চলে গেল। কেউ খেয়াল না করলেও আমি খেয়াল করলাম। মন আবার খারাপ হয়ে গেল। জুলিয়েট খেয়াল করল আমি চুপচাপ আছি। জিজ্ঞেস করল মন খারাপ নাকি। আমি না করলাম। শরীর কেমন জিজ্ঞেস করল। আমি বললাম ঠিক আছে। তাহলে চুপ আছি কেন জানতে চাইল? আমি বললাম এমনিতে। ও আর তেমন কথা বাড়াল না। অন্যদের সাথে আবার গল্প শুরু করল। এদিকে আমি নিজে খুব একটা সংশয়ে পরে গেলাম। কারণ মিলির সাথে বাসের ঘটনা টা ইচ্ছের বাইরে ছিল সেটা ছাড়া আর কোন ঘটনায় মিলির ইচ্ছের বাইরে ছিল না। আবার বাসের ঘটনাটার শোধ মিলি আরেকদিন বাসে নিয়েছে। তাই মিলির এই আচরণের কোন ব্যাখ্যা আমি ধরতে পারলাম না।

মিলি যদি পাত্তা না দেয় তাহলে আমার কি এত দরকার পরেছে পাত্তা দেওয়ার। তাই মিলি কে এড়ানোর জন্য গ্রুপের বাকিদের থেকে একটু দূরে দূরে থাকলাম। এদিকে আমি যে গ্রুপে পরেছি সে গ্রুপে শ্যামল আছে। বেচারার সুনিতির উপর ক্রাশ। শালা একটু বোকচোদ টাইপের। সুনিতি কে কেন পছন্দ করিস এটা জিজ্ঞেস করলে বলে আসলে আমাদের দুই জনের ধর্ম তো এক তাই প্রেম হলে বিয়ে করা সহজ তাই ওকে পছন্দ করি। যদিও সরল মনে উত্তর টা দেওয়া। তাও এমন উত্তর যে দেয় তাদের সাধারণত মেয়েরা পছন্দ করে না। শ্যামলের বেলায় বেপার টা একদম সেইম। কাজ করতে করতে সবাই কথা বলছে। জুয়েল একটু ক্ষেপানোর জন্য বলল কিরে শ্যামল কেমন আছিস? কথা হল আজকে? শ্যামল বলল কার সাথে? জুয়েল বলল কার সাথে মানে, তুই সুনিতি ছাড়া আর কাউ কে পছন্দ করিস নাকি? শ্যামল বলল না, না। আজকে কথা হয় নায়। জুয়েল আবার বলল তুই শালা কিছু বুঝিস না। কার কাছে যেতে হলে মাধ্যম ধরতে হয়। এই যে মাহি আছে ওকে ধর ও কথা বলায়ে দিবে। আমি জুয়েলের দিকে তাকায়ে বললাম বাজে কথা বলিস না। জুয়েল বলল আরে শ্যামল মাহি সুনিতির বন্ধু। পারলে ও তোকে কথা বলায়ে দিতে পারবে এখানে। তুই ওরে ধর। গাধা শ্যামল ট্যা এইবার আমার পিছনে পরল। ওর বকর বকরেরে পাল্লায় পড়ে মেজাজ আর খারাপ হয়ে গেল।

আড়াই টার দিকে লাঞ্চ ব্রেক। এরপর এক ঘন্টা লাঞ্চ করে আজকের মত এখানে কাজ শেষ। এরপর আবার হোটেলের দিকে যাব। আজকের ট্যুর প্ল্যানে আছে ফেরার পথে একটা টি এস্টেট পরবে। যে স্যার এসেছে তার সাথে সেই টি এস্টেটের ম্যানেজারের পরিচয় আছে। ওখানে যাব আমরা। টি ফ্যাক্টরি দেখা, বাগান দেখা আর একটু ঘোরাঘুরি হবে। এর মধ্যে লাঞ্চ দিল। সবাই যার যার মত লাঞ্চ নিয়ে খেতে বসে পরেছে। কেউ গ্রুপে কেউ একা একা বিভিন্ন খানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেছে। আমি একটা গাছ তলায় একাই বসলাম। মিলি কে এড়ানোর জন্য বাকিদের কাছে গেলাম না। আবার আমি অন্য গ্রুপের সাথে বসলে এটা চোখে পরবে বাকিদের তাই সবাই কে এড়ানোর জন্য আলাদা করে একা একটা গাছ তলায় বসলাম। কেউ খেয়াল করবে না। খেতে থাকলাম। একটু পরে শব্দ শুনে বুঝলাম গাছের ঐপাশে কেউ এসে বসেছে। আমি কথা বললাম না। চুপচাপ খেতে থাকলাম। বেশ পুরান গাছ। অনেক মোটা গুড়ি। এর যে মোটা বেড় ঐ পাশের কেউ এপাশে ঘুরে না আসলে বুঝবে না কেউ আছে। সিলেটের পাহাড়ি জঙ্গগে এরকম গাছেরে শেষ নেই। গলা শুনে বুঝলাম একটা জুয়েল আর আরেকজন মামুন। খেতে খেতে ওরা নানা কিছু নিয়ে কথা বলতে থাকল। কথা একসময় শ্যামলে এসে ঠেকল। মামুন বলে কিরে শ্যামল একটা গাধার বাচ্চা। সুনিতি ওরে পাত্তা দেয় না এইটা বুইঝাও ও কেন এইখানে পরে থাকে। শালা বেকুব। জুয়েল বলে গাধাটা যে মাথায় বুদ্ধি নাই এটা তো বুঝিস। আর এর পরেও ওরে অবশ্য খুব একটা দোষ দেওয়া যায় না। দেখছস তুই সুনিতিরে। মামুন বলল কেন? জুয়েল বলল আরে শালা খেয়াল করছস? মামুন বলল কেন? এদিকে আমি সুনিতির নাম আশায় কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করলাম কি বলে। জুয়েল বলল ওর মত সেক্সি মেয়ে আছে কয়টা। মামুন বলল, বাল ফালটু কথা বলিস না। সব সময় যেমন কাপড় চোপড় জড়ায়ে থাকে আর যেমনে কথা বলে ওরে প্রেমিকা না মনে হয়ে বোন মনে হয় বেশি। তুই যে কি কস। এইবার জুয়েল ঝাড়ি মারে। বলে শালা তোদের দেখার চোখ নাই। তাই বুঝস না। মামুন বলে কি দেখছিস তুই শুনি? ওরে সেক্সি কইলে কেমনে হবে। তাও ওর সাথে থাকা ফারিয়ারে নাইলে জুলিয়েট কে কইলে মানতাম। সুনিতি? নাহ, মানতে পারলাম না।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: বন্ধু (As collected from Net) - by dweepto - 24-07-2019, 08:45 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)